মাহমুদুর রহমান এর সকল পোস্ট

মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে

আমার নাম- মাহমুদুর রহমান। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে ও বুদ্ধিমান লোকেদের সাথে আড্ডা দিতে।

চূর্ণ-বিচূর্ণ ভাবনা থেকে-২

১.
গ্রামের মূর্খ থেকে নগরের বুদ্ধিজীবী, প্রতিটি মানুষ আজও গুজবে বিশ্বাসী।

২.
বাঙ্গালিদের কখনও বিশ্বাস করতে নেই। কারন তারা শুধু জাতিতেই, মানুষে নয়।

৩.
নারীবাদী, মানবতাবাদী সংগঠনগুলোর লোকজন মানসিক ভারসাম্যহীন।

৪.
এটা সমস্যা ওটা সমস্যা চারদিকে নানান সমস্যা নিয়ে পাবলিক হৈচৈ করে কিন্তু মূল সমস্যার কথা কেউই বলে না। আসলে কেউ বলতে চায় না।

৫.
“সন্তান দুটির বেশী নয় তবে একটি হলে ভালো হয়” চায়না প্রমাণ করে দিয়েছে একথাটা ভিত্তিহীন।

৬.
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, “তুমি আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দিবো”।

আমাদের দেশে অধিকাংশ মায়েরাই হচ্ছে অশিক্ষিত, মূর্খ। ধর্ম কি বলে, কি বোঝাতে চায় ভণ্ড পীরদের সংস্পর্শে থেকে এ বিষয়গুলো তারা এড়িয়ে যায়। ভণ্ডরা যা বলে তাতেই এদের যতসব বিশ্বাস। এসকল মূর্খ মা-কে আগে শিক্ষিত করতে হবে, বোঝাতে হবে কোনটা ধর্ম আর কোনটা অধর্ম। আর তা না হলে কুসংস্কার থেকে কোন দিনও বেরিয়ে আসতে পারবে না এ জাতি আমার বিশ্বাস।

একদিন সময় আসবে রেণুরও!


তাসলিমা তুবা। মায়ের অপেক্ষায় ব্যর্থ প্রহর গুনছে।

স্কুল-কলেজে চেয়ারে পায়ের ওপর পা রেখে
বসে থাকা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও গুজবে বিশ্বাসী
প্রধান শিক্ষক এবং তার শিক্ষকমণ্ডলী,
তোদের সবার মুখে কর্দমাক্ত জুতা মারি।

কথা ছিলো জাতিকে আলো দেখাবি
কুসংস্কার থেকে বের করে শুদ্ধ করবি,
কিন্তু কি করে ওহে অগা,
তোরা নিজেরাই তো অন্ধকার লালনকারী।

তোদের মূর্খতার দরুন হুজুগে জনতার হাতে
একজন নিরপরাধ মা হয়েছে বলির পাঁঠা,
এতিম হয়েছে দুই শিশু তাসফিক-তুবা
মুলতঃ তোরাই তো এ কাজের মদদদাতা।

হে শিক্ষিত সমাজ শোন গভীর মনোযোগে
পার পেয়ে যাবি খুব সহজে তাই ভাবছিস,
একদিন সময় আসবে রেণুরও
সেদিন আত্মকর্মের কথা স্মরণ করিস!

চূর্ণ-বিচূর্ণ ভাবনা থেকে-১

১.
ভ্রমরের সাথে বন্ধুত্ব পেতেছিলাম একটু খানি মধু পাবার আশায়। কিন্তু সে মধু তো দিলোই না উল্টো ভেঙ্গে দিলো হৃদয়ের অঙ্গন। শূন্যতার তীব্র তাপদাহে ওপার থেকে কেউ একজন বলে উঠলো, ওহে ভ্রমর কি কখনও কাদায় বাসা বানায়?

২.
“মেঘমুক্ত মাঠ, কর্দমাক্ত আকাশ, মাঠ চলে গেল বলের বাইরে। দুঃখিত দর্শকমণ্ডলী, আমি একটু আবেগে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম, বল চলে গেল সীমানার বাইরে। – বলুন তো কথাটা কার?

৩.
এই পৃথিবীটা খুবই মনোহর, মরতে হবে যে তাই!

৪.
উনিশ থেকে বিশ হলে, কিছু মানুষ নিজেদেরকে নিষ্কলুষ প্রমাণ করার লক্ষ্যে মিথ্যায় আশ্রয় খোঁজে। কারন সত্য অপেক্ষা তারা মিথ্যাকেই নিরাপদ মনে করে। অথচ মিথ্যার আশ্রয় যে দুর্ভোগের পাহাড় জমাতে থাকে এ বিষয়ে তারা থাকে সম্পূর্ণ জ্ঞানহীন। অতঃপর সত্য যখন উঁকি দিয়ে ওঠে মিথ্যা তখন ধূলিস্যাৎ হয়ে যায় আর সেই সাথে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।

৫.
বর্তমানকে শুদ্ধ করার লক্ষ্যে ফেলে আসা অতীতের স্মৃতিচারন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবেই একটি দীপ্তমান ভবিষ্যৎ পাওয়ার প্রত্যাশা করা যায়।

৬.
শোনা কথায় কান দেয়া আর মূর্খতায় ডুবে থাকা সে তো একই কথা।

আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম

হতবাক!

গত কয়দিন যাবত ফেসবুকের পাতায় পাতায় ভাসছিলো একটি শিরোনাম, “১০৩ টাকায় পুলিশে চাকুরী”। শিরোনামটা চোখে পড়তেই বেশ অবাক হলাম! রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা পড়লাম আর তারপর জানতে পারলাম ঘটনাটা সত্য। এই প্রথম উপলব্ধি করতে পারলাম, ১০৩ টাকায় পুলিশে চাকরী পাওয়া অত্যান্ত সৌভাগ্যের বিষয় যদি সেটা হয় বাংলাদেশে। আমি গাইবান্ধা পুলিশের নিকট সত্যিই কৃতজ্ঞ কারন এধরনের করুণা ইতিপূর্বে কোন বাহিনী করেনি আমাদের প্রতি। আমি এটাকে করুণাই বলবো। দেশে যখন চারকোটি ৮২ লক্ষ বেকার; তাদের চাকুরী দেয়ার মত কোন মামা চাচা খালু নেই; তাই এমতাবস্থায় এই ধরনের উদ্যোগ নেয়ায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গাইবান্ধার জেলার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান প্রশংসার দাবীদার। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি চাই অন্য সকল জেলার পুলিশরাও তাকে দেখে শিখুক। তারা আমাদের দিকে করুণাভরে তাকাবে। অন্ততপক্ষে দেশের বেকারদের সংখ্যা কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

যে দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যে; নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সে দেশে স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর আমরা এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হবো তা কি কখনও ভেবে দেখেছিলাম? দেখিনি। কারন দুষ্টুলোকেদের দখলে চলে গিয়েছে দেশ। আজ জাগায় জাগায় দুর্নীতি। বৃহৎ পরিসরে ঘুষ প্রদান ,অন্যের সম্পত্তি আত্মসাৎ মোটকথা ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শক্তির অপব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো কোন মানুষও নেই। আমার মনে পড়ে সেই ৫২’র কথা, ৭১’র কথা এবং ৮০’র দশকের কথা; যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনসমুদ্রে উত্তাল হয়ে উঠেছিলো সারাদেশ। তখন শকুনরা পারেনি আমাদের দমাতে। দমে গিয়েছিলো তাদের দম্ভ। এখন?

এখন আমাদের সাথে আব্দুল জব্বাররা নেই; নেই ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর; নেই নূর হোসেনরাও। মূলত এরা একবারের জন্যই আসে। তারা আসে। আসে আমাদের শিক্ষা দিতে। কিভাবে অধিকারের জন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবো; কিভাবে শকুনের কন্ঠ রোধ করবো? কিন্তু আমরা তো অতিচালাক বাঙ্গালী। বুদ্ধিজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি অনেক আগেই। ফলশ্রুতিতে আমরা নিজেরাই আজ নিজেদের কন্ঠ রোধ করে ফেলেছি। এক সময়ের ঈগল আমরা আজ সর্পের বেশ ধরেছি। তাই তো দেশ আজ খুন-গুম-ধর্ষণে একাকার। বাংলাদেশ পুলিশ এর ক্রাইম পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৮ সালে সারাদেশে মোট ২২১৪১৯টি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে মোট খুনের ঘটনা ৩৮৩০টি, ডাকাতি ৮২৪ টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১৬২৫৩টি, অপহরণ ৪৪৪টি, চুরি ৭৬৯৮টি ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রশ্ন হলো মন্ত্রী মহোদয়গন বলেন দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে তাহলে উন্নয়নের দেশে কেন এসব ঘটনা ঘটছে? দেশে এতো উন্নয়ন তাহলে মনুষ্যত্বের অবনতি কেন? কেন এক সময়ের ঈগলরা আজ শকুনের বেশে? আছে কি কোন উত্তর? গত ৬ মাসে প্রায় ৪৯৬ জন শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে সোনার দেশে। বিচার হয়েছিলো কি একটারও? সবগুলো প্রক্রিয়াধীন হয়তো নয়তো কোন কোনটি।

আসলে এদেশে যে সকল মানবাধিকার সংগঠ্নগুলো রয়েছে সেগুলো পুরুষ, শিশু ও নারীদের জন্যই অভিশাপ। নারীবাদ যদি শিশু ও নারীদের জন্যই হতো তাহলে দেশে শিশু ও নারীরা নির্যাতনের শিকার হতো না। মূলত সবস্থানে আজ দুষ্টলোকে ভরে গিয়েছে। কথায় মহানুভবতা কাজে হিংস্রতা। অথচ এদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলেই মামলা-মোকাদ্দমায় ডুবিয়ে দিবে। এগুলো কে ঠিক করবে? নেই কোন মানুষ নেই। হে আল্লাহ, তোমার কাছে বিচার দিলাম।