মাহমুদুর রহমান এর সকল পোস্ট

মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে

আমার নাম- মাহমুদুর রহমান। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে ও বুদ্ধিমান লোকেদের সাথে আড্ডা দিতে।

রঙ্গিন স্বপ্নের অঙ্গনে আমি

শুনছো কি ও মহিয়সী
আদৌ বেঁচে আছো কি?
রঙ্গিন স্বপ্নের অঙ্গনে আমি
সতত তুমিহীনা তোমাকে খুঁজি।

তোমাকে ছাড়া এই আমি
যেন ছাদবিহিন কোন বসতি,
তোমাকে ছাড়া এ ভুবন
হৃদয়ে ভালো লাগে কি!

আকাশ ছোঁয়া ঐ পাহাড়
পাহাড় ঘেঁষে চলা ঝর্না,
ঝর্নার ঐ নিদারুণ অববাহিকা
তুমি আছো কোথায় বলনা!

ও আমার,
কোথায় আছো বল না।
অনুভবে তুমি আছো
আমার ধারে কাছে,
তুমি জানো না!

আত্মসংলাপ

হৃদয়টা একটা কাঁচের মতো ছিলো
আচমকা তুমি এসে কাঁচটাকে আছাড় দিলে,
সাথে সাথে সেটা খণ্ড বিখণ্ড হয়ে গেল,
আর সেই খণ্ড-বিখণ্ড হৃদয়টা এখন
তোমার মত ভিন্ন ভিন্ন তুমিকে ভালোবাসে।

কখনও কেউ যদি তোমার মত ব্যাবহার করে
আমি নিরাশ হই না, জানো কেন?
কারন এক টুকরো নিরাশ হলেও অন্য টুকরো
রঙ্গ তামাশায় মত্ত হয়ে থাকে ঠিকই।
আমি জানি কিন্তু তুমি জানো না।
আমি বুঝি কিন্তু তুমি অনুভবও করো না।

আসলে করবেই বা কি করে?
তোমার তো কোন আগ্রহই ছিল না।
জানি আমার ওপর খুব রাগ তোমার,
কারন আমি একজন অভদ্র মানুষ,
কিন্তু তুমি ভদ্র হয়েও আমায় শেখাও নি
এতে অপরাধ কার, তোমার নাকি আমার?

আমি এখন আর তোমাকে নিয়ে ভাবি না,
আর ভাববোই বা কি কারনে,
তুমি তো এখন অন্যের দুনিয়া আবাদে ব্যাস্ত।
ধীরে ধীরে তুমি সংসারী হয়ে উঠবে,
ছোট্ট ফুটফুটে একটা মেয়ে শিশু আসবে তোমার কোলে।

তুমি আর তোমার ভালোবাসার মানুষ,
নতুন আঙ্গিকে স্বপ্ন দেখতে শুরু করবে।
তোমার সন্তান অনেক বড় হবে,
এটা আমিও ভাবি আমিও জানি,
আল্লাহ যদি চান শতবার হোক।

তাকে শিখিয়ে দিও,
একজন বেকার প্রেমিকের কাছে,
কথায় কথায় টাকা চাওয়া ভীষণ লজ্জার!
নিজের না হোক কিন্তু একজন বেকারের
ওপর দিয়ে এক বুক ঝড় বয়ে যায় তখন।

মহীয়সী, কই তুমি?

মহীয়সী, কই তুমি?
তোমায় খুঁজি ফিরি।
দিগন্ত হতে দিগ্বিদিক এই আমি।

এ কেমন কি খেলা?
কেন দাওনা ধরা…………?

আমার চোখের আড়াল হয়ে
থাকতে পারবে কি?
যাও যত দূর আমায়
ভুলতে পারবে কি?

তোমার শয়নে স্বপ্নে আমি বিনে
আর কে আছে?
কে সে যে আমার চেয়েও
অধিক ভালোবাসবে তোমাকে?

শুনছো কি এই আমাকে?
অবয়ব অনুভবে,
তুমি বিনে এ মনে হাহাকার বইছে।

মনে আছে কি তোমার ?
কথা ছিল করবো সংসার একসাথে!
তোমায় নিয়ে বাধবো ঘর,
কোন এক অজানা প্রান্তরে।

পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লিখা আছে
হৃদয়ের দেয়াল জুড়ে,
প্রতিটি কথা প্রতিটি ওয়াদা,
কখনও যাবে না মুছে।

মহীয়সী, কই তুমি?
তোমায় খুজি ফিরি।
দিগন্ত হতে দিগ্বিদিক এই আমি।

এ কেমন কি খেলা?
কেন দাওনা ধরা?

ডায়েরিতে লিখা ছিলো (১)

১-
অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বনভূমি থেকে সদ্য জন্ম নেয়া নানান রঙ্গের উদ্ভিদ দেখে আমার মনে পড়ে যায় মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ আল-কোরআনের একটি বিখ্যাত আয়াতের কথা, “মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদেরকে উত্থিত করবো।” বিষয়টা ভিন্ন হলেও একই রকম ঘটনা, কি আশ্চর্য! কি সুন্দর বনভূমি! অতঃপর ছাই হয়ে যাওয়া সেই ভুমি থেকেই নতুন করে উদ্ভিদ জন্মাচ্ছে।

২-
জুম্মন সাহেবের একটি কথা আমাকে প্রায়ই ভাবায়। তিনি বলেছিলেন,
“ঢাবি ছাত্রী যখন ধর্ষনের স্বীকার, আমি তখন নির্বিকার। মননে কোন প্রতিক্রিয়া জন্ম নেয় নি। কারন আমি অভ্যস্ত। আসলে আমি একজন বোকা মানুষ। আমি যদি জ্ঞানী হতাম তবে আমি প্রতিক্রিয়া জানাতাম। প্রতিবাদ করতাম। খোলা হাত মুষ্টিবদ্ধ করতাম।” ভেবে দেখলাম আমার সাথে তার কত মিল!

৩-
শীতের বরফ কঠিন আবহাওয়ায় অনুচিন্তনে জড়তা ধরে গেছে। তাই শীতার্ত পথিকের ন্যায় কিছুটা উষ্ণতা আমারও চাই জড়তা কাটিয়ে উঠবার জন্য। মানুষকে তো বোঝাতে হবে আমি কে? আমার উদ্দেশ্য কি?

৪-
আমি শিখতে চাই শেখাতে চাই। যারা মনে মনে ভাবে, “শিখেছি নিজের জন্য অন্যকে শেখাতে নয়।” এরা শিক্ষার সংজ্ঞা জানে না।

৫-
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা ঠিক তখনই মনে পড়ে যখন সেই গুরুত্বপূর্ণ সময়টা অতিক্রম করে যাই।

৬-
মুক্তমন হলো কোন একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা আর না করার মাঝামাঝি অবস্থানকে বোঝায়। এখানে একজন মানুষ শুধু ভাবতে পারে। অতঃপর যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে মানুষ তার প্রকৃত অবস্থান জানান দেয় অন্যদের নিকটে।

৭-
একটি কুকুর তার প্রভুর নির্দেশ মানতে দ্বিধাবোধ করে না। কিন্তু মানুষ করে।কারণ মানুষের অকৃতজ্ঞ।

৮-
জনজীবনে এতো অবজ্ঞা আর অবহেলা কেন?
মানুষ কি ভুলে গেছে তার গন্তব্যে সাড়ে তিন হাত মাটি?

৯-
স্বপ্নের সৈকত জুড়ে অপেক্ষার প্রহর যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছে না। ক্ষণ গণনা করতে করতে আমি ক্লান্ত শ্রান্ত একজন মুসাফির। বন্ধু, ভালো লাগে না আমাকে নাকি আমার পরীক্ষা নিতে চাও? তবে করো তুমি পরীক্ষা আমি নিরাশ করবো না। কারন আমার ভালোবাসা মিথ্যে নয়।

১০-
কেউ যখন ভুল করে তাকে অবহেলা না করে তার ভুল সংশোধন করে দেয়া উচিৎ। কারণ মানুষ তো ভুলের ঊর্ধ্বে নয়।

১১-
আমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা কাজী নজরুল হতে চাই না আমি হতে চাই মুহ’ম্মদ (সঃ) এর আদর্শ শিষ্য।

১২-
ঘৃণা দিয়ে ঘৃণা জয় করা সম্ভব আর ভালোবাসা দিয়ে যে কারও মন জয় করা সম্ভব। পার্থক্য কেবল সময়ের। মন জয় করা যেনতেন ব্যাপার নয়। প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়।

১৩-
আমি কখনও বিভ্রান্ত হই না। আমি রহস্য উদঘাটন করার উপায় খুঁজি। আমি পেয়ে যাই মোটেও কষ্ট হয় না। কারন রব আমার সাথেই থাকেন।

১৪-
মানুষকে চেনা কঠিন কিছু না৷কৌশলে তার মনের ভেতর ঢুকতে পারলেই হয়। তার ভালো-লাগা মন্দ লাগা, লুকিয়ে থাকা সত্য-মিথ্যা এসব বোঝা মুহূর্তের ব্যাপার।

১৫-
এই শীতে নীহার শান্ত বিকেলে খোলা আকাশের নীচে একাকী বসে থাকার মাঝে একগুচ্ছ গল্প করার মানুষ চাই।

১৬-
আমি নিজেকে অতি তুচ্ছ একজন মানুষ ভাবি।হাসি-ঠাট্টার ভীড়ে মানুষ যখন খাটো করে তখন আর গায়ে লাগে না।আমার মাঝে রোষানলের প্রবনতা এক্কেবারেই নেই।রবের নিকট কৃতজ্ঞতা।

১৭-
জীবনে কিছু কিছু অপরাধ সহ্য করতে হয়, কিছু কিছু মিথ্যা আড়াল করতে হয় আর কিছু কিছু হারিয়ে যাওয়া ব্যাপার ভুলে থাকতে হয়।

১৮-
একজন মানুষকে পাওয়ার প্রবনতা দমিয়ে রাখা উচিৎ কিছু কাল কিংবা কিছু মুহূর্তের জন্য।রবের দয়ায় সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

১৯-
কারও মন জয় করা, কারও হৃদয় আহত করা এদুটোকে সামনে রেখেই আমাদের পথ চলতে হয়।

২০-
প্রতিভা অন্যের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্য স্রেফ খ্যাতি কুড়ানো।তবে তারা নয় যারা সত্যিকার অর্থেই চায় বাকীরাও যেন নিজেদের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করুক।এরা অনেকটা নিরহংকারী ধরনের হয়।

২১-
পড়াশোনা না জানা লোকজন কিংবা কম জানা লোকজন মানুষকে ছোট করার মধ্য দিয়ে এক ধরনের পৈচাশিক আনন্দ পায়।এরা কখনও মানসিকভাবে সুখী হয় না।

২২-
আমাকে সহ্য করতে পারেন না এমন লোকের অভাব নেই।আমি ভুল করি।আমি তো মানুষ।ভুল ধরিয়ে না দিলে সংশোধনের আগ্রহও যে জন্মাবে না আমার!

২৩-
আমার কারণে কেউ বিরক্ত হলে দোষটা নিজের কাঁধেই চাপাই।তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধী মনে হয়।ইশ!আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।

২৪-
একটা বন্য কুকুর একটি সিংহকে উপদেশ দিলো,একজন ভালো শিকারী হতে চাইলে তোমাকে হতে হবে কৌশলী।সিংহটা বললো, আজ কি দিয়ে নাস্তা করেছো? বুক ফুলিয়ে কুকুর বললো, মহিষের মাংস।সিংহ বললো, বেশ তো!কুকুর সিংহকে প্রশ্ন করলো তুমি কি দিয়ে নাস্তা করেছো? সিংহ উত্তরে বললো,
তুমি যে মহিষের মাংস দিয়ে নাশতা করেছো গতকাল আমিই সেটা শিকার করেছিলাম।এখন আমার ক্ষুধা নেই।

২৫-
মানুষ যখন কন্ঠ নামিয়ে কথা বলে আমি স্থান ত্যাগ করি।এর কারন আমি নিজেই।

২৬-
বিপরীত স্বভাবের কাউকে ভালো লাগলে দূর থেকেই ভালোবাসা উচিৎ। কাছে আসলে দূরের চলে যাওয়ার ভয় থাকে।আর এই জন্যই ভালোবাসার এতো কদর।

২৭-
এক সময় বাসা ছাড়া কিছু বুঝতাম না।মা বলতো বাহিরে যা।বাবা বলতো বাহিরে যা।আমি চুপ করে থাকতাম কিন্তু অনুভব করতাম না।এখন বাহিরে এসে বুঝলাম আমি অন্যদের তুলনায় বেশ পিছিয়ে।

২৮-
একজন মানুষ যখন আনন্দ পায় তাকে আরও আনন্দ দিতে ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে মানুষটা যেন সর্বদা হাসি-খুশী থাকে।কিন্তু কাউকে একবার আঘাত করলে দ্বিতীবার ইচ্ছে করে না।আপন কষ্ট অনুভবে যন্ত্রনার কিন্তু মানুষের কষ্ট সহ্য করা দুর্বিষহ।

২৯-
ভাব বলতে কিছু নেই আমার ভিতর। যারা ভাব নেয় তারা সবসময় ছোট মনের পরিচয় দেয় নিজেদের অজান্তেই।

৩০-
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই একটি অসুখকর জীবন।প্রচন্ড পরিশ্রম করতে হয়।আর আমি এটা থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছি সেই শুরু থেকেই।ইশ! কি যে হবে আমার!

৩১-
ভালো লাগে মানুষকে ভালো পরামর্শ দিতে।মন্দ পরামর্শে কারও ক্ষতি হলে
তার দায় নিজেকেই নিতে হয়।

৩২-
“এক থাপ্পড়ে গালের দাত সব ফেলে দিব।তুই এক্ষুনি আমাকে ডিভোর্স দিবি নয়তো নারী নির্যাতন মামলায় খাচায় ভরে দিবো।তুই চিনিস না আমাকে”।
পাশের বাসা থেকে এমন উচ্চবাচ্য প্রায়ই শোনা যায়।খোজ নিয়ে জানতে পারলাম, যাকে ডিভোর্স দিতে বলা হচ্ছে তিনি হলেন,আমার কলিগ জুম্মন সাহেব। বুঝতে পারলাম বিগত কয়েকদিন যাবত কেন তিনি মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছিলেন। কষ্ট হয় বেচারার জন্য।

৩৩-
এই যে হ্যা,আমি জানি আপনি আমার ডায়েরি পড়েন।মনে রাখবেন ডায়েরির কথাগুলো আপনার অনেক কাজে দিবে।

৩৪-
আমি বড্ড অগোছালো একজন মানুষ।শুনেছি সব মেয়েরাই একজন অগোছালো মানুষ চায় যাকে নিজের মতো করে গুছিয়ে নিবে।এমন কেউ কি আছেন?তবে হাত তুলুন।

৩৫-
ঝামেলামুক্ত নিরাপদ একটি শহর চাই।যেখানে বিরাজ করবে মনুষ্যত্ব।সত্যি বলতে এই শহরে থাকতে থাকতে আমি এক প্রকার বিরক্ত!

৩৬-
যেখানেই থাকো না কেন,আকাশ এখন অন্ধকার!

৩৭-
রাগ হয় খুবই রাগ হয় যখন কেউ বলে আর কেউ চুপচাপ থাকে।মনে হয় যেন একজন ব্যক্তি কথা বলছে একজন বাক-প্রতিবন্ধীর সঙ্গে।মানুষের বোঝা উচিৎ নীরবতা কখনও কখনও অবজ্ঞার কারনও বোঝায়।

৩৮-
নিঃসঙ্গ চলাটা আমার কাছে অত্যন্ত সুখকর ব্যাপার।আযানের আহ্বানে এক দৌড়ে মসজিদে ছুটে যেতে পারি। আলহা’মদুলিল্লাহ।

৩৯-
আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি!কিন্তু কখনও তাকে বলা হয় নি।আদৌ বলা হয়ে উঠবে কিনা সে বিষয়ে ঢের সন্দেহ রয়েছে।কারন আমি একজন অভাবি মানুষ।নিজের চলতেই কষ্ট হয়ে যায় আর সেখানে আরও একজনকে চালানোর কথা নিয়ে তো প্রশ্নই নেই। আসলে আবেগ দিয়ে কি আর সবকিছু করা যায়? আবেগ আর বাস্তবতা উভয়ের সাথে তাল মিলিয়েই চলতে হয় এই ভুবনে।আমি একজন বাস্তবমুখী মানুষ।তাই আমার ধৈর্যও অনেক।

৪০-
কিছু কিছু মেয়ে আছে নিজেদের বয়সের তুলনায় মাস ছয়েক ছোট এমন ছেলেদের শিশুর মতোই ভাবে৷এরা অহংবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।

৪১-
আমি ক্যারিয়ারের চিন্তায় মগ্ন আর আমার বন্ধুবান্ধব একেকজন বিয়ের চিন্তায় মসগুল।চিন্তা নেই – তারা প্রত্যেকেই কর্মজীবি।

৪২-
আচ্ছা, বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার ভাবনা কি?

৪৩-
কুকুরের বাচ্চা যতই ঘেউ ঘেউ চিৎকার চেচামেচি করুক বাঘের কাছে সর্বদাই বিধ্বস্ত হয়ে যায়!

৪৪-
হুমায়ুন আহমেদ বলেছিলেন,
“ভালো লাগা এমন একটি ব্যাপার যা একবার শুরু হলে সবকিছুতেই ভালো লাগতে থাকে”।সত্যি বলতে, ব্যক্তিগত ভাবে আমি এই কথাটার সাথে একমত না।ধরুন, একজনকে খুব ভালো লাগে আপনার কাছে; তারপর দেখলেন আপনার ভালো লাগার মানুষটা মদ-গাঁজা সেবন করে তখন বিকারগস্ত মানুষ বাদে কার কাছেই বা ব্যাপারটা ভালো লাগবে?

৪৫-
হে আমার রব!
আমি তো তোমারই জন্য আর তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।তুমি ছাড়া এই জীবনে আমি কারও প্রতি ভরসা পাই না।তাই তোমার প্রতি ভরসা রেখেই আমি লোকেদের ভীড়ে মিলিয়ে যাই।

৪৬-
আপনি এমনিতেই সুন্দর!
এতো রঙ্গ-ঢং করার কোন মানে হয় না।আমি চাই আপনি মনের অবস্থান থেকে সুন্দর হয়ে উঠুন।তাহলে সর্বত্রই প্রশংসার পাত্র হবেন।কারন যার মন সুন্দর হয় তার মুখ নিঃসৃত কথা মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায় আমার বিশ্বাস।

৪৭-
ঔ বেটা,
*** *** এভাবেই একজন মহিলা অপর একজনকে উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করছিলেন।আর আমি রাস্তার পাশে জিলাপির দোকানের সামনে দাড়িয়ে জিলাপি খাচ্ছিলাম আর শুনছিলাম তাদের উচ্চবাচ্য।খারাপ লাগলো।বুঝতে পারলাম লজ্জাসংকোচ বলতে কিছু নেই তাদের ভিতর।আহারে, মানুষ!

৪৮-
একবার এক বান্ধবীকে বলেছিলাম, “বন্ধু, পর্দা করিস না কেন”? প্রতি উত্তরে সে আমাকে বললো, ” তোরে কি এবার খাস বাংলায় গালি দিমু”?
ভাভা গো ভাভা!সে কি ভয়ংকর উত্তর দিলো আমাকে।আমি তারপর কোন দিন তাকে পর্দা করার কথা বলি নাই।আমি চাই না কেউ আমার কারনে পাপের বোঝা বহন করুক।

৪৯-
ভাবছি ডাবের ব্যাবসা করবো।ভ্যান গাড়িটা ঠিক সেখানেই রাখবো যে রাস্তা আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী। রোজ বিকেলে আপনি আমার সামনে দিয়ে হেটে যাবেন আর আমি সেই সুযোগে বলবো, “আফা,ডাবের পানি খাইয়া যান।মনডা হালকা হইয়া যাইবো”।

৫০-
ভালো লাগে পড়তে, লিখতে পর্যবেক্ষন আর মন্তব্য করতে।আপনার কি ভালো লাগে?

৫১-
জুম্মন সাহেব আমাকে প্রশ্ন করলেন,
গার্লফ্রেন্ড দিয়ে কি হবে?
আমি উত্তরে বললাম,ভালো লাগবে খুব।তিনি প্রতিবাদী কন্ঠে বলেন, তুমি যে উদ্দেশ্যে বলছো ভালো লাগবে ঔটা হলো আবেগ।ঔটাই মোহ।আমি চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম।তিনি বললেন, ভয়ের কারণ নেই তুমি গার্লফ্রেন্ড বানাও তবে সে যেন আল্লাহ ভীত হয়,নেককার হয়।জানোই তো নেককার স্বামী-স্ত্রী জান্নাতে একই সাথে থাকবে।বিস্ময়ের সাথে বললাম, কিন্তু আজকাল তেমন মানুষজন খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টের!জুম্মন সাহেব বলেন, আরে বোকা ভালো কিছু অর্জন করতে হলে কষ্ট তো করতেই হবে আর কষ্টের পরেই রয়েছে স্বস্তি।
আমি যেন প্রান ফিরে পেলাম!

৫২-
মাঝে মাঝে মনে হয় কেউ একজন আমাকে দূর থেকে অনুসরণ করেন।আমি দেখি না কিন্তু সে আমাকে ঠিকই দেখে।আমার ভাবতে খুব ইচ্ছে করে,বোকাদের প্রতিও বুঝি মানুষের ভালো লাগা জন্মায়! আচ্ছা, এটা কি করে সম্ভব?আমি আনমনে হাসি নীরবে নিরালায়…..

৫৩-
এক বুক আশা নিয়ে রাতভর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলাম।কিন্তু সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি, পরীক্ষা শেষ হতে আর মাত্র একঘন্টা সময় বাকী আছে।তাড়াহুড়ো করে হল রুমে গিয়ে পৌছালাম।ম্যাডাম বললেন,আপনি এক ঘন্টা পাঁচ মিনিট দেরী করেছেন; দুঃখিত আমি রুলসের বাহিরে যেতে পারবো না।আপনি সাপ্লি দিন।অসহায় পথিকের ন্যায় আমি কন্ট্রোলার স্যারের কাছে গেলাম।তারও ভাষ্য একই ছিলো।আমি কথা না বাড়িয়ে সোজা বাসায় যাত্রা করলাম আর পথিমধ্যে আনমনে ভাবতে থাকলাম,এক হাজার টাকার জন্য কর্তৃপক্ষ আমাকে এলাও করলো না।আহারে…

৫৪-
অসুস্থ ব্যক্তিদের সাথে হাসি মুখে কথা বলা উচিৎ। তারা স্বস্তি পায়।ইশ!মানুষ যদি বুঝতো।

৫৫-
হঠাৎ আসা আবেগ হঠাৎই চলে যায়।আপনি জানেন না, আমি জানি।

৫৬-
মানুষ সর্বদাই জিততে চায়।আমি তাদের কাছে সর্বদাই হেরে যাই তাদের ভাবনার বলে।

৫৭-
যদি দূরে যেতে চাও যাও,
আমি পথ হয়ে সাথে রবো। সূর্যের তীব্র উত্তাপে পোড়াবই উষ্ণ নীহারে….

৫৮-
আমি অহংকার কম করি।আসলে করি না বললেই চলে।ভালো লাগে মানুষের সঙ্গ দিতে।হোক সে যে কেউই।

_মাহমুদুর রহমান

হবে মেলবন্ধন যদি বারী চান

বন্ধু, তোমার হৃদয়ের খোলা প্রান্তরে
আমি অনুচরে চড়ে ছুটে বেড়াই,
ঐ মিতালী হাওয়ার স্পর্শে যেন
মননে সজীবতা বারে বারে পায়।

তুমি থাকো হিমালয় কিবা দূর গঞ্জে
আছো আমার অনুভবের আঙ্গিনায়,
যদি গগন কভুও মেঘে ঢেকে যায়
আমাকে তুমি পাবে সহসায়।

আসবো আলোর বেগে তোমাতে
নিরুদ্বেগ আলয় দেব তোমায়,
মনোবল রেখো মোর প্রেয়সী
আছে রব ঝড়ও অসহায়।

তোমায় আমি বাসি যে ভালো
এই কথা ভুলোনা কোন ক্ষণ,
তুমি আমার আমি শুধু তোমার
হবে মেলবন্ধন যদি বারী চান ।

কতক স্বপ্ন বুনেছি তুমি জানো না
আমি সবটাই জানাবো সেদিন,
শত জমানো কথা আর কথার মালা
হবে সেসবেই রঙ্গিন আলাপন।

ব্লগ মডারেটরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

আমি না নিজের, না অন্যের পোস্টে মন্তব্য করতে পারছি।
যখনই মন্তব্য করতে যাই স্ক্রিনে এই লেখাটা ভেসে ওঠে।
আমি এর কারণ জানতে চাচ্ছি।

মনটা ভালো নেই

ইদানীং আমি খুব খারাপ অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। চারদিকজুড়ে শুধু শূন্যতা আর শূন্যতা। এই শূন্যতার ভেতর কোন আনন্দ নেই। শূন্যতা কেবল যন্ত্রণার মাঝেই সীমাবদ্ধ। এক আকাশ যন্ত্রনায় কাতর হয়ে আছি। কি বলবো ভাই দুনিয়ায় জুলুমের পরিমান যেই হারে বেড়েছে আমি ভয় পাচ্ছি কখন আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুতা’লার গজব এসে পড়ে!

আপনি একবার ভাবুন, যখন একজন অন্যায়কারী একজন নিরীহের ওপর জুলুম করে তখন মানুষজন সেটা মুখ বুজে দেখে যায়। এতে অন্যায়কারী আর এই সকল মানুষের মাঝে পার্থক্যটা থাকলো কি? আবার আমাদের চোখের চারপাশে যে সকল ঘটনা ঘটছে আমরা সেগুলো প্রত্যক্ষ করি; তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করি। অর্থাৎ আমরা যখন দেখছি অন্যায়টা ঘটছে তখন আমরা ভাবি এই কাজটা না করলেই আমরা পার পেয়ে যাবো। এই শিক্ষা কোন ভালো শিক্ষা নয়। এই শিক্ষার নাম কুশিক্ষা। আবার আপনার সামনে যখন একজনের ওপর জুলুম হচ্ছে তা এক পলক দেখে আপনি কেটে পড়েন এই ভেবে যে ব্যাটা খুন হয়ে যাক তাতে আমার কি? কিন্তু আমরা ভাবি আমাদের ওপর যখন অন্যায়কারী জুলুম করবে বাকীরা এসে আমাদের রক্ষা করবে ঠিকই। এটা সুচিন্তা নয়। আজ আপনি একজন মজলুমের পাশে দাঁড়ালেন না অথচ আপনি কি করে ভাবেন কাল আপনার বিপদে অন্য একজন লোক আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে?এটা প্রমাণ করে আপনি নিজেই একজন অপরাধী। কারণ অন্যায়ের প্রতি ব্যক্তির নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করে সেও অপরাধী।

মানুষ মানে কি? যিনি বিবেকবান অথবা জ্ঞানবুদ্ধি সম্পন্ন জীব। মনুষ্যনীতির মধ্যে সর্ব প্রথম যে বিষয়টা এসে দাঁড়ায় সেটা হলো মানবতা। মানবতা থেকে আসে আত্মসম্মান পরজনের প্রতি সম্মান। আর এভাবেই আমরা মনুষ্যত্বের স্তরে পৌঁছতে পারি। এখন কি আর সেসব আছে? মানুষ হিসেবে আমরা ঠিক থাকলেও সঠিক নীতির মধ্যে কয়জনইবা স্থির আছি? সেদিন একজন শিক্ষার্থী যার নাম আবরার ফাহাদ, তিনি দেশের স্বার্থের কথা ভেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। ফলশ্রুতিতে সম্মান দেখানো তো দূরে থাকুক, তার স্বদেশী লোকজনই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। তার ভুল শুধু এটাই ছিলো যে, তিনি স্বদেশের পক্ষে লিখেছেন যেখানে তার ও বাকীদের স্বার্থ জড়িত। আমি বিস্মিত হলাম! এ কেমন মানুষ তারা? কি তাদের বিচারবুদ্ধি! আমি বেদনাসিক্ত। কতটা নির্বোধ কতটা হীনমন সম্পন্ন হলে তারা একাজ করতে পারে! তাদের পরিবারের মুখে থুঃ। পরিবারের কথা আসে। কারণ পরিবার তাদের প্রশ্রয় দিয়েছে। সেটা হোক প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে।

আবরার হত্যাকারীদের একজন হলেন মুন্না। মুন্নার মায়ের দাবী তার ছেলে একাজে জড়িত নন। তার দাবী মুন্নাকে ফাঁসানো হয়েছে। আসলে প্রতিটি মা’ই মনে করেন তাদের সন্তান কোন অপরাধ করতে পারেন না। প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে দুনিয়ার কোন মানুষটা অপরাধী? আমি তো মনে করি কোন মানুষই অপরাধী না। কারণ প্রত্যেক অপরাধীর মায়েদের দাবী তাদের সন্তান অপরাধী নন। আসলে মায়েরা এ সকল কথা আবেগ থেকে বলেন। সন্তান যতই বড় হোক তাদের কাছে সন্তান মানে সদ্য জন্ম নেয়া সেই ছোট্ট শিশুটি। তারা এ কথা ভাবতেই চান না যে ছোট্ট সন্তান বড় হয়ে যায় এবং বড় হওয়ার সাথে সাথে সন্তান আগের মত নিষ্পাপ থাকে না। তখন ভালো-মন্দ বিচার করার মত গুনাবলী অর্জন করে সে। অতঃপর যে কোন এক পথে সে নিজেকে পরিচালিত করে।

এ সকল মাকে বোঝাতে হবে, সন্তানের পাশাপাশি তারা নিজেরাও একেকজন অপরাধী। এই জন্য নয় যে সন্তানকে জন্ম দিয়েছেন এই জন্যই যে অপরাধীর পক্ষে অবস্থান করছেন ইচ্ছে করেই। হ্যাঁ আমি কিন্তু অবাস্তব কিছু বলছি না। মনে আছে সেই ফাতেমা (রাঃ) এর কথা। যিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহ’ম্মদ (সঃ) এর কন্যা, কলিজার টুকরা। মহানবী (সঃ) তার মেয়ে সম্পর্কে বলেছেন যদি ফাতেমা (রাঃ) চুরি করেন তবে তিনি তার কন্যার হাত কেটে ফেলবেন। মনে আছে কি সেই ওমর ইবনে খত্তাব (রাঃ) এর কথা, যিনি মদ্যপানের অভিযোগে নিজেই সন্তানকে বেত্রাঘাত করেছেন কোন মায়া দয়া ছাড়াই? প্রতিটি মায়েরই উচিৎ এই সকল মহামানবদের অনুসরন করা। সন্তান যেমনই হোক অপরাধ করলে নিজেদের অবস্থান হকের পক্ষে শক্ত রাখা। আমাদের মনে রাখা উচিৎ,আমাদের নিজেদের সন্তানের প্রতি যেমন ভালোবাসা আছে তেমনি বাকীদেরও।

এখন কথা হলো, আবরার ফাহাদ যাদের দ্বারা নিহত হলেন তাদের তো অনুভূতি শূন্য। তারা যে কাজ করেছেন সেটা অত্যন্ত ঘৃণিত। এই জন্য তাদের শাস্তি দিতে হবে। তবে বরাবরের মতো প্রশ্ন রয়েই যায় কে তাদের শাস্তি দিবে? আদৌ কি আবরারের পরিবার সঠিক বিচার পাবেন? জাতিসংঘের একজন মহিলা কর্মী বলেছেন, আমি একজন মা হিসেবে সন্তান হত্যাকারীদের শাস্তি চাই, বাংলাদেশী কয়েকজন মহিলা বলেছেন তারা মা হিসেবে শাস্তি চান। আবার আরেকজন বললেন, মা হিসেবে আমি এই শাস্তি নিশ্চিত করবো। প্রশ্ন হলো বিচারের ক্ষেত্রে “মা হিসেবে” এই শব্দটা আসবে কেন? আপনি কি কারো প্রতি করুণা করতে চাচ্ছেন নাকি সংবিধান বাস্তবায়ন করতে চাইছেন? একটা দেশে সংবিধানিকভাবে বিচার নিশ্চিত করতে হয়। এই বিচারের ক্ষেত্রে মা-বাবার হিসেব আসবেই বা কেন? আমি মনে করি এটা বাড়াবাড়ি। বলা উচিৎ একজন নাগরিক হিসেবে উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রত্যেকের বাংলাদেশ সংবিধান অনুসারে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমি একজন রাষ্ট্রনেতা হিসেবে, বিচারক হিসেবে সংবিধান অনুসারে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো। আপনাকে মনে রাখতে হবে রাসূল (সঃ) এবং ওমর (রাঃ) তারা কিন্তু বাবা হিসেবে নয় বরং বিচারক হিসেবে আল্লাহর সংবিধান বাস্তবায়ন করেছেন। আপনার উচিৎ তাদের পূর্ণরূপে অনুসরন করা।

মনে রাখতে হবে আইন করুণার ওপর চালানো যায় না, আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হয়। যদি এটা নিশ্চিত করা যায় তবেই একটা সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

হে বারী

সুবেহ ঘনাবার আর কত দেরী, হে বারী?
আমার চারদিক জুড়ে নিকষ কালো আঁধার!
আমি আঁধারের বুকে মার্তন্ড দেখি ভুলে।

হে বারী, আমার আসমান ভরা কালোমেঘ।
যতদূর যায় দু’চোখ বুকফাটা হাহাকার দেখি,
আহ! আমার গাল বেয়ে ঝরে পড়ে অশ্রুরা।
আমি অতিশয় দুর্বল না কিছু করিবার পারি।
হে বারী, আমি না কিছু করিবার পারি।

যবে দেখি বীরবল বিনাদোষে পরাভূত হয়
শিশুর নিথর কায়া মলিন স্তূপে পড়ে রয়,
যবে নিরীহ শিশু-মা-বোনেরা হয় বখাটের বলী
আমি বুক চিরে কাঁদি, হে বারী?
না কিছু করিবার পারি।

যবে আমার যুবক ভাই লড়ে হীনতার প্রতিকূলে,
নৃশংসতা দূরীকরণে তুফান গড়ে তোলে,
তব এক দরিয়া কালোমেঘ এসে পড়ে,
আমি হতাশায় ভাসি, হে বারী।
না কিছু করিবার পারি।

আর কত কালোমেঘ, বীভৎস হুঙ্কার?
আর কত দেখবো নিরীহের চিৎকার?
এভাবে আর কত বল না, হে বারী?
আর কত খোয়াবো রঙ্গিন খা’ব?
আমি এক অকৃতজ্ঞ জাতি!

তুমি তো মেহেরবান-দয়ালু, হে বারী,
এবার দাও না গো রহমতের দ্বার খুলি।
আমি হৃদয় ছোঁয়া শ্বাস নেব মনুষ্যত্ব হেরি।

আর যদি না দাও তবে কেউ নেই,
যে এনে দিবে ক্ষণিক রশ্মি এই অসভ্যতা জুড়ি।
আমি এক অকৃতজ্ঞ নাফরমান শুধু একটাই দাবী
ওগো এবার একটু রহম করোনা, হে বারী!

ইশ! যদি তুমি জানতে!

কি সুন্দর চেহারা
কি সুন্দর আঁখি ,
মুক্তার ধারা ঝরে
শুনেছো কি সখি?

শুনেছো কি আমার
এই হৃদয়ের ভাব,
নয়নাভিরাম তুমি
হবে মোর কাব ?

ওহে, কবে আসবে
হ্যাঁ তোমাকেই বলছি,
শতকাল ধরে এ মনে
তোমাকেই ভাবছি!

তুমিহীনা তোমাকে
আর কত ভাববো,
আর কত অমানিশা
এভাবেই কাটাবো?

আর ভালো লাগে না
এভাবেই পেরোতে,
কারন বা অকারন
ইশ! যদি তুমি জানতে!

ভালোবাসা নিরন্তর

আমি প্রায়শই একটা মেয়েকে স্বপ্ন দেখি
স্বপ্নে দেখা সেই মেয়েটি বড় অদ্ভুত!

আননে তার এক আকাশ বিস্ময়,
হাসিতে এক বুক আশা আর
দুচোখ এক সমুদ্র মায়ায় ভরপুর।

মাঝে মাঝে গহীন রাতে,
এ মনে একটি কথা এসে দাঁড়ায় নীরবে,
একটা মেয়ে এতো সুন্দর হয় কি করে!

আমি প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ হই আর
তার কথা ভেবে যাই নিরন্তর।

চূর্ণ-বিচূর্ণ ভাবনা থেকে-৪

১। দীর্ঘদিন যাবত প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। পরীক্ষার চাপ। সবার মত এই বিষয়টা আমার কাছেও প্রচণ্ড যন্ত্রণার। আচ্ছা শুধু কি পরীক্ষায় অল্প কয়টি পৃষ্ঠাই কি একজন মানুষের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে?

২। বাদলের দিনে বৃষ্টির ধারা ঝরে ঝরঝর। টিনের চালের নীচে চোখ বন্ধ করে খাড়া কানে বৃষ্টির সুর শুনি। সুবাহা’ন আল্লাহ! এই সুর কতই না মনোহর।

৩। ব্লগ আমার কাছে এক বুক আনন্দ। আপন চিন্তাশক্তি ও ভাবনার বহিঃপ্রকাশ করার জন্য এর চেয়ে উপযুক্ত মাধ্যম আর কি হতে পারে?

৪। পৃথিবীর যে কোন যুক্তিমূলক কথায় কারো বাবা-মাকে টেনে আনলে এই বিষয়টা কারও বাবা-মায়ের প্রতি অসম্মান করা হয় না। এমনকি তারা যদি মৃতও হয়। যদিও বিষয়টা আপনার হৃদয়ে আঘাত দিবে কিন্তু যুক্তির খাতিরে আপনাকে শুনতে হবে, বুঝতে হবে বিষয়টা। আপনি আমাকে কিংবা আমি আপনাকে হাজারটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি শুধুমাত্র যুক্তির খাতিরে। কিন্তু যুক্তি নির্ভর প্রশ্নগুলো যদি আপনি ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নিন তাহলে আপনার মাঝে যা আছে তা বোকামীপনা ছাড়া আর কিছুই না। আবার আপনি যদি তৃতীয় পক্ষ হয়ে বিষয়টা উস্কে দেন তবে আপনি নিঃসন্দেহে একজন অপদার্থ।

৫। যে পরিবেশে থেকে আমরা বেড়ে উঠি সেটা আমাদের কাছে স্বাভাবিক বনে যায়। তখন না পারি স্বাধীনভাবে কিছু ভাবতে না করতে।

৬। কখনও কি মন খুলে আকাশ দেখেছেন? জানালা খুলে আকাশের দিকে মুখ তুলুন কি সুন্দর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আকাশ। হৃদয় বিগলিত হবে।

চূর্ণ-বিচূর্ণ ভাবনা থেকে-৩


ঢেউয়ের নৃত্য।

১. নিষ্কলুষ হৃদয়ে কলুষতা কখনও স্থান পায় না। আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন আপনার হৃদয় কতখানি নিষ্কলুষ?

২. একজনের প্রোফাইলে ঘুরতে গেলাম। স্বাভাবিকভাবে তার বায়োগ্রাফী নজর কাড়লো আমার। বেশ অবাক হলাম দেখে। সেখানে লিখা ছিলো, “আমি সবার আগে মা, তারপর একজন ভালো ও গুণবতী স্ত্রী”।

এটা অসুন্দর কথা। বেশ অগোছালো ভাবনাও বটে। আমাদের উচিৎ যে কোন অঙ্ককে প্রশ্ন থেকে সমাধানের দিকে নিয়ে যাওয়া কারণ সমাধান থেকে প্রশ্নের দিকে নিয়ে আসা বোকামী ছাড়া আর কিছুই না।

৩. ভারতে একজন ট্রাফিক পুলিশের কন্সটেবল রাষ্ট্রপতি আসবে এই বিষয়টা জানতে পেরে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিলেন। শুধু একটি রাস্তা উন্মুক্ত রাখলেন যে স্থান দিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহেব যাবেন। এমন সময়ে অন্য রুট দিয়ে একটি এম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে আসছিলো। এদিকে রাষ্ট্রপতির গাড়ি বহরও চলে আসলো। ঠিক সেই মুহূর্তে ট্রাফিক পুলিশের কন্সটেবল রাষ্ট্রপতির গাড়ি থামিয়ে দিয়ে এম্বুলেন্সকে যাওয়ার সুযোগ করে দিলেন। এম্বুলেন্স যখন চলে গেল তারপর রাষ্ট্রপতির গাড়িবহর ছাড়লেন। তার এই মহানুভবতা দেখে রাষ্ট্রপতি ঢের প্রশংসা করেছিলেন। বিষয়টা দাঁড়ালো, আগে মানবতা তারপর দায়িত্ববোধ। আর আমাদের দেশ হীতে বিপরীত।

৪. আমি একজন সোজা মনের মানুষ। ভালো লাগা খারাপ লাগা এসব আগে-পরে না ভেবেই সরাসরি বলে দিই। এতে কেউ মন খারাপ করলে সেটা তার সমস্যা। আর হ্যাঁ সোজা কথা শুনতে আমি নিজেও পছন্দ করি খুব।

৫. আপনি হজ্জ করতে যান? আপনি মানবতার কাজ করতে যান? দয়া করে নিজের ছবি তুলবেন না আর যদি ছবি তুলেও থাকেন অন্তঃতপক্ষে সেটা জনসম্মুখে প্রকাশ করবেন না। এগুলো লোক দেখানো কাজ বলে বিবেচিত হয় আমার বিশ্বাস। আর মহান সৃষ্টিকর্তা লোক দেখানো কাজ পছন্দ করেন না।

আমার ছবি ব্লগ-১


কৃষক ব্যাস্ত কৃষিকর্মে।


নিঃসঙ্গতায় মলিন।


ক্ষুদে নিষ্পাপ শুভ্রতারা!


সবুজের ভীড়ে এক ফোঁটা জলের রাজত্ব।


সলাজ অভ্যর্থনা।


উষার কোমল দৃশ্য।


আনারস এখন খাওয়ার উপযুক্ত।


মন খারাপ।


মাথায় শুকনো পাতার বোঝা নিয়ে চললাম আপন গন্তব্যে।


ঐন্দ্রজালিক বৈচিত্র।

মানবতার পরিচয় আত্মত্যাগেই

চলছে চলবে ধরণী
নাইকো তাহার ক্লান্তি,
আত্মত্যাগে আপনারই
দিয়ে চলেছে প্রশান্তি।

হুগলীর হাজী কিংবদন্তী
ছিলেন অনেক দরদী,
পেটের দায়ে করায় চুরী
চোরকে দিলেন মাফ করি!

সুদীর্ঘ দীর্ঘ পথপাড়ী
দিয়েছিলেন যেসব সন্যাসী,
মানবতার ডাকেপড়ী
তেরাসা মহাত্মা গান্ধী।

বীর বিক্রম বাংগালী
মানব সম্প্রদায়ের উন্নতি,
উদারতা যাহার প্রকৃতি
হক সাহেবের জীবনী।

শেখ মুজিবুর ব্জ্রকন্ঠী
ছিলেন স্বদেশের তরে জেলবন্দী,
হেতু ছিল কেবল একটি
মানবতা পাবে মুক্তি।

জাগাও জাগিয়ে স্বপ্রকৃতি
দুঃস্থের হও সহনাভূতি
জিয়া ছিলেন যেমন কৃষকের প্রতি
ইতিহাস আজও ভূলেনি।

হটাও হটিয়ে স্বতুষ্টি
বিলিয়ে দাও যে অসুখী
আপনার সুখ ত্যাগকারী
সেই তো খাঁটি সম্মানী।

খোলাচিঠি তাসলিমা তুবাকে উদ্দেশ্য করে


তাসলিমা তুবা।

তারিখ: বৃহস্পতিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

প্রিয় তাসলিমা তুবা,
কেমন আছো মামনি? আশা করি মহান আল্লাহ তোমাকে বেশ ভালো রেখেছেন তোমার স্বজনদের মাধ্যমে।

আমি জানি তোমার হৃদয়ের মাঝে স্বজন হারানোর বেদনা নেই। থাকবে কি করে,তুমি তো এখনো খুব ছোট্ট, তুবা। তোমার মায়াবী চোখগুলো যখন দেখি এক আকাশ যন্ত্রনায় বিদ্ধ হই, জানো?অশ্রুসিক্ত চোখের পলক পড়তেই গাল ভিজে যায় আমার। বুকে চিরে নেমে আসে হতাশার দাবানল। অজস্র প্রশ্নরা ডানা মেলতে শুরু করে। জানো তুবা, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, কোন দেশে বাস করি, কি আমার পরিচয়, কি আমার অধিকার?

কিন্তু কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে চায় না। সবার হৃদয় ছেয়ে আছে বিভীষিকা ঘোর। কারণ পরিস্থিতি। এই শহরে না আছে শান্তি, না আছে তুষ্টি। চারদিকে কেবলই ভোগান্তি। যানজট থেকে শুরু করে সব কিছুতেই ভোগান্তি। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভোগান্তি হচ্ছে মানুষের মূর্খতা। আর এই মূর্খতার দরুন মানুষ মানুষকে জবাই করে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলে,লাঠি-পেটা করে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে। যেমনটা ঘটেছিলো তোমার মায়ের সাথে। একজন মহিলা যে নিজেও মা, যে তোমার মত ছোট্ট একটা তুবারও মা সে তোমার মাকে “ছেলে ধরা/কল্লা কাটা” বলে জনতাকে ক্ষেপিয়ে তোলে এবং জনতা কি নৃশংসভাবে তোমার মাকে হত্যা করে সেটা আর নাইবা বললাম। কিন্তু লক্ষ্য করেছো কি মানুষ একটা বারের জন্যও তোমার মায়ের আসল পরিচয় জানতে চায় নি। তাদের যা বলা হয়, একজনের কাছ থেকে যা শুনেছে তাই বিশ্বাস করেছে। এটা নিঃসন্দেহে একটা মূর্খতা।

তুমি নেপোলিয়ান বোনাপারট সম্পর্কে জানো, সে বলেছিলো, আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাকে একটি শিক্ষিত জাতি দিব। জানো তুবা, আমাদের দেশে অধিকাংশ মায়েরা আজও অশিক্ষিত, মূর্খ। মূর্খতা তাদের এমনভাবে গ্রাস করে রেখেছে যে, তারা আজও বাড়ি করতে বাড়ির প্রথম স্তম্ভে মুরগী জবাই করে তাতে রক্ত ঢেলে দেয়, কিংবা অনেকে স্বর্ণ গেঁথে দেয়। তারা মনে করে এটা না করলে অশুভ শক্তি এসে তাদের গ্রাস করবে। যেখানে আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ ও আমাদের রাসূল (সঃ) এ বিষয়ে কোন কিছুই বলেন নি। অথচ ভন্ড হুজুরদের কথায় অন্ধবিশ্বাস করে এসব কাজগুলো করছে যা মূর্খতার পাশাপাশি ভয়ংকর পাপ। শত শত বছর ধরে তাদের সন্তানসন্ততিরা তাই করে আসছে। এগুলো নিঃসন্দেহে কুসংস্কার। আর তোমার মা এই কুসংস্কারের বিশ্বাসী মূর্খ জনতার হাতে হত্যার শিকার হয়েছে।

যারা তোমার মাকে হত্যা করেছে তাদের হয়তো বিচার হবে না। কারন তোমার মত অনেক তুবা এভাবে মা-বাবা হারিয়েছে। সেই স্বজনহারা তুবাদের এতিমকারী পশুদের বিচার আজও অধরাই থেকে গেছে। মন খারাপ করো না মামনি। এটা আমাদের দেশে স্বাভাবিক। দেশে যখন দেখবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে তখন মন খারাপের পরিবর্তে ভেবে নিও, এটা বাংলাদেশ।

তোমার সামনে একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে। আমি মনে প্রাণে চাই তুমি অনেক বড় মানুষ হও। একজন আদর্শ শিক্ষিকা হবে। তোমার দায়িত্ব থাকবে কেবল মেয়েদের প্রতি। কারন মা কেবল মেয়েরাই হতে পারে কোন ছেলে নয়। তাদের বলে দিও, “ঘর তৈরি করতে, সেতু তৈরি করতে মানুষের মাথা লাগবে কিংবা মোরগের রক্ত লাগবে কিংবা স্বর্ণের চেইন দিতে হবে ইত্যাদি” আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহ’ম্মদ (সঃ) এটা আমাদের শিখান নি। বরং তিনি বলেছেন, তোমরা আমার বিষয়ে বাড়াবাড়ি করো না। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহন করো এবং যা নিষেধ করে তা থেকে দূরে থাকো। কাজেই রাসূলের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা অন্যায়। যারা রাসূলের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করবে আল্লাহ তাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।

তাদের বলে দিও, মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলে দিয়েছেন, “দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে সামনে নিন্দাকারী ও পেছনে গীবতকারী”। একজন লোক এসে যদি বলে, ওই লোকটা খারাপ তা যেন বিশ্বাস করে সেই ব্যক্তির ওপর হামলে না পড়ে। কারন অন্যের বিষয়ে খারাপ ধারনা পোষনকারী এবং মানুষের দোষত্রুটি বলে বেড়ানো মানুষদেরকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। এবং তাদেরকে নিক্ষেপ করবেন হুতামায়। মামনি, তুমি কি জানো হুতামাহ কি জিনিস?” হুতামাহ হলো, আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন। যা মানুষের হৃৎপিণ্ড পর্যন্ত পৌঁছে যাবে”। সুতরাং তুমি তাদের বলে দিও তারা যেন পরনিন্দা না করে, অন্যের বিষয়ে খারাপ ধারনা মনে না সৃষ্টি করে। কারন খারাপ ধারনা থেকেই তো এসব অযাচিত নৃশংস-বর্বর ঘটনাগুলো ঘটে থাকে।

এটাই হলো আমার কথা। তোমার জন্য উপদেশ মনে করে গ্রহন কোরো। আমি তোমার জন্য মনে প্রাণে দোয়া করি মামনি। আল্লাহ তোমাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক। দুনিয়া ও বারযাখ এবং আখিরাতে কামিয়াবি করুক। আমীন।ভালো থেকো, মামনি।

ইতি,
একজন অতি সাধারণ মানুষ
মাহমুদুর রহমান।