মাবিয়া হোসেন ভাবনা এর সকল পোস্ট

মুহূর্তের ডাক!

আমি মাবিয়া, আমার তেমন ভাবে বড় কোনও বর্ণনা না দিলেও চলবে। কারণ নিজেকে বর্ণনা করতে গেলে দেখা যাবে তখন মূল কথায়ই আসা হবে না। তবে এই টুকু বলতে পারি আমি অন্য সব সাধারণ মানুষদের থেকে একটু বেশি সাধারণই বটে।

আসলে কেও যদি আমাকে হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করে আমার জীবনের সব থেকে খুশির মুহূর্ত কি? তবে সত্যি বলতে আমি একটু ঘাবড়ে যাই। আমি তখন কিছুক্ষণ ভাবি। ভাবতে ভাবতে জীবনের একটু পেছনে চলে যাই। আমার অতীতের মুহূর্তগুলো বইয়ের পাতার মতো ঘাঁটাঘাঁটি করতে থাকি। আসলে কি, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার মধ্যেও কিন্তু একটা সুন্দর মুহূর্ত আছে। অজান্তেই এর মধ্যে কতো ঘটনা এই মস্তিস্কের মনে পরে যায়। যেমনটা এখানেরই উদাহরণ দিলাম। লিখাটা লিখার আগে মুহূর্ত খুঁজতে যেয়ে কতো সুন্দর মুহূর্তের সাথে পুনর্মিলনী করে নিলাম। মনটা তাই ভালো লাগছে।

যাই হোক আমার সুন্দর মুহূর্তটা একটু তুলে ধরি। জীবনে অনেক সুন্দর মুহূর্ত আছে তবে তুলে ধরার জন্য বেছে নিলাম আমার প্রথম মেলায় যাওয়া আমার দাদির সাথে। খুব ছোট্ট ছিলাম আমি। জীবনে তখন দুঃখের বলতে কোন অনুভব বা অনুভূতি ছিল না। চোখের সামনের যা আসত সবই সুন্দর ছিল।

আমি আমার দাদির হাত ধরে ছিলাম যেন কোন ভাবেই ভিড়ের মাঝে হারিয়ে না যাই। রঙ বেরঙ এঁর জিনিস গুলো আমার চোখকে মুগ্ধ করে দিলো। আমি প্রচণ্ড অবাক হয়ে এদিক সেদিক দেখেও যেন দেখার শেষ করতে পারলাম না। এতো মানুষ ছিল আমার চারো পাশে। সবার ভিড়ের মাঝে হঠাৎ দূরে একটা অদ্ভুত শব্দের বেশ বড় একটা বস্তু দেখতে পেলাম।

দাদি! দাদি! দাদি! আমাকে ঐ বড় বস্তুটার দিকে নিয়ে যাও না প্লিজ। আমি আমার দাদির হৃদয়। হাঁটা ধরলাম বলা মাত্র। আমার ছোটো ছোটো পা হাঁপাতে হাঁপাতে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলল। আমার খুশি ছিল আকাশ সমান। আমি এখন যেমন ছোট্ট বাচ্চাদের খুশি মুখটার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি সেদিন দাদিও হয়তো আমার দিকে বার বার তাকিয়ে হাসছিল। বাচ্চাদের মনটা কতো পবিত্র হয় তাই না? নতুন কিছু একটা দেখলেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়।

সে দিন আমার সাথে ঠিক এমনটাই হয়ে ছিল। আস্তে আস্তে আমি গেলাম, হ্যাঁ! আমার জীবনের প্রথম অন্যতম খুশির মুহূর্ত। বড় একটা হা করে বস্তুটা ঘুরতে দেখছি আর তার অদ্ভুত শব্দে বুকের হার্ট বিট যেন ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। ভয় হচ্ছে খুব শব্দের উপর। কিন্তু বস্তুটার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাচ্ছে।

“এটাকে নাগর দোলা বলে” দাদি বলল আমাকে। আমি তেমন করে দাদির কথা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম না। আসলে কানের সামনে বাহারি শব্দের সাথে দাদির প্রতিটা কথা গুলো শুধু বাতাস এঁর মতো কথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমার কাছে আস্তে পারছিল না।

হঠাৎ বস্তুটা থেমে গেল! আমি কৌতূহলী… নষ্ট হয়ে গেল নাকি? ভাবছিলাম আর দাদি আমাকে বস্তুটার সামনে নিয়ে যেয়ে বসিয়ে দিলো। আমার সাথে আরো তিনটা মানুষ। আমি তাদের বেশি একটা মনোযোগ দিলাম না।
হঠাৎ লোকগুলো হাত দিয়ে বস্তুটাকে ঘুরানো শুরু করল। চোখের এক পলকেই আমি আকাশ এঁর দিকে উঠে গেলাম। আমি অবাক! হুট করে নিছে নেমে যাচ্ছি আবার হুট করে আকাশ এঁর দিকে উঠে যাচ্ছি।

এতো সুন্দর কেনো অনুভূতিটা? আমি নিজেই হতভম্ভ! উপরে উঠলেই সারাটা মেলা দেখা যায়। জমকালো আলোতে বাহারি রঙ্গের জিনিস গুলো আমার চোখকে ধাঁধিয়ে দিলো! পৃথিবী কি এতোই সুন্দর?

সব কিছুর মাঝে একটা অপরূপ হাসি নিয়ে আমার দাদি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আজ কতোটা বছর হয়ে এলো নাগর দোলায় চড়তে পারি কিন্তু এই হাসিটা আর দেখতে পাই না!

আর্কাইভ

আপনার ছোট্ট মণিটি যদি দুই থেকে তিন বছরে পা রেখে থাকে তবে লিখাটি আপনার জন্য। এই বয়সটাতে অন্যান্য প্রয়োজন গুলোর সাথে দাঁতের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনও অন্যতম। সাধারণত জন্মের পর শিশুর মুখে প্রথম দাঁত আসার পর থেকে শিশুরা হাতের কাছে যা পায় তাই কামড়ে দিতে চায়। এ সময় থেকেই দাঁত ব্রাশ করে দিতে হবে। তবে এ সময়টাতে টুথপেস্ট ব্যবহার না করে দাঁত গুলো ভালভাবে পরিষ্কার করে দিতে হবে।

দুই বছর বয়সের মধ্যে একটি শিশুর ১৬ থেকে ২০ টি দাঁত বড় হবে। সাধারণত তিন বছর বয়সে শিশুর দাঁতগুলোর একটি সম্পূর্ণ সেট থাকে ২০ টুকরা। এ সময়টা হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় যখন আপনার ছোট্ট মণিকে দাঁতের যত্ন নিয়ে সচেতন হতে আগ্রহী করে তুলতে হবে। যদি আপনি ভেবে থাকেন এ বয়সে শিশু তেমন খাদ্য গ্রহণ করছে না তাই দাঁত ব্রাশ করাটা জরুরী নয় তবে আপনি ভুল। কারণ এ বয়সটা থেকে যদি শিশু দাঁত ব্রাশ করার একটি রুটিনে অভ্যস্ত হয় তবে আপনি স্মরণ না করিয়ে দিলেও সে ভুলবে না।

গড়ে ৪০% শিশু দাঁতের ক্ষয় রোগে ভোগে। যার একমাত্র কারণ হলো দাঁত সঠিক ভাবে ব্রাশ না করা বা একেবারেই ব্রাশ না করা। এর অন্যতম পরিচালিত সমস্যার মধ্যে থাকে ব্যথা। যা শিশুকে চিবানোর সময় প্রচণ্ড অসুবিধা দেয় ফলে শিশুর খাদ্য হজম হয় না। বেশির ভাগ দেখা যায় এ বয়সের শিশুরা এই সমস্যা গুলো বুঝিয়ে তুলতে পারে না।

ডাঃ জিউলিয়ানো বলেন, “অপর্যাপ্ত ব্রাশিং শরীরে ব্যাকটেরিয়া বিকাশের কারণ হতে পারে, যা প্রদাহ এবং রোগের কারণ হতে পারে- শুধু মুখে নয়, শিশুর পুরো শরীর জুড়ে।”

ছড়া, হলুদ রং

সূয্যি মামার জামা হলুদ,
হলুদ কদলী বুবুর খোসা।
মাখিয়ে নিয়ে হলদে রঙ,
আম পিসিমণি হয় পাকা।

আনারসের রসও হলুদ,
হলুদ কাঁঠাল দাদার রোয়া।
খেতে মজা পাকা পেঁপের,
হলদে রঙের মিঠা ফালা।

দিন শেষে এ শহরও কি একা?

একাকিত্ব থেকে পালিয়ে বেড়ানো কতোটুকু সম্ভব? একটা বয়সে নিজেকে একাকিত্বের সাথে লেপটে নেওয়াটা বাদ্ধতামূলয়ক হয়ে উঠে। এই বাদ্ধতার সথে শুরু হয় তখন লড়াই। ইতিমধ্যে জীবন তখন বেশ খানেক যুদ্ধের বিজয়ী তো কয়েক খানেকের সাথে লড়াইরতো বাসনাময়ী সৈনিক। কারণ মাখানো আমাদের জীবনটা শুধু একটু হাসির সন্ধান করে। প্রশ্ন হলো আপনাকে হাসানো কি খুব কঠিন? না, তবে যে কারো দ্বারা সম্ভব নয় আপনার মনটাকে হাসানো।

যখন আপনার মন তার কাঙ্ক্ষিত বিষয় থেকে বঞ্চিত হয় ঠিক তখন থেকেই মনকে সুযোগ করে দিলেন সেই বিষয়টা নিয়ে নিরত থাকার। এখানে মনটা এতোটা ব্যস্ত হয়ে পরে যে আপনাকে ঘেরা মানুষগুলো আপনার চোখে সাক্ষাৎ বিরক্ত রূপ ধারণ করে। চোখ লজ্জায় মানুষ গুলোকে বলাও যায় না,” আমাকে একটু একা থাকতে দাও”। বয়সটা যখন আপনার কবলে, অধিকারটা তখন বড্ড অভাবী। আবার এই বয়সই সময়ের খেলায় আটকে পড়ে বলতে বাধ্য হয়,” আমাকে একা রেখো না”।

যে শহরটা দিনের আলোয় আপনার চোখে জনবহুল সে শহরটাও কিন্তু দিন শেষে একাকিত্বের বিরহ আঁকে। এ বিরহ আপনার চোখের আড়াল আর তাই বলে এ বিরহ তার একার। তাই বলে কি এ বিরহ সে নিজের মধ্যে বেড়ে উঠতে দিবে? নাকি একটা নতুন আশা বুনবে! একটা সুন্দর আশা যার মধ্যে থাকবে আধার অভিভূত করতে পারার আকাঙ্ক্ষা, একটা আলোময় নতুন দিন ফিরে পাবার স্বপ্ন। আর তাই হয়তো প্রতিটা দিন এই শহর গুলো দিন শেষে একাই লড়াই করে যার সত্তগাতে সে ফিরে পায় আবার সঙ্গতা।

নিজেকে কিছুটা মেনে নেওয়ার শক্তি সম্পূর্ণ করে নিতে সমস্যা কি? আপনি যত এই শক্তি দ্বারা নিজেকে আসক্ত করে নিতে পারবেন ততো বেশি এই একাকিত্বকে বিদায় জানাতে পারবেন। এটা কোনো শারীরিক শক্তি নয় যে বয়স ক্রমে হারিয়ে যেতে থাকবে। বরং বয়স বর্ধনের সাথে সাথে আপনি নিজেকে এতোটা বেশি এ শক্তি দ্বারা গুছিয়ে নিতে পারবেন। তখন এই গুছানো জীবন আপনাকে পেছনে তাকাতে দিবে না। আর যদি পেছনে তাকাতেও হয় তখন আপনি আর জীবন মিলে একটা অট্ট হাসি হাসতে সক্ষম হবেন।

নিজেকে একাকিত্বের কোলে তুলে দেওয়ার মাঝে সব থেকে বড় হাতটি থাকে আপনার। একাকিত্বকে ভালোবাসলে জীবনকে ঘৃণা করা শুরু হয়। একাকিত্ব কখনো নিজেকে পুনরুদ্ধারের পথ হতে পারে না। এটি শুধু নিজেকে হারিয়ে ফেলার একটি মাধ্যম। হারিয়ে ফেলা বিষয় কখনো ফিরে পাওয়া যাবে নাকি না তার কখনো নিশ্চয়তা থাকে না। একাকিত্বের সাথে প্রণয় না ঘটিয়ে জীবনের সাথে ভালোবাসা গড়াটা কি বেশি উত্তম নয়?

0B8C4
PC credit: Jon Anders Wiken – stock.adobe.com
Copyright: ©Jon Anders Wiken – stock.adobe.com