মুরুব্বী এর সকল পোস্ট

মুরুব্বী সম্পর্কে

আমি আজাদ কাশ্মীর জামান। আছি মুরুব্বী নামের অন্তরালে। কবিতা পড়ি, কবিতা লিখার চেষ্টা করি। ভেতরে আছে বাউল মন। খুঁজে ফিরি তাকে। জানা হয়নি এখনো। ঘুরতে ঘুরতে আজ পৃথিবীর স্বর্গে। এখানেই পরিচয় হয়েছিলো, কবিতা পাগল এক মানুষের সংগে। নাম জিয়া রায়হান। যার কিছু শব্দকথা, এ্যাতোদিন ভরেছে আমার পাতা। উথাল পাথাল হাওয়া, হৃদয়ে জাগালো দোলা পেলাম কিছু সমমনা মানুষের দ্যাখা। দিনভর আর রাতভর শুধু কবিতায় গেলো বেলা। সব ছেড়েছি- সব পেয়েছি- ভুলতে পারিনি শুধু কবিতার অশ্রুসজল চোখ। ভালো লাগা থেকেই দু’ একটা শব্দ সাজাবার চেষ্টা করি। মাতাল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মাটির কলসে, তবলার ধ্বণী তুলে গাইতে পারি বেসুরো গান- সুর নামের অন্তরালে। ভালোলাগে পোষা কবুতরের পালক ললাটে ছোঁয়াতে। ফুল থেকে রং নিয়ে, খেলি হোলিখেলা, হৃদয়ের উঠোনে। আজ তারি ধমকে এলাম স্বরূপে- স্বকথায় ভরাবো পাতা।   hits counter

মৃত্তিকার মেঘলা ভ্রমণ :: কবি আবু মকসুদ

প্রকাশিত হলো বহুল আকাঙ্খিত মৃত্তিকার মেঘলা ভ্রমণ
লিখেছেন আমাদের সকলের প্রিয় কবি প্রিয় মুখ কবি আবু মকসুদ। কাব্যগ্রন্থের প্রায় প্রত্যেক কবিতা সিরিজ আকারে আমাদের এই শব্দনীড়েই প্রকাশিত হয়েছে। যার কারণে লিখাগুলোর উপর কবি’র যেমন মায়া রয়েছে তেমনি নিষ্ঠ পাঠক হিসেবে আমাদেরও রয়েছে ভিন্নমাত্রিক এক ভালোবাসা। আমরা অপেক্ষা করেছি অপূর্ব এই সৃজনী কাগজে কালো অক্ষরে প্রকাশিত হোক।

প্রবাসে যিনি খুঁজে ফিরেন দেশ এবং দেশের মাটি। শব্দনীড় এ তাঁর প্রোফাইলে আমরা পাই তারই স্বগোক্তি … কবিতার দিকে তাকিয়ে একদিন দেখেছিলাম সবটুকু টেমস নদীর জল। মনে হয়েছিল, এই জল মনু-খোয়াই-কুশিয়ারা-সুরমা বয়ে এসে যুক্ত হয়েছে এই অববাহিকায়। ঢেউগুলো বাঁক বদল করে। বদলে যায় কবিতাও। আমি আমার কবিতাগুলোতে চলমান সময়ের বিবর্তনকে পরখ করতে চেয়েছি, নিজের মতো করে। বলতে পারি তাতে কোন কার্পণ্য ছিল না।

অক্ষর সমুদ্রে ভেসে যেতে যেতে যে ভালোবাসা তৈরি হয়, সে ভালোবাসা মাটির প্রতি- মানুষের প্রতি। তা নতুন করে বলার কিছুই নাই। যে কথাটি বলতে পারি, পৌষ-মাঘে নদী চরে যে ঘাস জন্মায়, কিংবা দুফসলা জমিতে হয় যে ধানের আবাদ- দুই উত্থানই আনন্দ দেয় কৃষকের প্রাণে। আমার কবিতায় আমি কৃষক হয়েই জোয়াল কাঁধে নিতে চেয়েছি। থেকে যেতে চেয়েছি সময়ের সন্তান হয়েই।

নব্বই দশকের একজন উল্লেখযোগ্য প্রকৃতি কবি আবু মকসুদ। তিনি ‘মৃত্তিকার মেঘলা ভ্রমণ’ কাব্যগ্রন্থে এ রহস্যময় জগৎ নির্মাণ করেছেন খাঁটি আধুনিক কবির দৃষ্টিতে। কবিতা নির্মাণের যে গোপন সূত্র তিনি প্রয়োগ করেছেন তা আপাতদৃষ্টিতে অলঙ্কার বিহীন- উপমা-উৎপ্রেক্ষার ভারে আক্রান্ত নয়। মুক্ত গদ্যে রচিত এসব কবিতার মূল অবলম্বন অতি পরিচিতি শব্দরাশি আর কবির টুকরো টুকরো ভাবনা ও ভাবের চেয়ে ভাবনা প্রধান এসব কবিতা। পাঠ করলে বুঝা যায় যে ভাবনাও একজন কবির হাতে অনায়াসে একটা রহস্যময় জগতে পাঠককে নিয়ে যেতে পারে। পাঠককে অন্যরকম এক মুগ্ধতায় খামচে ধরে।

একজন কবি বলতে যা বুঝায় আবু মকসুদ তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তার এ গ্রন্থের কবিতাসমূহে আমি বা তুমির উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ব্যক্তি কবিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। রুচি ও ভাবনায় একজন পূর্ণাঙ্গ সচেতন আন্তর্জাতিক মানুষ বলেই এভাবে আমিত্বকে অনায়াসে দূরে রাখতে পেরেছেন মকসুদ। সন্দেহ নেই : এটি একজন কবির বড় সাফল্য, যা মকসুদ অর্জন করেছেন প্রজ্ঞাদীপ্ত মননশীলতার নিরলস চর্চার মধ্য দিয়ে। ফলে কবিতাগুলো হয়ে উঠেছে সব বোদ্ধাপাঠকের কবিতা। ভাবনার সঙ্গে ভাবনাকে নিপুন দর্জির মতো সেলাই দিয়ে মকসুদ চমৎকার এক শব্দের নকশীকাঁথা তৈরি করেছেন ‘মৃত্তিকার মেঘলা ভ্রমণ’ গ্রন্থে – যে গ্রন্থ চিরকালীন এক রহস্যের জাল বিস্তার করে যাবে প্রকৃত কাব্য পাঠকের মনে। – আসাদ মান্নান।

মৃত্তিকার মেঘলা ভ্রমণ :: আবু মকসুদ। প্রকাশক : কোরাস পাবলিশার্স
মূল্য : ৮০ টাকা। প্রাপ্তিস্থান : বহেরাতলায় চর্যাপদ এবং উতঙ্ক স্টল।

শব্দতরী, ব্লগারস ফোরাম, লিটলম্যাগ চত্ব্বর
স্টল নং ৩২ অমর একুশে বইমেলা ২০১৪।
ব্লগারস ফোরাম প্রকাশনা’র শব্দতরী ষ্টলে আপনারা সবান্ধবে আমন্ত্রিত। ধন্যবাদ।

জিয়া রায়হান … প্রত্যয়ী এক শব্দ যোদ্ধার জন্মদিন আজ

হে বন্ধু, সবার চেয়ে চিনি তোমাকেই এ কথায় পূর্ণ সত্য নেই। চিনি আমি সংসারের শত সহস্রেরে কাজের বা অকাজের ঘেরে নির্দিষ্ট সীমায় যারা স্পষ্ট হয়ে জাগে, সৌন্দর্যের যে- পাহারা জেগে রয়েছে অন্তঃপুরে সে আমারে নিত্য রাখে দূরে। তোমার মাঝে শিল্পী তার রেখে গেছে তর্জনীর মানা, সব নয় জানা। আজ কোন কথা নয়। নয় কোন স্বপ্নচারীর অসত্যের মুখভাষা। কেবলই ভালোবাসা। আজ তোমার জন্মদিন। শুভ জন্মদিন।

যাও তুমি মিছিলে যাও।
আজ দাবী আদায়ের হরতাল।

সবুজ ঘেরা নির্জনে আজ না আসুক তোমার প্রিয়,
টি.এস.সি কিম্বা পাবলিক লাইব্রেরী কোথাও
তোমাকে খুঁজে পাবে না সে, কারণ
তুমি আজ মিছিলে যাবে
আজ যে দাবী আদায়ের হরতাল।

জানি খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হবে সে
ক্লান্ত হবে তার দু’টি পা
তবু বলবো না তোমার ঠিকানা।

যদি আজ তোমাকে পেতে চায়
যদি তোমার কাছে আসতেই চায় – তবে
তবে জেনে নিক তোমার অবস্থান
চলন্ত ট্রাক, সশস্ত্র পুলিশ কিম্বা গোপন অস্ত্রের কাছে
ওরাই শুধু বলতে পারবে – আজ
তুমি কোথায় কেমন থাকবো কিম্বা আদৌ থাকবো কিনা।

যাও তুমি মিছিলে যাও। আজ দাবী আদায়ের হরতাল।

তুমি আমাদের অহংকার। তুমি আমাদের প্রিয় বান্ধব জিয়া রায়হান।

জিয়া রায়হান প্রত্যয়ী এক শব্দ যোদ্ধার জন্মদিন আজ। হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে জানাই আমাদের শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা এবং সম্মান। পঞ্চাশ বসন্ত পেরিয়ে আজ যিনি একান্নয়। কথা বলেছেন অমিয় সব শব্দ ভাবনায়, ছবি এঁকেছেন হৃদয়ের তুলিতে, চোখ রেখেছেন আপনার চোখে। অসম্ভব সব সৃষ্টির অন্বেষণে আজন্ম অস্থির যে ঘুরে বেড়িয়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে। মা মাটি মানুষ এর প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন চিত্রিত ডিজিটাল ক্যানভাসে। A day in the world আন্তর্জাতিক ছবি প্রতিযোগিতায় এনে দিয়েছো বিশ্বসেরা বাঙ্গালী ছবি’র বিরল সম্মান।
শুভ জন্মদিন বন্ধু। দেখা হোক শতাব্দীতে …।

তুমি যে ভাষাতেই কবিতা লিখো আমি পড়বো। সে যদি কবিতা হয়।
তুমি যে ভাষায় গান গাও, সুর তোলো – সে গান সে সুর – শুনবোই।
যে সুরে ও গীতিকায় হৃদয় হৃদয়ের সাথে কথা কয়।

জীবনের কর্মে এবং সাফল্যে থাকুন বেঁচে। আমাদের সকলের শুভেচ্ছা ভালোবাসা সর্বোপরি শুভকামনা সব সময়ে থাকবে আপনার জন্য। শুভ হোক ব্লগিং।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

বর্ণপরিচয়

ঘুড়ে গেলেই একটা ফাঁকা। আমি ফাঁকার মধ্যে দাঁড়িয়ে
মুঠো থেকে ‘প’ ছুঁড়ে দিই। ‘প’ থেকে পৃথিবী এবং প্রশ্ন
প্রতিবাদ প্রতিশোধ এবং প্রেম ছড়িয়ে পড়ে- পড়তে পড়তে
প্রহর চলে যায়-

প্রেম শব্দে প্রভুর চেয়ে প্রেমিকা সহজ- যেহেতু প্রেম
সহজাত কবচকুণ্ডল সহজাত মৃত্যুবোধের সমান
যাকে চেনার ঢের আগে আমাকে ‘ম’ নামক অক্ষর
শিখতে হয়েছে
‘ম’ থেকে মধু – মধু বাতা ঋতায়তে
মধুরক্ষিত মৃত্য- আমি মৃত্যুকে দেখি কিন্তু চিনতে পারিনা-

ছেলেবেলায় ‘চ’ অক্ষর শিখতে শিখতে কেউ চাঁদ হয় কেউ চন্দন
আমি চাতক হয়ে উড়ে যেতাম চিহ্ন থেকে চিহ্নহীন একা-

‘জ’-এর উপর জাহাজ ভাসতো নদী পেড়িয়ে সমুদ্রে
আমি জল চিনতাম
জল চিনতে চিনতে জন্ম
জন্ম চিনতে চিনতে
আমি মৃত্যুর কাছে দাঁড়িয়ে থাকি- দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
বিন্দুর মতো চিহ্ন থেকে চিহ্নহীন-

কবি রত্নেশ্বর হাজরাঃ
জন্ম : ১৯৩৭ খ্রীস্টাব্দ। বরিশাল।
রচনা : বিষণ্ন ঋতু, লোকায়ত লৌকিক, জলবায়ু, গতকাল আজ এবং আমি,
এ দিকে দক্ষিণ, রাজি আছি প্রভৃতি গ্রন্থ ছাড়াও অনুবাদ করেছেন বেশ কিছু বই।

( প্রতিটি একুশের মাস এলেই আমার হৃদয় জুড়ে থাকে তাঁর এই লিখাটি। )

প্রোফাইলে ছবি আপলোড … এবং একটি সমস্যার সমাধান

প্রোফাইলে আপনার ছবি আপলোড। পোস্টটি মন্তব্যের ভারে ভারাক্রান্ত হওয়ায় লক্ষ্য করলাম পেজটি লোড হতে প্রচুর সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। তাতে নতুন ব্লগাররা সময় মতো পেজ আপলোড না হবার কারণে হয় নিরাশ হচ্ছেন নতুবা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বিধায় শব্দনীড় এর নতুন বন্ধুদের কাজে আসবে ভেবে সরাসরি মন্তব্য ঘর বন্ধ রেখে প্রকাশ করলাম নতুন পোস্ট। আপনার অনুভূতি জানানোর কোন প্রয়োজন নেই। নির্দেশ মালা আনুযায়ী কাজ করে সাফল্য পেলেই আমি নিজেতে নিজের সার্থকতা খুঁজে পাবো। তো আসুন শুরু করা যাক মহাকাব্য। বিরক্ত হলে নিজ দায়িত্বে পোস্ট দাতাকে তিরস্কৃত করুন ক্ষতি নেই। অদৃশ্য অসন্তুষ্টি আমার পথের পাথেয় হয়ে রইবে।

শব্দনীড় এ দেখি কতটা সহজে নিজের প্রোফাইল ছবি আপলোড করা যায় !!

প্রথমে http://en.gravatar.com/ অথবা http://en.gravatar.com/ এড্রেসটি কপি করে ভিন্ন ট্যাবে এর মূল সাইটে প্রবেশ করুন। আংশিক প্রদর্শিত।

শব্দনীড় ব্লগ সাইটটিতে নিবন্ধন করার সময় যে ই-মেইল এড্রেসটি ব্যবহার করেছিলেন, লাল চিহ্নিত স্থানে ক্লিক করে সেই একই ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে এখানেও নিবন্ধন বা সাইন আপ করুন।

সাইন আপ হয়ে গেলে এই ম্যাসেজটি দেখতে পাবেন।
উইন্ডোটি ক্লোজ করে দিন টুপ করে। এবার আপনার ব্যবহৃত মেইল ঠিকানাটি খুলুন। এবং ইনবক্সেই পেয়ে যাবেন একটি অভিনন্দন বার্তাসহ লিংক। লিঙ্কটায় ক্লিক করলে আপনাকে নিয়ে আসবে এখানে।

এখানে ইমেইল ঠিকানা ঠিক থাকলেই চলবে। Username: Password: ব্লগে যেটা দিয়েছিলেন সেটা বসিয়ে দিন। Username: নামটি চেক করে অ্যাভাইল্যাবল না হলে নিজের পছন্দের Username: নাম বসিয়ে Password: বসিয়ে দিন। এবং পুনরায় সাইনআপ করুন।

সাইনআপ সাকসেস হলে নতুন এই পাতার লাল রঙে চিহ্নিত অংশে ক্লিক করুন।

লাল বৃত্তাকার স্থানে ক্লিক করুন।

ছবি কোথা থেকে আপলোড করবেন। সিলেক্ট করে দিন।

আপনার ছবিটি আপনার কম্পিউটার অথবা ক্যামেরা থেকে আপলোড করুন। যদি আগে থেকেই 220×220 করা থাকে তাহলে সহজ। সুতরাং আগে থেকে ঐ মাপের ছবি রিসাইজ করা যায় এমন কোনো সফট্ওয়্যার দিয়ে তৈরী রাখুন। কথাটা এ কারণে বললাম, ধরুন এমন ছবি দিতে বা আনতে চান সেটা আপলোড করার পর দেখা গেল ছবিটির যে পরিমান অংশ আপনি পেতে চান, তা হয়তো পাচ্ছেন না।

এখন ছবিটা আপনার পছন্দ আনুযায়ী ক্রপ করে G ক্যাটাগরীতে সিলেক্ট করুন।

এখন শেষ পর্যায়ে। যে ছবিটি ব্লগ সাইটে আনতে চাইছেন সেটাকে ক্লিক করে পপ আপ মেন্যু ওপেন হলে কনফার্ম করে দিন এবং নিশ্চিন্তে লগআউট হয়ে চলে আসুন। কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার কাঙ্খিত ছবিটি আপনার প্রোফাইল আইকন হয়ে auto চলে আসবে শব্দনীড় এ।

তো শুরু হয়ে যাক। কেনো আর অপেক্ষা !! হাতের কাছেই যখন সহজ বুদ্ধিটি রয়েছে আসুন না হয় কাজে লেগে পড়ি। সবাইকে ধন্যবাদ। এবং শুভ ব্লগিং।

আরেকটি জরুরী কথা: অনেকে মন্তব্য করতে যেয়ে হঠাৎ করেই মন্তব্য করতে পারেন না। যেই না মন্তব্য করলেন অমনি একটা এরর মেসেজ ভেসে উঠে Not Acceptable! An appropriate representation of the requested resource could not be found on this server. This error was generated by Mod_Security. ভয় পাবার কিছু নেই। আপনি যদি মজিলা ব্রাউজার ব্যবহারকারী হোন তাহলে শ্রেফ ব্রাউজারের Tools > Options > Privacy > Clear your recent history > all history ‘র বাটনে নিশ্চিন্তে একটা ক্লিক করে সকল কুকিজ মুছে দিয়ে পিসি রিস্টার্ট দিন। ব্যাস।

আপনার পিসির C ড্রাইভের উইন্ডোজ এর Prefetch থেকে সব মুছে দিয়ে CCleaner দিয়ে সব জান্ক এবং কুকীজ স্ক্যানিং করে মুছে দিন।

ফ্রি CCleaner এখানে : ccleaner.

পরিশেষ: এই লিঙ্কটি দেখতে পারেন। শব্দনীড় এর অতিথিরা লক্ষ্য করুন … প্রয়োজন হবে।

রেটিং পেলে বুঝবো পোস্টটি আপনাদের কতটা কাজে লেগেছে। ধন্যবাদ।

সঞ্জয়ের … জার্নাল

বিকেলে …
তোমার চোখের যতো গান
তোমার কথার যত আলো
যেন ছোট ছোট অভিমান
এ- বিকেলে তোমায় ছড়ালো।

এ- বিকেল জানে তুমি ছিলে
যে- ভোরের তুমি সে জানে না
যেন শেষ বিদায়ের নীলে
তোমাতে আমাতে হয় চেনা।

সন্ধ্যায় …
সন্ধ্যা তার অন্ধকার মন
রাত্রিতেও পায় না তেমন
যেমন আমার দেহে পায়।
আকাশের রক্ত মুছে যায়,
আমার রক্তের অন্ধকার
রক্ত দেয় রাত্রি জানে, তার
জীবনের রহস্যের মানে,
ঘুমের শব্দের কানে- কানে।

টিকফা কী? কেন আমরা টিকফা চুক্তির বিরোধিতা করি?

‘টিফা’ বা ‘টিকফা’-এর বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিং উৎপাদকদের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবার সময় জানিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ ‘টিকফা’ চুক্তি স্বাক্ষর আমেরিকার বাজারে জি এস পি সুবিধা অক্ষুন্ন রাখার জন্য জরুরী হয়ে পড়েছে। চুক্তিটিকে চূড়ান্ত আকার দেয়ার কাজ শেষ হয়েছে এবং তা এখন স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত।

টিকফা কী?

টিকফা শব্দটি নতুন। আগে এর নাম ছিল টিফা।‘টিফা’ চুক্তি হলো Trade and Investment FrA বা সংক্ষেপে TIFA, যেটিকে বাংলায় অনুবাদ করলে হয় — ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত কাঠামোগত সমঝোতা’ চুক্তি। ‘টিফা’ চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে দশক কালেরও আগে থেকে। এই চুক্তির খসড়া প্রণয়নের কাজ শুরু হয় ২০০১ সালে। ১৩টি ধারা ও ৯টি প্রস্তাবনা সম্বলিত চুক্তিটির প্রথম খসড়া রচিত হয় ২০০২ সালে। পরে ২০০৪ সালে এবং তারও পরে আবার ২০০৫ সালে খসড়াটিকে সংশোধিত রূপ দেয়া হয়। দেশের বামপন্থি শক্তিসহ অন্যান্য নানা মহলের তীব্র প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি স্বাক্ষর করা এখনো সম্ভব হয়নি। চুক্তির খসড়া প্রণয়নের পর সে সম্পর্কে নানা মহল থেকে উত্থাপিত সমালোচনাগুলো সামাল দেয়ার প্রয়াসের অংশ হিসেবে এর নামকরণের সাথে Co-operation বা সহযোগিতা শব্দটি যোগ করে এটিকে এখন ‘টিকফা’ তথা TICFA বা Trade and Investment Co-operamework Agreement (‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা সংক্রান্ত কাঠামোগত সমঝোতা’ চুক্তি) হিসাবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

চুক্তিটি কার জন্য?

চুক্তিটি আমেরিকার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের। এই চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্র করেছে অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গেও। চুক্তিটির ধারা উপধারাও আমেরিকার তৈরি। আমেরিকা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে নাছোড়বান্দা এবং তারা হাল ছেড়ে না দিয়ে বছরের পর বছর ধরে এজন্য সে বাংলাদেশের ওপর ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছে। এর মাঝে এদেশে ও আমেরিকায় কয়েক দফা সরকার বদল হয়েছে। কিন্তু ‘টিফা’ চুক্তির বিষয়টি সব আমলেই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হয়ে থেকেছে। তারা এমনও বলেছে যে, ‘টিফা’ চুক্তি স্বাক্ষর না করলে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পরবে। যেহেতু বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাধান্য ও আধিপত্য প্রশ্নাতীত এবং এই অসামঞ্জস্য পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাই ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগের’ স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে করা চুক্তিটির দ্বারা প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণের একতরফা সুবিধা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা হবে এই সমালোচনা নিরসনের জন্য ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ’-এর সাথে ‘সহযোগিতা’ শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু চুক্তিতে যে সব প্রস্তাবনা ও ধারা রয়েছে সেগুলোর জন্য চুক্তিটি অসম ও মার্কিন স্বার্থবাহী।

টিকফা চুক্তিতে কী আছে?

‘টিকফা’ চুক্তিতে কি কি ধারা রয়েছে তা দেশবাসী জানে না। এই চুক্তি নিয়ে চরম গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। ২০০৫ সালে টিফার চুক্তি সংক্রান্ত কিছু তথ্য ফাঁস হয়ে যায়, যেটাতে দেখা যায় অন্যান্য দেশে যে সমস্ত টিফা চুক্তি হয়েছে তার সঙ্গে বাংলাদেশের ধারা উপধারা গুলো মিলে যায়। এই আলোচনা সেই ফাঁস হওয়া ড্রাফটের উপর করা হয়েছে। যদিও সেই ড্রাফ্‌ট পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে তবে মুল ভাবনা এই আলোচনার বাইরে যাবেনা বলেই মনে হচ্ছে। এই চুক্তির খসড়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশের বন্ধন সুদৃঢ় করার উল্লেখ থাকলেও চুক্তির বিভিন্ন প্রস্তাবনায় এবং অনুচ্ছেদে বাজার উন্মুক্তকরণ এবং সেবা খাতের ঢালাও বেসরকারিকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতসমূহে বিশেষ করে সেবা খাতগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। চুক্তির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে উভয় রাষ্ট্রই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য উদারনৈতিক নীতি গ্রহণ করবে। বেসরকারি খাতের বিকাশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত “বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমিশন” প্রাইভেট সেক্টরের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল ও পরামর্শ সরবরাহ করবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু সার্ভিস সেক্টরের কথা উল্লেখ রয়েছে, ‘পণ্য’ উৎপাদনের বিষয়টি সংযুক্ত রাখা হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যে বিনিয়োগ করবে, তা শুধু সেবা খাতেই। তারা কোনো পণ্য এ দেশে উৎপাদন করবে না। চুক্তির এসব ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানির বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য দেশের বাজার উন্মুক্ত করে দিবে এবং বিদ্যমান শুল্ক এবং অশুল্ক বাঁধাসমূহ দূর করতে বাধ্য থাকবে। বাংলাদেশকে দেশীয় শিল্পের/কোম্পানির প্রতি সুবিধা প্রদানকারী বাণিজ্য সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ নীতি প্রত্যাহার করতে হবে। টিকফা চুক্তিতে বলাই আছে বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালে স্বাক্ষরিত “দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি” অনুযায়ী মার্কিন বিনিয়োগকারীদের অর্জিত মুনাফা বা পুঁজির উপর কোন কর আরোপ করতে পারবে না এবং বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়া হলে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগের বিশেষ সুরক্ষাসহ মার্কিন কোম্পানিগুলোকে সেবাখাতে বাণিজ্যের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিয়ে দেশের জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর, টেলিযোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ইত্যাদি সেক্টরকে মার্কিন পুঁজিপতিদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। চুক্তির প্রস্তাবনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে দোহা ডেভেলপমেন্ট এজেন্ডা অনুসারে কৃষিতে ভর্তুকি হ্রাসকরণ এবং মুক্তবাজার অর্থনীতি গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া টিকফা চুক্তির অন্যতম দিক হচ্ছে মেধাস্বত্ব আইনের কঠোর বাস্তবায়ন।

চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে সমস্যা কি?

চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে দেশের সেবাখাত সমূহ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির দখলে চলে যাবে। এতে করে দেশীয় কোম্পানিগুলোর স্বার্থও বিঘ্নিত হবে। অবাধ মুনাফা অর্জনের জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলো সেবা যেমন টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বন্দর প্রভৃতি ও পণ্যের দাম বহুগুনে বৃদ্ধি করবে। সেবাখাতে বিদেশি প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর অবাধ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করলে বাংলাদেশ তার কল্যাণমূলক রাষ্ট্রনীতির আওতায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সাধারণ মানুষকে কম মূল্যে সেবা দানের যেসব কর্মসূচী নিয়ে থাকে তা সঙ্কুচিত হবে অথবা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনধারণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজে সুকৌশলে বাণিজ্য সংরক্ষণ নীতি গ্রহণ করে অনুন্নত দেশকে বাণিজ্য সুবিধা প্রদান থেকে বিরত থাকছে। দোহা এজেন্ডা অনুযায়ী বাংলাদেশ কৃষিতে ৫% এর বেশি ভর্তুকি দিতে পারছে না অথচ যুক্তরাষ্ট্র নিজেই কৃষিতে ১৯% এর বেশি ভর্তুকি দিয়ে তাদের কৃষি ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের কৃষিজ পণ্যের দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজে কিন্তু বাণিজ্য সংরক্ষণ নীতি গ্রহণ করছে অথচ আমাদের মত অনুন্নত দেশগুলোকে বাণিজ্য উদারনীতি গ্রহণে নানা চুক্তির মাধ্যমে বাধ্য করছে।

মেধাস্বত্ব আইনের কঠোর বাস্তবায়ন হলে তা উন্নত দেশগুলোর মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেই কাজ করবে যাতে দরিদ্র দেশগুলোর কাছ থেকে অবাধে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা লুণ্ঠনের আইনি বৈধতা পাওয়া যায়। উন্নত প্রযুক্তি এবং উৎপাদন পদ্ধতির অধিকারী হবার পর তারা এই জ্ঞানকে কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। এর মাধ্যমে তারা চায় যেন অবশিষ্ট বিশ্ব প্রযুক্তি ও উৎপাদনের জন্য তাদের উপর নির্ভরশীল থাকে এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারে পরিণত হয়। টিফা চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই মেধাস্বত্ব আইন মানতে বাধ্য করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। টিকফা চুক্তির ফলে বাংলাদেশকে ২০১৬ সালের আগেই মেধাস্বত্ব আইন মেনে চলতে হবে। চুক্তির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে বাণিজ্য সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার (TRIPS) এবং অন্যান্য প্রচলিত মেধাস্বত্ব আইনের যথাযথ এবং কার্যকরী রক্ষণাবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। দোহা ঘোষণা ২০০০ অনুযায়ী বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় বাণিজ্যবিষয়ক মেধাসম্পদ স্বত্ব চুক্তি অনুসারে স্বল্পোন্নত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় এবং ২০১৬ পর্যন্ত ওষুধের ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ববিষয়ক বিধিনিষেধ থেকে ছাড় পেয়েছে এবং এই সুবিধা গ্রহণ করে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পেটেন্ট করা ওষুধ উৎপাদন এবং রফতানি করতে পারছে। কিন্তু টিকফা এ সে ধরনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। এর ফলে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প, কম্পিউটার সফটওয়্যার সহ গোটা তথ্যপ্রযুক্তি খাত আমেরিকার কোম্পানিগুলোর পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক ইত্যাদির লাইসেন্স খরচ বহন করতে গিয়ে বিভিন্ন পণ্য এবং প্রযুক্তির দাম অভাবনীয়ভাবে বেড়ে যাবে। মেধাস্বত্ত্ব আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো অনেক ওষুধ তৈরি করতে পারবে না, আমাদেরকে কয়েক গুন বেশি দামে বিদেশি কোম্পানির পেটেন্ট করা ওষুধ খেতে হবে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে রপ্তানি সম্ভাবনা হারাবে। দরিদ্ররা ওষুধ কিনতে গিয়ে হিমশিম খাবে। বাংলাদেশের ওষুধশিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে কেননা দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজ দেশেই তাদের ওষুধ বিক্রি করতে গিয়ে বিদেশি কোম্পানির সাথে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে। ফলে অনেক মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প ধংস হয়ে যাবে। আবিষ্কারক কোম্পানি সুদীর্ঘ ২০ বছর ধরে নিজের ইচ্ছামতো দামে ওষুধটির একচেটিয়া ব্যবসা করে অবাধে মুনাফা লুট করবে।

‘টিকফা’ চুক্তির খসড়ায় পণ্য ও পুঁজির চলাচলকে অবাধ করার কথা এবং সেই সূত্রে মুনাফার শর্তহীন স্থানাস্তরের গ্যারান্টির কথা বলা হলেও শ্রম শক্তির অবাধ যাতায়াতের সুযোগের কথা কিছুই বলা হয়নি। অথচ শ্রম শক্তিই হলো আমাদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও মূল্যবান সম্পদ যার রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের রয়েছে বিপুল আপেক্ষিক সুবিধা। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ‘খোলাবাজার’ নীতিটি যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োগ করতে রাজি নয়। তারা তা প্রয়োগ করতে প্রস্তুত কেবল পুঁজি এবং পণ্য-সেবা পণ্যের ক্ষেত্রে, যে ক্ষেত্রে তার রয়েছে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি আপেক্ষিক সুবিধা। অন্যদিকে, টিকফাতে ‘শুল্ক বহির্ভূত বাধা’ দূর করার শর্ত চাপানো হলেও ‘শুল্ক বাধা’ দূর করার কথা বেমালুম এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত তৈরি পোশাক শিল্পের পণ্যের ক্ষেত্রে, গড় আন্তর্জাতিক শুল্ক যেখানে ১২%, যুক্তরাষ্ট্রের তা ১৯%।

পেটেন্ট আইন মানতে হলে সমস্যা কী?

পেটেন্ট কোন প্রতিষ্ঠানকে মেধাসত্ত্ব দিয়ে দেয়। ফলে সে সেই মেধাসত্ত্বের ভিত্তিতে সেই পেটেন্টের সাথে সম্পর্কিত যে কোন বাণিজ্যে সে রয়্যালটি দাবী করতে পারে। যেমন নিমের পেটেন্ট করা আছে আমেরিকার তাই নিম গাছ থেকে উৎপাদিত যে কোন পণ্যে সে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়্যালটি দাবী করতে পারবে। বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল সহ বিভিন্ন দেশের নিজস্ব জীববৈচিত্রের অনেক জীব-অণুজীব এবং উদ্ভিদ প্রজাতি এখন বহুজাতিক কোম্পানির পেটেন্টের দখলে। ভারত উপমহাদেশের শতাধিক গাছগাছড়া যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট অফিসে রেজিস্ট্রেশনের অপেক্ষায় রয়েছে। পেটেন্ট আইন বাস্তবায়ন আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য এবং কৃষিতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। পেটেন্ট এর মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন এখন আর শুধু সামরিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয় বরং ফল ফসল এবং গাছ গাছড়ার উপরও বিস্তৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট আইনে বলা আছে, “কোন কিছুর পেটেন্টের বেলায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অলিখিত উৎসের অনুসন্ধানের কোন বাধ্যবাধকতা নেই”। এর মানে হচ্ছে হাজার হাজার বছর ধরে উন্নয়নশীল দেশের প্রচলিত উৎপাদন প্রনালী, জীববৈচিত্র্য, কৃষকদের নিজস্ব শস্যবীজ ইত্যাদি শুধুমাত্র প্রযুক্তি এবং অর্থের জোরে পেটেন্ট করে নিতে পারবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো তাদের উন্নত জেনেটিক টেকনোলজির মাধ্যমে ডি এন এ ফিংগার প্রিন্ট নির্ণয় করে অন্য দেশের জীববৈচিত্র্য এবং কৃষিজ সম্পদকে নিজের বলে পেটেন্ট করিয়ে নেবে। কৃষিতে পেটেন্ট বাস্তবায়ন হলে কৃষকদের শস্য বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ, পুনরুৎপাদন এবং রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার কেড়ে নেয়া হবে। মেধাস্বত্ব আইন অনুযায়ী রয়্যালটি পাবে আমেরিকার বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আর ধ্বংস হবে দেশী প্রজাতি, পরিবেশ এবং কৃষি উৎপাদন কাঠামো। বীজ এবং কৃষি পণ্যের দাম অনেকগুন বেড়ে যাবে বলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। তৈরি পোশাক শিল্পকেও ব্র্যান্ড নামে ব্যবহূত এদেশের তৈরি এ্যাকসেসরিজের জন্য সংশ্লিষ্ট মার্কিন কোম্পানিকে রয়্যালটি দিতে হবে। বাসমতি চাল, চিরতার রস, নিমের দাঁতন ইত্যাদি হেন বস্তু নেই যা আগেভাগেই মার্কিনীসহ বিদেশি কোম্পানিরা পেটেন্ট করে রাখেনি। মেধাস্বত্ব অধিকারের ধারা প্রয়োগ করে তারা এসবকিছুর জন্য রয়্যালটি প্রদানে বাংলাদেশকে ‘টিকফা’ চুক্তি মাধ্যমে বাধ্য করতে চায়।

টিকফাতে শ্রমিক বান্ধব ধারাও কী আছে?

মোটেও না। টিকফার প্রস্তাবনায় মানবাধিকার, শ্রমের মান এবং শ্রমজীবীদের অধিকার ও পরিবেশগত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও তার লক্ষ্য শ্রমজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নয় বরং এগুলোকে নন- ট্যারিফ (অশুল্ক) বাধা হিসেবে ব্যাবহার করে যুক্তরাষ্ট্র তার বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। মানবাধিকার, শ্রম পরিবেশের মান ইত্যাদি বিষয়কে অশুল্ক বাধা হিসাবে চিহ্নিত করে মার্কিনীরা ‘টিকফা’ চুক্তি দ্বারা বাংলাদেশকে উত্তরণ অসাধ্য প্রতিকূলতায় আটকে ফেলার ফন্দি করেছে। কয়েক শতাব্দী ধরে তারা আমাদের মতো দেশে ঔপনিবেশিক শাসন চালিয়ে, নিজ নিজ দেশে নির্মম ও অমানবিক শ্রম-শোষণ চালিয়ে, শ্রম পরিবেশের ক্ষেত্রে দাস সুলভ মান বজায় রেখে এখন উন্নত ধনী দেশে পরিণত হয়েছে। এখন আমরা উন্নয়নের পথ গ্রহণ করা মাত্রই সমানে সমানে প্রতিযোগিতায় নামার কথা বলে আমাদের ওপরে তাদের মতো সমান মাত্রার শর্তাবলী চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। এ যেন, হাত-পা খোলা মোটা তাজা মানুষ কর্তৃক পেছনে হাত বাঁধা অনাহারী মানুষকে সমানে সমানে কুস্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো!

চুক্তির জন্য কেন এতো গোপনীয়তা?

বাংলাদেশের সংবিধানে আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘বিদেশের সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে, এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন; তবে শর্ত থাকে যে, জাতীয় নিরাপত্তার সহিত সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোনো চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হইবে।’ যেহেতু টিকফা কোন নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি নয় তাই সে চুক্তির ধারা গুলো প্রকাশ না করাটা সংবিধান বিরোধী। ‘টিকফা’ চুক্তির ধারাসমূহ নিয়ে গোপনীয়তা ও রাখঢাক করার যে চেষ্টা চলছে তা সংবিধানের সাথে সাংঘর্শিক।

টিকফা চুক্তি কী বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়াবে? বাংলাদেশের পণ্য রফতানী বাড়াবে?

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ চুক্তি স্বাক্ষরের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের দেশে বিনিয়োগ কয়েক গুণ বাড়বে, সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়বে আমাদের পণ্য রফতানিও। এশিয়ার দুটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি গণচীন এবং ভারত তার রফতানির যথাক্রমে ২১ এবং ১৯% পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করলেও তারা এই চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। অর্থাৎ টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানির সম্পর্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রফতানিতে প্রধান বাঁধা হচ্ছে শুল্ক বাধা। বর্তমানে বাংলাদেশি পোশাক রফতানিকারকদের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৫.৩% শুল্ক দিতে হয় অন্যদিকে চীনকে পরিশোধ করতে হয় মাত্র ৩%। তাহলে দেখা যাচ্ছে চীন টিফা চুক্তি স্বাক্ষর না করেও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম শুল্কে পণ্য রফতানি করতে পারছে। তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের লোভ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য এদেশের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে কিন্তু টিকফা এগ্রিমেন্টে তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের কোন নিশ্চয়তা রাখা হয়নি কারণ প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে উভয় দেশ নিজ নিজ বাজারে পণ্য প্রবেশে নন ট্যারিফ বা অশুল্ক বাঁধা দূর করবে। কিন্তু বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের অশুল্ক বাঁধা খুব সামান্যই।

যুক্তরাষ্ট্র কেন এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য এতটা আগ্রহী?

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বাইরে স্বল্পোন্নত দেশের উপর আধিপত্য বিস্তারের জন্যই আমেরিকা সহযোগিতামূলক উদ্যোগের ছদ্মাবরণে টিফা বা টিকফার মত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলো করার চেষ্টা করছে। যদি স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করা যায় তবে আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক ফোরাম ডব্লিউ,টি,ও এ আমেরিকা তার আধিপত্যবাদী বাণিজ্য নীতি বাঁধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এই লক্ষ্যেই পাকিস্তান,সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ইরাক, উরুগুয়েসহ বিশ্বের ৩০ টিরও বেশি দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই টিফা চুক্তি সাক্ষর করেছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেতা হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তৃতীয় বিশ্বের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করছে। বিশ্বব্যাপী পরাশক্তিগুলোর অর্থনৈতিক আধিপত্যের বিপরীতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব ফোরামে বাংলাদেশ যাতে কোন ভূমিকা না রাখতে পারে সেজন্য বাংলাদেশকেও টিকফা চুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে যুক্তরাষ্ট্র কেননা টিকফা স্বাক্ষর হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া আর সম্ভব হবে না। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার প্রশ্নে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চায়। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গণচীনের অব্যাহত উন্নয়ন ও পরাশক্তি হিসেবে চীনের অভাবনীয় অগ্রগতি ঠেকাতে এবং দক্ষিন এশিয়ার বিশাল বাজারের উপর নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে হলে বঙ্গোপসাগরে এবং ভারত মহাসাগরে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি বজায় রাখতে হবে। আর বঙ্গোপসাগরে নিরাপত্তা বজায় রাখতে হলে বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আঞ্চলিক পার্টনার বানাতে আগ্রহী। ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ঢাকার কাছ থেকে অধিকতর সহযোগিতার জন্যই যুক্তরাষ্ট্র টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাচ্ছে কেননা এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ মার্কিন বলয়ে আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, দোহায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সম্মেলনে গৃহীত ‘দোহা ডেভেলপমেন্ট এজেন্ডার’ মূল বিষয়গুলো হলো—অ-কৃষিপণ্যের বাজার উন্মুক্তকরণ, কৃষি থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার, মেধাজাত সম্পত্তি অধিকার (ট্রিপস) এবং সার্ভিস বা পরিবেশ খাতে বিনিয়োগ উদারিকরণ ইত্যাদি। কিন্তু এসব বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের স্বার্থ অভিন্ন নয়। বরং এসব ক্ষেত্রে মার্কিনের স্বার্থের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থের গুরুতর বিরোধ আছে। অথচ ‘সোফা’ চুক্তির সুবাদে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে মার্কিনের পক্ষে এবং স্বল্পোন্নত দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশকে দাঁড় করানোর সুযোগ পাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিপাক্ষিক ‘সোফা’ চুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে অবস্থান নিতে বাধ্য করতে পারবে। একথা সকলেই জানেন যে, বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলো তাদের অভিন্ন ও সাধারণ স্বার্থ সংরক্ষণে সম্মিলিতভাবে আন্তর্জাতিক ও বহুপাক্ষিক নানা ফোরামে অবস্থান নিতে পারে। কিন্তু টিফার মতো দ্বিপাক্ষিক চুক্তির কারণে বাংলাদেশ তা স্বাধীন মতো করতে পারবে না। শুধু তাই নয় বহুপক্ষীয়ভাবে যে কোনো বিরোধ নিরসনের সুযোগ হারাবে বাংলাদেশ। ‘টিকফা’ চুক্তির কারণে বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আন্তর্জাতিক পরিসরে বহুপাক্ষিক ভাবে প্রচেষ্টা চালাবার সুযোগ নিরঙ্কুশভাবে পাবে না। উপরন্তু বাণিজ্য সমস্যা বহুপক্ষীয়ভাবে সমাধানের বদলে তা মার্কিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষিয়ভাবে সমাধানের ফাঁদে পড়বে বাংলাদেশ। একপক্ষ প্রবল শক্তিশালী হলে দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধান স্বাভাবিক কারণেই দুর্বলের নয় বরং সবলের পক্ষেই যায়। সে কারণে বাংলাদেশকে সব সময়ই ক্ষতিগ্রস্থ হতে হবে।

জি এস পি সুবিধার পাবার প্রশ্নের সাথে কি টিকফা চুক্তি যুক্ত?

ঢাকায় নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা গত ২৮ জুলাই আবারো এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, “টিকফা চুক্তি সই না করলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে না। “টিকফা চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দরকষাকষিকে ‘অস্বস্তিকর’ বিষয় উল্লেখ করে তিনি জানতে চান, “এতে খারাপ কী আছে? আমি তো খারাপ কিছু দেখছি না।” টিকফার সাথে জি এস পি সুবিধার কোন সম্পর্ক নেই। দোহা নীতি অনুসারে আমেরিকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৯৭% পণ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়ার কথা যেটাকে সাধারণভাবে জি এস পি সুবিধা বলা হয়। আমেরিকা ঠিকই বাংলাদেশের ৯৭% পণ্যের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দিয়েছে তবে তাতে ঐসব পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যার রপ্তানির পরিমান খুবই কম। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাককে এর বাইরে রাখা হয়েছে। সেই সব পণ্যের জন্য জি এস পি সুবিধা থাকা আর না সমান কথা। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের যে গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হয় তার ওপর উচ্চহারে শুল্ক বসিয়ে রেখেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের গড় আমদানি শুল্ক হার শতকরা ১ ভাগের মতো। কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টসের ওপর শুল্কহার শতকরা গড়ে ১৫ ভাগ। এই শুল্কহার আন্তর্জাতিক বিধিরও পরিপন্থী। এই শুল্ক এমনিতেই বাতিল হওয়া দরকার। এবছরও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কবাবদ প্রদান করেছে প্রায় ৫৬০০ কোটি টাকা। এটা যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে ঋণ অনুদান নানাভাবে বাংলাদেশে আসে আসে তার ৬ গুণেরও বেশি। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে নয়, বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থের যোগান দিচ্ছে।

জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে রচিত ‘টিকফা’ চুক্তি পুরোটাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তা আরেকটি সর্বনাশের বার্তা। দেশের গলায় আরেকটি ফাঁস পরানোর এই পাঁয়তারা দেশপ্রেমিক জনগণকে রুখতে হবে। এ কর্তব্য সব দেশপ্রেমিকদের।

কৃতজ্ঞতাঃ ‘টিফা’ চুক্তি দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিবে; মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। জাতীয় স্বার্থ বিরোধী টিকফা চুক্তি সই করা হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী; বিবাগী বাউল। আনু মোহাম্মাদ। এই লেখাটি তৈরিতে তাঁদের লেখার অনেক অংশ এবং তথ্য সরাসরি অবিকৃত অবস্থায় অথবা ঈষৎ সম্পাদিত অবস্থায় ব্যবহার করা হয়েছে।

পিনাকি ভট্টাচার্য
১৩ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১২:০২।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪।
বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর।

প্রত্যাখ্যান :: কবি মাসুদ খান

হঠাৎ মায়ের স্তন্য থেকে, আজই, উৎখাত হয়েছে শিশু
ঘুরে ফিরে বারে বারে যায় তবু মায়ের নিকট
বকা খায়, কিছুটা অবাক হয়, তবু শিশু যায়…

অবুঝ কী আর বোঝে কী-বা অর্থ হয় এই উৎখাতলীলার!
কী-বা এর বিন্দু- ও বিসর্গ-ভাব
কিছুই পারে না বুঝতে মায়ের স্বভাব
শুধু ভাবে- মায়ের কৌতুক তবে এতটা নিষ্ঠুর!
মাতা কেন হয় আজ এতটা বিমাতা
এই খরাঋতুতে হঠাৎ?

ভেবে একা কষ্ট পায়, নিঃসহায়, ফের তবু যায়
শিশু ফের বকা খায়, আবার অবাক হয়, তবুও সে যায়…

কেঁদে কেঁদে অবশেষে বোবা অভিমানে
অবশ ঘুমিয়ে পড়ে মাটির শয়ানে।

শুধু তার পিপাসার ধ্বনি এসে লাগে কানে
থেকে থেকে, এই মহিমণ্ডলের এখানে ওখানে।

নিপাতনে সিদ্ধ রূপক …

শীতের সনেটে ঝরে আষাঢ়ের বৃষ্টি
পথ করে দিলো প্রলয়ের পথ সৃষ্টি
ধুয়ে ভেসে যায় অম্ল- মধুর কৃষ্টি।

ক্ষারের প্রভাবে মুমূর্ষু ঘিলু- মজ্জা
মুখোশ এখানে অভিনন্দিত সজ্জা
এভিনিউ জুড়ে হাঁটে অশ্লীল লজ্জা।

গাঢ়তর এক ঝড়- ঝঞ্ঝার রাত্রে
লুসিফার আসে কানা গলি- খুঁজি হাতড়ে
বুড়ো আংলার ধন জমা ভুল পাত্রে।

নির্জনতার শরীর প্রশ্নবিদ্ধ
ঘড়েগর ধারে কাপালিক সমৃদ্ধ
উপনিষদের শ্লোক নিপাতনে সিদ্ধ।

কবি শামসুর রাহমান এর জন্মদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলী

SamsurRahman0817a আজ নাগরিক কবি শামসুর রাহমান এর জন্মদিন। শামসুর রাহমান বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে দুই বাংলায় তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠিত। তিনি একজন নাগরিক কবি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তাঁর দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়। জন্ম : অক্টোবর ২৩, ১৯২৯। মৃত্যু : আগস্ট ১৭, ২০০৬। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি তার অমর কীর্তি। জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলী।

জন্ম : নানাবাড়িতে। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম। পিতার বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরায় পাড়াতলী গ্রামে। কবিরা ভাই বোন ১৩ জন। কবি ৪র্থ। পুরোনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ১৯৪৫ সালে। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই এ পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাসও করেছিলেন সেখানে। শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। পাসকোর্সে বিএ পাশ করে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এম এ (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।

পেশা : শামসুর রাহমান পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিক হিসেবে ১৯৫৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক মর্ণিং নিউজ-এ। ১৯৫৭ সাল থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক ছিলেন। এরপর তিনি আবার ফিরে আসেন তার পুরানো কর্মস্থল দৈনিক মর্ণিং নিউজ-এ। তিনি সেখানে ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নভেম্বর, ১৯৬৪ থেকে শুরু করে সরকারি দৈনিক দৈনিক পাকিস্তান এর সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ১৯৭৭ এর জানুয়ারি পর্যন্ত (স্বাধীনতা উত্তর দৈনিক বাংলা)। ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ তে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাঁকে পদত্যাগ বাধ্য করা হয়। অতঃপর তিনি অধুনা নামীয় মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাহিত্যধারা : বিংশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রসিদ্ধ। কেবল বাংলাদেশের কবি আল মাহমুদ এবং পশ্চিমবঙ্গের কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বিংশ শতকের শেষার্ধে তুলনীয় কাব্যপ্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন বলে ধারণা করা হয়। আধুনিক কবিতার সাথে পরিচয় ও আন্তর্জাতিক-আধুনিক চেতনার উন্মেষ ঘটে ১৯৪৯-এ, এবং তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ১৯৪৯ মুদ্রিত হয় সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকায়। শামসুর রাহমান বিভিন্ন পত্রিকায় সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় লিখতে গিয়ে নানা ছন্দনাম নিয়েছেন তিনি যেগুলো হচ্ছে: সিন্দবাদ, চক্ষুষ্মান, লিপিকার, নেপথ্যে, জনান্তিকে, মৈনাক। পাকিস্তান সরকারের আমলে কলকাতার একটি সাহিত্য পত্রিকায় মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) নামে কবিতা ছাপা হয় যা দিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট সমালোচক আবু সায়ীদ আইয়ুব। ব্যক্তিগত জীবন : ১৯৫৫ সালের ৮ই জুলাই শামসুর রাহমান জোহরা বেগমকে বিয়ে করেন। কবির তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। তাদের নাম সুমায়রা আমিন, ফাইয়াজ রাহমান, ফাওজিয়া সাবেরিন, ওয়াহিদুর রাহমান মতিন ও শেবা রাহমান।

প্রতিবাদী কবি : শামসুর রাহমান স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে বিদ্রুপ করে ১৯৫৮ সালে সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল (পত্রিকা) পত্রিকায় লেখেন ‘হাতির শুঁড়’ নামক কবিতা। বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যখন কারাগারে তখন তাঁকে উদ্দেশ্য করে লেখেন অসাধারণ কবিতা ‘টেলেমেকাস’ (১৯৬৬ বা ১৯৬৭ সালে)। ১৯৬৭ সালের ২২ জুন পাকিস্তানের তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী রেডিও পাকিস্তানে রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্প্রচার নিষিদ্ধ করলে শামসুর রাহমান তখন সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা দৈনিক পাকিস্তান-এ কর্মরত থাকা অবস্থায় পেশাগত অনিশ্চয়তার তোয়াক্কা না করে রবীন্দ্র সঙ্গীতের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন যাতে আরো স্বাক্ষর করেছিলেন হাসান হাফিজুর রহমান, আহমেদ হুমায়ুন, ফজল শাহাবুদ্দীন। ১৯৬৮ সালের দিকে পাকিস্তানের সব ভাষার জন্য অভিন্ন রোমান হরফ চালু করার প্রস্তাব করেন আইয়ুব খান যার প্রতিবাদে আগস্টে ৪১ জন কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন যাদের একজন ছিলেন শামসুর রাহমানও। কবি ক্ষুদ্ধ হয়ে লেখেন মর্মস্পর্শী কবিতা ‘বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি গুলিস্তানে একটি মিছিলের সামনে একটি লাঠিতে শহীদ আসাদের রক্তাক্ত শার্ট দিয়ে বানানো পতাকা দেখে মানসিকভাবে মারাত্মক আলোড়িত হন এবং তিনি লিখেন ‘আসাদের শার্ট’ কবিতাটি। ১৯৭০ সালের ২৮ নভেম্বর ঘূর্ণিদুর্গত দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় ও মৃত্যুতে কাতর কবি লেখেন ‘আসুন আমরা আজ ও একজন জেলে’ নামক কবিতা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবার নিয়ে চলে যান নরসিংদীর পাড়াতলী গ্রামে। এপ্রিলের প্রথম দিকে তিনি লেখেন যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় আক্রান্ত ও বেদনা মথিত কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’। শামসুর রাহমান ১৯৮৭ সালে এরশাদের স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে দৈনিক বাংলার প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৮৭ থেকে পরবর্তী চার বছরের তিনি প্রথম বছরে ‘শৃঙ্খল মুক্তির কবিতা’, দ্বিতীয় বছরে ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কবিতা’, তৃতীয় বছরে ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা’ এবং চতুর্থ বছরে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কবিতা’ লেখেন। ১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর লেখেন ‘গণতন্ত্রের পক্ষে কবিতা’। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও জনমানুষের প্রতি অপরিসীম দরদ তাঁর চেতনায় প্রবাহিত ছিল। শামসুর রাহমানের বিরুদ্ধে বারবার বিতর্ক তুলেছে কূপমণ্ডুক মৌলবাদীরা। তাঁকে হত্যার জন্য বাসায় হামলা করেছে। এতকিছুর পরও কবি তাঁর বিশ্বাসের জায়গায় ছিলেন অনড়।

মৃত্যু : কবি শামসুর রাহমান ২০০৬ সালের ১৭ই আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা বেজে ৩৫ মিনিটে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর ইচ্ছানুযায়ী ঢাকাস্থ বনানী কবরস্থানে তাঁর মায়ের কবরে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। জীবদ্দশায় তিনি পেয়েছেন অসংখ্য ভক্ত এবং মানুষের ভালোবাসা। পেয়েছেন আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদক, নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক, জীবনানন্দ পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার, মিতসুবিসি পুরস্কার (সাংবাদিকতার জন্য), স্বাধীনতা পদক এবং আনন্দ পুরস্কার। ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মান সূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে।

sha212300

স্বাধীনতা তুমি

স্বাধীনতা তুমি
রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি
কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-
স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা
স্বাধীনতা তুমি
পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
স্বাধীনতা তুমি
ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।
স্বাধীনতা তুমি
রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
স্বাধীনতা তুমি
মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
স্বাধীনতা তুমি
অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
স্বাধীনতা তুমি
বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর
শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।
স্বাধীনতা তুমি
চা-খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।
স্বাধীনতা তুমি
কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।
স্বাধীনতা তুমি
শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক
স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
স্বাধীনতা তুমি
উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।
স্বাধীনতা তুমি
বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।
স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।
স্বাধীনতা তুমি
গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল,
হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।
স্বাধীনতা তুমি
খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা,
খুকীর অমন তুলতুলে গালে
রৌদ্রের খেলা।
স্বাধীনতা তুমি
বাগানের ঘর, কোকিলের গান,
বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।
________________________________

মহান এই কবির জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। কবি বেঁচে থাকুন অনন্তকাল।

তথ্য সূত্র: বাংলা উইকিপিডিয়া।
প্রদায়ক এর ফেসবুক যোগাযোগ : আজাদ কাশ্মীর জামান।

যুবক রবি অন্য রবি ছিন্নপত্রে শেষ পর্ব …

tagore1aty যুবক রবি অন্য রবি ছিন্নপত্রে ১ম পর্ব এবং যুবক রবি অন্য রবি ছিন্নপত্রে ২য় পর্ব এর পর যুবক রবি শান্তি পেয়েছিলেন। বারবার তাই বলেছেন উদার- উন্মুক্ত প্রকৃতির কথা, নদী ও মেঘের কথা, সন্ধ্যাবেলার বাতাস ও স্তব্ধতার কথা। নির্জন- নিঃসঙ্গ মানুষের সঙ্গে আদিগন্ত ধূ ধূ প্রান্তর- ধান ক্ষেতের মুখোমুখি বসে থাকার মহত্ত্ব পূর্ণ শান্তির কথা। তবে এই শান্তি স্বভাবতই ছিল না নিরবিচ্ছিন্ন বা কেবল ইতিরই কোমলতায় আচ্ছাদিত। নিরর্থকতা, অসারতার অভিজ্ঞতার কথা আগেই বলা হয়েছে। নিঃসঙ্গতা থেকে কোথায় পৌঁছে গিয়েছে তাঁর উপলব্ধি আমরা এখানটায় দেখতে পাই:

“যার সঙ্গে দুটো কথা কয়ে প্রাণ সঞ্চয় করা যায় এমন মানুষ দশ-বিশ ক্রোশের মধ্যে একটি পাওয়া যায় না। কেউ চিন্তা করে না, অনুভব করে না, কাজ করে না, বৃহৎ কার্যের, যথার্থ জীবনের কোনও অভিজ্ঞতা কারও নেই, বেশ একটি পরিণত মনুষ্যত্ব কোথাও পাওয়া যায় না। সমস্ত মানুষগুলো যেন উপচ্ছায়ার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে, খাচ্ছে-দাচ্ছে আপিস যাচ্ছে, ঘুমচ্ছে, তামাক টানছে, আর নিতান্ত নির্বোধের মতো বকর বকর করছে।

যথার্থ মানুষের সংশ্রব পাবার জন্য মানুষের মনে ভারি একটা তৃষ্ণা থাকে। কিন্তু সত্যিকার রক্তমাংসের মানুষ তো নেই। সমস্ত উপচ্ছায়া, পৃথিবীর সঙ্গে অসংলগ্ন ভাবে বাষ্পের মতো ভাসছে।”

কতখানি ক্ষুব্ধ, অশান্ত হলে, অপরিতৃপ্ত বোধ করলে কেউ এমনভাবে লিখতে পারেন? আঁরি বারবুসের ‘নরক’ বইটির নায়ক ছিলেন এমন একাকী, অতৃপ্ত। কাফকার দুই ‘কে’, কামুর মার্সো, সার্ত্রের রক্যাতাঁ যা বলতে পারতো, এভাবে না বললেও বলেছে অন্যভাবে, বা, বুঝিয়ে দিয়েছে যা আচরণে, রবীন্দ্রনাথের এই উচ্চারণ তারই কাছাকাছি: “রক্তমাংসের মানুষ তো নেই। সমস্ত উপচ্ছায়া, পৃথিবীর সঙ্গে অসংলগ্ন ভাবে বাষ্পের মতো ভাসছে।”

কখন লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ এমন কথা? আজি হতে শতবর্ষেরও আগে। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে।

“কারো কারো এমন একটি অকৃত্রিম স্বভাব আছে যে, অন্যের ভিতরকার সত্যটিকে সে অত্যন্ত সহজেই টেনে নিতে পারে। সে তার নিজের গুণে। যদি কোনো লেখকের সবচেয়ে অন্তরের কথা তার চিঠিতে প্রকাশ পাচ্ছে তাহলে এই বুঝতে হবে যে, যাকে চিঠি লেখা হচ্ছে তারও একটি চিঠি লেখাবার ক্ষমতা আছে।”

এ কথার আগে লিখেছেন-

“নিজের যা সর্বোত্কৃষ্ট, ক’জনই বা তা নিজে ধরতে বা পৃথিবীতে রেখে যেতে পেরেছে! আমরাঃ ইচ্ছা করলে, চেষ্টা করলে প্রকাশিত হতে পারিনে। চব্বিশ ঘন্টা যাদের কাছে থাকি তাদের কাছেও আপনাকে ব্যক্ত করা সাধ্যের অতীত।”

‘সহজে সত্য আকর্ষণ করার ক্ষমতাটি’ যে ইন্দিরার আছে সে কথা বিশদ করে অন্য একটি চিঠিতে বলেছেন তিনি। বলেছেন, ‘যে শোনে এবং যে বলে এই দুজনে মিলে তবে রচনা হয়।। তটের বুকে লাগে জলের ঢেউ, তবে সে কলতান উঠে/বাতাসে বনসভা শিহরি কাঁপে, তবে সে মর্মর ফুটে।’

জয় হোক ইন্দিরার, ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীর হোক জয়। বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড়ো এবং বিশ্বসাহিত্যের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখক রবীন্দ্রনাথ যে আজ থেকে একশো বছরেরও আগে এত গভীর ও অগ্রসর চিন্তার তথা আভঁ-গার্দের ধারক হতে পেরেছিলেন তার পেছনে লেখকের তরুণ বয়সের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু ইন্দিরার ভূমিকা অনেক অনেকখানি।

bvc
কৃতজ্ঞতায়ঃ আলতাফ হোসেন।
অবাক বাংলাদেশ, রবীন্দ্রনাথ, সাহিত্য। পদ্মা পাড়ের মানুষ ব্লগ
থেকে সবিনয়ে শেয়ার করা হলো।

প্রদায়ক এর ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

যুবক রবি অন্য রবি ছিন্নপত্রে ২য় পর্ব …

tagore1aty যুবক রবি অন্য রবি ছিন্নপত্রে ১ম পর্বের পর ১৮৯১-এর জানুয়ারি মাসে যুবক রবি একদিন তাকিয়েছিলেন নদীর জলের ব্যস্তসমস্ত গোটাকতক পাতিহাঁসের দিকে

“তারা ভারি কলরব করছে এবং ক্রমাগতই উৎসাহ সহকারে জলের মধ্যে মাথা ডুবোচ্ছে এবং তৎক্ষণাৎ মাথা তুলে নিয়ে সবলে ঝাড়া দিচ্ছে। ঠিক মনে হচ্ছে যেন তারা জলের নিচেকার নিগূঢ় রহস্য আবিষ্কার করবার জন্য প্রতিক্ষণেই গলা বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং তারপর সবেগে মাথা নেড়ে বলছে, ‘কিচ্ছুই না। কিচ্ছুই না।”

পড়ার পর বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে বসে না থেকে উপায় থাকে না। কোনো সন্ধানেই কোনো কিছুই যে পাওয়া যায় না কত প্রাজ্ঞ লোকই না বলে এসেছেন শত শত বছর ধরে সে কথা রবীন্দ্রনাথও কী চমৎকারভাবে একটি ছবি তৈরি করে বলে দিলেন, যা আবার মিলে গেল প্রিয় ফরাসি ঔপন্যাসিক আঁরি বারবুসের ‘দেয়ার ইজ নো ওয়ে আউট অর রাউন্ড অর থ্রু’-র সঙ্গেও, তা উপলব্ধি করে একরকম আশ্বস্ত বোধ করা যায়। প্রায়শই একরকম প্রত্যাশা যে মনে জাগে তা যেন পূরণ হয়।

ওই যে পড়াশোনার প্রসঙ্গ তোলা হয়েছিল, সে ব্যাপারে অনার্স ক্লাসের ছাত্রের মতো একটি প্রমাণ বা সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে চাই। বিবি তথা ইন্দিরাকে লিখছেন রবিকা:

“মানুষের আয়োজনের শেষ নেই।। তাকে যে কত রকমের কত-কী হাতে রাখতে হয় তার ঠিক নেই। সেই জন্য আমার সঙ্গে নেপালীজ বৌদ্ধিস্টিক লিটেরেচার থেকে আরম্ভ করে শেক্সপিয়ার পর্যন্ত কত রকমেরই বই রাখতে হয় তার ঠিকানা নেই।”

অন্য যা কারণ তার কথাও বলা হয়েছে: প্রকৃতি, প্রকৃতি এবং প্রকৃতি। প্রকৃতি থেকেও মানুষ তার জীবন জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজে পেতে পারে বলে পণ্ডিতেরাই বলেন। সারা ছিন্নপত্র- ছিন্নপত্রাবলী জুড়ে রয়েছে প্রকৃতি বর্ণনা। প্রশান্ত এক আবহ রচিত হয়েছে সেখানে। আর রয়েছে এমন গভীর উপলব্ধির কথা:

“আমার বোধ হয় কলকাতা ছেড়ে বেরিয়ে এলেই মানুষের নিজের স্থায়িত্ব এবং মহত্বের ওপর বিশ্বাস হ্রাস হয়ে আসে। এখানে মানুষ কম এবং পৃথিবীটাই বেশি। চারিদিকে এমন সব জিনিস দেখা যায় যা আজ তৈরি করে কাল মেরামত করে পরশু দিন বিক্রি করে ফেলবার নয়, যা মানুষের জন্ম-মৃত্যু ক্রিয়াকলাপের মধ্যে চিরদিন অটলভাবে দাঁড়িয়ে আছে, প্রতিদিন সমানভাবে যাতায়াত করছে এবং চিরকাল অবিশ্রান্ত ভাবে প্রবাহিত হচ্ছে।”

চিরকালের এই অবিশ্রান্ত প্রবাহের অনুষঙ্গে এসে পড়ে হেরমান হেস-এর ‘সিদ্ধার্থ’ পড়ার স্মৃতি। কৈশোর যৌবনের সন্ধিক্ষণে আমরা কেউ কেউ বইটি পড়তে গিয়ে কাঁপতে-কাঁপতে ভেবেছি জীবনের একটা অর্থ বুঝি এবার পাওয়া যাবে। অনেক চেষ্টা, অনেক ভ্রমণের পর সিদ্ধার্থ যখন গৌতমের দেখা পেল তখন কিছু প্রশ্ন করল তাঁকে। কিন্তু উত্তর তাকে সন্তুষ্ট করল না। কী ভাবে করবে? গৌতমের নিজেরও তো জানা ছিল যে, উত্তর নেই। বলেছিলেন তিনি: তোমার পথ তোমার নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে। তখন সিদ্ধার্থ গেল কমলা নামের নৃত্যগীত ও চৌষট্টি কলায় পারদর্শিনী এক রূপোপজীবিনীর কাছে। কমলা এতটাই সহৃদয়া যে কেবল তাকে নিয়ে লেখা কবিতার বিনিময়ে সে সিদ্ধার্থকে দান করল তার শরীর ও মন। ভালোবাসার বন্ধনে জড়ালো তাকে। কিন্তু তাতে চিত্ত ভরল না সিদ্ধার্থের। একদিন বিদায় নিয়ে পথ চলতে-চলতে সে পৌঁছল এক নদীর ধারে। সেখানে খেয়া তরীর মাঝির সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হলো তার। সে মাঝিই তাকে বলে দিল জীবন হচ্ছে চির প্রবহমান নদীর মতো। এইখানে এসে আমার কাঁপুনি থেমে গিয়েছিল। তখন নিরাশ কি হয়েছিলাম, না কি জেনে শান্ত যে, তাই তো, তাই তো, অন্যরকম উত্তর পেলে তো হেরমান হেসকেই ছুঁড়ে ফেলতে হতো, মনে পড়ছে না। পরে অবশ্য এই চিন্তাই স্থিতি পেয়েছে যে, উত্তর তো এমনই প্রত্যাশিত। নদী চলেছে বহে। জীবনও সেইমতো। শান্তি যদি পাও এতে, পাবে, না হলে পাবে না।

bvc
কৃতজ্ঞতায়ঃ আলতাফ হোসেন।
অবাক বাংলাদেশ, রবীন্দ্রনাথ, সাহিত্য। পদ্মা পাড়ের মানুষ ব্লগ
থেকে সবিনয়ে শেয়ার করা হলো।

যুবক রবি অন্য রবি ছিন্নপত্রে ১ম পর্ব …

tagore1aty ছিন্নপত্রে কীভাবে এমন পরিণত ও আধুনিকমনস্ক রবীন্দ্রনাথকে আমরা পাই তার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা তাঁর অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তি, পাঠাভ্যাস ও প্রকৃতি প্রেমের কথা জেনে ছিলাম। তবে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে কারণটি সেটি হচ্ছে ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীর তথা বুড়ির প্রতি রবীন্দ্রনাথের অপ্রতিরোধ্য টান। অন্য কারো সাক্ষ্য মানার দরকার নেই, চিঠিগুলো পড়তে-পড়তে যে কেউ দেখতে পাবেন, ‘যার সঙ্গে দুটো কথা কয়ে প্রাণ সঞ্চয় করা যায়’। তিনি ছিলেন প্রাপয়িত্রী ইন্দিরা দেবী স্বয়ং। তার মধ্যে তরুণ কাকা রবীন্দ্রনাথ পেয়েছিলেন ‘বেশ একটু পরিণত মনুষ্যত্ব।’

“আমি অন্তরে অসভ্য, অভদ্র। আমার জন্য কোথাও কি একটা ভারি সুন্দর অরাজকতা নেই? কতকগুলো খ্যাপা লোকের আনন্দমেলা নেই?”

১৮৯২ খ্রীষ্টাব্দের জুন মাসে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীর উদ্দেশে একটি চিঠিতে এই পঙক্তি ক’টি লিখে ফেলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। আর মনে হবে কী বকছেন তিনি!

আজ ২০১০ সালেও ক’জন বাঙালি কবি সাহিত্যিক এমন করে পারবেন বলতে? যদি হঠাৎ বলেও ফেলেন ‘অসভ্য, অভদ্র’ নিজেকে, লজ্জা পেয়ে যাবেন হয়তো, ভাববেন- যে কী বকছেন তিনি !!

১১৮ বছর পরও আমরা কি আছি একই জায়গায় দাঁড়িয়ে?

“মানুষ কি লোহার কল যে ঠিক নিয়ম অনুসারে চলবে? মানুষের মনের এত বিচিত্র এবং বিস্তৃত কাণ্ড-কারখানা। তার এত দিকে গতি। এবং এত রকমের অধিকার যে এ দিকে-ও দিকে হেলতেই হবে। সেই তার জীবনের লক্ষণ, তার মনুষ্যত্বের চিহ্ন, তার জড়ত্বের প্রতিবাদ। এই দ্বিধা, এই দুর্বলতা যার নেই তার মন নিতান্ত সংকীর্ণ এবং কঠিন এবং জীবন বিহীন। যাকে আমরা প্রবৃত্তি বলি এবং যার প্রতি আমরা সর্বদাই কটু ভাষা প্রয়োগ করি সেই তো আমাদের জীবনের গতিশক্তি।”

ভাইঝি ইন্দিরার উদ্দেশে যুবক রবির এই চিঠি ১৮৯০ সালের ১০ই অক্টোবর লেখা। কিন্তু এইসব এ কালেরই কথা। চিরকালেরই কথা আসলে, কিন্তু এখনও আমরা ততটা অভ্যস্ত হতে পারিনি এমন কথায়। দ্বিধা-দুর্বলতাকে মেনে নিতে আমাদের এখনও চরম আপত্তি। একই রকম উপলব্ধি হলেও দু-একজন বাদে আমাদের লিখকরা এমন কথা লিখার মতো সৎ বা সাহসী হন না। তাই যেতে ইচ্ছা হয় কখনো-কখনো আর সব লেখককে এক পাশে সরিয়ে রেখে ১৮৮৭ থেকে ১৮৯৫ সালের যুবক রবীন্দ্রনাথের কাছে। যখন তাঁর বয়স ২৬ থেকে ৩৪। ভেবে অবাকই লাগে, যখন তাঁর চারপাশের লিখার জগতে চিন্তার জগতে কূপমণ্ডূকতা, হিংসা-দ্বেষ আর কুটিলতা (দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে চাইলে অনেক পৃষ্ঠার এক বই লিখতে হবে) তখন রবীন্দ্রনাথের মাথায় কী করে প্রবেশ করেছিল আভঁ-গার্দের আলো? একটি কারণ যদি অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তি বা গভীর উপলব্ধি শক্তি হয়ে থাকে, অন্যটি নিশ্চয় পড়াশোনা। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রকৃতি প্রীতি। শেক্সপিয়ারের ‘কিং লিয়র’ লেখা হয়েছিল আরও অনেক বছর আগে, যাতে রয়েছে দুর্বিষহ যন্ত্রণা, সংশয়, প্রকৃত বাস্তব তথা অধিকতর বাস্তবতাকে উপলব্ধি করার উপাদান। হ্যামলেট নাটকেও আমরা পেয়েছি প্রাজ্ঞ নায়কের প্রচণ্ড দ্বিধাপীড়িত কাতরতার চালচিত্র। জীবনের নিরর্থকতা, হাস্যকরতা নিয়েও বহুকাল ধরেই কবিতা, গান, নকশা-পালা লেখা হয়ে আসছিল বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই তার কিছু বয়ান। রবীন্দ্রনাথের চিন্তায় কি পড়েছিল ছাপ খানিকটা সে বোধের-ভাবনারও? ১৮৯১ সালের ২০ জুন যুবা রবীন্দ্রনাথের কলমে এসেছিল এই পংক্তিগুলো :

“আমি তো পূর্বেই বলেছি জীবনটা একটা গম্ভীর বিদ্রুপ, এর মজাটা একটু বোঝা শক্ত। কারণ যাকে নিয়ে মজা করা হয়, মজার রসটা সে তেমন গ্রহণ করতে পারে না। এই মনে করো দুপুর রাত্রে খাটে শুয়ে আছি, হঠাৎ পৃথিবীটা ধরে এমনি নাড়া দিলে যে কে কোথায় পালাবে পথ পায় না। মতলবটা খুব নতুন রকমের এবং মজাটা খুব আকষ্মিক তার আর সন্দেহ নেই। বড়ো বড়ো সম্ভ্রান্ত ভদ্রলোকদের অর্ধেক রাত্রে উর্দ্ধশ্বাসে অসম্বৃত অবস্থায় বিছানার বাইরে দৌঁড় করানো কি কম কৌতুক ! এবং দুটো-একটা সদ্যোনিদ্রোত্থিত হতবুদ্ধি নিরীহ লোকের মাথার উপরে বাড়ির আস্ত ছাদটা ভেঙে আনা কি কম ঠাট্টা! হতভাগ্য লোকটা যেদিন ব্যাংকে চেক লিখে রাজমিস্ত্রীর বিল শোধ করছিল, রহস্যপ্রিয়া প্রকৃতি সেইদিন বসে কত হেসেছিল!”

লক্ষ্য করা যায়, রবীন্দ্রনাথ এখানে রহস্যপ্রিয়া প্রকৃতির কথা বলেছেন, ঈশ্বরের কথা নয়। তবে জীবনটাকে যে ‘একটা গম্ভীর বিদ্রুপ’ বলেছেন তিনি, বলতে পেরেছেন একশো বছরেরও আগে এটাই আমাদের মনে বিস্ময়ের উদ্রেক করে। পরের দিনের পরের দিন রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন:

“এক দল আছে তারা ছটফট করে ‘জগতের সকল কথা জানতে পারছি নে কেন’, আর এক দল ছটফটিয়ে মরে ‘মনের সকল ভাব প্রকাশ করতে পারছি নে কেন’। মাঝের থেকে জগতের কথা জগতেই থেকে যায় এবং অন্তরের কথা অন্তরেই থাকে।”


কৃতজ্ঞতায়ঃ আলতাফ হোসেন।
অবাক বাংলাদেশ, রবীন্দ্রনাথ, সাহিত্য। পদ্মা পাড়ের মানুষ ব্লগ থেকে সবিনয়ে শেয়ার করা হলো।

প্রকাশিত হলো শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা – ২০১৩ ই লিটলম্যাগ

cove-r1aa

শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা ২০১৩ – ই লিটলম্যাগ এ যাদের লেখা এলো। পোস্টে আপনাদের উচ্ছাস আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা হয়েছি উৎসাহী বিমোহিত।

কারিগরের প্রতিটি সৃষ্টি এক বৈঠকে কখনই পূর্ণতা পায় না। রয়ে যায় ত্রুটি। আরো পরিচ্ছন্ন করবার ইচ্ছে তাগিদ। সত্য স্রষ্টাকে বাঁধ ভাঙ্গা অপেক্ষা করতে হয় মানসম্মত কিছু উপহারের। অপেক্ষা করতে হয় দিনের পর দিন। শব্দনীড় নবীন বরণ সংখ্যা ২০১৩। সংখ্যাটি প্রকাশ পেতেই নতুন সৃষ্টি উপহারের তাগিদে এগিয়ে এলেন শব্দনীড় এর অহংকার সুমন আহমেদ। ব্যক্তিজীবনে অতিব্যস্ত এই মানুষটি অঙ্গ সৌষ্ঠবে নতুন একটি ই-বুক নতুন আঙ্গিকে শব্দনীড় পাঠকদের ঈদ উপহার হিসেবে দেবার কাজে লেগে পড়লেন। যথেষ্ট পরিশ্রম দিলেন প্রায় দেড় মাস। সম্পূর্ণ হলো একটি মহা অধ্যায়। অতৃপ্তি থেকে তৃপ্তি।

এখন আমরা বলতে পারি, যে চেতনা আর রুচি বোধের স্বপ্ন নিয়ে একটি নান্দনিক ই-বুক এর স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম; তার পূর্ণতা পেলো আজ। কাজের ক্ষেত্রে সমমনা মানুষের কতটা প্রয়োজন তা যিনি জানেন তিনি ই জানেন। সুমন আহমেদ কে অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই একটি মানুষের ভিতর আমি দেখেছি এক আকাশ সম্ভাবনা। যিনি রূপ থেকে রূপান্তর করে ফেলেন নিমিষে। নান্দনিক সৃষ্টিতে যার জুড়ি মেলা ভার। তাঁর জন্য ভালোবাসা এবং শব্দনীড় সম্মান।

পরিশেষে সফল হলো। তৈরী হলো এবং মুক্তি পেলো একটি ই-বুক। আমাদের স্বপ্ন এবং ভালোবাসার একটি সংখ্যা। শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা ২০১৩ – ই লিটলম্যাগ। পবিত্র ঈদের আগে ভাগেই অনেকেই ঘরমুখী হবেন তাদের কথা মাথায় রেখে সংখ্যাটি আজ প্রকাশ করতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। সংখ্যাটি তৈরীতে সম্মানিত সুমন আহমেদ কে আমাদের সীমাহীন কৃতজ্ঞতা।

উপদেষ্টা এবং সমন্বয়কারী : আজাদ কাশ্মীর জামান। ব্লগ নিক : মুরুব্বী।
সম্পাদক : সুমন আহমেদ।
প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ : সুমন আহমেদ।

শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা ২০১৩ – ই লিটলম্যাগ এর জন্য যারা স্বতস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে এসেছেন তাঁদের উৎসর্গেই আমাদের প্রত্যাশিত এই অ্যালবামটি।

অনুবাদ কবিতা

stock-ve রেজা নুর
stock-ve জিয়া রায়হান
stock-ve অজরখেচর

গুচ্ছ কবিতা

stock-ve বাবুল হোসেইন
stock-ve ফরিদুল আলম সুমন
stock-ve আজাদ কাশ্মীর জামান
stock-ve সুমন আহমেদ
stock-ve নাজমুন নাহার
stock-ve রিয়া দাশ গুপ্তা

কবিতা

stock-ve শাকিলা তুবা
stock-ve কে এম রাকিব
stock-ve ডা. দাউদ
stock-ve আফজাল খান
stock-ve চারুমান্নান
stock-ve মহাকালের প্রতিচ্ছবি
stock-ve খেয়ালী মন
stock-ve আশিক রেজা
stock-ve গাজী তারেক আজিজ
stock-ve তায়েবুল জিসান
stock-ve সালমান মাহফুজ
stock-ve বখতিয়ার শামীম
stock-ve গোমূমোকৃঈ
stock-ve সৈয়দ মাজারুল ইসলাম (রুবেল)
stock-ve এ হুসাইন মিন্টু
stock-ve উলুখাগড়া
stock-ve জহির খান
stock-ve রাজীব সরকার
stock-ve সঞ্জয় কুমার মুখার্জি
stock-ve মোহাম্মদ আনু
stock-ve বৈশাখী ঝড়
stock-ve তাহমিদুর রহমান
stock-ve ফেরদৌসী বেগম (শিল্পী)
stock-ve জেড এ বাবুল পাঠান
stock-ve হান্নান হামিদ লিখন
stock-ve অপ্সরা মীম
stock-ve খন্দকার আযাহা সুলতান
stock-ve আজিম হোসেন আকাশ
stock-ve আমিনুল ইসলাম
stock-ve আলমগীর সরকার লিটন
stock-ve মোঃ রাফাত শেখ
stock-ve আর.এইচ.মামুন

ছড়া কবিতা

stock-ve এস. এম. কামরুল ইসলাম
stock-ve প্রিন্স মাহমুদ হাসান
stock-ve মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম
stock-ve সুমন কুমার সাহু
stock-ve মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন

গল্প

stock-ve মাহবুব আলী
stock-ve সুখী ইসলাম
stock-ve কবিরনি
stock-ve ভালবাসার দেয়াল
stock-ve সেলিনা ইসলাম
stock-ve নাজমুল হুদা
stock-ve আদর
stock-ve সুপণ শাহরিয়ার
stock-ve বদরুল ইসলাম
stock-ve কাউসার মোঃ সায়েম
stock-ve আরাফ করিম

প্রবন্ধ

stock-ve মাঈনউদ্দিন মাইনুল
stock-ve স্বপ্নীল
stock-ve এম. এ. বাসেত
stock-ve আমির হোসেন

সাহিত্য আলোচনা

stock-ve মুহাম্মাদ আমানুল্লাহ
stock-ve ফিদা

মুক্তিযুদ্ধ

stock-ve সাঈদ মোহাম্মদ ভাই
stock-ve মোঃ খালিদ উমর
stock-ve জাজাফী

রম্য রচনা

stock-ve হরবোলা
stock-ve ডাক্তারের রোজনামচা
stock-ve শুভ্র সমুজ্জ্বল
stock-ve আ,শ,ম এরশাদ

প্রবাস

stock-ve তির্যক নীল

ভ্রমণ ও ছবি ব্লগ

stock-ve মাতরিয়শকা
stock-ve জেসমিন
stock-ve সাইক্লোন
stock-ve নিঃশব্দ যাত্রী

চিঠি

stock-ve কুহক
stock-ve এমদাদুল হক তুহিন

লিখক পাঠক সংগ্রাহক সবাইকে জানাচ্ছি প্রীতি এবং শুভেচ্ছা। শুভ ব্লগিং।
Devider

১৬০ পৃষ্ঠার ফাইল সাইজ : ১৪.৪৮ মেগাবাইট। ডাউনলোড করুন লিঙ্ক থেকে।
শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা – ২০১৩ ই লিটলম্যাগ।
17530aa

9c59a

পোস্ট দাতার ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা – ই লিটলম্যাগ এ যাদের লেখা এলো

শব্দনীড় এ প্রতিদিন নতুন নতুন ব্লগার ব্লগে নিবন্ধন করছেন এবং লিখা পোস্ট করছেন। দিনের পর দিন শব্দনীড় পরিবারের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের স্বপ্নগুলো আরো বড় হচ্ছে। আমরা যেন ক্রমাগত সাহসী হয়ে উঠছি। দিনদিন প্রতিদিন। শিখছি। পড়ছি। একে অপরকে জানছি। শুভেচ্ছা জানিয়ে যাচ্ছি।

ব্লগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আয়োজন করা হয়। লিখা পাঠানোর প্রতিযোগিতা, আড্ডা, পরামর্শ। ব্লগারদের লিখা নিয়ে প্রকাশিত হয় ই-বুক বা ই-ম্যাগাজিন। যেখানে নতুন পুরোনো সকলের সম উচ্ছাসে উদ্ভাসিত হয় প্রযুক্তির আরো একটি দিক। ব্লগের লিখা পরের পাতায় চলে যায়। খুঁজে বের করতে হয়। সেখানে একটি ই-ম্যাগাজিন বুক শেলফে রাখা অলঙ্কারের মতো। উপহার দেবার মতো।

কলেজ জীবনের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কথা কি মনে পড়ে? ভুলে যাবার কথা নয়।
শব্দনীড় এগিয়ে যাবে তার আপন গতিতে। কেননা যেখানে ব্লগাররাই ব্লগের প্রাণ।

শব্দনীড় ঈদ সংখ্যা ২০১৩ – ই লিটলম্যাগ এখন সার্বিক দিক থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যে কোন দিন যে কোন সময় মুক্তি পেয়ে যেতে পারে আপনার আমার আমাদের প্রত্যাশিত এই এ্যালবামটি। যাদের লিখা এই সংখ্যায় এলো।

অনুবাদ কবিতা

stock-ve রেজা নুর
stock-ve জিয়া রায়হান
stock-ve অজরখেচর

গুচ্ছ কবিতা

stock-ve বাবুল হোসেইন
stock-ve ফরিদুল আলম সুমন
stock-ve আজাদ কাশ্মীর জামান
(ব্লগ নিক: মুরুব্বী)
stock-ve সুমন আহমেদ
stock-ve নাজমুন নাহার
stock-ve রিয়া দাশ গুপ্তা

কবিতা

stock-ve শাকিলা তুবা
stock-ve কে এম রাকিব
stock-ve ডা. দাউদ
stock-ve আফজাল খান
stock-ve চারুমান্নান
stock-ve মহাকালের প্রতিচ্ছবি
stock-ve খেয়ালী মন
stock-ve আশিক রেজা
stock-ve গাজী তারেক আজিজ
stock-ve তায়েবুল জিসান
stock-ve সালমান মাহফুজ
stock-ve বখতিয়ার শামীম
stock-ve গোমূমোকৃঈ
stock-ve সৈয়দ মাজারুল ইসলাম (রুবেল)
stock-ve এ হুসাইন মিন্টু
stock-ve উলুখাগড়া
stock-ve জহির খান
stock-ve রাজীব সরকার
stock-ve সঞ্জয় কুমার মুখার্জি
stock-ve মোহাম্মদ আনু
stock-ve বৈশাখী ঝড়
stock-ve তাহমিদুর রহমান
stock-ve ফেরদৌসী বেগম (শিল্পী)
stock-ve জেড এ বাবুল পাঠান
stock-ve হান্নান হামিদ লিখন
stock-ve অপ্সরা মীম
stock-ve খন্দকার আযাহা সুলতান
stock-ve আজিম হোসেন আকাশ
stock-ve আমিনুল ইসলাম
stock-ve আলমগীর সরকার লিটন
stock-ve মোঃ রাফাত শেখ
stock-ve আর.এইচ.মামুন

ছড়া কবিতা

stock-ve এস. এম. কামরুল ইসলাম
stock-ve প্রিন্স মাহমুদ হাসান
stock-ve মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম
stock-ve সুমন কুমার সাহু
stock-ve মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন

গল্প

stock-ve মাহবুব আলী
stock-ve সুখী ইসলাম
stock-ve কবিরনি
stock-ve ভালবাসার দেয়াল
stock-ve সেলিনা ইসলাম
stock-ve নাজমুল হুদা
stock-ve আদর
stock-ve সুপণ শাহরিয়ার
stock-ve বদরুল ইসলাম
stock-ve কাউসার মোঃ সায়েম
stock-ve আরাফ করিম

প্রবন্ধ

stock-ve মাঈনউদ্দিন মাইনুল
stock-ve স্বপ্নীল
stock-ve এম. এ. বাসেত
stock-ve আমির হোসেন

সাহিত্য আলোচনা

stock-ve মুহাম্মাদ আমানুল্লাহ
stock-ve ফিদা

মুক্তিযুদ্ধ

stock-ve সাঈদ মোহাম্মদ ভাই
stock-ve মোঃ খালিদ উমর
stock-ve জাজাফী

রম্য রচনা

stock-ve হরবোলা
stock-ve ডাক্তারের রোজনামচা
stock-ve শুভ্র সমুজ্জ্বল
stock-ve আ,শ,ম এরশাদ

প্রবাস

stock-ve তির্যক নীল

ভ্রমণ ও ছবি ব্লগ

stock-ve মাতরিয়শকা
stock-ve জেসমিন
stock-ve সাইক্লোন
stock-ve নিঃশব্দ যাত্রী

চিঠি

stock-ve কুহক
stock-ve এমদাদুল হক তুহিন

তালিকায় কারো নাম বাদ পড়লে পুনরায় সংশোধন করা যাবে। লিখক পাঠক এবং সম্মানিত সংগ্রাহক সবাইকে জানাচ্ছি প্রীতি এবং শুভেচ্ছা। শুভ ব্লগিং।
Devider

পোস্ট দাতার ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

প্রবর্তনা

redhearta

কে তোমার কাছে এসেছিলো কাল রাতে ?

তুমি তো রমণী শুধু নও। তবু কেন জানালার
কার্নিশে চিবুক রেখে প্রলয়ের স্বপ্ন দেখো ?
বাতাসের গর্ভ থেকে-
প্রসূত জন্মের পাপ কখনও সম্ভব নয়
মুছে ফেলা। মোহনীয় দুটি হাতে
বরং এখনই তুলে নাও শর্তহীন ফল।

ভৌতিক প্রবর্তনায়, অনন্তের প্রথম ছোঁয়ায়
শীতের কম্বল ছেড়ে চলে গেছে নিরুদ্দিষ্ট সন্ত।
এভাবেই যায়।

তার পরিচয়-
এখানে জানে না কেউ। কোনদিন জানবে না আর।
চিহ্নহীন চিহ্ন তার শুধু পড়ে আছে নিভৃত পৃষ্ঠাতে।

কে ছিল তোমার ঘরে কাল রাতে ?

জানি না কখন উপড়ে ফেলেছ
বুকের শেকড়
মাতাল প্রহরে সিম্ফনি বাজে
ছায়ার ভেতর।

রোদের আড়ালে কারা কথা বলে
বিপরীত কালে
সোনালী মাকড় ধরা পড়ে তার
নিজস্ব জালে।

মেঘের মিনার ভেঙ্গে গেলে থাকে
জৈবিক নীল
শূন্যতা জানে শূন্য সে নয়
ব্যাপ্ত অখিল।

redheart01a