নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

বাসর ঘরে

বিয়ের পরে বাসর ঘরে,
সজ্জিত পালঙ্কের পরে।
বসে আছে বউ,
দেখেনি তা কেউ।

জবরদস্তি স্বামীটারে,
দিল ঠেলে ওই না ঘরে।
চোখা চোখির ঢেউ,
দেখেনি তা কেউ।

পা ছুঁয়ে বউ করল প্রনাম,
বলল স্বামী তোমার হলাম।
মরল বিড়াল মেউ,
জানেনি তা কেউ।

ভাবল স্বামী, পেলাম প্রনাম,
বিনিময়ে কি বা দিলাম।
ডাকল কুকুর ঘেউ,
শোনেনি তা কেউ।

তাই প্রনামের বিনিময়ে,
বউয়ের চরণ ঘাড়ে নিয়ে।
উঠল মজার ঢেউ!
বোঝেনি তা কেউ।

জগা দা

ডাকে নাক কাঁপে পাড়া
ভুঁড়ি ছোঁয় আকাশে,
জগা দা ঘুম যায়
দখিনা বাতাসে।

নাকে আঙুল দিয়ে
বের করে ময়লা,
চক চকে সাদা দাঁত
রোজ মাজে কয়লা।

চিনি ছাড়া চা খায়
বেশ বড় আওয়াজে,
থু থু ছেড়ে কথা কয়
গন্ধটা কি বাজে!

তিন মাস কাচে না
ঘামে ভেজা জামাটা,
দাঁড়ি গোঁফে একাকার
ঢেকে গেছে মুখটা।

নখ গুলো বড় বড়
মনে হয় ডাস্টবিন,
পিক দিয়ে ঘর ভরে
বউ বকে প্রতিদিন।

বুড়ো ভাম

টাকার জোরে বউ ছেড়েছি
করছি নতুন বিয়ে,
বরযাত্রী যাচ্ছি ছেলে মেয়ে
সঙ্গে নিয়ে।

পুরান জিনিস আমি আবার
লাইক করি কম,
নিত্য নতুন ছোয়া পেতে
করছি পরিশ্রম।

নতুন বউয়ের ছোট বোনের
তাক লাগানো রুপ,
হাসি ঠাট্টা যতই করি
শালী আমার চুপ।

চুপ থাকো আর যাই করো
নেক্সট টার্গেট তুমি,
দরকার হলে লিখে দেবো
বিঘে পাঁচেক জমি।

ধন সম্পদ সবি আছে
কিছুর অভাব নাই,
বয়সটা যে শেষের পথে
ভাবছি কোথায় পাই!

উত্তেজনা

দেহ নাচে মন দোলে,
ছলে বলে কৌশলে।
কত কথা যায় বলে,
কি নেশায় পড়ে ঢলে!

হৃদয়ের রাস্তায়,
মনে প্রাণে সত্তায়।
সুখ অনুভূত হয়,
যায় দেহ ঘেমে যায়!

নিঃশ্বাস স্বস্তির,
প্রাণ হয় গম্ভীর।
ভাঙ্গতে ও প্রাচীর,
দেহ বড় অস্থির।

দেহে দেহ সহজে,
বাঁধ ভাঙ্গা আওয়াজে।
শুধু সুখ বিরাজে,
মনে মন কি কাজে?

দেহ যদি সুখ পায়,
কলঙ্কে নেই ভয়!
থাক মনে থাক ভয়,
কম মেলে এ সময়!

ও চোখের পলকে,
বিজলির ঝলকে।
মন বলে দেহকে,
বাঁধ সাধে বিবেকে!

সুখের সন্ধানে

আমার ঘরের অভাব
আর তোমার বাজে স্বভাব,
নুন পান্তার এ সংসারে
ফেলছে ব্যাপক প্রভাব।

টেনে হিঁচড়ে চলা
আর হেঁসে মিথ্যে বলা,
তাঁর মধ্যে গলার কাঁটা
তোমার ছলাকলা।

সবই শুনে বুঝে
এই অভাবের মাঝে,
মাথা বেঁচে কিছু টাকা
দিলাম হাতে গুজে।

নিয়েই পগার পার
বোঝালাম বার বার,
শুনি অনেক পয়সা ওয়ালা
হাত ধরেছো যার।

কোটি টাকার মাঝে
ব্যস্ত ভীষণ কাজে,
তোমায় শুধু ইউজ করে
বিহেব করে বাজে।

লাজে ঢাকি মুখ
কষ্টে ফাটে বুক,
সেদিন তুমি সুখী হবে
তোমায় খুঁজলে সুখ।

ঋণ

খুব মনে পড়ে যখন তুমি, চোখের জলে ভাসো,
একটি বারও স্মরণ করো না, যখন সুখে হাঁসো।
জীবন যুদ্ধে অগ্রসর হও, নিয়ে প্রেরণার বল,
পরাজিত হলে তবেই শত, বেদনার কোলাহল।

বিজয়ী সেনার বেশে যখন, তুমি মাথা উঁচু করে,
অতীতের কথা যাও ভুলে যাও, আগামী দিনকে স্মরে।
কার হাত ধরে ফুটফাত হতে, এসেছো রাজ প্রাসাদে?
তোমার কষ্টে দিবা রাত্রি, কে গিয়েছিল কেঁদে?

আজকে দেখার সময় কোথায়, তাঁর চোখের ওই জল?
দেখেও দেখোনা বাঁধা পায় শেষে, এগুবার মনোবল!
যে জন কেঁদে চোখ ভিজিয়ে, এনেছে সার্থকতা,
ভেবে দেখবার সময় মেলে না, তাঁর প্রাণে কত ব্যথা?

নিজের দেহের রক্ত দিয়ে, মিটিয়েছে তৃষ্ণা,
আলেয়ার পিছে ছুটে চলে তাকে, করে যাও শুধু ঘৃণা?
বিনিময়ে কিছু চায়নি তো সে, চেয়েছে মিষ্টি সূর,
মেকি মমতার মায়াজালে ফেঁসে, করে গেছো দূর দূর!

প্রাসাদের কোনে বসে ভাবো সুখ, টাকা দিয়ে কেনা যায়,
অভিশাপ ছানি পড়লে চোখে, এমনি মনে হয়।
আজকে আবার প্রাসাদ হতে, এসে গেছো ফুটফাতে?
তাঁর কথা ভেবে চোখে জল আসে, ঘুম নেই এই রাতে!

জর্জরিত

যদি তুমি মেনে নাও, তবে তুমি বেশ,
যদি রুখে দাঁড়ালে, তবে তুমি শেষ!
সয়ে যাও নীরবে, সব অনাচার,
প্রতিবাদ করলে, ক্ষমা নাই আর।

নিঃশেষ হয়ে যাও, তুমি তিলে তিলে,
রাষ্ট্রের সব ধন, খাক ওরা গিলে।
চিকিৎসা শিক্ষা, নয় মন মত?
ভুলে যাও, ওই দিন হয়ে গেছে গত।

যেই দিন এই দেশে, ছিল সু-শাসন,
হক কথা বলতে, ছিল না বারণ।
স্বাধীনতা ছিল, ছিল সমান অধিকার,
ছোট বড় সকলের, ছিল সমাদর।

শাসনের নামে আজ, চলছে শোষণ,
জনসেবা নামে চলে, উদর ভোজন।
মা বোন ভয়ে ভয়ে চলে রাস্তায়,
ধর্ষণ হত্যা, প্রতি ক্ষণে হয়।

বাক স্বাধীনতা যদি, নেয় কেউ কেড়ে,
বঞ্চিতের সংখ্যা, দিন দিন বাড়ে।
অনিয়ম পুষে রেখে, নীতি কথা বলা,
মিথ্যা অজুহাতে, নানা ছলাকলা।

দুর্নীতি ঠেকাতে, প্রতিবাদী হলে,
জেনে নাও নিশ্চিত, যাবে তুমি জেলে।
নিভৃতে কাঁদো কেন? তুমি নিরুপায়!
প্রতিবাদে ঝড় তোলো, তবে হবে জয়।

যদি তুমি চুপ থাকো, সব হবে শেষ,
একদিন দেখবে, নেই এই দেশ।
রক্তের বিনিময়ে, পাওয়া স্বাধীনতা,
পরাধীন জনগণ, বুক ভরা ব্যাথা।

প্রতিবাদ প্রতিবাদ, করো প্রতিবাদ,
আর কত ভয় পাবে? ওরে নির্বোধ!
তুমি ভয় পাও তাই, ওরা সাহসী,
নিজ দেশে তাই তুমি, আজ বিদেশী!

তুমি ও প্রকৃতি

বৈশাখী ঝড়ো হাওয়া বইছে প্রাণে,
কামনার দোলা দাও তুমি ক্ষণে ক্ষণে।
প্রাণ ওই ঝর্ণার ধারা ছুতে চায়,
ঝরা ফুল পড়ে থাকে পথের ধুলায়।

নীল আকাশ দূরে যায় এ শহর ছাড়ি,
ধ্রুব তারা মেঘে ঢেকে যায় তাড়াতাড়ি।
পরশ বুলিয়ে যায় সাদা কাশ ফুল,
মৃদু ঢেউ ছুয়ে যায় জীবনের কূল।

পাখিরা বাসর গড়ে ডালে আনমনে,
সাথী হারা ভয় প্রাণে জাগে প্রতি ক্ষণে।
নীল আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেলে হায়,
চমকাই বারে বারে শুধু গজরায়।

স্রোতে ভাসা শেওলা খুঁজে পায় কূল,
তারার মেলায় ঠাঁই খুঁজি এক চুল।
ঝর্ণার ধারা মেলে, যেই নদীতে,
প্রেমের বাঁধনে তারে চায় বাঁধিতে।

বিরহ দোলা দেয় আষাঢ়ের ক্ষণে,
বরষার ধারা যেন রুপ নেয় বানে।
যায় ভেসে শস্য ভাসে বাড়ি ঘর,
প্রকৃতির রোষানলে প্লাবিত নগর।

এ হৃদয়ে জলছে, যে প্রেমের অনল,
কামনার যাতনারা করে কোলাহল।
শিহরণ জাগাতে তুমি এলে কাছে,
প্রকৃতির মত সব তোমাতেও আছে।

কখনও ভাসাও সুখে আমার ধরা,
কখনও বা সেখানে বেদনার খরা।
অনুরাগে অভিমানে হাজারো স্মৃতি,
হৃদয় জগতে প্রিয়া তুমি প্রকৃতি।

উপভোগের প্রেম

করতে চাও প্রেম করো
মন যদি চায় আরো,
যখন যাকে ভালো লাগে
তখন তার হাত ধরো।

দামের এই বাজারে
সস্তা প্রেম আহারে!
খাঁটি প্রেম আজ স্বপ্নতেও
মিলছে না নজরে।

প্রেম দেখি কই আর?
শুধু ডেটিং এর বাহার,
বাদাম চিবোয় আর খুঁজে যায়
সুযোগ বোতাম খোলার।

দেহ ভোগের নেশা
আর মিথ্যে করে হাসা,
ভালো থাকার অভিনয়ের
নাম কি ভালোবাসা?

প্রান জুড়ে শুধু মোহ
মন নয়, চায় দেহ,
কামনাতে ঘামা ছাড়া
চায় না কিছুই কেহ।

হিসাব নিকাশ যখন
কান্না কাটি তখন,
সময় মত বুঝবে অধিক
প্রেমের মজা কেমন!

ঘুম নেই রাত জুড়ে,
অন্যের ঘুম কেড়ে,
নির্ঘুম প্রেমী প্রস্তুত হও
কষ্ট আসছে তেড়ে।

ঢাকায়

এক টাকার পানি খেয়ে
মুতি পাঁচ টাকায়,
বিবেক বুদ্ধি বিক্রি করে
টিকে আছি ঢাকায়।

মিথ্যা কথা পুঁজি করে
স্বপ্ন বেঁচে থাকার,
অন্যের জ্ঞান চুরি করে
ঢাকি নিজের আঁধার।

দুঃস্থ রোগীর রক্ত চুষে
স্বাস্থ্যটা ঠিক রাখি,
নগদ বেঁচার আশায় আমি
রোজই কিনছি বাকী।

সুরক্ষিত থাকতে নিজে
পরকে করি আঘাত,
খুন খারাবির ধার ধারি না
স্বার্থে লাগলে আঘাত।

দেহ বেঁচে অন্তর বেঁচে
বেঁচে মৃত লাশ,
নিজের সুখের জন্য করি
পরের সর্বনাশ।

তবু সুখের পাই না নাগাল
নিঠুর শহর ঢাকায়,
পঁচা লাশের গন্ধ ভাসে
এই না ঢাকার টাকায়।

রাজনীতির মারপ্যাচ

জিলাপির আড়াই প্যাচ
রাজনীতির মারপ্যাচ,
কাটে ভোতা দা দিয়ে
কেটে যায় ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ।

আকাশে ছোড়া তির
এসে লাগে নিজ গায়,
এই ধরে গলা চেপে
এই পড়ে রয় পায়।

শিক্ষা কি দরকার?
পয়সার কারবার,
লুটপাট যুদ্ধে
জোর যার ধন তার।

বিচার ব্যাবস্থা
টাকা ভরা বস্তা,
যদি থাকে তবে তুমি
রাখো তাতে আস্থা।

নিয়ম আজ কড়াকড়ি
মাদকের ছড়াছড়ি,
যে করে আমদানি
রও তার পায়ে পড়ি।

ধরে কলা কচু চোর
মেরে মেরে রাত ভোর,
নিজেই জানো না তুমি
আসলে কি দোষ ওর!

পড়েছো মারপ্যাঁচে
দিয়েছো নিজেকে বেঁচে,
ভেবে লোম খাড়া হয়
আগামীতে কি আছে!

নতুন মগের মুলুক

ব্যাঙের সর্দি জ্বর লেগেছে
হনুমানের স্বপ্ন দোষ,
পরকীয়া বৈধ শুনে
মাথায় উঠল অণ্ডকোষ।

চুষতে মধু পরের চাকের
লাগে ভীষণ মজা,
আমার পুরো মৌচাক নিয়ে
ভাগে যখন ভজা।

ছি ছি করে লোকে তখন
লাগে হট্টগোল,
বিয়ের আগে পোলাপানে
ভরল দেবীর কোল।

এইনা খুশীর খবর শুনে
গ্যাদার নতুন বউ,
দিন দুপুরে আম বাগানে
রোজই তোলে লাউ।

মালতি দির দুয়ার খোলা
সব দাদারাই ঢোকে,
আইন ভঙ্গ হবে বলে
নীরব পাড়ার লোকে।

বৌমা উধাও রাত দুপুরে
ভার শাশুড়ির মুখ,
ভাগ্নে নিয়ে মামী ঘুমায়
আজব মগের মুলুক।