ফারজানা শারমিন মৌসুমী এর সকল পোস্ট

রাধা কৃষ্ণের বিলাস………………..

9ACB1BF6-1803-45EC-937C-A837CDF1BC57

রাধা কৃষ্ণের বিলাস…………….

এক বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলাম,
তুমি এসে পথরোধ করে দাঁড়ালে,
দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে উন্মুক্ত করে দিলে তোমার প্রশস্ত বুকের জমিন,
আমি সকল অভিমান ভুলে গিয়ে তোমার বুকে প্রবেশ করলাম,
তখন বৃষ্টিতে ভিজে গেছে তোমার শার্ট, তোমার বুক
এবং তুমি আমি দুজনেই,
গভীর আলিঙ্গনে তুমি জড়িয়ে আছো আমাকে,
প্রেমের ক্যানভাসে ভালোবাসা সব উথলে উঠেছে,
উত্তেজিত নদী বেপরোয়া ঢেউয়ে,
আমিও ডুবে যাই নদীর বিশালতার মাঝে,
তৃষ্ণার সুবিশাল রাত্রির গহন জলে
ভেসে ভেসে হারাই দুজন জেগে জেগে পোড়াই দুটি মন,
ভালোবাসার শ্রাবণ ধারায় অশান্ত মনের ব্যাকুলতা,
তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে এক শান্তিচুক্তির স্বাক্ষরতা,
মেঘের সংঘাতে বিদ্যুতের মতাে প্রাণ দু’জনার উঠেছিল জ্বলে,
তােমারই নৌকোয় আমি যমুনার গ্রামে পৌছে যেতে চাই,
সেই যে যমুনা তীরে রাধা আর কৃষ্ণের বিলাস
হৃদয়ের অব্যক্ত কথা বলে দেবার জেগেছে প্রয়াস,
আজ না হয় দু’জনে ডুবে থাকি কেবলই ডুবে থাকি ভালোবাসায়,
এলোমেলো বিজন রাতের গভীরে সঙ্গোপনে.
শুধু এ হৃদয় জানে —
বুকের ভিতর শূন্যতাকে পূর্ণতা দিতে
কীভাবে শীৎকারের শব্দে স্বপ্ন ছোঁয়া আলিঙ্গনে বিশুদ্ধ প্রেমে…………

— ফারজানা শারমিন ( ছবি সংগৃহীত )
০২ – ১১ – ২০২০ইং

কামনাবিলাসী প্রেম………………

কামনাবিলাসী প্রেম……………..

এ কেমন অনুভবের চাওয়া তোমার,
যে উপলব্ধিতে ক্ষণেক্ষণে শিহরিত হয় মন আমার
আমি সারাদিন শব্দের পর শব্দ দিয়ে বুনি কবিতার খাতা
তুমি এলে হারিয়ে যায় সব কথারা,
দু’চোখে তােমার আকুল প্রতীক্ষা শান্তিহীন, ক্লান্তিহীন, বিরাম বিহীন
তুমি কাছে এলে আমি আর কিছু লিখতে পারিনা ,
আলাে আঁধারের পর্যটন শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসে পরিযায়ী তারা,
রক্তের মধ্যে জলতরঙ্গ বাজায় নৈঃশব্দ্যের বর্ণমালা,
রাতের আঁধারে নগ্নিকা দেহ থেকে যেন ঝড়ে পড়ছে আবেদনের সহস্ৰ জোনাকী,
তুমি অপলক তাকিয়ে আছো আমার কেবলই মনে হচ্ছে,
এখনই আকাশের বুকে একটুকরাে মেঘের আবির্ভাব হবে চাঁদমুখ ঢেকে যাবে লজ্জায়,
আধো ছায়া আধো অন্ধকারে তুমি আর আমি ছিলেম নৈঃশব্দের মধ্যে একা,
তুমি যেন স্বপ্নপুরুষ, মগ্ন মৈনাক, নীল নির্জনে একক পাহাড়,
তােমার উন্নত শির, প্রশস্ত বুক, উদ্ধত কাঁধ
তােমার পৌরুষ অহঙ্কারে পরিপূর্ণ,
বাসনার প্রদীপ জ্বেলে আমি এক শরীর আগুন নিয়ে
তোমার সব কিছুকে আমি ভীষণভাবে নিজের করে পেতে চাই,
ঘন অন্ধকার রাত এগিয়ে আসছে,
আমি সেজে উঠি কামবিলাসিনীর ছদ্মবেশে,
আমার সর্বাঙ্গে যেন বাসনার নির্যাস,
তোমার চোখের তারায় আগুনের উন্মাদনা
তুমি এসে আমার কানে কানে বলে যাও মহামিলনের এক মন্ত্রকথা,
আমি নির্দ্ধিধায় আমার সবকিছু উজাড় করে দেব তোমার চরণে,
হে সুপ্রিয়,
তুমি কোন রূপটিকে ভালােবাসো সকালের শিশির ভেজা শরীর ?
নাকি মধ্য রাতের কামনাবিলাসী প্রেম ?
হিম অরণ্যের অন্ধকারে প্রতিদিন নিঃসঙ্গ নির্জনতায়
আমরা মিশে যাই নিবিড় আলিঙ্গনে…………..

— ফারজানা শারমিন
২৪ – ০৯ – ২০২০ইং

স্রষ্টা প্রদত্ত এক উপহার…………….

স্রষ্টা প্রদত্ত এক উপহার…………….

তোমার কবিতার ছন্দেই হোক তবে সকল প্রেমের অভিধান,
প্রতিটি শব্দ বিন্যাসের উল্লাসে ভাসুক প্রাঞ্জলতা কাব্য গাঁথুনিতে হোক ভালোবাসার ইমারত,
তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে মিটুক দীর্ঘশ্বাসে আটকে থাকা বহুদিনের পিপাসা,
পংক্তির বিচরণে চমকে যাক পুরো পৃথিবী,
বাঁচার স্বপ্ন দেখুক, নিয়ে আবারও নতুন প্রত্যাশা
এক সিন্ধু ভালোবাসার দাবী নিয়ে,
চাঁদ আকাশ মেঘমালার সাথে মৌন কথোপকথন,
ভালোবাসা বড্ড বেসামাল হয়ে পড়েছে
কখনো আমার বেলকনিতে কখনো কার্নিশে,
কখনো ছাদের গোলাপের ঝরা পাঁপড়িতে,
কখনো ড্রেসিংটেবিলের কাঁচের রিনিঝিনি চুড়িতে
কখনো বা ভাঙা আয়নার টুকরোতে ভালোবাসা দ্বিখণ্ডিত,
সাঁজ বেলার অন্ধকারে একটা মোমবাতির জ্বলে পোড়া আর্তনাদ,
ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোয় রাতের নিস্তব্ধতায়
কখনো বা লং ড্রাইভে হাতে হাত রেখে,
আকাশে প্রণয়ের জোছনায় উঠেছে আবেগের জলোচ্ছাস,
আষাঢ়ী পূর্ণিমায় এসো সারারাত হোক গান কবিতা,
তোমার উৎসাহে আত্নবিশ্বাসী হয়ে যেকোন ভয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে
উন্মোচন হয়েছে ভালোবাসার মুকুট,
বন্ধুত্বের বিশ্বাসে আশ্বাস জাগানিয়া
স্রষ্টা প্রদত্ত এক অনন্য উপহার তুমি………….

— ফারজানা শারমিন
২১ – ০৯ – ২০২০ ইং

হৃদয় শিকারী……………

হৃদয় শিকারী…………..
.
হে হৃদয় শিকারী,
আমার অবাধ্য ইচ্ছেগুলো কি তুমি দেখতে পাও ?
আমার ইচ্ছেগুলো কতো ভাবে আলপনা এঁকে দিয়ে যায়
তোমার হৃদয়পটে তুমি কি তা অনুভব করতে পারো ?
বলতে পারো অভিমানের উৎস কোথায় ?
এটা খুব বেশি ভালোবাসি বলে ?
নাকি খুব বেশি অধিকার দিয়েছো বলে ?
কেন জানতে চাইছো আমার সুগভীর চাহনিতে কেন এতো মায়া ?
কেন জানতে চাইছো কতোটা ভালোবাসি তোমায় ?
যতোটা কাছে থাকলে শরীরের গন্ধ পাওয়া যায়,
হাজার মাইল দূরে থেকেও তোমার গায়ের গন্ধটাকে আমি ঠিকই শুকে নিতে পারি,
ততোটাই কাছে রয়েছি দিনের পর দিন, থাকবো অনন্তকাল,
তোমার কাছে থাকতে থাকতে
তোমার প্রতিটা নিঃশ্বাসের উত্তাপ আমি ঠিক
অনুভব করতে পারি,
ততটাই কাছে থাকা অভ্যেস হয়ে গেছে,
ঠিক ততটাই ভালোবাসি যতোটা ভালোবাসলে
তোমার শার্টের সবকটি বোতাম আমার চেনা,
তোমার পড়ার টেবিল অগোছালো বইপত্র সে খবরও আমার আছে জানা,
ঠিক ততটাই ভালোবাসি যতোটা ভালোবাসলে
বুকের বাঁ পাশের হৃদপিন্ডের স্পন্দন অনুভব করতে পারি,
এক ছাতার নিচে বহুবার বৃষ্টিতে ভিজেছি আমরা,
তোমার বৃষ্টিভেজা শার্ট আর আমার নীল শাড়িটা
সেদিন একে অপরকে ছুঁয়ে দিয়েছিলো নিবীড়ভাবে,
আমরা একে অপরকে ছুঁয়েছি অন্তর আত্মায়,
গভীর থেকে গভীরে কাছাকাছি থেকে রোজ আমরা ভালোবেসেছি নির্দ্ধিধায়,
তুমি খোঁপায় ফুল গুঁজে দিয়ে বললে একমাত্র বিশ্বাসই ভালোবাসা,
তুমি মায়া ভরা চোখে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললে
মৌ তোমার বুদ্ধিদীপ্ত চোখ দুটো যেন আমাকে টানছে চুম্বকের মতো,
আমি চোখে চোখ রেখে তোমার কথায় হারিয়ে গেলাম,
তুমি বললে মৌ তোমাকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি,
তোমাতেই আমার অস্তিত্ব,
আমার অবাধ্য অগোছালো চুলগুলোকে সরিয়ে বললে সুগন্ধিটা তুমি দারুণ মেখেছো,
কন্ঠে তোমার দৃঢ়তা,
আমায় বিদ্ধ করতে চাইছো তুমি কামনার শাণিত ফলায়,,
প্রটিতি নিঃশ্বাসে যেন আগুন ছুঁয়ে যায় আমায়
আমি এড়িয়ে যেতে চাইলাম
কিন্তু তোমার ভালোবাসার মন ও শরীরকে আমার কাছে থেকে আলাদা করা দুস্কর,
পরক্ষণেই পরম মমতায় বুকের মধ্যে লুকিয়ে বললে
ভালোবাসার তীব্রতা বুঝো তুমি মৌ ?
আমার রক্তে মরফিনের নেশা তুমি,
যতোটা ভালোবাসলে পৃথিবীতে স্বর্গ নেমে আসে,
মানুষের চরমতম সুখানুভূতির ভাষা আজ অবধি তৈরি হয়নি,
তুমিই আমার সুখানুভূতি তুমিই আমার স্বর্গ মৌ…….

— ফারজানা শারমিন
০২ – ০৯ – ২০২০ইং

প্রেমিক পুরুষ…………..

প্রেমিক পুরুষ………….

রুপের জৌলুশ্য সবটুকু দিয়েছি তোমায়
সমর্পণ করেছি উতপ্ত হৃদয় উৎসর্গ করেছি শ্রেষ্ঠ সময়
কতো বেপরোয়া চুম্বনে মিটিয়েছি তোমার কাতর ঠোঁটের তৃষ্ণা,
ছুঁয়েছি তোমার স্পর্শের আঙুল, নগ্ন দেহাবয়ব,
তোমার কাছে আমি হয়েছি নিঃশেষ নতজানু
নির্জন নির্লজ্জ সুখে যেন এখনো কাটেনি ঘোর,
তোমার প্রশস্ত বুকে লেগে আছে আমার ঠোঁটের চিহ্ন
পূর্ণিমার বাসর রাতে,
রমণ ক্লান্তির পরে হৃদয়ে আর কতোটুকু প্রেম ঢেলে দিলে
অতঃপর তুমি শান্ত হবে হে প্রেমিক পুরুষ ?
রাত ভোর হয়েছে, নিভে গেছে প্রদীপ
পড়ে আছে কাঁচের ভাঙা চুড়ি নষ্ট টিপ,
অগোছালো বিছানায় এসে শুয়ে আছে রোদ,
আড়ষ্ঠ চিবুকে কতোটুকু স্পর্শ মেখে দিলে
অবশেষে তুমি শান্ত হবে ?
চোঁখ বুজলেই দেখি তোমার প্রেমের রোশনাই
নির্জন নির্লজ্জ সুখে যেন এখনো কাটেনি ঘোর………

— ফারজানা শারমিন
২৬ – ০৮ – ২০২০ইং

শোকাবহ আগষ্ট……………..

শোকাবহ আগষ্ট……….

মৃত্যুতেই সব শেষ হয়ে যায় না
চিত্ত যদি হয় অফুরান
আকাশ বাতাস সবই তো তোমার অবদান
হে জাতির পিতা তুমি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তুমিহীন এই বাংলা আজ ভুতুড়ে শ্মশান,
গভীর খাঁদে আটকে গেছে স্বদেশের ঢাকা
কোথাও কোন উদাস বিকেল নেই,
স্নিগ্ধ ভোর নেই
রাত্রির সৌন্দর্য বিলীন,
বৃষ্টিহীন প্রান্তর দাউ-দাউ পুড়ছে তোমার বাংলার সবুজ বৃক্ষরাজি,
তুমিহীন পিতা সর্বত্র-ই ধ্বংসের ঘনঘটা
পিতা, তুমি ছাড়া জাতি আজ
কাণ্ডারীছিন্ন জাহাজের মতো দিশেহারা।
আজ রাজাকার আর স্বৈরাচার সব মিলে একাকার,
স্লোগানের নামে ভুরিভোজের আয়োজন
শোকের আয়োজনে ঘটা করে শোক তো দেখিনা
উৎসব , দেখি উৎসব !
নষ্ট সমাজের নগ্নতার কদার্য্যে,
আজ জর্জরিত ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত কঠিন নগ্ন অভিশাপে,
তুমিহীন এই বাংলা আজ ভুতুড়ে শ্মশান,
গভীর খাদে আটকে গেছে স্বদেশের ঢাকা।
আগস্ট মাস বাঙালি জাতি গভীর শোকের মাস,
নির্মমতার এক কালো অধ্যায়।
ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকারীদের,
হে জাতির পিতা —
তুমি কি শুনতে পাচ্ছো ?
আমি সর্বক্ষণ দেখতে পাই তুমি শুয়ে আছো
বাংলার বিশাল মানচিত্র জুড়ে,
মৃত্যুতেই সব শেষ হয়ে যায় না
চিত্ত যদি হয় অফুরান
আকাশ বাতাস সবই তো তোমার অবদান
হে জাতির পিতা তুমি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…………

— ফারজানা শারমিন
১৪ – ০৮ – ২০১৯ ইং

আজ বাঁধন হারা হবো…

আজ বাঁধন হারা হবো…..

প্রেমের অগ্নি শিখা হৃদয় স্পর্শ করে
উত্তপ্ত আত্মায় সঙ্গমে প্রবনতায় শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাগে উষ্ণতা,
সুতীব্র কাম বাসনায় অস্থির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ,
বকুলের রমনীয় সুগন্ধে ভেসে উঠে কামুকী রুপ
নির্জলা মরুর সকল পিপাসাগুলো এসে ভর করে
সবুজ পাতার নিঃশ্বাস যেন ঘন হয়ে আসতে থাকে,
আজ রাতেই চন্দ্র গ্রহণ
তোমার ঠোঁটের স্পর্শে উন্মাদনার গন্ধে মত্ত হাওয়ায় শরীরে বিষ্ফোরণ,
যৌনতার প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে অপ্রকাশিত হাজারো কবিতা
তুমি ছুঁয়ে দিলেই আজ বাঁধন হারা হবো,
প্রেমের বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে সব ভাসিয়ে দিও প্রতি রাতেই ভিজিয়ে দিও তপ্ত জলে,
নগ্নতা ছুঁয়ে নিষিক্ত হয়
তান্ডবে জাগে ঘনিষ্ঠতার প্রণয়,
সহবাসের আঘাতে আঘাতে চরম উত্তেজনার মাঝে বহু উত্থান পতন, রক্তপাত,
লাল রঙের আবিরে রঞ্জিত হয় ভালোবাসা…………..

— ফারজানা শারমিন
০৪ – ০৮ – ২০২০ ইং

একটি চন্দ্রাহত রাতে……………

একটি চন্দ্রাহত রাতে……………

আমরা ভুলে যাই কবিদেরও মন আছে
কবিতার বাইরেও কিছু কথা আছে
আছে কিছু অনুভূতি,
একমাত্র ভালোবাসার যন্ত্রণা গুলোই মানুষ নির্দ্বিধায় মেনে নেয়,
কুহকী পূর্নিমার ইন্দ্রজাল রচিছে শশানের নিরবতা বিরহের কবিতা,
চাঁদের বুকে আঁচর কেটে কেটে এঁকে গেছে কলঙ্কের আলপনা প্রেমের একান্ত স্মৃতিকথা,
বাকি কথাগুলো জমা পড়ে আছে হৃদপিন্ডের মৌন পাথরে,
প্রতিটি সমুদ্র কানায় কানায় ভরে গেছে বেদনার লোনা জলে,
বিষাদের অন্তর্জাল ঘিরে বুকের ভেতরে কেবলই স্বপ্নভঙ্গের শব্দ তরঙ্গিত,
ঝড়ের মতো দীর্ঘশ্বাসে সেই সমুদ্রে মাতালের মতো ঢেউ তোলে,
সময়ের অনুভব খুবই নিষ্ঠুর আবেগের মাঝে কোথায় যেন ব্যাথার অনুভূতি,
ছায়াচ্ছন্ন অস্তিত্ব নিয়ে বারবার শুন্য হাতে ফিরে এসেছে নিজের গৃহে,
জীবন তখন অবুঝ চড়ুই পাখি,
একটি চন্দ্রাহত রাতে ভাঙা হৃদয় নিয়ে আশ্রয় খোঁজে ধ্বংসের স্তূপে,
ভুলশয্যায় কতোবার ফুলশয্যা কতোবার কতো কি কবুল,
তবুও জ্বলন্ত কয়লায় হাত বাড়াই,
যদি প্রশ্ন করো আমায় কতদূর এসেছি ফিরে বাসনার জাল ছিঁড়ে
শব্দহীন পশ্চাতে কোলাহলের নদী পেড়িয়ে গিয়েছি
সমোঝতার ঢেউও তা জানে সব,
জানে সন্ধ্যার সাঁজবাতিটা ও
শুধু বলবো, সেচ্ছায় গ্রহন করেছি এ অযাচিত নির্বাসন…………

— ফারজানা শারমিন
২৭ – ০৬ – ২০২০ইং

শ্রেষ্ঠ পুরুষ আমার বাবা…

শ্রেষ্ঠ পুরুষ আমার বাবা………………..

আমার চোখে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরুষ আমার বাবা।
বাবা শুধু একজন বাবাই নন, বাবার মাঝে জড়িয়ে আছে বিশালত্বের এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকাশ। বাবা নামটা উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে কোনো বয়সী সন্তানের হৃদয়ের শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার এক অনুভব জাগে মানুষটি কতভাবে অবদান রেখে যান সন্তানের জন্য, যার চুলচেরা হিসাব করে কেউ বের করতে পারবেন না…..।

বাবার কাঁধটা অন্য সবার চেয়ে বেশি চওড়া, তাই তো সমাজ সংসারের এতো দায়ভার অবলীলায় বয়ে বেড়ান তিনি একাই, বাবার পা অন্য সবার চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত চলে, তাই তো এতোটা পথ এতো অল্প সময়ে কি করে এতো শক্ত করে সব কিছু আগলে রাখেন বাবা। আর বাবার ছায়া – সেটাও শেষ বিকেলের বটগাছের ছায়ার চাইতেও বড়। বড় যদি না হবে তবে জীবনের এতো উত্তাপ থেকে কি করে সন্তানকে সামলে রাখেন বাবা। আর বাবার চোখ – সেটাও দেখতে পায় কল্পনার অতীত কোনো দূরত্ব। তা না হলে কি করে সন্তানের ভবিষ্যত্ ভাবনায় শঙ্কিত হন বাবা। আমাদের বাবা, শত সাধারণের মাঝেও অসাধারণ হয়ে ওঠা আমাদের জনক…….।

আমাদের অকাতরে ভালোবেসে যান তার সামর্থ্যের শেষ বিন্দুটুকু দিয়ে। উজাড় করে দেন তার সবকিছুই শুধু তার সন্তানের জন্য। তার যা কিছু আছে নিজের জন্য আর অবশিষ্ট রাখেন না কোনোভাবেই। সবকিছু উজাড় করে দেয়ার পরও তাকে কোনোভাবে নিঃস্ব বলে মনে হয় না। মনে হয় তিনি যেন পরম তৃপ্তিতে আরও পরিপূর্ণ হয়ে উঠেন…..। বরং শ্রমে ঘামে স্নেহে সন্তানকে তিলে তিলে বড় করে তুলতে সচেষ্ট বাবা মহান সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যেও ফরিয়াদ জানান তার সন্তানের মঙ্গলের জন্য। আর বাবার সেই আহ্বান হয়ত গর্বিত করে তোলে অন্তর্যামীকে ও।

সন্তান যত বড়ই হোক না কেন তার অভিমান আর অবহেলার পরিমাণ যত বিশালই হোক বাবার স্নেহ সবসময় তার জন্য এক পরম আশ্রয়। বেঁচে থাকার আনন্দে, কষ্টের তীব্রতায়, কঠিন সমস্যায় বাবাই হয়ে ওঠেন বিপদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু বা সহায়……।

আমি বাবার কাছে যা চেয়েছি তাই পেয়েছি কোনদিন আমি বাবার কাছে না শব্দটা শুনিনি। বাবা যে কতটা কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে, টাকা উপার্জনের জন্য কতটা পথ পাড়ি দিয়ে কতটা কষ্ট করে কত কথা বলে টাকা উপার্জন করতে হয়। সত্যিই জীবনটা কে আজ অনেক বেশী উপলব্ধি করতে পারছি। আজ বুঝতে পারি বাবার কষ্টের সামনে আমাদের কষ্টটা অতি নগণ্য। রাত, বিরাতে অসুস্হ থাকা অবস্হায়ও বাবা চাকুরীর জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটে চলেছে শুধুই আমাদের জন্য তবুও কখনও আমাদের কে কোন কষ্ট পেতে দেয়নি এখনও দেয়না……।

একটা কথা আছে যে পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই। আসলে যেদিকে তাকাই সেদিকেই ছায়া হয় বাবা, একটাই মানুষ আমাদের জীবনে যিনি কিনা সারাটা জীবন শুধু দিয়েই চলেছে। কোনদিন কোনকিছু পাওয়ার আশাটাও করেনি নি:স্বার্থ একজন এই বাবা…….।

লেখা : ফারজানা শারমিন মৌসুমি

নিষিক্ত প্রেম……………..

নিষিক্ত প্রেম……………..

অবশেষে তুমি ছুঁয়েছো হৃদয়ের গভীরতম বিন্দু
তোমার প্রেমের ছোঁয়ায় উষ্ম জলে তরঙ্গিত দীর্ঘশ্বাসে একান্ত আলাপে,
ভালোবাসার সুধা পান করে,
বরফ কোক নেকোটিনের ধোঁয়ায় দুজন যাই জড়িয়ে
হৃদয়ে হৃদয় আঁকি চোখে চোখ রাখি,
ভালোবাসার ঘণত্বে ঘণিভূত হই দুজন চলুক তোলপাড় প্রেম,
তছনছ হয়ে যাক কপালের লাল টিপ
শরীরে পড়ুক দাগ পরা আদর, ছুঁয়ে যাক রক্তাক্ত আঁচড়,
প্রণয়দীপ্ত এক চুম্বনসিক্ত প্রহরে,
কাব্যে ড্রোনের বিস্ফোরণে তুমি সন্মুখে দাঁড়িয়ে বিদ্ধ করেছো
তোমার কামনার তীক্ষ্ণ শাণিত ফলায়,
অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মতো তপ্ত নিঃশ্বাস,
প্রতিটি নিঃশ্বাসে যেন আগুন ছুঁয়ে যায় আমায়,
নগ্ন পায়ে অঙ্গারে হেঁটে হেঁটে নিজেকে সঁপে দিয়েছি তোমার ভালোবাসার পেয়ালায়,
তন্দ্রাহারা তন্ময় হয়ে আঁকা তোমার ঠোঁট বাস্তবে এসে ধরা দেয়,
তোমার তৃষ্ণার্ত ঠোঁটে এক মিলনের আর্তনাদ,
আদরে আদরে তুমি অবগাহনে উষ্ণ মিলনের ঠোঁট থেকে শুষে নাও কাব্যের নির্যাস,
নৌকা নদীর মাঝে ভাসিয়ে গোলাপের সুবাসে মন ভরিয়ে দিলে সেই নির্জনে তপ্ত জলে,
নগ্নতা ছুঁয়ে গেলো দু’টি নদীর জোয়ারে,
নিষিক্ত হয় প্রেম,
প্রস্ফুটিত হয় এক জীবন্ত কবিতা,
শরীরের প্রতিটি ভাঁজে সৌন্দর্য জলজ্যান্ত যৌনতার দেবী আফ্রদিতি, পাশে তুমি কামদেব
পুষ্পের নরম পাঁপড়ি ছুঁয়ে কামিনির ঘ্রাণ মেখে
সমস্ত সীমারেখার বেড়াজাল ভেঙে ছুঁয়েছো ভালোবাসার ঝড় তুলেছো,
দেহে জলের স্পর্শে শিহরণ বহমান তোমার উজান স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছো আমায়,
শুধুই ভেসে চলেছি সুদূর অজানায়
ভাসন্ত দ্বীপের সমান্তরালে চারদিকে শুধু অথৈ জলরাশি…………

— ফারজানা শারমিন
০৮ – ০৬ – ২০২০ ইং

ভালোবাসার গেরুয়া আঁচল………………

ভালোবাসার গেরুয়া আঁচল……………………
.
নৈঃশব্দ্যে গোপনে ভালোবাসার গেরুয়া আঁচল বিছিয়ে রেখেছি হে সুপ্রিয়,
চৈত্রের ভর দুপুরে তোমার অপেক্ষায় তৃষ্ণার্ত অধর পুড়ছে ব্যাকুলতায়,
দুঃখবিলাসী হাওয়া বইছে নির্জন বিষাদের অন্তরালে,
বিরহ যাতনা গুলো লিপিবদ্ধ করে রেখেছি সদ্য ফোঁটা গোলাপের কাঁটায় কাঁটায়,
গোপনে তোমার জন্য কেঁদেছি রাতভর,
পোঁড়া বাঁশির সুরে ভেসে আসে এক বেদনার উপাখ্যান,
হৃদয়ের গভীরে শেষ স্পন্দনেও কি অদ্ভুত শিহরণ
তুমি আছো আমার সমস্ত নীরবতা জুড়ে সমস্ত সুখের আলপনায় সারাক্ষণ,
স্বপ্নের জলছবিতে ভালোবাসার সাতকাহন,
রুপালী জোছনায় যুবতীমন ডাকে তোমায় চলে এসো ভালোবাসা হোক,
তোমার প্রেমে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে হৃদয়ে কাঁপানো ঝড় উঠুক তোলপাড়,
কতোকাল অপেক্ষায় থেকেছি এ মিলনমুখো রাত্রির,
শব্দে শব্দে সাজবে কবিতার বাসর,
বসন্তের নির্জন বাতাসে পাখির গান চারদিকে শ্রেষ্ট বকুলের সুবাস,
তোমার বিবর্ণ ক্যানভাস রাঙিয়ে দেব প্রজাপতি রঙে
রুদ্রবীণার সংগীতে ভিজিয়ে দিবো তোমার বৈরাগী মনে,
প্রেমের অমিয় সুধা পান করে নিশিথে ভালোবেসে তুমি করাবে জোছনায় স্নান,
খুব কাছে টেনে ঠোঁট ছুঁয়ে শুষে নিবে গোলাপের নির্যাস,
আবছা আলো ছায়ায় জুঁই ফুলের গন্ধে জেগে ওঠে মাদকতার মাতাল ঘ্রাণ,
নিখুঁত প্রেমের কারুকাজে অহর্নিশি ছুঁয়ে যাও তুমি এই মন প্রাণ,
বুকের ভাঁজে জেগে ওঠে এক নীলকণ্ঠ পাখি,
তোলপাড় সুখে ছুঁয়ে যায় গভীর আবেশে রাতের নির্লিপ্ত আঁধারে দুটি আঁখি,
প্রণয়ের উষ্ণসুখে একফালি চাঁদ উঁকি মেরে প্রবেশ করে হৃদয়ের গহীনে,
নৈঃশব্দ্যে গোপনে ভালোবাসার গেরুয়া আঁচল বিছিয়ে রেখেছি হে সুপ্রিয়,
রুপালী জোছনায় যুবতীমন ডাকে তোমায় চলে এসো ভালোবাসা হোক………………
.
— ফারজানা শারমিন
০৭ – ০৬ – ২০২০ ইং

মহাপ্রণয়ের শ্রেষ্ঠ বৃতান্ত………………

মহাপ্রণয়ের শ্রেষ্ঠ বৃতান্ত………………
.
রাতের কার্নিশ বেয়ে প্রবল বেগে ছিটকে পড়েছে সন্ধ্যাতারা,
সোহাগী বাঁশির সুর বাজে যায় অন্তরে হায়
আহা কি মাতাল প্রেম ডোরে বেঁধেছো গো আমায়,
নেশার পানীয় নেকোটিনের ছোঁয়ায় করেছো শিহরিত আরো রোমাঞ্চিত,
শ্রাবনের অঝড় ধারার মতো ভিজিয়ে দিতে চেয়েছি তোমায় জোছনাময় আবেগের পূর্নতায়,
শুধুই ভালোবাসতে ইচ্ছে করে এই অবেলায়,
ল্যাম্পপোষ্টের নিয়ন আলোয় গভীর রাতে শুরু হয় আমাদের ভালোবাসার প্রলয়,
এবার তোমার কাছে আমি হয়েছি নিঃশেষ নতজানু
গোলাপী ঠোঁটে রক্তচুম্বন, স্তনে দাঁত, শরীরে আঁচড় ক্ষত ক্ষতবিক্ষত পিঠ,
তান্ডবে জাগে ঘনিষ্ঠতার প্রণয় এই ষোড়সী যৌবনে তোমার ভালোবাসার আহবানে,
রক্তপাত লাল রঙের আবিরে হয় ভলোবাসা রঞ্জিত,
পূর্ণিমার আলোয় যেন সহবাসে মত্ত,
আঘাতে আঘাতে চরম উত্তেজনার মাঝে বহু উত্থান পতন,
বেপরোয়া নেশায় কামনার আগুনে ঝলসিত প্রেম,
মুগ্ধ জোৎস্না ছুঁয়ে বাসনার সীমানা পেরিয়ে চাঁদের আলোয় ভাসে সকল সুখ,
লজ্জারাঙা উপলব্ধি যেন অস্থিমজ্জ্বায়
কথা দিয়েছিলে তুমি সঙ্গম শেখাবে,
সময়ের ছায়া আজ লিখে যায় তোমার আমার
মহাপ্রণয়ের শ্রেষ্ঠ বৃতান্ত…………..

— ফারজানা শারমিন
০৫ – ০৬ – ২০২০ ইং

কবি মোহাম্মদ ইকবাল এর জন্মজয়ন্তী আজ

কবি মোহাম্মদ ইকবাল এর জন্মজয়ন্তী আজ
.
সুপ্রিয় কবি মোহাম্মদ ইকবাল এর জন্মজয়ন্তীতে
কবির নামে কবিতাটি উৎসর্গ করা হলো।
.
তিনি একজন কবি ( গদ্য কবিতা )………………

তিনি একজন কবি
মোহাম্মদ ইকবাল সুনিপুণ শব্দের শৈল্পিক কারিগর শব্দের গাঁথুনিতে বানান কল্পনার ঘর,
নদী আকাশ অরন্য পাখি চাঁদ জোছনা কেউ নয় কবির পর,
শব্দ বিন্যাসে কবি বানান নিজস্ব পৃথিবী সময় কথা বলে যায় নিরবধি,
কবির কবিতার শব্দ উচ্চারণ করা মাত্রই
মনের ভেতর এসে ভর করে অদ্ভুত শিহরণ,
আমরা উপলব্ধি করি মমতায় আঁকা কোমল কোনো মূর্তিকে যাকে অনুভব করে তিনি লিখেন,
তাঁর কলমের শব্দ গড়ে উঠে কবিতার বিস্তীর্ণ ভূমি,
তাঁর চিন্তায় শব্দের স্রোত নিত্য বহমান,
যাঁর চেতনায় পৃথিবীর বিচিত্র রঙ লীলা রূপ রস বৈচিত্র্য খেলা করে এবং
তাঁর জন্য সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অপরিমেয়।
.
তিনি একজন কবি ——
তাঁর কাব্য প্রতিভার সাহিত্য চর্চার জোরেই তিনি চিরকালের হাসি-কান্না, জীবনবোধ, বিন্যাস, প্রেম-বিরহ, ক্ষোভ-আক্ষেপকে
শব্দের নান্দনিক স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে কবিতা গড়ে তুলেন।
তিনি কেবলই কবিই নন তিনি একাধারে সত্য ও সুন্দরের পূজারী, দার্শনিক, ভবিষ্যতদ্রষ্টা, বিজ্ঞানীও বটে,
তিনিই পারেন নিজের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, বিশ্বাস, উপলব্ধি ও অনুভবগুলো
দেশকালের সীমানা পেরিয়ে বহুদূর ছড়িয়ে দিতে,
তিনি সীমানা মানেন না, তিনি নিয়মে-কানুন, তাঁবেদারির তোয়াক্কা করে না,
তিনি নিরন্তর ছুটে চলেন কবিতার জন্য,
কবিতার অন্বেষণে তাঁর দিন-রাত কাটে,
কবিতার সৌন্দর্য আবিষ্কার নেশায় মত্ত তাঁর ঘুম কেড়ে নেয়,
তাঁর চিন্তার জগতে তখন দ্বিতীয় কোনো বিষয় থাকে না কবিতাই তাঁর তৃপ্তির নিঃশ্বাস।
.
তিনি একজন কবি ——
যার রয়েছে অলৌকিক ক্ষমতা,
তিনিই পারেন শব্দ দিয়ে বুকের মধ্যে অনুভূতির নতুন নতুন নহর সৃষ্টি করতে,
পৃথিবীর বিচিত্র ভাব কবি হৃদয়কে আন্দোলিত অভিভূত করে তোলে,
কবির চেতনা করে তোলে তীক্ষ্ণতর স্পর্শকাতর।
মানব জীবন ও প্রকৃতির ক্ষিপ্ত-বিক্ষিপ্ত সৌন্দর্যবোধ, বেদনাসিক্ততার যখন মনে-মননে ভর করে
তখন কবি শব্দের গাঁথুনীকে গড়ে তোলেন তার কবিতা,
কবি জীবনের প্রতিভা আঁকেন, কান্না হাসির অনন্ত জীবন ভাবেন, ভালোবাসা দেন, জীবন দেন,
দর্পনে শত মুখ দেখেন কবিতা লেখার সময় কবি রাষ্ট্রপতির চেয়ে বড়।
.
তিনি একজন কবি ——
কবি মাত্রই বেখেয়ালী, আনমনা, ঘোরগ্রস্ত, কল্পনাবিলাসী মানুষ,
তিনি বলেন আমি লিখি আত্মার নির্দেশে কবি কখনো মিথ্যা বলে না,
কবি প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলেন জীবনের গূঢ় রহস্যকে, উন্মোচন করেন সত্যকে,
সৃষ্টির আনন্দে উল্লাসিত কবি উন্মাদনা পান, কবিতায় খুঁজে পান আপন ঠিকানা,
এ কথা সত্য যে,
সাহিত্যে কবির সম্মান অনেক উপরে,
একজন কবি যখন হেঁটে যান আমাদের উচিত তাঁর সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যাওয়া।
শত শত বছর আয়ু কী কবির প্রাপ্তি নয় ??
কাব্যিক বোধ মানুষের মন কে রাঙায় নাড়া দেয় উপলব্ধি করা যায় পৃথিবী কত রূপময় ছন্দময়,
যদি কবিতা লেখা না হতো তাহলে নিরসে নির্বাসিত হতো পৃথিবী,
পাখিরা গান গাইতো না কোনো প্রেমের চিঠি লেখা হতো না, ফুটতো না কোনো ফুল,
আর এই ফুল ফোটানো আর সুন্দর পৃথিবী গড়ার কাজই করেন তিনি।
.
তিনি একজন কবি ——
তাঁর কবিতায় ফুঠে উঠে তাঁর দেশ, কবি তাঁর ঐতিহ্যের ধারক,
কবি তাঁর মাটি ও মানুষের কথা বলেন, সুন্দর আর মুগ্ধতার কথা বলেন,
তিনি সত্য আর ন্যায়ের কথা বলেন, তাঁর স্বদেশকে সারা বিশ্বে তুলে ধরতে,
কবিতার বিনিময়ে তিনি বেঁচে থাকবেন শত শত বছর,
তিনি একজন কবি এক কিংবদন্তি একটি জাতির জন্য এটি গৌরবের একটি দেশের জন্য সম্পদ,
তিনি নিজেকে নির্মাণ করেছেন তিলে তিলে
তার নির্মিত কাব্যিক প্রাসাদ বেশ উঁচু,
তিনি কেবলই কবিই নন তিনি একাধারে সত্য ও সুন্দরের পূজারী, দার্শনিক, ভবিষ্যতদ্রষ্টা, বিজ্ঞানীও বটে, এবং একজন অসাধারণ মানুষ।
তিনিই কবি মোহাম্মদ ইকবাল…………..

— ফারজানা শারমিন মৌসুমি
০৩ – ০১ – ২০২০ ইং

গোলাপ মঞ্জুরীর গোপন আহ্বানে…

গোলাপ মঞ্জুরীর গোপন আহ্বানে……………..

তোমাকেই ঘিরে আবর্তিত অস্পষ্ট আলপনা
ভালবাসার সাঁঝে ললাটে সূর্য শ্রান্ত নদীর জলে
গোধূলী রঙের শাড়ী পড়ে আমি ছুটে চলি অফুরন্ত দিগন্তের মাঝে,
রাতের অন্ধকারে যেন ষোড়শী যৌবন ছটফটে মন আমায় তাড়া করে তোমারই ভালোবাসার আহ্বানে,
তোমার একটু ছোঁয়ায় দুরন্ত প্রবাহে যাই হারিয়ে,
বৃষ্টিতে শাড়ি ভিজে একাকার এক লহমায়
সৃষ্টি হয় কাব্যরস তখন আমার,
প্রষ্ফুটিত হয় গোলাপ মঞ্জুরীর গোপন আহ্বানে
ছন্দে গন্ধে প্রাণের সঞ্চার হয় নতুন মাত্রায় ষোড়শী যৌবনে,
ওষ্ঠে যখন টলমল জলের ফোঁটায় আকাঙ্ক্ষা বাড়ে তখন চুম্বনের,
তান্ডবে জাগে ঘনিষ্ঠতার প্রণয়
কাঁপন তোমার নিঃশ্বাসে,
ঝড় আমার বুকে দেহের উপেক্ষিত স্পর্শহীন ভাঁজে ভাঁজে
অনাবিষ্কৃত হয় গোপন রহস্য আমার হৃদয় জুড়ে,
শিশিরের মাঝে আবেগের আলোকিত উচ্ছ্বাস
বেপরোয়া প্রেমের নেশায় কামনার আগুনে ঝলসিত,
মুগ্ধ জোৎস্না ছুঁয়ে বাসনার সীমানা পেরিয়ে চাঁদের আলোয় ভাসে সকল সুখ,
লজ্জারাঙা উপলব্ধি যেন অস্থিমজ্জ্বায়,
ভোরের স্নিগ্ধতায় ভালবাসার গবেষণায় কবিতার প্রেরণায় তুমি আমার একান্ত আমারই……………

— ফারজানা শারমিন
০৪ – ০৫ – ২০২০ইং

sh-304x300

এক মধুরিম প্রণয়…

কোন সে আলোর মায়া ভরিয়ে গেলে হৃদয়ের আয়না
দূর বহু দূর ছড়িয়ে আছে অনুরাগের জোছনা,
যে পবিত্র প্রণয়ে জীবন গেছে জড়িয়ে সেই মর্মে
না ধরে রাখতে পারি, না মিলে কোনো মুক্তির পথ,
শুধুই চিরদহন নিয়ে বুকে দিবা নিশি,
বাঁচি পুনরায় আবার মরি,
তীর যেন নিজেই করে যায় ভাঙনের আমন্ত্রণ,
জীবন করে বারে বারে মৃত্যু বরণ,
সদ্য জখমের উপরে রেখে গেছো কিছু সুরভিত স্পর্শ,
শুধু আরশির বুকে রয়ে যায় কিছু মধুর স্মৃতি
গোপনীয় মুহূর্তের নগ্নতা পরস্পরের এক মধুরিম প্রণয়,
ভালবাসার নদী রইলো চিরদিনই গভীর
শুধুই শ্রাবণের ধারা ঝরেছে দেহ ও প্রাণে সমান ভাবে,
তবু ও অদৃশ্য দহন জেগে রয় যেন অন্তরে,
জানা সত্তেও প্রেমের ফুলদানি কাঁচে গড়া যে কোনো সময় যাবে ভেঙ্গে,
তথাপি হৃদয় জড়িয়ে রয় তাকে অহর্নিশ বুকে,
সেই ভাঙ্গা স্বপ্ন নিয়ে হেঁটে চলেছি জানি না কোথায়,
কিসের সন্ধানে হৃদয় জ্বলে কিসের দহনে কুয়াশায় ভরা পথে,
কোন মোহ মায়ায় ধেয়ে যায় জীবন মৃগয়ার মুখে,
সিক্ত অধরে থেমে আছে আগত ঝড় অপ্রত্যাশিত,
শব্দহীন অনুভূতির অশনি সংকেত
যেন রাতে যাবে ভেসে অশ্রুজলের মহা প্লাবনে,
এ কেমন হারিয়ে তাঁকে খুঁজে পাওয়া
চিরদিনই এক অতৃপ্ত অভিলাষ
কমল কুঞ্জে চাঁদের আলোর সঙ্গে একে অপরের বাস ।

— ফারজানা শারমিন
২০ – ০৪ – ২০ ইং