ফারজানা শারমিন মৌসুমী এর সকল পোস্ট

যদি আর কখনো ফিরে না আসি…………..

করোনার আতঙ্কে করিডোরে বন্দি জনজীবন
জনশূন্য হয়ে গিয়েছে নগর,
ফুসফুসে বসুন্ধরা অবরুদ্ধ চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল
হৃদপিণ্ড ছেঁকে ছেঁকে নিচ্ছে অক্সিজেন,
কর্তব্যের কড়া নজরে চব্বিশ ঘন্টা মানুষের সামাজিক দূরত্ব বাস্তবায়নে
এই উন্নতশীল দেশে আত্মরক্ষাহীন ভাবে
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ডাক্তার নার্স,
বর্তমানকে উৎসর্গ করে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে অনাগত উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সুন্দর পৃথিবীর জন্য,
এ কঠিন মুহূর্তেও তোমাকে চাই
অদ্রি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ভরিয়ে দিও তোমার প্রেমে ওষ্ঠ অধর,
ভালোবেসে এই প্রণয়ী দগ্ধ হৃদয়কে শীতল করে দিও
চলুক জলস্রোতের মায়ার লহরে এক প্রণয়ী ঢেউ,
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে স্বীকারোক্তি দিবো কঠিন মুহূর্ত গুলোতেও তোমার প্রেমে ডুবিয়ে দিও,
তোমাকে ভালোবেসে ধন্য আমি সুপ্রিয়
এ মহামারিতে যদি মরে যাই যদি আর ফিরে না আসি
যদি গ্রাস করে ঘাতক করোনা ভাইরাস,
যদি আর কবিতা লিখা না হয় এই সময় যদি মৃত্যু মৃত্যুর মিছিল আমাকে করে আহ্বান,
এমন লকডাউনে স্তব্ধ শহরে যদি বন্ধ থাকে সকল পরিবহন
জন অনুপস্থিতি ছাড়া যদি এই সমাধি হয়ে যায়
ভয়ে কেউ না আসে জানাজায়
তুমি কি ভুলে যাবে আমায় ?
স্মৃতি গুলো ভাঁজ করে রেখে দিও মনে রেখো শহীদ স্বরণে
অনুভব করো কবিতার প্রতিটি চরনে,
ক্ষমা করে দিও সুপ্রিয় যদি আর কখনো ফিরে না আসি………….

— ফারজানা শারমিন
১৩ – ০৪ – ২০২০ ইং

অন্তরঙ্গের জলসা ঘর…

আমার কাছে তুমি থেকে যাও কিছুক্ষণ
আরো কিছুক্ষণ ভেজা জোছনায় রুপসী নির্ঘুম রাতে
আমাদের কথার ফুলঝুড়ি ছুটে চলুক বেসামাল
এইখানে রেখে যেও রুপালী অক্ষরে লেখা চিঠি
লিখে রেখো আছি চিরচেনা এই পথেই
তুমি আমি কাছাকাছি ছুঁয়ে দেখো এই হাতখানি
স্মৃতিময় হয়ে থাক জীবনের কিছু ভুল রোমাঞ্চিত কিছু রাত,
ভোরের শিশির কণা এই পথ যেন চিরচেনা,
তোমার আমার প্রেম মোহনায় ভেসে ওঠা ভালোবাসার এক অনন্ত উর্মিমালা,
নিশিপুষ্পের গন্ধ ছড়িয়ে চারদিকে উদাস হাওয়া বয়ে যায়,
সোহাগী বাঁশির সুর বেজে যায় অন্তরে,
নীল সমুদ্র সৈকতে তুমি আর আমি জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে হেঁটে যাই,
তছনছ করে ভালোবাসো তুমি,
সমস্ত সীমারেখা পার করে ভালোবাসার অথৈ সাগরে ডুবিয়ে দাও আমায়,
শুধু মুহুর্ত গুলো মধ্যে ছিল সুখের দীর্ঘ অভিলাষের তৃপ্তি,
মনের খুব গভীরে তুমি আছো মিশে গোপন গভীরতা স্বপ্নের মায়াজালে,
সবটুকুই যেন নৈসর্গিক এক কল্পনা,
যে শিমুল তোমারই নামে ফুটেছে আমার হৃদ কাননে,
রাঙিয়ে দিও তোমার প্রেমে আবার নতুন ভাবে সাজিয়ে নিও প্রগাঢ় অন্তরঙ্গের জলসা ঘর…………..

— ফারজানা শারমিন
১১ – ০৪ – ২০২০ইং

কভিড নাইনটিন….

কভিড নাইনটিন……………

প্রযুক্তিভিত্তিক পৃথিবী দখলের অহর্নিশ প্রয়াসে
আর বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে নতুন প্রজাতির আবিষ্কার,
সৃষ্টি ও ধ্বংসের সকল কলাকৌশল নিয়ন্ত্রণ আজ মানুষের হাতেই,
আকাশে বাতাসে নিপীড়নের ক্রন্দন, ঘৃণা ও বিদ্বেষ
আর জঘণ্য ভয়াবহ সন্ত্রাসী কবলে আজ ক্ষুদ্র সমাজ সম্প্রদায়,
ক্ষমতার দম্ভে পৃথিবীতে শুরু হয়েছে কলঙ্কিত অধ্যায়,
অথচ ক্ষমতার পতন ইতিহাসের ধ্রুব সত্য,
কভিড নাইনটিন আজ তারই নিদর্শন
উহান থেকে সমস্ত চীন এমনকি বিশ্বে ছড়িয়েছে,
ক্ষুদ্রতম এই ভাইরাসে বিশ্ব আজ স্তব্দ
সমস্ত ক্ষমতার দাম্ভিকতায় আজ ফাঁটল ধরেছে
মহামারীর ছোবলে পড়ার আতঙ্কে,
বিষাদের সুর ধ্বনি চারিদিকে অদৃশ্য করোনার থাবার দাপটে,
এ কেমন মৃত্যু ?
ক্ষমা করো হে দয়াময় !
শেষ বারের মত মরহেদ দেখানো হয়না বিশেষ আয়োজনে,
গোসল কিংবা জানাযাও নয়,
সন্তানেরা নির্বাক তাকিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে,
শেষ দেখাও হয়না প্রিয়তমার সাথে কিংবা কোন আত্মীয় স্বজনের সাথে,
শেষ কথাটি বলা হয়না আর,
আহ্ কি করুণ মৃত্যু !
চারদিকে শুধুই নিরব শোক আর লাশের মিছিল
বাতাসটাও আজ বড্ড ভারী লাগে
একটা ভাইরাস পৃথিবী বদলে দিলো
কবে হবে মুক্তি কে তা জানে,
কাঁপছে পুরো বিশ্ব আজ করোনার আগমনে………..

— ফারজানা শারমিন
৩১ – ০৩ – ২০২০ইং

এক আকাশ ভালোবাসা…

এক আকাশ ভালোবাসা…..
কি লিখবো কি লিখবো এই ভাবতে ভাবতেই
আর লিখা হয়ে উঠে না,
কেটে যায় দিন রাত্রি চলে যায় বেলা,
রয়ে যায় কতো শত অলিখিত গল্প কবিতা
গল্প অদৃশ্য প্রায়, কবিতার উপমা আজ নিশ্চুপ,
ছন্দেরা গেছে দূর হারিয়ে সময়ের সাগরে দিয়েছি ডুব,
কথা ছিল আসবো ফিরে শব্দের তীরে
তবু হয় না ফিরে আসা,
খুঁজে নিও অব্যক্ততার মাঝে লুকিয়ে থাকা হাজার ও কথার ছন্দ আঁকা
খুঁজে নিও নিশ্চুপ থাকার নিরবতা,
সেখানে শুধু একমাত্র তোমারই জন্য নিজেক ঢেকে রাখা
খুঁজে নিও সব কল্পনার কড়িডোরে,
সবকিছু তোমায় নিয়ে বিভোর থাকা খুঁজে নিও নিঃশব্দতার মাঝে,
ভালো থাকুক সব গল্প- কবিতা,
তোমার জন্য এক আকাশ ক্লান্ত হৃদয়ের ভালোবাসা………..

— ফারজানা শারমিন
২৪ – ০৩ – ২০২০ ইং

ডেথ সার্টিফিকেট…

রাগ গুলো আজকাল আর প্রকাশ করতে ইচ্ছে করেনা,
অভিমান অভিযোগ করাটাও ভুলে গিয়েছি,
প্রতিনিয়ত হৃদয়ে রক্তক্ষরণ,
কিন্তু ধৈর্য্য ধরাটা এখন খুব কঠিন আর অপেক্ষা খুব ভয়াবহ,
অবহেলাটা ছুড়ে দেয়া বিষাক্ত তীরের মত যন্ত্রণাদায়ক,
দুটো এক সাথে থাকলে একটা জীবনও নিরব নিথর হয়ে যায়
তাই মাঝে মাঝে নিজেকে “মৃত” ঘোষনা করতে ইচ্ছে করে,
ইশ কেউ একজন থাকতো লিখে দিত আমার ডেথ সার্টিফিকেট
যেখানে লেখা থাকবে “ভালোবাসার অপরাধে এই রমনীর” মৃত্যু” হয়েছে…

— ফারজানা শারমিন
২৩ – ০৩ – ২০২০ ইং

প্রতিটি স্মৃতি যেন জীবন্ত…

প্রতিটি স্মৃতি যেন জীবন্ত………..

প্রকৃতির বুক জুড়ে যে মাতাল হাওয়া বইছে ঝিরিঝির, সুমিষ্ট সুরে যে পাখি গাইছে গান,
শিমুল পলাশ বৃক্ষ পত্র পল্লব যে রক্তিম লাল বর্ন ধারণ করেছে,
কৃষ্ণচূড়ার ডালে যে রঙিন বাসর বসেছে,
সব বসন্ত বরণে আমিও তাদের মাঝে ছুঁয়েছি তোমাকে
সেই মাতাল বসন্তের পরশ নিও সুপ্রিয়,
ভালোবাসার আঙিনায় পরশটুকু নিও তোমার বুকের ভিতরে আকাশ জুড়ে,
আমার সেই রাতে চন্দ্র বিলাসী অনুভূতি গুলো যে
তোমার প্রেমের আঙুল ছুয়ে যায় সকল সীমানা ছাড়িয়ে,
ভীষণ ভালোবাসি,
ভালোবেসে বুকে পুষি আকাশ,
যে আকাশে তোমার নামে বৃষ্টি ঝড়ে
তোমার খুশিতে জ্যোৎস্নার আলোয় গাঁ ভাসে,
তোমার আমার ভালোবাসার প্রতিটি ক্ষন প্রতিটি স্মৃতি যেন জীবন্ত,
জানো ভালোবাসার মানুষের খুব কাছাকাছি কখনই আসতে নেই, তাকে খুব বেশি জানতে নেই,
জানতে গেলেই হয়ত মুগ্ধতা চলে যায়,
না পাওয়া কিছু পেয়ে গেলে সে ভালোবাসা কমে যায়
আমি চাই তুমি আমার জীবনে সবসময় আমার ভালোবাসা হয়ে থেকে যাও,
তুমি থেকে যাও আমার রঙিন প্রচ্ছদে অনেক কথার ভীড়ে মুগ্ধতার জড়ানো প্রকাশিত নতুন বই হয়ে,
আর আমি তোমার কাছে কল্পনার সেই মায়াবতী হয়েই রয়ে যাই অন্তরে…………..

— ফারজানা শারমিন
১৩ – ০৩ – ২০২০ইং

আমি অপরাজিতা নারী…

p

আমি অপরাজিতা নারী……….
কতটুকু চিনতে পেরেছিলাম
আমরা দুজন দুজনকে,
আজ আর কোন প্রশ্ন নয়
নয় কারো কাছে কোন জবাবদিহিতা,
সোনার পেয়ালায় রাখা
অমৃত সুধা পান করেছি আমি
কেঁদেছি একাকী,
আজ আর কোন প্রশ্ন নয়
নয় কোন অনুশোচনা,
আমি প্রতিবার সফল হয়েছি
আরো সাহস নিয়ে
আরো শক্তি নিয়ে ফিরে এসেছি
আর নিজেই আগুনে পরিণত হয়েছি,
জয় করা না পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেইনি,
জয় করা আমার প্রথম টার্গেট,
হোক তা কারো হৃদয় হোক তা পাহাড় সমান দুঃখ ।
কারো হৃদয় জয় করা খুব সহজ,
কিন্তু দুঃখ কে জয় করতে হয়
হাজার বার নিজেকে ভেঙে নিজেকে গড়ে,
হাজার বাধা বিঘ্ন পেড়িয়ে দুঃখ কে জয় করতে হয় |
আর যে দুঃখ কে জয় করতে পারে তার কাছে পৃথিবীর অসাধ্য বলতে কিছু নেই,
আর আমি সেই অপরাজিত নারী…………..

— ফারজানা শারমিন

আজন্ম প্রেম………….

আজন্ম প্রেম…………….

দেহের মাদকী সুঘ্রাণের মতো
ব্যাথা বেদনা গুলো ও লেপ্টে থাকে বুকের গভীরে,
উনুনের আলোর মতো দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে হৃদয়,
না চাইতেই তুমি এসে ধরা দাও,
কোন ভোরে এসে আমার ঘুম ভাঙাও,
চুপিচুপি কানাকানে এসে বলে যাও সুপ্রভাত সুপ্রিয়,
আকাশে ঘুম ঘুম তারা বাঁশ বনে জোনাকি,
কখনো কখনো স্বপ্নে তোমাকে পাই,
সীমারেখার সব বেড়াজাল ভেঙে ছুঁয়ে দাও
ভালোবাসার ঝড় তুলো,
কাঁঠালী চাঁপা গাছ দুলে ওঠে নিরবে,
শান্ত সমুদ্র প্রতিবাদে উত্তাল হয়,
শঙ্খচিল ওড়ে দূর আকাশের ‌নীলিমায়,
পাহাড়ী অচেনা সুরের মত তুমি আসো,
কত আলোকবর্ষ পেরিয়ে ভোরের আলোর মতো তুমি এসে আমার লেখার টেবিলে ধরা দাও,
বড় কৃতজ্ঞ থাকি আমি তোমার কাছে,
তোমার মধ্যে পাই বৃষ্টিদিনের উদাসী ছন্দ,
রাতের নির্জনতা চুপি চুপি কথা বলে,
আবার মাঝে মাঝে তোমায় খুঁজে খুঁজে সারা কোথাও তোমাকে পাইনা,
কেন যে আমার সঙ্গে এত লুকোচুরি করো তুমি বুঝি না,
দিনগুলো স্মৃতি হয়,
স্মৃতি কাঁদে নিরালায়,
জীবনের কথাকলি প্রতিদিন বাজে,
কৃষ্ণচূড়ার রঙিন দিন গুলো কোথায় গেলো ?
আলোর প্রজাপতি বিকেলে কোথায় পথ হারালো ?
কাছের মানুষ অচেনা হলো কবে ?
অথচ —
কবিতায় তুমি আমার আজন্ম প্রেমিক,
এসব ছলনা তোমাকে মানায় না,
তোমাকে ভালোবাসি বলে মনে মনে সাত সমুদ্র পার করে মোহনার মুখে দেখি উত্তাল ঢেউ,
স্বপ্নদ্রষ্টা আমি জেগে থাকি নির্ঘুম রাত পার করি,
রাত গভীরে বনজ্যোৎস্নায় আলো অন্ধকারে আমি একলা হেঁটে যাই,
তোমার সঙ্গে কবিতায় আমার ঘর সংসার সেই কবে থেকে,
তোমার প্রতি আমার এতো রক্তের টান এতো মায়া
আমার সঙ্গে এত কেন ছলনা ?
আজ পর্যন্ত তোমাকে বুঝে উঠতে পারলাম না,
কখনো তোমার মাঝে দেখি ভালোবাসার স্বপ্ন সমুদ্দুর,
কখনো তুমি নিষ্ঠুর সাহারা মরুভূমি,
তবু যে তোমাকেই ভালোবাসি,
তোমাতেই বাঁচার প্রেরণা পাই আমি
তোমাতেই আমার আজন্ম প্রেম……………..

— ফারজানা শারমিন
০৫ – ০৩ – ২০২০ ইং

কেমন করে ভালোবাসো আমায়…

কেমন করে ভালোবাসো আমায়………..

তুমি কেমন করে ভালোবাসো আমাকে আমি তোমার প্রেমের গভীরতায় নিমিষেই হারিয়ে যাই,
যেমনি বিশাল সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসে হারায় ক্ষুদ্র বালুকণা,
তুমি কেমন করে দেখো আমাকে আমি কেমন অস্থির নেশায় বুদ হয়ে থাকি তোমাতে,
যেমন জগতের সব মাদকতা আমাকে গ্রাস করে
ডুবিয়ে দেয় গভীর থেকে অতল গভীরে,
তুমি কেমন করে ভালোবাসো আমাকে
মনে হয় হিমেল বাতাস ছুঁয়ে দেয় আমিও মিলেমিশে একাকার হই তোমাতে,
অদ্ভুত তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হই হারিয়ে ফেলি অস্তিত্ব ।
আমার চোখের গভীরে অব্যক্ত যে কথা তুমি তা অনায়াসেই বুঝতে পারো,
আমার হাতের মেহেদী রঙে লুকিয়ে থাকে গভীর প্রেম তুমি তা অনুভব করতে পারো,
বুকের ভিতর যে ঝড় উঠে তোলপাড় শুরু হয় তছনছ করে দেয় সব
তুমিই তা থামাতে পারো,
তুমি কেমন করে ভালোবাসো আমাকে আমি তোমার প্রেমের গভীরতায় নিমিষেই হারিয়ে যাই,
যেমনি বিশাল সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসে হারায় ক্ষুদ্র বালুকণা…………

— ফারজানা শারমিন
০১ – ০২ – ২০২০ ইং

সন্ধ্যাতারা……….

সন্ধ্যাতারা………..

রাতের কার্নিশ বেয়ে প্রবল বেগে অভিমানে ছিটকে পড়েছে সন্ধ্যাতারা,
নির্লিপ্ত আঁধার বেয়ে নেমে আসে নক্ষত্রের আর্তনাদ,
যেন সুনশান নীরবতায় চারদিক
উড়ে যায় প্রেমের স্নিগ্ধ গাঙচিল
সুনীল আকাশে জেগে ওঠে ভালোবাসার পঙতিমালা,
নির্লিপ্ত মেঘের ভাঁজে লুকিয়ে থাকে গোপন
অভিমান,
না বলা কথার সাতকাহন,
সন্ধ্যাতারার কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলাম জানতে চেয়েছিলাম
ভালোবাসার অন্তরালে এ এক নিছক পুতুল খেলা,
কবিতার আকাশে আঁধার কালো মেঘ
হঠাৎ বৃষ্টি ঝরে অঝোর ধারায়,
সন্ধ্যাতারার তুমি কি তা জানো কেন এমন হয় ???
তোমার নামের মৌ মৌ ঘ্রাণে জেগে ওঠে তোলপাড় করা বৈষ্ণবীর প্রেম,
এলোমেলো হয়ে যায় ভেতরের শহরটা,
নিয়ন আলোয় দু চোখের গভীরে ভেসে ওঠে তোমার ঐ মায়াবী মুখ,
অনুভবে জেগে ওঠে মাদকতার মাতাল ঘ্রাণ,
নিখুঁত প্রেমের কারুকাজে অহর্নিশি ছুঁয়ে যাও তুমি এই মন প্রাণ,
কাছে যাওয়ার অভিপ্রায়ে বুকের ভাঁজে জেগে ওঠে এক নীলকণ্ঠ পাখি,
তোলপাড় সুখে ছুঁয়ে যায় গভীর আবেশে রাতের নির্লিপ্ত আঁধারে দুটি আঁখি,
পিছু ডেকে যাও নীরব ভাষাতে,
প্রণয়ের উষ্ণসুখে একফালি চাঁদ উঁকি মেরে প্রবেশ করে হৃদয়ের গহীনে,
পূর্ণিমার রুপালী আলোর স্পর্শে ছুঁয়ে যাও ভালোবাসার নিবিড় আলিঙ্গনে,
তোমার নামের মৌ মৌ ঘ্রাণে জেগে ওঠে তোলপাড় করা বৈষ্ণবীর প্রেম,
তবুও চেনা শহরটা আজ বড্ড অচেনা
জীবনের ব্যস্ততায় হাজারো রঙিন মেলায়
সময় ঘড়ি চলে যায় আপন গতিধারায়,
আরো একটা দিন চলে যাবে বলা হবেনা
আরো একটা রাত চলে যাবে তবুও কথা হবেনা
এক একটা মুহূর্ত চলে যাবে বলা হবেনা সে ব্যথা ছোঁয়া হবেনা মনের গভীরতা,
সন্ধ্যাতারা নির্বাক চাহনিতে জানিয়ে দিলো
সব প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা,
ভালোবেসে অপরাধ করিনি তো আমি………..???

— ফারজানা শারমিন
৩০ – ০১ – ২০২০ ইং

জীবনের বড় প্রাপ্তি তুমি…

জীবনের বড় প্রাপ্তি তুমি…..

আমার বিদায় বেলায় তোমার দু ফোটা চোখের জল
আমাকে দিশেহারা করে দেয়,
কেমন করে আমায় যেন ভাসিয়ে নিয়ে যায় দূর কোন অজানায়,
তুমি বৃষ্টি হয়ে আমায় ভিজিয়ে দাও কোন এক শ্রাবণ সন্ধ্যায় আমি হারিয়ে যাবো মেঠোপথের বাঁকে,
ঐ পাহাড়ি ঝর্ণা অতিক্রম করে চলে যাবো দূর বহুদূরে গোধুলীর সাঁঝে,
তুমি খুব করে খুঁজবে আমায় প্রথম রবির মাঝে,
আমি কখনো থাকবো বনো জোছনা হয়ে,
কখনো বা আলোর প্রজাপতি হয়ে ছুঁয়ে দেবো তোমায়
রাতভর ঝমঝম বৃষ্টি হয়ে স্পর্শ করবে তুমি
আমায় অতি আদরে,
শুধু জেনে রেখো তোমাকে পেয়েছি আমার জীবনে
পৃথিবীর যে কোন প্রাপ্তির চেয়ে অনেক অনেক বড় পাওয়া,
শুধু জেনে রেখো আমি প্রখর রৌদ্র নই তোমাকে পোড়াতে চাইনা,
আমি তোমার প্রথম শ্রাবণের এক ফোঁটা বৃষ্টি
ফাগুনের প্রথম ফোঁটা লাল কৃষ্ণচুড়া
নিশিথের জাফরানী মৌচাক,
তোমার প্রথম ছোঁয়া আলোর প্রজাপতি,
মৌ মৌ ঘ্রাণে জেগে ওঠা তোলপাড় করা বৈষ্ণবীর প্রেম,
স্রষ্টার শৈল্পিক হাতের অন্নপূর্ণা,
তোমার সিঁদুর সঙ্গিনী ইস্কাপনের বৌ………….

— ফারজানা শারমিন
২৬ – ০১ – ২০২০ ইং

এক ভালোবাসার উপাখ্যান…

এক ভালোবাসার উপাখ্যান

এমন একটা প্রহর আসুক
যে প্রহরে শুধু তুমি আর আমি থাকবো,
আমাদের বলতে চাওয়া বা শুনতে চাওয়ার কথা,
রোমাঞ্চিত রাতের যতো সব গল্প গাঁথা,
এমন একটা প্রহর আসুক
যে রাতে প্রণয় কথায় ভিজবো দুজন
একটি গোলাপ হাতে তুমি নাম ধরে ডাকবে
কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলবে —
হে আমার বৈষ্ণবী আমার ইস্কাপনের বৌ কাছে এসে নিভিয়ে দাও এ বুকের আগুন,
হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা নিয়ে আমি তাকিয়ে ছুটে যাবো তোমার দিকে,
মাতাল প্রেমে হৃদয় আজ বড্ড দিশেহারায়
এ কেমন এক নেশা জাগায়,
টাচ ল্যাম্পের নিভু নিভু আলোয় আমরা রচনা করবো
এক রোমাঞ্চিত রাতে ভালোবাসার উপাখ্যান……..

— ফারজানা শারমিন
১৮ – ০১ – ২০২০ ইং

তিনি একজন কবি ( গদ্য কবিতা )………..

তিনি একজন কবি ( গদ্য কবিতা )……………

তিনি একজন কবি
মোহাম্মদ ইকবাল সুনিপুণ শব্দের শৈল্পিক কারিগর শব্দের গাঁথুনিতে বানান কল্পনার ঘর,
নদী আকাশ অরন্য পাখি চাঁদ জোছনা কেউ নয় কবির পর,
শব্দ বিন্যাসে কবি বানান নিজস্ব পৃথিবী সময় কথা বলে যায় নিরবধি,
কবির কবিতার শব্দ উচ্চারণ করা মাত্রই
মনের ভেতর এসে ভর করে অদ্ভুত শিহরণ,
আমরা উপলব্ধি করি মমতায় আঁকা কোমল কোনো মূর্তিকে যাকে অনুভব করে তিনি লিখেন,
তাঁর কলমের শব্দ গড়ে উঠে কবিতার বিস্তীর্ণ ভূমি,
তাঁর চিন্তায় শব্দের স্রোত নিত্য বহমান,
যাঁর চেতনায় পৃথিবীর বিচিত্র রঙ লীলা রূপ রস বৈচিত্র্য খেলা করে এবং
তাঁর জন্য সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অপরিমেয়।
.
তিনি একজন কবি —
তাঁর কাব্য প্রতিভার সাহিত্য চর্চার জোরেই তিনি চিরকালের হাসি-কান্না, জীবনবোধ, বিন্যাস, প্রেম-বিরহ, ক্ষোভ-আক্ষেপকে
শব্দের নান্দনিক স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে কবিতা গড়ে তুলেন।
তিনি কেবলই কবিই নন তিনি একাধারে সত্য ও সুন্দরের পূজারী, দার্শনিক, ভবিষ্যতদ্রষ্টা, বিজ্ঞানীও বটে,
তিনিই পারেন নিজের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, বিশ্বাস, উপলব্ধি ও অনুভবগুলো
দেশকালের সীমানা পেরিয়ে বহুদূর ছড়িয়ে দিতে,
তিনি সীমানা মানেন না, তিনি নিয়মে-কানুন, তাঁবেদারির তোয়াক্কা করে না,
তিনি নিরন্তর ছুটে চলেন কবিতার জন্য,
কবিতার অন্বেষণে তাঁর দিন-রাত কাটে,
কবিতার সৌন্দর্য আবিষ্কার নেশায় মত্ত তাঁর ঘুম কেড়ে নেয়,
তাঁর চিন্তার জগতে তখন দ্বিতীয় কোনো বিষয় থাকে না কবিতাই তাঁর তৃপ্তির নিঃশ্বাস।
.
তিনি একজন কবি —
যার রয়েছে অলৌকিক ক্ষমতা,
তিনিই পারেন শব্দ দিয়ে বুকের মধ্যে অনুভূতির নতুন নতুন নহর সৃষ্টি করতে,
পৃথিবীর বিচিত্র ভাব কবি হৃদয়কে আন্দোলিত অভিভূত করে তোলে,
কবির চেতনা করে তোলে তীক্ষ্ণতর স্পর্শকাতর।
মানব জীবন ও প্রকৃতির ক্ষিপ্ত-বিক্ষিপ্ত সৌন্দর্যবোধ, বেদনাসিক্ততার যখন মনে-মননে ভর করে
তখন কবি শব্দের গাঁথুনীকে গড়ে তোলেন তার কবিতা,
কবি জীবনের প্রতিভা আঁকেন, কান্না হাসির অনন্ত জীবন ভাবেন, ভালোবাসা দেন, জীবন দেন,
দর্পনে শত মুখ দেখেন কবিতা লেখার সময় কবি রাষ্ট্রপতির চেয়ে বড়।
.
তিনি একজন কবি —
কবি মাত্রই বেখেয়ালী, আনমনা, ঘোরগ্রস্ত, কল্পনাবিলাসী মানুষ,
তিনি বলেন আমি লিখি আত্মার নির্দেশে কবিরা কখনো মিথ্যা বলে না,
কবি প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলেন জীবনের গূঢ় রহস্যকে, উন্মোচন করেন সত্যকে,
সৃষ্টির আনন্দে উল্লাসিত কবি উন্মাদনা পান, কবিতায় খুঁজে পান আপন ঠিকানা,
এ কথা সত্য যে,
সাহিত্যে কবির সম্মান অনেক উপরে,
একজন কবি যখন হেঁটে যান আমাদের উচিত তাঁর সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যাওয়া।
শত শত বছর আয়ু কী কবির প্রাপ্তি নয় ??
কাব্যিক বোধ মানুষের মন কে রাঙায় নাড়া দেয় উপলব্ধি করা যায় পৃথিবী কত রূপময় ছন্দময়,
যদি কবিতা লেখা না হতো তাহলে নিরসে নির্বাসিত হতো পৃথিবী,
পাখিরা গান গাইতো না কোনো প্রেমের চিঠি লেখা হতো না, ফুটতো না কোনো ফুল,
আর এই ফুল ফোটানো আর সুন্দর পৃথিবী গড়ার কাজই করেন তিনি।
.
তিনি একজন কবি —
তাঁর কবিতায় ফুঠে উঠে তাঁর দেশ, কবি তাঁর ঐতিহ্যের ধারক,
কবি তাঁর মাটি ও মানুষের কথা বলেন, সুন্দর আর মুগ্ধতার কথা বলেন,
তিনি সত্য আর ন্যায়ের কথা বলেন, তাঁর স্বদেশকে সারা বিশ্বে তুলে ধরতে,
কবিতার বিনিময়ে তিনি বেঁচে থাকবেন শত শত বছর,
তিনি একজন কবি এক কিংবদন্তি একটি জাতির জন্য এটি গৌরবের একটি দেশের জন্য সম্পদ,
তিনি নিজেকে নির্মাণ করেছেন তিলে তিলে
তার নির্মিত কাব্যিক প্রাসাদ বেশ উঁচু,
তিনি একজন কবি একজন অসাধারণ মানুষ
তিনিই মোহাম্মদ ইকবাল…………..

— ফারজানা শারমিন মৌসুমি
০৩ – ০১ – ২০২০ ইং

ভালোবাসার রঙমহল….

ভালোবাসার রঙমহল……….

তোমার বুকে আমার হাজার নখের আঁচড়,
তোমার বিছানায় আমার সাথে প্রেমের বাসর,
রাতভর তোমার সাথে মাতাল হয়ে সোহাগ ও আদরে পার করি সময় ভীষণ,
আজকের এই রঙমহলে তোমার প্রতিটি পরশে আমি বারংবার বেপরোয়া হয়ে উঠি তখন,
আর বাঁধ মানছেনা, মানছেনা তো মন
তোমার বুকের মধ্যে যেন কামনার আগুন ঠোঁটে মৃদু কম্পন,
আমাকে তোমার ভালোবাসার সাগরে ডোবাতে চাইছো তুমি,
বৈঠার আঘাতে আঘাতে করো শিহরিত রোমাঞ্চিত,
আহ্ —
এ যেন এক স্বর্গীয় সুখ
এ কোন প্রেমের খেলাতে মজেছি যে আজ,
নগ্ন পায়ে হেঁটে হেঁটে অতঃপর মাদকতার সাগরে ডুবিয়ে দাও আমায় নি:শব্দে……….

— ফারজানা শারমিন
৩০ – ১২ – ২০১৯ ইং

স্বপ্নের সে মালা………….

স্বপ্নের সে মালা……….

পৃথিবীটা অসম্ভব সুন্দর,
ভোরবেলায় নগ্ন পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর হেঁটে হেঁটে তোমার জন্য শিউলি কুড়িয়েছি,
সুতোয় গেঁথে রেখেছি স্বপ্নের সে মালা,
চুপিচুপি খুলে রেখেছি বন্ধ দুয়ার তুমি আসবে বলে,
ভর দুপুর বেলাটাও মাঝে মাঝে ভীষণ ভালো লাগে
শীতের উষ্ণতা ছেড়ে ঝলমলে আলোর ছোটাছুটি,
দু-চারটা প্রজাপতি আনমনে ঘোরাঘুরি,
দখিনা জানালায় ঠান্ডা ঠান্ডা হিমেল হাওয়া
এক কাপ চায়ের চুমুকে কবিতা লিখার আজন্ম তৃষ্ণা জেগে ওঠে এই উৎফুল্ল জীবনে………..

— ফারজানা শারমিন
২৮ – ১২ – ২০১৯ ইং