টিপু সুলতান এর সকল পোস্ট

টিপু সুলতান সম্পর্কে

টিপু সুলতান লেখক নামঃ আদি সানম ১২ অক্টোবর ১৯৮৬ কেশবপুর, যশোর। বাংলাদেশ। জীবন বৃত্তান্ত; লিকলিকে স্বচ্ছ ক্যানভাস নদীর শরীরে উপচে পড়া প্রেমালিকার ঢেউ, স্রোতস্বিনী কল্লোলঃ প্রথম বার্তা,সবুজ আফ্রোদি উদ্দ্যানে গানের বাঁশিতে সংগীত শোনায়- লেবুগাছ ঘ্রাণ-আলাজ শরবত আমার পূর্ণানন্দ, নক্ষত্র-পৃথিবীপৃষ্ঠ হৃদয়বীণা রোদে পোড়া সখিনার রক্ত,শাদা দুধের মা; কালোত্তীর্ণ সন্তান আমি তাঁর শেষ অনন্দটুকুর ছায়ানট- মানুষ হয়ে ওঠা প্রবাদ ও সংলাপ। ★ প্রথম কাব্যগ্রন্থঃ গৃহ কারাগার।২০১৭ ইং। নৃ প্রকাশন,ঢাকা। প্রচ্ছদঃ কাব্য কারিম। ★ যৌথ কাব্যগ্রন্থ থেকে জাতীয় ম্যাগাজিন,লিটল ম্যাগ, পোর্টাল, জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন ব্লগে টুকিটাক লেখালেখি। প্রিয় বাক্যঃ আমি ভালো আছি, তুমি...

বিংশ শতাব্দীর কবি, নজরুল

28374a

বিংশ শতাব্দীর কবি, নজরুল। মানুষের মুক্তির অভিভাবক। সামন্তবাদের সংকীর্ণতা, অন্ধকারচ্ছন্নতা, দুষ্টবুদ্ধিসম্পন্ন বেষ্টনী ভেঙে বের হয়ে এসেছেন। তাঁর পারঙ্গমতা বোধের অন্তরায়ে শ্রেণি সংগ্রামের কথা বলেছেন। বাংলা সাহিত্যের উৎসব আবহে শিশুদের শৈশবজুড়ে শত পল্লবী শোভা ছড়াচ্ছে। এ সত্য অমলিন। কবি লিখেছেন-

– গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান।
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, আছে ধর্ম জাতি,

– গাহি সাম্যের গান-
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাঁধা ব্যবধান
যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম, খ্রিস্টান।।
মিথ্যা বলিনি ভাই
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোন মন্দির-কাবা নাই’।

ভালোবাসা চির বিদ্রোহী কবি ♥

অংশ

হাঁসডানার মতো এই যে লম্বা অবসর, রজঃস্বলা
নগরে-উদ্যত এক হৃদয়ে ফেরে আবার প্রত্যন্ত স্বপ্ন
ওই দেখা মাস্টার হাসি,আতঙ্ক; একটু টোকা দেয়-
তোমার নদীপ্রপাত সরাইখানার শিল্পকণা পেঁচিয়ে
ঢাকার দুপুরবেলা আর একাকিনী জলছাপ শাড়ির
মিশকালো পাড় অবতরণ করে, বিস্তীর্ণ নিঃশ্বাস-
এবং সেলাই কলের নিচে সন্ধ্যার স্নিগ্ধ বৃষ্টি শাসিয়ে
সেঁকা রুটির গন্ধ, ভিন্ন বাতাস লাগাতর অধিক সুন্দর
এখানে বিগলিত গহিন ডেরায় আশ্রিত মাছের মতো
সাঁতার কাটে-সুখ, তুমি; প্রেম ছুঁতে পারো-সেয়ানী!

বিশেষ সন্ধ্যা

পুরনো কথা, প্রসাধনীর মতো অদ্ভুত সুগন্ধ পাখির ঠোঁটে
ঝুলে যাওয়া সন্ধ্যায়-খুব বিঘ্নিত সুন্দরে বিশেষ বাণিজ্য
নিয়ে এসো-প্রতারিত হবার আগে- এবার লবঙ্গফুলের
আব্রুঘেরা জ্যোৎস্নার নিচে হৃদবেষ্টিত ঝুড়িভর্তি আপেল
একটা কবিতা-আর নকশী কাঁথায় জড়ানো শিশুর মতো
স্রষ্টা হাসি, খুব প্রাধান্য পাবে। তুমি এলে-মে মাসের বৃষ্টি,
নিহত হরিণের বনে হাবিলদার বাতাস প্রায় সীমাহীন…

বন্ধু

এই নগরে অনেক বন্ধু রয়েছে আমার
বিশাল বটগাছের মতো;
ডাকপোস্ট খুলে কোরাস গানের নামে
নিবিড় নিসর্গ এক কোমলতা ঠেকিয়ে
সন্ধ্যার নীল জ্যোৎস্নাময়ী সিঁথি ধরে
হরিণছুটির মতো হৈহোট্ট করে, এদিক
ওদিকের শহর তখন জিরোয়, সটানে-

আর আমাদের জিহবায় খুন হয়ে যায়
কমলালেবুর মতো মাঝবয়েসী হাসি
এবং মিথের গহিন থেকে লাফ দেয়
খরগোশ বাচ্চার সমেত দ্বিতীয় দশক
লাঙ্গলে লাঙ্গলে ফেরে ভুট্টার মৌল রোদ
রুটির কারখানায় এক রাত হেমন্ত এনে
নরমমাংসের স্বাদ নিজেদের করে খাচ্ছি
এইসব দিনে কবিতা বান্ধব রং-সুমধুর!

এমনো সন্ধ্যায়

দেখা হবে, সুশীলতা স্তনের সন্ধ্যায়
মাছ চোখের মতো চুমুর বিনিময়ে
এই যে ধরুন, শহরে গভীর উৎকণ্ঠা
এমনো সন্ধ্যায়~দ্রৌপদীর বাঁকে
প্রবেশ করবে সম্প্রতি দুগ্ধ নীলিমা
আর অবসান হবে চিকন লজ্জা
দারুণে এক অভ্যর্থনার গ্রন্থিঘোরে-
লাভরোড, আযানু সৌরভ~মন্দির
তারপর এল সুখে মিরপুর জংশন

কদাচিৎ এক সনাতনী হাওয়া এসে
শাদা কঙ্কালে লুকোনো পবিত্রতায়
আধ-ঘন্টার মতো সবুজ বনপালা
সুন্দরের গলা নিয়ে কবিতা শোনাবে-
আর স্নিগ্ধ অন্ধকার হ্রদে~প্রসাধনীর
মুগ্ধতায় কার্তিকের ছেউটি কাক!

২৬ মার্চ ২২

দু জন

এক বিষণ্ণ দুপুরে পার্ক করা টোকাই হাওয়া
এসে বড্ড যাদুর গল্প বলে গেল, আর আনন্দের
পাশাপাশি দুটো ভাত শালিক ঘাসের পিঠ খুঁচে
নিয়ে যাচ্ছে এপ্রিলের সবুজ রং এবং উড়ন্ত
উত্তেজনা; ডুমুরকৃত অনুতাপে টের পাচ্ছে স্নায়ু-
বিপরীতে-সরকার এবং কবি দু’জনেই খেলুড়ে!

আমরা

অথচ প্রগাঢ় সম্পর্ক টেনে আমাদের
ঘোলা চোখে অনেকগুলো স্মৃতি
রোজ উড়ে আসত আর আমড়া
পাতার উঠানে অসম্ভব মুগ্ধতা নিয়ে
কী এক মধুর কলমা পড়েছিলাম
একের ভেতর এক রেখে; অতি সহজে
আবগাহন করতে থাকি আমরা-

আর বিপুল শিল্প অনুযায়ী যে সকল
সবুজ হৃদয়ে অসমাপ্ত হাসি এনে
হাজিরা দিচ্ছিল শাদা আশাদায়ক
করুণ দুপুরের ছায়াহীন~দূরত্ব
ভারী বাতাসে বুক ঠেকলে টের পাই
দীর্ঘসূত্রতার ট্রেন আর পাশ কাটিয়ে
এগোচ্ছে-অপেক্ষা ও ওয়াক্ত আযান!

বাজার

বর্তমানে বাজার এখন চড়াদামের
আঁশযুক্ত ডাবের জল পান করতেই
টবভর্তি ফুল, মেমসাহেবার মতো
সবুজ হরফে একশো টাকার নোট
ভ্যানগাড়ি টায়ার ধরে উড়ে যাচ্ছে
আমাদের ক্রমশ যাদুর উন্নতি খুব!

শহরে যেদিন নাগরিক হয়ে এলাম
প্রতি স্বপ্নের ভেতরে কেবল ধন্না দিত
একপ্রকার মধ্যবিত্ত শান্তিময় শৈশব
মনে হতো নিজেদের ঋতুমুখর শরীর
গোছাতে যতটুকু শ্বাসশুদ্ধ পুঁজিপাটা
আর আয়-রোজগার ধারণে দরকার-
তার ফসলিতন্ত্র শাদা বুননে গোছাব
অথচ প্রত্যেক শরীরে জং লেগে যাচ্ছে।

নাগরিক

তোমার মুখের কোমল চুমু নিয়ে পালাচ্ছে
হায় প্রিয়তমা, বিষণ্ণ দুপুরের গান!
এই রোদে সিংহের পিঠ ছুঁয়ে গড়াচ্ছে
বামজোটের হাড়গোড়ে শাদা বাঁশি,
বাঁশির নাচঘরে-সমস্ত ঠোঁটের মিছিল
মুঠোমুঠো মৃদুশ্বাসের নিগূঢ় সম্বন্ধ এনে
এই নগরে নাগরিক হয়ে আমিও লড়ছি
বিনয়ী সুরে-সুরে শাদা ভাতের মতো;

পেট্রলপাম্পটা পেরোচ্ছে পণ্যের ট্রাক
কিছু শুভ্রবালকের মতো গন্ধ আসে
পশমঘাসের বুনোটে ঘামঘেরা বয়স
আমাদের শরীর, আমাদের রুটিরুজি

অথচ ধূর্ত পুঁজিপতি ব্যাপারী, সরকার
বিপরীত লাভবানে দোকান দোকান খেলছে…

নগরস্বভাব

আর লজ্জার চিকন নাভি থেকে এক
কমলাকাতর রং ঝরছিল এমন বিবস্ত্র
প্রীত ভেবে বনের কুয়াশা মোমের মতো
আজো এই দিন বসে আছে। ভোর চক্র-

তারপর আলো এল; সন্ধের দিকে –
সকল বেগানা দুপুর ভেঙ্গে একটা
পাহাড়ি ঘোড়ার শব্দ ভেসে আসছে
শাদা খরগোশের পায়ে নগরস্বভাব
আর অনাবাদী ধূলির গুল্মলতায়
পৃথিবীর জ্যোৎস্না ছড়ায়ে যাচ্ছে
দারুণ স্বভাবে ঘাস ও ইঁদুরের ছুট দেখে
ঋতুবতীর জটিল উৎস মনে পড়ল
এখানে পুলিশফাঁড়ি ডিঙ্গোয়ে যেন
যে যার হাড়ে জামা পরায়ে রাখছে
সবুজ রং, সবুজ রং-আর শিমুল ফুল!

পারিজাত দুপুর

মাঘের শেষে তুমি উঁকি দিচ্ছ
ন্যাড়া ডালের লাজুক পাতা
আর ইকোনো বসন্ত ভেবে
পারিজাত দুপুর যেন
ভাঁটফুলের মতো হেসে যাচ্ছে

বনে-বনে আগুন লেগেছে
সন্ধের মুখোমুখি, তারপর-
কবিতা লিখছি, খুব বিস্ময়ে
শিমুল ফুলের রং নিয়ে-শিল্প;
এবং নাচঘরে তরুণ বাতাস
পাতাগুলো শুধু-শুধু উড়ছে।

ধানশিশুর মতো চোখ

তারপর এই শহর, সন্ধে শেষে অপেক্ষা ভাঙ্গে
ধানশিশুর মতো চোখ বিছিয়ে জ্যোৎস্না ক্ষেত
আর থানকুনি পাতার ঢেউ এসে গেঁথে যাচ্ছে
অচেনা রমণীর দীর্ঘ শাড়িতে সবুজ বাতাসের
গন্ধ এবং চুলখোলা রাজপথ-সংগীতের হাই
নিয়ে রাতগুলোর পূর্ণিমা সটান ঝুঁকে আছে

এক বনপরী বিদিশার ছায়া অপেক্ষায়-
এখানে তৃপ্তিচিহ্ন এঁকে বিমুগ্ধ হয়ে পড়ে
নীরব অন্তরাল আর নত সম্পর্কের প্রসঙ্গ
উঠে এলে সান্নিধ্য চায়~ আকাশের দিকে
হৃদয় নাচিয়ে-পুরনো উন্মাদ এবং
জিরাফের মতো দীর্ঘ গলার নবান্ন পৃথিবী-
গ্রীষ্ম আর কুয়াশার ফেণায় নেমে আসলে
সুন্দরীতম গিটারিস্ট প্রেমের লোডশেডিং-সুর
বাজিয়ে যায় একগুচ্ছ কবিতার রাজসভা …

একা হেসে উঠি

একা হেসে উঠি। এবং বিরতিহীন
গান শুনছি, নেমে আসে ঘোর-
ভাবছি কী লিখব, নগর কেবিনে বসে
তাঁহার দেহতল্লাটে উর্বর পলি
লবণের স্বাদে উড়ছে সারা সন্ধে!

হোটেলে নান রুটি, মোরগ পোলাও
চা-কফি নিমগ্ন ঝুঁকে আছে
নতুন স্বপ্ন, স্বপ্নের ভেতরে সিরিজ;
অপেরা শরণার্থী, স্বাধীনতাকামী
রাতপোকা প্রাণী মালিকানাধীন হতে
প্রায় একা কাটে, প্রায় স্বপ্ন ভাঙে!

মানুষের সঙ্গ পেতে সম্পর্ক খরচা
করতে হয়। হু, আত্ম স্নায়ু বেচে দিই
মাটির কাছে শিকড়-শস্য নিয়ে যেতে!

বুদবুদ কবিতা

সন্ধের আগে, একপ্রকার বিষণ্ণশিল্প
আমাদের নিয়ে হল্কা আগুনে পোড়াচ্ছে

আর বসন্ত চুরি হয়ে তেজপাতা ঘ্রাণে
ছদ্মবেশ ধারণ করে করে কেবল
নিজেদের গোড়ালি পুঁতে যাচ্ছে~
কাঠবাদামের বন; এবং কামরাঙা
ভাজের মতো রাত এসে খুব নীরবে
চুমু খাচ্ছে জ্যোৎস্না ভাঙা দাবানল চাঁদ-

আর এমনো লীলাময় কলকব্জা এল
নগর~বুদবুদ কবিতা, স্থির প্রহর-
শামুকের মতো রেজগি ঢেউয়ের
ইশারা নিয়ে-হৃদয়, পানপাত্র হাওয়া-
আঙ্গুলে কেঁপে কেঁপে মাতাল করছে
যতসব খেলাচ্ছলে স্যাম্পানি বিপ্লব

কোমর নাচানো নায়িকা~জোনাকির দল!

পুরনো আলনা

একটা শরীর, পুরনো জামার আলনা
বহুকাল ধরে গন্ধ জমে আছে। এবং
অতিক্রম করে যাচ্ছে বন খরগোশের
মতো বোতামের দ্বিভাঁজে, নুনের চুম্বন-
নগরের কলকব্জা, জিরে মশলার উৎসব
মাছবাজারের থোক থোক উদাম সন্ধ্যা

এমন নাতিদীর্ঘ মসলিন বনিবনা
দাগায়ে যায় জলপাই রং, এখানে-
ষোড়শীর কালো তিলের ওপরে
কেবল আলপিনের মতো শাদাপৃষ্ঠায়
কতগুলো কঙ্কাল মৃতদের ইঙ্গিত
পেরিয়ে পালকে দাঁড়ায়-শঙ্খচিল
হরধ্বনির স্নিগ্ধ আলোয় হিসেবকিতেব
এই সাঁকোর হাওয়ায় বহু শৈশবের যাত্রা!