সুরাইয়া নাজনীন এর সকল পোস্ট

টুথপেস্টে রূপচর্চা

টুথপেস্টে রূপচর্চা

ত্বকের যত্ন কত কী-ই তো কাজে লাগে, টুথপেস্টের কথা ভেবেছেন কি কখনো? ভাবছেন এ আবার কেমন কথা, টুথপেস্ট দিয়ে তো দাঁত মাজতে হয়! কিন্তু দাঁত মাজার পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও টুথপেস্ট সমান কার্যকরী একথা আমাদের অনেকেরই অজানা। চলুন জেনে নেই ত্বকের যত্নে টুথপেস্টের কার্যকরী ব্যবহার-

ব্রণ তাড়াতে টুথপেস্ট দারুণ কার্যকরী। বিশেষ করে ব্যথাযুক্ত ব্রণের ক্ষেত্রে। রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণের উপর টুথপেস্টের প্রলেপ লাগিয়ে ঘুমাতে যান। সকালে উঠে দেখবেন ব্রণর ফোলাভাব অনেক কমে গিয়েছে আর ব্যথাও অনেক কম।

আমাদের ত্বকের রোমকূপ নানাকারণেই বন্ধ হতে পারে। বিশেষ করে মেকআপ, ধুলো-ময়লা, দূষণ ইত্যাদির কারণে এটি হতে পারে। ফলে দেখা দেয় ব্ল্যাক হেডস। ব্ল্যাক হেডসের পূর্ববর্তী অবস্থা হলো হোয়াইট হেডস। এতে লোপকূপের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। য সব জায়গায় এই হোয়াইট হেডস রয়েছে যেমন, নাক, কপাল, চিবুক- সেসব জায়গায় পুরু করে টুথপেস্টের প্রলেপ লাগান। শুকিয়ে গেলে খুঁটে খুঁটে তুলে ফেলুন। এরপর ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। পরিবর্তন আপনিই বুঝতে পারবেন।

শুধু বয়সের কারণেই নয়, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব, অনিদ্রা ইত্যাদি কারণেও অকালে ত্বকে বলিরেখা দেখা দিতে পারে। পানিতে টুথপেস্ট মিশিয়ে পাতলা করে নিন। এবার মুখ, গলায়, ঘাড়ে এটির প্রলেপ লাগান। না শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পেস্ট শুকিয়ে গেলে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত তিনদিন এভাবে টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। বলিরেখার সমস্যা দূর হবে।

শীতে থাকুক মসৃন পা

শীতে থাকুক মসৃন পা

শীতকাল হানা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে সব সমস্যা আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তার অন্যতম পা ফাটা। শীতে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শরীরের ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায় ও তা ফাটতে থাকে। পায়ের পাতায় এর প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি। অনেকের আবার পা ফেটে রক্তও বেরতে থাকে। ফাটা পা যেমন দেখতে খারাপ লাগে তেমনই তা কষ্টদায়কও।

পায়ের পাতার উপর সারা শরীরের ভর পড়ে, পথেঘাটে ধুলোর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে শরীরের এই অংশই। তাই এমনিতেই পায়ের পাতার জন্য অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয়। কিন্তু শরীরের নানা যত্ন নিলেও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে পায়ের পাতার দিকে খুব একটা নজর দিই না আমরা অনেকেই। তারই মাশুল গুনতে হয় শীত কাল এলে।

তবে যদি চান, তবে এই শীতেও আপনার পায়ের তলা থাকতে পারে নরম ও তেলা। খরচও খুব নামমাত্র। সহজলভ্য দু’-তিনটি উপাদানই এর জন্য যথেষ্ট। এই উপায়ে পায়ের যত্ন নিলে গোটা শীতকাল পা তো ফাটবেই না, বরং রুক্ষ ও ফেটে যাওয়া ত্বকের অংশও মোলায়েম হয়ে উঠবে। জানেন কী স‌েই উপায়?

একটি পাত্রে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল নিন। এতে মিশিয়ে নিন গরম গলানো মোম। এ বার মোম জমে যাওয়ার আগেই ঈষদুষ্ণ এই মিশ্রণ লাগিয়ে রাখুন পায়ের তলায়। তবে এর পর খুব বেশি হাঁটাচলা করবেন না, তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে পারলে ভাল হয়। সকালে উঠে পায়ে জমে যাওয়া মোম-তেলের মিশ্রণ ফেলে দিয়ে ধুয়ে নিন পা। শীতে প্রায় রোজই এই উপায়ে যত্ন নিতে পারেন পায়ের তলার। এতে পা ফাটা দূর হওয়ার সঙ্গে পায়ের তলা পরিষ্কার ও নরম থাকবে। আরও ভাল ফল পেতে সপ্তাহে দু’-তিন দিন এই মিশ্রণের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধুও মেশাতে পারেন।

পায়ের নিচে অনেক স্নায়ু থাকে। তাই এই উষ্ণ মিশ্রণ সেখানে মাখালে তার প্রভাবে শরীর গরম থাকে, ঘুমও ভাল হয়। এ ভাবেই সারা দিন পরিশ্রমের পর রাতে ঘুমনোর আগে মিনিট পাঁচেক সময় আর পকেটসই খরচেই এ বার শীতে পায়ের তলাকে রাখুন আরামদায়ক ও মসৃণ।

ইলেকট্রিক বিল বাঁচাবেন যেভাবে

ইলেকট্রিক বিল বাঁচাবেন যেভাবে

নিজের অভ্যাসের পরিবর্তন করলে দেখা যাবে অনেক কিছুই ঠিক হয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেক সময় দেখি অচেতনেই সব কিছু জলে যাচ্ছে। ইলেকট্রিক বিলটাও ঠিক একই রকম। দেখে কিভবে বিল বাঁচানো যায়-

১. বাল্ব বা টিউব মাঝে মধ্যেই পরিষ্কার করুন। এতে ভিতরের তার ও ফিলামেন্টে ধুলো জমে না, বাড়তি বিদ্যুৎ টানারও প্রয়োজন হয় না।

২. ফ্রিজ ব্যবহারের সময় তার দরজা বার বার খোলেন বা অনেক ক্ষণ দরজা খুলে রেখে কাজ করেন? এই অভ্যাস বদলান। ফ্রিজ বার বার খুললে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়।

৩. অনেকেই ওয়্যারিংয়ের সময় কমদামী তার ব্যবহার করেন। এমন না করে প্রথম থেকেই ব্যবহার করুন দামি তার। এতে এক বার একটু খরচ হলেও সারা জীবনের খরচের ভার লাঘব হয়। ফ্যান-আলো এ সবও ৫-৬ বছর অন্তর বদলান।

৪. আজকাল আধুনিক সব ওয়্যারিংয়ের ব্যবহার প্রচলিত। দেওয়ালের প্লাস্টার চটিয়ে তা বদলানো সব সময় যায় না। কিন্তু অনেক পুরনো ওয়্যারিং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচের জন্য দায়ী। তাই দশ বছর অন্তর প্লাস্টার চটিয়ে বদলে ফেলুন ওয়্যারিং।

৫. ফ্রিজের নিচে বা পিছনে থাকা কন্ডেনসার কয়েলটি মাঝে মধ্যেই পরিষ্কার করুন। এখানে ময়লা জমে থাকলে, বিদ্যতের খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।

৬. যে সব ঘরে খুব চড়া আলো লাগে না, সেই সব ঘরের পাওয়ার কমিয়ে ব্যবহার করুন। কম বিদ্যুৎ খরচ হওয়া আধুনিক পদ্ধতির আলো ব্যবহার করুন।

শীতের পূর্বপ্রস্তুতি

শীতের পূর্বপ্রস্তুতি

ভোর হতেই হিম শীতল অনুভূতি। এ যেন শীতের আগমনী বার্তা। তাই শীত আসার আগেই আমাদের হতে হবে সতর্ক। শীতের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে যেসব বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আগের বছরে ব্যবহৃত শীতের পোশাক-আশাকের যত্ন, শীতের নতুন পোশাক-আশাক সংগ্রহ এবং শরীরের যত্ন।

পোশাকের পাশাপাশি শরীরের যত্ন নেয়া শীতের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ সময় শরীরের যত্ন নিতে একটু গাফিলতি করলেই হাত, পা এবং শরীরের যে কোনো অংশ ফেটে যাওয়াসহ ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি এবং অন্যান্য রোগবালাই বাসা বাঁধতে পারে। সেক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে সেগুলো হলো ভ্যাসলিন, লিপগার্ড, বডিলোশন, গ্লিসারিন বা মুখে মাখার ডে ক্রিম সঙ্গে রাখা যেতে পারে। এতে অল্প সময়ের মধ্যে ত্বকের যত্ন নেয়ার সুযোগ থাকে।

শীতে মেয়েদের একটু বেশি যত্ন নিতে হয়, কেননা মেয়েরা ঘরে এবং বাইরে উভয়ক্ষেত্রে কাজ করে। এছাড়া ঘরে সন্তানের লালন-পালনের কারণে নিজের ত্বকের যত্ন নেয়া অনেক মা-ই ভুলে যান। তাই এ সময়ে মেয়েদের একটু বাড়তি যত্ন নেয়া উচিত। সদ্য নবজাতকের মায়েরা ছোট্ট শিশুটিকে সামলাতেই ব্যস্ত সময় পার করেন। তাই নিজের প্রতি খেয়াল করে ত্বকের যত্ন নেয়া তার সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ জন্য বাইরে না গিয়ে ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় ত্বক চর্চার অনুষঙ্গগুলো আনিয়ে নিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন আর সদ্য নবজাতকটির যত্ন বেছে নিতে পারেন ভালো কোনো ব্র্যান্ডের বেবিলোশন, বেবিঅয়েল যা আপনার পারিবারিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়।

মাথার চুল খুশকিমুক্ত রাখতে মাথায় ক্যাপ বা স্কার্প ব্যবহার করতে পারেন। ছেলেদের মাথায় টুপি বা হ্যাট ব্যবহারই মানানসই। এক্ষেত্রে বাইরের ধুলাবালি পারতপক্ষে এড়িয়ে চলাই ভালো। ছেলেমেয়েরা গরম কাপড় ব্যবহারের পাশাপাশি গলায় মাফলার, হাত ও পায়ে মোজা ব্যবহার করতে পারেন। এ সময় অনেক দোকানে গরম কাপড়ের পাশাপাশি ফ্যাশনেবল মাফলার, হাত ও পায়ের মোজাও পাওয়া যায়। সেখান থেকে নিজের পছন্দেরটি সংগ্রহ করতে পারেন।

সোয়েটার, শাল, জ্যাকেট আলমারি থেকে বের করে রোদে দিতে হবে। অনেক দিন ব্যবহার না করলে পোশাকে ভাপসা গন্ধ হয়, রোদে দিলে তা দূর হয়। লেপ, তোশক, কম্বল, চাদর ইত্যাদিও রোদে দিতে হবে। রোদ থেকে তোলার পর তা ঝেড়ে ঘরে রাখতে হবে আর ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এসবের ওপর কাপড়ের কভার ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। উল, ফ্লানেলের জিনিসও রোদে দেয়া উচিত। কারণ, তুলে রাখা কাপড়ে অনেক সময় ফাঙ্গাস পড়ে। এতে শরীরে রোগ-বালাইয়ের সৃষ্টি হতে পারে।

সোফার কভার, পর্দা শীতের আগেই একবার ধুয়ে ফেলা উচিত। তা ছাড়া শীতকালে পর্দা বেশি নোংরা হয়, তাই প্রতিদিন পর্দা ঝাড়া উচিত। ঘরের মেঝেতে শতরঞ্জি বিছিয়ে নিতে হবে। সামর্থ্য থাকলে ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন। এতে শীত কম অনুভূত হয়। শীত আসার আগেই ওয়াটার হিটার, গিজার ঠিক আছে কিনা, সেগুলো দেখে নিতে হবে।

ইতোমধ্যে শীতের নতুন পোশাক বাজারে এসেছে এবং কম-বেশি কেনাবেচা শুরু হয়েছে। যারা এখনো শীতের নতুন পোশাক সংগ্রহ করেননি, পুরো শীত আসার আগেই তা খুব দ্রুত সংগ্রহ করা উচিত। কেননা শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মার্জিত পোশাকে অফিসে

মার্জিত পোশাকে অফিসে

মার্জিত পোশাক যে কোনো অফিসের জন্য বাধ্যতামূলক। গরমে কাফ লিঙ্কস বা টাই ঝামেলা মনে হচ্ছে? ঠিক আছে, তা না হয় বাদই দিলেন। কিন্তু শার্ট-প্যান্ট, জুতা-বেল্ট কিন্তু একদম টিপটপ আর ফিটিং হওয়া চাই।

একেক অফিসের একেক রকম নিয়ম অনুযায়ী কোনো অফিসে পুরো ফর্মাল ড্রেসে আসতে হয় যেমন- ফর্মাল শার্ট-প্যান্টের সাথে ব্লেজার বা কোট-টাই, আবার কোনো অফিসে কোট-টাই না পরলেও চলে শুধু ফর্মাল শার্ট-প্যান্ট পরে আসতে হয়। তাই অফিস বুঝে আপনার ড্রেসকোডটি জেনে নিন। পরিষ্কার ও মানাসই পোশাক অফিসে পরার পোশাকটি অবশ্যই পরিষ্কার থাকতে হবে। অনেকের খুব ঘাম হওয়ায গাড় রঙের শার্টে সাদা দাগ পড়ে যায় বিশেষ করে এখন এই গরমের সময় এটা হওয়া খবই স্বাভাবিক। তাই চেষ্টা করবেন অফিসে পরা কাপড়টি প্রতিদিন ধুয়ে ফেলতে। আর পরপর দুদিন একই কাপড় অফিসে না পরাই ভালো। শার্ট ও প্যান্ট বদলে বদলে পরবেন।

অফিসের পোশাকটি সবসময় ইস্ত্রি করে পরার চেষ্টা করবেন। অনেকে তাড়াহুড়ায় কুঁচকানো ভাঁজ করা পোশাক পরেই অফিসে চলে যান, এটা করবেন না। রাতেই কাপড় চোপড় ইস্ত্রি করে রাখবেন তাহলে আর এই ঝামেলা হবে না। সবসময় ইস্ত্রি করা ,ভালোভাবে ফিট হয় এমন পোশাক পরবেন তবে ফিট মানে আবার আঁটসাঁট পোশাক পরতে যাবেন না। অফিসের পোশাকের ক্ষেত্রে বেশি খোলামেলা বা বেশি টাইট কোনটাই মানানসই না। পোশাকের রং অফিসের ফর্মাল পোশাকটি অবশ্যই রঙচঙে হবে না।

সবসময় মার্জিত রঙের পোশাক বাছাই করবেন যেমন- ব্রাউন, বেজ, পিস, সাদা বা কালো, নেভিব্লু, আকাশী বা হালকা বেগুনী রঙের পোশাক বাছাই পরতে পারেন। গরমের দিনে অফিসের পোশাকের জন্য প্যাস্টেল শেড বা হালকা রঙের পোশাক বাছাই করুন।। খুব জমকালো রঙের পোশাক পরলে তা শালীন মনে হবেনা। অলংকার পোশাকের পাশাপাশি অলংকারও একটি গুরুত্বপুর্ন দিক। অনেকেই আছেন হাতে আংটি, হাতে ব্রেসলেট পরতে পছন্দ করেন এবং পরেনও। কিন্তু অফিসের কালচারের সাথে কি এই জিনিসগুলো যায় কিনা তা বুঝতে হবে। অনেক কর্পোরেট অফিসে এসব অলংকার পরাকে খুবই দৃষ্টিকটু হিসেবে দেখা হয়, সেক্ষেত্রে এধরনের অলংকার পরিহার করাই উচিত।

একদিন ক্যাজুয়াল ড্রেস রোজ রোজ কেতাদুরস্ত ভারিক্কী পোশাক পরলে একটু বিরক্ত লাগতেই পারে, তাই অনেক অফিসেই দেখা যায় সপ্তাহে একদিন সবাই ক্যাজুয়াল পোশাক পরে আসেন। কিন্তু তাই বলে আবার গোল গলার টি শার্ট আর স্যান্ডেল পরে যাওয়া যাবেনা। চামড়ার জুতা পরা যায়, তবে স্যান্ডেল নয়। অ্যাথলেটিক বা হাইকিং বুটও পরতে যাবেন না। আপনি স্যুট পরতে না চাইলে অন্তত ব্লেজার বা জ্যাকেট অথবা দুটোর মাঝামাঝি কিছু একটা পরতে পারেন। হাফ হাতা শার্ট না পরে ফুল হাতা শার্ট পরবেন। শার্টের রং গাঢ় বা সলিড হতে হবে। আর সঙ্গে পরবেন গাঢ় রঙের প্যান্ট। প্যান্টের মধ্যে লিনেন বা গ্যাবারডিন কাপড়ের প্যান্ট পরতে পারেন। প্যান্টের রংটি বাদামি, ছাই বা খাকি হতে পারে। মোট কথা, আপনি যাই পরুন না কেন, তাতে করপোরেট একটা লুক থাকতে হবে।

ছেলেরা নানা ধরনের গয়না ব্যবহার করে। এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। অনেকের মতে, বিয়ের আংটিও অফিসে ঢোকার আগে খুলে নেওয়া প্রয়োজন। কুঁচকে যাওয়া কোনো পোশাক পরে কর্মস্থলে আসবেন না। আগের দিন রাতে ইস্ত্রি করে নিন। ক্যাম্পিং বা ট্রাভেলিংয়ের একমাত্র সঙ্গী ব্যাকপ্যাক। আপনার ঘাড়ে চেপে এটা অফিসে আসতে পারে না। একটা সাইড ব্যাগ বা ছোট আকারের ঘাড়ে ঝোলানো ব্যাগ চলনসই। ব্যাগ, পোশাক বা এমন কিছু অফিসের সঙ্গী করবেন না যার ছেঁড়া অংশ মেরামতে তালি দেওয়া হয়েছে।

ট্রেন্ডি এখন হেলমেটও

ট্রেন্ডি এখন হেলমেটও

পথে ঘাটে বাইকারের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনাও। কি নারী কি শিশু! কেউ বাদ যাচ্ছে না। তাই আমাদের চলাফেরায় সচেতন হওয়া জরুরী। বাইক চালাতে মানা নেই কিন্তু সাবধানে ! বিপদ এড়াতে হেলমেট অনেক ভুমিকা রাখে। হঠাৎ করেই অনেকে বাইক নিয়ে পথে নেমে যান কিন্তু মনে রাখেন না হেলমেটের কথা। তাদের জন্য এখন বাজারে এসেছে ফ্যাশনেবল হেলমেট। চাইলে নকশা করিয়েও নিতে পারেন ।

বাজারে নানা রঙের, নানা ডিজাইনের হেলমেট রয়েছে। ইদানীং চাইলে হেলমেটে নকশাও করিয়ে নিতে পারেন। তবে কেনার সময় সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে, হেলমেটটি মাথায় ঠিকভাবে বসছে কি না। মান ফিট করছে কি না। আঁটসাঁট হেলমেটে অস্বস্তি হতে পারে, আর অস্বস্তি নিয়ে বাইক না চালানোই ভালো। শুধু সুন্দর বা স্টাইলিশ দেখে হেলমেট কেনা ঠিক নয়। বেশি খরচ হলেও ভালো মানের হেলমেট কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ। কেনার সময় অবশ্যই দেখতে হবে, হেলমেট যেন মাথা থেকে চোয়াল পর্যন্ত ঢেকে রাখে। কেনার আগেই দেখে নিতে হবে সামনের প্লাস্টিকের স্বচ্ছ ঢাকনার ভেতর দিয়ে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে কি না। সব ধরনের হেলমেট আরামের এবং যেকোনো দুর্ঘটনা থেকে মাথা রক্ষা করার কথা ভেবে তৈরি করা হয়। শিশুদের হেলমেট কেনার সময় দেখে নিন সেটা আরামদায়ক কি না। শিশুদের মাথার মাপ অনুযায়ী হেলমেট তৈরি করা হয়।

তরুণেরা ফ্যাশনেবল হেলমেট পছন্দ করেন। গতানুগতিক গোলাকার হেলমেটের বাইরে একটু ভিন্ন আকৃতির হেলমেট তাঁদের প্রিয়। এসব হেলমেটের সামনের অংশটা একটু চোখা।

টেকসই ভারী হেলমেটও নিচ্ছেন অনেকে। কোনোটির চোখের সামনের অংশ খোলা, আবার কোনোটিতে কাঁচ বসানো। আছে স্বচ্ছ কাঁচ ও পোলারাইজড (মার্কারি নামেও পরিচিত) কাঁচ দেওয়া হেলমেটও। অনেক দোকানে রয়েছে নকশা করা হেলমেট। আবার কয়েকজন আছেন যারা হেলমেটে রঙিন নকশা করে দেন।
দেশি ও বিদেশি হেলমেট পাওয়া যায় বাজারে। থাইল্যান্ড, হংকং, ভারত, চীন, তাইওয়ানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসে হেলমেট। সুরক্ষা ও ডিজাইনের ওপরই হেলমেটের দাম নানা রকমের হয়ে থাকে। সাধারণত হালকা-পাতলা সামনের কাঁচ বা প্লাস্টিক হেলমেট কেনা যাবে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকায়। এ ছাড়া ভালো মানের হেলমেট কিনতে পারবেন ১ হাজার ৩০০ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। নারীদের হেলমেটগুলোর দাম ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। কাঁচহীন হেলমেট ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।

হেলমেটের যত্ন-আত্তি : হেলমেটের মোট চারটি স্তর। সবার ওপরে প্লাস্টিক বা ফাইবারের শক্ত খোলস, তার নিচে কর্কশিটের আবরণ, এর নিচে ফোম, সবার নিচে থাকে কাপড়ের আচ্ছাদন। তাই তো যত্নটাও প্রয়োজন একটু বেশি। মোটরসাইকেল হেলমেট সবসময়ই শুকনো আর অপেক্ষাকৃত উষ্ণ স্থানে রাখুন। বাসায় ফিরে হেলমেটের কাঁচ কিছুটা তুলে রাখুন। এতে ভিতরে বাজে গন্ধ ও লাইনিঙ্গে ফাঙ্গাস পড়তে পারে না। অনেক হেলমেটে ফোমসহ কাপড়ের আচ্ছাদন খুলে ধুঁয়ে পরিষ্কার করা যায়। চাইলে হেলমেটের ভিতরটা ডিটারজেন্টে ডুবিয়ে, ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে ভিতরটা খুব ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। হেলমেটের সামনের কাঁচ পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন একবার হলেও পরিষ্কার করে নিন। সপ্তাহে এক দিন হাতে সামান্য সাবান লাগিয়ে কাঁচটার দুই পাশে পরিষ্কার করে আবার শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে পারেন। সাবান ব্যবহার করতে না চাইলে পানি আর হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

পায়ের সাজে পায়ের যত্ন

এক পায়ে নুপুর তোমার অন্য পা খালি। হ্যাঁ পায়েলের কথাই বলছি। এখন দেখা যায় সবার পায়ে পায়ে পায়েল। নানান রংয়ের। টুং টাং শব্দে উৎসবকে আরো প্রসিদ্ধ করে তোলে। কিন্তু পায়েল পরতে হলে কিংবা পায়ের অন্য সাজের জন্য চাই সুন্দর মসৃন পা। সেজন্য দরকার পায়ের বাড়তি যত্ন।

* পায়ের মৃতকোষ ও গোড়ালির শক্ত চামড়া থেকে মুক্তি পেতে পেডিকিউর করুন। পায়ের যত্নে এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পেডিকিউর করা বা স্ক্রাব দিয়ে পরিষ্কার করা ও সুগন্ধির জন্য পায়ে ক্রিম লাগানো ইত্যাদি পা সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

* হালকা গরম পানিতে বেইকিং সোডা মিশিয়ে তাতে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এটা পা পরিষ্কার করতে ও দুর্গন্ধ দূর করে সতেজভাব আনতে সাহায্য করে।

* নখের এক কোণ থেকে মৃতকোষ উঠিয়ে নিন। এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করুন।

* নখকে শ্বাস নিতে দিন, এতে নখের বিবর্ণভাব দূর হবে। গাঢ় রংয়ের নেইলপলিশ পছন্দ করে থাকলে এই বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি।

* পা ঘামার সমস্যা ঠিক করতে ‘অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফুট ওয়াশ’ ব্যবহার করুন। এটা পায়ের দুর্গন্ধও দূর করবে। পায়ের উপর চাপ কমাতে ও সতেজ অনুভবের জন্য পুদিনার ফুট স্প্রে ব্যবহার করুন।

* যদি পা বন্ধ জুতা পরেন তাহলে নিয়মিত মোজা পরিবর্তন করুন। আরেকটি বিষয়, দিনে কয়েকবার পা ধোয়া দরকার। এটা পা ভালো ও সুন্দর রাখে এবং পায়ে সতেজ অনুভূতি দেয়।

* শুধু গোড়ালিতে নয় বরং পুরো পায়েই সানস্ক্রিন লাগান। এটা কেবল পা সুরক্ষিতই না বরং প্রোটিনের তৈরি নখ সুরক্ষিত রাখে যা সুর্যে অরক্ষিত অবস্থায় থাকে।

* শ্বাস নিতে পারে এমন উপাদানের জুতা পরুন। যেমন- চামড়া, কর্ক এবং ক্যানভাস অথবা অন্য কোনো উপাদানে তৈরি পাদুকা, যা বাতাস চলাচলে সাহায্য করে আপনাকে সতেজ রাখে।

পার্টি সাজে নারীর প্রসাধন

পার্টি সাজে নারীর প্রসাধন

উৎসব মানেই জমকালো সাজ পোশাকের মেলা। এর মাঝে প্রসাধনীর গুরুত্বও কম নয়। কয়েকদিন বাদেই ঈদ তাই প্রসাধনী কেনার ধুম পড়েছে বাজারে। এবার ঈদে যেহেতু গরম থাকবে, তাই সে অনুযায়ী প্রসাধনী নির্বাচন করতে হবে। আর সাধ্যের মধ্যেই বেছে নিতে হবে ভালো প্রসাধন সামগ্রী।

ফাউন্ডেশন : মুখের বেস মেকআপের ক্ষেত্রে সবার আগে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হয়। গরমের কারণে ফাউন্ডেশন কেনার সময় মনে রাখতে হবে তা যেন অয়েল ফ্রি হয়। না হলে ঘামে পুরো মেকআপই নষ্ট হয়ে যাবে। এতে মুখ কালো দেখাবে। বাজারে আছে মেবিলিন, রেভলন, জরডানা, গোল্ডেন রোজ, জ্যাকলিন, লোরিয়েলসহ ভালো ফাউন্ডেশন। দাম পড়বে ৩৫০-১২০০ টাকার মধ্যে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিন আপনার ফাউন্ডেশন।

ব্লাশ-অন : ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা অনেক বেশি জরুরি। তাই ফর্সা ত্বকে হাল্কা গোলাপি আভা কিংবা একটু ম্যাট রঙের ব্লাশ-অন ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার যাদের গায়ের রং শ্যামলা বর্ণের তারা সব ব্যবহার করতে পারেন। আর কালো ত্বকে একটু উজ্জ্বল আভাসম্পন্ন ব্লাশ-অন ব্যবহার করা উত্তম। এতে গায়ের রং উজ্জ্বল দেখাবে। বাজারে পাবেন ১৫০-৮০০ এর মধ্যে ভালো ব্লাশ-অন। আজকাল কমলা রং ব্লাশ-অনের ট্রেন্ড চলছে। বাজারে ফ্লোরমার, জরডানা ইত্যাদি ব্লাশ-অন বেশি চলছে।

কনসিলার : কনসিলার মুখের বলিরেখা, ব্রণের দাগ, চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে ব্যবহার করা হয়। কনসিলার সব সময় ফাউন্ডেশনের চেয়ে এক শেড হালকা কিনতে হয়। বিদেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে রেভলন আর লোরেলের কনসিলার বেশ ভালো। তাছাড়া ফাউন্ডেশন স্টিক দিয়ে কনসিলারের কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন আপনি চাইলে।

কনটর ব্লাশ : মুখের বেস মেকআপ করতে কনটর করা খুব জরুরি। কনটর যে কোনো বাদামি, খয়েরি ব্লাশ দিয়েও করা যেতে পারে। এতে করে মুখের শেপ সুন্দর দেখায়।

আইশ্যাডো : শিবানা, ম্যাক্স টাচ, রেভলন, ফ্লোরমার ও এলিক্সসহ ইত্যাদি ভালো আই শ্যাডো পাওয়া যায়। দাম ১৫০-১৫০০ টাকার মধ্যে। এগুলোর মধ্যে ৪টা থেকে ১২০টা রং থাকে। নিজের মতো করে বেছে নিয়ে চোখ সাজাতে পারবেন। সকালে এবং দুপুরে হালকা সাজ এবং বিকেলে, রাতে গাঢ় সাজে ভালো লাগবে। রাতে স্মোকি লুকও নিতে পারেন।

মাশকারা : মাশকারা দিলে চোখের পাপড়ি বড় লাগে। চোখ হয়ে ওঠে আরো আকর্ষণীয়। বাজারে মেবিলিন, রেভলন, জরডানা, গোল্ডেন রোজের ভালো মাশকারা পাওয়া যায়। দাম পড়বে ৩০০-৬০০ এর মধ্যে।
আই লাইনার : চোখে কাজল অথবা আই লাইনার না দিলে বাঙালি মেয়েদের সাজ পুরোই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। মোটা করে কাজল দিলে বেশি একটা সাজতেও হয় না। বাজারে মিস অ্যান্ড মিস্টারস, মেবিলিন ক্লোসাল, ল্যাকমি আইকনিক কাজল খুব চলছে। দাম ২০০-৬০০ মধ্যে।

লিপস্টিক : বাজারে এখন লাল, কমলা, গাঢ় কালারের লিপস্টিকের ট্রেন্ড চলছে। বাজারে অনেক কোম্পানির লিপস্টিক আছে যেমন জরডানা, জ্যাকলিন, গোল্ডনে রোজ, রেভলন, লোরলে ইত্যাদি। দাম পড়বে ১০০-৪০০ এর মধ্যে।

নেইল পলিশ : লিপস্টিকর মতো নেইল পলিসেও গাঢ় রঙের ট্রেন্ড চলছে। জরডানা, জ্যাকলিন, পারসনি, গোল্ডেন রোজের ভালো নেইল পলিশ। দাম পরবে ৮০-২৫০ এর মধ্যে।

হঠাৎ বৃষ্টিতে যেমন জুতা

হঠাৎ বৃষ্টিতে যেমন জুতা

ঝরঝর মুখর বাদল দিনে। কার না ভাল লাগে বৃষ্টি । জানালার পাশে বসে বৃষ্টির শব্দে প্রিয়জনকে ভাবতে। কিন্তু আবেগ আর কতক্ষন? যখন কর্মজীবনে কাকডাকা ভোরে বের হতে হয়! তারপর যদি নামে হঠাৎ বৃষ্টি। তখন মুসকিল আসান কে করবে! আর সেদিনের পায়ের জুতা যদি হয় হাই হিল, তাহলে তো বিপদ দোরগোড়ায়। তাই বৃষ্টি দিনের জুতা নির্বাচন করতে হবে বুঝে শুনে ।

আপনি হাঁটছেন, রাস্তার কাঁদা আপনার জুতায় লেগে যাচ্ছে। জুতায় লাগা কাঁদা ছিটে লাগছে জামাকাপড়ে। আপনি হয়তো যাচ্ছেন কোনো কাজে। পরেছেন আপনার শখের জুতা। সারা দিন আপনাকে কিন্তু বাড়তি বিড়ম্বনাটুকু নিয়েই কাটাতে হবে। শখের জুতাজোড়ার কথা নাহয় বাদই দিলাম। বৃষ্টির এই সময়টা বুদ্ধি করে বেছে নিন ঝড়-বৃষ্টি-কাঁদার দিনে পরার বিশেষ উপযোগী জুতা, অনেকটাই রক্ষা পাবেন বিব্রত হওয়ার হাত থেকে।
এই সময়টাতে তরুণদের জন্য প্লাস্টিক বা পানি নিরোধক স্যান্ডেলই হবে জুতসই। এ সময় স্লীপার না পরে একটু উঁচু স্যান্ডেল পরাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এতে করে হাঁটতে গেলে কাঁদা ছিটবে না। আবার কাঁদা-ময়লা পানি লেগে আপনার পাও নোংড়া হবে না। কিন্তু হাইহিল নয়। এতে আবার পা পিঁছলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এ সময় কাপড়, চামড়া, রেকসিনের তৈরি বা ভিজলে নষ্ট হয়ে যাবে এমন জুতা, শুই বা স্যান্ডেল না পরাই ভালো।

তরুণেরা বেল্টওয়ালা আঙুলের কাছটায় আটকানো খোলামেলা প্লাস্টিকের রবারের স্যান্ডেল পরতে পারেন। এতে বাতাস ভেজা পা শুকিয়ে দেবে। এ সময়ের উপযোগী নানা নকশার ফ্যাশনেবল জুতা বাজারে রয়েছে। লাল, নীল, বাদামি, কালো, সবুজ, হলুদ, ছাই রঙের জুতা বাজারে দেখা যাচ্ছে। এসব পরে তরুণেরা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, অফিস কিংবা অনায়াসে সাইক্লিংও করতে পারবেন। এ ছাড়া দুই ফিতার স্যান্ডেলও পরতে পারেন। জুতা তো এখন কেবল পায়ের সুরক্ষা নয়, এটি ফ্যাশনের এক অনুষঙ্গও বটে।
রাজধানীর প্রায় সব বাজারেই পাওয়া যাবে বৃষ্টিতে পরার উপযোগী ফ্যাশনেবল স্যান্ডেল। অ্যাপেক্স, বাটা, বে-এমপোরিয়ামসহ নানা দোকানেই মিলবে এসব জুতা, স্যান্ডেল। একটু কম দামে কিনতে চাইলে চলে যেতে পারেন নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড কিংবা গুলিস্তানে।

জুতা ভিজলে:
* ভেজা জুতা শুকাতে তাপ দেয়া ঠিক হবে না। এর ফলে চামড়া শুকাবে ঠিকই কিন্তু চামড়া এবড়ো থেবড়ো হয়ে যায়। তাতে সাধের জুতাটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
* ড্রায়ার দিয়ে জুতা শুকনো করার কথা চিন্তাই করা যাবে না।
* ভেজা জুতা শুকাতে কাগজ বা কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। এটি চামড়ার ভেতরের পানিও শুষে নেবে।
* ঘরের তাপমাত্রায় জুতা শুকনো না হলে ভেপার ব্যবহার করা যেতে পারে। ভেপার আয়রনের মাধ্যমে এ কাজ করা যেতে পারে। বর্ষায় জুতা ভিজলে বাজে গন্ধ হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। একটা ছোট্ট কাপড় ভিনেগারে ভিজিয়ে জুতার ভেতরটা ভালো করে মুছে নিতে হবে। এর ফলে দেখবেন জুতার দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।

দরদাম
অ্যাপেক্সে পাওয়া যাবে ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা, বাটায় পাবেন ৪০০ থেকে ২০০০ টাকায়। এ ছাড়া বিভিন্ন বাজারে ৫০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন পছন্দের স্যান্ডেল বা জুতা।

উৎসবে পার্লের বা মুক্তা’র গহনা

উৎসবে পার্লের বা মুক্তা’র গহনা

জন্মলগ্ন থেকেই বাঙালি মেয়েরা সাজপ্রিয়। তারা সবসময় একটু ভিন্নতা পছন্দ করে। পোশাকেই হোক আর গহনাতেই হোক চলতি ফ্যাশন ধরে রাখতে তারা সচল থাকে। আবার ভবিষ্যৎ ফ্যাশনের খোঁজ-খবরেও পিছিয়ে থাকে না। এবার ঈদ ট্রেন্ডে পার্ল খুব চলছে। পার্লের গহনা ফ্যাশন প্রিয় মানুষদের আরও ফ্যাশনেবল করে তোলে।

রকমারি পোশাকের পাশাপাশি গহনার প্রতি আকর্ষণ মেয়েদের আদিকাল থেকেই। তবে ইদানীং ভারী সোনার গহনা পরার চাহিদা খুব একটা নেই। সে ক্ষেত্রে মুক্তার গহনা তার পছন্দের জায়গা ধরে রেখেছে আগের মতোই। বলতে গেলে মুক্তার গহনা এখন ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।

হাল ফ্যাশনের গয়নার তালিকায় মুক্তার গহনা ফিরে এসেছে নতুনরূপে। এতে আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটে। চাহিদার কারণে বর্তমানে কৃত্রিম উপায়েও এর চাষ হয়।
তবে খাঁটি মুক্তা পাওয়া একটু কষ্টকর। খাঁটি মুক্তা কীভাবে তৈরি হয় এটা হয়তোবা অনেকের অজানা। সাগরের নিচে কুসুম গরম বালুর বিছানায় বাস করে ঝিনুক। সেখানে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আবার অনেক সময় নড়াচড়া ও পানির স্রোতে বাইরের কোনো বস্তু , সাধারণত বালুকণা ঢুকে পড়ে ঝিনুকের পেটে। বালুকণা বাইরে বেরোতে না পারায় ঝিনুকের পেটে দানা বাঁধে। ঝিনুকের শরীর তখন অস্বস্তি এড়াতে এই বস্তুর চারদিকে ছড়াতে শুরু করে এক ধরনের তরল আঠালো বস্তু। ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের অতি পাতলা এ স্তর ক্রিস্টালের মতো করে অনুপ্রবেশকারী বস্তুটির গায়ে আস্তরণ ফেলতে শুরু করে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। একসময় তা মুক্তায় পরিণত হয়।

প্রায় ৩৫০০ খ্রিস্টপূর্বে মুক্তার সন্ধান পাওয়া যায়। আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান এবং ইউরোপের নানা জাতের আদিবাসী তখনো গুহার মায়া কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সে সময় সভ্য মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় প্রথম মুক্তার কদর শুরু হয়। পরে মুক্তার কদর ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের সর্বত্র। যদিও বহু যুগ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের মুক্তা ছিল ভুবনবিখ্যাত। বাহরাইনের ছোট্ট দ্বীপ বসেরা। সেখানে পাওয়া যায় ভুবনবিখ্যাত মুক্তা। গড়ন, রং এবং মানের দিক থেকে এখানকার মুক্তার সমতুল্য কোনো মুক্তাই নেই। বহুকাল পর্যন্ত ছোট এ দ্বীপটি পৃথিবীর মধ্যমণি ছিল কেবল মুক্তার কারণেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মুক্তামালার দেশ বসেরা রাতারাতি হয়ে যায় পৃথিবীর অর্থনীতির মেরুদণ্ড পেট্রোলিয়ামের আড়ত।

অন্য যে কোনো মণির মতো কয়েকটি মুক্তা এখনো ইতিহাস প্রসিদ্ধ, যেটা হাতে পেতে বিত্তবানরা উদগ্রীব। এক ইঞ্চি লম্বা লাপেরে গ্রিনা এমনই একটি মুক্তা যেটা কয়েকশ’ বছর ইউরোপের অভিজাতদের হাতবদল হয়ে ১৯৯৬ সালে ঠিকানা পায় এলিজাবেথ টেলরের সিন্দুকে। রিচার্ড কর্টন এক বিশেষ মুহূর্তে লিজকে দিয়েছিলেন তার এই ভালোবাসার উপহার। মুদ্রার অংকে সেকালে তার এ ভালোবাসার মাশুল পড়েছিল ৩৭ হাজার ডলার।

পৃথিবীতে সাদা মুক্তার চাহিদা বেশি হলেও রঙিন মুক্তার আকর্ষণও কম নয়। কৃত্রিমভাবে ইদানীং রঙিন মুক্তার চাষও হচ্ছে। ইদানীং ভারত ও বাংলাদেশে মুক্তার চাষ শুরু হয়েছে। বড় লহরের মালা ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। ভারী সেট ১২ থেকে ৩০ হাজার টাকা, আংটি ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এদেশে মুক্তা আসে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে। বর্তমানে কৃত্রিম মুক্তার ভিড়ে খাঁটি মুক্তা প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে।

মুক্তা চিনতে যেসব বিষয় জানা দরকার :

খাঁটি মুক্তা আগুনে পোড়ে না।
নকল মুক্তায় দাঁত দিয়ে চাপ দিলে দাগ বসে যায়।
ব্ল্যাক মুক্তা কখনোই আসল হয় না।
আসল মুক্তায় থাকে ঝিনুকের মতো ঝলমলে আভা।
মুক্তা যত বড় হবে তত ভালো।
মুক্তার গহনা সহজে নষ্ট হয় না।

যত্ন :
মুক্তা ও সোনার গহনা কখনো একসঙ্গে রাখবেন না।
খোলামেলা জায়গায় রাখুন।
গহনা যত পরবেন ততই ভালো থাকবে। শরীরের ময়েশ্চারাইজার মুক্তার জন্য ভালো।
প্রতি বছর মুক্তার সুতা বদলে নিন। নাইলন বা সিল্কের সুতায় মালা গাঁথবেন।
পানিতে ভেজালে এটি নষ্ট হয় না।

এবার ট্রাভেল হোক ফ্যাশনেবল ব্যাগে

এবার ট্রাভেল হোক ফ্যাশনেবল ব্যাগে

ট্রাভেল প্ল্যানটা হয়ে গেলেই মন যেন আর ঘরে তাকে না। মনের ভেতর কল্পনার আর শেষ নেই। ব্যাগ গোছাতে যেন উতলা হয়ে ওঠে মন। তবে ব্যাগ গোছানোর আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। ক’দিন থাকবেন, কী উদ্দেশে যাচ্ছেন, কোন পথে যাবেন এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। আর প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে বেছে নিতে হবে পছন্দসই রং ও সুবিধাজনক আকারের ব্যাগ।

ভ্রমণের সময় বেশি ভার বহন করা ঠিক নয়। চাকাওয়ালা বা ট্রলি ব্যাগ নেয়াই ভালো। অনেক বড় একটা ব্যাগ নানা জিনিস দিয়ে ভারী না করে দুটি ছোট ব্যাগে কাপড় গুছিয়ে নেয়া ভালো। নয়তো ভেতরের জিনিসের ভারে ছিঁড়ে যেতে পারে ব্যাগটি। দেশের ভেতরে বেড়াতে গেলে ১০ কেজির বেশি ওজনের জিনিস ব্যাগে বহন করা ঠিক নয়। কেউ যদি দু-তিন দিনের জন্য ঢাকার বাইরে বিদেশে যান, তাহলে ছোট ট্রলিব্যাগ নেয়া ভালো। একসঙ্গে পুরো পরিবার দেশের বাইরে ভ্রমণে গেলে ট্রলিব্যাগ বড়টা নিয়ে যেতে হবে। বিদেশে গেলে সাধারণত ২০ বা ২২ কেজির বেশি ওজনের সামগ্রী নেয়া যায় না ট্রলিব্যাগে। আর হাত ব্যাগে সাড়ে সাত কেজির বেশি ওজন নেয়া যায় না। দেশের বাইরে প্লেনে গেলে হাত ব্যাগে কোনো তরল জিনিস, যেমন: সুগন্ধী, অ্যারোসল, জেল এসব বহন করা যাবে না। কাঁচি, নেইলকাটার, ছুরি এসব জিনিসও নেয়া যাবে না। সঙ্গে জরুরি ওষুধের জন্য আলাদা ব্যাগ নিতে হবে। দেশের ভেতরে বেড়াতে গেলে হাতব্যাগে প্রসাধনী ও ছোট বাচ্চাদের জন্য জরুরি জিনিস রাখতে হবে হাতের নাগালে।

যে স্থানে যাবেন, সেখানকার আবহাওয়া গরম না ঠাণ্ডা, সে সম্পর্কে পূর্বধারণা নিয়ে রাখতে হবে। দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে বড় বড় ব্যাগ থাকলেও এর সঙ্গে পাসপোর্ট, টিকিট এগুলো নেয়ার জন্য বেল্টের সঙ্গে লাগিয়ে রাখা যায় এমন কিছু ওয়ালেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

দামদর : ব্যাগের মডেল আর আকারের বৈচিত্র অনুযায়ী ব্যাগের দামে রয়েছে ভিন্নতা। স্যামসোনাইট আর প্রেসিডেন্ট ব্র্যান্ডের ভ্রমণ ব্যাগের চাহিদা বেশি। ১০ কেজির জন্য ২০ ইঞ্চি, ২৫ কেজির জন্য ২৪ ইঞ্চি, ৩০-৩৫ কেজির জন্য ২৮ ইঞ্চি আকারের ব্যাগ নেয়া যেতে পারে। শুধু ট্রলিব্যাগই নয়, বাজারে পাবেন কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ, ল্যাপটপ ও অন্যান্য যন্ত্রের জন্য হাতব্যাগ ইত্যাদি। অন্যান্য আরো ব্র্যান্ডের মধ্যে আছে: ক্যামেল, পাওয়ার রেঞ্জ, টিরোল, ডিসিমিলন, চেরি ক্যামেল, ম্যাক্স ইত্যাদি। দাম পড়বে ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকা। প্রেসিডেন্ট ব্র্যান্ডের ছোট ব্যাগের দাম পড়বে দুই হাজার ৪০০ থেকে চার হাজার ৪০০ আর বড় ব্যাগ চার হাজার ৪০০ থেকে ছয় হাজার টাকা। স্যামসোনাইট ব্র্যান্ডের ব্যাগের দাম ১৪ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা। স্কাই বো ব্র্যান্ডের হাতব্যাগের দাম পড়বে ৮০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা, পোলো ৬০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা, লিবারটি ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা।

কোথায় পাবেন: ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, বায়তুল মোকাররম মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, মৌচাক মার্কেট ও কারওয়ান বাজার সুপার মার্কেট।

রং করা চুলের স্বাস্থ্য ঝুঁকি

রং করা চুলের স্বাস্থ্য ঝুঁকি

কে না চায় নিজেকে নিজেকে সুন্দর করে তুলতে! বর্তমানে আমরা ঝুঁকছি কৃত্রিমতার দিকে। কিন্তু চোখের সৌন্দর্যই বড় কথা নয়। সুন্দর হতে গিয়ে যদি থাকে স্বাস্থ্যঝুঁকি তাহলে ? গবেষনা বলছে হেয়ার কালার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। তবে দেখে নেয়া যাক রং করা চুলের এই ফ্যাশন কি আমাদের শরীর এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল ? চিকিৎসা বিজ্ঞান কি বলছে।

গবেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন কতগুলি বিষয় নিয়ে, যেগুলির উত্তর জেনে নেয়াটা সবারই একান্ত প্রয়োজন। যেমন, হেয়ার কালার চুলে লাগালে ঝাঁঝালো একটা গন্ধ বেরতে শুরু করে। এমনটা কেন হয়? আমাদের চুলের স্বাভাবিক গাঢ় কাল রং হঠাৎই অন্য রঙে বদলে যায় কীভাবে? আমাদের চুলের স্বাভাবিক রঙকে মুছে ফলতে যে যে উপাদানগুলি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি কি চুলের পক্ষে আদৌ ভাল? এই প্রশ্নগুলির উত্তর জানলে আপনাদের চোখ যে একেবারে কপালে উঠে যাবে। কারণ বাস্তবতা যে খুব ভয়ঙ্কর।

১. রঙে উপস্থিত অ্যামোনিয়া চুলের বাইরের স্তরকে একেবারে নষ্ট করে দেয়; চুলে রং করা মাত্র সেটি বেশ কয়েকটি বাঁধা পেরিয়ে তবে চুলের অন্দরে গিয়ে পৌঁছায়। তবেই কালারটা দীর্ঘ দিন থাকে। এই বাঁধাগুলি পেরনোর সময় ধীরে ধীরে চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। প্রথমে চুলের একেবারে বাইরের যে দেওয়াল রয়েছে সেটিকে ভেঙে দেয় অ্যামোনিয়া, তবেই হেয়ার কালারটি ভিতরে ঢুকতে পারে। চুলের আর কর্মক্ষমতা থাকে না। ফলে চুলের ক্ষতি শুরু করে দেয়।

২. হেলার কালারে উপস্থিত পারোক্সাইড চুলের প্রকৃত রঙকে টেনে তুলে দিতে শুরু করে, দ্বিতীয় ধাপে হেয়ার কালারে উপস্থিত ব্লিচ বা পারোঅক্সাইড ধীরে ধীরে আমাদের চুলের যে কোলো রং কয়েছে তাকে ঘষে ঘষে তুলে দিতে শুরু করে। আর প্রাকৃতিক কালারের জায়গা নেয় কৃত্রিম কালার।

৩. তৃতীয় ধাপে হেয়ার কালারে উপস্থিত মনোমার’স নামে একটি কেমিক্যাল চুলের ভিতরে নিজের মতো আরো একাধিক কেমিক্যাল তৈরি করে এবং সেগুলি একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়ে আয়তনে বড় হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে পলিমারস নামে একটি উপাদানের জন্য দেয়, যা হেয়ার কালারকে চুলের অন্দরে চিরস্থায়ী জায়গা করে দেয়। সেই কারণেই তো দেখবেন দীর্ঘ দিন রং একই রকম থেকে যায়। গোসলের পরও রঙের কোনও হেরফের হয় না।

৪. অ্যামিনায় ছাড়া যে রঙগুলি পাওয়া যায় সেগুলি একেবারেই ক্ষতিকারক নয় ; এই ধরনা একেবারেই ভুল যে অ্যামোনিয়া ফ্রি কালার চুলের কোনো ক্ষতি করে না। একটা সহজ বিষয় হয়, চুলের প্রাকৃতিক রং না ওঠা পর্যন্ত কৃত্তিম রং নিজের জায়গা করবে কীভাবে! আর এমনটা যখনই হবে, তখনই তো চুলের দফারফা হয়ে যাবে। তাহলে একথা কী করে সত্যি হয় যে অ্যামিনিয়া ফ্রি রং চুলের কোনও ক্ষতি করে না। প্রসঙ্গত, অ্যামিনিয়া ছাড়া যে রঙগুলি পাওয়া যায় সেগুলি চুলের কিছুটা কম ক্ষতি করে এই যা, বাকি কোনও পার্থক্য হয় না।

৫. ডাইটা যত বেশি সময় চুলে রাখবেন, তত বেশি ক্ষতি হবে: ডাইটা লাগানোর পর অনেকেই দীর্ঘ সময় পর গোসল করেন। ভাবেন ডাইটা যত বেশি সময় রাখবেন, তত ভাল রং হবে। একথার মধ্যে কোনো ভুল নেই যে ডাইটা বেশি সময় রাখলে চুলের রং আরো উজ্জ্বল হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে রঙে উপস্থিত কেমিকেলগুলি বেশি বেশি করে চুলের অন্দরে প্রবেশ করে চুলের ক্ষতি সাধন করার সুযোগও পেয়ে যায়। চুলের কৃত্তিম রং যত উজ্জ্বল হবে, তত চলের বেশি বেশি করে ক্ষতি হবে।

শিশুর সুস্থতায় যেসব খাবার বর্জনীয়

শিশুর সুস্থতায় যেসব খাবার বর্জনীয়

সব শিশুরাই সংবেদনশীল। তাই বাবা মা কিংবা অভিভাবকদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে তাদের প্রতি। কি খেলে সমস্যা হতে পারে, কোন পোশাক তাদের জন্য উত্তম কিংবা রোগ প্রতিরোধের বিভিন্ন মাধ্যম এসব বিষয়গুলোও জেনে রাখা ভাল।

চকলেট বার : চকলেট বার পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে যেমনটা ক্ষতিকর তেমনই ক্ষতিকর বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও। চিনিতে ভরপুর এই বারগুলো অন্য যে কোন মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে বেশি ক্ষতিকর। তাই বাচ্চাদের হাতে পুরো একটি চকলেট বার ধরিয়ে দেয়ার আগে চিন্তা করে দেখুন এতোতা সুগার বাচ্চাটির কতোটা ক্ষতি করতে পারে।

চীজ : এই দুটোর মধ্যেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। এর পাশাপাশি ফ্লেভারড দইয়ে যোগ হয় আর্টিফিশিয়াল ফ্লেভার যা বাচ্চাদের দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাই এইসকল খাবার থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখাই শ্রেয়।

ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার : ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারের প্রতি ছোট বড় সকলেরই বেশ আকর্ষণ রয়েছে। কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে যতোটা ক্ষতিকর এই ফাস্ট ফুড তার চাইতে প্রায় ১০ গুন বেশি ক্ষতিকর বাচ্চাদের জন্য। প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট, ক্যালোরি এবং সোডিয়ামে ঠাসা এই খাবারগুলো বাচ্চাদের দেহের চাহিদার চাইতে অনেক বেশি।

স্মুদি : ইদানীং স্মুদির প্রচলনটা বেশ বেড়ে গিয়েছে। অনেক বাচ্চাই স্মুদি বেশ পছন্দ করে পান করে থাকে। গরমের সময় এবং বিশেষ করে অনেক ফলের তৈরি হয়ে থাকে বলে অভিভাবকগণ মনে করেন স্মুদি খাওয়া তেমন ক্ষতিকর নয়। কিন্তু আপনি জানেন কি মাত্র এক গ্লাস স্মুদিতে থাকে ৫০০ ক্যালোরি, যা বাচ্চাদের দেহের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। এতে ক্ষতি হয় বাচ্চাদের স্বাভাবিক দেহক্রিয়ায়। তাই স্মুদি থেকে দূরে রাখুন বাচ্চাদের। এর চাইতে পরিমিত তাজা ফলের রস দিতে পারেন।

ইনস্ট্যান্ট নুডলস : ইনস্ট্যান্ট নুডলসের ননস্টিকি ভাব তৈরিতে ব্যবহার হয় ওয়াক্স যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পেট থেকে ১ প্যাকেট ইনস্ট্যান্ট নুডলসের ওয়াক্স পরিষ্কার হতে সময় নেয় ১ সপ্তাহ। তাহলে একবার ভাবুন তো এই ওয়াক্স আপনার আদরের সন্তানের ক্ষেত্রে কতোটা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ইনস্ট্যান্ট নুডলস থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখুন।

ছোট মাছের রেসিপি

তেল-মসলাযুক্ত খাবার সবসময় খেতে ভালো লাগে না। আর কম মসলার খাবার শরীরের জন্যও উপকার। বাঙালিদের মেন্যুতে মাছের স্থান সবার উপরেই থাকে। তাই আজকের আয়োজন কম মসলায় ছোট মাছের রকমারি।

বাতাসি মাছের টক ঝোল
উপকরণ: বাতাসি মাছ ২৫০ গ্রাম, আলু সেদ্ধ ২টি, পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজকাটা ২ টেবিল-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল সিকি কাপ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, আদা বাটা আধা চা-চামচ, রসুন বাটা আধা চা-চামচ, জিরা টালা গুঁড়া আধা চা-চামচ, তেঁতুল ১ ছড়া।

প্রণালি: মাছ কেটে তাতে একটু লবণ দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। আলু সেদ্ধ করে চটকে নিতে হবে। পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ বাদামি করে জিরা গুঁড়া বাদে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে কষাতে হবে। মাছগুলো দিয়ে অল্প কষিয়ে আলুগুলো গরম পানি দিয়ে গুলিয়ে ঝোলের জন্য দিতে হবে। ফুটে উঠলে তেঁতুল দিতে হবে ১ ছড়া। জিরা গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে তারপর পরিবেশন করতে হবে।

সরষে বাটায় বেলে মাছ ভুনা
উপকরণ: বেলে মাছ ৫০০ গ্রাম, সরিষা ১ টেবিল-চামচ, কাঁচা মরিচ ৪টা, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ, সরিষার তেল আধা কাপের একটু কম, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচা মরিচ আস্ত ৪টা।

প্রণালি: মাছ কেটে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। অল্প লবণ দিয়ে মাখিয়ে রাখতে হবে। পেঁয়াজগুলো অল্প তেলে আধা ভাজা করে রাখতে হবে। সরিষা ও ৪টি কাঁচা মরিচ একসঙ্গে বেটে নিতে হবে। সরষে বাটা বাদে বাকি সব উপকরণ মাছের সঙ্গে মাখিয়ে ১ কাপ পানি দিয়ে চুলায় বসাতে হবে। ঝোল মাখা মাখা হয়ে আসার একটু আগে সরষে বাটা সামান্য পানি দিয়ে গুলিয়ে দিতে হবে। ঢেকে মৃদু আঁচে রাখতে হবে। তেলের ওপর উঠলে নামাতে হবে।

লেবুপাতায় তেলাপিয়া
উপকরণ: তেলাপিয়া মাছ ৫০০ গ্রাম, আদা বাটা ১ চা-চামচ, রসুন বাটা আধা চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, লেবুপাতা ৪টি, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল-চামচ, টমেটো কুচি ১ কাপ, ধনেপাতা ২ টেবিল-চামচ, তেল আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো, লেবুর রস ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ মিহি-কুচি আধা কাপ।

প্রণালি: মাছ কেটে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। তাতে লবণ, লেবুর রস ও সামান্য হলুদ মাখিয়ে ৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে মাছ বাদামি করে ভেজে নিতে হবে। অন্য পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ ও টমেটোকুচি ভেজে বাটা ও গুঁড়া মসলা অল্প পানি দিয়ে কষাতে হবে। মসলা কষানো হলে ঝোলের জন্য পরিমাণমতো পানি দিতে হবে। ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো বিছিয়ে দিতে হবে। কিছুক্ষণ পর মাছগুলো উল্টিয়ে দিতে হবে। লেবুপাতা দুই টুকরা করে দিয়ে ১ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। তারপর নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

ছোট মাছের চচ্চড়ি
উপকরণ: কাচকি মাছ ২৫০ গ্রাম, আলুকুচি বড় ১টা, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ৪-৫টা, সরিষার তেল ৪ টেবিল-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, আদাবাটা আধা চা-চামচ, জিরা আধা চা-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, টমেটো লম্বা কুচি ১টা।

প্রণালি: মাছ বেছে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। মাছ বাদে সব উপকরণ একসঙ্গে মাখতে হবে এবং সামান্য পানি দিতে হবে। মাছগুলো ওপরে বিছিয়ে দিয়ে চুলায় বেশি জ্বালে দিতে হবে। ঢেকে রান্না করতে হবে। পানি শুকালে অল্প জ্বালে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পোড়া পোড়া করে নিতে হবে।

অক্ষরে অক্ষরে তিনি সুনীল

অক্ষরে অক্ষরে তিনি সুনীল : বাঙলাভাষী এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তাঁর কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় “নীললোহিত”, “সনাতন পাঠক” ও “নীল উপাধ্যায়” ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুরে। মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ একা এবং কয়েকজন এবং ১৯৬৬ সালে প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ প্রকাশিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি, যুগলবন্দী (শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে), হঠাৎ নীরার জন্য, রাত্রির রঁদেভূ, শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা, অর্ধেক জীবন, অরণ্যের দিনরাত্রি, অর্জুন, প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম, ভানু ও রাণু, মনের মানুষ ইত্যাদি। শিশুসাহিত্যে তিনি “কাকাবাবু-সন্তু” নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা। মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য অাকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রাথমিক জীবন
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ফরিদপুর জেলায়, বর্তমান যা বাংলাদেশের অন্তর্গত। জন্ম বাংলাদেশে হলেও তিনি বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশুনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। ব্যাংকের পিয়নের চেয়েও স্কুল মাস্টারের বেতন ছিল কম। সুনীলের মা কখনোই চাননি তাঁর ছেলে শিক্ষকতা করুক। পড়াশুনা শেষ করে কিছু তিনি আপিসে চাকুরি করেছেন। তারপর থেকে সাংবাদিকতায়। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মি. পলেন কলকাতায় এলে সুনীলের সঙ্গে ঘনিষ্ট পরিচয় হয়। সেই সূত্রে মার্কিন মুলুকে গেলেন সুনীল ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে। ডিগ্রী হয়ে গেলে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগ্রন্থাগারিক হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন সুনীল।

সাহিত্যিক জীবন
সুনীলের পিতা তাকে টেনিসনের একটা কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বলেছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে দু’টি করে কবিতা অনুবাদ করবে। এটা করা হয়েছিল তিনি যাতে দুপুরে বাইরে যেতে না পারেন। তিনি তাই করতেন। বন্ধুরা যখন সিনেমা দেখত, বিড়ি ফুঁকত সুনীল তখন পিতৃআজ্ঞা শিরোধার্য করে দুপুরে কবিতা অনুবাদ করতেন। অনুবাদ একঘেঁয়ে উঠলে তিনিই নিজেই লিখতে শুরু করেন। ছেলেবেলার প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করা লেখা কবিতাটি তিনি দেশ পাঠালে তা ছাপা হয়।

সম্মাননা
সম্মাননা [সম্পাদনা] ২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে সাহিত্য অাকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে সাহিত্য অাকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

দেহাবসান
২৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে হৃদযন্ত্রজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৩ সালের ৪ এপ্রিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার ‘গণদর্পণ’কে সস্ত্রীক মরণোত্তর দেহ দান করে যান। কিন্তু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতে তাঁর দেহ দাহ করা হয়। পশ্চিম বঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায় ২৫ অক্টোবর ২০১২ তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।
____________________