সুরাইয়া নাজনীন এর সকল পোস্ট

ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে পান খেলে

ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে পান খেলে

পানের সঙ্গে বাঙালি বা ভারতীয়দের সম্পর্ক একেবারে ঘরোয়া। হ্যাঁ, পান পাতার কথা বলছি। এ দেশে অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রে পান-সুপারির ব্যবহার অতি প্রাচীন। এ দেশে এখনও ধূমপান বা মদের নেশাকে অনেকে ‘অপরাধ’ বলেই মনে করেন। কিন্তু পান, ‘আরে সে তো মুৎসুদ্দি, হজমে সহায়ক’! হ্যাঁ, এ কথা সত্যি, পান পাতার উপকারিতা কিন্তু কম নয়। পান পাচন শক্তি বৃদ্ধি করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে… আরও কত কী!

কিন্তু পানের সঙ্গে সুপারি বা জর্দা (তামাক) যুক্ত হলে তা কিন্তু খুবই ক্ষতিকারক। ‘সালমোনেলা’ নামে ব্যাক্টেরিয়া বা জীবাণু পানপাতা বাসা বাঁধে। এই জীবাণু পেটের নানা রোগ বাধায়। এ ছাড়াও সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পান খাওয়ার নেশা বাড়াতে পারে ক্যানসারের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। পানের সঙ্গে সুপারি, জর্দা, চুন ইত্যাদির মিশ্রণেই মূলত ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে বলে মত চিকিৎসকদের।

আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএআরসি-র মতে, চুন ও সুপারি দিয়ে পান খেলে মুখের ক্যানসার হতে পারে। তাই যারা পানের সঙ্গে তামাকজাতীয় দ্রব্যাদি গ্রহণ করেন, তাদের সাধারণের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ওরাল ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চুন, সুপারি, জর্দা দিয়ে পান খেলে মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি ৯.৯ গুণ এবং জর্দা ছাড়া শুধু চুন, সুপারি, খয়ের দিয়ে পান খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি ৮.৪ গুণ বেড়ে যায়। চুনে রয়েছে প্যারা অ্যালোন ফেনল, যা মুখে আলসার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘা ধীরে ধীরে ক্যানসারে রূপান্তরিত হতে পারে। এ ছাড়া কাঁচা সুপারিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার সাইকোএকটিভ এলকালয়েড। এই কারণে শরীরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সুপারি চিবোলে শরীরে গরম অনুভূত হয়, এমনকি শরীর ঘেমে যেতে পারে। সুপারি খেলে হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পান পাতা তেমন ক্ষতিকর না হলেও পান খাওয়ার আনুষঙ্গিক উপাদানগুলি বাড়াতে পারে মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি।

আমলকির অনেক গুন!

আমলকির অনেক গুন!

হালকা সবুজ রঙের ফল, লবন-মরিচ মিশিয়ে খেলে স্বাদও অপূর্ব। চিকিৎসকদের পছন্দ থেকে ঘরোয়া টোটকা—সব কিছুতেই এই ফলের অবাধ যাতায়াত। আমলকি। গ্রাম হোক বা শহর, যার কদর কমে না এতটুকু।

চুলের স্বাস্থ্য হোক বা ত্বকের যত্ন— আমলা বা আমলকিই হয়ে ওঠে অন্যতম হাতিয়ার। আমলকির রস বা শুকনো আমলকি, রূপভেদে ব্যবহারও বদলে বদলে যায়।

এর ভেষজ গুণের কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন প্রসাধন প্রস্তুতকারী সংস্থা তাদের বিজ্ঞাপনে আমলকির উপস্থিতির কথা প্রচার করেন। জানেন কি আমলার বিশেষ সেই গুণগুলির কথা, যার জেরে এই ফল সব সময়ই প্রসাধনের কাজে আসে?

খুব ব্রণর সমস্যায় ভুগলে তার অন্যতম সেরা সমাধান আমলকি। আমলার রস ব্রণ হওয়া অংশে ভাল করে লাগিয়ে রাখুন। কিছু ক্ষণ শুকোতে দিন। তার পর ধুয়ে ফেলুন। দু’-তিন দিনের মধ্যে ব্রণ তো কমবেই, কমে যাবে ব্রণ হওয়ার প্রবণতাও। আমলার রস ব্যবহার করুন স্ক্রাবার হিসাবেও। অল্প কিছুটা জলে কিছুটা আমলা পাউডার গুলে তা দিয়েও স্ক্রাব করতে পারেন ত্বক। এতে মৃতকোষ সহজে ঝরে যায়, ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আসে।

মাথায় খুসকির সমস্যায় কোনও রকম কেমিক্যাল শ্যাম্পু ব্যবহার না করে আমলার রস লাগান। কিছু ক্ষণ লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েক দিন এমনটা করলেই খুসকি সারবে সহজে।

আর নয় রাত জাগা

মনোবিজ্ঞানের ভাষায়, ঘুম হল জৈবিক চাহিদার একটি। ঘুম মানুষের শরীরে গতিশীলতা দান করে। একটি ঘুম পারে শরীরের সমস্ত ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে নিয়ে যেতে। ডাক্তারদের মতে, একজন মানুষের জন্য দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম জরুরি। যদি কেউ ৬ থেকে ৮ ঘন্টার ঘুমায় তা যেমন একটি সমস্যা আবার ৫ ঘন্টার কম ঘুমানোও আরেকটা সমস্যা।

ঘুম না আসার কারণ
০ ঘুমের জন্য অনেকে চিন্তা করেন, ঘুম আসবে কিনা? এরকম চিন্তার কারণে ঘুম আসতে দেরি হয়।

০ মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে। বিষণ্নতা, উদ্বেগ ইত্যাদি মানসিক অস্থিরতার কারণে ঠিকমতো ঘুম হয় না।

০ শারীরিক কোনো অসুস্থতা থাকলে ঘুম আসতে চায় না।
০ বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঘুম কমে যায়।
০ উত্তেজিত কোন কিছু যেমন-চলচ্চিত্র বা কোন ঘটনা যাতে মস্তিস্কে আলোড়িত হয়, এমন কোন কথা বললে বা কাজ করলে ঘুম আসতে দেরি হয়।

সমাধান
০ বিছানাকে কেবল ঘুমের জন্য ব্যবহার করুন। ঘুম আসলে তখনই বিছানায় যান।
০ মানসিক সমস্যা থাকলে সমাধানের চেষ্টা করুন। বেশিদিন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
০ ঘুম না এলে শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম করতে পারে।
০ শক্ত টাইপের কোন বই পড়তে চেষ্টা করুন। দেখবেন ঘুম আসবে।
০ স্লো মিউজিক শুনতে পারেন।
০ ভাল করে হাত মুখ ধুয়ে পরিপাটি হয়ে বিছানায় আসুন।

কোন রংয়ের ডিম বেশি পুষ্টিকর?

কোন রংয়ের ডিম পেশি পুষ্টিকর?

ডিম প্রতিদিনই কম-বেশি সব বাড়িতে আনা হয়। বাড়িতে ছোট শিশু থাকলে এর প্রয়োজন আরও বেড়ে যায়। তবে সাদা ডিম না কি লালচে খোলার ডিম— কোনটা ভাল, কোনটা খাওয়া বেশি উপকারী, এ নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছেই। তবে এ বিষয়ে ধারণা স্পষ্ট করার আগে জেনে নিন ডিমের এই রঙের ফারাক হয় কেন!

বিজ্ঞানীদের মতে, সাদা পালকের মুরগিরা সাদা ডিম পাড়ে আর লাল ডিম পাড়ে গাঢ় রঙের পালকের মুরগি। এই দুই ধরনের ডিমের ক্ষেত্রে কি পুষ্টিগুণ বদলে যেতে পারে? সম্প্রতি এই নিয়ে একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, এই দুই ধরনের ডিমের পুষ্টিগুণে বিশেষ কোনও ফারাক নেই। নিউ ইয়র্কের এক দল গবেষকও এ বিষয়ে একমত। তবে মার্কিন গবেষকদের মতে, লাল ডিমে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমান সাদা ডিমের তুলনায় সামান্য বেশি রয়েছে। কিন্তু এই পরিমাণ এতটাই অল্প, যে তাতে পুষ্টিগুণে খুব একটা ফারাক হয় না।

ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-র গবেষকদের মতে, একটি মোটামুটি ৫০ গ্রাম ওজনের ডিমে ৭২ ক্যালোরি ও ৪.৭৫ গ্রাম ফ্যাট ( যার মধ্যে দ্রবণীয় মাত্র ১.৫ গ্রাম)। সাদা ও লাল ডিমে এই পুষ্টিগুণের পরিমাণ প্রায় এক। সুতরাং, লাল হোক বা সাদা, দু’ধরনের ডিমের খাদ্যগুণই পুষ্টিগুণ যে প্রায় সমান— সে কথাই মেনে নিচ্ছেন বিশ্বের বেশির ভাগ পুষ্টিবিদই।

কিন্তু লাল আর সাদা ডিমের পুষ্টিগুণ প্রায় এক হলেও দুটির স্বাদের ফারাক কতটা? গবেষকদের মতে, ডিমের স্বাদ নির্ভর করে মুরগির খাদ্যাভ্যাসের উপর বা মুরগির প্রজনন করানোর পদ্ধতির উপর। তাই ডিমের রং ডিমের স্বাদের ফারাক ঘটাতে পারে না।

প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ

প্রথাগত কবিতাকে মুক্তি দিয়ে, কবিতার আধুনিকায়নের কারণেই কবিতাপ্রেমীদের কাছে তিরিশ দশকে বাংলা কবিদের মধ্যে জীবনানন্দ দাশ খুব দ্রুত পরিচিতি লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ-মধুসূদনকে ছাড়া, বাংলা সাহিত্যে জীবনানন্দ দাশ, যিনি বিবর্তন-বিবর্ধন ঘটিয়েছেন বাংলা কবিতার। ২২ অক্টোবর আধুনিক বাংলা কাব্যের এই প্রাণপুরুষের মৃত্যুদিন।

জীবনানন্দ দাশের জন্ম বরিশাল শহরে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯। জীবনানন্দ দাশই লিখেছিলেন ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজতে যাই না আমি…।’ আজ থেকে বহু বছর আগে লিখেছেন কালজয়ী এবং সব সময়ের আধুনিক কবিতা ‘বনলতা সেন’। যা আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম সৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা কবিতার জগৎকে যারা সমৃদ্ধ করে গেছেন জীবনানন্দ দাশ তাদের মধ্যে অন্যতম।

জীবনানন্দ দাশের পূর্বপুরুষের বাড়ি ছিল ঢাকার বিক্রমপুর পরগণার পদ্মাতীরবর্তী গুয়াপাড়ায়। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের ছোট সন্তান। তার ডাক নাম ছিল ‘মিলু’। ছোটবেলায় তিনি বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকতেন। তাকে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য বাবা-মা নিয়ে যান লখনৌ, আগ্রা এবং গিরিধিতে। তার দাদা সর্বনান্দ দাশগুপ্ত বরিশালে বসতি স্থাপন করেন। তিনি ছিলেন সে সময়ের একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি। ছিলেন ব্রহ্মসমাজের অনুসারী। তিনি তার নাম থেকে গুপ্ত উপাধি বাদ দেন। এর পর থেকে তার পরবর্তী বংশধররা দাশ উপাধি ব্যবহার করেন। জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যনানন্দ দাশ ছিলেন স্কুল শিক্ষক। তিনি একজন ভালো প্রবন্ধকার এবং ‘ব্রহ্মবাদি’ সাময়িকীর প্রকাশক ছিলেন। মা কুসুম কুমারী দাশ কবিতা লিখতেন।

জীবনানন্দের বয়স যখন ৮ বছর তখন তাকে বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলে ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। ১৯১৫ সালে তিনি ওই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন প্রথম বিভাগ নিয়ে। এর পর কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯১৯ সালে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে তিনি অনার্স পাস করেন। ১৯২১ সালে এমএ পাস করেন দ্বিতীয় বিভাগ নিয়ে। একই সময় তিনি আইন পড়েন। ঠিক এ সময়ই তিনি কলিকাতা সিটি কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন। এর পর চলে আসেন বাগেরহাট পিসি কলেজে। সেখানে ভালো না লাগায় চলে যান দিল্লি। সেখানে যোগ দেন রামজোস কলেজে। সেখানে অধ্যাপনা করা অবস্থায় ছুটিতে বরিশাল আসেন। ১৯৩০ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন লাবণ্যপ্রভা গুপ্তের সঙ্গে। বিবাহের কারণে দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে দিল্লির ওই কলেজ থেকে তার চাকরি চলে যায়। এর পর তিনি যোগদান করেন বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে। তার সময়ই ১৯৩৫ সালে ব্রজমোহন কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফিলেশন লাভ করে। এ সময়ই তিনি তার বিখ্যাত সনেট কবিতা ‘বনলতা সেন’ রচনা করেন। ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় নোয়াখালী এবং ত্রিপুরায় বহুলোক নিহত হলে তিনি কলকাতায় চলে যান এবং প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার পেশায় যোগ দেন। তিনি এ সময় রচনা করেন ‘হিন্দু-মুসলমান’ কবিতাটি। একই সময় তিনি ‘স্বরাজ’ নামের একটি পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।

জীবনানন্দ দাশের জীবদ্দশায় ২৬৯টি কবিতা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার প্রয়াণের পর আরো ১৬২টি কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমী। ভোরের নির্মল আকাশ, শিশির ভেজা ঘাস, ধানের ক্ষেতের উদ্দাম হাওয়ার মতন, নদীর চরের চিল ডাকা বিষণ্ন দুপুর- প্রকৃতির নানা বর্ণবৈচিত্র্য জীবনানন্দের কবিতায় ধরা দিত। ১৯৫৩ সালে তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫৫-তে তার লেখা শ্রেষ্ঠ লেখা ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ মরণোত্তর আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়। ১৯৫৪ সালের ২০ অক্টোবর বিকেলে তিনি ট্রামের ধাক্কায় গুরুতরভাবে আহত হন এবং ২২ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়।

জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ : ঝরা পালক (১৯২৭), ধূসর পাণ্ডুলিপি (১৯৩৬), বনলতা সেন (১৯৪২), মহান পৃথিবী (১৯৪৪), সাতটি তারার তিমির (১৯৪৮), শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৪), রূপসী বংলা লেখা (১১৯৩৪-প্রকাশ ১৯৫৭)।, বেলা অবেলা (১৯৬১), সুদর্শনা (১৯৭৩), আলো পৃথিবী (১৯৮১), মনোবিহঙ্গ (১৯৭৯)।

উপন্যাস ও গল্প : পূর্ণিমা, কল্যাণী, চারজন, বিরাজ,সতীর্থ, বাঁশমতির উপাখ্যান, প্রীতিনিড়, কারু-বাসনা, মৃণাল। তার ছোটগল্প একান্ত কামনার বিলাস, সঙ্গ, নিসর্গ, রক্তমাংসহীন, জামরুলতলা, মেয়ে-মানুষ, পূর্ণিমা, নকলের খেলা, হাতের তাস, ছায়ানট, চাকরি নাই, উপেক্ষার শীত, বই, মহিষের শিং, বৃত্তের মত, সাধারণ মানুষ, পালিয়ে যেতে ইত্যাদি যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়তা পায়। এছাড়াও জীবনানন্দ দাশ ইংরেজিতে অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন।

বাংলা কবিতায় আগে বা পরেও আর কোনো কবিই জীবনানন্দের মতো এতটা প্রভাবসঞ্চারী হয়ে ওঠেননি। রবীন্দ্রনাথের কথা হয়তো অনেকেই বলবেন। সত্য বটে, রবীন্দ্রনাথ এককভাবে বাঙালির সংস্কৃতিকে যতটা প্রভাবিত করেছেন আর কোনো লেখকই তা করতে পারেননি। কিন্তু যদি কেবল কবিতার কথা ওঠে তাহলে রবীন্দ্রনাথ নন, বরং জীবনানন্দ দাশই সেই প্রবল ব্যক্তিত্ব যিনি কাব্যরুচির সম্মোহনী শক্তি দিয়ে আজকের প্রজন্মকেও মুগ্ধ করে রেখেছেন।

জলপাইয়ের আচারের রেসিপি

টক-ঝাল আচার
উপকরণ: জলপাই ৫০০ গ্রাম, সরিষার তেল পরিমাণমতো, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, লাল গুঁড়া মরিচ ২ টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ১ টেবিল চামচ, শুকনা লাল মরিচ ২-৪টি আস্ত, হলুদ গুঁড়া সামান্য এবং বিট লবণ ১ চা চামচ। ধনিয়া ও শুকনা মরিচ টেলে নিয়ে গুঁড়া করতে হবে ৩ টেবিল চামচ।

প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে জলপাইয়ের বোঁটা ফেলে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে কেঁচে সামান্য লবণ ও হলুদ মাখিয়ে ২ দিন রোদে দিন। তারপর সরিষার তেল, শুকনা মরিচসহ গরম করে পরে সেটি ঠাণ্ডা হলে একে তাতে জলপাইসহ অন্য সব মসলা ও লবণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে বয়ামে ভরে প্রতিদিনই রোদে রাখতে হবে। এতে আচার ভালো থাকে। তৈরি হয়ে গেল জলপাইয়ের টক-ঝাল আচার। আচার ভালো করে রোদে দিলে প্রায় ১ বছর খাওয়া যেতে পারে।

ঝাল-মিষ্টি আচার
উপকরণ: জলপাই ৫০০ গ্রাম, চিনি পরিমাণমতো, লাল গুঁড়া মরিচ ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, সরিষার তেল পরিমাণমতো, পাঁচফোড়ন ১ চা চামচ, লাল মরিচ টেলে গুঁড়া করা ১ টেবিল চামচ এবং পানি পরিমাণমতো, সিরকা (সাদা) আধা কাপ।

প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে জলপাই অল্প কেঁচে নিয়ে লবণ ও পানিসহ সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। তারপর একটি কড়াইতে তেল গরম করে তাতে পাঁচফোড়ন দিয়ে একে একে সিরকা, লবণ ও গুঁড়া মসলা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিয়ে জলপাই দিয়ে আরো কিছুক্ষণ নেড়ে চিনি ও পরিমাণমতো পানি দিয়ে আবার চুলায় ২০ মিনিট রেখে রান্না করে ঠাণ্ডা হলে বয়ামে ভরে ফ্রিজে রাখতে হবে। ফ্রিজে রাখলে এ আচার ভালো থাকে।

গলানো মিষ্টি আচার
উপকরণ: জলপাই ১ কেজি, সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা+রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ,
হলুদ+মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, চিনি ১ কাপ (স্বাদমতো),
লবণ সামান্য, ভিনেগার ১/২ কাপ, সরিষার তেল ১ কাপ, তেজপাতা-২-৩টি, পাঁচফোড়ন গুঁড়া ১ চা চামচ।

প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে জলপাই সিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর পানি ঝরিয়ে বিচি ছাড়িয়ে শিলপাটায় বেটে নিতে হবে। একটা প্যানে সরিষার তেল গরম করে তেজপাতা, আদা+রসুন বাটা, সরিষার বাটা একটু নেড়ে দিয়ে জলপাই বাটা ঢেলে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এই মিশ্রণের মধ্যে চিনি, লবণ, ভিনেগার, হলুদ+মরিচের গুঁড়া দিয়ে অনবরত নাড়তে হবে। যেন তলায় পোড়া লেগে না যায়। চিনির পানি শুকিয়ে যখন তেল ছেড়ে আসবে তখন চুলা থেকে প্যান নামিয়ে পাঁচফোড়ন গুঁড়া মিশিয়ে নিতে হবে।

যত কফি তত আয়ু

যত কফি তত আয়ু

আপনি কি কফিতে আসক্ত? তাহলে সুখবর! দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, দিনে অন্তত এক কাপ কফি শরীরের জন্য খুব উপকারী। কয়েক কাপ হলে আরো ভালো।

কফি শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এমন ধারণা চালু আছে অনেকেরই মাঝে। কিন্তু সাত লাখ মানুষের ওপর চালানো দু’টো গবেষণা তা ভুল প্রমাণ করেছে। দীর্ঘমেয়াদি এই গবেষণাগুলোতে দেখা যায়, কফি পান অনেক রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়, বিশেষ করে সঞ্চরণশীল ও গ্যাস্ট্রো-ইন্টেসটাইনাল রোগগুলোর ক্ষেত্রে।

‘ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার’ এবং ‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন’-এর গবেষণাটিতে কফি পানের অভ্যাস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি তুলনা করা হয়। যেমন ইটালিতে কেউ হয়ত এসপ্রেসো পছন্দ করেন, আবার লন্ডনে কেউ কাপুচিনোর ওপর চড়ে বসেছেন। গবেষকরা ইউরোপের দশটি দেশের ৫ লাখেরও বেশি মানুষের ওপর এই গবেষণাটি করেন।

দ্বিতীয় গবেষণাটিতে বিভিন্ন জাতি, তাদের জীবন পদ্ধতি ও রোগের ঝুঁকির সঙ্গে কফির সম্পর্ক নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়৷ সাদা অ্যামেরিকান, আফ্রিকান-অ্যামেরিকান। কফির কাপে সাধারণ সব ডিজাইনে সবাই অভ্যস্ত। সাউথ কোরিয়ার বারিস্তা লি ক্যাং বিন চাইছিলেন বাড়তি কিছু করতে। কী করা যায় ভাবতে ভাবতেই একসময় মাথায় আসলো এক বুদ্ধি। ম্যাড়মেড়ে ডিজাইন বাদ দিয়ে তাই হাতে নিলেন রং-তুলি। সিউলে খুলে বসলেন ক্যাফে সি থ্রু।

জাপনিজ-অ্যামেরিকান এবং ল্যাটিনোদের মধ্যে করা এই গবেষণায় দেখা যায়, এদের মধ্যে যারা দিনে অন্তত এক কাপ কফি খান, তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি যারা কফি খান না তাদের চেয়ে ১২ ভাগ কম। ইউনিভার্সিটি সাউথ ক্যারোলাইনা এই গবেষণাটি করেছে। গেল সোমবার গবেষণা দু’টি ‘অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

দু’টো গবেষণাতেই দেখা যায়, দিনে তিন কাপ বা তার চেয়ে বেশি কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে সবচেয়ে ভালো। সেক্ষেত্রে কফিটি ক্যাফেইনসহ না মুক্ত তাতে কিছু আসে যায় না। কফিতে প্রায় ১,০০০ রাসায়নিক পদার্থ আছে। ক্যাফেইন ছাড়াও এতে আছে পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে এমন আরো যৌগ, যেগুলো শরীরের জন্য উপকারী। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকদের মতে, কফিপানকারীদের লিভার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি। তবে কফির ঠিক কোন উপাদানটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এমন অবদান রাখছে, তা এখনো বের করতে পারেননি গবেষকরা।

১৬ বছর ধরে চলা এই গবেষণায় যদিও দেখা গেছে কফি পানে স্বাস্থ্য সুবিধা পেয়েছেন অনেকেই। গবেষকরা অবশ্য এমন গ্যারান্টি দিচ্ছেন না যে, কফি খেলেই কারো স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। তবে কে জানে, গবেষণার ফল দেখে কফি পাগলরা হয়ত আরেকবার তাদের খালি মগ ভর্তি করে নিয়েছেন।

শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে ঠান্ডা পানি!

শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে ঠান্ডা পানি!

বাইরে থেকে গরমে ঘেমে নেয়ে বিদ্ধস্ত হয়ে বাড়ি ফিরেই ফ্রিজ খুলে ফেলা। আর তার পরই ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে ঢক ঢক করে খাওয়া! বেশির ভাগ দিন এমনটাই করেন বুঝি? জানেন কি, এ ভাবে ঠান্ডা পানি খেলে শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে? আসুন এ বিষয়ে কিছু জরুরি তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে তার প্রভাবে রক্তনালী সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, হজমের সময় যে সমস্ত পুষ্টিগুণ আমাদের দেহে মিশতে থাকে, তাও বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে হজমের মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়ার পরে ঠান্ডা পানি খাওয়া একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, এর ফলে শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মার অতিরিক্ত আস্তরণ তৈরি হয় যা থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে দাঁতের ভেগাস নার্ভের উপর। এই ভেগাস স্নায়ু হল আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বেশি ঠান্ডা জল খেলে ভেগাস স্নায়ু উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। যার ফলে হৃদগতি অনেকটাই কমে যেতে পারে।

শরীরচর্চা বা ওয়ার্কআউটের পর ঠান্ডা পানি একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। কারণ, ওয়ার্কআউটের পর দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যায়। এই সময় ঠান্ডা পানি খেলে তা দেহের তাপমাত্রার সঙ্গে বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য রাখতে পারে না। ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়ার্কআউটের পর যদি সামান্য উষ্ণ জল খাওয়া যায়, তবে উপকার পেতে পারেন।

সুতরাং, আজ থেকেই বদলে ফেলুন এ ভাবে ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাস। না হলে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা একে একে বাসা বাঁধতে পারে আপনার শরীরে।

বঙ্গবন্ধুর শৈশবের সোনাঝরা সময়গুলো

বঙ্গবন্ধুর শৈশবের সোনাঝরা সময়গুলো

রং তুলির আচঁড়ে যেন ছবির মতো গ্রাম। গাছগুলো সারি সারি। নদীতে পালতোলা পানশি, নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমার চলতো। বর্ষায় গ্রামটির চেহারা হতো একখণ্ড জলছবি। গ্রামটির নাম টুঙ্গিপাড়া। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার একটি বনেদী পরিবারের নাম শেখ পরিবার। সেই পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। এদিন শেখ লুৎফর রহমান ও তার সহধর্মিনী সায়রা খাতুনের ঘরে জন্ম নিলো একটি ফুটফুটে চেহারার শিশু। বাবা-মা আদর করে নাম রাখলেন খোকা। এই খোকাই হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জগৎ স্বীকৃত সমগ্র বাঙালির প্রিয় মানুষ। তিনি ছিলেন একজন মাতৃভক্ত সন্তান। শৈশব-কৈশোরে বাবা-মা তাকে আদর করে খোকা বলে ডাকতেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন তাদের তৃতীয় সন্তান। স্বভাবের দিক দিয়ে ছিলেন একটু জেদি, চঞ্চল ও একগুঁয়ে।

বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এ ঘেরা টুঙ্গিপাড়াতেই। পুষ্পভরা শস্য শ্যামলা রূপসী বাংলাকে দেখেছেন। তিনি আবহমান বাংলার আলো-বাতাসে লালিত ও বর্ধিত হয়েছেন।

দোয়েল ও বাবুই পাখি ভীষণ ভালোবাসতেন। বাড়িতে শালিক ও ময়না পুষতেন। আবার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটতেন। বানর ও কুকুর পুষতেন বোনদের নিয়ে। পাখি আর জীবজন্তু‘র প্রতি ছিল গভীর মমতা। মাছরাঙা ডুব দিয়ে কীভাবে মাছ ধরে তাও তিনি খেয়াল করতেন খালের পাড়ে বসে বসে। ফুটবল ছিল তার প্রিয় খেলা। এভাবে তার শৈশব কেটেছে মেঠো পথের ধুলোবালি মেখে আর বর্ষার কাদা পানিতে ভিজে।

গ্রামের মাটি আর মানুষ তাকে প্রবলভাবে আর্কষণ করতো। তিনি শাশ্বত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ছেলেবেলা থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান আদালতে চাকরি করতেন। তার মাতা সায়েরা খাতুন ছিলেন গৃহিনী। পিতা-মাতার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে তিনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হবেন। টুঙ্গিপাড়ার সেই শেখ বাড়ির দক্ষিণে ছিল কাছারি ঘর। এখানেই মাস্টার পতি ও মৌলভী সাহেবদের কাছে ছোট্ট মুজিবের হাতেখড়ি। একটু বড় হলে তাদের পূর্ব পুরুষদের গড়া গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার লেখাপড়া শুরু হয়। এরপর পিতার কর্মস্থল মাদারীপুরের ইসলামিয়া হাইস্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে কিছুদিন লেখাপড়া করেন। পরবর্তীতে তার পিতা বদলি হয়ে গোপালগঞ্জে যোগদান করলে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন। বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি।

পছন্দ করতেন ইতিহাসের বই। এসব কারণে প্রধান শিক্ষক গিরিশ চন্দ্রসহ সকল শিক্ষকের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন শেখ মুজিব। শিশুকাল থেকেই শেখ মুজিব ছিলেন পরোপকারী এবং অন্যায়ের প্রতিবাদী। মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় যেমন সহযোগিতার হাত বাড়াতেন-তেমনি কারো প্রতি অন্যায় আচরণ দেখলে প্রতিবাদ করতেন। মাত্র তের বছর বয়সে প্রতিবাদের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন তিনি।

ওই সময় গোপালগঞ্জে স্বদেশি আন্দোলনের এক সমাবেশে জনতার ওপর পুলিশের নির্বিচার লাঠির্চাজ দেখে বিক্ষুব্ধ হয় শিশু মুজিব। ফলে বিক্ষোভকারীরা যখন পুলিশের ওপর চড়াও হয়, তখন তিনিও বন্ধুদের নিয়ে যোগ দেন বিক্ষোভকারীর দলে। পুলিশ ফাঁড়িতে শত শত ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে তারা নাজেহাল করে তোলেন পুলিশ সদস্যদের। তার সাহস দেখে অবাক হন থানার বড়কর্তা। তার বয়স যখন চৌদ্দ, তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন তিনি হঠাৎ চক্ষুরোগে আক্রান্ত হন। অনেক চিকিৎসা চলে। কিন্তু অসুখ সারে না। এ কারণে তার লেখাপড়া সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়।

তিন বছর পর আবার সুস্থ হয়ে তিনি অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন। মনোযোগী হন লেখাপড়ায়। তখন ঘটে আরেক ঘটনা। গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুল পরিদর্শনে আসেন শেরেবাংলা একে ফজলুল হক। তাকে সংবর্ধনা জানানোর ব্যাপারে শহরের হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। বিষয়টি কিশোর মুজিবের ভাল লাগেনি। তাই তিনি আয়োজকদের একজন হয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে সেবার স্কুল ঘর মেরামত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার আদায় করেন। এসময় বিরোধীচক্রের রোষানলে পড়েন শেখ মুজিব। রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে গ্রেফতার করা হয় তাকে। হাজতবাস করতে হয় সাতদিন। এটিই তার জীবনের প্রথম কারাবরণ।

শৈশব থেকেই তিনি খুব অধিকার সচেতন ছিলেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ছিল তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয়কর্মী হামিদ মাস্টার ছিলেন তার গৃহ শিক্ষক। তার এক স্যার তখন গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য একটি সংগঠন করেছিলেন। শেখ মুজিব ছিলেন এই সংগঠনের প্রধান কর্মী। বাড়ি বাড়ি ধান চাল সংগ্রহ করে ছাত্রদের সাহায্য করতেন। তিনি ফুটবল খেলতে ভালোবাসতেন। স্কুল টিমের নেতা হয়ে বেশ কয়েকবার জিতে যায় তার দল।

শৈশব থেকেই তিনি তৎকালীন সমাজ জীবনের জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজা নিপীড়ন দেখেছেন। গ্রামের হিন্দু মুসলমানদের সম্মিলিত সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসম্প্রদায়িকতার। আর পড়শি দরিদ্র মানুষের দুঃখ, কষ্ট তাকে সারাজীবন সাধারণ দুঃখী মানুষের প্রতি ভালবাসায় সিক্ত করে তোলে। বস্তুতপক্ষে সমাজ ও পরিবেশ তাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রাম করতে শিখিয়েছে। তাই পরবর্তী জীবনে তিনি কোনো শক্তির কাছে সে যত বড়ই হোক আত্মসমর্পণ করেননি; মাথানত করেননি।

ওদেরও চাই ভ্রমণ বিলাস

ওদেরও চাই ভ্রমণ বিলাশ

শিশু যত বড় হবে ততই তার প্রয়োজনীয় জিনিসের সংখ্যা কমে আসবে। আর এ কারণে আপনার শিশু যদি খুব ছোট হয় তাহলে তার জন্য যেসব জিনিস প্রয়োজন হবে সে কিছুটা বড় হলে সেসব জিনিস প্রয়োজন হবে না। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সঠিকভাবে শিশুকে নিয়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন। শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, প্রসাধনী, ওষুধ, বই ও খেলনা নিতে ভুলবেন না। এগুলো আগেই ব্যাগে তুলে রাখুন। তবে বাড়তি জিনিস ভ্রমণের সময় বোঝা হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে হালকা ও ছোট ছোট জিনিস সঙ্গে রাখুন। অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাড়িতেই রেখে যান।

পরিকল্পনা করুন
কোন স্থানে ভ্রমণ করতে যাবেন, কী খাবেন এসব বিষয়ে শিশুর মতামত জিজ্ঞাসা করুন। এছাড়া যেখানে ভ্রমণে যাবেন সেখানে শিশুর জন্য দর্শনীয় জাদুঘর, পার্ক ইত্যাদিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। তাদের আগ্রহকে মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। তারা যেন ভ্রমণ থেকে শিখতে পারে সেজন্য সচেষ্ট থাকুন।

আনন্দময় করতে
খেলাধুলা শিশুদের অত্যন্ত প্রিয়। তাই ভ্রমণে গিয়েও খেলাধুলার আগ্রহ বজায় রাখুন। এজন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আগে থেকেই নিয়ে নিন। শিশুর জন্য বল, ব্যাট কিংবা অন্যান্য খেলনা নিয়ে নিন। এগুলো ছাড়া নিজেও শিশুকে গল্প বলুন। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে নিন। শিশুর সঙ্গে থাকা বড়দের সবাইকেই এজন্য কিছুটা প্রস্তুতি নিতে হবে। মজার গল্প, গান ইত্যাদি শিশুকে দারুণ আনন্দ দেবে।

মিডিয়ার সমাহার
শিশুরা যেন ভ্রমণে কোনোভাবে বিরক্তিবোধ না করে সেজন্য তাদের প্রিয় বই, সঙ্গীত, টিভি প্রোগ্রাম কিংবা মুভি নিয়ে নিন মোবাইল ফোন বা ট্যাবে। এছাড়া শিশুর জন্য মজার খাবার ও পানীয় নিতেও ভুলবেন না।

চাহিদার ভিন্নতা
ভ্রমণে প্রত্যেক শিশুর জন্য আলাদাভাবে নজর রাখা প্রয়োজন। এজন্য তাদের বয়স অনুযায়ী খেলনা ও অন্যান্য উপকরণ রাখা প্রয়োজন। এছাড়া শুধু ছোটরাই নয়, বড়রাও ভ্রমণ করছে এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। এজন্য পরিকল্পনায় সবার জন্যই কিছু ব্যবস্থা রাখুন।

সুযোগ দিন
শিশুর বয়স অনুযায়ী ভ্রমণের সময় কিছুটা সুযোগ দিন। যেমন ১২ বছর বয়সী শিশু যদি সাঁতার পারে তাহলে সাঁতার কাটতে পারে। আবার ১৬ বছর বয়সী শিশু নিজেই কিছুদূর ঘুরে দেখতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের কিছুটা সুযোগ ভ্রমণ থেকে শিক্ষা নিতে সহায়ক হবে।

ঝামেলা মোকাবেলা করতে দিন
ভ্রমণে কিছু ঝামেলা হবে এটা যেমন সত্য তেমন এ ঝামেলাগুলো মোকাবেলা করতে গিয়ে অনেক বিষয় শেখা যায়, এটাও বাস্তবতা। আর এ বাস্তবতা থেকে শিশুরাও যেন শিখতে পারে, সেজন্য মনোযোগী হোন। বিভিন্ন পরিবেশে মানিয়ে চলা, বহু ধরনের মানুষের সঙ্গে মেশা ইত্যাদি বিষয় শিশুদেরও শেখান।

দূরত্ব কমান
বয়োঃসন্ধিকালে শিশু-কিশোরেরা বাবা-মায়ের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব রাখতেই পছন্দ করে। যদিও ভ্রমণের সময় তাদের এ দূরত্ব দূর করার সুযোগ তৈরি হয়। এক্ষেত্রে শিশুর সঙ্গে মজা করা, খেলা ও এ ধরনের হাসি-আনন্দের মাধ্যমে এ দূরত্ব কমানোর সুযোগ তৈরি হয়।

উৎসাহ দরকার
শিশু যেন ভ্রমণের মজার বিষয়গুলো গ্রহণ করতে পারে সেজন্য উৎসাহ দিন। পারিবারিক ভ্রমণ শিশুর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে শিশু যে বিষয়গুলো শিখবে, তা তার সারা জীবনেও যেন কাজে লাগে সেজন্য মনোযোগী হোন। ভ্রমণে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটি ভালো টিমওয়ার্ক যেন হয় সেজন্য নানা প্রশংসাসূচক বাক্য ব্যবহার করুন।

পচা ডিম চেনার উপায়

পচা ডিম চেনার উপায়

ডিম তো নিত্যদিনের সঙ্গী। সকালের খাবারে সবার বাড়িতেই দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় ডিম কিনে বিপাকে পড়তে হয়। দেখা যায় পচা ডিম কিনে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। কিন্তু বুঝতে পারলে কি অার এমন হতো? তবে চেনার ও উপায় আছে।

এক বাটি ঠাণ্ডা পানির মধ্যে ডিম রাখুন। যদি পানিতে ডুবে যায় ডিম, তাহলে বুঝবেন সেটি ভালো। যদি ভেসে থাকে, তবে নষ্ট ডিম কিনেছেন সন্দেহ নেই! ডিম কানের কাছে ধরে ঝাঁকান। যদি ভিতরে কোনও আওয়াজ শুনতে পান, তাহলে বুঝবেন ডিম নষ্ট। যদি কিছুই শুনতে না পান তাহলে বুঝতে হবে ডিম টাটকা রয়েছে।

প্লেট বা কোনও সমান জায়গায় ডিম ফাটিয়ে দেখুন। যদি ডিম টাটকা হয় তাহলে কুসুমের রঙ হবে উজ্জ্বল হলুদ বা কমলা। তবে ডিমের কুসুমের রং অনেক সময়ই মুরগিকে কী ধরনের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে। যদি দেখেন কুসুম গোলাকার হয়ে আছে এবং সহজে নড়ছে না, তাহলে বুঝবেন ডিম টাটকা। একইভাবে যদি কুসুম হালকা রঙের ও চ্যাপ্টা হয়, এবং সহজে নড়াচড়া করে তাহলে বুঝবেন সেই ডিম বাসি।

ফাটানোর পর যদি দেখেন ডিমের সাদা অংশ ঘন তাহলে বুঝবেন ডিম টাটকা। ডিম যত পুরনো হয়, এই সাদা অংশ তত পাতলা হতে থাকে। যদি সাদা অংশে গোলাপি বা সবুজ আভা থাকে তাহলে বুঝবেন ডিমে ব্যাকটেরিয়া বাসা বেধেছে। একইভাবে কালো বা সবুজ দাগ দেখা গেলে তা ফাংগাসের লক্ষণ।

হারিয়ে যাওয়া মসলিন

হারিয়ে যাওয়া মসলিন

মসলিন কিংবদন্তির কোন শেষ নেই। ম্যাচ বাক্সে পুরে ফেলা যেত আস্ত একটা শাড়ি। মসলিন শব্দের উদ্ভব মসুল থেকে। ইরাকের এককালের ব্যবসা কেন্দ্র মসুলে তৈরি হতো সূক্ষ্ম সব কাপড়। ইংরেজরা মসলিন কাপড় দেখে এর নামকরণ করে মসলিন হিসেবে। ঢাকাই মসলিনের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। মসলিন রফতানি হতো ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশে। শুধু তাই নয়, ইউরোপ-আফ্রিকাতেও মসলিনের চাহিদা ছিল। তেমনি মসলিন দেখে অভিভূত হয়েছিলেন বিদেশি পর্যটকরা।

ঢাকাসহ আশপাশের এলাকাতে মুঘল আমলে সপ্তদশ শতকে মসলিন শিল্প বিকাশ লাভ করেছিল। প্রাচীন আমল থেকেই বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের সুখ্যাতি থাকলেও মূলত মুঘল আমলে ঢাকা যখন রাজধানী হয় তখন থেকেই মসলিন কাপড়ের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। নবাবেরা মসলিন কাপড় কেনা আরম্ভ করেন চড়া দামে। সে যুগে মসলিন তৈরির জন্য বিখ্যাত ছিল ঢাকা, ধামরাই, সোনারগাঁ, টিটবাদি, জঙ্গলবাড়ি আর বাজিতপুর। জঙ্গলবাড়ি অধিকাংশের পেশা তখন মসলিন বোনা। উনিশ শতকের প্রথম ভাগেও সেখানে এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন প্রায় এক শ’ তাঁতি পরিবার। জঙ্গলবাড়ি থেকে মাইল কুড়ি দূরে বাজিতপুর ওখানে জন্মাতো উঁচুমানের কার্পাস, যা থেকে তৈরি হতো উঁচুমানের মসলিন। আজ থেকে ২শ’ বছর আগেও বিদেশি বণিকরা সোনারগাঁ থেকে মসলিন বিদেশে রফতানি করত। ওখানকার প্রায় দেড় হাজার তাঁতি সে সময় মসলিন বুনে সরবরাহ করত ইংরেজ কোম্পানিকে। জেমস টেলর সাহেব ১৮৫১ সালে যখন মসলিনের ওপর একটি পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন মসলিনের স্বর্ণযুগ হারিয়ে যাওয়ার পথে। অথচ যা জানা যায় ঢাকাতে তখনো সাতশ’ ঘরের বেশি তাঁতি নিয়োজিত ছিল এ কাজে। মসলিন তৈরি করার জন্য দরকার হতো বিশেষ ধরনের তুলা ও ফুটি কার্পাস। এ বিশেষ ধরনের কার্পাসটি জন্মাতো মেঘনা নদীর তীরে ঢাকা জেলার কয়েকটি স্থানে।

সাধারণত, মহিলারাই সুতা কাটা আর সূক্ষ্ম সুতা তোলার মতো পরিশ্রম এবং ধৈর্যের কাজে নিয়োজিত ছিল। সুতা তোলার সময় কম তাপ এবং আর্দ্রতার দরকার হতো। তাই একেবারে ভোর বেলা আর বিকেলের পরে এ কাজ করা হতো। আর্দ্রতার খোঁজে অনেক সময় এমনকি নদীতে নৌকার ওপর বসে সুতা কাটার কাজ চলত। একজন মহিলা এভাবে প্রতিদিন সুতা কেটেও মাসে মাত্র আধা তোলা সুতা তুলতে পারতেন। এই পরিশ্রমসাধ্য কাজের কারণে দক্ষ সুতা কাটুনির সংখ্যা অনেক কমে আসতে থাকে উনিশ শতকের শুরু থেকেই। জানা গিয়েছে, এই রকম সূক্ষ্ম সুতা কাটার কাজ অঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও এতটা ভালো হতো না। এর কারণ ধরা হয় দু’টো- ঢাকার ফুটি কার্পাস আর শ্রমিকের দক্ষতা ও পরিশ্রম।

বিভিন্ন সূত্র হতে যা জানা যায়, ১৮৫১ সালে লন্ডনে এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে ঢাকা হতে কিছু মসলিন পাঠানো হয়। সেখানে এক পাউন্ড সুতা দেখানো হয়েছিল যা প্রায় আড়াইশ’ মাইল ছিল!! আরো মসলিন সম্বন্ধে, ‘মর্নিং ক্রনিকল’ পত্রিকায় লেখা হয়- হাবিবুল্লাহ তাঁতির বোনা দশ গজ লম্বা একখণ্ড মসলিনের ওজন মাত্র তিন আউন্স!! মসলিন তৈরির কাজটি ছিল খুবই জটিল, কঠিন, সময়সাধ্য- তার চেয়েও বড় কথা হলো সেটা তৈরির জন্য দরকার হতো অসামান্য নৈপুণ্য আর আসুরিক ধৈর্য। মোটামুটি যে কয়েক ধাপ পেরিয়ে তৈরি হতো মসলিন। সেগুলো হলো- সুতা নাটানো, টানা হোতান, সান বাঁধা, নারদ বাঁধা, বু-বাঁধা, আর সবশেষে কাপড় বোনা। এসব শেষে একজন তাঁতি আর তার দু’জন সহকারীর লাগত কমপক্ষে দু’তিন মাস। মসলিন ছিল নানা রকমের। এর পার্থক্য নির্ণীত হতো সুতার সূক্ষ্মতা, বুনন আর নকশা বিচারে। সবচেয়ে সূক্ষ্ম সুতার তৈরি, সবচেয়ে কম ওজনের মসলিনের কদর ছিল সবার চেয়ে বেশি, দামটাও ছিল সবচেয়ে চড়া। ‘মলবুস খাস’ ছিল সবচেয়ে নামি, সেরা মসলিন। সম্রাটের জন্য তৈরি হতো এই মসলিন।

১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধের পর ইংরেজরা যখন বাংলার বর্তা হয়ে ওঠে তখন তারা বছরে আট লাখ টাকার মসলিন রফতানি করত। সেই সময়ে ফরাসিরা কিনেছিল প্রায় তিন লাখ টাকার মসলিন। এরা ছাড়াও ইরানি, তুরানি, আর্মেনীয়দের পাশাপাশি দেশি ব্যবসায়ীরাও এ নিয়ে ব্যবসা করতেন। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, সে আমলে ঢাকা আর বাংলাদেশ থেকে রফতানির জন্য কেনা হয়েছিল প্রায় ঊনত্রিশ কোটি টাকার মসলিন। পরবর্তী সময়ে মসলিন রফতানির ব্যবসা প্রায় পুরোটাই করায়ত্ত করে নেয় ইংরেজ কোম্পানি। তাদের রফতানি হতো মূলত ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে। পলাশীর যুদ্ধের আগপর্যন্ত দালালরা বিভিন্ন জায়গা থেকে দামি মসলিন সংগ্রহ করে কোম্পানিতে সরবরাহ করত। পলাশীর যুদ্ধের পর মসলিন সংগ্রহের জন্য গোমস্তা নিয়োগ করা হয়, যারা ছিল কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মচারী। এই গোমস্তারা মসলিন সংগ্রহের জন্য চালাতে থাকে অমানুষিক অত্যাচার। মসলিন তাঁতিরা দিশেহারা হয়ে ওঠে এই গোমাস্তাদের অত্যাচারে। খুব দুঃখজনক হলেও সত্যি কোম্পানির হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল এ দেশেরই দালাল, পাইকার আর গোমস্তারাই। লোকশ্রুতি রয়েছে, ইংরেজরা নাকি মসলিন তাঁতিদের আঙ্গুল কেটে ফেলত।

চার-পাঁচশ’ বছর আগে যে মসলিন হয়ে উঠেছিল পৃথিবী বিখ্যাত, মাত্র দেড়শ’ বছরের মধ্যেই তা হারিয়ে গেল। মুঘল সম্রাট, নবাব, ব্যবসায়ী- কেউই এ শিল্প রক্ষার জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং চেষ্টা করেছেন কীভাবে কৃষক-তাঁতিদের শোষণ করে নিজেরা লাভবান হতে পারে। ধীরে ধীর হারিয়ে যেতে থাকে মসলিনের স্বর্ণযুগ, হারিয়ে যায় মসলিন।

গরমে কমফোর্টটাই আসল

গরমের চলতি ফ্যাশনে তরুণদের পছন্দের পোশাক এখন পোলো শার্ট। পোলো শার্টের চাহিদা এখন সার্বজনীন। সব বয়সী মানুষ পরতে পারে। শুধু ব্যক্তিত্ব আর রুচি অনুযায়ী নির্দিষ্ট পোলো শার্ট বাছাই করে নিলেই হলো। এখন একরঙা পোলো শার্ট যেমন চলছে, তেমনি স্ট্রাইপ পোলো শার্টও অনেকে পছন্দ করছেন।

ব্র্যান্ড ভেদে পোলো শার্টের কাপড় ও বোতামের ডিজাইনে রয়েছে ভিন্নতা। ডিজাইনে স্ট্রাইপ ও এক কালার যেমন রয়েছে, তেমনি কোনো কোনো পোলো শার্টে তিন থেকে চারটি বোতামও দেখা যায়। আবার কোনোটিতে দুই বা তিনটি বোতাম। বোতামবিহীন পোলো শার্টের কদরও এখন বেশ। ফ্যাশনের জন্য অল্প বোতামের পোলোর চাহিদাই বেশি বাজারে। এই বোতামের ডিজাইনেও আছে বৈচিত্র্য। মেটালের তৈরি বোতাম পোলো শার্টে নিয়ে এসেছে ভিন্নমাত্রা। এক রঙের পোলো শার্টের পাশাপাশি চলছে স্ট্রাইপ পোলো শার্ট। হালকা গড়নের হাতে রাবার ছাড়া কাফ পোলো বেশি মানানসই। যে গড়নের শরীর হোক না কেন, ঢিলেঢালা শার্ট না পরে বেছে নিন ফিট কিংবা সেমি ফিট পোলো শার্ট।

কান্ট্রিবয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফ্যাশন ডিজাইনার রিয়াজুল ইসলাম বিটু বলেন, ‘পোলো শার্টের রঙে ও নকশায় এসেছে বৈচিত্র্য। পছন্দের যে কোনো রঙেরই পোলো শার্ট মিলছে আমাদের এখানে। তবে হালকা রঙের পোলো শার্টের কাটতিই বেশি। যে কোনো জায়গায় স্বাচ্ছন্দ্যে পরা যায়, তাই পোলো পরাতেই বেশি পছন্দ করেন সবাই। এবারের ঈদ হবে গরমের মধ্যে। তাই পোলো নিয়ে আমরা এবার বেশি কাজ করছি। গুরুত্ব দিয়েছি পোলোর ওপর নানা হালকা ডিজাইনকে।’

কাপড়ের রং ঠিক রাখতে পোলো শার্ট হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করুন। দড়িতে শুকাতে না দিয়ে সমতল কোনো জায়গায় বিছিয়ে রাখুন। পানিতে ভেজা পোলো শার্টটি দড়িতে ঝুলিয়ে দিলে, দৈর্ঘ্যরে তারতম্য দেখা দিতে পারে। এছাড়া কড়া রোদে শুকাতে দিলে রং জ্বলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই শার্টটি উল্টো করে ভিতরের পাশটা বাইরে রেখে হালকা রোদে কিংবা ছায়ায় শুকিয়ে নিন।

পোলো টি শার্টে এক ধরনের স্মার্ট লুক ও আভিজাত্যের ছোঁয়া পাওয়া যায়। রং বেরঙের টি শার্টগুলো বেশ ফ্যাশনেবল। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী আপনি আপনার পছন্দমতো পোলো টি শার্ট পরতে পারেন। যেমন অফিসের কোনো ড্রেস কোড না থাকলে আপনি অনায়াসেই পোলো টি শার্ট পরতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি হালকা রঙের টি শার্ট বেছে নিতে পারেন, যেমন- সাদা, হালকা আসমানি, কচুপাতা সবুজ ইত্যাদি। অফিস ছাড়া যে কোনো ধরনের পার্টি বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার ক্ষেত্রে তারুণ্যের রংগুলো বেছে নিতে পারেন, যেমন- হলুদ, কমলা, লাল ও কালো। আর যদি আপনি ছাত্র হয়ে থাকেন, তাহলে তো কোনো কথাই নেই- সুন্দর ডিজাইন ও রং দেখে নিজের সঙ্গে মানানসই একটি গেঞ্জি গায়ে জড়িয়ে, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়েই চলে যেতে পারেন ক্লাসে।

এ ছাড়া পরিবেশের ওপরও নির্ভর করে টি-শার্ট পরতে হয়। খুব গরমে হালকা রঙের পোলো শার্ট পরা উচিত। কারণ হালকা রং কম তাপ শোষণ করে। তাই অতিরিক্ত গরমে কালো, লাল এসব রঙের পোলো শার্ট ব্যবহার না করাই ভালো। আর হালকা গরম বা মেঘলা দিনে যে কোনো রঙের পোলো শার্ট চাইলেই পরতে পারেন।

পোলো টি-শার্ট এখন আর এক রঙের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। চেক ও প্রিন্টেরও পোলো টি-শার্ট কিনতে পাওয়া যায়। যেগুলো পরলে আপনি আপনার মনের মতো লুক পাবেন। গোল গলা সাধারণ টি-শার্টের সঙ্গে পোলো টি-শার্টের মূল পার্থক্য কলারে হওয়ার কারণে যে সুবিধাটি হয় সেটি হলো, একটু ফরমাল ভাব থাকে পোলো টি-শার্টে। যাদের স্বাস্থ্য ভালো তাদের পোলো টি-শার্টেই ভালো মানায়। আবার যারা বেশি পাতলা বা বেশি লম্বা, তাদেরও পোলো টি-শার্টে ভালো মানায়। তাই সব দিক থেকেই পোলো টি-শার্টের চাহিদা বেশি। আর সাধ্যের মধ্যে কিনতেও পারবেন পোলো টি-শার্ট। সর্ব নিম্ন ৪০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন ভালো পোলো টি-শার্ট। সঙ্গে মনমতো জিন্স আর জুতসই জুতা আপনাকে এনে দেবে স্মার্ট, ফ্যাশনেবল ও ফ্রেশ লুক। আজকাল অনেকে গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ও ট্রাউজারের সঙ্গেও পোলো টি-শার্ট পরে থাকেন।

আন্তর্জাতিক ফ্যাশনাঙ্গন বরাবরের মতোই প্রাধান্য পায় বিশ্বের প্রায় সব দেশের ফ্যাশনে। ছেলেদের সামার ক্যাজুয়াল কালেকশনে দেখা যায় ঢোলা, পাতলা, নরম কাপড়ের মধ্যে। তবে প্যাটার্নে থাকে নতুনত্ব। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কিছু ক্ল্যাসিক ফ্যাশন আমাদের দেশের ক্যাজুয়ালে প্রবেশ করেছে নতুনভাবে। সাধারণত ভার্সিটি, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ফ্যাশন সচেতনদের কথা মাথায় রেখেই করা হয় এমন সব ডিজাইন। ট্রেন্ডি এই ড্রেসআপেই হচ্ছে ভার্সিটির ক্লাস, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি। ছেলেদের জন্য পোলো শার্ট গরমের জুতসই জামা। তবে অবশ্যই তা ফুলহাতা নয়। পোলো শার্টের কাপড় হোক খুবই মসৃণ এবং পাতলা।

আমাদের দেশে সুতি কাপড়ের চল সবচেয়ে বেশি। তাই পাতলা সুতির পোলো বেছে নিতে হবে। কিন্তু হওয়া চাই তা স্টাইলিশ এবং ট্রেন্ডি। পোলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একরঙা মানানসই। তবে স্টাইপেরও ফ্যাশন উপযোগী। এই পোশাকের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখা জরুরি এর কলারের রিব ফেব্রিক যেন ভালো মানের হয়।

পোলোর বাটন ডিজাইনে বড় ভূমিকা রাখে। বাটনগুলো একটু মোটা এবং কাপড়ের বিপরীত কোন রঙের হলে তা হাল ফ্যাশনে বেশি মানাবে। রঙের ক্ষেত্রে হালকা রং প্রাধান্য পেতে পারে এই গরমে। তবে এখন রঙিন পোলোও বেশ প্রচলিত। পোলো হতে পারে ভিনটেজ লুকের। তবে পোলো শার্টেই দেখা যায় ভিনটেজ লুকের অনেক রকম ও ধরন। সেটা আসতে পারে একটু পুরনো হয়ে যাওয়া কোনো জনপ্রিয় সিনেমা বা জনপ্রিয় কোনো সিরিজ থেকেও। মোট কথা এই লুকে গল্প রচনা হয় পুরনোকে নতুন চোখে দেখার। ফিরে আসে ভিনটেজ লুকে।

যখন পুরনো প্রেম সামনে আসে

যখন পুরনো প্রেম সামনে আসে

ফুরফুরে হাওয়ায় ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। সময়টা বেশ ভালোই কাটছিল, নীল আকাশের নিচে দিনের আলোয় স্বপ্ন বোনার গল্প, খুনসুটি। কিন্তু এমন সময় পুরনো প্রেম সামনে এসে হাজির। সামনে এসে দাঁড়ানো অতীত, স্বপ্নগুলোর মেজাজ বিগড়ে দিল। তখন!

আজ অনেক দিন পর দেখা হবে আইয়ানা আর নমনের। সম্পর্কের বয়স এক বছর হলেও এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে হাতেগোনা কয়েকবার। দু’জনেই বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত, কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। দেখা না হলেও ভালোবাসার কমতি নেই দু’জনের মধ্যে। মুঠোফোন, ফেসবুক এসবের মাঝে যতটা কাছাকাছি থাকা যায়। প্রায় মাসখানেক পর দেখা হচ্ছে আজ। তাই আজকের দেখা হওয়ার গুরুত্বটাও অন্যরকম। পুরো বিকাল একসঙ্গে ঘুরে রাতে ডিনার করে তবেই বাসায় ফেরা, এমনভাবেই সূচি সাজিয়েছে আইয়ানা। ইচ্ছে করেই খুব করে সেজেছে, নমন যেন চোখ ফেরাতে না পারে।

রেস্টুরেন্টের চারকোনা টেবিলে মুখোমুখি বসে প্রেমে অস্থির দু’জনে নানা কথায় মুখরিত। ঠিক এমন সময়ই পাশের টেবিলে কয়েক জন এসে বসল। তাদের মধ্যে একজনের কণ্ঠ খুব চেনা, আইয়ানা যেন কেঁপে উঠল। মনে হলো অনেকদিনের চেনা- ভাবতেই বুকের ভেতরটা ফাঁকা হয়ে গেল, ফ্ল্যাশব্যাকে সাদাকালো ছবিগুলো একটার পর একটা দ্রুত দেখা দিয়ে চলে যেতে লাগল। হাত-পা ঠাণ্ডা আসছে, শরীর ঘামতে লাগল। তবু ধূমায়িত সুপের স্বাদ নিতে নিতেই পাশের টেবিলে আড় চোখে তাকাল। আর কোনো কিছুই বাকি রইল না। এতক্ষণ যা ভেবেছিল তাই সত্য হয়ে দেখা দিল। আর কেউ নয় সাবেক প্রেমিক! উফ…কী অস্বস্তিকর! তেতো হয়ে উঠল আবহাওয়া। আইয়ানার ইচ্ছে করছে তক্ষুণি উঠে যেতে। মনে হতে লাগল- এই রেস্তোরাঁয় কেন? আগে থেকে জানলে না হয়, ধুর! যদি কথা বলতে চায়, তাহলে কি উত্তর দেব? তাদের ব্রেকআপ হয়েছিল দেড় বছর আগে। তারপরই নমন এসেছে তার জীবনে। ছটফট করছে আইয়ানার মন। অস্থির হয়ে উঠতে দেখে নমন প্রশ্ন করে ‘আর ইউ ওকে?’

অনেকেই এমন অস্বস্তিকর পরিবেশের শিকার হয়। সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে দেখা, যখন বর্তমান সঙ্গী আপনার পাশে। খুব কঠিন পরিস্থিতি। তবে এই কঠিন বিষয় সহজ করতে পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার নিজের উপরই। কী করবেন? সাবেককে দেখে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাবেন নাকি না দেখার ভান করে মুখ ঘুরিয়ে রাখবেন? এমনটি ভুল করেও করবেন না। কারণ এমন করলে জল ঘোলা হয়ে যাবে। বরং এমন পরিস্থিতিতে সহজ থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। দেখা হলে হাই-হ্যালো করুন, হেসে কথা বলুন। বর্তমান বন্ধুটির সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দিন।

এ প্রসঙ্গে সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী বলেন, ‘বর্তমানকে সাবেক সম্পর্কে বলে রাখলে অনভিপ্রেত ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। সৎ প্রেমিক কিংবা প্রেমিকা হওয়াই ভালো। সৎ হতে গিয়ে যদি সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়, দেবে। সত্যকে সঙ্গে নিয়েই সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত, বলে মনে করি। এতে আর যাই হোক কখনও দূরত্ব আসে না। এখন ইন্টারনেটের যুগে সম্পর্ক খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়। আবার শেষ হওয়ার কারণও তার মধ্যেই নিহিত থাকে। কিন্তু সম্পর্ক শেষ হলেই বন্ধুত্ব শেষ হয় তা কিন্তু নয়। তবে বন্ধুত্বের মধ্যে যেন ফেলে আসা সম্পর্কের প্রভাব না পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র রিজভি কিন্তু এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। সহজ থাকতে না পেরে, শেষ পর্যন্ত পালিয়েছে বেচারা। তার পর অন্তত কয়েক মাস বর্তমান বন্ধুটির সঙ্গে কোনো দেখা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বর্তমানও আবার অতীত হয়ে গেল। তাই তো অকপটে স্বীকার করে বলল, ‘সেদিন যদি পালিয়ে না গিয়ে, বর্তমানের সঙ্গে অতীতকে পরিচয় করিয়ে দিতাম। তাহলে হয়তো সবকিছুই স্বাভাবিক থাকত।’

যদি আপনার অতীত থাকে তাহলে বর্তমান সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে পুরনো সম্পর্কের একটা ধারণা অবশ্যই দিয়ে রাখুন। দেখা হলে কথার বিষয় হোক বর্তমান বা ভবিষ্যৎ নিয়ে। পুরনো প্রেমিক বা প্রেমিকার দিকে এগিয়ে গিয়ে হাসুন বা সামান্য কথা বলুন। বর্তমান সঙ্গীকে পরিচয় করিয়ে দিন অতীতের সঙ্গীর সঙ্গে। আর আগের সম্পর্ক যদি খুব তিক্তভাবে শেষ হয়ে থাকে তাহলে পরিস্থিতি বুঝে প্রথমে এড়িয়েই যান। সেটাই ভালো। অতীত আর বর্তমানের মধ্যে স্বচ্ছতা আর সমতা রেখে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। সম্পর্ক গড়ে তুলুন সত্যের ভিত্তিতে। প্রিয় মানুষটির হাতটা ধরে চোখে চোখ রেখে, বুঝিয়ে দিন কতটা ভালোবাসেন তাকে। সত্যের বন্ধনে সেই স্পর্শ, ভালোলাগা রেশ হয়তো বাকি জীবনে আপনার সঙ্গী হয়ে থাকবে।

ভাতের মাড়েই ম্যাজিক!

ভাতের মাড়েই ম্যাজিক!

যতই ফাস্ট ফুডের রমরমা থাকুক, বাঙালির এক বেলা ভাত না হলে চলে না। আর ভাত রান্না করলে ভাতের মাড় তো পাওয়া যাবেই। ভাতের মাড় ব্যবহার সাধারণত কাপড় ধোয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ভাতের মাড়ের রয়েছে আরও অনেক গুণ।

• মশ্চেরাইজার হিসেবে ভাল কাজ করে ভাতের মাড়। ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
• ভাতের মাড় দিয়ে ধুলে ত্বক পরিষ্কার হয়।
• ত্বকের কালচে ভাব দূর হয়।
• ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে এবং ত্বক নরম হয়।
• বলিরেখা ও ডার্ক সার্কেল দূর হয়।
• ব্রণ ও অ্যাকনে এড়ানো যায়।
• চুলের কন্ডিশনার হিসেবেও ভাল কাজ করে ভাতের মাড়।