নুর হোসেন এর সকল পোস্ট

নুর হোসেন সম্পর্কে

সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন অসম্ভব আত্মহংকারী, আত্মকেন্দ্রিক; বাউন্ডুলে টাইপের একজন মানব সন্তানসংসার থেকে বিচ্ছিন্ন অসম্ভব আত্মহংকারী, আত্মকেন্দ্রিক; বাউন্ডুলে টাইপের একজন মানব সন্তান।

ভাস্কর্য বনাম জ্বী হুজুর

15801820425292_S-1

দেশের সবচেয়ে আলোচিত টপিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি বা ভাস্কর্য।
এমনিতেও দেশের যেকোন ইস্যু ঘষামাজার ফলে ঘটনার চেয়ে কথা বেশ বড় হয়ে যায়…
ঠিক তেমনি ভাস্কর্য ইস্যু একশ্রেণীর মানুষের কাছে নাপাক-নাপাক হয়ে তা দ্রোহের মতো যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব তাদের আচরণে!
কিন্তু কেন?
কারণ, ভাস্কর্য তৈরী শির্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি চিন্তা করে দেখেন পৃথিবীতে কিভাবে শির্কের সূচনা হয় তবে দেখবেন,
এর একমাত্র কারণ হলো নেককার লোকদের নিয়ে বাড়াবাড়ি-
তাদের যা মর্যাদা তার চাইতে বেশী তাদের সম্মান করা।

শুধু কি মূর্তি বা ভাস্কর্যই শির্ক আর কিছু নেই?

আছে, কবর ও মাজারের মাধ্যমে।
কবর পূজারীদের কেউ কেউ বলতে পারে,
তোমরা আমাদের উপর বেশী বাড়াবাড়ি করছ।
আমরা তো কোন মৃতের ইবাদত করিনা,
ভাস্কর্যকে সম্মান দেখাই না-
কবরে এ সমস্ত ওলী-আউলিয়া নেককার লোক।
আল্লাহর কাছে তাদের সম্মান রয়েছে, তারা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে পারেন!
জবাবে আমরা বলব, এটাই ছিল কুরাইশ কাফেরদের কথা তাদের মূর্তি সম্পর্কে।
পাথর পূজা আর কবর পূজার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
কি পার্থক্য আছে সেই ব্যাক্তির মাঝে,
যে মূর্তির কাছে নিজ প্রয়োজনের কথা বলে আর যে গলিত মাঠি মিশ্রিত হাড্ডির কাছে যায়!
কোনই পার্থক্য নেই।

”আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা এমন বস্তুর উপাসনা করে যা তাদের কোন লাভ বা ক্ষতি করতে পারে না এবং বলে এরা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী।
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহর এমন বিষয়ে অবহিত করছ;
যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে?
তিনি পুত:পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছো।”
(সূরা ইউনুস [১০]:১৮)

অতএব, শুধু ভাস্কর্য নয় একজন মুসলিম হিসেবে উচিৎ কবর বা মাজারের বিরোধিতা করা।

এখন আসা যাক বর্তমান সময়ের মূর্তি বিরোধী আলেমসমাজদের ব্যাপারে।
আলেমদের কাজ প্রথমে নিজের ধর্মের যাবতীয় অনাচার থেকে ধর্মকে সঠিক পর্যায়ে নিয়ে এসে তা অনুসারীদের কাছে সঠিক পথে পৌঁছে দেওয়া-
দেশে সেই শাহ জালাল (রহঃ) মৃত্যুর পর থেকে যে পরিমাণ শির্কের কারখানা মাজার প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা কি তারা চোখে দেখেনি?
তারা দেখেনি যে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর পবিত্র নামের বিকৃত জিকির করে তালে তালে ছন্দে নারী-পুরুষের অবাধ যৌন উন্মুক্ত গাঁজা খোরের নাচন!!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হচ্ছে সম্প্রতি সময়ে,
আশার কথা হলো-
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে কেউ পূজা দেয়নি সন্তানের জন্য উনার ভাস্কর্যের নিচে গড়াগড়িও খায়নি এমনকী সন্তান লাভের প্রলোভনে কেউ খাদেম বা পীর দ্বারা ধর্ষণ হওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু ইসলামের নাম ভাঁঙিয়ে দরগাহ মাজারে বড়বড় ওয়াজ ও জিকিরের আয়োজন করা শির্কবাদীদের দ্বারা ধর্মের চরম ক্ষতি হচ্ছে –
সে বিষয়ে ভাস্কর্য বিরোধী আলেমসমাজ চুপচাপ-খামোশ।
ওসব ধর্মের কথা বলে তাই না!

ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ-
নিজের ধর্মের ভিতর শির্কের কারখানা খোলা রেখে একজন মহান নেতার তর্জনী উঁচু হাতের ভাস্কর্যের বিরোধীতা কতটা যৌক্তিক?
ভাস্কর্য বিরোধীতার ফতোয়া দেওয়ার আগে ফতোয়া দিন মাজার নামক ভন্ডদের বিরুদ্ধে।
ভাঙতে হলে প্রথমে ভাঙুন মাজার গুলো,
বুল্ডুজার চালিয়ে গুড়িয়ে দিন প্রতারক ধোঁকাবাজ বাটপার গুলোর বেহায়াপনার আর্থিক উপার্জনের আস্তানা।

কিন্তু তা না করে আপনার হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিচে!
একটা গনতান্ত্রিক দেশে কে আপনাদের ধর্মীয় নীতিমালা প্রয়োগ করতে প্রমোট করলো?

স্বীকারোক্তি

নিশ্চিন্তে একাগ্র ধ্যানে কোন অবেলায়
ধীরে-ধীরে সমস্তই স্মরণ হয়ে গেল,
আমি যে বিশুদ্ধ নই-
আমি যে না পাওয়ার ব্যাথায় বিহ্বল!
পাপের পঙ্কিল বিভীষিকার অরুণোদয়-
বিবেক আদালতে মৃত্যুদণ্ডের আসামী;
যে স্বপ্নের শেষ সম্বলটুকু-
গলা টিপে হত্যা করেছি স্বার্থ ভ্রমে।

দুর্বুদ্ধির স্পর্ধায় হারিয়েছি তাকে
অবহেলার অবিচ্ছিন্ন আকর্ষণে,
যার সংশয়ক্ষুব্ধ ক্রুদ্ধ তপ্তশ্বাস-
আমার বক্ষঃস্থলে করে দংশন
শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে দেয়-
তিরস্কারের বিষ;
তখন কপটতার লেনদেন চুকাতে আসে-
তার স্নিগ্ধ-করুণ দুটি চোখ-
কখনো বুর্জোয়ারা দাঁত খিঁচিয়ে বলে,
শুধু যন্ত্রণাই তোমাকে ভালবাসে
অন্য কেউ নয়।

জন্ম-জন্মার্জিত মৃত্যুর আছে গোপন মাধুর্য-
শরৎকালের সৌন্দর্যে আছে শুভ্র সাদা মেঘ,
মর্মর পাতার করকর ধ্বনি সেটাও তো সূর!
কিন্তু বিমূর্ত কলমের স্বীকারোক্তিতে-
যা লিখে গেলাম;
তার কোন মাধুর্য নেই, সৌন্দর্য নেই-
তা শুধু বিউগলের করুণ সুরের মত,
নারীর কাজলের নিংড়ানো কলঙ্ক দাগ।

একটি কাল্পনিক মাজার প্রতিষ্ঠা বা মিথ্যা পীরের সত্য কাহিনী-২

শেষ পর্ব…..
বিভিন্ন চায়ের দোকানে, মজলিসে, বাজারে, মসজিদে, ‘শায়খ বরকতের’ নানান বরকতের কথা, তার মাথার চুল কতটা দীর্ঘ ছিলো, পাগড়ী কতটা লম্বা ছিলো,
অসংখ্য-অগণিত কারামতির কথা- আযানের সময় হওয়ার সাথে সাথে মিনার নীচে নেমে আসত…..ইত্যাদি….ইত্যাদি।

স্কুলের শিক্ষকদের মাঝেও বিষয়টি বাদ-প্রতিবাদের সাথে আলোচিত হতে লাগল। যখন সীমা ছাড়িয়ে গেল, তখন শিক্ষক সাঈদ ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে চিৎকার করে উঠল, ‘ওহে বিবেকবানের দল! আপনারা ছাড়ুন এ সমস্ত কুসংস্কার ও অমুলক বিশ্বাসের কথা!’
শিক্ষকগণ সমস্বরে বলে উঠল, কুসংস্কার… তুমি কি বলতে চাও এখানে শায়ক বরকত নেই?

সাঈদঃ অবশ্যই নেই। এ ধরনের কোন খবর এখানে নেই।
এটি একটি অপ্রচার।
চৌরাস্তার মোড়ে শুধু মাটি আর মাটি, না কোন শায়খ আছে না কোন ওলী বা দরবার ছিল বা না আদৌ আছে।

শিক্ষকগণ যেন কেঁপে উঠলেন।
এক যোগে বললেন, কি বল তুমি? ‘শায়খ বরকত’ সম্পর্কে এমন কথা বলার স্পর্ধা তোমার হল কিভাবে?
‘শায়খ বরকতের’ বরকতে গ্রামের পশ্চিমের নদীটি ভরাট হয়েছে।
তিনি….।
তাদের চেঁচামেচীতে সাঈদ পেরেশান হয়ে উঠল। তারপরও সে তাদের লক্ষ্য করে বলল, আপনারা নিজের বিবেক বিক্রয় করে দিবেন না। আপনারা শিক্ষিত ও বিবেকবান মানুষ। কোন কবর বা মাজার সম্পর্কে একজন এসে কিছু বলল বা স্বপ্নে শয়তান কিছু দেখাল আর তাই বিশ্বাস করে দিবেন?

এতক্ষণ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীরব ছিলেন।
তিনি আলোচনায় যোগ দিলেন। বললেন, ‘শায়খ বরকতের; গুণাগুণ আছে এবং তা নিশ্চিত। তুমি কি গতকালের পত্রিকা পড়নি?

সাঈদ আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল, পত্রিকাতেও! কি লেখা হয়েছে তাতে?

প্রধান শিক্ষকঃ পত্রিকা বের করে সকলের সামনে পাঠ করছেন।
পত্রিকার সবচেয়ে বড় শিরোনাম হচ্ছে ‘শায়খ বরকতের দরবার আবিষ্কার’। লেখা হয়েছে: ‘শায়খ বরকত (দামাত বারাকাতুহু) ১১০০ হি: সনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খালেদ বিন ওয়ালীদের (রাঃ) ৩৩তম অধঃস্তান সন্তান। অনেক উলামায়ে কেরামের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করছেন। যেমন উমুক…উমুক…উমুক। তিনি তুর্কী সৈন্য বাহিনীর সাথে খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শরীক হয়েছেন। যুদ্ধ যখন ভীষণ আকার ধারণ করে, তিনি খৃষ্টান বাহিনী লক্ষ্য করে একটি ফুঁ মারেন। সাথে সাথে ঘূর্ণিঝড় খৃষ্টান বাহিনীর উপর প্রচন্ড আঘাত হানে। সবাই আর্তচিৎকার করতে করতে রক্তাক্ত অবস্থায় ধুলায় লুটিয়ে পড়ে…।

সাঈদঃ মাশাআল্লাহ! শায়খ বরকত সম্পর্কে সাংবাদিক সাহেব এত সুক্ষ্ণ বিবরণ পেলেন কোথায়?
প্রধান শিক্ষকঃ এগুলো সত্য কথা। তুমি কি মনে কর এ সবাই তার বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছে? এগুলো ইতিহাস…।
সাঈদঃ কিন্তু এসব দাবীর পক্ষে দলীল থাকা জরুরী, যেকোন দাবী এলেই তার বিশুদ্ধতা যাচাই করা আপনার উপর আবশ্যক।
অন্যথা যে কেউ যা ইচ্ছা দাবী করতে পারে… কবর….ওলী-আউলিয়া, কারামত…।

তারপর সাঈদ চিৎকার করে উঠল। আপনারা আমার সুস্পষ্ট কথা শুনুন, শায়খ বরকত নামের এ দরবার বা মাজার একটি মিথ্যা ও অপপ্রচার মাত্র। আমি এবং স্যার আদেল মিলে এটি উদ্ভাবন করেছি। প্রকৃতপক্ষে এখানে কিছুই নেই। আমাদের উদ্দেশ্য হল, মানুষের মূর্খতা এবং ভ্রষ্টতা যাচাই করে দেখা। স্যার আদেল আপনাদের সামনে আছেন তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন!

শিক্ষকগণ আদলের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে বললেন, এ লোক তো তোমার মত বিতর্ক পছন্দ করে; সব বিষয়ে দলীল চায়। সে তো ওলী-আউলিয়ার দুশমন। তুমি আর আদেল যা-ই বলনা কেন, আমরা বিশ্বাস করি শায়খ বরকত (দামাত বারাকাতুহু) যুগ যুগ ধরে এখানে রয়েছেন। দুনিয়ার কোন স্থান ওলী-আউলিয়া, পীর-দরবেশ, গাউছ-কুতুব থেকে খালি নয়। তোমার বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা থেকে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। সাঈদ ও আদেল নিশ্চুপ হয়ে গেলেন, ক্লাশের বেল বেজে উঠল। সবাই নিজ নিজ শ্রেণী কক্ষে চলে গেলেন।

ওস্তাদ সাঈদ যা দেখছেন এবং শুনছেন তাতে অস্থির হয়ে উঠলেন। চিন্তা করছেন শায়খ বরকত… কারামতি…সম্ভব…অসম্ভব? এটা কি সম্ভব এত লোক সবাই ভুলের মধ্যে রয়েছে? পত্রিকার রিপোর্ট মিথ্যা? আশ্চর্যের বিষয়, এলাকার বুযুর্গ, আলেম-ওলামাগণ তো কিছু দিন আগে চৌরাস্তার মোড়ে শায়খ বরকতের নামে উরুস মোবারকও উদযাপন করলেন? কিন্তু শায়খ বরকত তো ওস্তাদ আদেলের পক্ষ থেকে বানোয়াট একটি নাম… কিন্তু এটা কি করে সম্ভব যে, এত লোক সবাই প্রলাপ বকছে? অসম্ভব…অসম্ভব…।

ধীরে ধীরে সাঈদের মগজে নতুন চিন্তা প্রবেশ করতে লাগল। হয়তো শায়খ বরকত আছেনই, ওস্তাদ আদেল হয়তো আগে থেকেই ব্যাপারটা জানতেন। কিন্তু মানুষকে সন্দেহে ফেলার জন্য এখন হয়তো বলছেন, আমি নিজে ‘শায়খ বরকতের’ নামে নতুুন কিছু আবিষ্কার করেছি। সাঈদ স্যার বিষয়টি নিয়ে খুব চিন্তা-গবেষণা করলেন। এ থেকে বের হওয়ার জন্য শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলেন, কিন্তু কোন কাজ হল না। তার মগজে যেন বিষয়টি ভালোভাবেই স্থান পেয়েছে।

পরবর্তী দিন…পরের দিন… বিষয়টি নিয়ে স্কুলে আলোচনা -পর্যালোচনা হতে থাকল।
তখন ছিল শিক্ষাবর্ষের শেষর দিক। বাৎসরিক ছুটি হল। শিক্ষকগন নিজ নিজ এলাকায় ছুটি কাটাতে চলে গেলেন। নতুন শিক্ষাবর্ষে শুরু হল। শিক্ষকগণ দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরে এসেছেন। আদেল ও সাঈদ আগের মতই বাসে চড়ে গ্রামের স্কুলে যাচ্ছেন। আদেল স্যার ‘শায়খ বরকতের’ বিষয়টি বেমালুম ভুলেই গিয়েছেন। অথচ তিনিই এ ঘটনার জন্মদাতা। কিন্তু বাস যখন গ্রামের প্রবেশ পথে সেই চৌরাস্তায় পৌঁছেছে, তখন আদেল লক্ষ্য করলেন, স্যার সাঈদ যেন গুণ গুণ করে কি কি দু’আ-যিকির পাঠ করছেন।

ওদিকে স্যার আদেল বিস্ময়ে হা হয়ে গেলেন।
তিনি একি দেখছেন?
চৌরাস্তার মোড়ে কত সুন্দর মাজার বানানো হয়েছে!
মাজারের উপর আকাশচুম্বী বিশাল গম্বুজ ঝলমল করছে, পাশে তুর্কী স্টাইলে বানানো সুবিশাল মসজিদ।
আদেল মুচকি হেসে মনে মনে বলল মানুষ কত নির্বোধ!
শয়তান তাদেরকে শির্কে লিপ্ত করার ক্ষেত্রে কতই না কামিয়াব হয়েছে!
তিনি স্যার সাঈদকে হাসিতে শরীক করার উদ্দেশ্যে তার দিকে নজর দিলেন, কিন্তু একি তিনি তো দু’আর জগতে ডুবে আছেন…!
এক সময় স্যার সাঈদ চিৎকার করে বাস চালককে অনুরোধ করছেন, এখানে একটু থাম।
তারপর তিনি দু’হাত উঠিয়ে শায়খ বরকতের রুহের উপর ফাতিহাখানি পাঠ করলেন।

একটি কাল্পনিক মাজার প্রতিষ্ঠা বা মিথ্যাপীরের সত্য কাহিনী পর্ব ১

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আদেল ও সাঈদ।
পড়া-শোনা শেষ করে একটি গ্রামে তারা স্কুলের শিক্ষকতা কর্মে নিয়োজিত।
গ্রামটিতে কবর ও মাজার খুব বেশী, মানুষ ওগুলোর তা’যীম করে, নযর-নেওয়াব পেশ করে; উরস করে।

স্কুলে যেতে হয় বাসে করে।
একদিন বাসের ভিতর আদেল ও সাঈদ পরস্পরিক কথাবার্তায় লিপ্ত।
এমন সময় জনৈক বৃদ্ধ বাসে উঠে ভিক্ষা চাইতে লাগলো, গায়ে তার হাজার তালি লাগানো পোষাক।
তাও ময়লা মাখা।
বয়সের ভাড়ে কাঁপছে, দেখে মনে হচ্ছে অর্ধ পাগল; মুখের লালা বার বার মুছে ফেলছে হাতের আস্তিনে।
গাড়ীতে চড়ে সে যাএীদের নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছে, তাদের ভয় দেখাচ্ছে, দাবী করছে তার দোয়া সর্বদা কবুল হয়ে থাকে; সে যদি বদদোয়া করে তবে বাস উল্টে যেতে পারে….।
সাঈদ এমন পরিবারে প্রতিপালিত হয়েছে যারা ওলী-আউলিয়া, তথাকথিত পীর-ফকির, দরবেশ, কুতুব, আবদাল… দ্বারা প্রভাবিত!
সে ভীত ও পেরেশান হয়ে সাথী আদেলকে অনুরোধ জানায় ভাই কিছু দিয়ে দাও, কেননা এ দরবেশ খুব বরকতময় লোক।
সর্বদা তার দোয়া কবুল হয়। হতে পারে বাস্তবিকই তার বদদোয়ায় বাস উল্টে যাবে।
আদেল তার কথায় খুবই আশ্চর্য হলো।
বলল হ্যাঁ আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের লোকেরা কারামতে বিশ্বাস করে;
কিন্তু নেককার ও পরহেজগার লোকদের কারামত।
যারা লোক দেখানোর জন্য আমল করেনা। আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনার্থে গোপনে সৎআমল করে। এসকল ভন্ড ও ভবঘুরে লোকদের কারামত নয়।
যারা দ্বীন বেঁচে অর্থ উপার্জন করে।
সাঈদ চিৎকার করে উঠলো। কি তুমি আজেবাজে কথা বলছ! এই দরবেশের কারামতের কথা ছোট-বড় সব লোকেরই জানা! একটু পরেই দেখবে তিনি বাস থেকে নেমে যাবেন।
আর আমরা গ্রামে পৌঁছার আগেই তিনি হেঁটেই পৌঁছে যাবেন।
এটা তার কারামত।
তুমি কি অলীদের কারামতকে অস্বীকার কর?

আদেল‌ঃ আমি কখনোই কারামতের অস্বীকার করিনা আল্লাহ ‌তার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করতে পারেন। কিন্তু এটা হতে পারেনা যে, কারামতের দরজা দিয়ে শির্ক প্রবেশ করবে- আমরা এ সমস্ত মানুষকে, মৃত অলীদেরকে আল্লাহর সাথে অংশীদার মনে করব? সৃষ্টি, নির্দেশ, জগতের পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষমতা আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন এ বিশ্বাস করব? আর তাদেরকে আমরা ভয় করব, তাদের ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করব? এটা সম্ভব নয়।

সাঈদঃ তুমি কি বিশ্বাস কর না যে, শায়খ ‘আহমদ আবু সারুদ’ হজ্জে এসে আরাফাতের দিন (তুরস্কের) ইস্তাম্বুল গিয়ে নিজ পরিবারের সাথে খানা খাদ্য খেয়ে আবার আরাফাতে ফিরে এসেছেন?

আদেলঃ সাঈদ! আল্লাহ তোমার বিবেক বরকত দিন!
তুমি কি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কথাই শিখেছ?

সাঈদঃ মনে হয় আমরা হাসি-ঠাট্টা শুরু করেছি।

আদেলঃ আমি তোমার সাথে হাসি-ঠাট্টা করছি না। কিন্তু সাধারণ মানুষের অবান্তর কথা আর তাদের কুসংস্কারের প্রতিবাদ করা যাবে না এমনতো নয়।

সাঈদঃ কিন্তু এ সমস্ত কারমতের কথা শুধু সাধারণ মানুষের মুখেই শোনা যায় না; বড় বড় আলেম ওলামগণও এ সমস্ত মাজার ও দরবারের অলৌকিক ঘটনাবলী বর্ণনা করে থাকেন।
বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে এ সমস্ত বিষয় ব্যাপকহারে আলোচনা হয়।
আদেলঃ ঠিক আছে সাঈদ, তোমার কি মত, আমি যদি বাস্তবে প্রমাণ করে দিতে পারি
যে, এ সমস্ত মাজার ও দরবারের অধিকাংশই মিথ্যা ও কাল্পনিক? এসব মাজারের অধিকাংশের হাক্বীকত নেই -কবর নেই, লাশ নেই, কোন ওলী নেই। কিছু মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের কারণে মানুষের কাছে তা সত্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
একথা শুনে সাঈদ ক্রোধে ফুঁসে উঠলো এবং বলতে লাগল, আউজুবিল্লাহ! আউজুবিল্লাহ!
উভয়ে কিছুক্ষণ নীরব থাকল।
বাস তাদেরকে নিয়ে গ্রামে প্রবেশের আগে চৌরাস্তার মোড়ে যখন পৌঁছল তখন আদেল সাঈদকে লক্ষ্য করে বলল, সাঈদ! রাস্তার এ মোড়ে কি কোন যুক্তিসংগত কথা হল না কি- একজন ওলীকে চৌরাস্তায় বা রাস্তার মোড়ে দাফন করা হবে?

আদেলঃ তাহলে তোমার কি মত,যদি আমরা প্রচার করে দেই যে, এই চৌরাস্তায় জনৈক নেক ব্যক্তির পুরাতন কবর আছে, যার চিহ্ন আজ মিটে গেছে এরং নষ্ট হয়ে গেছে? এর পরে আমরা তার কারামতের কিছু ঘটনা, তার দুআ কবুল হওয়া কিছু গল্প মানুষের সামনে পেশ করব।
দেখি মানুষ বিশ্বাস করে কি না? আমি দৃঢ় বিশ্বাস রাখি মানুষ ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করবে; বরং হতে পারে পরবর্তী বছর তারা এখানে একটি বিরাট মাজার বা দরবার প্রতিষ্ঠা করে ফেলবে।
এরপর শুরু হবে সেখানে শির্ক। অথচ এখানে শুধু মাটির মাটি- যদি ওরা যমীনের পাতাল পর্যন্ত খনন করে তো কিছুই পাবে না।

সাঈদঃ কি সব আজেবাজে কথা বলছ?
তুমি কি মনে করছো মানুষ এত বোকা ও নির্বোধ?

আদেলঃ ঠিক আছে, তুমি যদি আমাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা কর তাহলে এবং সামর্থন দাও তাতে তো তোমার ক্ষতি নেই? নাকি তুমি ফলাফলের ব্যাপারে আশংকা করছো?

সাঈদঃ না, ভয় করিনা। তবে বিষয়টিতে আমি তেমন সন্তুষ্ট নই।

আদেলঃ বুঝা গেল তোমার মত আছে। তুমি কি মনে কর যদি আমরা প্রস্তাবিত ওলীর নাম রাখি ‘শায়খ বরকত ‘?

সাঈদঃ ঠিক আছে তুমি যা চাও।

এরপর দু’বন্ধু বিষয়টি খুব ধীরে ধীরে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিল।
এক্ষেত্রে তারা প্রথমে চায়ের স্টল, সেলুন, প্রভৃতি দোকান থেকে শুরু করবে। কেননা এসব স্থান থেকেই যেকোন সংবাদ দ্রুত প্রসার হয়।
তারা গ্রামে পৌঁছে সলিমের সেলুনে গেল। তার সামনে ওলী-আউলিয়াদের কথা আলোচনা করার পরে বলল, জনৈক নেক ওলী অনেক বছর থেকে সমাধিস্থ আছেন, অথচ আল্লাহর দরবারে তাঁর মর্যাদা অনেক বেশী; কিন্তু তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার লোকের সংখ্যা খুব কম।
সেলুনের নাপিত জিজ্ঞেস করল, কোথায় সে কবরটি? তারা বলল, গ্রামে প্রবেশের আগে যে চৌরাস্তা রয়েছে তার মোড়ে!

নাপিতঃ আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর সবাই তা’রিফ, তিনি আমাদের গ্রামে একজন ওলী দিয়ে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। আমি বহুকাল থেকে এ রকম একটা আশা করছিলাম।
এটা কি কোন যুক্তিসংগত কারন হতে পারে- পার্শ্ববর্তী ‘নতুন গ্রামে’ ও ‘নারায়ণপুর’ গ্রামে দশ জনের বেশী ওলী-আউলিয়া আছেন- আর আমাদের গ্রামে একজনও থাকবে না?

আদেলঃ সেলিম ভাই! ‘শায়খ বরকত’ খুব বড় মাপের ওলী ছিলেন।
আল্লাহর দরবারে তাঁর খুব মান-মর্যাদা ছিল।

নাপিত চিৎকার করে উঠলো, শায়খ বরকত (ক্বাদ্দাসাল্লাহু) সম্পর্কে আপনি এত কিছু জানেন, তারপরও চুপ রয়েছেন?
এরপর শায়খ বরকতের খবর শুষ্ক ঘাসে আগুণ দেয়ার মত গ্রামের আনাচ-কানাচে ছড়িয়ে পড়ল।
মানুষের মুখে মুখে সে কথা আলোচনা হতে লাগল।
এমনকি মানুষ স্বপ্নেও তা দেখতে লাগল।
( চলবে…..)

দাসের দল

কেউ কোনদিন চায়নি ভালো
এই অভাগা জাতির
সবাই সাধু-দুর্নীতি বাজ করে টাকার সাথে খাতির,
মহামারী দুর্যোগে মরছে কত মানুষ
ত্রাণের ভাণ্ডার করছে খালি
লুটছে অমানুষ!

বিশ্ব কাঁপছে করোনায়, আতংকে পুরো দেশ
নেতারা সব খোশ মেজাজে
বুলি আওরায় বেশ;
এটা আছে, ওটা আছে, মোটেও তো নাই কিছু-
দুস্থ গরীব অসহায় ছাড়ছে না অভাব পিছু।

অলি-গলি লকডাউন আমরা খাবো কি?
দিনমজুরের মাথায় হাত অনাহারে বন্দী,
সরকার দিলো ত্রাণ নেতারা নিলো কেড়ে-
আবার অন্ন খোঁজে বের হলে
প্রশাসন আসে তেড়ে;
ঘরেই আছিস ঘরেই থাক ঘরেই যা মরে-
তুই গরীব দাসের দল হাজার বছর ধরে।

গুজবে কান দিবেন না সচেতন থাকুন

বিশ্বব্যাপী আত্মঘাতি সংক্রমণ মহামারী কোভিড-১৯ রোগে ভুগছে ৫ লাখের বেশি মানুষ। শেষ খবর পাওয়া অবধি বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছে ৩৯ জন তার মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৫ জন!

এই রোগের মহামারী সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই, তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা সবাই মোটামুটি অবগত; আর এই তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর মানুষ ধর্মের দোহাই দিয়ে সহজ-সরল মানুষদের ভুল চিকিৎসার গুজব রটাচ্ছে আর আমাদের দেশের হুজুগ প্রবণ বাঙালী ভাই-বোন, বাপ-মায়েরা তা লুফে নিয়ে মধ্যরাতে জেগে কেউ কেউ হারিকেন, টর্চ, কুপি জ্বালিয়ে কষ্টিপাথরের মত খুঁজে গিলেছেন থানকুনি পাতা!!

কাহিনী কি…..?
কাহিনী হলো, সারা দুনিয়ার চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মিলে যখন রাত দিন কোভিড ১৯ রোগের মেডিসিন বানাতে ল্যাবরেটরিতে গবেষনায় ব্যস্ত; ঠিক তখনই বাঙালীর কোন এক শয়তান পীরের মুরিদ ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের আলৌকিক শক্তির মহাবলে তৈরী করেছে করোনা ভাইরাসের মেডিসিন “থানকুনি পাতা”।
ছাগলে যা বিশ্বাস করেনা বাঙালী তা করে।
আর সেটা শুধু মাত্র ধর্মের দোহাই দিয়েই সম্ভব,
কেননা বাঙালী কোন কিছু সাধারণ লজিক দিয়ে বিশ্লেষণ করার আগে খুৃঁজে সেখানে আল্লাহ-রাসুল (সাঃ)-পীরের সুত্র আছে কিনা!
যদি থাকে ঘটনা মিথ্যা হলেও সেটা মানতে বেশীরভাগ মানুষের দ্বিমত থাকেনা,
আজ সকালে অনেকেই আবার রং চা নিয়ে মেতেছেন।
যেমন গুজবে হামাগুড়ি দিয়ে মেতেছিলেন পদ্মাসেতু নির্মাণের ছেলেধরা গুজবে-
অযাচিত মিথ্যা গুজবে অনেক নীরহ মানুষ ছেলেধরা সন্দেহে খেয়েছেন গণধোলাই,
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাতে এসে প্রান হারান তসলিমা বেগম রেণু।

গুজব মহামারির চেয়েও ক্ষতিকর,
মহামারী চিকিৎসায় সারানোর উপায় একদিন না হয় একদিন বের হবেই হবে।
কিন্তু মানুষের সরল মনে মিথ্যা কোন ধারণা সত্যি বলে গেঁথে গেলে তা মুছে দেওয়া প্রায় অসম্ভব।

স্বার্থ হাসিলের জন্য সমাজে ভুল ও মিথ্যা কিংবা আংশিক মিথ্যা ছড়িয়ে দিচ্ছে স্বার্থপর মানুষ,
এরকম ঘটনা নতুন নয় নবী রাসুলগনের যুগেও এমন কুশিক্ষিত লোকজনের অভাব ছিলোনা;
তফাৎ আগে প্রচারণা কম ছিলো-
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সুবিধায় তা এখন রাতারাতি ভয়ংকর রুপ ধারণ করছে।

তাই করোনা ভাইরাস সারানোর কিংবা মুক্ত থাকার বর্তমান প্রেক্ষাপটে ডাক্তারি পরামর্শ সাজেশন ব্যাতিত
আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য আলৌকিক কোন ঘটনার খবর এলে তা আমাদের যাচাই করে নিতে হবে; ঘটনা সত্যি কিনা।
গুজবের স্রোতে পাল উড়ানো যাবেনা,
এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা
কোরআনে ইরশাদ করেছেন,
‘হে মুমিনগণ!
তোমাদের কাছে যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তা যাচাই করো।
অজ্ঞতাবশত কোনো গোষ্ঠীকে আক্রান্ত করার আগেই, (না হলে) তোমরা কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’
(সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ৬)

আমাদের যে বিষয়ে কোন অভিজ্ঞতা নেই সে বিষয়ে অন্যকে কোন পরামর্শ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে,
অনেক অনভিজ্ঞ সমাজে আছেন যারা শুধুমাত্র নিজেদের সুনাম অর্জন করতে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে ;
ফলে উপকারের চেয়ে বর্তমান সময়ে মানুষের ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
অন্যের ক্ষতি হয় এমন যুক্তি থেকে বিরত থাকুন।
আপনার চুপ থাকার কারনে অনেকে বেঁচে যাবে।

যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ কোরো না।
নিশ্চয়ই কান, চোখ, অন্তরের প্রতিটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।’
(সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে চুপ থাকে সে মুক্তি পায়।’
(তিরমিজি, হাদিস : ২৫০১)
অতএব, অযথা জ্ঞান দেওয়া বন্ধ করে দিন।

আবার অনেকের মধ্যে নিজের বিশ্বাস আল্লাহ তাদের করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত করবেনা,
তাই তারা মাস্ক ব্যাবহার করছেনা কেউ কেউ সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়ার ব্যাপারটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছে;
করোনা নাকি ইহুদি খ্রিষ্টানদের রোগ মুসলমান সম্প্রদায়ের নয়!
কী মারাত্মক এদের বিশ্বাস!!
আবার এরাই হাদিস আওরায় ‘পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ’
এদের মত ধুর্ত অসচেতন লোকদের সম্পর্কে
আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘যদি তারা তোমাদের সঙ্গে বের হতো, তবে শুধু বিভ্রান্তিই বৃদ্ধি পেত। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা তোমাদের ভেতর ছোটাছুটি করত।
তোমাদের ভেতর তাদের কথা শোনার (বিশ্বাস করার) লোক রয়েছে।
আল্লাহ অত্যাচারীদের সম্পর্কে অবগত আছেন।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৪৭)

মনে রাখতে হবে সচেতনতা দুর্বলতা নয়
রাসুল (সাঃ) ভিত্তিহীন কথা প্রচার করতে আমাদেরকে কঠিনভাবে নিষেধ করে বলেছেন:
একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, যা শুনবে, তা-ই বলে বেড়াবে।
-(মুসলিম) 

 আশার কথা হলো,
আল্লাহ গজব নাযিল করে মানুষের হেদায়েতের জন্য,
করোনা আতংকে ভিত হবেন না,
সতর্ক থাকুন,সচেতন থাকুন, আল্লাহর আইন মেনে চলুন।
নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।

তাইতো আল্লাহ বলেছেন,
“আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠাই”
(সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৫৯)।

সুতরাং, গুজবে কান না দেয়া, গুজবে বিশ্বাস না করা। আর যাচাই-বাছাই, পরীক্ষা করে সংবাদ পরিবেশন, প্রচার ও প্রকাশ করা প্রত্যেকের দায়িত্ব।

সুতোর টান

ছোট খাটো একটা চাকুরী জুটার বছর দুয়েক যেতে না যেতেই, পারিবারিক ভাবে কাননের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল।

কানন আব্বার বন্ধুর মেয়ে, দু’জনেই ঠিকদার একই পেশার মানুষ; কাননের মা মানে আমার শ্বাশুড়ী আম্মা প্রাইমারী স্কুলের সহঃ শিক্ষিকা, আর আমার মা ভালো গৃহিনী বড় ছেলে আর মেজ মেয়ের সন্তানদের নিয়ে ৮/১০ বছর কাটাতে না কাটাতেই ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে এখন ছোট ছেলের বউ দেখে শান্তিতে মরতে চান!
মাকে ভালবাসি বলেই অনিচ্ছা সত্বেও বিয়েতে রাজী হয়ে গেলাম।

কানন শ্যামলা হলেও ওর চোখ দুটো অসম্ভব সুন্দর, চিকন আঙ্গুলে আংটি গুঁজে দেওয়ার সময় কয়েক সেকেন্ডের জন্য একপলক দেখেছি মাত্র। ওর সাথে পুর্বে কখনোই আমার দেখা হয়নি তবে ওর বাবাকে আমি ভাল মতেই চিনতাম কাজের খাতিরে মাঝে মাঝে বাবার খোঁজে আমাদের বাসায় আসতেন।

কাননেই পরিবারের বড় মেয়ে অর্নাস ২য় বর্ষের ছাত্রী, আর ক্লাস টুতে পড়ুয়া ওর একটা ছোট ভাই আছে। হ্যাপী ফ্যামেলী। আংটি বদল পর্ব শেষ হতেই কাজী বাবাজীর বাড়িয়ে দেওয়া দেড় লাখ টাকা দেনমোহর উল্লেখিত বিবাহ রেজিষ্ট্রী নামায় আমার মত কাননও খসখস করে নিজের নাম লিখে দিলো, তার মুখের ঘোমটায় শুধু তার বাঁশির মত নাকটা ছাড়া কিছু চোখে পড়লো না।

পছন্দ-অপছন্দ গুলোকে বিসর্জন দিয়ে সারা জীবনের জন্য একে অপরের সাথে থাকার চুক্তিতে ওয়াদাবদ্ধ হলাম অথচ, আমরা কেউ কারো সম্পর্কে তেমন কিছু জানলাম না; জানলাম না বিয়ের অনুভুতি কেমন হয় বা জুটি বাঁধার আনন্দ কেমন! বাবা-বড় ভাইয়া, বোন জামাই, ২ চাচা ও ২ চাচাত বোন ছাড়া আমার একজন বন্ধুও উপস্থিত নেই- উপস্থিত নেই আমার গর্ভধারিণী মা আর একমাত্র বোন। মা হসপিটালে মাকে দেখাশোনা করছে মেজ আপু তাই তারা আসতে পারেনি।

মনে খচখচ করলেও প্রবোধ দিলাম আপাতত কাবিন করে রাখা হলো পাত্রী উঠানো হবে ৪ মাস বাদে কাননের পরীক্ষার পর, তাই বন্ধু-বান্ধবকে পরেও ম্যানেজ করা যাবে। তাতে যদি কেউ বিগড়ে যায় যাবে, আমার কোন আপত্তি থাকবেনা কারণ পরিবারের পছন্দে বিয়ে করতে হচ্ছে তাদের পছন্দের জন্য আমি সবকিছু বিসর্জন দিতে পারি।

৩দিনের ছুটি নিয়ে কাবিন নামায় স্বাক্ষর দিতে এসেছিলাম, শেষের দিন মাকে দেখতে গেলাম হসপিটালে। ক্যান্সারের থাবায় মায়ের শরীর বেডে লেপ্টে আছে কিন্তু মুখে চমৎকার হাসি- আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বললো ‘ঢাকায় গিয়ে যেন কাননের সাথে যোগাযোগ রাখি, তাতে মহব্বত নাকি বাড়বে আরো বললো কাননকে বিয়ে করাতে মা ভীষন খুশি’। সত্য কথা হলো, আমি কাননের ফেস খুব একটা মনে করতে পারছিনা লজ্জায় ওর দিকে একবার তাকিয়েছিলাম বটে চোখ দুটো ছাড়া তেমন খেয়াল নেই শুধু তার নাকটা বার বার আমার চোখে ভাসছে।

মা তো আর জানেনা যার দিকে তাকাতে পারলাম না, যাকে একটা কথাও বলতে পারলাম না; তার বা তার পরিবারের কারো কোন ফোন নম্বার আমার সংগ্রহে নেই।
যোগাযোগ তো মিশন ইম্পসিবল। শুধু হাঁ হু করে সত্যটা গোপন রেখে মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পাড়ি জমালাম ঢাকার পথে কর্মস্থলে……

ঢাকায় এসেছি ২ মাস ১৮ দিন,
আর ১মাস ১২ দিন পর কাননকে ঘরে তোলার কথা।
অথচ কানন বা কাননের পরিবার থেকে আমার খোঁজ খবর বা সৌজন্যমূলক কোন ফোন এলো না আমার ফোনে! এর মধ্যে বাবা আর আপু প্রতিদিন গড়ে ৫/৭ বার মায়ের শরীরের আপডেট জানিয়েছে যার ৯৫% হতাশা জনক আহাজারি। আকার ইঙ্গিতে আপুর কাছে কাননের কথা জানতে চেয়েছি হয় আপু আমার কথার অর্থ বুঝেনি নয়তো কৌশলে কানন প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছে, আব্বার কাছে কাননদের বাসার নাম্বার চাইতে গিয়েও লজ্জা ভয়ে আর চাওয়া হয়নি- শেষে কি জানি কে ভেবে বসে তাই প্লান বাতিল।

ভরসা ছিলো মা, মা তখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিস্থলে কথা বলার পজিশনে মা আর নেই। বাকী রইলো বড় ভাইয়ের বউ ভদ্র মহিলার সাথে ১ যুগের আড়ি দেবর ভাবীর সম্পর্ক নেউল সাপে পরিণত হয়েছে তাই কোন আলোর পথ পেলাম না- ধীরে ধীরে কাননের সাথে বিয়ের ঘটনা রহস্যময় হয়ে উঠতে লাগলো আমার কাছে।

কেউ কাননের সম্পর্কে কিছু বলতে চায় না কেন?
বন্ধুদের কাছে শেয়ার করা যায়না-
আমার দুর্বলতাকে অনেকে হাস্যরস চটি বানাতে পারে তাই নিজের কাছেই চেপে গেলাম। ধুর ছাই! ভাল্লাগে না!! কেন যে সেদিন মুখ ফুটে কাননের কাছে নাম্বার নিলাম না, সেদিন একটু সাহস করলে আজ এত এত চাপে ধরতো না নিশ্চিত।

ভালবাসার সংস্কার

রক্ত সমুদ্রের আচ্ছাদনে গঠিত মন
তোমার শীতল স্পর্শে
সেখানে জোয়ার আসে –
অস্হির হৃদতটে,
আদ্যোপান্ত ব্যাখা করা কঠিন-
নির্ভীক প্রেম জুগুপ্সা রেখেও
ধরা দেয় শশাঙ্ক মেঘপুঞ্জের লুকোচুরি খেলায়।

ঈশ্বর প্রদত্ত প্রেম বিশৃঙ্খল নর-নারীর
অশ্লীল স্পৃহায়-
বার বার পরাজিত ইচ্ছার স্হলনে!
সে প্রেম চাইনা যা বসন মিত্র,
কিংবা মধুকালের মধুপোকার গুঞ্জনে
আমন্ত্রিত প্রেম ছড়ায় মহিরুহ শাখায়;
মুষ্টিমেয় হোক,
হোক তা অতলস্পর্শী-
ছুৃঁয়ে দিবো প্রেম প্রিয়ংবদা রমনীর বাহুতে।

কল্যানকর যা কিছু অভিন্ন নীতি
এনে দিবে কঙ্কর পরানে,
প্রতারণার দুষ্কর্ম সংস্কার করে-
গঠিত করবো প্রসূন!
ভালবাসার ধ্বজা উড়িয়ে দিবো
তাজমহলের চুড়ায়;
জ্বাজ্জল্যমান বিশ্ববন্দিত
উপাখ্যান রচিত করে-
তবেই আমার মহাপ্রস্থান।
কি সাথে থাকবে তে?

অবহেলিত স্বপ্ন

আজকের আমি ম্লান মসলিন
তোমার বাহারি সাজ সজ্জায়-
চাপা পড়ে গেছি আড়ালে,
নিয়তির কষাঘাতে জরাজীর্ণ!
আনকোরা স্পর্শ খুঁজে পোড়ামন।

অাক্ষেপ বার বার মুছে দেয়
স্বপ্নের স্মারক স্মৃতি-
জীবনের রঙিন প্রচ্ছদে মোড়া
হরেক শব্দের কষ্টের উৎস,
যার প্রতিটি মুহূর্ত অনবরত-
পদদলিত করে জমানো সুখ।

তবুও হতাশ নয়নে অশ্রু চেপে
গেয়ে যাই পরিবর্তনের সুর-
পুঁজিবাদের নকল অাশ্বাসে,
অথবা নষ্টদের দানবমুঠোতে
বিলিয়ে দেই নিজের সর্বস্ব!
অস্তিত্ব লালনের তাগিদে-
রক্ত, বর্ণ বিক্রি করে কিনি
কাগজের নোট।

শুন্যতার রৌদ্দুর

মনের কোণায় কষ্ট এলো সঙ্গোপনে
চুপি চুপি প্রেমের মৃদু গুঞ্জনে,
নীরব চুম্বন এঁকেছ যেদিন সযত্নে বহুডোরে-
উচ্ছৃঙ্খল কামনার টানে।

থাকুক তোলা জ্যোৎস্নার স্পর্শ
অন্ধকার মেঘের বন্দী বাক্সে,
তন্ময় চোখে দেখিনা বাতায়ন-
রুপসী যেখানে বসে;
আর কত?
সূক্ষ্মদৃষ্টির পাপাচার কণ্ঠে মিথ্যা বাণী!
ভালবাসা সেতো নিস্ফল আবেদন-
আবেগ ছোড়াছুড়ি।

তোমার বিদীর্ণ হৃদয় ঘেঁটে অকস্মাৎ যন্ত্রনা নিতে চাইনা,
বরং শুন্যতার উষ্ণ আদর পেতে তোমাকে ভুলে যাই-
একাকিত্বের রৌদ্দুরে।

ফাল্গুনের আগমন

বসন্তের প্রথম দিন
নিষ্প্রাণ বৃক্ষে নতুন কুড়ি,
মর্মর পাতার বদলে এসেছে শাখায় গাঢ় সবুজের শ্যামলতা;
শোভিত বসুন্ধরা পলাশ-শিমুলের লোহিত বর্ণে,
পুষ্পে পুষ্পে চঞ্চল অলির গুণ গুণ-
শীত তাড়িয়ে তাপদাহ বার্তা নিয়ে এলো আজ পহেলা ফাল্গুন।

সমীরণে নতুন আমেজ আমের মুকুলের ঘ্রাণ
কুঞ্জ মাতাল কোকিলের কুহু সুরে,
মন নাচে ছন্দে-আনন্দে পেয়ে সুখের টান
সাজিয়েছে প্রভু ধারা অফুরান পুষ্পে প্রাণ ভরে আমাদের করেছে তা দান।

কোমরে পেঁচিয়ে বাসন্তী শাড়ি
হলুদ গাদার মালায় দেহ রাঙ্গিয়েছে নারী-
বসন্ত কাব্যে হলো কবি মহিয়ান,
দক্ষিনা পবনে মেলি স্নিগ্ধ আঁখি-
দেখি গগনে উড়িছে পাখি,
নাচিছে নদীর ঢেউ, পাহাড়-সমুদ্রে নতুন প্রাণ;
বাংলার ঘরে ঘরে বাজিছে সবার মুখে বসন্তের গান।।

চীনে করোনা ভাইরাস ও ইসলামের কিছু কথা

পৃথিবী জুড়ে চলছে অশান্তি হানাহানি-কাটাকাটি, ব্যাভিচার ও ক্ষমতা বিস্তারের প্রকট দুর্নীতি এবং সৃষ্টা ও সৃষ্টির প্রতি অবিশ্বাসের ঘোর অন্ধকার।
উন্নত প্রযুক্তি আর শিক্ষাহার যত বাড়ছে ততই বাড়ছে সৃষ্টা অবিশ্বাসীদের সংখ্যা,
বাড়ছে মুসলিম বিরোধীদের সংখ্যা।

ঠিক তেমনি সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিয়ে মাথা উচু করে দাড়ানো মুসলিম বিরোধী একটি রাস্ট্র চীন,
অর্থ সম্পদ আর প্রযুক্তির দাপটে পুরো চীন জুড়ে সীমিত কিছু উইঘুর মুসলিমদের উপর চালাচ্ছে স্টীম রোলার চীনা কতৃপক্ষ!

প্রকাশ্যে মোনাজাত, ইসলাম শিক্ষা ও রোযা পালনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন দেশটির প্রসাশন তাছাড়াও চীনের যেকোন প্রদেশে আরবীতে কোন প্রচার এবং প্রকাশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

শিনিজিয়াং প্রদেশের কাশগড় ও উরুমকি শহরের মসজিদ গুলো যখন চীনা প্রসাশনের নির্মম অত্যাচারের আতংকে জনশূন্য,
সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমরা চীনা প্রসাশনের কাছে নিরুপায় ঠিক সেই চলতি সময়ে;
টেকনোলজীর দাপটে চষে বেড়ানো বর্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে গোটা চীনে ছড়িয়ে পড়েছে আত্মঘাতী “করোনা ভাইরাস”
এটি এমন একটি নতুন ভাইরাস যার কোন প্রতিশোধক এখনও আবিষ্কৃত হয়নি!

প্রযুক্তির ধবজাধারী গণপ্রজাতন্ত্রী চীন অদৃশ্য করোনা ভাইরাসের কাছে আত্মসর্মপন করে বসেছেন,
এর পুর্বে ২০০২ সালে-
‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম’ নামের একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মারা গিয়েছিলেন ৭৭৪ জন।

আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতা ও সাধারণ নীরহ প্রজাদের উপর অত্যাচারী শাসকদের জুলুম যখন সর্বোচ্চ আকার ধারন করেন আল্লাহ তখনি পৃথিবীর সেই সমস্ত জুলুমবাজ শাসক ও তার অনুসারীদের উপর বার বার গজব নাযিল করেন;
যেমন গজব নাযিল করেছিলেন ফেরাউন সম্প্রদায়ের উপর-
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন,

“হে মুসা!
তুমি ফেরাউনের কাছে যাও সে অত্যন্ত উদ্ধত হয়ে গেছে।”
[সুরা ত্বাহা : আয়াত ২৪]

যখন বিশ্বাসীরা অত্যাচারী শাসকদের দ্বারা নির্যাতিত হতে থাকবে দেশের অরাজকতা, ব্যাভিচার কালচারে পরিণত হবে এবং সৃষ্টার অস্তিত্বকে ব্যঙ্গরসে রুপান্তরিত করে চলবে কাঁদা ছোড়াছুড়ি যুক্তি তর্ক মারামারি;
স্বল্প সংখ্যক মুসলিমদের মধ্যে অত্যাচারের প্রতিবাদ করার মত কেউ থাকবে না, আল্লাহ
অত্যাচারীদের মাঝে এমন এক রোগ ছড়িয়ে দিবেন যা পুর্বে কখনোই তাদের ছিলো না।

রাসুল (সাঃ) বলেছেন,
“যখন কোনো জাতি বা সম্প্রদায় অশ্লীল ও ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হয় তখন তাদের মধ্যে এমন এক ভয়ঙ্কর মহামারী দেখা দেয়, যা তারা অতীতে কখনো দেখেনি।”
[ইবনে মাজা]

আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে শোধারনোর সুযোগ দেন,
মহামারী করোনা ভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, ছড়িয়েছে ২০টির বেশী দেশে।
যা বনী ইসরাইলদের থেকে কয়েক হাজার গুন সহনীয় মাত্রায়।
আল্লাহর আদেশ অমান্য করায় প্লেগ মহামারীতে মাত্র ১ ঘন্টায় অহংকারী বনী ইসরাইল জাতির ৭০ হাজার মানুষ নির্মম মৃত্যু মুখে পতিত হন।

“অতপর জালেমরা কথা পাল্টে দিয়েছে, যা কিছু তাদেরকে বলে দেয়া হয়েছিল তা থেকে।
তারপর আমি আসমান থেকে যালেমদের উপর আজাব অবর্তীন করেছি,
আমার নির্দেশ লংঘন করার কারনে।
[সুরা বাক্বারা : আয়াত ৫৯]

প্রভু তার সৃষ্টিকে দুর্বল করে বানিয়েছেন,
দুর্বল ও পচনশীল শরীর নিয়ে পার্থিব ক্ষমতার জোরে দর্প করা ভাল নয়-
চীন এশিয়া মহাদেশের মধ্যে শক্তিধর উন্নত রাস্ট্র সন্দেহ নেই,
সৃষ্টির সাথে চীন প্রসাশন সাময়িক জোর খাটাতে পারলেও আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলাম ও রাসুল (সাঃ) এর অনুসারীদের উপর জোর খাটানোর কারনে তাদের কমিউনিটি ও অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছে।
চীনা প্রসাশনের হিংস্র অত্যাচারে মুসল্লি শুন্য মসজিদ আর নিপীড়িত সংখ্যালঘু উইঘুরের গৃহবন্দী মুসলিমদের কান্না প্রভু শুনেছেন;
ফলে চীনের জনসংখ্যার ধর্মীয় ভিত্তিতে গুটি কয়েক মুসলিমকে গৃহবন্দী করার কারনে পুরো চীন আজ গৃহবন্দী ব্যস্ত চীনের রাস্তাঘাট এখন সুনসান ভুতুরে আতংক।
প্রভু সকলকে যাবতীয় বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করুন ও সবাইকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন।

অঘটঘটন-পটিয়সী

অনেক গুলো বছর নিষুপ্তি আঁখি ক্রান্দনে পাথর,
পাহাড়ি ঝর্না নেমে এসেছে যেন গাল বেয়ে;
কার শোকে ঝরে অবিরাম?
শোকাবহ অশ্রু গড়িয়ে পড়ে প্রিয়তমার ফুলশয্যার বালিশে!
আমার বক্ষের কাছে কষ্টের সূচনা
প্রাণজুড়ে অভিমান,
অলংকারে সজ্জিত দেহ তোমার-
লুটিছে আজ কোন জন?
তিমির কালো নয়নে এঁকেছ মেঘপুঞ্জ কাজল!
আমি ভাঁসি দুঃখে স্বরিৎ জলে ধরিতে তোমার আঁচল।

সুখ-দুঃখ , আনন্দ বেদনার অতীত কিছু স্মৃতি-
প্রতিবাক্য ছুড়িছে কেবল স্বৈরাচারী নীতি;
আমরা এখন আমাদের মত নিত্যশত্রুর ন্যায়-
আকাঙ্ক্ষা মোদের অন্যান্য সংকেতে খাঁদে পড়ার ভয়।

মৌলিক বিষাদের ফলাফল

আমি অনাচার আক্রান্ত ভূ-খন্ডের পাপী বলে-
লয়হীন যন্ত্রনা বয়ে বয়ে উর্বব মস্তিস্ক পুড়ে গেছে
কষ্টের মার্তণ্ড তাপে-
কখনো দেখেছ কি?
আমার অশ্রুর অকুল পাথার,
অথবা নিশাপতির হলুদ আলোর পোড়া দাগ?
যা তুমি দিয়েছ-
গগনচূম্বী অভিশাপের মাথা কেটে আমার বুকে!

ইন্দ্রালয় থেকে বিতাড়িত শয়তান কু-মন্ত্রনা দেয়-
আমাকে প্রতিনিয়ত,
দেখে বুঝে ভুলে যাই প্রয়ান স্মরণ-
একাত্মতা তৈরী হয়েছে আমাদের বন্ধুর মত;
যেমনটা তুমি ছিলে হারানোর আগে যাবার বেলায়-
নিছক হুর-পরী জান্নাতের মোহে বিভোর পাপীর কন্ঠের শান্তির শ্লোগান।

নভোমণ্ডল জুড়ে ঘৃনার বায়ু
তোমার প্রতিবাক্য ফিরিয়ে দেয় চরম উৎকন্ঠায়-
কে যেন ওপাশ থেকে ক্ষীণগলায় কেঁদে বলে?
তুই মিথ্যুক, তুই মিথ্যুক!
গোপন অভিপ্রায় থেকে মুছে যায়-
পাওয়া না পাওয়ার জটিল যোগ-বিয়োগ;
তাই তো
আমার সংগ্রহে জমে থাকে শুন্য।

অপ্রীতিকর অনুভূতি

আমি এক দেহত্যাগী
ছুটে চলা উল্কা,
কিছুটা স্রোতের মতই বিভ্রান্ত;
শান্ত বুকের ভেতর অস্থির এক যন্ত্রনা পুষে রাখি-
যে অনবরত গায় বিচ্ছেদের গীত!

অবচেতন মনে ভালবাসার অকারণ পিছুটান নেই-
তাই বিন্দু বিন্দু জমাট ঘামের মত,
রুমালে মুছে দেই জমায়িত ভালবাসা;
আমার আকাশ ভাঙ্গা বৃষ্টির প্রেমে পড়ে-
ভিজতে এসে,
তুমি যে অভিপ্রায়
করেছ সঞ্চয় গোপনে;
তার ভাল-মন্দের পার্থক্য বুঝা খুব জরুরী।

কারন,
আমার কানে বিকট শোনায় প্রেমের শব্দ আহ্লাদের চুম্বনে-
ছোট ছোট সুখগুলো কবেই তো পুড়ে গেছে বজ্রপাতে জীবনের পথে,
ডুবে গেছে ভালবাসার গঙ্গা জলে শুদ্ধ হতে যেয়ে;
যদি আবার ভুল করে ফেলি-
মাথা গুঁজে দেই এফিটাফে!
ধ্বংসাবশেষটা পড়ে থাকবে,
আবেগহীন অভিব্যক্তির পাতায়-
পৃথিবী জুড়ে,
নিখোঁজ সংবাদের তালিকায়।