জাকির হোসাইন বিপ্লব এর সকল পোস্ট

জাকির হোসাইন বিপ্লব সম্পর্কে

অামি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থী।

মুজিব

মুজিব

ক্লান্ত দুপুর মেঘে ডাকা বিদীর্ণ অাকাশের নিচে
পৃথিবীর সন্ধানে ছুটেছে পূর্ব বাংলা এদিকে-ওদিকে।
মর্মস্পর্শী কড়া রৌদ্রের প্রখরতাকে পুঁজি করে
কালবৈশাখীর ধ্বংসলীলার ন্যায় থেকেছে অাতংকে।
শত বৎসরের মর্মপীড়া,
অদূরের গগণ-বিদারী অপার বঙ্গোপসাগর ভেদ করে
ধ্বংসের বিভৎসতার ক্রন্দন ভেসে যায় সীমাহীন পাড়ে।
পশ্চিমাকাশে উড়ে অাসা ধ্বংসাত্মক জন্তুদের হস্তে
বিভীষিকাময় অন্ধকার নেমে অাসে সোনালির প্রান্তরে।
দেখেছি সেদিন!
শীতলক্ষ্যার তীরে দাঁড়ানো তোমার রক্তাক্ত অগ্নি ঝরা মার্চে
থরথর করে কেঁপে উঠেছে পূর্ব বাংলা ক্ষণে ক্ষণে ।
সেখানে শুনেছিলে তুমি পোয়াতি নারীর করুণ অার্তনাদ
যেখানে পড়েছিল হাজার বছরের বিদ্ধ বিদ্ধ লাশ।
মৃত্যুর হাতছানি জনমনে নাড়া দেয় ক্ষণে ক্ষণে
জলন্ত নিকোটিনের মতো সেখানে পুড়ছে মানুষ ধুঁকে ধুঁকে।
মরছে মানুষ বিপ্লবের মন্ত্রে হাহাকারের সুরে সুরে মানুষ পোড়ার গন্ধে ভেসে যায় পূর্ব বাংলার অাকাশে- বাতাসে।
হঠাৎ প্রলয়ঙ্কারী,
অন্ধকার নিশীথে এসেছিল বুড়িগঙ্গার প্রেসিডেন্ট হাউজে
সেখানে ছিলে তুমি নিষ্পলক অাবেগে অকুন্ঠ চিত্তে।
যেখানে ছিলে তুমি সাড়ে সাত কোটি জনতার মুক্তির দূত
সেখানে চেয়েছিল তারা হুশিয়ারি জনতার করুণার সুর।
পিঁপড়ার ঝাঁকের মতো কুড়ে কুড়ে নিয়েছে সব লুটে
হতাশা অার নিরন্ন মানবের সমস্ত গৃহে গৃহে থেকে।
সেখানে দেখেছি তোমায় সীমাহীন অাকাশের নিচে মিছিলে মিছিলে
ব্যাঘ্রতার হুঙ্কারে করেছ বেপরোয়া স্লোগানে স্লোগানে।
দেখেছি সেদিন তোমায়,
বসন্তের রঙ্গিন রৌদ্রতায় করেছে জেল বন্দি
থামেনি জনতা রুখেছে ওদের সব ফন্দি।
করেছ জনতা মুজিব মুজিব মেঘের গর্জে গর্জে
রুখেছে পাকাও হঠেছে ওদের মুক্তির মন্ত্রে মন্ত্রে।
করেছে উদ্ধার বরেছে তোমায় দুঃশাসনের বাংলায়
করেছে জনতা সোনার বাংলা রক্তে রঞ্জিত সবুজ পতাকায়।

স্মৃতিতে বীথি

অাচ্ছা বীথি, কখনো কি তুমি বিশ্বাস করবে? রাতের ঐ উজ্জ্বল অাকাশের নক্ষত্রের একটু অালোর ছোঁয়াতে তোমার স্পর্শ পাই। জানি বিশ্বাস করবে না, অাশ্চর্যও হচ্ছ তাই না? সত্যি কি জানো, গুমোট পৃথিবী যখন ঘুমিয়ে যায় জোনাকিরা যখন অন্ধকার ঝোপের মাঝে পুলকিত করতে থাকে সেখানেও অামি তোমার রুপের ঝলক দেখে বিমোহিত হয়ে অপলক নির্বাক মনে হারিয়ে যায়। অাসলে কখন যে তোমাকে ভালো লেগে গেছে এই অাবাল্য মনে তা অজানায় ছিল।

অারও কি জানো, কখনো কখনো তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যেতাম সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে সাথে অাবার কখনো হারিয়ে যেতাম বাতাসের নির্মল গন্ধের সাথে সাথে। কি অানন্দই না লাগতো অামার যতক্ষণ তোমার সাথে কটাতাম। অাবার যখন ফিরে অাসতাম এই জনমনে তখন পৃথিবীর সব কিছুকে শূন্যতা মনে হলেও পাগলের মতো হাসতাম নির্জনে তোমাকে কল্পনায় ভেবে ভেবে । মাঝে মাঝে লোকেরা বলত ছেলেটা পাগল হয়ে গেছে, সত্যি কি অামি পাগল হয়ে গেছি? কি তুমি কিছু বলছ না কেন?
চুপ!
ও তুমিও তো অামাকে লোকেদের মতো প্রলাপকারী ভেবে ভেবে অাকাশের পরীর মতো উড়ে চলে যাও?

অাচ্ছা, তোমার বিশাল পঙ্খিতে ভর করে নিয়ে ঐ নীল অাকাশের চাঁদের দেশে অামাকে নিয়ে হারিয়ে যেতে তোমার কি একটুও ইচ্ছে হয় না? যেখানে অামাদের ছোট্ট একটা নীড় থাকবে অার থাকবে এক গ্লাস চাঁদের অালো। চাঁদের অালোতে তোমাকে এত বেশি ভালো লাগে যে, যখন চাঁদ মামা ঘুমিয়ে যায় তখনও তোমার জন্যে এক গ্লাস অালো নিয়ে রাখার জন্য মাতাল হয়ে প্রলাপ করতে থাকতাম। কত পাগল অামি তাই না? অাসলে তোমাকে যেদিন কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় প্রকৃতির হাসির সাথে রঙ্গিন শাড়িতে দেখেছিলাম সেদিনই এ প্রাণে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মতো ধাক্কা লেগেছিল। জানো, এ সুন্দর ভুবনে কত বিচিত্র সৌন্দর্যের মাঝে তোমাকে এক পলক দেখতে না পারলে এ পৃথিবীর সব কিছুর প্রতি কেমন জানি একটা তিক্ততা চলে অাসে সেদিন থেকেই। তাই তো তোমাকে এক পলক দেখার জন্য খুঁজে বেড়ায় কখনো টেকনাফের উত্তাল চির যৌবনা মহা সৈকতে অার কখনো প্রকৃতির অপার সৃষ্টি হিমালয়ের দ্বারপ্রান্তে। সেখানে যখন খুঁজিয়া তোমাকে না পাইতাম মত্ত হইয়া সাত সমুদ্রের তেরো নদী পেরিয়ে যেতাম পাতালপুরীর পরীদের দেশে। বৃথায় বৃথায় সেখান থেকে চলে যেতাম সপ্তা আকাশের দারপ্রান্তেও। তবুও পাইনি সেথায়।

একদিন তোমাকে খুঁজিতে খুঁজিতে সত্যি চলে অাসব তোমার কাছে এ পৃথিবীর সমস্ত মায়া ত্যাগ করে। তখনও কি বীথি, অামাকে পাগল বলবে?

অামাদের খালেদ

অামাদের একটা খালেদ ছিল ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে
সেইখানে ছিল উত্তাল হাওয়া লাগত এসে গায়ে।
সবুজ শিশির বিন্দু জলে চলত খালেদ হেসে
নবীন সূর্যের নবীন অালোয় মিশ তো সবার সাথে।
ধানের শীষে ধূলোয় মাখা দেখত গাঁয়ে গাঁয়ে
রঙিন রৌদ্রের মিষ্টি হাসি দেখত ফিরে ফিরে।
নাচত খালেদ দেখত খালেদ যমুনার ই জল
তাহার কূলে পাইত খালেদ অানন্দেরই ঢল।

কাঁদত খালেদ বুঝত খালেদ গরীব-দুঃখির ব্যাথা
তাদের জন্য করত পণ অাছে যত সদা।
গাঁয়ের ছেলে ছিল খালেদ বক্ষে ছিল বল
তাহার পানে চলত ছুটে গরীবেরই দল।
অাসত বন্যা লাগত খরা যমুনারই পাড়ে
মন্দা অাসত শত শত দশানিরই কূলে।
অভাব ছিল নিত্য সঙ্গী ব্রহ্মপুত্রের ধারে
তাইতো খালেদ অাসত সেথাই খাদ্য হাতে নিয়ে।

শাসন করল শোষণ করল পাকিস্তানির দল
সেই শোষনে ধ্বংস হল বাংলাদেশের গণ।
কুলি মজুর মরল সবাই তাদেরই না হাতে
তাই না দেখে খালেদ কাঁদে ঘরের কোণে বসে।
সোনার দেশের সোনার ফসল নিয়ে গেল তারা
মানুষ মরে নিত্য নিত্য দেশের হলো সারা।
প্রতিবাদের নেশায় খালেদ খেপে উঠল ক্ষোভে
স্বাধীন করবে মুক্ত করবে বুড়িগঙ্গার ধারে।

হঠাৎ স্বাধীনতার ডাক অাসিল বেতার কেন্দ্র থেকে
তাই তো খালেদ ছুটল দমে বন্দুক কাঁধে নিয়ে।
মারল খালেদ ছুটল গুলি শত সেনার বুকে
স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনতো তাঁরই রঙিন চোখে।
মরছে মানুষ ধুকছে মানুষ তাঁরই অাশেপাশে
হাহাকারের সুর নিয়ে চলছে দিনে দিনে।
হঠাৎ একদিন পেল খালেদ সেক্টরেরই কাজ
দিনে দিনে বাড়ল তাহার মুক্তিযুদ্ধের চাপ।

সঙ্গী সাথী সবাই মরে খবর অাসে কানে
তবুও উদ্যম হয়ে ছুটছে খালেদ দেশ স্বাধীনের টানে।
কাঁধে কাঁধে কাধ মিলিয়ে স্বাধীন করল দেশ
স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ লাগল তাঁর বেশ।
দেশের হাসি বিজয় পতাকা উড়ে উর্ধ্বাকাশ
তাই না দেখে খালেদ হাসে ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস।
একদিন দু’দিন পরে শাসক গোষ্ঠী অাসে
তাই না দেখে ঘাতকেরদল ষড়যন্ত্র বুনে।

হঠাৎ একদিন শুনে খালেদ শাসক গোষ্ঠী শেষ
সেই বেদনায় চোখে-মুখে অশ্রু নিয়ে গদিতে বসে বেশ।
একদিন দু’দিন তিনদিন পর অামাদের বীর উত্তম নাই
অার্তনাদের অশ্রুর সাথে অাসে মুক্তিযুদ্ধের ছাই।
স্বাধীন স্বাধীন করছেন যিনি অামাদের জন্য ভাই
সেই খালেদের কথা অামাদের স্মরণে নাই।

[ বীর উত্তম খালেদ মোশাররফের স্মরণে ]

স্বপ্ন

সখি তোমার জন্যে অানছি কিনে
বেলীফুলের ফুলের মালা
তোমার চুলের খোঁপায় দেব
লাগবে অপরূপা।
বালা অানছি হাতের জন্যে
অানছি অারও শাঁখা
রঙে-ঢঙে সাজবে তুমি
লাগবে নতুন জায়া।
সিঁথির জন্যে অানছি সিঁদুর
অারও কানের দুল
সোনার নোলক অানছি কিনে
অারও নাকফুল।
চাঁদের মতো মুখটি তোমার
লাগবে ঝিলিমিল
মুচকি মুচকি হাসিতে
করবে ঝিকিমিক।
অানছি অারও রাঙা শাড়ি
রাঙা লিপস্টিক
বউ সাজায়ে নিয়ে যাব
গাঁয়ের ঐ না দিক।
দেখবে গাঁয়ের বুড়োরা সব
অারও ছোকরা তত
কিলকিলিয়ে হাসবে সবাই
তাকিয়ে অাছে যত।
রাঙা ঠোঁটের রাঙা লজ্জায়
ঘোমটা যাবে নেমে
হাসবে তুমি হাসব অামি
রুমাল মুখে চেপে।
চলছি অামরা যুগল হয়ে
পিছনে সারি সারি
ভাবীরা সব চিমটি কুটবে
বলবে তুমি অাঁড়ি।
দাদারা কই বুঝবে এইবার
অন্তঃপুরের ঠেলা
চলছি অামরা চলছি ভালোই
অন্তঃপুরই ভালা।
সুখে-দুঃখে চলছি অামরা
বছর গেল সারা
বছর শেষে অাসল এক
লাল টুকটুকে অাভা।
দিনে দিনে দিন ফুরিয়ে যায়
অাসে না অার জ্বালা
হঠাৎ একদিন কাঠ ফাটা রোঁদে
অাসল মহাজ্বালা।
সকাল সকাল গিয়েছিলাম
ঐ না হালের দেশে
ফিরে এসে দেখি লহ্মী বধূ অামার
ঐ না পরবাসে।
তাহারই পাশে পড়ে অাছে অাভা
হামাগুড়ি খেয়ে
চলে গেছে অামার কলিজার টুকরা
ঐ না মায়ের দেশে।
কি জানি কি ভর করছিলে
ঐ না মা’য়ে-ছেলে
তাইতো তারা ছেড়ে গেছে অামায়
খোদার বেহেশতের দেশে।
ভালোই ভালোই থাকুক তারা
এই কামনায় করি
তাদের জন্য লিখে যাব অামি
অমর স্মৃতির বাণী।
তারপরে ভাই মরলে অামায় কবর দিও
ঐ না তাদের পাশে
জ্ঞানী-গুণী অাছে যত
দেখবে লোকে সবে।

মনশ্চক্ষু

কখনো রঙ্গিন অাকাশের ধূসর সুরভিতে
তোমাকে দেখেছি সেখানে লাল টকটকে টিপে।
কখনো পূবালী বাতাসের নিকষিত অাবহে
তোমাকে দেখেছি সেখানে অপরূপ সাজে।
কখনো সোনালি চাঁদের সুভাসিত প্রদোষে
তোমাকে দেখেছি সেখানে নির্মূহ রুপে।
কখনো নিশীথ অাকাশের নক্ষত্রে নক্ষত্রে
তোমাকে দেখেছি সেখানে বিমল চিত্রে।
কখনো সূর্যাস্তের ঝলমলে ঢেউয়ে ঢেউয়ে
তোমাকে দেখেছি সেখানে জলপরীর অাঙ্গিকে।
কখনো নীল অাকাশের মেঘের ছায়ায় ছায়ায়
তোমাকে দেখেছি সেখানে অত্যুজ্জ্বল দীপ্তিতে।
কখনো শীতলপাটির নিরুদ্যম সঞ্চারে
তোমাকে দেখেছি সেখানে প্রেয়সীর সৌন্দর্যে।
কখনো বৈশাখের উষ্ণতার ফাঁকে ফাঁকে
তোমাকে দেখেছি সেখানে শৈত্য বন্ধনে।
এবং তোমাকে দেখেছি অামি বীরাঙ্গনার অাদলে।

নগর

অামি কবি, অামি বক্তা, অামি রাজনীতিবিদ
অামাকেই খুঁজিতে হইবে কোটি মানুষের সন্ধান,
করিতে হইবে তাদের অন্ন সংস্থান
যারা মরিছে শহরে, গঞ্জে, পথে, ঘাটে, সমুদ্রের পাড়ে।

অামি দেবতা,অামি ঈশ্বর, অামি ভগবান সেবেছি নিত্য
তাহাকেই খুঁজিয়াছি অামি অরণ্যে, মহাসমুদ্রে, মহাপৃথ্বীতে,
তাঁহাকে খুঁজিয়াছি অামি অলিতে, পীঠস্থানে ও চার্চে নৈরাশ্য
অার ক্রুঁদিতের বার্তা নিয়ে ফিরেছি অবিরত।

অামি দার্শনিক, অামি গবেষক, অামি সুশীল, অামি বেদী
অামাকেই করিতে হইবে তাদের নিমিত্তে উদ্গমের মন্ত্র,
যাহারা সমাজের অট্টালিকার পাদদেশে
ধুঁকে ধুঁকে অন্নাভারে মরিছে নিয়মিত।

অামি যুবক, অামি বৃদ্ধ, অামি বিবেকী
অামাকেই করিতে হইবে ওদের দংশন,
যারা শুষে শুষে হয়েছে পরজীবী
করেছে তলানিদের অন্তিম সর্বস্বান্ত।

অামি তপ্ত, অামি উন্মাদ, অামি বাউণ্ডুল
তবুও অামাকেই করিতে হইবে নিলয়ের সন্ধান,
শস্যহীন, ফসলহীন মাঠে যাদের বিরতিহীন বিচরণ
নিদ্রামগ্ন হয়ে অাছে তারা পথিপ্বার্শে ও নদীর কিনারায়।

জীবন

শতাব্দীর পর শতাব্দী চেয়ে থাকতে চায়
দিনের অালোয় যেখানে অালোহীন।
শতসহস্র অন্ধকার
অথচ জীবন-মৃত্যুর বিস্বাদ নিয়ে অারও
এগিয়ে যেতে হবে দূর হতে দূরান্তরে।

যেখানে জীবনের সব অায়োজন থমকে দাড়িয়ে
দিনের পর দিন অন্ধকার নিয়ে প্রতীক্ষা করছে।
তবুও শতাব্দীর পর শতাব্দী চেয়ে থাকতে চাই
তরুণ প্রাণের ক্ষত-বিক্ষত হাহাকার অার
অার্তনাদের কহন নিয়ে।

এইতো জীবন কত সুন্দর, কত সুন্দর
স্টীম রোলারের চাকার মতো
নিজেকে পিষে পিষে
অস্তিত্বের নিমিত্তে, তোমাকে এগিয়ে যেতে হবে
অালোহীন থেকে অালোর পথে।

সেখানেই,
প্রতীক্ষার বাণী নিয়ে বসে জগতের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
যেখানে রয়েছে সুকান্তের বিদ্রোহীতা অারও
রয়েছে ডিরোজিওর মাহাত্ম্য।

অপেক্ষক

এক গুচ্ছ অন্ধকার নিয়ে বসে অাছি
হাওয়ায় হাওয়ায় তুমি অাসবে বলে।
খরতার রঙ্গিন মাখা গ্রীষ্মের উত্তাপে
বসে অাছি অসার উত্তপ্ত ভুবনে।

এক গুচ্ছ অন্ধকার নিয়ে বসে অাছি
ছায়ায় ছায়ায় তোমার ছবি অাসবে বলে।
বর্ষার ছলাৎছলাৎ নির্যাস প্রকৃতির মতো
শীতার্ত রোদ ভেদ করে উদগ্র মর্মদেশে।

এক গুচ্ছ অন্ধকার নিয়ে বসে অাছি
অালোয় অালোয় তোমার উচ্ছলতা অাসবে বলে।
মুহূর্তে ডেকে যাওয়া ডাহুক পাখির কুহু কুহুতে
তেজোদ্দীপ্ত ব্যাঘ্রতা হয়ে উঠে পুড়া তারুণ্যে।

এক গুছ অন্ধকার নিয়ে বসে অাছি
মেঘে মেঘে তোমার বাণী অাসবে বলে।
শূন্যতাক্লিষ্ট বেদনার্ত রক্তাক্ত হৃদয়ে
জাগ্রতবাণীর পূর্ণব্যাদিত অসীমতা নিয়ে।
এক গুচ্ছ অন্ধকার নিয়ে বসে অাছি
চিত্তে চিত্তে তোমার অাভা লাগবে বলে,
হে প্রিয়তমা।।।