বিভাগের আর্কাইভঃ ভ্রমণ

7 - Sonakand Durgo (66) - Copy

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ – সোনাকান্দা দূর্গ

গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানই পরিবহনের বাসে ১ ঘণ্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।

প্রথম লক্ষ্য ছিল “বন্দর মসজিদ” (মিলের মসজিদ) বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মসজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা “১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে”। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত “T Hossain House” দেখতে। শত বছররে পুরনো কিন্তু এখনো ঝকঝকে চমৎকার বাড়িটি দেখে আমরা চলে আসি “কদম রসুল দরগা” তে। দরগার সুউচ্চ তোরণ এবং আশপাশটা দেখে আমরা চলে যাই “বন্দর শাহী মসজিদ” দেখতে। প্রাচীন এক গম্বুজ মসজিদ দেখা আমরা যাই “নির্মাণাধীন মাজার” দেখতে। নির্মাণাধীন মাজার” দেখে চলে “সিরাজ শাহির আস্তানা” তে। “সিরাজ শাহির আস্তানা” দেখা শেষে আমাদের এবারের গন্তব্য “সোনাকান্দা দূর্গ”

“সোনাকান্দা দূর্গ” মোঘল আমলে তৈরি করা একটি জলদূর্গ। তৎকালীন সমৃদ্ধ শহর ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকাকে নদী পথে মগ ও পর্তুগিজদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ও জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষ্যা করার জন্য ১৬৫০ সালের দিকে তৎকালীন বাংলার সুবাদার মীর জুমলা এ সোনাকান্দা দূর্গ নির্মাণ করেন। ঐ একই সময়ের কাছাকাছি সময়ে এমন তিনটি জলদূর্গ নির্মাণ করা হয়। যার দুটি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে। একটি শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ে “হাজীগঞ্জ দূর্গ” । অন্যটি শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে এই “সোনাকান্দা দূর্গ” । তৃতীয়টি মুন্সিগঞ্জের “ইদ্রাকপুর দূর্গ”

চতুর্ভুজাকৃতির সোনাকান্দা দূর্গটি চারপাশে মজবুত উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। দূর্গের ভিতরে নিরাপদে থেকে দেয়ালের মধ্য দিয়ে গোলা নিক্ষেপের জন্য বহুসংখ্যক প্রশস্ত-অপ্রশস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে। সেগুলি দিয়ে বন্দুক এবং হালকা কামান ব্যবহার কর যেতো। দূর্গের চার কোনায় অষ্টভুজা-কৃতির চারটি বুরুজ রয়েছে।

দূর্গের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হচ্ছে এর পশ্চিম অংশে উঁচু বিশাল গোলাকার কামান প্ল্যাটফর্ম। অনেকগুলি বড়বড় সিঁড়ি টপকে উঠতে হয় প্ল্যাটফর্মে। দূর্গের পশ্চিম দিক দিয়েই বয়ে যেতো শীতলক্ষ্যা নদী। তাই এই পশ্চিমমুখী কামান প্ল্যাটফর্মের উঁচু মঞ্চে শক্তিশালী কামান স্থাপন করা ছিল নদীপথে আগত জলদস্যুদের ঠেকাতে।

দূর্গের উত্তর পাশের প্রাচীরে উত্তরমুখী একটি মজবুত প্রবেশ তোরণ রয়েছে। এটিই দূর্গের একমাত্র প্রবেশ তোরণ। প্রবেশদ্বারটি একটি আয়তাকার তোরণ কাঠামোর মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে।

এই দুর্গ নির্মাণের তারিখ সম্বলিত কোন শিলালিপি পাওয়া যায় নি তবে ঐতিহাসিকদের মতে এটি ১৬৬০ থেকে ১৬৬৩ খৃষ্টাব্দের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল।

জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°36’25.0″N 90°30’43.5″E

পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে নবীগঞ্জ হয়ে সোনাকান্দা দূর্গ।

তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে রিকসা নিয়ে চলে আসা যায় সোনাকান্দা দূর্গ।

তথ্য সূত্র : উইকি

6 - Siraj Shah'r Astana (11)

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ – সিরাজ শাহির আস্তানা

গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানই পরিবহনের বাসে ১ ঘণ্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।

প্রথম লক্ষ্য ছিল “বন্দর মসজিদ” (মিলের মসজিদ) বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মসজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা “১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে”। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত “T Hossain House” দেখতে। শত বছররে পুরনো কিন্তু এখনো ঝকঝকে চমৎকার বাড়িটি দেখে আমরা চলে আসি “কদম রসুল দরগা”তে। দরগার সুউচ্চ তোরণ এবং আশপাশটা দেখে আমরা চলে যাই “বন্দর শাহী মসজিদ” দেখতে। প্রাচীন এক গম্বুজ মসজিদ দেখা শেষে আমরা বন্দর সমরক্ষেত্রের পাশে “নির্মাণাধীন মাজার” দেখতে। সেখান থেকে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল “সিরাজ শাহির আস্তানা”

সিরাজ শাহির আস্তানা

এটিও একটি মাজার। তবে এটি বিখ্যাত বাউল সাধক সিরাজ সাঁই এর আস্তানা কিন্তু নয়। এটি চিশতিয়া তরিকার একজন পীরের মাজার। বেশ বড় একটা এলাকা নিয়ে সুন্দর সাজানো গোছানো একটি যায়গা। মাজারের স্থাপত্য খুবই আকর্ষণীয়। অর্থাৎ সিরাজ শাহির কবরের উপরে যে ইমারতটি তৈরি করা হয়েছে আমি সেটির কথা বলছি। খুবই সুন্দর সেটি। উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম যেদিক থেকেই আপনি দেখেন না কেন আপনার কাছে সব পাশ থেকে একই মনে হবে। অর্থাৎ ইমারতটি চারপাশ থেকে দেখতে একই রকম। উঁচু এক প্লাটফর্মের উপরে এর অবস্থান। বেশ কিছু সিঁড়ি টপকে উঠতে হয় উপরে।


চারপাশ থেকে দেখতে একই রকম হলেও এর প্রধান ফটক দক্ষিণ মুখী। এইখানে সিঁড়িটা শুধু দুই ভাগে বিভক্ত এবং উপরে একটি কাঠগোলাপের গাছ রয়েছে। আমি আরো বেশ কিছু মাজারেই কাঠগোলাপের গাছ দেখেছি। এর বিশেষ কোন মাহাত্ব আছে নিশ্চয়। এখানে আরো দেখেছি কয়েকটি খাওয়ারা অযোগ্য বোম্বাই বেল বা তানপুরা ফলের গাছ। পাশেই পীর পরিবারের বাসস্থান অংশের গেটে ছিল লতা পারুল, ভিতরে একটি চমৎকার হাসনোহেনার ঝোপ। পুকুর পারে বিশাল এক আমলকী গাছে দেখেছি প্রচুর আমলকী ধরে আছে। তাছাড়া সামনের বাগান অংশে নানান ধরনের মৌসুমি ফুল করা হয়। দেখেছি পঞ্চমুখী জবাও।

জানা যায় কিছু দিন পরে ফেব্রুয়ারির ৪ ও ৫ তারিখে উরস হবে, তাই কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ চলছে। প্রচুর লোক নাকি হয় উরসের সময়। আমাকে দাওয়াত দিয়ে দিলের ওখানকার এক খাদেম প্রচারপত্র সহ।

যাইহোক, আস্তানায় বেশ কিছুটা সময় কাটাই, এর ফাঁকে ছোট মেয়ের খাবারও খাওয়ানো হয়। এবার আমাদের ফিরতি পথে চলতে হবে। এবার যাব ঐতিহাসিক সোনাকান্দা দূর্গ দেখতে। সেখানেই দেখা হবে ঝটিকা সফরের আগামী পর্বে।


জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°37’18.5″N 90°32’01.8″E
পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে সিরাজ শাহির আস্তানা।
তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে ইজি বাইক নিয়ে সিরাজ শাহির আস্তানা।

বি.দ্র. : বেড়াবার সময় চুইংগাম মুখে রাখা অনেকের অভ্যাস। চুইংগাম আনন্দে বিশাল বাঁধা হতে পারে আপনি যেখানে সেখানে তা ফেললে। কোন কাজগে মুড়ে ডাস্টবিনে ফেলাটাই উত্তম।

7 - Sonakand Durgo (66) - Copy

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ – নির্মাণাধীন মাজার

গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানই পরিবহনের বাসে ১ ঘণ্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।

প্রথম লক্ষ্য ছিল “বন্দর মসজিদ” (মিলের মসজিদ) বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মসজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা “১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে”। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত “T Hossain House” দেখতে। শত বছররে পুরনো কিন্তু এখনো ঝকঝকে চমৎকার বাড়িটি দেখে আমরা চলে আসি “কদম রসুল দরগা” তে। দরগার সুউচ্চ তোরণ এবং আশপাশটা দেখে আমরা চলে যাই “বন্দর শাহী মসজিদ” দেখতে। প্রাচীন এক গম্বুজ মসজিদ দেখা আমরা এগিয়ে চলি আমাদের পরবর্তী গন্তব্য “নির্মাণাধীন মাজার” দেখতে।

মাজারটির অবস্থান নারায়ণগঞ্জের বন্দর সমর ক্ষেত্রের উত্তর পাশে। মাজারটির নাম সম্ভবত “কুতুববাগ মোজাদ্দেদীয়া মাজার”

মাজার বলতে সুউচ্চ একটি প্লাটফর্মের উপরে রয়েছে একটি কবর। এটা নিশ্চই কোন পীরের কবর। অনেকগুলি সিঁড়ি টপকে উঠতে হয়। কবরের উপরে তৈরি হচ্ছে একটি ইমারত, যার কেন্দ্রে রয়েছে একটি বড় গম্বুজ। দুই ধারে দুটি সুউচ্চ মিনার, যা অনেক দূর থেকেও নজরে আসে। আশা করা যায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে একটির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে একটি দৃষ্টিনন্দন মাজারে পরিণত হবে।

জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°37’14.4″N 90°31’18.2″E
পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে বন্দর সমর ক্ষেত্রের সামনের মাজারে।

তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে রিকসা নিয়ে চলে আসা যায় বন্দর সমর ক্ষেত্রের সামনের মাজারে।

বি.দ্র. : বেড়াতে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলি। চিপস, চকলেট, বিস্কিটের খালি প্যাকেট রাস্তায় ছুড়ে ফেলা থেকে বিরতো থাকি।

4 - Bondor Shahi Mosjid (31)

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ – বন্দর শাহী মসজিদ


গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানী পরিবহনের বাসে ১ ঘণ্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।

প্রথম লক্ষ্য ছিল “বন্দর মসজিদ” (মিলের মসজিদ) বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মসজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা “১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে”। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত “T Hossain House” দেখতে। শত বছররে পুরনো কিন্তু এখনো ঝকঝকে চমৎকার বাড়িটি দেখে আমরা চলে আসি “কদম রসুল দরগা” দেখতে। দরগার সুউচ্চ তোঢ়ণ এবং আশপাশটা দেখে আমরা এগিয়ে চলি আমাদের পরবর্তী গন্তব্য প্রাচীন “বন্দর শাহী মসজিদ” দেখতে।


পূর্ব পাশ থেকে বন্দর শাহী মসজিদ

বন্দর শাহী মসজিদ
মসজিদটি সম্পর্কে “বাংলাপিডিয়া” বলছে –

“বন্দর শাহী মসজিদ নারায়ণগঞ্জ জেলার কদম রসুল থেকে প্রায় এক মাইল দক্ষিণ-পূর্বে বন্দর পৌর এলাকায় অবস্থিত। সুলতান জালালুদ্দীন ফতেহ শাহের পদস্থ শাহী কর্মকর্তা মালিক আল-মুয়াজ্জম বাবা সালেহ কর্তৃক ১৪৮২ খ্রিস্টাব্দে (৮৮৬ হিজরি) মসজিদটি নির্মিত হয়।

বর্গাকার এ মসজিদের পরিমাপ অভ্যন্তরভাগে ৬.২০ মিটার এবং বহির্ভাগে ৯.৭০ মিটার। চার কোণে রয়েছে অষ্টভুজাকৃতি মিনার এবং দেয়ালে প্রোথিত কালো পাথরের দুটি স্তম্ভের উপর স্থাপিত গোলার্ধ আকৃতির বৃহৎ গম্বুজ। এ স্তম্ভ দুটির ভিত বর্গাকার, শীর্ষভাগ কারুকার্যখচিত ও মধ্যভাগ অষ্টভুজাকৃতির। স্তম্ভের শীর্ষভাগে বসানো স্কুইঞ্চের উপর গম্বুজটি স্থাপিত। গম্বুজের গোড়ার দিকে চারপাশ ঘিরে রয়েছে পদ্মফুল ও কলসের নকশা-বেষ্টনী। শীর্ষভাগ মারলান শোভিত ড্রামের উপর গম্বুজটির স্থাপনা মুগল আমলে মসজিদটির সংস্কারের একটি অংশ বলে মনে হয়। মসজিদের পূর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথের মধ্যবর্তীটি প্রশস্ততর এবং এটির উচ্চতা ২.২০ মিটার ও চওড়া ১.৩৭ মিটার। দক্ষিণ ও উত্তর দিকে অপর দুটি প্রবেশপথ ২ মিটার উঁচু ও ১ মিটার প্রশস্ত। পার্শ্বের প্রবেশপথগুলো সম্মুখের মধ্যবর্তী প্রবেশপথের সমান আকৃতির। মসজিদটিতে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব আছে। এদের মধ্যবর্তীটি সবচেয়ে বড়। উত্তর পাশের মিহরাব এখন আলমারি হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। মসজিদটি পুনর্নির্মিত হয়েছে এবং পূর্ব, দক্ষিণ ও উত্তর দিকে বারান্দা সংযোজন করে এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটি এখন জামে মসজিদরূপে ব্যবহূত হচ্ছে।
[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]”

দেখতে পেলাম এই অতীপ্রাচীন মসজিদটির ধারনক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এর চারপাশে এমন ভাবে সম্প্রসারন করা হয়েছে যে প্রাচীন স্থাপত্যের প্রায় সবচাই ঢেকে গেছে। তবুও স্থাপনাটিকে যে ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে দালান করেনি সেইটাই সান্তনা। অনেক যায়গায় দেখেছি এমনটা হতে।


বন্দর শাহী মসজিদের গম্বুজ


বন্দর শাহী মসজিদের গম্বুজের চূড়া


দক্ষিণ দিক থেকে বন্দর শাহী মসজিদ


দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বন্দর শাহী মসজিদ


দক্ষিণ-পূর্ব দিকে থেকে বন্দর শাহী মসজিদ


দক্ষিণ-পূর্ব দিকে থেকে বন্দর শাহী মসজিদ


পশ্চিমের একটি বারান্দা থেকে বন্দর শাহী মসজিদের গম্বুজ


বন্দর শাহী মসজিদের একটি মিনার


বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে প্রবেশে পথ


বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে প্রবেশে পথের উপরে শিলালিপী


বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে তিনটি মেহরাব


বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে কেন্দ্রীয় মেহরাব


বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে কেন্দ্রীয় মেহরাবের কারুকাজ


গুগল ম্যাপ

জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°36’45.9″N 90°31’00.7″E

পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে নবীগঞ্জ। নবীগঞ্জ থেকে রিকসায় “বন্দর শাহী মসজিদ”।
তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে রিকসা নিয়ে চলে আসা যায় “বন্দর শাহী মসজিদ”।

বন্দর শাহী মসজিদ দেখে আমরা চলে যাই বন্দর সমর ক্ষেত্রের পাশে নির্মানাধীন একটি মাজার দেখতে। আগামী পর্বে তার কিছু ছবি থাকবে।

বি.দ্র. : আমি ওখানকার একজন খাদেমকে অনুরোধ করার সাথে সাথে তিনি তালা খুলে অব্যবহিত প্রাচীন মসজিদটির ভিতরে ঢুকে ছবি তুলতে দিয়েছেন। তবে লক্ষ করেছি পাশের এক চিলতে যায়গায় ছোট্ট বাগনটিতে নানা ধরনের ময়লা আর প্লাটিকের প্যাকেটের উচ্ছিষ্টে সায়লাব। আমরা যেন একটু সতর্ক থাকি, যাতে আমাদের চারপাশটা পরিষ্কার থাকে।

2 - T Hossain House (11)

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ – T Hossain House

গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানী পরিবহনের বাসে ১ ঘন্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সি.এন.জি অটোরিক্সা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।

প্রথম লক্ষ্য ছিল বন্দর মসজিদ বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত T Hossain House এর সামনে। বাড়িটি সম্পর্কে আমি তেমন কিছুই জানি না। Save the Heritages of Bangladesh এর এ্যাডমিন Sazzadur Rasheed স্যার প্রথম আমাকে এই বাড়িটির কথা জানিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। স্যার যতদূর জানিয়েছেন T Hossain সাহেব নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার কমিশনার ছিলেন।

এখানে তারই কিছু ছবি রইলো।


আমার বড় কন্যা সাইয়ারা সোহেন


বড় কন্যা সাইয়ারা সোহেন ও ছোট কন্যা নুয়াইরা সোহেন

জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°37’54.0″N 90°31’32.9″E

পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে নবীগঞ্জে অবস্থিত T Hossain House এর সামনে। তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে রিকসা নিয়ে চলে আসা যায় এখানে।

ঘোষণা : নারায়ণগঞ্জ ভ্রমণের এই সিরিজটি কয়েকটি পর্বে দেখানো হবে। প্রতিটি পর্বে এক একটি প্রাচীন স্থাপত্য বা দর্শনীয় স্থানের ছবি দেখাবো। সিরিজটি আরো বেশ কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করা হয়েছে বিদায় এখানে পুরনো পর্বগুলি (যা অন্য স্থানে প্রকাশিত হয়েছে পূর্বেই) থেকেই শুরু করা হয়েছে। অনেকেই হয়তো এই পর্বগুলি আগে দেখে থাকবেন। বিরক্তির কারণ হলে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

বি.দ্র. : এই লেখাটি ফেইসবুকে দেখে জনাব T Hossain এর নাতী আমার সাথে যোগাযোগ করেন এবং বেশ কিছু তথ্য দেন বাড়িটি সম্পর্কে।

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ – ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির

গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়ে ছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনিয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানী পরিবহনের বাসে ১ ঘন্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সি.এন.জি অটোরিক্সা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে। প্রথম লখ্য ছিল বন্দর মসজিদ বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে। মন্দিরটি সম্পর্কে কোন তথ্যই আমার জানা নেই। ঢাকেশ্বরী মিলের সাথে জড়িত লোকজন এটি স্থাপন করেছেন এইটুকুই শুধু জানি। এখানে তারই কিছু ছবি রইলো।


বাইরে থেকে ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির।


বাইরে থেকে ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির।


বাইরে থেকে ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির।


১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরের সামনে আমার দুই কন্যা।


সেলফি


আমার বড় কন্যা “সাইয়ারা সোহেন” ও ছোট কন্যা “নুয়াইরা সোহেন”।


ফলক


গুগল ম্যাপে

জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°39’39.1″N 90°31’40.5″E

পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর চৌরাস্তায়, মদনপুর চৌরাস্তা থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে ঢাকেশ্বরী মন্দির।

১নং ঢাকেশ্বরী মন্দির দেখে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল “T Hossain House” নামের একটি পুরনো কিন্তু ঝকঝকে বাড়ি। তাই ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ আগামী পর্বে দেখা হবে “T Hossain House”-এর সামনে।

বি.দ্র. : বেরাতে গেলে অনেকেই স্থাপনায় বা গাছের গায়ে নিজের নাম, তারিখ ইত্যাদি লিখে রাখেন। এটা কিন্তু খবই খারাপ একটা অভ্যাস। এই অভ্যাস থেকে আমরা দূরে থাকবো।

ঘোষণা : নারায়ণগঞ্জ ভ্রমণের এই সিরিজটি কয়েকটি পর্বে দেখানো হবে। প্রতিটি পর্বে এক একটি প্রাচীন স্থাপত্য বা দর্শনীয় স্থানের ছবি দেখাবো। সিরিজটি আরো বেশ কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করা হয়েছে বিদায় এখানে পুরনো পর্বগুলি (যা অন্য স্থানে প্রকাশিত হয়েছে পূর্বেই) থেকেই শুরু করা হয়েছে। অনেকেই হয়তো এই পর্বগুলি আগে দেখে থাকবেন। বিরক্তির কারণ হলে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

মোবাইল ফটোগ্রাফি

পথেঘাটে গুরেগুরে তুলেছি এই ফুল,
কেউ বলেছে পাগল কেউ বলেছে ছাগল,
তবুও আমি শুনিনি কারো কথা একচুল।

PicsArt_01-03-12.59.44
ফুলের নাম জানিনা।১

PicsArt_12-01-07.55.27

তাও জানিনা। ২

PicsArt_01-03-07.09.30
এটা কলমিলতার
ফুল,
হেতেরে চিনতে করিনি
ভুল।

PicsArt_12-01-08.07.11

অজানা।৪

PicsArt_12-01-08.04.10

অজানা ৫

PicsArt_12-01-08.05.10

অজানা ৬

PicsArt_12-01-08.06.24

অজানা ৭

PicsArt_12-01-07.56.43
এই ঝড়া পাতার মতো ঝড়ে
যাবো যেদিন,
বুঝবে তুমি বুঝবে
সেদিন।

PicsArt_12-01-07.58.17
লজ্জাবতী ফুল।৯

PicsArt_12-01-08.02.51

অজানা। ১০
PicsArt_12-01-07.47.57

অজানা। ১১

PicsArt_12-01-07.51.32

পেপের ফুল। ১২

PicsArt_12-01-07.52.43

অজানা।১৩

PicsArt_12-01-07.47.57
অজানা

অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা

ভারতের হিমাচল প্রদেশকে বলা হয় দেবভূমি। উত্তর প্রদেশ হিমাচলের রাজধানী- সিমলা। পশ্চিম হিমালয়ের পার্বত্য রাজ্য যার নাম হল হিমাচল প্রদেশ। হিমাচল প্রদেশে প্রচুর দেখবার মতো সুন্দর জায়গা আছে যেমন- সিমলা, রামপুর, শাংলা, কল্পা, সারহানা, মান্ডি, কুলু, মানালী, নাকো, টাবো, ডালহৌসি, রেকিং পিও, কাজা, রোটাং পাশ এবং মণিকরন। এপ্রিল থেকে জুন এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের সময়ে এখানকার আবহাওয়া বেশ ভালো থাকে। শীতকালে অনেকগুলি জায়গাতে তুষারপাত হয়।

সমভূমি থেকে ২১০০- ২৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলা। এখানে বৃটিশ যুগের নানা স্থাপত্যের নির্দশন দেখা যায়। এখানকার ম্যাল- পর্যটকদের কাছে একটি বিশেষ আকর্ষন। দেখবার মতো কয়েকটি জায়গা হলো– চাডউইক জলপ্রপাত, যা প্রায় ৭০ মিটার দীর্ঘ- দুরত্ব সিমলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার। সঙ্কট মোচন মন্দির (সিমলা থেকে ৭ কিলোমিটার), ইনস্টিটিউট অব এডভান্স স্টাডিজ (সিমলা থেকে ৪ কিলোমিটার), স্টেট মিউজিয়াম, গেইটি থিয়েটার (সিমলা থেকে ৩ কিলোমিটার), নলদেরা (সিমলা থেকে ২৩ কিলোমিটার), তত্তাপানি (সিমলা থেকে ৫৩ কিলোমিটার), সসস্ক্যান্ডাল পয়েন্ট (এখান থেকে ভাইসয়রের কন্যা অপহৃত হয়েছিলেন) ইত্যাদি। সিমলার উচ্চতম জাকু হিলস, জাকু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হনুমান মন্দির, চাডউইক ফলস, প্রসপেক্টস হিলস, কামনা দেবীর মন্দির, তারা দেবীর মন্দির ( সিমলা থেকে ১১ কিলোমিটার )।

সিমলা অর্থ পাহাড়। মূলতঃ সমুদ্রতল থেকে সাত হাজার ফিটেরও বেশী উচ্চতায় অবস্থিত জাকুহিল, প্রসপেক্টস হিল, অবজারভেটরি হিল, ইলিশিয়াম হিল আর সামার হিলের চূড়ায় গড়ে ওঠা জনপদ নিয়ে সিমলা।

জীবনের কতো চেনা ঘটনাই না আবার ফিরে আসে, হাল ফ্যাশনের চক্‌চকে মোড়কে। সত্য হলো ফ্যাশনের ধর্মই তাই। সাইক্লিক অর্ডার মেনে চলে। কক্ষপথ তার ৩৬০ ডিগ্রি। হাই হিল আর বেলবটমের মত। অমাবস্যা পূর্ণিমার মত। সময় নিলেও ঘটে প্রকৃতির নিয়মে। ব্যত্যয় নেই। জোয়ার ভাটা যেমন।

ভালই হলো। অমাবস্যা পূর্ণিমা প্রসংগ সহসা এসেই যখন গেল, সনাতন মহাভারতের কাহিনী থেকে পড়া একটা লেখার উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছিনা। বিষয়টা ইন্টারেস্টিং।

এখানকার হুসেন ভ্যালি থেকে সিমলার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী খুব একটা দূরে নয়। এরপরই “তারা মন্দির”। পাহাড়ের ওপর স্থাপিত ছোট ছিমছাম মন্দির। কথিত আছে যে, চন্দ্র রাজসুয় যজ্ঞ শেষে কামার্ত হয়ে পড়েন এবং দেবতা বৃহস্পতির স্ত্রী তারা দেবীকে হরণ করেন। এতে চন্দ্রের বিরূদ্ধে ক্ষুব্ধ বৃহস্পতি যুদ্ধের আয়োজন করতে থাকে। দেবতা ব্রহ্মা যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করে চন্দ্র ও তারা দেবীকে বৃহস্পতির কাছে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য করে। কিন্তু সন্তানসম্ভাবা থাকাতে বৃহস্পতি তাকে নিতে অস্বীকার করে। ব্রহ্মা তারার কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে, চন্দ্রই এ সন্তানের পিতা। তখন সিদ্ধান্ত দেয় যে, তারা সন্তান প্রসবান্তে বৃহস্পতির কাছে ফিরে যাবে। তারা সন্তান প্রসব করলে চন্দ্র তাকে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং বুধ নাম দিয়ে আকাশে নিজের বিপরীত দিকে স্থাপন করে। হ্মুব্ধ বৃহস্পতি তারাকে ফিরিয়ে নিলেও চন্দ্রকে অভিশাপ দেয়। ফলে চন্দ্র ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষয় হতে হতে বিলুপ্ত হয়ে যায়। চন্দ্র পরে অত্রি মুনির সহায়তায় ধীরে ধীরে নিজ গোলাকার দেহ পুনরায় প্রাপ্ত হয়। তবে বৃহস্পতির কোপ বর্তমান থাকাতে সে প্রতিমাসের অর্ধাংশ সময়ের মধ্যে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়। অপরদিকে অত্রি মুনির বরে মাসের বাকী অর্ধাংশে পুনরায় নিজ দেহ প্রাপ্ত হয়। হিন্দু ধর্ম মতে এর ফলেই অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা হয়ে থাকে।

জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার, রয়েছো দাঁড়ায়ে
গভীর কী আশায় নিবিড় পুলকে, তাহার পানে চাই দু বাহু বাড়ায়ে।
আজি এ কোন্‌ গান নিখিল প্লাবিয়া তোমার বীণা হতে আসিল নাবিয়া
ভুবন মিলে যায় সুরের রণনে, গানের বেদনায় যাই যে হারায়ে।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা

ভারতের হিমাচল প্রদেশকে বলা হয় দেবভূমি। উত্তর প্রদেশ হিমাচলের রাজধানী- সিমলা। পশ্চিম হিমালয়ের পার্বত্য রাজ্য যার নাম হল হিমাচল প্রদেশ। হিমাচল প্রদেশে প্রচুর দেখবার মতো সুন্দর জায়গা আছে যেমন- সিমলা, রামপুর, সাংলা, কল্পা, সারহানা, মান্ডি, কুলু, মানালী, নাকো, টাবো, ডালহৌসী, রেকিংপিও, কাজা, রোটাং পাশ এবং মণিকরন। এপ্রিল থেকে জুন এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের সময়ে এখানকার আবহাওয়া বেশ ভালো থাকে। শীতকালে অনেকগুলি জায়গাতে তূষারপাত হয়।

সমভূমি থেকে ২১০০- ২৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলা। এখানে বৃটিশ যুগের নানা স্হাপত্যের নির্দশন দেখা যায়। এখানকার ম্যাল- পর্যটকদের কাছে একটি বিশেষ আর্কষন। দেখবার মতো কয়েকটি জায়গা হলো– চাদউইক জলপ্রপাত, যা প্রায় ৭০ মিটার দীর্ঘ- দুরত্ব সিমলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার। সঙ্কটমোচন মন্দির (সিমলা থেকে ৭ কিলোমিটার), ইনস্টিটিউট অব এডভান্স স্টাডিজ (সিমলা থেকে ৪ কিলোমিটার), স্টেট মিউজিয়াম, গেইটি থিয়েটার (সিমলা থেকে ৩ কিলোমিটার), নলদেরা (সিমলা থেকে ২৩ কিলোমিটার), তত্তাপানি (সিমলা থেকে ৫৩ কিলোমিটার), সসস্ক্যান্ডাল পয়েন্ট (এখান থেকে ভাইসয়রের কন্যা অপহৃত হয়েছিলেন) ইত্যাদি। সিমলার উচ্চতম জাকু হিলস, জাকু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হনুমান মন্দির, চাদউইক ফলস, প্রসপেক্টস হিলস, কামনাদেবীর মন্দির, তারাদেবীর মন্দির ( সিমলা থেকে ১১ কিলোমিটার )।

সিমলা অর্থ পাহাড়। মূলতঃ সমুদ্রতল থেকে সাত হাজার ফিটেরও বেশী উচ্চতায় অবস্থিত জাকুহিল, প্রসপেক্টস হিল, অবজারভারভেটরী হিল, ইলিসিয়াম হিল আর সামার হিলের চূড়ায় গড়ে ওঠা জনপদ নিয়ে সিমলা।

জীবনের কতো চেনা ঘটনাই না আবার ফিরে আসে, হাল ফ্যাশনের চক্‌চকে মোড়কে। সত্য হলো ফ্যাশনের ধর্মই তাই। সাইক্লিক অর্ডার মেনে চলে। কক্ষপথ তার ৩৬০ ডিগ্রী। হাই হিল আর বেলবটমের মত। অমাবস্যা পূর্ণিমার মত। সময় নিলেও ঘটে প্রকৃতির নিয়মে। ব্যত্যয় নেই। জোয়ার ভাটা যেমন।

ভালই হলো। অমাবস্যা পূর্ণিমা প্রসংগ সহসা এসেই যখন গেল, সনাতন মহাভারতের কাহিনি থেকে পড়া একটা লেখার উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছিনা। বিষয়টা ইন্টারেস্টিং।

এখানকার হুসেন ভ্যালি থেকে সিমলার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী খুব একটা দূরে নয়। এরপরই “তারা মন্দির”। পাহাড়ের ওপর স্থাপিত ছোট ছিমছাম মন্দির। কথিত আছে যে, চন্দ্ররাজসুয় যজ্ঞ শেষে কামার্ত হয়ে পড়েন এবং দেবতা বৃহস্পতির স্ত্রী তারা দেবীকে হরণ করেন। এতে চন্দ্রের বিরূদ্ধে ক্ষুব্ধ বৃহস্পতি যুদ্ধের আয়োজন করতে থাকে। দেবতা ব্রহ্মা যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করে চন্দ্র ও তারা দেবীকে বৃহস্পতির কাছে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য করে। কিন্তু সন্তানসম্ভাবা থাকাতে বৃহস্পতি তাকে নিতে অস্বীকার করে। ব্রহ্মা তারার কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে, চন্দ্রই এ সন্তানের পিতা। তখন সিদ্ধান্ত দেয় যে, তারা সন্তান প্রসবান্তে বৃহস্পতির কাছে ফিরে যাবে। তারা সন্তান প্রসব করলে চন্দ্র তাকে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং বুধ নাম দিয়ে আকাশে নিজের বিপরীত দিকে স্থাপন করে। হ্মুব্ধ বৃহস্পতি তারাকে ফিরিয়ে নিলেও চন্দ্রকে অভিশাপ দেয়। ফলে চন্দ্র ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষয় হতে হতে বিলুপ্ত হয়ে যায়। চন্দ্র পরে অত্রি মুনির সহায়তায় ধীরে ধীরে নিজ গোলাকার দেহ পুনরায় প্রাপ্ত হয়। তবে বৃহস্পতির কোপ বর্তমান থাকাতে সে প্রতিমাসের অর্ধাংশ সময়ের মধ্যে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়। অপরদিকে অত্রি মুনির বরে মাসের বাকী অর্ধাংশে পুনরায় নিজ দেহ প্রাপ্ত হয়। হিন্দু ধর্ম মতে এর ফলেই অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা হয়ে থাকে।