ট্যাগ আর্কাইভঃ চারু মান্নানের কবিতা

অনুভূতির প্রত্যাশা

অনুভূতির প্রত্যাশা

অনুভূতির প্রত্যাশা
জীব দেহ সদা তৎপর; বাতাস ছুঁয়ে জলের ঢেউ
নীল ছুঁয়ে ভাবনা ভাবে।

ভাবনা কি অনুভূতির আকর?
দেখতে দেখতে অনুভূতি নাচে; নিরবেও সদা ভাবনা আঁকে
থরে থরে অনুভূতি সাজে।

অনুভূতির এপিট ওপিট
মনের সাথে সদ্য আঁটে; অনুভূতি মনে মিশে
মনের দেরাজ আপনা খুলে।

প্রেক্ষাপট

অনুমিয়, অনুমান সব ধারনার প্রেক্ষাপট। সেই প্রেক্ষাপটে অনুভূতি মননে বাঁচে। মন থাকলেই মননে সাধা। না থাকলে অনুভূতি ভোতা। সদা ভাবনার মেঘ চাতালে; নীল হারায় কোন সে রুপে? ছুঁতে গেলে যায় না ছোঁয়া। কোন সে রুপে সদা বাঁচে? শরীর জুড়ে মনের প্রভাব। মন হারালে জীব কি বাঁচে? জীব কি তবে শুন্য খাঁচা। প্রেক্ষাপটে ছক আঁকা। অনুভূতি তার চলন বাহন শরীর নামের খাঁচায়।

শুদ্ধ দিশায় স্বপ্ন আঁকে

পথিক হাঁটে মনের দিশায়; মন যে তারে পথ চেনায়
অনুভূতির আকর টেনে; চিনে সদা আপন পর
পাপপূণ্য পথিক মাঝে; নেশায় টলে এদিক ওদিক
যদি সে ভাবনার ছকে; শুদ্ধ দিশায় স্বপ্ন আঁকে
জীবন তবে গরিয়ে গরিয়ে; ঢলে পরা বেলা সাঁঝে
পথিক জানে তার মনটা এবার; কিসের তরে কেঁদে মরে?

১৪২৪/২১, অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল।

মনকে তো আর মন বাঁধে না

মনকে তো আর মন বাঁধে না

মনকে তো আর মন বাঁধে না; শিকল পড়া কার গলে?
যা ইচ্ছা তাই মন বলে যায়; সে কি তবে কার ছলে?
শিশু কাল না হয় দেখে শেখা; বাড়লে বয়স কার শেখা?
এমনি করে রং শেখা; কোন রং যে কার বিভাসে?
শরীর ঘরে মনের বাস; সেই ঘরে কে বা তার আগল খুলে?
খিরকী চুঁয়ে গরিয়ে পরে একটু আলো; সেই আলো কার মনে লয়?

মনের ঘর

মন কি বড়ই স্বাধীন?
একা একা চলে ফিরে
কার কথা সে শুনে চলে?
মনের ঘর শরীর তাই
শরীর ছাড়া মনের কিবা দাম?
শরীর যদি নাই বা থাকে
মন তখন কেমনে বাঁচে?
মন কি তখন হাওয়ায় মিলে?
মস্ত স্বাধীন আকাশ নীলে।

শরীর মন

মনের বসতি জীবত প্রাণ। মরলে জীব, মন কি মরে? ভেদ বিচারে মনের প্রকার। কোন সে রুপে ধরাধামে। নিত্য নতুন রুপে মন কি বাঁচে? জ্যামিতিক হারে মনের কি জন্ম? না কি নিত্য নতুন রুপে বাঁচে, নতুন নতুন শরীর নিয়ে? মন শরীরের এই যে খেলা আদি অন্ত ভেদ বিচারে। কেবা তাহার দেখভাল করে?

মনের লাগাম

পাপ পূণ্য মনের দায়
কেন তবে শরীরে ক্ষয়? মনের লাগাম কি শরীরের হাতে?
পাপ পূণ্য শরীরও জানে।

মনের দায়ভার শরীর টানে
জাপিত কালের জীবন ভর; মরলে শরীর মন কি বাঁচে?
মনের দায় হাওয়ায় মিশে।

মন কি তাই পাগলা ঘোড়া?
শরীর নিয়ে ছুটে চলা; লাগাম ছেড়ে শরীর অবুঝ
হা হুতাশে শরীর পুড়ে।

১৪২৪/২০, অগ্রহায়ণ/ হেমন্তকাল।

সাদা কাগজে জল রং

বর কনের মেলা

ঘাস ফুলে শিশির দানা
মুক্তার স্ফটিক হাসে
ভোরের আলো যেই ছুঁয়েছে
ঝিকিমিকি রঙ খেলে।

শিউলী ঝরে শিউলী তলায়
শিশিরে ভেজা ঘাস
ফুল কুড়াতে ভুতু সোনার
শীতে কাঁপে ঠোঁট।

ফুলের ডালা শিউলী ফুলে
বাহারি রং ধরে
শিউলী ফুলে পুতুল বিয়ে
বরকনের মেলা বসে।

বাঘা ফড়িং

ডোবার ধারে শালিক জটলা
কিচির মিচির ডাকে
হাসের ছানা ডুব সাঁতারে
শীতল জলে ভাসে।

মায়ের সাথে জল থৈ থৈ
খেলার ছলে ডুবে
ঐ যে আবার উঠে জেগে
শেওলা গায়ে মেখে।

জল থৈ থৈ কুয়াশা উড়ে
মিহি দানার হাওয়া
ভুতু সোনার লাল সুয়েটার
বাঘা ফড়িং বসে।

নবান্নের উঠান

শিশির ভেজা লাউ ফুলে
কালো ভ্রমর বসে
গুন গুনিয়ে গান যে গায়
শিশির ভেজা ঠোঁটে।

তাই শুনে হলদে পোকা
গান ধরে উড়ে উড়ে
হাওয়ায় ভেসে কুয়াশা এলো
লাউফুল দুলে উঠে।

ভুতু সোনা ভোর সকালে
শিশির মাখা মেঠপথে
কত কি তার চোখে পরে?
নবান্নের উঠান জুড়ে।

___সাদা কাগজে জল রং এ

ভুতু এবার বেজায় খুশি
একটু ছুটি পেয়ে
পরীক্ষা যে তার শেষ হয়েছে
একটু স্বস্তি মিলে।

কয়টা দিন এদিক ওদিক
ঘুরবে মন খুলে
মা বাবা যে ছাড়তে চায় না
ছোট্ট ভুতু বলে।

তাতে কি? ঐ যে খোলা আকাশ
খিল খিলয়ে মেঘ উড়ে
যত্রতত্র স্বপ্ন গুলো উড়ে উড়ে
সাদা কাগজে জল রং এ।

১৪২৪/১৮ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল

মা, তুমি নেই বলে

তারার মেলায় মা

মাগো, আকাশ নীলে কোন সে তারা?
আঁধার রাতে তারা ভরা; এদিক ওদিক খুঁজে মরি
কোন সে তারা মায়ায় টানে?

ঐ তারা কি তুমি মা?
ঐ যে পাশে ঐ তারটা; আবার ঐ সে টিও কি তুমি মা?
তোমায় খুঁজতে সব তারা যে তুমিই মা।

সন্ধ্যা তারা হারিয়ে গেল
সাতটি তারার বসতি ঐ; শুকতারা কি তুমি মা?
সপ্তর্ষি হয়ে ডাকো মা কপাল চুমে একটু ছুঁয়ে।

মায়ের মুখ

মা, তোমায় কত দিন দেখি না? সাঁঝ ঘনালে উঠানের তারে কাপড় তুলতে, আর বকা ঝকা করতে আর কোন দিন দেখি না। উনুন জ্বলে লাড়কি পুড়ে, সেই স্ফুলিঙ্গে তোমার সুবর্ণ মুখ আর দেখিতে পাইনা মা। ভাতের হাঁড়ির মাড় পড়ে উনুন নিভে যায়, আবার জ্বালাতে সে কি ধোঁয়া? উনুন ঘরটা ভরে যায়। খানিক বাদে আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে চোখমুখে একচিলতে হাসি ফুটে উঠত। সেই অপূর্ব লাবণ্য মাখা তোমার মুখ আর দেখতে পাই না মা।

মা, তুমি নেই বলে

মা, তুমি নেই বলে আঁচলের ওম খুঁজি
মা, তুমি নেই বলে গায়ের গন্ধ খুঁজি
মা, তুমি নেই বলে চাঁদের কপালে টিপ খুঁজি
মা, তুমি নেই বলে ভাতের থালায় মায়া খুঁজি
মা, তুমি নেই বলে তোমার পথ চাওয়া স্বপ্ন খুঁজি
মা, তুমি নেই বলে তোমার আদরের ছোঁয়া খুঁজি

মা, তুমি নেই বলে নাড়ি কাটা ধনের মর্ম বুঝি
মা, তুমি নেই বলে সন্ততির ভালোবাসা বুঝি

১৪২৪/১৫ অগ্রহায়ণ/ হেমন্তকাল

মায়ের বুকে লুকানো পালকের ছামিয়ানা

মায়ের বুকে লুকানো পালকের ছামিয়ানা

অগ্রাহয়ণে থিতিয়ে আসে বানের জল
একেবারে শুকিয়ে যায় না; উচু মাঠের ক্ষেতগুলো জল শুকায়
তবুও ধান ক্ষেতে খড়ের নীচে; লালচে অথচ টলটলে রঙা জল
ক্ষেত জুড়ে মাঠের পর মাঠ; সেই জলে না না ধরনের শেওলা
পোকা মাকড়ের ডিমে ভরা; ব্যঙচি দল বেঁধে ঘুড়ে
এমনি নিড়ালা ক্ষেতে উচাটন ডাহুকি; ডাহুক এর প্রেমে জড়ায়
ধানের গহিন আব্রুর আদলে; বাসা বাঁধে ডিমে তা ছানা ফুটে
ছানা গুলোকে সাথে নিয়ে ঘুড়ে; মাঠ জুড়ে আইল পথে ঠুঁটে টুকে টুকে খায়
ছানা গুলো শঙ্খচিলের ডাক শুনে; মায়ের বুকে লুকানো পালকের ছামিয়ানা

হেমন্তের আবেশ

সন্ধ্যাবতীর পাশে খাল পাড় জেগে উঠে
বানে ভাসা আগাছা গুলো বেশ সবুজ সতেজ
পাড়ের গায়ে পলির আস্তরে।

হেলেঞ্চার প্রশারিত ডগা জলে
যেন ডরাসাপ জল সাঁতারে ঢেউয়ে বিলিকাটে
শেওলা জালে ভরা খালের জল;
ছোট ছোট মাছের আনাগুনা স্বচ্ছ জলে
ঢোল কলমির ঝাড় পাড়ের ধার ঘিঁসে
সাদা বেগুনী ফুলে হেমন্তের আবেশ
লজ্জবতীর শাখা প্রশাখা জলে বিছানো
কোন রাক্ষসী মাছ আচমকা টুপ করে গিলে ফেলে
লজ্জাবতীর পাতায় বসা ছোট্ট পোকা;
ঢেউয়ের কাঁপনে লজ্জাবতী ভিজে চুপসে যায়।

১৪২৪/১৪ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল।

প্রতিদ্বন্দ্বী

প্রতিদ্বন্দ্বী

তুমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী

তুমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী
প্রতিযোগীও ছিলে বটে; কি সে তা বুঝতে সময় গেল টেনে?
অবশেষ তা অভিমানে মিটে গেল।

অভিমানেই যদি চুপসে যাবে
বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাজে লাজে; শুধু শুধু বাহানা এমনি
এমন দ্বন্দ্ব দাঁড় করালে প্রতিযোগীর বেশে।

তুমি না কি ছিলে প্রেমের প্রতিযোগী?
প্রেম দ্বন্দ্বে ভালোবাসার প্রতিদ্বন্দ্বী বনে গেলে; দম্ভ আর অহমিকা
প্রেম তোমার নিঃশেষ করে ছাড়ল।

অভিমান প্রত্যাশার

বাবলার ডালে কুচি কুচি পাতা ধূসর রঙা
ঝিরঝিরে হোওয়ায় মন্থর নেশার আবেশ
অম্ল স্বাদে ভরিয়ে দেয় ঘুঘু জোড়ার খুনসুটি
তিলত্তমা প্রেম যেন উচ্ছ্বলে পরে অবনীর পরে
যৌবনে পরেছিল বিষন্নদাগ, বিরহী ছায়া
আগলে রাখা আলো আঁধারে
অথচ তোমার অভিমান দৃশ্যমান অবয়ব
ছায়া বেশে এখন মেঘের কার্নিশে;
দৈত রুপে অবগাহন করে; অভিমান প্রত্যাশার

যাপিত বিড়ম্বনা

প্রতিযোগী প্রেম চাওয়া। এরা তো বিশ্ব বেহায়া। বিড়ালের কান ধরার মতো। আবার একই অবস্থায় ফিরে, ভাটায় বিষন্ন মুখ মাঝির। জোয়ারে আবার ফিরে ঢেউ উচ্ছ্বলতা। প্রেম স্বপ্ন যেন সুবোধ সাজ। অথচ দেখ, তোমার অভিমান। প্রেম প্রতিযোগী হয়ে ফিরে গেল। চাওয়ার একি বিষস্ময় অহমিকা? চিতায় পোড়া। যন্ত্রণার কালসিটে ধোঁয়া উড়ে। যাপিত বিড়ম্বনা। না বলার অস্তিত্বে বাঁচে।

১৪২৪/১৩ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল।

দুঃখবোধ

দুঃখবোধ

দুঃখবোধে বিষম লাগে
হৃদয় পোড়া গন্ধ ছুটে
দিনের আলো আঁধার লাগে
চোখে শুধু সর্ষেফুল নাচে

সব কিছুতেই বিস্বাদ যেন
তৃঞ্চা নামের পানি পানে
যন্ত্রণা ঠেলে দ্রোহ রাগের
আকাশ নীল নীল হারা যে।

এমনি করে চাঁপা ব্যথা
বেঁচে রয় বুক পাঁজরে
দিনে দিনে দিন ফুরালে
দুঃখবোধ ঠিকই বাঁচে।

ক্ষণ কাল

ক্ষণকাল এ যাপিত কাল
পরম আত্মার অনন্তকাল; ক্ষণকালে জীবন সুঁপে
আত্মা বাঁচে কোন সে রুপে?

যাপিত কালে জীবন সয়ে
জীব আত্মা হয় ধরাধামে; নিঃশ্বাসের ঐ হিসাব কষে
জীব আত্মা কখন বাসি হবে?

জীব আত্মার কোলাহলে
জীবন বাঁচে হেসে খেলে; ক্ষয়ীঞ্চুকালে ব্যথার ক্ষতে
আত্মা কেমনে সিঁথানে বসে?

পাপপূণ্য

পাপপূণ্য জীবের হিস্সা। ক্ষণকাল জীবনবোধি। পাপপূণ্য জীবন সাথে, আত্মা তখন কোথায় থাকে? পাপ জীবের আত্মা রয় কোন সে রুপে? পূণ্য জীবের আত্মা রয় কোন সে রুপে? জীব আত্মা সহবোধ, সহাবাস। পাপপূণ্য জীবে কেন একলা রয়?

১৪২৪/১২ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল।

হেমন্তের সোনা রোদ

হেমন্তের সোনা রোদ

সন্ধ্যাবতী গাঁয়ে হেমন্তের সোনা রোদ ঝরে
মাঠে মাঠে পাকা ধান সোনা রোদে রাঙা।
কৃষকের তামাটে গায়ে সোনা রোদের প্রীতি
মাথল মাথায় সাদা দাঁতে মুচকি হাসির উঁকি।

কাদা জলে ক্ষেত নেতিয়ে পড়া খড়ে পাকা ধানের শিষ
সোনা রোদে যেন নকশি কাঁথার সোনালী ফোঁড়।

থরে থরে পরিপাটি সোনা রোদে ঝিকি মিকি
আইল পথে আগাছার সবুজ সিঁথি শিশিরে মাখামাখি।

১৪২৪/ ৬ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল

মালবিকা

মালবিকা

তুমিতো অন্তধানে
আগ্নীয় গিরির গ্রীবায়
লাভায় মিশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বর্ণকণা
মৃত্তিকা দহনে
আমৃত্যু মালবিকা।

চন্দ্র গ্রহণে লুকিয়ে ছিলে
আকাশ নীলে
কত কথা তার? বাতাস বয়ে আনে
কুস্তুরী ঘ্রাণ
মৃগনাভির হরিনী ছুটে বেড়ায়
গভীর বনে
মৃত্তিকার সুধাসনে।

তোমার নিষিদ্ধ প্রেম
মৃগনাভির হরিণী বোনা
আঁধারে জোনাকি মহিমায় বাঁচে।

১৪২৪/৪ অগ্রাহায়ণ/হেমন্তকাল

মুক্তির দোটানা

মুক্তির দোটানা

মুক্তির দোটানা
সব সময় মন পুড়ে
মনের দ্রোহে ছেঁড়া হৃদয় ছোপ ছোপ রক্তের ক্ষত
মন আর হৃদয় পড়শী যে
নন্দন রুপে রয়।
মন পোড়া আবার
হৃদয় পোড়া তার একই চিতা
শরীর দ্রোহে বিদ্রোহ দুজন দুদিক ছন্নছাড়া বিদিশা
শীতে ঝরে পড়া নাঙা গাছ যে
ফিরবে বলে বাঁচে।

এ কি তব সহবাস?
প্রাণের লয় স্বাধিতে স্বাধিতে
শরীর তাই নস্বর অতি ঠুনকো পাতার জল
আত্মা নিয়ে সদা চলাচল
পরম আত্মা হইব যখন পর।

স্বপ্ন দেখে বাঁচা

কোন পথে যে হাঁটি?
পৃথিবীর রঙশালায় জ্যামিতিক পথের নেশা
কোন পথ যে সঠিক সুবোধ?
পাই না খুঁজে দিশা।
লোভ লালোসায় পিত্তি জ্বালা
স্বপ্ন নেশায় ছুটে চলা দিক হতে দিগন্ত পাড়ে
পেটের ক্ষুধার বড়ই জ্বালা
আদি অন্ত নেই জানা।

মানুষ হতে মানুষ যাপন
মানুষ খেকোর সংখ্যা তেমন প্রাণ হতে প্রাণান্তর
হাত বদলে দেশান্তর স্বপ্ন কেনা বেচা
তারপরও যে ক্ষুধায় পোড়া
স্বপ্ন দেখে বাঁচা।

১৪২৪/২ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল।

মনে পড়ে তোমায়

মনে পড়ে তোমায়

মনে পড়ে তোমায়
হেমন্তের সাঁঝ বিছানো মায়া; সন্ধ্যাবতীর গাঁয়ে
বড়ই মায়া স্বপ্ন ভরা।

সজনে পাতা ঝরা বধুয়ার উঠান
একঝাঁক চড়ুয়ের কিচিরমিচির; লাউ মাচায় টুনির বাসা
বধুয়ার ঘোমটা হেমন্ত অভিমান।
আধা পাকা ধান ক্ষেত
ডাহুক ডাহুকী ঘর বাঁধে; পাঁতি হাঁসের ঝাঁক
কাদা জলে খাবার খুঁজে।

হেমন্ত কুয়াশা আইল পথে নিশানা মিলায়
শিশির ঝরা হিমেল হাওয়া; কৃষক চাদরে জোড়ায়
সোদা উন্মুখ পাকা ধানের পূর্নিমা।

১৪২৪/২৪, কার্তিক/হেমন্তকাল।

জীবনে এলে মনের দর্প

জীবনে এলে মনের দর্প

____আত্মায় মন

মন আর আত্মায়
ব্যবচ্ছেদই প্রাণীর জীবন; তা হলে মন আর আত্মা একই?
একই সুতায় গাঁথা; ঘুরে ফিরে দিন রাতের মতো
আত্মার সান্নিধ্যে মনের আবর্তন।

আত্মা সে তো সদা চরাচর
মর্তলোকে আর অনন্তলোকে; আবার অনন্তলোকে শত বাঁধা
মৃত্যু ইতি কথায় তাই প্রতীয়মান; বিনাশ হয় না কি?
প্রানীর মৃত্যু খেলায় আত্মা নিত্য সচল।

____জীবনে এলে মনের দর্প

জীবনে এলে মনের দর্প
প্রেম তারিত যেন স্বপ্নীল আকাশ; মোহ দোষ গুনে সৌম্য
চাওয়া পাওয়া অন্তধানে মগন; যেন পৃথিবীর সব তার
তারই দর্প দহনে পুড়ে জীবনভর।

দর্পে দম্ভে গরজে আকাশ পাতাল
জীবনে সচল সজিবতা আরধ্য যেন; মনের ভাবনায় আঁকা
কদাচিৎ ভুলে গেলেও; বাড়ন্ত জীবনের সহায়ক বটে
মন সে তো মনের আঁড়ালে আর্শি বুনে চলে।

_______মন সেতো তটস্থ চঞ্চল

প্রাণীর অধিকারে আত্মা নেই
আত্মা চলে যে হাওয়ার লয়; কোথায় কেমনে উর্দ্ধগগন মাঝে?
প্রাণী তাহা মোটেও নাহি জানে; জীবত কালে এর মূল্য নাহি খুঁজে
মর্তলোকে উঠবে জেগে বিপন্ন কোলাহল।

আত্মা সে তো স্বাধীন নয়!
আদেশ অনুশাসনে সদা বাধ্য; আপনি আপনারে পারে না করিতে লয়
সদা নিত্য জীবনে তার পরিচয়; প্রাণীর মৃত্যুতে সে কই লুকায়?
আদি অনন্ত জানবার মন সেতো তটস্থ চঞ্চল।

১৪২৪/১৭, কার্তিক/হেমন্তকাল।

আকাশটা ছিল তোমার

আকাশটা ছিল তোমার

____আকাশটা ছিল তোমার

একদিন, আকাশটা ছিল তোমার
আর পথটা ছিল উম্মুক্ত, নন্দন অহমিকার
সেই পথেই দু’জন
আঙ্গিক মৃদ লয়; ভাবনার আকড় জুড়ে ছিল
স্বপ্ন ডানার প্রজাপতি।

আকাশটা ছিল যে তোমারই
মেঘ গুলো ছন্নছাড়া, অভিমানি মেঘবালিকা
শতরঞ্জে রাঙা হাওয়া
কদাচিত অভিমানে; বৃষ্টি বাহানায় ঝরে
পথের গায়ে ধুলো ধুয়ে যায়।

____স্বপ্নযাপন লুট হয়ে যায়

চাইবার অভিমানে,
আমলকি বন আজ উদাস বিস্মৃতি বিমর্ষ
ছাতিম ফুলের সুবাসে
মৌ মৌ করে পথিকের পথ।
চাইবার অভিমানে
খসে পড়ে শঙ্খচিলের পালক
শুণ্যতার নন্দন গুহায়
এ কোন কাঁঠাল চাঁপার গন্ধ?

ক্ষয়ে যায় নন্দন পলেস্তার
চাইবার অভিমানে,
নিশুতি রাতের জোছনার
বুনো গন্ধে, স্বপ্নযাপন লুট হয়ে যায়।

____একপশলা বৃষ্টি

পিছন ফিরে দেখবার
সময় ছিল না কখনো তোমার;

নাকের ডগায়,
রঙ্গিন এক প্রজাপতির উড়া উড়ি
চমকাওনি মোটেও
তার চেয়ে দেখছিলে, কোথায় বসে ও?
উড়ে উড়ে ঠিক তোমার চুলে
বসেছিল খানিক;
ভাবনার আকড় বটে
প্রেম সে তো তুচ্ছ! চঞ্চল অভিমান
ওকে ছুঁতে কার বা, কি দায়?
এই তো বেশ,
সমুখে স্বপ্ন উড়াল মেঘ
চেয়ে নিতেই পার, একপশলা বৃষ্টি।

১৪২৪/১৪, কার্তিক/হেমন্তকাল।

একটু ভালোবাসায় ফেরা

একটু ভালোবাসায় ফেরা

___নদীর মত চলবো একা
আমি আর বাসবো না ভাল কখনও
নদীর মত চলবো একা,
হাসবো কাঁদবো শুধু একা; থাকবো একা জোয়ার ভাটায়
স্বপ্ন মেঘের ঘনঘটায় যতই ডাকুক মেঘ বালিকা
দেখবো না আর পিছন ফিরে।

আকাশ নীলের উদাস হাওয়া
মাখবো গায়ে আমি একা,
চাঁদের আলো যতই ডাকুক রাতে আমায়
থাকবো আমি আঁধার বনে; আলো চেয়ে জোনাকির
আঁধারে ডুবে ভিজবো নেশায়।

তন্দ্রায় স্বপ্ন যতই দেখাক
নেশায় মাতাল হব না আর,
আঁধার হাওয়ায় শুদ্ধ হব
আঁধার চুমে জুড়াবো হূদয়; রুপের ছোঁয়া যতই লাগুক
নদীর মতো চলব একা।

___বয়স এখন কত?
সাঁঝ ঘনালে আলোর ছোঁয়ায়
আঁধার ঝেঁকে বসে,
সন্ধ্যা তারার মিটমিটে আলো
স্বপ্ন খুঁজে মরে!
তাই বুঝি স্বপ্নোর খোঁজে
অরন্য আকাশ, তারা জ্বলে নীলে
সাগর খেলায় জোয়ার ভাটার;
বয়স এখন কত? ঐ আকাশ তোর
বয়স এখন কত? ঐ সাগড় তোর
বযস এখন কত? ঐ মহূর্তগুলোর
বয়স এখন কত? ঐ চাওয়া পাওয়ার
বয়স এখন কত? ঐ যে তোর ভালবাসার
এসব অবান্তর কথা; কেন জানি আজব মনে হয়?
কিন্ত সাঁঝের আবছা আঁধারে দ্বাড়িয়ে ‍ঐ
ওর বয়স কি নিত্য বাড়ে?

_____ভাল বাসলে সইতে হয়
বাসবে যদি ভাল আমায়, কেন কর ছলচাতুরি
গাঙ্গের জলে ঢেউ লুকায়,
হও কেন যে পাষানী?

পথের বাউল গাইছে গান, একতারার সুরে
ভাল বাসলে সইতে হয়
না পাওয়ার যাতনা যত!

চোখের মায়া কথার জাদু, বুকের ভিতরে ব্যথা,
এমনি করে ভালবাসার ঐ
নষ্ট সময় কষ্টের মেঘ উড়ায়।

____বধুয়ার মান ভাঙ্গাতে
বধুয়ার মান ভাঙ্গাতে, হলাম বিরহী
ভালবাসার মিথ্যা জালে কেন পোড়ালি।
তারা যেমন চুপি চুপি মিষ্টি কথা কয়
বধুয়ার মিষ্টি ছোঁয়ার পরশ বুলায় দক্ষিণা হাওয়া।
আকাশ জোড়া মেঘের দল করছে ছুটাছুটি,
ভালবাসার বধুয়ার আঁচল উড়ছে দিবা-নিশি।

___ও সুজন বন্ধুরে
ও সুজন বন্ধুরে, এ কি খেলায় ?
আমায় করিলে পাগল।

ও সুজন বন্ধুরে,
তোর রুপের এমন ঝলক, বুক যায়রে পুড়ে
কোথায় ‍গেলে পাইরে দেখা
মন নাহি মানে।
ও সুজন বন্ধুরে,
মন মজালি মন হরিলি, ঘুম কারিয়া কোথায় লুকালি?
পথে ‍পথে ঘুরে বেড়াই
পথিক বাউল সঙ্গ।

_____যাসনে উড়ে আর
ওরে ও, মেঘের দল, যাসনে উড়ে আর
আমার বধুয়া তোরে ডাকে
একটু জলের আশে।
তৃঞ্চাবুকে বধুয়া আমার, বসে উঠানে
তোর জলে আশ মিটাবে
একটু দয়া কর!
চাতক যেমন মেঘ ধিয়ানে, বধুয়া যে তাই
তোর যে দেখা পেলে বুঝি
বধুয়া বেঁচে যায়।

_____নদীর ধারে তোর বাড়ী
নদীর ধারে তোর বাড়ী, জোয়ার ভাটা আসে
তাইতো তোর উতল যৌবণ
নদীর ঢেউয়ে ভাসে।
নদী তোর যে সর্ব সহা, নদীর জলে গান
সেই নদীতে স্নানে মজে
ভালবাসার গান গাও।

তোর ঘাটে যে ভিড়লো তরী, নতুন সওদাগর
ভালবাসার সওদা তোর সখিসনে
নদীর জল কান্দে সখি হয়ে উদাসী।

____বধুয়া আমার মন হরিলো
ওরে ও, মেঘ বালিকা, যাসনে ছুটে আয়
বধুয়া আমার মন হরিলো,
দেখবি ছুটে আয়।
মাদল বাজে বধুয়া বাড়ীর,রঙ্গ সখীর গান
হাওয়া বাজায় পাতার নপুর
আকুল করে প্রাণ।

আঁধার রাতে জোনাক জ্বলে, আমি জেগে রই
বধুয়া আমায় করেছে পাগল
তাইতে রাধার সঙ্গ লই।
ওরে ও, মেঘ বালিকা, যাসনে ছুটে আয়
বধুয়া আমার মন হরিলো,
দেখবি ছুটে আয়।

_____ঐ গ্রামের ঐ শ্যমলা মেয়েরে
ঐ গ্রামের ঐ শ্যমলা মেয়ে,
ডাগর কালো চোখ, চোখে তার মায়ার আঁচল
যেন শরষে ক্ষেত।
পা‍য়ে মল ঘুঙ্গুর বাজে, যায়রে বেলা
এপাড়া ওপাড়া করে,
ঐ গ্রামের ঐ শ্যমলা মেয়ে।

পাখির বাসায় ছানা, ডিম, হইহুল্লুরে স্বপ্ন রুঙ্গিন
পেয়ারা চুড়ি আঁচল ভরে
ঐ গ্রামের ঐ শ্যমলা মেয়ে।

____ওরে আমার মন
কালিয়া রে
ওরে আমার মন কালিয়া রে, তোরে ছাড়া জীবণ আমার
রাতের আন্ধার লাগেরে।

তোর রুপে পাগল হইয়া, দেশ বিদেশ ঘুরে মরি
তবু তোর দেখা না পাই।
তোর চোখের মায়ায় মরি, কত খানে যে খুঁজে মরি
তবু তোর দেখা না পাই ।
গাঙের জলের উথাল পাথাল, যৌবন উতল ঢেউ
কোন সওদাগর করল হরন জীবণ যৌবন তোরই।

ওরে আমার মন কালিয়া রে, তোরে ছাড়া জীবণ আমার
রাতের আন্ধার লাগেরে।

____ওরে আমার সোনা বন্ধুরে
ওরে আমার সোনা বন্ধুরে,
দে, দে, তোর ভালবাসা দে।

দিন ফুরালো রাত ফুরালো,
মাসের পর বছর গেল।
তবু না দেখা পাই সোনা বন্ধুরে।
চাঁদ ডুবে যায় আঁধার নামে,
জোনাক পুড়ে আলো জ্বেলে।
বন্ধু যে তোর পথ চেয়ে রই।
আষাঢ় শ্রাবণ বৃষ্টি জলে
ভিজি তুমি আসবে বলে।
তবু বন্ধুর দেখা যে না পাই।

ওরে আমার সোনা বন্ধুরে,
দে, দে, তোর ভালবাসা দে।

____সখি সনে বধু আমার
সখি সনে বধু আমার,
নদীর ঘাটে যায়, মনে বাজে বাঁশের বাঁসি
যেন শ্যাম হয়ে যাই।

পথের ধারে কদম গাছ,
বাতাসের দোলায় দুলে, এই বুঝি বধু আমার
আসবে নদীর ঘাটে।
উথাল পাথাল গাঙের ঢেউ,
প্রেমের সুরে বাজে, সেই সুরে তে বধু আমার
গা’ মাজ্জন করে।

সখি সনে বধু আমার,
নদীর ঘাটে যায়, মনে বাজে বাঁশের বাঁসি
যেন শ্যাম হয়ে যাই।

____কি রূপ দিখিলাম আমি,
কি রূপ দিখিলাম আমি,
জলের ঘাটে যাইয়া।
ডাগর চোখের মিষ্টি হাসি
মেঘ কালো চুল যে তার
আঁড় চোখের মিষ্টি চাওয়া, হূদয় করে আকুল,
কি রূপ দেখিলাম আমি,
জলের ঘাটে যাইয়া।
জলের ঢেউয়ে কলস ভাসে,
ছল্যাত ছল্যাত হাসি।
উতল ঢেউয়ে যৌবন জ্বালা, যেন শ্রাবন মেঘে জল
কি রূপ দিখিলাম আমি,
জলের ঘাটে যাইয়া।

_____কবিতা হয়ে উঠার গল্প
১)
কমল কণ্ঠ মন তোমার
আবেগ ভরা চোখ
চেয়ে থাকতে ভাল লাগে
দেখতে তোমার মুখ।
২)
পথ চলার সাথি তুমি, তুমি স্বপ্ন
তুমি সাধনা; আষাঢ় শ্রাবনের ধারা তুমি
চাতকের আশা তুমি বৈশাখে।
আশা তুমি অগ্রায়ণের; শরতে সার্থক তুমি
শীতের মিষ্টি রোদ তুমি।
হেমন্তে হাসি মুখ; ফুটিও তুমি
বসন্তে কৃঞ্চচুড়ার লালে রাঙ্গা ।
৩)
ও গোলাপ!
স্নিগ্ধ যৌবণ আকুল করে অধর
ফুটেছো শাখে;তোমার রাঙ্গা দলে
হাসিতে যেন মুক্তা ঝরে;
যৌবন তোমার দুলে দক্ষিণা বাতাসে।
শীতল হবে জানি কারো বুক,
তোমার ভালবাসার পরশে।
প্রজাপতি চুমে অঙ্গে তোমার
শিহরিত অঙ্গ খানি চুপসে; বলছো কানে কানে
তুমি ভালবাসবে কি? রাঙ্গিয়ে দাও আজ
তোমার ডানার রঙ এ দোলাও স্বপ্নের দোলায়।
৪)
ফুল যদি হতেম, ফুটতাম সবার আগে,
সবার মনে দিতাম দোলা;
রঙ বেরং এর সাজে ।
সবাই করতো আদর, দেখতো নয়ন মেলে,
মনের খুশিতে গাইতো গান;
ঘ্রাণ লইতো লাজে ।
সূর্য়মুখী হতেম যদি, চেয়ে থাকতো সবাই,
প্রজাপতির সাত রংএ!
সাজতাম যে সেথায়।
রজনী গণ্ধ্যা হতেম যদি, বিলিয়ে দিতাম সুবাস
ঝরে পরতাম বুকল হয়ে !
মালা গাঁথতো যে সবে।
৫)
কালের কোষাঘাতে বুক ভরা ব্যাথা,
হাজার বাঁধার বাঁধ ভেঙ্গে কেটে যায় দিন
জীবণ ঋতুতে রযে গেল শুধু শ্রাবনের রিম ঝিম।
কেটে গেল কত সকাল সন্ধ্যা অপেক্ষা পথ পানে
পথিক পবন! বলা হল না শুধু জীবনের শেষ কথা।
৬)
তুই যে বিরহের আখড়া!
তুই যে আবার বেহেস্ত সাজ্জাতের,
হায়রে ঢাকা।
তুই যে কঠিন, তুই যে কমল, তুই যে আশা, তুই যে নিরাশা;
তুই যে আশা নিরাশার, নিভু নিভু
প্রদ্বিপ শিখা ।
তুই যে বড় সুন্দর,
সুন্দর তোর রাজ পথের হাসি কান্নার খেলা,
হায়রে ঢাকা।
৭)
জীবণ যখন শুরু হল,
শুণ্য ছিল সকল পাতা, ফিরে দেখি
পূর্ণ আমার লেখার খাতা।
শ্যাম সুন্দর দেশে; হূদয় ভরা
কুড়িয়েছি পূর্ণ মধুর সরবর।
জীবণ যখন শুরু হল,
হূদয় মরুভুমি, ভিরতো না নাও মোর
জীবনের তীর অবধি।
হূদয় জুড়ে সুর ছুঁয়েছে, আঁধার পথের হূদয়
আলোর পথে পথ চিনেছে; তাই তো এবার
পথে নামার, যে পথ গেছে দিগন্ত পাড়ে।
দু’হাত ভরে এনেছি তার ধুলি;
৮)
সুন্দর রয়েছে শুধু হাসি,কথার আর ইশার চাহনীতে
ঠোঁট এর কথা চেটেপুটে খায়, ওষ্ঠতাকে
ভালোবাসি ভারি।
যৌবণ শাসায় কেন? অসয্য সুন্দর অস্ত্র শান দেয়া,
কথা তরবারী? ভয়ে কাঁপা,মুখে ভাসা ফুটেনা
সরে আসে পিছে, আঘাত কথার, ওষ্ঠ খান খান হয়
নুয়ে পরে শেষে মানুষের অহঙ্কারের কাছে।
৯)
বাংলার দিকে তাকাই যখন
মনে হয়, দেখছে সবাই।
যখন কবিতা দিকে চোখ ফেরাই
মনে হয়, চোখেও চোখ রেখেছে কবিতা।

রাস্তায় দেখা যায় অজস্র মানুষ হাটছে
যখন তাকাই সেই দিকে,
বুঝতে পারি, অজ্র উৎসক দৃষ্টি এই দিকেই তাকিয়ে।
বাংলার মধ্যে মানুষের
মানুষের বুকে কবিতা, আর কবিতার মগজে
ভালবাসার দর্শন; এর থেকে মুক্তি নাই আজ
১০)
তুমি এলে যখন,
এলো গ্রীষ্মের তীক্ষ্ণ রোদে,ধু ধু বারি বিহীন কান্না।
তুমি এলে যখন,
এলো বর্ষার রিঝিম বৃষ্টি, ঝরলো শ্রাবন ধারা।
তুমি এলে যখন,
এলো শরতের সাথর্ক উল্লাস,সবুজের সমারহে নীলাভ আকাশ।
তুমি এলে যখন,
এলো হেমন্ত আশার প্রদ্বীপ, শুরু আনান্দের পসরা ।
তুমি এলে যখন,
এলো চির পরিচিত শীত, কন কনে কাঁপনে অজস্র আত্মনাথ।
তুমি এলে যখন,
এলো অফুরন্ত হাসি ভরা বসন্ত, কোকিলের কু-হু-ডাকে ফুটিল ফুল।
তুমি যখন এলে যখন।
১১)
সুখ সে তো যাযাবর,
বাঁধতে জানে না ঘড়
তবু কেন তাকে পেতে
ব্যকুল এই অন্তর।
১২)
আমি ওপারে যাচ্ছি,
প্রেম কে সুধাই? একটু অপেক্ষা করবে?
এত সুন্দর নীলকাশ, এমন আলো ছায়ার খেলা
তোর কি ভাল লাগে না?
আমার কিন্তূ খুব ভাল লাগছে; কত সুখ? কত দুঃখ?
সব তোর জানা, তবু বলবে না কিছু?
শুধু ইশারায় ডাকা ডাকি,
যাবো কোথায়? কোথায় পাবি এত সুন্দর
পল্লবিত, আলোকময় প্রকৃতি!
যাস না ছেরে আর একটু পা‍শে বস
দু’জন মিলে ফিরে যাব আর মায়ায় বাঁধবো ঘড়;
ফোটাবে প্রেম, ভালবাসার।

১৪২৪/৪,কার্তিক/হেমন্তকাল।

হেমন্তের বাতায়ন

হেমন্তের বাতায়ন

হেমন্তের বাতায়ন
খুলেছে দ্বার! আকাশে মেঘ যেন ফুরালো
রোদের রসনাই আকাশময়; যেন চুপসে আছে
নীলের মহাশূণ্য বলয়।
আলোর কিন্নরি ষ্ফুরণ
বাতাসের সাথে করে খেলা
বানভাসি পথ ঘাট জেগেছে; পলির আইল পথে
সবুজ ঘাস সবে উঠছে গজে।

আইল পথের কাদায় ছাপ এঁকে রয়
ডাহুক ডাহুকির বিবসনা মুর্চ্ছনায়
ক্ষেতের ধানের ঝোপে বাঁধবে বাসা; ললনার বাসনা
বানের বিদ্রুপ মিটে গেছে!
এখন শুধু কুয়াশার ঢল নামবে মাঠজুড়ে
শিশিরের আচ্ছদনে ভিজাবে অঙ্গ
এমনি শ্রীমতি বাসনায়; ঘাসফুড়িং এর ঝাঁক উড়ে উড়ে
হেমন্তের বাতায়নে খোলা হাওয়ার স্নানে
আপ্লুত পথিক অন্তদহনে পুড়ে।

১৪২/০২,কার্তিক/হেমন্তকাল।