ট্যাগ আর্কাইভঃ ব্লগ

শব্দনীড় ব্লগের প্রিয় ব্লগারবৃন্দ লক্ষ্য করুন!

একসময় যখন এদেশে মোবাইল ফোনের আগমণ ঘটে, আমি তখন টেক্সটাইল মিলে কাজ করি। মিলটা ছিলো গোদনাইল পানির কল এলাকায়। মিলের নাম গাজী টেক্সটাইল মিলস্। মিল মালিকের নাম ছিলো, সামছুল হক গাজী। উনাকে এলাকার সবাই গাজী সাহেব বলে ডাকতো। সময়টা তখন ২০০৬ সাল। তবে এর আগে থেকেই মনে হয় এদেশে মোবাইল ফোন এসেছিল। কিন্তু আমার দেখা ২০০৬ সালে গাজী টেক্সটাইল মিলের মালিক গাজী সাহেবের হতে। তাই আমি এদেশে মোবাইল ফোনের আগমণ ২০০৬ সালই উল্লেখ করেছি।

সে-সময় মিলের মালিক ঢাকা থেকে একটা নতুন মোবাইল ফোন কিনে আনে। মোবাইলটা প্রায় এক মুঠুম হাত লম্বা ছিল। মোবাইলটার কালার ছিলো কালো। উনি সময় সময় বাসা থেকে বের হয়ে মিলের গেইটের সামনে এসে মোবাইল ফোনটা কানে চেপে ধরে কথা বলতো। ঘরের বাইরে এসে কথা বলার কারণও ছিলো! কারণ হলো, তখনকার সময়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা বেশি ছিলো। যদিও উনার মোবাইলের সিমকার্ড গ্রামীণ ফোন ছিলো, তবুও তখন ঘরের ভেতরে বসে নেটওয়ার্ক পাওয়া যেতো না। তাই তিনি মোবাইল ফোন কানে চেপে ঘরের বাইরে এসে বকবক করতো। আর মিলেই সব শ্রমিকরা হা করে তাকিয়ে থাকতো! অবাক হয়ে দেখতো! কান পেতে উনার কথা শুনতো। সবার সাথে আমিও মিল মালিকের সামনে গিয়ে উঁকি মেরে দেখতাম। আর ভাবতাম! মনে মনে আক্ষেপ করে বলতাম, ‘ঈশ! যদি আমি একটা কিনতে পারতাম!’

আমার মনের সেই আক্ষেপ মনে হয় মহান সৃষ্টিকর্তা সেসময়ই শুনে ফেলেছিল। তাই মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় মাসেক দুইমাস পর পরিচিত এই দোকান থেকে ২০০৬ ইংরেজি সালেই Nokia-1110 মডেলের একটা মোবাইল কিনতে সক্ষম হই। তাও অর্ধেক নগদ, অর্ধেক বাকিতে। সেইসাথে একটা বাংলালিংক সিমকার্ডও কিনলাম। মোট দাম হলো, ৩,৬০০+৫০০= ৪,১০০/=টাকা। দোকানদারকে নগদ দিলাম ২,০০০/=টাকা। আর বাদবাকি টাকা মাস শেষে বেতন পেলে পরিশোধ করবো বলে কথা দিলাম। এরপর থেকে শুরু করলাম, নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা অপরের সাথে কথা বলা এবং মেসেজের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে বার্তা পাঠানো। পরের মাসে মিলে বেতন পেয়ে মোবাইলের বাকি টাকা পরিশোধ করলাম।

ওই মোবাইলটা বেশকিছু দিন ব্যাবহার করার পর আর ভালো লাগছিলো না। কারণ, Nokia-1110 মডেল মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেতো না, তাই। তারপর ২০০৭ ইংরেজি সালে Nokia N-73 মডেলের পুরাতন একটা মোবাইল কিনলাম। সেই মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে থাকি, মনের আনন্দে! কিন্তু তখনকার সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট ছিলো স্লো-মোশনে। মানে ধীরগতিসম্পন্ন 2G স্প্রিরিট। মানে, “গাড়ি চলে না চলে না, চলে না রে– গাড়ি চলে না” এমন অবস্থা!

সে-সময়ে নেটওয়ার্ক ভিত্তিক ইন্টারনেটের সুবিধা ছিল GPRS সার্ভিস। GPRS এর পূর্ণরূপ হলো, General Packet Radio Service. সে-সময় নোকিয়া বাটন মোবাইলের সেটিং থেকে কনফিগারেশন সেটিং করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হতো। নিজেও সে-ভাবেই সেটিং করে ইন্টারনেট ব্যহার করতাম। অনেক সময় নিজে নিজে কনফিগারেশন সেটিং করেও ইন্টারনেট সংযোগ পেতাম না, তখন সরাসরি ব্যবহার করা নেটওয়ার্ক কোম্পানির হেল্পলাইন 121- এ কল করে কনফিগারেশন সেটিং পাঠাতে বলতাম। তখন তাঁরা অটোমেটিক কনফিগারেশন সেটিং পাঠালে, তা মোবাইলে সেভ করে নিতাম। এরপর বুকেরপাটা টান করে অনলাইনে থাকা বিভিন্ন সাইটে প্রবেশ করতাম। এটাই ছিলো আমার তখনকার সময়ে নিয়মিত অভ্যাস।

কিন্তু দীর্ঘদিন Nokia-N-73 ব্যবহার করার পর মোবাইলটি আর ভালো লাগছিল না। ভালো না লাগার করণ ছিলো শুধু একটাই। তাহলে Nokia N-73 মডেল মোবাইলে বাংলা লেখা যেতো না। আবার মোবাইল স্ক্রিনেও বাংলা লেখা প্রদর্শিত হতো না। এটাই ছিল ভালো না লাগার কারণ!

এরপর ২০১১ সালে আমার একমাত্র ছেলে খুব শখ করে Nokia c-3 একটা মোবাইল কিনে। তখনকার সময়ে Nokia মোবাইলের ছিলো, মোবাইল জগতে সেরা মোবাইল। মানে Nokia’র জয়জয়কার সময়। তারপর আবার নতুন মডেল Nokia c-3। সেই মোবাইলটা আমার ছেলে বেশিদিন ব্যাবহার করে যেতে পারেনি। বিধাতার ডাকে সাড়া দিয়ে ছেলেটা ২০১১ সালের ২০ জুলাই পরপারে চলে যায়। রেখে যায়, ওর শখের Nokia c-3 মোবাইলটি।

ছেলের রেখে যাওয়া মোবাইলটা আমি বেশকিছু দিন ঘরে রেখে দিয়েছিলাম। একদিন দেখি মোবাইলের ব্যাটারি ফুলে গেছে। তখন মোবাইলটা মেকারের কাছে নিয়ে গেলাম। মোবাইল মেকার বললো, ‘এতো দামী মোবাইল ব্যবহার না করে ঘরে ফেলে রাখলে একসময় মোবাইলটাও নষ্ট হয়ে যাবে।’ মোবাইল মেকারের কথা শুনে নতুন ব্যাটারি সংগ্রহ করে আমি নিজেই ব্যাবহার করতে থাকলাম। যাতে ছেলের রেখে যাওয়া মোবাইলটা সবসময় ভালো থাকে। (তা এখনো ভালো আছে।)

এরপর থেকে Nokia C-3 মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করি। কিন্তু Nokia c-3 মোবাইলেও বাংলা লেখা যেতো না। মনের আক্ষেপ আর আফসোস শুধু মনেই থেকেই যেতো। তারপরও বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলে সার্চ করা ছিল আমার প্রতিদিনের রুটিন মাফিক কাজ। সে-সব কাজের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ব্লগে উঁকি মারা। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া-সহ আরও অনেককিছু। তবে বেশকিছু অনলাইনভিত্তিক দিনলিপি বা ব্লগে সময়টা বেশি ব্যয় করতাম। বিভিন্ন ব্লগ সাইটে ব্লগারদের লেখাগুলো পড়তে খুবই ভালো লাগতো। এই ভালো লাগা থেকে নিজেরও লিখতে ইচ্ছে করতো। কিন্তু সমস্যা ছিলো, একমাত্র মোবাইল।

তারপরও একসময় Nokia c-3 মোবাইল দিয়ে অনলাইনে থাকা একটা ব্লগে রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম। কিন্তু Nokia C-3 মোবাইলে তো বাংলা লেখা যায় না! তবুও খামোখেয়ালিভাবে কোনরকম ইংরেজি বর্ণ দিয়ে স্বল্পসংখ্যক শব্দের একটা লেখা জমা দিলাম। ব্লগে লেখা জমা দিয়ে বেশকিছুদিন আর ব্লগে লগইন করিনি, লজ্জায়! লজ্জার কারণ হলো, আমার লেখা পড়ে ব্লগের সবাই যদি হাসাহাসি করে, তাই। সেই লজ্জা মনে রেখেই বেশকিছু দিনের জন্য ব্লগ থেকে লাপাত্তা ছিলাম।

এর কয়েক মাস পর অনেক কষ্ট করে মনের স্বাদ মেটানোর জন্য Symphony W-82 মডেল-এর একটা নতুন মোবাইল কিনলাম। মোবাইলটা কিনেই, সেইদিনই ঐ ব্লগে লগইন করলাম। উদ্দেশ্য হলো, আমার জমা দেওয়া লেখাটার অবস্থা দেখা। লগইন করে দেখি সম্মানিত ব্লগ মডারেটর লেখার শিরোনাম বাংলায় লেখার জন্য বলছে। Symphony W-82 এন্ড্রোয়েড মোবাইলে বাংলা লেখা যেতো। তারপরও গুগল প্লে স্টোর থেকে একটা বাংলা Keyboard অ্যাপ ডাউনলোড করে লেখার শিরোনাম লিখলাম, “আমিও মানুষ”। লেখার শিরোনাম বাংলায় লিখে, ব্লগে জমা দিয়ে আবার কিছুদিনের জন্য ব্লগ থেকে গা-ঢাকা দিলাম। গা-ঢাকা দেওয়ার প্রায় কয়েকমাস পর আবার ব্লগে লগইন করলাম। লগইন করে দেখি আমার লেখা প্রকাশ হয়েছে। লেখার নিচে মন্তব্যের বক্সে কয়েকজন সম্মানিত লেখক মূল্যবান মন্তব্যও করেছে। সেসব মন্তব্যের উত্তর দিতে গেয়েই, আজ অবধি ব্লগ আর ব্লগিংয়ের মাঝেই আটকা পড়ে আছি। ব্লগে লিখছি, পড়ছি, দেখেও যাচ্ছি।

এরপর থেকে অনেক সম্মানিত লেখক/লেখিকাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও গড়েছি। অনেক লেখক/কবিদের বাড়িতে গিয়েছি। সেই থেকে এপর্যন্ত ব্লগ, ব্লগিং এবং ব্লগের পোস্টের মন্তব্য বিষয়ে সামান্যতম ধ্যানধারণাও মোটামুটি অর্জন করতে পেরেছি। একসময় ঐ ব্লগের সবার মন জয় করে একটা সম্মাননাও পেয়েছি। তা থাকুক ছোট সম্মাননা, হোক বড় কোনও সম্মাননা। কিন্তু সম্মাননা পেয়েছি। পেয়েছি ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি করে। আর নিয়মিত সবার পোস্টে মন্তব্যের বিনিময়ে। আর আমাদের নারায়ণগঞ্জ শহরবাসীর সমস্যা নিয়ে লেখার কারণে।

যাক সে কথা, আসল কথায় আসা যাক! আসল কথা হলো, স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগের ব্লগারদের উদ্দেশ্যে কিছু বলা।

প্রিয় সম্মানিত শব্দনীড় ব্লগের ব্লগারবৃন্দ, একটু লক্ষ্য করুন! আপনারা যারা আমার আগে থেকে এই শব্দনীড় ব্লগে লিখেন, তাঁরা অবশ্যই ব্লগ বিষয়ে আমার চেয়ে ভালোই জানেন। তা আর নতুন করে নতুন কিছু উপস্থাপন করার কোনও দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আমরা যারা এই স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগে লেখালেখি করছি, সবাই জানি যিনি ব্লগে লিখেন; তাকে “ব্লগার” বলে। তবে সহ-ব্লগারগণ একে অপরকে লেখক/লেখিকা/কবি বলেই বেশি সম্বোধন করে থাকে। যা আমি নিজেও করে থাকি। যেহেতু একই প্লাটফর্মে একে অপরের সাথে লেখা শেয়ার করছি, তাই। তারপর পছন্দ অপছন্দের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেও যাঁর যাঁর মনের ভাব জানান দিচ্ছি।

কেউ আবার কারোর লেখায় কোনও বানান ভুল হলে তাও মন্তব্যের ছোট বক্সে লিখে জানাচ্ছি। লেখা কেমন হয়েছে, তাও অনেকে মন্তব্যের মাঝে জানিয়ে দিচ্ছে। এসব কিন্তু একজন ব্লগারের প্রতি সহ-ব্লগারের দায়িত্ব কর্তব্যের খাতিরেই হচ্ছে। আর ব্লগে খাতির বা সুসম্পর্কটা কিন্তু একে অপরের পোস্টের মন্তব্যের খাতিরেই তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ ব্লগে ব্লগিংয়ের মানেই হচ্ছে, নিজের লেখার পাশাপাশি সহ-ব্লগারদের লেখা বা পোস্ট পড়ে লেখার বিষয়ে গঠনমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা করা। সহ-ব্লগারকে আরও সুন্দর করে লেখার উৎসাহ দেওয়া।

এভাবেই আস্তে আস্তে একে অপরের লেখা পড়তে আগ্রহ বাড়ে। লেখা পড়ে লেখার ভালো মন্দ বিস্তারিত আলোচনা মন্তব্যের মাঝে প্রকাশ করে। এতে একজন সহ-ব্লগারের লেখার যেমন পরিবর্তন ঘটে, তেমনি মন্তব্যকারীদের লেখা পড়ে মন্তব্যও করতে আগ্রহ বেড়ে যায়।

আমি মনে করি, যেকোনও ব্লগের ব্লগার অথবা লেখক/লেখিকার লেখায় মন্তব্য হলো একরকম চুম্বকের আকর্ষণের মতন। চুম্বক যেমন লোহাকে কাছে টানে, তেমনিভাবে মন্তব্যকারীকে পোস্টদাতা বা লেখক/লেখিকা ভালোবেসে ফেলে, একমাত্র মন্তব্যের বিনিময়ে। সেই ভালোবাসা দিনে দিনে এতোই গভীরে চলে যায় যে, উদাউট কয়েকটা লেখায় একজন প্রিয় মন্তব্যকারীর মন্তব্য না দেখলে আর ভালো লাগে না। এমনকি ব্লগেও লিখতে মন চায় না। কারণ অনলাইন ভিত্তিক ব্লগ, বা দিনলিপিতে যে যেভাবেই লিখুক-না-কেন, লেখা প্রকাশের পর যদি কেউ লেখার নিচে মন্তব্য না করে, তাহলে ব্লগার বা লেখক/লেখিকাদের লেখাই যেন মাটি হয়ে যায়।

তাই একজন ব্লগার খুব পরিশ্রম করে লিখে লেখা ব্লগে প্রকাশ করে এবং গুটিকয়েক মন্তব্যের আশায় বার বার ব্লগে লগইন করে দৈনিক মন্তব্যের তালিকায় চোখ রাখে। নিজের লেখায় কেউ মন্তব্য করেছে কিনা তা খুব মনোযোগ সহকারে দেখে। যদি একজন সহ ব্লগারদের সুন্দর একটা মন্তব্য দেখে, তাহলে লেখক/লেখিকা বা ব্লগার ব পোস্টদাতার মনটা আনন্দে ভরে উঠে। তারপর নিজের পোস্ট বা লেখায় যিনি মন্তব্য করেছে, তার লেখা পড়ে সেও একটা মন্তব্য জুড়ে দেয়।

এভাবেই তৈরি হয় একজন ব্লগারের প্রতি আরেকজন ব্লগারের ভালোবাসা বা আন্তরিকতা। তারপর একে অপরের সাথে গড়ে উঠে সুন্দর সুসম্পর্ক। এটা আমরা অনেকেই বুঝি! আবার অনেকে বুঝেও সহ-ব্লগারের লেখা বা পোস্ট তো পড়েই না, বরং সহ- ব্লগারের পোষ্ট করা লেখা দুরছাই বলে উপেক্ষা করে মন্তব্যও আর করে না।

এতে কি হয় জানেন? এতে নিজের লেখায়ও কেউ মন্তব্য করতে চায় না, করেও না। আমি মনে করি এটা একরকম হিংসা, কৃপণতা, আর নিজেকে অহংকারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া। এতে ক্ষতিটা অহংকারী ব্যাক্তিরই বেশি হচ্ছে বলে আমি মনে করি। কারণ নিজে যেমন অহংকারী হিসেবে নিজেকে খ্যাতিমান মনে করছেন, তেমনই নিজের পোস্টের পাঠক সংখ্যা-সহ মন্তব্যের ছোট বাক্সটাও পড়ে থাকছে খালি।

ব্লগপোস্টের মন্তব্যের বাক্স তো খালি থাকবেই! এর কারণ হলো, শুধু নিজের পোস্টে অন্যের করা মন্তব্যেগুলোর কোনরকম দায়সারা মন্তব্য “ধন্যবাদ, শুভকামনা, সাধুবাদ, ভালো থাকবেন” ইত্যাদি লিখেই সরে যাচ্ছেন। কিন্তু অন্যের পোস্টে একটিবারও চুপি দিয়ে দেখছেন না। আর মন্তব্য তো দূরেরই কথা! কারণ, আপনি একজন অহংকারী ব্লগার বা লেখক/লেখিকা, তাই।

ইদানিং দেখতে পাচ্ছি স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগে মন্তব্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। আজ থেকে কয়েক দিন যাবত লক্ষ্য করছি, যদি কোনও ব্লগারের পোস্টে মন্তব্য করে, সেই মন্তব্যেরও সময়মত জবাব দেওয়া হয় না। অনেকে তো মন্তব্যের জবাব দেয়ই না। তা কি ঠিক?

শব্দনীড় ব্লগের সম্মানিত প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
আমি একজন সময়হীনা। মনে খেটে খাওয়া মানুষ। তাই হাতে অজস্র সময় থাকে না। তারপরও আমি নিজের পোস্টের মন্তব্যের জবাব একটু দেরি করে দিলেও, আপনাদের সকলের পোস্ট পড়ি। পারলে অল্পসংখ্যক শব্দে ছোট একটা মন্তব্যও করে থাকি।

কিন্তু দুঃখের কথা দুঃখের সাথে বলতে হয়, অন্যের পোস্টে করা মন্তব্যগুলোর জবাব বা রিপ্লাইও কেউ যথাশীঘ্র দেয় না। এটা কি ঠিক? এটা কি ব্লগিং করার নিয়ম? এটা কি সহ-ব্লগারদের নীতি?

জেনে রাখুন শব্দনীড় ব্লগের ব্লগারবৃন্দ,
আপনি নিজের পোস্ট ছাড়া সহ-ব্লগারদের পোস্টে যাচ্ছেন না। সহ-ব্লগারদের লেখা পড়ে মন্তব্য করছেন না। এতে কিন্তু আপনার নিজেরই ক্ষতিটা বেশি হচ্ছে। মানে আপনার লেখা বা পোস্ট সহ-ব্লগাররাও পড়বে না, মন্তব্যও করবে না। আমি মনে করি একটা মন্তব্য মানে একরকম দেনা বা ঋণের মতো। এই ঋণ শুধাতে হয়। সহ-ব্লগারদের পোস্ট বা লেখা পড়ে একটা মন্তব্য করে সহ-ব্লগারকে ঋণী করতে হয়। তবেই যার লেখা পড়ে মন্তব্য করে ঋণী করলেন, তিনি আপনার ঋণ পরিশোধে বাধ্য হয়ে আপনার লেখা পড়ে একটা সুন্দর মন্তব্য লিখে সেই ঋণ পরিশোধ করবেই করবে। তাই আমি নিজেই মনে মনে বলে থাকি, ‘কেউ যখন আমার পোস্ট বা লেখা পড়ে মন্তব্য করে না, তাহলে আমি কেন সময় নষ্ট করে অন্যের লেখা পড়ে মন্তব্য করবো?’ এটা অনেকের মতো আমারও ব্যক্তিগত ভাবনা!

পরিশেষে:
শব্দনীড় ব্লগের প্রিয় সম্মানিত ব্লগার/লেখক ও লেখিকাবৃন্দ, আমি আগেও বলেছি, এখনো বলি, ‘আমি এক সময়হীনা অধম ব্যক্তি। নিয়মিত ব্লগে সময় দিতে পারি না। তাই যথাসময়ে আপনাদের মূল্যবান লেখায় বা পোস্টে আমি মন্তব্য করতে পারি না। এজন্য আমি নিজে থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা যারা শব্দনীড় ব্লগে নিয়মিত আছেন, তাঁদের আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করবো, সহ-ব্লগারদের লেখা পড়ুন! সুন্দর একটা গঠণমূলক মন্তব্য করুন। মনে রাখবেন, সহ-ব্লগারদের পোস্টে আপনার করা একটা মন্তব্য মানে, আপনার নিজের লেখা বা পোস্টে দশটা মন্তব্য পাওয়া। শব্দনীড় ব্লগের সবাইকে ধন্যবাদ!

ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। সবার জন্য অফুরন্ত শুভকামনা থাকলো।

আমার দেখা ব্লগ ব্লগার ও ফেসবুকে শব্দনীড় ব্লগ পেইজ!

ফেসবুকে স্বনামধন্য শব্দনীড় বাংলা ব্লগ পেইজ আছে, তা আপনি জানেন কি? আমি জানি এবং নিয়মিত ফলো করে আসছি। আজকে এ নিয়েই কিছু লিখতে চাই! আশা করি সাথে থাকবেন। তার আগে ব্লগ এবং ব্লগিং নিয়ে আমার কিছু নূন্যতম অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, জেনে নিন!

বর্তমানে মোবাইল ফোন হাতে-হাতে ছড়াছড়ি। ঘরে ঘরে কম্পিউটার, ল্যাপটপ আর ওয়াই ফাই নামের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। একসময় কারোর হাতে মোবাইল ফোন দেখলেই, সামনে গিয়ে উঁকি মেরে দেখতাম। আর ভাবতাম, কী দিয়া যে তৈরি করলো এই মোবাইল! ঈশ! যদি আমি একটা কিনতে পারতাম!

এভাবে ভাবতে ভাবতে ২০০৬ ইংরেজি সালে নোকিয়া ১১১০ মডেলের ৩৬০০ টাকা দিয়ে একটা মোবাইল সেট নিজেই কিনে ফেললাম। সাথে ৫৫০ টাকা দিয়ে একটা বাংলালিঙ্ক সিম কার্ডও কিনে শুরু করলাম, নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা অপরের সাথে কথা বলা।

এরপর ২০০৭ ইংরেজি সালে নোকিয়া N-73 মডেলের পুরাতন একটা মোবাইল সেট কিনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে থাকি। তখনকার সময়ে নেটওয়ার্কভিত্তিক ইন্টারনেটের সুবিধা ছিল GPRS সার্ভিস। সেসময় নোকিয়া বাটন মোবাইলের সেটিং থেকে কনফিগারেশন সেটিং করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। আর অনলাইনে থাকা বিভিন্ন সাইটে প্রবেশ করতাম। এটাই ছিলো আমার নিয়মিত অভ্যাস।

কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পর মোবাইলটি আর ভালো লাগছিল না। ভালো না লাগার করণ ছিলো শুধু একটাই। তাহলে নোকিয়া N-73 মডেল মোবাইলে বাংলা লেখা যেতো না, আর মোবাইল স্ক্রিনে বাংলা লেখা প্রদর্শিতও হতো না।

এরপর ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে নোকিয়া C-3 দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। তাতেও বাংলা লেখা যেতো না। মনের আক্ষেপ আর আফসোস শুধু থেকেই যেতো। তারপরও বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলে সার্চ করা ছিল আমার প্রতিদিনের কাজ। সেসব কাজের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ব্লগে উঁকি মারা সহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া সহ আরও অনেককিছু। তবে বেশকিছু অনলাইনভিত্তিক দিনলিপি বা ব্লগে সময়টা বেশি ব্যয় করতাম।

একসময় অনলাইনে থাকা একটা স্বনামধন্য ব্লগে লেখকদের লেখা পড়তে খুবই ভালো লাগতো। নিজেরও লিখতে ইচ্ছে করতো। একসময় নোকিয়া বাটন মোবাইল C-3 দিয়ে এক ব্লগে রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম। কিন্তু নোকিয়া C-3 মোবাইলে তো বাংলা লেখা যায় না। কোনরকমভাবে ইংরেজি বর্ণ দিয়ে স্বল্পসংখ্যক শব্দ দিয়ে একটা লেখা জমা দিলাম। ব্লগে লেখা জমা দিয়ে বেশকিছুদিন আর ব্লগে প্রবেশ করিনি।

এরপর প্রায় দুই তিনমাস পর অনেক কষ্ট করে মনের স্বাদ মেটানোর জন্য সিম্ফনি W-82 মডেল-এর একটা মোবাইল কিনলাম। মোবাইলটা কিনেই, সেইদিনই ব্লগে প্রবেশ করলাম। উদ্দেশ্য হলো, আমার জমা দেওয়া লেখাটার অবস্থা দেখা। দেখি সম্মানিত মডারেটর লেখার শিরোনাম বাংলায় দেওয়ার জন্য বলছে। সিম্ফনি এন্ড্রোয়েড মোবাইলে বাংলা লেখা যেত। লেখার শিরোনাম দিলাম, “আমিও মানুষ”। আবার জমা দিয়ে আর ব্লগে প্রবেশ করি না। প্রায় কয়েকমাস পর ব্লগে প্রবেশ করলাম। দেখি আমার লেখায় কয়েকজন সম্মানিত লেখকদের মূল্যবান মন্তব্য। সেসব মন্তব্যের উত্তর দিতে গেয়েই, আজ অবধি ব্লগ আর ব্লগিংয়ের মাঝেই আটকা পড়ে আছি। ব্লগে লিখছি, পড়ছি, দেখেও যাচ্ছি। অনেক সম্মানিত লেখক-লেখিকাদের সাথে ঘনিষ্ঠতাও গড়েছি। শুরু থেকে এপর্যন্ত ব্লগ, ব্লগিং এবং ব্লগের পোস্টের মন্তব্য বিষয়ে সামান্যতম ধ্যানধারণাও মোটামুটি অর্জন করতে পেরেছি বলেও মনে হয়।

ব্লগ:
আমার জানা মতে ”ব্লগ” শব্দটি ইংরেজী (Blog), এর বাংলা প্রতিশব্দ৷ যা এক ধরনের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ইংরেজি (Blog) শব্দটি আবার (Weblog) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যেটুকু জানা যায়, এই ব্লগের ইতিহাস এবং অনলাইন দিনপত্রী ১৯৯৭ ইংরেজি সাল থেকে শুরু হয়ে অদ্যাবধি চলছে। প্রায় ব্লগই মূলতঃ লেখায় আকিন, কিছু কিছু আছে শিল্প(আর্টব্লগ), ছবি(ফটোব্লগ)। ডিসেম্বর ২০০৭এর হিসাবে, ব্লগ খোঁজারু ইঞ্জিন “টেকনোরাটি” প্রায় এগারো কোটি বার লাখের ও বেশি ব্লগের হদিশ পেয়েছে।

ব্লগার:
যারা আমার আগে থেকে ব্লগে লিখেন, তাঁরা অবশ্যই ব্লগ বিষয়ে আমার চেয়ে ভালোই জানেন। তা আর নতুন করে নতুন কিছু উপস্থাপন করার কোনও দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আমরা যারা ব্লগে লেখালেখি করছি, সবাই জানি যিনি ব্লগে লিখেন; তাকে “ব্লগার” বলে। তবে সহ ব্লগারগণ একে অপরকে লেখক লেখিকা বলেই বেশি সম্বোধন করে থাকে। যেহেতু একই প্লাটফরমে একে অপরের সাথে লেখা শেয়ায় করছে, তাই। তারপর পছন্দ অপছন্দের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যার যার মনের ভাব জানান দিচ্ছে। এতে করে একে অপরের সাথে খুব অল্পদিনে মধ্যেই সুসম্পর্কও গড়ে উঠছে।

ব্লগিং:
যিনি ব্লগে পোষ্ট করেন তাকে ব্লগার বলে। পোস্ট করা বা ব্লগে লেখালেখি করা হচ্ছে “ব্লগিং”।

মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া:
ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের পছন্দের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন। আর পাঠক সেখানে লেখার উপর ভিত্তি করে তাদের মন্তব্য করতে পারেন৷ মন্তব্য দানকারী পাঠককে অবশ্যই ব্লগের নিবন্ধিত পাঠক হতে হবে। মানে হচ্ছে, একজন ব্লগারের লেখনীয় পোস্টে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার আগে তাকে সেই ব্লগে লগইন করতে হবে। নিবন্ধিত সদস্য ছাড়া কিছুতেই মন্তব্য করতে পারবে না। ব্লগের পোস্টে আর ব্লগার অথবা লেখক-লেখিকার লেখায় মন্তব্য হলো একরকম চুম্বকের আকর্ষণের মতন। চুম্বক যেমন লোহাকে কাছে টানে, তেমনিভাবে মন্তব্যকারীকে পোস্টদাতা বা লেখক-লেখিকা ভালোবেসে ফেলে। তারপর একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাব গড়ে উঠে।

ব্লগ পোস্ট:
সাম্প্রতিক কালে অনলাইনে থাকা বেশিরভাগ ব্লগ সাংবাদিকতার একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে। একজন দায়িত্বশীল ব্লগার নিজের এলাকার সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক লেখা ব্লগে আপডেট করেন বা করে থাকেন। অনেক সময় কোন খবরের শিরোনামের উপরও ব্লগার তার মতপোষন করে লিখে ব্লগে পোস্ট করে থাকেন। আবার কেউ কবিতা লিখেন। কেউ ইতিহাস লিখেন। কেউ সাহিত্য নিয়ে লিখেন। কেউ আবার ছোটগল্প ও রম্য লিখে ব্লগে পোস্ট করেন।

শব্দনীড় বাংলা ব্লগ:
তবে আমার মনে হয়, আমাদের এই স্বনামধন্য শব্দনীড় বাংলা ব্লগের জন্মকাল ২০১০ সালের নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ। ব্লগে প্রথম পোস্ট করেছিলেন, সম্মানিত লেখক মুরুব্বী। লেখার শিরোনাম ছিল, “পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল!” পোস্টে মন্তব্য দানকারী ছিলেন, সম্মানিত লেখক মামুন। এপর্যন্ত শব্দনীড় বাংলা ব্লগে পোস্টের সংখ্যা ৭৭৮১টি। সর্বশেষ পোস্টের শিরোনাম, “আমার দেখা ব্লগ ব্লগার ও ফেসবুকে শব্দনীড় ব্লগ পেইজ!”

ব্যক্তিগত:
আমি এই স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগে নিবন্ধিত হয়েছি, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসের ৬ তারিখ। পোস্ট করেছি আগস্ট মাসের ৭ তারিখ। লেখার শিরোনাম ছিল, “আমি রাত জাগা পাখি!” মন্তব্য পড়েছিল ৬+৬=১২টি। আমার নগণ্য লেখনীয় পোস্টে ৫জন সম্মানিত লেখক-লেখিকার করা মন্তব্যের উওর দিয়ে গিয়েই হয়তো এই স্বনামধন্য শব্দনীড় বাংলা ব্লগের মায়াজালে আটকা পড়েছি। মনে হয় আর কখনো শব্দনীড় থেকে আড়াল হতে পারবো না।

আমার চেয়ে আরও হৃদয়বান ব্লগার এই শব্দনীড়ে আরও অনেক আছে। তাঁরা প্রতিদিন নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে শব্দনীড় ব্লগে লিখে যাচ্ছেন, পোস্ট করে যাচ্ছেন। কিন্তু আমি অধম শুধু সময়ের অভাবে এই স্বনামধন্য শব্দনীড় বাংলা ব্লগে নিয়মিত হতে পারছি না। কারণ, আমি একজন খেটে খাওয়া মানুষ, তাই। তবে আমার হাতে থাকা ব্যবহারিক মোবাইল থেকে প্রতিদিন কয়েকবার ব্লগে উঁকি মারি। সবার পোস্ট ফলো করি। সময়ের অভাবে পোস্টে মন্তব্য করতে বা দিতে পারি না। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত!

ফেসবুকে শব্দনীড় বাংলা ব্লগ:

শব্দনীড় বাংলা ব্লগে আমার লেখা প্রকাশ হওয়ার পর আমি ফেসবুকে নিজ টাইমলাইনে শেয়ার করি। একসময় ফেসবুকের সার্চ বক্সে শব্দনীড় লিখে সার্চ করে শব্দনীড় বাংলা ব্লগ দেখতে পাই! মনে মনে খুবই আনন্দিত হলাম। আনন্দিত হলাম এই কারণে যে, বর্তমানে অনলাইনভিত্তিক নিউজ, ব্লগ সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নিজস্ব পেইজ থাকে। যার কারণ হলো সাইটগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ানো। ফেসবুকে শব্দনীড় বাংলা ব্লগের নিজস্ব পেইজ থাকা মানে ব্লগের পোস্ট বা ব্লগারদের লেখায় পাঠক সংখ্যা বাড়ানোই এর মূল লক্ষ্য।

দুঃখ:
শব্দনীড় ব্লগ টিম ব্লগের সমস্ত পোস্ট অটোমেটিক ফেসবুক পেইজে শেয়ার হচ্ছে। আমরাও শব্দনীড় বাংলা ব্লগে লেখালেখি করছি, পোস্ট করছি, পাঠক সংখ্যার দিজে নজর রাখছি, মন্তব্যের দিকে দৃষ্টি রাখছি আমরা কিন্তু সবাই বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহার করছি। কেউ কেউ নিজের প্রকাশিত পোস্ট ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করছে। পোস্টের পাঠক সংখ্যা দিকে তাকিয়ে থাকছে।

অথচ ফেসবুকে থাকা শব্দনীড় বাংলা ব্লগ পেইজের দিকে কেউ একটি নজরও দিচ্ছি না। শব্দনীড় বাংলা ব্লগ ফেসবুক পেইজে থাকা নিজের পোস্টের দিকেও কেউ নজর দিচ্ছে না, লাইক দিচ্ছে না, দুটি শব্দ বিশিষ্ট বাক্য লিখে মন্তব্যও করছে না।

এসব দেখে সবই ভালো লাগে, তবুও দুঃখ শুধু এখানেই থেকে যায়। দুঃখ থাকবে না সেদিন, যেদিন দেখবো ফেসবুকে শব্দনীড় বাংলা ব্লগ পেইজে ব্লগ থেকে শেয়ার হওয়া প্রতিটা পোস্টে সবার লাইক কমেন্ট দেখবো। তখন ব্লগে থাকা পোস্টগুলোর পাঠক সংখ্যাও অনেকাংশে বেড়ে যাবে। ব্লগের সুনামও বাড়বে।
পরিশেষে সবাইকে ধন্যবাদের সাথে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!

r:আমার দেখা ব্লগের সাড়ে তিন বছরঃ ব্লগারদের ধরণ-

আমি নিজে বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরিয়া। এই বেশ একটা সময়ে নানা ধরনের ব্লগারের দেখা পাইয়াছি। তাহাদের নানা ধরণ লইয়াই আজকের পোষ্ট!

বাংলা ব্লগে মোটামুটি পাঁচ ধরনের ব্লগার আছেন। (মতান্তরে ছয় ধরনের)। যাহারা সবাই নিজ নিজ স্থান থেকে ব্লগে উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে যাইতেছেন।

১. আম জনতার ব্লগারঃ
ইহারা রেগুলার পোষ্ট করিয়া থাকেন, কখনো দিনে দুইটা কিংবা তিনটাও হইয়া যায়। অন্যের ব্লগে মন্তব্য করিয়া থাকেন, নিজের ব্লগেও মন্তব্যের জবাব দিতে বিলম্ব করেন না। খুঁজে খুঁজে অন্যের পুরানো লেখায়ও মন্তব্যে করেন। ইহারা মোটামুটি আমুদে, তেমন কোন কাজকর্ম ইহাদের থাকে না বলে ইহারা সারাদিন ব্লগে পড়ে থাকতে পারেন।

২. জনতার মাঝে নির্জনতার ব্লগারঃ
ইহারা শুধুমাত্র নিজের পোষ্টে মন্তব্য পেলে অমনি ধরে সেটাতে উত্তর দেন। অন্যের পোষ্টে মন্তব্য করেন না। ইহারা এক সময়ের সেলিব্রেটি ব্লগার ছিলেন, তবে এক্ষন আর তাহাদের ব্লগে মাক্ষীও বসেন না।

৩. উদাস ব্লগারঃ
ইহারা যে কবে কোনদিন ব্লগে লগিন দিয়েছিল ভুলিয়া যান, যখন মনে হয় অনেকদিন ব্লগে যাওয়া হয় না তখন পোষ্ট দিয়ে সাথে সাথেই আবার লগ আউট করিয়া দেন এবং ইহা নিশ্চিত থাকে যে আগামী ঈদের চাঁদ দেখিবার পূর্বে তাহাদের মুখ আর দেখা যাইবে না।

৪. ওয়াচম্যান ব্লগারঃ
ইহারা সারাদিন সারারাত ব্লগে লগিন দিয়ে থাকেন– কিন্তু না কোন পোষ্ট করেন, না কোন মন্তব্য করেন- না কারও লেখায় লাইক দেন ! ইহারা যে কাহার উপর এমন অভিমান করিয়া থাকেন আর কে যে আসিয়া উহাদের রাগ ভাঙ্গাইবেন তাহা কেহ না জানে।

৫, আপদকালীন সময়ের ব্লগারঃ
ইহাদের নাম যেমন উদ্ভট হয় কাজকর্মও তেমন উদ্ভট হয়। সারা বছর এদের কোন হদিস থাকে না, কিন্তু যদি দেখা যায় যে ব্লগে কোন ধরনের কোন ক্যাচাল লাগিয়াছে তাহলেই কেবল ইহাদিগকে দেখা যায়। এরা যে কে কার পক্ষ হয়ে কথা বলে সেটাও বোঝা দায় ! ইহারা যে মাল্টিধারী ব্লগার তাহা বুঝিতে রকেট সায়েন্স পড়িতে হয় না।