খ. ইসলাম এর সকল পোস্ট

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও গণতন্ত্র

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে জমে উঠছে আকর্ষণীয় দ্বৈরথ,
দুরন্ত পেস এটাক আর মায়াবী স্পিনের আক্রমণ সাজিয়ে
কখনো বোলারের ইনসুইং, কখনো আউট সুইং বা কাটার,
জবাবে ব্যাটসম্যানের বুক চেতানো অফ, অন ড্রাইভ, হুক, পুলের শৌর্য !
স্ট্যাম্পড, কট বা বোল্ড আউটের বিপরীতে সীমানা ছাড়ানো ছয় বা চার,
দর্শক উত্তেজনার পারদ চড়ায় প্রতি পলে পলে।
সম শক্তির দ্বৈরথে এইতো হয়, ঘাত প্রতিঘাতেই আসে সাফল্য,
শক্তির নিত্যতা সূত্রের মতো অমোঘ নিয়মের ব্যতিক্রম শুধু এই দেশে !

শব্দহীন স্বাধীনতার শঙ্খনীল কারাগারে বন্দি অহর প্রহর,
অনির্বাচিত শাসনে জব্দ সব ভিন্নমত, উচ্ছল কলকণ্ঠ I
প্রতিবাদী যৌবন পলাতক দেশের বিস্তীর্ণ পথ প্রান্তরে,
ক্ষমতাসীন রাজনীতির বাইশ গজে সমশক্তির কোনো দ্বৈরথ নেই I
প্রতিপক্ষের ধারালো বোলিং অস্ত্র নেই, আক্রমণ প্রতি আক্রমণের শংকা নেই,
তবুও ভয়াল কোন ইনসুইংয় শংকায় অষ্টপ্রহর কাপে সরকারি ব্যাটসম্যান !
শুভবাদের মিডিয়াম পেসেই একের পর এক সরকারি উইকেট পতন,
নীতি, ন্যায়, শুভ ও সত্যের উইকেট হারিয়ে ইনিংস চলে খুঁড়িয়ে… I

উদার গণতন্ত্র, সুশাসন আর উন্নয়নের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিশ্বকাপে
এমন দল হয় কি কখনো বিজয়ী? পেতে পারে কি কোনো ফেয়ার প্লে ট্রফি ?

মাইডাস টাচ

পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার ‘মাইডাস টাচ’ বাজেট স্পর্শে,
ক্ষুধা কাতর মানবাত্মার হলো কি কোনো পয়মন্ত প্রাক্কলন?
কথা ছিলো মধ্যম আয়ের এই দেশে বাজেট স্পর্শে
ক্রমশ বিলীন হবে অবিনাশী দারিদ্র্যের প্রলয় অশ্রুজল I
অতলান্ত উন্নয়নের জোয়ার, সুখ সমৃদ্ধির প্লাবনে দেশ আমার,
হবে দূর প্রাচ্যের কোনো সিংহ নগরী বা নিখোঁজ আটলান্টিস !
কিন্তু ‘কেউ কথা রাখেনি’-র বরুনার মতোই ধোকা দিয়েছে কেউ,
অপ্রাপ্তির ডালি সাজিয়ে ফোটা গোলাপে আজ মৃত শবের গন্ধ!
সোনার ধানের সোনালী খাঁচায় বন্দি কৃষক সোনালী আগুনে অঙ্গার,
নিষিদ্ধ নৈবদ্য বাজিয়ে বুঝি চলবে অন্ত্যজের অন্তহীন আরতি !
নুন আন্তে পান্তা ফুরোনোর পুরোনো গল্পেই রাত কাবার,
ধুর শালা, কে শোনায় আবার সোনালী ভোরের কল্পগল্প!
‘মাইডাস টাচ’ বাজেট স্পর্শেও অপাঙতেয় আমি অন্ত্যজ অস্তিত্বে,
অস্তিত্ব বিনাশী পরিচয়ে হয়ে গেছি রাজা মাইডাসের গড়া নিস্প্রান স্বর্ণমূর্তি !

*********
ইংরেজি ফ্রেজ ‘মাইডাস টাচ’ মানে হলো যে স্পর্শে সব কিছু সোনা হয় । গ্রিক মিথলজির রাজা মাইডাস দেবতার বরে যা স্পর্শ করতেন তাই স্বর্ণ হয়ে যেত। একদিন ভুল করে রাজা মাইডাসের স্পর্শে তার একমাত্র মেয়ে প্রাণহীন সোনার মূর্তিতে পরিণত হন । সেই শোকে রাজা মাইডাস মৃত্যুবরণ করেন I

বিলেটেড হ্যাপি নিউ ইয়ার

ইংরেজি নববর্ষে তোমাকে শূন্য ই-কার্ড কেন?
বর্ষ বরণের উত্তাল রাতে পাইন বনের মাথার ছিল কোমল চাঁদ।
তোমাকে কার্ডটা পাঠাবো বলেই সেই মায়াবী রাতে,
ল্যাপটপ খোলা …তারপর অবাধ্য মনে কত যে স্বপ্ন আঁকা!
ইচ্ছে করছিলো নবম সিম্ফোনির মতো সুর উঠাই কি বোর্ডে,
তোমার কার্ডে লিখি পেত্রাকের মতো কোনো সনেট!
রবি ঠাকুর থেকে হাল আমলের নির্গুণ কবির কবিতার গুঞ্জন মনে,
কিন্তু এক দিন আগে খুন হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের শোকে কিবোর্ড হলো স্তব্ধ !
আমার মধ্যরাত, তোমার সকালে আছে এখন আলোর মিছিল?
কাঁচা কাঁচা রোদে ভেজা সকাল আসে কি দেশে এখনো?
দেশের নীল আকাশে নেই কোনো সাদা মেঘের ভেলা,
আকাশ জোড়া ঘন কালো মেঘ ঘিরে ধরেছে দেশ।
উচ্চকণ্ঠ ব্যক্তি পূজা আর স্তবে অভ্যস্ত চারদিক,
শুধু নিভৃতে নৈঃশব্দ্যে কাঁদে সত্য ও সুন্দর।

তোমার কার্ডে লিখতে চেয়েছিলাম তাই মিথ্যা মুক্ত জীবনের সার সত্য,
‘পরাজিত গণতন্ত্রেও আমার বিধ্বস্ত মনের অস্তিত্ব করেছো স্বাধীন।
আকাশের ব্যাপ্তিতে ছড়িয়ে দিয়েছো আমার ভালোবাসা স্বপ্ন,
পৃথিবীর ব্যাসার্ধ পেরিয়ে অসীম করেছো ভালোবাসার মানস রাষ্ট্র ।
আমার ভালোবাসা কল্যাণ রাষ্ট্রের জনক, সর্বকালের সেরা মানবী
গলা চিপে ধরা গণতন্ত্রের নাভিশ্বাসেও তোমাকে নবর্ষের শুভেচ্ছা’।
কিন্তু জানোতো সাংবিধানিক বাধ্যকতায় নিষিদ্ধ,
আমার এই বিশুদ্ধ ভালোবাসা উচ্চারণ !
ফেসবুকে তোমার লাইক ধরে স্থায়ী অস্থায়ী সব ঠিকানায় যদি
পৌঁছে যায় সাতান্ন ধারার হুলিয়া নিয়ে জেল,জুলুম বা মৃত্যু!
গুম, খুনের অবিরল জলের ধারায়,তোমাকে হারাবার অশ্রুবন্যায়
কেমন করে আমার নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা ভেলা ভাসাই, বলো?
সেই আশংকায় শূন্য ই-কার্ড তোমার ঠিকানায়,
স্যরি, বিলেটেড হ্যাপি নিউ ইয়ার!

(এই রকম একটা কবিতা বছর তিনেক আগে লিখেছিলাম দেশের কিছু কষ্টকে ভেবে। সেই একই কষ্ট থেকে এই কবিতাও । এছাড়া গত কয়েক দিনে ব্লগে প্রিয় ব্লগারের চমৎকার কিছু ভালোবাসার কবিতা দেখে আমার একটা ভালোবাসার কবিতা লিখার ইচ্ছে হয়েছিল । আমার যে হতচ্ছড়া কবিতার হাত,মাথা। ভালোবাসার কবিতা লিখতে গিয়ে কি ছাইপাশ হলো কে জানে ! তবুও এটাই কিন্তু আমার ভালোবাসার কবিতা সৌমিত্র দা, রিয়াদি,নাজমুন আপা আপনারা যাই বলুন না কেন!)

সুশিক্ষার কারিগর সেই মাস্টার সাহেব কই?

ইদানিং খুব মনে পরে,
ছোট বেলায় পাঠশালায় পাঠ্য আম চুরির গল্পটা।

গাছের নিচে পরে থাকা একটি আমি কুড়িয়ে নিয়েছিল
ছোট আনোয়ার, আমবাগানের মালিকের অজান্তেই।
চুরির অপবাদ, মাস্টার সাহেবের বেত্রাঘাত, সহপাঠীদের গঞ্জনা
আম কুড়ানোর কোনো সুখ পায়নি আনোয়ার।
মাস্টার সাহেব শিক্ষা দিয়েছিলেন তাকে,
পরের জিনিস না বলে নেওয়া চৌর্যবৃত্তি, অন্যের অধিকার হরণ।
ঈশ্বরও হন রুষ্ট গর্হিত সে অন্যায়ে।
মাস্টার সাহেবের সুশিক্ষায় দিব্য হয়েছিল আনোয়ারের জীবন।
আম চুরির অপবাদে অভিযুক্ত ছোট আনোয়ারই
একদিন কুড়িয়ে পাওয়া ধান বিক্রির
হারানো হাজার টাকার থলে ফিরিয়ে দিয়েছিলো শোকাস্তব্ধ
মালিক, ক্ষুদ্র কৃষক আজিজ মিয়ার হাতে !

ষোল কোটি জনগণের ভোটের অধিকার কুড়িয়েছে প্রশাসন ও সরকার,
নিপুন কারিগরিতে ভোট দাতার অজান্তেই!
সাজানো নির্বাচনের অসত্য, অকথ্য শপথে,
আবারও বৈধতা খোঁজে সরকার।
গণতন্ত্রের শব দাহের প্রজ্বলিত আগুনে উদ্ভাসিত
সরকার দিব্য হবে কি কোনো সুশিক্ষায়?
ভোট কুড়ানো নির্বাচনে পাওয়া, জনগণের হারানো শাসন থলে,
দেবে কি সরকার তুলে ভোটের প্রকৃত মালিকের হাতে?
গুপ্ত ঘাতকের জিঘাংসা পীড়িত,স্তম্ভিত বাংলাদেশে,
‘ভোটাধিকার হরণ গর্হিত’ সেই সত্য শিক্ষা দেবার পাঠশালা কোথায়?
আছে কি কোথাও লুকিয়ে এই ব-দ্বীপের সবুজ বন, বৃক্ষের আড়ালে
সরকারি চরিত্র দিব্য করার কারিগর,সেই মাস্টার সাহেব?

গুগল স্ট্রিট ম্যাপ

প্রবাসের জীবন জঠরে দিনগুলো যায় গুগল স্ট্রিট ম্যাপ দেখে,
আকাশের ঠিকানা থেকে তোলা পৃথিবীর কত ছবি !
আটলান্টিকের এপার ওপর কসমোপলিটান নিউয়র্ক.
লন্ডন, প্যারিস, রোম, স্টকহোম কত শহর!
প্রশান্ত পারের লস এঞ্জেলস পার হয়ে দৃষ্টি ফেরাই অন্য পারে
সব ছাড়িয়ে দৃষ্টি খোঁজে ফেরে আমার প্রিয় দেশটা।
ছোট বেলা থেকে চেনা জানা দেশটার গ্রামীণ সবুজ,
হলুদের চাদোয়া ঢাকা ধান, সর্ষের ক্ষেত, রাঙা মাটির পথ!
মফস্বলের ব্যস্ত সরু রাস্তা, পলেস্তরা খসে যাওয়া বাড়ি,
রিকশা সেই আগের মতোই আছে।
রাজধানীর এলো পাথাড়ি উড়াল সেতু, স্কাইস্ক্র্যাপার,
বদলে যাওয়া বিমানবন্দরের নাম প্রথমেই চোখে পরে।
অভিজাত পাড়ার প্রশস্থ রাজপথ, সারি সারি আলিশান বিল্ডিং,
জাক জমকপূর্ণ সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বঙ্গভবনের জেল্লায়
এখনো চোখ জুড়ায়।
আহা মধ্যম আয়ে উন্নীত আমার জন্মভূমি !

আমার চোখ খোঁজে বাংলাদেশের শহর, বন্দরে কিছু হারানো মুখ,
যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে উচ্চকিত হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ।
ঢাকা ইউনিভার্সিটির উচ্ছল দিনগুলোর সৃষ্টি কিছু বুক চেতানো যুবক,
তাদের খোঁজে আমার এই চোখ গুগুল স্ট্রিট ম্যাপের নিরপেক্ষ ঠিকানায়।
তাদের শাব্দিক উচ্ছাসে মুখরিত হয়না দেশের কোনো
নগর, রাজপথ বা গ্রামীণ সবুজ।
ছদ্মবেশী গণতন্ত্রের আড়ালে কালো মেঘের কালবৈশাখী আজ
আইনশৃঙ্খলা ও বিশেষ বিশেষ বাহিনী।
অপশাসনের গুম, খুনের কালবৈশাখীতে,
ঝরে গেছে সেই অপাপবিদ্ধ কলিগুলো বড় অসময়ে।
মা’র অশ্রুজল আজও বয় বন্যা ধারায় না ফেরা খোকার খোঁজে।
গাঙ্গেয় উপত্যাকার এই বৃহত্তম ব-দ্বীপের সবুজে, অলি গলিতে,
কোথাও তাদের কোনো খোঁজ নেই, তাদের শবের গন্ধ নেই!
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সুবোধ নিষ্পাপ প্রেসনোটে বিশ্বাসহারা মন,
তাই গুগুল স্ট্রিট ম্যাপে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খুঁজি তাদের ঠিকানা।
কোনো ভগ্ন পরিত্যাক্ত কবরস্থানেও যদি মেলে ভাঙা তাদের নাম ফলক !

কোনো একটি পবিত্র গোলাপের সন্ধানে

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের।
যে গোলাপ মধুকরের গুঞ্জন শুনবে না,
অসূর্য্যস্পর্শা কোনো আধার যার পাপড়ি ছোঁবে না।
শুধু রাতের শিশির ঝরবে যার গায়ে
মুছে দিতে দিনের ধুলো, ধোয়া, ক্লান্তি এবং ক্লেদ।

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের ।
যে গোলাপ স্বৈরাচারের গলায়
শুভেচ্ছা মালা হয়ে ঝুলবে না।
কোনো স্বৈরাচারের আগমনী তিথি,
যার সৌরভে হবে না সুরভিত কোনোদিন।

দেশে আজ অজস্র গোলাপের ছড়াছড়ি,
কিন্তু আজও সে গোলাপ কোনো কলি গর্ভে ধরেনি।
এই হতভাগ্য দেশের কোনো বনে বা বাগানে ফোটেনি,
রাজধানীর অভিজাত ফুলের দোকানেও অদৃশ্য সেই গোলাপ।
গোলাপ আজ ব্যক্তি পূজা, স্তব আর বাণিজ্য উপকরণ,
মিথ্যা নেতৃত্বের স্তবগানে গোলাপ হারিয়েছে তার পবিত্র সত্তা।

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের।
দেশের সব গোলাপ হারিয়েছে তার সব সৌরভ, গৌরব,
সারা দেশ খুঁজে আমি পেলাম না একটিও পবিত্র গোলাপ।
যার গায়ে আঁধারের ছায়া নেই, ক্লেদাক্ত বৃষ্টির ছোয়া নেই,
যা দিয়ে করি তোমার ভালোবাসা স্তব।

অবৈধ

ব্যভিচারীর লালসার স্বীকার লাঞ্চিত কোনো নারীকে,
অবৈধ সন্তান প্রসবের অভিযোগে অভিযুক্ত কোরোনা কখনো।
ব্যভিচারীর ক্ষমতা দম্ভের উল্লাস, লালসা পূরণের তৃপ্তিতে নয়
লাঞ্চিত নারীর নিঃসীম লজ্জা, অশ্রুজলেই লুকানো সভ্যতা।
লজ্জার চাদর ছাড়া সভ্যতাহীন জীবন,
মানুষের নয় স্বেচ্ছাচারীর,গা জোয়ারি হিংস্র শ্বাপদের জীবন।
ক্ষমতা দম্ভে লালসা উন্মত্ত কোনো স্বেচ্ছাচারিকে তাই,
খামোশ বলে রুখে দাঁড়াবার সময় হয়েছে এবার।

বিজয় মাসে গনতন্ত্র, সুশাসনের চাদরহারা দেশ উলঙ্গ,
ক্ষমতা সম্ভোগে উন্মত্ত শাসকের লালসায় লাঞ্চিত এবং লজ্জিত।
অবৈধ সরকার প্রসবকারী বাংলাদেশের পলি মাটিকে বলোনা ক্লেদাক্ত,
নদীর স্রোতে খুঁজোনা স্বৈরাচারের বীর্যের দাগ।
ইচ্ছে বিরুদ্ধ ক্ষমতা সম্ভোগের উন্মত্ত শাসন বীর্যপাতে,
অবৈধ সরকার প্রসবের লজ্জায় ম্রিয়মাণ দেশের সকল সবুজ।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বপ্নঘাতকের গণতন্ত্রের বধ্যভূমিতে আরো একবার,
বাক, ব্যক্তি, ভোটস্বাধীনতার দাবিতে প্রতিবাদের ফিনিক্স পাখি হোক বাংলাদেশ।

মেসি তুমিই বলো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কেন দরকার …

মেসি, তোমার ফুটবল জাদুতে মুগ্ধ পৃথিবী ।
নিঝুম কত রাত নির্ঘুম কাটে ছয় মহাদেশে,
দেখতে সবুজ মাঠে তোমার অনায়াস, স্বচ্ছন্দ বিচরণ !
রক্ষণ ছিন্নভিন্নকারী তোমার চোখ ধাঁধানো গতি, ড্রিবল
কত সহজে বিজয়ী স্বপ্নের বীজ বুনে সমর্থক মনে !
শেষ মুহূর্তে জালে জড়ানো তোমার রংধনু শটগুলো
কি অপার্থিব উন্মাদনা ছড়ায় গ্যালারি জুড়ে !
যেন স্বয়ং দেবতা বর নিয়ে নেমেছে সবুজ মাঠে।
কিন্তু বলো, পারবে কি সবুজ মাঠে এমন স্বপ্ন মায়া ছড়াতে
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যদি না থাকে?

ধরো, তোমার দিকে মাঠ মসৃন, যেন সবুজ কাশ্মীরি গালিচা,
আর বিপক্ষ দিক যেন পুলিশি রিমান্ডে ক্ষত বিক্ষত
নিহত বিরোধী দলীয় নেতার বেওয়ারিশ কোনো লাশ !
সেই মাঠে সাথে থাকলেও নেইমার ও দুরন্ত এম্বেপে,
মাতাতে পারবে কি গ্যালারি তুমি বা তোমার দল?
আক্রমণে এম্বেকি কি পাবে দুরন্ত অশ্বারোহীর গতি?
নেইমারের মাটিঘেঁষা শটগুলো কি হবে না লক্ষ্যচূত?
সবুজ ক্যানভাসে আঁকা ভ্যান গগের ছবির মতো গোলগুলো
তোমার, পাবে কি তিন কাঠির সঠিক ঠিকানা?
অযোগ্য ব্যবস্থাপনায় আদৌ যায় কি খেলা নান্দনিক ফুটবল?

তেমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়েছে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে,
দলদাস পুলিশ সেজেছে আক্রমণের ঘোড়া ।
ঘরে বাইরে, নগরে বন্দরে অননুমোদিত গ্রেফতার, পুলিশি রিমান্ড,
নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রাপ্য আজ জেল,গুলি,এবং নির্বিচার সন্ত্রাস।
শ্বাপদ হিংস্রতায় ছিন্নভিন্ন ঘর বাড়ি,পোস্টার,নির্বাচনী আশ্বাস,
গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে স্বৈরাচারের দিচ্ছে আজ প্রকাশ্যে উঁকি ঝুঁকি !
যে গণতন্ত্র থাকার কথা ছিলো দেশের সবুজ মাঠে, গ্রামে ও শহরে,
সে গণতন্ত্র আজ মিটি মিটি জ্বলে হয়ে দূর আকাশের শুকতারা ।
তবুও ইসি লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড গড়েছে বলে আনন্দে বাগবাগ,
সিইসি গর্বিত নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে, সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ !

মেসি, বলো এইরকম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে পারতে কি তুমি,
লা লীগার রেলিগেটেড কোন দলকেও হারাতে?

টেন্টালাসের তৃষিত জীবন আজ বাংলাদেশ

দিগন্ত জোড়া সাগর জলে ভাসা জীবন ছিল তোমার
তবুও এতটুকু তৃষ্ণা মেটেনি, টেন্টালাস !
হাত বাড়ালেই সাগর,
তবুও কি দুর্লভ জলহীন তৃষিত এক জীবন কাটলো !
তাই বুঝি হাজার বছর পরে পুনর্জন্ম নিলে টেন্টালাস,
ষোলো কোটি জনগণের প্রতিচ্ছবি হয়ে এই বাংলাদেশে?
নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে জল হয়তো পেতেও পারো একটু,
কিন্তু জল খাবার স্বাধীনতা পাবে কি এই পুনর্জন্মে?
ছদ্মবেশী দেবী কি দেবে এবারও জীবন বাঁচাবার স্বাধীনতা?
করুণার বারিধারায় ভিজবে কি তার জিঘাংসু হৃদয়?

একশো তিপ্পান্ন অনির্বাচিত সাংসদের অবৈধ খুঁটিতে
গড়া দেবীর ক্ষমতার প্রাসাদ।
ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুটেপুটে খেয়েছে সব চেলা চামুণ্ডা,
সুইস ব্যাংকে স্ফীত লক্ষীর প্রসাদ।
দেবী শাসনে উন্নয়নের সুনামিতে নাকি ভাসে নগর বন্দর!
মধ্যম আয়ের দেশে আমজনতার নুন আন্তে পান্তা ফুরোয়।
তবুও চাইনি ছিনিয়ে নিতে দেবীর অবৈধ লক্ষীর ঝাঁপি,
অথবা অবৈধ ক্ষমতার বিলাসী প্রাসাদ।
চেয়েছিলাম শুধু গণতন্ত্রের একটু মৌল আশাবাদ,
চাওয়া ছিল একটা সুষ্ঠু নির্বাচনী আশ্বাস।

সেই সামান্য চাওয়াতেই দেখি দেবীর শাসন উত্তাল,
বিলীন গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচনের মৌল সব চাওয়া।
বিলীন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়বার সব আশ্বাস,
দেবী দুঃশাসনে নির্বাসিত গণতন্ত্র আজ দূর দ্বীপবাসিনি।
সে দ্বীপে যাবার সহজ কোনো ভেলা নেই,
শুধু রক্ত নদীতে নিরন্তর ভেসে চলা।
দলদাস আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা মামলায়,
বিপর্যস্থ বহুদলীয় সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল পথ ও প্রান্ত।
টেন্টালাস, দিগন্ত জোড়া সাগরেও তোমার ছিল তৃষিত জীবন,
গণতন্ত্রের দেবীর সুশাসনেও আমার তৃষ্ণা অধরা গণতন্ত্রের!

তবুও টেন্টালাস, ষোলো কোটি মানুষ তৃষিত জীবন বয়ে চলি,
বিজয়ের মাসে অধরা গণতন্ত্রের গভীর আশ্বাসে।

রূপকথার সেই পাগলা হাতিটা আনো

রূপকথার পাতা থেকে:

রাজপথের দু’ধার উপচে পরছে, উত্তেজিত প্রজাবৃন্দ অপেক্ষমান,
ঐতো রাজহস্তিশালের পাগলা হাতি হয়েছে ধাবমান !
গণনা মতে মানুষের ভীড়ে লুকিয়ে আছে রাজ্যের ভাবী কাণ্ডারী,
পাগলা হাতি খুঁজে নেবে আজ মৃত রাজার সুযোগ্য উত্তরসুরী।
পাগলা হাতি তুলে ছিল পিঠে এক কান্তিমান যুবক,
অতঃপর সুখে শান্তিতে রইলো তারা পেয়ে সুযোগ্য অভিভাবক।

বাংলাদেশ ২০১৮:

স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে আজও
রূপকথার সেই রাজ্য হয়ে আছে বুঝি এই দেশ।
মাথাভারী সরকারি সমাবেশে আছে নখদন্তহীন রাষ্ট্রপতি,
প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী,অনির্বাচিত একশো তিপ্পান্নজন সাংসদ!
অনুগত প্রশাসন,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ তবুও
গুম,খুনের অবিরাম রক্তস্রোত আর অশ্রুজলে প্লাবিত এই সমতল।
স্তাবক গোষ্ঠীর সরকারি ব্যাংক, শেয়ার বাজার লুণ্ঠনের কালো কালিতে
লেখা হয় সর্বস্ব হারানো কোনো অনেক মফিজের আত্মহত্যার ঠিকানা।

দলবাজির নীলদংশনে ধ্বংস শিক্ষা ব্যবস্থা, শাসন ও প্রশাসন,
ধ্বংস নিরপেক্ষ নির্বাচন,জনমুখী প্রশাসনের স্বাপ্নিক চাওয়াগুলো।
ধ্বংস এই দেশে বাক, ব্যক্তি স্বাধীনতার সকল অবশিষ্ট,
কে এই সবুজে শ্যামলে অক্লান্ত বাজায় নিরোর ধ্বংস বাঁশি?
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া একাত্তরের বাংলাদেশে
আজ শোনা যায় কোন পরাজিত স্বৈরশাসকের কলহাস্য?
গণতন্ত্র, বাক ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রত্নতত্বে গড়া বাংলাদেশ যেন
আজ স্বৈরাচারের শ্বাপদসংকুল এক বিচ্ছিন্ন ব-দ্বীপ।

মৃত্যুর আল্পনা আঁকা এই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপই কি আমার দেশ?
এ’দেশেই কি শহীদের রক্তে ভেজা শিমুল ফুটেছিলো কোনো ফাগুনে?
কুয়াশা বেলা শেষে আলোর মিছিল হয়েছিলো কখনো এই পৌষেই?
ভোট স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা কি ছিল বীরশ্রেষ্ঠের স্বপ্ন?
না,যাও তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনো রূপকথার সেই পাগলা হাতিটাকে।
এই অগণতান্ত্রিক, অনির্বাচিত সরকার বাতিল করে,
জনসংখ্যার ভারে নুব্জ্য ষোলো কোটি মানুষের মেলা থেকে-
খুঁজে নিক সে দেশ পরিচালনার কোনো সুযোগ্য উত্তরসুরী।

(আমি ভেবেছিলাম একবার আমার কবিতাটা উৎসর্গ করি প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। কিন্তু ভরা জ্যোস্নার একটা পূর্ণিমা পেতেওতো একটা উজ্জ্বল চাঁদ লাগে ! তাঁকে উৎসর্গের করার মতো কবিতা লেখার হাত কোথায় আমার ? তাই ইচ্ছেটা চেপেই রেখেছিলাম।কিন্তু আজ বড়োদিনে তার চলে যাবার খুব কষ্টের খবরটা পেলাম। তাই আমার সব লজ্জ্বা চেপে রেখে এই কবিতায় মনে করছি শ্রদ্ধাভাজনেষু প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে।)

**এই কবিতার মতো একটা কবিতা বছর তিনেক আগে অন্য একটা ব্লগে লিখেছিলাম। অনেকটা একই শিরোনামে। অনেক পরিবর্তন করে আবার এই কবিতাটা লিখলাম। খুবই কম কিন্তু তবুও অল্প কিছু অংশ একই থাকলো।  

নেংটো রাজার বাংলাদেশ

ফটো : ইন্টারনেট (প্রথমআলো)

রাজা নেংটো হয়েই হাঁটছিল রাজপথে,
সবাই কিন্তু দেখতেও পাচ্ছিলো তার নগ্ন পদচারণা !
তবুও সবাই চিৎকার, উচ্ছাস উল্লাসে বাগবাগ,
তোষামুদেরা সব সুর করে বলছিলো,
আহাহা কি সুক্ষ, কি অপূর্ব সুন্দর, রাজকীয়
আমাদের রাজা মশাইয়ের পরিধেয় বস্ত্র !
সেই জন সমাগমে কেউ ছিল মোসাহেব,
উচ্ছন্ন ভোগী, কেউ সুবিধাবাদী কেউবা
ক্ষমতা বলয়ের থাকা ছোট উপগ্রহ বিশেষ।
কেউবা সত্যি সত্যি জিম্মি রাজরোষের,
কেউ কেউ হতে পারে ভীত বা আত্মবিশ্বাসহীন।
কিন্তু এই ক্লীব প্রজাবৃন্দের ভিড়ে
নিজের আত্মা বিক্রি না করা একটি শিশুও ছিল,
সহজ সরল সত্যবাদী একটি দেবশিশু।

রূপকথার সেই গল্পটা কিন্তু সবারই জানা।
রূপকথার সেই রাজ্য যেন আজকের বাংলাদেশ,
ছদ্মবেশী স্বৈরাচার শাসনে গণতন্ত্র উলঙ্গ আজ !
বসনহীন গণতন্ত্রের গা থেকে একে একে খুলে গেছে
বাক ব্যক্তি স্বাধীনতার কারুকার্যময় পোশাকগুলো সব।
সবাই দেখছে যে দেশে গণতন্ত্র মৃতপ্রায়
সরকারের কথায় কাজে অবৈধ স্বরাচারের নিনাদ।
ইসি, পুলিশ, প্রশাসন, বিচার বিভাগ সবাই ব্যস্ত তাঁবেদারিতে।
উলঙ্গ গণতন্ত্রে ধ্বংস বাক্ ব্যক্তি স্বাধীনতা,
সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা আর সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান।
তবুও রূপকথার স্তাবকবৃন্দের মতই আজ
জ্ঞানী গুণী সুশীল সমাজের কেউ কেউ ভাব করছে
যেন গণতন্ত্র, সুশাসনের উন্নয়ন সুনামিতে
জনগণের জীবনে চলছে সুখের বানভাসি!

কিন্তু এতো জ্ঞানী গুণী সুশীল আর উচ্ছিষ্টভোগীর ভিড়ে
সেই দেবশিশুটি কোথায় ?
উলঙ্গ গণতন্ত্রের গায়ে সুশাসনের ছদ্ম লেবাস পরাবার কারিগর
শাসক গোষ্ঠীর সামনে মোসাহেবীর লেজুড় ছিড়ে,
দেশের জনারণ্যে থেকে সেই শিশুটি নির্ভয়ে বেরিয়ে আসুক।
সহজ কণ্ঠে শাসক গোষ্ঠীকে জিজ্ঞেস করুক,
বাক, ব্যাক্তি স্বাধীনতাহীন দেশের উলঙ্গ গণতন্ত্রের গায়ে
বহুমতের কারুকার্যময় রেশমি কাপড়টা কোথায় গেলো?

—শ্রদ্ধাভাজনেষু কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আপনি এখনো লিখলে আমি আপনার লেখা এই কবিতাটা পড়তাম (জানি এই কবিতাটা তখন আরো মুগ্ধ কাব্য হতো)!

দ্বিতীয় পর্বের স্বাধীনতা

বাংলা দেশের স্বাধীনতার গল্পটা কিন্তু সবাই জানে,
তবুও সবাই ভুলে যায়, বার বার ভুলে যায় গল্পটা।

কোটি মানুষের মুখের ভাষা স্তব্ধ করতে
কায়েদ-ই-আজমের শব্ধ সন্ত্রাস.
মৌলিক গণতন্ত্রের মোড়কে ছিনতাই স্বাধীনতা!
তখনো সরকার সমর্থক কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু মিডিয়া,
তারস্বরে বলেছিলো বাহ বাহ্ একেইতো বলে গণতন্ত্র
যেন সাক্ষাৎ ‘অফ দা পিপল, ফর দা পিপল বাই দা পিপল’!
মৌলিক গণতন্ত্রের আদলে রুদ্ধশ্বাস শাসন,
ছদ্মবেশী স্বৈরাচারের শিকল ভাঙতে
দেশের সবুজ মাঠে,নগরে বন্দরেই ছিল কিন্তু প্রস্তুত,
স্বাধীনতার ডাকে পাগলপারা নির্ভিক জনগণ।
নেতা জেলবন্দি, অন্যরা পলাতক
তবু স্বাধীনতার সূর্য উঠেছিল তাদের বুকের লাল আকাশ চিড়ে।

স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে আজও
দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা ছিনতাইকরি শাসক শ্রেণীর গলায়,
মৌলিক গণতন্ত্রের গতবাধা গান !
সবাই দেখতেই পাচ্ছে প্রকাশ্য,নগ্ন পক্ষপাতিত্ব করছে
ইসি, সরকার ও প্রশাসন যন্ত্র ।
তবু কেউ কেউ আগের মতোই বলছে
কি চমৎকার গণতন্ত্র, বহুদলীয় নির্বাচনের আমেজ দেশে !
এর মধ্যে কেউ দলদাস, কেউ দলবাজ,
কেউ ব্যাংক লুটেরা দস্যু,কেউ কৃপাপ্রার্থী,
কেউ আসলেই ভীত র্যাব,পুলিশ,হেলমেট বাহিনীর !
দশ বছরের সীমাহীন অত্যাচারে মুমূর্ষু
কারো কারো কাছ থেকে এই চিন্তা অভাবিত নয় ।

কিন্তু প্রায় অর্ধশতক আগে গর্জে ওঠা
সেই নির্ভিক জনগণ ও তার উত্তরাধিকার,
আজো আছে দেশের ধুলো জড়ানো মাঠে,ঘাটে,শহরে ও বন্দরে।
বাক,ব্যক্তি স্বাধীনতা আর ভোট অধিকার রক্ষার
এবার পৌষের যুদ্ধে,
তারা যদি গর্জে উঠে আরেক বার?

ভালোবাসা নির্বাচন ২০১৮

সরকারি, বেসরকারী, গোপন, প্রকাশ্য জরিপের ভিত্তিতে
জানি, তোমাকে ছাড়া বহতা ব্যস্ত জীবন হবে স্তব্ধ নদী।
কোনো ভালোবাসা সেতু নির্মিত হবে না, স্যাটেলাইট উড়বে না,
বেশুমার লুটপাট হবে ভালোবাসার ব্যাংক, স্টক মার্কেট।
তোমার বৈধতা ছাড়া হতে পারে মধ্যম আয়ের হৃদয় উন্নয়ন স্থবির,
মনের ব-দ্বীপ হানা দিতে পারে ভালোবাসা চেতনা বিরোধী গোষ্ঠী।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় তাই দিতেই হবে
বছর শেষে, বহু প্রতীক্ষার ভালোবাসা নির্বাচন।

তোমাকেই মনোয়ন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী
এমন কি চাও যদি নখদন্তহীন রাষ্ট্রপতি পদ -তাতেও।
মনোয়ন বোর্ডে শুধু রেখেছি নিজেকে,
পকেটস্থ ইসি, সিইসি, কমিশনার, ও সব নির্বাচনী যন্ত্র।
কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী, বিদ্রোহী প্রার্থী বিহীন সাজাবো সাধের নির্বাচন,
চাইনা কোনোই বিরূপ শব্দ সন্ত্রাস।
তোমার মনোয়ন কনফার্ম হৃদয় রাজধানীর সব আসনেই,
এসো, নির্বাচিত হও বিনা ভোটে, ‘হে ভালোবাসা জননী’।

তোমাকে পেতে নির্বাচনের প্রাক্কালে নিষিদ্ধ সব নাগরিক অধিকার,
বাক্ ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকুক অন্তরীণ স্বৈরাচারী কারাগারে।
ঐক্যমত্য পোষণের নাগরিক শাসন বাতিল ঘোষিত আজ,
যদি সোনার হরিন হারায় জবাবদিহিতার নিষ্পেষণে!
তাই সাবধান, বিন্দুমাত্র বিক্ষোভে হবে নির্বাচন ভণ্ডুল,
দখল নেবে সেনাবাহিনী, হেলমেট বাহিনী, দলীয় দস্যু এই সতেজ ব-দ্বীপ।
তাই এসো বাহুডোরে, অবাধ্য মরুভুমিসম তৃষিত হৃদয় আমার,
নজির বিহীন উন্নয়নে আরো পাললিক করো ভোটারবিহীন নির্বাচনেই।