জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব এর সকল পোস্ট

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সম্পর্কে

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলছিয়া নামক গ্রামে ১০ ই জুন ২০০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা গুলো বাস্তব ধর্মীয়। লেখা তার নেশা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কবিতা লিখতে। * চরম মুর্খ সেই যে শিক্ষা অর্জন করে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধ ভাবে বলতে পারে না । * আমার কাছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ।

মাগো তুমি

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

তোমার গর্ভে জন্ম আমার
তুমি নয়ন তারা,
তোমায় ছাড়া আমার জীবন
ভীষণ ছন্নছাড়া।

মাগো আমায় ছেড়ে আছো
ওই না বহু দূরে,
সেথায় আমি চাই রে যেতে
সুদূর অচিন পুরে।

তোমার কথা মনে পড়লে
জলে ভাসে আঁখি,
তোমায় ছাড়া একলা আমি
ক্যামন করে থাকি।

মাগো তুমি চোখের মণি
তুমি সকল আশা,
তোমায় ছাড়া আমার মুখে
থাকে না তো ভাষা।

জীবন নদে ভাসতে তুমি
দিলে মাগো শিক্ষা,
তোমার কাছে পেলাম আমি
নানা কাজের দীক্ষা।

কোথায় আছো ক্যামন আছো
ইচ্ছে জাগে মনে,
দিবানিশি তোমার কথা
ভাবি ক্ষণে ক্ষণে।

রচনাকালঃ
০১/০৮/২০২১

মুক্ত জীবন

৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

বিদায় নিচ্ছে অতিমারী
হাসছে বসে সব,
প্রাণে লাগছে সুখের ছোঁয়া
শুধু কলরব।

দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার ওই
এবার হচ্ছে শেষ,
মুক্তভাবে ঘুরবো তবে
এই না সুখের দেশ।

সবার সাথে আগের মতো
হবে চলাচল,
মুক্ত জীবন সুখে থাকা
মনে দৃঢ়বল।

চিন্তা ভাবনা গুলো আজই
দুর হবে সব ভাই,
সুখের সাথে করমর্দন ওই
সুখটাকে তো চাই।

মনের ভিতর এলোমেলো
চিন্তা না তো রয়,
সুখের উল্লাস দুখের ব্যথা
শুধু জীবন ক্ষয়।

রচনাকালঃ
২১/০৯/২০২১

রংধনু

৪+৪/৪+২

রংধনুর ওই সাতটি রঙে
আকাশ সাজে তবে,
বৃষ্টির শেষে আকাশ থেকে
নেমে আসে ভবে।

সূর্যের অপর দিক রংধনু
ঝকঝক করে ওঠে,
তাই না দেখার জন্য সবাই
দলে দলে ছোটে।

প্রতিফলন প্রতিসরণ
রংধনুর সাত রঙে,
ধনুকের ন্যায় দেখায় তারে
বাহারি ওই ঢঙে।

রচনাকালঃ
০৪/১১/২০২১

চাঁদের আলো

৪+৪/৪+২

রাত্রিবেলায় চাঁদের আলো
ভীষণ লাগে ভালো,
চারিদিকটা অন্ধকারে
দেখায় শুধু কালো।

ছেলেবেলায় চাঁদের আলোয়
খেলা করতাম কত,
একটি জোনাক ধরার জন্য
পিছু ছুটতাম শত।

পুকুর জলে চাঁদের আলো
ঝিকিমিকি করে,
তার উপরে জোনাক পোকা
আলোর পথটা ধরে।

চাঁদের আলো ধরার বুকে
থাকে কিছু সময় ,
সন্ধ্যা বেলায় ঝিঁঝি পোকার
গানে ভরা মৃন্ময়।

চাঁদের মতো মিষ্টি মধুর
জিনিস নাই তো ভবে,
সূর্যের আলোর তাপদাহে
সব পোড়ায় যে তবে।

রচনাকালঃ
১৯/০৯ /২০২১

লক্ষ্মীছাড়া জীবন

৪+৪/৪+১

লক্ষ্মীছাড়া জীবন আমার
পাই না সুখের কুল,
তার-ই জন্য জীবন নদে
করি শুধু ভুল।

ভুলে ভুলে আমার জীবন
একেবারে শেষ,
সুখ নাই তবে আমার প্রাণে
আছি দুখের দেশ।

সুখ দুঃখ তো প্রভুর হাতে
সুখ মেলা তো ভার,
সুখের জন্য জীবন শূন্য
সুখ যে তবে কার।

সুখ সুখ করি জগৎ মাঝে
দিবানিশি ভোর,
দুখের চক্রে শুধু- ই দুখ
পাই না সুখের দোর।

দুঃখ নিয়ে জীবন রথে
যায় না চলা ওই,
সুখ তো আমি খুজে মরি
সুখ তবে যে কই।

রচনাকালঃ
২২/০৯/২০২১

পাখির গানে মুগ্ধ

৪+৪/৪+২

ভরা যখন বন বনানী
পাখির কলতানে,
মনটা জুড়ায় খুকুর তখন
আনন্দ হয় প্রাণে।

ডালে ডালে পাখি বসে
দেখে জুড়ায় আঁখি,
তাই না দেখে খুকু বলে
আনন্দ কই রাখি।

টিয়া ময়না কোকিল ঘুঘু
আরো পাখি কত,
তাদের সাথে গল্প করতে
খুকুর ইচ্ছে শত।

কিচিরমিচির শব্দ গুলো
মধুর লাগে কানে,
কাটবে সময় খুকুমণির
পাখির সাথে গানে।

খুকুমণির ইচ্ছে করে
পাখির মতো গাবে,
তারই জন্য বাঁশ বাগানে
প্রতিদিন সে যাবে।

রচনাকালঃ
০১/১০/২০২১

প্রেমের আগুন

৪+৪/৪+২

মেতে আছো নতুন প্রেমে
নতুন জনকে পেয়ে,
তোমার আশা আজও আমি
থাকি পথটা চেয়ে।

ইচ্ছে খুশি শাস্তি দিতে
নিতাম মাথা পেতে,
সুখে আছো এখন তুমি
অন্যের প্রেমে মেতে।

তোমার জন্য বুকে আমার
আগুন জ্বলে তবে,
ধোঁকা দিয়ে চলে গেলে
তুমি সেই যে কবে।

আমার মনটা তোমার জন্য
কাঁদে প্রতি ক্ষণে,
আজও প্রিয়া আছো তুমি
আমার প্রাণে মনে।

তুমি আমার জীবন নদে
ছিলে সুখে ভেলা,
মন আনন্দে তোমায় নিয়ে
করছি কত খেলা।

প্রেম অনলে পুড়ে ভস্ম
আমার হৃদয় তবু,
কেন তুমি এমন করো
জানে শুধু প্রভু।

রচনাকালঃ
০৪/০৯/২০২১

মানবতা

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

মানব মনের মানবতা
গেছে তো ভাই খোয়া,
তারই জন্য জীবন নদে
নাই রে সুখের ছোঁয়া।

মানব মনের সুখ শান্তি তো
মানবতার তরে,
মানবতা বিহীন জীবন
ধুঁকে ধুঁকে মরে।

মানব জীবন মানবতা
এক সূত্রে ওই গাঁথা,
মানবতা শূন্য জীবন
শুষ্ক গাছের পাতা।

লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে
যাই না কেনা তবে,
মানবতা অমূল্য ধন
নিখিল এই না ভবে।

রচনাকালঃ
২২/০৯/২০২১

কষ্ট

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

বন্ধু তোমার কথা শুনে
কষ্ট পেলাম মনে,
কেন তুমি এ বোল করলে
ভাবি ক্ষণে ক্ষণে।

সব মানুষের সব প্রতিভা
থাকে না তো কভু,
আমি তো ভাই কাব্য লিখি
সময় নিয়ে তবু।

নিন্দা করা নিন্দুকের কাজ
আমার কাজ নয় তবে,
মন খুশিতে নিন্দা করো
বসে নিখিল ভবে।

কাজী নজরুল রবীন্দ্রনাথ
খ্যাতিমান ওই মানুষ,
তাঁদের কাছে আমি হলাম
ছেলের খেলার ফানুস।

সদ্য আমি কাব্য লিখি
জানো তুমি ভালো,
আমার কাব্যের জন্য তোমার
মুখখানা বেশ কালো।

বসে বসে নিরব ক্ষণে
হাসো মনে মনে,
ক্যামনে ও-যে কাব্য লেখে
বলে বেড়াও জনে।

অন্যের ভালোই গাত্রদাহ
হয় তা আমি জানি,
কাজ করিলে কাজের নিন্দা
হবে বহু খানি।

আর কি তুমি বলবে আমায়
ক্যামনে কাব্য লিখি,
এই পৃথিবীর পথে চলে
নানা জিনিস শিখি।

রচনাকালঃ
২৬/১০/২০২১

ডাহুক পাখি

1179

149-5-600x337

HOME

৪+৪/৪+২

জলের পাখি ডাহুক তুমি
কোয়াক কোয়াক ডাকো,
পাশের ঘরে খোকা ঘুমায়
চুপটি করে থাকো।

প্রেম বিরহে ডাহুক তুমি
থাকো বিভোর তবে,
তোমার মতো লাজুক প্রাণী
নেইতো নিখিল ভবে।

ডাহুক তুমি জলের উপর
চলো বর্ষাকালে,
সঙ্গীবিহীন পাগলের ন্যায়
ছোটো নানা ডালে।

সাদা কালো কেশে তোমায়
লাগে ভীষণ ভালো,
তোমার ঠোঁটটা আলতা রাঙা
যেমন দিনের আলো।

ছোট্ট লেজে ডাহুক তুমি
নেচে নেচে চলো,
ডিম তা দেওয়ার জন্য কেন
ডাহুকীরে বলো?

বাঁশ বাগানে বাঁশের ঝাড়ে
তোমার ছোট্ট বাসা,
কুচকুচে ওই কালো ছানা
দেখতে লাগে খাসা।

রচনাকালঃ
২৯/১০/২০২১

স্রষ্টা খেল

৮+৬ অক্ষরবৃত্ত ছন্দ

প্রভু কেমনে সৃজিলা ধরাতে মানুষ
অক্ষমতার অনলে পোড়ে নাই হুঁশ।
ধরা বুকে মানুষের শ্রেষ্ঠতম স্থান
শ্রেষ্ঠ করে অক্ষমতা দিলে দয়াবান।

তোমার খেলা হে প্রভু বোঝা বড় দায়
জরাজীর্ণ ক্লিষ্ট তবে কেন পিছু ধায়।
শ্রেষ্ঠত্বের পদে এসে সহে দুখ তবু
কেন জানি এরূপ যে ভাবি ক্ষণে কভু।

সৃজিলা ধরাতে নর দিলে না তো সুখ
জীবন বিরহে গাঁথা সহে বসে দুখ।
আঁখি ঘেরা স্বপ্ন নিয়ে চলে ভাই সব
সুখের জন্যই করে সবে কলরব।

এ ধরাতে দুখে সাথে রণ করে চলা
প্রাণ রণে ক্লান্ত হয়ে দুখে কথা বলা।
মানব জীবনে লেগে আছে ক্লিষ্ট কষ্ট
হয় না স্বপ্ন পূরণ হয় সব নষ্ট।

ধরার বুকে’তে শ্রেষ্ঠ মানবের প্রাণ
শ্রেষ্ঠত্বের জন্য গাই প্রভু জয় গান।
নর মনে জাগে আশা সুখে থাকা জন্য
মানব জীবনে সুখ এলে হবে ধন্য।

রচনাকালঃ
৩১/০৮/২০২১

জোনাকি

৪+৪/৪+২

রাতেরবেলায় গগন জুড়ে
অজস্র তারা মেলা,
তার নিচেতে জোনাক পোকা
দেখায় আলোর খেলা।

ঝোপের ঝড়ে সন্ধ্যা বেলা
জোনাক পোকার আলো,
তার আলোতে দূর হয়ে যায়
সব ধরনের কালো।

জোনাক হলো আলো পাখি
সদা ঘুরে চলে,
সেথায় বসে হেথায় বসে
নানা খেলার ছলে।

পুচ্ছে তাহার নীল আলোটা
সুন্দর লাগে তবে,
জোনাক শুধু আলোর জন্য
এসেছে এই ভবে।

সৃষ্টিকর্তার অপরূপ লীলা
লাগে তবে ভালো,
জোনাক পোকার আলো দেখা
প্রাণে আলো জ্বালো।

রচনাকালঃ
৩০/০৮/২০২১

প্রজাপতি

৪+৪/৪+৪

প্রজাপতির কোমল ডানা
উড়তে যে তার নাই কো মানা।
বিকেল বেলা নদীর তীরে
লুকোচুরি ঘাসের ভীড়ে।

প্রজাপতি নানা ছলে
ছুটে চলে ফুলে ফলে।
মধু খেয়ে ধেয়ে আসে
দলের সাথে মিষ্টি হাসে।

প্রজাপতির রূপটা ভালো
মাঝে মাঝে হলুদ কালো।
লার্ভা থেকে জন্ম তারই
কোথায় আছে তাদের বাড়ি।

পরাগায়ন পরাগ রেনু
প্রজাপতির গুনগুন বেণু।
গানে গানে মুগ্ধ করে
মধুতে ওই মুখটি ভরে।

রচনাকালঃ
১৯/১০/২০২১

বিষাক্ত প্রেমিকা

১০+৮ অক্ষরবৃত্ত ছন্দ

তুমি ছিলে মোর মূল প্রেম তুমি ছিলে মোর শেষ
ইচ্ছে ছিলো তোমারে নিয়ে-ই জীবন কাটাবো বেশ।
মিথ্যা আশা ভালোবাসা বুকে কষ্টের বহতা নদী,
সুখে রবো তো ধরার বুকে পাশে থাকো তুমি যদি ।

মিথ্যা আশা দিয়া তবে তুমি করিলে ওই ছলনা
তোমা দেখে মনে হয় তুমি যে ছিলে মিথ্যা ললনা।
কথায় কথায় বলতে যে থাকবো তোমার সাথে
ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য যে হাত রেখেছো অন্যের হাতে।

টিউশন করে তোমা আমি দিতাম প্রচুর টাকা
তোমা ছাড়া আমার জীবন লাগে শুধু ফাঁকা ফাঁকা।
মনের সুপ্ত আশা জাগ্রত করিলে তুমি যে মোর,
ইচ্ছে জাগে থাকবো যে তোমা মনে দিবানিশি ভোর।

অন্যের ঘরের ঘরণী যে তুমি বুকে বড় কষ্ট
ইচ্ছে করে তুমি তো- ই মোর স্বপ্ন করিল যে নষ্ট।
বসে বসে ভাবি আমি শুধু সেই কথা গুলো তবে
প্রেম বিরহ অনলে পুড়ে হৃদয় খানা-ই ভবে।

হৃদয়টা পুড়তে পুড়তে হয়ে গেছে তবে ছাই
কষ্টের কথা বলবো কাকে তেমন মানুষ নাই।
বিষন্নতায় মোর জীবনে নাহি কোনো তবে সুখ
তোকে ছাড়া মোর জীবনে যে শুধু কষ্ট আর দুখ।

নিখুঁত তোর অভিনয়ে যে পেয়েছি খুব-ই ধোঁকা
যুগ অনুযায়ী ছিলাম রে আমি শুধু ওই বোকা।
সেই সুযোগ নিয়ে রে তুমি ছলনা করে তো গেলে
তোমাকে ছাড়া জীবন মুখে চলি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।

রচনাকালঃ
০১/০৯/২০২১

প্রভুর প্রেমে

৪+৪/৪+১

ডাকছে আমায় পরম প্রভু
আমার দেশে আয়,
সুখের উল্লাস আশার বাসর
তাহার পিছু ধায়।

বহুদিনের আশা ছিলো
মিলবো তাহার সাথ,
তাহার পাশে বসে তবে
পারি দেবো রাত।

ইচ্ছে আমার মনের কথা
বলবো তাহার সন,
তাতে আমার ভরে যাবে
বিষন্ন ওই মন।

তাহার পাশে বসে বসে
গল্প করবো ভাই,
পরম প্রভু কাছে যেতে
মনটা শুধু চাই।

প্রভুর দেশে যেতে আমি
করতে পারি সব,
আমার চেষ্টা দেখে সবাই
করে কল-রব।

রচনাকালঃ
১৮/০৮/২০২১