জায়েদ হোসাইন লাকী এর সকল পোস্ট

জায়েদ হোসাইন লাকী সম্পর্কে

জায়েদ হোসাইন লাকী জন্ম : ১৮ জুলাই, ঢাকা। প্রকাশিত গ্রন্থ : ❑ ভালোবাসা বাতাস সেলাই করে (কবিতা) ❑ একদিন রাস্তায় চাঁদ নেমেছিল (ছোট গল্প) ❑ আমি তাকে আদর করি, নয়তো হত্যা করি (কবিতা) ❑ হাত বাড়াই নিষিদ্ধ গন্দমের দিকে (কবিতা) ❑ যেভাবে আমার দ্বিতীয় মৃত্যু হলো (কবিতা) ❑ ভূমিবালিকা (কবিতা) ❑ নারী ও গোলাপ (কবিতা) ❑ আগডুম বাগডুম ছড়া (ছড়া, প্রকাশিতব্য) ❑ বৃষ্টি ও প্যারাসিটামল (কবিতা) ❑ একমুঠো প্রেম হলে কেটে যায় দিন (কবিতা) ❑ ভুল করে তোমাকে ভেবেছি আমার (কবিতা) ❑ ক্ষ্যাপা সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস (কবিতা) ❑ ভালোবাসা উড়ে যায় পাখির ডানায় (কবিতা) ❑ নির্বাচিত কবিতা লেখক ❑ বাংলাপিডিয়া (বাংলাদেশের প্রথম ১০ খণ্ডে লিখিত জাতীয় কোষগ্রন্থ) অর্জন ❑ অধ্যাপক সত্যেন বোস সাহিত্য পদক-২০১১ ❑ আমরা করব জয় ও এটিএন বাংলা সাহিত্য সম্মাননা-২০১৪ ❑ জাতীয় সাহিত্য পদক-২০১৬ ❑ সাপ্তাহিক 'খোলাচোখ' সাহিত্য সম্মাননা-২০১৮ সম্পাদিত ছোট কাগজ ❑ বাংলাকাগজ ❑ মানবজীবন ❑ মুক্তি ❑জাগরণ ❑ মানচিত্র ❑ সময় ❑ভুমিপত্র ❑ কালেরবৃক্ষ ❑ মনোভূমি। নির্বাহী পরিচালক ❑ ফ্রেন্ডস অব হিউমেনিটি বাংলাদেশ সম্পাদক, প্রকাশক ❑ ত্রৈমাসিক সাহিত্য দিগন্ত প্রধান সম্পাদক ❑ সাপ্তাহিক অপরাধসূত্র নির্বাহী সম্পাদক ❑ দৈনিক বাঙালির কণ্ঠ ❑ সাপ্তাহিক মুক্তবাংলা ❑ সাপ্তাহিক আইন আদালত সাব এডিটর ❑ দৈনিক ইত্তেফাক ব্লগার ❑ সামহোয়ার ইন ব্লগ ❑ উইবলি ডট কম ❑ বিডিনিউজ ❑ শব্দনীড় সংবাদ উপস্থাপক ❑ আরটিভি ❑ বাংলাভিশন প্রযোজক ❑ রাজশ্রী ফিল্মস ❑ আরটিভি ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||

ঈদ মোবারক !

শব্দনীড় একটি শ্রেষ্ঠ পরিবার। এই বৃহৎ পরিবারের প্রধান নির্বাহী (এডমিন) সহ সব ধর্মের, সব বয়সের, সকল ব্লগারকে জানাচ্ছি ঈদের শুভেচ্ছা এবং শ্রদ্ধা। ঈদ মোবারক!

শুভেচ্ছান্তে,
জায়েদ হোসাইন লাকী
সম্পাদক
সাহিত্য দিগন্ত

আহমদ ছফার মতো বড় মাপের লেখক হয়তো আর জন্মাবে না

আজিজে তার ছোট্ট একটা বসার জায়গা ছিলো। সে জায়গাটায় এখন গেঞ্জির দোকান, আবার মাটির টেরাকোটাও পাওয়া যায়। জায়গাটা ছিলো খুব জরাজীর্ণ নোংরা আর অগোছালো। আমি তার ওখানে প্রায় প্রতিদিন বিকেলে যেতাম। তিনি সব সময় পান খেতেন। পানের পিকে তার ঠোঁট সব সময় লাল হয়ে থাকতো। পানের গন্ধে আমার মাথা ঘুরে যেতো যখন তখন শ্রাবণের (তখনো রবীন আহসানের সাথে আমার পরিচয় হয়নি) সামনের বারান্দায় যেয়ে দাঁড়াতাম। আমার কাছে মনে হতো তখন আজিজে ভ‚ত থাকে। প্রায় সব দোকানের সাঁটার লাগানো থাকতো। ছফা এতো বড় লেখক বা তিনি একদিন এতো বিখ্যাত হয়ে উঠবেন তা আমি জানতাম না। আমি তার লেখার কিছু পাতা দেখে দিতাম। একবার একটা বানান ভুল ছিলো আমি তা ধরতে পারিনি, এজন্য ছফা ভাই আমাকে বিশ্রীভাবে একটা গালি দিয়ে বললেন, তোদের দিয়ে নুম্বাও (নুম্বা মানে কি আমি তা তখন জানি না) হবে না। তার মুখ খারাপ ছিলো, রাগলে তিনি কেমন যেন হয়ে যেতেন তাই আমি তর্কে যেতাম না। তাকে শ্রদ্ধা করতাম খুব।

একবার কবি সমুদ্র গুপ্ত এলেন তার দোকানে, ছফা ভাই আমাকে বললেন, সমুদ্র আইসে তুই এখন বাইর হয়া যা। আমি যাচ্ছি না দেখে তিনি আমাকে গাধা ছাওয়াল বলে গালি দিলেন। তার হঠাৎ হঠাৎ বলে ওঠা গম্ভীর কথাগুলো শুনে ৫০ শতাংশ বুঝতাম আর বাকিটা মাথার উপরে দিয়ে চলে যেতো। গেঞ্জির দোকান তখনো আজিজে এতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। কবি শহীদুল্লাহ সিরাজী ওখানে প্রায়শই,আসতেন, আমার সাথে সিরাজী ভাই খুব ইয়ার্কি করতেন (এখনো করেন) আর আমাকে তিনি ‘কাউয়া লাকী’ বলে ক্ষ্যাপাতেন, মাঝে মাঝে আমাকে দৌড়ানিও দিতেন। দাদা (আহমদ ছফা) বলতেন, পান নিয়া আয়। আমি বিরক্ত হলেও তাকে পান এনে খাওয়াতাম। অনেক বছর এভাবে তাকে পান এনে খাইয়েছি। তার পানের বক্সে সব সময়ই পান থাকতো, কিন্তু তিনি আমাকে দিয়ে পান আনাতেন কেন? এই একটা প্রশ্নের উত্তর আমি আজও পাইনি। তাকে নিয়ে এরকম অনেক অস্পষ্ট স্মৃতি আমার আছে তা কোনো একদিন এক গ্রন্থে লিখে রেখে যাবো।

২৮ জুলাই আহমদ ছফার মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তার মতো বড় মাপের লেখক বাংলাদেশে হয়তো আর জন্মাবে না।

কফিনে বন্দী গোলাপ ও প্রেম

কফিনে বন্দী গোলাপ ও প্রেম

আজ সারারাত বারান্দায় বসে থাকবো।
আমার সাথে রাত জাগবে দুটি রেশমের পোকা।
কাল সকালে তুমি যখন ‘শুভ সকাল’ জানাবে
তখন আমি গভীর ঘুমে কোমায় চলে যাব।

আমার কোমায় যাওয়ার খবরটি প্রকাশিত হবে
দৈনিক নারকেল পাতায়, তুমি টিভির স্ক্রলে
আমার নাম দেখে আঁতকে উঠবে না।
একটি সাদা গোলাপ দিতে চেয়েও
দিতে পারোনি বলে তুমি আক্ষেপও করবে না।

কোমায় যাওয়া মানুষেরও কোনো আক্ষেপ থাকে না,
থাকে না গোলাপের লোভ।
তবুও, গোলাপ না পেয়ে আক্ষেপ করে করে
আমি যদি কোমায় চলে যাই,
এই যে যাওয়া আসা, ভালোবাসা, এসব নির্মম নয়।
এটা প্রেম।

এই নির্মম প্রেমের সাক্ষী থাকবে আমার
ব্যাচেলর ব্যালকনি আর তোমার বাগানে ফুটে থাকা
একটি সাদা গোলাপ।

মানুষ আবার মানুষ হয়ে উঠুক

মানুষ, মানুষ মারার অস্ত্র বানিয়েছে
পশুদের কোনো অস্ত্র নেই।

সুসময়ের ডাল থেকে এখন ছিটকে পড়ছে সময়
মানুষের অমরত্বের খাতা থেকেও ক্রমাগত
খসে খসে পড়ে মানুষের ‘মানুষ হওয়ার’ বীরত্বগাথা
তা দেখে পশুদের বুকেও জমা হয় বেদনার-
অতিদীর্ঘ এক নদীর দীর্ঘশ্বাস।

মানুষের মুমূর্ষু বিবেককে সমুদ্রের কাছে নিয়ে যাও
দেখাও তাকে সমুদ্রের বিশালতা
তাকে আকাশ দেখাও, দেখাও শরতের চাঁদ
মুমূর্ষু বিবেক দেখুক, কী করে আকাশ মানুষকে
এত বিশালতা দেয়, এক টুকরো চাঁদ কীভাবে
ঢেকে দেয় পৃথিবীর সকল আঁধার।

মানুষ দেখুক, ঈশ্বরের উদারতার খোঁপা খুলে
কী করে একটি মাছ প্রাণ ভরে নদীতে সাঁতরায়।

নয়তো, মানুষ একসময় বিলুপ্ত হবে
পশুরা টিকে থাকবে পৃথিবীতে।
প্রকৃতির কাছে হাত পেতে তাই নতজানু হয়ে আছি
একটি সূত্র দাও হে প্রভু,
মানুষ আবার মানুষ হয়ে উঠুক।

(উৎসর্গঃ ১৫ মার্চ ২০১৯ ইং তারিখে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৪৯ জন মানুষের স্মৃতির প্রতি)

কিছু মনে নেই

দীর্ঘ জীবন যাকে ভালোবেসেছি
আজ তার ছায়া মনে নেই!
তার একটি চুম্বনের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে
আমি কি খুব ক্লান্ত হতাম?
তার বুকের দ্রাঘিমা আমি কখনো মেপে দেখেছি?

রিক্সার ব্রেক চাপলে-
সে রাস্তায় ছিটকে পরে যেতে পারে,
এই ভয়ে আমি কখনো তার হাত চেপে ধরেছিলাম?

আমার আঙ্গুলের স্তম্ভগুলো হিংস্র সাপ হয়ে নেচে নেচে
কখনো কি তার গোপন সৌরভ স্পর্শ করেছিলো?
অথবা, সে আমার বাম গালে ঠাস করে চড় মেরে
কখনো কি আমাকে বলেছিলো-
–তোমার চোখে প্রেম না, পাপ নাচে ক্যান?

কী নাম ছিলো তার?
রাজশ্রী?
আরতী?
অরুন্ধতী?
নয়তো,
ইসাবেলা খান?
নাকি তার কোনো নামই ছিলো না?

মনে নেই! মনে নেই! মনে নেই!
আমার এসবের কিছুই মনে নেই মাননীয় আদালত।

তার কামরাঙা ঠোঁটের মাঝেখানে
খুব গাঢ় আর কালো একটি তিল ছিলো
শুধু এটুকু মনে আছে।