নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

পরকিয়া করতে গিয়ে

পরকিয়া করতে গিয়ে
বউয়ের হাতে ধরা খেয়ে,
গৃহবন্দী জামাই
আর সকাল সন্ধ্যা ধোলাই!

ঘরের বাইরে যেতে মানা
হচ্ছে না তাই বনি বনা,
এমন ভুল টি আর হবেনা
একটু বাইরে যাই?

শুনে সে কি বিজলি ঝলক
পাহাড় সুরমা হওয়া ধমক,
এতো আকাম করছ তবু
খায়েশ মেটে নাই?

ধরিয়ে দেবো পুলিশ দিয়ে
আচ্ছা কষবে থানায় নিয়ে,
চাচ্ছো তুমি তাই?
তোমার জেলের ভাতই চাই?

ভয়ে ভেজা বেড়াল সেজে
বসে আছে মাথা গুজে,
কোন উপায় নাই
তাকে বাঁচা না কেউ ভাই!

মেঝ মুছে কোমর ব্যথা
কাপড় কেচে ধরল মাথা,
থালা বাসন মাজতে বাকি
বুয়া আসে নাই!

পরকিয়া করতে গিয়ে
যাচ্ছে এমন সাজা সয়ে,
স্ত্রী ভক্ত তাই
সবাই সতর্ক হ ভাই!

কি করবে সরকার?

দোষ করে জনগণ, দোষী হয় সরকার,
আদালতে খুন হলে, বিচার কি দরকার?
নদী তল উঁচু হয়, দেশ ভাসে বন্যায়,
খননের টাকা তবে, চুপি চুপি কোথা যায়?

দুদকের কর্তা, খায় ঘুষ আর তা,
দিয়েছিল ডিজি সাব, শুনেছি যা বার্তা!
ব্যাংকের টাকা হাওয়া, দর দাম বেড়ে যাওয়া,
সরকার ভালো নয়, তালে তালে বলে দেওয়া।

পঁচা নালা নর্দমা, ডেঙ্গু করেনি ক্ষমা,
মশারী টানিয়ে দিবে, কোন সরকার মামা?
চর্চা অনধিকার, স্তূপ ময়লার,
জ্বর হয়ে মারা গেলে, কি করবে সরকার?

না খেয়ে খয়রাতি, সন্ত্রাস রাতারাতি,
ত্রাণের চাল নিয়ে, নেতাদের হাতাহাতি!
শিক্ষিত ডাক্তার, রোগী ভরা চেম্বার,
কিডনি খুলে বেঁচে, কি করবে সরকার?

কাঁদছে কৃষক পাড়া, চালের বাজার চড়া,
মিল মালিকেরা নাকি, খুব বেশী ঘাড় ত্যাড়া!
রডের বদলে বাঁশ, নদীতে ভেসেছে লাশ,
আইনের বড় বাবু, কাটে কি ঘোড়ার ঘাস?

ধর্ষণ দৈনিক, নারী শিশু একাধিক,
পয়সায় চুপচাপ, চুপ কেন নাগরিক?
বদলিয়ে বারবার, দেখেছি অনেক বার,
জনতাই অচেতন, ভালো সব সরকার।

ওদের নজর ভালো না

ওদের নজর ভালো না, কেন বুঝেও বোঝ না?
তুলতুলে ওই শরীর, কেন ঢেকে রাখো না?
ওরা রইতে পারে না, জ্বালা সইতে পারে না,
দিনের দৃষ্টি ভোজন, রাতে ভেজায় বিছানা!

বলছি তোমায় ললনা, তোমার নয় গো অজানা,
ভোগের মোহ সবার আছে, ভুলে যেও না!
ওরা ক্ষান্ত হবে না, দিগুণ হবে যে তৃষ্ণা,
দৃষ্টি জুড়ে তোমার দেহ, অসীম ব্যঞ্জনা!

বিবেক দিলে কুমন্ত্রণা, আর মানবে না শান্তনা,
নিষ্পাপ ওদের করবে পশু, জৈবিক বাসনা!
লজ্জা করো আরাধনা, আমায় ভুল বুঝো না সোনা!
পরিচ্ছদে লজ্জা তোমার, ঢাকতে কিসের মানা?

কেন বাড়াও উন্মাদনা? লোকে করছে যে ভৎসনা,
ভেতর জুড়ে হিংস্র জন্তুর, ব্যপক উত্তেজনা!
হৃদয় লালসার কারখানা, রিপুর তাড়নার ব্যঞ্জনা,
যেটা তোমার সাচ্ছন্দ্য বোধ, কারো তা যন্ত্রণা!

পরিচ্ছন্ন হোক কল্পনা, ত্যাগ করো বেহায়াপনা,
পবিত্ররাও অপবিত্র হয়, লালসায় গঞ্জনা।
ভগ্নি মাতা বীরাঙ্গনা, অর্ধোলাঙ্গে বিড়ম্বনা,
মার্জিত হও কারণ, ওদের নজর ভালো না।

যদি কাছে থাকতে

যদি কাছে থাকতে, চোখে চোখ রাখতে,
বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে, ভালোবাসা শিখতে।
কত যে আনন্দ, মিলনে কি ছন্দ,
কে বলো তা বোঝাবে, কি যে স্বাচ্ছন্দ্য।

স্বপ্নেরা হাসিয়ে, মহাসুখে ভাসিয়ে,
প্রেম যায় নিত্য, অজানায় হারিয়ে।
ছোটো বড় ভুলত্রুটি, নিন্দুক ভ্রুকুটি,
সবকিছু জয় করে, আনন্দে লুটোপুটি।

প্রেমে আছে শান্তি, দূর হয় ক্লান্তি,
সুখ দুখ মিলেমিশে, থাকে বিভ্রান্তি।
দুটি প্রাণে পক্কতা, প্রেমে গড়ে সখ্যতা,
অন্তরে ভীতি পোষা, প্রেমের অযোগ্যতা।

যদি ভালোবাসতে, মৃদু মৃদু হাসতে,
ভাবতেই পারবেনা, কত সুখে ভাসতে।
এ প্রাণের কল্পনা, কামনার জল্পনা,
কত যে বিভোর করে, তোমার তা অ-জানা।

হাতে হাত রাখতে, যদি কাছে ডাকতে,
প্রেমে যে কি গভীরতা, নিজ চোখে দেখতে।
শত রাত জাগতে, শেখাতে শিখতে,
সব কেড়ে সব সঁপে, যদি কাছে থাকতে।

কেন অশ্রু ঝরে

কাঁদাতে তো সবাই পারে
অশ্রু মোছে কজন?
দুর্দিন এলে যায় গো চেনা
কে শত্রু কে আপন!

নেমে আসলে আঁধার সবাই
আলোর কথা ভাবে,
উজ্জ্বলতার মাঝে আলো
কদর পেয়েছে কবে?

তেষ্টা ভীষণ হলে বুঝি
পানির মূল্য কত,
অপচয় তবু অঝর ধারায়
ঝরে যায় অবিরত।

আনন্দ যার সঙ্গী সাথী
বোঝেনা সে বেদনা,
অশ্রু ঝরে যার নয়নে
সে বোঝে কি যাতনা!

যার রয়েছে স্বজন অনেক
বুঝবে কেমন করে?
একলা হয়ে গেলে কেন
অশ্রু শুধু ঝরে!

যদি হয় অভিনয়

শব্দের যাদুতে মন চায় বাঁধিতে,
প্রান চায় হাসিতে তবু হয় কাঁদিতে।
শুধু এই সংশয় যদি হয় অভিনয়,
তাই প্রানে ভয় ভয় দৃঢ় তবু প্রত্যয়।

ক্ষুদ্র এ জীবনে ও চোখের চাহনে,
এ প্রানের দহনে ও দেহের গড়নে।
ঢেকে রাখা লজ্জায় শান্তিরা ভেসে যায়,
ব্যথাতুর এ হৃদয় অপলক চেয়ে রয়।

শুধু তার স্মরণে ছন্দের গড়নে,
হেলেদুলে চলনে ইশারায় বলনে।
মনপ্রাণ গলে যায় সপে দিতে মন চায়,
মুখ ফুটে যদি চায় দিয়ে দিই প্রাণ হায়।

কি সুখের সন্ধানে চুপিসারে আনমনে,
গেথে রাখা এই প্রানে বিধাতাই শুধু জানে।
স্বপ্নেই পরিচয় স্বপ্নেই কথা হয়,
প্রাণ জুড়ে দেহ ময় শিহরণ সে জাগায়।

মন চায় বাধিতে শব্দের যাদুতে,
ঝি ঝি ডাকা সে রাতে কি’বা রাংগা প্রভাতে।
বাসনারা প্রাণময় জেগে থাকে তৃষ্ণায়,
তবু মনে ভয় হয় যদি হয় অভিনয়।

আজ এই শয্যায়

ও আমার নন্দিনী, কবে হবে সঙ্গিনী?
একা এই শয্যায়, তৃষিত অপেক্ষায়।
কাটেনা দিনক্ষণ, দেবে কি বিসর্জন?
তোমার ওই মনপ্রান? কল্পিত বন্ধন।

আজ এই বরষায়, দেহ প্রান তন্ময়,
অন্তরে হয়ে রয়, ভালোবাসা সঞ্চয়।
কল্পনার আবেশে, কি মধুর পরশে,
রাঙা তুমি লজ্জায়, কবে এই শয্যায়?

কেন কিছু বলছনা? বুঝেও কি বুঝছো না?
হৃদয়ের আয়নায়, ঐ মুখ ভেসে রয়।
তোমারই জন্য, হতে চাই বন্য,
করে যাই আরাধনা, তুমি তুমি কল্পনা।

ওই দূর পারাবার, সে তোমার মনিহার,
এ আমার সাধনায়, আত্মার আঙিনায়।
আসো না তুমি চলে, অন্তর যায় বলে,
নিবেদন সবিনয়, কিসে বলো সংশয়?

ও আমার প্রিয়তমা, কত আশা প্রানে জমা,
আবেগিয় তৃষ্ণায়, ক্লান্তি প্রাণময়!
বিপত্তি পিছনে ফেলে, এই বুঝি তুমি এলে,
ও আমার নন্দিনী, কবে হবে সঙ্গিনী?

পাখী হয়ে আসো উড়ে, বসো এই মন জুড়ে,
শূন্য বুকের ঘর, যেন ধূধূ বালুচর।
দখিনা বাতাস হয়ে, আসো প্রিয়া আসো বয়ে,
ঝিরি ঝিরি বরষায়, হৃদয়ের মোহনায়।

দেখাও ঐ চাঁদ মুখ, আনন্দে ভরো বুক,
এঁকে দাও আলপনা, ভুলে যাই যন্ত্রণা।
কই তুমি কত দূর? ধরো সূর সুমধুর,
সুন্দর এ সন্ধ্যায়, আজ এই শয্যায়।

শোন মশা বলি তোরে!

ওরে খুদে মশা রে, দিলি যে কি কশা রে,
গ্রামে কি বা শহরে, দিনে রাতে প্রহরে!
অনুমতি ছাড়া তুই, সংসদে নিয়ে সুঁই,
মন্ত্রীকে ফুটো করে, ফেললি গুনিয়া জ্বরে!

তুই বড় বেয়াড়া, পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া,
টিকেট টা না কেটে, বিমানে পড়িস উঠে।
পচা নালা নর্দমা, ঘর তোর রমরমা,
বংশ বিস্তারে, নেই কোন দাড়ি কমা।

এত বল কোথা পাস? কত তোর উচ্ছ্বাস,
একটা কামড়ে তুই, ডেঙ্গুকে দিয়ে যাস।
শোন ওরে মশারে, আজ এই শহরে,
অলি গলি ভরে গেছে, কামানের বহরে।

তবু তোর নেই ভয়, গুন গুন নয় ছয়,
রাজা রানী জল্লাদ, তোর হাতে ধরা খায়।
নেই তোর দয়া মায়া, দিন রাত আলো ছায়া,
মানুষের ঘ্রাণ পেলে, চুপি চুপি দিস ধাওয়া।

কত শত গবেষণা, বিদেশী কেমিক্যাল আনা,
কিসে তুই শান্ত? বলে দে তোর আছে জানা।
নিজেদের স্বভাবে, বিবেচনার অভাবে,
বাড়ে তোর বংশ, সে কথা কে বোঝাবে?

শোন মশা বলি তোরে, রক্ত না ঘাস খা রে,
আর খাঁটি দুধ দে, ভেজালের এ শহরে।
অথবা যা দূরে উড়ে, অসীম আকাশ ফুড়ে,
তোর প্রকোপে আজ, কান্না শহর জুড়ে!

আজব ঢাকা

ঢাকার বাসায় জল নেই তবু আছে ইন্টারনেট,
নর্দমা আর ময়লার গন্ধে ফুলে গেছে পেট।
ওয়াসার লেয়ার নীচে গেছে কলে আসে ময়লা,
চাপকল আছে পাশের বাড়ি গেটে ঝুলছে তালা।

গ্যাস নেই তাতে কি হয়েছে ডিসের লাইন ওকে,
গলির মাঝে কোমর পানি বেরোই রিকশা ডেকে।
একশো পারসেন্ট স্বাবলম্বী ফকির মিসকিন নাই,
রাস্তার মোড়ে প্রতিবন্দি ভিক্ষা করে তাই।

একশো টাকার এনার্জি বাল্ব কেটে গেল ঠাশ,
সেপটিক ট্যাংকে পাওয়া যাচ্ছে হাত পা বাঁধা লাশ।
সর্দি কাশি নিয়ে যদি হসপিটালে যান,
চেক আপ শেষে করবে ডাক্তার বিশাল অপারেশন।

মাথা ব্যথা নিয়ে যদি চিকিৎসাধীন মরে,
পোস্টমর্টেমে খবর আসে কিডনি নাই আহারে।
মোড়ে মোড়ে কারখানা তাও খাঁটি অষুধ নয়,
তাইতো বায়ুয় গন্ধ হলে বাইরে যেতে হয়।

বিদেশ যাবার পয়সা কড়ি নেই যে অভাগার,
হয় যদি গো দাতে জালা চোখ তুলে নেয় তার।
গ্যাস পানি নেই তবু আমার ফোর জি আছে বেশ,
ইন্টারনেট আর ডিশের লাইন ঠিক থাকলে ঠিক দেশ।

বলা আছে থানাতে

করবি না শব্দ,
করে দেবো স্তব্ধ।
দিয়ে দে যা চাই,
জলদি সময় নাই।

চাই শুধু চাই দেহ,
চুপ জানবেনা কেহ।
মেরে দেবো গলা টিপে,
তৃষ্ণায় আছি ক্ষেপে।

কিসে এতো দ্বিধা তোর?
কেটে দে নেশার ঘোর।
চুপ চুপ চুপ থাক,
মন প্রাণ ভরে যাক।

করিস নে চিৎকার,
কে করবে উদ্ধার?
এটা আমার এলাকা,
রাজি হয়ে যা বোকা।

নিতে গিয়ে জোর করে,
মেয়েটা যে গেল মরে!
আরে মামা ভয় নেই,
বলা আছে থানাতেই।

বিশ্বাস অবিশ্বাসের ভালোবাসা

বিশ্বাস হীন ভালোবাসা কচু পাতার পানি,
টুপুস করে গড়িয়ে পড়ে সন্দেহ যখনি।
অবিশ্বাসের ভালোবাসায় গভীরতা নাই,
দোষ না করে দোষী হৃদয় জ্বলে পুড়ে ছাই।

ভালোবাসা গাছ যদি হয় আস্থা হলো শেকড়,
মিথ্যা যদি ঠাঁই পেয়ে যায় দু:খ কাটবে আঁচড়।
মায়াবী হাসির আড়ালে ছলনা যদি রয়,
তাকে যেন সময় ক্ষেপণ ভালোবাসা নয়।

ভালোবাস সস্তা নয়গো সাধনার ফসল,
প্রলোভনের ছোঁয়া পেলেই ভয়ংকর গরল।
এটা শুধু মিলতে পারে ত্যাগের বিনিময়,
মোহ আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা নয়।

বনে বনে কোকিল ডাকে ফাল্গুনে যখন,
হয়তো বলা ভুল হবেনা প্রেমের নিদর্শন।
রবির চারিদিকে যেমন চন্দ্র ঘুরে যায়,
আলোকিত ভালোবাসা এমনি গভীর হয়।

মোহের ভোগের বাঁধন বয়ে আনে অন্ধকার,
ভালোবেসে ভূলে যাবে সাধ্য আছে কার?
সাধ ফুরালে কেটে পড়ে প্রেমিক সে তো নয়,
প্রেমের জন্য প্রান সপে যে প্রেমিক তারে কয়।

কেন এমন হয়?

কেন এমন হয়?
বারে বারে অসহায়ের
স্বপ্ন ভেঙে যায়?

বাঁচে যারা আশা নিয়ে
শান্তি জলাঞ্জলি দিয়ে,
অত্যাচারের শিকার শুধু
তাঁরা কেন হয়?

যে কোনদিন দ্যাখেনি সুখ
শুধু আশায় বেঁধেছে বুক,
সারা জীবন কেন শুধু
তাঁরাই দুঃখ পায়?

জোটেনি যার ভালোবাসা
কষ্ট নিয়ে ভবে আসা,
একটু মুচকি হাসি কেন
তাদের জন্য নয়?

হোঁচট খাওয়া চলতে শিখে
পাহাড় সমান আঘাত বুকে,
চলার পথে তাঁদের সঙ্গী
কেউ কখনো নয়!

পেতে একটু সুখের পরশ
ছুটে চলা রাত্রি দিবস,
কেন তাঁরা ছুটতে ছুটতে
শুধুই হোঁচট খায়?

কেন এমন হয়?
বারে বারে ভাঙা স্বপ্ন
আবার ভেঙে যায়?

কাড়াকাড়ি বাড়াবাড়ি

মাদকের ছড়াছড়ি, কালো টাকা কাড়িকাড়ি,
জেল ফাঁস তাড়াতাড়ি, দলাদলি হুড়াহুড়ি।
লাঠালাঠি পড়াপড়ি, প্রসাশন কড়াকড়ি,
নথিপত্র নাড়ানাড়ি, ফেঁসে যাওয়া আড়াআড়ি।

পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি, অতিশয় বাড়াবাড়ি,
সব কাজে তড়িঘড়ি, বিয়ে তোর ওঠ ছুড়ি।
শুধু কাঁদা ছোড়াছুড়ি, আশ্রমে কুজোবুড়ি,
মরে মরে নেই বড়ি, যাবি যা যমের বাড়ি।

ঘেউ ঘেউ করে নেড়ি, চোরে চোরে জড়াজড়ি,
শিস্যের পায়ে পড়ি, গুরু নেয় হাতেখড়ি।
ভেঙেছে দশের নড়ি, নীতির গলায় দঁড়ি,
পুন্যের সাথে আড়ি, পাপী হাসে মেরে তুড়ি।

নানা কথা ফুলঝুড়ি, নেই তাতে কমা দাড়ি,
ফ্রিজে রেখে পঁচা মড়ি, রোজ খেয়ে বাড়ে ভুড়ি।
গেলে হাটে ভেংগে হাড়ি, ছাড় নেই খাড়াখাড়ি,
বিয়ের আগে ছাড়াছাড়ি, বিধবার লাল শাড়ি।

সুঁতো ছিড়ে সুখ ঘুড়ি, গেছে ডানা মেলে উড়ি,
নাটাই রয়েছে পড়ি, ফিরবে না পায়ে পড়ি।
নেই হাতে কানাকড়ি, মুখেমুখে দেশ গড়ি,
হাতে নিয়ে ভাঙা ছড়ি, হায়হায় ডাক পাড়ি।

যদি তুমি জানতে

এই মনে যে কত ব্যথা, যদি তুমি বুঝতে,
আমার মতই ব্যকুল হয়ে, তবে আমায় খুঁজতে!
এমনি ভাবে অনিদ্রাতে, কাটলে একটা রাত্রি,
বুঝতে আমি তোমার শোকে, মরন পথের যাত্রী।

পথের পানে চেয়ে থেকে, একলা আমি ক্লান্ত,
পারছিনা আর সইতে প্রিয়, এ কষ্ট অনন্ত!
জানতে যদি কি যন্ত্রনায়, জ্বলছে পোড়া অন্তর,
হয়তো তবে কাছে টেনে, করতে আমায় উদ্ধার!

সূর্যের আলো ক্লান্ত হলে, জোসনা বিলায় চন্দ্র,
চাই তেমনি হতে তোমার, প্রহরী অতন্দ্র।
নদী যেমন সাগর পানে, ছুটে চলে আপ্রাণ,
আমার দুঃখী ব্যকুল হৃদয়, করে তোমায় সন্ধান।

বৃষ্টি ফোঁটা শীতল করে, ধূধূ মরু প্রান্তর,
তেমনি তুমি সামনে এলে, তৃষ্ণা ভোলে অন্তর।
সাধের জীবন ফুরিয়ে যাবে, না থাকলে এই নিঃশ্বাষ,
পাবো একদিন ওই বুকে ঠাঁই, এটা আমার বিশ্বাষ।

যুগে যুগে মানুষ করে, সুখের জন্য যুদ্ধ,
কারণ দুঃখের কারাগারে, শান্তি অবরুদ্ধ।
একটি পলক দেখলে তোমায়, পাই যে কত শান্তি,
জানতে যদি তোমার প্রানে, থাকতো না বিভ্রান্তি।

এই জীবনে দুঃখ বেশী, ভালোবাসা স্বল্প,
হতেও পারে কষ্টে ভরা, তোমার আমার গল্প।
কি ক্ষতি গো আসলে কাছে? চলে যায় বসন্ত,
ভেতর জুড়ে তুমি শুধু, সপ্ন অফুরন্ত।

রাতের আঁধার যায় ঘুঁচে যায়, চাঁদের মৃদু আলোতে,
সুখী না হয় করলে আমায়, আসলে কাছে জ্বালাতে।
না পাওয়ার যে কি যাতনা, যদি তুমি জানতে,
সব জড়তা দূরে ঠেলে, আমায় বুকে টানতে।

বেশ হয়েছে

বিয়ের আগে বউ মরেছে, না বালিকা মা হয়েছে,
আম গাছে কাঁঠাল ধরেছে, শিশু বাবুর গোফ গজেছে।
আইন কানুন কান মলেছে, শপথে মিথ্যা বলেছে,
শিক্ষাগুরু মার খেয়েছে, ছাত্র তার কলার ধরেছে!

মেয়ে মেয়ে বে করেছে, ছেলে ছেলে ইয়ে হয়েছে,
নাবালিকা মা হয়েছে, বাসর ঘরে বাপ বলেছে।
খুন করে খুব দাম হয়েছে, কথা বলে গুম হয়েছে,
জলেতে আগুন জলেছে, রাজা নিজেই ভিক চেয়েছে।

জন্মের আগে নাম বলেছে, কাকুর সাথে মা চলেছে,
বলদ রহিম সৎ রয়েছে, আর ভয়ানক ফল সয়েছে।
লবণ চিনি টক হয়েছে, মরা পাখি গান গেয়েছে,
রডের বদলে বাশ দিয়েছে, বাপের জমি খাশ হয়েছে।

মরার পরে ফাঁস হয়েছে, বেঁচে থেকে লাশ হয়েছে,
দেনাতে আকাশ ছুয়েছে, মগের মুলুক দেশ হয়েছে।
হেমন্তে কোকিল ডেকেছে, পরকিয়ায় লোক মেতেছে,
নর্দমাতে ঘ্রান হয়েছে, দাদুর সাথে নাত শুয়েছে।

পুরুষ লোকের চুল ঊড়েছে, নারীর মাথা টাক হয়েছে,
মশাতে কামান দেগেছে, বাঘের খাবার বক খেয়েছে।
সব বেঁচে ফোঁড়া কেটেছে, ভিক্ষুকে দালান গড়েছে,
মুর্খরা নেতা হয়েছে, রেপ করে তয় পেয়েছে।

শরম ও বিক্রি হয়েছে, পয়সাতে ডিগ্রী নিয়েছে,
বে’র আগে তালাক দিয়েছে, রক্ততে সুনাম ধুয়েছে।
বীনা মেঘে বাজ পড়েছে, মরা গরু শিং নেড়েছে,
উপর দিকে জল গড়েছে, বাতাস দিয়ে ঘর গড়েছে।

সকালে জন্ম হয়েছে, বিকালে তার দাঁত নড়েছে,
ঘুস না খেয়েও মেদ বেড়েছে, জুয়ার টাকায় হজ্জ করেছে।
নাম না জানা রোগ বেড়েছে, বউয়ে ধরে বর মেরেছে,
যার কাছে নালিশ দিয়েছে, সে বলেছে বেশ হয়েছে।