নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

লাজ শরমের মাথা খেয়ে

লাজ শরমের মাথা খেয়ে বিকিনি পরে বীচে নেয়ে
হানিমুনের স্বপ্ন সত্যি করুক বাঙ্গালী বউ,
মুক্ত সবাই স্বাধীন সবাই লজ্জা ভীতির পরোয়া নাই
অন্ধ সে তো যার নদীতে বইছে প্রেমের ঢেউ!

পাশাপাশি পার্কে বসে প্রিয়জনের শরীর ঘেঁষে
ফাঁকে ফাঁকে ঠোঁটেতে ঠোঁট এদিক ওদিক চাওয়া,
সুযোগ খোঁজা শরীর ঘাঁমার নারী পরুষ সমঅধিকার
কবে হবে হিসেব নিকেশ কার কাছে কত পাওয়া?

লাজ শরমের মাথা খেয়ে নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে
ঊর্ধ্বতনের অপকর্ম বছর বছর ধরে,
এই শহরের অফিস পাড়ায় যে মেয়েরা দুই পা বাড়ায়
অনটনে বোবা বধির বাধ্য সহ্য করে!

লাজ শরমের মাথা খেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে
গুরুজনের ফাঁদে পড়ে রঙিন স্বপ্নের ভেলায় চড়ে,
দেহ অন্তর সব বিলিয়ে খুঁজে পেতে সার্থকতা
সব পেয়েও নিঃস্ব শূন্য চিৎকার করে আছড়ে পড়ে!

লাজ শরমের মাথা খেয়ে কষ্টে পরকে শান্তি দিয়ে
নির্ধারিত সময় শেষে ঐ দুটি হাত পাতা,
কি দিলে আর কিবা নিলে হিসেব যখন যাবে মিলে
দু চোখ যাবে জলে ভিজে হানা দিবে ব্যথা!

লাজ শরমের মাথা খেয়ে পাপী পাপের পানে ধেয়ে
অন্ধকারের অন্ধ আবেগ পেছন ফিরে চায়,
দারিদ্রতায় গর্ব কত সে জীবন জীবনের মত
সব পাওয়া যায় ধনের মাঝে সম্মান কভু নয়!

লাজ শরমের মাথা খেয়ে পর পুরুষের ঘরে যেয়ে
কি যে স্বপ্ন নিজের মনে যদি না সে নিজেই জানে,
পংকিলতার জলে নেয়ে সবার মুখের ছি ছি নিয়ে
লাজ শরমের মাথা খেয়ে অশ্রু ঝরে সংগোপনে!

সুখ টান

দিতে দিতে সুখ টান কয়লা ঠোট খান
তবুও মেটেনা নেশা আহারে,
আবার একটা জ্বেলে টোকা মেরে ছাই ফেলে
পক পক মারে টান সজোরে।

পেয়ে আগুনের ছোঁয়া উড়ে যায় সাদা ধোঁয়া
কেনো সেটা দামে কিবা সস্তায়,
সব শেষে সুখ টান কি সুখের সে দহন
বিষে ভরা সাদা ধোয়া উড়ে যায়।

খেলে হবে ক্যান্সার তাতে মাথাব্যথা কার?
যে বলে সেই মারে সুখ টান,
ফুসফুস ফুটো হয়ে অসহ্য জ্বালা সয়ে
ধূমপায়ীর আত্মবলিদান!

তামাকের গন্ধে উপশিরা রন্ধ্রে
নিকোটিন আর শুধু নিকোটিন,
মৃত্যুর ছোবলে শুন্যের কবলে
মরে আর মারে ওরা প্রতিদিন!

বলছে যে ডাক্তার টানবেনা বিড়ি আর
পকেটে রয়েছে তাঁর বেনসন,
অস্ত্রপাচারের আগে নিজেই তড়িৎ বেগে
টেনশানে মারে দুটো সুখ টান।

আহা এই সুখ টানে মনে প্রাণে মজা আনে
ভেতরটা জ্বলে পুড়ে ছারখার,
প্রতিজ্ঞা প্রতিদিন বাঁচবো বা কতদিন
কাল থেকে সুখ টান নয় আর।

দিতে দিতে সুখ টান কেশে কেশে যায় প্রাণ
এই বুঝি যায় যায় নিঃশ্বাস,
ক্লান্তি করতে দূর টান মারে ভরপুর
সুখ টানে বাড়ে নাকি বিশ্বাস।

এসেছে এমন দিন

গায়ে ঢেলে কেরোসিন এসেছে জ্বালানো দিন
শুনি নারী শিশুদের চিৎকার,
অন্যের গুণ গাই চরিত্র ঠিক নাই
সমাজকে দিয়ে যাই ধিক্কার!

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের সম্মানে
গুরুজনে কলঙ্ক লেপে দেয়,
মাদকের যাতনায় এমনও তো দেখা যায়
বাবার কাছেও নিরাপদ নয়!

প্রতিবন্ধী যদি হয় গর্ভবতী
কেউ নেয় না তাঁর দায় ভার,
সমাজের উচু তলা বলছে ফাটিয়ে গলা
এ কেমন ছোটলোকি কারবার?

এসেছে এমন দিন মরে যাই প্রতিদিন
গাড়ী চাপা পড়ে ওই রাস্তায়,
তখনো ঐ উচু তলা বিশ হাজারে শেষ খেলা
তুমি আমি মরলে কি এসে যায়?

এসেছে এমন দিন ছিল না যা কোন দিন
বিদ্যা বুদ্ধিও হয় বিক্রি,
চৌদ্দ গুষ্ঠি বেঁচে উলঙ্গ হয়ে নেচে
মিলছে না সরকারী চাকরী।

জন্ম হতে মৃত্যু অবধি

জন্ম হতে মৃত্যু অবধি পঞ্চাশ আশি বা শতাব্দী
আয় রোজগার সুখ শান্তির জীবন বড়জোর,
তার প্রতি এতই ভক্তি নিয়োগ করা সকল শক্তি
অজ্ঞতা বলা যায় নাকি প্রলোভনের ঘোর?

আসা যাওয়া খালি হাতে মনি মুক্ত ভরা তাতে
শুন্য হতে আসা আবার শুন্যে বাঁধা ঘর,
মধ্যিখানে কান্না হাসি ঘৃণা ভালোবাসা বাসি
প্রাণের চেয়ে আপন আবার শত্রুর চেয়ে পর!

রক্তারক্তি কাটাকাটি তোষামোদ পা চাটাচাটি
পরের ধনের পোদ্দারিতে শুধুই রদবদল,
মানবতার দোহাই দিয়ে হায়া লজ্জা লুটে নিয়ে
তালের সাথে তাল মিলিয়ে শোসন জোর দখল!

জীবন যেন চোখের পলক তাতেই রিপুর এত পুলক
নিজেরটা উপভোগ করে ধরা অন্যের ঘর,
অপচয়ের পাল্লা চলে দাম্ভিকতার শক্তি বলে
পরকে আপন করতে গিয়ে আপনই হয় পর!

তুচ্ছ ক্ষুদ্র আলিঙ্গনে অপবিত্র মধুর ক্ষণে
ওই অভাগা যদি আসল কর্ম ভূলে যায়,
এই ভুবন তো ক্ষণিক ভুবন আসল পরকালের জীবন
সে জীবনের অশেষ শান্তি তার জন্য তো নয়!

দুটি ফোঁটা চোখের জলে কত তৃপ্তি মেলায় দিলে
পরিপক্ব মজবুত হয় পরকালের ঘর,
লুটে নিয়ে অন্যের ধন ক্ষণিক সুখে মোহিত মন
স্রষ্টা নয় আজ সৃষ্টি পূজায় মত্ত এই সংসার!

জন্ম হতে মৃত্যু অবধি ষাট আশি বা শতাব্দী
উপাসনার আরাধনার জীবন বড়জোর,
তারই মধ্যে অজস্র পাপ অনৈতিক এই কার্যকলাপ
নিষ্ঠাবানের পরপারে শান্তি নিরন্তর।

নৈতিক স্খলন

বিখ্যাত আমি সুখ্যাতি নিয়ে কুখ্যাত কাজ করি,
যোগ্যতাহীন অজ্ঞতা দিয়ে বিজ্ঞতার রুপ ধরি।
ঘৃণ্যতা দিয়ে পুন্যতা ঢেকে বন্যতা করি প্রকাশ,
নম্রতা বেঁচে নগ্নতা ঘেঁসে মগ্নতার এই প্রয়াস।

কাম্যতা দিয়ে সাম্যতা কিনি দৈন্যতা আছে থাক,
রিক্ততা নিয়ে সিক্ত হৃদয় মুক্তি পেতে চাক।
প্রাপ্ত সুখে তৃপ্ত হয়ে সুপ্ত বাসনা জাগুক,
অনন্ত এই বসন্ত দিনে চূড়ান্ত ক্ষণ আসুক।

ছুটন্ত প্রাণ দুরন্ত আজ জীবন্ত স্বপ্নেরা,
পক্কতা এসে সখ্যতা গড়ে বক্রতা দিয়ে ঘেরা।
প্রক্রিয়া দিয়ে বিক্রিয়া করে নিষ্ক্রিয় মেরুদন্ড,
সুপ্তবাসনা মুক্তচেতনা ভুক্তভোগেতে পন্ড।

অভিশপ্ত, অপর্যাপ্ত নির্লিপ্ততায় প্রাণ,
উত্তীর্ণ নয় বিস্তীর্ণ এক সংকীর্ণতার গান।
চলন্ত স্রোত ফুটন্ত ফুল পড়ন্ত এই বেলা,
অজ্ঞ দ্বারা বিজ্ঞ যাচাই অভিজ্ঞের অবহেলা।

আশ্রয় আজ প্রশ্রয় পেয়ে প্রত্যয় নিয়ে বসে,
ব্যভিচার আর অনাচার মিলে অবিচার অনায়াসে।
প্রচেষ্টা যদিও সচেষ্ট তবু আকৃষ্ট নয় কেহ,
নৃশংস আমি প্রশংসনীয় শেষাংশে চাই দেহ।

সর্বত্র তুমি

সত্ত্বায় তুমি আত্মায় তুমি, তুমি নিরাপত্তায়,
রঞ্জিত তুমি অংকিত তুমি, দূরীভূত সংশয়।
উদ্যম তুমি উত্তম তুমি, উত্তেজনা প্রাণপণ,
স্নেহময় তুমি মহিমায় তুমি, তুমি বুকে স্পন্দন।

প্রশ্রয় তুমি প্রত্যয় তুমি দৃঢ়তায় প্রতিজ্ঞ,
অগ্রজ তুমি কারুকাজ তুমি শ্রেষ্ঠতায় অভিজ্ঞ।
শান্তনা তুমি মন্ত্রণা তুমি, তুমিই উত্তেজনা,
সরলতা তুমি উষ্ণতা তুমি হটাও কুমন্ত্রণা।

উত্তাল তুমি শৃঙ্খল তুমি, তুমি মহামূল্য,
নাই কিছু নাই ত্রিভুবনে তোমার সমতুল্য।
প্রতিবাদ তুমি প্রতিঘাত তুমি, তোমাতেই আসক্ত,
দুর্বার তুমি সহচর তুমি তুমিই উপযুক্ত।

মনোবল তুমি অবিচল তুমি, তুমিময় সর্বত্র,
তোমার মাঝে পাই খুঁজে পাই বেঁচে থাকার সূত্র।
উত্থিত তুমি কাঙ্ক্ষিত তুমি তোমাতে উৎসর্গ,
তোমার জন্য অন্তর জুড়ে সাজাই প্রীতি অর্ঘ।

নিঃশ্বাস তুমি বিশ্বাস তুমি ধ্বংসলীলার প্রান্তে,
সহমত তুমি সহজাত তুমি অন্তরের অজান্তে।
উল্লাস তুমি উচ্ছ্বাস তুমি, তুমি দিবাস্বপ্ন,
কামনায় তুমি যাতনায় তুমি, তোমাতেই ধরা মগ্ন।

শুভ নববর্ষ

খর তাপের চৈত্র বিদায় বৈশাখের ছন্দে,
চুকিয়ে হিসাব যা ছিল সব ভূলে, দ্বিধা দন্ধে।
সাজসজ্জায় মুখরিত ধনী চাষী কামলা,
পান্তা ইলিশ ঘরে ঘরে খুশী সারা বাংলা।

রীতি নীতির ঐতিহ্যে মুখরিত চতূর্দিক,
লাভ ক্ষতির দেনা পাওনা মেটানো তাই প্রাসঙ্গিক।
পূজা পার্বণ মেলার পশরা মাতোয়ারা আনন্দে,
পূরোনো সন দুঃখে সুখে পৌঁছে গেল শেষ প্রান্তে।

সঞ্চিত সুখ বর্ষিত হউক জাগুক নতুন আকাঙ্খা,
কষ্ট ক্লেশ ব্যথা বিদ্বেষ করুক সবাই উপেক্ষা।
মেলার ভিড়ে সুখে মুড়ে যাক চলে সব বিভ্রান্তি,
ষড় ঋতুর স্বর্গে যেন থাকে না আর অশান্তি।

নতুন পোশাক পরিচ্ছদে বয়ে আনুক কল্যাণ,
চিরশান্তির বৈরী বাতাস অশুভ দিক বলিদান।
অস্তমিত সূর্য আবার হাতছানি দিক আগামী,
সুখের বানে ভাসাক বাংলা নববর্ষের সুনামী।

অনন্তকাল প্রাচীন ধারায় সত্য শুভ আগমন,
রচিত হোক নতুন অধ্যায় পুরনো যাক বিসর্জন।
যথা যথ গাম্ভীর্য পর্যাপ্ত উৎকর্ষ,
চির শান্তির বার্তা আনুক শুভ নববর্ষ!

যুগে যুগে জোড়ায়

যুগে যুগে জোড়ায় জোড়ায় ঘর বেঁধে ভালোবেসে,
এঁকে অন্যের দুঃখে কাঁদে, সুখের বেলায় হাসে।
কোন সুদুরের কোন অজানা, হঠাতই হয় চিরচেনা,
অনন্তকাল একত্রে বাস, অফুরান সে লেনাদেনা।

যুগে যুগে জোড়ায় জোড়ায় মধুর সুখের ছোঁয়া,
পরকে পরিপূরক ভেবে, আপন করে নেওয়া।
দুজনার এক চাওয়া পাওয়া, দুঃখ ভুলে আপন হওয়া,
মুখ বুজে সব কষ্ট সওয়া, আবার জীবন বিলিয়ে দেওয়া।

যুগে যুগে জোড়ায় জোড়ায় পরিপূর্ণ ধরা,
এ বিশ্বময় প্রাণীকুলের এইতো জীবন ধারা।
মহান স্রষ্টার সৃষ্ট প্রাণে, আনন্দ বাসনার ক্ষণে,
ভালোবেসে খুব যতনে, অন্তরে বা দেহের টানে।

যুগে যুগে জোড়ায় স্বপ্ন করে লালন,
প্রকৃতির সৃষ্ট নিয়ম এইতো প্রাণীর জীবন।
একলা যাওয়া একলা আসা, দুইয়ে মিলে ভালোবাসা,
তাতেই পরিপূর্ণ আশা, প্রাণের সাথে প্রাণের মেশা।

যুগে যুগে জোড়ায় জোড়ায় রেখেছে এই ধারা বজায়,
সৃষ্টিকারী স্রষ্টা বাদে, কে আছে আজ একলা কোথায়?
এমনি ধারা যুগে যুগে, একের সাথে অন্যে লেগে,
সকল প্রাণের আত্মত্যাগে, সকল প্রাণী থাকবে জেগে।

এক চোখে ভালোবাসা

এক চোখেতে ভালোবাসা অন্য চোখে ঘৃণা,
এক ঠোঁটে হাসি আর অন্য ঠোঁটে কান্না।
এক হাতেতে গোলাপ আবার অন্য হাতে গুলি,
এক পায়েতে রশি বেঁধে অন্য পায়ের ধূলি।

এক অন্তরে শুভকামনা আবার আছে ক্রোধ,
যেই খানে ঠাঁই সেই খানেতেই ঘৃণ্য প্রতিশোধ।
এক জীবনে বেঁচে থাকা এক জীবনেই মরণ,
একই প্রাণের উগ্রবাদ আর শান্তির অনুসরণ।

এক আত্মাতে সত্ত্বা বসে জঘন্যতার বাস,
সেই অন্তরেই ভালোবাসা প্রতিহিংসার চাষ।
একই পথে স্বপ্ন নিয়ে একত্রে পথ চলা,
সেই পথেতেই দুঃস্বপ্নের আধার করুণ জ্বালা।

এক আকাশের নীচে বসত এক জমিনের পরে,
একই জাতির বিভিন্নতা ভিন্ন ভিন্ন স্তরে।
এক মানুষের প্রচেষ্টাতে তৈরি জাত আর পাত,
সেই মানুষের ধ্বংসলীলায় মরণ অপঘাত।

একবারই এই ভবে আসা একবারেতেই যাওয়া,
এক মনেতে একাগ্রতায় লক্ষ কোটি চাওয়া।
যে মস্তিষ্কে কল্যাণ চেয়ে পুণ্য পরিমাপ,
সেইখানেতেই সকল পাপের দিনরাত্রি বিলাপ।

যার ভেতরে মানবতা সেই অমানবিক,
তাঁর ভেতরেই সত্যের বাস আবার মিথ্যা ধিক।
এক জীবনের প্রচেষ্টাতে সত্যের অনুসরণ,
সেই জীবনই নিত্য করে মিথ্যার অনুকরণ।

একই সত্ত্বার সত্য পথে শান্তির আন্দোলন,
তাঁর ভেতরেই লুকায়িত মিথ্যার আস্ফালন।
এক চোখেতে ভালোবাসা এক চোখেতে ঘৃণা,
এক পলকের এই জীবনে কঠিন আপন চেনা।

সভ্যতা কোথায়?

কে ঘুমোচ্ছে কাহার ঘরে?
কে চলে কার হাতে ধরে?
কার উপর কে ভর করে?
কে দোলা দেয় কার অন্তরে?

কার জন্য কে হচ্ছে নিলাম?
কাকে কোথায় দেখেছিলাম?
কার বাসরে কাকে দিলাম?
কে লুটে কার লজ্জা শরম?

কার প্রতি কার দেহ টানে?
কার স্বপ্ন কে আঁকে মনে?
পাগল পারা রুপের ধনে?
ভিন্ন গৃহে বর আর কনে!

কে বলেছে কোনটা আসল?
সবাই বলে সবই নকল!
কে সামলাবে কাহার ধকল?
ভাবখানা তো সহজ সরল!

ভাজা মাছটা উল্টে খেতে;
জানে না সে প্রতি রাতে,
ঘুম পাড়িয়ে কাহার সাথে?
মিলিত হয় জাত বেজাতে?

কে দিয়েছে কেমন করে?
ঠাঁই কাহারে আপন ঘরে?
কে নাচে কার গায়ের পরে?
পাপও নিজে লাজে মরে!

কে সুখী আজ কার কামনায়?
কে বন্দী কার হাজতখানায়?
কে পাচ্ছে সুখ কার বিছানায়?
কে আজ কাকে সভ্য বানায়?

জি বাংলার সংসার

জি বাংলা বন্ধ বলে
রান্না ঘরে আগুন জ্বলে
ভাত তবু হয় না,

বাচ্চা বলে মা কি খাবো?
ভেংচি মেরে বলে
আমার মাথা খা।

সারা রাত্রি বিছানাতে
এই পাশে আর ওই পাশেতে
ঘুম তো আসে না,

ঘুমের ঘরে রিমোট চাপে
টেলিভিশন যায় ঘুমিয়ে
তাঁর ঘুম আসে না।

সকাল বেলা জেগে খুকী
রেডি বসে মুখটা দুঃখী
প্রশ্ন ছোড়ে আম্মু আজকে
স্কুল যাবো না?

এতোসব আর ভাল্লাগেনা
সারা রাত্রি ঘুম আসে না
বাবার সাথে যা।

ভয়ে বাবার গায়েতে জ্বর
টাই খুঁজে যায় এ ঘর ও ঘর
পায়নি খুঁজে তবু ভয়ে
প্রশ্ন করে না।

সবকিছু আজ এলোমেলো
জি বাংলাতে কি যে পেলো
যায় আসে যায় অপেক্ষাতে
কেন আসে না?

প্রিয়জন

খেতে খেতে পপকর্ন,
দাদা চেপে দিলো হর্ন।
সিনেমাও হয়ে গেল শেষ,
লাগছিলো বেশ।

তারপর রেস্তোরা,
পানাহার ঘোরাফেরা।
মিললোনা সুযোগ অবশেষ,
বাড়ী যাই বেশ।

পার্কে পরের দিন,
কোলে মাথা মিনমিন।
ফিস ফিস আলাপন বাদামে,
তৃষ্ণা উঠে গেছে চরমে!

চারিদিক লোকে ঘেরা,
আচানক ঘোরা ফেরা।
সয়না যে দেরী আর সয়না,
হয়ে হয়ে সুযোগ আর হয় না!

ওইতো একটা ঝোপ,
উত্তেজনা ব্যপক।
তবে কেন অযথা দেরী আর,
সুযোগ তো আসবেনা বারবার!

লজ্জা ভেঙে গেল,
নিয়মিত শুরু হল।
ধীরে ধীরে লোপ পায় ভক্তি,
একদিন ভেঙে গেল চুক্তি।

নাকের ডগার পরে,
অন্যের হাত ধরে।
রোজ রোজ সেই করে বিচরন,
আমিও পেয়েছি খুঁজে প্রিয়জন!

ইজি কাজে বিজি

চ্যাট করে চ্যাটার্জী ফোনে ফণীমনসা,
বকা দেয় বকলম সাহসী সে সহসা।
কল করে কলিমদ্দি কথা কয় কলি,
দুলাভাই দোলা দেয় শেয়ার করে শালী।

রেস্ট করে রেস্টুরেন্টে বউ নাকি বেষ্ট,
বিয়ের আগে বার বার প্রেগন্যান্সি টেস্ট।
রোষ্ট খায় রুস্তম টেনশানে টনি,
বেলায়েত বিলেতে পেনশনে পনি।

ক্যাট দিয়ে ক্যাটারিং হেনে হট ডগ,
মগ নিয়ে মাগুরায় জেগে রয় জগ।
ভ্যালেন্টাইনে ভগবতির বমি বমি ভাব,
ডেটিংয়েতে ডিয়ারে খেয়ে গেছে ডাব।

লতিফের লেট তাই হারি হরিদাশ,
সার্কাসে সেক্স নিয়ে খেলা বারোমাস।
ড্রিমের ডাল ভেঙে করিমনের ক্রাই,
ভেজিটেবল ভেজা বলে ডেলাইটে ড্রাই।

ড্রাগের ডিগবাজি ডেড ডমিনিক,
লাইটের লালসায় রাত ঝিকমিক।
ভেরি হ্যাপি ভানুমতি কাঁদে কল্লোল,
রান খেয়ে রামবাবু বলে হরিবোল।

ডিজিজে ডালিয়া মরে এলো ডাক্তার,
ভেরি ব্যাড নিউজ সে বাঁচবে না আর।
সরি বলে সরোয়ার পেট কেঁটে দেয়,
লাফ মেরে লাবনী সেঁতার বাজায়।

হুমায়ূন হাংরি স্লিপিং সায়মন,
ক্রাই করে কমলা প্লেয়িং ম্যারাথন।
নলেজে নজির আলী বড্ড পাকা,
স্মাইলের গন্ধে নাকটা বাঁকা।

লালুদার ব্লাক বডি ধলু কম নয়,
কালু মিয়া ফুল মুন এপেয়ার হয়।
টয়লেটে টেনে বিড়ি ধোয়া দেয় ছেড়ে,
ডেকে এনে ডক্টর রোগ যায় বেড়ে।

টেস্ট করে টগর আলী টেনশানে আছে,
ম্যারি করে মনোয়ার মার খেয়ে বাঁচে।
ভেরি ফুল ফুলমতি ক্রেজি কামরুল,
পাওয়ারে প্রমিলা দিদি প্রমিজে পারুল।

শিং দিয়ে কিং করে সিটি কন্ট্রোল,
ফিস রেঁধে ফাতেমা খায় শুধু ঝোল।
ফেল করে ফলোয়াপ অয়েল ফ্রি ফ্রাই,
ইজি কাজে বিজি থাকি নাই টাইম নাই।

বসন্ত এসে গেছে

বসন্ত এসে গেছে শুনেছো নাকি?
কোকিলেরা বলছিলো কোকিলারে ডাকি!
শিহরণ জাগানো বায়ু বয়ে যায়,
চুপি চুপি কথা বলার এই তো সময়!

অলি আর ভ্রমরে কি যে ডলাডলি,
মনে জমা যত কথা হবে বলাবলি!
মেঘেরা আকাশ পানে যায় ধেয়ে যায়,
কালবৈশাখী নব যৌবন পায়!

কলকল ধ্বনিতে বয়ে যায় স্রোত,
শেষ রাতে কুয়াশায় ভেজে মেঠো পথ।
ঝোপের আড়াল হতে কে হেঁটে যায়?
এতো সুন্দরী সে কবে হলো হায়!

বসন্তে মাখামাখি এ লাবণ্য,
দর্শনে দু-নয়ন হলো ধন্য!
এই ঋতু কেন এতো বাসনা জাগায়?
দেহ অন্তর জুড়ে ঢেউ খেলে যায়!

কামনার যাতনায় জ্বলে যায় দেহ,
প্রিয় হয়ে এই দিনে আয় কাছে কেহ!
বসন্ত চলে যাবে আয় ওরে আয়,
ককিলেরা ডেকে ডেকে কোকিলারে কয়!

সাধ আর সাধ্য

সাধ আর সাধ্য জোড়া দুই ভাই,
সাধ্য তার হয় যার সাধ নাই!
সাধ ভর করে থাকে যার অন্তরে,
ওই চাঁদ দেখা যায় শুয়ে তার ঘরে!

পিপাসায় তৃষ্ণায় দুঃখী লোকজন,
আমরণ করেছে সাধের সাধন।
সাধ্য যে বিত্তে ঢাকা পড়ে রয়,
মনিবেরা তারে শুধু করে অপচয়!

সাধ বলে ভাইরে আয় কাছে আয়,
একসাথে বাস করি মিলে গায় গায়!
সাধ্য মহল ছেড়ে ওই কুড়েঘরে,
যেতে চেয়ে যায়না বড় ঘৃণা করে!

এ জীবনে তবে কি মিটবেনা সাধ?
সাধ্য মহলে থেকে হবে বরবাদ?
সাধ আর সাধ্য এক সাথে নাই,
তবে কি আপন নয় ওরা সৎ ভাই?

সাধ দ্যাখে জেগে জেগে স্বপ্ন যখন,
সাধ্য মহল মাঝে বন্দী তখন!
এক হতে পারে না ভাই হয়ে হায়,
সাধ্য তো সাধে আর সাধ কেঁদে যায়!