সাজিয়া আফরিন এর সকল পোস্ট

অণুগল্প : নীলা

নীলা তন্ন তন্ন করে ব্যার্থ সার্টিফিকেট খুঁজছে। এ ঘরে ও ঘরে। হঠাৎ যেন বুকের ঠিক মধ্যখানে চিনচিন করে উঠলো। স্বপ্ন গড়ে স্বপ্ন ভাঙে স্বপনেরও খেলা ঘরে। ছোট্ট একটা চিঠির ভাঁজে আঙ্গুল ছুঁয়ে নিমিষে চলে গেলো কক্সবাজার।

বয়স তখন ১৮ কি ১৯। বন্ধুরা মিলে কক্সবাজার গিয়েছিলো। সেই কবেকার কথা। আঁধার রাতে দুই মাতাল বন্ধুর খুনসুটি আর কত গল্প কত কথা। ধোঁয়াটে রুমে আধো আলোতে ভাসলো দুটি পাখি মেঘের ভেলায়। ঝুম বৃষ্টি নামলো, চঞ্চল নীলা সে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে গেলো। কখন কিভাবে দুটি ঠোঁট, ঠোঁটের ভেতর নীল স্বপ্নের মতন ছুঁয়ে রইলো অনন্ত আদি প্রেমের দুই যুগল।

নীলার হাতে তখনও ছোট্ট চিঠিখানা ধরা। নীলার পুত্র যখন এসে বললো, মা তোমার ফোন বাজছে. নীলা যেন, চিলের ডানায় চড়ে চলে এলো বর্তমানে. আদা, রসুন পেঁয়াজ, বাড়ি ভাড়া, সংসারের সস্তা নিয়মে।

বুকের চিনচিন ব্যথার দিকে তাকানোর সময় নেই নীলার। নীলার মেয়ে অনবরত যত্রতত্র মেঘের মূত্র ত্যাগ করছে। নীলা একবার মুছে এসে আবারও সার্টিফিকেট খুঁজছে। এর মধ্যে নীলার মায়ের ফোন এলো। ফোন ধরেই নীলা বললো, হ্যালো মা- ভালোবাসি মা, তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। মা তুমি কি জানো, বিষয় সম্পত্তি, নাম ডাক হাঁক কোনো কিছুর লোভ আমার কোনো কালে ছিল না। ছিলাম কাঙ্গাল ভালোবাসার। মাগো, ভালোবাসা কেন কাঁদালো আমাকে ? কোনো ভাবালো আমাকে? দরকষাকষিতে ব্যস্ত জীবনে আমার আবির্ভাব কেনই বা ঘটলো !!

নীলার মা এত কথার ফুলঝুরিতে কেমন যেন ঘাবড়ে গেলো। নীলা নিজেকে সামলে হো হো করে হেসে মা কে বললো, অবাক হচ্ছ ? ধুর মা… আমি তো আমার শব্দের বাগানের কিছু কুয়াশায় ভেজা গল্পের লাইন বলছিলাম।
মা মেয়ে দুজনই খুব হাসলো।

স্বপ্নের ডানা

দুঃখ দেবে ?
দাও
আরো কাঁদাবে ?
কাঁদাও
অক্সিজেন পাই আমি তোমার তিরস্কারে
তোমার হিংসেমির বা নষ্ট ভাবনায়
বুকের কষ্ট গুলো উঠে আসে আমার কবিতায়
আমি তোমাকে বলছিনা, তুমি আমায় একটা ফুল এনে দাও
একবারও বলছিনা, আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাও
তোমার প্রতারণার গল্প আমি কক্ষনো কাওকে করবোনা

আমার কাছে জীবন এখন ভরা নদীর মত পূর্ণ যৌবনা
চোখ তুলে সামনে তাকালে, আগের মতো ভয় করে না
আমি একজীবনে কত বার মরেছি, না না সে দুঃসময়ের গল্প আজ করবোনা
কত দিন, কত রাত মৌনতায় ডুবে ছিলাম, আজ সেসব কিছুই বলবোনা

জানো, প্রতি ভোরে মৃত্যুকে ভাবতাম
এত সহজে সেও যে আসবেনা জানতাম
রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত হৃদয় নিয়ে
আমি কাঙ্গালের মতো প্রতিদিন তোমাকে ফিরে পাবার অপেক্ষায় ছিলাম
মৃত্যু আসেনি, তুমিও আসোনি
সুখের খোলসে ঝাঁকে ঝাঁকে কষ্টরা বিদ্ধ করেছে হৃদয়।

নীরবে সে কষ্টের বিরহ ভূমিতে আমি পুড়ে পুড়ে রত্ন খুঁজেছি
সে পোড়া গন্ধে আমি আমার মৃত আত্মার সৎকার করেছি
একদিন হঠাৎ দেখলাম প্রেম দেবদূতকে
আমাকে আর পায় কে
জীবনের সে স্বর্গীয় আমেজে
নতুন আমিকে আমি ভীষণ ভালোবেসে ফেললাম
বিরহ জল করেন না টলমল
আমার সুখী হৃদয় মিষ্টি অনুভূতিতে আনন্দে ঝল মল

আমি গল্প লিখি, আমি স্বপ্ন ফেরি করি
আমি দিবানিশি আনন্দে মেতে উঠি
আমার অতীত আমার কবিতার প্রাণ
আমার বর্তমান জোছনার আলোয় আলোকিত যৌবন অনুসন্ধান
আমি আর আগের মতো স্বপ্নের আর্তনাদ শুনে কেঁদে উঠিনা
আমি বিষাক্ত নিকোটিন জীবন থেকে বাদ দিয়েছি
বিবর্ণ সে দিন গুলো কবিতায় বিলিয়ে দিয়েছি

এখন আমার চিত্ত জুড়ে আলোর ঝলকানি
এখন আমি স্নিগ্ধ সুন্দর নদীর একবিন্দু পানি
তোমাকে ভুলিনি
আমার বিষাক্ত ভালোবাসা ডানা মেলেছে
ছুটছে তেপান্তর জুড়ে শুধু তোমারি জন্য
তাই তোমাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।

বলবো না

কথা দিলাম
অভিমান অনুযোগ প্রশ্নই উঠে না
কষ্ট গুলো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে নীল পদ্ম
তোমায় আর দেবো না
লাল গোলাপ যত্নে আর ফোটাব না

অধিকার নিয়ে ভালবাসার সবুজ ঘাসে
তোমায় নিয়ে আর কখনো বসবো না
জোছনা রাতে তোমার হাতে হাত রেখে
সুরে সুরে আর গাইবো না

হাস্নাহেনা তোমায় আর সাধব না
আহ্লাদে ঠোঁট বাঁকিয়ে
মিথ্যে শাসন আর না
দোহাই তোমার হাত উঁচিয়ে
বুকে আস এমন ঢং করোনা
বেহায়া আমি তোমার বুকে
সব ভুলে ঝাঁপিয়ে আর পরবো না

তোমায় নিয়ে আর একটি রাতও
দীর্ঘশ্বাস ফেলব না
লোক দেখানো ভণ্ডামিতে
লজ্জায় লাল হয়ে আর হাসব না
নতুন কোনো রেসিপি আর না
নির্জনে তোমার চোখে চোখ রেখে
ভালোবাসি আর কখনো বলবো না
কথা দিলাম।

হ্যালো ছায়া !

হ্যালো ছায়া !
জীবন কেমন যাচ্ছে তোর ? একটু কি কাঁপাচ্ছে, খুব ধীরে ভাঙছে, অনিয়মে গড়ছে। কখনো কাঁদাচ্ছে আবার পরক্ষণে হাসাচ্ছে, এই তো চলছে তাইনা ?

তুই কেমন আছিস কেও বোধহয় জিজ্ঞেস করে না ? অনেকদিন পর তোকে লিখতে বসে। মনে হচ্ছে, শব্দ গুলো হারিয়ে গেছে। তোকে লিখবো বলে আজ খুব ভোরে উঠেছি। তোর ঠিকানা ধরে নিলাম নীল দিগন্ত।

অদ্ভুত এক ভাবুক তুই। পুরো জগৎ যখন যন্ত্র মানবরূপে ব্যস্ত দরকষাকষিতে, তুই তখন বেহিসেবি হযবরল এক ভবঘুরে। কোন এক সন্ধ্যায় তোর একটা নীল ঘুড়ি ভুলে আমার বারান্দায় প্রবেশ করেছিল; ভেবেছিলাম ফিরিয়ে দেব। কি মনে করে যেন দেয়া হয়ে উঠেনি !! আমার সাদা দেয়ালে, সযত্নে বুক ফুলিয়ে দিন রাত্রি মিটি মিটি হাসছে।

ভেবেছিলাম, শব্দ নয় ছবি দিয়ে একটা গল্প লিখবো। আফসোস, আমি যে আঁকতে পারিনা। আচ্ছা কখনো তুলির আঁচড়ে ঝাপসা কুয়াশা এঁকেছিস? কখনো এঁকেছিস দু’ ফোটা জলের রেখা ? নিকোটিনে ঝাঁঝরা হৃদয় তোর ক্যানভাস উঠেছে কখনো ? তোর সেই আলটিমেট শিল্প কিন্তু একদম হৈচৈ বাঁধিয়ে দেবে।

হেরে যাওয়া মানুষদের হৃদয়ের নিঃশ্বাস কখনো শুনেছিস ? জানতাম শুনিসনি। থেকে থেকে মনে হবে, কোথাও কেও করুণ আর্তনাদের সুর তুলছে হৃদয়ের বেহালায়। যে সুর গগন ছাপিয়ে, ঈশ্বর খুঁজছে …
আজকাল অবশ্য ঈশ্বর ভীষণ ব্যস্ত থাকেন নানা জাগতিক ক্রুসিয়েল ইস্যু’স নিয়ে। মানুষ গুলো অদ্ভুত পশু পিটিয়ে মারে। মানুষ পিটিয়ে মারে। নিজ সন্তানের লিঙ্গ কেটে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। ঈশ্বরের খোঁজে ধর্ম ও বিধর্মের ভাঁজে ভাঁজে প্রকৃতি যেন ধর্ষিত অবলা নির্লিপ্ত অন্য এক দিশেহারা আগন্তুক। এত হাঙ্গামা চারপাশে তবু কেমন করে এত নির্লিপ্ত থাকিস !! তোর টপ সিক্রেটা টা জানাস তো আমায়। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছি, মঙ্গল গ্রহে এক খণ্ড জমি কিনবো। বৈরাগী মনের অমবর্ষায়, রঙে ঢঙে, এক পশলা বৃষ্টিতে, আমি দুঃখ বিলাস করবো।

পেঁয়াজ আর ইলিশের তর্কে, তোর কি একবারও মনে হয়নি, দায় সারা দেশটা ধীরে ধীরে রক্তের ছোপে ছেয়ে যাচ্ছে !!
তুই জিজ্ঞেস করেছিলি, আজকাল কবিতা লিখিনা কেন ? কবিতার প্রতিটা শব্দে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ লেগে থাকে। উগ্র ছাত্রদের অট্টহাসিতে কবিতার শব্দগুলো বিলাপ করে কাঁদে। জোছনা রাতে আগের মতো জোছনা বিলাস যাপিত হয় না। ঘন কালো মেঘ গুলো নিমিষে জোছনা লুকিয়ে ফেলে। দূর দূরান্তে নির্যাতিত মৃত শিশুদের কান্নায় রাত্রি যেন নির্ঘুম চেয়ে থাকে। গাছ-পালা, নদী-নালা সব যেন বাণিজ্যের খেলা। মন্ত্রীদের গাড়ি দেখলে এক দলা থুথু ছিটিয়ে দিতে মন চায়। আমার দেশ তোর দেশ এত ভাগাভাগিতে অবশিষ্ট কিছু তো আর বাকি নেই। ঘরে ঘরে কত মায়ের কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল ফুরিয়ে গেছে।

হিউমান রাইটস বসে বসে বুলি আওড়াচ্ছে, মানবতা যাচ্ছে রসাতলে। তুই থাক তোর মতো নির্লিপ্ত। সবুজ ঘাসের ডগার শিশিরের মতো পবিত্র নির্ভেজাল তোকে আমি অনেক খুঁজেছি। মনে মনে তোর কত ছবি এঁকেছি। তোকে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজে পেলাম তোর ছায়া। সে ছায়া সভ্যতারও অনেক আগে থেকে ছিল, আছে। বাঁশ বাগানে মাথার উপর চাঁদটা যেমন ছিল, থাকে।

আমার চিন্তা চেতনা যথা সম্ভব তোর অদৃশ্য স্পর্শে, প্রাত্যহিক জীবনে কিছুটা শুদ্ধতার ছোঁয়া পেয়েছে; এও কম কি বল ? একটা করে মানুষ যদি তোর ছায়াতে, তোর মায়াতে আলো পায় তবে তো তুই সেই আগন্তুক. পথের দিশারী। তোকে দিলাম আমার সবটুকু ভরসা। যত্নে রাখিস। চারপাশে শকুন শেয়ালের মেলা। খুব সাবধানে … যত্নে রাখিস। ভালো থাকিস।

ইতি
তোর মায়া।

ময়না এবং মনু মিয়া

মনু মিয়ার সংসার দারুণ সুখের সংসার। মনু মিয়ার স্ত্রী কোনোদিন স্বামীর মুখের উপর কথা বলে না। স্বামীর ন্যায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না। পাঁচটা বাড়িতে ছুটা কাজ করে। চার সন্তানের জননী ময়না বেগম বাড়িতে পরিশ্রম করে বাড়ির বাইরেও পরিশ্রম করে। তার স্বামী ফেরেস্তার মতো মানুষ। সকলে তাকে বলে বউ পাগলা।

মনু মিয়া টিটকারির ধার ধারে না। সে গর্বিত বোধ করে নিজেকে নিয়ে। মনু মিয়া প্রতি রাতে যখন ক্লান্ত ময়না বেঘোরে ঘুমায়, ময়নার শরীর নিয়ে খেলে। ময়না চোখের পানি অন্ধকারে কেউ দেখে না। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সন্তানদের দেখভাল ঠিক মতোই করে।

গরম গরম ভাত, তরকারি রাঁধে। মনু মিয়া তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। ময়না বেগম ফজরের আজানের সময় উঠে গরম গরম রুটি ভাজে। সে রুটি পেট পুড়ে খেয়ে মনু মিয়ার ঢেকুর উঠে। মনু মিয়ার সুখের সংসারে সবাই সুখে থাকে। মনু মিয়া ময়না বেগমের জন্য শাড়ি কিনে নিয়ে আসে। ময়না বেগম খুশি হতে পারে না, ময়না বেগম মনে মনে মাইনে হিসেবে করে।

ছেলেটাকে ভালো স্কুলে দেবে। মনু মিয়া একদিন একটা টিভি কিনে নিয়ে আসে। ময়না বেগম এক দৌড়ে কল পারে গিয়ে খালি কাঁদে। সে ভাবে মেয়েটার একদিন বিয়ে দিতে হবে। মনু মিয়া একদিন সাহেবদের মতো শার্ট প্যান্ট কিনে নিয়ে আসে। ময়না বেগম বিলাপ করে কাঁদে। মনু মিয়া ধমকে উঠে, ময়না বেগম চুপ করে যায়।

মনু মিয়া সকালে নাস্তা করে আরাম করে ঘুমায়। এক ঘুমে উঠে দুপুর দুটায়। ছেলে মেয়ে রা যার যার মতো একে অপরকে দেখে শুনে রাখে। মনু মিয়া মন দিয়ে রেডিও শুনে। রেডিওর সব গানের অনুষ্ঠান তার মনে ধরে।

শুক্রবার দিন ময়না বেগম দুপুরেই ফিরে আসে। দুপুরের খাবার খেয়ে মনু মিয়া স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বসে নানা জ্ঞানের কথা বলে। ময়না বেগম কোনো প্রশ্ন করে না।
ফেরেস্তার মতো স্বামীর তথ্য কথা শোনে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে বাতি জ্বালাতে জ্বালাতে ময়না বেগম শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে।

মনু মিয়ার মন মেজাজ মাঝে মাঝে অতিরিক্ত ভালো যায়। সেদিন সে বউকে বলে, জমি কিনবো, দালান উঠাবো এই দিন দিন নারে বউ। তারপর আয়েশ করে বিড়ি ফোঁকে আর বলে ‘বউ দেখ আরো দুই তিনটা বাসা বাড়িতে কাম পাস্ কিনা। এই কামাইয়ে তো সংসার চলে না রে বউ’।

ময়না কিছু বলে না. ময়না বেগম জন্ম থেকেই বোবা।

মহাত্মা আন্তোনি

মহাত্মা আন্তোনি ২৫৪ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের উত্তর অঞ্চলে একটি ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিশরীয় আন্তোনি, মরুবাসী আন্তোনি ও বিজনাশ্রমী আন্তোনি বলেও পরিচিত। তিনি সেই মরুবাসী পিতৃগণের পথদিশারী বলে গণ্য ছিলেন, যারা ৩য় ও ৪র্থ শতাব্দীতে মিশরের প্রান্তরে সন্ন্যাস জীবন পালন করছিলেন।

একদিন যিশুর এই বাক্য শুনে ‘তুমি যদি সিদ্ধপুরুষ হতে চাও, তাহলে যাও, তোমার যা কিছু আছে সবই বিক্রি করে গরিবদের দান কর তবেই স্বর্গে তোমার জন্য ধন গচ্ছিত থাকবে, পরে আমার অনুসরণ কর’ তিনি সবকিছু বিক্রি করে গরিবদের বিলিয়ে দিয়ে লোকালয় ছেড়ে মরুপ্রান্তরে চলে গেলেন।

তিনি প্রথম খ্রিষ্টান সন্ন্যাসী এমনকি খ্রিষ্টান সন্ন্যাস জীবনের আদিপিতা বলে পরিগণিত। তিনি একাকি হয়ে পবিত্র বাইবেলে ও মরুপ্রান্তরের নির্জনতায় ঈশ্বরের অন্বেষণ করলেন। কয়েক বছর পর লোকে তাঁকে সাধু বলে গণ্য করায় তাঁর কাছে পরামর্শ ও প্রার্থনার জন্য আসতে লাগল। তাঁর লিখিত ‘আন্তোনির জীবনী’-তে আলেকজান্দ্রিয়ার ধর্মপাল সাধু আথানাসিউস একথা বলেন যে, আন্তোনি সমগ্র বাইবেল মুখস্থ করেছিলেন, যার ফলে লোকেরা তাঁকে দেখে স্বয়ং খ্রিষ্টকেই দেখতেন।

তিনি ৩৫৬ খ্রিষ্টব্দে প্রাণত্যাগ করেন: আপন শিষ্যদের কাছে এমন নির্দেশ রেখে গেছিলেন যেন তাঁর মৃতদেহ গোপন স্থানে সমাধি দেওয়া হয় যাতে করে তাঁর মৃতদেহ জনগণের ভক্তির বস্তু না হয়।

( collected )

প্রাপ্তিতে খুব আবছা হলেও আমাকে কি মনে পরবে ?

আমি একটা কবর খুড়বো
পুটলি বেধে সুখ গুলো সাজিয়ে রাখবো

মেয়েটার চুলের ক্লিপ
ছেলেটার আঁকা ছবি
তোমার দেয়া প্রথম চিঠি
বিয়ের শাড়ি আর টিকলি
তোমার দেয়া প্রথম ফুল
তোমার দেয়া প্রথম কানের দুল

একটা লিস্ট করলে কেমন হয়?

তুমি তো লিস্টে পটু
দাও না করে একটু
বোকা তুমি কাঁদছ কেনো?
যেতে তো সবার হবে
গুছিয়ে গেলে সেই ঘরে
একা একা কষ্ট হলে
পুটলি খুলে তোমাদের ছুয়ে দিবো আদর করে

নিজের হাতে স্থায়ী ঘর সাজিয়ে রাখবো
হুট করে ডাক এলে সময় কি পাবো?
তাই আগে ভাগে আমার কবরটা গুছিয়ে নিবো
আমার প্রিয় জিনিস গুলো থাকবে অনেক যত্নে
যদি হুট করে চলে যেতে হয় অপ্রস্তুত ক্ষণে
যদি কিছু ফেলে যাই, তুমি তো রইলে
প্লিজ মনে করে নিয়ে এসো আমার কবরে
মাঝে মাঝে তুমি এসে মজার সব গল্প বলবে
তখন তোমার সময় কি হবে?

নতুন বঁধুকে তুমি ঠিকই ম্যানেজ করে নিবে
তুমি দক্ষ আমি জানি তুমি ঠিক ঠিক পারবে
খুনসুটি ছাড়া একটা দিন আমাদের কাটে না
তুমি কি ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সব ভুলে যাবে ?
ওগো আমাকে না ছুয়ে তোমার ঘুম কি আসবে ?
রাত বিরাতে অ্যাডভেঞ্চার গুলোর কি বা হবে?
নাহ আমার একটুও মন খারাপ না
শুধু ভাবছি, একদিন যেতে হবে ছেড়ে
আমার পরী, আমার রাজ পুত্র বড় হবে
কষ্টে, প্রাপ্তিতে খুব আবছা হলেও, আমাকে কি মনে পরবে ?

বিয়ে তুমি ঠিকই করবে নানা অজুহাতে
নির্লজ্জ বদ বোকা আহাম্মক একটা
ভূত হয়ে মলে দেব সতিনের কানটা
জীবিত আমাকে বলো ফাজিল
ভূত হয়ে সতিন কে মারবো একটা কিল
এখন বলো, করবে আবার বিয়ে?

আমি একটা কবর খুড়বো
সুখ গুলো সব পুটলি বেঁধে সাজিয়ে রাখবো।

পুরুষ তুমি মানুষ হও আগে …

হ্যালো, আপনাকে বলছি, শুনতে পাচ্ছেন তো ? ভেবেছিলাম কানেও শোনেন না, চোখেও দেখেন না।

“I simply dont care.” আপনি এই মুহূর্তে কি ভাবছেন। আপনার ৭ বছর বয়সী পুত্র সন্তানকে ঠিকঠাক বৈষম্যতা দূরীকরণের মন্ত্র দিচ্ছেন তো ? এখনও না !! তবে কবে? পাশের বাড়ির মেয়েকে দেখে ১৪/১৫ বছর বয়সে যখন কু-চিন্তায় মগ্ন হবে তখন ?

বুঝেন কিন্তু। আপনার ৭ বছর বয়সী রাজকন্যা কিন্তু সেই বৈষম্যতা বইবে যুগের পর যুগ ধরে। প্রথমে ঘরে তারপর স্বজনদের মাঝে, এরপর কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে, সব শেষে সবচাইতে নিরাপদ স্থান স্বামীর ঘরে।

এই যে পুরুষদের নিয়ে গাল মন্দ করছেন, পুরুষ গুলো তো আর আসমান থেকে ঠুস করে ধরণীতে পরেনি। আমার আপনার গর্ভে ধরেছে। অতি যত্নে, আদরে, আহ্লাদে আস্কারা দিয়ে, মানুষ না গড়ে, পুরুষ মানুষ গড়েছি। ভেবেছেন কখনো, সেই পুরুষ একদিন ধর্ষণের মতো অপরাধ করবে ?

আজ আমি কথা বলছি না; বলছে আমার বিবেক। বিবেক আজ বড় বেয়াদপ। মানুষটা আমি ভীষণ বিনয়ী আর নম্র ভদ্র। আমার কলম আর আমার বিবেক দুটোই লাগামহীন। উহু, পারিবারিক শিক্ষা আমাকে সেই স্বাধীনতা দেয়নি। ধন্যবাদ জরাজীর্ণ নির্লজ্জ সমাজ তোমাকে … তুমি আমাকে আমূল পাল্টে দিয়েছো।

প্রসঙ্গে ফিরে আসি। তো যে পুত্র সন্তান হলে দু’দুখানা গরু জবাই করে নামকরণ আর কন্যা সন্তানের বেলায় একটা ছাগল; তো সেই সমাজে জীবনের শুরুতে প্রেমিক পেটাবে, জবরদস্তি করবে, ভবিষতে স্বামী পেটাবে, জবরদস্তি ? নাহ! সেটাকে বলে স্বামীর অধিকার। তো যখন কন্যা বাপের বাড়ি এসে ফিরে যেতে চায় না, নানান ভাবে আকুতি মিনতি করে, কাঁদতে কাঁদতে অত্যাচারের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়, আপনি তখন ভুলিয়ে ভালিয়ে মেয়েকে আবারও পাঠান সেই বাড়িতে। কখনো কখনো সেই রাজকন্যা লাশ হয়ে ফেরে; এতে অবাক হবার কি কিছু আছে ?

আমাদের গর্ভে জন্মে, আমাদের পেটাবে, নির্যাতন করবে, ধর্ষণ করবে এই তো খুব স্বাভাবিক … কথা গুলো গায়ে জ্বলুনি দিচ্ছে ? দিক না হয়, একদিন না হয় কিছু মুহূর্ত বিবেকের আগুনে জ্বলুক।

হুঁশটা যে আমাদের কখন হবে ? কখন যে ভেতর থেকে এই দায়িত্ববোধ আমরা অনুধাবন করবো জানিনা। আমার পুত্র সন্তান যদি একজন বিবেকবান মানুষ হয়, তবেই না আমার আর আপনার কন্যা সন্তানদের জন্য নিরাপদ হবে পৃথিবী। এর আগে কিচ্ছু হবে না।

অনেক বাবা মাকে ছেলের দোষ ঢাকতে খুব গর্ব করে বলতে শুনি, He is a man. সরি, কিছু মনে করবেন না … আমার পিতা, আপনার পিতা, আপনার স্বামী, আমার স্বামী পুরুষ যে হয়েছে তাতো জীবনের প্রতি পদে দেখেছি। আসুন সময়কে সময়ের তালে হাতে সামলে, আগে নিজ পুত্রকে মানুষ হিসেবে গড়ি। সুশিক্ষা দেই। সে যখন ভালো একজন মানুষ হবে, by default একজন ভালো পুরুষ হবে।

পুরুষ তুমি মানুষ হবে কবে না বলে, আসুন বলি, পুরুষ আমরা দুঃখিত, আমরা মানুষ গড়িনি বলে।

________________________
সাজিয়া আফরিন। সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।

ফিরে পাওয়া আমার আদুরে শৈশব

ঘুম থেকে উঠেই আজ মনে হলো, আজ মন ভালো থাকার দিন। বিশেষ কোনো কারণ নেই। হয় না মাঝে মাঝে, অদ্ভুত ভালো লাগা জড়িয়ে থাকে সারাটা বেলা … ইচ্ছে করছে উড়ে উড়ে ঘুরে আসি আমার প্রিয় বাংলাদেশ।

বাবা নিশ্চয়ই ফজরের নামাজ পড়তে উঠেছে, আমি মনে মনে উঁকি দিলাম ছোট বোনের রুমে। কি বিচ্ছিরি, হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে; মুখ খানা দেখলে মনে হয়, পৃথিবীর সকল সুখের ছায়া পড়েছে এই মুখে। নজর লেগে যেতে পারে ভেবে আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম। তারপর গেলাম মেঝো ভাইয়ের রুমে, যত্রতত্র ছড়িয়ে আছে বই খাতা।

আমার রুমের সোজাসুজি রুমটাই আমার আদরের ছোট ভাইয়ের রুম। আহা! কি সরল সুন্দর মুখখানা। আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম, গায়ের চাদর টেনে দিলাম, পর্দা ঠিক করে দিলাম, কিছুতেই কল্পনার জগৎ থেকে বের হতে ইচ্ছে হচ্ছে না।

আমি বাবার পাশে গিয়ে বসলাম। বাবা মোনাজাতে। চুপচাপ বসে থাকলাম, নামাজ শেষ করে বাবা আমাকে ফুঁ দিয়ে দিলেন।

জায়নামাজ ভাঁজ করতে করতে বললেন, পায়ে সেন্ডেল নেই কেন !! আমি মাথা চুলকিয়ে বললাম, খুঁজে পাচ্ছি না। বাবা নিয়ম মাফিক বকলেন, তোমাদের কোনো ডিসিপ্লিন নেই, ঘুম থেকে উঠে পরিপাটি হবার কথা, না ডেঙ ডেঙ করে ঘুরে বেড়াচ্ছ. যাও চিরুনি নিয়ে আসো, আমি মাথা আঁচড়ে দিচ্ছি। ব্রেকফাস্ট করে সোজা পড়ার টেবিলে। লেখা পড়ার বালাই নেই, একটার চেয়ে একটা গাধা। আমি বাবা হয়ে দ্বিধায় পরি, কে কার চাইতে বড় গাধা, জীবন কঠিন জায়গা, এখানে হেলা ফেলা করা মানে, ভবিষৎ অন্ধকার। আমি কি বলি না বলি তোমাদের কানে কথা কথা গুলো কি ঢুকে ? বেকুবের দল, এই বাড়ির নাম ইডিয়েল হাউস না দিয়ে, দেয়া উচিত ছিল বেকুবের কারখানা। ভুল হয়েছে বিরাট ভুল।

এই ধরণের বকুনিতে আমার চোখে সব সময় জল আসতো। বুক ভেঙ্গে কান্না পেতো। আজ কি যে হলো, আনন্দে চোখে পানি আসছে। ইচ্ছে হচ্ছে বলেই ফেলি, বাবা কতকাল দেখি না, কেমন আছো তুমি ? আমাকে কি মনে পরে ? বেকুব বলে, কেউ আর বকে না। জীবন নিয়ে কথা বলে, কেউ আর তোমার মতো বকে না।
বাবা, প্লিজ একটু বকা দাও, একবার ফোন করো। একবার জিজ্ঞেস করো, কেমন আছি আমি !! সব মান অভিমান ভুলে দেখো কেমন করে জাপ্টে পরি তোমার বুকে সেই ছোট্ট বেলার মতো।

তুমি না হয় নতুন একটা সাইকেল কিনে দিয়ে মান ভাঙিও ঠিক আগের মতো। না হয় আজ বিকেলে নিয়ে এসো সেভোয়ের চকলেট পেস্ট্রি। বাবা, তুমি জানলেও না দূরে সরতে সরতে আমি কতটা দূরের হয়ে গেছি। তোমরাই তো মেয়ে অভিমানটাও তোমারি মতো। বাবা, তোমার নাতিদের নাস্তা দিতে হবে। যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না তবু যেতে হবে বাস্তবে। দেখো বাবা, ধীরে ধীরে আমার চুলে পাক ধরেছে, দেখো তোমার বকুনি ছাড়াই পায়ে সেন্ডেল পরে আছি !!
বাবা, ও বাবা ভালো থেকো। না হয় দূর থেকেই তোমার হাত খানা আমার মাথায় রেখো।

অদ্ভুত ভালোলাগায় আচ্ছন্ন ছিলাম এতক্ষণ। পৃথিবীর কোনো সুখের সাথে এই সুখের তুলনা হয় না। বাস্তবে ফিরে বুঝলাম, আহারে আমার আদুরে শৈশব, কতটা পেছনে ফেলে এসেছি, কত মধুর ছিল বাবার বকুনি।

বাক্ বাকুম পায়রা

বাক্ বাকুম পায়রা

বাকুম বাকুম পায়রা
সুস করলে যায় না
তার যে কত বায়না
দেখে না সে আয়না।

তাড়ালেও যায় না
অদ্ভুত সে হয় না
আহা আদুরে পায়রা
ভেঙ্গে চুড়ে গড়া
বুকের ঠিক মাঝখানে খরা
নীল গগনের একটি মরা
প্রাণ ফিরে পায়না
আহা সে কি মায়া !!

আমার আদলে পড়েছে সে ছায়া
আহা পোড়া মনের উঠছে ধোঁয়া
যায়না তাকে ছোঁয়া
আবছা আঁধারের সে মায়া
ধূসর তার ছায়া
বাক্ বাকুম পায়রা
উড়ে গেছে বনে
আর করে না বায়না।

দগ্ধ বুকে রক্ত ঝরে
আপন করে, অন্ধ করে
দূরদূরান্তে কষ্টের একটা পাহাড় গড়ে।

… অতঃপর একাকী একজন

… অতঃপর একাকী একজন।

জুলফিকার মনস্থির করেছে, আজকেই বলবে। আলিশাকে সে ভালোবাসে। বছর তিনেক হলো, একসাথে পড়াশুনা, লাইব্রেরিতে বসা, হৈ হুল্লোড় সবই হচ্ছে, ভালোবাসার কথা বলা হচ্ছে না।

আজ জুলফিকারের জন্মদিন। আজকের দিনটা ভালো একটা দিন। আজই বলতে হবে। রোকনের সাথে আলিশা বন্ধুত্বের মাহাত্ম জুলফিকারের মাথায় আসছে না। কাল ক্যাম্পাসে ঢুকেই দেখলো আলিশা গা লাগালাগি করে বসে আছে। জুলফিকারের বুকের উপর দিয়ে বিরাট এক একটা বুলডোজার চলাচল করেছে অনেকক্ষণ। আলিশা এমন এক মেয়ে যার ব্যাপারে আগাম কোনোকিছুই প্রেডিক্ট করা সম্ভব না। থাপ্পড় টাপ্পর দিয়ে বসতে পারে। জুলফিকার মনে মনে প্ল্যান করছে, প্রথমে বলবে, চল কোনো একটা কফি শপে যাই, তোর সাথে জরুরি কথা আছে।

তারপর কফি খেতে খেতে কি বলবে, সেটা নিয়ে মাথায় তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। একবার ভেবেছে, সোজা সাপ্টা বলবে, এই শোন আমি তোকে খুব ভালোবাসি, তুইও কি আমাকে ভালোবাসিস ?
বিছানায় শুয়ে শুয়ে কয়েকবার প্র্যাকটিস করলো। নাহ! কেমন ক্ষ্যাত ক্ষ্যাত শুনাচ্ছে। জুলফিকার ভাবছে, আচ্ছা এরকম বললে কেমন হয়, আলিশা শোন, সারাটা জীবন তোর সাথে কাটাতে চাই। তুই কি বলিস?

যে ডেঞ্জারাস মেয়ে পুরা ইউনিভার্সিটি জানিয়ে দেবে। নইলে এসব নিয়ে হাসি তামশা করবে। জুলফিকারের চেহারা ছবি ভালো, মফস্বল থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছে। ইউনিভার্সিটির প্রথম দিন, একটা মেয়ে এসে বললো, তোমার কি ? ঠাণ্ডা লাগছে, এরকম কুঁজো হয়ে আছো কেন ? তারপর বললো ‘ওইইয়ার্ড ‘ বলে ক্লাসে তার পাশেই বসলো। জুলফিকার ইংরেজিতে ভীষণ কাঁচা, সব শব্দের মানে জানেনা। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বাবার জমি বিক্রি করে ভর্তি হয়েছে, এরকম
পরিবেশের সাথেও পরিচিত নয়। প্রথম ক্লাসে স্যার কি বললো তার মাথায় কিছুই ঢোকেনি। সময়ের সাথে ধীরে ধীরে ইংরেজিতে লেকচার শুনায় অভ্যস্ত হয়েছে। কাপড় চোপড়, চলনবলন ধীরে ধীরে শহুরে ভাব চলে আসলো, লেখায় পড়ায় সে বরাবরই দারুণ ভালো।

তারপর প্রথম দিন থেকে আলিশার মতো প্রাণবন্ত একজন বন্ধুর মতো পাশে আছে। এই মেয়ে কোনোদিন তার প্রিয়তমা হবে তা সে কল্পনাও করেনি। আজ ভালোবাসার কথা জানানোর পর যদি তাদের প্রেমটা হয়, বাবা মা কে আলিশার ব্যাপারে জানানোর ব্যাপারটাও ভয়াবহ ব্যাপার।

টিশার্ট জিন্স পড়া একটা মেয়েকে মায়ের সামনে নিয়ে গিয়ে যখন বলবে, এই হলো আলিশা। মা তো মনে হয় হাট এ্যাটাক করে ফেলবে। বাবার নিশানা ভালো না, বাবা বন্দুক দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে সবাইকে বোধহয় মেরে ফেলবে। জুলফিকার আর ভাবতে পারছেনা। অসহ্য লাগছে তার। বিছানা ছেড়ে উঠলো সে,
৭/৮ জন মিলে দুই রুমের একটা বাসায় তারা থাকে। ঘুম থেকে উঠেই বাথরুম খালি পাবার মতো ভাগ্য প্রতিদিন থাকেনা।

আজ তার জন্মদিন। তার ভাগ্য ভালো। বাথরুম খালি পাওয়া গেছে। তার রুম মেট অফিসে যাবার জন্য রেডি হচ্ছে। জুলফিকার তাকে বললো, ভাই আপনার বেল্টটা যদি আজকে দিতেন, সন্ধ্যায় এসে দিয়ে দিবো। ধুর মিয়া, একটা বেল্ট কিনতে পারো না, ছিড়া বেল্ট দিয়ে আর কয়দিন চালাইবা। সুন্দর বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরবা, সুন্দর করা চলবে না ? আচ্ছা যাও আজকে দিলাম। মাইন্ড ইট এরপর আমার জিনিসপত্র ধার পাবে না। রফিক ভাই পাশের রুমে থাকে, তুলনামূলক ভাবে তিনি উদার মানুষ। বাথরুম সেরে জুলফিকার পাশের রুমে গেলো। ভাই এক হাজার টাকা দেন। মাসের টাকা এলেই দিয়ে দেব। রফিক ভাই আন্তরিক ভাবে শুভেচ্ছা জানালেন, এক হাজার টাকা দিলেন। আর নতুন একটা শেভিং ফোম দিয়ে বললেন, এটা তোর বেটা। প্রতিদিন অন্যের শেভিং ফোম নিয়ে খেচখেচ হয়, আজ থেকে
তোরটা তুই ব্যাবহার করবি. আর টাকা ফেরত দেয়া লাগবে না, তুই যখন বড় চাকরি করবি, তুইও কোনো না কোনো জুলফিকারকে মায়া করবি এটা হলো এক বড় ভাইয়ের উপদেশ। পারবি না ?

জুলফিকার চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না। রফিক ভাইকে জড়িয়ে ধরলো। রফিক ভাই হোহো করে হাসতে হাসতে বললেন, আরে পাগল যা তোর ইউনিভার্সিটি দেরি হয়ে যাচ্ছে।

জুলফিকার দূর থেকে আলিশা দেখলো। আলিশা হাত নেড়ে নেড়ে রোকন কে কি যেন বুঝাচ্ছে। জুলফিকারের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। সে কাছে আসতেই ওরা তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো। জুলফিকারের মন ভালো হয়ে গেলো। রাজীব গিটার নিয়ে দূরে বসে টুংটাং করছিলো, এখন গাইতে শুরু করলো, সবাই গান শুনছে মন দিয়ে। জুলফিকার আলিশার কাছেই বসে পড়লো। হঠাৎ কি যে হলো, আলিশা নিজের হাতটা আলতো করে জুলফিকারের হাতে রাখলো। জুলফিকারের হৃদয় কেঁপে কেঁপে উঠলো। আলিশা চোখে চোখ পড়তেই এত মিষ্টি করে সে হাসলো, জুলফিকার মনে মনে বললো, ‘তোর জন্য একটা জীবন দিয়ে দিতেই পারি’।

গান শেষে সবাই যার যার ক্লাসে চলে গেলো। রোকন, আলিশা জুলফিকার বসে আছে. তারা আজ ক্লাস করবেনা বোধহয়। জুলফিকার রোকনকে বললো, তুই বসে আছিস কেন? যা ক্লাসে যা। আমার আলিশার সাথে কথা আছে। রোকন মুচকি হাসছে। আলিশা বললো, তোকে একটা কথা বলা হয়নি, ‘রোকনের পরিবার আমাদের পরিবারে প্রস্তাব দিয়েছে। বাবা মা রাজি। আমাদের পড়াশুনা শেষ হলেই বিয়ে। তোকে কেমন সারপ্রাইস দিলাম দেখলি ?’

জুলফিকার কিছুই বলতে পারলো না। বুকের ভেতরটা যেন ফেটে যাচ্ছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এখান থেকে এই মুহূর্তে থেকে দৌড়ে পালাতে পারলে যেন সে বাঁচতো। জুলফিকার বললো, শরীরটা খুব খারাপ লাগছে। আজ কোথাও যাবো না। তোরা থাক আমি বাসায় গেলাম।

কাউকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে জুলফিকার চলে গেলো …

আমার আমি’র সব টুকু তোদের নাহয় দিয়ে যাবো

আমার দুচোখের দুটি তারা
কখনো অস্থির, কখনো খাপছাড়া
এক তারা আমায় স্বপ্ন দেখায়
অন্য তারা আমায় ভীষণ কাঁদায়
একটি তারা ভাবুক বটে
অন্যটি কলি হয়ে ফোটে।

আমার আদুরে তারাদের ভাবনাতে
আমি কি কখনো থাকি আনমনে
বুকের খুব গহীনে নির্জনে
আমার দুই তারা দারুণ স্বপ্ন বুনে
বেগুনি সে স্বপ্ন যেন সত্যি হয়ে উঠে।

তারাদের মন খারাপে
হৃদয় আমার আকুল কাঁদে
চেনা নেই জানা নেই দেখা নেই
কেন ওরা এমন করে কাছে টানে
আমায় তা ভীষণ ভাবায়
আমায় তা ভীষণ কাঁদায়।

একদিন আমার আমি হারিয়ে যাবো
তারাদের স্বপ্ন হয়ে দিগন্ত ছাড়িয়ে যাবো
আমার আমি’র সব টুকু
তোদের নাহয় দিয়ে যাবো
রাখিস ধরে যত্ন করে।

তোরা কেন জ্বলে উঠিস আমার একার আকাশে
জানি না কেন এত মধুর সুর বাতাসে …
সব শুধু স্রষ্টা জানে, কি আছে স্বপ্নের সেই বাগানে !!

অণুগল্প : অনেক অনেক দূরের তবু যেন আপন

ইন্দু মেয়ের রুমে ঢুকে দেখে -রাহিন ফোন কানে নিয়ে বেসুরে গাইছে, “চূড়া লিয়া টু নে দিল কো”। পরীক্ষা চলছে। দুইদিন বাদে আর একটা পরীক্ষা যে মেয়ের, সে মেয়ে নিশ্চিন্তে ফোন কানে পেতে গান গাইছে। ইন্দুর রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে, বহু কষ্টে রাগ সামলে ইন্দু মেয়েকে বললো, কার সাথে কথা বলিস এত রাতে ? রাহিন গানের সুরে মা কে বলে, গান শুনি মা। তুমি শুনবে ?
ইন্দু ছেন ছেন করতে করতে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।

আজ ইন্দুর মেজাজ কিন্তু সপ্তমে। রাহিন পড়া শেষ করে সেহরির সময় সবাইকে জাগিয়ে দিয়ে তারপর ঘুমোতে যাওয়ার কথা। ঘটনা ঘটেছে ভিন্ন। রাহিন পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছে, বাড়ির কেউ আজ সেহরি করেনি। বাকিদের খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না, ইন্দু সেহরির সময় প্রতিদিন প্রেশারের ওষুধ খায়। আজ সে সুযোগ হয়নি। সকাল থেকে তাই আজ রাহিনদের বাড়িতে হট্টগোল; ইন্দু একটু একটু পর অস্থির বোধ করছে। ইন্দু জানে প্রেশারের ঔষধ না খেলে তার প্রেসারে বেড়ে যায়। আজ বাড়ছে না। কেন প্রেসার বাড়ছে না তাই নিয়ে অস্থির ইন্দু। মাথায় এক গাদা তেল দিয়ে ফেনের নিচে বসে আছে।

ওপাশের রুম থেকে, ইন্দুর স্বামী, টিটকারির সুরে বলছে, ওগো তোমার শরীর তো বেজায় খারাপ, চলো তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতাল নিয়ে এই বাড়িতে প্রায় মজার মজার ঘটনা ঘটে। ইন্দু যখনি সবার মনোযোগ চায়, তখনি তার প্রেশার উঠে। একা একা হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়ে যায়। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সবাই বোঝানোর চেষ্টা করে … আপা আপনার কিছুই হয়নি, বাড়ি যান। ইন্দু হাল ছাড়ে না। যদি প্রেসার বেড়ে যায় তাহলে এক রাত থেকে যাবে। এই চলছে, মমতাময়ী ইন্দুর জীবনে।

রাহিন মোটেও গান শুনছে না। রাত যতো বাড়ে রাহিনদের আড্ডা ততো জমে উঠে। রাহিন এতক্ষণ গ্রুপ কলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো। মা রুমে ঢুকলেই, সে আনমনে গান গায়, ফোনের বন্ধুরা বুঝে গেছে, রাহিন গান ধরলে বুঝতে হবে মা রুমে আছে। ওপাশ থেকে সবাই চুপ করে যায়। রাহিনের নতুন বন্ধু ভীষণ দুষ্ট, সে মাঝে মাঝে ফিশফিশিয়ে বলে, দে ফোনটা তোর মাকে, আজ নাহয় তার সাথেও আড্ডা হবে। অপর বন্ধু বলে, আন্টি কিন্তু আজকে বেশি জ্বালাচ্ছে !! রাহিন কোনো কথার উত্তর দেয় নেয়া। একটু পর পর গেয়ে উঠে, রাহিনের গলার স্বর দারুণ মিষ্টি। মাঝে মাঝে বন্ধুরা চুপ করে রাহিনের গান শুনে।

কেউ কখনো খুব একটা প্রশংসা করে না, বন্ধুরা জানে, রাহিন এসবের ধার ধারে না। বিন্দাস নিজের মর্জি মতো চলে। রাহিনের মনটা ভীষণ ভালো তাই বন্ধুরা তাকে ভীষণ ভালোবাসে। রাহিনও বন্ধুদের জান প্রাণ। ভেতরে ভেতরে দারুণ চঞ্চল সে, উপর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। তারা তিন বন্ধু মিলে দারুণ একটা স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্নে বিভোর তিন বয়সের তিন বন্ধু মনে মনে চাঁদের কপালে টিপ্ পরিয়ে দিয়ে আসে। মাঝে মাঝে রাহিন বন্ধু আয়নার সাথে চুটিয়ে ঝগড়া করে। একটু পর সব ঠিকঠাক। দেখলে মনে হবে একই মায়ের দুই কন্যা।

ইন্দুর বর্তমান স্বামী কিন্তু রাহিনের নিজের বাবা নয়। বন্ধুরা ব্যাপারটা এখনো জানেনা। প্রয়োজন পড়েনি তাই রাহিনের বলা হয়ে উঠেনি। তার বর্তমান বাবা তার ভীষণ রকম প্রিয় মানুষ। তাদের সম্পর্ক অনেকটাই বন্ধুর মতো। তবুও আজ পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় রাহিনের খুব ইচ্ছে করছিলো, আজ যদি তার নিজের বাবা কাছে থাকতো, নিশ্চয়ই তার সাথে যেত। সারা রাস্তা বাবার সাথে গুটুর গুটুর গল্প করতো। বাবার ঘাড়ে মাথা রেখে আহ্লাদে গদ গদ হয়ে বলতো, বাবা তুমি আমার নীল আকাশের নীল ফানুস।

ঠিক পরীক্ষার আগের দিন অথবা পরীক্ষার দিন রাহিনের বুকের ভেতরটা এলোমেলো হয়ে যায়। রাহিন কাউকে কিছু বলে না। মনের ইচ্ছে মনেই রেখে ইচ্ছে ঘুড়ি নীল আকাশে উড়িয়ে দেয়। খুব বেশি কষ্ট হলে, মায়ের কাছে গিয়ে মাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আজও তাই করেছে, ইন্দু বলেছে, কি হয়েছে, পরীক্ষার প্রিপারেশন ভালো তো ? পড়াশুনার তো বালাই নেই।

ইন্দু মেয়ের সাথে তেমন করে আল্লাদ করেন না। তার স্বভাবে নেই। রাহিন যেন খুব ছোট বয়সে বুঝে গেছে ওকে তাড়াতাড়ি বড় হতে হবে। হয়েছেও তাই। রাহিন বয়সের তুলনায় অনেক বুঝদার, তবুও কেন জানি রাহিনের ইচ্ছে করে, মা একটু আলগা আল্লাদ করুক। যদিও রাহিন নিজেকে গুটিয়ে রাখে, সুপ্ত বাসনা আপন মনে বাজতে থাকে। রাহিন আনমনে আলতো করে চোখের ভেজা পাতা মোছে আর মনে মনে বলে; ”আমার আছে সে জন, সাত তারার একটি ধন। যে কিনা অনেক অনেক দূরের তবু যেন কেমন আপন।”

ওয়াসিফের মুখের আদল মনে করে, রাহিন তখন মিষ্টি করে হাসে …

বিষণ্ন মনে তোমার একখানা ছবি আঁকতে চাই

আজ ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যাবার দিন
আজ আমার মৃত্যুর দিন
যেখানে কষ্ট নেই সুখের আলো নেই
যেখানে নিথর স্তব্ধ হৃদয়
আজ বিষণ্ন মনে তোমার একখানা ছবি আঁকতে চাই।

না না পেইন্ট ব্রাশ ক্যানভাসের ঝামেলা নেই
হৃদয়ের ক্যানভাসে মনের তুলিতে তোমাকে এঁকে নিতে চাই
ওয়াইল্ড তুমি’কে আঁকার সাধ্য আমার নেই
আমি হেঁয়ালি তোমাকে আমার রঙে সাজাবো।
বেশ হয়েছে – এই টাইপ কমপ্লিমেন্টর প্রয়োজন নেই
তোমার গোঁফটা আমি চার্লি চেপলিনের মতো করে দিলাম
অজান্তে তোমার চোখের কোণে দুটা ফোটা জল দিলাম
তুমি কি অসুখী ছিলে আমার সাথে !!

সত্যি বলতে কি
কিছুটা অসুখী আমিও ছিলাম তোমার সাথে
একটা প্রেম ভেঙ্গে গেলে কি এমন হয়
একটা প্রেমিক পালালে কি এমন হয়
একসাথে পথ চলা না হলে এমন কি ক্ষতি হয় !!

সুরকারের হৃদয় চিড়ে
খুব বেসামাল করুণ একটা সুর হয় হোক না
তাতে ক্ষতি তো কিছু নেই
আজ ঝুম বৃষ্টিতে নিভৃতে পাশে থাকার কাউকে চাই
আজ কবিতা ভালোবাসে এমন একটা প্রেমিক চাই
অস্থিরতা ছাড়া কি কবিতা হয়?
স্বপ্নহীন পাগলামি ছাড়া কি আর ভালোবাসা হয়?

মনের রঙে তোমাকে আমি সে জন্যই আঁকতে চাই
যম দূত চিঠি পাঠিয়েছে আগেই
আজ আমি সকল পাগলামীকে আপনাতে চাই
সংসারে থেকেও কেমন জানি ছিলাম আমি অন্য কোথাও।

আমি যে একজন কবি
আমার ভীষণ ভালো লাগে বিষণ্ন মোনালিসার ছবি
ঠোঁটে মুচকি হাসি, চোখে করুণ স্মৃতি, কনফিডেন্ট মোনালিসাকে
হৃদপিণ্ড ছুঁয়ে যায়
ভেতরে ভেতরে আমিও কি ঠিক তাই।
আমি এখন বসে আছি পথ চেয়ে মৃত্যুর অপেক্ষাতে
এই বুঝি এলো নতুন বন্ধু আমার
ভুলিয়ে ভালিয়ে সঙ্গে নিয়ে যাবে তার
শেষ ইচ্ছে কি হতে পারে ?

ধন আজ আর তেমন প্রয়োজন নেই
আমার আমিত্বকে ছুঁয়ে যাবে সে তোমাকে চাই
শেষবারের মতো অফুরন্ত ভালোবাসা চাই
জ্বালাময়ী একখানা কবিতা লিখতে চাই
কবির শেষ ইচ্ছে এই তো হবে, হওয়া উচিত তাই …

বাংলা শুভ নববর্ষ

বাংলা শুভ নববর্ষ

আমাদের প্রত্যেকের প্রতিটা দিন গুরুত্বপূর্ণ। নববর্ষ অবশ্যই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। নানান রঙে নানান ঢঙে সাজে দেশ, রাঙে নতুন ভোর নতুন আলোয় বেশ।

চারপাশে কত বুকের হাহাকার ঢেকে যায়, কত কান্না থেমে যায়। সে রঙের মেলায় প্রাপ্তি ও প্রাপ্তি সুখ দুঃখের ভেলায় করে প্রতি বছর আসে বৈশাখ। মুচকি হেসে সে আনন্দে আমরা মেতে উঠি। দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গন করি নতুন বছরকে। শব্দনীড় এর হয়ে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সবাইকে জানাই পয়লা বৈশাখের শুভেচ্ছা।

অনেকের পরিবারে কেউ হয়তো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, কেউ হয়তো অপেক্ষা করছেন নতুন জাদুমনির, কেউবা প্রথমবার প্রবাসে পাড়ি দেবেন, কেউবা হবেন নতুন বধূ। কারো হয়তো ভেঙেছে সংসার, কারো হৃদয় ভেঙে চৌচির। কেউবা সূচনা করবেন নতুন কোনো স্বপ্নের।

সবার জীবন ভোরে উঠুক আনন্দে। আগামীর প্রতিটি দিন হৃদয়ে ভাসুক শীতল হাওয়া। আমরা প্রত্যেকে হয়ে উঠি আরো মানবিক আরো সহনশীল। হৃদয়ের সবকটা জানালা খুলে যেন বেশি করে ভালোবাসি নিজেকে ও ভালোবাসার মানুষদের।

জীবন সুন্দর জীবনের নিয়মে। আমি আপনি আমরাও প্রকৃতির সবচাইতে সুন্দর সৃষ্টি, সৃষ্টির নিয়মে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, সবাইকে ভালো রাখুন।