নাদেরা ফারনাছ এর সকল পোস্ট

নাদেরা ফারনাছ সম্পর্কে

নাদেরা ফারনাছ শিমূল জন্ম ৯ ই অক্টোবর রাউজান জেলার ফতেনগর নোয়াজিষপুর গ্রামে। তিনি মরহুম দানবীর আবদুল অদুদ চৌঃ পুত্র মরহুম নজরুল ইসলাম চৌঃ( বাদল) ও মনোয়ারা বেগম দোভাষ (বুড়ী) এর দ্বিতীয় সন্তান।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৩ সালে ডিপ্লোমা ইন কমপ্লায়েন্স এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর পোস্ট গ্রেজুয়েশন ডিপ্লোমা ও ২০১৭ সালে এল, এল,বি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে ১০০% রপ্তানি মুখী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এছাড়াও তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে একটি "টয়বক্স" নামক ডে কেয়ার সেণ্টারের তত্ত্বাবধানে দায়িত্বে নিয়োজিত। অবসরে তিনি জনসেবা, ভ্রমণ ও সাহিত্য চর্চা করতে ভালোবাসেন ।

সম্পর্ক

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়…….
কিছু সম্পর্ক প্রকৃতিতে মিশে যায়
কিছু সম্পর্ক জন্মগতভাবে হয়,
কিছু সম্পর্ক হয় বিধাতার ইশারায়
কিছু সম্পর্কের মাঝে ভালোবাসা কথা কয়।
কিছু সম্পর্ক উচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়
কিছু সম্পর্ক আলোকিত জ্যোৎস্নায়,
কিছু সম্পর্ক থাকে কবিতার খাতায়
কিছু সম্পর্ক অমর হয়।

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়………
কিছু সম্পর্কে দুরত্ব তৈরি হয়
কিছু সম্পর্ক ভাঙাগড়া খেলে যায়,
কিছু সম্পর্ক হৃদয় থেকে হারিয়ে যায়
কিছু সম্পর্ক শুধু অশ্রুজলে লেখা হয়।
কিছু সম্পর্কের মাঝে অভিমান অন্তরায়
কিছু সম্পর্ক ভাসে ভুলে ভুল ধারণায়,
কিছু সম্পর্ক ফিরে না পূর্বের জায়গায়
কিছু সম্পর্কে ক্ষমা তাঁর স্থান হারায়।

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়………
কিছু সম্পর্কে ঈশ্বর রয়
কিছু সম্পর্ক ইতিহাস গাঁথা হয়,
কিছু সম্পর্ক বন্ধুত্বে আবদ্ধ রয়
কিছু সম্পর্কে অবিশ্বাসের বসবাস হয়।
কিছু সম্পর্ক সাম্যের গান গায়
কিছু সম্পর্ক জাগে মুক্তির চেতনায়,
কিছু সম্পর্ক থাকে স্মৃতির পাতায়
কিছু সম্পর্ক স্থির অপেক্ষায়!

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়
তা নাহলে নোনা জলে হারিয়ে যায়।

যাপিত জীবন

শোকাচ্ছন্ন অপরাহ্ণ পরে
অতৃপ্ত স্বপ্নগুলো তাড়া করে ফিরে,
আমি নিশিদিন পালিয়ে বেড়াই
নতুন ভোরের তরে।

সাজানো ঘর, চেনা পথঘাট
সব ভুলে, যাব চলে বহুক্রোশ দূরে।
যেখানে অতীতের দীর্ঘশ্বাস
ভবিষ্যতের ধোঁয়াশা মেঘ
কিছুই স্পর্শ করবে না মোরে।

না মৃত্যু, না জীবন
এ যেন মুক্তির অবগাহন,
পশ্চাদের নেই কোন টান
সম্মুখের নেই হাতছানি
রুদ্ধ হবে মৃত স্বপ্নের আনাগোনা
রবে শুধু বাঁচিবার তৃষ্ণা একটুখানি।

বহুপথ ঘুরে ভিন্ন দেশী ঘরে
স্বস্তি না হোক, শান্তি যদি পায় মন,
সেই স্বর্গেই হোক তবে শেষবেলার
মোর যাপিত জীবন।

তুমি কি সেই?

তুমি কি সেই….
যাকে ভালোবাসে,আমার ভেতরের আমি।
অনুক্ষণ থাকি স্বপ্নে বিভোর
যার অপেক্ষায় কেটে যায় অষ্টপ্রহর
সে মোর জীবনের চেয়ে দামী
কল্পনায় সঁপেছি মন, স্বাক্ষী অন্তর্যামী।
বল,তুমি কি সেই…
যাকে ভালোবাসে,আমার ভেতরের আমি।

যে আমাকে জানে আমার চেয়ে বেশী
ক্ষমা করে মোরে প্রত্যেহ দিবানিশি,
তারে কহিতে পারি হৃদয়ের ব্যাথা রাশিরাশি
যারে মন বলে ভালোবাসি ভালোবাসি।
যার প্রশস্ত বুকের ‘পরে
বিনিদ্র রাত্রির ক্লান্তি বিষাদ ভুলে
প্রশান্তির পরশ নামে দু’টি আঁখি জুড়ে।
যে মোর হৃদয় সমুদ্র মন্থন করে
হলাহল নেয় নিজ বুকে ধারণ করে।
সে আমার হাসির পেছনে কান্নাকে দেখে
উচ্ছ্বসিত কথা শেষে নীরবতাকে বুঝে
যে অপূর্ণ আমাকে ভালোবাসে।
বল, তুমি কি সেই….
যাকে ভালোবাসে,আমার ভেতরের আমি।

যার চোখে অহর্নিশি পূর্ণিমা দেখি
হিমাচল পাড়ি দিতে হাতে হাত রাখি,
তাকে নিয়ে সুখের সাতরঙা জলছবি আঁকি
গোপনে প্রিয়তম বলে ডাকি।
যার আকাশ জুড়ে আমি থাকি
ভালোবাসি কহিতে না পারিলে ভরে যায় আঁখি।
বল,তুমি কি সেই…
যাকে ভালোবাসে,আমার ভেতরের আমি।

লাভার্স অফ ভালদারো

26143

কাল ভেসে যায় কালের স্রোতে
আমরা হাঁটে যায় অনন্ত পথে,
সে পথে দোঁহে বেঁধেছি একটি গান
ভালোবাসার সুর, লয়, রাগে
বছর হাজার ছয়েক আগে!

আমি লিখিতাম গান, সে দিত সুর
প্রকৃতির তালে লাগিত সুমধুর,
হাসি, কান্না, রাগ,অভিমান
সব মিলিয়ে বাঁধিতাম সে গান।

তাই গাহি আজও মহাকালের পথে পথে
তোমরা সে গান রেখোগো হৃদয়ে গেঁথে
আমরা জাগিবো তোমাদের সনে
যখন গাহিবে গান যুগল প্রেমের আলিঙ্গনে…

নিঃসঙ্গতা

এখন রাত কাটে একাকী নিঃসঙ্গতায়
চৌদিকে চৈতালি হাওয়া বয়ে যায়
কে বাজায় বাঁশরী বিষন্নতায়?
যেন নিরবে রক্তাক্ত করে আমায়।

আমিতো রাখি না হাত তোমার হাতে
লিখিনা নাম আমার, তোমার সাথে
কোন সৈকতের বালিতে।

ডাকি না সেই প্রিয় নাম ধরে উচ্চস্বরে
প্রতিধ্বনি শুনিবার তরে
কোন নিস্তব্ধ পাহাড়ি উপত্যকা জুড়ে।

দেখিনা স্বপ্ন ঘুমে কিংবা জাগরণে
মাধবী রাতে রুপালী জোৎস্নার বানে
নিজেকে লুটাইতে তোমার আলিঙ্গনে।

এখন শুনি না গান আর বিমুগ্ধ মনে
মন ছুটে যায় সুদূর অতীতের পানে
বন্দী আমি নিঃসঙ্গতার আবরণে।

স্বপ্নের ভালোবাসা

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
একরাশ জনতার মাঝে
একটি সুগন্ধি ফুল হাতে
একদিন বলবে, “ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
কোন এক শরৎ পূর্ণিমাতে
তুষার শুভ্র মুকুটধারী হিমাদ্রিকে
সাক্ষী রেখে বলবে, “ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
সুরের মুর্ছনায় প্রাণবন্ত রেস্তোরাঁর
আলো আঁধারি কক্ষে
আমার হাতে হাত রেখে
ফিসফিসিয়ে বলবে,” ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
হঠাৎ কোন বর্ষণমুখর সন্ধ্যায়
মেঘের গর্জনে ভীত আমাকে
বুকে জড়িয়ে বলবে, “ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
নক্ষত্রময় রাতে নিস্তব্ধ বালুকা বেলায়
কপালে উষ্ণ চুম্বন এঁকে দিয়ে
চিৎকার করে বলবে,”ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন
সকল অপূর্ণতাকে তুচ্ছ করে
নির্ঘুম রাতের অশ্রু মুছে
চাপাস্বরে বলবে, ” ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন
ভালবাসবে চিরন্তন।

শেষ বেলা

অন্তরীক্ষে সহস্র নক্ষত্র
অনন্ত দহন যন্ত্রনায় নীলাভ,
ভূধরে বসন্ত নয়, এখন চৈত্রের খরা
ভালোবাসা নেই আর
বুকের পাঁজরে নিদ্রাহীন মৃত্যু স্বয়ং….!

দেহঘড়ির চলে প্রহর গণনা
সর্বাঙ্গে পতঙ্গের আস্তানা,
আট কুঠরিতে কিলবিল করে শঙ্কচূড়
চর্ম, গ্রন্থি, অস্থির চলে নিত্য ভাঙ্গচুর।

জন্ম – মৃত্যুর মধ্যে জীবন
ন্যায়দণ্ড হস্তে নিয়তি
শুক্লপক্ষ গত, কৃষ্ণপক্ষের তিথি
গৃহ নয়, সমাধির দ্বার অবারিত।

অপূর্ণতার নষ্টে -কষ্টে
দেহ – মনে গড়ছে নিরাভরণ সখ্যতা
লিখন ছিল অদৃষ্টে
প্রেম আর বাস্তবতার হবে না মিত্রতা।

তবুও …………
অহনার অপেক্ষায় ছিল প্রাণ-মন
ঘুমন্ত নবীন, চলন্ত প্রবীণ,
শিয়রে মৃত্যু সমন, সত্য নির্মম
বড্ড অবেলায় এলে তুমি……প্রিয়তম !!!

অমর প্রেম

একটি উল্কা খসেছে ঈশ্বরের প্রেমগ্রন্থ হতে
গতকাল রাতে এসেছে পৃথিবীর বুকেতে,
তাই খুঁজে ফিরি এই প্রাতেঃ
ভিন্ন ভিন্ন রুপে মনের আয়নাতে।

তোমাকে চেয়েছি উল্কা পতনের পথে
শুনেছি জনশ্রুতিতে
যে নাম লেখা থাকে ছুটে পড়া উল্কাতে
সে প্রেম অমর হবে স্বর্গ -মর্ত্যতে।

যে প্রেম পায় না স্বীকৃতি এই ধরিত্রীতে
ঈশ্বর সে নাম লিখেন নক্ষত্ররাজিতে
আত্মা মিলিত হয় প্রেমাত্মাতে
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আলোকিত রয় সেই জ্যোতিতে।

হৃদয়ের রুদ্ধদ্বারে

একযুগ পরে, কে তুমি?
রুদ্ধদ্বারে কষাঘাত কর।
পাষাণে প্রাণ সঞ্চারণের
মিছে পণ কর।

পথিক, ফিরে যাও তুমি
এ পথ তোমার নয়।
মুক্তির পর বন্ধন জুড়ি বার
কার সাধ হয়?

যা হয়নি কভু বলা
আজও না বলাই থাক।
মিথ্যার বেড়াজালে
সত্য নিপাত যাক।

যা দেখনি সেদিন মোর হাসিতে
আজ যদি দেখ তা আঁখিতে।
চলে যেও ফিরতি পথে
সব জলাঞ্জলি দিয়ে ভাগ্যের বেদীতে।

হৃদয়ের দ্বার যদি যায় টুটে
বাঁচিবার শখ যদি জেগে উঠে।
কি বন্ধনে রাখিবো মোর বাটে?
তোমাকে বিকিয়েছি যে মুক্তিদানের হাটে।