যাযাবর জীবন এর সকল পোস্ট

ভালোবাসার শক্তিকে অস্বীকার করতে পেরেছে কে

একসময় খুব ভালোবাসতাম তোকে,
ভালোবাসতাম কি?
তবে ঘৃণার কথা বলি কেন?
জনে জনে;

আজ মুখের বুলি তোকে ঘৃণা করি,
করি কি?
তবে মন পোড়ে কেন?
ক্ষণে ক্ষণে;

যখনই বৃষ্টি হয়
যখনই জ্যোৎস্না দেয়
যখনই মন একলা
তখনই তোর কথা মনে হয় আর মন কেমন করে,
এরে কি ভালোবাসা কয়?

যখনই চিড়বিড়ে রৌদ্র ওঠে
যখনই প্রচণ্ড গরম ছোটে
যখনই মানুষের সমুদের গা ঘেঁষা অনেক ভীর
তখনই মন তিক্ত তোতে তোতে,
একে কি ঘৃণা বলে?

এই যে এত যে ঘৃণা মনে মনে
– তবুও কিছু দিন তোর খবর না পেলে বড্ড মন কেমন করে
– তোর খারাপ কিছুর আশংকায় সারাক্ষণ মন কেমন করে

কিছু কিছু দিনগুলোতে তো আমি হারিয়ে যাই কোথায় জানি!
– আমাদের প্রথম দেখা হওয়ার দিন
– যেদিন তোকে প্রথম ভালোবাসার কথা বলেছিলাম
– যেদিন তোকে প্রথম চুমু খেয়েছিলাম
– তোর জন্মদিন কিংবা আমার জন্মদিনে

খুব, খুব ইচ্ছে করে তোর সাথে কথা বলতে
খুব ইচ্ছে করে তোকে আরেকটা বার ছুঁয়ে দেখতে
খুব ইচ্ছে করে বুকের ভেতর চেপে ধরতে

পর মুহূর্তেই
– ঐ যে বিচ্ছেদের দিনটার কথা মনে হয়!
সব মন কেমন করা বিবমিষায় পরিণত হয়,
তুই ভালোবাসতে বাসতে দিয়ে গিয়েছিস ঘৃণা
অথচ দেখ!
আমার মনের ঘৃণার মেঘেও মাঝে মাঝে ভালোবাসার বৃষ্টি ঝরে
তোর কথা মনে হলে;

আচ্ছা ভালোবাসা কি তবে ঘৃণা?
নাকি ঘৃণার মাঝে লুকানো থাকে ভালোবাসা?
জবাব খুঁজে পাই না;

কিছু কিছু সময় তোর কথা মনে হলেই কেমন যেন মন বিবমিষা
মনের কোথায় জানি মেঘ হয়ে ভেসে বেড়ায় ঘৃণা,
আর বাকিটা সময় মন কেমন করা মায়া
আর তোতে তোতে ভালোবাসা;

মনের মাঝে কি অদ্ভুত এক লাল আর নীলের সংমিশ্রণ
ভালোবাসা আর ঘৃণার,
তবুও মন কিন্তু সারাক্ষণই তোতে, তোতে
ঘৃণা আর ভালোবাসাতে জড়াজড়ি হয়ে।

ঘৃণার ভেতর লুকিয়ে থাকা ভালোবাসার শক্তিকে অস্বীকার করতে পেরেছে কে, কবে?
আমি তো পারি নি,
তুই পেরেছিস?

আমি বারবারই কড়া নেড়ে যাব তোর দরজায়

আমি আকাশ ঠুকরে একা একা
বৃষ্টি হতে পারিস নি তুই মেঘে
তৃষ্ণা মেটে না চাতক জীবনের
বড্ড তাতানো রোদ চারিদিকে,
বৃষ্টির হাহাকারে নীলাকাশ
আমি ঠোঁট ডুবিয়েছি সাগরে
আছড়ে পড়া ঢেউয়েও খুঁজে পাই না তোকে
তৃষ্ণা মেটাবো কি দিয়ে?
একটা চুমু খেয়ে যা
পাখি ঠোঁটে;

কাল সারারাত একটা পাখি ডাকছিলো কোথায় জানি
খুব করুণ স্বরে
হয়তো সঙ্গিনী হারিয়ে গিয়েছে,
আচ্ছা! আমি কত রাত তোকে ডেকে ডেকে গলা ভেঙেছি
বলতে পারিস?
কত ঢেউ আছড়ে পড়লে পাথরে দাগ কাটে?
আমি সাগর হয়েছি তোর জন্য
এবার তো পাথর থেকে বালি হ,
একটা চুমু খেয়ে যা
পাখি ঠোঁটে;

কেও ভালোবাসার ডাক শোনে কেও বধির থাকে ইচ্ছা করে
আমি বারবারই কড়া নেড়ে যাব তোর দরজায়
পাখি হয়ে
ঢেউ হয়ে
আকাশ হয়ে
সাগর হয়ে
দিন হয়ে
রাত হয়ে,
একদিন তোকে দরজা খুলতেই হবে
বিরক্ত হয়ে
রাগ হয়ে
আর না হয় ভালোবাসায় গলে গিয়ে;

আমি অপেক্ষায় আছি
পাখি ঠোঁটে।

কান্না শুষে নিতে সাগরের জুড়ি মেলা ভার

ঐ যে পাহাড়গুলো দেখছিস?
কেমন শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
ওদের একটা ভালো দিক কি জানিস!
ওরা সব কিছু বুকে ধরতে পারে
সইতে পারে সব কিছু;

এখানে পাহাড়ের কাছে এসে যত ইচ্ছে চিৎকার করে বলা যায়
সব গোপন দুঃখ ব্যথার কথা
গলা ফাটিয়ে কাঁদা যায়,
এখানে কোন মানুষ নেই
কেও শুনবে না ভেতরের কান্না
শুধু ঐ দূর দূরান্তের পাহাড়ের ঢাল থেকে কান্নার কিছু প্রতিধ্বনি ভেসে আসে
আর বাকি চিৎকারটুকু শুষে নেয় পাহাড়
নিজের করে;

কান্না লুকোতে পাহাড়ের জুড়ি মেলা ভার
মানুষের কান্না।

সমুদ্রে গিয়েছিস?
কি বিশাল নীলের সমারোহ
নোনা জলের একটা ভালো দিক কি জানিস!
তোর চোখ থেকে সে কান্না শুষে নেয় খুব সহজেই
তারপর নিজেই আরো একটু লবণাক্ত হয়;

সাগরের তীরে এসে যত ইচ্ছে চিৎকার করে কাঁদা যায়
সাগরের গর্জনে চাপা পড়ে যায় মানুষের চিৎকার
এখানে এসে কাঁদা যায় গলা ফাটিয়ে
ধু ধু বালিয়াড়িতে কেই বা কান্না শোনে!
সাগরের গর্জনের সাথে মিলেমিশে একাকার হয় কান্নার হাহাকার
আর চোখের জলটুকু শুষে নেয় সাগর
লোনা হয়ে;

কান্না শুষে নিতে সাগরের জুড়ি মেলা ভার
মানুষের কান্না।

মৃত্যুর অপেক্ষায় জীবন দেখি ভাবলেশহীন শূন্য চোখে

মনে কর কোন একরাতে পুরো শহর জুড়ে লোডশেডিং
আকাশে চাঁদ নেই সে রাতে
কোন তারাও জ্বলছে না মেঘলা আকাশে
আচ্ছা! ঘুম কি এতটা অন্ধকার হয়?
মৃত্যুর মত গাঢ় কালো ঘুম;
এমন গাঢ় কালো রাতে কোথায় খুঁজবি আমাকে?
অন্ধকারে কি সাদা কাফন দেখা যায়?
তবে তো খুব সহজেই পেয়ে গিয়েছিস আমায়;
কে আর চায় কবর খুঁড়তে?

মৃত্যুর কথায় চমকে উঠলি?
আরে সে তো নিয়তি!
তোর আমার আর সবার………
তুই কি অনেক দিন বেঁচে থাকবি?
অনন্তকাল?
অত দিন বেঁচে কি হবে?
চামড়া ঝুলে বুড়ো থুত্থুড়ে হয়ে বেঁচে থাকা
পরমুখাপেক্ষী হয়ে,
ও আমার কম্ম নয়;

খুব শিগ্রী কোন এক ঘন কালো অন্ধকার রাতে
আমি ঠিক ঘুমিয়ে পড়ব
গাঢ় অন্ধকার ঘুমে,
আজ
কাল
কিংবা পরশু,
কে জানে কবে?

আমি মৃত্যুর অপেক্ষায় জীবন দেখছি
ভাবলেশহীন শূন্য চোখে,
শূন্য চোখ পড়তে জানিস?
কোন এক মৃতের চোখ দেখে নিস,
মিল পেয়েছিস?

এবার তুই ঠিক শব চিনতে পারবি
হেঁটে বেড়ানো চলন্ত শব;
একদিন তোরা ঠেলে ফেলে দিবি সাড়ে তিন হাত মাটির গর্তে
শব ঘুমিয়ে গেলে।

সেই থেকে আর জ্যোৎস্নার ডাক শুনি নি আজো

সে অনেক অনেক দিন আগেকার কথা,
একদিন খুব হঠাৎ করেই দেখা হয়ে গিয়েছিল তোর সাথে
প্রথম দেখাতেই ভালো লাগা
তার থেকে ভালোবাসা
সেই থেকে কবিতা;

একদিন অনেক সাহস করে তোকে ভালোবাসি বলতেই
ফিক করে হেসে দিয়েছিলি তুই
সেই প্রথম আমার মুক্তো দেখা
তারপর থেকে আমি আর কখনো ঝিনুক কুড়োই নি;

একদিন তুই অভিমানে কেঁদে ফেলতেই আমার হীরক দর্শন
আমি দু আঙুলে দুটি হীরকখণ্ড নিয়ে দুটো স্বচ্ছ কাঁচের বোতলে ভরে রেখেছিলাম
আজো বোতল দুটো সযতনে রেখে দিয়েছি আমি;

একদিন তুই খুব রাগ করতেই দুপুর সূর্য ধাঁধিয়ে দিয়েছিলো আমার দুচোখ
সেই থেকে প্রেম দেখা হয় নি আর কখনো;

একদিন তুই অনেক বকা দিয়ে চলে যেতেই
স্তব্ধ বধির হয়েছিলাম আমি
সেই থেকে আর জ্যোৎস্নার ডাক শুনি নি আজো;

এখনো খুব মাঝে মাঝে মন খারাপ হলে
আমি চলে যাই
পাহাড়ের কাছে
জানিস! পাথরেও হৃদয় আছে
সেও কাঁদে,
কেন, ঝর্ণা দেখিস নি?

মাঝে মাঝে তোর কথা খুব মনে হলে
আমি চলে যাই
সাগরের কাছে
কান্না ধুয়ে নিতে;

বছরে এক দুবার যখন তোর কথায় বুকে ঝড় ওঠে
আমি খুঁজে খুঁজে ছুটে যাই ঝড়ের মাঝে
বুঝে নিতে কে বেশী লণ্ডভণ্ড করে আমায়;

আজ লণ্ডভণ্ড ঝড়ের রাতে
কেন যেন আবার আমি প্রেমে পড়ে গেলাম,
জানিস কার?
নতুন করে আবারও তোর;
হ্যাঁ রে,
ঝড়কে বুঝতে গিয়ে
আবারও তোকেই লণ্ডভণ্ড ভালোবেসে ফেললাম;

এবার যতই লণ্ডভণ্ড করিস না কেন,
আমার কিছুতেই কিছু যায় আসে না;

একটা কবিতা শুনবি?
নাহ্ থাক,
তোর রাত আর লণ্ডভণ্ড করব না;

তুই ঘুমা।

____________________________
সমুদ্র বিলাস ড. হুমায়ুন অাহামেদ রেষ্ট হাইজ।

অনুভবে কাছে আছি বোঝাতে পারলেই ভালোবাসা হয়

আদর মানেই কাম নয়
গালে হাত বুলালে
মাথায় হাত রাখলে
বুকে জড়িয়ে রাখলে
কিংবা শুধু ছুঁয়ে থাকলেই আদর হয়
অনুভবে মন ছুঁয়ে থাকাই আদর,
কেও পারে, কারো শরীর লাগে;
আচ্ছা!
আমরা কতদিন শরীরে শরীরে আদর করেছি রে?
তুই’ই বল না!
তোকে কি কম আদর করি?

ভালোবাসা মানেই শরীর নয়
দূরে থেকেও কাছে থাকা যায়
দূরে থেকেও ভালোবাসা যায়
অনুভবে কাছে থাকলেও ভালোবাসা হয়
অনুভবে কাছে আছি বোঝাতে পারলেই ভালোবাসা হয়;
কেও পারে, কারো শরীর লাগে;
আচ্ছা!
আমরা কতদিন শরীর দিয়ে ভালোবেসেছি রে?
তুই বল তো!
তোকে কি কম ভালোবাসি?

তুই আমাকে ভরিয়ে রাখিস আদরে আদরে
অনুভবে আর অনুভবে
আমি তোকে জড়িয়ে রাখি ভালোবাসায় সোহাগে
অনুভবে আর অনুভবে;

কাম?
সে তো শরীর জুড়োলেই শেষ হয়ে যায়;

ভালোবাসা!
কখনো ফুরোয়?

যদি অনুভূতিগুলোকে বন্দী করতে পারতাম!

রাতের কোন ঘরবাড়ি নেই
ইটের দেয়ালে কি অন্ধকার বন্দী করা যায়?
ঘরবাড়ি নেই দুপুরের
আটকানো যায় না আলো চার দেয়ালে;

চোখের পাতায় আমার ঘর
আমি ঘরবন্দী খেলা খেলি মনের খেয়ালে
যখন খুশি চোখ খুলে আলো
চোখ বন্ধ করলেই বন্দী হয়ে যায় অন্ধকার;
ইশশ!
যদি অনুভূতিগুলোকে বন্দী করতে পারতাম!
কিংবা তোকে;

ঘরবন্দী খেলায় দুপুর ছুঁতে পারে না চাঁদ
রাত ছুঁতে পারে না সূর্য
ভালো করে চেয়ে দেখে, কোথাও যুক্তাক্ষর নেই আমার চোখে
অথচ মন ছুঁয়ে থাকে তোকে
ভালোবাসায় বৃষ্টি হয়ে;

জানিস!
খুব বৃষ্টি হচ্ছে আজকাল,
বাইরে ও ভেতরে,
আমি কবিতাহীন এক পাথর জীবন কাটিয়ে যাচ্ছি কবিতা বুকে ধরে
অথচ লিখতে পারছি না তোকে,
উদাস পৃথিবীতে সূর্য উঠছে
দিন হচ্ছে
ক্লান্ত পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে রাত,
আমারও আর ঘরবাড়ি হলো না রে
দুপুর কিংবা রাতের মত
সূর্য কিংবা চাঁদের মত,
কোথায় রাখব তোকে?
অথচ দেখ!
মনের জানালাটায় বিশাল উঁকি দিয়ে আছিস তুই
দুঃখ কি জানিস!
তোকে রাখতে পারছি না ড্রয়িংরুমে সাজিয়ে;

আসলে ভালোবাসা কোথাও রাখা যায় না,
মনঘরে তো অলিন্দ আর নিলয়
সেখানে ক্রমাগত লালের ছোটাছুটি
থাকবি সেখানে?

আমরা সবাই একা

আমরা সবাই একা

এসেছি একা
যেতেও হবে একা,
মাঝে একটা জীবন
অনেকগুলো মানুষ
কিছু সম্পর্ক
কিছু হাসি
কিছু কান্না
কিছু ভালোবাসা,
অনেক মানুষের ভীরেও কেও কেও কিন্তু রয়ে যায় একা,
খুব একা;

কারো কারো একাকীত্বের প্রকাশ ডুকরে কেঁদে
কেও চিৎকার করে কাঁদতে পারে
কেও শুধুই গুমরে মরে
কেও একাকীত্ব লুকিয়ে রাখে হাসির ভীরে;

সুখের সঙ্গী হতে পারে সবাই
দুঃখের সঙ্গী হয় আপন জন,
একাকীত্বের কি সঙ্গী জুটে?
উঁহু!
একাকীত্ব শুধুই একা
বড্ড বেশী একা,
একদম আমার মতন;

হাত ধরবি?
ওখানে যে শুধুই একাকীত্ব!
তবুও ধরবি?
আচ্ছা ধর;

হাতে হাত রেখে এক ছায়াপথ হেঁটে
ক্লান্ত হয়ে একলা চাঁদের আলোয় নিচে বসতেই বোধোদয়,
মুঠোর ভেতর মুঠো রাখলেই কি একাকীত্ব দূর হয়?
– তুই সেদিনও ছিলি একা, আজও একা;

– আর আমি?
তোর হাত মুঠোর মধ্যে ধরে রেখেছি কিন্তু,
চোখের দিকে চেয়ে দেখ!
একাকীত্ব পড়তে পারছিস?
আরে বোকা, হাতে হাত রাখলেই কি একাকীত্বের সঙ্গী হয়?
– আমি সেদিনও ছিলাম একা, আজও একা; বড্ড একা।

আমি আকাশ খেতে খেতে নীল খেয়ে ফেলি

আমি অহংকার খাই দাঁতে কামড়িয়ে,
ইগো?
সেটাই তো আমার অলংকার
ভুল করি, আমি?
হতে পারে কখনো?
এক্ষুনি সরি বল ব্যটা মাথামোটা,
ইগোর দাঁতে কেটে কেটে কামড়ে যাচ্ছি সব সম্পর্ক
একা হচ্ছি কি?
ধ্যাত! ব্যাংকে দেখেছিস আমার অর্থ?

আরে ব্যাটা আয়নায় তাকিয়ে কথা বলে কে রে?
আমার চোখ তো ঐ আকাশে ছড়ানো
কবে দেখেছিস মাটিতে হেঁটেছি আমি?
জুতো জোড়া গুইসাপের চামড়া মোড়ানো,
আরে মানুষ আবার মাটির হয় নাকি?
আমি রক্তে মাংসে গড়া
চামড়াটা শুধু একটু মোটা
আর অহংকারে মোড়া,
আর ইগো?
সেটাই তো রে আমার অলংকার;
আমি আকাশ খেতে খেতে নীল খেয়ে ফেলি
জ্যোৎস্না খেতে খেতে চাঁদ
ইগোর তারায় আকাশ পোড়াই
অহংকারে ওড়াই রাত;

কোন এক কালো জ্যোৎস্না রাতে
কামড়াতে কামড়াতে চাঁদটাকে অর্ধেক খাওয়া হতেই
যদি বোধোধয় হয়,
বাকি জ্যোৎস্নাটুকু কি আমায় অর্ধচন্দ্র দেবে?
অহংকারে মুড়ে;

আয়না দেখব না আমি সেদিনও,
যদি লজ্জা করে!

💂‍

আমি তো অভিনয় করে যাই ক্রমাগত

মানুষই তো অভিনয় করে
জেগে থাকার সকল প্রহরে,
ঘুমিয়ে গেলে?
ঘুম মানেই তো মৃত্যু
সাময়িক কিংবা চিরতরে;

আমি তো অভিনয় করে যাই ক্রমাগত,
ভালো থাকা ও না থাকার
কাছে আসা আর না আসার
দূরে সরা ও না সরার
প্রেমে পড়া ও না পড়ার
ভালোবাসা আর না বাসার;

তুই কি অভিনয় করিস?
আমার সাথে,
আমায় খুশি করার জন্য না বলতে হবে না তোকে;
মানুষ মাত্রই অভিনয় শিল্পী
ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায়
বাধ্য হয়ে কিংবা দায়ে পড়ে,
তুই মানুষ হয়েই থাক আমার জীবনে
কিছু সত্য আর কিছু মিথ্যা অভিনয়ে;

শুধু পাকা অভিনেত্রী হয়ে উঠিস না
ভালোবাসার অভিনয়ে,
মনে বিষ নিয়ে।

গোধূলির আকাশে কত কত উড়ন্ত পাখি!

ডুবে যাওয়া সূর্যে ডুবন্ত আমি
গোধূলির আকাশে কত কত উড়ন্ত পাখি!
বড্ড চঞ্চল ওরা
বাতাসে ডানা ঝাপটানো ইতিউতি
সন্ধ্যে ঘুমানোর আগে
ডুবন্ত চোখে চেয়ে চেয়ে দেখি;
আমি কখনো মন খারাপ করা নারী দেখি নি,
আচ্ছা, পাখিদের কি মন খারাপ হয়?
আমার মত;

পাখিগুলো বড্ড ওড়ে
তোর মত করে
আমি ডুবে যাচ্ছি ধীরে ধীরে
অন্ধকার থেকে অন্ধকারে
তারপর এক সময় রাত নামতেই তুই চাঁদনি
আর সূর্যাস্তে ঘুমন্ত আমি,
আমি কখনো মন খারাপ করা চাঁদ দেখি নি,
আচ্ছা! রাতের কি মন খারাপ হয়?
আমার মত;

আমার কখনো নারী চেনা হলো না
দেখা হলো না তোকে
দেখা হলো না রাত
চেনা হলো না চাঁদ,
ভালোবাসা চিনব কি করে?
কিংবা তোকে;

একদিন ডানা ঝাপটে ক্লান্ত হয়ে গেলে
একদিন উড়ে উড়ে ডানা ভেঙে গেলে
একদিন তোর আকাশে চাঁদ ডুবে গেলে
একদিন তোর চোখে আলো হারিয়ে গেলে
ডাক দিস আমায় অমাবস্যার ওপার থেকে
সেদিন না হয় ভালোবাসতে শেখাবো তোকে
অন্ধকারের আঁধার হয়ে;

সবাই তো ভালোবাসে
আলোতে আলোতে রূপ দেখে দেখে
আমি না হয় ভালোবাসব তোকে, অন্ধকারে অন্ধ চোখে।

সারাদিন খুঁজিস আমায় সূর্যের দিকে চেয়ে

আকাশটা নেমে এসেছে নিচে
একদম মিশে গিয়েছে সাগরে
নিকষ অন্ধকার সবার চোখে সয় না,
আমি অন্ধকারে সাগর দেখি;
অনেকক্ষণ এক দৃষ্টিতে অন্ধকারে তাকিয়ে থাকলে
সাগর উঠে যায় আকাশে
কিংবা আকাশ গড়িয়ে নেমে যায় সাগরে;

আমি রাতের দিকে তাকিয়ে অন্ধকারের খেলা খেলি একা একা
তুই সারাদিন খুঁজিস আমায় সূর্যের দিকে চেয়ে
আরে বোকা দিনেও তো আকাশ নামে সাগরে
নীলের সাথে নীল মিশে
সূর্যে আমায় কোথায় পাবি বল?
আমার বাস রাত্রিতে;

দেখ দেখ!
কি চমৎকার এক রাত্রি নেমেছে
একদম মিশমিশে নিকষ কালো
চল, লুকোচুরি খেলি মনের সাথে;

একবার পরীক্ষা দিয়েই দেখ না!
কে বেশী ভালোবাসতে পারে।

_______________________________________
Cox’s Bazar Bangladesh.
World’s Largest Sand Beach – Tourists Attractions.

সব চেয়ে ভালো ছিলি, কখন জানিস? যখন তুই আমার ছিলি

আমি তোকে সব রূপে দেখছি,
তোর সবগুলো রূপে;

যখন তুই কুঁড়ি ছিলি
যখন তুই ফুল হলি
ফুল থেকে যখন ফল হলি
যৌবনের ডাঁসা ফলের রসা রূপ
পাকা ফলের ম ম গন্ধ
কুঁড়ি থেকে পাকা ফল
কিংবা ছুড়ি থেকে বুড়ি
সব রূপেই দেখেছি তোকে
সব রূপেই তুই ছিলি আমারই;

একদিন তুই শামুক ছিলি
একদিন তুই ঝিনুক
একদিন মুক্তো হলি
সবার কাছে দামী
আমি তখন গুটিয়ে গেলাম
নিজের ভেতর আমি;

একদিন তুই জীবন চিনলি
একদিন চিনলি মানুষ
একদিন তুই বুঝে গেলি
জীবন মানেই নানা রঙের ফানুস
তারপর তুই একা হলি
একদিন কাঁদলি ভীষণ
ততদিনে তুই বুঝে গেলি
সম্পর্ক জীবনের প্রহসন;

আমি সব কিছুর সাক্ষী হয়ে ছিলাম
আমি তোর ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলাম;

তুই সব চেয়ে ভালো ছিলি, কখন জানিস?
যখন তুই আমার ছিলি।

💕💕💕💕

মেঘ ঝরতেই আমার আকাশে সাদার ভেলা

আমার এক পাখির জীবন
আকাশটা মন আকাশ,
এখানে আকাশ ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায়;

সবুজ আকাশ দেখেছিস কখনো?
তোর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলেই আমার সবুজ আকাশ,
তোর ভাঙা ডানায় ভালোবাসার প্রলেপ দিতে গেলেই তো চোখ কান্না
আর আমার আকাশে সাগর,
তোর চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা মেঘ ঝরতেই আমার আকাশে সাদার ভেলা
আচ্ছা! মনে করে দেখ তো কতবার লাল করেছিস আমার আকাশ তোর অভিমানে!
তবুও একবারও হলুদ হলি না আমার সাথে জ্যোৎস্না স্নানে,
তুই কি জানিস?
তোর মন খারাপে রাত্রি নামে আমার পুরোটা আকাশ জুড়ে?

তুই কোন আকাশের অপেক্ষায় বসে আছিস?
একবার পাখি হ আমার আকাশে
চল একবার উড়ি সোনালী ডানা মেলে, রূপোর আকাশে
তারপর বাকি জীবনটা না হয় ধুসর কাটাবো
ডানায় ডানায় মিলে
পালকে পালক ঘষে
একসাথে মিলেমিশে;

দুজনে মিলে চিল হলাম বা কাক,
কি যায় আসে?

বেশীরভাগই দর্শনধারী, গুন বিচার তো অনেক পরে

এক এক জনের সৌন্দর্য এক এক রকম
কেও চেহারায় অপরূপা
কেও শারীরিক গঠনে,
আমরা বেশীরভাগই দর্শনধারী
গুন বিচার তো অনেক পরে;

আমার একটা বড় দোষ হলো আমি মানুষ দেখতে শুরু করি চোখ থেকে,
যার চোখ টানে না সে আমায় টানে না কোনভাবেই
হোক না সে অপরূপ মানুষের চোখে
রম্ভা মেনকার জ্যোতিরচ্ছটা তার শরীর জুড়ে
আমার কাছে তারা শুধুই মানুষ
নারী কিংবা পুরুষ;

যখনই কারো চোখ টানে
আমি তার টানে,
কি ভাবছ?
চোখের পর শরীর?
উঁহু! এখানেও বড্ড ভুল কর তোমরা,
চোখের ভেতর দিয়ে আমি তার ভাবনা দেখার চেষ্টা করি
তারপর উঁকি দিতে চেষ্টা করি হৃদয়ে
একটি দুটি ক্ষেত্র ছাড়া সচরাচর ভুল হয় না আমার মানুষ চিনতে;
তবে একটি দুটি ভুলই যথেষ্ট, জীবন নাড়িয়ে দিতে
তাই নয় রে?

আমার সবচেয় বড় ভুল কোথায় হয়েছিল জানিস?
তোর বড় বড় চোখে হারিয়ে।

এখন আর কারো চোখের দিকে তাকাই না,
আম জনতার মত শরীর দেখলে ভুল হয় না
শরীর তো শরীরই
তাই না?

ভালোবাসা নেমে যায় শরীর বেয়ে বেয়ে
কাম নেমে গেলে,
চোখ বেয়ে কি নামে জানিস?

কিভাবে জানবি বল?
কখনো দেখিস নি তো সাগরের কোলাহল।

💕💕