ঘুম ঘোর ভেঙে দেখি দক্ষিণা মলয়,
বারেবারে ইশারায় কিছু বলিতে চায়।
চকিতে ভেবে আমি উদাসী হলাম,
এসেছিলে মৌনী তার প্রমান পেলাম।
এসো তবে ধরো হাত ছুঁয়ে দাও মন।
অকালবোধনে ভিজুক নব যৌবন।
কামনার জলরাশি হোক তবে ফুল,
করি এসো ছোঁয়াছুয়ি হয় হোক ভুল।।
ঘুম ঘোর ভেঙে দেখি দক্ষিণা মলয়,
বারেবারে ইশারায় কিছু বলিতে চায়।
চকিতে ভেবে আমি উদাসী হলাম,
এসেছিলে মৌনী তার প্রমান পেলাম।
এসো তবে ধরো হাত ছুঁয়ে দাও মন।
অকালবোধনে ভিজুক নব যৌবন।
কামনার জলরাশি হোক তবে ফুল,
করি এসো ছোঁয়াছুয়ি হয় হোক ভুল।।
পাউরুটি
=====
যে পাউরুটির নাগাল পায়নি পৃথিবীর কোন প্রাণি,
ক্রমশ তার গায়ে জমে ওঠা ছত্রাক ও বুদবুদ
সেই সাথে তার শরীরে সবুজের আচ্ছাদন যা দেখতে অসুন্দর।
সেও জানান দেয় এই ধরাধামে,
আমি আছি ,আমি আছি।
ইচ্ছা
====
আমার খুব ইচ্ছে করে শেষ শীতের সকালে তুমি আমি
আর ঝকঝকে গরম কফির পেয়ালা…….
নিস্তেজ চোখ , নির্বাক কণ্ঠ , নিস্তরঙ্গ মস্তিষ্ক আর নিঃশব্দ চারপাশ
তোমার হাতখানি ধরে আমি রোদপিঠ করে বসে আছি…….
দুষ্টু প্রজাপ্রতিগুলো সেই মুহুর্তে আমাদের চারপাশে কেবলি ঘুরছে ।
কে জানে অন্য কিছু দেখার আশায় হয়তো
অকারণ ছোটাছুটি বারে বার!
চলো না হয় অন্য কিছু করি………
কবিতা না ছবিতা
==========
হৃদয়ের আকাশে আঁকা যে পিক্সেল
সেগুলি কবিতা না ছবিতা
আজকাল ধরতে কষ্ট হয়।
কিছু বোধ আর অনুভূতি হারিয়ে গেছে…..।
তোমাকে ভালোবাসাবাসির মাঝে।
সব হারিয়ে যাক অসুবিধা নেই শুধু তুমি থাকো।
তোমাতে উতলা ঊরা প্রেমের বিরহে,
আমার হৃদয়ের বাম অলিন্দ কামঠ কামড় আঘাতে….।
অন্তঃকরণ সদাসর্বদা দিকভ্রান্ত হয়।
দীর্ণ হৃদয় অবনীধামে
যেন সদা আকুলীভুত।
প্রেম সেতো দিব্য নাকি?
কলিযুগে দুর্মদ ভ্রষ্ট!
মদিরা আসক্ত হৃদয় তদবধি
শুধু তোমার ই পানে ধায়।
উতলা বর্ষায় প্রাকৃতিক কোমলতা কেড়ে নিচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষের মুখের হাসি।
কয়েকদিন যাবৎ লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে।
বৃষ্টির প্রশ্রয়ে নদীসমূহের অশান্ত জলে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট।
ভেসে যাচ্ছে ফসল নদী মাঠ, কৃষকের চাষ করা হাঁসের ঝাঁক।
বুড়ি দাদিমার পানের ডিব্বায় ভরা স্বপ্ন …….
বানভাসি মানুষের ঘরের চাল এখন কঠিন জমিনে রূপান্তরিত।
সঞ্চিত রসদগুলো ফুরিয়ে আসছে দ্রুত…..
কখনো কখনো গভীর ভালোবাসা গায়ে পড়া মনে হয়।
অন্যরা যেখানে ক্লাব, ক্যাসিনো, মদ, জুয়ায় ভরা জীবনটাকে ক্লান্তিকর মনে করছে।
নতুন কোন অভিজ্ঞতার খোঁজে তথাকথিত সোস্যাল মিডিয়ার এপাড়া ওপাড়ায় ঢুঁ মারছে।
অলীক সুখের আশায় যাকে বলে জাস্ট একটু রিলাক্সের-
আশায় বিবেক বোধ মানবিকতার ধার ধারতে চাইছে না।
তখন মরিয়মের বুকের দুধ শুকিয়ে গেছে কয়েকদিনের তীব্র ক্ষুধার কারণে।
সাতাশ দিনের কোলের শিশুটি এখন তীব্র স্বরে আর্তি জানাচ্ছে বিধাতার কাছে।
হে ঈশ্বর তোমার পৃথিবীতে এত বৈষম্য কেন ?
ঠিক তখনই বড়লোক বাবার একমাত্র কন্যা রাত ভোর পার্টি, ডিসকো, নাইট ক্লাব সেরে।
ঈশ্বরের কাছে সেও অভিযোগ করছে।
হে ঈশ্বর তোমার পৃথিবীতে এত বৈষম্য কেন ?
কোথায় গেলে একটু সুখ পাবো তুমি কি বলতে পারো ????!!!!!!!!
আমি যেদিন হবো ঝরা শিউলি,
খুঁজোনা আমার তোমরা খুঁজোনা।
পথে যেতে যেতে হঠাৎ দেখা,
পথের শেষই আমার ঠিকানা।
আমি হারাবো যবে অনন্তের পথে,
যেথা তারা সকল ফুটে রয়।
বুনোফুল আমি, আমার গন্ধ
আসলেই এমনি হয়।
এ পৃথিবীর পরে এসেছিনু আমি,
কিছু দিনের তরে হায়।
শুধু হয়ে রব তোমাদের স্মৃতি
হয়তো রয়ে যাবো ভাবনায়।
তোমাদের নির্লোভ ভালোবাসা,
আমায় করেছে আপ্লুত।
সেটুকু ই আমার মাথার মণি,
শত শ্রদ্ধায় অবনত।
অদেখা জগতের অচেনা সাথীদের
স্বার্থ হেথায় অদৃশ্য।
ভালোবাসা তাই এত মোহময় রূপে,
হয়ে ওঠে প্রকাশ্য।
সত্যের হাতে গড়া এই পৃথিবী এখন মিথ্যার দখলে,
অবাঞ্চিত হয়ে পৃথিবীতে বেচে আছে ’সত্য’……।
অভিধানে বিপরীত শব্দ হিসাবে কোন রকমে টিকে থাকতে হয় তাই বোধহয়!
সেই হিসাবে হাজিরা খাতায় নাম আছে কিন্তু গুরুত্ব নেই যাকে বলে !
পদচিহ্ন আছে, পদ রেখা অনুসরণের কোন কর্ম নেই।
যেমনটি…
স্বাধীনতা আছে কিন্তু বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে সুকৌশলে।
সত্যকথনের সুযোগ তো দূরে থাক!
কলঙ্কিত যাপিত জীবনের প্রক্রিয়া দিন দিন দীর্ঘায়িত হচ্ছে ……..।
সেই সাথে মিথ্যার মেদ ভূঁড়ি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফুলে ফেঁপে উঠছে
পেঁয়াজের দরের মতো।
আপাতদৃষ্টিতে দেখা না গেলেও মগজ ধীরে ধীরে ছোট আর বুদ্ধিটা হচ্ছে মোটা।
প্রতিপলে দৈহিক সুখের লালসা, অতি চাহিদার অগ্নি
আর স্থাবর অস্থাবর সম্পদের ভাবনায় কেটে যাচ্ছে দিন, গুটি কয়েক মানুষের।
ফলে এর দায় মেটাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে……।
প্রায় প্রতিটি মানুষের জন্য অলিখিত ভয় আজ নিত্য সঙ্গী।
চুপ চুপ চুপকথার রূপকথার জালে বন্দী যেন সবাই।
সৎ স্বত্তার পরাজয় আর অমানুষিক, অমানবিক,
অবিবেচক মিথ্যুক মানুষের জয়ধ্বনিতে চলছে এ দেশ।
বর্তমান প্রহর ক্ষণ, সময়, যাপিত নিশি, মধুর স্বপন,
উষ্ণ সকাল, দিনমণির কিরণের বিচ্ছুরণেও মিথ্যার জয় ধ্বনি উঠছে নামছে।
সারাটা সময়।
মিথ্যার জিৎ আর সত্যের পরাজয় মঞ্চস্থ হয়েছে, হচ্ছে এ দেশের প্রতিটি প্রাঙ্গণে।
বর্তমান সমাজের অলিতেগলিতে
গরিব বোকা মানুষগুলি অন্য এক মোহে ছুটছে,
মিথ্যা দ্বারা যাপিত জীবনে সুখ খোঁজার আশায়।
মনে হচ্ছে পৃথিবী তার আলোর জগত অন্ধকারে আগ্রাসনে তলিয়ে নেয়ার প্রতিযোগীতায় নেমেছে।
মহাপ্রভুকে অধিকার করে নিয়েছে মিথ্যার দানব।
নিশ্চয় সে ঘুষ খেতে শুরু করেছে …..
আর মানুষগুলি ক্রমশ পাক খেয়ে চলছেই তো চলছে ……।
ঘোর লাগা মরীচিকার মতো।
মুক্তির আশায়।
চলো একদিন
চলো একদিন দূরে কোথাও দুজনে হারিয়ে যাই,
যেথায় শুধু তুমি আমি আর কেউ নাই।।
হাঁটবো দুজন কাশের বনে …..।
একলা হব নীল নির্জনে।
দেখবো দুজন মেঘের খেলা উদাস দুপুরে
ছন্দ সেথায় তুলবে সুর তোমার নূপুরে।।
প্রিয় মানুষ
চোখ ছলছল জল ছুঁই ছুঁই হৃদয় উতলা
প্রিয় মানুষের প্রিয় স্পর্শে সব দুঃখ যায় ভোলা।
আপনলোক ব্যাথা দিলে জ্বলে ভেজে চোখ,
ভালোবেসে ধরলে হাত দৃষ্টি অপলক।।
সবার আগে পরিবার কাছের আপনজন
সুখদুঃখের সান্নিধ্যে ভরে ওঠে মন।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততা কঠিন পাথর সময়,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভালোবাসা সন্ধ্যাতে এক হয় ।
নয়ন বান
চোখের তারায় কিসের ঝিলিক ?
কিসের চমক রূপের বানে !
সর্বদাই দোলায় মন,
সুর খেলে যায় আমার গানে।
সেই সুরেতে তুমি যে তাল,
আমি গানের কথামালা।
শব্দের তুলিতে যেন
শৈল্পিক বর্ণমালা।
মধ্যরাতের ছায়ামানব এই আমি।
একাকী অলস সময়গুলো কাটে না আর এখন কিছুতেই।
বিরক্তিকর প্রহরগুলো যাতনা বাড়ায় কেবল ই….।
ভাবি বসে আমার নিঃসঙ্গ অধ্যায় নিয়ে।
আকাশ তোমার কাছে একটা প্রশ্ন ছিলো…….
তুমি তো সাক্ষী ছিলে,
ইচ্ছেঘুড়ি চেপে এলোমেলো দুরে কোথাও যেতে…….
চেয়েছিলাম তো এই আমি ও মধুরিমা।
কালো-কালো পাখিগুলি বাকা ঝাঁক বেধে উড়ে চলে যেথায়।
তোমার বুকের কাছাকাছি।
তোমার স্নেহের ছায়ায় ….।
দেখতাম বসে বসে প্রায় আমরা।
আকাশ তোমার বুকটা কতই না নীল,
অজানা রঙের পাখীগুলো ক্রমশ আরো ছোট হতে হতে বিন্দু হয়ে যায়,
যেন তোমার বুকে কালো কালো তিলক হয়ে ফুটে আছে।
অথবা নক্ষত্রেভরা রাতে নিস্তব্ধ চরাচরে….,
দূরে বনমাথায় ঝিকিমিকি জোনাকির আলোয়।
যেমনি করে আমরা মিশে যেতে চাইতাম ……..
আমাকে তুমি আবার অনুপ্রেরণা দাও।
নিঃসঙ্গতা দুর করে আবার তোমার শুক্লাতিথির পূর্ণিমার চাঁদের-
আলোয় পথ দেখাও…….।
যাতে আমি আবার পৌছে যেতে পারি তোমার বুকে।
শুধু আমি নই সাথে মধুরিমা আসবে হয়তো ….
দেখা হবে তোমার বুকের মধ্যিখানে যেখানটায় আকাশ অনেকটা নীল।
দিনগুলি হবে হাজার রঙে রাঙানো অবাস্তব স্বপ্নীল।
রাতগুলো হবে বর্ণাঢ্য, নক্ষত্রের আলোয় উজ্জ্বালিত।
আমি ফিরতে চাই…..।
আমি আর মধুরিমা দুজনে একসাথে ই ফিরতে চাই …..
[১]
হাওয়ায় দুলে নৌকা চলে
খোকন হলো মাঝি,
সবাই চড়ে নৌকাতে তার,
মা হয়না কেবল রাজি।
খোকা হেসে কয় মাগো তুমি ,
বড্ড অবুঝ মেয়ে
তোমার খোকা বড় এখন,
ঠিক নেবে সামলিয়ে।।
[২]
সাঁঝ বেলাতে খোলা আকাশ
আবির রঙ মাখে।
বাচ্চা পাখির ছানা দুটি,
কাঁদছে বসে শাখে।
মা গেছে হারিয়ে তার,
বোনটি আছে সাথে।
বড্ড বেশী ভয় পাচ্ছে,
আঁধার ঘনাতে।।
[৩]
খোকা ছুটলো মাছ ধরতে,
ছিপ নিলো হাতে,
তার ভয়েতে মাছগুলো সব
লুকালো পাঁকেতে।
ছিপ নিয়ে বসে খোকা ভাবে
কোথায় সব মাছ !
ঢাকঢোল পেটাতে গিয়ে,
পণ্ড হলো কাজ।।
হেমন্তের হৈমন্তি রঙ,
বিস্তৃত চরাচরে।
নিস্তব্ধ প্রকৃতি জাগে,
পূর্ণ সরবে।
খোলা প্রান্তর শব্দহীন
স্তব্ধতা উদার।
চতুর্পাশে সোনালী ধানে,
দিগন্ত প্রসার।
নতুন ধানের শিষের দোলায়,
দুলে ওঠে মন।
হিমের ছোঁয়ায় শীতের পরশ,
মন যে উচাটন।
প্রভাতবেলার রবি কিরণের,
উষ্ণ কোমল তাপে।
উত্তুরে শীতল বাতাসে,
ফুলকলিরা কাঁপে।
পদ্মপাতার জল টলমল,
পদ্ম দেখে হাসে।
জল আয়নাতে রূপটি তাহার,
ঝলমলিয়ে হাসে।
নদীর কূলে জল থইথই,
কেয়াবনের ধারে।
রাখাল সেথায় বাজায় বাঁশি
আগমনির সুরে।
ঢাক কুর কুর ঢেঁকির পাড়ে,
বউ ঝি দের আহলাদে।
একমনতে ঢেঁকি যেন,
নানান সুর সাধে।
ঘরের চালে কুমড়ো গাছের,
হলদে কমলা ফুল।
বেড়াল ছানা তার মাঝেতে,
মিষ্টি তুলতুল।
একধারেতে উঠান মাঝে,
দাদীর হাতের পিঠে।
গরম গরম স্বাদে অমৃত,
খেতে বেজায় মিঠে।
হেমন্তের হৈমন্তি রঙে
প্রকৃতির নানা সাজে।
এমন করে হৃদয়ে মাঝে,
হাজার সুর বাজে।
মহাকালের নিয়মে একেকটি মানুষের বরাদ্দকৃত বেধে দেয়া সময়গুলো,
একদিন ফুরিয়ে যায়।
যে কোনো সুন্দর বা অসুন্দর মুহূর্তেরই….পরিসমাপ্তিও আছে।
চরম আবেগের মুহুর্তের, ছুঁয়ে থাকা স্পর্শের, ভিন্ন ভিন্ন নানা ব্যঞ্জনের অনুভূতি থাকে।
সেটা ভালো বা খারাপ হতে পারে।
বিবর্ণ মরীচিকার মতো না পাওয়া কিছুর জন্য, অন্তহীন অপেক্ষারও শেষ পরিণতি ঘটে।
……..হয়তো।
অনেক বসন্ত পরে হৃদয়ের খেরো খাতায় চাপা পড়ে থাকা,
শুকনো চ্যাপটা ঝরা ফুলের মতো কোন এক সময়ের –
উজ্জ্বল স্মৃতিগুলো, পৃষ্ঠা উল্টে পড়তে ভালো ই লাগে।
দীর্ঘশ্বাসের আতলান্তিকের মহাস্রোতে নিজেকে ইচ্ছাকৃত ভাসিয়ে দেয়া যায় অনায়াসে।
এটি অন্যরকম টক ঝাল মিষ্টি মিশ্রিত অনুভূতি বটে!!
যা সুখব্যঞ্জনাময়।
অবাক চোখে নিজেকে ফিরে দেখার ভিন্ন রকমের উপলব্ধি ও বটে,
হৃদয়ের কলবের ভিতর থেকে ভালোলাগার অনুভূতি ছড়িয়ে যায় হঠাৎ করেই।
কতোটা বিবর্তিত হয়ে গেছি, কতটা ক্ষয়ে গেছি সময়ের সাথে সাথে…
অথবা দ্বৈতসত্তার মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে হার জিতের খেলার ফলাফলের মতো কিছুটা…।
সেটার উত্তর হয়তো ভবিষ্যতই বলে দেবে!
যেখানে হৃদয়ের আনাড়ি রক্তক্ষরণ আসল মানুষটাকে
নিজের ই ছায়া বানিয়ে দেয় মনের আয়নায়।
যার সাক্ষী হয়ে থাকে এই জাগতিক জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজ।
রুক্ষ শহর স্বার্থবাদী মানুষ,
প্রচার প্রসার লোভী!
টাকার গরমে কিনতে
চায় এই পৃথিবী।
পথে যেতে যেতে কি মনে করে
একটি অনাথ বালক,
অবাক চোখে তাকিয়ে রয়
দৃষ্টি অপলক।
একমুঠো খাবার একটু পানি,
জোটেনিকো তার এবেলা,
মানুষের জঙ্গলে পেয়েছে সে
কেবলি নিদারুণ অবহেলা।
সারি সারি কত খাবার,
কত রকমের পদ।
দেখে দেখে সুখ পায় সে,
এমন ই বোকা নির্বোধ।
কলের জল সঙ্গী যে তার,
ডাস্টবিন খাবার টেবিল।
কুড়িয়ে খেয়ে তৃপ্তির হাসি
হাসে সে অনাবিল।
পোষাকটি তাহার শতছিন্ন
ছিন্ন তাহার হৃদয়।
এত বড় এই পৃথিবীতে তার,
কেউতো আপন নয়!!!
হায় বিধাতা কেন তারে তুমি
সৃজিলা ভুবন মাঝে ?
কেন তার তুমি এত পরীক্ষা নাও
প্রতিদিন সকাল সাঁঝে।
টুপটুপ টুপটুপ
এসো খেলি জলডুব,
তুমি আমি মিলে।
চুপচুপ চুপচুপ,
কথা নয়, কথা নয়,
দেখা হবে সকালে ।
হায়হায় কি উপায় ?
বোঝাতে পারিনি তাই !
গেলে তুমি রেগে।
এসো তবে বসো দেখি,
কথা বলি মুখোমুখি,
মনের আবেগে।
ভালোবাসা প্রেম নয়,
কেন জানি মনে হয়,
কঠিন এ সময়!
যদি চাও কাছে পেতে,
কথা তোমায় হবে দিতে,
চোখের আয়নায়!
ঝিরঝিরে বৃষ্টি, গুমোট আকাশ।
হালকা কুয়াশায় মোড়া চতুর্পাশ।
একটানা টুপটাপ আওয়াজ ছাড়া, এমনিতে সুনসান…
বৃষ্টিটা থামতেই, বুনো শালিকেরা নেমে এলো খাবারের খোঁজে।
একটা শ্যামা সজনেগাছের ভাঙা ডালে বসে আছে অজানা অভিমান নিয়ে-
ঘাড়টা পিঠের খাঁজে গুঁজে দিয়ে।
কে জানে কি হয়েছে !
হঠাৎ কয়েকটা হিংসুটে কাক উড়ে এলো কোথা থেকে খাবারে ভাগ বসাতে।
শালিকেরা অপ্রস্তুত …..
ঠিক এসময় বেরসিক বৃষ্টি আবার জোরেশোরে নেমে এলো প্রকৃতিতে।
বৃষ্টিরা কি দুষ্টুমি করে ?
সবাই উড়ে গেল নিরাপদ আশ্রয়ে।
কারণ ততক্ষণে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
একটা শালিক কেবলি খুটে খুটে খেয়েই চলেছে।
যেন আজন্মের ক্ষিদে তার পেটের ভিতরে……..
চারদিক আঁধারে নিমজ্জিত শুনশান চরাচর।
রাতভর তিমির ধূসর ধূমায়িত খেলা চলছে অবিরাম প্রকৃতিতে,
খোলা আকাশের বুক হতে ঝরে পড়ছে, বিন্দু বিন্দু হিমশীতল নির্মম দুরাশা…
যা আমার বেদনাকে তরঙ্গায়িত করছে,
আর সেই সুযোগে রাতের আকাশ, মিটিমিটি জোনাকিরা,
লিখছে তাদের যাপিত জীবনের যত দুঃখ কষ্ট বেদনার গল্প গাঁথা –
আমার মনের পাতায় পাতায়।
বাতাসের ভাঁজে ভাঁজে লুকায়িত অলৌকিক সুরভির তরঙ্গমালা…
কেবলি ছুঁয়ে যেতে চায় মন বেদনার কাব্যকে ছন্দায়িত করতে।
এদিকে আমার বৃত্তাবদ্ধ মনজুড়ে শুধু তোমায় না পাওয়ার আক্ষেপ।
আজ সারা রাত অতীতের বিমূর্ত স্মৃতি, এই আমি এবং ঘন আঁধার ……।
আর অবশ্যই তুমি, তোমার কবিতা, গান, অতীত মুগ্ধতা.. জ্বালা সুখস্মৃতি সব একসাথে ।
এবং আরো থাকবে কঠিন জ্বালাময়ী হিমের তপ্ত পরশ………
সাথে ব্লাক কফি আমার নিয়ে কাটাবে নির্ঘুম রাত।