ট্যাগ আর্কাইভঃ একজন নিশাদ এর কবিতা

রাত্রিরে ১

রোজ নিঃশব্দে এসে শয়ানের পাশ ঘেসে ফোটে যে ফুল
সমস্ত প্রহর কাটে সুরভীর আস্বাদ সন্ধানে তার,
হিমশুভ্র তনুখানি জুড়ে সব পেয়ে না পাওয়ার হাহাকার,
অর্ধঘুমঘোরে এ আমার অলস স্নায়ু অবসাদ মোছে কামনায়।

পাশ ফিরলেই সংসার তার আবির ছড়িয়ে ভোর আনে।

রাত্রি তোমার লীলা
পাশ ফিরলেই রাজা
পাশ ফিরলেই প্রজা!

প্রাক্তন

শিথিল করবী বাধা চুল
কাজল গহনে দূর দিশা চোখ,
রক্তজ ঠোঁট
মুগ্ধ মলাটে বাধা নাম মহুয়া
এটুকুই মনে পড়ে।

যেখানে যা ছিল
অধিকাংশই নেই,

মহাকাল রাখালের বেশে
তাড়িয়ে নিয়ে গেছে পলকে পলকে,
বদলে গেছে সব
অল্প যা অবশিষ্ট
তাকে মোহ বলা যায়,

দিগভ্রান্ত প্রাক্তন প্রেমিকের মোহ।

প্রণয় রাত্রি

এপাশ ফিরে শোও-
চারপাশে সব কামুক ধোঁয়া
যাচ্ছে সময় চুমি,
সুদীর্ঘ রাত একলা একা
কেমনে রবে তুমি?

এপাশ ফিরে শোও-
প্রনয় রাতের ঘামকুমারীরা
আহুতি চেয়ে ফোঁটে,
হৃদয় হতে ব্যকুলতা নেমে
ঠিক তোমাতেই লোটে।

এপাশ ফিরে শোও-
কয়েকটা পাতা উলটে দেখি
ভ্রান্তি তুমি কার?
উদ্দাম স্নায়ুরা সান্নিধ্য পাক
নিখাঁদ উষ্ণতার।

পাশ ফিরে শুয়ে-
আমার শরীরে শরীর মেলালে!
আমি অবাক অকস্মাৎ,
আমার পুলকে পুলকিত হল
অলকনন্দা রাত।

অমিমাংশিত

বেশিরভাগ সময়ই
আমি ব্যক্তিগত কল্পলোকের ঝুল দোলনায় দুলতে থাকি,
রুদ্রচিত্তে একটা জীবন যেখানে বসে পার করে দেয়া যায় অনায়াসে।
কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে গেছে
স্বনির্বাসিত কল্পলোকে আমি এখনো নবাগত।
অন্যদিকে মর্ত্যলোকে আমি বেজায় সংসারী,
জীবন নাটকের প্রধান চরিত্রগুলো আমার দখলে-
একাধারে সন্তান, প্রেমিক, স্বামী, পিতা সবকটি চরিত্রে সমান দক্ষতায় অভিনয় করে চলেছি।

মর্ত্যলোক থেকে কল্পলোক
কল্পলোক থেকে মর্ত্যলোক
চৌকাঠে চৌকাঠে একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াই,
যদি আমাকে পূর্বপুরুষ হতে হয়
আমি কেন কল্পলোকের পূর্বপুরুষ হতে চাই?

শহুরে


জরায়ু হতে ছিটকে পড়া
ভিন্ন ভিন্ন মানুষগুলো এ শহরে
দল বেধে ছুটতে থাকে শৃঙ্খলিত হাতকড়ার চাবির খোঁজে।

যোজন যোজন দুরের প্রকৃতিপথ ছাড়িয়ে
কিছু মানুষ বসতি জমায় ব্যস্ত শহুরে আত্মায়।
যদিও কোন পথে সূর্য অস্তনমিত হয় তার খবর কেউ রাখেনা,
তবুও এ শহরেও সুর্যস্নানের সপ্ন দেখে কতিপয় দম্পতিগন।

হাপিয়ে ওঠা মানুষগুলো ঘৃনা নিয়ে শহরের গণ্ডি পেরুতেই চুম্বকের ন্যায় ফিরে আসে শহুরে টানে।

সীমানার বাইরে কেউ জানুক কিংবা না,
তারা জানে
অতিমাত্রায় ব্যস্ত কর্পোরেট এ শহরের
একটি নির্লজ্জ ঘ্রান আছে।

বৃষ্টি ও উষ্ণতা

একটি বৃষ্টিস্নাত রাত্রিরে
মুখোমুখি আমরা।

বৃষ্টির শব্দে
মিলিত ভায়োলিন,
শীতল কার্পেটে মোড়া
বারান্দার ফুল।

ইটের দেয়াল-
মখমলের বিছানায়
হেলান দিয়ে দাঁড়ানো
চতুর কামনা।

মৃদুপায়ে
হেটে আসা
শিরশিরে বাতাসে
ধোঁয়াটে কফির বিকল্পে পাওয়া একটি নিখাদ চুম্বন।