একজন নিশাদ এর সকল পোস্ট

একজন নিশাদ সম্পর্কে

এখানেই একচিলতে আকাশে সঞ্জীবনী অন্বেষণ, এখানেই বৈকুণ্ঠবিলাস, এখানেই মন। একজন নিশাদ | Create Your Badge hit counter

রাত্রিরে ১

রোজ নিঃশব্দে এসে শয়ানের পাশ ঘেসে ফোটে যে ফুল
সমস্ত প্রহর কাটে সুরভীর আস্বাদ সন্ধানে তার,
হিমশুভ্র তনুখানি জুড়ে সব পেয়ে না পাওয়ার হাহাকার,
অর্ধঘুমঘোরে এ আমার অলস স্নায়ু অবসাদ মোছে কামনায়।

পাশ ফিরলেই সংসার তার আবির ছড়িয়ে ভোর আনে।

রাত্রি তোমার লীলা
পাশ ফিরলেই রাজা
পাশ ফিরলেই প্রজা!

How to Write Your Essay Next Day

Whenever you’re trying to produce ideas for the essay you will be submitting to a school or University this week, what you can do is to go through the entire semester and come up with at least one essay the following day. This gives you time to reflect on what you’ve learned throughout the session and determine what additional information পড়তে থাকুন How to Write Your Essay Next Day

পোষ্টমর্টেম

অপ্রস্তুত বিকেলের বুক চেপে
আলো সব নিভে গেছে আকাশের কার্ণিশে,
চিমনি তুলে যে দোকানী ফোঁকে-
নাক চোখমুখে তার মুক্তো ঘাম,
বাতাস এখানে একান্ত ব্যাক্তিগত।

পথ ধরে হেটে যেতে সোডিয়াম লাইট যেন
অতীতের পাতা ঘেটে বের করে আনা
খুচরো প্রেম,
আরো কিছু পাওয়া না পাওয়ার টমেটো ক্যাচাপ।

বেশ কিছু দূরে একটি লাল আলো
জ্বলে নেভে, ওঠে নামে!
ধুর!
এতো নিতাই গাঁজাখোর,
বড্ড সুখি সুখটানে!

সভ্য নেড়িকুকুর পাশ কাটিয়ে
একজন মধ্যবয়সী পথিকের হেটে যাওয়া,
বাজারের ব্যাগ,
পদচিহ্ন একে চলা
সেন্ডেলবিহীন দুঃখছাপ

আর একটু দুরের বেঞ্চিতে
আমি থামবো,
একটি দিয়াশলাই
একটি কাঠি
একটি নিরেট কবিতার পান্ডুলিপি।

ব্যাতিব্যাস্ত এ সন্ধাটাই
মোক্ষম সময়।

সন্ধেয়

আর এককাপ চা খাবেন?
-খাবো, টঙ এর চা প্রিয় যে !
এই নিন
সন্ধে হল বলে
-আচ্ছা আদুরে বাতাস আছে সেখানে ?
সন্ধে হল বলে, আসবে হয়ত,
-আলোর ফাঁকিবাজি !
আছে ওখানে?
-হুম বিদ্যুৎ নেই,
কেরোসিনের কুপি
আলো ছায়ার নাচ পেতে পারেন
-বাতাস দোলাবে খুচরো চুল ?
অন্ধকারে কিভাবে বুঝব বলুন,
সে ঠিক টের পাবেন আপনি
-আর কেউ নেই ওখানে ?
কিছু সাজানো স্বপ্ন থাকবে ঝোলায়
ওদের কি কেউ ভাবা যায়?
অনেকটা পথ।
আপনি হাটতে পারেন বেশ
-বেশতো তবে চলুন।

প্রাক্তন

শিথিল করবী বাধা চুল
কাজল গহনে দূর দিশা চোখ,
রক্তজ ঠোঁট
মুগ্ধ মলাটে বাধা নাম মহুয়া
এটুকুই মনে পড়ে।

যেখানে যা ছিল
অধিকাংশই নেই,

মহাকাল রাখালের বেশে
তাড়িয়ে নিয়ে গেছে পলকে পলকে,
বদলে গেছে সব
অল্প যা অবশিষ্ট
তাকে মোহ বলা যায়,

দিগভ্রান্ত প্রাক্তন প্রেমিকের মোহ।

ইতিহাসের পাতিহাস

প্রত্যেকেরই নিজস্ব ইতিহাস থাকে, আমারো আছে, মাঝে মাঝে আমি ইতিহাসের ছাত্র হয়ে যাই, একদম সর্বোচ্চ নাম্বার পাওয়া ছাত্র, যার মাথার পুরোটাতেই গিজগিজ করছে ইতিহাস, আজ তেমিন একটা দিন, ঘুরেফিরে হারানো বন্ধু, পরিচিতজন, আত্মীয়, হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকারা মাথায় গিজগিজ করছে।

অতীত ফুরিয়ে যায় না
একটা বিয়ে বাড়ির কথা মনে পড়ছে
আমার বড়ভায়ের বিয়ে, তা বছরষোল হবে বয়স, জামাই এর হুলুদের সভাস্থলে আসন পেতে বসে আছি, ভাবখানা এমন যেন বিয়েটা আমারই।

হঠাৎ আসল বরের আগমনে মুখরিত চারপাশ, তাড়াহুড়া করে উঠতে যেয়ে কখন যে কিশোরীর লাল শাড়িতে জড়িয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি, সম্বিত ফিরে পেতেই বুঝতে পারলাম মেয়েটিকে নিয়ে আমি ষ্টেজের পেছনটাতে পড়ে আছি, কিযে লজ্জা তার মুখে তারপর আর কি দে দৌড়, এই মেয়েটাই আমাকে প্রথম প্রেমিক বলে জাতে উঠিয়েছে পরবর্তিতে।

তাকে ভুলতে হলে আমার অনেক ভুলতে হবে,
কৈশোর ছাড়ছিল না বলে একদিন তার জন্য শোক দিবস পালন করে নিলাম, ব্যস আর কি যায় যায় দিন।

মুখর যে গান থেমে গেছে
থেমে গেছে তরঙ্গ তমাল,
থেকে গেছে পান্ডুলিপি,
থেকে গেছি পাঠক হয়ে।

থাক প্রেম থাক তোলা, কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে হয়ত অন্য কোন এক আলোচনায় আবার প্রেম উঠিয়ে আনব।

“যে বৃক্ষ আকাশ চুমে আছে
তার সাথে তুলনা হতে পারে তোমার অভিমানের,
ডালপালা ছড়িয়ে অভিমান ছোটে আকাশ পানে
নিচ থেকে মাঝেসাঝে জল ঢালি,
বাচিয়ে রাখি অভিমান।
আরো কিছুকাল জমুক ঘৃণা।”

আজ যাই
মাথায় শুধু প্রেমই ঘুরপাক খাচ্ছে, পাছে ইতিহাসের থলে থেকে বেড়াল না বেরিয়ে যায়। ভাল থাকুন।

একটি নিখোঁজ সংবাদ

মাইকের শব্দে হুড়মুড়িয়ে ঘুম থেকে উঠলাম, একটা রিকশায় লাগানো মাইক থেকে ভেসে আসছে “একটি নিখোঁজ সংবাদ”

আজ একটা শুভদিন,অনেক কষ্টে আজ একটা টিওশানি পেয়েছি। এমন একটা দিনে হারিয়ে যাবার কাব্য শুনতে মোটেও ভাল লাগছে না, তাই শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলাম বাথরুমে, অন্য কিছু ভাবার অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু হচ্ছেনা, মাইকটা অনেক দূরে হলেও শব্দগুলো যেন খুব কাছ থেকে শুনতে পাচ্ছি, অসস্থি লাগছে, ঝিনঝিন করছে মাথাটা। মনে হচ্ছে কানের খুব কাছাকাছি এসে কেউ ফিসফিসিয়ে বলছে “একটি নিখোঁজ সংবাদ”

সেই ছোটবেলায় একবার মাঠে লাটিম ঘোরানো থেকে শুরু, চকচকে লাল একটা লাটিম কিনে দিয়েছিলেন বাবা, ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ একটা ঝোপের দিকে ছুটে গেল লাটিমটা, পিছু ছুটলাম, বন্ধুদের ডাকলাম তারাও সাহায্যের জন্য এসে হাত দিয়ে সরাতে লাগল কাটাঘেরা ঝোপঝাড়, প্রায় ঘন্টাখানেক টলটলে চোখ আঁকড়ে ধরে খুঁজলাম অথচ লাটিমের টিকিটাও খুঁজে পেলাম না কোথাও, শেষরক্ষা হলোনা, কষ্ট আমার অবুঝ চোখ গড়িয়ে জল নামিয়ে দিল বুক পর্যন্ত। বেশ কদিন পর আমি ঠিক আমার সেই লাটিমটা দেখেছিলাম অন্য একটি ছেলের হাতে, সেদিন ঠোঁটের কোনের সে হাসিটা এখনো আমার ঠোঁটে। আমি লাটিমটা ফেরত চাইনি, শুধু ভেবেছি আমার কাছে না হোক অন্তত সে আছে, অন্তত কোন নিখোঁজ সংবাদ সে নয়।

প্রায় দশটা বাজে, এগারোটায় ছাত্রের বাসায় যেতে হবে, আধঘন্টার মত সময় হাতে আছে, বাসে যেতে পনের মিনিটের মত সময় লাগবে, আজ প্রথম দিন তাই ভাবছি রিকশাতে চড়েই যাই, অন্তত শার্টের ইনটা ঠিকমত থাকবে।

রিকশাতে চড়েই প্রথমে পকেটে হাত চলে গেল, হ্যা সব ঠিকঠাক আছে, রিকশা চলছে তার আপন গতিতে, হঠাৎ কে আবার ফিসফিসিয়ে বলে উঠল “একটি নিখোঁজ সংবাদ”

সেবার সবে মেট্রিক দিয়েছি, ছুটিতে নানুবাড়িতে গিয়ে সে কি হৈহুল্লোর, সবাই মিলে সেখানকার একটা জোড়া পুকুড়ের ঘাটে ভর দুপুরে পানিতে ঝাপাঝাপি করছিলাম, দেখছিলাম কে কার চেয়ে বেশি সময় পানিতে থাকতে পারে, পানির নিচের পরিবেশটা আমার খুবই ভাললাগে সবসময়ই, ভাবলাম দেখি কে কে উঠেছে, পানি থেকে মাথাটা বের করতেই চোখটা যা দেখল তা কখনোই ভুলতে পারিনি, একটা মেয়ে, নির্ঘাত পরী, টেলিফোনের তারের মত কোমড় পর্যন্ত ভেজা কালো চুলগুলো সেটে আছে দুধরঙা গায়ে, এতক্ষণ সে আমাদের আশেপাশেই ছিল হয়ত, খেয়াল করিনি, অথচ গোসল শেষ করে সে উঠে যাচ্ছিল, বন্ধুদের ডাকে হুস ফেরে, আমি আবার ডুব দেই, ৩০ সেকেন্ডের মত পানিতে ছিলাম তখন। পানি থেকে উঠে আমি আর তাকে কোথাও দেখতে পাইনি, দৌড়ে ঘাটের ওপরে উঠলাম, নাহ কোথাও নেই, এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করতেই সে বলল মেয়েটিকে সেও দেখেছে তবে তাদের মধ্যে কেউ তাকে চেনেনা। আমি ষ্পষ্ট মনে করতে পারি তার লাল ঠোঁটটার বা পাশের তিলটা অথচ জলজ্যান্ত মানুষটাকে আর কোথাও দেখিনি, কখনো জানতেও পারিনি কে সে! সে ছিল আমার জীবনে মনে রাখার মত আরো একটি নিখোঁজ সংবাদ। ন বছর কেটে গেছে অথচ এখনো তার মুখখানা আমার কাছে স্পষ্ট।
এইতো কিছুদিন আগে নানুবাড়িতে একটা জরুরি প্রয়োজনে গিয়েছিলাম, গাড়ি থেকে নামার সময় বামদিকে টিকেট কাউন্টারের পাশের সিগারেটের দোকানে তাকালাম অনিচ্ছায়, অন্যদিকে ফিরিয়েও নিয়েছিলাম চোখ, হঠাৎ মনে হল আমি কিছু একটা দেখেছি যা আমার খুব চেনা, হ্যা সেই মেয়েটি,সেই টেলিফোনের তার, কিছু না ভেবেই পা চালালাম, একটু সামনে যেতেই দেখলাম তার পেছন থেকে একটা ছোট বাচ্চা তার শাড়ির আচল জড়িয়ে রেখেছে, অবাক হইনি এতটা সময় পেরিয়ে গেছে, এতো স্বাভাবিক। অবাক হলাম যখন দেখলাম একটা ছেলে এসে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে মেয়েটার হাত ধরে সামনে আসছিল, ছেলেটি আমার সেই বন্ধু যাকে আমি মেয়েটার কথা জিজ্ঞাসা করেছিলাম। আমাকে চিনে ওবন্ধুটি না চেনার ভান করে আমার সামনে দিয়ে চলে গেল, পরে জানতে পেরেছিলাম মেয়েটি ছেলেটির চাচাতো বোন। খুব হেসেছিলাম, কষ্ট লাগছিল না একফোঁটাও, আমি তাকে পেয়েছি, অন্তত কোন নিখোঁজ সংবাদ সে নয়।

রিকশাওয়ালার ডাকে ঘোর ভাঙলো, ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে সামনে এগুলাম,পকেট থেকে ঠিকানাটা বের করে হাতে নিয়ে দেখলাম, ৭৮/এ, হ্যা ঠিকানাটা এ বাড়িরই। বেল টিপতেই দারোয়ান টাইপ একটা লোক গেটের ভেতর থেকে বলল কাকে চাই? আমি পরিচয় দিয়ে বললাম আমি এ বাড়ির বাচ্চার নতুন শিক্ষক, তার মুখটা ছোট হয়ে গেল নিমেষেই, সে বলল আপনি ছোট সাহেবের শিক্ষক! কিন্তু ছোটসাহেবকে তো গতকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না..

ছবি ব্লগ ১

আমার ছবি তুলতে ভাল লাগে, অবশ্য ভাললাগার ক্ষেত্রে ছবি তোলার অবস্থান প্রায় শেষের দিকে। কোন নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আটকে থাকতে আমার মোটেও ভাল লাগেনা তাই ছবি তোলার ক্ষেত্রেও তেমন। ব্লগে এলোমেলো করে ছবি দিলে আসলে অনেকের বুঝতে সমস্যা হবে তাই এক একটা বিষয়ের আলাদা আলাদা ছবি নিয়ে আমার এই ছবি ব্লগ।

আমার আজকের ছবিব্লগ এর বিষয়বস্তু শৈশব

ছবিটি নরসিংদী থেকে তোলা, সেখানে আমি একটি চিলেকোঠায় থাকতাম, ওর মা যখন আমার জন্য রান্না করতো ও তখন আমার ঘরের সামনের সিড়িতে বসে থাকতো যাতে আমি ওকে কিছু খেতে দিই।

তখন আমি আড়াইহাজার পুরিন্দা থাকি, খুব সস্তা একটা হোটেলে খাবার খাবার খেয়ে বের হবার সময়কার তোলা ছবি, ছেলেটি আনমনে কিছু একটা ভাবছিল।

এই ছবিটা বাবুরহাট থেকে তোলা, ওদের সাথে সেদিন সত্যিই কিছু ভাল সময় কেটেছিল, এমন প্রাণ খুলে নিজেও হয়ত কোনদিন হাসতে পারিনি।

ছবিটি কক্সবাজার থেকে ৫০ কিলোমিটার আগে মেধাকচ্ছপিয়া থেকে তোলা, ছবি তোলার পর ছেলেটিকে একটা রুটি কিনে দিয়েছিলাম, অনেকক্ষণ সে আমার সাথে হেঁটেছিল।

ছবিটি মেলান্দহ থেকে তোলা, মেলান্দহ বাজার থেকে একটু দূরে দেখা হয়েছিল, আমি চলন্ত অবস্থায় তার হাসিমুখ আমার তৃতীয় চোখে করে নিয়ে এসেছি।

আমি যখন চিনিশপুরে ছিলাম এরাই ছিল আমার খেলার সাথি, আমি এদের সাথে অনেক আনন্দঘন সময় কাটিয়েছি।

ইনানি বিচে সূর্যাস্ত যাবার সময় তোলা একটা ছবি, অনেক ভাল কিছু ছবি ছিল সেদিনকার, দুর্ভাগ্যবশত এই একটা ছবিই অবশিষ্ট আছে আমার কাছে।

ছবিটি মনোহরদী থেকে তোলা, হঠাৎ করেই।

ছবিটি আমার গ্রামের দুটি শিশুর, ওরা সম্ভবত ভাই, ওরা দুজনেই ছবি তোলার জন্য ব্যাপক উৎসাহিত ছিল।

এই ছবিটি একটি দুষ্ট বালকের, এবং সে এখনো এমন দুষ্টই আছে।

ছবিটি ঠিক কোথায় কবে তুলেছিলাম মনে করতে পারছি না।

এই ছবিটা আমার প্রথম সমুদ্র ভ্রমণের এক সুর্যাস্তের তোলা। ছেলেটাকে আমি প্রায় ১০/১৫ মিনিট এভাবে দাড়িয়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি। অনেক হলো, আরো অনেক বাচ্চাদের ছবি তুলেছি, বাচ্চাদের ছবির মত সুন্দর হয়ত আর কিছুই নেই, আপনাদেরকে ধন্যবাদ এত কষ্ট করে আমার তোলা ছবিগুলো দেখার জন্য।

খোঁজ

কোলাহল থেমে গেলে
বেজে ওঠে আধারের মাদল,
আচম্বিতে নয়, মোহময় নিরব আদলে তন্দ্রালশা মাদক
ছেয়ে যায় স্বপ্নভরাতুর রজনীতে।
জেগে থাকা মানুষগুলো ছায়া খোঁজে কল্পনায়,
কারো কাছে আধারের ছায়া অভিসারের আলো-
কারো কাছে স্বপ্নগুলো বিবসনা কালো,
প্রত্যেকেই আপন ছায়া খোঁজে-
কেউ পায়,
কেউ হাতড়ে বেড়ায় নির্ঝর নির্জনতায়।

মেধাকচ্ছপিয়া ট্রেইলে বুনো হাতির সন্ধানে

ট্রিপটা নিয়ে অনেকদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা হচ্ছিল, যাবো কি যাবো না সে দোলায় দুলতে দুলতে ঢাকা থেকে আমরা নয়জন বের হয়ে গেলাম ক্যাম্পিং এর উদ্দেশ্যে, বারোজন যাবার কথা থাকলেও অনাকাঙ্খিত কারনে তিনজন আমাদের সাথে আসতে পারেনি। রাতের বাসে ঘুমঘুম আরামেই পৌছে গেছি চট্টগ্রাম, ঠিক ভোরে ঠান্ডা হাওয়ায় চোখ মেলেই দেখলাম কর্ণফুলী ব্রীজ থেকে নদীটিকে, মুহুর্তেই মন চনমনে হয়ে গেল।


কক্সবাজার থেকে চল্লিশ কিলোমিটার ভেতরে একটা জায়গায় নেমে গেলাম আমরা। মাঝপথে নেমে যাওয়ায় দু একজন অবাক হয়ে জিজ্ঞাসাই করে ফেললেন এখানে নামবেন আপনারা!


বাস থেকে নেমে কিছুদূর এগিয়েই আমরা আমাদের অস্থায়ী বিশ্রামের জায়গায় পৌছে গেলাম, কিছুটা উপরে উঠেই দেখতে পেলাম পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য কিছু ট্রি এক্টিভিটিস তৈরি করা হয়েছে। কিছুটা বিশ্রামের পরই বুঝতে পারলাম আমরা একটা ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছি! কারন আমরাই প্রথম দল যারা এখানে ক্যাম্পিং করবো। উঠে গেলাম ট্রি এক্টিভিটিস উপভোগের জন্য।


একে একে আমরা সবাই এক ভিন্ন মাত্রার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম, ভালোই লাগল, নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভাল ছিল, সেখানকার মানুষজনও বেশ ভাল মনে হল, আমার জন্য তারা তাদের গাছের কাঁঠাল, লিচু পাঠাল, আমরা তাদের আতিথেয়তা দেখে যারপরনাই মুগ্ধ হলাম। দুপুরে বের হলাম আশেপাশের জায়গা দেখতে যাতে আমরা ভাল একটি জায়গায় আমাদের ক্যাম্প স্থাপন করতে পারি।


চারপাশের শতবর্ষী গাছগুলো যেন আমাদের দেখে আনন্দিত, আর আমাদের কথা নাইবা বললাম।


মুগ্ধ হয়ে চারপাশ দেখছিলাম আমরা।


দুপুরের খাবারের পর আমাদের মধ্যে থেকে তিনজনকে ক্যাম্পে রেখে বাকিরা বের হলাম ট্রেইল ধরে হাঁটতে, ঝোপঝাড় বনবাদাড় হাঁটছি তো হাঁটছি, এ যেন অদ্ভুত নেশা।


সাথে একজন গাইড থাকাতে বেশ ভাল হয়েছে নয়ত তিনঘন্টার পথ আমাদের ন ঘন্টায় শেষ হতো কিনা কে জানে।


অনেক পরে কিছু বাড়িঘরের দেখা মিলল। সন্ধ্যায় ক্যাম্পে ফিরে এলাম।


ক্যাম্পফায়ারের সাথে চলল বারবিকিউ, গান, আনন্দ উচ্ছাস, কথোপকথন। সব মিলিয়ে একটা মোহময় আবেশ।


দিনে প্রায় তিনঘন্টা ট্রেইল ধরে হাটার সময় আমরা বুনো হাতি দেখতে পাইনি, কিছু হাতি দারা আক্রান্ত পরিত্যাক্ত বাড়িঘর দেখেছি। যাহোক আড্ডা চলছিল, রাত প্রায় দুইটা কিংবা আড়াইটা, তিনজন তাবুর ভেতরে আর বাকিরা বাইরে আড্ডা দিচ্ছিলাম। চলছিল হাতি নিয়ে হাসাহাসি, হঠাৎ মটমট শব্দে আমরা চমকে উঠলাম, আমাদের পাশ দিয়ে চলে গেল হাতির পাল, আমরা মোটামুটি ভয়ই পেলাম। হঠাৎ দুটো ফাঁকা গুলির আওয়াজ শুনলাম, হাতিরা কোথায় যেন মিলিয়ে গেল, পরে জানতে পারলাম আমাদের নিরাপত্তার জন্য আগে থেকেই কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী সেখানে ছিলেন, রাতটা কিভাবে পার হয়ে গেল বুঝতেই পারিনি, সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তারা এলেন সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য। কুশল বিনিময়ের পর সব গুছিয়ে আমরা রওনা হয়ে গেলাম কক্সবাজারের উদ্যেশ্যে।

কক্সবাজারে হোটেলে পৌছে কিছুক্ষণ সুইমিং পুলে দাঁড়িয়ে দূর থেকে দেখলাম পাহাড় ও সমুদ্র, মনটা অত্যাধিক শান্ত হয়ে গেল। আকাশ হঠাৎ কাল হয়ে গেল, সমুদ্রের রুপটাই যেন বদলে গেল, আমরাও কাছ থেকে সমুদ্রের এমন বিরল রুপ দেখার লোভে বিচে নেমে ধুলোর ঝড়ের মুখোমুখি হলাম।


বৃষ্টিতে ভিজলাম, আস্তে আস্তে সমুদ্র শান্ত হয়ে গেল।


অবাক হয়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য দেখলাম।


গোধূলি বেলায় শান্ত সমুদ্রের পাড়ে বসে উপভোগ করলাম স্মরণীয় কিছু সময়।


সন্ধায়, গেলাম জীবন্ত মাছ দেখতে।

তারপর রাতে দশটার দিকে আমরা প্রবল আত্মতৃপ্তি নিয়ে ঢাকার উদ্যেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম। হলফ করে বলতে পারি এটা সত্যিই আমার জীবনের একটা না ভোলার মতন ট্রিপ ছিল।

প্রণয় রাত্রি

এপাশ ফিরে শোও-
চারপাশে সব কামুক ধোঁয়া
যাচ্ছে সময় চুমি,
সুদীর্ঘ রাত একলা একা
কেমনে রবে তুমি?

এপাশ ফিরে শোও-
প্রনয় রাতের ঘামকুমারীরা
আহুতি চেয়ে ফোঁটে,
হৃদয় হতে ব্যকুলতা নেমে
ঠিক তোমাতেই লোটে।

এপাশ ফিরে শোও-
কয়েকটা পাতা উলটে দেখি
ভ্রান্তি তুমি কার?
উদ্দাম স্নায়ুরা সান্নিধ্য পাক
নিখাঁদ উষ্ণতার।

পাশ ফিরে শুয়ে-
আমার শরীরে শরীর মেলালে!
আমি অবাক অকস্মাৎ,
আমার পুলকে পুলকিত হল
অলকনন্দা রাত।

অমিমাংশিত

বেশিরভাগ সময়ই
আমি ব্যক্তিগত কল্পলোকের ঝুল দোলনায় দুলতে থাকি,
রুদ্রচিত্তে একটা জীবন যেখানে বসে পার করে দেয়া যায় অনায়াসে।
কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে গেছে
স্বনির্বাসিত কল্পলোকে আমি এখনো নবাগত।
অন্যদিকে মর্ত্যলোকে আমি বেজায় সংসারী,
জীবন নাটকের প্রধান চরিত্রগুলো আমার দখলে-
একাধারে সন্তান, প্রেমিক, স্বামী, পিতা সবকটি চরিত্রে সমান দক্ষতায় অভিনয় করে চলেছি।

মর্ত্যলোক থেকে কল্পলোক
কল্পলোক থেকে মর্ত্যলোক
চৌকাঠে চৌকাঠে একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াই,
যদি আমাকে পূর্বপুরুষ হতে হয়
আমি কেন কল্পলোকের পূর্বপুরুষ হতে চাই?

শহুরে


জরায়ু হতে ছিটকে পড়া
ভিন্ন ভিন্ন মানুষগুলো এ শহরে
দল বেধে ছুটতে থাকে শৃঙ্খলিত হাতকড়ার চাবির খোঁজে।

যোজন যোজন দুরের প্রকৃতিপথ ছাড়িয়ে
কিছু মানুষ বসতি জমায় ব্যস্ত শহুরে আত্মায়।
যদিও কোন পথে সূর্য অস্তনমিত হয় তার খবর কেউ রাখেনা,
তবুও এ শহরেও সুর্যস্নানের সপ্ন দেখে কতিপয় দম্পতিগন।

হাপিয়ে ওঠা মানুষগুলো ঘৃনা নিয়ে শহরের গণ্ডি পেরুতেই চুম্বকের ন্যায় ফিরে আসে শহুরে টানে।

সীমানার বাইরে কেউ জানুক কিংবা না,
তারা জানে
অতিমাত্রায় ব্যস্ত কর্পোরেট এ শহরের
একটি নির্লজ্জ ঘ্রান আছে।

বৃষ্টি ও উষ্ণতা

একটি বৃষ্টিস্নাত রাত্রিরে
মুখোমুখি আমরা।

বৃষ্টির শব্দে
মিলিত ভায়োলিন,
শীতল কার্পেটে মোড়া
বারান্দার ফুল।

ইটের দেয়াল-
মখমলের বিছানায়
হেলান দিয়ে দাঁড়ানো
চতুর কামনা।

মৃদুপায়ে
হেটে আসা
শিরশিরে বাতাসে
ধোঁয়াটে কফির বিকল্পে পাওয়া একটি নিখাদ চুম্বন।