বিষের
বিষাদে
তিক্ত
মন,
কখনো
কখনো
সর্পদংশনে
খোঁজে
সুখনিদ্রা ;
তৃপ্তির
ক্ষরণ!
যেমন করে –
অভুক্ত শকুন হামলে পড়ে
মৃত শরীরের উপর
ছিন্ন ভিন্ন করে
উল্লাসী ভক্ষণে,
বেদনাহত হৃদয়
তেমনিই ভক্ষণ চায়
নিংড়ে দিতে চায় অগাধ জীবন
শেষ রক্তবিন্দু অবধি!…
দাউদুল ইসলাম এর সকল পোস্ট
অক্ষত নেই কিছু
অক্ষত নেই কিছু
অক্ষত থাকেনা, থাকতে পারেনা। বেড়ে চলছে মাথা পিছু ঋণের বোঝা
আনুপাতিক হারে বাড়ছে ক্ষত, যন্ত্রণা! ধুলোর কাছে বৃক্ষের ঋণ!
ক্ষত ঢাকতে
বৃক্ষের কাছে ছায়ার ঋণ, শিশিরের কাছে ঘাসফুল, মেঘের কাছে বৃষ্টির ঋণ!
ক্লেদ ঝরাতে-
বোঝা পড়ার দিন আসে না- কখনো সীমাহীন আনন্দ, কখনো কঠিন কষ্টের ছুঁতো,
গুনতে গুনতে প্রহর যায় ভেসে…
ক্ষতের পর ক্ষত… ক্ষতের পর ক্ষত!…
অক্ষত নেই কিছুই। অক্ষত থাকেনা। থাকতে দেয় না। অন্তর জুড়ে গহন-
গহীন আস্তাকুঁড়ে পড়ে আছে প্রথম যৌবনের রঙ্গিন খাম, নিশিজাগা কবিতা, স্বাধীন চেতা স্বপ্ন!…
এসব ক্ষত শুকিয়েছে- মরে
মৃত্যুপুরীর দমবদ্ধ ঘরে জমেছে ক্রমবর্ধমান ভার; চাপা ব্যথা
আর বেড়েছে ঋণ- অন্ধকারের কাছে , ধুলো মলিন আড়ালের কাছে, কবরের মতন
নিস্তব্ধ মৌনতার ঋণ! গল্পের বাহিরে যে সব সত্য মিথ্যা, যে সব রঙ, রস, চন্দ্র মোহন
কোন রাতের ঋণে নিমজ্জিত – সে সব অব্যক্ত কথা।
যে উঠে আসতে চেয়েছিলো ক্ষতের ভেতর থেকে, প্রবীণ বালিহাঁসের সঙ্গীহীন ক্রন্দনের সাথে
মিশে থাকা নিবিড় গন্ধ থেকে, বয়ে চলা এক অন্তহীন ক্ষরণ থেকে।…
জীবনের স্কন্ধে জ্বলন্ত পিণ্ড বয়ে নিয়ে
যে অক্ষত নদী মোহনা খুঁজে খুঁজে এতটা কাল আমি ক্ষতের রচনা লিখে যাচ্ছি
আমি জানি না আমি কি করে শোধ করবো এই দহন ঋণ!…
যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ
যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ
হ্যাঁ ততক্ষণ! জ্বল তুই জীবন
নির্বাণ অনলে
অনির্বাণ দহনে
স্মৃতির স্মরণে
বিস্মৃতির জাগরণে জ্বল!
জ্বল!
যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ!
যতক্ষণ দম আছে, জীবন- জ্বল তুই ততক্ষণ!
অন্তহীন ক্ষরণের জ্বালায় জ্বল
ঘুমহীন রাত্তির জ্বলায় জ্বল
অপেক্ষার বিষ গিলে গিলে জ্বল
দেখেও না দেখার ভানে জ্বল
জ্বল তুই সীমাহীন তুচ্ছতায়
ক্ষোভে অক্ষোভে নির্বাক কান্নার স্বচ্ছ জল ধারায়
জ্বল! জ্বল! জ্বল তুই জীবন
জ্বল তুই যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ!
তুই জ্বল
জ্বল তুই, যতক্ষণ ক্ষান্ত হবেনা মনের আগ্নেয়গিরি
যতক্ষণ না তৃপ্ত হবে-
সত্যের মুখে কুলুপ এঁটে মিথ্যার উত্তরসূরিরা;
তুই জ্বল
তুই মর, জীবন
মর তুই ধুকে ধুকে
এত ছলনা বেঁচে থাকতে সরল সত্য ধারণ করেছিস কোন দুঃখে!
জ্বলে জ্বলে দগ্ধের অতলে যদি বেঁচে থাকিস
ধিক্কারে, হুংকারে পদদলিত হতে হতে যদি দম ফেলিস-
ভাবিস না তোকে টেনে তুলবে ক্ষণিকের দয়া, জানিস না
অহংকারের দলিত থু থু নেভাতে পারবে না তোর জ্বলন্ত জীবন!
আর কত মূলে যাবি
জীবন এখানেই খুলেছে রঙের পসরা
আর কত চুড়ায় উঠবি
দগ্ধ পদমূল ভুলে গেছে হাটা; এখন ছন্দ হারা।
জ্বলতে জ্বলতে ছাই হবি
এই জীবনে পারবি না হতে একটি কবিতার কবি,
পুড়তে পুড়তে নিঃশেষ হবি ঠিক
পারবি না তুই হতে ভালবাসার প্রেমিক।
তুই দগ্ধ হবি
স্বপ্ন সাজাতে যুদ্ধ করবি
রক্তের স্রোতে ভেসে যাবি
কাঁদতে কাঁদতে অক্ষি কোঠর শুকিয়ে ফেলবি
কিংবা-
প্রাণপণে ভিক্ষা চাইবি একটুকু প্রেম;
বলতে পারিস- কি পাবি?
দহনের দাহ্য তিরস্কার
মরণের অনিবার্য ধিক্কার!
সব সত্য অস্বীকার করে
অবশেষে তুই-ই মিথ্যা বলে গণ্য হবি!!
শাশ্বত সুন্দরের মৃত্যু
কত কিছুই জানা হয় না, জানা যায় না। কেন-
প্রতিদিনের সেই একি জানালায় ঝুলে থাকে ভাঁজ করা চিবুক।
কেন, এক জন যুবক
অন্ধকার হাতড়ে হাতড়ে তুলে আনে নিত্যনতুন অসুখ!
কেন বিদীর্ণ ভাস্কর্যের চেয়ে ঢের ম্লান হয় মানুষের মুখ ।
কতটা নৃশংসতায় ক্ষান্ত হয় নপুংসক হায়েনা
জানা যায় না- তুষের অভ্যন্তরে কতটা উত্তাপ
প্রগতির শৃঙ্খল ভেঙ্গে সৃষ্টি হয় দীর্ঘশ্বাসের ঘূর্ণি চাপ।
জানো কি?
কতটা দহন হলে একটা জীবন আকুতি করে মৃত্যু কামনায়!
জীবনাবাস (২)
জংলার ধারে বসে আছে
নিদ্রা কাতুর বক
ঠা ঠা রোদ্দুর
পোড়াচ্ছে দুপুর, ম ম আমবাগান!
বসে আছি আজন্মকাল
নির্লিপ্ত ধ্যানে
ভেসে গেছে সমগ্র জীবন
খামখেয়ালির মনে।
বাকানো খেজুরের ডালে
ঝুলে আছে বাবুইপাখির প্রাসাদ
তাবত আকাশ জানে
মেঘের কাননে জমেছে কষ্ট- বজ্রনিনাদ!
জীবনাবাস
বসে আছি
জীবনাবাসে
কেউ কেউ চলে গেছে
কিছু শুকনো ফুল আটি বাঁধা পড়ে আছে কবরের পাশে।
সময় আছে
শেষ সেকেন্ডের জন্য বারবার কব্জি ঘুরে
মিথ্যা অবকাশে!..
ঢ’লে পড়া সূর্যের কাছে
অনর্থক উজান
কহিছে কথা ব্যাকুল দরিয়া
অকূল সাতারে হাঁপাচ্ছে লখিন্দর প্রাণ!
গরিমা
তিমিরাবৃত্ত আত্মা
কুয়াশা ভেজা লজ্জাবতী ফুল, সিক্ত লতা
ছুয়ে দিলে
চুকে যায় গরিমা, আরক্ত ঠোঁটে ঝেঁকে বসে
রুক্ষ দিনের রূঢ়তা!..
ফিরি
হারনো দিনের গানে
অশ্রুত মনে নেমে আসে অলকানন্দা..
কবিগুরুর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি
বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী আজ…..
কবিগুরুর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি –
মনে হয় অজস্র মৃত্যুরে
পার হয়ে আসিলাম
আজি নব প্রভাতের শিখর চুড়ায়;
রথের চঞ্চল বেগ হাওয়ায় উড়ায়
আমার পুরানো নাম। — রবীন্দ্রনাথ
নিশান্ত শ্রমণ
আমি কখনোই চাইনি
কেউ একজন আমার হোক, পাইনি হেতু
যেহেতু
চেয়েছি কেবল নিজেকে কারো একজন করিতে!
আকাশ পানে চেয়েছি
ধ্রুব তারার সন্ধানে নয়; বরং চিনিতে বুঝিতে
ধরিত্রী দেবতার শান
এক লহমায় লিখিতে সুন্দরের স্রষ্টার জয়গান!..
আমি শুনিতে গিয়েছি বারে বারে
বাঈজি চরণের ঝংকারে কিসের ধ্বনি বাজে,
কিসের মাঝে লুকিয়ে আছে আপন শ্রী
গহন লাগা কারুকাজে!..
আর কোন চোখে চোখ রাখিনি
তাহার চোখে নিজেকে দেখবো বলে,
নিজের দর্পণে নিরাকার সেই প্রহেলিকা
নিঃসীমের সীমানায়
তীক্ষ্ণ রশ্মির উৎসে রয়েছে যার নাম লিখা!
ভ্রমণে
প্রবণে
শ্রবণ শ্রাবণে
যেই নাম জপনের জন্য উদগ্রীব এই আত্না
শুনেছি সেই কলরব
নিশান্ত শ্রমণে হয়েছে একাকার
জগতের সকল ক্ষুদ্র -ক্ষুদ্রাতীত সত্ত্বা।
সর্বনাশা সত্য
সব জেনে বুঝে তুমি ভয় পাচ্ছো
ভয় পাচ্ছো- যদি কোন দিন প্রতিদান দিতে হয়!
কল্পনা করতে পারোনি এতো প্রেম , এতো ভালবাসা
ভাবতে পারোনি কেউ একজন তোমার নামে হবে সর্বনাশা!
অথচ এটাই সত্য-
তোমার নামে চলছে কারো হৃৎস্পন্দন
তোমার প্রেমে থাকছে বেঁচে অন্তহীন জীবন;
এটাই সত্য-
কারো জীবনের জন্য তুমি এক মাত্র অবলম্বন
ধর্ম, কর্ম, এবং কি যা কিছু স্বপ্ন; সাধন
তুমি মানো আর না মানো-
তোমার জন্যই করছে এক একটি পরিভ্রমণ!
সব জেনে বুঝে-
তুমি ঘাবড়ে গেছো, পাছে দিতে হয় প্রতিদান
অথচ; একবার ও প্রশ্ন করোনি-
দুঃসাহসী পথে যে ফেরিয়ে এলো অজস্র মৃত্যু
দিবারাত্রি এক করে জড়িয়ে রইলো তোমার অপেক্ষার প্রহর;
সে কি তৃপ্ত হবে নিছক প্রতিদানে?
দেখেছো তো-
অন্তর ধ্বনি বেজেছে অবিরাম
বুক ফাটা ক্রন্দনে উচ্চারিত হয়েছে তোমার নাম!
এক হাতে মৃত্যু
অন্য হাতে আকুল আবেদন,সখি
সব জেনে বুঝে ঘাবড়ে গেছো ;
হতে হয় যদি সত্যের মুখোমুখি!
প্রান্তিক কাব্য
পেয়ে না পেয়ে অতুষ্ট মন
চলে না চলে পথভ্রষ্ট জীবন
একিই ভাবে
ভেবে না ভেবে অনন্ত কাল বুনেছি স্বপন
কিছু রাত অমানিশার কিছু’বা পূর্ণিমা লগন-
ছিলো নীল গগন,কাশবন আর খরস্রোতা নদীর প্রবণ;
প্রবণে -প্লাবনে ভেসে যাওয়া কচুরীপনার মতন
গানে ও গমনে খুঁজেছি জীবন।…
অক্ষিরাহে জমেছে মদিরা অশ্রু, প্রান্তিক কাব্য
বুকের কপাট খুলে কতকাল আর দাঁড়িয়ে থাকবো একা
আর কতকাল পর হবো মানুষের মতন সভ্য!
অন্তরীণ বিরহে বেজে চলেছে বিলাপের সুর- লহরী
দয়া করো প্রভু হে-
বিষ পোড়ন বুকের ভেতর একটি বার ফুটিয়ে দাও নির্মলা মাধুরী।
জলকানন
বিধ্বস্ত জলকাননে
স্থিরতা ফিরলে
কর্দমাক্ত চাতালে
স্বয়ং ঈশ্বরের পদচিহ্ন দেখাযায়!..
অথচ
প্রলয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
তীব্র ধুকপুকুনির মধ্যে প্রাণপণ
তাহাকেই ডেকেছে জলের অভিবাসীগন!
নির্মম সত্যের সামনে
ঝুকে পড়ে কোমল মিথ্যা
দেবতাগন
যদিও কাদাজলে একাকার
তবুও
নির্বিকার প্রভুত্ব
পোড়ায় সমূহ আবেগ, অভিশপ্ত চিতা!
তৃষ্ণাতৃপ্ত ঋণ
সবুজের আড়ালে দেয় উঁকি
সদ্যোজাত পুষ্পিতা
বৃক্ষের পাঁজরের ঘুমিয়ে লজ্জাবতী
মৃত্তিকার গভীরে
প্রোথিত শেকড় ছুয়ে যায় খরস্রোতা!..
প্রাণের স্পন্দনে প্রাণের সুর
জীবনের আবেগ ভর করে একতারায়
যৌবনের মৌ-বনে উদ্বেলিত মধুরতা
স্বপ্ন নাচে অবিরত প্রজাতির অস্থির ডানায়!
একটি রোদসী দিন
বৃষ্টি এসে করে গেলো তৃষ্ণাতৃপ্ত ঋণ।।
২১/৩/২৩
অংকবাজি
জীবনে
অংকবাজি শিখিনি
ভালবাসলে অন্তর থেকে ভালবেসেছি
ঘৃণা করলেও অন্তর থেকে…
যদিও
ঘৃণার মানুষ নাই আমার
ভাল না বাসি, ঘৃণা করিনা।
করলেও তাকে জানিয়ে দিই!
সে জানুক কেউ তাকে ঘৃণা করে…
ভালবাসি নিভৃতে
নীরবে
শ্রদ্ধা করলে অন্তর থেকেই করি।
তেল মারিনা
খুশি করতে রঙ মাখি না!
খুব কম মানুষ কে অশ্রদ্ধা করি-
যারা দ্বিমুখী স্বভাবের তাদের সবচেয়ে বেশী অশ্রদ্ধা করি।
তবু যে তাকে ঘৃণা করি তা নয়।
যাকে আপন ভাবি তাকে কখনোই পর ভাবি না।
ভাবলে নিজেকে বেঈমান মনে হয়।
আমার ঈমান ততটাই শক্ত যতটা বেঈমানের জন্য আমি কঠিন হই।
ধর্না ধরি না
নিজের মত করে এগোই…
তবে একবার ধর্না ধরেছিলাম- বিশ্বাস, ভালবাসা আর শ্রদ্ধার অধিকারে
কিন্তু সে অংকে আমি ফেল!
যে অংকবাজিতে তারা সেরা-
সে অংকবাজি নির্লজ্জ বেঈমানি, কৌশলিক, ঘৃণিত!
আমি নিরীহ সেই সবের সামনে।
আমি পরাজিত স্বার্থপরতার চালবাজিতে…
আর একারণেই
আমি পেছনের কাতারে, লাস্ট বেঞ্চে
আমি উপেক্ষিত
যদি সবার মত ভেসে যেতাম,
যদি একিই তেলে মর্দন যোগ্যতা অর্জন করতাম,
যদি মাথা নোয়াতাম,
যদি কুকুর ছানার মত কুই কুই করে যেতাম-
তবে আমার সব হতো-
বাড়ি হত, গাড়ি হত, তালিয়া বাজতো, মদ- মাতাল- তোষামোদ হতো!…
কিন্তু আমি অকর্মা
আমি বেখাপ্পা
আমি জোয়ার চিনি না
স্রোতে ভাসি না
বৃষ্টির দিক বুঝি না, ছাতা ধরি না…
আর সে জন্যই আমি বৃষ্টিতে ভিজি, রোদে পুড়ি!
ব্যথা লাগে
উহ! করে কাঁকিয়ে উঠি না
ব্যথা সয়ে যাই নতুবা ব্যথা না লাগার উপায় বের করি।
তবু ব্যথা লাগে
খুব ব্যথা লাগে- বিশ্বাসে… ভালবাসায়…শ্রদ্ধায়…
এক সময় ব্যথার স্থলে দাগ লাগে
দাগ রুঢ় হয়
প্রবীণ চাপ পড়ে
দাগে দাগ লেগে কলঙ্কিত হয়!
তবু ঘৃণা করিনা
ভাবি,
বুঝি,
আর ভিন্ন পথ খুঁজি…।
কখনো কখনো হতাশ হইনা এমন নয়। তবু লড়াই জারি থাকে
কারো বিশ্বাস কলুষিত বলে-
আমার বিশ্বাস দৃঢ় হবেনা কেন?
আমি বিশ্বাস করি
দাগ না মোচন করে দাগের পরিধি, দাগের দ্রাঘিমায় সরল রেখা আঁকি
কখনো বৃত্ত
কখনো প্রবৃত্ত
ঘুরে ফিরে আবার উঠে দাঁড়াই…
কারণ
আমি তো জানি আমি কি
না
বিত্ত ভৈবব এর নেশা নেই,
মোহ নেই
কিন্তু আমি জানি আমি কি চাই।
আমাকে কোন পথে এগুতে হবে।
জানি,
সব কিছু ভেস্তে যাবে
থাকবে -আমার বিশ্বাসের আলো… ভালবাসার ছন্দ…শ্রদ্ধার মহিমা…
ততদিন অপেক্ষা- যতদিন এই অবারিত রাত ভোর না হচ্ছে
একদিন সকাল হাসবে
একদিন পাখি গাইবে
একদিন বাতাস আমার হবে
বৃষ্টি আমাকে ছোঁবে
একদিন রোদ্দুর আমাকে আলিঙ্গন দেবে
একদিন জাগবে কবিতা
একদিন ফুটবে স্পর্ধা!…
একদিন রঙ, একদিন বুননে হাসবে আড়ং
একদিন জানবো নিজেকে
জানবো তোকে,তাকে, তাহাদেরকে
একদিন জানাবো
একদিন দেখবো আলোর ঊষা
একদিন হবো আলো
একদিন পৃথিবী ডাকবে আমাকে
তাবৎ অপেক্ষাকে জিইয়ে রাখছি তাই…
চন্দ্রমল্লিকা ছোঁবে শিশির
থামবে অশ্রু… অধীর!
এই সন্ধ্যা … উৎসর্গীত তোমার নামে
প্রিয়তমা……
প্রতিটি বিকেলের মতো
আজো পশ্চিমা আকাশ লালিমায় ছেয়ে আছে,
খরস্রোতা নদীটি
বুকের কপাট খুলে দিয়েছে
অস্তমিত সূর্যকে গিলে নিতে,
আয়েশি ভঙ্গিতে পাখীদের নীড়ে ফেরার আয়োজন
এবং
বাতাসে কুয়াশার ধূম্র মিলেমিশে
প্রকৃতিতে ফেলছে শান্ত অবয়ব…
এই সবই ঠিক আছে!
কেবল একটাই ব্যতিক্রম
আজ আমার বুকের হেরম জুড়ে নীলকন্ঠী রাত
চলছে অসম তাণ্ডব লীলা।
হৃদপিণ্ডের দপ দপ বেড়েই চলেছে;
জানি এসব ক্ষয় অবক্ষয়ের গল্পে
তোমারও মন বিচলিত হবে, অস্থির হবে,
জানি
শিকল বাঁধা হরিণীর মতন তুমি ছট পট করবে।
তবুও
তোমাকে জানাতে হবে
সহস্র মন খারাপ রাত্রির নিঃসঙ্গ দহন সয়ে সয়ে
এই আমি দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছিলাম জীবন।
কারণ
আমি যে
এই দহন তাপে খুঁজে পাই তোমারই উষ্ণতা ;
আমি সয়ে গেছি বিনিদ্র যন্ত্রণা
সয়ে গেছি যন্ত্রণার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মন্দ্রিত তুপান
বিদগ্ধ স্মৃতি ; জানো-
পোড়া মাটির গন্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই
মাটির কর্দমাক্ত কর্ষণে
নির্মাণ করি তোমারই প্রতিমা!…
তুমি ঠিকই জানতে
জানতে যেভাবেই হোক আমি বেঁচে থাকবো,
যেমনই হোক হার না মানার মানুষ আমি।
তুমি জানতে
আঘাতের ভয় নেই আমার ,
তুমি হারিয়ে গেলে
নেই- আর কিছু হারাবার ভয়!
প্রলয় তাণ্ডবে
আমি ধারণ করবো সুনামির রূপ
ভাসিয়ে নেবো কজ্জল কালিমা
আমি উঠে দাঁড়াবো………
পাবোনা জেনেও
ছোঁবোনা জেনেও
আমি বার বার হাত বাড়াবো তোমারই পাণে!
জানতেই বলেই
তুমি রূপ বদলের নেশায় উন্মত্ত হলে
উড়তে লাগলে
বৃক্ষ হতে বৃক্ষে, প্রান্ত হতে প্রান্তরে
উড়ে বেড়ানোর নেশায় ডুবে রইলে…
শুধু জানতে না
উড়তে উড়তে একদিন উড়ে যাবে অচীন আকাশে..
তবুও
তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই।
আমি পেয়েছি তোমাকে আমার অনন্ত প্রাণে
যে দিন ঝর্না স্নানে
সিক্ত হতে হতে নিজের বুকের কপাট উন্মুক্ত করে
আমাকে নিবিষ্ট করেছিলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলিঙ্গনে!আমি জীবন পেলাম সেই নিবিড় ধ্যানে
বসন্ত দিনে
স্ফুটিত পরাগ চুম্বনে..
পেয়েছিলাম পৃথিবীর সমস্ত সুর সংগীত
অনবদ্য আনন্দ স্পন্দন!..
তুমি ফিরো
আর নাই ফিরো
আজকের এই সন্ধ্যা
এই পূজা উৎসর্গীত হলো তোমার নামে!
শুধু
এক অনন্তের আক্ষেপ
যার বুকে ছুঁড়ে দিলাম জ্বলন্ত দিয়াশলাই……
ভালো থেকো।
তোমারই “শুভ”