দাউদুল ইসলাম এর সকল পোস্ট

দাউদুল ইসলাম সম্পর্কে

সব সময় নিজেকে বলি- মানুষ হবি যদি- অন্ধকার ঘরে যখন একা থাকবি তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করে নিস তুই কতটা মানুষ। কতটা তোর সভ্যতা কতটা তোর ভদ্রতা! স্নান ঘরে যখন একা শাওয়ারের নিচে দাঁড়াস- তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করিস কত টা আছে তোর মনুষত্বের রুচি! জিজ্ঞেস করিস কতটা তুই ভদ্র, সভ্য!

সজীব বয়ান

একটি রণ বাহিনীর গোড়াপত্তন চলছে। শুরু হয়ে গেছে যাবতীয় কলা কৌশল আয়ত্ত করন প্রক্রিয়া। অচিরেই মাঠে নামবে সোমত্ত জোয়ান।যাদের অন্তরে দীর্ঘকালের লালিত বাসনা, রক্তে লহরিত সুর, তীব্র তারানা; বলয়ের সম্মোহিত ছন্দে তারা উঠে আসছে মহান দর্পণে!

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাঞ্জল শ্লোগানে। সমুচ্চারে। শৌর্যের গানে…।
যাবত কালের নিবিষ্ট ক্ষুধা থেকে, বারবার উপেক্ষিত সুন্দরের প্রস্তাবনা থেকে, পতিত অশ্রু বান- প্রেমের নৈবদ্য থেকে ছুটে আসছে নিবিড় এক প্রলয়। সুধা মাখা তীর,পুষ্পিত ধনুকে।
পরাগের গোলায়। হৃদয়ের সমস্ত মমতা মেনে মেখে শাণিত হচ্ছে সৈনিকের চোখ-দুর্জয় দৃষ্টি।

যেখানে ডেকেছে রংধনু কুৎসিত মেঘে, যেখানে পুড়েছে ফুলের স্নায়ু হিংস্র আগুনে, যেখানে ডুবেছে কবি নির্মম বিষাদে, যেখানে রুদ্ধ পথ- শৃঙ্খলিত শিল্পের চরণে। সেখানেই হবে শুদ্ধি
অভিযান! সজীব বয়ান। নতুন এক সংবিধান প্রণীত হবে কবিতা আর গানে।

প্রতিদিন উদযাপিত হবে সুরভী সন্ধ্যা- জ্যোৎস্না উদ্যানে। মহুয়ার বাগানে প্রজাপতির নৃত্য।
সু ঘ্রাণে মোহিত পৃথিবী আপন অক্ষে বয়ে বেড়াবে এক অভিন্ন নদী…

আমি তোমাদের কেউ নই

dau

নতুন করে প্রমান হলো
আমি তোমাদের কেউ নই, আগেও ছিলাম না
এখনো নই.. কখনো হবো কি-না; জানি না!
যেভাবে জ্যোৎস্না পেরুতে পারে না রাত
অথবা গোধূলি অমানিশার..

নদীও তো বয় শব্দ, রাশি রাশি পদাবলী
তবুও নদী তো কবি নয়,
কবি – নিরবধি
বয়ে বেড়ায় খরস্রোতা নদী! অন্তর্জাল
কলকল ধ্বনি- বর্ণীল কথোপকথন…

আমি কারোই কেউ নই
তোমাদের দলের নই
তোমাদের মতের নই
বর্নের নই
গোত্রের নই;
নই কারো ইচ্ছের নর্তক!..
কেউ নেই, যে-
আমাকে বাধতে পারো, পুষতে পারো, বুঝতে পারো…

নিত্য খবরে জানান দেয়া
সবুজের কান্নায় অশ্রুত ভোরের বার্তা
ঘাসের কেশরে স্ফটিক শিশির বিন্দু কারো নয়!

শত সহস্র অনাহুত কান্না
নিত্য ঝরে যায় নৈশব্দের অক্ষিকোটরে
অজস্র পাখিরা নৈবদ্য অভিসারে
চিৎকার করে ঘোষণা করে –
আমি তাদের কেউ নই!…

স শ স্ত্র সু ন্দ র

dau

দেখো
বিবেকের করিডোরে
বুকের ভেতরে…অতল আত্মায়
অসংখ্য শিশু কষ্ট পোহাচ্ছে নিশিদিন;
অসীম ধৃষ্টতায় বাড়ছে জ্বালা
হৃদয় গহ্বরে…দৃষ্টির রেখায়…অস্থি-মজ্জায় …
ধূমকেতুর মত ছুটছে ওরা
প্রকম্পিত আকাশে, মেঘের কান্নায়
ধুঁকেছে অন্তহীন
মৃত্যু বেদনায়, নতুন নতুন জন্ম প্রহারে!…

এখানে সান্ত্বনা নাই
হিসেব নাই
কে কারে কাঁদায়…
তবু
মত্ত পতঙ্গের মতন
মানুষ বুকে ধরে এক আকাশ নীলিমা,
রূপোলী স্রোতের তলে পুঁতে রাখে স্বপ্নজাল!

দেখি
সূর্যের চুম্বন ঝরে বৃক্ষের ডগায়;
এলোকেশী রমণীর বুকে যেমন-
রক্তের ঝর্ণা ঝরে!
পৃথিবীর কি বা আসে যায়-
যে স্রোত নেমে আসে উজান বেয়ে
তার তলে বহমান আমাদের অজস্র স্বপন
যার আঁচলে
রচিত হয় সশস্ত্র বাসনা…
দ্রোহের অনিবার্য অভ্যুত্থান!

২৮/৭/১৮

তাল ও তেল সমাচা

tty

তালবাজ ও তেলবাজেরা
নিম্নের কবিতা টি থেকে দূরে থাকুন!..

তাল ও তেল সমাচার

তলে তলে তাল মেরে
তিল কে তাল বানানোর নেশায় মাতাল যত্তসব আবালের দল!…
দিনে দিনে আয়ত্ত করে গুরুচন্ডাল হাল!
তালে তেলে টইটম্বুর হলে
খুলে যায় বিশাল সম্ভাবনা, জ্বলে উঠে
আলাদিনের যাদুর চেরাগ!
খুলে যায় ঝাঁপ-তাল; লাজ লজ্জা
এবংকি
চার আঙুলের চকচকে কপাল!..

তালে তালে তালিয়া বাজে
ফন্দিবাজেরা ফন্দি খোঁজে
তলে তলে বুনে যায় নীলনকশার জাল
নৌকার তলায় ছিদ্র বানিয়ে হাওয়ায় তোলে পাল!

মোক্ষ বুঝে লক্ষ্যের পাণে ছুড়ে মারে তীর
গোলে মালে তালে গোলে সেজে যায় বীর!
তালে বেতালে এরাই আবার বাজায় মায়া বীন
তেলে তালে মিলে গেলে ফেরায় মীরজাফরি দিন!
( কি আর বাল পালাবি) তেলের পিচ্ছিলে আছড়ে পড়ে
তালের তলে খোদ তলাবি!!

প্রয়াণের একযুগ! বিনম্র শ্রদ্ধা হে সাহিত্যের জাদুকর হুমায়ুন আহমেদ

fft

আজ (১৯ জুলাই) বাংলার নন্দিত কথাশিল্পী ও চিত্রনির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দেখতে দেখতে কেটে গেল জন নন্দিত এই কথাশিল্পীর প্রয়াণের একটি দশক। ২০১২ সালের আজকের এই দিনে ক্যান্সার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি নিউইয়র্কের বেলভ্যু হাসপাতালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান জোছনার গল্প কথক কিংবা হিমু-মিসির আলির এই স্রষ্টা। তার মৃত্যু শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী সব বাঙালির হৃদয়ে গভীর শোকের অন্ধকার ছড়িয়ে দিয়েছিল।

মাত্র ৬৪ বছরের জীবনে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যর প্রায় প্রতিটি শাখা প্রশাখায়। বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজের অস্তিত্বের সাক্ষর রাখেন। তার ‘নন্দিত নরকে’ আর ‘শঙ্খনীল কারাগার’ পাঠ করে আবিষ্ট হয়েছিলেন, সেই আবেশ আজও কাটেনি বাংলা ভাষার পাঠকদের। তিনি তাঁর সাহিত্য দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ রেখেছেন বাংলার মানুষকে, তিনি জয় করে গেছেন একেবারে শাদামাটা বাঙ্গালীর মন কে, আবার উন্নত ঐশ্বর্যিক বাঙ্গালিয়ানাকে। নিজেকে তিনি যেভাবে বাংলা কথাসাহিত্যের অঙ্গনে, টেলিভিশন নাটক আর চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন তা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক বিরল । তিনি এদেশের সৃজনশীল সাহিত্য প্রকাশনাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বিপুল পাঠকপ্রিয়তা সৃষ্টির মাধ্যমে। ভারতীয় বাংলা গল্প, উপন্যাসে নিমগ্ন পাঠকদের বাংলাদেশি লেখকদের বই পড়তে বাধ্য করেছিলেন তার আশ্চর্য জাদুকরী গল্পের জালে জড়িয়ে। মোহাবিষ্ট পাঠক হুমায়ূন আহমেদের রচনায় মধ্যবিত্ত জীবনের হাসি-কান্নার এমন নিবিড় পরিচয় পেয়েছেন, যেখানে তাদের নিজেদেরই জীবনের ছবি প্রতিবিম্বিত। এক হুমায়ুন আহমেদের পথ ধরে এগিয়ে এসেছেন অসংখ্য প্রতিভা, অসংখ্য মানুষ তার হাত ধরে হয়েছেন অনন্য, একেবারে সাদামাটা মানুষকে তিনি বানিয়ে দিয়েছেন নন্দিত চিত্রতারকা!তাদের অনেকেই হয়েছেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী। আমরা তাঁর সৃষ্টিতে খুঁজে পাই অসাধারণ সব নৈপুণ্য, অনন্য নৈসর্গিক দৃশ্য, জোছনা, খুঁজে পাই আমাদের জীবনের নানান সব ব্যঞ্জনা।

হুমায়ূন আহমেদের অনন্য সৃষ্টি হিমু! সে এক অসাধারণ চরিত্রের নিরন্তর পথ চলা… এক ভিন্ন মেজাজ, ভিন্ন স্টাইল, ভিন্ন রঙ রূপ এর অপূর্ব সমন্বয়, যা আমাদের দেশের বেশিরভাগ তারুণ্য কে ছুঁইয়ে গেছে, আজো ছুঁইয়ে আছে আর আগামী দিনে একিই প্রভাব নিয়ে এই চরিত্রটি টিকে থাকবে।

এদেশে দর্শকনন্দিত নাটকগুলোর একটি বড় অংশ তার সৃষ্টি। তার ছায়াছবিও সমাদৃত হচ্ছে সমানভাবে। প্রয়াণের ছয় বছর পরও বাংলা শিল্প-সাহিত্যের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে চলছে তাঁরই আধিপত্য, তারই রাজত্ব, তারই জয়জয়কার! এখনো সমান তালে সমান ছন্দে বিরাজ করছে হুমায়ুন প্রভাব যা রবীন্দ্র নজরুলের পর আর কেউই খাটাতে সক্ষম হয়নি। হুমায়ূন আহমেদ এর পুস্তুক প্রকাশকদের মতে তার নতুন বা পুরনো সব গ্রন্থই সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের তালিকায় স্থান করে নেয়। এই হিসেব মতে হুমায়ুন আহমেদ কে আধুনিক শিল্প সাহিত্যের রিদম বলা ভুল হবেনা।

বাংলা টেলিভিশনের জন্য একের পর এক দর্শকনন্দিত নাটক রচনার পর ১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তাঁর পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।

এছাড়া ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন ছায়াছবি ‘শ্যামল ছায়া’ , ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমী পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে যেটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এবং বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। একিই বছর মুক্তি পায় ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে তাঁর পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। যা দেশ-বিদেশে প্রচুর আলোচনায় আসে। তাঁর চলচ্চিত্রের মৌলিক গানগুলো তিনি নিজেই রচনা করেন, যার বেশিরভাগই পায় তুমুল জনপ্রিয়তা।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার ছোটভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।
তিনি ১৯৬৫ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতক ও ১৯৭২ সালে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ৯০ দশকের মাঝামাঝি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোযোগ দেন।

১৯৭৩ সালে প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁর নাতনি গুলতেকিন খানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন হুমায়ূন আহমেদ । হুমায়ূন এবং গুলতেকিন দম্পতির চার ছেলে-মেয়ে। তিন মেয়ে নোভা, শীলা ও বিপাশা আহমেদ এবং ছেলে নুহাশ হুমায়ূন। দীর্ঘ ৩২ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০০৫ সালে ডিভোর্সের মাধ্যমে তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এরপর তিনি অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির দুই ছেলে- নিষাদ ও নিনিত হুমায়ূন।

.
লেখকঃ দাউদুল ইসলাম
কবি ও প্রাবন্ধিক।

আলোকৎপাত

কখনো কখনো ঘুরে দাঁড়ানো জরুরী
এই যে – বিদগ্ধ ইতিহাসে সম্মুখে
মুখ তাক করে চেয়ে আছি নগ্নভাবে
এটি কিভাবে সভ্যতার মধ্যে পড়ে?
জানিনা।
আছি তো, তবুও
যদিও জানি-
ঘুরে দাঁড়ালেই প্রতিপক্ষের মাথায় আকাশ ভাংবে!
তারা তাদের নিত্যকার উলঙ্গপনাকে বলে বিলাসিতা..
তাদের দু’হাতে কলঙ্কের কালি
রক্ত ঘামে একাকার ইতিহাসের বলী দিয়ে
ওরা রচনা করে উত্তরাধুনিক রাজনীতি!
কে জানি বল্লো-
আমাদের ঐতিহ্য উজ্জ্বল সোনালী চাঁদ
অথচ টিকে থাকার লড়াইয়ে
একটি রণবীর সূর্যের খুব দরকার ;
অথবা ঝলসে দেয়ার মতো আলোকৎপাত!

ঘোর অমানিশা নামার পূর্বে
বিবেকের পূর্বাকাশে উদয় হোক নতুন সূর্য!

আরশের প্রকম্পন

আমরা ভুলে যাই অতীতের আশংকা গ্রস্থ সময়, ক্ষুধা বিধ্বস্ত দীর্ঘ স্মৃতি
সোমত্ত জীবন পেয়ে আমরা ভুলে যাই জীর্ণ কাল, পাষণ্ড যুগের দাসত্ব!!..
যদিও
কেউ কেউ এখনো ঝুলিয়ে রাখে
সতীত্বের ঘন্টা,
লুকিয়ে রাখে
নেকড়ের আঁচড় -কামড়ের নৃশংস ইতিহাস!

আমাদের বগলে- মুষ্টিতে জ্বলন্ত অঙ্গার পিণ্ড!
দলিত মথিত বুকে সহস্রাব্দের দম্ভক নৃত্য,
উন্মত্ত ঊর্ণাজাল..
নিভৃতের দহনে পুড়ছে সৌম্য সকাল
সোনালী দুপুর… পূর্ণিমা প্রহর…
ঘোর অমানিশায় ডুবছে সমগ্র ভবিষ্যৎ!

আশ্চর্য এক স্পর্ধায়
কলংকের শাপ ওদের স্পর্শ করেনা।
নগ্ন উৎসবে প্রকম্পিত আসমান জমিন
কাম মত্ত আগ্রাসন
কুকুরের ঘেউঘেউ..লালায়িত জিহ্বা
সুশীল দুনিয়াকে ভেংচি কাটে
উল্লাসের বেলাল্লাপনা কম্পন তুলে আরশের মঞ্চে!..
কম্পন তুলে ঈশ্বরের বক্ষে
বিবেকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে!…

.
১৪/৭/২৩

শ্রমণ

dau

চরম অসহিষ্ণুতা ঘিরে আছে
ঘুমহীন গ্রীষ্ম রাতে তৃষিত পাঁজরে
ঘোরের ভেতর
দৌড়াচ্ছে মৃগমদ হ্রেষা
টগবগ টগবগ… বুকের গভীরে…
নিঙড়ে দিচ্ছে প্রশস্ত জমিন, মেঠোপথ, নদী
অবিরাম ছুটছে শ্রমণ অমৃতের সাধন অব্ধি!

সহ ব্লগারেরা এসো…..

out.-3d

বাংলা ব্লগের প্রাণ
নির্মোহ ভালোবাসার অনির্বাণ পুরুষ
আজাদ কাশ্মীর জামান!
প্রেরণা ও প্রেমে নিজেকে করেছেন উন্নত শিরস্ত্রাণ!..

নিভু নিভু প্রোফাইল ছবিতে আছেন আবু সাঈদ আহম্মেদ,
যদিও তিনি শব্দের কারিগর….
কথা সাহিত্যের প্রখর সূর্য
কাজে নিবিষ্ট মন, মানবিক এক তূর্য!

ব্লগ দুনিয়ার আশীর্বাদ তার নাম জামান আরশাদ।
দারুণ মমতাবান আর রয়েছে প্রাজ্ঞ জ্ঞান।

সবার প্রিয় আপা লুবনা মুক্তি, অদম্য প্রেরণা
যিনি- আসলেই এক অনন্য শক্তি
শ্রদ্ধা সম্মানে ভক্তিমান!

স্থির শিল্পের যাদুকর ব্লগগুরু জিয়া রায়হান
নিবিষ্ট ধ্যানে ক্যামেরায় ডুবে যান অহর্নিশ
ছবিতা আর কবিতায় দক্ষ হাতে চলেন সমান।

ব্লগবাড়ির গোড়াপত্তনে যার কর্ম শৈলী নিপুন হস্ত,
দুরন্ত দুর্নিবার সাইক্লোন শিবলীর মর্ম রয়েছে বিন্যস্ত!…

ধ্যানে জ্ঞানে করেছেন সন্ধি
প্রিয় কবি ফকির আবদুল মালেক
নান্দনিক স্ফূরণে বুনেছেন
‘একাকিত্বের জবানবন্দি ‘!..

মননশীল কবিতা রচনায় যার কথা না বললেই নয়
নতুন নতুন কবিতায় রোজ নিজেকে দেয় জানান
ভুতু সোনার কারিগর কবি চারু মান্নান! চারু মান্নান

অসাধারণ মানুষ আমাদের জাকির হোসেন
আবৃত্তি আর মননশীলতায় এখনো সবাইকে ভালোবাসেন।

ভোমরার গুনগুনানিতে শব্দ কুড়ান
কথা সাহিত্যের খালিদ ওমর, নক্ষত্রের গোধূলির বয়ানে আচ্ছন্ন করে রাখতেন সমগ্র আসর।

চট্টগ্রামের রত্ন আ স ম এরশাদ
যত্ন করে পূরণ করতেন
সহব্লগারদের সাধ আহ্লাদ।

গল্প ও রান্না
রান্নার গল্পে রুচির বন্যা বইতো শাহদাত উদরাজী ভাইয়ের চমৎকার সৃজনে
পোস্ট পড়লেই ক্ষুধা পেতো পেটে লাগতো চিনচিনে..

ছবি নামে কবিতার প্রেমে অবিরাম হেঁটেছেন
কাজী ফাতেমা ছবি,
ঝলমলে লেখার আলোয়
আসলেই এক জ্যোতির্ময়ী কবি।

প্রান্তিক কবি প্রিয় এসকে দোয়েল
সাজাতেন গদ্য প্রীতি –
আত্মিক অর্থেই সত্যিকার সাধক তেঁতুলিয়ার বাতি!…

তেলের মতো নিজেকে জ্বালিয়ে আলো দিতো সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম রুবেল- কবিতা আর গল্লে বইতো আনন্দধারা, চিত্তাকর্ষক উদ্বেল!..

আরো কত গুনীমান্যি
কত ফুল ও নক্ষত্রের কোলাহল
আমাদের ব্লগবাড়ি হতো মুখরিত, ঐকান্তিক উজ্জ্বল!..

নগন্য আমি
অতি ক্ষুদ্র!.. হত দরিদ্র গাঁও গেরামের মানুষ
শুদ্ধ অশুদ্ধ কত কি লিখি – সেদিকে থাকেনা হুঁশ!
ডাকছি তোমাদের
সহ ব্লগারেরা এসো-
আত্মার নন্দনে বসো..
জানি ভালবাসো… তবুও
মনের সনে মনের সাক্ষাতে মিষ্টি করে হেসো!….

সহ ব্লগারেরা এসো….. দাউদুল ইসলাম
২৭/৬/২৩

বৃষ্টি বিহার

পাখিদের চিত্ত ক্লান্ত
ম্রিয়মাণ ডানায় ঝেঁকে বসে বিষাদের ভার
শালিকের ঠোঁটে হলুদ গ্লানি, মৌন মাতমে
নীল- পানকৌড়ি, মাছরাঙার;
বৃষ্টি বাসনায়
বন্দনায় ডুবেছে বৃক্ষ তরু লতা সমস্ত বনফুল
অবিন্যস্ত চুলে
প্রহর গুনে ভবের বাউল, বৈষ্ণব কুল!..

কে জানে
কোন গহ্বরে লুকিয়ে আছে মেঘ, কোন সুদূরে?
কোন আগুনের বনে পুড়ছে প্রাণের আবেগ; শাসানো রুধীরাক্ষের লাল হাশরে!
কোন অভিসারে আসবে বৃষ্টি, কবে ছিঁড়বে লাটাই
করুণার ফটক খুলে নামবে শিউলীর ধারা,
হিজলের স্রোতে ভাসবে কবি, ভিজবে খরাক্রান্ত কবিতারা….

পথ ভোলা পথিক
বিস্তৃত মরুর অকুল তৃষ্ণায় বিদগ্ধ শ্রমণ
অবিরাম ধুকছে চিত্ত দু’চোখে দুর্মর অন্ধকার
অবিরাম ছুটছে ক্ষুধার্ত মানুষ, অবুঝ শিত, নব যৌবনা…
শূন্যতার পাঁজরে অনাকাঙ্ক্ষিত বিহঙ্গ সঙ্গম
কান্নার স্বর, আর্তচিৎকার….

শিল্পীর তুলিতে আড়ষ্ট শিল্পের আঁকিবুকি
জলরঙের বৃষ্টি বিহার!..
……….

ধর্মের কল

আমাদের চৌহদ্দি ঘিরে আছে বিষধর সরিসৃপ
ক্ষুধার্ত শকুনেরা জোটবদ্ধ হামলে পড়ার আয়োজনে! নীরবে ধুকছে সমস্ত নন্দন কানন
ধুলির আস্তরে চাপা পড়েছে শিল্পের মনন- দর্পণে
মানুষে অমানুষে একাকার শ্রমণ মাতাল সমীরণে!
তালে – বেতালে বাজছে পতনের দামামা, অনল
গরলে নাচছে ব্যঙ্গমা, বাতাসে নড়ে ধর্মের কল।

যত্নে থেকো

dau

তুমি ভালো থেকো
ভালো থাকার সমস্ত উপকরণ থাকুক তোমার,
আমার সারি বদ্ধ কষ্ট গুলো স্পর্শ না করুক
তুমি নিজেকে সযত্নে আগলে রেখো;

তুমি তৃপ্ত হও
তৃপ্তির যাবতীয় আয়োজন সু সম্পন্ন হোক।
আমার ক্ষত বিক্ষত-
বুকের দগদগে ঘা তোমাকে মর্মাহত না করুক;
তুমি মুখ ফিরিয়ে রাখো!

অসূয়া চোখে দেখিনি তোমাকে
অশুচ হাতে ছুঁইনি
ফণিমনসার নীল বিষে নিজেকে তৃপ্ত করেছি
ঐ দেখো……
মৃত্যু তেড়ে আসছে এই দিকে!

এবার রুখবে কে?
বাধ্যগত প্রস্থান থেকে

তুমি ভালো থেকো,
ভালোর দেয়ালে নিজেকে আগলে রেখো।

নিদ্রা

fgh

দীর্ঘ অনিদ্রার পর ঘুমাতে যাই
কাঙ্ক্ষিত নিদ্রার কোলে ঢলে পড়লে
আমিও পেয়ে যাই নির্ভার গমন
জ্যোৎস্না…. জল… নদী
ডুবসাঁতারে পৌঁছে যাই অতলে
সুরম্য প্রাসাদে
ডুবেই থাকি আরেকবার না পাই যদি!…

বর্ষাস্নাত হিজল

DD

আমাকে ভুলেছ তুমি
বর্ষাস্নাত হিজল,
আমার আতপ্ত তুমি
হাস্য উজ্জ্বল,
আকাশ দিয়েছে পাড়ি
শূন্য হাতে,
গভীর স্নেহান্ধ আনাড়ি
চুমুতে,
অবশেষে দাঁড়াই ঘুরে
মুখোমুখি-
নির্লিপ্ত হিজল স্বপ্নাতুরে
জড়িয়ে রাখি
অনন্ত সুখে মাখামাখি।

ঘুমপুরী

ইনিয়ে বিনিয়ে ঘুমিয়ে আছো সবে
বাতাসও ঘুমোচ্ছে, ঘুমের ঘোরে বইছে নদী
ঘুমে আচ্ছন্ন হিজলের বন, নিমের শাখা, কাশফুল
নীলাভ মুখোশে ঘুমোচ্ছে সরীসৃপ, বালিহাঁস,
শাপলার চর…
অবলা দীর্ঘ শ্বাসের ব্যাপ্তিতে কেবল ঘুমহীন কবি
প্রস্তরখণ্ডের মতো জমানো পা
বুকে শিলাস্তর চেপে ভাবছে….
খুঁজছে অচীন পথের দিশা…