ইলহাম এর সকল পোস্ট

কবি

কবি

শুধুই কবিতা লিখলে তুমি কবি
কিন্তু অকর্মা বদনামের জীবন্ত ছবি
চাকরি থাকলে ঐ বদনাম নেই
ব্যাবসা থাকলেও তা নেই

তবুও যেহেতু তুমি কবি
অশান্তির আগুন জ্বলে উঠতে পারে
তোমার সাজানো সুন্দর সংসারে

ভাই বন্ধু সকলেই বলতে পারে নিন্দা-কাজ
পিতা-মাতা স্বামী-স্ত্রীও বলতে পারে চাপাবাজ
বাড়িওয়ালা যদি জানতে পারে তুমি কবি
বলতে পারে, ব্যাটা – আগে এক বছরের এডভান্স দিবি

দোকানী ফার্মেসি বাজার ব্যাংক বীমায় যদি যাও
বলে উঠতে পারে এক্ষুণি ভাই তুমি দ্রুত ভেগে যাও

ধর্মের অনুশাসন মানলেও তুমি কবি
কিন্তু তা প্রকাশ করলে নও তুমি কবি
রাজনীতি করলেও তুমি কবি
কিন্তু তা প্রকাশ করলে নও তুমি কবি

অতএব সুতরাং যেহেতু সেহেতু অথচ তথাপি
ভাবতে হবে এবং বুঝতে হবে তোমাকে হে কবি

কলম ছাড়বে নাকি আরও শক্ত করে ধরবে
সেই সিদ্ধান্ত হে কবি তোমাকেই যে নিতে হবে

কে কি ভাবলো আর পাঠকের যদি পরোয়া না করো
জেনে নিও সঠিক সিদ্ধান্ত তখন তোমার পোয়া বারো

সকালে দুপুরে বিকালে সন্ধ্যায় নিয়মিত লিখে যেও
খাওয়া দাওয়া আর রাত্রির ঘুমটুকু ঠিক মতো দিও
পত্রিকা কবিতা ছাপবে না ধরে রেখো
তবুও কবিতা লেখায় লেগে থেকো

একদিন সেই দিন সেই ক্ষণে সেই সময়ে
হয়তো থাকবে না তুমি এই ভুবনে সেই বিজয়ে।

অতঃপর হে কবি

অতঃপর হে কবি

কবির বিরুদ্ধে কবি
মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ
বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল
উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান
মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ…..

অতঃপর হে কবি
আমরা জানি আপনি চাইলে আরও লিখতে পারতেন
কলমের বিরুদ্ধে কলম
মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ
বাঙালীর বিরুদ্ধে বাঙালী

অতঃপর একদিন
নিজের বিরুদ্ধে নিজে!

দেয়াল

দেয়াল

শুনেছি ইয়াজুজ মাজুজ বন্দী আছে চওড়া দেয়ালে
ভাঙতে ভাঙতে ক্লান্ত হয়ে যায় এক ইঞ্চি থাকতে
জেগে উঠে দ্যাখে আবার আগের মতো চওড়া দেয়াল।

একদিন নাকি ওরা দেয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসবে
সমুদ্রের পানি সব শুষে নেবে
মাছ গাছ প্রাণী সব খেয়ে নেবে
মানুষ?
তাও নাকি খেয়ে ফেলবে।

সে যাই হোক
যেদিন আসবে
সেদিন দেখা যাবে।

ইদানিং মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়
দেয়াল তোলার শব্দে।

ইট বালি সিমেন্টের দেয়াল
ইটের পর ইট
লোহার পর লোহা
স্টিলের পর স্টিল
পাথরের পর পাথর
আবার ইটের পর ইটের দেয়াল।

যে দেয়াল আস্তে আস্তে নীরবে নির্মিত হচ্ছে
তা ভেঙে আমিও এক দিন বেরিয়ে আসবো।

সেদিন আমার শক্তি?
ইয়াজুজ মাজুজ খেয়ে ফেলার শক্তি থাকবে আমার
সমুদ্র বৃক্ষ প্রাণী সব খেয়ে ফেলতে পারবো
মানুষ?
হ্যাঁ – সব মানুষও খেয়ে ফেলতে পারবো।

কিন্তু আমি সেদিন কিছুই খাবো না
যারা দেয়াল তুলেছিল?
না- তাদেরও খাবো না

আমি সেদিন ওদের ল্যাবে নিয়ে দেখাবো
আমার রক্ত লাল – গ্রুপ ও পজেটিভ
লবণের ফ্যাক্টরিতে গিয়ে আমার অশ্রু ফেলে
দেখাবো – এখানেও লবণ আছে

সেদিন আমি
ঘৃণা অপমান লাঞ্ছনা
প্রেমহীন জ্বালা যন্ত্রণা
ভালোবাসাহীন বঞ্চনা
অবহেলা আর কষ্টগুলো
বের করে আনবো আমার বুক চিড়ে

সেদিন আমি একটি কবিতা লিখবো
যেটা গোক্ষুর সাপের মতো ছোবল দেবে ওদের মস্তিষ্কে
অতঃপর নীলাভ বিষে ওরা মতিভ্রম হয়ে
উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে গিয়ে
স্বেচ্ছাবন্দী হয়ে যাবে সেই দেয়ালে।

কখনো কলমের কালি শেষ হয়ে যায়

কখনো কলমের কালি শেষ হয়ে যায়

গ্রামের বাড়িতে তখন অনেক রাত ছিলো
একটি একশ পাওয়ারের বালব জ্বলছিল
ছোট্ট এক প্রজাতি উড়ে এসেছিল

অবিকল মানুষের ভাষায় বললো
থাকতে চাই না আর অন্ধকারের বিপদ সংকুলতায়
আলোকে ভালোবেসে তাই বাঁচাতে এসেছি আমায়

সে বালবের দিকে উড়ে যেতেই
আমি বললাম – একটু দাঁড়াও!

থমকে গেল সেই প্রজাতিটি

বললাম – আলোকে ভালোবাসো
তবে আলো ছুঁতে যেও না।

ছোট্ট প্রজাতিটি জানে না
আলোকে ভালোবেসে ছু্ঁতে গেলে
প্রজাতিরা পুড়ে মরে দলে দলে

সে বলে উঠলো
ঐ অন্ধকারে ব্যাঙ যে আমায় গিলে খেতে চায়!
আলোকে ভালোবেসে তাই আমি
খুঁজি বাঁচার উপায়

আমি বললাম – কবির কাছে এসো
সে আমার কাছে আসতেই ঘরে একটি ব্যাঙ ঢুকলো
প্রজাতি তখন কাঁপতে লাগলো

আমি তাকে শান্ত হয়ে আমার বুকে আসতে বললাম
আমাকে বিশ্বাস করে সে নিশ্চিন্তে আমার বুকে বসে পড়লো

ব্যাঙটি যখন প্রজাতিকে ধরতে আস্তে এক ধাপ এগিয়ে এলো
তখন আকস্মিক একটি সাপ ঘরে ঢুকে গেল
ব্যাঙটি একলাফে আমার বুকে
প্রজাতির পাশে এসে বসলো

সাপটি এগিয়ে এসে যখন ফনা ধরলো
মুহূর্তেই ঘরে একটি বেজি ঢুকে পড়লো
সাপটি দ্রুত ব্যাঙের পাশে আমার বুকে গুটিয়ে গেল

বেজিটি সাপ ধরতে যখন দু পা এগিয়ে এলো
ঠিক তখনি কোত্থেকে এক আফ্রিকান জংলী
এসে ঘরে ঢুকে পড়লো
ওমনি বেজিটি সাপের পাশে
আমার বুকে বসে কাঁপতে লাগলো

জংলীটি আমার বুকে একটি বল্লম ছুঁড়ে মারলো
কিন্তু তা লক্ষ ভ্রষ্ট হয়ে আমার পাশে থাকা
একটি বইকে আঘাত করলো

বইটির দিকে তাকাতেই জংলীটি চমকে উঠলো
দ্রুত বই থেকে বল্লম সরিয়ে
বুকে জড়িয়ে সে দৌড়ে পালালো

যতদূর মনে পড়ে ওটা আফ্রিকান
আঞ্চলিক ভাষায় কবিতার বই ছিলো।

অতঃপর?

অতঃপর!
আলো-প্রজাপতি-ব্যাঙ- সাপ- বেজি- জংলী-বল্লম
এবং ঐ বইটি নিয়ে আমার মন কি যেন লেখার কথা ভাবছিল

অথচ?

অথচ!
তখনই কলমের কালি শেষ হয়ে গেল।

৩ পাপ ১ সত্য …

৩ পাপ ১ সত্যঃ

ইদানীং মনে হচ্ছে অনেক কবি, অনেক কবিদের সাথে এবং সাহিত্যাঙ্গনের সাথে জড়িত অনেক ব্যক্তিত্বের সাথে এক অদৃশ্য প্রেমে জড়িয়ে যাচ্ছেন। অদৃশ্য প্রেম, এ জন্যই বলছি কারণ প্রযুক্তির অতি অগ্রগতির কারণে কোনও মাধ্যমেই সেই প্রেম নিবেদন করা সুরক্ষিত নয়। তাই কবিতা পোস্টের মাধ্যমেই প্রেম নিবেদন চলছে।

কিন্তু কে যে কার উদ্দেশ্যে প্রেম নিবেদন করছেন আর কে যে ভাবছেন আসলে কাকে নিবেদন করা হয়েছে তা বিভিন্ন কবিদের কবিতা পাঠের মাধ্যমে বোধগম্য খুব একটা সহজ ব্যপার নয়। আমি নিজেও ইদানীং এই অদৃশ্য প্রেমের স্বীকার। তার প্রমাণঃ
১) একজন তীরন্দাজ ও ব্যর্থ বিজ্ঞানী
২) একজন তীরন্দাজ ও যাদুকর
৩) অপ্রমাণিত ত্রিভুজ

প্রেমে পড়া বা প্রেমে ধরা দুটোই সৌভাগ্যের বিষয় মনে হয় আমার কাছে। এখানে দোষের কিছুই নেই। এটা স্বর্গীয় বিষয়। কেউ কারো প্রেমে পড়লে বা কারো প্রেম কাউকে ধরলে আমার কাছে মনে হয় এই পৃথিবীতে এই দুইজনের মতো সৌভাগ্যবান আর কেউ নেই।

@ প্রেমের সাথে দৈহিক সম্পর্ক জড়িত – এ সত্য কথাটি যিনি অস্বীকার করবেন তিনি আসলে দৈহিক সম্পর্কটাই বোঝেন – প্রেম বোঝেন না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, প্রেমের দৈহিক সম্পর্ক আর দৈহিক সম্পর্কের নেশা – দুটো ভিন্ন জিনিস। নেশা ব্যাপারটি অবশ্যই ভয়ংকর।

এখন @ লেখাটি পড়ে আপনারা যারা আমার দিকে অদৃশ্য ভাবে বাঁকা চোখে তাকাচ্ছেন – তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, অনুগ্রহ পূর্বক একটু চোখ সোজা করুন, আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া প্রতিদিন এমন অসংখ্য ঘটনার শুধু একটি দিক আমি এখানে লিখেছি, হয়তো আপনার অনেক কাছের কেউ এমনটি করে যাচ্ছে – আপনার খবর নেই। তাই এবার বাঁকা চোখটি আপাতত ওদিকে রাখুন।

যাই হোক, যেটা বলছিলাম। প্রেম পবিত্র। প্রেমে পাপ নেই। এই পৃথিবীতে পাপ মাত্র তিনটা আর সত্য মাত্র একটাঃ

/তিন পাপ/
প্রথম পাপঃ
মানুষ ঠকানো বা মানুষের হক মেরে দেয়া।
*এই পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা স্রষ্টা তাঁর হাতে রাখেন নি।

দ্বিতীয় পাপঃ
স্রষ্টা ছাড়া আর কাউকে তাঁর সমকক্ষ মনে করা।
*আপনি যদি সেন্সর চিপস সমৃদ্ধ রোবট বানান সেই রোবট যদি আপনার দিকে রাইফেলের ট্রিগার চাপ দিতে চায় তাহলে স্বভাবতই আপনি তা মানবেন না।

তৃতীয় পাপঃ
আত্ন- হত্যা করা।
*এটা স্বয়ং স্রষ্টার স্ববিরোধী কাজ। তিনি নিজে এই কাজ কখনোই করবেন না তাই তাঁর স্ববিরোধী কাজকে তিনি ক্ষমা করবেন না।

/এক সত্য/
মৃত্যু।
*হ্যাঁ- মৃত্যু এই পৃথিবীতে একমাত্র সত্য। এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না।

৩ পাপ ১ সত্যঃ
এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত বোধ এই পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে, আপনার সাথে আমার বোধের পার্থক্য থাকতেই পারে।

*তাহলে স্রষ্টা?
তিনি ত্রিভুবনেই সত্য – শুধু এই পৃথিবীর জন্য নয়। আমি শুধু এই পৃথিবীর কথা বলছি।

*মানুষ?
আকাশ, বাতাস, গরু, ঘোড়া, আম, লিচু সব কিছুই যেমন সত্য সেই হিসেবে মানুষও সত্য। তবে সকল প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সত্য মানুষ। সেই হিসেবে সবার উপরে মানুষ সত্য বলতে বুড়ু চন্ডিদাস মূলত প্রাণীদের মধ্যে সবার উপরে মানুষকে সত্য হিসেবে বুঝিয়েছেন। কিন্তু মুলত মানুষ চির সত্য নয়। মানুষ চির সত্য হলে, মানুষ মৃত্যুকে ঠেকিয়ে দিতে পারতো।

অভিশপ্ত হলে আগুন জ্বলে উঠবে

অভিশপ্ত হলে আগুন জ্বলে উঠবে

আমরা শীত দেখেছি রাশিয়ার
দেখেছি ইউরোপ – এমিরিকার

সেখানে ঋণাত্মক চল্লিশ ডিগ্রীর
শীতেও মানুষের আয়ু বেড়ে যায়

আর আমার বাংলাদেশে
এবং
আমাদের বাংলাদেশে
মাত্র ধনাত্মক সাত ডিগ্রীর শীতও
ডেকে নিয়ে আসে হাজার হাজার মৃত্যু

একটি কম্বল!
হ্যাঁ – শুধু একটি মাত্র কম্বলের অভাবে
মানুষের মৃত্যু হয় মাংগাময় সভ্যতায়

অথচ যদি যাকাতের হিসাব কষা হয়
তবে প্রতি বছর কয়েক অযুত কোটি হয়

এই সকল বিত্তবান
চিত্ত বিনোদন করতে যান
পঁচিশ হাজার টাকার নর্থফেস জ্যাকেটের জিপার টেনে
হ্যামার গাড়িতে হার্ড ড্রিংকসের বার এ
রঙিন দুনিয়ায় ব্যস্ত হন সিগারেট টেনে টেনে

ঠিক ঐ মুহূর্তে শীত যমদূত হয়ে হাজারো মানুষের প্রাণ বের করে আনে
বরফ-শীতল হাতে হ্যাঁচকা টানে টানে

তাই হে শীত!
হ্যাঁ – তোমাকেই বলছি

তুমি আমার বাংলাদেশে
এবং
আমাদের বাংলাদেশে
আর এসো না

যদিও বা আসো
তবে তুমি আমার বাংলাদেশে
এবং
আমাদের বাংলাদেশে
আশির্বাদ হয়ে যদি আসতে পারো
তবে তোমাকে স্বাগতম
কিন্তু অভিশপ্ত হয়ে আর আসতে পারবে না

আর যদি একটি বার অভিশপ্ত রূপে
আসবার দুঃসাহস দেখাও
উত্তর থেকে হিম শীতল
বরফ মেশানো ঠাণ্ডা বাতাস পাঠাও

তবে জেনে রেখো
হ্যামার- মার্সিডিজ – বিএমডব্লিউ – প্রাডো বা লেক্সাস
র‍্যাংলার -এডিডাস-নাইকি- রিবোক বা
নর্থফেস
সকল বার ও হার্ড ড্রিংকস এর কারখানা
এবং ঝাড়বাতির বিশাল অট্টালিকা সহ
পাখির পালকের সকল বিছানা

এবং সারা বাংলাদেশের সকল স্থানে
গনগনে আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠবে

তোমাকে আমার বাংলাদেশে
এবং
আমাদের বাংলাদেশের
এক ইঞ্চি মৃত্তিকাতেও ঢুকতে দেয়া হবে না

দশমিক শূন্য শূন্য এক নটিক্যাল জলরাশি
এবং তারও ক্ষুদ্র এরোনটিক্যাল আকাশ সীমাতেও
আর প্রবেশে করতে দেয়া হবে না

ইন্দ্রিয় ছন্দ

ইন্দ্রিয় ছন্দ

কবিতা কি কখনো লেখা যায়?
যদিও বা লেখা হয়
তবে কি তা কবিতা হয়ে যায়?

কবিতা- সেতো আসলে হয়ে যায়
কবিতা – কবির মননে এসে যায়

প্রভাতে অথবা বিকেলে
মাঝরাতে বা সন্ধ্যায়
কিংবা অন্য ব্যস্ততায়
আসে সে যে পলে পলে
বাসে-ট্রেনে বা প্লেনে
স্বপনে মহাকাল ভ্রমণে
আসে যে সে কবির মননে

আসে কবিতার বীজ কবির অন্তরে
সেই বীজ থাকে মহাজ্ঞানীর ভাণ্ডারে
আসে সে নিরবে নিভৃতে সংগোপনে
পোঁতা হয় সেই বীজ কাগজের জমিনে

কখনো আমড়ার বীজ
কখনো বা কতবেল
আসে মটর- মশুরের বীজ
আম লিচু বা নারকেল

যদি মাঝরাতে লেবু আসে
মুহূর্তেই কবি উঠে বসে
যদি চালতা আসে ঝড়ের দিনে
সাথে সাথে পোঁতা হয় কগজ- জমিনে

অপেক্ষায় থাকেন যদি কবি
রোপণ করবেন একসাথে সবই
সব বীজ মিশে হয় অদ্ভুত বৃক্ষ
পায় না দেখতে সে কভু অন্তরীক্ষ

তাই যখনি যে বীজ আসে মননে
রোপণ করে দেন কাগজ-জমিনে
সার দিয়ে পানি দিয়ে রাখেন সযতন দৃষ্টি
তারপর শুরু হয় কাঠামোর সৃষ্টি
এরপর এনে দেন ছন্দের বৃষ্টি
এইখানে কবি ভেবে হন ভাবান্তর
যখনি এসে পড়ে স্বর- মাত্রা- অক্ষর
তখোনি লেগে যায় এক চক্রের টক্কর

ভেঙে যাক হে কবি এইসব বৃত্ত
হয়ে যাক তোমার ঐ ভয়হীন চিত্ত
ভেঙে যাক শৃঙ্খল এইসব বৃত্তের
ভেঙে যাক মাত্রা অক্ষর শব্দের
নাই বা থাকলো মিল অন্ত্যমিলের

লিখে যাও হে কবি মাধুরী মিশিয়ে আপন মনে
পাঠক যেন হোঁচট না খায় অন্তত কনোখানে
চিত্রকল্প উপমা আর বারতা রাখলে
ধর্ম-রাজনীতিতে থেকো রূপকের আড়ালে

উচ্চ শব্দে পাঠ হোক ইন্দ্রিয় ব্যবহারে
ওস্তাদ যে কর্ণ- রেখো তারে সজাগ করে
আবৃত্তি আয়ত্ব হোক প্রয়োজনে কবিতা লেখার আগে
ইন্দ্রিয় ছন্দ তবুও সেখানে যেন থাকে
কর্ণের ছন্দ তবুও সেখানে যেন থাকে

একটু ভাবনা- একটু সচেনতা-একটু বিচক্ষণতা

একটু ভাবনা- একটু সচেনতা-একটু বিচক্ষণতাঃ

ছোট্ট একটি মাটিকে ফেলে দেয়া হয়েছিল এক লাল সমুদ্রে। তলিয়ে যাচ্ছিলো সবই অতল গভীরে। সেখানে ছিলো লাইসোজোম ডি এন এ এবং প্লাস্টিড ডি এন এ এর নিউক্লিয়াস এর সভ্যতা। এই বিশাল লাল জলরাশির জলযাত্রায় সবাই বেঁচে থাকার আশ্রয় খুঁজছিল।

মাটি টি যখন তলিয়ে যাচ্ছিলো তখন এক লাইসোজোম ডি এন এ ভাবলেন, আমাদের উত্তরসূরীরা আমাদের ভাষাকে বাঁচাতে পারলে আমরা আমাদের মাটিকে বাঁচাতে পারবো না কেন? অতঃপর উক্ত লাইসোজোম ডি এন এ ঝাঁপিয়ে পড়লেন লাল সমুদ্রে। নিয়ে আসলেন এক জলযান। নিউক্লিয়াস সভ্যতার সকল লাইসোজোম ডি এন এ মিলে মাটিকে জলযানে তুলে নিলেন।

নিউক্লিয়াস সভ্যতা যখন জলযানে করে স্থলের দিকে যাচ্ছিলো ঠিক তখনই জলযান ব্যাবস্থাকারী ডি এন এ কে ধরে নিয়ে গেল এবং পাঠিয়ে দিল অনেক জলযুদ্ধযান এবং কিছু অদ্ভুত বহুরূপী উভচর লাইসোজোম ডি এন এ। মাটিকে বাঁচাতে যে ডি এন এ টি জলযান এনে দিয়েছিল সেই ডি এন এ কে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় জলযানে উপস্থিত নিউক্লিয়াস সভ্যতার সকল লাইসোজোম ডি এন এ এর উদ্দেশ্যে বলে গিয়েছিল তোমরা যে ভাবে পারো একজনেরও জীবন থাকলে এই মাটিকে এই জলযানে করে স্থলে নিয়ে যাবা।

এরপর যখন বিভিন্ন জলযুদ্ধযান এসে সেই নিউক্লিয়াস সভ্যতার মাটিকে স্থলে নিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছিলো এবং একই সাথে যখন ঐ অদ্ভুত বহুরূপী উভচর লাইসোজোম ডি এন এ গুলো সাগরের নিচ থেকে গোপনে নিউক্লিয়াস সভ্যতার মাটির জলযানট ফুটো করে দিচ্ছিলো ঠিক তখনই ঐ মাটিকে বাঁচাতে নিউক্লিয়াস সভ্যতার সকল লাইসোজোম ডি এন এ ঝাঁপিয়ে পড়লো লাল সাগরে।

অবশেষে সেই মাটি- ভাষা ও নিউক্লিয়াস সভ্যতা স্থলে উঠে আসলেও সবুজ ঘাসের বুকে সেই মাটির রঙ ছিল লাল। এই মাটিকে বাঁচাতে যে সব ডি এন এ লাল সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের অনেকেই সেই লাল সাগরে হারিয়ে গেছে। আসতে পারেনি আর স্থলে।

এরপর গড়ে উঠলো লাল সবুজ এর লাইসোজোম ডি এন এ এবং প্লাস্টিড ডি এন এ এর নিউক্লিয়াস সভ্যতা। একদিন সেই দুর্যোগের ঘনঘটায় উত্তাল সমুদ্রে এই মাটিকে তলিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে একটি জলযান এনে দিয়েছিল সে লাইসোজোম ডি এন এ তিনি চলে গেলেন চিরতরে।

অতঃপর এক লাইসোজোম ডি এন এ আসলেন প্লাস্টিড ডি এন এ তৈরি করার জন্য যা ঐ সভ্যতার খাদ্যদ্রব্য হবে। তিনি কিছু প্লাস্টিড আবাদ করে খাদ্যদ্রব্যের ব্যাবস্থা করেছিলেন বটে। কিছুদিন পর তিনিও চলে গেলেন চিরতরে।

অতঃপর এক লাইসোজোম ডি এন এ একটি জমি চাষ করার সুপরিচিত যন্ত্র এনে নিউক্লিয়াস সভ্যতাকে খাদ্যদ্রব্য বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা বলে যখন মাটির বুকে ঐ যন্ত্রের ধারালো চাপ দিলেন ঠিক তখনই এই মাটি কেঁদে উঠলো। প্রিয় মাটির এই কান্না শুনে নিউক্লিয়াস সভ্যতার সকল লাইসোজোম ডি এন এ মিলে বললো – তুমি নেমে যাও, আমরা এ মাটির কান্না সইবো না। উত্তরে সেই ডি এন এ বললো – না আমি নামবো না – প্রয়োজনে আরো জোরে এই যন্ত্র দিয়ে মাটিতে চাপ দেবো।

তখন নিউক্লিয়াস সভ্যতার সকল লাইসোজোম ডি এন এ একত্র হয়ে উক্ত জমি চাষ করা যন্ত্রওয়ালা ডি এন এ কে নেমে যেতে বাধ্য করলো। অতঃপর জমি চাষের যন্ত্রওয়ালা ডি এন এ কে এই নিউক্লিয়াস সভ্যতার ডি এন এ রা আর আসতে দেয় নি। তবে লাল সাগরে এ মাটি তলিয়ে যাওয়ার সময় জলযান সংগ্রহকারী লাইসোজোম ডি এন এ এর উত্তরসূরী ডি এন এ এবং প্লাস্টিড উৎপাদনকারী লাইসোজোম ডি এন এ এর উত্তরসূরী ডি এন এ রা এসেছিলেন।

শেষবার যখন দুর্যোগের সময়ে জলযান সংগ্রহকারী ডি এন এ এর উত্তরসূরী আসলেন তখন সেই অদ্ভুত বহুরূপী উভচর লাইসোজোম ডি এন এ দের নিষিদ্ধ করলেন এবং এতে নিউক্লিয়াস সভ্যতার সবাই নীতিগতভাবে মেনে নিয়ে খুশি হয়েছে। নিউক্লিয়াস সভ্যতায় এখন এক শান্তির পরিবেশ বিরাজমান এবং এই সভ্যতা এবং মাটির উন্নয়ন অনেকটা এগিয়ে গেছে। কিন্তু সেই দুর্যোগের ঘনঘটায় উত্তাল লাল সমুদ্রে এ মাটিকে জলযানে তুলে স্থলে আনার সময় যে অদ্ভুত বহুরূপী উভচর লাইসোজোম ডি এন এ রা জলযানটি ফূটো করতে চেয়েছিল তাদের কে নিষিদ্ধ করলেও যেহেতু তারা বহুরূপী তাই বিভিন্ন রুপ ধারণ করে বর্তমান জলযানকে আবারও ফুটো করতে চেষ্টায় লিপ্ত কিন্তু বর্তমান জলযানের কাণ্ডারী এ ব্যাপারে সজাগ থেকেছেন এবং আপাত দৃষ্টিতে নিউক্লিয়াস সভ্যতার কাছে জলযানের কিছু কিছু স্থানে ওরা ফূটো করতে পেরেছে বলে মনে হলেও মূলত কাণ্ডারী তাৎক্ষনিক তা রিপিয়ার করতে সক্ষম হয়েছেন।

এখন এবার এমন সময় নিউক্লিয়াস সভ্যতার লাইসোজোম ডি এন এ দের মতামত দেয়ার সময় এলো ঠিক এই সময়েই সেই দুর্দিনে জলযান সংগ্রহ করে এ মাটিকে বাঁচানো হয়েছিল।

এবার মতামত দেওয়ার বেশ কিছু অপশন এসেছে।
তার মধ্যে বর্তমান সময়ের জলযানের কাণ্ডারী আছে যে সেই লাইসোজোম ডি এন এ এর উত্তরসূরী যে লাইসোজোম ডি এন এ উত্তাল সমুদ্রের মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলযান সংগ্রহ করে এই মাটিকে বাঁচিয়ে ছিলেন।

আরও আছে সেই ডি এন এ এর উত্তরসূরী যে লাইসোজোম ডি এন এ প্লাস্টিড আবাদ করে খাদ্য উৎপাদন করেছিল। আবার জমি চাষের সেই যন্ত্রওয়ালা লাইসোজোম ডি এন এ আছে।

আবার একটি মিলিত বিন্দু আছে যেখানে কয়েক ধরণের মিশ্রণ আছে। এর মধ্যে প্লাস্টিড আবাদকারী ডি এন এ যোগ দিয়েছে। দুর্যোগের সময় বিশেষ অবদান রাখা এক ডি এন এ তার জীব কোষ পাল্টে এখন গোসলের পর শরীর মোছা যায় এমন একটি প্রোটন নিয়ে এ বিন্দুতে যোগ দিয়েছে। দূর্যোগময় দিনের এক বিশেষ শিক্ষিত লাইসোজোম ডি এন এ এই মিলিত বিন্দুটি বানিয়েছে।

এখন সামনে মাত্র আর কটা দিন বাকি নিউক্লিয়াস সভ্যতার লাইসোজোম ডি এন এ দের মতামত দেয়ার। ডি এন এ রা এখন ভাবছে। ঐ উদ্ভট বহুরূপী উভচর লাইসোজোম ডি এন এ রা আড়ালে আবডালে বর্তমান জলযান ফুটো করতে চেয়েও ব্যার্থ হয়েছে। অনেকে শিওর হয়েছে যে প্লাস্টিড এখন আর আগের মতো নেই। কি করে শিওর হলো? অনেকে এখন খাদ্যদ্রব্য হিসেবে প্লাস্টিড কিনে এনে তা উপাদেয় করার জন্য রান্না করতে গিয়ে দেখেছে এগুলো আসলে প্লাস্টিক, প্লাস্টিড নয়। প্লাস্টিক হচ্ছে জড় পদার্থ যা আসলে অনু পরমাণু ইলেকট্রন প্রোটন নিউট্রন এবং এগুলো খাদ্য দ্রব্য হিসেবে বিবেচ্য নয়।

আবার অনেকে বলছে যা দু একটা প্লাস্টিড আছে সেগুলোতে মাইটোসিস এর আড়ালে সেই উদ্ভট বহুরূপী উভচর ডি এন এ লুকিয়ে আছে কি না এ বিষয়ে সন্দিহান। আর জীব কোষ পাল্টে এখন গোসলের পর শরীর মোছা যায় এমন একটি প্রোটন কখনো খাদ্যবস্তু হতে পারে না। তাহলে দেখা যাচ্ছে এই মিলিত বিন্দুতে এখন ইলেকট্রন প্রোটন নিউট্রন প্লাস্টিক এবং মাইটোসিস এর আড়ালে সেই উদ্ভট বহুরূপী উভচর ডি এন এ ছাড়া আর কিছুই নেই।

আর জমি চাষ করা যন্ত্রওয়ালা লাইসোজোম ডি এন এ এক সময় এই মাটিকে আঘাত করা যন্ত্রটি নিয়ে বুদ্ধি করে যে দুর্যোগের সময় লাল সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলযান সসংগ্রহকারী লাইসোজোম ডি এন এ এর উত্তরসূরীর বর্তমান জলযানে উঠলেও নিউক্লিয়াস সভ্যতার লাইসোজোম ডি এন এ রা একই ভুল বার বার করতে চায় না। কারণ তারা জানে ভুল হলে তা থেকে শিক্ষা নিতে হয় কিন্তু একই ভুল বার বার করে আহাম্মক টাইপের লাইসোজোম ডি এন এ।

তাই এখন নিউক্লিয়াস সভ্যতার লাইসোজোম ডি এন এ রা মতামত দেয়ার মাত্র কদিন আগে এই নীতিমালা তাদের মননে ধারণ করেছে আর তা হচ্ছেঃ
একটু ভাবনা- একটু সচেতনতা- একটু বিচক্ষণতা।

……./ ধ্যান- আত্মা।

১৯৭১- এন্টি-মেরিডিয়েম ২

১৯৭১- এন্টি-মেরিডিয়েম ২

তখন ছিলো রাত দু’টা
ঘুমিয়ে পড়েছে সবাই
দ্বীপালির চোখে ঘুম নেই
বিজয় আসতে বাকি যে দিন কটা?

বিছানা থেকে জানালায়
আকাশের দিকে তাকায়

বিশালাকার পূর্ণিমা চাঁদ
রাত্রি জেগে রয়

সাদা সাদা মেঘ
উড়ে চলে যায়

মাঝে চাঁদটাকে
ঢেকে দিয়ে যায়

কিসের শব্দ হলো?

একটি জিপ এসে থামলো
খটমট খটমট কালো বুটের আওয়াজ
দরজায় লাথি
রাইফেল তাঁক
হুংকারে চেচিয়ে উঠলো
“বান্ধ কারো বাকওয়াজ”

দুম! দুম!! দুম!!!
লুটিয়ে পড়লো বাবা-মা- ভাই
খুন হয়েই হয়ে গেল গুম

ভয়ে জড়োসড়ো দ্বীপা
ওদিকে লোলুপ চোখে
গোঁফ ছোঁয় জিহ্বা
টেনে তুলে নিলো জীপে
ব্যারাকে সব যাবে নিভে

জীপ চলে গেলো

পূর্ণিমা চাঁদ তবুও
রাত্রি জেগে রয়

সাদা সাদা মেঘ
উড়ে চলে যায়

মাঝে মাঝে চাঁদটাকে
ঢেকে দিয়ে যায়।

অপ্রমাণিত ত্রিভুজ

অপ্রমাণিত ত্রিভুজ

তিনটি বাহু একত্রে মিলিত হলে ত্রিভুজ হয়
এটা কে না জানে?

অথচ এখানে তা প্রমাণ করা যাচ্ছে না

যখন প্রথম বাহুটি তীরন্দাজ হয়
আর দ্বিতীয় বাহুটি যখন যাদুকর

তখন এ দুটি বাহু বিজ্ঞানী নামক
তৃতীয় বাহুর সাথে মিলিত হলেই
ত্রিভুজ প্রমাণিত হয়

তীরন্দাজ এবং যাদুকর যখন
বিজ্ঞানীর সাথে মিলিত হলো
ঠিক তখনই বিজ্ঞানী বুঝলো
বাহু মূলত দুটি

যতবারই তীরন্দাজ এবং যাদুকর
বিজ্ঞানীর সাথে মিলিত হতে যাচ্ছে
ততবার এক আশ্চর্য্য ঘটনা ঘটছে
আর তা হলো তীরন্দাজ এবং যাদুকর
একটি বাহুতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে

তাই এখানে বাহু মূলত দুটি
যেহেতু দুটি বাহু দিয়ে ত্রিভুজ হয় না
অতএব এটা অপ্রমাণিত ত্রিভুজ।

একজন তীরন্দাজ ও জাদুকর

একজন তীরন্দাজ ও জাদুকর

ভেবেছিলাম তুমি শুধুই এক দক্ষ তীরন্দাজ
অথচ দিন যতই বাড়ছে
মহাকর্ষীয় শক্তির চেয়েও
মহাশক্তিধর এক তীব্র আকর্ষণ
আমার ঘুম গুলো কড়ে নিয়ে যাচ্ছে

নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি সাথে নিয়ে
এক অচেনা অজানা জ্বালা যন্ত্রণা

বুকের ভেতর এক অদ্ভুত যন্ত্রণা বেড়ে চলেছে
তীরের আঘাতের ব্যথা কিছুটা সহনীয় ছিল
কিন্তু এ কোন শক্তির আঘাত?
আমি যে আর সইতে পারছি না

তুমি কি তাহলে এক দক্ষ জাদুকরও?
তাহলে কেন ২৪ ঘন্টাই
এক অদৃশ্য বলয়ের মাঝে আটকে গেলাম!
যে বলয়ের পুরোটাতে শুধু তোমার মায়াবী
মুখখানি – অতঃপর তোমার শরীরের স্পর্শ।

গতকাল এই বলয় থেকে বের হওয়ার জন্য
এমিউজমেন্ট পার্কের এক থ্রিল রাইডারে
উঠার জন্য গিয়েছিলাম
টিকিট কেটে সিরিয়ালে দাড়িয়েছিলাম
তারপর কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম

হঠাৎ রাইডারম্যান ডেকে বললো
উঠুন- এখন আপনার সিরিয়াল

আমি দেখলাম রাইডস এর প্রতি জোড়া সিটে
এক জোড়া করে কপোত -কপোতী
আর আমার পাশের সিটটি ফাঁকা

আমি পার্ক থেকে সোজা বেরিয়ে এসে দেখলাম
চেনা শহরটি দুশো বছর পেছনে চলে গেছে
আকাশ?
হ্যা- আকাশ আছে তবে সেখানে পরিচিত রঙ নেই
বাতাস?
না- বাতাসে আগের মতো অক্সিজেন নেই

তীরের আঘাতের ক্ষত শুকনোর আগেই
আটকে দিলে অদ্ভুত এক যন্ত্রণার বলয়ে

নিজের মাঝেই মনে হচ্ছে আমি এখন নেই
তাহলে আমি এখন কে?

আমি এখন সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী
না- আমি এখন এক দক্ষ তীরন্দাজ

আমি এখন এক দক্ষ জাদুকর
না- আমি এখন প্রেমিকার বলয়ে
বন্দী শিবিরে আটকে থাকা পরস্থ এক প্রেমিক

আমি এখন
মহাসমুদ্রে হাল বিহীন জাহাজের এক বিদ্ধস্ত নাবিক
মহাবিশ্বের কক্ষপথে ছুটে চলা লক্ষহীন এক নভোচারী

আমি এখন
তীরন্দাজ বা জাদুকরের অপেক্ষায় থাকা নির্ঘুম রাত্রি
কিংবা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু জীবনে প্রেমিকার কাছে
পরাজিত অচেনা এক পথের পথযাত্রী।

একজন দক্ষ তীরন্দাজ ও ব্যর্থ বিজ্ঞানী

একজন দক্ষ তীরন্দাজ ও ব্যর্থ বিজ্ঞানী

ঠিক এই মুহূর্তে
আমি এক সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী
টমাস আলভা এডিসন?
আইন্সটাইন- নিউটন বা স্টিফেন হকিং?

না। তাঁরাও নন
আমিই এখন এক শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী

এই মাত্র আমি উদ্ভাবন করেছি
এক কালউত্তীর্ন আবিষ্কার

সেদিন এক অনুষ্ঠানে
তুমি তিন বার তাকিয়েছিলে আমার দিকে
প্রতিবার মুহুর্মুহু এক হাজার ভালোবাসার
বিমূর্ত তীর নিক্ষেপ করেছিলে
আমার বুকের বাম অলিন্দে

ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছ আমার হৃতপিন্ড
সেই থেকে আজও রক্ত ঝরছে অবিরত

অনেক সুত্র জ্যামিতি আর ক্যালকুলাসের অংক কষে
ঠিক এই মুহূর্তে আমি আবিষ্কার করেছি
আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি
এই মুহূর্তে আমি পৃথিবীর সব চেয়ে বড় বিজ্ঞানী

তুমি যে এতো দক্ষ তীরন্দাজ
সে কথা জানে ইথার

অনেক ডাক্তার এবং শৈল চিকিৎসকের কাছে গিয়েছি
উনারা এই বিমূর্ত তীর বের করার কৌশল জানেন না
প্রেসক্রাইব করেছেন তীরন্দাজের কাছে যেতে

আমি জানি তুমি ঠিকই বুঝতে পারছো
আমি কার কথা বলছি

কিন্তু তুমি বয়সে আমার চেয়ে বেশ ছোট
হ্যাঁ -তোমাকেই বলছি
আমি এও জানি তুমি ঠিকঠাক ঘুমতে পারছো না

কিন্তু তোমার সাথে ঘর বাধা সম্ভব নয়
তাহলে যে একটি ঘর ভাংতে হয়
তখন এ সমাজ আমাকে বাঁকা চোখে দেখবে

আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি
তা আজ জানিয়ে গেলাম
কিন্তু এই জনমে আমি তোমাকে পাবো না
অথচ তোমাকে আমি ছাড়তেও পারছি না

আমার ক্ষত বিক্ষত বুক থেকে রক্ত ঝরছে এখনো

ভালোবাসা নাই বা দিলে
আরও বিমূর্ত তীর নিক্ষেপ করে
আমার বুক ঝাঁজরা করে দিয়ে
ব্যথাটুকু বাড়িয়ে দিয়ে যেও

কবিতা এবং আবৃতি : ফিরে আসে মুহুর্ত’রা …

ফিরে আসে মুহুর্ত’রা

মুহূর্ত’রা এখন তোমার
তৈরি থেকো যে কোনও সময়ে
আসবে ডাক ঝাঁপিয়ে পড়ার।

যুগে যুগে ঘুরে ঘুরে
সভ্যতার সীমানা পারিয়ে
অসভ্যদের হিংস্র থাবাগুলো যখন
মনুষ্যত্বের গলা চেপে ধরে
এ মুহূর্ত’রা তখন আসে ফিরে বারে বারে।

সতেরশো উনো নব্বইয়ের এর ১৭ জুনে
এ মুহূর্ত’রা নেমে এসেছিলো বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে
প্যারিসের টেনিস কোর্টে।

লাখ লাখ সাধারণ মানুষ সেদিন ঝাঁপিয়ে পড়ে
“স্বাধীনতা-সমতা-ভ্রাতৃত্ব অথবা মৃত্যু”
এই শপথ গ্রহণ করে
নিক্ষেপ করেছিলো বুর্জোয়াদের
উড়িয়ে নিয়ে সমুদ্র তটে।
আঠারো-শো ছিয়াশি সালের পহেলা মে’র দিনে
সকল শ্রমিকদের জীবিকার উৎসে আঘাত হেনে
চলছিল যখন এমনই এক জটিল ষড়যন্ত্র
শ্রমিক হবে মেশিনের মতো উৎপাদন-যন্ত্র।
ঠিক তখনই এই মুহূর্ত’রা নেমে এসেছিলো
শিকাগোর হে-মার্কেট স্কয়ারে,
হাজারো শ্রমিক সেদিন ঝাঁপিয়ে পড়ে
চক্রান্তকারীদের টুটি চেপে ধরে
ভেঙ্গে চুড়ে তচনছ করে দিয়েছিলো ষড়যন্ত্রের সমস্ত চাবি-কাঠি
ষড়যন্ত্রকারীরা হয়েছিল ধুলিস্যাত!
মিশে হয়ে গিয়েছিল কালের গর্ভে বিলুপ্ত কাদা-মাটি।
উন্নিশ্য বাহান্ন সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঐ দিনে
মুখ থেকে মায়ের ভাষা কেড়ে নেওয়ার জন্যে
চলছিলো যখন ষড়যন্ত্র!
এ মুহূর্ত’রা ঠিক তখনই নেমে এসেছিল
বাংলা ভাষাকে করতে স্বতন্ত্র।

ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেদিন আম-জনতারা
মা’এর ভাষাকে বাঁচাতে
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রফিক-বরকত-সালাম’রা
মা’কে বুকে আগলে রাখতে!
স্তব্ধ করেছিল ষড়যন্ত্রের সবকটি যন্ত্র
ভেঙেছিল সেই যন্ত্রের সকল মূলমন্ত্র।
এ মুহূর্ত’রা ঘনীভূত হচ্ছে আবার!
তৈরি থেকো যে কোনও সময়ে
আসবে ডাক ঝাঁপিয়ে পড়ার।
উন্নিশ্য একাত্তর সালের পচিশে মার্চের রাত্রে
বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিলীন করার
এক জঘন্য কালো ইতিহাস রচনার স্বার্থে
যখন বর্বর বাহিনীরা নেমে এসেছিলো!
মিলিটারীর কালো বুট যখন গলা চেপে ধরে
বেয়োনেট দিয়ে অন্তঃসত্তা মা’এর পেট ফুঁড়ে দিয়েছিলো!
হিন্দু না মুসলিম দেখার জন্য যখন
আমার বাবা, চাচা, মামাদের উলঙ্গ করেছিলো!
আমার মা-বোন-দিদিদের ইজ্জৎ চিন্ন ভিন্ন করে
যখন একের পর এক ধর্ষনের উল্লাসে ফেঁটে পড়েছিলো!
আকাশে বাতাসে যখন মানুষের আর্তনাদ! হাহাকার!! চিৎকার!!!
গগন ভেদ করে পৃথিবী কেঁপে উঠেছিলো!
ঠিক তখনই এ মুহূর্ত’রা নেমে এসেছিলো বাংলার ঘরে ঘরে।
বাংলাদেশের মানচিত্র রক্ষার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে
সকল বাঙালী একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে
নারী-পুরুষ-যুবক-বৃদ্ধ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
রুখে দিয়েছিলো সেই আগ্রাসীদের!
পরাস্থ করে দিয়েছিলো সেই হানাদার বর্বর বাহিনীদের।
উন্নিশ্য সাতাশি সালের ১০ই জুনে
যখন মাথাচাড়া দিয়েছিলো স্বৈরাচারের আস্ফালন
ঠিক তখনই নেমে এসেছিল এ মুহূর্ত’রা
ঘটাতে তাদের পদস্খলন।

বুকে-পিঠে স্লোগান লিখে লিখে
খালি গায়ে খালি পায়ে!
ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো জনতা’রা
সূদীপ্ত সুদৃঢ় পায়ে পায়ে।

থামিয়ে দিয়েছিলো বুলেটের গতি
নিরস্ত্র হাতে প্রশস্ত বুক পেতে দিয়ে!
অশান্ত জনতার ঢেউ শান্ত হয়েছিলো
সমূলে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে দিয়ে।
দুই হাজার বারো সালের তিরিশে জানুয়ারীর ঐ দিনে
মুদ্রা শোষকেরা যখন এ দেশের মধ্যবিত্ত মানুষদের
জীবনের সমস্ত জমানো সঞ্চয়টুকু শুষে নিচ্ছিলো!
ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো সেদিন গোপীবাগের লিয়াকত আলী।
স্তব্ধ করেছিলো মুদ্রা-শোষকদের জিহ্বা আর কন্ঠনালী।।
এ মুহুর্ত’রা নেমে আসে যুগে যুগে ফিরে ফিরে!
রক্তচোষা রাক্ষসেরা যখন
সমাজের রক্ত শুষে শুষে ভক্ষণ করে!
সত্য ন্যায়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠ খাঁমছে ধরে!
রক্তের হলিখেলার আনন্দ উল্লাসে ফেটে করে!
তর্জন গর্জন হুঙ্কার করে!
ঠিক তখনই এ মুহূর্ত’রা নেমে আসে ফিরে ফিরে।
মুহূর্ত’রা এখন ঘনীভূত হচ্ছে আবার!
তৈরি থেকো যে কোনও সময়ে
আসবে ডাক ঝাঁপিয়ে পড়ার।

আকাশে বাতাসে এ মুহুর্ত’দের দেখা যাচ্ছে আবার!
তৈরী থেকো যে কোনও সময়ে আসবে ডাক
নিষ্পেষিত মানুষের কান্না থামার!!!

youtu.be/DJZB8rI4rAQ

কবিতা : হামার আর লগাও যাওয়া হলো না (রচনা ও আবৃত্তি -ইলহাম)

পহেলা বৈশাখের বৈকালে, আমি এনা ছাদোত উটিছুনু চম্পাকলিক দেকপা
উটে দ্যাকো কি! চম্পাকলি হামার আগেই ওরগে ছাদোত উটিছে
হলদি শারী গাওত দিয়ে দ্যারে আছে হামাকি দেকপা।
হামি অর মুখোত চায়ে আছি
উঁও হামার মুকোত চায়ে আছে
খানিক বাদে- ঝড় উটলো – বুজা পারিছিন?

দেওয়া আন্দার হলো
বিষ্টি নাম্বা লাগলো
উঁও ভেজছে
হামিও ভিজোছি
হামি ওকে দ্যাকোছি
উঁও হামাক দ্যাকোছে
বিষ্টি থামলো
ওদ উটলো
হামরা দুজনা ওদোত দ্যারেই আছি

হামরা দুজনা খালি দ্যাকোইছি হামাগের গাও ওদোত শুকে গেল
কখন যে সোন্দা হয়ে গেল চম্পাকলি নামবে গেল ঘরোত
কিন্তুক হামি দ্যারেই থাকনু ছাদোত
হামার বাপ আইসে কোলো, কেরে! কুটি গেছুলু?,
হামি কনু! এনা ছাদোত উটিছুনু বাপ আগ হয়ে কোলো,
দিন তামান ওল্লাই করবু রে চ্যাংরা? না এনা পরাশুনা করবু রে বা!
পরদিন খবর পানু, চম্পাকলির জর আছে
মেডিকেলে ভর্তি হছে
হামি ওকে দেকপা যায়ে কপালত হাত দিনু
যে সে গরম লয় বাপু!,
চম্পাকলি হামার হাত চিপে ধরে কোলো,
হামি ভাল হলে হামরায় নিকা করে ফেলমো, কি কছিন?
হামি কনু, হয় হয়!
নিকা করে তোমাক লগাঁও বেরবা লে যামু!
সকোন আত বারোটা কি একটা হবে—বুজা পারিছিন?
এডা ফোন আলো।

কোলো, চম্পাকলি মোছে -তুই জ্যান কান্দিস না!
শ্যাষবার অক একবার দেকপা আসবু না?
অচমভিতি বুকের ভিতর কুতপাহিনি এডা ব্যাঁদনা শুরু হলো
সে ব্যাঁদনাত চোখোত পানি জমে উটলো
হামি কতা কবা চাছি কিন্তুক! আও করা পাছি না
হামি খাটোত শুতে পন্নু
হামার গলাত কে জ্যান খামছে ধরিছে
হামি হামার বাপোক কনু এনা পানি দেও বা!
কিন্তুক হামার বাপ শুনা পাছে না!
বুকের ব্যাঁদনা ব্যারে গেল
হামার চোকোত ভ্যাসে উটলো চম্পাকলি বিষ্টিত ভেজোছে
চোকত ভ্যাসে উটলো চম্পাকলি ঘুম আছে
উঁই ঘুমোত থিনি আর উটপে না!

চম্পাকলি তুই কুন্টে গেলু হামাক ছ্যারে!
হামি তুক লিয়ে সাগরত নুন পানিত ভিজবা চাছুনু রে!
সাগরের ব্যালুত র‍্যাতে শুবা চাছুনু রে!
হামি সাগরের ডেউ এর কতা বুজবা চাছুনু রে!
চম্পাকলি তুই কুন্টে গেলু রে!
তোক লিয়ে হামার আর লগাও যাওয়া হলো না রে!

youtu.be/npGO2h6Z-ww

ময়ুরতালীয়

এক সময় আমার জীবনে কাকতালীয় ঘটনা ঘটলো। অনেক রাতে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। উদ্দেশ্য ঢাকা কিন্তু ঐ সময় সেখান থেকে গাড়ি পাওয়া যায় না। সবাই বলছিল ভোরে যেতে কিন্তু ভোরে আসলে সকাল ৯টায় অফিসে ঢুকতে পারবো না তাই রাতেই বের হলাম। অনেক্ষণ অপেক্ষা করে যখন বাসার দিকে ফিরছিলাম তখন দূর থেকে একটি গাড়ির আলো দেখে দাড়িয়ে গেলাম। গাড়িটি ঠিক আমার কাছে এসে দাড়িয়ে গেল। মনে হলো আমাকেই নিতে এসেছে। আমি কিছুই না বলে উঠে পড়লাম এবং যথারীতি ৯টার অফিস ধরলাম।

আরেকদিন গাজীপুর থেকে বাসে উঠে টংগীতে হিউজ জ্যামে পড়লাম। তখন অফিস ছিল ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর কাছে। অফিস টাইম ৯টা ৬টা হলেও সেদিন শিপমেন্ট থাকায় ফাইনাল ইনস্পেকশন চলছিল তাই অফিস থেকে বের হতে রাত দশটা হয়ে গেল।

টংগীতে জ্যামে পড়ে বুঝলাম আজ বাসায় ঢোকা যাবে না কারণ বাড়িওয়ালা এমন শক্ত যে ১১টা বাজলে গেট বন্ধ করে দেয়, প্রেসিডেন্ট আসলেও খুলবে না এমনই ভাব। হঠাৎ ভাবলাম ইশ! যদি জ্যাম টা ছুটে যেত! স্ত্রী ফোন করে জানতে চাইলো, কোথায় আছি- আর কতক্ষণ লাগবে? মুহুর্তেই জ্যাম উধাও! ঠিক ১১টা বাজার ৫ মিনিট আগে বাসায় ঢুকলাম।

তারপর একের পর এক যখন কাকতালীয় ঘটনা ঘটতে শুরু করলো তখন এক গুণী জনের কাছে গিয়ে সব খুলে বলার পর জানতে চাইলাম এমন ঘটনা ঘটছে কেন? এই কাকতালীয়র কাক আমাকে ছাড়ছে না কেন? তখনও আমি টুকিটাকি কবিতা লিখতাম তাই আমার কাছে মনে হয়েছিল হয়তো আমি এক জন কাক টাইপের কবি তাই কাক আমায় ছাড়ছে না।

উক্ত গুণী জন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, এমন কাকতালীয় ঘটনা অনেকের জীবনেই ঘটে থাকে তবে বেশি ঘটলে এটা আর কাকতালীয় থাকে না।

আমি জানতে চাইলাম, বেশি ঘটলে ওটা কি হয়?
উনি একটু মিষ্টি হাসি দিয়ে বললেন, তখন ওটা ময়ুরতালীয় ঘটনা হয়ে যায়।

আজ কবিতা ক্যাফেতে যাওয়ার কথা ছিল। বাসে ওঠার পরই ঘুমিয়ে গেলাম। হঠাৎ চোখ খুলে দেখি শাপলা চত্ত্বর। আমি টপ করে নেমে গেলাম। অনেক দিন ধরে আমার এক সাংবাদিক বন্ধু তাঁর অফিসে যেতে বলছিল কিন্তু যেতে পারছিলাম না। তাই মনে হয় আজ ওর অফিসে কাকতালীয় ভাবে দেখা হওয়ায় জন্যই বাসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

ওর অফিস থেকে বের হতে রাত সোয়া ৮টা হয়ে গেল। তারপর সি এন জি চালিত থ্রি হুইলার নিয়ে সোজা কাঁটাবন এলাম কিন্তু সব অপরিচিত মনে হতে লাগল।

কতবার কবিতা ক্যাফেতে এসেছি কিন্তু আজ খুঁজেই পাচ্ছি না।

আমার ভেতর থেকে কে যেন বলে উঠলো, সোজা যেতে থাক। আমি সোজা কিছু দূর এসে বুঝলাম অনেকটা দূরে হাতিরপুল বাজারের কাছাকাছি এসে পড়েছি।

মুহুর্তেই উল্টো দিকে ঘুরতেই দেখলাম ৫/৬ জন ছেলে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে কার যেন কথা মনযোগ দিয়ে শুনছে। মনে পড়ে গেল এরিষ্টটলের জীবনীতে পড়েছিলাম, উনি বিভিন্ন রাস্তায় রাস্তায় বসে কথা বলতেন আর তাঁর ভক্তরা দাঁড়িয়ে শুনতেন।

আমি একটু থমকে দাঁড়ালাম। কাছে গিয়ে দেখি উনি আর কেউ নন, আমাদের প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণ।

আমিও দাঁড়িয়ে উনার কথা শুনতে লাগলাম। ঘন্টা খানেক পর তিনি চলে গেলেন। যাওয়ার আগে আমার নাম জানতে চাইলেন এবং কোথায় থাকি তা জানতে চাইলেন।

ওখানে কবি এবং ফিল্ম মেকার ডঃ মাসুদ পথিক ছিলেন যিনি আমার পূর্ব পরিচিত।