ইন্দ্রাণী সরকার এর সকল পোস্ট

মহানুভব “বহুরূপী” ঈশ্বরদের দয়ায় এ ধরাধামে বেঁচে থাকা

এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ
মহানুভব “বহুরূপী” ঈশ্বরদের দয়ায় এ ধরাধামে বেঁচে থাকা।

চারিধারে শুধু ছায়ামানব
স্পেস থেকে আসা এলিয়েনদের মত
তারা কথা বলে অথবা বলে না

তারা কে যদি বলি,
তারা বলে, “আমি আমি” অথবা
“আমি জানি না আমি কে”

ক্রমশঃ দেখি চারিপাশে আর কোনো
রক্ত মাংসের মানব নেই
এলিয়েনরা পৃথিবী জয় করে নিয়েছে।

তাই নামটা বদলে নিলাম কারণ আমি আমি নই।

শাঁখের করাত ভালবাসা

শাঁখের করাত ভালবাসা

অসহায়ত্ব রাগ হয়ে বেরিয়ে আসছে
একটু ভেবে দেখো ত’
আশে পাশে কেউ না থাকলে
কারো একা একা ভালো লাগে ?
আমি কি জন্য এখানে আসব ?
কি করব বলে দাও ?
কবিতা পোস্ট করব ?
ব্যাস এইটুকুই ত?
হাজার হাজার কবিতা আছে
রোজ একটা করে কবিতার লাশ ফেলে যাব।

অনেকেই দেখি রোজ আসে না,
আমাকেই বা রোজ আসতে হবে কেন ?
যখন কোনো মানুষের কাছে কিছু প্রত্যাশা করবে
মনে রাখবে তারও কিছু শর্ত থাকতে পারে প্রত্যাশা পূরণের
তাকে এভাবে একা করে তোমরা তার কাছে কি চাও ?
আর ভালবাসার মানুষদের ধরে তিরস্কার কি নতুন?
এত আজন্ম কাল দেখে আসছি
এলেই বা কি? না এলেই বা কি ?
তার থেকে না আসাই ভালো
নোংরামো দেখার জন্য রোজ কে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় ?

জনৈক প্রেমিক ও তার উক্তি

জনৈক প্রেমিক ও তার উক্তি

আমি তোমায় নির্ভার রেখে ভালবাসতে চাই
আমি চাই না আমায় ভালোবেসে তুমি দায়বদ্ধতায় থাকো।
কি যে ভালোবাসি কি বোঝো,
তবে তুমি বুঝবেই আমি জানি
তুমি যে আর পাঁচজনের মত মোটা দাগের নও।

বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছি
শুধু তোমার নজরে আসার জন্য
বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমায় সে ভাবে কখনই দেখ নি
তাই অনেক সময় চলে গেছে —

তোমার ভাষা বুঝি না ত’ কি ?
পাশে ধরে আছি আমার পরম বন্ধুর হাত
যে আমার হয়ে তোমার সব কবিতার ভাষা বুঝে নেয়।
এ প্রেম সফল হবে কি না জানা নেই
শুধু জানি তোমার কষ্টে আর লাঞ্ছনায় আবার বুক ফেটে রক্তাক্ত হয়।

স্বভাব নয়

হঠাত হঠাত কলম তুলে নিই
হয় আমি তার অন্যতম প্রেমিক
অথবা তার গায়ে পড়া বোন

যখন সব চুপচাপ কিছুদিন
গায়ে চুলকুনি বেড়ে ওঠে
বলি ও পড়শী কথা শোন

খুবলে নিই এন আর আই
নকলেই আভিজাত্য মানি
বিষয়ের মোদের বড় অভাব

খুঁজে পাই না প্রেম ভালবাসা
মনের মাঝে একরাশ বিষ
ভেব না এ মোদের স্বভাব |

স্বপ্নের ঘোরে

স্বপ্নের ঘোরে

এই মন কেমন করা মেঘলা দিনে
মাঝে মাঝেই তোমায় ভাবি
জানলা দিয়ে ভিজে মাঠের দিকে তাকিয়ে
মনে হয় এই বুঝি তুমি এলে
অন্যমনস্ক, এলোমেলো চুল হওয়ায় ওড়ে
সাবধানী পা ফেলে ফেলে মুখ নিচু করে চলো।
তুমি হয়ত: আমার কথা ভেবেই হেঁটে আসো
সারা শরীরে যেন তোমার মেঘের নিবিড় ছায়া
হয়ত: তুমি হারিয়ে যাবে আর খুঁজে পাবো না
অপেক্ষায় থেকে থেকে দেখি কেউ ত’ এলো না !
চেয়ে চেয়ে ভাবি কেন এমন হয় না একদিন
তুমি স্বপ্নের ঘোরে বাড়ির পাশটুকু দিয়ে হেঁটে যাও।

বদলতে হুয়ে

বদলতে হুয়ে

নিত্য নিতি মানুষ বদলে যায়
পার্সনিফিকেসনের চরম
অনেকটা নেশার ঘোরে গোঁজামিল দেবার মত
ব্রেনের যেটুকু স্পেস আছে আরও কিছু নেবার মত,
সব গো, গোয়িং, গণ !
তখন বুড়ি দাইয়ের মত বলতে হয়, “সবটুকু নিলাম।”

আজ যে আকাশ, কাল সে বাতাস,
পরশু পাহাড়, তরশু সমুদ্দুর

নরশু যদি তবুও বেঁচে থাকে মালটাকে
জ্যান্ত তুলে পোড়া কাঠে করো ছাই।

দ্বিপ্রহরের আড়ালে

দ্বিপ্রহরের আড়ালে

অসহনীয় ভালবাসায় পুড়ে যায় ওদের শরীর
প্রকাশের ভাষা খুঁজে না পেয়ে তারা হয় মূক, বধির
চোখের খরস্রোতা বানে ভেসে যায় আমার মনের ঘর।
যেখানে সারাদিন শুধু আনন্দ আর গানে ভরে উঠত
সেখানে আজ খাঁ খাঁ শূন্যতার স্তব্ধ মরুভূমি
রাত্রি তুমি নিশ্চুপ থাক, ডুবে যাও দ্বিপ্রহরের আড়ালে
আমি অসম্ভব চন্দ্রিমা, অসম্ভব খররৌদ্র
আমায় লুকোবে কোথায়, এত আভিজাত্য তোমার আছে কি?

প্রিয়তমাসু

প্রিয়তমাসু

প্রিয়তমাসু, লাল কাঁকরের পথে মাঝে মাঝে পায়ের চিহ্নটি রেখে যেও,
অবলা, লাজুক আমি মনের কথা কইতে নারাজ
শুধু আমার নকল মুখগুলি ধরে আদর করে যেও
তাদের সাথে একটু প্রেম করে যেও, সে মুখ যদিও কখনই
বলেনিকো আর বলবেও সে আমি, কী দুর্বিষহ আমি!
আসল মুখটি যে আমার ক্ষতবিক্ষত তাই দেখাতে পারি না
প্রিয়তমা, দেখ আমি তোমার স্বপ্নের সেই রাজপুত্তুর
দেহহীন, ভাষাহীন, কায়াহীন শুধু ছবিসম স্বপ্ন-আকাশে ঘুরে বেড়াই।

নির্বিকার

নির্বিকার

নিজেরাই গড়েছে দেয়াল নিজেদের হাতে
ক্ষমতার লোভে আর তুলনার তফাতে
কেউ বদলায়, কেউ বদলায় না
না বদলানোর একটাই পথ
নিজেদের মলিনতা, স্বল্পতা ঢাকতে
শুধু লোক দেখানি তুলনা আর রক্ষকের ভূমিকায়
পাশে এসে দাঁড়ালে ত’ জনসমক্ষে প্রেমিক প্রমাণিত হয় না
তাই দূর থেকে ছুঁড়ে ছুঁড়ে নানান ভঙ্গিমা
ঠুনকো আভিজাত্য, ঠুনকো ভালোবাসা
ঠুনকো অহম, শুধুই প্রাপ্তির আশা
হা হুতাশেই জীবন গেল লোকদেখানো ঢঙে
যার জীবন আসলেই গেলো সে কিন্তু নির্বিকার।

মোম জোছনায়

মোম জোছনায় তোমায় আঁকি,
পদ্ম পলাশ রাঙা ঠোঁটে
ঠোঁট ছুঁয়ে দিই বিবশ আমি
আর কি আমায় দেবে ফাঁকি ?

শাপলা বনে শালুক ফুল
তোমার চোখে অথৈ নদী
ভাসতে গিয়ে ডুবতে থাকি
কোথায় যাব হারিয়ে কূল ?

আতরদানে আতর রাখি
তোমায় পেয়ে সব পেয়েছি
মন ভরানো ফুলের সাজি
তোমার তরে সাজিয়ে রাখি।

হাওয়ায় ওড়ে তোমার চুল
চুপটি তুমি নদীর ধরে
শ্যাওলা ভাসে মাঝ দীঘিতে
চিনতে তোমায় হয় নি ভুল।

চার্লি খুড়ো ও মেমসাহেবা

খুড়োমশায়ের সাথে চার্লির
প্রথম দেখা হয় বাঘের খাঁচায়
আসলে চার্লির পিছনে খুড়োমশাই ছিলেন
যেটা মুভিতে দেখা যায় নি।

এমত খুড়োমশাই রোজ গোঁফে মোম লাগিয়ে
মেমসাহবকে কোলে টেনে নেন।
প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিকে তাঁর কড়া নজর
চিতল হরিণীকে ধরতে না পেরে
লক্ষণকে পাঠান কিন্তু মাঝখান থেকে
শুপর্ণখার অঙ্গহানি একদম যা তা !

বিমর্ষ খুড়োমশাই এখন স্বপ্নে দেখেন
মেমসাহেব ও তার লো কাট ফ্রক
দেখতে দেখতে তিনি ছক তৈরী করেন
যেখানে প্রত্যহ মেমসাহেব ও তার
প্রিয় মানুষদের মুণ্ডচ্ছেদ হয়।

কোনো না কোনো খদ্দের রোজই খুঁজে নেন
যেদিন কিছুই পান না মনের দুঃখে
পান চিবোতে চিবোতে বকেন,
কোথায় গেলে প্রিয়া ?

ফের রাতে হাইওয়েতে পথ হারালে না কি ?
হায় হায় কেন যে তার সাথে থাকি না ?
এ অবস্থায় তাকে পথ দেখানোর জন্য
আমি ছাড়া কে বা আছে !

অতঃপর শুকসারির ডানায় আটলান্টিক ক্রস করে যান।

মাটির দেশের মেয়ে

মাটির দেশের মেয়ে

ধানসিঁড়ি নদীর তীরে বসে ছিল সেই মেয়ে
পরনে হলুদ ডোরাকাটা শাড়ি
মাথায় হলুদ গাঁদার ফুল
বেনীতে জড়ানো রজনীগন্ধার মালা
গলায় একছড়া মুক্তোর মালা।

চাঁপার কলির মত আঙুল দিয়ে সে
একটা ফুলের মালা বানাচ্ছিল
তার পুতুল মেয়ের বিয়ের জন্য।

তার সোনার বরণ দেখে মেঘেরা
তাকে মেঘবালিকা ভেবে ভুল করল।

তারা নীচে নেমে এলো মেয়েটির পাশে
বললো —ওগো মেঘবালিকা তোমার
জন্য আমরা কি এনেছি বলত ?
সে অবাক হয়ে তার হরিনীর মত
চোখ দুটি তুলে বললো— কি?

মেঘেরা তখন তাকে রামধনু রঙ পশম,
চাঁদনী রঙের শাড়ি আর
তারা বসানো গলার মালা দিল।
মেঘেরা বললো—যাবে মেয়ে
আমাদের দেশে ?
সেথায় খুব মজা।
চাঁদের পরীরা একটা রানী খুঁজছে
তুমি কি ওদের রানী হবে?

মেয়েটা ভাবল অনেকক্ষণ …..
তারপর বললো ….
না গো আমি ত’ মেঘবালিকা নই …
আমি মাটির মানুষ….
এই মালাটি গাঁথছি আমার
পুতুল মেয়ের বিয়ের জন্য।

মেঘেরা বললো—ঠিক আছে
তুমি ওই পশম দিয়ে জামা বুনো
শাড়িটা আর তারার মালাটা তোমার।

মেয়েটি ভীষণ খুশি হয়ে তার গলার
মুক্তোর মালা খুলে
মেঘেদের দিয়ে দিলো আর
বললো—-যখন চাঁদপরীরা
ওদের রানী খুঁজে পাবে তখন
তাকে এই মালাটি পড়িয়ে দিও
আর বলো, মাটির দেশের মেয়ে
বলেছে—-সে এক দিন তাদের
দেশে বেড়াতে যাবে …
কথা দিয়েছে ।

কবিতার মালা

কবিতার মালা

নীল জ্যোছনায় টুপটাপ ঝরে যায় শিশির
রাতপাখিরা পথ ভুলে আমার উঠোনে ছড়িয়ে আছে
পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে জ্বলজ্বল করে
ফুটে ওঠে কিছু তারা।

তুমি শান্ত পায়ে এলে,
কবিতার মালা পায়ে জড়ালে
নূপুর বড় পায়ে বাজছিল আমার
তাই কবিতার কলি খুলে নিয়ে
আমার মনের পাতায় তোমার ভালোবাসা এঁকে যাই
প্রিয় ভুলো না আমায়।

অন্তহীন পরিক্রমা

যখন প্রেম ও ভালোবাসার পার্থক্য নিয়ে
অনেক আলাপ আলোচনা চলে তখন
দুপুরগুলো আকাশকুসুম ভাবনায় কেটে যায় ।

অন্তহীন অপেক্ষার আঙুল ধরে গভীর ভাবনায়
এক একটি দিন অপরূপ কোনো আলোর অপেক্ষায়
গভীর অন্ধকার ছেনে নিয়ে আসে ।

আলো বস্তুত আঁধারেরই এক রূপান্তর
আমাদের সঞ্চয়গুলি সামুদ্রিক হাঁসের মত
মগ্ন সাঁতারে সমুদ্রতীর পরিক্রমা করতে থাকে ।

নিরাময়

খুব আদরে ডাকি প্রিয়কে
মধ্যরাতে তার চিবুক ছুঁয়ে আকাশ দেখি
তাকে আজন্ম শুশ্রূষা করি
নিস্তব্ধ রাতে গাছেদের সংলাপ শোনা যায়
থোকা থোকা নিরাময় ফুল দিয়ে
তার গায়ে শীতল চন্দনের প্রলেপ দিই
অরণ্যদেবীর মায়ায় তার চোখে
জোছনার শীতল প্রলেপ লাগিয়ে ঘুম পাড়াই
ঘুমে সে স্বপ্ন দেখে হেসে ওঠে
হাত বাড়িয়ে আঁচলটা টেনে চোখ ঢাকে |