হামিদুর রহমান পলাশ এর সকল পোস্ট

বন্ধুত্ব মানে মনের সাথে মনের মিল

বন্ধু মানে মেঘলা দুপুর শিশির ভেজা ভোর
বন্ধু মানে মনের মাঝে অনেকখানি জোর
বন্ধু মানে ভীষন কষ্ট একটু অভিমান
মনের মাঝে কোথায় যেন অনেকখানি টান . . . . . . . . . .

এক অকারণ অনুভূতির নাম বন্ধুত্ব? হাতে হাত রেখে পাশাপাশি চলাটাই বন্ধুত্ব ? বন্ধুত্ব মানে বয়সের সাথে বয়সের মিল নয়, বন্ধুত্ব মানে মনের সাথে মনের, গোপনে হয়ে যাওয়া পরিচয়…..বন্ধুদের। জীবনের সংকটে বন্ধুই ছুটে যান বন্ধুদের কাছে। আবার আনন্দ, উল্লাস কিংবা দিন শেষের অবসরেও এরা ভালোবাসেন বন্ধুত্বের কলতান শুনতে। বন্ধুত্বের পরিপূরক সম্পর্কের মাঝে এরা খুঁজে পান জীবনযাপনের ভিন্ন রস।
বন্ধু কখনো পুরনো হয় না।
বন্ধুহীন আর প্রেমহীন জীবন নাবিক বিহীন জাহাজের মতো। তাই মানুষ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন অনুভব করে। কারণ, একজন প্রকৃত বন্ধু জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অংশীদার হয়। প্রকৃত বন্ধুই পারে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দুঃখ-কষ্টকে ভুলিয়ে রাখতে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিস্টটল বলেছেন, ‘দুটি দেহে একটি আত্মার অবস্থানই হলো বন্ধুত্ব । সেটা হতে পারে ছেলের সাথে মেয়ের, ছেলের সাখে ছেলের, প্রেম আর বন্ধুত্ব আলাদা কিছু নয়। প্রেম হতেই কামনার সৃষ্টি।

সময়ের বৃত্তে বন্দি জীবন

সময় প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথে নিবির ভাবে জড়িত। সময়ের ধারাবাহিকতায় জীবন একেক সময় একেক ভাবে তার গতি পাল্টায়। ব্যক্তি জীবনে প্রতিটি মানুষই বিপুল সাহস ও অটল ধৈর্য নিয়ে বাস্তব জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, আশা-নিরাশা এবং আনন্দ-বেদনায় উত্তাল জীবন-সমুদ্র পাড়ি দেন সময়কে আশ্রয় করে। সময় প্রবাহিত হয় প্রবহমান জীবন-নদীর ধারার মতো। সময়কে কখনোই ধরে রাখা যায় না, এটা প্রবাহিত হয় তার আপন নিয়মে। একটা সময় ছিল তখন ভাবতাম সময়কে কিভাবে পার করব আর এখন সময়ই পাই না পার করার মতো। বর্তমান যাপিত কর্মজীবনের সময়কে পার করার কোন মাধ্যমই পাই না। সকাল থেকে রাত কিভাবে সময় শেষ হয়ে যায় তার স্থির ব্যাখ্যা খুজে পাই না। তবু চলমান বাস্তবতার নিখুঁত বুননে সময়কে ধরে রাখা রপ্ত করি আপন মনে। তাই প্রাত্যহিক জীবনের কর্মভাবনা প্রকাশ পায় ‘কাজের ভিতর। কাজের ভিতর দিয়ে মানুষ তার পরিচয় খুঁজে। ‘মানুষেই সর্বশেষ মানুষই পরমেশ্বরে রূপ নেয়’।

প্রতিদিন ভোরে ফজর নামাজের পরেই শুরু হয় কর্মময় জীবনের পথ চলা। পরিবারের সদস্যদের জন্য নাস্তা তৈরী করা, বাচ্চাদের মসজিদে পাঠানো, মসজিদ থেকে ফিরলে প্রাইভেট টিউটরের কাছে পাঠানো, টিউটরের কাছ থেকে ফিরলে স্কুলে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়। সবার কাজ ঠিক মত করার পর আসে নিজের পালা। কর্মস্থলে যাবার প্রস্তুতি।কর্মস্থল থেকে ফিরে পরিবারের সদস্যদের জন্য রান্না করা, সন্তানদের ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা, তারা ফিরে আসলে তাদের খাওয়া দাওয়ার পর বিশ্রামের ব্যবস্থা করা।সন্ধ্যার পর পড়তে বসানো আবার রাতের খানার প্রস্তুতি এভাবে চলে সময়ের বৃত্তে ঘুর্ণায়মান জীবনের প্রতিটি কর্মব্যস্ত জীবন। সারা দিনের কর্মক্লান্ত শরীর নিয়ে যখন রাতে বিছানায় যাই তখন রাতের বাকী সময়টুকু যেন আর কাটতে চায় না। নির্ঘুম রাত কাটে প্রবাসী স্বামীর ফোনের অপেক্ষায়। যখন কাঙ্খিত ফোন আসে তখন জীবনের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। সবাই বলে অপেক্ষার প্রহর নাকি দীর্ঘ হয়, আমার মনে হয় অপেক্ষার প্রহর জীবনে কখনো শেষ হয় না। অপেক্ষাতেই নাকি প্রেমের সম্পর্ক বেশী গাঢ় হয়। সে প্রেম শাশ্বত, দেহজ কামনা বাসনার বাইরে, শুধু শারীরিক প্রেম নয়। যা ব্যক্তিমানুষের শারীরিক বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিমনে হাহাকার আর আত্মসাধনার জন্মই দেয়। নশ্বর বিশ্বচরাচরে শরীরের মত প্রেমেও ক্ষয় আছে এবং সে ক্ষয় কালক্রমে অনুতাপ ও পাপবোধের জন্ম দেয়। যেটা কারো কাম্য নয়। প্রতিটি অপেক্ষমান বিরহী আত্মা প্রেমকে দেখে নারীর সহমর্মিতা, সমবেদনা, পুরুষের আত্মনিবেদনের ভেতর দিয়ে।

আমিও সেটার বাইরের কেউ নই। বরং যাপিত জীবনের যে সুবর্ণ সঞ্চয়, সেখানে যে বাঁক ও তার ঢেউ তাকে আমার জীবনের এক ক্রান্তিলগ্নে এসে উপলব্ধি করতে অনুপ্রাণিত হই যে, সময় এবং যৌবন আসলে মানবজীবনের এক পরাক্রমী ক্ষয়িষ্ণু অধ্যায়ের নাম। যেখানে তার অযত্ন ও অবহেলা সেখানে তার রুদ্রমূর্তি। যেখানে তার সযত্ন আসন পাতা সেখানে সে প্রাণবন্ত ও সৌন্দর্যের স্মারক। আসলে কোন বস্তু মানুষের কাছাকাছি থাকলে তার প্রয়োজনটা বুঝা যায় না। সে যখন দুরে থাকে তখন তার প্রয়োজনটা অতি জরুরী হয়ে পড়ে।

তখন স্মৃতিভারাতুর আপন যৌবনের বৈরীরূপ এসে সময়ের স্রোতে সমাহিত হয়, তখন সময়ের বৈরিতায় নিজের উত্তরাধিকারের ভেতর আপন রক্ত ছলকে উঠে; অথচ তাকেই আপন যৌবন কালের সমতলে ও সময়ের আহ্বানে তার প্রাজ্ঞমনের সম্মতি মেলে না। কাটে সম্মতির অপেক্ষায় অযাচিত বৈরী সময়। সময়ের প্রয়োজনে ব্যক্তিমানুষের মস্তিষ্কে যৌনকামনার বিপুল আলোড়নে আভিজাত্য, ঐতিহ্য পর্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মানুষের বিশ্বাসের জগতের এক বিরাট অঞ্চল জুড়ে কামনা ও লাম্পট্যকে প্রায় অভিন্নার্থে গ্রহণ করে। একার্থক বিষয় নিয়ে মানুষের মনোজগতে কোন প্রকার ভাবনার অবস্থান্তর ঘটে না। সময়ই নাকি সব নিয়ন্ত্রন করে। তাই মানবসমাজের মত সময়ের আবর্তে অনুভূতিকে সযত্নে লালন করছি এবং নিজের ভেতর তার পরিচর্যা করছি নিরন্তর। জানিনা কবে এই সময়ের দায়ভার থেকে মুক্তি পাব। সময় যেন আমার সমস্ত সত্তা জুড়ে সঞ্চরণশীল ও ক্রিয়াশীল সম্ভ্রান্ত রোমান্টিক মানস এবং আধুনিকতার প্রশ্নে সদা প্রচ্ছন্ন। তাই নিজের জীবনোপলব্ধির অভিজ্ঞান থেকেই অপেক্ষার সময়কে ধারণ করে চলছি কর্মসাধনার ভিতর দিয়ে।

বুদ্ধদেব বসুর ‘দ্রৌপদীর শাড়ি’ কাব্যে সময় ভাবনায় নারীর একটি চিরন্তন রূপকে কল্পনা করেছেন। তিনি নারীর স্বাধীন সত্তাকে দৃঢ়চিত্তে প্রতিস্থাপন করেছেন যাতে কোন অপশক্তি, দুঃশাসন নারীর সম্ভ্রম ছিনিয়ে নিতে না পারে সেই সত্যই তিনি বিশেষ চিত্রকল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। যেটাকে ধারন করেই কাটে আমার অপেক্ষার সময়। যেন এভাবেই বয়ে যাবে সামনের অনাগত সময়……

যেন ইরাজ আহমেদ এর কাব্য ভাবনার মতে …

এভাবেই তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
গভীর আঁধারে, এভাবেই একদম একা।
আগুনের মতো একা,
নিঃসঙ্গ রাত্রিতে বিভ্রান্ত পাখির ডানার মতো একা।
চোয়ালে, কপালে হেঁটে যায় মাকড়সার সারি।
চমকে সরিয়ে দিতে গিয়ে দেখি আসলে সময়।
একেকটা দিন বাতাসের গায়ে দাগ কাটে,
একেকটা দিন ছাইয়ের মতো জমা হয়ে থাকে,
নখের আড়াল থেকে ঝুর ঝুর করে পড়ে কবরের মাটি।
হাতের মুঠোয় ধরা শুকনো গোলাপ।
দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে আসে চোখ,
পুরনো ঘড়িটা হাই তোলে,
পাগলের মতো দুটো হাত তুলে আড়মোড়া ভাঙ্গে।
একশ বছর ধরে গাঢ় ঘুম,
ঘুম শেষ হয় কবে?
সময় ফুরিয়ে গেলে
এভাবেই তার জন্য অপেক্ষা করতে হয় গভীর আঁধারে
এভাবেই একদম একা।

*******************************
সালমা রহমান
তাং ০৬/০৪/২০১২
নিজ শয়নকক্ষ, জয়পাড়া, দোহার-ঢাকা।

শেখ মুজিব একটি নাম, একটি ইতিহাস

মানুষের যতগুলো অনুভূতি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি হচ্ছে ভালবাসা । আর এই পৃথিবীতে যা কিছুকে ভালবাসা সম্ভব তার মধ্যে সবচেয়ে তীব্র ভালোবাসাটুকু হওয়া উচিত মাতৃভূমির জন্য । যে মাতৃভূমিকে ভালবাসতে পারে না কোন কিছুকেই তার পক্ষে ভালবাসা সম্ভব না । আমাদের এই ছোট্ট সোনার বাংলাদেশ, যার রয়েছে বীরত্বপূর্ণ গৌরব গাঁথা ইতিহাস । আর এই সাফল্যগাঁথা ইতিহাসের পিছনে রয়েছেন কয়েকজন মহানায়ক।যাদের ঋণ আমরা কখনো শোধ করতে পারবো না ।তাদের মধ্য অন্যতম হচ্ছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।যার জন্ম না হলে এই বাংলাদেশ হত না । যার জন্ম না হলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক কোন দেশের নাম থাকতো না । এই বাংলাদেশ, এই মায়ের সৃষ্টির জনক হচ্ছে আমাদের জাতীয় পিতা শেখ মুজিবুর রহমান । এই সুন্দর বাতাস, এই সুন্দর নদী, এই স্বাধীনতা যাকে ছাড়া সম্ভব ছিল না তিনি হলেন আমাদের জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । যার কথা আজো আমাদের বুক নাড়িয়ে দেয়, আমাদের বাহুতে শক্তি এনে দেয় তিনি হচ্ছে আমাদের পরম বন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।কিন্তু এই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে কিছু কিছু কুলাঙ্গার এই নেতার বিরুদ্ধে কথা বলে । জাতীয় পিতার গৌরব গাথা ইতিহাস ম্লান করে দিতে চায় । তার ইতিহাস মুছে দিতে চায় ।এই বাংলার মানুষ কি এতই নিমকহারাম যে মাত্র ৪৭ বছর আগের ইতিহাস ভুলে যাবে? জাতির পিতার মহান অবদান অস্বীকার করবে?

‘তবু তোমার বুকেই গুলির পর গুলি চালালো ওরা
তুমি কি তাই টলতে টলতে বাংলার ভবিষ্যৎকে
বুকে জড়িয়ে সিঁড়ির ওপর পড়ে গিয়েছিলে?’

১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের মর্মস্পর্শী দৃশ্যপট এভাবেই চিত্রায়িত হয়েছে কবিতায়। সেই রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট জাতি দু’দিন পর পালন করবে, শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আঁধার রাতের রূপকল্প কেবল কবিতায় নয়, গানের কলিতেও প্রকাশ পেয়েছে_ ‘সেদিন আকাশে শ্রাবণের মেঘ ছিল, ছিল না চাঁদ’। প্রবীণরা বলেন, সেই রাতে ঢাকার আকাশে কালো মেঘ ছিল, ছিল না বৃষ্টি, ছিল না আঁধার বিদীর্ণ করা নীল জ্যোৎস্না। শ্রাবণের আঁধারে ডুব দিয়েছিল বৃষ্টিহীন রুক্ষরাত। আর এই অমানিশার অন্ধকারে রচিত হয়েছিল ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। রাজধানীর আকাশে-বাতাসে তখনো ছড়ায়নি মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ থেকে আজানের সুরেলা ধ্বনি। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘোর কৃষ্ণপ্রহরে হায়েনার দল বেরিয়ে আসে। নিদ্রাচ্ছন্ন নগরীর নীরবতাকে ট্যাঙ্ক-মেশিনগানের গর্জনে ছিন্নভিন্ন করে ওরা সংহার করে তাঁকে_ ‘লোকটির নাম বাংলাদেশ। শেখ মুজিবুর রহমান।’স্বাধীনতার মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ‘তার মৃত্যু অমোচনীয় কলঙ্কের চির উদাহরণ কোনোভাবেই কাটবে না অমাবস্যার ঘোর কৃষ্ণপ্রহর কোনো কিছুতেই ঘটবে না এর অপরাধমোচন।’৪২ বছর আগে শেষ শ্রাবণের সেই মর্মন্তুদ দিনে বিশ্বাসঘাতকরা যাকে বিনাশ করতে চেয়েছিল সেই মুজিব মরেননি, বাঙালির হৃদয়-মননে অবিনাশী হয়ে রয়েছেন_

‘ওই তাকে দেখা যায়।
দেখা যায় ওই দিনের রৌদ্রে, রাতের পূর্ণিমায়।
মুজিব! মুজিব!

জনকের নাম এত সহজেই মোছা যায়!’বঙ্গবন্ধুর জলদগম্ভীর কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল তা বাঙালির শিরায় শিরায় এখনো শিহরণ তোলে। সেই আহ্বান বাক্সময় হয়ে আছে কবিতায়_

‘শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে অতঃপর কবি শোনালেন তার অমর কবিতাখানি এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’বাংলাদেশের হৃদয়সম এ মানুষটির অমরত্বের কথা_

‘সহসা দেখি আমার ছোট্ট ঘরখানির দীর্ঘ দেয়াল জুড়ে দাঁড়িয়ে আছেন শেখ মুজিব;/গায়ে বাংলাদেশের মাটির ছোপ লাগানো পাঞ্জাবি হাতে সেই অভ্যস্ত পুরনো পাইপ চোখে বাংলার জন্য সজল ব্যাকুলতা’

কাগজ ছিঁড়ে যায়, পাথর ক্ষয়ে যায়, কিন্তু হৃদয়ে লেখা নাম রয়ে যায়। সেই নাম শেখ মুজিব।ইতিহাসই তার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। ‘তার জন্ম একটি জাতির উন্মেষ, নতুন দেশের অভ্যুদয় তার মৃত্যু অমোচনীয় কলঙ্ক, এক করুণ ট্র্যাজেডি বঙ্গোপসাগর শোভিত ব-দ্বীপে জ্বলজ্বল তার নাম শেখ মুজিবুর রহমান।’ তিনি কোনো বিশেষ দলের নন, দল-মত নির্বিশেষে সমগ্র জাতির। তার মর্যাদা সর্বজনীন।

এই বাংলার আকাশ-বাতাস, সাগর-গিরি ও নদী
ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি
হেরিতে এখনও মানব হৃদয়ে তোমার আসন পাতা
এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা-পিতা-বোন-ভ্রাতা।

—-‘ডাকিছে তোমারে / কবি সুফিয়া কামাল

যতকাল রবে পদ্মা-যমুনা-গৌরী মেঘনা বহমান,
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।
—-কবি অন্নদাশংকর রায়
<

১৫ই আগষ্ট। জাতীর জন্য এক কলঙ্কময় দিন। জাতীয় শোক দিবস। ৪২ বছর আগে ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপদগামী পাক হায়েনাদের প্রেতাত্মা তথা সেনাবাহিনীর একটি চক্রান্তকারী চক্র সপরিবারে হত্যা করে বাঙালী জাতীর জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাঙালী জাতীর অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৪৭, ৫২, ৬৯, ৭০ সহ বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর দ্বার হতে বার বার ফিরে এসেছিলেন, ৭১-এ পাকিস্তানী হায়েনারা যা করতে পারে নাই, সেই কাজটিই অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে সম্পাদন করে পাপিষ্ঠ ঘাতকরা। ওরা মানুষ নামের হায়েনার দল, ওরা শয়তানের প্রেতাত্মা। ওরা জঘন্য। ওরা বিপদগামী হিংস্র জানোয়ারের দল।একদিন যে অঙ্গুলী উচিয়ে বাঙ্গালী জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” সেই স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁর অঙ্গুলি চিরদিনের জন্য নিস্তেজ করে দেয় ঘাতকরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক সেই বাড়িতে। আর কোনদিন ঐ অঙ্গুলি আমাদেরকে প্রেরণা দিতে আসবেনা, দিবেনা মুক্তির বারতা। তবে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে তিনি মৃত্যুহীন। প্রাণী হিসেবে মানুষ মরণশীল বলে সবারই একটি মৃত্যুদিন থাকে। তবে কোনো কোনো মানুষের শুধু দেহাবসানই ঘটে, মৃত্যু হয় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যিনি আমাদের জাতীর পিতা, তার কি মৃত্যু হতে পারে ? না তিনি মৃত্যুহীন। চির অমর।

১৫ আগষ্টের প্রেতাত্মা ও তাদের দোসররা আজও সক্রিয়। আজ ২০১৭ সালের ১৫ আগষ্ট। জাতীর জনকের কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী। তিনি ও তার পুরো পরিবার এখনও সেই ১৫ আগষ্টের প্রেতাত্মা ও দোসরদের কাছ থেকে নিয়মিত হত্যার হুমকি পাচ্ছেন। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা করে ৭৫ এর ১৫ আগষ্টের নায়কদের উত্তরসুরিরা তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে। এভাবে কয়েকবার তারা বোমা হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালায়।গুলশানে জঙ্গী হামলা, শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে হামলা করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে তৎপর এখনও পচাত্তরের খুনিরা। আজ তারা সংবিধান সংশোধন করা নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে আর একটি ১৫ আগষ্টেরও হুমকি দিয়েছে। তাহলে সত্যিই শেখ হাসিনাকে বা তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকেও ঐ ১৫ আগষ্টের মত নির্মম হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ? আমরা কি দেশে আর একটি ১৫ আগষ্ট চাই বা কামনা করি ? জাতির বিবেক কী বলে ?
************
হামিদুর রহমান পলাশ
সাবেক সহসভাপতি, দোহার থানা ও ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ।
যুগ্ন আহ্ববায়ক, দোহার পৌরসভা কৃষকলীগ।

তথ্যসূত্র :
সাইফুজ্জামান খালেদ-চতুর্মাত্রীক, দাদা ভাই ও জাহাঙ্গীর আলম- সামু, উইকি পিডিয়া, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা-আবুল হোসেন, সৈয়দ আবুল মকসুদ-প্রথম আলো।

শিক্ষা, শিক্ষক ও একজন সোলাইমান স্যার

আভিধানিক অর্থে- শিক্ষা হচ্ছে, শেখা, অভ্যাস, অধ্যয়ন, জ্ঞানার্জন, চারিত্রোন্নতি। সু-অভ্যাস বা ক্রমাগত অনুশীলন শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ। ল্যাটিন শব্দ Educo থেকে ইংরেজী Education শব্দের উৎপত্তি। Educo শব্দের মূলগত অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- E = Out; duco = to lead, to draw out বা পরিচালিত করা, বের করা, প্রতিভাত করা। Education এর তাৎপর্য হচ্ছে, মানব মনের সহজাত বৃত্তি বা সম্ভাবনাকে বিকশিত ও পরিচালিত করাই শিক্ষা। এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- ইউরোপীয় E (ই) উপসর্গের একটা অর্থ অভাব আর এক অর্থ বর্হিগমতা; Educate শব্দের উৎপত্তিমূলক অর্থ বহির্ণয়ন। এই অর্থ-সূত্রেই তিনি বলেছেন, “আমাদের যে শক্তি আছে তাহারই চরম বিকাশ হইবে, আমরা যা যাহা হইতে পারি, তাহা সম্পূর্ণভাবে হইব- ইহাই শিক্ষার ফল।” মোটকথা, মানুষের অন্তর্নহিত গুণাবলীকে স্ফুরিত, নিগরিত ও নিয়ন্ত্রিত করে জীবনের নানা প্রয়োজেনে তাকে উক্ত গুণগুলো প্রয়োগ করার শক্তি ও নৈপুণ্য দান করাই শিক্ষা।

কোন কিছু গড়তে হলে, সৃষ্টি করতে হলে প্রয়োজন দক্ষ ও বিবেকবান কারিগরের। যাদের অবদানে পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করেছে অনেক সৃষ্টি। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকই তো গড়বে মানুষ। মহানবী (সা.) নিজে দার্শনিক, রাষ্ট্রনায়ক, সেনানায়ক ধরনের কোন অভিপ্রায় প্রকাশ করেন নি। তিনি বলেছেন “আমি শিক্ষক রূপে প্রেরিত হয়েছি।”শিক্ষক হচ্ছেন জাতির বিবেক, মানুষ গড়ার কারিগর। পার্সিডেন রেন বলেছেন- “শিক্ষক শুধু খবরের উৎস বা ভাণ্ডার নন, কিংবা প্রয়োজনীয় সর্বপ্রকার তথ্য সংগ্রহকারী নন, শিক্ষক শিক্ষার্থীর বন্ধু, পরিচালক ও যোগ্য উপদেষ্টা, শিক্ষার্থীর মনের বিকাশ সাধনের সহায়ক তথা তাদের চরিত্র গঠনের নিয়ামক।”শিক্ষক হচ্ছে সমাজের দর্পন বা আলো।শিক্ষা দানের মহান ব্রত যার কাজ তাকেই শিক্ষক বলা হয়। শিক্ষকদের জাতি গঠনের কারিগর বলা হয়। কেননা একজন আদর্শ শিক্ষকই পারেন তার অনুসারী দের জ্ঞান ও ন্যায় দীক্ষা দিতে। শিক্ষার্থীর মানবতাবোধ কে জাগ্রত করে একজন শিক্ষক কেবল পাঠদান কে সার্থকই করে তোলেন না, পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকে ত্বরাণ্বিত করেন। স্বীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করে তাদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলেন।যিনি ছাত্রদের ভেতরের শক্তিকে অনুধাবন করতে পারেন। সেই শক্তিকে এমনভাবে বিকশিত করার চেষ্টা করেন যা তার সমস্ত জড়তাকে ভেঙ্গে স্বপ্নযাত্রার সূচনা ঘটায়। যিনি পথে হাঁটতে শেখান, গন্তব্য দেখানো যার কর্ম নয়। তিনি সিদ্ধান্ত দেন না বরঞ্চ শেখান কত কত ভিন্ন উপায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। যিনি সীমাবদ্ধতাকে নয়, সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দেন। বই নয় যিনি বাস্তবতাকে মুখোমুখি করবার সাহস দেখান।

কিন্তু সেই শিক্ষকই যখন ছাত্রের অবিভাবকের হাতে শারীরিক লাঞ্চনার শিকার হন তখন আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করি এ কোন সমাজে আমরা বাস করছি ? আবার এই ঘটনায় কিছু কিছু শিক্ষক সমর্থনও করেন।তারা আবার কোন শ্নেনীর শিক্ষক ? সোলায়মান স্যার তিনি টাঙ্গাইল জেলার অন্তর্গত মীর্জা পুর উপজেলার বাসিন্দা।তিনি ১৯৮৭ সালের এক রৌদ্রাজ্জল ভোরে মালিকান্দা-মেঘুলা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি আমার গনিত শিক্ষক ছিলেন। আমি ১৯৯১ সালে এস.এস.সি পাশ করি। তারপর বহুবার স্যারের সাথে সাক্ষাত হয়েছে। কিন্তু আমি জানতাম না স্যার চিরকুমার। রাহিম কাকার পোষ্ট থেকে জানতে পারি।তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে খুব ভালবাসেন বিধায় বিবাহ পর্যন্ত করেননি!তিনি চিরকুমার। এই বিদ্যালয়ে ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তার কোন নেতিবাচক দিক কেউ বলতে পাববেন না।তাপরও তিনি ছাত্রের পিতার হাতে শারিরীক লাঞ্চনার শিকার হন।শিক্ষক অপমানের প্রতিবাদে ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষকদের বিক্ষোভের মুখে নারিশা উনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন দড়ানী ক্ষমা চান। এই ভদ্রলোকের উদারতা দেখে শিখলাম ক্ষমাই হচ্ছে অন্যতম ভাল এবাদত যার মাধ্যমে মানুষ প্রতিহিংসা থেকে বহুদূরে থাকতে পারে।

চলবে …………

প্রাক্তন ছাত্র
মালিকান্দা মেঘুলা স্কুল এন্ড কলেজ
ব্যাচ”১৯৯১

আত্ম – বিশ্লেষন – ০৩

আজও জীবনের চাওয়া পাওয়া গুলি ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
বিষন্নতায় ভরে থাকে রাতের বাসরের প্রতিটি ক্ষন,
অনুভূতিহীন শরীরে শরীরে ঘর্ষন
হৃদয় মন পিষে ক্ষয় হয় অব্যক্ত বেদনায়।
যেন পরিপূর্ন চেতনাবোধের অবসান।
শিউলী ও কামিনী ফুলের সুভাস ও সৌন্দর্য মিশ্রিত ভোর।
বন-উপবনে পুষ্পের ছড়াছড়ি,
নয়ন-মন, হৃদয়কে করে তোলে মুগ্ধ।
নদীর তীরে কাশফুলের কমল-ধবল রূপে মাতোয়ারা প্রকৃতি
জ্যোসনা-প্লাবিত রাতে জাগে স্বপ্নের শিহরণ।

শিক্ষা ও শিক্ষক

আভিধানিক অর্থে- শিক্ষা হচ্ছে, শেখা, অভ্যাস, অধ্যয়ন, জ্ঞানার্জন, চারিত্রোন্নতি। সু-অভ্যাস বা ক্রমাগত অনুশীলন শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ। ল্যাটিন শব্দ Educo থেকে ইংরেজী Education শব্দের উৎপত্তি। Educo শব্দের মূলগত অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- E = Out; duco = to lead, to draw out বা পরিচালিত করা, বের করা, প্রতিভাত করা। Education এর তাৎপর্য হচ্ছে, মানব মনের সহজাত বৃত্তি বা সম্ভাবনাকে বিকশিত ও পরিচালিত করাই শিক্ষা। এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- ইউরোপীয় E (ই) উপসর্গের একটা অর্থ অভাব আর এক অর্থ বহির্গমতা; Educate শব্দের উৎপত্তি মূলক অর্থ বহির্ণয়ন। এই অর্থ-সূত্রেই তিনি বলেছেন, “আমাদের যে শক্তি আছে তাহারই চরম বিকাশ হইবে, আমরা যা যাহা হইতে পারি, তাহা সম্পূর্ণভাবে হইব- ইহাই শিক্ষার ফল।” মোটকথা, মানুষের অন্তর্নিহিত গুণাবলিকে স্ফুরিত, নিগরিত ও নিয়ন্ত্রিত করে জীবনের নানা প্রয়োজনে তাকে উক্ত গুণগুলো প্রয়োগ করার শক্তি ও নৈপুণ্য দান করাই শিক্ষা।

শিক্ষক হচ্ছে সমাজের দর্পন বা আলো। শিক্ষা দানের মহান ব্রত যার কাজ তাকেই শিক্ষক বলা হয়। শিক্ষকদের জাতি গঠনের কারিগর বলা হয়। কেননা একজন আদর্শ শিক্ষকই পারেন তার অনুসারীদের জ্ঞান ও ন্যায় দীক্ষা দিতে। শিক্ষার্থীর মানবতাবোধ কে জাগ্রত করে একজন শিক্ষক কেবল পাঠদান কে সার্থকই করে তোলেন না, পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেন। স্বীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করে তাদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলেন। যিনি ছাত্রদের ভেতরের শক্তিকে অনুধাবন করতে পারেন। সেই শক্তিকে এমনভাবে বিকশিত করার চেষ্টা করেন যা তার সমস্ত জড়তাকে ভেঙ্গে স্বপ্নযাত্রার সূচনা ঘটায়। যিনি পথে হাঁটতে শেখান, গন্তব্য দেখানো যার কর্ম নয়। তিনি সিদ্ধান্ত দেন না বরঞ্চ শেখান কত কত ভিন্ন উপায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। যিনি সীমাবদ্ধতাকে নয়, সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দেন। বই নয় যিনি বাস্তবতাকে মুখোমুখি করবার সাহস দেখান।

কিন্তু বর্তমানে এ রকম শিক্ষক আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কয় জন আছে ???

আত্ম বিশ্লেষন – ০২

যখন নিঝুম রাতে ………
**********
গভীর রাত ! এক অদ্ভুত মায়ায় আচ্ছন্ন প্রকৃতি। শান্ত, সুনসান হয়ে আছে ব্যস্ত সমস্ত লোকালয়ের অন্য প্রতিচ্ছবি। নিদ্রা দেবীর কোলে আশ্রয় নিয়েছে সারাদিনের ছুটে চলা কর্মব্যস্ত মানুষগুলো।কেমন এক নেশার ঘোরে অন্য পৃথিবীতে চলে গিয়েছে নিশাচরেরা। এই সময়টাতেই নিজেদের নতুন করে আবিষ্কারের প্রচেষ্টায় মত্ত হয় তারা !ঝি ঝি পোকার ডাকে ঝিমঝিম অনুভূতি……… অতন্দ্রিলার সঙ্গ কামনায় উন্মুখ কতিপয় রাত জাগা পাখি ……
– ( আত্ম বিশ্লেষন )

আত্ম বিশ্লেষন – ০১

নিস্তব্ধ রাতের, গভীর চুম্বনে,
নিদ্রাহীন অসহ্য শয্যায় –
আমারে প্রশ্ন করিল ‘আমি;
আমারই অস্তিত্ব নিয়ে !
ভগ্ন করিল অন্তর মম,
শুধু এক নিষ্ঠুর প্রশ্নে –
কে আমি ? “আমি কে ! ”
– ( আত্ম বিশ্লেষন)

মা

মায়ের আদর

স্বার্থ ছাড়া বন্ধু -বান্ধবী কাছে আসে না
বিনা স্বার্থে দুনিয়ায় কেউ ভালবাসে না।
স্বার্থ ছাড়া ভালবাসে শুধু আমার “মা”
কাঁদা আর খড়কুটো দিয়ে মাটির মূর্তি গড়ে
লক্ষ টাকা মজুরী নেয় মূর্তির কারিগরে,
মা আমার এই সুন্দর দেহ গড়ে দিয়েও মূল্য চাইল না –
স্বার্থ ছাড়া ভালবাসে শুধু আমার “মা”।(নকুল কুমার বিশ্বাস)

পৃথিবীর সবচেয়ে সুমধুর ডাক ‘মা’। আনন্দ, বেদনা আর কল্পরাজ্যের যতসব অনুভূতির আলোড়ন— সবই মাকে ঘিরে। ‘মা’ শব্দটি নিজেই একটি অসমাপ্ত গল্প, শ্রেষ্ঠ কবিতা, সময়ের সেরা উপন্যাস…মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই ‘মা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হিসেবে বিবেচিত। মা, মাদার, মম, মাম, আম্মা— যাই বলি না কেন, একজন সন্তানের কাছে তার মায়ের চেয়ে অধিক প্রিয় কোনও কিছুই এই পৃথিবীতে নেই। মাকে নিয়ে কামিনী রায়ের—

‘‘জড়ায়ে মায়ের গলা,
শিশু কহে হাসি
মা তোমারে কত ভালবাসি
কত ভালোবাস ধন ?
জননী শুধায়
“এ-ত” বলি দুই হাত প্রসারি দেখায় ?
তুমি মা আমায় ভালোবাস কতখানি ?
মা বলে মাপ তার আমি নাহি জানি
তবু কতখানি বল,
যতখানি ধরে তোমার মায়ের বুকে নহে তার পরে।’’

যে মাকে নিয়ে এত ভালবাসা, কবিতা, গান সেই মাকে স্মরণ করতে ১৪ই-মে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মা দিবস। মায়ের জন্য কোন দিবস নয় প্রতিটি দিনই মায়ের।পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় এবং মধুরতম শব্দটি ‘মা’। মা শুধু প্রিয় শব্দই নয়, প্রিয় বচন, প্রিয় অনুভূতি, প্রিয় ব্যক্তি, প্রিয় দেখাশুনা, প্রিয় রান্না এবং প্রিয় আদর। যতগুলো প্রিয় আছে তার সব প্রিয়ই শুধুমাত্র মাকে কেন্দ্র করেই। পৃথিবীর ইতিহাসে সন্তানের জন্মদাত্রী হিসেবে প্রাকৃতিকভাবেই মায়ের এই অবস্থান। মানব সমাজে যেমন মায়ের অবস্থান রয়েছে। পশুর মধ্যেও মাতৃত্ববোধ প্রবল। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকেই মা যাবতীয় মমতার আধার ও কেন্দ্রবিন্দু। তাই পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষায়ই মা-এর সমার্থক শব্দটি ‘ম’ ধ্বনি দিয়ে শুরু।

তাই মায়ের জন্য কোন নিদিষ্ট দিবস নয় প্রতিটি দিন হোক মায়ের জন্য উৎসর্গকৃত।পৃথিবীর সকল মায়ের জন্য বিনম্র শ্রদ্ধা।