রোখশানা রফিক এর সকল পোস্ট

রোখশানা রফিক সম্পর্কে

I'm a mom, teacher, designer, poet, social worker, own home maker, a visionary dreamer.

এই যে জীবন

আমাজনের সবুজ পুড়ছে,
কাটা পড়ছে যুবতী বন,
নদীর বুকে জমছে পলি,
জমাট কষ্টের ধুধু
বালুচর তুমি-আমি
আর আমাদের মন।

বহতা জীবন, তবু এখানে
স্বপ্নেরা থেমে যায়,
চোখে জল নামে,
বুকের পলল ফেটে
চৌচির খরায়।

এসবই জানো বেশ
সয়ে গেছে আজকাল,
ছোঁয় না কিছুই আর।
ভুলে যাওয়া সুর এক
গুনগুন মনে এসে মিলায়
শূন্যে ধোঁয়াশায় আরবার।

রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … ৬ষ্ঠ পর্ব

রোখশানা’স লাইফস্টাইল ৬ষ্ঠ পর্বে আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের খুব সামান্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো। সেটি হচ্ছে আমাদের দেশের নকল প্রসাধনী উৎপাদন বন্ধে তথা ব্র্যান্ডেড আইটেমের খালি কন্টেইনার ব্যবহার করে মেইড ইন জিঞ্জিরা টাইপ যেসব পণ্য বেশী দাম দিয়ে কিনে, আমরা ক্রেতারা প্রায়শই ঠকে যাবার প্রবণতা বা চর্চা এদেশে চলছে; তা রোধে কিভাবে আমরা খুব ছোট্ট কিন্তু দরকারি একটি পদক্ষেপ অনুসরন করতে পারি।

অধিকাংশ বাসাবাড়িতে আমরা যেসব ভালো কোম্পানীর প্রসাধনী বা অন্যান্য দ্রব্য ব্যবহার করে থাকি, সেগুলোর ব্যবহার শেষ হয়ে গেলে, খালি কন্টেইনারগুলো সচরাচর আমরা দুইটি উপায়ে ফেলে দিই। আমাদের কেউ কেউ সেগুলোকে সরাসরি আমাদের ময়লা ফেলার ঝুড়িতে অন্যান্য আবর্জনার সাথে ফেলে দিই। আবার কেউ কেউ যেসব ফেরিওয়ালা খালি কন্টেইনার কিছু অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে থাকে তাদের কাছে বিক্রি করে দিয়ে থাকি। দু’টি ক্ষেত্রেই আমরা মূলতঃ নকল পণ্য প্রস্তুতকারীদেরকে এসব কন্টেইনার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছি।

প্রথমতঃ যখন আমরা এসব খালি কন্টেইনার ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিচ্ছি, তখন আমাদের বুঝতে হবে, আমরা নিজেরা এসব জিনিস সরাসরি ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করছি না বটে, কিন্তু টোকাই বা ময়লার ঝুড়ি থেকে খালি বোতল সংগ্রহ করে এই জাতীয় মানুষেরা কিন্তু ঠিকই এসব বোতল পরে যে কোনো একটা সময়ে এসব কুড়িয়ে নিয়ে ফেরিওয়ালার কাছে বা ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করবে এবং সেগুলো চলে যাবে নকল প্রসাধনী প্রস্তুতকারীদের হাতে। সুতরাং পরোক্ষভাবে আমরাও এই প্রক্রিয়া চলমান থাকতে সহায়তা করলাম। আর সরাসরি বিক্রি করে দিলে তো বটেই।

এক্ষেত্রে নকল পণ্য উৎপাদনে যাতে আমাদেরই সামান্য অবহেলায় আমাদেরই ব্যবহৃত এসব খালি কন্টেইনার ব্যবহৃত হতে না পারে, সেই লক্ষ্যে আমরা যে উপায় অবলম্বন করতে পারি তা হলো, প্রথমে এসব কন্টেইনার গুলো শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে ভেতরে যাতে ব্যবহৃত প্রসাধনী বা অন্যান্য দ্রব্যের কোন অবশিষ্টাংশ না থাকে সেটি নিশ্চিত করে নিতে হবে। ( উন্নত দেশগুলোতে কিন্তু ময়লার বাস্কেটে করে সিটি কর্পোরেশনের গাড়ীতে এসব খালি কন্টেইনার দেওয়ার সময় বাসা থেকে পানি দিয়ে ধুয়ে দেওয়ার নিয়ম, আর সেটি না করলে জরিমানা করবে সিটি কর্পোরেশন আপনাকে।) কন্টেইনারগুলো ধুয়ে নেওয়ার পরে আমরা আমাদের গ্যাসের চুলায় অথবা মোমবাতি দিয়ে খুব সাবধানে কন্টেইনার মুখ/নীচের অংশ অথবা মাঝামাঝি কোন অংশ পুড়িয়ে ফেলে বা কেটে ফেলে ( মানে নষ্ট করে) তারপর সেটাকে ময়লার ঝুড়িতে বা ফেরিওয়ালার কাছে দিতে পারি।

এক্ষেত্রে কষ্ট করে হলেও কন্টেইনার ধুয়ে নেয়া উত্তম, কারন এগুলোর মধ্যে কোন বিস্ফোরণ প্রবণ অবশিষ্টাংশ থেকে গেলে, আগুনে পোড়ালে তা বার্ষ্ট করে আমাদের শারিরীক ক্ষতি করতে পারে। তাই নিরাপত্তার খাতিরে ধুয়ে নিতে হবে সেগুলো। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পারফিউম বা বডি স্প্রের কোন কন্টেইনার আগুনের সংস্পর্শে আনা যাবে না কোনো মতেই। কারণ এগুলোর অবশিষ্টাংশ অত্যন্ত দাহ্য বা বিস্ফোরণোন্মুখ।

যদি ফেলে দেওয়ার এই প্রক্রিয়াকে আমাদের কাছে বাড়তি ঝামেলা বলেও মনে হয়, তবুও এই পদ্ধতি আমাদের অনুসরন করা উচিত নকল প্রসাধনী কিনে আমরা যাতে ঠকে না যাই তা এড়ানোর কাজে কিছুটা সহায়ক ভূমিকা নিতে চাইলে। আমাদের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি খালি কন্টেইনার জমিয়ে রেখে কোন এক অবসরে আমরা এই কাজটি করতে পারি, যা খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়।

দেশটা শুধু প্রশাসন বা সরকারের নয়, দেশটা আমাদের জনগনেরও। তাই সব ক্ষেত্রেই সচেতনতা গড়ে তুলতে আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেও সচেতনতার অভ্যাস করতে হবে, তবেই হয়তো ভালো থাকার মতো একটি স্বদেশ পাবো আমরা পৃথিবীর বুকে।

রাত্রির ছায়া

লেকের গভীর কালো জলে রাত্রির ছায়া
চাঁদের প্রহর আকাশের বুকে,
শুধু তুমিই হারিয়ে গেলে কালের গতিতে
অজানা সে কোন্ পথের বাঁকে।
এসো ফিরে একদিন যদি প্রাণ চায়
দেখতে আমায় এক মুহূর্ত,
আমি বসে রবো দুয়ারের পাশে
পথচেয়ে নির্বাক বিমূর্ত।

যদি মন কাঁদে বরষার সাথে
ঝরে অঝোরে অশ্রু হয়ে,
জেনো ভেজা কামিনীর গন্ধ হয়ে
তোমার কপাল যাবো ছুঁয়ে।
যদি ভুলে যেতে চাও তবে ভুলে যেও
অনেক যত্ন করে আমায়,
তবু ভালো থেকো দিনের শেষে
যেথা সন্ধ্যা মেশে রাত্রির সীমানায়।

ভীড়ের আড়ালে

ঠাসাঠাসি ভীড়ের মানুষ কি যেন খোঁজে হন্যে হয়ে। ২১ শের বইমেলার গেইটে, বাণিজ্যমেলার ফটকে, ঈদের ছুটিতে রেল-স্টেশনে, পূজোর মণ্ডপে, বেপরোয়া হন্তদন্ত মরিয়া গিজগিজে মাথায় মাথায় ঠুকাঠুকি করে কি খোঁজে ইহারা?

নিত্যকার একঘেয়ে আটপৌরে জীবনের ক্লান্তি এড়াতে, দুঃখগুলো মুছে ফেলতে, রোগশোকের ক্লিন্নতা ভুলতে, সম্পর্কের জটিলতা অবসানে “হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে” ভেবে ভেবে দূরে যেতে চায় তারা।

দ্রুতগতি বাহনে দূরে কোথাও পৌঁছে গিয়ে দেখে, ছায়ামূর্তির মতোন ক্লান্তিগুলো তারো আগে সেখানে পৌঁছে গিয়ে চোখ মুদে দুলছে আরামকেদারায়। আড়চোখে পথিককে মেপে নিয়ে ছায়ার দখল বুঝিয়ে দিয়ে, আবার জেঁকে বসে মনে ক্লান্তির মূর্তিগুলো তেমনি আগের মতোন সে বেলাতেই।

দূর পথ ঘুরে, ঘরে ফিরে এসে, মানুষগুলো তখন নিজের মনকেই বোঝায়, “হোলো না এবার, নেক্সট টাইম জমবে ফাটাফাটি ছুটি।”

জীবন পেরিয়ে যায়, তবু অবসাদ বিহীন একখণ্ড অবসর পোহানো হয় না আর কারো।

জীবনের EMI

আর জন্মে পাখি হই যদি,
ভুলে যাবো এইসব মান-অভিমান।
বেদনা জাগায় এরা হৃদয়ের প্রতি কোনে,
জাগায় রাত্রি আমারে প্রতিদিন।

কে চেয়েছিলো সাধ করে বলো
এইসব বেদনা অপার? তুমি নাকি আমি?
তবু ঠেলে দেয়া এক দ্রুতগতি মহাকাল থেকে
কখন ভূমিষ্ঠ হলাম নিজেরই অজান্তে।
তারপর চড়া দুঃখের সুদে অল্প কিছু
সুখের ঋণে বেশ আছি বুঝি
এই পৃথিবীর বুকে।

থাকাটা, থেকে যাওয়াটাই
আসল আসলে।
বাকী সব চড়া সুদে ঋণ।
কিছুকাল পৃথিবীর
বুকে কাটিয়ে যাবার
নিগূঢ় মূলধন
লাভে আর লোভে।

*( EMI ক্যালকুলেটর দিয়ে ব্যাংক লোন পরিশোধের হার মাপা যায়।)

বর্ণবাদ

আমি সাদা, তুই যে কাল, তুই মন্দ, আমি ভাল।
আমি পাব হাজার ডলার, তোর কপালে ফুটোকড়ি,
তুই থাকবি ভাঙ্গা ঘরে, মোর প্রাসাদ উঠবে গগনফুড়ি।
আমি পাবো জ্ঞানের আলো, ছুটবো চন্দ্র সূর্যপাণে,
তাতে তোর কি আসে যায়? মজে থাক্ সস্তা দারুপানে।
আমার আছে মানবাধিকার, জানি আমি হিউম্যান রাইট,
তুই ব্যাটা বড়ই টাউট, দিতে হবে আচছা টাইট।

ছুঁসনে আমায়, জাত যাবে মোর,
তোর ঠিক নেই, তুই ব্যাটা চোর।
তোর দেশেতে বন্যা-খরা, শীঘ্র নেমে আসবে জরা,
আমার স্বদেশ ফুলে ভরা, জোছনা রাতে গুনবো তারা।

আমি খাব হাজারটা ডিশ, বিফ-মাটন- বার্গার-ফিশ,
তুই শুয়ে থাক্ খালিপেটে, কেন মিছে দুঃখ করিস?
আমার গায়ে নীলরক্ত, তাইতো সবাই মোর ভক্ত,
তুই বেচবি তোর শোণিত, সারবে রুগি, বিমার শক্ত।
যদি না চলিস মোর কথাতে, তোর দেশ ভরাবো রক্তপাতে।
ছুড়বো আমি ক্রুজ মিসাইল, আমিই শনি, আমি আজরাইল।
শুনে আমার হম্বিতম্বি, ধুলায় লুটায় তোর পৃথিবী।

আমিই নেতা, স্বাধীন-চেতা,
তোকে দিলাম চক্ষু মেলে, স্বপ্ন দেখার বিশালতা।
তুই পাবিরে ভিক্ষা অনেক,
আমায় দাদা ডাকতে যে শেখ্।

কোনোমতে তোর বেঁচে থাকা,
চলনা ওড়াই শেতপতাকা।
এসব মেনে চল তবে ভাই,
সুখ-শান্তির পায়রা ওড়াই।
গড়বো সোনার বিশ্ব মোরা,
আয় ছুটে আয় সবাই তোরা।

রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … পঞ্চম পর্ব

লাইফস্টাইল নিয়ে লেখাগুলোয় কোনো কোনোটা আমার মৌলিক অভিজ্ঞতা থেকে অনুসৃত জীবনাচরণ। কোন কোনোটা আবার নানা সূত্রে প্রাপ্ত। কোথা থেকে এগুলোর প্রাপ্তি, নিজের না অন্যের ভাবনা, তা মাথায় না রেখেই আমি একটি টোটালিস্টিক বা সামগ্রিক কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বলবো “গার্হস্থ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” নিয়ে। বিষয়টি শুনতে খুবই বোরিং, লিখতেও বোরিং লাগলেও, আসলে এটি অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয় ঘরদোর সামলানোর কাজে।

উন্নত দেশের সিটি করপোরেশনগুলো এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ঘর-গেরস্থালীর নিত্যদিনের আবর্জনা গুলোকে তারা ৩ টি ভাগে ভাগ করে কালেক্ট করে থাকে। সেগুলো হচ্ছে —

১. ডাম্পিং বর্জ্য, মানে যেগুলো ল্যান্ড রিফিল এ চলে যাবে। ( Black bag)

২. রিসাইকেলেবল বর্জ্য, মানে যেসব ফেলে দেয়া জিনিস পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। অথবা যেগুলো নতুন কোন সামগ্রী বানানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে। ( Yellow bin)

৩. গ্লাস রিসাইকল, মানে কাঁচের তৈরি বর্জ্যগুলোকে তারা আরেকটা চারকোনা খোলা ডাস্টবিনে কালেক্ট করে। যাতে এসব ভঙ্গুর জিনিস অন্য রিসাইকেলেবল জিনিসপত্র ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে বাঁধা না হয়ে দাঁড়ায়। ( Blue bin) অলরেডি ভেঙে যাওয়া কাঁচগুলোকে তারা প্রথমে কাগজে মুড়িয়ে এবং তারপর প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে বিনে ফেলে। যাতে পরবর্তীতে ভাঙা কাঁচে কারো হাত না কাটে এবং সহজে আলাদা করা যায়।

উন্নত বিশ্বে সিটি করপোরেশনের ময়লা সংগ্রহের গাড়িগুলো কোন এলাকায় বা কোন রোডে সপ্তাহের কোন দিনটিতে ল্যান্ড রিফিল এর বর্জ্য সংগ্রহ করবে তা বছরের শুরুতেই তাদের ছোট্ট এক পৃষ্ঠার ক্যালেন্ডার এ জানিয়ে দেয়। আর রিসাইকল বা গ্লাস এর বর্জ্য সাধারনতঃ ১৫ দিনে একবার ( নির্দিষ্ট দিনে) সংগ্রহ করে থাকে। এভাবে যার যার নিজ নিজ ঘর থেকেই আবর্জনাগুলো আলাদা আলাদা ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে সেদেশের সরকারের পক্ষে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বেশ সহজ হয়ে দাঁড়ায়। যে বর্জ্যের জন্য যে নির্ধারিত পাত্র বা ব্যাগ, সেটি ছাড়া ময়লা নিতে অস্বীকার করবে করপোরেশন গাড়ি চালক। So no way, U hv to use it, dear!

যেহেতু আমাদের বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের বর্জ্যের অব্যবস্থাপনার কারণে মশা-মাছিবাহিত, জীবাণুবাহিত নানা রোগে আমরা আক্তান্ত হচ্ছি এবং সেই সাথে বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণ, নদী দূষণ এরকম নানাবিধ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় সারা জাতি ভুক্তভোগী হচ্ছি….. তাই আমার নিজস্ব ভাবনা ও অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে এব্যাপারে কিছু বিষয় আমি আগামী ২/১ লেখায় তুলে ধরবো ভাবছি।

কোরবানি ঈদ পরবর্তী দাওয়াত দেয়া ও দাওয়াতে যাওয়া পর্ব এখনো চলমান থাকায় লিখতে ক্লান্তি এসেছে কিছুটা। তবু বিষয়গুলো নিয়ে লিখবো ভেবেছি যেহেতু, তাই কিছুটা ক্লান্তি নিয়েই আবার লাইফস্টাইল নিয়ে লেখায় ফিরে এলাম। একসাথে সবাই মিলে “ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু” বলে আবার ছুটির দিনশেষে যার যার লাইফস্টাইলে সুন্দরভাবে ফিরে যাবার শুভকামনায় আজ এখানে শেষ করছি। ভালো থাকুন সকলে।

তুলনা

রূপসী নারী এক
হাওয়ায় ভেসে যখন
হেঁটে গেলো সাগর বালুকায়,
মনে হোলো আকাশ এসে
চুমু খায় তার ভীরু পায়।
অজস্র চুলের ঢাল
শঙ্খচূড় সাপের মতোন
হিসহিসিয়ে ফণা তুলে
ঢেউয়ের পানে ধায়।

বনরাজী তার সকল
শ্যামল সুধা ঢেলে দিয়ে
সাজালে তার অঙ্গভূষণ।
ফুলেরা পড়ালো হার,
সিঁথিপাটি জড়োয়ার।

কেবল তুমিই যুবক
যৌনতার চক্রযানে চড়ে
তারে মেপে নাও গজফিতায়।
তারপর পোষ্টারে সেঁটে
গেঁথে দাও তাকে
রঙচটা দেয়ালে
চটচটে কামের আঠায়।

রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … তৃতীয় পর্ব

যেহেতু কোরবানি ঈদ আসন্ন, আর মাত্র দুটি’ দিনের অপেক্ষা। তাই পুরুষ বন্ধুদের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়ে ২/১ টি পোস্ট আমার নারী বন্ধুদের জন্য দিতে চাই।


এখনকার সময়ের ট্রেন্ডি লুক।

ঈদের সাজ নিয়ে কমবেশি সব বয়সী নারীরই নিজস্ব একটি প্ল্যান থাকে। থাকে কিছুটা সাজসজ্জার প্রস্তুতি। চলুন চোখের সাজ নিয়ে কথা বলি আজ। দেখে নিই আইলাইনার মোটামুটি কতো রকম ভাবে লাগানো যায়। এখনকার সময়ের চলতি ২/১ টি ট্রেন্ডের ছবি দেখে নিই।


স্মোকি আই ইজ অলসো ইন। ডার্ক ব্ল্যাক আই মেকাপ ইজ সিম্পলি গর্জিয়াস।

তবে ফ্যাশন জগতে এ মৌসুমে “মোনোক্রোম” মানে সাজপোশাকের সবকিছুই একই বা কাছাকাছি রঙের পড়া highly trendy. কিছুদিন আগেও কন্ট্রাস্ট চলছিলো।

আর মনে রাখবেন, সন্ধ্যা বা রাতের সাজে চোখ ভর্তি কাজল এবং ডার্ক ব্ল্যাক আইশ্যাডোর বিকল্প কোনো কালেই ছিলো না নিজেকে আরো চমৎকার দেখাতে।


দিস পিক কন্টেইন্স দি ব্যাসিক স্টাইল অফ আই লাইনার।

আগাম ঈদ মোবারক সবাইকে।

মসকিটো ট্র্যাপ

আমার বাসায় কদাচিৎ কোন মশার দেখা মেলে। কোন এক বিদেশি ম্যাগাজিনে পড়ে আমি এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করছি নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে আসার পর গত ২ বছর থেকেই। কারো ইচ্ছে হলে ট্রাই করতে পারেন। আশাকরি বাসা থেকে মশা দূরে থাকবে সারাবছর।

উপকরণঃ
১. ঈস্ট…. ১ চা চামচ
২. ঈষদুষ্ণ পানি… ১ গ্লাস
৩. ব্রাউন/ নরমাল চিনি… দেড় চা চামচ। ( মূল পদ্ধতিতে ব্রাউন সুগার)
৪. প্লাস্টিকের খালি বোতল… ১ টি।

পদ্ধতিঃ
বোতলটি মাঝ বরাবর কেটে নিন। নীচের কাটা অংশে উল্টো করে বোতলের উপরের অংশ রাখতে হয়। আমারটার পানি কমে গিয়েছে মাসখানেক আগে রাখার ফলে। পানি একেবারে উবে যাওয়া পর্যন্ত রাখি আমি। এরপর সচরাচর নতুন বানাই। পাউরুটি বানাতে ইস্ট লাগে। যে কোন বেকারি থেকে দেখে নিন। গ্রসারী শপ থেকে কিনুন। কম / বেশি দুই রকম দামের ই ইস্ট আছে। দুই রকম ই কাজ করে। ১ টাতেই কয়েক মাস চলে যাবে। ৩৫ থেকে ১০০ টাকার ১ শিশি ইস্টে বছর পার হয়ে যায় এই পদ্ধতিতে ব্যবহারের জন্য। খরচসাপেক্ষ নয় এটি।

নীচের অংশে হালকা গরম পানি ঢেলে ১ চামচ ইস্ট মিশিয়ে নেড়েচেড়ে ইস্টকে একটিভ করে নিন। চিনি মিশিয়ে নাড়ুন। এরপর বোতলের উপরের কাটা অংশ ( মুখ) উল্টো করে নীচের অংশে গুজে দিন। স্কচটেপ দিয়ে দুই পার্টের জয়েন্ট আটকে নিন। ঘরের কোনায় রেখে দিন। এরকম কয়েকটাও বানিয়ে রাখতে পারেন। আমার বাসা তো মশামুক্ত আছে। ইনশাআল্লাহ আপনার বাসাও মশা থেকে সুরক্ষিত থাকবে।


(ছবি আমার বাসার বোতলে আটকে যাওয়া কিছু মশা)

youtu.be/pNjyLRQutXs

ইউটিউবে একটি ভিডিও আছে এ পদ্ধতি কাজ করেনা তা জানিয়ে। কিন্তু, এই ভিডিওর ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ভুল যেটা হচ্ছে তা হলো, ইস্ট একটি জীবাণুর পাউডার। হালকা গরম পানিতে না দিলে তা একটিভেট হবেনা, তাই কাজ ও করবে না। এখানে ভদ্রলোক পানি হালকা গরম করে না নেওয়ায়, নরমাল তাপমাত্রার পানি নেওয়ায় কোনো কাজ হয়নি মসকিটো ট্র্যাপ।

youtu.be/ycBv24djPDM

একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, তা হলো, অন্যান্য মশার মতো এডিস মশাও এই ট্র্যাপে আকৃষ্ট হবে কিনা? তার উত্তর হচ্ছে, স্ত্রী এবং পুরুষ উভয় টাইপ এডিস মশাই ফুল ও ফলের মধু এবং শর্করা জাতীয় খাবার খায় নরমাল সময়ে। স্ত্রী এডিস মশা শুধুমাত্র প্রজননকালীন সময়ে রক্তপান করে। এই মিশ্রণে চিনি থাকায় এডিস মশা ও আসবে এর দিকে।

যেহেতু খুব অল্প খরচে এবং ফেলনা আরো কিছু উপাদান দিয়ে বানানো পদ্ধতি এটা, দেশের যা পরিস্থিতি, তৈরি করে ঘরে রাখলে বিশাল কর্মযজ্ঞ সাধন করতে হবে না। আমি ফল পাচ্ছি। একটা উপায় অবলম্বন করে আমার বাসা মশামুক্ত প্রায়, জানালে কারো ক্ষতি তো নেই। ধন্যবাদ সবাইকে।

রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … দ্বিতীয় এবং চতুর্থ পর্ব

ডেঙ্গু নিয়ে কমবেশি আতঙ্কিত আমরা দেশের প্রায় সবাই এবং এই দুষ্ট পাজি হতচ্ছাড়া এডিস মশা আমাদের রক্ত খেয়ে রোগ ছড়িয়ে শুধু প্রাণনাশের কারণই হচ্ছে না, ইট-কাঠের নাগরিক জীবনে আমাদের অনেক শখের সবুজের সমাহার ফুল-ফলের টবগুলোকেও করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের চয়েসে ডিম পাড়ার আরো স্থান তো আছেই। তা না, এক্কেবারে গাছপ্রেমীদের কলিজায় হাত!

এডিস মশার ডিম থেকে জমাট বাঁধা স্বচ্ছ পানিতে লার্ভার জন্ম হয়। কিন্তু তারো কয়েকমাস আগে এরা নিয়মিত পানির সংস্পর্শ পায় এরকম জায়গায় ডিম পেড়ে রাখে। যেহেতু টবে নিয়মিত পানি দিতে হয়, তাই টবের গা ভেজা স্যাঁতসেতে থাকে, যেটি এদের ডিম পাড়ার প্রিয় স্থান।

সেক্ষেত্রে আমরা এডিসের ডিম পাড়া রোধ করতে মাটির টবের বদলে প্লাস্টিকের টব ব্যবহার করতে পারি। কারণ, প্লাস্টিক পানি শোষণ করে না।

তারো চেয়ে ভালো হয় যদি …

মাটির টবগুলো ( অবশ্যই মুখের কাছে কোন ফাঁক না রেখে) বসিয়ে রাখা যায়, এমন প্লাস্টিকের বালতি বা পাত্রের মধ্যে গাছসহ বসিয়ে দিতে পারি।

মাসে ১ বার টবের নীচে চুঁইয়ে পড়া পানি টব তুলে রেখে বালতি /পাত্র থেকে ফেলে দিলেই হোল।

প্লাস্টিকের বালতি বা পাত্রের সাথে ভেতরের টব লেগে থাকবে না, তাতে এডিসের ডিম পাড়ার চান্স ও কমে যাবে বহুগুণ। তবে সাবধান, পাত্রের মুখের কাছে টব বসানোর জায়গায় কোনো ফাঁক থাকলে লেডিস এডিস কিন্তু ভেতরে যেয়ে নির্বিঘ্নে ডিম পাড়বে। হাজার হোক শখের দাম ষোল আনা। আর শখ করে লাগানো গাছ আমাদের প্রাণে জোগায় একটু বাড়তি স্পন্দন।
.

রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … চতুর্থ পর্ব

ঈদে বাড়ি যাওয়ার ভীড়ে যারা কয়েকঘন্টা ব্যাপী জ্যামে আটকে আছেন, তারা ন্যাচারাল এয়ারকন্ডিশনড ইফেক্ট & কুলিং সেনসেশন পেতে…. তোয়ালে রুমাল সাথে থাকা পানিতে বা নরমাল জলে ভিজিয়ে ঘন্টাখানেক পরপর ঘাড়-হাত-মুখ মুছে ফেলুন।

চাইলে ভেজা রুমালটি হাতেই রাখুন। বোতল থেকে পানি ঢালবেন ভাঁজ করা রুমালের উপর বোতল উপুড় করে, তাতে পানি কম লাগবে। দেখবেন, গরম এবং ক্লান্তি নিমেষে উধাও হয়ে কেমন চনমনে হয়ে উঠছে আপনার ভ্রমণ।

যে কোন লং রোড জার্নিতেই এটা প্রযোজ্য। সেক্ষেত্রে আপনার গাড়িতে এসি থাকলেও জানালা খুলে কিছুক্ষণ বাইরের ( ফ্রেশ?!) বাতাস উপভোগ করতে অসুবিধা হবে না।

Have a safe journey.

রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … প্রথম পর্ব

আমার প্রবাস জীবনে আমি প্রথম চার বছর অষ্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে কাজ করতাম। পরবর্তী ৫ বছর নিউজিল্যান্ডে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ। এছাড়াও নানা দেশজাতির মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয়েছে সেখানে কাজের সুবাদে।

১০ বছর অসি এবং কিউয়িদের সাথে ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সহকর্মী হিসাবে আমাকে কখনোই তারা বিদেশি হিসাবে ট্রিট করেনি। বরং খুব ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রায় পারিবারিক একটা সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলাম আমি, কয়েকটি অসি এবং কিউয়ি পরিবারের সাথে।

এর ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবনে তারা নানা কাজে যেসব সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে, সেগুলোতে আমিও অভ্যস্ত হয়ে গেছি বেশ কিছুটা।

এই যেমন ধরুনঃ
ওভেন বা ফ্রিজ নিরাপদ ও সহজলভ্য কোন মিশ্রণ দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়।
ফ্রিজ সহজে দুর্গন্ধমুক্ত রাখা।
গ্লাস ক্লিনার ছাড়াই কাঁচের আয়না/ডোর পরিষ্কার।
ত্বক বলিরেখা মুক্ত রাখা মাত্র ১ টি মশলার সাহায্যে।
ধূমপান ও নাগরিক জীবনে দেহে জমানো টক্সিন ফুটবাথের মাধ্যমে দূর করা।
কিছুতেই ঘুম আসছে না এমন রাতেও কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া।
মেয়েদের প্রি মেনসট্রুয়্যাল সিনড্রোম মানে পিরিয়ড হওয়ার আগের অস্বস্তিভাব কিভাবে দূরে রাখতে হয়।

শরীর ও মনের ব্যালান্স এবং স্টাবিলিটি ১ মিনিট ব্যায়ামে বজায় রাখা।

…. এরকম নানা পার্টিকুলার বিষয়ে আমি তাদের ফলো করা কিছু বিষয় অনুসরণ করি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজ হয়। লাইফস্টাইলের এসব সহজ উপায়গুলো পাঠকদের জানার জন্য আমি পোস্ট দিতে পারি। আসলে আমরা প্রত্যেকে ভালো থাকলেই তো দেশ ভালো থাকবে এবং আমাদের সবুজ দেশটিকে আমরা সবাই অনেক ভালোবাসি।

ভালো থাকার প্রত্যাশায়… আজকের প্রথম পোস্ট।

গতকাল রাতে আমার বাসায় সবজি বাজার এসেছে ১ কেজি ধুন্দল, হাফ কিলো ঢেঁড়শ, আর হাফ কিলো কচুর মুখি। এগুলো থেকে বের হওয়া কিছু ধুলাবালিসহ Chemical residues বা রাসায়নিক বর্জ্যের পরিমাণ আমার দেয়া ছবিতে দেখুন। জেনে কিংবা না জেনে এর অল্প পরিমাণও যদি আমরা খাদ্য আকারে আমাদের শরীরে প্রবেশ করাই, তার ফলাফল হবে মারাত্মক।

আজকাল ডাক্তার চাচা ভাত-মাছ-মাংস-ডিম-দুধ পরিমাণ মতোন খেয়ে সবজি খেতে বলেন বেশী বেশি। চাষি ভাই অধিক ফলনের আশায় সার-কীটনাশক প্রয়োগ করেন বেশি বেশি। আড়তদার দাদা বা সবজি মামা প্রিজারভেটিভের সাথে তাল মিলিয়ে দাম হাঁকান বেশি বেশি। আর আমরা তা খেয়ে অসুস্থও হচ্ছি একটু বেশি বেশিই।

সবজি, ফলমূলে থাকা রাসায়নিক দূর করতে সামান্য খরচ করতেই হবে আপনাকে সচেতন হলে। থাইল্যান্ডে প্রস্তুত “কার্বন গ্রীন” নামের ১০ স্যাশের ১ টি প্যাকেট আজকাল বাংলাদেশে পাওয়া যায়। দাম ১১০ টাকা। ১ স্যাশে ১০ লিটার পানির জন্য। সুতরাং ১ টি স্যাশেই আপনি বেশ কয়েকবার ব্যবহার করতে পারবেন। ১ প্যাকেট যাবে বেশ কয়েকমাস। প্যাকেটের গায়ে লেখা পরিমাণের চেয়ে অনেক কম পরিমাণ ব্যবহার করে ফল পাবেন আপনি নিম্নের পদ্ধতিতে…

পদ্ধতি :
মোটামুটি ৩/৪ কেজি সবজি ফলমূলের জন্য ৫/৬ চিমটি বা আরেকটু বেশী কার্বন গ্রীন পাউডার, হাফ চায়ের কাপ ভিনিগার, হাফ চায়ের কাপ লবণ মাঝারি বালতিতে ৪/৫ লিটার নরমাল পানির সাথে মিশিয়ে সবজি ঢুবিয়ে রাখুন ঘন্টাখানেক। এরপর পিঠা ভাজার ছিদ্রযুক্ত চামচ দিয়ে সবজিগুলো চালনির মতোন পাত্রে তুলে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে, তারপর ফ্রীজে সংরক্ষণ করুন।

পেঁয়াজ, রসুন, ধনেপাতা ইত্যাদি অধিক পচনশীল জিনিস ছাড়া মোটামুটি কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সব সবজিই এভাবে রাসায়নিক মুক্ত করে তারপর খাবেন। কার্বন গ্রীন পাউডার না পেলে শুধু লবন আর ভিনেগার মেশানো পানিই ব্যবহার করুন এ কাজে। বেশ খানিকটা কাজ তাতেও হবে।

মনে রাখবেন, অসুস্থ হলে ডাক্তার বদ্যি পথ্যের পেছনে কাঁড়ি কাঁড়ি খরচ ছাড়াও ১২ টা বাজা শরীর নিয়ে ভোগান্তির শেষ থাকবে না।

আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।