যাযাবর জীবন এর সকল পোস্ট

মাঝে মাঝে হাসতে হাসতে তোর চোখে জল নামে

আজ রাতটা অন্যরকম;

একটু বৃষ্টি বৃষ্টি
হালকা বাতাস
তবুও গরম,
ঠিক তোর মতন;

আদর করতে করতে হঠাৎ অভিমান
চুমু খেতে খেতে উল্টো হয়ে শোয়া
রাগ করতে করতে জড়িয়ে ধরা
বকতে বকতে ঠোঁটে ঠোঁট,
সব উল্টো কাজ তোকেই মানায়
আর প্রকৃতিকে;

মাঝে মাঝে হাসতে হাসতে তোর চোখে জল নামে
আর ওদিকে খাঁ খাঁ রৌদ্দুরের মাঝে ধুম করে বৃষ্টি,
তুই আমায় হর হামেশাই লণ্ডভণ্ড করিস
ভালোবাসায়
আর ঝড়ে লণ্ডভণ্ড করে প্রকৃতি;
আমি তোকেও বুঝি না
বুঝি না প্রকৃতি,
তবুও তোকেই ভালোবাসি রে নারী
আর ভালোবাসি প্রকৃতি,
তোদের সবগুলো রূপে;

মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে
নারীই কি প্রকৃতি?
না প্রকৃতিই নারী?

হায়! আমার আজো মানুষ হওয়া হলো না ভবে


জনসংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন
মানুষ কোথায়?
বাড়ছে মানুষের মাঝে পশুবৃত্তি
মনুষ্যত্ব হারায়;

জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে কি মানুষ বাড়ে?
তবে তো পশু পাখিও বাড়ছে কাতারে কাতারে;
পশুর পেট থেকে বের হলে তাকে পশু বলে
পাখির পেট থেকে বের হলে তাকে পাখি বলে
মাছের পেট থেকে বের হলে তাকে মাছ বলে
অথচ মানুষ পেট থেকে বের হয়েও কেন শুনতে হয়
মানুষ হ:

কে কবে শুনেছ?
পশু তার সন্তানকে বলেছে, পশু হ!
পাখি তার সন্তানকে বলেছে, পাখি হ!
মাছ তার সন্তানকে বলেছে, মাছ হ!
তবে মানুষের সন্তান’কে কেন শুনতে হয়?
মানুষ হ;

তবে কি মানুষের খোলসে আমরা মানুষ নই?
আচ্ছা! মানুষ হয় কিভাবে?

বাল্যকাল থেকে বাবা মায়ের মুখে শুনে এসেছি
খোকা, তুই মানুষ হ,
শিক্ষকদের কাছ থেকে শুনে এসেছি
বাবা’রা, তোরা মানুষ হ;
অথচ জীবনে কে কবে এই গালিটা শোনে নি?
‘অমানুষ’!
জীবনে কত বার’ই না শুনেছি!
মানুষ হবি কবে?
হায়! আমার আজো মানুষ হওয়া হলো না ভবে;

আচ্ছা! মানুষ বলে কারে?
অমানুষ কি মানুষ নয়?
তবে আমি কে?
কিংবা আমি কি?

উত্তর খুঁজছি…………………

অক্ষর বানিয়ে একটা প্রেমের কবিতা লিখতে চাই

পড়ালেখা আমার কখনোই ভালো লাগে না
আমি স্বভাব ফাঁকিবাজ,
সচরাচর লাস্ট বেঞ্চের ছাত্র ছিলাম আমি
ফাঁকি দেওয়াই ছিল কাজ,
চিরকালের ফাঁকিবাজ;

পড়ালেখা হয় নি আমার
তাই মূর্খ রয়ে গেলাম আজ;

কোন এক শুভ কিংবা অশুভ মুহূর্তে দেখা হয়ে গিয়েছিল তোর সাথে
সেই থেকে মন কবিতা
আর খাতায় আবোলতাবোল প্রেমের ভয়াবহ কাব্য প্রলাপ,
তাও কি হয়েছে আদতে?
যতসব মূর্খের প্রয়াস!

বয়সের সাথে সাথে একদিন প্রেম ভুত মাথা থেকে নেমে যেতেই আমি আবার গণ্ডমূর্খ
মাথা থেকে প্রেম তো নেমে গিয়েছিল, তুই নামিস নি;
মন থেকে লেখা নেমে গিয়েছিল, খাতা থেকে কলম নামে নি;
যখন তখন তোর কথা মনে হলেই এখনো
মাঝে মধ্যে কলমের বদহজমে দাগ পড়ে খাতায়
অনেক চেষ্টা করেও থামাতে পারি নি আঙুলের হাবিজাবি আঁক
শুধু শুধুই কাগজে রক্তদাগ,
মূর্খ হলে যা হয় আর কি!

একবার কোন এক কবিতার গ্রুপে
তোকে নিয়ে আমার এক পাতার এক ফালতু প্রেম আঁক তুলে ধরতেই
শিক্ষিত কবিগণের উপদেশের তুবড়ি –

কিছু নমুনা বলি,
– আরে বাবা! রাবীন্দ্রিক যুগ আছে নাকি? ছোট লিখ;
– এত বড় লেখা কেও পড়ে নাকি? ছোট লিখ;
– বাপু, আজকাল ছোট কবিতা লিখতে হয়;
– আরে মশাই, শুধু ভাবটুকু তুলে আনো তাহলেই কবিতা হয়;

একজন তো আমার পুরো এক পৃষ্ঠা আবোলতাবোল প্রেম আঁক সংশোধন করে এটিকে কবিতা আকার দিয়ে আমাকে পাঠিয়ে দিয়ে বললো
– ভাই, আপনার কবিতাটা সংশোধন করে দিলাম, এবার সংশোধিত পুরো কবিতাটা আবার পোষ্ট করেন
ওনার সংশোধিত কবিতাটি ছিল –
“তোমাকে খুব মিস করছি”

আমি জিজ্ঞাসা করলাম
– ভাই এটি কি কবিতার নাম?

সে হেসে জবাব দিলো
– না রে ভাই এটিই পুরো কবিতা;

জবাবে আমি বললাম
– ভাই, মাফও চাই দোয়াও চাই

মাফ চান কেন?
– এই যে কবিতা লিখতে না শিখেই আপনাদের গ্রুপে পোষ্ট দিয়ে ফেলেছি বলে!

তিনি উত্তর দিলেন
– ঠিক আছে, ঠিক আছে ভাই
সবাই তো আর কবিতা লিখতে পারে না!
সবাই আধুনিক কবিতা বোঝেও না,
ব্যাপার না, চালিয়ে যান;

আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তা কি দোয়া চান?

জবাবে আমি বললাম,
– ভাই, আপনাদের থেকেও ভালো কবিতা লিখতে চাই
আপনাদের থেকেও ছোট
এক লাইনের না কিন্তু!
দোয়া করেন যেন মাত্র এক অক্ষরের কবিতা লিখতে পারি;

জিজ্ঞাসা করলেন, সে আবার কেমন?

– এই যে!
যেমন
‘ক’ তে তো কবিতা হয়ই,
আমি ক এর মাথার উল্টো শুঁড়টা খুলে নিয়ে ব অক্ষর বানিয়ে একটা বিশাল প্রেমের কবিতা লিখতে চাই;

আমায় গ্রুপ থেকে বের করে দেয়া হলো;

আমার আর কবিতা লিখা শেখা হয় নি ……………

মূর্খদের আসলে জীবনে কখনো কিছু হয় না,

আমি সেদিনও মূর্খ ছিলাম
আজো মূর্খই রয়ে গেলাম।

😔

আমি সাগর পাড়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি

আকাশে রোদ
বাতাস আগুন
সাগরে নাকি ঝড়;

আমি সাগর পাড়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি
রোদ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে চোখ
বাতাস পুড়ছে গরমে
আমি পুড়ছি তোতে,

এবেলায় না পারলেও আমার পাশে এসে বসিস ওবেলায়
গরম তুলে দেব ঠোঁটে
তারপর ঝড়ে ঝড় তুলব দুজনে;

ভয় করছে?
বড্ড ভীতু তুই
প্রকৃতির ঝড়ে লণ্ডভণ্ড পৃথিবী
ভালোবাসার ঝড়ে তুই
তোর ঝড়ে আমি,
আয়,
ভয় ভুলে শরীরে বিলীন হ একবার
ঝড় তুলে।

মেঘের পরদা নেই, সূর্য আর পৃথিবীর মাঝে

এখানে আগুনের তাপ বড্ড বেশী
তেতে আছে আজ সূর্য
পানিতেই গরম সইতে কষ্ট হয়
মাটির ভেতর কিভাবে সইব?

এখানে সূর্যের তাপে ফেটে গেছে নীল
ঘোলাটে নীলাভ পুরো আকাশ
পানি ফেটে ফেটে বাষ্প উড়ছে
পানির রঙ ঘোলাটে সবুজাভ

মেঘের পরদা নেই, সূর্য আর পৃথিবীর মাঝে
চামড়া পুড়ছে তাপে
পানিতে থেকেও পুড়ছি আমি
জলীয় বাষ্পের ভাপে

কোটি কোটি মাইল দূর থেকেও সূর্যের এত তাপ!
কবরের তাপ কত হবে?
হাশরের দিন মাথার ওপর সূর্য থাকবে
সেদিন সইব কিভাবে?

এখানে নানা রঙের সমাহার কোনটাই প্রকট নয়

বড্ড ঝাঁ ঝাঁ রোদ আজ এখানে
আকাশটা কেমন যেন ধোঁয়াটে নীল নীল
সাগরটা সবুজাভ নীল,
এখানে সবুজগুলোও অন্য রকম
কচি নারকেল আর ঘন কেয়া তে মেলানো মেশানো;

অনেকক্ষণ রোদে হাঁটলে কেমন যেন এক নেশা লেগে যায়
রোদের নেশা
বালির নেশা
গরমের নেশা
সাগরের নেশা
ঢেউ এর নেশা,
মাঝে মাঝে বালু দিয়ে হাঁটি
মাঝে মাঝে পাথর
আর মাঝে মাঝে পানি,
মাঝে মাঝে ধুসর বালু মাখি
মাঝে মাঝে সবুজ পাতা
মাঝে মাঝে নীলাভ সবুজ লোনা জল,
শরীরে নানা রঙ মাখানোর চেষ্টা করছি
মনে নানা রঙের অনুভুতি;

এখানে নানা রঙের সমাহার
কোনটাই প্রকট নয়
সবগুলো রঙই কেমন যেন হালকা হালকা
একটার সাথে আরেকটা মেলানো
আমি মেলানো মেশানো রঙের খেলা খেলছি একা একা
মনে প্রকট অনুভূতি নিয়ে
আর সবুজের সাথে নীলের মিশে যাওয়া দেখছি
হতবিহ্বল হয়ে;

আমি প্রকৃতির নানা রঙ দেখছি দুচোখ মেলে
আর অনুভুতির নানা রঙ দেখছি মন খুলে খুলে;

একদিন আমি আর কোথাও যাব না
একদিন ভাসবো না নীলে
একদিন সবুজও দেখব না
ধুসর মাটিতে মাটি হয়ে যাব মিলে।

স্মৃতির জাবরে এখনকার সাথে তখনকার তুলনা

কিছু পুরনো গল্প
স্মৃতির অসুখ
কিছু পুরনো সম্পর্ক
ভাঙা কাঁচ,
আমরা বর্তমান সময়ে ঘুরেফিরে বেড়াই অতীত সঙ্গে নিয়ে;

বর্তমান সংসারে পুরাতন প্রেমের জাবর কাটি
যখনই একলা থাকি
আর মনে মনে তুলনার পাহাড়,
কি রঙিনই না ছিল সেইসব দিনগুলো!
কি চাঁদনিই না ছিল সেইসব রাত্রিগুলোতে!
কি বৃষ্টিই না হতো টিনের চালে!
আহ! কদম, ডালে ডালে;

কেন?
এখন দিনের গায়ে থেকে রঙ কোথায় উড়ে গেছে?
চাঁদ কি কম জ্যোৎস্না বিলাচ্ছে?
টিনের চাল হয়তো নেই আর, বিল্ডিং এ চারিধার ছেয়ে গেছে
তবে বৃষ্টি! সে কি কম হচ্ছে?
না কি গাছে কদম কম ফুটছে?

স্মৃতির জাবরে এখনকার সাথে তখনকার তুলনা
সে নতুন কিছু নয়,
সবাই কিছু না কিছু করে
কিছু না কিছু একলা সময়ে
একা একা, মনের ঘরে;

তবে দেখিস!
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পুরনো প্রেমের স্বপ্ন ভঙ্গ না হলেই কিন্তু
সম্পর্ক কাটবে ভাঙা স্মৃতির কাঁচে
বড্ড ঠুনকো, সম্পর্কগুলো;

প্রত্যেকটা প্রেমই ভুল
যখনই তা হত,
স্মৃতির আয়না থেকে ভুলের দাগ মুছে দিতে হয় ক্রমাগত
আজকের প্রেম, আগামীর গত।

তুই অনেক কাছে থেকেও অনেক দূরে

দূরেই ভালো
দূর থেকেই ভালো

কাছের কাছে অনেক আশা
কাছে আসলে অনেক হতাশা

তুই অনেক কাছে থেকেও অনেক দূরে
আমি অনেক দূরে থেকেও তোর ভেতরে

থাক না কিছু আড়াল
বাইরে ও ভেতরে

থাক না কিছু আড়াল
কাছে ও দূরে

💂‍♀️💂‍

একদিন দেখিস স্বপ্ন ঠিক সত্যি হবে

একদিন চল দূরে কোথাও যাই
বহু বহু দূরে, স্বপ্নের গাড়ি চড়ে,
একদিন তুই আর আমি, সারাদিন ঘুরব
আঁকাবাঁকা ধু ধু ফাঁকা রাস্তাটা ধরে;

গাড়ির স্টিয়ারিং এ তুই
আমি পাশের সিটে
তোর চোখ রাস্তায়
আমি দেখছি তোকে,
চুল উড়ছে তোর
আমি ডুবছি তোর চুলে
প্রশ্রয়ের হাসি তোর ঠোঁটে
আমি টুক করে চুমু খাচ্ছি ঠোঁটে,
মনে প্রেমের ঝড়
রাস্তায় ঝড়ের বেগে গাড়ি
বাতাসে প্রেম প্রেম গন্ধ
আমরা কেও মনের গতি দেখি নি;

একদিন দেখিস স্বপ্ন ঠিক সত্যি হবে
একদিন আমরা সারাদিন ইতিউতি ঘুরব মন ভরে,

তারপর রাত নামতেই স্বপ্ন ভেঙে যার যার ঘরে,
আচ্ছা!
ঘুম থেকে না উঠলে সত্যিই কি তুই আমার হতি?

💕💕💕

যেখানে তোকে লিখে যাচ্ছি পাতায় পাতায়

একদিন তোকে দেখতেই মন বলে উঠেছিলো – ভালোবাসি,
সেই থেকে শুরু,
তারপর আমি আর নীল ডায়েরি;

সবাই ভালোবাসার কথা বলতে পারে না
আমিও পারি নি কখনো,
শুধু আঙুল টেনে গেছে হিবিজিবি রেখা
কালো কালিতে, নীল ডায়েরিতে;

যখনই তোকে দেখি
কেমন যেন মন উদাস অনুভূতি
ঠিক বোঝাতে পারব না তোকে,
আমি শুধু চেয়ে থাকি
তোর দিকে
আড়চোখে;

ঐ যে একফোঁটা ঘাম জমে আছে তোর নাকের ওপর
ওটা ঘাম নয় রে, মুক্তোদানা
ঐ যে ঠোঁটের ওপর ছোট্ট একটা তিল
ঐ যে গালের ভাঁজে টোল
ক্ষণে ক্ষণে ভ্রুকুটি
ঠোঁটের মাঝে লেগে থাকা আদর
দীঘল কালো চুলের ঢেউ
শরীরের নানা অচেনা বাঁক
আমায় বড্ড হতবিহবল করে,
ইচ্ছে করে তোর খোলা চুলে হারিয়ে যেতে
ইচ্ছে করে ডুবে যেতে ঠোঁটে
ইচ্ছে করে তোকে জড়িয়ে ধরতে বুকে,
ইচ্ছেগুলোকে গলা টিপে ধরে আমি এক জড় জীবন কাটাই
নীল ডায়েরি হাতে
যেখানে তোকে লিখে যাচ্ছি পাতায় পাতায়
ভালোবাসায় ভরে;

ইদানীং প্রায়শই নীল আকাশের নীচে বসে থাকি নীল হয়ে
কোন এক শ্যাওলা দুপুরের অপেক্ষায়
কিংবা কালো মৃত্যুর,
কোন একদিন সবুজ দুপুর না আসলেও জীবনে
কালো দিন তো আসবেই,
ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে বলা হবে কি?
কে জানে?

কোন একদিন সুযোগ হলে
কোন একদিন আমার কথা মনে হলে
নীল ডায়েরিতে ভালোবাসা পড়ে যাস এসে
সবুজ সবুজ কোন এক শ্যাওলা দুপুরে;

আমায় খুঁজছিস?
নীলের দিকে তাকা,
মৃত মানুষ ফিরে আসে না।

অনেকক্ষেত্রে তো মানুষ সম্পর্কও নষ্ট করে ফেলে

তুলনা করতে আমাদের জুড়ি মেলা ভার
কি মেলে তুলনা করে?
মানসিক অশান্তি ছাড়া আর;

কোথায় তুলনা নাই?
সংসারে তো হরে দরে;

স্বামীর সাথে
– ওর স্বামীর এটা করেছে ওটা করেছে
তুমি কি কচুটা করেছ?
– তার স্বামী গাড়ী কিনেছে, বাড়ি কিনেছে
আমি পড়ে আছি তোমার ভাঙা সংসারে;

স্ত্রীর সাথে
– ওর বৌ সারাক্ষণ সেজেগুঁজে থাকে
তুমি কেন ঘরে ফকিরনীর সাঁজে?
– দেখ তার বৌ কি বিশাল চাকরি করে
তুমি সারাদিন হাড়ি ঠেলো সংসারে;

সন্তানের সাথে
– ওর ছেলে স্বর্ণ পাশ দিয়েছে
তুই অশ্বডিম্ব,
– ওর মেয়ে ডাক্তার হয়েছে, তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার
তুই কি হয়েছিস?

ভালোবাসার সাথে
– ওর প্রেমিক এটা দিয়েছে ওটা দিয়েছে
তুমি কি দিয়েছ?
– দেখ, ওরা বিয়ে করে নিয়েছে
আমাদের কি হবে?

শারীরিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে
– ও এত মোটা আমি কেন চিকন?
– সে এত চিকন আমি কেন মোটা?

অর্থ বিত্তের ক্ষেত্রে
– ওর এত এত আছে! আমার কেন নাই?
খ্যাতির ক্ষেতে
– ও পেরেছে আমি কেন পারি নাই?

আরও কত, কত…….

তুলনা থেকে শুরু
তারপর ঈর্ষা
ক্ষোভ
ক্রোধ
মানসিক অশান্তি
অনেকক্ষেত্রে তো মানুষ সম্পর্কও নষ্ট করে ফেলে
তুলনার বেড়াজালে;

তুলনা করার আগে একবার আয়নার সামনে দাঁড়াই না!
নিজেকে দেখি
নিজেকে যাচি।

উড়তে উড়তে চলে এসেছে আমার হাতে

কেও কেও শুনেছি ডায়রি লিখে;

আদতে কি ডায়রি লিখে?
নাকি যত্রতত্র অগোছালো মনের কথাগুলোর কাটাকুটি খেলা
খেলে ডায়রির পাতা ভরে;
আর মনের রংবেরঙের অনুভূতিগুলো ধরে রাখে ডায়রি পাতা জুড়ে;

কেও কেও আছে, মানুষের সাথে কথা বলতে বড্ড লাজুক
অথচ প্রতিনিয়ত কথা বলে
ঝগড়া করে
হাসে
কাঁদে,
নিজের সাথে
একা একা,
আর মাঝে মাঝে ডায়রির পাতায় টুকে রাখে
খুব গোপন কিছু কথা,
মাঝে মাঝে যখন খুব আনন্দ হয়
কিংবা খুব কষ্ট হয়,
মাঝে মাঝে যখন কারো কথা খুব মনে পরে
মাঝে মাঝে যখন ভালোবাসার মানুষের জন্য খুব কান্না পায়!
তখন ডায়রির পাতা উলটিয়ে উলটিয়ে
সুখ আর দুঃখের স্মৃতির জাবর কাটে অন্ধকারে
একা একা;

আজ হঠাৎ করে কোথা থেকে জানি একটা ডায়রির টুকরো পাতা
উড়তে উড়তে চলে এসেছে আমার হাতে,
ফেলে দিতে গিয়েও হঠাত চোখ গেলো টুকরো পাতায়;
কোন একটা মেয়ে অথবা ছেলের মনের কথা
অনেক আবেগ আর অনুভূতি মেশানো ভালোবাসাবাসির কথা,
একটি পাতা পড়ে কি আর পুরো গল্প বোঝা যায়?
তবুও কেন জানি চোখ ভিজে উঠলো একটুকরো ডায়রির পাতায়,
আবেগ অনুভূতিশুন্য মানুষ হয়েও কেন জানি মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেলো
কি জানি কোন হতভাগা অথবা হতভাগিনী ডায়রি লিখেছিল অনেক ভালোবাসায়;

আমি কখনো ডায়রি লিখি নি,
তোমরাই বল!
গাছ কি ডায়রি লিখে?

গাছেরও হয়তো অনুভূতি থাকে
সময় সময় কাঁদে
সময় সময় হাসে
আচ্ছা! গাছও কি কাওকে ভালোবাসে?

গাছের তলে বসে মানুষ ভালোবাসাবাসি করে
হাসে
কাঁদে
আর যাবার সময় তার ছালে লিখে যায় ভালোবাসাবাসির কথা
কাটাকুটি খেলার ছলে;
গাছ পড়ে,
হাসে
কাঁদে,
তার নিজের কথা লিখা হয় না কখনো ডায়রির পাতা ভরে
কাটাকুটি খেলার ছলে।

😞

ক্ষুধা জানান দিয়েছিলাম চিৎকার করে কেঁদে

এই যে আমাদের এত এত আছে!
তবুও চাহিদার কি শেষ আছে?
কি হবে, এত এত দিয়ে?
কে ভাবে?

পৃথিবীতে এসেছিলাম ভুখা পেটে,
ক্ষুধা জানান দিয়েছিলাম চিৎকার করে কেঁদে
এখন পেটে ভাত তো আছে!
এটাই বা কম কিসে?
শোকর করি কি? ওপরওয়ালার কাছে;

যখন এসেছিলাম, উলঙ্গ ছিলাম
কাপড়ের কোনো বালাই ছিলো কি?
না কি বুঝতাম কাপড় কাকে বলে?
এখন গায়ে পরনের কাপড়টা তো আছে!
এটাই বা কম কিসে?
শোকর করি কি? ওপরওয়ালার কাছে;

যখন পৃথিবীতে এসেছিলাম বাসস্থানের চিন্তা ছিলো কি?
না কি বুঝতাম বাসস্থান কাকে বলে?
মায়ের বুক’কে মাথাগোঁজার আশ্রয় বানিয়েছিলাম,
এখন মাথার ওপর একটা ছাঁদ তো আছে!
এটাই বা কম কিসে?
শোকর করি কি? ওপরওয়ালার কাছে;

না
আদতে করি না,
এই যে এত এত আছে!
তবুও মন ভরে না;

চাই
চাই
আরও চাই,
পেটে জায়গা নাই
তবুও টেবিল ভরা খাবার না দেখলে মন ভরে না;
আলমিরাতে জায়গা ধরে না
তবুও কাপড় দেখলেই কিনতে ইচ্ছে করে;
মাথা গোঁজার জন্য একটি বাড়ি হলেই চলে
তবুও একটির পর একটি অট্টালিকার সাধ মনের ভেতরে;

এই যে
এত এত খাবার
এত এত কাপড়
এত এত সম্পত্তি,
কোথায় নিয়ে যাব?
কার তরে?

আচ্ছা!
মৃত্যুর পর কি ক্ষুধা লাগে?
তাহলে ফ্রিজ ভরা এত খাবার কে খাবে?

আমার আলমারি ভরা এত এত রংবেরঙের কাপড়!
কেন আমায় মাত্র তিন টুকরো সাদা কাপড় পড়িয়ে শুইয়ে দিবে?

কেনই বা আমায় শুইয়ে দিতে হবে সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে?
একটু কি জায়গা হবে না আমার, আমারই বানানো এত এত ঐ বিলাসবহুল বাড়িঘরে?

কে জবাব দেবে?

আচ্ছা!
বলতে পার, মৃত্যু কবে হবে?

ইশশ!
কি ভালোই না হতো, যাবার সময়টা আগে থেকে জানা থাকলে!

কি হচ্ছে আজকাল চারিদিকে, দেখছ না?

আজকাল প্রেম যেন বড্ড সস্তা হয়ে উঠেছে
বিবাহিত প্রেমিক প্রেমিকা সংসারে সংসারে,
পরকীয়া নাকি একে বলে;

যখনই প্রেমিক প্রেমিকা সামনা সামনি
পাগলের মত দুজন দুজনার
প্রেমে প্রেমে
মনে মনে
হৃদয়ে হৃদয়ে
তারপর
শরীরে শরীরে;

অথচ একজনের কিন্তু স্বামী আছে
আরেকজনের আছে স্ত্রী
তবুও সব ভুলে গিয়ে এক ভয়ংকর পরকীয়া খেলায় মাতামাতি
আজকালকার যুগের প্রেম আর কি!

এটা প্রেম?
না রিপুর তাড়না?
চারিদিকে ভাঙনের শব্দ শুনি;

ভাঙন দেখছ না?
চারিদিকের ভাঙন!
খান খান ভাঙ্গন!

ভাঙন সম্পর্কে
ভাঙন সংসারে
ভাঙন জীবনের পরতে পরতে,
একটু সাময়িক শারীরিক সুখের জন্য নিত্য ভাংছে সংসার
ছারখার হচ্ছে জীবন,
খুব কি প্রয়োজন?

ফলাফল দেখছ?
কি হচ্ছে আজকাল চারিদিকে, দেখছ না?
মানুষ নামের অমানুষ সব আমার তোমার সন্তানেরা;
কি অবলীলায়ই না একজন আরেকজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে এখানে ওখানে
ধর্ষণ গুম আর খুন তো কাগজের পাতায় পাতায়
মূল্যবোধ কবেই হারিয়ে গেছে! ডিকশনারির পাতায়;

কেন এমনটা হচ্ছে?
ভেবেছি কখনো?
ঘরের ভাঙনের ফ্রাষ্ট্রেশন মেটায় এরা ঘরের বাইরে
আর আমার তোমার ঘরে জন্ম নেয় নিত্য নতুন ফ্রাঙ্কেষ্টাইন
ভাঙনের হতাশা থেকে এরা অমানুষ
অমানুষ থেকে ক্রাইম;

একটু চিন্তার সময় বোধহয় হয়েছে এবার
ভাঙন রোধে বিকল্প চিন্তাধারার,
ভাঙনের সংসারগুলোর দশা আজ বড্ড দৈন্য
এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সংসারের মূল্য হবে শূন্য।

আমরা একই বইয়ের একই পৃষ্ঠার দুই পাতা

ভালোবাসা তোর কাছে কবিতা
আমার কাছে খটমটে প্রবন্ধ
তবুও আমি তোকে পড়তে চেয়েছিলাম
তুই কি আমায় পড়েছিলি?

আমি কি বলতে চেয়েছি তুই শুনিসই নি
তুই কি বলতে চেয়েছিস আমি বুঝিই নি
তবুও আমি তোকে ভালোবেসেছিলাম
তুই কি ভালোবাসা বুঝেছিলি?

আমরা মন খুলে খুলে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম
অথচ শরীর খুলে খুলে কামে মত্ত ছিলাম
আমি রিপু বুঝিই নি
তুইও প্রেম বুঝিস নি;

আমরা একই বইয়ের একই পৃষ্ঠার দুই পাতা
অথচ কেও কাওকে দেখছি না
দুজন দুজনকে ভালো তো বেসে যাচ্ছি
অথচ কেও কারোটা বুঝছি না;

ভালোবাসা কি এমনই?
খুব দুর্বোধ্য?
একই মনে বাস করে
মনের বৈপরীত্য।