ট্যাগ আর্কাইভঃ দাউদের কবিতা

ঘূর্ণাক্ষর

images-15

ঘূর্ণাক্ষরে
ঘোরাচ্ছ কবেকার পুরনো ঘোরে
প্রথম দেখা স্বপ্ন…
অমোঘ তৃষ্ণা
রাতের দুর্গম পারাপারে
তন্দ্রাচ্ছন্ন ভোরে …
ঘোরাচ্ছ
চক্রাকারে …বসন্ত হতে শীতে
গদ্য হতে পদ্যে.. অক্ষরে অক্ষরে
মোক্ষ দেখে নাড়ছো কলকাঠি
সুক্ষ্মহস্তে
আঁকছো নীলনকশা অনীল অন্ধকারে !…
ঘুরছি আমিও
প্রমত্ত শব্দের মোহে বাক্যের অনস্ফুরিত স্মরে,
শুভদৃষ্টির কামনায়
প্রস্ফুটিত নন্দনের বাসনায়!..
ঘূর্ণাক্ষরেও ভুলছি না আমি বিপন্ন সবুজের কান্না
বৃক্ষের স্পন্দিত মন…
যেমন ঘোরে ঘোরাও তুমি
মর্ত্য চারণে আমি ঠিকই পৌঁছে যাবো
যেখানে
প্রজাতিরা বুনেছে সমুজ্জ্বল ভোর, স্বর্গ তোরণ!…

ঘূর্ণাক্ষর // দাউদুল ইসলাম
১/২/২২

মৃয়মান বাতিঘর

205934

মাঘের কুয়াশা ঘেরা দিনে
জ্বলেছিলাম প্রথম মোমের প্রদীপ হয়ে,
সূর্যাস্তের লগ্নে..
শীতল কনকনে হাওয়া
মায়ের বুকে কুসুম উষ্ণতা, ফুলের সুবাস..
কান্নাভেজা হৃদয় আর পরিশ্রান্ত চোখে নিবিড় আশীর্বাদ “বেচে থাকুক মানিক রতন, মায়ের বুকের ধন”।

…. তারপর শুরু হয় বাচার নেশা!..
হিসেবের জীবনে বেহিসেবী লেনদেন,
বাদ- বিবাদ
সুখ- দুঃখ- হতাশা..
কিঞ্চিৎ ভালবাসা, সাধ- আহ্লাদ, আশা ভরসা…
যেভাবে
প্রগাঢ় হতে থাকে জীবন
জীবনের নেশা.. ক্ষুধা – তৃষা;
আপন জগতে বাড়ে আপন পথ, সরব বিচরণ
রঙে ঢঙে বাড়ে নিত্যনতুন প্রবণ
আসে যৌবন
অঙ্গে উপাঙ্গে লাগে ঢেউ
রঙে-বিহঙ্গে আঁকি স্বপন ঘুমহারা রাতে; বুঝেনি কেউ!

নদীর মতন জীবন
ছুটে স্রোতের তোড়ে, বাকে বাকে দেখা মেলে নিত্যনতুন বিস্ময়!..
মাঝ দরিয়ার উথাল পাথাল জোয়ার
জোছনা রাতের মুচকি হাসি,
লীলাময় বিচরণ শেষে বালুচরে পড়ে থাকা পদচিহ্ন!…

কে যেনো গান গায় উজান ঘাটে
অবসাদের সুর- স্মর
ঠোঁটে না আসা আর্তনাদ গুলো বাড়ায় বুকের ধড়ফড়….
মদিরা আসর হতে ফিরে আসা তৃষ্ণার্ত পথিক হয়ে
ঘুরি অলি গলি;
নিশীথের অন্ধকার হাতড়ে হাতড়ে চলি অজানায়..

মৃয়মান বাতিঘর
যেখানে
অহর্নিশি মোম জ্বলে যায়, তাকে নিঃশেষ হতে হয় পুড়ে পুড়ে
অন্তিমকাল অবধি অবারিত তালে.. হেসেখেলে!…

মৃয়মান বাতিঘর // দাউদুল ইসলাম
(জন্মদিনের হিসেব নিকাশ)
২৫ জানুয়ারি ‘২২

সাত কাহন

26834

না আজ আর কোন সংকোচ নাই, দ্বিধা নাই
এবার পৃথিবীকে জানিয়ে দিতে চাই- তোমার আমার প্রেমের সাত কাহন।
দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ কবিতা খানি রচিত হয়েছিল তখন-
যখন আমার চোখের পাতায়- তোমার হিজল পরাগ ঠোঁটে দিয়েছো চুম্বন!
পৃথিবীকে জানিয়ে দিতে চাই
একদিন যেই বুকে নীল মৃত্যু জেঁকে বসেছিল হিমালয়ের সমস্ত শীতলতায়
তোমার বুকের তাবৎ উষ্ণতায় ফিরে পেয়েছিলাম আমার নতুন জীবন।

পূর্বাহ্ণের লালিমা ছুঁইয়ে যেই সকাল উপহার দেয় প্রভাবরি হাসি
পৃথিবী জানুক সে সকাল নয়, আমারই প্রেয়সী
ঘাস ফুলের ওষ্ঠ ছুঁইয়ে থাকা শিশিরের হীরক বিন্দু , উদাসী
প্রজাপতির মুখে প্রবিষ্ট মধু; সে তো আর কিছুই নয়
আমারই প্রাণ বন্ধু; জনম জনমের প্রেম পিয়াসি সুন্দরী তমা।
পাখিরা জানতো যদি পূর্ণিমা অভিসারী খরস্রোতা নদী- নদী নয়
এ আমারই অনুপমা, জোছনা মোহন রাতে
রূপালী মাছের মত যুগল সাতার কাটতে কাটতে
জলকেলিতে আমরাই জাগাই মিতালী সংগীত; পৃথিবীর পরতে পরতে
ছড়িয়ে পড়া রোমাঞ্চিত সুর। দূর বহুদূরে সঙ্গমরত কবুতরের বাক বাকুম,
কুসুম সুখে নিমজ্জিত নবদম্পতির স্বপ্নের বাসর,
এ সবই আমাদের প্রেমের উত্তরোত্তর অনুরণন, আমাদের অনুপ্রাণন।

আজ আর কোন জড়তা নাই, বাঁধা নাই
অনির্বাণ শিখার ফুল্কি ধারার মতন-
প্রকাশ্যে উন্মোচন হোক তোমার আমার প্রেমের সাত কাহন।
জীবনের গচ্ছিত গুপ্ত ধনের মত পরম যৌবন লুণ্ঠিত হয়েছিল তোমার মদিরা চোখে,
শোণিতের স্পন্দিত গোপন পদাবলী রচিত হয়েছিল আমাদের আলিঙ্গনাবদ্ধ বুকে;
পৃথিবী জানুক-
সে দিন থেকে আমার আমাকে খুঁজে পাওয়া হয়নি আর
কেবল তোমাকেই স্থাপন করে গেছি ধ্রুব তারার মতন… প্রজ্বলিত দুর্নিবার!

তুমি তাপসী নও

2195861_n

তুমি তাপসী নও- স্বৈরিণী
দম্ভ চরণে কাঁপাচ্ছ জোছনা বন- সৌম্য রজনী
জোনাকির বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে- ধ্যান মগ্ন
ঋষির নির্বর্ম বুকের উষ্ণতা লুটে নিতে চাও;
তুমি নও যজ্ঞের অরণী-
আগুনের সমুদ্রে- মক্ষী স্রোত!
তোমার নগ্ন অক্ষে অদম্য ক্রোধ, পিয়াসের উদ্যত চাবুক
নও তুমি তাপসী- নিটোল বক্ষের কৈলাসী, নক্ষত্রের অসুখ
ক্রন্দসীর চাপা কান্না, সন্তপ্ত দীর্ঘশ্বাস!
তুমি জানো- রুষ্ট আবেগে ঘনীভূত ঠোঁটে
কতটা শুদ্ধ ছোঁয়ায় জীবন্ত হয় শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি;
ঘুঙুটে হৃদ্য স্বর-
বালিহাঁসের পালকে লুকানো উষ্ণতা,
কতটা নৈবদ্যের পর জবা ফুলের মত ফুটন্ত রাধার হাসি।

যে স্বাদ গ্রহণে- সমুদ্র ধরেছি বুকে
এক চিমটি লবণে,
দীর্ণ- দরিদ্র প্রকাণ্ড জীবন- হাল ছাড়িনি তবু
অবিরাম হেঁটেছি শ্রমণ- একাগ্র ধ্যানে।
নিভু নিভু প্রদীপ শিখা
অধীর লগনে সতৃষ্ণ আত্মা- পুড়েছে উন্মত্ত আগুনে
কভু নিঃশেষে
কভু উপহাসে- আছি নির্লিপ্ত; বিশুদ্ধ সমর্পণে।

দাউদুল ইসলাম

ক্ষুধা না লজ্জা

25103_n

বিকেলের বিষণ্ণ চোখ থেকে ঝরে পড়ে লাল অশ্রু
মাটি শ্রমিকের কোদালে এঁটে থাকা মাটি, চিটচিটে বগলে
ছেঁড়া ব্লাউজে প্রতীয়মান সংগ্রামী ইতিহাস!
যুদ্ধ কোন খেলা নয়, স্নান ঘাটে ভেসে যাওয়া বুকের পঙ্ক জল
অথবা গুমরে উঠা অন্ত্রের ক্ষুধা… হাহাকার
ক্ষুধা বোঝেনা কবিতা
ক্ষুধা বোঝে গ্রাস, ভোগ…… ক্ষুধা বোঝে সঙ্গম
যুবতীর রক্তিম ওষ্ঠে গোধূলির হাসি
আকাশের বুক চিড়ে উঁকি দেয় মেঘের স্তন!
কোথাও কেউ বুঝতে চায়না ক্ষুধা না লজ্জায়
কিসের ভারে নুয়ে যায় -নদী সংলগ্ন কাশ বন!!

© কাব্যগ্রন্থ “অচিন বুদবুদ” থেকে।

খেলারাম খেলে যায়…

242048

থমকে যাওয়া রাত
সচ্ছল হয়ে উঠে তাসের অক্ষরে;
তা’ সে জানতোই-
হাতের কারিশমা আনবে জয়- মোক্ষম প্রহরে!
চক্রাকারে ঘোরে রাতের মৌমাছি
এখানে ফুল নাই, কাছাকাছি কোন বাগিচাও
তবু; তুমুল হইচই মধুর হাটে- স্বরূপ উল্লাসে
ছালের কৌশলে হাসে লাল টেক্কা- তুরুপের তাসে!
বাকীরা-তলে তলে জ্বলে
দক্ষ অভিনয়ে ভুলে আড়ালের দহন; রূপের জৌলুসে
মক্ষী’রা মাতিয়ে রাখে দুর্মর আলো আঁধারি-
তা’ সে জানে, নেতিয়ে রাখা মাথা অকস্মাৎ ছড়ে উঠে
যখন তাসের টেবিলে সফল হয় জুয়াচুরি!
এভাবে চলতে থাকে- লালিত্য ছলাকলা
দিনে দিনে চিনে যায় জীবন- কে কোন মুখোশ ধারি,
অতল দহনে
মর্মর তানে শিখে নেয় সূত্র-মন্ত্র; সুক্ষ্ণ মননে
অবলীলায় খেলে যায় খেলারাম- উন্মত্ত লীলাখেলা…

রন্ধ্র জ্ঞান!

গহন লেগেছে
দহন কালে… রন্ধ্রে…
রন্ধিত মশলা
রসনা বিলাসে সায়াহ্ন সান্দ্রে
চাতালে বাসনা লীলা;
অক্ষির কিনারে অগ্নি- মরিচ গলা
কায়িক অম্ল
কায়িক ক্ষার
সাম্য সাদরে মুচকি হাসে
জীবনের মধু বালা…

জমছে মেঘ!

882505

জমছে মেঘ!
বাঁধছে দূর বহুদূর পাখির নিবাস
পারিস যদি নামিস সেই মেঠো পথের কাদায়
দ্বিধা – নির্দ্বিধায় ভিজিস একবার
ভিজিয়ে নিস ঢের রুক্ষ বিমূর্ত মুখ
ভিজিয়ে নিস যক্ষের ধন বিলুপ্ত অহংকার।

মৃতরা কথা বলে

40080

মৃতরা কথা বলে
বিদেহী কণ্ঠস্বর নিরন্তর শীৎকারে
কেউ শুনেনা, কেউ জানেনা সেই ভাষা
অসীম হিম সমগ্র মৃত্যুপুরীতে
অথচ মৃতরা নির্ভীক, নির্বোধ, অবিরাম হেঁটে চলে
নিঃস্ব নিষ্পাপ বিদেহী আত্মার দোলাচলে-

মৃতরা নিজেদের অমৃত মনে করে
অমৃতইতো
জগতের গণ্ডি পেরিয়ে মহা জগতের নিঃসীম জীবন
সত্যের উপর মহা সত্য সেই জগত
অসীম সুখ দুঃখের মহা-লঙ্কা
মৃতরা সব দেখে সব বুঝে; সন্দেহ নয় আশংকা নয়
মৃত্যুর পর যা হয় তাই পার্থিব জীবনের পরীক্ষা।

দেবী ও কবি ১৮

24067

আলোর বিভ্রমে খুঁজে আড়াল। আলোতে দেবীর যন্ত্রণা!
বিষ পোড় ভিমরুলের দংশনে যন্ত্রণা লাগব অচেতন নিদ্রায় তলিয়ে যায়
কতদিনের নিদ্রা ভুক দু’চোখে
সুখ নেমে আসে স্বপ্নের ডানা ছড়ে
-একি! তুমি ঘুমাচ্ছো এখনো? ওঠো দেবী-
দেখো বৃষ্টির আয়োজনে ব্যস্ত বিভোর গোধূলি
উঠে এসো দেবী

– না কবি, আমায় ঘুমাতে দাও
আমি জাগলে তুমি ফের নিরুদ্দেশ হবে যে

-তুমি না উঠলে বৃষ্টি ঝরবে কি করে

– কি হবে বৃষ্টি দিয়ে
মরুর তৃষ্ণা মিটায় কোন বৃষ্টি
মরু মরুই থেকে যায়
পুড়তে দাও আমাকে যত ক্ষণ না দহন ভুক না মেটে চিতার
জানো না-
আমি না পুড়লে এই আগুন জ্বালাবে তোমার সংসার!
তুমি ছারখার হবে
লুটপাট হবে!

-দেবী, সংসার পাবো কই? যে পুড়বে
লুটপাটের ভয় কি? আমার হারাবার নেই কিছুই

– আমি তোমার কিছুই না?

– তুমিই আমার পৃথিবী, দেবী
আমার উড়নচণ্ডী জীবনের সমস্ত দায় ভার
তোমার বুকেই দ্বৈরথ বিচরণ আমার
মরণ সুখে ডুবেছি আমরণ, ডুবানোর সাধ্য নেই আর

– তবে পালাও কেন?
– নাতো! পালাবো কোথায়?

– জানোনা কবি
একাকীত্বে আমার দম রুদ্ধ হতে হতে জেনেছি তুমি কত বিশুদ্ধ
জেনেছি তোমার বুকে প্রেমের তীর্থক্ষেত্র
তোমার ঠোঁটে প্রাণান্ত ভালোবাসা
সুখের স্বপ্ন আঁকে আমার রুক্ষ চিবুকে,
তোমার নিপুণ দক্ষতায় ধরা দিয়ে জানলাম
বিষাদে জমা কষ্ট গুলো কান্নার জলে মুছবে না
সঙ্গমের ধারা প্রবাহ বিনে এই বাঁধ ভাংবেনা।

– আমি একপ্রাণ তৃষ্ণা নিয়ে তোমার কাছে হাত পাতি
শব্দের ভিক্ষায় আমার কবিত্ব রক্ষায়
খরান জাগা চৌচির মাঠ পেতে দিই
তোমার বুকের ঝর্নায়
উঠে এসো দেবী-
আজকের বৃষ্টি তোমার আমার সৃষ্ট প্রেমের উপহার
এসো সমগ্র সত্ত্বায় বরন করি অঝর বর্ষণ
এসো পরম মমতায় মিটাই অতলান্তিক হাহাকার।

.
( দেবী ও কবি কাব্যগ্রন্থ থেকে)

নবীন সুর ও সংগীতে

24048

ফিরে আসে প্রাচীন অতীত।
অন্তরে রঙ্গীন প্রভাবরি ভোর,
সহস্র রজনী কেটে গেছে নির্ঘুম
কাটেনি কেবল-
তোর স্বপ্নে বিভোর থাকা হৃদয়ের ঘোর।

শঙ্খের চুম্বনে তুমুল শঙ্খ ধ্বনি,
সমুদ্র মন্থনে জেনে গেছি
তোমার সনে আগুনের গোপন প্রণয়!
জল চিনেছে অতল
পাকা অভিনয়ে দক্ষ তুমিও চিনেছ অনল।

জেগে থাকুক প্রেমিকপ্রবর

15503n

যার সাথে আমার জন্ম জন্মান্তরের প্রেম
তার নামেই আমি লিখে দিয়েছি অন্তর-অভ্যন্তর, বুকের হেরেম
স্বর্ণালোকে জাগিয়ে রেখেছি স্বপ্ন- নিরন্তর…
বাঁকের শাঁখে শাঁখে মন্থর ধ্বনি, অতলে প্রাণেশ্বর
স্পর্শের নিবিড় গন্ধ শুঁখে শুঁখে প্রজাপতিরা চিনে ফুলের ধর্ম
মর্ম মহিমা মেখে মেখে জোয়ারের জন্য প্রস্তুত হয় মদিরা বর্ণ স্রোত;
যেখানে ক্ষণে ক্ষণে রচিত হয় নিত্য নতুন উপমা, হেম চূর্ণ পথ
জন্ম হয় নিদারুণ স্বর…কলকল ধ্বনি
অরণ্য মন্থন শেষে- পুণ্য জোছনায় ভাসে সুতৃপ্ত হৃদয়, বহ্নি শিখায়
উজ্জ্বল মুখ খানি নয়ন ভরে দেখতে দেখতে- নেমে আসে তন্ময়…
আমি নিষাদ উন্মত্ত… চিরন্তন
চন্দ্রিমা রাতে নামি শৈল প্রপাতে- উষ্ণ তনিমার সংগুপ্ত ধন
আমি অহোরাত্রি রঙ্গিন হই মত্ত চুম্বনে
জনম জনম ভালবাসি তারে- এই তাম্র তিয়াসের মনে ;
তাই বিলুপ্ত হোক দিন ক্ষণ গুনে গুনে ভালবাসার নিয়ম- নখর
রঙ্গো বরষে প্রাণের পরতে পরতে স্বপ্ন বুনে বুনে -প্রেম হোক অবিনশ্বর!
পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি জমিনে নির্বিচারে হোক গোলাপের আবাদ
কবিতার রন্ধ্র- মন্দ্র চিনে চিনে- জেগে থাকুক প্রেমিকপ্রবর… স্থাবর হাত।

জেগে থাকুক প্রেমিকপ্রবর // দাউদুল ইসলাম
– গ্রন্থ “অচিন বুদবুদ” ( প্রকাশক – জাগৃতি )

প্রাণের আগল

22028_n

আঁধার রাতের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে
খুলে নিলাম বুকের আগল, কষ্টরা দম ফেলুক অবাধে
নিস্তব্ধতা ভেদ করে আড়মোড়া ভাঙ্গুক বিপুলা দীর্ঘশ্বাস!

অন্তর অভ্যন্তরে স্তূপ বাঁধা নির্বেদ গোপন নির্বাণ দহন,
অন্ধকারে তো কষ্টের কোন ভয় থাকে না; যতক্ষণ না
তথা কথিত আলোর সভ্যতা ভেংচি কাটে!!

রাতের চোখ বাঁধা
হাত বাঁধা
অন্ধকার সিম্ফনি আর মৌন ব্যথা
ইচ্ছেমত বিদ্ধ হয়, প্রবিষ্ট হয়- একে অন্যের কোটরে।

উলঙ্গ অন্ধকার ( ব্যবচ্ছেদ পর্ব)

26413912_n

ক।
সন্ধ্যা-মালতীর মত রোজ সন্ধ্যায়
অবশ্যম্ভাবী ছিলো তোমার আগমন,
গোলাপি ঠোঁটের নিরেট উষ্ণতায়
শিশির সিক্ত গালে আঁকা হতো বাধ্যগত চুম্বন।

খ।
আমার চোখে
আষাঢ়ের বৃষ্টির মত অবিশ্রান্ত ধারা,
থৈ থৈ বানে ভেলা ভাসিয়ে উল্লাসিত তোমরা
একবার ও ভাবলে না
এতো কান্নায় কি বলতে চেয়েছিল আমার নয়ন তারা।

গোপন অবাধে

2278

আঁধার রাতের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে
খুলে নিলাম বুকের আগল, কষ্টরা দম পেলুক অবাধে
নিস্তব্ধতা ভেদ করে আড়মোড়া ভাঙ্গুক বিপুলা দীর্ঘশ্বাস!
অন্তর অভ্যন্তরে স্তূপ বাঁধা নির্বেদ গোপন নির্বাণ দহন,
অন্ধকারে তো কষ্টের কোন ভয় থাকে না; যতক্ষণ না
তথা কথিত আলোর সভ্যতা ভেংচি কাটে!!

রাতের চোখ বাঁধা
হাত বাঁধা
অন্ধকার সিম্ফনি আর মৌন ব্যথা
ইচ্ছেমত বিদ্ধ হয়, প্রবিষ্ট হয়- একে অন্যের কোটরে।