দাউদুল ইসলাম এর সকল পোস্ট

দাউদুল ইসলাম সম্পর্কে

সব সময় নিজেকে বলি- মানুষ হবি যদি- অন্ধকার ঘরে যখন একা থাকবি তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করে নিস তুই কতটা মানুষ। কতটা তোর সভ্যতা কতটা তোর ভদ্রতা! স্নান ঘরে যখন একা শাওয়ারের নিচে দাঁড়াস- তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করিস কত টা আছে তোর মনুষত্বের রুচি! জিজ্ঞেস করিস কতটা তুই ভদ্র, সভ্য!

হীনমন্যতা! …..

32

হীনমন্যতা একটি মারাত্মক রোগ।
এটিকে যদিও মানসিক রোগ বলে বিবেচনা করা হয়,কিন্তু ধীরে ধীরে এটি নিজের শারিরীক অসুস্থতার অন্যতম কারন হয়ে দাঁড়ায়।
আর এই থেকে মুক্তি অসম্ভব হয়ে পড়ে যদি না ব্যক্তি তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে না পারে।

হীনমন্যতা শুরু হয়-
#অন্যের সাথে নিজের তুলনা করে
#নিজের যা আছে তাকে অস্বীকার করে ও খাটো করে দেখে।

#নিজেকে অন্যের চেয়ে দুর্বল ভাবে
#এরা কখনোই শোকর গুজার হতে পারে না
#এরা পরিবার, সমাজ, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের উপর প্রচণ্ড নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ও মানসিক অশান্তি তৈরি করে!

#এদের নিজেকে সবসময় সঠিক মনে করে!
অন্যের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত বোধ করে, শুধু তা নয়
(#অন্যের পাকা ঘর দেখে নিজের কাঁচাঘর ভেঙ্গে ফেলার নজিরও অনেক….) এরা নিজের যেটুকু শান্তি আছে তা-ও নষ্ট করে!

অর্থাৎ

#একজন হীনমন্য মানুষ নাশোকর মানুষ!
আর নাশোকর মানুষকে খোদ আল্লাহও পছন্দ করে না।
#এরা মিথ্যা কে সত্যের মতো এমন ভাবে উপস্থাপন করে যে-

যে কেউই এদের সহজে বিশ্বাস করে ফেলে।

# হীনমন্যতা মানুষের ডায়েবিটিস প্রেশার হৃদরোগ হরমোন ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি কমন কিছু রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়ে।
#হীনমন্য মানুষকে অন্যরা ভালোবাসেনা, কারন তারা নিজেরাই কাউকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসতে পারে না!

(……..হীনমন্যতা দূর করার উপায় নিয়ে আরেকদিন আসবো ইনশাআল্লাহ!)

শুভ সকাল

3

তোমার হাতে তুলে দিলাম প্রভাতের স্নিগ্ধতা
তোমার সাথে মেতে রইলাম মিষ্টি রোদের উষ্ণতা।

ঊষার দেশে বাল্মীকি হেসে উঁকি দেয় নব যৌবন
ভালবাসা আশায় থাকে, স্বপ্ন আঁকে নিভৃত মন;

যেমন চাও কাছে এসো, আমাকেও যেতে দাও অমর্ত্য পুরে
রৌদ্র উজ্জ্বল গালে সোনালি চুম্বন পেয়ে যাও ভরা গাঙের জোয়ারে।

বেঁচে আছি প্রতিদিন… (জন্মদিনে শব্দ’রা উথালপাতাল করে…)

327

এখনো/
আঁতুড় ঘরের গন্ধ গায়ে/
এখনো / মধুর স্বরে ডাকে/ মায়ে/
এখনো কেঁদে উঠি/ একাকী/
আলগা হলে / মায়ের বুক /
আসলে/
এখনো আছি/ ছোট্ট সেই পীযুষ টি/
বাবা মায়ের দাউদ/
কখনো/
উদাসী/ কখনো হাসি মুখ/
এখনো /রক্ত-ঘাম /ঝরায় /
অশ্রুত প্রার্থনায় /
চায়/ আমারই সুখ/…
দেখতে দেখতে/ কেটে গেছে/ তিন যুগ/
বসন্ত/
ঝরেছে রঙ্গও বরষ/
অনন্ত শিশিরে/ ডুবে গেছে/ হলুদ প্রান্তর/ সবুজ জমিন/…
জানিনি/ বড় হতে/
রূঢ় হতে/
বড়লোকি ধরতে/ হীরে জহরতে/ ধনে দৌলতে/
পারিনি/
যেতে / গূঢ় হতে নিগূঢ়ে/
হৃদয়/ মন/
দুমড়ে মুচড়ে/ যেতে পারিনি গড্ডালিকায়/ বহতা স্রোতে/
কেবল টিকে আছি/
ডালে-ভাতে/
মায়ের বুকে/ এক রত্তি সুখে/…
আর
কিছুই নেই আমার/ সত্যি নেই/
কবিতার মত/ আড়কে আছি/ মাটির সোঁদা মায়ায়/
বেঁচে আছি/ প্রতিদিন…/

বিষাক্তের বিষে…

311n

কবিতায় তোমার ব্যবচ্ছেদ হতে পারতো
শব্দ আর অক্ষর গুলোকে আমি চিরতরে নিষিদ্ধ করলাম।
পেন্সিল স্কেচ অথবা জলরঙে প্রকাশ পেতে পারত- তোমার বেহাল্লাপনা
তাবৎ তুলি আর পেন্সিল কাটার গুলো নি-স্পর্শ করে দিলাম……
যদিও জেনে বুঝে তুমি ফিরে গেছো নস্টালজিক জলসা ঘরে
যে আসরে – ক্যু চক্ষের বহুগামী সভাসদ, লেলিহান জিহ্বা কিলবিল করে
অশ্লীলতা সেখানে সভ্যতার মসনদ গড়ে নিয়েছে ইতিমধ্যে…

সবিই তো তোমার মুখ থেকে জানলাম আমি-

আশা হত কবির মত
নিভৃত প্রার্থনা ছাড়া কি-ই বা করার আছে আমার?
তুমি বারোমাসি ফলজ বৃক্ষের মত অমূল্য সাহা
আমি হত দরিদ্র, বাস্তুহারা
কৃত্রিমতায় আমার কেন পোষাবে বলো?

অলকানন্দার জলে ভেসে যাওয়া হৃদয়
যদি কোন দিন সাহারার তৃষ্ণা মেটায়
অলীক স্বপ্নের এই প্রবোধে নিজেকে থামিয়ে রাখি অপেক্ষার প্রহরে…
কাগুজে নৌকায় ভেসে স্বপ্ন পূরণের স্বপ্ন আসবে
অথবা-
প্লাস্টিকে তৈরি বাহারি ফুলে জমকালো অভ্যর্থনা!
এর কোনটাই আমার করতে পারিনা-

আমি চাইলে পৃথিবীর সবচেয়ে-
নোংরা শব্দে তোমার উপমা বিতরণ করতে পারতাম
অথচ ক্ষমা তোমাকে বাঁচিয়ে রাখবে;
চোখের জল পান করতে করতে
বুঝে নিয়েছি রক্তের স্বাদ… তুমি উন্মাদ হও বেগানা রসে
বিষাক্তের বিষে…
কিন্তু তীর্থের কাকের মত তোমার জীর্ণ মুখ- সইবেনা আমার…।

মহাজনের গদি

318

ইহা এক মহাজনি দোকান
যেনো তেনো মহাজনি না
এখানে
আদর্শের তাকিয়া কে
পাপোশ বানাইয়া যতো খুশি পদদলিত করা হোক না কেন-
মহাজন সর্বদাই শির উঁচু করিয়া
খাড়াইয়া খাড়াইয়া মুত্র ত্যাগের অধিকার রাখেন!..
এবং কি অমৃত অমৃত জিকির তুলে
সেই মূত্র গিলে গিলে
যে কেউই হতে পারে হৃষ্টপুষ্ট!..
চোখের লাজ খুলে
বিবেকের বিচার ভুলে
চলছে
নেড়ী কুত্তার প্রকাশ্য সঙ্গম!
শত সহস্র নীতির মালা ছিন্ন করে
নির্বিচারে জন্ম নিচ্ছে বোধ শূণ্য প্রজন্ম…
যেভাবে
চোরে শুনেনা ধর্মের কাহিনী
যেভাবে
একে একে স্তব্ধ হচ্ছে পৃথিবীর সুষম ইতিহাস
স্তব্ধ হচ্ছে যাবতীয় নিয়ম-নখর
উত্তাপ বাড়ছে প্রখর রৌদ্রে
বুকে অনন্ত তিয়াস!…

আহা মহাজনি
যাহা
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে
দালালি ধর্ম মেনে মেখে চকচকে তৈলাক্ত তোষামোদ তৈরির নির্ভর যোগ্য কারখানা!
“পয়সা ফেকো
তামাশা দেখো’
নীতি তে লাভ লোকসান হিসাব করা হয়।
ইহা আমুদে প্রমুদে
লালু সালু
গোল আলু প্রকৃতির সকল তরকারির উপযোগ্য!
ইহা ব্যবহার কারীরা
দিনে দিনে
সারাদেশে যত্রতত্র
বুর্জোয়া বীজ অবিরাম যাচ্ছে বুনে…
যাতে
ক্ষণে ক্ষণে পয়দা হয় নিত্যনতুন ভোক্তা দাশ
তক্তার গায়ে তক্তা ঠেকিয়ে
যেমন করে বোনা হয় বৃক্ষের সর্বনাশ!..
জ্বী হুজুর
জ্বী হুজুর প্রীতির মদন মন্থনে
এইখানে গড়া হয় মাটির পুতুল
কড়ির জোরে
খুটি গেড়ে
উড়ানো ঘুড়ির লাটাই নিশ্চিন্তে বেধে রাখতে পারে
ঘুড়ি নড়িবে না এক চুল!..

অংকবাজি

3179

জীবনে
অংকবাজি শিখিনি
কাউকে ভালবাসলে অন্তর থেকে ভালবেসেছি
ঘৃণা করলেও অন্তর থেকে…
যদিও ঘৃণার মানুষ নাই আমার
কাউকে ভাল না বাসি, ঘৃণা করিনা।
করলেও তাকে জানিয়ে দিই!
সে জানুক কেউ তাকে ঘৃণা করে…
ভালবাসি নিভৃতে
জানাই কম।
কাউকে শ্রদ্ধা করলে অন্তর থেকেই করি।
তেল মারিনা
খুশি করতে রঙ মাখি না!
খুব কম মানুষ কে অশ্রদ্ধা করি-
যারা দ্বিমুখী স্বভাবের তাদের সবচেয়ে বেশী অশ্রদ্ধা করি।
তবু যে তাকে ঘৃণা করি তা নয়।
যাকে আপন ভাবি তাকে কখনোই পর ভাবি না।
ভাবলে নিজেকে বেঈমান মনে হয়।
আমার ঈমান ততটাই শক্ত যতটা বেঈমানের জন্য আমি কঠিন হই।
ধর্না ধরি না
নিজের মত করে এগোই…
তবে একবার ধর্না ধরেছিলাম- বিশ্বাস, ভালবাসা আর শ্রদ্ধার অধিকারে
কিন্তু সে অংকে আমি ফেল!
যে অংকবাজিতে তারা সেরা-
সে অংকবাজি নির্লজ্জ বেঈমানি, কৌশলিক, ঘৃণিত!
আমি নিরীহ সেই সবের সামনে।
আমি পরাজিত স্বার্থপরতার চালবাজিতে…
আর একারণেই
আমি পেছনের কাতারে, লাস্ট বেঞ্চে
আমি উপেক্ষিত
যদি সবার মত ভেসে যেতাম,
যদি একিই তেলে মর্দন যোগ্যতা অর্জন করতাম,
যদি মাথা নোয়াতাম,
যদি কুকুর ছানার মত কুই কুই করে যেতাম-
তবে আমার সব হতো-
বাড়ি হত, গাড়ি হত, তালিয়া বাজতো, মদ- মাতাল- তোষামোদ হতো!…
কিন্তু আমি অকর্মা
আমি বেখাপ্পা
আমি জোয়ার চিনি না
স্রোতে ভাসি না
বৃষ্টির দিক বুঝি না, ছাতা ধরি না…
আর সে জন্যই আমি বৃষ্টিতে ভিজি, রোদে পুড়ি!
ব্যথা লাগে
উহ! করে কঁকিয়ে উঠি না
ব্যথা সয়ে যাই নতুবা ব্যথা না লাগার উপায় বের করি।
তবু ব্যথা লাগে
খুব ব্যথা লাগে- বিশ্বাসে… ভালবাসায়…শ্রদ্ধায়…
এক সময় ব্যথার স্থলে দাগ লাগে
দাগ রুঢ় হয়
প্রবীণ চাপ পড়ে
দাগে দাগ লেগে কলঙ্কিত হয়!
তবু ঘৃণা করিনা
ভাবি,
বুঝি,
আর ভিন্ন পথ খুঁজি…।

কখনো কখনো হতাশ হইনা এমন নয়। তবু লড়াই জারি থাকে
কারো বিশ্বাস কলুষিত বলে-
আমার বিশ্বাস দৃঢ় হবেনা কেন?
আমি বিশ্বাস করি
দাগ না মোচন করে দাগের পরিধি, দাগের দ্রাঘিমায় সরল রেখা আঁকি
কখনো বৃত্ত
কখনো প্রবৃত্ত
ঘুরে ফিরে আবার উঠে দাঁড়াই…
কারণ
আমি তো জানি আমি কি
না
বিত্ত ভৈবব এর নেশা নেই,
মোহ নেই
কিন্তু আমি জানি আমি কি চাই।
আমাকে কোন পথে এগুতে হবে।
জানি,
সব কিছু ভেস্তে যাবে
থাকবে -আমার বিশ্বাসের আলো… ভালবাসার ছন্দ…শ্রদ্ধার মহিমা…
ততদিন অপেক্ষা- যতদিন এই অবারিত রাত ভোর না হচ্ছে
একদিন সকাল হাসবে
একদিন পাখি গাইবে
একদিন বাতাস আমার হবে
বৃষ্টি আমাকে ছোঁবে
একদিন রোদ্দুর আমাকে আলিঙ্গন দেবে
একদিন জাগবে কবিতা
একদিন ফুটবে স্পর্ধা!…
একদিন রঙ, একদিন বুননে হাসবে আড়ং
একদিন জানবো নিজেকে
জানবো তোকে,তাকে, তাহাদেরকে
একদিন জানাবো
একদিন দেখবো আলোর ঊষা
একদিন হবো আলো
একদিন পৃথিবী ডাকবে আমাকে
তাবৎ অপেক্ষাকে জিইয়ে রাখছি তাই…
চন্দ্রমল্লিকা ছোঁবে শিশির
থামবে অশ্রু… অধীর!

কুহেলিকার পাঁজরে

32

বুক ডুবাতে ইচ্ছে করছে নোনা জলে
বিষম অসুখ ভরা বুক
কতকাল আর রাখবো আগলে
ভগ্নহৃদয়…ক্লেদাক্ত মুখ!

দূর… বহুদূরে
উড়ে যেতে ইচ্ছে করছে প্রিয় নীলাচলে
প্রগাঢ় কুহেলিকার পাঁজরে
গুণগুণ করা বাতাসের মুখোমুখি দাড়িয়ে
ইচ্ছে করছে এলোমেলো হই
তোমার ঘনকালো সুগন্ধি চুলে!..

ইচ্ছে করছে
ডুবে যাই জোছনা মাখা সাগরে
চোখের পাতায় স্বপ্ন এঁকে
ঘুমিয়ে যাই মুক্তো থাকা ঝিনুকের বুকে!…

মাঘী পূর্ণিমার অপেক্ষায় আছি

322

মাঘী পূর্ণিমার অপেক্ষায় আছি
হাড় কাঁপা হিমে
জ্যোৎস্না গলা কুয়াশার আড়ালে
তোমায় নিয়ে যাবো ওমের সন্ধানে।

হে নিসিন্দা নারী
আঁধারের বাঁধ ভেঙ্গে আলোর উষ্ণ অঙ্গে
এবার আমাকে ঠাঁই দাও রঙের তুলি সমেত,
বুকের সুডোলে আগলের ঝাঁপ তুলে দাও
বৃন্তের নীলে অংকিত হোক শতাব্দীর জলছবি।

মাঘী পূর্ণিমার ঐশ্বরিক রূপে সমৃদ্ধ নদী
শীতল জলে স্নান করে যদি জব্দ হয়ে পড়ি
যদি স্তব্ধ হয় শরীরে প্রভাবিত রক্ত, নাড়ী
কিংবা দুর্মর কম্পনে রুদ্ধ হয় বাক শক্তি
তুমি অবাক হয়ে দেখো
তোমার একটি চুম্বনে আমি হবো মর্মরিত
মহিমান্বিত আলিঙ্গনে জাগাবো বিশুদ্ধ উষ্ণতা
প্রাণের স্পন্দনে প্রলুব্ধ যৌনতায় বিকশিত হবে নব জীবন!

তুমি এসো তখন, মাঘের শীতে
হিম শঙ্কিত পায়রা যখন বাক হারা সঙ্গিন অভাবে
যখন পৃথিবী ডুবে থাকবে হিমাঙ্কের তলে
যখন তুষারপাত লজ্জা পাবে শিতের কবলে।

হিয়া

321

হৃদয় গলে বেরিয়ে আসা প্রাণের স্পন্দন
তুমি বললে অশ্রু
আগুনের খোলা চিতা হতে নির্গত আত্মা
তুমি বললে দীর্ঘশ্বাস!
একবার ও চোখে চোখ রেখে দেখলে না
বহমান নদীর নির্বাক ঢেউ….

একা মানে নিঃসঙ্গ নয়

3187

নিজের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অথবা অধীক সমর্থন থাকলেই যে নিজের বা নিজ পক্ষের অবস্থান সঠিক তা কিন্তু ঠিক না;
কখনো কখনো সংখ্যালঘু বা একা পক্ষও বিজয়ী হতে পারে বা সঠিক হতে পারে।

পৃথিবীর ইতিহাসে বেশির ভাগ কালজয়ী বিজয়ী বীরেরা তাদের যুদ্ধ বা পথ চলা একাই শুরু করেছিলেন, নবী রাসুলদের প্রায় সবাই তাদের বিশ্বাস ও প্রথা একাই শুরু করেছিলেন! সেই দলে আছেন অসংখ্য বৈজ্ঞানিক রাজনৈতিক ধর্মযাজক সহ অনেকেই।

এমনিতে বর্তমান সমাজে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ যারা অত্যাধিক তৈলবাজ, মিথ্যা অভিনয়কারী, দুমুখো আচরণকারী, হালে বড়লোক, এবং লোকদেখানো ভাবসাব…
এদের বাহবা পাবার সম্ভাবনা সবসময় বেশীই থাকে। কিন্তু দিনশেষে এরাই আবার মুখ লুকানোর জন্য জায়গা খুজে!..

আসলে মনে রাখা উচিত আপনি সবসময় একা!..
যতোই বন্ধু কিংবা তথাকথিত দোস্তোরা আপনাকে ঘিরে থাকুক না কেন দিন শেষে আপনার বিবেক (যদি থাকে) আপনার আত্মা আপনাকে একা করে দেয়,মুখোমুখি করে দেয় নিজের সামনে নিজেকে।

আরেকটা কথা মনে রাখা উচিত –
লৌকিকতা সবসময় ভঙ্গুর… আপনি হয়তো লৌকিকতার গন্ডিতে পড়ে গেছেন, আর নিজের অবস্থান কে ঠিক জাহির করতে একের পর এক মিথ্যা আবরণে সত্য কে ছাপিয়ে রাখছেন- কিন্তু কতক্ষণ? কতদিন?
একদিন না একদিন সত্য সূর্যের উদয় হবে
তখন সে যখন সমস্ত অন্ধকার গিলে খাবে তখন আপনি লুকাবেন কোন অন্ধকারে…?

(একা মানে নিঃসঙ্গ নয়)

অতটুকু অবুঝ না হলেই পারতে

267168

অতটুকু অবুঝ না হলেই পারতে
আমি নিতান্তই নাদান এই তুমি জানতে।
অনন্ত আকাশের অথৈই নীলের মাতম
আর একটু কান পাতলেই শুনতে পেতে।
তুমি জানতে
প্রিয়তমা তুমি ঠিকই বুঝতে
কোন বিষাদের ভয়ে ডুবে থাকি অগাধ স্বপ্নে
কোন কারণে সাঁতরিয়ে যাই তোমার অক্ষি-সমুদ্রে
অবাধে বিবাধে
কিসের টানে নিরন্তর জেগে থাকি নৈশ পূজার কান্তে।

বিষাদ বড্ড দুরন্ত
কাঠবিড়ালির মতো লাফিয়ে চলে এক ডাল থেকে অন্য ডালে
কিন্তু!
তুমি ঠিকই জানতে
কোন বৃক্ষের কোন ডালে লুকিয়ে আছে আমার সাম্য শক্তির ফুল;
কোন সুবাসে মিটে আমার বুকের অদম্য যন্ত্রণার শুল।

অতটুকু অবুঝ না হলেই পারতে
আমি যে নিতান্তই নাদান প্রেমিক এই তুমি জানতে।
যদি জানতে নির্মমতার কালিমায়
কোন কবুতর ডানা মেলে আত্মহত্যার চিত্র আঁকতে
যদি দেখতে বর্বরতার নগ্নতায়
কোন চাঁদ হয়ে উঠে উন্মাদ; আপন কলঙ্ক ঢাকতে…

মুখ লুকাতে পেয়েছিলাম তোমার বুকের উপত্যকা
তুমি জানতে
সুখ আরোহণে বেয়ে ছিলাম সুউচ্চ চূড়ার স্তন
শত ক্রোশ পথ হেটে
আমি তোমাতেই পেয়েছিলাম দুষ্পাপ্য গুপ্ত ধন।
তুমি দেখেছো
তারপর
আর পিছু হটেনি বেঁচে থাকার এই উদ্যম আয়োজন।

মৃগ মৃণাল

316

রাঙাপলাশের আগুন ছুঁতে গিয়ে
আমি পুড়েছিলাম তুষারমণ্ডিত ঠোঁট!
প্রকাণ্ড কম্পনে
হীমে নীল হয়ে আসা দেহারণ্য ভেদ করে
বেরিয়ে আসে মৃগ মৃণাল;
ছুটে ব্যগ্র চিত্তে…
জঙ্ঘানদীর বাঁকে
আছড়ে পড়ে আদিম কল্লোলে…

অশ্রু বিভ্রান্ত

316

চন্দ্রিমা রাত, বিবর্ণ প্রান্তর ছুঁয়ে
কুয়াশাস্নাত বন হরিণীর বেদনাহত দৃষ্টি
তীব্র আর্তনাদে গগন বিদারী প্রতিধ্বনি
কেউ নেই এই সৃষ্টি কূলে; সুদূরের মেঘালয়ে
চাপা পড়া তারার হাসি, মুছে দেয় গ্লানি;
প্রেমিকার হাত ধরে প্রেমিকের স্বপ্নবানী
আড়াল জুড়ে কামনার উল্কা ঝড়! চিবুক বেয়ে
গড়িয়ে পড়ে দু ফোটা অশ্রু!

একি শুধু স্বপ্ন?
শুধুই মোহাচ্ছন্ন ঘোর?
নাকি হৃদয় খসা আকুল ভালোবাসা!
নির্বাক হরিণীর চোখে চোখ রেখে
যার উত্তর খুঁজি আজো।…

বৈরাগ্য বিলাপ

316

সুরা সাগরে
অধরা প্রেম তলিয়ে গেছে অনন্ত স্রোতে
অবিমৃষ্য আবেগে আনাড়ি সন্তরণ,
ক্লান্ত অনৃত অভিসারে
দূরে বহুদূরে
ভেসে গেছে প্রমত্ত কবিতার সুবর্ণ সংলাপ
হৃদয়ের গহ্বরে
অবরুদ্ধ চেতনা করছে বৈরাগ্য বিলাপ।

আদিগন্ত
দৃষ্টি খুঁজে তন্ন তন্ন করে সঞ্জীবক সত্যের আশ্রয়
আপন ঘরে সতীত্ব খুইয়েছে নারী,
স্বার্থান্ধ সামাজিক বলয়!

কোথাও কোন শুভ্রতা নাই,
প্রেম নাই, স্বচ্ছতা নাই
নর্দমার জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে ভালবাসা
পবিত্রতা
ডুবছে মানুষ অলক্ষ্য সাঁতারে, ব্যর্থ মানবতা!..

উৎসব হোক মৃতদেহ ঘিরে

3069

তলানিতে ঠেকে আছে জীবনের সমস্ত তপস্যা
কিছুই উত্তীর্ণ করেনি,
পরাজিত গ্লানি
আর …
চরণ তলে নেতিয়ে থাকা জ্যান্ত শবদেহ!

ভালোবাসা ব্যতিরেকে
কিছুই ছিলোনা জীবনানন্দের দোকানে
লাল নীল ভালোবাসা
মুঠো মুঠো স্বপ্ন
স্তরে স্তরে সাজানো আশা প্রত্যাশা..

কান্নার নন্দনে
অবিশ্রান্তির ধারা
চোখের কোণে পুঞ্জিভূত স্বপ্ন!
মৃত্যু এসে দাঁড়িয়েছে সম্মুখে
এতটা নির্দয়,
এতটা বেপরোয়া ভাগ্য… এসব দেখে-
ভালোবাসা ভুলে যায় লোকে।

নিভৃতে
পুড়ছে আত্মা
ঝরছে রক্তিমা বৃষ্টি
অগণিত কবিতার আত্মহত্যা!..
কিছুই নেই অবশেষ, কেবলই কান্নার শ্লোক

নিস্তব্ধ শোক
তবু
মৃতদেহ ঘিরে সমবেত উৎসব হোক।