জসীম উদ্দীন মুহম্মদ এর সকল পোস্ট

পানির দামে জল কেনার কথা ভাবি

পানির দামে জল কেনার কথা ভাবি

একটা লাগামছাড়া সময়ের কথা বলি অনধিকার
সে এখন পিছমোড়া আঁধার বস্তাবন্দি করে ফেরি
করছে
কাবিলের উত্তরাধিকার
আমিও পৃথিবীর মতো পৃষ্ঠটানের কথা ভাবি!

এও বা কম কিসে…?
দুর্মূল্যের বাজারে পটেটোর চেয়ে কমদামে টমেটো পাওয়া যায়
আমি অনেকদিন মিষ্টি কুমড়োর ফুল দেখি না
আমি আমার অসমাপ্ত কবিতার কথা বলি!

হেলেঞ্চার মতো রাজকীয় শাক আর কি আছে?
তবুও কলমি আমাকে মাটির কথা শোনায়
প্রাণায়াম অভ্যাস করতে শেখায়…
যদিও জল আর বল আমার কাছে চির অচেনা
তবুও আমি পানির দামে জল কেনার কথা ভাবি!

একজনকে প্রায় প্রায় বলি,
অযত্ন পড়ে থাকা পাহাড়টা চোখের জলে ধুয়ে দাও
আমি সৈকতের বালুকণা হবো!!

গর্ভপাত

গর্ভপাত

গর্ভের চেয়ে এতো বড় জগদ্দল পাথর আর কি আছে?
তবুও সবাই সমস্ত অন্ধরাত্রি অপেক্ষা করে …
আমিও
ছোট মাছ কাটার মতো হৃদয় কেটেকুটে ভাবি,
এই যে ছেলেবেলায় পড়েছিলাম তেপান্তরের মাঠ …
যেখানে বিগত হাজার বছরে একটি মাত্র দিন প্রসবিনী হয়
শুনেছি,
এইমাত্র সেখানে একটি ফুলের গর্ভপাত হয়েছে!

আমি আমাকে ধাক্কা মেরে সরোবরে ফেলে দিই
গড়াতে গড়াতে দৌড়াই
জন্মের আগের আমি
আর
মৃত্যুর পরের আমি’র মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই!

এখন পিনপতন নীরবতারা আমার সাথে কথা বলে
যদিও তারা কেউ আমাকে খুব একটা চিনতো না
আমি দ্রৌপদীর পাঁচ পাঁচজন স্বামী দেবতার কথা ভাবি
খতিয়ান বইয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা ছেঁড়া ও রক্তে ভেজা
আর এখন সবকিছু ছাপিয়ে
আমার আজব অপেক্ষারা আরো বেশি তরতাজা!

কে জানে না, অশুদ্ধ চিন্তার চেয়ে মৃত্যু ভালো..
আমি ফুটা বেলুনে গ্যাসোলিন ভরার কথা ভাবি
ডানে-বামে, সামনে পেছনে, উপরে-নিচে তাকাই
অলৌকিক পাথর শূন্যতা বারবার ফিরে আসে নীড়ে
আমার চারপাশ ঘিরে উদোম নৃত্য করে …!

আমি গর্ভ নিরোধের কথা যেমন ভাবি
তেমনি আমি বৈধ-অবৈধ গর্ভপাতের কথাও ভাবি!!

বোধ এবং শোধের গল্প

বোধ এবং শোধের গল্প

আজ কোনো কবিতা নেই, নিদারুণ নিস্তব্ধতা আছে
আজ শুধু শব্দের নৈঃশব্দতা আছে
মৃত্তিকাভেদে ফসলি জমির উর্বরতার পার্থক্য আছে
হাুতুড়ি আছে, শাবল আছে
গভীর মূলের কিছু অগভীর ভাবনার ছেলেধরা আছে
ভালোবাসা নামের কিছু মূল্যহ্রাস তৈজসপত্র আছে!!

আছেন কোনো খামখেয়ালি ক্রেতাসাধারণ…?
পথের ধূলোর দামে উড়াল সড়ক দেবো
গ্যারান্টি দেবো যানজট নামের কোনো রোগবালাই নেই
পতপত করে উড়ে যেতে পারবেন মন থেকে মনন
বাজিগরের মতো মুফৎ জিতে নিতে পারবেন মায়ার
কানন।।

বিরহের ধারালো কাঁচিতে নগদ প্রেম কাটতে শিখুন
শরবত ভেবে সাদা পানির দু’একটি স্বপ্ন আঁকুন
খাঁটি কিছু ভেজাল, পাহাড়ি তেলে ভাজা ভাজা করুন
অতঃপর
হৃদয়ের সব তাঁর………. টেনেটুনে ছিঁড়ে ফেলুন
অতঃপর ভাবুন
আজ পৃথিবীর কোথাও কোনো অক্সিজেন নেই
দম একবার ছাড়লেই পৃথিবীতে আপনার সমস্ত দেনা
পরিশোধ,
আজ আমার কোনো কবিতা থাকতে নেই………….
এখনো সময় আছে জেগে উঠুক বোধ
নয়ত সাহসী সময় একদিন নিবে সময়ের প্রতিশোধ!

বোধহীন রাত্রির গান

বোধহীন রাত্রির গান

বোধহীন একটা রাত তবুও উড়ন চণ্ডির খাতায় যুক্ত হলো
এর আগের কাহিনীটা মুক্তোর মতো চকচকে ছিলো
বেনামি চাঁদের শরীর গলে গলে জোছনারা
গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছিলো
আমার হাতে তখন পাঁচ পাঁচটি ভালোবাসার পান
কেউ না জানলেও আমি জানি
আমার আজকের কবিতা এই বোধহীন রাত্রির দান!
অতঃপর আমি থাইগ্লাসের কোমল শরীরে কবিতা
চোরের নগ্ন হাতের স্পর্শ দেখি
সবাই বলে আসলে জলের স্পর্শ বলতে কিছু নেই
ওরা সব মেকি, ওরা সব মেকি!
তবুও কেনো জানিনা, আমি জানি….
খাস কামরা থেকে মূহুর্তেই ইতিহাস ছুটে আসবে
পানকৌড়ির মতো ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ভালোবাসবে!
এখন সময়ের কাছেই আমি বিকোয় সময়ের দাবি
ইদানিং আমি খণ্ড খণ্ড সময় বিক্রির কথা ভাবি!

খালাসি

খালাসি

সড়কেই ছিলাম…
ভালোবাসা উড়ে, উড়ে প্রকাণ্ড ধূলি
কেউ কেউ দশহাত ভরে কুঁড়িয়ে নেয় ভালোবাসা গুলি,
আমি ছেঁড়া বসন্তের আধুলি খুঁজি
অবাক বুকে দেখি
ভালোবাসা আজকাল একনলা বন্দুকের ছোঁড়া গুলি!
আমি তখন উড়াল সড়কের কথা ভুলি
পায়ে পায়ে দাঁড়িয়ে আছে যতিচিহ্ন গুলি,
ভালোবাসা কেবল বোনে যায় আশার বেসাতি
কেউ হারায়, আর কেউ জিতে নেয় ক্ষণিকের
জীবন সাথী!
আমি মাঝপথে দাঁড়িয়ে পথের কথাও ভুলি
কিছু দীর্ঘশ্বাস তুলে এনে কষ্টের জাহাজ ভরি
দুরে দাঁড়িয়ে আচানক খালাসি হাসে
বড়ো কুটিল সে হাসি
বলতে চায়, আর কেউ নয়
কেবল আমি তোমাকে বড্ড ভালোবাসি!!

অতঃপর সে আর ফিরে না

অতঃপর সে আর ফিরে না

ইদানিং একটি পিছল বাইম মাছের কথা ভাবছি
দারুচিনি দ্বীপ থেকে আমদানি করা সুগন্ধি এলাচ,
লং, জিরা, জাফরান, কস্তুরীর খুশবাই এর কথা ভাবছি..
সেই থেকে পলাতক হয়েছে আমার অপ্সরী ঘুম
দ্বিগুণ তাতিয়ে দিয়েছে একহারা বিকালের ওম!

পুঁথির প্রতাপ নিয়ে দিন গুজার করছে আমার
একাহারী রাত্রি
আজকাল কেউ আমাকে কোনোকিছু বলে যায় না
আমিও সমুদ্রের ফেনার মতো বালুচরে পড়ে থাকি
বিলকুল নগদ অথবা সর্বৈব বাকি!

পা থেকে মাথা…….. কেউ জানে না,
কতোটা অন্ধকার সে বিদিশার রাত্রি
কেবল জানে সবজান্তা বিশ্ববিধাত্রী!!

ধীরে ধীরে রাত্রির বুনট গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়
আমার সাথে খুনসুটি শুরু করে মূয়ুরীর পালক
তবুও আমার নিরাক পড়া চোখে পড়ে না পলক
রাত্রির গা ছিঁড়ে একটি একটি করে খসে পড়ে
নক্ষত্রলোক
আমি জানি না, কোথায় আছে সেই সিন্ধুকের চাবি
তখনো আমি সেই পিছল বাইম মাছের কথা ভাবি
ভাবি….. এই বুঝি ফিরবে সেই ধ্রুপদী আলোক!

অতঃপর সে আর ফিরে না…..
আমি তার জলজ্যান্ত প্রতারণার কথা ভাবি
জানলার শার্সি ভেদ করে অন্ধকার আরো থিতু হয়
বেডশিট, বালিশ, কোলবালিশের সাথে শুরু হয়
আমার ভালোবাসার প্রলাপ
মাঝেমাঝে নৈঃশব্দের বাগানে পাতাঝরার শব্দ হয়
একটা সময় এরা সবাই আমার সাথে থামিয়ে দেয়
গণসংলাপ!

আমি তখন আমার ভেতরে প্রবেশ করি একা
টাইম ট্রাভেল করে ঘুরে আসি জন্ম থেকে মৃত্যু
না, আমার সাথে কেউ আসেনি
আমার সাথে যাওয়ার কেউ দস্তখত দেয়নি
পথে পথে কেবল দু’চারজন পথিকের হয়েছে দেখা,
আমিও এখন…..
পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের মতোন
এতো বড়ো পৃথিবীতে বড়ো একা, বড়ো একা…!
——————–

একজন ঋণগ্রস্ত কবির কথা

একজন ঋণগ্রস্ত কবির কথা

একজন আজন্ম ঋণগ্রস্ত কবির কথা বলি
তাঁর ছেঁড়া পকেটের পকেটঘড়িটার কথা বলি
যে কবি জন্মের কাছে ঋণী তাঁর কথা বলি
যে কবি সুবেহ সাদিকের কাছে ঋণী, তাঁব কথা বলি!
যে মাটিতে কবি এখন নতোমুখে পাই পাই
করে হাঁটেন….
কবি হাঁটেন…., হাঁটতেই থাকেন… হাঁটতেই থাকেন
মাটি টের পায় না
কবিও টের পান না
আমি সেই কবির আজন্ম শব্দঋণের কথা বলি!
একটি সরস কবিতার আশায় যে কবি বৃক্ষের দিকে
তাকিয়ে থাকেন
নগদানগদি সবুজ গায়ে মাখেন
চিরহরিৎ পত্রগুলো চোখে মাখেন
লতাগুল্মের দিকে অপলক চোখ রাখেন
আমি সেই কবির আজন্ম বাক্যঋণের কথা বলি!
যে কবি মাটি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আকাশ
দিয়ে হাঁটেন
যে কবি পদদলিতা পিঁপড়ের কথা ভাবতে ভাবতে
প্রলেতারিয়াতদের কথা ভাবেন
যে কবি তাঁর কবিতায় মানুষের ছবি আঁকেন
আমি সেই কবির অনাদায়ী ঋণের কথা বলি!

সুরভি

সুরভি

তোমায় না দেখেও যেদিন প্রথম দেখেছিলাম
সেদিন থেকে আমি আর কোনো ফুলের দিকে তাকাইনি
বিশ্বাস করো, কোনো ফুলের কিছুমাত্র ঘ্রাণও নিইনি!

সমস্ত রাত নগদ অন্ধকারের দিকে চেয়ে থাকি
সবাই বলে আর কিছু বাকি নেই, আমি জানি বাকি আছে
বলতে পারো পারু…..
যে জীব তার হয়ত জীবন আছে, মৃত্যুও আছে
আর যে জড়… বলো দেখি তার কি কিছু আছে?

অন্ধকারেই আমি ঠিক ঠিক আন্দাজ করে নিয়েছিলাম
সদ্য ফোটতে শুরু করা গোলাপফুল
পাতাবাহারের সমস্ত বৈকুণ্ঠ জুড়ে জড়িয়ে থাকুক
তোমার সেই বাড়ন্ত টোলপড়া গালের চুল!

বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের জোড়া সাঁকোর শপথ করে বলি
কাঁটা আমায় আপন করে যতো খুশি জড়িয়ে নিক
তবুও এমনি একটি পাঁপড়ির সুরভি আমার দু’চোখে দিক!!

মধ্যরাতের চিল

মধ্যরাতের চিল

সেদিন মধ্যরাতে যে হারিয়েছিলো সে কবিতা নয়
কবিতার চেয়ে কোনো অংশে কমও নয়
আমি এখন ভালো আছি, বোধ এবং প্রবোধের মাঝামাঝি;
বন্ধুপ্রতীম যে ভালোবাসা, সে হয়ত আকাশ নয়
বলতে পারো, আকাশের চেয়ে কতোটা কম হয়?

আমি জানি, যে প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই
সে কোনো প্রশ্ন নয়, কেউ তিলকে তাল করে:
আর কেউ তালকে করে তিল…
একদিন যে সমুদ্রকে ভয়ে ভয়ে ভালোবেসেছিলাম
কে জানতো……
সে-ই হবে একদা উড়ন্ত ডানার চিল?

তবুও আমি সংজ্ঞালোপ ঋতু পরিবর্তনের কথা ভাবি
যে দেশে সবাই নিজের কথা ভাবে তাদের কথা ভাবি
যে ভালোবাসা কোনো বিনিময় চায় না তার কথা ভাবি!

আমি চাই প্রত্যাশার পারদ আলমিরার আকাশ ছুঁয়ে দিক
ডানা খুলে বের হয়ে আসুক আমার সুস্থ দিন, সুস্থ রাত
মধ্যরাতে আমার যে কবিতাটি হারিয়ে গিয়েছিলো
সে ফিরে আসুক…….. সে ফিরে আসুক……!!

আমার ভণ্ড উপন্যাসের কিয়দংশ

আমার ভণ্ড উপন্যাসের কিয়দংশ

আমার কোনো ইগো নেই তেমনটি আমি মনে করি না। কিন্তু আমার ইগো মানুষ এবং মানবতাবাদের উপরে নয়। কয়েক হাজার ফুট নিচে। ঝালমুড়িওয়ালাকে ভাই, বাদামওয়ালাকে দাদা, চানাচুরওয়ালাকে চাচা বললে যদি আমার ইগো পাংচার হয়ে যায়, তেমনি ইগোর আমি নিকুচি করি। দুই গাল ভর্তি জমাট থুতুর মতো সজোরে নর্দমায় নিক্ষেপ করি। এই যেমন একটি শিশু পানিতে পড়ে গেলো। আমি সু্টেট-বুটেট হয়ে কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছি। তখন যদি জলে নামলে আমি ভিজে যাই ব্যাপার টি কেমন হবে? কারু এতে কিছু নাও আসতে যেতে পারে। আমার অনেক কিছু নয়, সবকিছু আসে যায়।

শিখার বাবা আমার সম্পর্কে কিছু নাখাস্তা, নাদান জাতীয় গালিগালাজ বুক পকেটে নিয়েই হয়ত কবরে যাবেন। এতে আমার তেমন কিছু করার নেই। এই অক্ষমতা আমাকে কিছুটা প্লীহা দিচ্ছে না এমন নয়। তবুও আমার এই ব্যাপারে শিখার সাথে আপোষ রফা করা একেবারেই বেসম্ভব। এইটুকু ইগো মাত্র আমার স ম্ব ল। এর বেশিও নয়। কমও নয়। এইটুকু হারিয়ে ফেললে আমার একান্ত আপন জন বলতে আর কেউ থাকে না। কেউ যদি বলতে চান, বলতে পারেন ভালোবাসার জন্য মানুষ বাপ-দাদার ভিটে মাটি বিক্রি করতে পারে, আর আমি সামান্য ইগো বিসর্জন দিতে পারি না। শিখার হাত ধরে বলতে পারি না সরি। আর কোনোদিন হবে না।

আমার হিম হিম লাগে

আমার হিম হিম লাগে

মাঝে মাঝে আমি একটি দুর্দান্ত কবিতার কথা ভাবি,
ভাবি…….
সে কাউন ক্ষেতের সরু আল ধরে দাঁড়িয়ে থাকুক
কিছুদুরেই মগ্ন জলাশয়, যেখানে চৈতন্য ঘুমিয়ে আছে
আমিও আশেপাশেই কোথাও না কোথাও আছি
একবার মরি, আর একবার শুশুকের মতো বেঁচে যাই
ব্যস্ত সড়কের জেব্রাক্রসিং এর ঠিক উপরে……….।

এপথে এখন আর কেউ তেমন একটা আসে না
ভালোবাসে….. ভালোবাসে না! আমার কেবল হিমহিম লাগে।
রাত্রির মতো বড়ো বড়ো চোখ করে তাকাতে ইচ্ছে হয়
সেখানে জোছনারা গলে পড়ে…
আমার বিষম শরম করে। আমার ভীষণ শরম করে।

রাস্তাঘাটের শীতল আগুনে উষ্ণতার ফেরিওয়ালা খুঁজি
দিন জমে বরফকুচি হলে সবাই নগ্নতায় ডুবে থাকে
অবাধ্য সময় আয়নায় রেখে,
অত:পর ফিরে যায় নীড়ে
কেউ বিশ্বাস গড়ে না, জলেও একদিন আগুন জ্বলে!

তবুও ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই কাগুজে ব্যাঘ্র পুষি
সুযোগের সন্ধানে বিড়ালের মতো ওঁত পেতে থাকি
আমি কাউকে বলি না
কাউকে বলতে চাইও না
তবুও সুর্য প্রতারণা করে সন্ধ্যারাগে, আমার হিম হিম লাগে!!

সকালবেলার ফুল

সকালবেলার ফুল

কিছুদিন আগে রাতের বিরহে পুড়তাম
এখন দিনের বিরহেও পুড়ি
কেউ আমাকে কাছে ডাকে না
না পয়মন্তী রাত। আর না দিনের বিষঁদাত!

জানলার খিড়কি পথে ব্যস্ত সড়কের জবানি শুনি
এখানে সংজ্ঞা হারানোর কোনো নিয়ম নেই
যেখানে-সেখানে অরক্ষিত জীবনের ফাঁদ পাতা
ছন্দহীন নদীর মতো আমিও নিমিষেই ভুলে যাই
পাহাড়ের ধারাপাত!

তবুও কেউ থেমে থাকে না
ময়ুরীর মতো পুচ্ছ মেলার সাহস দেখায় জৈবিক ভাগাড়
অবৈজ্ঞানিক আরোহের মতো চলে চাষবাস
তবে কি ব্যস্ত সমস্ত সড়কের দিকে চেয়ে থেকেই
কেটে যাবে অহেতুক শীতপড়া বারোমাস?

তবে কি আর কোনোদিন উন্মুখ হবে না বটের মুল
ছায়াপথে কেউ আঁকবে না
রাত্রির শেষ প্রহরে ফোটা বিশ্বস্ত একটি সকালবেলার ফুল!!

বিভেদ

বিভেদ

তোমার সাথে আমার কতো যোজনী বিভেদ?
বড়োজোর চোখ থেকে চোখের ভ্রু…….
তবুও কালশিটে গুলো আমায় টিপ্পনী কাটতে ছাড়ে না!
আচ্ছা বলো তো দেখি
নয়ন থেকে কতোদুর নয়নের পাতা?
যদিও
আজকাল আর কেউ আমাকে ভ্রুকুটি করে না
নয়নের কাজলের মতো অপাংক্তেয় পড়ে থাকে
তোমার জানের দুশমন, আমার কবিতার খাতা!

আমি জানি, পাখি আর পাখির শিস কোনোদিন এক নয়
বলতে পারো, পৃথক ই বা আর কতোটুকু?
বালিশ থেকে বিছানার দূরত্ব এর থেকে কতোটা বেশি?

জানো, আজকাল গলা সাধা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছি
অনেকদিন কোনো গানের পাখি দেখি না
তবুও

মু
দ্রে

সামনে দাঁড়িয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে
আমি আজও তোমাকে ভালোবাসি!!

লাজুক কষ্টদের কথা ভাবি

লাজুক কষ্টদের কথা ভাবি

তবুও লাজুক কষ্টদের কথা ভাবি
প্রতিটি ভোরেই ওরা দীর্ঘশ্বাসের শেকল ছিঁড়তে চায়
পারে না। কিছুতেই পারে না।

কবিদের আড্ডায় কবিতার স্বপ্ন ভংগ হয়
নিমিষেই ফিরে আসে অন্ধকারের মাদুলি
শব্দেরা বাণপ্রস্থে যাওয়ার কথা ভাবে
পারে না। কিছুতেই পারে না।
শুরু হয় নিকানো উঠোনে শরীরী চাষাবাদ!

হৃদয়ের সমস্ত প্রেম অযত্নে পড়ে থাকে হৃদয়ের বাইরে
অহেতুক কথা বলে উঠে কালের খেয়া
শতরুপা গাছে দোয়েলপাখির শিস খুঁজে
স্তনের বোঁটা মুখে নিয়ে মায়ের ভালোবাসা খুঁজে
পায় না। কিছুতেই পায় না।
কেবল লাশ দিয়ে লাশের গন্ধ মোড়ানো হয় আবাদ।

তবুও লাজুক কষ্টদের কথা ভাবি
বন্ধ্যা রমণীর টুকটুকে শিশুর তুলতুলে গালের কথা ভাবি
একটা বিত্তহীন পাহাড় লিজ নেয়ার কথা ভাবি
একটা লাজুক সমুদ্র কিনে নেয়ার কথা ভাবি!!

নষ্টা

নষ্টা

তবুও আমার খুউব শখ ভালোবাসার
যদিও অন্ধকার আগুনে আমি আতশিকে ছাই হতে দেখেছি
আমি কতো চিৎকার, চেঁচামেচি করেছি
ওরা কেউ আতশিকে মানুষ বলেনি! নষ্টা মেয়ে বলেছে।

অতঃপর আমি ভালোবাসতে শিখেছি!!