খেয়ালী মন এর সকল পোস্ট

চিঠির পত্র ১০

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ১০ম পর্ব। এবারের চিঠি নিয়েছি – দাউদুল ইসলাম এর লেখা “আজকের এই বিকেল… এই সন্ধ্যা… উৎসর্গ করলাম তোমার জন্য … ” থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি

প্রিয়তমা……
আমার প্রতিটি বিকেলের মত আজো পশ্চিমা আকাশ লালিমায় ছেয়ে আছে, খরস্রোতা নদীটি হা করে আছে অস্তমিত সূর্যকে গিলে নিতে, আয়েশি ভঙ্গিতে পাখিদের নীড়ে ফেরার আয়োজন কিংবা বাতাসে কুয়াশার ধূম্র মিলেমিশে প্রকৃতিতে ফেলছে শান্ত অবয়ব…এই সবই ঠিক আছে, কেবল একটাই ব্যতিক্রম আজ আমার বুকের অন্দর মহলে চলছে অসম তাণ্ডব লীলা।

হৃদপিণ্ডের দপ দপ বেড়েই চলেছে; আমি জানি এসব ক্ষয় অবক্ষয়ের গল্পে তোমার মন বিচলিত হবে, অস্থির হবে, জানি শিকল বাঁধা হরিণীর মতন তুমি ছটফট করবে। তবু তোমাকে জানাতে হবে … সহস্র মন খারাপ রাত্রির নিঃসঙ্গ দহন সয়ে সয়ে আমি দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছিলাম জীবন। কারণ দহন তাপে তোমার উষ্ণতা খুঁজে পাই;

বিনিদ্র যন্ত্রণায় আমি সয়ে গেছি কারণ যন্ত্রণার অভ্যন্তরে তোমার সহিষ্ণু প্রেম অনুভব করি। পোড়া মাটির গন্ধে আমার অভিযোগ নাই; কারণ মাটি পুড়ে আমি নির্মাণ করি তোমারই প্রতিমা……তুমি জানতে আমি যেই ভাবেই হোক বেঁচে রবো, যেমনই হোক হার না মানার মানুষ আমি।

তুমি জানতে আঘাতের ভয়ে আমি পেছনে তাকাবো না, কটাক্ষের মুখে আমি বিব্রত হবো না! আর জানতে যে প্রলয়ের তাণ্ডবে সুনামির সাথে যদি তলিয়েও যাই তবে যেমন করেই হোক আমি উঠে দাঁড়াবো………
পাবোনা জেনেও
ছোঁবোনা জেনেও
আমি বার বার হাত বাড়াবো তোমারই পাণে…
আর-
এসব জানতেই বলেই তুমি মুক্ত বিহঙ্গীর মতো উড়ে বেড়ানোর নেশায় বুদ হয়ে গেলে। বৃক্ষ হতে বৃক্ষে, প্রান্ত হতে প্রান্তরে উড়ে বেড়ানোর নেশায় ডুবে রইলে…
শুধু জানতে না যে নেশায় ডুবছো তার থেকে উঠে আসার কোন রাস্তা নাই, ফেরার কোন পথ নাই।

অথচ আমি নিজেকে সাজাতেই ধরেছিলাম তোমার হাত। অসহায় ডানা ভাঙ্গা পাখির মতো তোমার চোখে চোখ রেখেছিলাম সুন্দর দিক নির্দেশনার আশায়। সহস্র শব্দের আশ্রম ভেবে নিজের সমস্ত কবিতা বুকের আগল থেকে তুলে তোমার হাতে দিয়েছিলাম…।

অথচ মানুষ হবো বলে সে দিন আমি কবি হতে চাইনি, আমি চাইনি যে বহুদূর উড়ে এসে প্রজাপতিরা আমার আঙ্গুলের ডগায় আশ্রয় নিক, তুমিই আমাকে কবিত্ব দিলে, প্রজাপতির আশ্রমের ডাল বানালে!

তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই।
যে দিন ঝর্না স্নানে সিক্ত হতে হতে নিজের বুকের কপাট উন্মুক্ত করে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলিঙ্গনে আমাকে নিবিষ্ট করেছিলে, আমি সে দিনই পরিপূর্ণ জীবন পেলাম। বসন্তের স্ফুটিত তাবৎ পুষ্প গুলোয় বিলিয়ে দিয়েছিলাম আজন্ম ভালোবাসা। তোমার অমর্ত্য চুম্বনে পেয়েছিলাম পরিতৃপ্ত জীবনের স্বাদ, দুনিয়ার মায়া মমতা, কোমলতা …আর পেয়েছিলাম এক অনবদ্য স্পন্দন !

তুমি ফিরও বা না ফিরো
আজকের এই বিকেল এই সন্ধ্যা তোমার জন্য উৎসর্গ করলাম!
আর অনন্তের আক্ষেপে ছুঁড়ে দিলাম জ্বলন্ত দিয়াশলাই……

ভালো থেকো।
ইতি
– তোমারই আমি।
_______________

096444_n

আমার উত্তরঃ

শুধুমাত্র ছোট একটা জ্বলন্ত দিয়াশলাই কাঠি দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া যায় তাবত পৃথিবী সুখে গড়া সংসার; জীবনের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্ষয় অবক্ষয়ের মাঝে হৃদয় পোড়ার ঘ্রাণ ক’জনেই বা খোঁজে।

গাঢ় চৈত্রের দুপুরে ঝিঁঝিঁ পোকার ঝিম ধরা ডাকে ক্লান্ত ভাতঘুম চোখে দরজার কলিং বাজলো এই সময়টায় সাধারণত কেউ আসে না, ইচ্ছা অনিচ্ছার দোলাচলে দরজা খুলে দাঁড়াতেই ডাকপিয়ন ধরিয়ে দিলো খামে ভরা তোমার চিঠি। এক অজানা শিহরণে ছুঁয়ে গেলো কিছু ভালোলাগা ভালোবাসা। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম অদ্ভুত সুন্দর তোমার গোটাগোটা হাতে লেখা আমার ঠিকানাটার দিকে।

খাম খুলে তাড়াহুড়া করে সবাই যে ভাবে সব চিঠি পরে আমি তেমন করে কোন দিন তোমার চিঠি পরিনি, আজো পরবো না; হয়তো কোন ‍দিনই পড়বো না, এটা নিয়ে তোমার লেখা দশটি চিঠি হলো, প্রথম চিঠিটা বাদে আর কোন চিঠি কোন দিন খুলে পরিনি মানে পড়া হয়নি। নিশ্চয়ই তোমার প্রশ্ন জাগছে কেন- কি কারন ! সত্যি করে বলি আমি তোমার চিঠি পরলে নিজেকে গুছিয়ে গুটিয়ে রাখতে পারতাম না, কেউ না জানুক আমি জানি কি অসাধারন তোমার চিঠির উপস্থাপন, কি মায়াবী করে তুমি লিখতে পারো।

আমি জানি আমার প্রতি তুমি কোনদিন কোন অভিযোগের অঙ্গুল তুলবে না, তুলবে না কারন তুমি আমাকে ভালোবাসো, আর তুলেই বা কি হবে আমি তো ফিরে যেতে পারবো না সেই অমর্ত্য মৃত চুম্বনে; যেখানে সব স্বপ্নের সমাধি পেরিয়ে সব শব গুলো বসে থাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলিঙ্গনে নিজেকে নিবিষ্ট করতে।

জীবনের জলপ্রপাতে যে স্ফটিক জল দেখতে পাই ভুল করে সেই কবিতার ব্যাখ্যা নিজের দিকে দাঁড় করিয়ে কবিকে ভালোবাসা যায় কিন্তু পাখির নীড় ঝড় বাতাসের বিপরিতে কতটা অসহায় তা যুগল পাখি মাত্রই জানে। আমার প্রজাপতির জীবনে কারো হাতের তালুতে ঝুলেও বা কতদিন বাঁচতে পারি।

আমি জানি শত বিপদ মোকাবেলা করেও তুমি তোমার লক্ষ্যে অবিচল থাকবে, আমাকে পেতে তোমার এই বিনিদ্র যন্ত্রণায় অভ্যন্তরে সহিষ্ণু প্রেম আমি গভীর ভাবে অনুভব করি অথচ চোখ মেলে তাকাতে পারি না, হাতকে প্রসারিত করতে পারি না, মুখে হাসি নিয়ে তোমার দিকে ছুটে যেতে পারি না।

প্রিয়তম আমার; যে ভালোবাসার ছোঁয়ায় তুমি আমাকে রাঙিয়ে দিয়েছিলে, যে ভালোবাসার আলিঙ্গনে শীতল হিমালয় থেকে জলধারা বয়েছিলো, যে উষ্ণ চুম্বনে জীবনের পরিপূর্ণ স্বাধ নিয়ে আমি দূর থেকে দূরে হারিয়ে যাচ্ছি, সেই ধরা ছোঁয়ার বাইরের ভালোবাসায় তোমাকে যা দিকে পেরেছি তা কোন দিন আর কাউকে দেয়া হবে না।

তুমি অপেক্ষার প্রহর গুলো দীর্ঘ করোনা
তুমি আশার করতলে চোখে জল এনো না
তুমি নীরব ভাষার আহবানে খুঁজো না আমায়
যে পথ চলেছে তোমার সন্ধ্যা তারার পথে
সেখানে নিরব বিষণ্নতায় আমি প্রহর গুনি
অনাহুতা জীবনের।

ভালো থেকো নিজের মত করে
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।
আমি তোমারি ?
খেয়ালী।
________

চিঠির পত্র ৯

shutterstock_DD 9

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৯ম পর্ব। এবারের চিঠি নিয়েছি – মামুনুর রশিদ এর লেখা “মৃত ব্যাক্তির চিঠি” থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি

প্রিয় পৃথিবী,

আমার একটু অভিশাপ নিস! যেহেতু ভালবাসতে শিখি নি এখনো। তাই মন্দোবাসার গল্পই শুধু শোনাতে পারি। প্রকৃতিতে এখন বসন্তকাল। চারদিকে কত রঙের ফুল ফুটছে, মৌমাছি দল মধু পান করে উড়ছে… কীভাবে মৈথুন করে করে গান গাইছে বসন্তের! কিন্তু আমি অনুভূতিহীন। এসব মিছিলে যাই নি কোনদিন। আমার আকাশে মেঘগুলো তৃষ্ণার্ত হতে হতে কখন ফুরিয়ে গেছে বাতাসে। টের পাই নি। আফসোস! কখনো বৃষ্টি হয়ে তোর মাটি ছুঁতে পারি নি। অথচ তুই ভীষণ বৃষ্টিপ্রেমী! তোর আঙিনায় বুনো ঘাসগুলো কারো বৃষ্টিতে ভিজে ওঠে কি না— এলো চুলগুলো দোলনায় দোলে কি না— নির্জন কোন বৃক্ষের ডালে। এখনো তুই হাসতে পারিস কি না! কাঁদতে শিখে গেছিস কি না! এসব প্রশ্ন করবো না— যদি পাপ হয়, যদি তোর আঁচড় লাগে! একদিন সমস্ত পাপ আমার জন্য রেখে দিও ঈশ্বর। যেহেতু আমার কোন ধর্ম নেই! যখন তোর নিষ্পাপ হাত দু’টি ছুঁয়েছিলাম, মনে হলো প্রথমবার মৃত্যু এসে ছুঁয়ে গেল। এতো সুখের সে মরণ! তারপর থেকে কত লক্ষ বার যে মরেছি গোপনে— হিসেব নেই। মৃতব্যাক্তির প্রেমে কেউ কি পড়ে?

প্রিয় পৃথিবী আমার! কিছুই দেখি না চোখে, শুধু ভেসে আসে লক্ষ কোটি গান— কীভাবে একই সুরে তুই গেয়ে চলেছিস বসন্তের সব গান! তবু ঝুলে থাকি সীমাহীন শূন্যতায় কীসব রোগে! মৃত্যুর পর কোথাও সমাধি হয় নি আমার। দেবদাসের জন্য কেউ কেঁদেছিল কি না? হ্যাঁ, পারু কেঁদেছিল। কিন্তু আমার জন্য কেউ না কাঁদে পাহাড়ি ঝর্ণার মতো। কেউ কোন প্রশ্ন না রেখে নির্জন পথের মতো চলে যাওয়া যাক। অথচ এখন বসন্ত কাল। তোর জন্য অনন্ত আগুন চাই… শীতকালে আমি ঝরে গেছি। হলুদ পাতার খোঁজ কেউ কি রাখে? তবু তোর নুপূরের শব্দে আমার বুকে নকশা জেগে ওঠে কিসের? জানি না, মর্মর করে ভেঙে যাব কিন্তু টের পাবে না কেউ। ভূতের ভয় আছে তোর নিশ্চয়? আমি এখন একটা ভয়ংকর ভূত। বলতে পারিস ভূতের রাজা! সুযোগ পেলে তোর ঘাড়ে ঠিক চেপে বসবো!

কীসব আবোল-তাবোল বকে চলেছি! আসলে এগুলোর এক চন্দ্রবিন্দুও সত্যি না। তুই তো জানিস, আমি কতটা মিথ্যেবাদী! তবু ঘোরের ভেতর অম্লান থাকে ক্রীতদাসের হাসি। শেষ বলে কিছু নেই, শুরু হোক…

ইতি
কেউ নই।

আমার উত্তরঃ

জীবনের অভিশাপ কখনো কখনো বয়ে আনে সু-বাতাস; যে বাতাসে ভালোবাসতে না পারা লোকদেরও শিহরিত করে।

আমাকে যারা বসন্ত উৎসবে সাজিয়েছে আজ, কালকে তারাই বিসর্জিত করবে বৈশাখী ঝড়ে, জীবন বদলে কোন সুখ নেই রে তা তুমি মানুষ থেকে মৃত হও আর আমি বসন্ত থেকে শরৎ।যে শরতে মৌমাছি দল মধু পান করে উড়ছে সেই মৌমাছিই বুকে হুল ফুটাবে জৈষ্ঠ মসের গরমে, আমি পৃথিবী আমার বুকের মাঝে যে রক্ত বৃষ্টি ঝড়ে পরে তাও আমার.. শেষের কবিতার শেষে…

”তোমাকে যা দিয়েছিনু সে তোমারই দান গ্রহন করেছো যত ঋণী তত করেছো আমায়”
আমি পৃথিবী বলেই নিশ্চুপ মৌনতায় দেখতে পাই’ বোবা কান্নায় ভিজে যাওয়া চোখের ঘাসফুল, কষ্টের খুশিতে হাসতে থাকা হাসনুহেনা, বন্ধনহীন জীবনধারায় ঝরনার ছুটে চলা, গন্তব্যহীন অচল মুদ্রার মত পাহাড়ের স্থির কষ্ট নিয়ে জেগে থাকা কিংবা বিহ্বল খুশিতে যে ভালোবাসা ছুঁয়ে দিয়েছিলো তোমাকে, সেই ভালোবাসার গভীরে জমে থাকা পাপবোধ। কালের নিরব স্বাক্ষী নিয়ে আমার মত নির্ঘুম কেউ জেগে থাকে না। আমি হয়তো তোমার মত মৃত নই কিন্তু জীবিত কি আছি? তুমি তবু একটা পর্যায়ে চলে গেছো আর আমি জীবন মৃত্যুর মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে তোমাদের ক্ষতগুলো দেখে যাই অপারগতার সনাতনী ধর্ম ছুঁয়ে; যে ছোঁয়ায় জীবন ফিরে পায় সেই কুসুম কুসুম প্রেম আমি দিতে পারিনি কোনদিন কাউকে, নিতে পারিনি প্রেমিক পুরুষের প্রথম ছোঁয়ায় যে কম্পিত শিহরণ জাগে সেই অনুভুতি। ভুতের ভুতনি বা প্রেত্নি হয়তো একদিন হবে পৃথিবীর কে কি হবে ….

তোমার মত আবোল তাবোল আমিও লিখে রেখে গেলাম তোমাদের ভুত সমাজের কাছে; পূর্ণ বা অপূর্ণ বলে যে কথা দিয়ে তোমরা মানব বা মৃত মানব হয়ে সুখ বা দুঃখ খুঁজে পাও তাতে তোমাদের অনুভূতীর প্রকাশ হয়… আমি অনুভূতিহীন অনুগত দাস এই জাগতিক সংসারে… এ এক সত্যি কথা শেষ বলে কিছু নেই, শুরু হোক… শুরু হোক নব রুপে নতুন দিনের পথ…

ভালো থাকিস নিজের মত করে
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।
আমি
খেয়ালী…. পৃথিবী।

চিঠির পত্র ৮

958_xlarge

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৮ম পর্ব। এবারের চিঠি নিয়েছি – আনু আনোয়ার এর লেখা “শূণ্য বিষণ্ণ” থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

শূণ্য বিষণ্ণ চিঠি।

বেলা শেষে উদাস পথিক ভাবে,
সে যেন কোন অনেক দূরে যাবে –
উদাস পথিক ভাবে।

‘ঘরে এস’ সন্ধ্যা সবায় ডাকে,
‘নয় তোরে নয়’ বলে একা তাকে;
পথের পথিক পথেই বসে থাকে,

গত কালের সন্ধ্যাটা আমার কিছুতেই কাটছিল না। কোন সন্ধ্যাই আমার কাটে না। প্রতিটি সন্ধ্যার গোধূলি বেলা আমার কাছে কেমন এক অজানা অক্ষরের বেদনা নিয়ে হাজির হয়। রাস্তার সোডিয়াম বাতির সাথে সাথে যখন সমস্ত বাড়ি ঘর আর বহুতল বিপনিবিতান গুলো রঙ-বেরঙের আলোয় ঝলমল করে উঠে আর শহরের কাক গুলো যখন কা কা করতে করতে দলবেঁধে ঘরে ফিরে আমার শুধু মনে হয় আমার কোথাও যাবার নেই। এতো আলো এত কথার ঝনাৎকারের মাঝে আমি দূর দিগন্তে দাঁড়িয়ে বৃক্ষ এক। কোন আড্ডা কিংবা রেস্তোঁরায় যাই না। একা একা এদিক সেদিক হেঁটে হেঁটে আর কাটছিল না সময়গুলো। কাল সন্ধ্যার পরেই তাই ট্রেনে চেপে বসলাম। সারারাত আমার একটুও ঘুম হয় নি। পাশের যাত্রীটি মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে আমার গায়ের উপর এসে পড়ছিল। সারারাত নির্ঘুম আমি যেন একটু ক্লান্ত হইনি। বরং বিশ্বাস কর, বহুদিন পর আমি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। আমার মত নিতান্ত নির্জীব ঘরমুখো একটা জীবের পক্ষে এ যেন এক বিরাট ঘটনা। মনে আছে একবার তুমি আমাকে বলেছিলে,’’ তুমি কি কোন দিন আমাকে দেখতে আসবে!” আমার মত উদাসীন উজবুকের পক্ষে এ যে অভাবনীয় সে তুমিও টের পেয়েছিলে। অথচ দেখ সেই উজবুকই গতকাল সারারাত না ঘুমিয়ে তোমার দেশে হাজির হয়েছে। আমরা যখন ক্লাস শেষে একসাথে বাসায় ফিরতাম তুমি অনবরত কথা বলতে। তোমার এত গল্প ছিল আর এত সুন্দর তোমার বলা আমি কেবল শুনেই যেতাম। তাছাড়া এমনিতেই কথা বলি কম। গুছিয়ে কথা বলা শিখিনি কোন দিন। তাই তোমার কথাগুলো আমার কাছে যেন পুষ্প হয়ে ফুটত।

কাল যখন আর কিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না, চেপে বসেছি মেইল ট্রেনে। মনে হচ্ছিল একদিন, শুধু এক সন্ধ্যায় যদি মুখোমুখি বসি। দরকার নেই নদীর ধার, কাশবন। দিগন্ত জোড়া কোন মাঠ, বটবৃক্ষ এসবও দরকার নেই কিছুতেই। শুধু একসন্ধ্যা, মুখোমুখি কোথাও। ফুটপাত, টং দোকান, আটপৌরে যেকোন জায়গায়।

সমস্ত বন বাদাড়, ধানক্ষেত পাড়ি দিয়ে সকাল বেলা নেমে সোজা তোমার ঠিকানায়। এসে দেখি আমার প্যারাডাইস লস্ট। তুমি নেই আর আগের ঠিকানায়।

আমার উত্তরঃ

সন্ধ্যা শেষে সবাই যখন ঘরে;
আঁধার কালোয় ভুবন গেছে ছেয়ে,
একাকি চাঁদ একলা পথিক খোঁজে
পথের পথিক রাতের রাতার সাথী;
সবাই কি আর ভিন্ন জগত বোঝে:
একলা জগত একলা মানুষ
একলা চলা গাঁয়
একলা রাতে চাঁদের আলোয়
নিবির হতে চায়।

প্রিয় আমার,
কেউই একই ঠিকানায় কখনো থাকে না, প্রয়োজনে কিংবা প্রয়োজন ছাড়াও মানুষ ঠিকানা বদল কারে, ভুল ঠিকানায় কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় চলে যায় তার দ্বায় কার. পথিকের পথের না আটপৌড়ে শাড়ি চুড়ির।

স্বাধীনতার অপর নাম গন্ডির মধ্যে অবাধ চলাফেরা, মন চাইলেই তুমি সময় বদলের জন্য ঝুলে যেতে পারো আপ কিংবা ডাউন ট্রেনে, ভাবতে পারো স্বাভাবিকতার বাইরে ফুটপাতে ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি সেই সৌভাগ্য কিন্তু সবার হয় না; এই দিক দিয়েও কিন্তু তুমি খুব ভাগ্যবান।

সেই গানটা মনে পরে পরে গেল
আমি আগের ঠিকানায় আছি সময় করে এসো এক দিন দুজনে কিছুক্ষণ বসি মুখোমুখি… শুনেছো কি না শুনলে শুনে দেখ ভালো লাগবে। গানের কথাটা এই জন্য বলছি গানটি একটি স্বপ্ন মনে হয় আমার কাছে ; যা হবার নয় তাই নিয়ে স্বপ্ন…

আমি পার্বতী নই আর তুমি দেবদাস; তবে আমি দেবদাসী হয়ে দেবতার খোঁজে আজো আমি ডালাতে ফুল তুলে মন্দিরে মন্দিরে হেঁটে চলি খালি পায়ে; শক্ত বা নরম মাটি কিংবা পাথর আমার অনুভূতিতে যে আঘাত করে তার চেয়ে অনেক আঘাত পাই পিছন ফিরে তাকালে সময় কিংবা তোমার স্মৃতি রেখায়। গুছিয়ে কথা না পারার জন্য যেটুকু কথা কম বলতে সেই সময়ের না বলা কথার ওজন গুলো আজো বয়ে চলি পথ থেকে পথে।

তোমার মত আমারও সব সন্ধ্যাই কাটে নির্মল একা এক প্রার্থনার ঘরে তোমার মতই আমারো প্রতিটি সন্ধ্যার গোধূলি বেলা কেমন এক অজানা অক্ষরের বেদনা নিয়ে হাজির হয়, পার্থক্য শুধু তুমি খোলা আকাশে আর আমি মৃত্যু নিয়ে জেগে উঠি বন্ধীশালায়।

তোমাকে জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতার কিছু লাইনি লিখে শেষ করছি….

”আমরা হেঁটেছি যারা নির্জন খড়ের মাঠে পউষ সন্ধ্যায়,
দেখেছি মাঠের পারে নরম নদীর নারী ছড়াতেছে ফুল
কুয়াশার; কবেকার পাড়াগাঁর মেয়েদের মতো যেন হায়
তারা সব; আমরা দেখেছি যারা অন্ধকারে আকন্দ ধুন্দুল
জোনাকিতে ভ’রে গেছে; যে-মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ–কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে; ”
______________________________

ভালো থেকো
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়
খেয়ালী।

চিঠির পত্র ৭

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৭ম পর্ব। এবারের চিঠি নিয়েছি – ছন্দ হিন্দোল‘র লেখা ”ছেঁড়া পাতা“ থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

ছেঁড়া পাতা

শ্রাবণের মেঘে ঢাকা আকাশ বর্ষণ মুখর
রিম ঝিম বরষে।
ফুলে ফুলে ঢাকা হাস্নু হেনার ঝাড়
সুবাসিত আন্দোলিত হরষে।
মনে পড়ে ফেলে আসা
সেই সব দিন।
বয়সের ভারে ক্ষয়িষ্ণু, ম্রিয়মাণ,
দৃষ্টি হয়েছে ক্ষীণ।
তবুও মনে পড়ে যেন
সেদিনের স্মৃতি।
মাটি ও মায়ের সাথে
বিজড়িত বিস্তৃতি।
বৃষ্টিতে ভিজে মাছ ধরা,
বন বাদাড়ে ঘোরা, গাছে চড়া।
বন্ধুদের সাথে শাপলা তোলা
সাঁতার কাটা নৌকা চড়া।
পাখির বাসায় হানা দেওয়া,
ফড়িং প্রজাপতির পেছনে ছোটা।
ছেড়া ছেড়া স্মৃতি গুলো এখনো জ্বলজ্বলে
যেনো রঙ্গিন পদ্ম ফোটা।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে
অনেক কিছুই আজ বিলীন।
মনে হয় স্মৃতির পাতা মুছে যাবে
হয়ে যাবে লীন।
আজ বড় সাধ হয় নতুনের সাথে ভাগ করে নেই
আমার স্মৃতি কথা।
বুক ভরা আশা নিয়ে ছেড়ে দিলাম
আমার ছেঁড়া পাতা।
এটাই আমার নতুনের কাছে লিখা চিঠি।
উত্তর পেলে খুশি হব।

যদিও গতানুগতিক চিঠি থেকে ভিন্ন …
শুভেচ্ছা ও শুভকামনায়
ছন্দ হিন্দোল
________

venus17

আমার উত্তরঃ

প্রিয় সিনিয়র
ছন্দ হিন্দোল।

আজ আকাশে তারার মেলা
নিয়ন জ্বলা রাত
ফুলবাগানে এক কোনেতে
অষ্টাদশীর চাঁদ।
ছেড়া পাতায় জুড়ে দিলাম ভালোবাসার নাম
স্মৃতি তোমার ভাগাভাগি; আমাদের সম্মান।
স্মৃতিরা হয় ইতিহাস আমাদের বিশ্বাস
তাকে নিয়ে এগিয়ে চলা আমাদের আবাস।
বনবাদাড় মন ঘুরে যায় পাইনা সেই স্বাধ বুকে
আমারা থাকি বন্ধিশালায় তোমরা ছিলে সুখে।
নৌকা চলা, মাছ ধরা বা ঘুড়ি ওড়ানোর দিন
মোদের কাছে স্বপ্ন সে সব যতই হই নবীন।
তোমার স্মৃতি খাচ্ছে পুড়ে ভাবছো বসে তাই
আমরা নবীন সে সব দিনের গল্প শুনে যাই।
শুধুই ভাবি এখন কেনো আসে না সেই ক্ষন
বন্ধ ঘরের চিলেকোঠায় ডুকরে ওঠে মন।
মায়ের সাথেই থাকি মিশে ভালোবাসা আর ভয়ে
মাটির ঘ্রান পাইনা কোন যাচ্ছে জীবন ক্ষয়ে।

ইতি
আমারা নতুন..
খেয়ালী…
__________

চিঠির পত্র ৬

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৬ষ্ট পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি – দীলখুশ মিঞা‘র লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি

দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
হাই হ্যালো।
পর সমাচার এই যে, ইহা আমার দ্বিতীয় চিঠি, এর আগে আমার পাঠানো চিঠির কোন উত্তর পাই নি। যা হোক আবারও লিখলাম, হু এবারও যদি চিঠির উত্তর না দেন তবে মনে বড় দুঃখ পাবো। আর সেই দুঃখে আপনাদের এই চিঠি চলাচালি পোষ্টে এসে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেই যাব।

আপনাদের এই পোষ্টে আমি জানিয়ে যাই, একটি বিখ্যাত লেখার ভূমিকা। আপনাকে জানাতে হবে লেখাটি কার এবং কেন আমি এ ধরনের উদ্যেগে এমন চিঠি আপনাদের লিখলাম। ভূমিকাটি নিম্নরূপ।

“এই রচনাটির একটু ভূমিকা আবশ্যক। ১৯৩৬ সালে একটি বাঙ্গালী যুবক লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়িতে যায়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে গাওয়ার স্ট্রিটের ভারতীয় আবাসটি জার্মান বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত হইলে আত্মীয়বর্গের নির্বন্ধাতিশয্যে যুবকটি ভারতবর্ষে ফিরিয়া আসে। স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রীপসের আলোচনার প্রাক্কালে বিলাতের একটি প্রাদেশিক পত্রিকা তাহাকে তাহাদের নিজস্ব সংবাদদাতা নিযুক্ত করিয়া দিল্লীতে পাঠান। লন্ডনে অবস্থানকালে এই পত্রিকায় সে মাঝে মাঝে প্রবন্ধ লিখিত।

দিল্লীতে যাইয়া যুবকটি তাহার এক বান্ধবীকে কতগুলো পত্র লেখে। বর্তমান রচনাটি সেই পত্রগুলি হইতে সংকলিত …
এই স্বল্প পরিসর পত্র রচনার মধ্যে লেখকের যে সাহিত্যিক প্রতিভার আভাস আছে, হয়তো উত্তরকালে বিস্তৃত সাহিত্য চর্চার মধ্যে একদা তাহা যথার্থ পরিণতি লাভ করিতে পারিত। গভীর পরিতাপের বিষয়, কিছুকাল পূর্বে এক আকস্মিক দুর্ঘটনায় তার অকালমৃত্যু সেই সম্ভাবনার উপরে নিশ্চিত যবনিকা টানিয়া দিয়াছে।”
এই বইয়ের একটি অংশও দিলাম যাতে চিঠি উত্তর দিতে আপনার সুবিধা হয়।

“পুরুষের জীবনে আজ গৃহ ও গৃহিনীর প্রয়োজন সামান্যই। তার খাওয়ার জন্য আছে রেস্তোরা, শোয়ার জন্য হোটেল, রোগে পরিচর্যার জন্য হাসপাতাল ও নার্স। সন্তান সন্ততিদের লালন পালন ও শিক্ষার জন্য স্ত্রীর যে অপরিহার্যতা ছিল, বোর্ডিং স্কুল ও চিলড্রেন্স হোমের উদ্ভব হয়ে তারও সমাধা হয়েছে। তাই স্ত্রীর প্রভাব ক্রমশঃ সঙ্কুচিত হয়ে ঠেকেছে সাহচর্যে। সে পত্নীর চাইতে বেশিটা বান্ধবী। সে কর্ত্রীও নয়, ধাত্রীও নয়, -সে সহচরী।

নারীর পক্ষেও স্বামীর সম্পর্ক এখন পূর্বের ন্যায় ব্যাপক নয়। একদিন স্বামীর প্রয়োজন মুখ্যতঃ ছিল ভরণ, পোষণ ও রক্ষণাবেক্ষনের। কিন্তু এ যুগের স্ত্রীরা একান্তভাবে স্বামী-উপজীবিনী নয়। দরকার হলে তারা আপিসে খেটে টাকা আনতে পারে।
তাই স্বামীর গুরুত্ব এখন প্রধানতঃ কর্তারুপে নয়, বন্ধুরুপে।”

আপনার ভালো হোক।
______________

আমার উত্তরঃ

FB_IMG_1484908836924

দীলখুশ মিঞা আপকা খুশ বচনে আমি মুগ্ধ ।

আমি প্রথমেই আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এই জন্য যে, আমি তার প্রথম চিঠিটির উত্তর দিতে পারিনি, যা আমার উচিৎ হয়নি সত্যি বলতে কি আমার পথচলাটা অন্য সবার মত নয়, সময় করে সময় বের করা আমার খুব কষ্টের সেই কষ্টটা যত না মনের তার থেকে অধিক অর্থে অর্থের। আমি সহজ ভাবেই আমার সমস্যা সবার সামনে তুলে ধরি বা পরিষ্কার করি, যা আমি করিনি বা পারিনি তার দায় আমার, কিন্তু বিব্রত হইনা এটা ভেবে “আধুনিক বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ, কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ। তাতে আছে গতির আনন্দ, নেই যতির আয়েশ।”

প্রতিটি মানুষের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে; আমারো আছে সেই দিক দিয়ে বিচার করলে অনেক ভাগ্যবান থাকেন, যারা সকল কিছু জানেন কিংবা বোঝেন এবং বুঝেও টোকা দিয়ে পরখ করতে চান জীবনের কলসীতে কার কতটা জল বহন করার ক্ষমতা আছে। আসলে “প্রেম ভালো, বিদ্বেষ দুঃখের কিন্তু সবচেয়ে মারাত্মক ইন্ডিফারেন্স- যে কাছেও টানে না- দূরেও ঠেলে না- শুধু ভুলে থাকে।” বা ভুলে যাবার অবকাশ থেকে বঞ্চিত রাখে।

প্রিয় দিলখুশ
আপনার কড়া ভাষার চিঠি আমাকে ভীষন ভাবে টানবে সত্যি কিন্তু হয়তো নিতে পারবো না বলেই উ্ত্তর দেয়াটা জরুরী হয়ে দাঁড়ালো। মনে পরে গেল বিনয় মুখোপাধ্যায় এর লেখা একটা বইয়ের বইয়ের শেষের প্যারাঃ প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দহন হলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার।।

এই লেখকের কিছু লেখা পরার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো, সৌভাগ্য এই জন্য যদি না জানতাম তবে কড়া কথা শুনতে হতো… তাও আবার কাছের লোকের কাছে। আমি দূরের মানুষের কথা দূরে সরিয়ে রাখি যদি সেই অবসর পাই তবে হয়তো খুলি তার ঝাঁপি; দেখি সব পচা আপেলের মাঝে দু একটা পাথরকুচি গাছ আছে কিনা আর কাছের মানুষের কথা থাকে আমার চোখের তারায় চলতে ফিরতে যাকে বন্ধ করা সম্ভব নয়; যদি কখনো ছোট কোন বালুকণা এসেও দাঁড়ায় ভাবি চোখ তো ফেলে দিতে পারবো না বা বন্ধ করেও রাখতে পারবো না।

একটা বিষয় আমার বেশ ভালো লেগেছে, তাহলো আপনার নাম.. যদিও “মানুষের নামের যদি কেবলমাত্র সনাক্তকরণ ছাড়া আর কোন প্রয়োজন না থাকত, তবে নামের বদলে সংখ্যা ব্যবহারের দ্বারাই তা অনায়াসে চলতে পারত। তা হলে মেয়ের জন্ম মাত্রেই মা তার নামনিত্তবাচন নিয়ে ভাবনায় পড়তেন না। নিত্য নতুন নামকরণের অনুরোধ জানিয়ে রবীন্দ্রনাথের কাছে চিঠি আসত না।

আমি বেশ কিছু দিন আগে বাংলাদেশের এক রাজনৈতিক নেতার একটা বই পরেছিলাম, বইটা তিনি লিখেছিলেন যখন তিনি জেলে ছিলেন, অনেকের কাছে বইটি তেমন গ্রহন যোগ্যতা পায়নি, কিন্তু আমার কাছে বইটি অসাধারন লেগেছে, কারন জেলখানার মধ্যের অাসামীদের সাথে বিশেষ করে মহিলা আসামীদের সাথে কি ধরনের ব্যাবহার করা হতো তা নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়েছে। আপনার সুবিধার জন্য আরো বলে রাখি বইটি যিনি লিখেছেন তিনি এক জন মহিলা।

কখনো সম্ভব হয় বইটি পড়ে তার রিভিউ করলে অনেক খুশি হবো দিলখুশ ভাই।

ভালো থাকিস নিজের মত করে
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।

আমি
খেয়ালী ….
_________

নোটঃ শেষে এসে ধারাটা একটু পালটে দিলাম… কাছের মানুষকে আপনি বলাটা একটু কষ্টকর লাগে।

প্রসঙ্গ : চিঠির পত্র … আপনার প্রিয় লেখাটি দিন

Letar12a

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

letter17

লিঙ্ক অথবা মন্তব্যের ঘরে … আপনার প্রিয় লেখাটি দিন।
লেখা থেকে আমি তার প্রতি উত্তর দেবার চেষ্টা করবো।

কিছু লেখা পড়ে দেখতে পারেন। চিঠিপত্র। চিঠির পত্র ১। চিঠির পত্র ২। চিঠির পত্র ৩। চিঠির পত্র ৪। চিঠির পত্র ৫। চিঠির পত্র ৬। চিঠির পত্র ৭। চিঠির পত্র ৮। চিঠির পত্র ৯। চিঠির পত্র ১০। চিঠির পত্র ১১।

চিঠির পত্র ৫

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৫ম পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি –রিয়া রিয়া এর “অপেক্ষা … ২৩ (চিঠি)
লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি (রিয়া রিয়া এর লেখা)

প্রিয়মন,

অপেক্ষায় থাকি আমি রোজ, এ যেনো অনন্তকালের অপেক্ষা আমার তোর জন্য। অপেক্ষার রং কমলারসা, যেনো তোর ঠোঁটের স্বাদ। অপেক্ষার সন্ধ্যে নীল, তোর চোখের ছায়া। তুই ও কি অপেক্ষা করিস? বলনা করিস অপেক্ষা ? একেবারেই করিস না? জানতে ইচ্ছে করে ভীষণ, তোর অপেক্ষা আমার জন্য। এতো শুধু সময় পেন্ডুলাম। অপেক্ষা এখনও বাকি। অপেক্ষার দুপুর কাজলছাপ, তোর রুক্ষ চুলের মতো। অপেক্ষার মন ধোয়া রঙ, তোর নিঃশ্বাসে ডুব চান।

সময় নদী কুলকুল করে বয়ে আমার কাছে আকুল হয়ে দাঁড়ায়। আমার তখন তোকে ছুঁতে চাওয়ার ইচ্ছেরা প্রবল হয়। ইচ্ছেরা সব জাগে। নিবিড় ভাবে জড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে তখন তোকেই। কুশের আসন ভিজিয়ে নিয়ে বসেছি তোর আরাধনায়, একটু ঘাস ভেজানো ঘ্রাণ। বুকের ভিতর উথাল পাথাল ঢেউ। আবার জন্মে আবার যদি ফিরি। তবে পাতার জন্ম নেবো, শুধু তোকে ছুঁয়ে থাকবো মন। হয়তো বাতাস হব।

আজ মন তোর কাছে গচ্ছিত। ভালবাসা দাঁড়িয়ে তোর চৌকাঠে।মনের বাঁধন খুলে গেছে সন্ন্যাস আবিরে। অপেক্ষার ঘোর লেগেছে আমার মনে, মাথার ভেতর অসংখ্য অলিগলিতে শুধু তোর আনাগোনা। সন্ধ্যে বেলায় ধূপের ধোঁয়ায় দেখি, অপেক্ষার নামতা। অসহ্য এ অপেক্ষা, অসহ্য এ শরীর, একবার তুই ছুঁয়ে দেখ। ইতিহাসের পাতায় সব দুঃখ হেলায় ফেলে সুখের শিখরে উঠবো। এইত, শুধু এইটকুই আমার রোজ নামচার পথ। স্বপ্ন বেয়ে আসতে পারি তোর কাছে যখন তখন। সন্ধ্যে কিংবা রাত। মন খারাপের রাতগুলোও তুইই থাকিস ঘিরে।

আজ না হয় ঘুমিয়ে পড়ুক তোর আর আমার রাত …

… ইতি,
আমার হারানো মন…
______________

আমার উত্তরঃ

ঘুমিয়ে পড়া রাতের আঁধার চোখের তারার সুখে
খুব সকালে জেগে উঠি স্বপ্ন মায়া বুকে।
তোর কারনে একলা লাগে বুকের গভীরে
মন খারাপের রাতগুলোও তুইই থাকিস আমায় ঘিরে।
গচ্ছিত যে ভালোবাসা দাঁড়িয়ে চৌকাঠে
কানাগলির গোলক ধাঁধায় হাঁটে পথে পথে।
জীবন কি আর ইচ্ছে মত সুখ শিখরে ওঠে
রোজ নামচার পথ গুলোতেই ফাল্গুনি ফুল ফোটে।

প্রিয়,
তোর চিঠি পেলাম পড়তে গিয়ে নিজেকে হারিয়েছি জীবনের ব্ল্যাকহোলে। হঠাৎ করে তোর এই আকুলতা আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। ভালো আছিস তুই?

বেলা অবেলার মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিষ্পলক চেয়ে দেখেছি, গাঢ় গভীর রাতের আসমানী রঙ; ছুয়ে দেখতে পারিনি কোনদিন সবুজের চাদরে জড়িয়ে থাকা শিশির বিন্দু, যতবার ভেবেছি ছুঁয়ে দেখবো ততবার সকালের রোদ তাকে টেনে নিয়েছে উষ্ণ উত্তাপে।

আমি জাতিশ্বর হয়ে জন্মানো বিষয়টি কোন দিনই চাই না, যা এ জীবনে হবে না পরবর্তী জীবনে আশা করে হয়তো মানসিক সুখ মেলে কিন্তু নিজের কাছে নিজের বিচার করলে অংকের ফলাফল তো শূন্যের কোঠায় দাঁড়াবে, আর সেই শূন্য থেকেই তোকে হারানোর শূন্যতা অনুভব…. কি দরকার মিছে শান্তনার….।

অপেক্ষায় আমিও থাকি প্রান্তিক উৎসবে; কখন আসবে তুমি খোপায় গুজে বেলী ফুলের মালা, চোখে কাজলের টান, পায়ে আলতা, হাতে কাঁকন আর কপালে সিঁদুর রঙের টিপ…. তোমাকে আকুল করে দাঁড়ানো কুলকুল নদী আমাকে পথ আটকে দাড়ায়, চাইলেই পারাপারের খেয়া খুঁজে পাই না। বুকের ভিতর উথালপাথাল ঢেউ ঝড়ো হাওয়া হয়ে উড়িয়ে নিয়ে যায় দেশ থেকে দেশান্তরে……।

তারপরও স্বপ্ন আবেশে ছুঁয়ে যাওয়া মন দিগন্তের দিকে চোখ মেলে ধরে, খুঁজে ফেরে হারানো সে দিন। আচ্ছা বলতো যে ‍দিন গেছে চলে তা কি একেবারেই গেছে ? সময়ের ভাঁজে ভাঁজে যে গন্ধ ছিলো তোর, শরীর জুড়ে তার থেকে বাইরে এসে দেখেছি চোখের চশমার কাঁচ শুধুই মোটা হয়েছে বারংবার।

পোড়া ধূপের ধোয়ার সুভাস এক সময় বিলীন হয়ে যাবে বাতাসে ভেসে ভেসে
পোড়া চোখের স্বপ্নগুলো এক সময় বাস্তবতার কাছে হার মেনে ফ্যাকাশে হবে
পোড়া মনের ক্ষতও এক দিন হালকা হয়ে যাবে জীবনের স্বাভাবিক নিয়মে……

আর আমিও হেঁটে যাবো দূর থেকে দূরে, আরো দূরে; যেখানে অভিশপ্ত কোন জীবনের জন্য কোন রংধনূ উঠবে না। ভালো থাকিস নিজের মত করে এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।

আমি
খেয়ালী….

A man stands illuminated in a field of lupine wildflowers looking at the Milky Way in Hope Valley, California.
A man stands illuminated in a field of lupine wildflowers looking at the Milky Way in Hope Valley, California.

চিঠির পত্র ৪

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে ( তা হোক কবিতা কিংবা গল্প বা সাধারণ ) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৪র্থ পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি –রিয়া রিয়া এর “ভুলে থাকা মন … ২২ (চিঠি)“।
লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি (রিয়া রিয়া এর লেখা)
________________

প্রিয়মন,

মেঘ নদীতে হাওয়ায় পানসী বেয়ে অবশেষে আমার কাছে এলো তোর চিঠি। চিঠি খুলতেই একরাশ রজনীগন্ধার সুবাস ছুঁয়ে গেলো আমায়। খুঁজে পেলাম তোকে। ঝলমলিয়ে উঠলাম আমি।

জানিস, কাল রাতে বৃষ্টি এসেছিল, ঝড়কে সাথে নিয়ে। তুই তো জানিস এই রাতের বৃষ্টি আমার কত্তো প্রিয়। যখন ঝড় হচ্ছিলো, দৌড়ে গেলাম ছাঁদে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলাম। প্রশান্ত মহাসাগরের কোন এক অজানা দ্বীপের গন্ধ এসে লাগলো আমার নাকে। সেই দ্বীপকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে নিয়ে নীচে নেমে এলাম। আর বৃষ্টি, ঝড়কে নিয়ে আমার শহর ঘুরে ঘুরে আমায় খুঁজে ফেরে…আমার ঘরের জানলাটা খোলা ছিল। তাই ওরা আসার সাথে সাথেও পর্দায় বাঁধা পিতলের ছোট্ট ঘুঙুরগুলোয় সুর তুলল “টুংটাং”।

আর জানিস, পড়ার টেবিলে যত্নমাখা বইগুলোকে পরম আদরে ছুঁয়ে দিলো বৃষ্টি, আর ঝড় রাখলো তার অগোছালো ছাপ। আয়নায় ছুঁয়ে দেখলো আমার প্রতিচ্ছবি …তারপর এঘর থেকে ওঘর গেল ..ওঘর থেকে সেঘর …থমকে দাঁড়াল বারান্দায়… সেই যেখানে আমি দাঁড়িয়ে থাকি রোজ, তোর কথা ভাবি। আর রেলিংয়ে হাত রেখে তোর প্রিয় গানগুলো গুনগুনিয়ে উঠি ; জানিস,ঠিক সেখানে, একেবারে সেখানেই বৃষ্টি হাত রেখে গুনগুনিয়ে নিলো বুঝি। ভীষণ হিংসে হচ্ছিল তখন আমার। তোর আর আমার গন্ধমাখা বারান্দা থেকে গন্ধ নিল মেখে…তারপর ভেসে গেল হাওয়ায়… আর ঠিক তখনই খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো আয়নায় আমার প্রতিচ্ছবি… বৃষ্টি এল ঝমঝমিয়ে।

প্রতিদিনের চোখের জলে অনেকটা ধুয়ে গেছে মন। জানি তুই ভুলে গেছিস। জানি এখন আমি তোর কাছে গুরুত্বহীন। তাইতো ভীষণ অচেনা জানা আমি আজ তোর কাছে। আর আমি তোকে সেই কিছুদিন আগের মতোই ভেবে নিয়ে আবদার করে বসি। জানিস কখনো কারো কাছে আবদার করিনি। তোর কাছেই করতাম। আর কোন আবদার করবোনা কথা দিয়েছি তোকে। আসলে আমি ভীষণ বোকা তাই বারবার বোকার মতো ফিরে পেতে চাই পুরনো তোকে। আর তুই বারবার শব্দের তীর এক্কেবারে আমার বুকে বিঁধে দিস। কালও দিয়েছিস। রক্তাক্ত হয়েছি কাল ভীষণ। চোখে নেমেছে লবন জলের স্রোত। হয়তো ভুলে গেছিস তুই, বলেছিলাম তোকে যে আমি হারাবার ভয় পাই। বলেছিলাম তোকে জানিস আমার যা ভাগ্য, এত সুখ আমার সইলে হয়। এখন বুঝলি তো, যে আমার ভাগ্যে সুখ নেই।

জানি অনেক লেখার মতন এ লেখাও পাবে না তোর ছোঁয়া। তবু আজ মন বড় টলটলে দিঘী। তোর নতুন খেলার সাথীর সাথেই খেলায় মাতিস রোজ। আমি এখন পুরোনো,অচল। এখন এই সব দিনে একা। তুই আর আসিস না ছাদের সে কার্ণীশ বেয়ে, যেখানে কল্পনায় তোকে পেতাম। মেঘেরা তবু রোজ একবার করে এ শহরের শার্সীর আর্শীতে আর্জি জানিয়ে যায় আমাকে ভেজাতে চেয়ে। ভিজে যায় মন-চোখ।

তাইতো কাল গুঁড়ো গুঁড়ো বৃষ্টিরা এসেছিলো নিয়ে যেতে, বাধা পেয়ে চোখে জলের সাথে সুর তুলেছে। তোর কাছে এতটুকু আকাশ চাইতে গিয়ে অপমানিত হয়ে গুটিয়ে গিয়েছি নিজের কোলের ভিতরে। রাতের পর রাত নিজের কোলে কোল পেতে নিজেকে ঘুম পাড়াই আমি। আস্তে আস্তে বড় হয় দীর্ঘশ্বাস। তোর এখন, তোর প্রিয়ার সাথে নীল রঙা রাতভোর। আর আমি শিশির ভেজা কুয়াশার গন্ধের মতন একটু একটু করে মুছে যাই তোর মন থেকে।মুছে দিচ্ছিস তুই একটু একটু করে। কেউ বোঝেনা জানিস। কেউ না। তুইও না। না, তুইও আমাকে বুঝিস নি।বুঝতে চাস নি। হেঁয়ালির মতো উচ্ছিষ্ট হয়ে যাই আমি। উপাচারে যেমন অসম্মানিত ঈশ্বর, অবহেলায় তেমনি আমার বিসর্জন।

আজ আর আমি কোথাও নেই। আমি নেই জানিস তুই? মরে গেছি আমার আমি। এখানে, ওখানে, সেখানে, কোনখানেই আমি নেই। কোত্থাও নেই …

ভালো থাকিস রে মন। আকাশের তারাদের মতো ঝলমলিয়ে, খুব ভোরের রোদের মতোই সতেজ থাকিস। জানবি তুই ভালো থাকা মানেই আমার ভালো থাকা।

… ইতি,
আমার হারানো মন…
———————————————————————
———————————————————————

আমার উত্তরঃ

প্রিয় মন

মেঘপরীরা সত্যিই আজ আমার জানালায় এসে দাঁড়িয়ে, কতদিন পরে একটু শীতল বাতাস চোখের তারায়, বুকের মাঝে পরশ ‍দিয়ে গেলো, ভাবিনি কোন দিন মেঘ বলাকা হয় ডাকপিয়ন।

নারে এখন আর বৃষ্টি আমাকে ভিজিয়ে দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না, ইচ্ছে করেই আড়াল করি কিংবা বন্ধী করি নিজেকে, বৃষ্টির জলে ভিজলে এখন খুব জ্বর হয়। তবে এটা সত্যি ঝড় বাতাসের সেই সোঁ সোঁ শব্দ এখনো আমাকে ভাবায়, টিনের চালে বৃষ্টির নূপুর আমাকে নিমগ্ন করে বিসর্জনের ভাবনায়। একটা সত্যি কথা জেনে রাখ সময়ের বিবর্তনে হীরেও কাঁচ হয়ে যায়; বা কলি গুলো ফুল হয়ে ওঠে। একটা কথা জানতে ইচ্ছে সেই ছোট বেলার মত এখনো কি পায়ে নূপুর পরিস?

ভালোবাসায় যেমন হিংসে থাকে তেমনি রাগ অভিমান থাকে, থাকে সম্মান আর এর মধ্যে কোন একটা বাদ হলে ভালোবাসা হয়ে যায় গুরুত্বহীন, কিন্তু ভালোবাসা গুরুত্বহীন হলেই যে ভালোবাসার মানুষটা গুরুত্বহীন হয় এমন কথা আমি বিশ্বাস করি না, ঠিক তেমনি গুরুত্বহীন হলেই যে মানুষ ভুলে যাবে তেমন কোন কথাও নেই। অভিমানীর চোখের জলের ভাসা – মুখের ভাষায় দুঃখ গুলো পাহাড় চূড়া থেকে ঝরনা হয়ে নদীতে মিশে যায়, আমি সেই নদীতে আমার কাগজের নৌকা ভাসাই; কাগুজে নৌকা গুলোও এক সময় ভিজে ভিজে চলে যায় নদীর পেটে; আমি আর আবেগী হতে পারি না, আমি আর তাকিয়ে থাকতে পারি না ডুবে যাওয়া নৌকার দিকে; কেন এমন হয় সেই উত্তরও জানা নেই। আজো ভেঙে যাওয়া চায়ের কাপে বা গ্লাসের শব্দকে ভুল করে তোর হাসি ভেবে চমকে উঠি।

তুই তো ভালো করে জানিস সেই ছেলেবেলা থেকে এখন অবধি যা কিছু আঁকড়ে ধরতে চেয়েছি সেই সব কিছুই চাঁদের আলোর মত হাতের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে গেছে। সত্যি বলছি সবাই জানতো আমি দুঃখ পাইনি কিন্তু কখনোই কাউকে ভিতরের ক্ষত গুলো দেখাতে পারিনি, আজ তুই বললি বলেই তোকে জানালাম। আইযুব বাচ্চুর সেই গান টা খুব মনে পরে গেলো …
”হাসতে দেখ, গাইতে দেখ অনেক কথায় মুখর আমাকে দেখ,
দেখো না কেউ হাসির শেষে নীরবতা।”

আসলে যে আকাশ তুই আমার কাছে চেয়েছিলি সেই আকাশ কো্ন দিন আমারই ছিলো না; আর যে আকাশ আমার নিজেরই ছিলো না তা দেবার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি আমি কি করে তোকে দেবো; কিন্তু বোঝার ভুলে যে আকাশ আমার ছিলো সে আকাশে ডানা মেলে উড়ে দেখলি না… ফাঁকি দিয়ে কিছু হয়তো হাসিল করা যায় কিন্তু তা দিয়ে জীবন চালানো যায় না। আর আমি ফাঁকি দিতে পারিনি তোকে ..ক্ষমা করিস…ক্ষমা করিস… আমাদের সেই সর্ম্পককে।

আমি তোকে বুঝিনি এই বিষয়টি সত্যি নয়; তোর মত কেউ যদি তোকে বুঝে থাকে তা এই আমি আর সেই জন্যই আমি ফিরে চলেছি নিজের দেশে; ভালো সেজে থাকা আর ভালো হওয়া এক কথা নয় আমি ভালো সেজে একটি সমাজের কাছে হয়তো কিছুদিন ভালো থাকতে পারতাম কিন্তু ভালো হতে পারতাম না ; যেমনটি অন্য সবাই চায় কিংবা পারে…তার থেকে এই যাযাবর জীবন অনেক ভালো; জাহাজে জাহাজে ঘুরে বেড়াই ভিন্ন ভিন্ন দেশে মিশে যাই নানা বর্ণের নানা মানুষের সাথে; দেখি তাদের সুখ দুঃখ হাসি কান্না বুঝতে চেষ্টা করি মানুষের সত্যিকারের সুখের চাবি কোথায় থাকে।

আমার তো উল্টো মনে হয় ঈশ্বর, অবহেলায় নয় খুশিতে বিসর্জন নেন নিজের ইচ্ছায়; যাকে পূজোর থালায় নিবেদনই করা হয়নি সে উচ্ছিষ্ট হয় কি করে। অদ্ভুত তোর যুক্তি…; কোথায় যেন শুনেছি –
চলে যাওয়া মানে বিচ্ছেদ নয়, নয় বন্ধন খুলে ফেলার গাঢ় রজনী; চলে গেলেও আমার অধিক থেকে যাবে তোর না থাকা জুড়ে …।

ভালো থাকিস…
ভালো থাকিস নিজের মত করে
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।
আমি
খেয়ালী….

6-house-night-869x580

চিঠির পত্র ৩

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৩য় পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি –রিয়া রিয়া এর “ভুলে থাকা মন … ২১ (চিঠি)”।
লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি (রিয়া রিয়া লেখা)

প্রিয় মন,

আজ অনেকদিন পর ভীষণ একা লাগছে। যদিও চিরকালই আমি একা, তবু তুই তো ছিলিস কিছুক্ষণের জন্য হলেও। এখন আমি নেট-এ ভবঘুরের মতন ঘুরছি আর পাশে গান চলছে, গান আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী। ওই যে গানটা ” তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা”
…. .বাজছে এখন….রোজই শুনি …

মনটা আজ কেমন কেমন যেনো। হঠাৎ করে ইচ্ছে হল একটা চিঠি লিখতে। জানিসই তো চিঠি আজও আমার ভীষণ পছন্দের। এই SMS এর যুগেও। একটা মন কেমন করা ব্যপার আছে চিঠিতে। কিন্তু কি লিখি? হুম.. বলতো? ঠিক কি লিখি তোকে?

যে কথা কাউকে বলা হয়নি। যে কথা তোকেও বলা হয়নি। যা থাকে মনের গভীরের সব থেকে সুরক্ষিত কুঠুরিতে লুকনো সবার চোখের আড়ালে। সে সব কথা? শুনবি? না রে,থাক। সেগুলো আমার বড্ডো আপন কথা। যেগুলো এতদিন জেনেছিস, সেগুলো আমার পাড়ার সবাই জানতো। আশেপাশের বাড়ির,আমার ছোটবেলার বন্ধুরা, আমার আত্মীয়স্বজন সব্বাই। তুই নতুন জেনেছিস। আর আমার ভীষণ আপন কথা আমারই থাক।

হাসছিস বুঝি? ভাবছিস মেয়েটা বড্ডো বাজে বকে? ভাবছিস মেয়েটা বড্ডো গায়ে পড়া তো? মিনিমাম personality টুকুও নেই? তা হাস!! জানিস তো, “smiling is good for health”

কি জানিস, আমার যে এখন বড্ডো কথা বলতে ইচ্ছে করছে। জানিস এখন আমি ভীষণ শান্ত হয়ে গেছি, আর কোন দুষ্টুমি করি না। জানিস আজও আমি যত কথা নিজের সাথেই বলি। তবুও কিছু কথা তো তোর সাথেও বলতাম। যদিও জানি আর তোর কাছে পৌঁছোবে না আমার কোন চিঠি। আমাকে আমি চিনি। মরে যাবো তবুও তোকে আর কিছুই বলবো না। তবুও কত পাগলামী দেখ আমার মধ্যে, তবুও তোকেই রোজ একটা করে চিঠি লিখি, তারপর পুড়িয়ে ফেলি। যেন নিজের চিতা জ্বলতে দেখি সেই চিঠির সাথে। কতজনের এই সৌভাগ্য হয় বল? সেই অর্থে আমি বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী। নিজের চিতা নিজেই জ্বালাই।

সবকিছু সামলাতে সামলাতে বড় ক্লান্ত,বড় একা। বোললে হয়ত তোকেই বলা যেত সবটুকু। জানি তুইও এখন অন্য কোথাও একা। কেন জানিনা বসন্তের এই মিঠে গন্ধমাখা হাওয়ায় তোর খবর পেয়ে যাই ছাদের কোনা ঘঁষে দাঁড়ালেই। তোর-আমার দিনগুলো এখন অন্য কারোর, অন্য কারো সাথে ভাগ করে নিস হয়তো। ক্রমশঃ সরছি দূর থেকে দূরে। কতদিন হয়ে গেছে তোর কথা শুনিনি। কত গল্প জমে যাচ্ছে জানিস? কত কত সময় মনে মনে খুঁজি তোকে। বড় অসহায় লাগে। দূরে সরে গিয়েও অবলম্বন হয়ে আছিস তুই।

হয়তো বিশ্বাস করবি না, তোকেই শুধুমাত্র, হ্যাঁ তোকেই আমি আমার সবটুকু দিয়েছি। আর আজও আমার সবটা জুড়েই শুধুই তুই। তোকেই দেবো আমার যত ভাললাগা, মন্দলাগা। সেই কবেকার গ্রীষ্মের দুপুরের কুলপিমালাই আর ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মায়ের চোখ এড়িয়ে জমা জলে ভাসানো কাগজের নৌকোটাও তোর জন্যেই রেখে দিলাম। হাসি-কান্না-হীরে-পান্নায় মোড়া আমার দিনগুলো আজ থেকে শুধু একলা আমার নয় তোর সাথেও ভাগ করে নিলাম।

যত কথা তোর সাথে আমারই,আর কেউ জানবেনা সত্যি। টেলিপ্যাথি হোক নাহয় চুপিচুপি, ফিসফাস আবডালে, মনে মনে হরদম। এইখানে আছি আমি। সেই যে যেখানে একা রেখে গেছিস। সেখানেই আছি আজও। আর তুই! তুই? শুধু জল-ছায়াতে। খুব ভালো থেকে যাব আমি, শুধু তুই ভালো থাক। ভালো থাক তোর ঘর-বাড়ি, ভালো থাক তোর লোক-জন, ভালো থাক তোর কাজ, ভালো থাক তোর ভালোভাবে থাকারা। ভালো থাক একটুকু আমার থেকে যাওয়া! ভেবে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি রোজ।

এই দেখো কান্ডো !! বোলতে বোলতে কত্তো লম্বা একটা চিঠি হয়ে গেলো রে। জানি এখন তুই খুব busy? আমার জন্য সময় নেই তোর। ঠিক আছে আমি তবে চিঠিটা খামে মুড়ে রেখে দেব। আজ আর পোড়াবো না। কাল পুড়িয়ে ফেলবো।

আর হিমেল হাওয়ায় তোর উত্তরও খুঁজে পাবো। নীল আকাশের বুকে মেঘেদের আলপনা আঁকা রাজহাঁসেদের মতো নরম পালকের চিকন রঙে। খুঁজে নেবো তোর উত্তর।

ইতি
আমার হারানো মন….
———————————————————————
———————————————————————
আমার উত্তরঃ

উত্তর
প্রিয় মন
নীল আকাশের বুকে মেঘেদের আলপনা আঁকা রাজহাঁসেদের মতো নরম পালকের চিকন রঙে খুঁজে নেয়া ইচ্ছে খুশির সুখ কিংবা দুঃখের বাতাসে উড়ে বেড়ানো তোর উত্তর আমি ঠিকই পেয়ে যাই … ওই যে ওই গানটা আছে না …”ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো…”। সত্যি করে জানিনা আকাশের কোন ঠিকানা আছে কিনা থাকলে বেশ হতো; তোকে আর চিঠি গুলো পুড়িয়ে ফেলতে হতো না আর আমাকেও চাতক পাখি হয়ে সারাদিনময় একটু করুণা পানির জন্য আকাশে উড়তে হতো না।

কিছুদিন আগে শোনা একটি গান “আমি আগের ঠিকানায় আছি সময় করে এসো একদিন, দু’জনেই মুখোমুখি বসি কিছুক্ষণ’ শুনেছিস কিনা জানি না, আসলে জলছায়ার ছবি গুলো অতল জলে যখন হারিয়ে যায় তখনই টেলিপ্যাথি অনুভূতির থেকেও বড় গভীর অনুভুতি চোখের কোন থেকে ঝড়ে যায়, আমার আর ফেরা হয়না চুপিচুপি, ফিসফাস আবডালে, আড়ালে মনে মনে হরদম খুশির জোয়ারে তোমার আঙ্গিনায়।

ঠিকই বলেছিস জীবন ভাগাভাগি শুরু হয়েছিলো সেই কুলফি মালাই আর মার্বেল দিয়ে, আজ মনে হয় সেই দিনগুলোই ভালো ছিলো এখন হাতের তালুতে লুকিয়ে রাখা কুলফি গুলো গলতে গলতে ভোরের শিশির হয়ে রোদে শুকিয়ে যায় আর মার্বেল গুলো গড়িয়ে গড়িয়ে চলে গেছে বহুদূর, তারপরও পুরাতন টিনের বাস্কে জমিয়ে রাখা স্মৃতির পাতা গুলো একমাত্র অবসরের সঙ্গী হয়ে ছায়া হয়ে যায়।

নারে সবটুকু বলিস না বললেই ফুয়ে যাবে, কিছুতো জমে থাক না বলা কথায় চোখের মাঝে সেই আগের মতই। তোর মনে আছে কিনা জানি না সেই পড়ন্ত বিকেলে ছাদের কার্নিস ঘেষে দাড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা, তারপরও ফিরে যাবার সময় না বলা কথার কিছু আকুতি ঠিকই থেকে যেত… যা পারিনি বা পারোনি তা হয়তো আমাদেরই ছিলো না কোন দিন কিংবা কোন অ দৃশ্য সুতো আমাদের ঠিকই আলাদা করার জন্য তৈরী ছিলো। তোর আগুনে পোড়া চিঠির ধোঁয়া এখনো আমার আকাশে মেঘ ডেকে আনে যা কিনা শুধু আমিই বুঝতে পারি। চিন্তার চিতা সব মানুষই কিছুটা বহন করে তবে ভাবনা গুলো ভিন্ন, তুই যে ভাবে ভেবে নিজেকে পোড়াচ্ছিস আমি হয়তো তার উল্টো কিছু ভেবে হৃদয়ের ক্ষতকে খুঁচিয়ে ঘা করি।

এবার সত্যি হাসছি তোর কথায়, তোকে পাগলী তো সব সময়ই জানতাম, গায়ে পরা বিষয়টি আসলে মূল্যহীন যদি তেমনই হতো তাহলে তো জীবনের নদী ভিন্ন পথে চলে যেতে পারতো।

এই SMS এর যুগে তোর যদি প্রতিদিন মন খারপ থাকে তবেই আমি খুশি, কিছুটা স্বার্থপরের মতই খুশি, একটা চিঠিতো পাবো। কি লিখবি সে নিয়ে চিন্তা করিস না, আমার কাছে তোর লেখা বাজারের লিস্টটাও অনেক মূল্যবান যদিও কখনো বুঝতে চাইলি না আর আমিও বোঝতে পারিনি।

সত্যি বলতে কি আমরা প্রতিটি মানুষই একা যে যার স্থানে … নচিকেতার সেই গানটা ‘একা একা পথ চলা একা একা কথা বলা’ .. যে গানটা আমি প্রায়ই শুনি, আর ভাবি…ভাবি আর শুনি……। আজ আমিও বড়ো ক্লান্ত, বড় নিশ্চুপ নিয়ন আলো বিহীন কোন গ্রামের মত। অসমাপ্ত কোন পথের মতো, মরুভূমির বালু গুলোর মতো, তেপান্তরের মাঠের মতো, রাতের তারাদের মতো, একলা পাখিটির মতো কিংবা তোর মতো।

ভালো থাকিস নিজের মতো করে
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।

আমি
খেয়ালী….

_MG_7639

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে ( তা হোক কবিতা কিংবা গল্প বা সাধারণ ) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

চিঠির পত্র ২

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ২য় পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি –
নীল সঞ্চিতা এর “কিসের অপেক্ষায়” লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি ….. (নীলের লেখা)
সেই সম্বোধনহীন চিঠি অনেকদিন পর আজ আবার লিখতে বসলাম তোমাকে। অসময়ের হঠাৎ বৃষ্টির এই সকালে টেবিলে ছড়িয়ে থাকা কাগজ কলমে চোখ পড়তেই মনে হল তোমাকে লিখি।

চারদিকে কেমন উদাস হাওয়ার ছুটাছুটি। ইট কাঠের শহরের উঁচু দালানের ফাঁকে দেখতে পাওয়া এক চিলতে আকাশের গায়ে কালো মেঘেদের উড়াউড়ি। তাকিয়ে থাকতে গিয়ে গুনগুন করি…

“মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভেতর মন খারাপের দিস্তা
মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়, ব্যাকুল হলে তিস্তা।”

মন খারাপ ভাব দূর করার জন্য কফি বানিয়ে আনলাম আর তোমাকে লিখতে বসলাম তাতে চুমুক দেয়ার ফাঁকে। তুমিতো জানোই তোমাকে লেখার সময়টুকু কতটা উপভোগ করি আমি।

চারপাশটা বড্ড অদ্ভুত লাগে, জানো? এই যে দেখ আমার বারান্দায় টবের গাছের নতুন গজানো পাতাগুলো এই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে ভিজে কেমন আনন্দে ঝলমল করছে। অথচ ঠিক তার উপরে কার্নিশে বসা একটা আধভেজা চড়ুইপাখি জড়সড় হয়ে বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় আছে। একটা রোদ ঝলমল দিনের অপেক্ষায় আছে।

“মেঘের দেশে রোদের বাড়ী পাহাড় কিনারায়
যদি মেঘ পিয়নের ডাকে সেই ছায়ার হদিস থাকে
রোদের ফালি তাকিয়ে থাকে আকুল আকাঙ্খায়
কবে মেঘের পিঠে আসবে খবর বাড়ীর বারান্দায়, ছোট্ট বাগানটায়।”

আমি কিসের অপেক্ষায় আছি বলতে পারো?

ভাল থেক।
নীল…

_____________________________

আমার উত্তরঃ

নীল,
তোমার গানের গলা বরাবরই অসাধারন ছিলো, কত দিন অলস বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে তুমি আকাশ দেখে গান গাইতে আমি চুপি চুপি এসে মোড়াটা টেনে তোমার পিছনে বসে শুনতাম
.
সখি ভালোবাসা করে কয় …
.
তখনো তোমার গানে কোন সম্বোধন পাইনি, আজো খুঁজিনা কিছু চলমান পাতা না হয় সম্বোধনহীন থাক ক্ষতি কি?
.
এখনো তুমি আগেরই মত অপেক্ষায় থাকো একটি প্রহরের যেখানে বসে মন খারাপের ফুলগুলো খাতার পাতায় কবিতা হয়ে যায়, আচ্ছা বলতে পারো কতটা প্রভাবে মনের ক্ষত চোখের কোনে জ্বালা ধরায় কিন্তু বৃষ্টি আনে না। জানি এর উত্তরও তোমার অজানা। অথচ তুমি চাইলেই পেতে হাজার রংয়ের মেলায় জীবনের উল্লাস।

যে চড়ুই পাখি একা ভিজে কর্নিশে বসে থাকে বুঝতে হবে সে তার সঙ্গীর অপেক্ষায় পথচেয়ে আছে. এটাই চড়ই পাখির চরিত্র গত একটা দিক। কোথায় য়েন পাখির চরিত্র খুঁজতে গিয়ে পড়েছিলাম ঠিক মনে নেই তবে একটি বিষয় ঠিক মনে আছে পখি চরিত্রের মানুষ হয় মানুষ চরিতে পাখি মেলে না।
একটি ঝলমলে দিনের থেকে এখন বেশী প্রয়োজন একটি ঝলমলে মানুষের।

”মেঘবালিকা খুব উচাটন বাতাস কেন ধায়!
কোন বাতাসে কোন সে জীবন কোথায় নিয়ে যায়;
রোদ গুলো সব খাচ্ছে খুঁটে আমার শরীর রস
ভালোবাসা কম কি ছিলে ! হলে নাতো বশ।
অপেক্ষার প্রহর গুলো অধিক জ্বালাময়
যে কারনে পথ চাওয়া সেটাই তোমার ভয়।”

ভালো থেকো
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।

খেয়ালী
১২/০৩/২০১৭
IMG_3346 copy (2)

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে ( তা হোক কবিতা কিংবা গল্প বা সাধারণ ) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

চিঠির পত্র ১

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর প্রথম পর্ব। প্রথম চিঠিপত্র সূত্র এখানে। আজকের চিঠি লিখেছেন আমাদের সকলের প্রিয় মুরুব্বী এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি……(প্রিয় মুরুব্বী’র লেখা)

প্রিয়বরেষু খেয়ালী মন।
কেন লিখতে মন চায় !! উত্তর জানা নেই। যখন পথ পাই না খুঁজে, নির্বাণ খুঁজি লিখায়। কবিতা আমার অলিন্দ ও নিলয়। হয়কি- হয়না- খুঁজতে থাকে অনেকেই। আমি কথা বলি আমার চেতনায়, আমার ভাষায়, আমার কবিতায়। যদি কেউ শুনতে পায় সেই কথা, তবে- তারাই পড়বে আমার লিখা। সে যদি একজনও হয়।
আমি যেমন ছেড়েছি সব। … ছেড়েছি সব কিছু। তেমনি তুমিও ছেড়ে যাবে একদিন। যেতেই হবে তোমাকে। তারপর …। অনেকটা পথ অতিক্রান্ত হবে যখন, কোলাহল কিছু থামবে, বিশ্বাসের ভ্রান্তিবিলাস খসে পড়বে একে একে। শ্রাবণে কি, হাড়-হিম শীতে। একাকী শূন্যতার দিকে চেয়ে ধোঁয়াশার বুকে ভেসে উঠবে তোমার চোখে আমার মুখ।

তোমাকে যেতে হবেই। আরো অনেকটা পথ এগুতে হবে। যেমন আমাদের পূর্ব পুরুষদের চেয়ে অগ্রগামী এই আমি। অংশত এবং কিছুতো সত্য। প্রেমিক সজ্জন, বান্ধব- বান্ধবী। অভাব হবেনা নিত্য নতুন সহযোগীর। ঘিরে থাকবে ভরে থাকবে কদম্ব কামিনী। সেই সাথে Cristian Dior, Richi ও Gucci আরো কত কি।
ভালোবাসার কথা শোনাবে অনেকে, ভালোবাসবে না। মাথায় উঠাবে, পুজার ভান করবে, আছড়ে দেবে নানান প্রকার। ভালোবাসবে না।

তবু একজন মানুষ খুঁজি। সব সময় খুঁজি। খুঁজে খুঁজে মরি। আসরে, উৎসবে, আয়োজনে, সমাবেশে। এমনকি সান্ধ্যভ্রমণ ও প্রাতঃভ্রমণেও। খুঁজি শুধু একজন মানুষ। যার সংস্পর্শে নষ্ট হয়ে যাওয়া মূল্যবোধ ‘অরণ্যের’ মতো ফিরে পেতে পারি। মানুষের যা কিছু মর্যাদার যা কিছু অর্জন- পথ খুলে দিতে পারে যে নির্যাস। সেই সেই মানুষকে খুঁজি। কে দেবে আশ্বাস !! খুঁজে অহরহ। মুছে দিক সেই… এই ঘৃণা- অবিশ্বাস- সন্দেহ। পারস্পরিক ভেদ বিদ্বেষ। খোল- নলচে বদলে দেয় এমন মানুষ।

‘মৃত্যুই কেবল মৃত্যুই ধ্রুবসখা … যাতনা কেবল যাতনা সুচির সাথী।
অতএব কারো পথ চেয়ে লাভ নেই; বিরূপ বিশ্বে মানুষ নিয়ত একাকী।’
_________________________

আমার উত্তরঃ

প্রিয় মুরুব্বী
অসম্ভবের সম্ভবনা সবাই পারে না যারা পারে তারা সাধারণ নয়। আমি দেখেছি গভীর ভাবে উপলব্ধি করেছি আপনি পেরেছেন, এই পারা না পারার বিষয়টিও মনের চিলেকোঠার একটা আকাশ যে আকাশে শুধু নিজেকে নিয়ে ভেসে বেরানো যায়, খুঁজে পাওয়া যায় নিজের অস্তিত্ব। যেদিন লিখতে মন চাইবে না সেই দিন থেকে আপনি আর আপনিতে থাকবেন না, আর জনের হিসাবে না লিখে নিজের জন্য যে লেখা তৈরী হয় তাই সর্বাধিক জনপ্রিয়।
.
জীবনের সত্যি হলো ছেড়ে যাওয়া। আমার কেউই চিরস্থা্য়ী নই, তারপরও কথা থেকে যায়। চোখের আড়াল মনের আড়ালের থেকে বরাবরই ভিন্ন মাত্রা বহন করে, তুমি কিংবা আমি হয়তো ছেড়ে যাবো একে অন্যকে চোখের পাতা বুজে কিন্তু মনের পাতা চলমান ব্যক্তি কোন দিনই মুছে ফেলতে পারবেনা ভালোবাসার গভীরতা। তোমার সেই কথাটি অবশ্যই ঠিক যে, “একাকী শূন্যতার দিকে চেয়ে ধোঁয়াশার বুকে ভেসে উঠবে তোমার চোখে আমার মুখ।” কিন্তু আমার ক্ষেত্রে কথাটি ভিন্ন অর্থে উচ্চারিত হবে, যাকে ভালোবেসে বুক বেধেছি নীল সবুজের গহীনে তার জন্য গাঢ় অন্ধকারে হেঁটে যেতে পারি কিন্তু তাকে ভুলে নয়। হাতে হাত নাইবা থাকলো বুকের মাঝে সঞ্চিত হৃদ কম্পন তো থাকবেই।

প্রেম আর ভালোবাসা কখনো এক ভারে বিচার করা যায় না দুটোই আলাদা যেমন আমার জননী, আমার স্ত্রী, আমার মেয়ে, আমার ছেলে, আমার বন্ধু তুমি সবাইকেই আমি ভালোবাসি সবার সাথেই আমার হৃদয়ের বন্ধন তবুও অবস্থান গত কারনে সমুদ্রের গতিও বদল হয়, বাঁক নিয়ে যে নদী এগিয়ে চলে তার কি স্রোত তাকে না ?
.
ভুলে যেওনা আমার কোন না কোন সময়ের সুর রচয়িতা তুমিই ছিলে। যে গান আর সুর এক সাথে থাকে তাকে চাইলেও ছুরে ফেলা সম্ভব নয়। এমন কথা তোমার মুখে আনাও কি সম্পর্ক এর অবমাননা নয় !

অদ্ভুত বিষয় আজো তুমি মানুষ খোঁজ, কেনো খোঁজ, না নিজের জন্য নয় তাও মানুষের জন্য তোমার এই ধারাটা বেশ, কিন্তু আমি মানুষ খুঁজি না আমি মানুষের অনুভূতি গুলো খুঁজি ‍যদি কোনদিন কোন সময় কোন সমাজের সেই অনুভূতি খুজে বের করে সামনে নিয়ে আসতে পারি তবেই আর আমার মানুষ খোঁজার দরকার হবে না মানুষই আমাকে খুজে নেবে তাদের প্রয়োজনে।
.
মৃত্যু কেবল খোলস বদলের খেলা…জীবন যাতনা খোলসের কারসাজি
অতএব কারো হৃদয় খুঁজো না তুমি;প্রতিটি মানুষ আলাদা আলাদ পাখি।
সুর ভেঙে দিয়ে কাছে কিবা দূরে থাকো …ভাঙ্গা সুরেই নিত্য উদাসী মন
তোমার আমার যোজন দূরে বাস; দু’জনে দুজনার তবুও একাকী থাকি।
.
ভালো থেকো
ভালো থেকো জীবন সুখের উল্লাসে।

খেয়ালী
১০.০৩.২০১৭

FILE0291 copy

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে ( তা হোক কবিতা কিংবা গল্প বা সাধারণ ) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

চিঠিপত্র

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে ( তা হোক কবিতা কিংবা গল্প বা সাধারণ) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো…

যেমন
প্রথমেই আমি লিখছি
প্রিয় শব্দনীড়,
সময় করে আসা হয় না ঠিক কিন্তু
ভালোবাসার গভীরতা চোখে নয় হৃদয়ের গভীরে থেকে যায়
যে পদ্মপাতায় লুকিয়ে রেখে ছিলে জলছোঁয়া ভালোবাসা, সেখানে আজ
ভ্রমরের নেই আনাগোনা। শুধু পরিত্যাক্ত শীতলতা এখনো ঘুম পারিয়ে যায়।
তুমি হয়তো ভাবতে পারো এই বয়সে এ আবার কোন ধরনের পাগলামি
জেনে রাখো পাগলামি নয় এ আমার সুখ জ্যোৎস্নার স্বপ্ন।
হঠাৎ করে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে সব সময় খুজে পাবার যে আনন্দ আছে তার সময় বিচারে কোন দিন কেউ এগিয়ে আসতে পারে না, তোমাকেই স্বাক্ষী মেনে তোমার কাছে লেখা এই চিঠি কিন্তু অমুলক নয়……..।
ভালো থেকো
ভালো থেকো সব্বাইকে সাথে নিয়ে
খেয়ালী…….
০৯/০৩/১৭

এখানে উল্লেখ করছি আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১ ,চিঠি -২ এই ভাবে আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে।
তো শুরু হোক খেলা…
আজ প্রথমেই ধরে নিচ্ছি

আমাদের সবার প্রিয়
নাজনীন খলিল এর লেখা দিয়ে ( যদিও এটি করার জন্য আমি তার অনুমতি নেই নি, তবুও আমি মনে করি তিনি আমাকে ক্ষমা করবেন আমার ভুলের জন্য)

কাঠের ঘোড়া
চিঠি-১
আমারও যদি থাকতো একটা ‘টিন ড্রাম’ অস্কারের মতো! এমনকি প্রত্যেকটি মানুষেরই দরকার একটি টিনড্রাম অথবা ট্রাম্পেট জাতীয় কিছু একটা বাস্তবতার যাবতীয় অনাকাঙ্খিত কষাঘাত থেকে পালিয়ে বেড়ানোর জন্য।

থাকলে বেশ হতো। নেই। তাতে কি? আমারতো আছে একটি কাঠের ঘোড়া। যখন তখন পালিয়ে বেড়ানো যায় দেশ থেকে দেশান্তরে, তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে, সাত সাগরের তীর পেরিয়ে খেয়ালখুশীর বাড়িটিতে ঢুকে পড়া যায়। এটাই আমার আজীবনের সঙ্গী। আমার মুক্তি।

খট্‌ খটা খট্‌। বর্তমান থেকে অতীত, অতীত থেকে অনাগতের স্বপ্নে ঢুকতে একটুও দেরী হয়না। জানি একদিন আচমকা শুরু হবে ফুরিয়ে যাবার বেলা। ঘোড়া থেমে গেলেই শুরু হবে সেই চিরন্তনের খেলা। সেদিনটি কবে ? জানিনা।

কাঠের ঘোড়া
পত্র-১
প্রিয়
বাস্তবতার অনাকাঙ্খিত বিষয় গুলো সবার কাছে এক রকম নয় কারো কাছে যা সুখের অন্যের কাছে তার ভার বহন করা কষ্টকরও হতে পারে।
টিন ড্রাম বহন করার মত ক্ষমতাও কি সবার থাকে?
আসলে আমাদের জীবনটাই চাহিদার আকাশ, সুখ দুঃখ হাসি কান্না কোনটার কমতি হলেই কি চলে ? তবু ভালো তুমি তোমার কাঠের ঘোড়ায় চড়ে পালানোর নামে ঘুরে বেড়াতে পারো বিশ্বময়, সেটাই বা কম কিসে। তুমি পেরেছ আজীবনের একটা সঙ্গী খুজে নিতে, হোক সে স্থবির তবুও তো বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছে। খট খট খট করে আমি তো পারিনি বর্তমান থেকে অতীতে ফিরে যেতে আমি তো পারিনি আগামীর বিশ্বাস ধরে রাখতে। চিরন্তন জীবনের চিরন্তন খেলায় ঘোড়ার দাম হয়তো অনেক বেশী কিন্তু আমার ফুটো নৌকার থেকে বেশী না। রাজার রাজ্যসভাও একদিন সৈন্যের হাতে পরাজিত হতে পারে।
ভালো থেকো
ভালো থেকো নিজের মত করে।

খেয়ালী
০৯/০৩/২০১৭

IMG_3977 copy

গহীনের গহীন

গহীনের গহীন আগুন
ধুপ পুড়ে ঘ্রাণ
সুভাস কি বাহিরে তার
কিবা চায় প্রান।

মজিলে আপন কথায়
রঙ্গ করে মন
কি যাদু করিলা বিধি
অবুজ নিধন।

সময়ের বড় পাপ
পায়ে পরে সাধে
অনাহারে থাকে মন
চোখ শুধুই কাদে।

খুঁজে পাওয়া

চোখের কোনে কাজল
মনের মাঝে সুর
আটকে থাকে বৃথা
সব সাত সমুদ্র দূর।

হাতের মাঝে কাঁকন
চুলে ধূপের ঘ্রাণ
মিছেই কেঁদে মরে
চাপা সুরের গান।

তবুও পথ চাওয়া
চাওয়ার মাঝেই পাওয়া
স্বপ্ন বুনে যাই
গভীর ভালোবাসার মাঝে
চাওয়া টুকু পাই।

বিঃ দ্রঃ ইহা একটি কুবিতা।

IMG_1233

আমি ভিক্ষুক নই ডাকত হবো

ভুল করা অন্যায় নয়…
আমি জেনে গেছি নীল আকাশের কালো মেঘ ভুল আর সেই ভুল আমি মেনে ও মনে নেই।
আমি জেনে গেছি দু কুল ভাসানো প্লাবন অন্যায় তাই বাঁধ বেধে দেই।
সবুজের নীলিমায় চাদরে জরানো কুয়াশার ঘোলা শিকারে পথ ভুলে যে পথিক
ফিরে যায় অচিন্তপুর তাকে ডেকে ফেরানো যায় না।
আমি ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে জীবনের মানে খুঁজতে যাবো না
আমি হাতে তুলে নেবো যুদ্ধের দামামা
রন ঝঙ্কারে কেড়ে নেবো সব ভালোবাসার সোনালী শস্য
বাঁধাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে
কৃষ্ণের রথে তোমায় করবো সারথী;
যেখানেও থাকবে এক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
বিবেকবান মনুষ গুলো হয়তো আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকাবে
কিন্তু কিছু বলার সাহস পাবে না, অতি বিবেকবানই ভয়ের আধারে মোড়া থাকে।
ভয়কে জয় করতে যারা না পেরে তারাই খোলস পাল্টে সুশীল।
আমি সুশীল হতে পারলাম না, আমাকে ক্ষমা করো
আমি ডাকাত হবো
ডাকাত হয়েই জয় করবো তোমার গভীরতা
ডাকাতির মূল্যেই এক দিন
রাজার দরবার হয়,
তুমি আমার রানী হবে।

* অনেক দিন বাদে সবাইকে ভালোবাসা ও শুভ কামনা দিয়েই নতুন করে শুরু করতে ফিরে এলাম শব্দনীড়ে, সাথে থাকুন শব্দনীড়ের কাছে থাকুন সহযোদ্ধাদের।

IMG_3918