খেয়ালী মন এর সকল পোস্ট

গোধূলি রং

গোধূলি রং

শেষ বিকেলের আলোয়
জোনাকিপোকা তার রূপের প্রকাশ করতে না পেরে প্রতিনিয়ত রাতকে ডাকে,
দিন চলে যায় গহীন আঁধারে নতুন প্রভাত পথে।

শুধুশুধুই পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকি একা,
বিহঙ্গী বাসায় অপেক্ষায় প্রহর গোনে
মৌনতার সিঁড়িপথ পাহাড় চূড়ায়।

গোছানো দিনের সুখের সৌধ গড়া হয়না, ক্লান্তির ছায়াপথ বেয়ে নেমে আসে নিকষকালো অজগর, আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে গিলে খেতে চায় ; বুক ভরা সৌখিন স্বপ্ন, ঠোঁটের কোনের মৃদু কম্পন,চোখের অস্থিরতা, ভাবনা ভাবার ইচ্ছে শক্তি সহ পুরো আমাকে।

তারপরও গনিকা হয়ে পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকি;
নতুন নতুন সুখের খোঁজে আসা দুর্ভাগা
পথহারা পাখিদের অতিথিপূজার আয়োজনে;
নিঃসঙ্গ পত্রবিহীন বৃক্ষ হয়ে একাকী আকাশতলে।
________________________________

*** এইটা কোন কবিতা না, কেউ কবিতা ভাবলে তার জন্য পোষ্ট দাতা দায়ি নয়।
তবে ছবিটা আমার তোলা।

পাখি আমার অবুঝ পাখি

পাখি আমার অবুঝ পাখি

উড়াল পাখি সুখের খোঁজে পোষ না মেনে ভিন্ন দেশে
খুব সহজে সাঁতার কাটে স্বচ্ছ কোন বদ্ধ জলে
পাখি তুমি কি সুখ পাও!
পাখি তুমি কি সুখ চাও?
মগডালেতে বাসা বেঁধে
খুব সহজে দুলতে পারো
বাতাস পেলে – সুত্র সহজ।

কিন্তু যখন নদীর ভাঙ্গন কাঁপন ধরায়
বৃক্ষ ডালে, বুঝবে তখন সবুজ পাখি
অবুঝ হলে কি দায় থাকে, কোন কথাতে
কোন ভাষাতে অবুঝ মানুষ সবুজ ছবি
বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে।
পাখি তুমি পাতার ভিড়ে ঘিরে রাখো
তোমার সকল স্মৃতি গুলো,
আমার ডালে পত্রগুলো তখন না হয় উঠবে বলে
বৃষ্টি আসার অপেক্ষাতে করুণ ভাবে
আকাশ দেখে, তাই বলে তো এই ছিলো না
নাটাই বিহীন ঘুড়ি হবো।

অবুঝ পাখি কি সুখ পাও
এখন যখন তোমার ঘরে কোকিল গুলো
বসত করে, নিত্য আনে খড় কুটো সব
ঘর গোছানোর মহোৎসবে।

যদি হতে চাতক তুমি অপেক্ষাতেই বৃষ্টি পেতে
উড়াল পাখি বুঝ না মেনে
লোভ সাগরে কি ডুব দিলে।
_____________________________

অপেক্ষা

তারপরও বসে আছি চৈত্রের হাওয়া গায় মাখিয়ে;
ক্লান্ত সময় কপোলের আবিরের মত মুছে ফেলা যায় না;
স্মৃতির গহীনে বসে থাকে নেশাখোর মানুষের মত,
থেকে থেকে নেশার ক্ষুধা, পেটের টানকে সরিয়ে দেয়
মগজের মগডালে। হয়তো স্বপ্নভূক বলে জৈবিকতা হারিয়ে
জৈবিক তারণার থেকে মানসিক জীবনের সুখ, খুজে যাই প্রতিনিয়ত,
যে গভীরতা ছুঁয়ে যেতে পারেনা বিষণ্ন বিকেল। নষ্ট প্রহরের প্রাপ্তি গুলোই
স্ফটিক হয়ে থেকে যায়। নিরুত্তর মানুষের জন্যেই কিছু কিছু চৌকষ
প্রগতি থমকে গিয়ে দগদগে উনুনে মাছ ভাত রান্না করে সাজিয়ে রাখে ডাইনিং টেবিলে।
স্বীকার করতে দোষ নেই রাতের আঁধারে আমিও কাল্পনিক বালক হয়ে উৎসে খুঁজেফিরি তৃষ্ণার জল;
আবার দিনের বেলায় ধার্মিক পুরুষ।

তারপর বসে থাকি, তারপরেও বসে থাকতে হয়
চৈত্র দিনের শেষে কৃষ্ণ তৃতীয়া চাঁদের আলোয়
সঞ্চিত উষ্ণতা নিয়ে প্রণয়ীর চপলা আঙ্গুল
কিংবা বৈশাখী ঠোঁটের ঝড়ের আশায়।

ভালোবাসার নদী

ভালোবাসার নদী

ভালোবেসে একটা নদী চেয়েছিলাম
যার পার ছুঁয়ে জেলেদের ঘরবাড়ি থাকবে,
সরল বিশ্বাসে পুরুষের শরীর পেতে দেবো সেই
চপলার কাছে। তোমার নদী নদী মন আমাকে ভাসাবে,
আমাকে ডুবাবে, জোয়ারে কাছে টানবে, ভাটায়
একটু দূরে ঠেলে দেবে, ঠিক নদী যেমন করে তার উপরে
ভেসে থাকা বারোয়ারি পূজার বিসর্জিত ভাসমান দেবীকে।

কিংবা খুব বরষায় দু-কুল ভাসানো জল আবার ফাগুনের শেষে
কিছুটা গভীরতাহীন। তোমার ভালোবাসা কোন গাঁয়ের বধূর
কলসিতে ছলাৎ ছলাৎ সুরে দিন শেষে ঘরে ফেরার ছবি দেখবো বলে
কত না রং বদলে দিয়েছি আকাশের নীড়ে,
নিজেকে বন্ধী করেছি শামুকের খোলসে, হৃদয়ের খুব কাছে
পরে থাকা শিউলি গুলো তুলে দেখিনি তোমাকে দেখবো বলে,
মেঘেদের ডাকে বাইরে বের হইনি একাকি কোন দিন;
শুধু দু-জন এক সাথে ভিজবো বলে।

তবু আজো আমি একাকি ভিজে চলি এক ছন্নছাড়া চাঁদের আলোয়,
গলিত জোৎস্না আমাকে দগ্ধ করে, মাকড়সার জালের মায়া বাঁধন
আমাকে ঠেলে নিয়ে যায় সময়ের শেষ প্রান্তে।

ঘরগেরস্ত চাঞ্চল্যে আজও তুমি বাগান সাজাও নিজ হাতে, আর
আমিও একটা ভালোবাসার নদী হতে চাই।

মেঘলাসুনীল দিনে যে নদী ভালোবেসে
চৌচির করে দিতে পারে তার দু- কুল সাজানো
শিল্পের কারুকাজ।

সময়ের লক্ষ্যভ্রষ্ট তীর

বেদনা আর সম বেদনা দিয়ে কি হবে আর, সময় তো আসবে না ফিরে
সাথে নিয়ে মৌ-মাছিদের প্রাণ; সময় তবে কি পেরেছে কবে;
সময় শুধু পোশাক তৈরীর ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে,
পরিপত্র দিয়ে এখন আর কিছু পরিবর্তন সম্ভব নয়।
জীবন এখন বাঁওড়ের মাঝে স্থির, মানুষে চাতুর্যতা
এখন প্রতিজিহ্বায় জড়ানো মৌবী। সুযোগের অপেক্ষায়
যজমান সাজ বিচিন্তিত মঞ্চে পিণ্ড দান করে।
কেয়ামতের প্রলুব্ধ ভয় লোভের তাবুতে প্রচ্ছন্নতায়
পুরোগামী যে পথে ভুল করে ঠুকেছে মাথা,
সাকার কিংবা নিরাকার কতটা দিয়েছে সেই
সৌখিন লোবান; বিবেকের কাছে দায় মিটাতে।

পৌরাণিক যুগে ফিরে যেতে যেতে মাথা ঘুরিয়ে
বিচারের চৌকাঠে লোলুপের ফাঁসি কে দেখেছে
কবে? আজো কোন জনপথে সীতাদের অগ্নি পরীক্ষা হয়
কিংবা দ্রৌপদীর লজ্জা বস্ত্রতে ঢাকতে পারে না
হাজার নেকড়ের চোখের – নখের থাবায়।
অতিথি পাখার দল মাঝ পথে পাখা ভেঙে পরে রক্ত নদীর বুকে
ঘৃণার শকুন – শকুনিরা পাখা মেলে উড়ে চলে রাজপথে,
পারাপারের মাঝিও বুঝে গেছে জীবনের থেকে অর্থের অর্থ অনেক বেশী মজবুত;
দেশের ক্ষয় কিংবা ক্ষয়ে যাওয়া জীবন থেকে যেটুকু চেটেপুটে নেয়া যায় তাই
জীবন বোধ।

ততটা উচুতে উঠতে পারে না মানুষ, যেখানে শকুনের চলাচল;
আর পাকা শিকারীর হাতে থাকা হাজারো তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পরে
মাটির উঠানে।

আবছায়া ভালোবাসা

আবছায়া ভালোবাসা

নক্ষত্রের পথে আজো হেঁটে চলে
ক্লান্ত পায়ে কোন যৌবনা নারী;
বাতাসে শাড়ীর আঁচল উড়ে
মেঘেদের মত ঢেকে দেয় চাঁদ,
তবু আবছায়া আলোতে দূরে আরো দূ রে
চোখের তৃষ্ণা জেগে থাকে খুব;
পুরুষ কেমন হয় ?
ভালোবাসাই বা কেমন !
সেও কি আকাশ মাটির মত
দূর থেকে দেখি মিলে মিশে একাকার
কাছে গেলেই যোজন যোজন ফাঁক !

আকাশ মাটির ফাঁকে হাওয়া হয়েই
অপূর্ণতা ঢেকে দিতে জানালার গ্রীলে
বন্দী সময় । আহা জীবনে কত লালায়িত সুখের
কাব্য শীতের শেষে ঝড়া পাতার মত ক্ষয়, বুঝতে পারনি
বা বোঝাতে পারিনি চৌচালা টিনের ঘরে
সুখ বা দুঃখের বৃষ্টির শব্দ গুলো
গড়িয়ে গড়িয়ে মৃত্তিকার বুকে,
ভালোবাসা হয়তো
এমই হয়।

অমীমাংসিত লেফাফা ৪

অমীমাংসিত লেফাফা ৪

আমি নদীর জল দুই হাতে তুলে নিজের ছায়া দেখতে চেয়েছি,
ধীরে খুব ধীরে কাঁপন ধরা আর্শীতে যখনি নিজেকে
দেখবো বলে ঝুঁকি, আঙ্গুলের ফাঁক গলে হারিয়ে যায়
সব তরল সৌন্দর্য্য। আর নিজেকে খুঁজে পাইনা।
নদীর বুকে সপাং সপাং শব্দ তুলে, যে মাঝি
নদীকে দুই ভাগ করে তার কাঠের বৈঠা দিয়ে
তারও একটা সুর থাকে, লয় থাকে কিংবা
গন্তব্যে পৌছানোর তাড়া। আমার তেমন কোন টান নেই,
তাড়া নেই, সুর নেই কিন্তু সেই ভাঙ্গনের শব্দ ঠিকই আছে
যেমন থেকে যায় কষ্ট ভুলতে আকণ্ঠ সুরা পান করা
মানুষের মনে ভুলতে না পারার জ্বালা। আসলে হিসেবি মানুষই
সবথেকে বেহিসেবি হয় ঠিক যেমন খুব চেনা মানুষ গুলো
অচেনা রং হয়ে ফিরে আসে।

কোন দিন তোমার কোন কিছুই আমার কাছে
অচেনা-আজানা ছিলোনা বলেই তোমাকে আজো
জানতে পাড়লাম না, বুঝতে পারলাম না জীবনের
কোন ভাঁজ কোন সুর কোন রং এর সূতোয় বেঁধে
টেনে তুলতে হয়। জীবনের সকল দায় স্বপ্নের কাছে
বিক্রি হবার জন্য নয়, জীবনের সব দেনা শোধ করার জন্য নয়,
জীবনের সমস্ত প্রাপ্তি উপভোগ করার উপায় নেই কোন,
আর সকল কষ্ট ভুলে সুখ পাওয়া যায় না,
তাই স্মৃতির ফ্রেমে আটকে থাকা প্রতিবিম্ব
সময়ের প্রলোভনের উল্লাসে হারিযে যেতে দেইনি বলেই
আজো নিজেকে দেখতে পাই পারদবিহীন আয়নায়
যেখানে নিজেকে উল্টো করে তুলে ধরতে হয় না
ভালোবাসাকে শুদ্ধো করতে।

এটা কোন কবিতা নয় এটা কুবিতা।

অমীমাংসিত লেফাফা ৩

অমীমাংসিত লেফাফা ৩

বিবেকে দুয়ারে দাঁড়িয়ে যে উচাটন মনোভাব তোমাকে
নীল দংশন করছে, তাকে তুমি ভুল করে অতৃপ্তি ভাবছো।
আমাদের গতানুগতিক জীবন ধারায় যে ভালোবাসা
শুধুই হৃদয় ছুঁয়ে যায়; তাকে তুমি অন্য কোন কিছু
ভেবে নিজেকে প্রতারিত করছো, আর ছোট করে ফেলছো
নিজের তুলনামূলক বিশ্লেষণ। কোন দিন কোন ভালোবাসা
যদি শুধুই শরীর সর্বস্ব হয় তাকে ভালোবাসা না ভেবে
বিনিময় বলা যায়। মানুষ মাত্রই আবেগী কিন্তু
প্রতিটি মানুষের আবেগেরও ভিন্ন ধরন থাকে,
তোমার মত যারা তারাই শুধু স্বপ্নীল আবেগে
ধীরে ধীরে খুঁজে যায় জ্বলন্ত চিতায় সাজানো বাগান,
গোছানো ঘর, সুখের আলমিরা, শীতের শিশির
আর চৈত্রের বিরান বাতাস। আমি তো তেমন মানুষ;
যার জন্য ফুলের সাজানো বিছানায় জড়িয়ে থাকে
কষ্টের রেটেল স্নেক, যাকে বেঁচে থাকার জন্য
শব্দ নিয়ে বসে থাকতে হয় কিন্তু মাড়িয়ে যাওয়াটা বোধয়
সহজ নয়। আসলে অনেক উপরে দাঁড়িয়ে থাকা
মানুষের মন সত্যি পৃথিবীর সবুজ গাছ গুলোকে
অনেক ছোট করে দেখে। জীবনে ম্লান চাঁদের আলোয়
সুখের পারস্পরিক গহীন প্রস্রবন আমার জানা আছে খুব,
তাই আজো সর্ম্পক এর অন্তরালে, রক্ত মাংসে তৈরী
কোন মানবী নয় শুধুই ভালোবাসা খুঁজি,
শুধুই ভালোবাসা।

এটা কোন কবিতা নয় এটা কুবিতা।
ছবিঃ নেট থেকে নেয়া

নোটঃ সময়ের অভাবে ব্লগে আসা হয় কম তাই দুটো পোষ্ট একসাথে দিলাম, এ্যাডমিন যদি মনে করেন বিষটি অনিয়মে পর্যায়ে পরছে সে ক্ষেত্রে একটি মুছে দিতে অনুরোধ থাকবে।

আপন দোসর

আপন সাজাই, আপন ভাবাই, আপন নিয়ে কান্নাকাটি
আপন ভূবন দুয়ার খুলে স্মৃতি নিয়ে ঘাটাঘাটি।
আপন মানুষ, আপন ফানুস, আপন চোখের জল
আপন নিয়ে রঙ্গ মঞ্চে সাজাই আপন ঘর।
আপন সুজন, আপন উজান, বুকে আপন ভার
আপন থেকে আপন হতে দুঃখ কুড়াই তার।
আপন হাতে আপন চুড়ি, অনেক আপন সুখকে চুরি,
আপন মাঝে ডুবতে গিয়ে আপন বিষয় খুব মামুলি।
আমি আপন, তুমি আপন, অভীমানের ঝড়,
ভাবতে আপন খুব গোছানো তুমি এখন পর।
জামা আপন, রুমাল আপন, আপন গলার ফাঁস
আপন নিয়ে ভাবতে বসে আপন হা হুতাস।
তবু আজো আপন ভাবি, তুমি আপন কার
গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজায় আপন এর কারবার।
সেই তো আপন মাটির পুতুল
তার সংঙ্গে বিয়ে।
সোনার খাঁচায় আপন সাজাই
আপন সোহাগ দিয়ে।

এইটা কোন কবিতা না এটা কুবিতা, কবিতা ভেবে পড়লে সেই দায় আমার না।

…. কিছু একটা হবে…..

…. কিছু একটা হবে…..

গোপন চোখের জল
মুখে হাসি ঝলমল
সঙ্গী হয় না কেউ
সাতসমুদ্রের ঢেউ।

অভিজাত সব অভিমান
হিসাব বিহীন স্লোগান
নগ্নতার উৎসবে আজ
অপেক্ষক এক প্রসবযান।

ভাটির টানে ঘুম চোখে তোর
উঠবি কবে জেগে
দিনের আলো নিভছে প্রায়
আসছে আঁধার ধেয়ে।

আসছে সময়, যাচ্ছে সময়
সময় কি তোর গরু
রাখবি বেঁধে কেমন করে
করবি কবে শুরু।

চোখ মুছে আজ উঠে দাঁড়া
অট্টহাসি মুখে
ব্যাঙ্গ হাসির তীর ঢুকে যাক
অসভ্যতার বুকে।
_________________

………. এটা কোন কবিতা নয়, কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা করছিলো তাই…….

বিভক্ত সংসার

বিভক্ত সংসার

আমার বাড়ী মেঘের দেশের ছায়া
জন্ম আমার অশনি সংকেত
চরণ চলে মরা নদীর বাঁকে
হারিয়েছি সৌখীন আবেগ

প্রশ্নবাণে মেঘের চোখে জল
আমার বসতি হারাই যদি আজ
খুঁজবো কোথায় বেহাগ সুরে
জীবনের সম্বল।

তারচেয়ে সেই ভালো হয়
প্রশ্ন কিছু তারার চোখে থাক
বাতাস ভেসে সুর চলে যাক দূরে
তোমার আমার দুই পারে সংসার।
______________________

.
* এটি একটি কুবিতা
কেউ কবিতা ভেবে পড়লে দায় পাঠকের।*

মৃত্যু সুখ

মৃত্যু সুখ।।

কাটাছেঁড়ার পর নতুন করে মেয়াদবিহীন শরীরের গহীন ঘরে রাখা এক টুকরো কুয়াশা, মেঘ বৃষ্টির আগমনী সঙ্গীত নিয়ে উড়ে যায় দেশান্তরী হতে।
অযথা সৃষ্টি সুখে উল্লাসিত হয় নরম কাদামাটি ;
সবুজ অবুঝ ঘাস পায়ে মাড়িয়ে চলে যায় যে পথিক
সকালবেলার রোদ মুছে দেয় সেই পদচিহ্ন।
শরীরের মৃত কোষ যদিওবা মুছে দেয় বিজ্ঞাপনের প্রসাধন ;
গভীরতায় থেকে যাওয়া উষ্ণ তরল, লুকাইত ঝর্না হয়ে কপোল স্পর্শদোষী হয়।

সুখের খেলাঘরে কতটা প্রদীপ দিয়ে আলোকিত হয়
তার হিসেব শুধুমাত্র পাকা অভিনেতা জানে;
চিত্রকরের তুলি সব ছবি আঁকতে পারেনি কোন দিন।
কল্পনায় দেখা সবুজ ঝর্ণা, বাস্তবতার বিবর্ণ রঙ মিলেমিশে নাস্তানাবুদ দূষণকারী ক্ষার।

বিশাল আকাশের যেমন তৃষিত মেঘ দরকার তেমনি
বিশাল সাগরের তৃষ্ণা জেগে থাকে নদীর ঘোলা জলের জন্য।

আকাঙ্খার প্রহর প্রাপ্যরূপ চাহিদার তুলনাকেন্দ্রিক ধারা;
যেখানে তুমি আমি কিংবা আমরা
সুখ মৃত্যুযোগ নিয়ে শরীর ছেড়ে যেতে পারিনি, পারিনা ও পারবো না।

স্বপ্ন বদল নেত্র

স্বপ্ন বদল নেত্র

সময়ের দাবানলে ইট বদলে ঘর
তবুও কাটেনা তার পায়ের শেকড়
সেই ঘর সেই হাড়িপাতিল দিয়েছিলে মা
খেলতে দিয়ে বুঝিয়েছিল
জীবন যাতনা,
তখন থেকেই ২৫ বছর স্বপ্ন বুনে খেলা,
ভাঙা আয়নায় নিজের আদল
যায় কেটে আজ বেলা।
খেলাঘরে তৃপ্ত সুখে অঙ্কিত যে ঘর
সেই ঘরেতে সবই ছিলো ছিলো না এই বর
তখন ছিলো রঙিন সূতা বাঁধতে
ঘরের চালা
বয়স ভেদে সূতা মোটা
জেলখানা তে তালা।

শুকিয়ে যাওয়া জীবন কেন করুণা ধারায় যাবে
সেও তো এক অদৃশ্য মুখ
সুখ কোথায় পাবে।

জন্মদেয়া মানুষ গুলো
মানুষ হলে আজ
লিঙ্গ নিয়ে বাগ বিতর্ক
ভুলতো এ সমাজ।

**

স্বরবর্ণ পাঠ

অভিলাষী অভিশাপ দ্বীপান্তর এ বুক
ওম পেতে যে আগুন পোড়ে
তাতেই তাহার সুখ।

ক্লান্তভাবে চলতে গিয়ে
রক্ত ক্ষত বুকে
ধুলি ভরা জীবন চলে
গোধূলি সেই মুখে।

স্বপ্ন উড়াই স্বপন পোড়াই
অস্তরাগের ছোঁয়া
সাঁঝেরবাতির নরোম আলোয়
জেগে থাকে ধোঁয়া।

চন্দনের গন্ধে যখন
হৃদয় পুরে ক্ষার
শীতলপাটি, নিকনো উঠোন
কতটা দরকার।

অধিকারী না হলাম আজ
ফুলেরই সজ্জায়
একতারা সুর জেগে থাকুক
স্বরবর্ণ এর দরজায়।

____________________

**** এটি একটি কুবিতা
কেউ কবিতা ভেবে পরলে সেই দায় পাঠকের।

চিঠির পত্র ১১

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।

যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ১১তম পর্ব। এবারের চিঠি নিয়েছি – শাফি উদ্দীন এর লেখা “চিঠি (১)” থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি (১)

প্রিয় আলেয়া,
অনেক দিন হয় তোমার খবর থেকে আমি বঞ্চিত। সেই গ্রীষ্মকালীন ছুটি হলো! আশা করি মহান আল্লাহর অশেষ দয়ায় ভালো আছ। এরপর যা বলতে চাই আলেয়া, আমি প্রাণের গোপন গহিন থেকে, ভালোবাসি তোমাকে। কেনো ভালোবাসি তোমাকে তা কী জানো? বিষয়টি আমি খোলাসা করেই বলি, তুমি শোনো। আমি চোখে দেখেছি তোমার আল্লাহ ভীতি, অপূর্ব ও অতুল তোমার চলা-ফেরায় ও ওঠা-বসায় বলিষ্ঠ নীতি। শুধু কী তাই? পোশাকে-আশাকে তোমার যে অতুল পবিত্রতা তা প্রসংশনীয় এবং সর্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য। সব কিছু মিলিয়ে, আমি যার পর নাই মুগ্ধতা নিয়ে আছি তোমার প্রতি। দেখেছি তোমার জ্ঞানদ্বীপ্ত চোখের স্বচ্ছ জ্যোতি। এর পর আরো যা বলতে চাই তা হলো, নিজের আত্মশক্তিকে ও মর্যাদাকে সংযমি রাখতে চাই বিধায়, যতটা সম্ভব নিজেকে তোমার কাছে থেকে আড়াল করে রাখি! এভাবেই তোমাকে কাছে পাওয়ার সদিচ্ছাকে হিসেবের স্বচ্ছ খাতায় পাকা করে রাখি তাও মনে মনে এবং একান্ত সংগোপনে, এমন কি অন্যদেরও চোখের আড়ালে।

আলেয়া, সেদিন তুমি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তোমার বক্তব্যের সময় যখন সূরা ফাতিহার চমৎকার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলে এবং নামাজে আল্লাহর সাথে কথপকথনের বিষয়টি বিষদভাবে মনের মাধুরি মিশিয়ে তুলে ধরছিলে, তখন দেখলাম উপস্থিত প্রায় সকল লোকই যেন মহান প্রভুর আসক্তিতে অশ্রুসিক্ত হয়ে কাঁদতে ছিলো! লোকগুলো ভাবছিলো, এ দুনিয়া আর ক’দিনের? এক্কেবারেই ক্ষণস্থায়ী! তাই মানুষ এই দুনিয়ার লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষের কলুষতা বা ক্লেদাক্ততা এবং সম্পদের অলিক প্রত্যাশা দূর করে সম্পদ না পাওয়ার অতৃপ্তি মন থেকে সমুলে মুছে ফেলে পবিত্রতা আনার প্রত্যাশায় মগ্ন ছিলো। এ কারনেই তোমার প্রতি আমার প্রেমের আসক্তি এতটা দৃঢ়-গ্রাঢ়-প্রগাঢ়। এখানেই শেষ নয় আলেয়া, এরপর আরো যা দেখলাম, তুমি জান্নাত-জাহান্নাম নিয়ে যখন বক্তব্য উপস্থাপনা বা অবতারণা করছিলে তখনও লোকগুলো আল্লাহ ভীতি ছাড়া অন্য কিছুই অন্তরে ধারণ বা পোষণ করতে পারে নি! তুমি এত মহৎ গুণের অধিকারী! এর পরও কী বলতে পার যে তোমার ন্যায় অশেষ গুণবতীকে আমি ভালো না বেসে নিজেকে দূরে সরে রাখতে পারি? না পারি না।

প্রিয় আলেয়া, আমি তোমাকে চলার পথে দূর এবং কখনো কখনো খুব কাছে থেকে যতটুকু পরখ করেছি, তাতে দেখেছি তুমি সদা সর্বদা মুখে উচ্চারণে ‘সুবহানাল্লাহী’,‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা-ই-লাহা ইল্লাল্লাহু’ বলে মহান আল্লাহর দরবারে সতত একমাত্র তাঁরই প্রসংশা কর, ফলে তোমার মনে তিলমাত্র হতাশা বা নিরাশা নেই। সবচে’ তোমার প্রতি আমার অগাধ-অফুরন্ত ভালোবাসার উৎস স্বরুপ বললে অত্যুক্ত হবে না যে, তুমি যেভাবে আল্লাহর উপর আত্মসমর্পণ কর তা তুলনাহীন ও অনন্য! মহান আল্লাহর উপরেই সম্পূর্ণ ভরসা। দোয়া করি মহান আল্লাহ যেন তোমোকে পূর্ণ হেদায়াত দেন, অন্তরে তাকওয়া আরো বাড়িয়ে দেন এবং বরকতময় জীবন দান করেন।

ইতি শাফি।
________

_MG_7720

আমার উত্তরঃ

আমার প্রাণপ্রিয় সখা,
তুমি আমার ছালাম নিও, আশা করি মহান আল্লাহ তালার অসীম রহমতে তুমি ভালো আছো, আমি প্রতিদিন ৫(পাঁচ) ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহর দরবারে তোমার ভালো কিছুর জন্য দোয়া চাই, যাতে তুমি তোমার পবিত্র মন নিয়ে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারো। আমি জানি তুমি পরকালে গভীর বিশ্বাস করো, তাই তোমার প্রতিদিনের প্রতি নামাজে আমাদের জন্য যে দোয়া করো তাহা মহান আল্লাহতালা ঠিকই শুনতে পান এবং তার অশেষ কৃপায় আমার সবাই ভালো আছি।

তুমি হয়তো জানো না তোমার অগোচরে তোমারই মত আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। শুধু মাত্র তোমাকেই ভালোবাসি বলেই আমি নিজেকে তোমার রূপে গড়তে চেয়েছি, আমার মনে হয় রাব্বুল আলামিন আমার সেই ইচ্ছে পুরোন করেছে, আমি জানি ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম এবং তার প্রতিটি বিষয়ই বিজ্ঞান সম্মত, যদি আমার সেই বিষয় গুলো মেনে চলি তবে সব ধরনের বালা মসিবত থেকে মহান আল্লাহ তালা আমাদের তার রহমতের কিঞ্চিৎ হলেও দান করবেন, আমিন।

আমার প্রতি তোমার যে খেয়াল আমি তা কোন দিন কাউকে এভাবে করতে দেখিনি, আশাকরি আমাদের পরবর্তী জীবনেও তুমি এমন ভাবে আমাকে দেখে রাখবে। অনেকেই মনে করে ইসলাম মানা মানেই নারীদের বাহিরে বের হওয়া বন্ধ কিন্তু আমি তোমার মধ্যে সেই কুসংস্কার কখনো দেখিনি, আমি দেখেছি তুমি ধর্মেও সংস্কার গুলো খুব যত্ন সহকারে মেনে চলো কিন্তু কোন ধরনের কোন গোড়ামী তোমার মধ্যে নেই আর আমি তাই নিজের অবস্থানে থেকে প্রতিটি পবিত্র কাজে নিজেকে নিয়োজিত করি, যা শুধু মাত্র তোমার দোয়াতেই সম্ভব হয়েছে।

তোমাকে অনেক দিন দেখিনা, খুব দেখেতে ইচ্ছা করে। এই আধুনিক যুগে যদিও দূরত্ব গুলোকে খুব কাছে নিয়ে আসতে সুযোগ করে দিয়েছে তারপরও রক্ত মাংসের প্রাণের মানুষটিকে কাছে পাওয়া আর লাইভ চ্যাটিং এক জিনিস নয়।

সেই ছেলে বেলায় মা খালাদের মুখে শুনেছি কখনো মুরুব্বীদের নাম মুখে নিতে নেই। আমি জানিনা এটা সংস্কার না কু-সংস্কার কিন্তু আমি বিষটিকে যত্নের সাথে নিজের মধ্যে লালন করেছিলাম, ভাবতাম যখন আমার কেউ হবে আমিও তাকে কখনো নাম ধরে ডাকবো না। আমি বিশ্বাস করি সম্মান দিলে অবশ্যই তা ফেরত পাওয়া যায়। হয়তো এখনকার যুগে এই বিষয় গুলো অনেকের কাছে অচল পয়সার মত মনে হতে পারে কিন্তু আমি তো জানি তুমি সেই অচল পয়সাকেই এন্টিকস্ (অদ্ভুতদর্শন অলংকার) করে তুলে রাখো যা সচল পয়সার থেকে দামি।

অবশেষে তোমার কথা দিয়েই শেষ করছি তুমি সব সময় আল্লাহর উপর আত্মসমর্পণ করে যে সুখ অনুভব করো তাকে কোন কিছুর সাথে তুলনা করতে পারিনা, মহান আল্লাহর যেন তোমার মনের সকল ইচ্ছা গুলো রঙিন করে সাজিয়ে দেন। আশা করি মহান আল্লাহ তোমাকে পূর্ণ হেদায়াত করবেন, অন্তরে তাকওয়া আরো বাড়িয়ে দেবেন এবং বরকতময় জীবন দান করবেন।

ইতি তোমার

খেয়ালী আলেয়া।