ছন্দ হিন্দোল এর সকল পোস্ট

হোক দুর্দশা নাশ

লোভ লালসা যত হবে চাষ।
দেশ আর দশের হবে সর্বনাশ।
ক্ষমতার লোভ নয় চাই দেশের লাভ।
দুর্নীতি বাদ দিয়ে চাই দশের লাভ।
দেশ দশের কল্যাণে দুর্দশা হোক নাশ।

শুভ নব বর্ষ

নব বর্ষের উদত্ত আহবান।
প্রেম প্রীতি থাক অফুরান।
মুছে যাক ক্ষোভ জ্বালা অপমান।
লোভ,মোহ,হিংসা হোক অবসান।
এসো হে বৈশাখ,ঘূর্নিতে তোল ঐক্যের তান।
বার বার নিয়ে এসো জীবনের জয়গান।

স্মৃতি স্মরণে

শতাব্দীর শ্রেষ্ট সন্তান ডাঃ সৈয়দা ফিরোজা বেগম নারী জাতির আর এক গৌরব ।
চান্দিনার গোলাপ বিশ্বের দিকে দিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন সৌরভ।
কুসংস্কারাছন্ন অনেক পথ পেরুতে হয়েছে তাকে।
চড়াই উৎরাই বহু পথ পেরিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন নিজেকে।
মানব কল্যানের স্বপ্ন দেখেছিলেন যিনি।
সেবার মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত করেছেন তিনি।
দুঃখি দুঃস্হদের প্রতি প্রসারিত করেছিলেন তার দুই হাত।
জ্বরা গ্রস্হদের পাশে কাটিয়েছেন কত বিনিদ্র রাত।
নিজের অসুস্হতাও ভূলে যেতেন মানবতার ড‍াকে।
হাত ছাড়া না হয় দুঃস্হদের ভাগ ‍ইউনিসেফ ইউনেস্কো থেকে।
রাজনৈতিক অঙ্গনেও ছিলো পদচারনা যার।
অর্থনৈতিক করম কান্ডেও রেখেছেন সাক্ষর সফলতার।
সফল শিক্ষিকা ছিলেন ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে।
অনুগত সন্তান,মমতাময়ী মা, বন্ধু প্রতিম ছিলেন প্রিয়জনদের কাছে।
গড়েছে‍ন‍ তিনি স্কুল, কলেজ, ইউনিভারসিটি ঞ্জান বিতরনের পক্ষে।
প্রতিষ্ঠিত করেছেন মাদ্রাসা মসজিদ এতিম খানা নাজাতের লক্ষে।
দেশ দেশান্তরে ঘুরেছেন অনেক সত্যের অন্বেষায়।
ইসলামই সত্য শান্তি পান কোরআনের ছায়ায়।
মহান আল্লাহর দরবারে তার আত্মার শান্তি কামনা করি।
জান্নাত দাও” হে রহমানুর রহিম”সকল অপরাধ হরি।

বিড়ালের সাথে বন্ধুত্ব

বিড়ালের সাথে বন্ধুত্ব আমাদের অনেক দিনের ৮১ সাল থেকে।
অনেক আগে সেতু বন্ধনকে বলেছিলাম সে কথা শোনাব একদিন….

আমরা তখন মনিপুরি পাড়ায় ছিলাম আমার মেয়ের বয়স ৬ বছর। বাড়িতে কেউ বিড়াল পছন্দ করেনা কিন্তু মেয়ের এত শখ হয়েছে যে বিড়াল আনবেই। আমাদের পাশের বাসার খান সাহেবদের বাসা থেকে একদিন একটা বাচ্চা নিয়ে আসে।

বাড়িতে তো এর জায়গা হবেইনা….রাগা রাগি চিল্লা চিল্লি… তার পরেও প্রায় ৩০ বছর ওর বংশধর এই বাড়িতেই পার করে গেল সে কথাই বলব……… প্রথমে যেখানে ছিলাম নতুন বাড়ি আমরাই প্রথম বাসিন্দা। সেখানে বাইরের থেকে আনা কতগুলি কার্টুন ছিল। সেখানে কিভাবে যেন ছোট ইদুর আসল।
বিড়ালের বাচ্চাও ছোট কিভাবে যেন একটা ইদুর ধরে কর্তার সামনেই পেশ করে…
কর্তা একটু খুশি কিন্তু মেয়ের উপর রাগ যায়না।
কার্টুন নেড়ে কেউ ইদুর ধংস করতে না পারায় ওর থাকার মেয়াদ বাড়তে থাকে।

এর মধ্যে আমরা ঐ বাড়ি ছেড়ে পরিবাগে সিফট করতেছি। জিনিস পত্র সব ট্রাকে উঠে গেছে এখন আমরা গাড়িতে উঠব, কেউ কিন্তু ওর কথা একবারও ভাবেনি, মেয়েওনা। একে একে সবাই উঠলো, বিড়াল কি ভাবল নিজেই গাড়িতে উঠে বসল, এমন শক্ত ভাবে বসল জোর করেও নড়ানো গোলনা। ফেলে যাবে ভাবলো তারপর ওর মুখের দিকে চেয়ে আর ফেলা হলোনা। …
এর পর একদিন ওর বাচ্চা হয় বাচ্চা মুখে করে নিয়ে এসে কর্তার পায়ের কাছে এনে রাখে
একে একে সবগুলি (৩টা) …
কর্তা খুশি, নিমকের মান রাখছে। বাড়ল থাকার মেয়াদও……..

এরপর আমরা নিজের বাড়িতে সিফট করি।
সেখানে আনেক মাটি ভরাট করতে হয়, ইদুরের মাটি নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে ওর বংশধর সহ যায়গা পায় সেখানে আজতক। শেষে বিড়াল পরিবার এর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ এ।
এর মধ্যে হুলোরা বাচ্চা মারতো বিধায় কর্তা কয়েকটাকে এয়ার গানের নিশানা করেছে।
এর পর শুরু হয় আর এক অধ্যায় সে কথা পরে বলবো………..

মধুমাস

বৈশাখে শাখে শাখে
থোকা থোকা আম থাকে।
ডালে বসে ভালো আম কিছু খায় কাকে,
দুষ্টু ছেলেরা সুযোগ বুঝে ঢিল ছোড়ে ফাঁকে।
কাঁচা আম ভারি মজা যদি খাও ভর্তা,
কাসুন্দি মোরোব্বা বানাও বলে যান কর্তা।
আচারের সুগন্ধে বাড়ি ভরপুর,
বোয়মে রাখা আছে আমসত্ব আমচুর।
পাকা আম ভারি মজা বলে সকলে,
মজাদার ল্যাংড়া ফজলী বাংলাদেশেই ফলে।
বৈশাখে তাই রব নানা বাড়ি যাবো,
গাছে উঠে পেড়ে পেড়ে পাকা আম খাবো।
গ্রীষ্মর বন্ধ হলো সব স্কুলে,
মধুমাস উদযাপন করবো বলে।

শুভ জন্মদিন( ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান)

শুভ জন্মদিন ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান
ক্ষন জন্মা বিরল ইতিহাসে।
জন্ম নেন ১০ই এপ্রিল জার্মানীতে
এক মৃর্ত্তিকা শিল্পীর ঔরষে।
শিক্ষায় ধ্যানে জ্ঞানে ব্যপৃত ছিলেন
ছোট বেলা থেকেই।
ভাষান্তর আর আবিষ্কারে
বিলিয়ে দিয়েছেন নিজেকেই।
এ্যালোপ্যাথের উচ্চ ডিগ্রী লাভেও
মেটেনি মনের আকুলতা।
চিকিৎসা পেশার পদে পদে
লড়েছেন বহু প্রতিকূলতা।
কি করে নির্দোষ আরোগ্য করা যায়
এটাই ছিল তার বড় আকুতি।
পেয়েছেন ইউরেকা সম সদৃশ্য বিধান হোমিওপ্যাথি
যা বিশুদ্ধ প্রকৃতি।
মায়াজম আবিষ্কার
তার এক অসাধ্য সাধন।
রুগ্ন মানবতার দ্বারে
উড়িয়েছেন বিজয় কেতন।
জন্ম ধারন বৃথা যায়নি
প্রতিভাত হয়েছে নবজীবনের ফুটেছে রুগ্নের মুখে হাসি।
অণুর বিকাশ সার্থক হয়েছে
প্রমানিত হয়েছে শাশ্বত বিজ্ঞানের রাশি।
আমরা তোমার ক্ষুদে পথিকৃত
ধরে রেখেছি উর্ধে তুলে তোমার জ্বালানো মশাল।
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ পৌছে দেব হাত থেকে হাতে
অনাদি অনন্তকাল।

বাংলা মা

সবুজ শ্যামল পাতায় ঘেরা ,
শান্ত আমার বাংলা মা।
বুক জুড়ে তার অমৃতধারা ,
নেই যে উপমা।
ফুলে ফলে ভরিয়ে তোলে,
প্রাণের সুষমা।
কোল জুড়ে তার হাজার মানিক,
খোদার মহিমা।
সকল দেশের সেরা সে যে ,
আমার বাংলা মা সুন্দরী পরমা।

তিনিই মহান

স্রষ্টার প্রতি সৃষ্টির
আনুগত্যই প্রধান।
শুধু দাসত্ব করার জন্যই
সৃষ্টি করেছেন জ্বীন,ইনসান।
জীব,জন্তু, গাছ,সাগর,নদী,চাঁদ,সুরুজ
তামাম দুনিয়া জাহান।
প্রত্যেকেরই কালেমা আছে,
জপ করে দিনমান।
অঙ্গিকার নিয়েছেন সব রূহ থেকে
লা শারিক আল্লাহ,তিনিই মহান।

পানিই জীবন

পানির হাহাকার
জড় জীবের আসন্ন মরু বাস।
বাঁধ তো নয়,
দিয়েছে গলায় ফাঁস।
তিস্তা নিয়ে ইতস্তত
করছে যখন সবাই।
ন্যায্য পানির হিস্যা পেতে
করে যাচ্ছে লড়াই।
মমতাময়ীর মমতাকি
গড়াবে আশ্বাস ?

ঝরাবে ঝর্নাধারা

আকাশ আজ সেজেছে মেঘে
ঝরাবে ঝর্নাধারা।
রুমুর ঝুমুর নাচের তালে
ছড়াও ফল্গুধারা।
পরীর ডানায় আয়রে ভেসে
সাজিয়ে নীল আকাশ।
ছন্দ তালে কিশলয়ে
খেলড়ে দুরন্ত বাতাস।
সাত সাগর দুর হতে
মোর ছোট্ট বুবুটি।
ডাকছে তোমায় আয়লো উড়ে
ভিজাবে চরণ দুটি।

আল জুমোহ

আল জুমোহ (রাঃ) হৃদয় ছিল আল্লাহ প্রেমে ভরা
চলতে তাঁর কষ্ট হতো তিনি ছিলেন খোঁঁড়া।
পাঠিয়েছেন চার বীর পুত্রকে ওহোদ প্রান্তরে
আল জুমোহরও শহীদ হওয়ার শখ হলো অন্তরে।
যুদ্ধ যেতে বাঁধা দিলেন স্ত্রী আপনজন
তোমার রয়েছে শরয়ী ওজর জিহাদের যাওয়ার নেই প্রয়োজন।
বাঁধা পেয়ে আল জুমোহ (রাঃ) যান নবীর কাছে
ফরিয়াদ জানান ইচ্ছা হলো খোঁড়া পায়েই যেতে চাই বেহেস্তে।
সম্মতি দেন নবী বাঁধা দিওনা যেতে দাও জিহাদে
হয়তো আল্লাহ পাক নসীব রেখেছেন শহীদে।
বীর বিক্রমে যুদ্ধ করেন কাফেরের বুহ্য ভেদ করে বাপ বেটাতে
মনের জোশে বলতে থাকেন, বেহেস্তে যেতে চাই, আল্লাহর আদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই ধরাতে।
মনের আশা পূর্ণ হয় শহীদ হন ওহোদের যুদ্ধে
হিন্দা (রাঃ) যাচ্ছিলেন উটের পিঠে তিনটি লাশ শুদ্ধে।
জিজ্ঞেস করেন মা আয়শা (রাঃ) যুদ্ধের কি ফলাফল
রাসুল (সঃ) নিরাপদেই আছেন কাফেরদের আশা হয়েছে নিষ্ফল।
মা আয়শা (রাঃ) শুধালেন উটের পিঠে লাশ কাদের
আমার ভাই, পুত্র, স্বামীর নিয়ে যাচ্ছি মদিনায় করতে ব্যবস্থা দাফনের।
যতই চেষ্টা করেন হিন্দা (রাঃ) যেতে মদিনার পথে
উট জমিনে শুয়ে পড়ে, সামনে যায়না কোন মতে।
আয়শা (রাঃ) বললেন হয়তো বোঝা ভারী, তাই পারছেনা বইতে
হিন্দা (রাঃ) বলেন এই উটটি দুইটি উটের বোঝা সহজেই পারে টানতে।
ওহোদের দিকে মুখ করলেই ছুটে চলে খুব জোরে
হয়তো কোন কারন রয়েছে এর ভিতরে।
নিয়ে যান তিনি নবীজীর কাছে ওহোদের ময়দানে
বললেন সব কথা হযরতে, আদেশ করুন অসুবিধা কোনখানে।
নবীজী (সঃ) বলেন আল জুমোহ (রাঃ) যাবার সময় বলেছিল কি কোন কথা
হিন্দা (রাঃ) বলেন দোয়া করেছিলেন আল্লাহ আমাকে ফিরিয়ে এনো না হেথা।
আল্লাহ পাকের দরবারে কবুল হয়েছে তার সেই দোয়া
নসীবে রয়েছে ওহোদ প্রান্তরে হবে তার শেষ শোয়া।

এ্যসিড

সেদিন ও ছিলো মেয়েটি, ফুট ফুটে হাস্যোজ্জ্বল
হাসি আর গানে আনন্দ উচ্ছল।
সবার কাছে মিষ্টি মেয়ে বলে যার কদর ছিলো,
স্কুলে মেধাবী ছাত্রী হিসাবে যার সুনাম ছিলো।
কত স্বপ্ন ছিলো চোখে,
কত আশা ছিলো বুকে।
বাঁধন হারা জীবন,
পুলকিত মন।
ফুলকলি যেনো ফোটার অপেক্ষায়,
দুরন্ত সেই মেয়েটি অশুভ এক প্রচন্ড থাবায়।
লণ্ড ভণ্ড হয়ে গিয়েছে জীবন,
অপেক্ষা কখন আসবে মরণ।
কদাকার চেহারা ঝলসানো অঙ্গ,
নিঃস্তব্ধ, স্থবির, নিঃসঙ্গ।
জ্বালা, যন্ত্রনা, ক্ষোভ, অপমান,
এ্যাসিড যার জ্বলন্ত প্রমাণ।
এ্যাসিড দিয়েই জ্বালিয়ে দাও,
প্রতিশোধ নাও।
বুঝতে দাও,
দগ্ধ হতে দাও।
না হলে বুঝবেনা অমানুষ,
ফিরে আসবেনা অন্যদের হুঁশ।

নদী

পাষানের আশ্রু ঝর্না হয়ে একেঁ বেঁকে নেমে আসে।
পাহাড়ের গন্ড বেয়ে গিরি উপাত্যকা ঘেষে।
পথ চলতে চলতে দেখা হয় পাইন,হিজল,তমালের সাথে।
মঠ, মসজিদ, মন্দিরের পুরোহিতের সাথে।
কত তাবিচ ,কবচ তন্ত্র মন্ত্র অসার করে।
ছুটে চলেছে নৃত্যের ঝংকারে।
নীল সামিয়ানার নীচে, মেঘেরা দল বেঁধে চলে।
মাঝে মাঝে তরঙ্গে তারারা লুকোচুরি খেলে।
আরশিতে চাঁদ মুখ দেখে।
কি আকর্ষনে ফুঁসতে থাকে নদী অসীম সীমায়।
কপালে চাদেঁর টিপ পরে যৌবনের উন্মাদনায়।
চলার পথে সব তোলপাড় করে।
আমীর ফকির সব এক করে।
গরীবের জীর্ন কুটিরে ঢুকে ঢেউ খেলে।
কেড়ে নেয় শেষ সম্বল, তলিয়ে নিয়ে যায় অতলে।
বিরহ বিক্ষুদ্ধ নদী সব জঞ্জাল সাফ করে,
যাত্রা পথ সুগম করে।
অন্যদিকে গড়ে তোলে বালুচর
বালুকা বেলায়।
মিলনে ব্যাকুল নদী মহোনীয় রূপে এগিয়ে যায়
মোহনার মিলন মেলায়।