মুরুব্বী এর সকল পোস্ট

মুরুব্বী সম্পর্কে

আমি আজাদ কাশ্মীর জামান। আছি মুরুব্বী নামের অন্তরালে। কবিতা পড়ি, কবিতা লিখার চেষ্টা করি। ভেতরে আছে বাউল মন। খুঁজে ফিরি তাকে। জানা হয়নি এখনো। ঘুরতে ঘুরতে আজ পৃথিবীর স্বর্গে। এখানেই পরিচয় হয়েছিলো, কবিতা পাগল এক মানুষের সংগে। নাম জিয়া রায়হান। যার কিছু শব্দকথা, এ্যাতোদিন ভরেছে আমার পাতা। উথাল পাথাল হাওয়া, হৃদয়ে জাগালো দোলা পেলাম কিছু সমমনা মানুষের দ্যাখা। দিনভর আর রাতভর শুধু কবিতায় গেলো বেলা। সব ছেড়েছি- সব পেয়েছি- ভুলতে পারিনি শুধু কবিতার অশ্রুসজল চোখ। ভালো লাগা থেকেই দু’ একটা শব্দ সাজাবার চেষ্টা করি। মাতাল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মাটির কলসে, তবলার ধ্বণী তুলে গাইতে পারি বেসুরো গান- সুর নামের অন্তরালে। ভালোলাগে পোষা কবুতরের পালক ললাটে ছোঁয়াতে। ফুল থেকে রং নিয়ে, খেলি হোলিখেলা, হৃদয়ের উঠোনে। আজ তারি ধমকে এলাম স্বরূপে- স্বকথায় ভরাবো পাতা।   hits counter

শুভ্র বসনে যে আমায় অপরাধী করে গেলো হেসে

দেহ বস্ত্রে ভাব চেতনায় অনর্থক ধনী মানুষের কাতারে না ফেলে সাধারণ একজন সচ্ছল সংসারি মানুষ ভাবলে আমাকে বুঝে নিতে অনেকের সহজ হবে। আর দশটা রোজগেরে মানুষের মতো আমার সংসারেও মাসের পঁচিশ তারিখে অভাব এসে ঘর বাঁধে। বাচ্চাদের পড়াশুনা স্কুল খরচা গৃহ শিক্ষদের টিউশন ফি নিজের ঔষধ থেকে শুরু করে তেল নুন আটা চাউল বিদ্যুৎ গ্যাস সবই জগদ্দল পাথরের মতো বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। দীর্ঘ প্রবাস এবং সঞ্চিত অর্থ তাঁতীর লোভের মতো সহযোগি ব্যবসায় আর শেয়ার মার্কেটে ওয়ানওয়ে হয়ে ঢুকে বসে আছে। দীর্ঘ তিন চার বছর অপেক্ষায় থেকে এখন আশা ছেড়ে দিয়েছি। এই কাহিনী আমার সবচেয়ে কাছের; এমনকি এই শব্দনীড় ব্লগ বন্ধু ঘনিষ্ঠ যারা রয়েছেন তারাও ওয়াকিবহাল হয়েছেন। একটু গৃহকোণ গোত্রীয় মানুষ বলেই জীবনের সত্য কথা গুলোন আমি সহজেই বন্ধুদের বলে দেই। এমনও সময় আসে নেট বিল এর দেড় হাজার টাকাও আমার কাছে অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। বিব্রত বোধ করি।

ভালো মন্দ মিলায়ে ভালোই চলছিলো সময়। জীবনের পরে কোন অভিযোগ ছিলো না। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সাথে মাঝে মধ্যে হাই হ্যালো্ ছাড়া সম্পর্ক গুলোন ক্ষয়ে যেতে যেতে এখন আর ঠিক সম্পর্ক বলা চলে না; বলা যায় ছেঁড়া সুতোয় ঝুলে থাকা স্মৃতির বরফ খণ্ড। স্মৃতির খাতায় ঝাপসা হয়ে উঠা একেকটা গল্প। তবে স্বতন্ত্র নয়। জট বাঁধা সুতলি। জট ছড়ানো মানা।

কেউ কেউ থাকেন গা ঘেঁষা টাইপের। জীবনের এতোটা পথ পেরিয়ে এসে এটুকু অন্তত বুঝেছি; হয় সে সাহায্য চাইবে নইলে বেশী মাত্রার উৎসুক এবং মিশুক দুটোই হতে পারে। মিশুক এক বন্ধুই ঝুলে ছিলো বহুদিন। প্রয়োজনটা তার। প্রয়োজন আমাকে। ফলাফল দীর্ঘ সাতটি বছর আমি তার নয়; তার সন্তানের প্রয়োজন মিটিয়েছি। বন্ধু কন্যার দেহে রক্ত প্রয়োজনে নিয়মিত পাশে থেকেছি। বন্ধুর চাইতে বন্ধুর কন্যার প্রয়োজন শুনলেই নিজেকে বাঁধা দিতে পারতাম না। ছুটে চলে যেতাম। শুধু বলতাম – কবে লাগবে সেইটা বল। কেননা অর্থ সমৃদ্ধি না থাকলেও যেটা আমার আছে তা আমি বিনা শর্তে দিতে পারি। রক্ত। বন্ধু নয় বন্ধুর কন্যার সাথে তৈরী হয়ে যায় আমার রক্ত সম্পর্ক। পরিবারের বাইরে স্বতন্ত্র কিছু।

সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া তের বছরের মেধাবী এই কিশোরীকে দু মাস পরে রক্ত শূন্যে ফুলে উঠা হলদেটে মুখটা দেখলে বুকটা মোচড় দিয়ে উঠতো। গরম রক্ত শরীরে যাবার ঘন্টা দুয়েক পরে মেয়েটার ভুবন ভোলানো হাসিই আমার আমিকে সবচেয়ে সুখি অভাববোধহীন একজন মানুষে পরিণত করে ফেলতো। খেয়াল করলাম এখন আর দুই মাস মেয়েটার সেই হাসি স্থায়ী হয় না। দেহের আকৃতি পরিবর্তনের সাথে সাথে চাহিদা তার বাড়ছে। বরফ সুত্র জনা কয়েক বন্ধুদের সাথে আলাপ করে মেয়েটার স্থায়ী একটা ব্যবস্থার সাহায্য চাইলাম। উৎফুল্ল ঝকঝকে বন্ধুদের চেহারা হঠাৎ অমাবস্যার নিষ্প্রভতায় ভরে উঠতেও দেখলাম। আশ্বস্ত বাণী আর প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরে এলাম। জগতে সবাই ব্যস্ত। এই তো সেদিন খুব খুব যোগাযোগ হতো। চরম কর্ম ব্যস্ততায় ফোনের রিসিভ বাটনে চাপ দিয়ে কেমন আছিস শব্দটি বলবার মতো সময় এখন হারিয়েছে। তাদেরই কাকে যেন দেখলাম কি এক অধিকার আর সাম্যের শোভাযাত্রার প্রথম সারিতে।

বেসরকারিতে নেয়া গেলো না। সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই গন্তব্য। বড় বড় সব প্রফেসররা এখানে বাধ্য দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন। কোর্ট কাচারিতে টাকা স্যালাইনের ফোঁটার মতো বিন্দু বিন্দু যায়, সেখানে হাসপাতালের খরচা যায় বালতি বালতি। সীমিত সাহায্য, বন্ধুর জমি বিক্রয়ের সঞ্চয় আর নিজের যা ছিলো তা দিয়েই অপারেশন করানো হলো। অপারেশন সাকসেস। আনন্দে চোখ ভিজে উঠলো। যোগাযোগ সম্ভব সাহায্যকারীদের জানিয়ে দিলাম খুশির সংবাদ।

চব্বিশ ঘন্টা না যেতেই অপারেশনে ইনফেকশন। প্রফেসর অথবা অপারেশন যারা অপারেট করেছেন তাদের দুয়েকজনকে মুখে চিনলেও বাকিদের সাক্ষাৎ পেলাম না। চলতে থাকলো এন্টিবায়োটিক আর এন্টিবায়োটিক। শেষ দূর্ঘটনার আগের দিন ৩রা জুলাই বুধবার। কাঁচের রুমের আড়াল থেকে দেখে রোগীর ভালো মন্দ বুঝতে পারলাম না। রোগীর কোন উন্নতি অবনতির খবর কর্তব্যরত ডা. জানান নাই। জিজ্ঞাসা করতে নার্স এবং সহকারী ডা. জানালেন বিষয়টা স্যার (প্রফেসর) জানেন। মেয়েটির বাবা-মা না খেয়ে বসে আছে। হাতে এক গাদা প্রেসক্রিপশন। বাসা থেকে খাবার ক্যারিয়ার নিয়ে গিয়েছিলাম। ক্ষুধার্ত পেটে ক্যারিয়ার খালি হতে সময় নিলো না। হাসপাতালের ভাণ্ডারে প্রেসক্রিপশনের ঔষধ নেই। আছে শুধু প্যারাসিটামল। মেডিসিন দোকানি এ কয়দিন যাওয়া আসায় মুখ চেনা খরিদ্দার হিসেবে চিনে নিয়েছে। ঔষধ নিলাম। বললাম দামটা আগামীকাল দেবো। আর যদি কিছু লাগে দিবেন। টাকার সমস্যা হবে না। ০৩.০৭.১৩

পরের দিন বৃহস্পতিবার প্রবাসী দুই বন্ধুর বড় একটা এমাউন্ট পেয়েই ছুটলাম। বড় দুঃসংবাদটা সেখানেই অপেক্ষা করছিলো। এন্টিবায়োটিক গতকাল যতগুলোন কিনে দিয়ে এসেছিলাম তার সবই রোগীর শরীরে না দিয়ে নার্স অথবা অন্য কেউ চুরি করে বাইরে বিক্রী করে দিয়েছে। যাকে ধরি সেই ই বলে ডিউটিতে সে ছিলো না। মাথায় রক্ত চড়ে গেলো। হন্যে হয়ে প্রফেসরের খোঁজে পাগলের মতো ছুটলাম। স্যার আছেন ছুটিতে। কোন কন্টাক্ট নাম্বার দেয়া সম্ভব নয়। অনেক ক্লিনিকে তিনি বসেন সেখান থেকে পারলে সংগ্রহ করুন। আফসোস। মনটায় অদৃশ্য অশুভ এক ডাক শুনতে পেলাম। পারলাম না বাঁচাতে মা !!

কেউ কেউ রেডিও আবেদন এবং শিফট করার পরামর্শ দিলেন। অভ্যর্থনা টেবিলে অনুরোধটা করতেই প্রফেসর স্যার এর লিখিত অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয় বলে শাসিয়ে দিলেন বদরাগী নার্স ডাক্তাররা। ইচ্ছে করছিলো মেয়েটাকে নিয়ে পালিয়ে আসি। অক্সিজেন টিউব আর মুখ দিয়ে ফুসফুস পর্যন্ত পাইপ ঢুকিয়ে রাখা মানুষকে নিয়ে পালানো সম্ভব নয় বুঝলাম। এবার ডবল ডবল এন্টিবায়োটিক পুনরায় কিনতে যেয়ে সব বেড়িয়ে গেলো হাতে যা ছিলো। চোখের সামনে পুশ করালাম ঠিকই; বাকিটা আবার রয়ে গেলো ঔষধ চোর দলের আওতায়। আইসিইউ থেকে সিসিইউ। নিবিড় পর্যবেক্ষণ থেকে অতি নিবিড়ে প্রবেশ। গভীর জল।

ঘরের বাচ্চাদের রোজ দুইবেলা স্কুলে আনা নেয়ার জন্য নিজের মোটর বাইকটা বিক্রয় করে দিলাম। হাতে এখন টাকা আছে। মনটা বেশ প্রফুল্ল। টাকার সমস্যা আর রইলো না। ফেসবুকে দুই তিনজন বন্ধু জানালেন : নিজে এবং তাঁদের পরিচিত বন্ধুদের সাথে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা স্বেচ্ছায় আলোচনা করেছেন। পরশু তরশু কিছু সাহায়্য পাঠাবেন। আমি স্পষ্ট এবং লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছি : আমার তো আর টাকা লাগবে না। আমার কাছে এখন আছে। তারপরও পরামর্শ দিলেন বাচ্চাটার জন্য না হোক; পরিবারটির জন্যেও তো লাগতে পারে। স্মিত হাসির ইমো ব্যবহার করে সমর্থন দিয়ে বলেছি … এটা তো ভুলে গিয়েছিলাম। মন্দ বলেন নি। আচ্ছা ঠিক আছে। আজ সেই পরশু তরশু পেরিয়েছে। আমার কোন দুঃখবোধ নেই। সবারই নিজস্ব কাজ আছে এবং থাকে। সকাল সন্ধ্যার যান্ত্রিক জীবনে ইচ্ছে থাকলেও সম্ভব হয় না। যেমনটি তাঁদের সম্ভব হয়নি।

গত রাত থেকেই কেমন জানি অস্থির লাগছে। আজ ৭ তারিখ একটু সকালেই বেড়িয়ে সোজা হাসপাতাল। মেয়েটা গভীর ঘুমে। এক হাতে রক্ত পুশের সিরিঞ্জ অন্য হাতে স্যালাইন। প্যাথিডিনের প্রভাবে অচেতন দেহ। ফোঁটা ফোঁটা রক্তের সাথে বুক ভতি পুঁজ মিশে যাচ্ছে শরীরে। আমি বুঝে গেলাম এখন আর সরে যাওয়া যাবে না। একে নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে যখন তখন। বন্ধুকে বললাম ভ্যান ঠিক করো। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাক চোখে তাকিয়ে রইলো। মাথা নিচু করে চলে গেলো সামনে থেকে। মেয়ের মা বাড়ি গেছে সকালেই। দীর্ঘ কয়েক রাত জেগে নিজেই অসুস্থ্য। শরীর আর কত সয়। ক্লান্তির কাছে মেয়ে মায়া খানিকটা ফিকে।

দুপুর ২: ৪০। নার্স এসে বললো আপনারা কেউ আসুন। গেলাম। অচেতন মেয়েটা হাসি মুখে তাকিয়ে। সে চোখে যেন দৃষ্টি নেই। মেয়েটি চলে গেছে। চিরতরে। অবাক চোখে তাকিয়ে থাকলাম। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে মনিটরিং কেবল থেকে শুরু করে সব খুলে নিয়েছে নার্স। ডা, বললেন তাড়াতাড়ি নিয়ে যাবার ব্যবস্থা নিন। পায়ের মাটি যেন সরে গেছে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না। একটা বেড এর হাতল ধরে কোনক্রমে থাকলাম। কি হলো। সব বৃথা গেলো। কেন এমন হয় ?

এক বন্ধুকে ফোনে কাফনের কাপড় কিনে চলে আসার অনুরোধ জানিয়ে চাদরে মুড়িয়ে ভ্যানে করে গ্রামের বাড়ি পৌঁছালাম। যে কান্না আমি শুনতে পারি না। সে ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটলো মায়ের কান্না। আত্মীয় স্বজনের কান্না। ছোট ভাইটির কান্না। আমি কাঁদতে পারি না। আমার চোখে জল আসে, বুক আটকে দম বন্ধ হয়ে আসে, ফুঁপিয়ে উঠি বারবার কিন্তু চোখে জল আনতে পারি না। ঠাঁয় বসে রইলাম এক কোণে। গ্রামের মানুষ তড়িত কাজ শুরু করে দিলো। দুর্গন্ধের ভয়ে সবাই যেন মাটি চাপা দিতে চাইছে। সংক্ষিপ্ত অল্প কজন লোক নিয়ে জানাজা হলো। শেষ সময়ে এই কয়েকদিনের যন্ত্রণায় আরো ছোট হয়ে আসা রুগ্ন দেহ দুহাতে পাঁজকোলা করে সাড়ে তিন হাত মাটিতে যাতে ব্যাথা না পায় শুইয়ে দিলাম। নিয়ম ভেঙ্গে দড়ি আলগা করার সময় একপলক মেয়েটার শেষ গোসল করানো চেহারাটা শেষ একবার দেখলাম। মাথা নাড়লাম। মোমের আলোয় শেষ দেখা।

শুভ্র বসনে সে যেনো আমায় অপরাধী করে গেলো হেসে।

ডায়েরির মতো করে এই লিখাটির চার ভাগের তিন ভাগ লিখে রেখেছিলাম অপেক্ষা শিরোনামে। একটা সুসংবাদ ঠিক পাবো সেদিন প্রকাশ করবো এই আশায়। আমার কোন আশা সহজে পূরণ হয় না। বড়ই দুর্ভাগা আমি। আমি তাকে বাঁচাতে পারিনি। আমায় আপনারা ক্ষমা করবেন। তার আত্মা শান্তিতে থাক।
ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন। আমীন।

প্রাসঙ্গিক পূর্বকথন : প্লীহা অপারেশনে অর্থ সাহায্যে যারা হাত বাড়ালেন তাঁদের নাম আপডেট:: ঐচ্ছিক সাহায্য পাঠাবার আজই শেষ দিন।
বিরতি : দিয়েছি অনেক … নিয়েছো তার চেয়ে বেশী।

দিয়েছি অনেক … নিয়েছো তার চেয়ে বেশী …

ব্লগনিক : মুরুব্বী। আছি আজাদ কাশ্মীর জামান নামের অন্তরালে। যারা আমাকে একটু বেশী জানেন বিয়টি তাঁদের অধিকাংশেরই জানা। আজকের এই পোস্টটি আহামরি তেমন কিছু মানের বা গুণের নয়। আর্শীতে নিজেকে খুঁটিয়ে দেখা এবং পাশাপাশি খানিকটা মূল্যায়ণের অপকৌশল মাত্র। আজ নিকট অতীতে ফিরে যাবো। কেননা এই পোস্ট দিয়েই আমার শব্দনীড় পোস্ট সংখ্যা দাঁড়াবে দুই শতাধিক। এই পর্যন্ত মোট ১৬৫ জনের প্রিয় লেখক তালিকার ব্লগ রোলে আমি রয়েছি। শব্দনীড় এ আমার যাত্রা শুরু : ১৩-১১-২০১০ ইং।

প্রকাশিত পোস্ট : ২০০টি। খসড়া পোস্ট : ২২টি। মন্তব্য কৃত পোস্ট : ১২১৫৫টি।

শব্দনীড় পরিসংখ্যান আনুযায়ী মন্তব্য করেছি : ১৯১৯৪টি। মন্তব্য পেয়েছি : ৩৮৫ জনের এবং মন্তব্য দিয়েছি : ৬৮০ জনকে। প্রকৃতি : ব্লগার নির্বিশেষে সামাজিক।

শব্দনীড় ব্লগ ঠিক যেদিন যে মুহূর্ত থেকে আত্মপ্রকাশ করেছে সেই দিন সেইক্ষণ থেকে আমি শব্দনীড় এ আছি। ব্লগ পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে আমার শব্দনীড় যাত্রা শুরু। মাঝে একটানা অর্পিত এই দায়িত্ব পালন ছাড়া আমি আমার সামর্থ্য আনুযায়ী ব্লগ এবং ব্লগারদের সংস্পর্শে থেকেছি। কখনো কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে রাত্রির দ্বিপ্রহর পর্যন্ত। প্রত্যেকের ঘরে উঁকি মেরেছি। স্মৃতি থেকে যদি বলি : কফি হাউসের সেই আড্ডা গানটির বাণীর কথা মনে পড়ে যায়। কত জন এলো গেলো কত জনই আসবে আমিই যেন শুধু রয়ে যাই। কতো কতো মহৎপ্রাণ লিখিয়ে এলেন। আলোড়ণ তুললেন আবার ধোঁয়ায় মিশে গেলেন। পুরোনো গেলো অস্তাচল নতুনরা সে জায়গা পূরণ করে নিচ্ছেন জগতের মহান সত্যের মতোন। সবার এবং সব বেলার ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য; তেমনটাই আরোপিত বা স্থিত হয়ে এই শব্দনীড়েও। কারু জন্য কিছু থেমে থাকে না। হয়তো থমকে পড়ে কিছুক্ষণের জন্য; সব গতি ফিরে পায় জাগতিক সব অমোঘ নিয়তির মতো।

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম এটা বললে অত্যুক্তি হবে না। কেননা আজ থেকে এক বছর আগেও ব্লগারদের ছিলো সহ-ব্লগার প্রীতি। একেকটা পোস্ট মেতে উঠতো আনন্দ উচ্ছলে। যেন স্কুল জীবনের মতো বন্ধুদের কোলাহল। মন্তব্য আর প্রতি মন্তব্যে ভরে উঠতো যে কারু পোস্ট। ধীরে ধীরে ব্লগ যেন হয়ে উঠলো কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। কে কখন আসেন কখন বেড়িয়ে যান পুরোনোরাই টের পান না আর তো নবীন !! এটা ক্লেশের কথা নয়; হকিকত। পরীক্ষিত সত্য।

কথায় কথা বাড়ে। লিখতে গেলে আরো লিখতে হয়। আজ তেমনটা করতে চাই না। বলতেও আমি মানসিক ভাবে অন্তত প্রস্তুত নই। আজকের লিখার শিরোনাম : দিয়েছি অনেক নিয়েছো তার চেয়ে বেশী। আমার একটা পোস্ট ছিলো মেধাবী এক কিশোরীর প্লীহা অপারেশনে অর্থ সাহায্যে যারা হাত বাড়ালেন তাঁদের নাম আপডেট:: ঐচ্ছিক সাহায্য চাই। অনেকেরই মনে থাকবার কথা। অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন। ভুলে যাবারই কথা। পোস্টটি প্রদর্শিত হয়েছে ৪০০ বার।

শব্দনীড় এ সেই পোস্টটি ১৯শে জুন ২০১৩ইং থেকে ২৫শে জুন মধ্য রাত্রি পর্যন্ত সঞ্চালক নির্বাচিত অবস্থায় ছিলো। আমার বিশেষ এক বন্ধু ঠাট্টাচ্ছলে বলতেন ভিক্ষার পোস্ট আর কতদিন ঝুলবে !! আমি উত্তর খুঁজে পাইনি। পোস্টে ১৭ জন মন্তব্যকারী উপস্থিত হয়েছিলেন। নামে বেনামে দেখেছেন অনেকেই। পোস্টের মন্তব্য ঘরে মূল্যবান শব্দকথায় নিজের উপস্থিতি যারা দিয়েছেন শ্রদ্ধাভরে আমি তাঁদের স্মরণ করি। বৈশাখী ঝড়, মাতরিয়শকা, সুমন আহমেদ, তোফায়েল আহমদ, ডা. দাউদ, আরাফ করিম, উলুখাগড়া, চারুমান্নান, মহাকালের প্রতিচ্ছবি, আল আমিন ডলার পাঠান, মোঃ আমিনুল ইসলাম, ফেরদৌসা, আজিম হোসেন আকাশ, দামাল ছেলে, মাঈনউদ্দিন মইনুল এবং কে এম রাকিব। সবাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আমার অন্তস্থল থেকে তাঁদেরকে অনেক অনেক ভালোবাসা।

মি. মাতরিয়শকা আমাকে সেই দিনই ফোন করেছেন সুদূর রাশিয়া থেকে। এলিজা আকবর এগিয়ে এসেছেন ফেসবুকে। বৈশাখী ঝড় সরাসরি ফোন দিয়েছেন। ভিন্ন একটা ব্লগ বন্ধুব্লগ, শ্রদ্ধেয় ফেরদৌসা এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন তাদের নিজ নিজ সামর্থ আনুযায়ী এগিয়ে এসেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই একটি পোস্টে আমার পুরোনো সেই বন্ধুরা কোথায় !! কেননা একই পোস্ট ফেসবুকে সমানভাবে প্রচারিত হয়েছে। আমি ফেসবুককে গণনায় আনতে চাই না। আমি পর্যবেক্ষণ করেছি আমাদের শব্দনীড়কে। দেখেছি দুটি চোখে বন্ধুদের এসে ফিরে যাওয়া।

সম্প্রতি আমি একটি প্লাগইন্স এর মাধ্যমে দেখতে পাই শব্দনীড় এ বর্তমান এবং সেই সময় নিবন্ধিত ব্লগার অফলাইনে কতজন এবং কারা কারা ছিলেন। বলার অর্থ হচ্ছে যাদের পাশাপাশি আজ আমার ব্লগিং জীবন প্রায় পাঁচ বছর, সেই পুরাতন বন্ধুদের আমি এই শব্দনীড়েই দেখেছি অথচ সাহায্য চাই পোস্ট বলেই কি তাঁরা ব্যস্ততা বা অনীহায় পোস্টটিকে এড়িয়ে গেছেন !! আমি কষ্ট পেয়েছি। ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। বন্ধুর প্রয়োজনেই বন্ধু সাহায্য চায়। আর এই প্রয়োজনেই পাশে এসে দাঁড়ায়। আফসোসের পাশাপাশি আমি আনন্দিত আমার পাশে পুরোনো বলতে ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে যারা যারা চেনেন তাঁরা কেউ এসে দাঁড়ান নি।

ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে চাই : সবাই বন্ধু হয় না। কেউ কেউ হয়।
মনে রেখো … দিয়েছি অনেক … নিয়েছো তার চেয়ে বেশী।
নিজের ভেতর নিজেকে আড়াল করে রেখে দিলাম বন্ধু।

কেমন আছিস রেবতি …

revoti

কেমন আছিস রেবতি
এখনও কি ঘুড়ে বেড়াস ভীষণ রোদে
তামাটে করতে শরীরের রং।
ভরা জোৎস্নার রাতে
আনমনা হয়ে ভাবিস কি
সুহাসের কথা।

কী ভরাট ছিলো সময়গুলো
শরীর জুড়ে ছিলো নিটোল আনন্দ
কালো রাতের আকাশ ভরে
থাকতো চাঁদে।
এখনও কি তুই আগের মতো
হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়িস,
অভিমানে ডাগর চোখে আনিস
মুক্তো বিন্দু।

আর কতোকাল এভাবে দহন
করবি তুই। আর কতো
শোনাবি আরেকটু ধৈর্য্যশীল হও।

তুই ই তো বলেছিলি
পাথর সরালেই দেখবো প্রস্রবণ
পাথর ছুঁলে তো কেবল দেখি
সরীসৃপের মুখ !!

আমি তো জলরাশি চাই
পাথর সরিয়ে আমার তপ্ত
হৃদয়ে প্রবাহিত হোক সুস্বাদু ঝর্ণাধারা।

কেমন আছিস রেবতি
সুহাসের হাতটা মুঠোয় চেপে
বলতে কি ইচ্ছে করে না
ভালবাসি, ভীষণ ভালবাসি তোমাকে।

revoti1

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।
অনুগ্রহ করে রেটিং চর্চা অব্যহত রাখুন। ধন্যবাদ।

স্পর্শ প্রহর

আমার এক হাতে সবুজ পতাকা
অন্য হাতে কালো;
সবুজ আনন্দ আর যৌবনের প্রতীক,
কালো শোকের।

যেদিন তুমি আমার হাতে হাত রাখলে
সবুজ বৃক্ষরাজির বিনয়ে, ভরে উঠেছিলো প্রকৃতি
রাতের আকাশে ছিলো নধর চাঁদ
আমার বুকের ভেতরেও
ছিলো বর্ণচ্ছটা।

ঝাউবন অবিরাম ঢেউ তুলে
দিয়েছিলো সুখের বারতা।
আজ উজার হয়েছে ঝাউবন খসে গেছে চাঁদ
জলেরা মেঘ হয়ে ঢেকেছে আকাশ
আমার হাতে কালোপতাকা
নিদ্রাহীন স্বপ্নহীন জেগে থাকা অবিরাম।

মৃত্যুর অল্প আগে
কার কথা মনে পড়ে বেশী
লুকোতে ইচ্ছে হয় কি
দুর্ভেদ্য কোন আবাসে !!

মনে পড়ে কি শৈশবে
জ্যোৎস্না মাখানো যমুনার
তীর ঘেঁষে হেঁটে বেড়ানো
আর চোখে চোখ রাখার কথা;

মনে কি হয়
এই ভারগ্রস্ত অর্থহীন জীবনের
হিসেব নিকেশ শেষ হলেই ভাল !!
নাকি নিমিষেই নেমে আসে অন্ধকার চোখ জুড়ে
মস্তিস্কের কোষগুলো ভেঙ্গে খান খান হয়
ভাবনাগুলো এলামেলো অর্থহীন হয়ে
মিলায় অনন্তে …

কুয়াশায় ভেজা উত্তুরে
বাতাস আমায় আচ্ছ্ন্ন করে
একা আমি শূন্যে ভাসতে থাকি
চরাচর নিঃশব্দে ভাসতে থাকি।

স্পর্শ আবৃত্ত হীম দরোজা খোলা আমার
কালের প্রহর যে ফুরোয় না …

প্লীহা অপারেশনে অর্থ সাহায্যে যারা হাত বাড়ালেন তাঁদের নাম আপডেট :: ঐচ্ছিক সাহায্য পাঠাবার আজই শেষ দিন

220px-Gray1188 প্লীহা। উদরের বাম ভাগের উপর দিকে অবস্থিত একটি অঙ্গ। এটি লসিকাতন্ত্রের এবং রক্ত সংবহন তন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বিভিন্ন মনুষ্যেতর প্রাণীর রক্তের আয়তন প্লীহার সঙ্কোচন দ্বারা সাময়িক ভাবে বর্ধিত হতে পারে (অর্থাৎ রক্তের “রিজার্ভার” হিসাবে কাজ করে, কিন্তু এই কাজটি মানুষের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নয়)। প্লীহার মধ্যে অনাক্রম্যতন্ত্রের একটি বড় অংশ থাকে। অস্ত্রোপচারে প্লীহা বাদ দিলে ক্যাপ্সুলধারী ব্যাক্টেরিয়াদের দ্বারা ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা বাড়ে।

প্লীহার অবস্থান নবম দশম ও একাদশ পাঁজরের ঝুলন্ত (স্টার্নামের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়) অংশের পিছনে মধ্যচ্ছদার ঠিক নিচেই। এর উত্তল বহিরাংশ মদ্ধচ্ছদাকে স্পর্শ করে থাকে (ছবি এই তলটির উলটো দিক থেকে তোলা)। এর ভিতরের অবতল তলগুলির সামনের অংশটি পাকস্থলীকে স্পর্শ করে, আর পিছনের অংশ বাম বৃক্ককে স্পর্শ করে।

কথ্য বাংলায় প্লীহাকে পিলে বলা হয়, ইংরাজীতে স্প্লিন। কিছু কিছু রোগে প্লীহা বড় হয়। প্রাচীন বাংলায় ম্যালেরিয়া ছিল তাদের অন্যতম (বঙ্গদেশে ম্যালেরিয়া এত বেশি ছিল যে একে ম্যালেরিয়া “হাইপার-এন্ডেমিক” অঞ্চল বলা হত। ম্যালেরিয়াকে কথ্য বাংলায় পিলের জ্বর বলা হত এবং বাংলার শিশুদের পীলে সারা বছর বার বার ম্যালেরিয়ার ফলে স্ফীত ও কালো হয়ে থাকত বলে এই ঘটনাকে ইংরাজীতে হাইপারস্প্লেনিজম বলা হয়। তবে কালাজ্বর, থ্যালাসেমিয়া, ক্রনিক মায়োলয়েড লিউকেমিয়া ইত্যাদি নানা রোগে প্লীহা বৃদ্ধি হতে পারে।

250px-Illu_spleen বর্ধিত না হলে প্লীহা পাঁজরের পিছনেই গুপ্ত থাকে তাই পেটের নরম অংশ টিপলে সরাসরি ছোঁয়া যায়না। সাধারণতঃ দীর্ঘ অক্ষ দশম পাঁজরের সমান্তরাল থাকে এবং বুক ভরে শ্বাস নিলে দশম পাঁজরের শীর্ষের কাছে হাত রাখলে অভিজ্ঞ ডাক্তাররা প্লীহার একটু অংশ স্পর্শ করতে পারেন। প্লীহা কোনো রোগের কারণে খুব বড় হয়ে গেলে পেটের মধ্যে অনেকটা নিচ অবধি চলে আসে। তখন পেটে সামান্য চোট থেকেও প্লীহা ছিঁড়ে যেতে পারে। প্লীহা ছিঁড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপোচার করে প্লীহাকে বাদ না দিলে পেটের মধ্যে খুব বেশি রক্তপাত হয়ে মৃত্যও ঘটে।

thallasemia_3930 থ্যালাসেমিয়া (ইংরেজি: Thalassemia) একটি বংশগত রক্তের রোগ। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। অ্যানিমিয়ার ফলে অবসাদগ্রস্ততা থেকে শুরু করে অঙ্গহানি ঘটতে পারে। থ্যালাসেমিয়া দুইটি প্রধান ধরনের হতে পারে: আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বেটা থ্যালাসেমিয়া। সাধারণভাবে আলফা থ্যালাসেমিয়া বেটা থ্যালাসেমিয়া থেকে কম তীব্র। আলফা থ্যালাসেমিয়াবিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগের উপসর্গ মৃদু বা মাঝারি প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে বেটা থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা বা প্রকোপ অনেক বেশি; এক-দুই বছরের শিশুর ক্ষেত্রে ঠিকমত চিকিৎসা না করলে এটি শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ww

আমার ছোট বেলার বন্ধু। এক সাথে হেসে খেলে বড় হয়েছি। স্কুল জীবন শেষে দুজনার দুটি পথ। দীর্ঘদিন শেষে দেখা হলে জানলাম বিয়ে থা করেছে। নিম্ন মধ্যবিত্তের বলতে যাদের বোঝায় তাদেরই একজন সে। বড় একটি মেয়ে ছোট এক ছেলে আর স্ত্রী নিয়ে সংসার। চলে মোটামুটি। আয় রোজগার তেমন হয়তো নেই তবে গ্রাম জীবনে চলে যায়।

তারই একমাত্র মেয়ে। ছোট বেলায় বোঝা না গেলেও বয়সের সাথে সাথে ধরা পড়ে প্লীহা/থ্যালাসেমিয়া। মাত্র আড়াই বছরে বাবা মার নজরে পড়ে ছোট্ট শিশুর শারিরীক পরিবর্তন। বাবা মেয়ের রক্তের গ্রুপ A+ হবার সুবাদে সেই থেকে শুরু স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রতি দুই মাসে এক ব্যাগ করে রক্ত বিনিময়ের পালা।

স্কুল জীবন শেষ হলে বন্ধুর সাথে আমার দেখা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে ফিরে আবার যোগাযোগ। স্কুল পড়ুয়া মেধাবী মেয়েকে দেখলাম। প্রায় সাত বছর বয়সী। বাসায় এসে জেনে নিলো আমারও রক্তের গ্রুপ A+ কিনা। হ্যাঁ সূচক সংবাদে খুশি হয়ে চলে গেলো। তেমন কিছু জানালো না। হঠাৎ একদিন ডাক পড়লো ক্লিনিকে। জিজ্ঞাসা করলো রক্ত দিতে পারবি ? অবাক হয়ে বললাম পারবো না কেনো ?

সেই থেকে শুরু। দেখতাম প্রতি দুই মাসে মেয়েটার গায়ের রং হলুদ হয়ে যায়। চোখ মুখ ফুলে মুখমণ্ডল আর চোখ সমান হয়ে উঠতো। নিরীহ নিভৃতচারী বন্ধু মিনতির সুরে একটি কথাই বলতো … আত্মীয়-স্বজন রক্ত দিতে ভয় পায়। নিজে সহ তোর মতো ২/১ জন বন্ধুর কাছে রক্তের জন্য পায়ে ধরি।

এভাবে নিয়মিত রক্ত দেয়া শুরু। প্রতি দুই মাসে একবার করে রক্ত দেই। দীর্ঘ ৬ বছরে মেয়ের বয়স দাঁড়িয়েছে ১৩ বছরে। বন্ধু হয়েছে ডায়াবেটিক রুগী। সাধ্য থাকলেও নিজের মেয়েকে রক্ত দেবার সামর্থ্য হারিয়েছে। একবার রক্ত কিনে একবার আমার থেকে নিয়ে এভাবেই চলছে। মেয়ে বড় হওয়ায় দৈহিক পরিবর্তন আসায় শরীরের রক্ত চাহিদা বেড়েছে। এখন আর ২ মাসের মেয়াদে চলে না। মিলিত পরামর্শে দাঁড়ালো যত দ্রুত সম্ভব মেয়েকে অপারেশন করো উচিত।

যোগাযোগে জানা গেলো বেসরকারী হাসপাতালে এই রোগের অপারেশন ব্যয় প্রায় দুই লক্ষ টাকা। লতাপাতায় ডা. বন্ধুদের খোঁজ শুরু হলো। সরকারী হাসপাতালে এই অপারেশনে ব্যয় জানা গেলো ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।

আজকাল কারু কাছে সাহায্য চাইতে গেলে বন্ধু পরিচিতরা একটু বাঁকা চোখে দেখে। কেমন যেন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। ব্যস্ততার ভান করে। ফোন ধরে না। অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা আমি সহ আমার বন্ধু এবং বন্ধুদের কয়েকজন প্রায় গুছিয়ে এনেছি। এখনো অর্ধেকের মতো বাকি। ছোট হয়ে অর্থ সাহায্য চাইতে পারবো।

সরকারী হাসপাতালে ভরসার চাইতে অবহেলা বেশী বলে বেসরকারিতে ই সম্মত হয়েছি। দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ। উদাত্ত আহবান রাখছি আমার ব্লগ বন্ধুদের কাছে – আসুন না বিবাহ উপযোগ্যা একটি মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে আমরা সকলে কিছু কিছু করে অর্থ সাহায্য করি। আমার ঘরেও মেয়ে সন্তান আছে। আমি বুঝি। কতটা অপারগ হলে আড়াই বছরের একটি শিশু সন্তানকে ১৩ বছর পর্যন্ত শরীরে রোগ পুষে পালন করে গেছে একটি মানুষ; শুধুই অর্থের অভাবে। কাউকে জানতে দেয় নি … অপারেশন করার মতো এতো টাকা সে কখনই জোগাড় করতে পারবে না।

ব্লগে সাহায্য আহবান করছি বলে আপডেট জানতে পারবেনা জন্য বিশেষ এই মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছে। প্রাপ্তি স্বীকারে তার পক্ষ থেকে যাতে কৃতজ্ঞতার দুটো শব্দ সাহায্যকারীদের আমি যেন জানাতে পারি।

logo-english002

বিকাশ # 01743 918 919

দেশের বাইরে থেকে … money express.

Azad Kashmir Zaman.

Mobile # 01743 918 919

ID : 102 202 019 8369
ww

২৫.০৬.২০১৩ ইং তারিখের মধ্যে আপনার সাহায্য পাঠিয়ে দিতে পারেন।

বিকাশ এর মাধ্যমে ন্যূনতম অংক থেকে যে কোন অ্যামাউন্ট পাঠানো যায়। কেউ পাঠালে নিজের পরিচিতি দিয়ে একটা ম্যাসেজ পাঠাবেন। এবং এই পোস্টে উল্লেখ করবেন যাতে সাহায্যকারীদের নাম আপডেট আকারে এই পোস্টে উল্লেখ করা যায়। ধন্যবাদ সবাইকে। বিনীত : আজাদ কাশ্মীর জামান।

images26dder

অর্থসাহায্য প্রাপ্তিস্বীকার : hm1

red ০১. মি. মাতরিয়শকা। টাকা ৪,০০০/- মাত্র।
red ০২. মিলি মেহরীন। টাকা ১,৫০০/- মাত্র। ( ফেসবুক এ অপেক্ষমান বন্ধু )
red ০৩. এলিজা আকবর। টাকা ১০০/- মাত্র। ( ছোট বোন )
red ০৪. বৈশাখী ঝড়। টাকা ২০০/- মাত্র।
red ০৫. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ১,০০০/- মাত্র। ( ফেসবুক বন্ধু ) f.
red ০৬. বন্ধুব্লগ। টাকা ১,৫০০/- মাত্র।
red ০৭. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ৫,০০০/- মাত্র। t
red ০৮. ফেরদৌসা। টাকা ১,০০০/- মাত্র।
red ০৯. মো: আসাদুজ্জামান। টাকা ২,০৬০/- মাত্র। ( ফেসবুক বন্ধু )
red ১০. মিসেস মো: আসাদুজ্জামান। টাকা ১,০০০/- মাত্র। ( বন্ধুপত্নী )
red ১১. আছির আহমেদ। টাকা ১,০০০/- মাত্র। ( ফেসবুক বন্ধু )
red ১২. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ১,০২০/- মাত্র। r
red ১৩. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ৭,০৯০/- মাত্র। am a
red ১৪. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ২০,০০০/- মাত্র। প্রবাসী।
red ১৫. নাজমুন নাহার। টাকা ১,০০০/- মাত্র।
red ১৬. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ৫,০০০/- মাত্র। t
red ১৭. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ১,০০০/- মাত্র। d
red ১৮. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ৬০০/- মাত্র। nh

দুস্থ পরিবারটির জন্য সাহায্যের হাত বাড়ালেন :

red ১৯. রাবেয়া রব্বানি। টাকা ৩,০০০/- মাত্র।
red ২০. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ২,০০০/- মাত্র। st

আমি এই দুস্থ পরিবারটির পাশে আছি। জমি সম্বল থেকে বাড়ি ঘর তারা বিক্রয় করে ফেলেছে। জীবন চলছে তাদের ভাসমান। আমার সংসার খরচের অংশ থেকে প্রতি মাসে তাদের কিছু কিছু করে সাহায্য করে যাচ্ছি। তাদের ফ্যামিলি আমাকে যেমন সন্তান হারানোর জন্য দোষারোপ করে ; ঠিক তেমনি প্রতি মাসে সাহায্যের অংশ ফ্যামিলির সঞ্চিত অর্থ থেকে অর্থ বেড়িয়ে যাওয়ায় আমার পরিবারও খুশি নয়। আমি কাউকে বোঝাতে পাচ্ছি না এই অপরাধ আমার।

আমাদের কয়েকজনের সাথে আমি আলাপ করেছি। ফেসবুকে বার্তা পাঠিয়েছি। বিশেষ করে এর আগেও মেয়েটার অপারেশনের সময় আপনারা যারা সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন তাঁদেরকে বিষয়টি জানিয়েছি। মোটামুটি সিদ্ধান্তে আমরা একটা সিএনজি অটো রিক্সা ক্রয় করে ক্ষতি গ্রস্থ এই সন্তান হারা অসহায় ফ্যামিলির পাশে দাঁড়াতে পারি। যাতে তারা ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়। দেখে স্বচ্ছলতার মুখ। সহযোগিতার দ্বিতীয়ার্ধে যারা এলেন জানাই বিনম্র সম্মান।

red ০১. সাঈদ মোহাম্মদ ভাই। টাকা ৫,০০০/- মাত্র।
red ০২. ওয়াচডগ। টাকা ১৫,৩৫৬/- মাত্র।
red ০৩. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ম্যাসাচুসেটস্ থেকে। টাকা ৬,৮৭৮/- মাত্র। r.n
red ০৪. রীতু। আমেরিকা থেকে। টাকা ১৫,২৮৫/- মাত্র।
red ০৫. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। লন্ডন থেকে। টাকা ২০,০০০/- মাত্র। a. m
red ০৬. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। টাকা ৩,০০০/- মাত্র। r.r.m
red ০৭. নুসরাত আহমেদ। সোফিয়া বুলগেরিয়া। টাকা ৪০,০০০/- মাত্র।
red ০৮. পলি শাহিনা। নিউ ইয়র্ক। টাকা ১৫,০০১/- মাত্র।
red ০৯. শিরিন শবনম বিভা। নিউইয়র্ক। টাকা ৫,০০০/- মাত্র।
red ১০. ফেরদৌসি বেগম। টেক্সাস। টাকা ১,৫৪০/- মাত্র।
red ১১. প্রকৌশলী খাইরুল আলম। খুলনা। টাকা ২০,০০০/- মাত্র।
red ১২. নুরুল ইসলাম। ঢাকা। টাকা ১০,০০০/- মাত্র।
red ১৩. প্রফেসর সোহেল আহমেদ। ঢাকা। টাকা ৪৪,৫০০/- মাত্র।
red ১৪. আজাদ কাশ্মীর জামান। টাকা ২,০০,০০০/- মাত্র।
red ১৫. গোলাম মোস্তফা সংগ্রাম। লন্ডন থেকে। টাকা ৩০,০০০/- মাত্র।

সকলের সহযোগিতায় একটি থ্রি হুইলার ক্রয় করে হযরত শাহ সুলতান বলখি (রাঃ) মাজার জিয়ারত করে দুস্থ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভবপর হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি এবং আমার বন্ধুর পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের সবার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ রইলাম। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

জনগণের শক্তির উত্থান চাই দেশের সুসম উন্নয়ন দেখতে চাই

adজনগণের শক্তির সত্যিকারের উত্থান চাই, দেশের সুসম উন্নয়ন দেখতে চাই।
আমি কেউ নই। আমি এই স্বাধীন দেশের একজন মামুলি নাগরিক মাত্র। আমার রঙ নীল, গোলাপি বা সাদা নয়। আমার রঙ তামাটে গৌড় বর্ণ। আমার মন এদেশের মৃদুমন্দ বাতাসে যেমন দোলে, তেমন ঝড়ের বেগে তাণ্ডবে মাত্তেও অপেক্ষা করে না। গেঁয়ো ভুত, জানিনা সম্মান দিতে, যার সম্মান প্রাপ্য নয়। আবার গেঁয়ো বলেই ভাষা ব্যবহারে সচেতন হতে কখনো কখনো ব্যর্থ !

১৯৭১ সাল ডিসেম্বর ১৬, বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন দেশের নাম যুক্ত হল। দীর্ঘ ৯ মাস স্বাধীকার আন্দোলন করে বাঙ্গালী জাতির এক অংশ স্বাধীন হল। কিন্তু যে আশা নিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে নেমেছিল লক্ষকোটি তরুণ, সাথে ছিল তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান নামক প্রদেশের প্রায় সকল নাগরিক; সাধারণ লোকেদের অস্ত্র চালানোর সাহসেই কিনা, কি যেন হল তারা আবার গর্জে উঠল। মাত্র ৩ বৎসর পর স্বাধীনতার মুল নায়কের প্রায় গোটা পরিবার এক অভ্যুত্থানে মৃত্যুবরণ করলে, বিখ্যাত আওয়ামীলীগ পরিবারের কিছু নেতা সরকার গঠন করলেও পিছনে থাকল দেশের সেনাবাহিনী। এরপর স্বাধীনতার যুদ্ধের মাঠে দ্বিতীয় পুরুষ হিসাবে আলোচিত, যিনি কিনা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বাঙ্গালীর মনে স্থান করেছিলেন যুদ্ধকালীন সময়েই; সেই জিয়াউর রহমানের কাছে একসময় ক্ষমতা চলে এলো। সেনাশাসন থেকে জণগনের শাসনে দেশ রুপান্তরিত হল ১৯৭৯ সালের এক সংসদ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু জাতিকে আবার সেনাশাসনের নিগূঢ় জালে আবদ্ধ হতে হয় ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ।

এরশাদ সাহেব পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এলেন। এরপরের আলোচ্য নিয়েই আমার আজকের প্রতিপাদ্য। দেশ স্বাধীনের ১০ বৎসরের বেশী অতিক্রান্ত হয়েছে ইতিমধ্যে। দেশের বাস্তবতায় কিছু দালাল স্বার্থপর শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছে। যারা ক্ষমতাকে সামনে রেখে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। তাদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যবে সেই গ্রাম্য পরকীয়ার কাহিনীর মত। “দেখে যখন ফেলেছিস তুইও লাগা !” মানে আমার চুরি যখন ধরেই ফেলেছিস তো, তুইও চুরি কর। অথবা আমি যখন রাজনীতি করতে এলাম তুইও আয়।

সেনাশাসকদের সাথে গোপন আতাত করে কত বড়মাপের নেতা যে ডিগবাজি দিলেন বা খেলেন তার ইয়ত্তা নাই। কোরবান আলি, শাহ মোয়াজ্জেম, মিঃ মওদুদ আহমেদ, হুদা সাহেব, জাফর সাহেব, অধ্যাপক মতিন সাহেব … কে নাই! আছেন আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিক, হটাৎ গজানো রাজনীতিক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মচারী, উকিল, শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, শ্রমিকনেতা, কবি-সাহিত্যিক, গায়ক-শিল্পী, কে নাই ! সবাই নিজের আখের গোছাতে ‘রাষ্ট্রের উন্নয়নের মুলো’ জনগণের ঘাড়ের উপর ঝুলিয়ে দিয়ে, এরশাদ সাহেবকে সাহায্য করলেন। দীর্ঘ ৯ বৎসর কখনো সেনাশাসন, কখনো জনগণের পাঁচমিশালি গণতন্ত্র দিয়ে পার হল এই সময়। আর এই সময়ের মুল দর্শন হল ‘নিজে চুরি কর, ধরা খাইলে কিছুটা দান কর’।

মিথ্যার ছড়াছড়ি, চরিত্রহীনতার এক অলিখিত উৎসবে দেশ মেতে উঠল। বামপন্থিদের আন্দোলন হয়ে পড়ল চাঁদার উপর নির্ভরশীল। বিষয়ভিত্তিক এবং চাঁদা প্রাপ্তির উপর তার প্রবলতা এবং আয়ুষ্কাল নির্ধারিত হত। ফলে জনগণের ভিতর যে প্রতিবাদ করার সাহস, যা বরাবর বামদের নিকট থেকে সুচিত হত; তাও বিলীন হয়ে গেলো। এক কথায় রাজনীতি হয়ে গেলো চাটুকারিতার আর স্বার্থপরদের আখড়া। এরশাদ জনগণের এই চারিত্রিক অধঃপতনে ঘি ঢেলে গেলেন ক্রমান্বয়ে। নিজের দালালদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে উনি রাষ্ট্রের রূপরেখার কিছুটা বিকৃতভাবে চালু করলেন। যেমন ১৯ জেলা ভেঙ্গে ৬৪ জেলা করলেন। কেউ এর প্রতিবাদ করলেন না। কারণ নিজেদের নেতা হওয়া সহজ হবে ভেবে। হলোও তাই!

কিন্তু আমাদের স্বাধীন দেশের পরিপত্রে কি এইরকম কিছু ছিল? প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরন করার কথা ছিল। কিভাবে ছিল? জেলাগুলোকে ভেঙ্গে টুকরো করার কোন কথা বা পরিকল্পনা ছিল কি ? না ছিল না। যা ছিল তা হল, থানা এমন কি ইউনিয়নকে শক্তিশালি করার প্রস্তাবনা। ৪ স্তর শাসন ব্যবস্থা চালু করার কথা। ইউনিয়ন – থানা- জেলা-কেন্দ্র।

কিন্তু জেলাকে ভেঙ্গে এমন এক অবস্থা করা হল যে, থানাকে আর আলাদা করে কোন অবস্থান দেখানো যায় না; বা উলটো দিকে দেখলে জেলার স্বাধীন অস্তিত্ব হয়ে পড়ল দুর্বল। এমন জেলাও বর্তমানে আছে, যা আগে আসলে একটি থানা ছিল। তখন যদি ৩ স্তর বিশিষ্ট শাসন ব্যবস্থা করা হত ‘ ইউনিয়ন – জেলা – কেন্দ্র’; এতে কিছুটা হয়ত বাস্তব ভিত্তিক হতে পারত। কিন্তু এরশাদ সাহেব এর তখন ‘তৈলমর্দন’, পছন্দের এক নং তালিকায়। উনি নতুন মুখের বাণী আর নতুন হাতের তৈল মর্দন চান। সাথে উনার আশৈশব নারীর প্রতি দুর্বলতাতো আছেই। উনি চালু করলেন থানা গুলোকে উপজেলা নাম দিয়ে উপজেলা সরকার পদ্ধতি। “প্যাঁচের উপর প্যাঁচ। জিলাপি ই হয় না, বানালেন আমিত্তি”।

নির্বাচিত উপজেলা নেত্রীত্ব বানালেন। নেতা হল কিন্তু ক্ষমতা কই? ক্ষমতা রইল কেন্দ্রেই। ছোট্ট এই দেশে নেতার ছড়াছড়ি। এত নেতা, আর এত মত যে! কেউ কাউরে মানেনা, শুধুই বিতর্ক আর বিতর্ক। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশের ২০ বৎসরের মধ্যে রাষ্ট্রের কাঠামো এত জগাখিচুড়ি বানিয়ে দিয়ে গেলেন যে, এখন যারা দেশ চালাতে আসছেন; তারা দেশের কোন কাম করতে পারেন না। কোন্দল মিটাতেই ব্যস্ত। একটা টেন্ডার হলে তার নিষ্পত্তি করতে পারা যায় না… কে কাজ করবে। লাভের লাভ নেতা, পাতিনেতা, উপনেতা, সহনেতা, সহ উপনেতা, উপ উপনেতা কত বাহারি নেতার দেশে পরিনত হল এই দেশ !

অবশেষে সবকিছুর একটা শেষ আছে। এরশাদ সাহেবকে গদি থেকে নামালেন এদেশের কিছু তরুণ ছাত্রনেতা একজোট হয়ে। ডাকসু এর কিছু তরুণ নেতা এই কাজকে পরিণতি দিল। সাথে ছিল জনগণের সাবলীল সমর্থন। দেশে একটি গণতন্ত্রের বাতাসের প্রবাহ দেখা গেলো। সংবিধানকে সংশোধন করে জাতির পিতার শেষকৃত কর্মকে দুই পায়ে দলে রাষ্ট্রপতি থেকে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হল। যদিও এই শাসন ব্যবস্থা দিয়েই রাষ্ট্র তার শুরু করেছিল। কিন্তু বাকশাল করতে গিয়ে সেই ব্যবস্থা পালটে দেয়া হয়েছিল। দেয়া হয়েছিল স্বাধীন রাষ্ট্রের ১ম সংবিধানকেও। কিন্তু ৩য় বিশ্বের একটি দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত না সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা ভালো ফল দিবে তার উপর কোন গবেষণা চলল না। হুজুগে বাঙ্গালীর নেতারাও হুজুগে হবে, এতে আর আশ্চর্যের কি আছে? দেশে গণতন্ত্রের ২য় পর্যায় শুরু হলো জনগণের গণজাগরণ তথা অভ্যুত্থানের মাঝে দিয়ে।

সংবিধানে একটি পরিবর্তন এলো। সাময়িক শাসন ব্যবস্থায় একটি সুন্দর নির্বাচন হল। জনগণের রায় সুন্দর ভাবে প্রতিষ্ঠিত হল। কিন্তু তাবেদার এক শক্তি যারা নিয়ন্ত্রণ করে পত্রিকা, শিল্প মাধ্যম তাদের প্রচারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত হল। ফলে নাখোশ হল একটি গ্রুপ, সাথে তাদের পিছনের চালিকাবৃন্দ। কিন্তু শাহাবুদ্দিনের সাময়িক সরকারের সাফল্য জনগণের মাঝে একটি ধারণাকে স্পষ্ট করে দিল যে, তত্ত্বাবধায়ক বা সাময়িক শাসন ব্যবস্থার মাঝে একটি নির্বাচন করলে, জনগণের মত সঠিক ভাবে প্রতিফলিত হয়। বরাবরের মত তৎকালীন বিএনপি সরকার জনগণের এই মনোভাব বুঝতে দেরি করল। একটি আন্দোলন আবার গড়ে উঠল। এইবারের আন্দোলনে সহিংস রুপ দিলো আওয়ামীলীগের জোট আর জামাতে ইসলামী দলের লোকেরা। গণঅভ্যুত্থানে ফেরত পাওয়া গণতন্ত্রে দেশের লোক ১৭৩ দিন হরতাল দেখল। সরকারকে বাধ্য করল তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুকে জায়েজ করে, এক নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠায়। একটি ক্ষণ্ডকালীন সংসদে তত্ত্বাবধায়ক বিল পাশ করা হল ১৯৯৬ সালে। সেই বিলে সাময়িক নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে ১ নং পছন্দ দেয়া হল মাত্র অবসরে যাওয়া বিচারপতিকে। আর এই বিষয়টি মাথায় নেয়া হল সম্ভবত বিচারপতি সাহাবুদ্দিন এর নিরপেক্ষতাকে সামনে রেখে। নইলে বিচারকদের এমন পদে দেওয়ার দুঃসাহস কারই করার কথা নয়। এরপর ঐ ক্ষনকালীন সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে দেশে আবার জাতীয় নির্বাচন দেয়া হল। ৩ টি নির্বাচন এই ভাবেই হল। জনগণ কিছুটা বিভ্রান্তিতে পরলেও সানন্দেই মেনে নিয়েছিল এই পদ্ধতি। কারন আমাদের মত বিপুল সংখ্যক নেতাদের দেশে এবং তাদের উত্থাপিত হাজারো মত পার্থক্যের এই দেশে, নির্বাচনকালীন শাসন ব্যবস্থা নিয়ে একটি যথাযোগ্য সমাধান জনগন পেয়েছিল; এবং জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতাও ছিল। কোন আইন তখনই সুন্দর বলে বিবেচিত হয়, যখন আইনের গ্রহণযোগ্যতা জনসম্মুখে প্রস্ফুটিত হয়ে ধরা দেয়। সেই বিচারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই আইনটি বিশ্বে বিরল হলেও প্রতিষ্ঠিত একটি ভালো আইন বলেই বিবেচিত ছিল।

২০০৬ সালে আবারো সেই গুষ্টির(১৯৯১ সালের পরাজিত শক্তি) ক্ষমতা যাওয়ার পথ নিরঙ্কুশ করতে তৎপর হল দেশী বিদেশি এজেন্টগণ। তারা জনগণের ভোটকে মুল্য না দিয়ে, মুল্য দিলেন সরকার ব্যবস্থা কে। আবার তারাই জনগন সকল ক্ষমতার উৎস বলে চিৎকার দিয়ে দেশ মাতিয়ে বেড়াতে থাকলেন! ফলে সরকারের ক্ষমতা ছাড়ার দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রে আবারো রক্তপাত ঘটল। এরপর সেনাবাহিনীকে সামনে নিয়ে এক বীভৎস জগাখিচুড়ি মার্কা শাসন জনগন পেল। নামহীন এক সরকার অনেক জোড়া তালি দিয়ে দেশ শাসন করল ২ বৎসর। হয়ত আরও দীর্ঘ হতে পারত। কিন্তু একটি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে যে জনরোষ ঢাকাসহ সারাদেশে শুরু হয়েছিল, তাতে সেনাবাহিনীর সমর্থনে দেশ চালানোর সাহস আর দেখায়নি সেই সরকার। তাদের বীভৎস জগাখিচুড়ি মার্কা শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, তা করে একটি নির্বাচন দিলেন। জনগন একটি সরকার পেল। অনেক ক্ষমতাধর সরকার!!

এই সরকার ক্ষমতায় এসেই কিছু পথ নিজেদের করে নিলেন। প্রথমেই বিচার বিভাগকে নিজেদের তাবেদার করে ফেললেন। যা গত ৩৮ বৎসরে কেউ করেনি। দেশের সকল স্বাধীন বিভাগ গুলোতে নিজেদের তাবেদার লোক বসিয়ে একটি এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে, দেশ চালানোর জন্য যে ন্যূনতম স্বাধীন মত প্রয়োজন, তাও বিলীন করে দিয়েছে। বিচার বিভাগ, পি এস সি, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, আইন কমিশন সহ এমন কোন বিভাগ নেই, যাদের নিজেদের কোন স্বাধীনসত্তা জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট। এমন কি টিআইবি নামক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাতেও নিজেদের লোক বসিয়ে এক হাস্যকর অবস্থা তৈরি করেছে; কি দেশে, কি বিদেশের মানুষদের কাছে। এই সকল তাবেদার লোকদের নিজেদের কোন মত নাই। তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া মতই তাদের মত বলে গোঁজামিল দিয়ে চালান। আর নির্বাহী ব্যবস্থায় এমন করেছেন যে, কারো যদি মামার শালার নানাও অন্য দল করে তার পদোন্নতি বা পদায়ন সব বাদ। হয় ওএসডি নয় বাধ্যতামূলক অবসর। আর নতুন চাকুরিতে ঢোকার সময় পুলিশ ভেরিফিকেশন বলে যে গোপন তদন্ত হত, সেখানে ব্যক্তির আত্মীয় সজন যদি সরকারি দলের সাথে জড়িত না থাকেন; তার চাকুরি হয় না। সেনাবাহিনীও এর ব্যতিক্রম নয় ! ফলে জনগণের কাছে আজ বাকস্বাধীনতার সামান্যতম লেশমাত্র অবশিষ্ট নাই।

জনগন দেখছে স্বৈরাচারিতার নগ্ন শাসন, নির্বাচিত সরকারের দ্বারা।এই সরকারের আরও একটি মারাত্বক জন বিরোধী কাজ হল, মন্দের ভালো বলে জনগণের কাছে সানন্দে গৃহীত নির্বাচনকালীন শাসন ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করা। জনগন ভিতরে ভিতরে খুব কষ্টে থাকলেও, রাষ্ট্রের সকল অঙ্গে সুবিন্যস্তভাবে সাজানো তাবেদারকুল সরকারকে আসল অবস্থান তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে। জনরোষ তাই ভিতরে ভিতরে ফুঁসছে, সুযোগের অপেক্ষায়। হেফাজতের মত আধারাজনৈতিক জাগরণে এর লক্ষন দেখা গেছে খুব স্পষ্ট। হেফাজতের জমায়েতকে তাড়িয়ে দিয়ে যদি তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা হয়, তাহলে সেইটা হবে মারাত্বক ভুল। হেফাজতের কর্মকাণ্ডকে যদি কোন সিগন্যাল হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে সরকার ঠিক পথে চলবে বলেই আমার বিশ্বাস !

কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? এর পরিত্রাণ কি? আসলেও এর থেকে জনগণের মুক্তি কি আসবে? এর উত্তর দেয়া খুব সহজ নয়। কিন্তু সব কিছুর একটা শেষ আছে। আমাদের শুরু করতে হবে আবারো প্রথম থেকে বা একেবারে গোরার নিকট থেকে। যেমন উপজেলা গুলোকে বন্ধ করে দিয়ে ইউনিয়নকে রাষ্ট্রের পেরিফেরি ইউনিট করতে হবে। ইউনিয়ন- উপজেলা-জেলা-কেন্দ্র এর মাঝে সমন্বয় করতে হবে। নেতাদেরও গ্রেড করে দিতে হবে। ইউনিয়ন নেতারা কমপক্ষে ৫-১০ বৎসর ইউনিয়নে সেবা দিলেই কেবল উপজেলা লেভেলে নেতা হতে পারবে। প্রতিটি ধাপ উৎরাইতে এমন করে ৫-১০ বৎসর এর একটা সীমা দিয়ে দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি নেতাদেরও গ্রেড পদ্ধতিতে আনতে হবে। এমন কি সরকারি বরাদ্দও এই গ্রেড পদ্ধতিতে ফেলে দেশের উন্নয়নকে সমন্বয় করার দিন এসেছে। যেমন একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারেঃ

• ৫ লাখ টাকার একটি জন উন্নয়ন মুলক কাজ হয়েছে কোন ইউনিয়ন লেভেলে। সেই কাজ করে উদ্বোধন করবেন সেই এলাকার চেয়ারম্যান। সাথে তার এলাকার অন্য প্রতিনিধি থাকবেন। উপরের অন্য কেউ সেখানে গিয়ে সেখানে বা তার পক্ষে কেউ গিয়ে মাতবরি করতে পারবে না। করলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত করতে হবে।
• ৫০ লাখ টাকার কাজ উপজেলা লেভেলে হলে সেখানের উদ্বোধন করবে উপজেলা প্রতিনিধিরা। উপরের অন্য কেউ সেখানে গিয়ে সেখানে বা তার পক্ষে কেউ গিয়ে মাতবরি করতে পারবে না। করলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত করতে হবে।
• ৫ কোটি টাকার কাজ জেলা লেভেলে হলে তার সকল দায়িত্ব থাকবে জেলা নেত্রীত্বের। উপরের অন্য কেউ সেখানে গিয়ে সেখানে বা তার পক্ষে কেউ গিয়ে মাতবরি করতে পারবে না। করলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত করতে হবে।
• ৫০ কোটি টাকার কোন কাজ দেশের যেকোন এলাকায় হলে, তা সমন্বয় করবে একজন সংসদ। উপরের অন্য কেউ সেখানে গিয়ে সেখানে বা তার পক্ষে কেউ গিয়ে মাতবরি করতে পারবে না। করলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত করতে হবে।
• জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ৫০ কোটি বা তার উপরের অংকের অর্থে চালিত কাজ উদ্বোধন করবেন সেই বিষয়ের মন্ত্রী বা অন্য যেকোন মাপের মন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদের সভার অনুমতি নিয়ে।
• কোন নির্বাহী কর্মকর্তা এই সকল উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করতে পারবেন না। তারা সকল কাজে তদারকি করতে পারবেন, সাহায্য করতে পারবেন।
• ফলে নেতাদের সম্মান রক্ষিত হবে। নিচের লেভেলে দলীয় পরিচয়ে কেউ ভোট করবে না। তবে ভোটে জেতার পর কেউ যদি কোন দলে যোগ দেয়, পরেরবার আর ঐ নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু যেখানে দলীয় নির্বাচন করা যায় সেখানে প্রতিযোগিতা করতে কোন বাঁধা থাকবে না।
• অরাজনৈতিক নির্বাচন কোন লেভেল পর্যন্ত হবে তা সংসদে আলোচনায় ঠিক করে নেয়া যাবে। আমার মনে হয় শুধু মাত্র ইউনিয়ন লেভেল এই অরাজনৈতিক নির্বাচন করা যায়। উপজেলা লেভেলে নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে করা যেতে পারে। ইউনিয়ন লেভেলের কোন নেতা যদি রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন, সেক্ষেত্রে সে উপজেলা লেভেল ছাড়া নির্বাচন করতে পারবে না।
• ভোট যেহেতু গোপন ব্যালটে হবে, তাই প্রান্তিক জনগন সরাসরি রাজনীতি না করেও সমর্থন দিতে পারবে। প্রান্তিক উন্নয়ন কাজকে ত্বরান্বিত করতে পারলে, দেশের সুসম বণ্টন নিশ্চিত করা সহজ হবে।
• রাজনীতির বর্তমান ধারাকে লাগাম টেনে ধরতেই হবে। এক নেতার সব খাওয়া সব করার চলমান এই বিধান, দ্রুত সমূলে উৎপাটন করে ফেলতেই হবে। এই কাজে আমরা যত দেরি করব, সকল ক্ষেত্রে সুসম উন্নয়নে দেশকে ততই পিছিয়ে দিবো।
• বর্তমান ধারায় অপকর্মে আমরা দ্রুত অনেক উন্নতি করেছি। সকল দলেই এর অবস্থান উপরের দিকে। কেউ কারো চেয়ে কম নয়,বরং প্রতিযোগিতায় সবাই একধাপ উপরে।

কিন্তু এদেশের জনগন স্বাধীনতার ৪৩ বৎসর পর এসে, আর এই চলমান অবস্থানকে সমর্থন দিতে চাচ্ছে না। গ্রাম-শহর ঘুরে ফিরে আমার অভিজ্ঞতায় বলে, মানুষ পরিবর্তন চায় এবং প্রাথমিক ধাপ ইতি মধ্যেই শুরু হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস। স্বাধীনতার ৫০ বৎসর সামনে। অনেকদিন আমরা হেলায় পার করে ফেলেছি। এভাবে আর চলতে দেয়া যায়না। চলা যায়ও না। তাই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমাদের কে সাহসের সাথে জাতিকে দিক নির্দেশনা দিতে হবে। ১৯৯০ থেকে ২০১৩ এই ২৩ বৎসরে দেশ এগিয়েছে যে হারে, দুর্নীতি, চালাকি, বাটপাড়ি, লুচ্চামি এই সকল বিষয়ও বেড়েছে সমান তালে। রাজনীতি এই সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ দিয়েছে। বাঙ্গালী জাতির দুর্ভাগ্য এখানেই। পথ যারা দেখায়, তারাই অন্ধকারের সুড়ঙ্গে নিক্ষেপ করে নির্দ্বিধায় ! তাই আগামী নির্বাচনে –

• যে দল আমাদের এই সকল সুড়ঙ্গ পথ বন্ধ করার অঙ্গীকার করবে।
• রাজনীতির কালো থাবা থেকে জনগণকে সহজ সরল পথ করে দিবার অঙ্গীকার করবে।
• একটু ভালমন্দ সুন্দর নির্মোহভাবে দিন গুজরানের আলোকবর্তিকা সামনে তুলে ধরবে।
• সৎ চরিত্রবান পরবর্তী উত্তরসূরিদের জীবন গড়তে সাহায্য করবে।

জনগন তাদেরকেই দেশ শাসনের দায়িত্ব দিবে। বাঙ্গালী জাতি হিসাবে আসলেই খুব অল্পতেই তুষ্ট। এই পরীক্ষা তারা বারবার দিয়েছে, আরও একবার না হয় দিবে। কিন্তু তাবেদার-চাটুকার পরিবেষ্টিত বর্তমান ধারাকে আর সহ্য করা যাবে না, করা উচিত হবেনা। এর দ্বারা শুধু ৩য় শক্তি উত্থানের যারা স্বপ্ন দেখেন, তাদেরকে বলছি আসলে এই পথ সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ এই সকল সামান্য শর্ত মেনে নিয়ে দেশ শাসনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। তার জন্য ১ম-২য়–৩য় শক্তি কোন বাঁধা নয়।

জনগণের শক্তির সত্যিকারের উত্থান চাই। দেশের সুসম উন্নয়ন দেখতে চাই।

সূত্র : অন্তর্জাল। মূল লিখাটি এখানে। শেয়ারিং অর্থ আমি ব্লগিং বুঝি।
রাজনীতিতে আমার ধারণা কম। প্রশ্ন এলে আমি বিব্রত হই; অজ্ঞতায় লজ্জা পাই।

asdtyuiiiiioppa

আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস …

আজ ১৪ জুন। বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।

যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এ দিবসের উদ্দেশ্য।

১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ দিবস পালনে তাগিদ দিয়ে আসছে।

প্রতিবছর ৮ কোটি ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান হয়, অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া এখনো বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের রক্তের চাহিদা হলে নির্ভর করতে হয় নিজের পরিবারের সদস্য বা নিজের বন্ধুদের রক্তদানের ওপর, আর অনেক দেশে পেশাদারি রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে রক্ত দান করে আসছে রোগীদের। অথচ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম।

কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার (১৮৬৮-১৯৪৩) : অষ্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহনকারী এই বিজ্ঞানী ‍যিনি প্রধান রক্তের গ্রুপগুলো (A, B, O) আবিষ্কার করেছিলেন। আজ ১৪ই জুন তারও জন্মদিন। ১৯০১ সালে তিনি তার এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি করেন এবং প্রথম বারের মত প্রমান করেন একই গ্রুপের রক্ত পরিসঞ্চালন করলে কোন ক্ষতি হয়না। এর পরই ‍তার দুই সহযোগী আলফ্রেড ভন ডেকাষ্টেলো আর আদ্রিয়ানো স্ট্রুলি AB গ্রুপটি শনাক্ত করেন।

রুবেন ওটেনবার্গ ( ১৮৮২ -১৯৫৯) : রক্ত পরিসঞ্চালনের অনেক দীর্ঘ ইতিহাসের ক্রান্তিকালীন মুহুর্তটি আসে ১৯০৭ সালে। যখন প্রথমবারের মতো কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার এর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে রক্তের গ্রুপ মিলিয়ে প্রথম রক্ত পরিসঞ্চালন করেন নিউ ইয়র্কের ‍মাউন্ট সাইনাই হসপিটালের আরেক অসাধারন ডাক্তার এবং বিজ্ঞানী রুবেন ওটেনবার্গ।

ফিলিপ লেভিন (১৯০০-১৯৮৭) : ১৯৪১ সালে রকফেলার মেডিকেল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ফিলিপ লেভিন আবিষ্কার করেন Rh অ্যান্টিজেন। যা থাকলে কোন রক্তের গ্রুপকে আমরা বলি পজিটিভ আর না থাকলে বলি নেগেটিভ। আজ বিশ্বরক্তদাতা দিবসে এই ৩ জনকে স্মরণ করছি, যাদের অবদান জীবন বাঁচিয়েছে অসংখ্য মানুষের।

স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে, এসব অজানা বীরের উদ্দেশে, উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের বিশ্ব রক্তদান দিবস। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। এদিন জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টিনারের। এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ ‘এ, বি, ও’।

আসুন জীবন সংহারী রোগ থেকে আর্ত মানুষকে বাঁচাতে নিজে রক্ত দিই। অন্যকে রক্ত দানে উৎসাহিত করি। রক্ত দিন! বাঁচান একটি প্রাণ! এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে শুধু একটি নয় ক্ষেত্র বিশেষে চারটি প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। কেননা এক ব্যাগ রক্তকে এর উপাদান হিসেবে চারটি ভাগে ভাগ করে চারজনের দেহে সঞ্চালন করা সম্ভব। উপাদান গুলো হলোঃ Red Blood Cells, Platelets, Plasma and Cryoprecipitate । এক একজনের জন্য এক একটি উপাদান প্রয়োজন হয়। তাই আপনার এক ব্যাগ রক্ত বাঁচাতে পারে চারটি প্রাণ।

রক্ত দিন! বাঁচান একটি প্রাণ!

জীবনের জন্য প্রয়োজন রক্তের । রক্তের সংকট সাধারণত যারা ভোগেন তারা আমাদেরই স্বজন, ভাই বোন। অপারেশন ছাড়াও বিভিন্ন কারণে শরীরে রক্তের ঘাটতি হতে পারে। এসময় প্রয়োজন বিশুদ্ধ রক্ত। একসময় বেশিরভাগ রক্তই আসতো পেশাদার রক্ত বিক্রেতা ও আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে। আর পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের অধিকাংশই সিফিলিস, ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস-বি বা এইডসে আক্রান্ত। ফলে এই দূষিত রক্ত পরিসঞ্চালিত হয়ে রক্তগ্রহীতা আক্রান্ত হন দুরারোগ্য ব্যাধিতে।

প্রয়োজন সচেতন মানুষের স্বেচ্ছা রক্তদান :

প্রয়োজনের সময়ে রক্ত পাওয়া এবং দূষিত রক্তের অভিশাপ থেকে মুমূর্ষু মানুষকে রক্ষা করার জন্যেই প্রয়োজন নিরাপদ ও সুস্থ রক্তের। এর জন্য প্রয়োজন সচেতন তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসা। কারণ স্বেচ্ছা রক্তদানের মাধ্যমে যেকোনো সুস্থ মানুষ নিজের কেনো ক্ষতি না করেই একজন মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচাতে পারে।
আমাদের দেশে বছরে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। এ রক্তের অভাবে অনেকক্ষেত্রে মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা শুরু করা যায় না। কিডনী জটিলতায় আক্রান্ত রোগীর ডায়ালিসিস করার পরও রক্তের অভাবে দুশ্চিন্তায় ভোগেন ভুক্তভোগী রোগীর পরিবার। অসহনীয় শারিরীক যন্ত্রণা সহ্য করে অপেক্ষা করতে থাকেন এক ব্যাগ রক্তের জন্য। যখনই খবর পান রক্ত পাওয়া গেছে তখন প্রাণ ভরে তার জন্য দোয়া করেন। স্বেচ্ছা রক্তদাতারা হলেন মানুষের জীবন বাঁচানোর আন্দোলনের দূত। ভালো কাজে মানুষ সবসময় অন্যকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়। বন্ধু রক্ত দিচ্ছে দেখে তার আরো বন্ধুও রক্ত দিতে উদ্বুদ্ধ হয়। রক্তদান একটি মানবিক দায়বদ্ধতা, সামাজিক অঙ্গীকার। যিনি যে পেশায়ই থাকুন না কেন, সমাজের জন্যে তার কিছু না কিছু করার আছে। এক ব্যাগ রক্তদানের মাধ্যমেও তিনি পালন করতে পারেন তার সামাজিক অঙ্গীকার।

রক্তদানের উপকারিতা-

মানসিক তৃপ্তি : একবার অন্তত ভাবুন, আপনার রক্তে বেঁচে উঠছে একটি অসহায় শিশু, একজন মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ। সে মুহূর্তে আপনার যে মানসিক তৃপ্তি তাকে কখনোই অন্য কোনোকিছুর সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব নয়।

শারীরিক দিক থেকে : রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত উপকারী। রক্তদান করার সাথে সাথে আমাদের শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্যে উদ্দীপ্ত হয়। দান করার ২ সপ্তাহের মধ্যেই নতুন রক্ত কণিকা জন্ম হয়ে এই ঘাটতি পূরণ করে। আর প্রাকৃতিক নিয়মেই যেহেতু প্রতি ৪ মাস পর পর আমাদের শরীরের রেড সেল বদলায়, তাই বছরে ৩ বার রক্ত দিলে শরীরের লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা আরো বেড়ে যায়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের আলোকে : ইংল্যান্ডে মেডিকেল পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নিয়মিত স্বেচ্ছা রক্তদাতারা দুরারোগ্য রোগ-ব্যাধি থেকে প্রায়ই মুক্ত থাকেন। রক্তদাতার হৃদরোগ ও হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকিও অনেক কম।

ধর্মীয় দৃষ্টিতে : রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকেও অত্যন্ত পুণ্য বা সওয়াবের কাজ। এটি এমন একটি দান যার তাৎপর্য সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা মায়েদার ৩২নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা সমগ্র মানবজাতির জীবন রক্ষা করার মতো মহান কাজ।’ ঋগ্‌বেদে বলা হয়েছে ‘নিঃশর্ত দানের জন্যে রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশীর্বাদধন্য দীর্ঘজীবন ও অমরত্ব।’ আসলে সব ধর্মেই রক্তদানকে উৎসাহিত করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি বড় ইবাদত। আনুসঙ্গিক তথ্য কৃতজ্ঞতায় : ডা. দাউদ।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

যদি কথা বল …

azadkzaman_1263012937_1-mthumb.php

তুমি যদি কথা বল, অরণ্য উৎকীর্ণ হয়ে থাকে
তারার তিমির-জ্বলা ডাক দেয় শাখা-প্রশাখাকে।

তুমি যদি কথা বল, সমুদ্রসৈকতে বালিয়াড়ি
আগ্রহে চঞ্চল হয়, যদি সুর ভেসে আসে তার-ই।

তুমি যদি গান গাও, সে-গানে বিহঙ্গ পাখা নাড়ে,
তোমার কাকলি শুনে শীতার্ত বৃক্ষেরা পাতা ছাড়ে।

তুমি যদি চোখ মেল, দৃষ্টিপাতে আকাশ জঙ্গম
নয়ন ভোলানো তুমি, ক্রন্দসীর হৃদয়ে বিভ্রম।

তুমি যদি বৃষ্টি দাও, অঝোরে শষ্যেরা স্নান করে
জলদবাহন তুমি, তোমার স্নেহেতে দিন ফেরে।

তুমি যদি কথা বল, তোমার কথার আশাবরী
সাহানা, ভৈরোঁর সুরে, দোল খায় দিবস-শর্বরী।

বিষন্ন মলিন দিনে তোমার উজ্জল উপস্থিতি
সংকল্পে সুদৃঢ় করে প্রতিজ্ঞার অব্যর্থ প্রস্তুতি।

dfff
কৃষ্ণ ধর স্মরণে।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

নীল নীল জ্যোৎস্নায়

d133b70876452aa51972b2e5ab8bff59

সেদিন দু’জনে জ্যোৎস্না দেখতে গিয়েছিলাম
মেঠোপথ ছাড়িয়ে যেখানে উদাস
বন শুরু হয়েছে সেখানে।
রূপোলি থালার মতো চাঁদ উঠলো
মনে পড়লো কি ভীষণ
রোম্যান্টিক ছিলো ছেলেবেলা;
এরকম জ্যোৎস্নায় ছুটোছুটি করে
কেটেছে খেলার ক্ষণ গুলো।

বনের ভেতরই মাথা উঁচু করে
দাঁড়ালো শৈশবের গ্রাম
পাশে বয়ে যাওয়া পদ্মা।
বনের প্রান্ত থেকে যেন একদল
হরিণী নেমে এলো-
সেই হরিণীদের একজন শৈশবের সঙ্গিনী।
বন তখন মাতাল জ্যোৎস্নায়
বুঁদ হয়ে আছে
মনে পড়লো ওর কোমল স্নিগ্ধ
স্পর্শ নেয়ার কথা।

শৈশব কৈশোর আর যৌবন
পিঠাপিঠি তিন সময়
কি দুর্দান্ত, এই ভরা জ্যোৎস্নার মতো
প্লাবিত করে সমস্ত কিছু।

আমি জানি আমার বলা হবেনা কিছুই।

আমি জানি কখনো হবার নয়,
তারপরেও যদি কখনো কোনো চাঁদনী রাতে আমার কথা মনে পড়ে-
তাহলে ওই খোলা আকাশের দিকে চেয়ে দেখো;
দেখবে তোমার মাথার উপর ছোট তারা হয়ে জ্বলজ্বল করে জ্বলছি।

কিম্বা কোন এক শীতের সকালে যদি আমার কথা মনে পড়ে-
তাহলে তোমার পদতলের ওই দূর্বা ঘাসের দিকে চেয়ে দেখো;
দেখবে দূর্বা ঘাসের আগায় শিশির বিন্দু হয়ে ভাসছি।

আজকের কথা কোনদিনই আর মনে থাকবে না তোমার,
তবু তুলতুলে ওই দুটি হাতের ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে
তোমার জন্য কেনা তোমার জীবনের প্রথম ডায়েরির
প্রথম পাতায় লিখে দিয়ে গেলাম আমার অভিব্যক্তি।
যদি আর কখনো সময় না পাই

কথা গুলোন আমার পাঁচ বছরের একমাত্র ছেলে
অপূর্ব আজাদ পার্থক্য‘র উদ্দেশে লিখা।

সবাই চলে যাবে
আবার সবাই একদিন ফিরেও আসবে।
এই নীল জ্যোৎস্নায়

d133

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

শুভ জন্মদিন … আনন্দময়ী

birthday_casd

আমার উনপঞ্চাশটি দুঃখ

আমার একটা দুঃখ নেই। সত্যি বলতে কি সেই অর্থে একটা দুঃখও আমার নেই। লোকে জিজ্ঞাসা করে সুখ কি? আর আমি বলি, দুঃখ তুমি কি? লোকে বলে সুখ সবচাইতে বড়। আমি বলি দুঃখের সাথে তার পাল্লা হয়না ভারী। যখন অনেক দুঃখ ছিল জীবনে, আমি সুখকে খুঁজে বেড়াতাম নিয়ত। তখনকার সেই অভিমানী দুঃখগুলোকে আমি ‘যাহ’ বলে গাল দিয়েছি কত। অথচ দুঃখ; এখন আমি তোমাদের ডাকি ‘এসো’। কিন্তু দুঃখরা আর আসে না। দুঃখরা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। যাবার সময় বলে গেছে, তুমি আর ডেকো না। তোমাকে আমরা অজস্র হাসিখুশী সুখ বর দিয়ে গেলাম।
birthday_124-2-1
anndomoyeeeblog

136953475440524 এখন আমার কাছে অনেক সুখ, সুখের সাগর আমার। দুই পাহাড়ের মাঝখানে বহমান নদীর মত চকচকে সোনালী-রূপালী সুখ। আমার ব্যাগ ভর্তি রঙিন মাছের মত সুখ। রান্নাঘরের তাকে, গারদে রাখা শাড়ির ভাঁজে, বসবার ঘরের টেবিলে রাখা পোর্সেলিনের দামি জারে, গোটা স্টোর রূমেও তাদের ঠাসাঠাসি। একটু কষ্ট করে যদি শোবার ঘরের লাগোয়া বাথরুমে উঁকি দাও, দেখবে কমোডের ভেতরেও সুখ। পেয়ালা উপচে পড়া সোনালী তরলের মত বেসামাল মূর্খ সুখ সর্বত্র। সুখ যদি ইথারের মত কোন কাল্পনিক তরল হতো তাহলে আমি এক্ষুনি, এক্ষুনি তার অস্বিত্ত্ব প্রমান করে দিতাম নোবেল কমিটির সামনে। সহজ এই সুখের সমীকরণ।

394870_556754317687660_292152450_n আমি আর তোমাকে বলবো না অপেক্ষা মানেই অভিমান। ঘড়ির কাঁটা দশ ঘর পেরিয়ে কাত হয়ে গেলে প্রতি রাতে স্থির আঙ্গুল টলোমলো চোখে এঁকেবেঁকে দাগ কাটে শ্লেটে। তুমি যে বল প্রেম তবে গেলো কই? আমি বলি, এই দেখো আমার পেছনে, ভয়ে ভয়ে উঁকি দিয়ে দেখছে কেবল তোমাকে। আর বলবো না কাউকে; ‘অপেক্ষা মানেই অভিমান”। একাকী হ্রদের ধারে, আমাদের সব দেনা মিটিয়ে বেঁচে যাওয়া তোমার ধোঁয়াটে চাঁদ বিনিময় হবে আমার বিষাদের সাথে। এমনি নিছক কিছু কথা ছিল তোমার কাজ ফিরতি পথে । এখন গাঢ় আঁধারের কালি লেপটে আছে আকাশে জলের শরীর কেটে পিছলে বেরিয়ে গেছে প্রেম। চিহ্ন কোথাও রাখেনি, রাখেনি শব্দও তার পায়ের শুধু নির্ঘুম তারাদল, ‘কে ছিল পলাতক’ জেনেছে । পলাতক জানলো না কেবল; ‘অপেক্ষা মানেই অভিমান’। প্রিয় ব্লগার আনন্দময়ী। আজ তাঁর শুভ জন্মদিন।

happybirthdayblueflash
raa

birthday cake ity
special cake
happ866
zia6
zia8
zia9zia9zia9zia9zia9zia9zia9zia9zia9
101010101010101010101010101010

জীবনের কর্মে এবং সাফল্যে থাকুন বেঁচে। আমাদের সকলের শুভেচ্ছা ভালোবাসা সর্বোপরি শুভকামনা সব সময়ে থাকবে আপনার জন্য। শুভ ব্লগিং।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম … জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি …

nazrul কাজী নজরুল ইসলাম।
বাংলাদেশের জাতীয় কবি। কালপুরুষ এই মহান প্রাণ একাধারে কবি সঙ্গীতজ্ঞ দার্শনিক সাহিত্যিক দেশপ্রেমী সাংবাদিক রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক। যিনি আজীবন মানুষের অত্যাচার এবং দাসত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন প্রতিবাদ করেছেন।

ইংরেজী ১৯২১ সাল। তখন দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। নজরুল কুমিল্লা থেকে কিছুদিনের জন্য দৌলতপুরে আলী আকবর খানের বাড়িতে থেকে আবার কুমিল্লা ফিরে যান ১৯ জুনে। এখানে যতদিন ছিলেন ততদিনে তিনি পরিণত হন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মীতে। তাঁর মূল কাজ ছিল শোভাযাত্রা ও সভায় যোগ দিয়ে গান গাওয়া। তখনকার সময়ে তার রচিত ও সুরারোপিত গানগুলোর মধ্যে রয়েছে “এ কোন পাগল পথিক ছুটে এলো বন্দিনী মার আঙ্গিনায়, আজি রক্ত-নিশি ভোরে/ একি এ শুনি ওরে/ মুক্তি-কোলাহল বন্দী-শৃঙ্খলে” প্রভৃতি। এখানে ১৭ দিন থেকে তিনি স্থান পরিবর্তন করেছিলেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে আবার কুমিল্লায় ফিরে যান। ২১ নভেম্বর ছিল সমগ্র ভারতব্যাপী হরতাল। এ উপলক্ষে নজরুল আবার পথে নেমে আসেন; অসহযোগ মিছিলের সাথে শহর প্রদক্ষিণ করেন আর গান করেন, “ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও! ফিরে চাও ওগো পুরবাসী”। নজরুলের এ সময়কার কবিতা, গান ও প্রবন্ধের মধ্যে বিদ্রোহের ভাব প্রকাশিত হয়েছে। এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বিদ্রোহী নামক কবিতাটি। বিদ্রোহী কবিতাটি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় এবং সারা ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতি লাভ করে। নজরুল নিজেকে বর্ণনা করেন –

আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ জ্বালা, চির লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,
চিত চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর !

আমি গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল করে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালবাসা তার কাকন চুড়ির কন-কন।

মহা- বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।

আমি চির বিদ্রোহী বীর –
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির !

১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ই আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করে। এটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। ১৯২০-এর দশকে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এর পরপর স্বরাজ গঠনে যে সশস্ত্র বিপ্লববাদের আবির্ভাব ঘটে তাতে ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল। এই পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে কবিগুরু শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন –

কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু।
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।

পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে এই বাণী লিখা থাকতো। পত্রিকার ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২২ সংখ্যায় নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে প্রকাশিত হয়। এই রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ৮ নভেম্বর পত্রিকার উক্ত সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একই দিনে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দী হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দী প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে এই জবানবন্দী দিয়েছিলেন। তার এই জবানবন্দী বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দীর জবানবন্দী নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে। এই জবানবন্দীতে নজরুল বলেছেন:

আমার উপর অভিযোগ, আমি রাজ বিদ্রোহী। তাই আমি আজ রাজকারাগারে বন্দি এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত। … আমি কবি, আমি অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত। কবির কণ্ঠে ভগবান সাড়া দেন, আমার বাণী সত্যের প্রকাশিকা ভগবানের বাণী। সে বাণী রাজবিচারে রাজদ্রোহী হতে পারে, কিন্তু ন্যায় বিচারে সে বাণী ন্যায়দ্রোহী নয়, সত্যাদ্রোহী নয়। সত্যের প্রকাশ নিরুদ্ধ হবে না। আমার হাতের ধূমকেতু এবার ভগবানের হাতের অগ্নি-মশাল হয়ে অন্যায় অত্যাচার দগ্ধ করবে …।

১৬ জানুয়ারি বিচারের পর নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। নজরুলকে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে যখন বন্দী জীবন কাটাচ্ছিলেন তখন (১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি ২২) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। এতে নজরুল বিশেষ উল্লসিত হন। এই আনন্দে জেলে বসে আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে রচনা করেন।

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে

আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে–
মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে।

আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে –
বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার – ভাঙা কল্লোলে।
আসল হাসি, আসল কাঁদন
মুক্তি এলো, আসল বাঁধন,
মুখ ফুটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে।
ঐ রিক্ত বুকের দুখ আসে –
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আসল উদাস, শ্বসল হুতাশ
সৃষ্টি-ছাড়া বুক-ফাটা শ্বাস,
ফুললো সাগর দুললো আকাশ ছুটলো বাতাস,
গগন ফেটে চক্র ছোটে, পিণাক-পাণির শূল আসে!
ঐ ধূমকেতু আর উল্কাতে
চায় সৃষ্টিটাকে উল্টাতে,

আজ তাই দেখি আর বক্ষে আমার লক্ষ বাগের ফুল হাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
আজ হাসল আগুন, শ্বসল ফাগুন,
মদন মারে খুন-মাখা তূণ
পলাশ অশোক শিমুল ঘায়েল
ফাগ লাগে ঐ দিক-বাসে
গো দিগ বালিকার পীতবাসে;

আজ রঙ্গন এলো রক্তপ্রাণের অঙ্গনে মোর চারপাশে
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!
আজ কপট কোপের তূণ ধরি,
ঐ আসল যত সুন্দরী,
কারুর পায়ে বুক ডলা খুন, কেউ বা আগুন,
কেউ মানিনী চোখের জলে বুক ভাসে!
তাদের প্রাণের ‘বুক-ফাটে-তাও-মুখ-ফোটে-না’ বাণীর বীণা মোর পাশে
ঐ তাদের কথা শোনাই তাদের
আমার চোখে জল আসে
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!

আজ আসল ঊষা, সন্ধ্যা, দুপুর,
আসল নিকট, আসল সুদূর
আসল বাধা-বন্ধ-হারা ছন্দ-মাতন
পাগলা-গাজন-উচ্ছ্বাসে!
ঐ আসল আশিন শিউলি শিথিল
হাসল শিশির দুবঘাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আজ জাগল সাগর, হাসল মরু
কাঁপল ভূধর, কানন তরু
বিশ্ব-ডুবান আসল তুফান, উছলে উজান
ভৈরবীদের গান ভাসে,
মোর ডাইনে শিশু সদ্যোজাত জরায়-মরা বামপাশে।

মন ছুটছে গো আজ বল্গাহারা অশ্ব যেন পাগলা সে।
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!!


কাজী নজরুল ইসলাম।
জন্ম : ২৪শে মে ১৮৯৯ ইং। ১১ই জৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ।
মৃত্যু : ২৯শে আগস্ট ১৯৭৬ ইং। ১২ই ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ। তথ্যসূত্র : অন্তর্জাল।
বিদ্রোহী কবি’র শুভ জন্মদিনে শব্দনীড় পরিবারের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

391550_3983n

অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা

ভারতের হিমাচল প্রদেশকে বলা হয় দেবভূমি। উত্তর প্রদেশ হিমাচলের রাজধানী- সিমলা। পশ্চিম হিমালয়ের পার্বত্য রাজ্য যার নাম হল হিমাচল প্রদেশ। হিমাচল প্রদেশে প্রচুর দেখবার মতো সুন্দর জায়গা আছে যেমন- সিমলা, রামপুর, শাংলা, কল্পা, সারহানা, মান্ডি, কুলু, মানালী, নাকো, টাবো, ডালহৌসি, রেকিং পিও, কাজা, রোটাং পাশ এবং মণিকরন। এপ্রিল থেকে জুন এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের সময়ে এখানকার আবহাওয়া বেশ ভালো থাকে। শীতকালে অনেকগুলি জায়গাতে তুষারপাত হয়।

সমভূমি থেকে ২১০০- ২৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলা। এখানে বৃটিশ যুগের নানা স্থাপত্যের নির্দশন দেখা যায়। এখানকার ম্যাল- পর্যটকদের কাছে একটি বিশেষ আকর্ষন। দেখবার মতো কয়েকটি জায়গা হলো– চাডউইক জলপ্রপাত, যা প্রায় ৭০ মিটার দীর্ঘ- দুরত্ব সিমলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার। সঙ্কট মোচন মন্দির (সিমলা থেকে ৭ কিলোমিটার), ইনস্টিটিউট অব এডভান্স স্টাডিজ (সিমলা থেকে ৪ কিলোমিটার), স্টেট মিউজিয়াম, গেইটি থিয়েটার (সিমলা থেকে ৩ কিলোমিটার), নলদেরা (সিমলা থেকে ২৩ কিলোমিটার), তত্তাপানি (সিমলা থেকে ৫৩ কিলোমিটার), সসস্ক্যান্ডাল পয়েন্ট (এখান থেকে ভাইসয়রের কন্যা অপহৃত হয়েছিলেন) ইত্যাদি। সিমলার উচ্চতম জাকু হিলস, জাকু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হনুমান মন্দির, চাডউইক ফলস, প্রসপেক্টস হিলস, কামনা দেবীর মন্দির, তারা দেবীর মন্দির ( সিমলা থেকে ১১ কিলোমিটার )।

সিমলা অর্থ পাহাড়। মূলতঃ সমুদ্রতল থেকে সাত হাজার ফিটেরও বেশী উচ্চতায় অবস্থিত জাকুহিল, প্রসপেক্টস হিল, অবজারভেটরি হিল, ইলিশিয়াম হিল আর সামার হিলের চূড়ায় গড়ে ওঠা জনপদ নিয়ে সিমলা।

জীবনের কতো চেনা ঘটনাই না আবার ফিরে আসে, হাল ফ্যাশনের চক্‌চকে মোড়কে। সত্য হলো ফ্যাশনের ধর্মই তাই। সাইক্লিক অর্ডার মেনে চলে। কক্ষপথ তার ৩৬০ ডিগ্রি। হাই হিল আর বেলবটমের মত। অমাবস্যা পূর্ণিমার মত। সময় নিলেও ঘটে প্রকৃতির নিয়মে। ব্যত্যয় নেই। জোয়ার ভাটা যেমন।

ভালই হলো। অমাবস্যা পূর্ণিমা প্রসংগ সহসা এসেই যখন গেল, সনাতন মহাভারতের কাহিনী থেকে পড়া একটা লেখার উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছিনা। বিষয়টা ইন্টারেস্টিং।

এখানকার হুসেন ভ্যালি থেকে সিমলার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী খুব একটা দূরে নয়। এরপরই “তারা মন্দির”। পাহাড়ের ওপর স্থাপিত ছোট ছিমছাম মন্দির। কথিত আছে যে, চন্দ্র রাজসুয় যজ্ঞ শেষে কামার্ত হয়ে পড়েন এবং দেবতা বৃহস্পতির স্ত্রী তারা দেবীকে হরণ করেন। এতে চন্দ্রের বিরূদ্ধে ক্ষুব্ধ বৃহস্পতি যুদ্ধের আয়োজন করতে থাকে। দেবতা ব্রহ্মা যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করে চন্দ্র ও তারা দেবীকে বৃহস্পতির কাছে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য করে। কিন্তু সন্তানসম্ভাবা থাকাতে বৃহস্পতি তাকে নিতে অস্বীকার করে। ব্রহ্মা তারার কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে, চন্দ্রই এ সন্তানের পিতা। তখন সিদ্ধান্ত দেয় যে, তারা সন্তান প্রসবান্তে বৃহস্পতির কাছে ফিরে যাবে। তারা সন্তান প্রসব করলে চন্দ্র তাকে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং বুধ নাম দিয়ে আকাশে নিজের বিপরীত দিকে স্থাপন করে। হ্মুব্ধ বৃহস্পতি তারাকে ফিরিয়ে নিলেও চন্দ্রকে অভিশাপ দেয়। ফলে চন্দ্র ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষয় হতে হতে বিলুপ্ত হয়ে যায়। চন্দ্র পরে অত্রি মুনির সহায়তায় ধীরে ধীরে নিজ গোলাকার দেহ পুনরায় প্রাপ্ত হয়। তবে বৃহস্পতির কোপ বর্তমান থাকাতে সে প্রতিমাসের অর্ধাংশ সময়ের মধ্যে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়। অপরদিকে অত্রি মুনির বরে মাসের বাকী অর্ধাংশে পুনরায় নিজ দেহ প্রাপ্ত হয়। হিন্দু ধর্ম মতে এর ফলেই অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা হয়ে থাকে।

জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার, রয়েছো দাঁড়ায়ে
গভীর কী আশায় নিবিড় পুলকে, তাহার পানে চাই দু বাহু বাড়ায়ে।
আজি এ কোন্‌ গান নিখিল প্লাবিয়া তোমার বীণা হতে আসিল নাবিয়া
ভুবন মিলে যায় সুরের রণনে, গানের বেদনায় যাই যে হারায়ে।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

মুখচেনা অনাসৃষ্টির স্রষ্টা … একটি অকবিতা

5249913_n

ইদানীং অনেকেই সৃষ্টি করে –
প্রতিষ্ঠিত করে হৃদয়ের বিচ্ছিন্ন যুক্তি
উড়িয়ে দিতে চায় নীল বিহঙ্গে
হৃদ কেন্দ্রিক উচ্চারণ গুলো
কী সংক্ষিপ্ত অভিনবত্বে
ছুঁড়ে দেয় বিজ্ঞের বিলাসিতায়।

ঠোঁটে তুলে নেন তাম্রকূট
নয়নে ধরেন উদাসীনতা বিস্তর
দেহে অবহেলার পরিচ্ছাপ;

বিরোধ গড়েন স্বয়ং স্বকীয়তার সংগে
হয়ে ওঠেন আলাপ বিমূখী কখনো সখনো
কখনো যুদ্ধংদেহী দেব পুরুষ
শব্দের অলংকারে তুলে নেন রঙ জল তুলি
নাক্ষত্রিক ক্যানভাসে
অস্পষ্ট অহংকার এসে যায় কলমের ডগায় …

একদিন, সময়ের সন্নাস ভাঙ্গে
বাস্তবতার অভিযাত্রা ছোঁয় তৃতীয় নয়নের জানালা
মুছে যায় ভাবনা, দিনের আলো ঢেকে দেয় কালো আকাশ।

সৃষ্টি অপেক্ষা পায় স্বভাবের দো’রে
স্বভাবের অভাব খেয়ালী
থেমে যায় সব, গম্ভীর হয়ে যায় সব। আর বুঝি হয়না –
সৃষ্টিকে যে লালন করতে জানেনা
সে কেমন শিল্পী
কেমন সে স্রষ্টা?

গৃহবাড়ি ধ্বসে যায় পুরাতন প্রেমের কম্পনে
যে যায় যেভাবে যায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে দিয়ে যেতে থাকে –
নিঃশব্দ চরণে প্রেম তবু আসে দুয়ার মাড়িয়ে।

5249913_naa

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।

পরম্পরায় খুঁজে ফেরা

aza

কেন লিখতে মন চায় !! উত্তর জানা নেই। যখন পথ পাই না খুঁজে, নির্বাণ খুঁজি লিখায়। কবিতা আমার অলিন্দ ও নিলয়। হয়কি- হয়না- খুঁজতে থাকে অনেকেই। আমি কথা বলি আমার চেতনায়, আমার ভাষায়, আমার কবিতায়। যদি কেউ শুনতে পায় সেই কথা, তবে- তারাই পড়বে আমার লিখা। সে যদি একজনও হয়।

আমি যেমন ছেড়েছি সব। … ছেড়েছি সব কিছু। তেমনি তুমিও ছেড়ে যাবে একদিন। যেতেই হবে তোমাকে। তারপর …। অনেকটা পথ অতিক্রান্ত হবে যখন, কোলাহল কিছু থামবে, বিশ্বাসের ভ্রান্তিবিলাস খসে পড়বে একে একে। শ্রাবণে কি, হাড়-হিম শীতে। একাকী শূন্যতার দিকে চেয়ে ধোঁয়াশার বুকে ভেসে উঠবে তোমার চোখে আমার মুখ।

তোমাকে যেতে হবেই। আরো অনেকটা পথ এগুতে হবে। যেমন আমাদের পূর্ব পুরুষদের চেয়ে অগ্রগামী এই আমি। অংশত এবং কিছুতো সত্য। প্রেমিক সজ্জন, বান্ধব- বান্ধবী। অভাব হবেনা নিত্য নতুন সহযোগীর। ঘিরে থাকবে ভরে থাকবে কদম্ব কামিনী। সেই সাথে Cristian Dior, Richi ও Gucci আরো কত কি।
ভালোবাসার কথা শোনাবে অনেকে, ভালোবাসবে না। মাথায় উঠাবে, পুজার ভান করবে, আছড়ে দেবে নানান প্রকার। ভালোবাসবে না। অন্নদা দিদি খুঁজবে বার বার।

তবু একজন মানুষ খুঁজি। সব সময় খুঁজি। খুঁজে খুঁজে মরি। আসরে, উৎসবে, আয়োজনে, সমাবেশে। এমনকি সান্ধ্যভ্রমণ ও প্রাতঃভ্রমণেও। খুঁজি শুধু একজন মানুষ। যার সংস্পর্শে নষ্ট হয়ে যাওয়া মূল্যবোধ ‘অরণ্যের’ মতো ফিরে পেতে পারি। মানুষের যা কিছু মর্যাদার যা কিছু অর্জন- পথ খুলে দিতে পারে যে নির্যাস। সেই সেই মানুষকে খুঁজি। কে দেবে আশ্বাস !! খুঁজে অহরহ। মুছে দিক সেই… এই ঘৃণা- অবিশ্বাস- সন্দেহ। পারস্পরিক ভেদ বিদ্বেষ। খোল- নলচে বদলে দেয় এমন মানুষ।

মৃত্যুই কেবল মৃত্যুই ধ্রুবসখা
যাতনা কেবল যাতনা সুচির সাথী।
অতএব কারো পথ চেয়ে লাভ নেই
বিরূপ বিশ্বে মানুষ নিয়ত একাকী।

aza1

মা দিবস … যে ভালোবাসায় বাঁধি খেলাঘর …

2953maa28_n

কোন শব্দে এতো আকুলতা !! এতো আবেগ !! এক নিবিড় টান, শেকড়ের টান। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শব্দ ‘মা’। মায়ের সঙ্গে সন্তানের গভীরতম সম্পর্কের কাছে সব সম্পর্কই যেন গৌণ। যে সম্পর্কের সঙ্গে আর কোনো তুলনা হয় না। মায়ের তুলনা মা নিজেই। একটি আশ্রয়ের নাম ‘মা’। একটি শব্দই মনে করিয়ে দেয় অকৃত্রিম স্নেহ, মমতা আর গভীর ভালোবাসার কথা। মা শাশ্বত, চিরন্তন। শুধু বিশেষ দিন নয়; মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসাময় হোক প্রতিটি দিন। প্রতিটি সময়।

মানুষ হলে তার জন্য প্রতি মিলি সেকেন্ড, সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা বা প্রতিদিনই মা দিবস। আর মানুষ রুপে জন্ম নেওয়া অমানুষদের জন্য কখনোই না। একদিনের জন্য মাকে সম্মান, ভালবাসা দেখানো বা উপহার দেওয়া, তা হবে বিলাসিতা বা রসিকতা। পশ্চিমারা বৃদ্ধাশ্রমে বাবা-মাকে বছরে একদিন দেখতে যায় কিছু উপহার হাতে নিয়ে। টাকা আমাদের কম থাকতে পারে, হতে পারি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র কিন্তু বাবা মায়ের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের মুষ্টিমেয় ছাড়া ভালোবাসা তাদের চেয়ে কোটি লক্ষ গুণ বেশী। সেদিক থেকে আমরা তাদের চেয়ে অনেক বেশী বিত্তবান। এ আমাদের গর্ব। আমাদের রয়েছে ইতিহাস এবং সংস্কৃতির এক গৌরবময় অধ্যায়। আমরা হৃদয় ছুঁয়ে বলতে পারি, আমরা মা ভালোবাসি।

হাজারও না বলা কষ্ট স্বীকার করে মা গর্ভে ধারণ করে সন্তানকে পৃথিবীতে নিয়ে আসে। এ ঋণ কোনোভাবেই শোধ করার নয়। শুধু তাই নয়, সন্তান জন্মের পর নিজের চেয়ে সন্তানই তখন হয়ে ওঠে মুখ্য। এভাবে সারাজীবন মা সন্তানকে আগলে রাখার চেষ্টা করেন। পৃথকভাবে ‘মা দিবস’ পালনের কথা না থাকলেও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রতিনিয়তই মা’কে সম্মান জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘মার পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।’

বুখারী শরীফে উল্লেখ করা হয়, ‘আবু হুরাইরা রা. বলেন: এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সা: দরবারে হাজির হয়ে জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার সুন্দর আচরণের সবচাইতে বেশি দাবিদার কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে আবারও জিজ্ঞেস করল এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার বাবা।‘ (সহিহ আল বুখারী, এইচ এম সাঈদ কম্পানি, আদব মঞ্জিল, করাচি, কিতাবুল আদব, ২খ, পৃষ্ঠা ৮৮২)

মা দিবসের ইতিহাস:

imagesmmm বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মা দিবস উদযাপন প্রথম শুরু হয় গ্রিসে। গ্রীকরা তাদের মাতা-দেবীর পূজা করত। যার নাম হল ‘রিয়া’। এটা তারা বসন্তকালীন উৎসবের একটি অংশ হিসাবে উদযাপন করত। মা দিবসের ইতিহাসের সঙ্গে প্রাচীন গ্রীস ও রোমের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। প্রাচীন গ্রীসে দেব-জননী রিয়ার উদ্দেশে বসন্ত উৎসব উৎসর্গ করা হতো। রোমে দেবী মা সিবিলির জন্য ছিল বিশেষ উৎসব। ভেনাসকে রোমানরা তাদের জাতির মা বলে মনে করতো। রোমান পুরাণে সিরিস, সিবিলি ও ভেনাস এ তিন দেবীকে এক নামে আলমা মেটার নামে অভিহিত করা হতো। আলমা মেটারের অর্থ হলো জীবনদায়িনী, খাদ্যদায়িনী এবং আশীর্বাদিকা। রোমানদের মা উৎসব পরবর্তীতে খ্রিস্টীয় ধর্মের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মা মেরির সম্মানে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে চতুর্থ রবিবার মাদারিং সানডে হিসেবে পালিত হয়। প্রাচীন রোমেও এ রকম দিবস উদযাপন করা হতো ‘সাইবল’ দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে ‘সাইবল’ হল সকল দেব-দেবীর মাতা। খৃষ্টপূর্ব প্রায় ৫০ সালে রোমে ধর্মীয় উৎসব হিসাবে একটি দিবস পালন করা হতো, যার নাম ছিল ‘হিলারিয়া’। অর্থাৎ দেবী মাতা ‘রিয়ার’ সম্মানে। এটা উদযাপনের সময় ছিল ১৫ই মার্চ থেকে ১৮ই মার্চ। গ্রীক ও রোমান পৌত্তলিক সমাজে দেব-দেবীর মায়ের প্রতি ধর্মীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে এ সব দিবস পালন করা হতো, এটাই পরবর্তীকালে মা দিবস হিসাবে চালু করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে। সন্তানের প্রতি মায়ের অনুচ্চারিত শব্দ প্রতিপাদ্য যেন সব দেবতার আদরের ধন নিত্যকালের তুই পুরাতন, তুই প্রভাতের আলোর সমবয়সী। তুই জগতের স্বপ্ন হতে এসেছিস আনন্দ স্রোতে, নূতন হয়ে আমার বুকে বিলাসি।

আমেরিকার ‘অ্যানম জারাফস’ নামের এক নারী চিন্তাবিদের কল্যাণে মা দিবস চালু হয়। তিনি নিজের মাকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন, মায়ের ভালোবাসা অক্ষুণ্ন রাখতে জীবনে বিবাহ পর্যন্ত করেননি। তিনি পড়াশোনা করেছেন পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় চার্চ নিয়ন্ত্রিত একটি স্কুলে। তার মায়ের মৃত্যুর দু’বছর বছর পর তিনি সরকারের কাছে দাবি করলেন মায়ের স্মরণে একদিন সরকারি ছুটি দিতে হবে। তার অনুভূতি হল, মায়েরা সন্তানদের জন্য সারাজীবন যা করেন, তা সন্তানরা অনুভব করে না। তাই যদি এ উপলক্ষে একটি ছুটি দেয়া হয়, একটি দিবস পালন করা হয়, তাহলে সন্তানদের মায়ের ভূমিকা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়া সম্ভব।

অ্যানম জারাফসের আন্দোলনে আমেরিকান কংগ্রেসের অনেক রাজনীতিক একাত্মতা ঘোষণা করলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯০৮ সালের ১০ মে প্রাথমিকভাবে আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়া, ফ্লোরিডা, ওকলাহোমা ও পেনসিলভ্যানিয়াতে মা দিবস পালন শুরু হয়। ১৯১০ সালে সব অঙ্গরাজ্যে সরকারিভাবে মা দিবস ও তাতে ছুটি পালন শুরু হয়। আমেরিকান কংগ্রেস ১৯১৩ সালের ১০ মে মা দিবসকে সরকারিভাবে পালনের অনুমোদন দেয়। তারা মে মাসের প্রথম রোববারকে মা দিবস পালনের দিন হিসেবে নির্ধারণ করে। আমেরিকার অনুকরণে মেক্সিকো, কানাডা, লাতিন আমেরিকা, চীন, জাপান ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে শুরু হয় মা দিবস পালন। যদিও আমেরিকায় এটা পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রোববার, কিন্তু অন্যান্য দেশে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেমন, নরওয়েতে মা দিবস পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। আর্জেন্টিনায় পালিত হয় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় রোববার। দক্ষিণ আফ্রিকায় পালিত হয় মে মাসের প্রথম রোববার। ফ্রান্সে ও সুইডেনে পালিত হয় মে মাসের শেষ রোববার। জাপান এবং বাংলাদেশে পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। আজ সেই দিন।

আজ যেন সীমানা বিহীন ভালোবাসার একটি দিন।
আজ বিশ্ব মা দিবস যে ভালোবাসায় বাঁধি খেলাঘর।
আজ যেন পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দ বলার একটি দিন।

আজ বিশ্ব মা দিবস। মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় ‘মা দিবস’। আমেরিকায় মায়েদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ‘মাদারিং সানডে’ নামে একটি বিশেষ দিন উদযাপন করা হতো। এর পর আমেরিকার সীমানা ছাড়িয়ে মা দিবসটি সর্বজনীন হয়ে উঠে সারা বিশ্বে। উদযাপনের জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বড়দিন এবং ভালোবাসা দিবসের পর মা দিবসের অবস্থান। সাধারণত সাদা কারনেশন ফুলকে মা দিবসের প্রতীক বিবেচনা করা হয়। এই দিনে সন্তানরা ফুল এবং নানা সামগ্রী উপহার দিয়ে এবং বাসায় কিংবা রেষ্টুরেন্টে মায়ের সাথে খাবার খেয়ে, অনেকেই ছুটি নিয়ে মায়ের একান্ত সান্নিধ্যে দিনটি কাটিয়ে দেয়। মাকে শ্রদ্ধা আর ভালবাসা দেখাতে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে নেয়ার যুক্তি অনেকের কাছেই সে ভাবে গ্রহনযোগ্য না হলেও অনেকেই মনে করেন মাকে সন্মান দেখাতে, তাকে গভীরভাবে মাকে স্মরণ করতে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত আন্তর্জাতিক মা দিবসের গুরুত্ব রয়েছে। মাকে স্মরণ করে জগৎবিখ্যাত মনীষী আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন, ‘আমি যা কিছু পেয়েছি, যা কিছু হয়েছি, অথবা যা হতে আশা করি, তার জন্য আমি আমার মায়ের কাছে ঋণী’। জগতে মায়ের মতো এমন আপনজন আর কে আছে! তাই প্রতি বছর এই দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয় প্রিয় মায়ের মর্যাদার কথা। মা মাটি আর মানুষের কথা।

305320_392780070804129_2057634233_n

হারাই হারাই ভয়ে গো তাই, বুকে চেপে রাখতে যে চাই
জানি না কোন মায়ায় ফেঁদে বিশ্বের ধন রাখব বেঁধে
আমার এ ক্ষীণ বাহু দুটির আড়ালে

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।