মরুভূমির জলদস্যু এর সকল পোস্ট

A_01_ (11) - Copy

এপিগ্রাম ইন “অচিনপুর”

হুমায়ূন আহমেদের বইগুলির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক যেটা আমার কাছে মনে হয় তা হচ্ছে “এপিগ্রাম”। বই পড়ার সময় এপিগ্রাম গুলি সহজাত ভাবেই আমার চোখে পড়ে, আর সেগুলিকে আলাদা করে টুকে রাখাটা আমার স্বভাব। শত শত বইয়ের এপিগ্রাম দুটি ডায়রিতে লেখা আছে। এখনও বই পড়ার সময় এই অভ্যাস নিরবে কাজ করে যায়। তারই ফল এই লেখাগুলি। এখানে আজ হুমায়ূন আহমেদের লেখা “অচিনপুর” উপন্যাসের এপিগ্রাম শেয়ার করবো।

১। শিল্পীরা সব সময়ই শিশুদের আকর্ষণ করে।

২। ভয়টা বহুলাংশে সংক্রামক।

৩। কিছু কিছু মানুষ ভাগ্যকে নিজের হাতে গড়েন, আবার কারো কারো কাছে ভাগ্য নিজে এসে ধরা দেয়।

৪। স্মৃতিকে সব সময় বিশ্বাস করা চলে না।

৫। ক্ষমতাবান লোকরা সব সময় নিঃসঙ্গ জীবন কাটায়।

৬। অল্প বয়সে স্নেহটাকে বন্ধন মনে হয়।

৭। না চাইতে যা পাওয়া যায় তা সবসময়ই মূল্যহীন।

৮। কোন একটি বিশেষ ঘটনার কাল্পনিক চিত্র যদি বারবার আঁকা যায় তাহলে এমন একটা সময় আসে যখন সেই কাল্পনিক চিত্রকেই বাস্তব বলে ভ্রম হয়।

৯। আপাত কার্যকারণ ছাড়াই যে সমস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যাপার ঘটে তাই কেমন করে পরবর্তী সময়ে মানুষের জীবন বদলে দেয়।

১০। মেয়েরা খুব সহজেই ভালোবাসা বুঝতে পারে।

১১। একঘেয়ে কোন কিছুতেই আকর্ষণ থাকে না।

১২। রূপ আর কয় দিনের? নিম ফুল যয় দিনের।

১৩। নিজেকে অবাঞ্ছিত ভাবা খুব কষ্ট ও অপমানের ব্যাপার।

১৪। যাবতীয় দুর্বোধ্য বস্তুর জন্য মানুষের স্বাভাবিক আকর্ষণ থাকে।

১৫। সুখ এবং দুঃখ আসলে একই জিনিস। সময়ের সাথে সাথে সুখ বদলে গিয়ে দুঃখ হয়ে যায় আবার দুঃখ হয়ে যায় সুখ।

“অচিনপুর” ‌উপন্যাসটিতে এই ৫ টি এপিগ্রাম আমার নজরে এসেছে।

A_06_ (30)

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার

২৫ তারিখ রাতে ঢাকা থেকে ““খাগড়াছড়ির পথে…”” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে আমাদের “খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু” হয় “আলুটিলা গুহা” দিয়ে। আলুটিলা গুহা দেখে আমরা চলে যাই রিছাং ঝর্ণা দেখতে। ঝর্ণা দেখা শেষে আমরা যাই প্রাচীন শতবর্ষী বটবৃক্ষ দেখতে। সেদিনের মত শেষ স্পট ছিল আমাদের ঝুলন্ত সেতু দেখা। রাতের খাবার পাহিড়ি সিস্টেম রেস্টুরেন্টে সেরে ঘুম দেই রাতের মত।

পরদিন ২৭ তারিখে যাবো খাগড়াছড়ি থেকে রাঙ্গামাটি। দুই ভাবে যাওয়া যাবে, এক খাগড়াছড়ি থেকে বাসে যাওয়া যাবে রাঙ্গামাটি, দুই চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে। আর একটি পথ আছে দীঘিনালা হয়ে লঞ্চে করে যাওয়ার যাবে কাপ্তাই ভ্রমণ করতে করতে। এই পথটাই আমার বেশি পছন্দের। সিদ্ধান্ত হল শেষের পথটাই ধরার চেষ্টা করা হবে, সেটা যদি না হয় তাহলে দ্বিতীয় পথ চান্দের গাড়ি নেয়া। বাসের পথটা সর্বসম্মতক্রমে বাদ দেয়া হল।

২৭ তারিখ সকাল, আস্তে ধীরে একে-একে সবাই উঠছে ঘুম থেকে। কিছুক্ষণ পরেই বেরিয়ে যাব হোটেল ছেড়ে। যাওয়ার ইচ্ছে ছিল “হাজাছড়া ঝর্ণাতে” শেষ পর্যন্ত যাওয়া হয়নি, কারণ গতকালের ড্রাইভার জানিয়েছে ঝর্ণাতে পানি নেই। “দেবতা পুকুরেও” যাওয়া হবে না, অনেকটা পাহাড়ি পথ হেঁটে উঠতে হবে, প্রথম দিনের ধকলের পর মেয়ে আর শিশুদের কথা বিবেচনা করে সেটাও বাদ দিয়ে দিলাম। আর জানতে পারলাম (হোটেলের ম্যানেজারের কাছ থেকে) দীঘীনালা থেকে লঞ্চে যাওয়ার ব্যবস্থাটা ঠিক হবে না। কারণ এই সময় নাকি কয়েক যায়গায় পানি এতো কম থাকে যে তখন নৌককেই টেনে নিয়ে যেতে হয়। তাই স্বপনকে পাঠিয়ে দিলাম চান্দের গাড়ির রাঙ্গামাটি পর্যন্ত ভাড়া কত নিবে সেটা জেনে আসতে, ও খবর নিয়ে এসেছে ৬০০০ টাকা চায় রিজার্ভ ভাড়া।

সকালের নাস্তা সেরে আমরা প্রথমে চেষ্টা করলাম শাপলা চত্তরের সামনে থেকে চান্দের গাড়ি ভাড়া করতে। ড্রাইভাররা একজোট হয়ে দাম হাকাতে লাগল তাই আমরা সেখান থেকে চলে গেলাম বাস ষ্টেশনে। সেখানেও ড্রাইভাররা সব একজোট হয়ে গেলো, ভাড়া হাঁকাতে লাগলো মনের মত। বাধ্য হয়ে আমরা বাস কাউন্টারে গেলাম, বাসের অবস্থা দেখে দমে গেলাম। তখনই পেছন থেকে একজন বললো –
৪৫০০ টাকায় আমি নিয়ে যাব কিন্তু এইখান থেকে উঠাতে পারব না, আপনাদের হোটেলের সামনে থেকে উঠাব। কাউকে বলা যাবেনা আমি এই ভাড়ায় যাইতেছি।

আমরা এক বাক্যে রাজি। ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে ফিরতে শুরু করলাম হোটেলের দিকে। হোটেলের সামনে এসে দেখি চান্দের গাড়ি হাজির হয়ে গেছে।


খাগড়াছড়ি গেট


আজ পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে অদভূত ডাস্টবিন যা খাগড়াছড়ির শহরে অনেকগুলি আছে।


যদিও দেখে মনে হয় না তবুও এটা নাকি রাষ্ট্রপতি জিয়ার মূর্তি

হোটেলের লেনদেন চুকিয়ে সবাই ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে উঠলাম চান্দের গাড়িতে। উপর নিচ মিলিয়ে জনা ২৫ লোক নিয়ে চলে এই চান্দের গাড়ি, সেখানা আমরা মাত্র কজন। গাড়ি চলতে শুরু করলো বিশাল ঝাঁকুনির সাথে। লোড বেশি হলে ঝাঁকুনি কিছুটা কম লাগতো হয়তো। আমার মাথা ৪-৫ বার গাড়ির ছাদের সাথে বাড়ি লেগে খুব ব্যথা পেয়ে ছিলাম।


চেঙ্গী নদী

অল্প কয়েক মিনিটে শহরের ভেতর থেকে বেরিয়ে চেঙ্গী নদী পেরিয়ে “চেঙ্গী এপার্টমেন্ট এলাকা”-তে অবস্থিত “অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার” এর সামনে এসে দাঁড়ায় আমাদের গাড়ি। বিহারে ভিতরে বিশাল এক বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে, মূলত সেটাই দেখতে এসেছি আমরা। গেটের বাইরে জুতা রেখে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। আমরা শুধু এই মূর্তিটার সামনেই গিয়েছি, মন্দিরের ভেতরে যাইনি, তাই ভেতরের কথা তেমন কিছুই জানি না। তবে মূর্তিটা সুন্দর, বিশাল মূর্তিটার গায়ে অসংখ্য ক্ষুদে বৌদ্ধ মূর্তি দিয়ে গায়ের জামা হিসেবে কারুকাজ করা হয়েছে।

শহরের কাছেই এই যায়গায় চলার পথে ঢুমেরে যেতে পারেন, খারাপ লাগবে না। এখানে কিছুক্ষণ ফটশেসানের পরে আবার রওনা হই, অনেক দূরের পথ যেতে হবে। এবারের গন্তব্য রাঙ্গামাটি।

ছবির মত সুন্দর পাহাড়ি পথে চলার শুরু হল আমাদের। চার পাশে ছড়িয়ে আছে পাহাড়ি সৌন্দর্য। শীতের সময় বলে পাহার কিছুটা রুক্ষ, তারপরও দেখার আছে নয়ন জুড়ানো দৃশ্য।

পাহাড়ি একে-বেকে চলা পথ আর খাঁদ, বেইলি ব্রিজ আর বিপদজনক বাক।


বিজিতলা আর্মি ক্যাম্প, এখানে আপনাকে নামতে হবে না শুধু ড্রাইভার নেমে দেখা করে আসে।

এক সময় পৌছেযাই রাঙ্গামাটি। আমাদের টার্গেট রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজারে কোন একটা হোটেলে উঠার। প্রথমে একটা হোটেলের সামনে থামতেই সাথে এক ফেউ (দালাল) লেগে গেলো। ও আমার সাথে সাথে গেলো হোটেলের রিসিপশানে, হোটেলটি আধা আধি পছন্দ হল। নিচে নেমে আসতেই ফেউটা বলল সমনে ভালো হোটেল আছে ওর পরিচিত, আর ও হোটেলের দাদাল না। ওর একটা বোট আছে তাই আমাদের সাথে সাথে ঘুরতেছে বোট ভাড়ার জন্য, হোটেল থেকে কোন কমিশন ও নেয় না।

ওর দেখানো “হোটেল লেক সিটি”-তে গেলাম। এখনও কাজ কম্পিলিট হয়নি হোটেলের, কিন্তু এর ভিউটা অতি মনোরম। রুমের সামনে খোলা যায়গা, একটা দোলনা আছে, দুটি খরগোশ দৌড়ে বেড়াচ্ছে (বাচ্চারা মহা খুশি) । এখান থেকেই চোখের সামনে বিছানো কাক-চক্ষু জলের সুবিশাল জলরাশি “কাপ্তাই লেক”দেখা যায়। কাপ্তায়ের জল এসে ছুঁয়ে যায় হোটেলের নিচে বর্ষার সময়।

ফাস্ট ফ্লোরে পাওয়া গেলো তিনটি কাঁপল রুম, আর সেকেন্ড ফ্লোরে পাওয়া গেলো একটি টিপল বেডের রুম, কোন সিঙ্গেল রুম নেই। উপরের রুমটার ভাড়া অনেক বেশি কিন্তু অতি চমৎকার। বিশাল রুম, রুমের সাথে বারান্দা, আরা বারান্দাটা ঝুলে আছে লেকের উপরে। এই বারান্দায় বসে সারা রাত কাটিয়ে দেয়া যাবে। যদিও স্বপন একা তারপরেও ওকেই এই বড় রুমটা দেয়া হল, কারণ আধা রাত পর্যন্ত এই রুম আমরাই দখল করে রাখবো………….

A_01_ (11) - Copy

এপিগ্রাম ইন “১৯৭১”

হুমায়ূন আহমেদের বইগুলির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক যেটা আমার কাছে মনে হয় তা হচ্ছে “এপিগ্রাম”। বই পড়ার সময় এপিগ্রাম গুলি সহজাত ভাবেই আমার চোখে পড়ে, আর সেগুলিকে আলাদা করে টুকে রাখাটা আমার স্বভাব। শত শত বইয়ের এপিগ্রাম দুটি ডায়রিতে লেখা আছে। এখনও বই পড়ার সময় এই অভ্যাস নিরবে কাজ করে যায়। তারই ফল এই লেখাগুলি। এখানে আজ হুমায়ূন আহমেদের লেখা “১৯৭১” উপন্যাসের এপিগ্রাম শেয়ার করবো।

১। খিদের কষ্ট বড় কষ্ট।

২। মানুষকে ভয় পাইয়ে দেবার মাঝে একটা আলাদা আনন্দ আছে।

৩। বিশেষ বিশেষ পরিবেশে খুব সাধারণ কথাও অসাধারণ মনে হয়।

৪। মৃত্যু একটি ভয়াবহ ব্যাপার। মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে কে কি করবে তা আগে থেকে বলা যায় না।

৫। কোন কোন সময় মানুষের ইন্দ্রিয় অস্বাভাবিক তীক্ষ্ণ হয়ে যায়।

“১৯৭১” বইটিতে এই ৫ টি এপিগ্রাম আমার নজরে এসেছে।

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৮

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো। এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে। যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

৭১। দেশের নাম : Madagascar (ম্যাডাগ্যাস্কার)

জাতীয় ফুলের নাম : কৃষ্ণচূড়া, গুলমোহর, রক্তচূড়া ইত্যাদি।
ইংরেজি নাম : Flame Tree, Royal Poinciana, Poinciana ইত্যাদি।
বৈজ্ঞানিক নাম : Delonix regia
ছবি তোলার স্থান : বাড্ডা, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ০৮/০৫/২০১৬ ইং

৭২। দেশের নাম : Maldives (মালদ্বীপ)

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ (গোলাপী)
ইংরেজি নাম : Pink Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa
ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।
ছবি তোলার তারিখ : ২৮/০৫/২০১৫ ইং

৭৩। দেশের নাম : Malta (মালটা)

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজি নাম : Maltese centaury, Maltese rock-centaury, Widnet il-Baħar
বৈজ্ঞানিক নাম : Cheirolophus crassifolius
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৪। দেশের নাম : New Zealand (নিউজিল্যান্ড)

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজি নাম : Kowhai, weeping kōwhai, small-leaved kōwhai
বৈজ্ঞানিক নাম : Sophora microphylla
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৫। দেশের নাম : Paraguay (প্যারাগুয়ে)

জাতীয় ফুলের নাম : বিচিত্রা ফুল, আজ-কাল-পরশু
ইংরেজি নাম : Paraguayan Jasmine, yesterday-today-and-tomorrow, morning-noon-and-night, Kiss Me Quick, Brazil raintree.
বৈজ্ঞানিক নাম : Brunfelsia pauciflora
ছবি তোলার স্থান : রমনা পার্ক, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার স্থান : ১৪/০৩/২০১৮ ইং

৭৬। দেশের নাম : Peru (পেরু)

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজি নাম : cantuta, cantu), known as qantu, qantus or qantuta , Kantuta, Inca magic flower, Peruvian magic tree
বৈজ্ঞানিক নাম : Cantua buxifolia
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৭। দেশের নাম : Philippines (ফিলিপাইন)

জাতীয় ফুলের নাম : বেলি, বেলী
ইংরেজি নাম : Arabian jasmine or Sambac jasmine, Sampaguita
বৈজ্ঞানিক নাম : Jasminum Sambac
ছবি তোলার স্থান : বাড্ডা, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ১০/০৭/২০১৭ ইং

৭৮। দেশের নাম : Poland (পোল্যান্ড)

জাতীয় ফুলের নাম : লাল পপী
ইংরেজি নাম : common poppy, corn poppy, corn rose, field poppy, Flanders poppy, red poppy
বৈজ্ঞানিক নাম : Papaver Rhoeas
ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।
ছবি তোলার তারিখ : ২৮/০৫/২০১৫ ইং

৭৯। দেশের নাম : Portugal (পর্তুগাল)

জাতীয় ফুলের নাম : ল্যাভেন্ডার
ইংরেজি নাম : Lavender
বৈজ্ঞানিক নাম : Lavandula
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৮০। দেশের নাম : Puerto Rico (পুয়ের্তো রিকো)

জাতীয় ফুলের নাম : পুয়ের্তো রিকো জবা
ইংরেজি নাম : Puerto Rico Hibiscus, Flor de Maga
বৈজ্ঞানিক নাম : Montezuma speciosissima
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

A_01_ (11)

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু

২৫ তারিখ রাতে ঢাকা থেকে ““খাগড়াছড়ির পথে…”” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে আমাদের “খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু” হয় “আলুটিলা গুহা” দিয়ে। আলুটিলা গুহা দেখে আমরা চলে যাই রিছাং ঝর্ণা দেখতে। ঝর্ণা দেখা শেষে আমরা যাই প্রাচীন শতবর্ষী বটবৃক্ষ দেখতে। বিশাল বটবৃক্ষতলে কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা রওনা হয়ে যাই “ঝুলন্ত সেতু” দেখতে।

শতবর্ষী বটবৃক্ষের ছায়াতল হতে বিদায় নিয়ে আমাদের এবারের গন্তব্য খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই “হর্টি কালচার পার্ক” এর ঝুলন্ত সেতু। বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে খুব দ্রুত, সূর্যি মামা পাটে বসবেন কিচ্ছুক্ষণ পরেই। হাতে সময় খুব অল্প। সন্ধ্যার আগে আগে এসে পৌঁছই পার্কের কাছে। রাস্তা থেকে কিছুটা কাঁচা মাটির পথ ধরে হেঁটে যেতে হয় পার্কের গেইট পর্যন্ত, ঢুকতে হয় টিকেট কেটে। আমরা যখন ভেতরে ঢুকছি তখন সেখান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে সামান্য যে ক’জন বেড়াতে গিয়েছিলো (জোড়ায় জোড়ায়) তাঁরাও।

গেট পেরিয়েই সামনে উঁচু টিলা কেটে তৈরি ইট বিছান রাস্তা, রাস্তার দুই ধারে সারি সারি গাছ। একটু সামনেই চমৎকার বাগান। এখান থেকে দূরে তাকালে দেখা যায় ঢেউ খেলান পাহাড় সারি।

বাগান পেরিয়ে কিছুদূর গিয়ে শেষ হয়ে গেছে টিলাটি, আর এই টিলা থেকে সামনের আরেকটি টিলা পর্যন্ত সুন্দর একটি সেতু, ঝুলন্ত সেতু।


ঝুলন্ত সেতুতে দস্যু পত্নী ও কন্যা

সেতুর নিচে জলাধার, তার চারপাশে প্রচুর নারকেল গাছ, সুন্দর করে সাজানো। টিলা থেকে টিলার গা কেটে কেটে তৈরি করা হয়েছে নিচে নামার সিঁড়ি।

শীতকাল বলে জলাধারে পানি কম, বর্ষায় নিশ্চয়ই আর পানি বাড়ে, তখন দেখতে নিশ্চয়ই আর সুন্দর হবে।

ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে উল্টোদিকের অংশে গেলে সেখানে আছে বাচ্চাদের খেলার যায়গা। রয়েছে দোলনা, স্লিপার।

অলরেডি সন্ধ্যে ঘনিয়ে এসেছে, পাহাড়ের আড়ালে মুখ লুকিয়েছে সূর্য, পাহাড়ি আঁধার তার অন্ধকার চাদর মেলে ধরতে শুরু করেছে।


সারাদিনে ভ্রমণ শেষে এবার হোটেলে ফিরে রেস্ট নেয়ার পালা……

পরিশিষ্ট:
হোটেলে ফিরে ফ্রেস হয়ে রেস্ট নিয়ে আমরা প্রস্তুত হই রাতের খাবারের খোঁজে। এখানেই কে যেন বলেছিল সিস্টেম হোটেলের (রেস্টুরেন্ট) কথা। ভাবলাম সেখানেই যাব খেতে। গিয়ে দেখি এটি একটি পাহাড়ি রেস্টুরেন্ট, চমৎকার করে সাজানো, সুন্দর পরিবেশ। খাবারের মানও ভালো। ওদের কাছে হরিণের মাংস থেকে শুরু করে ঘুঘুর মাংস, চিংড়ি থেকে শুরু করে বড় মাছের কাঠি কাবাব, সবই পাওয়া যায়, তবে প্রতি দিন না। একেক দিন একেক ধরনের রেসিপি হয়। আগামীকাল হবে হরিণ, কিন্তু আমরা থাকব না তখন খাগড়াছড়িতে।


এই ছবিটি মাসুদ ভাই (অচেনা কেউ) এর একটি পোস্ট থেকে নেয়া।

পথের হদিস : ঢাকা টু খাগড়াছড়ি বাস ভাড়া ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা নন এসি।

ভ্রমণ : আলুটিলা গুহা > রিছং ঝর্ণা > শতবর্ষী বটগাছ > ঝুলন্ত সেতু, এগুলি ঘুরিয়ে দেখিয়ে আনবে চাঁন্দের গাড়ী ৩,০০০ – ৩,৫০০ টাকা, আর মাহেন্দার ১,৫০০ – ১,৮০০ টাকা।

থাকা : হোটেল ভাড়া ৪০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্য।

A_01_ (11)

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শতবর্ষী বটবৃক্ষ

২৫ তারিখ রাতে ঢাকা থেকে “খাগড়াছড়ির পথে…” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে আমাদের “খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু” হয় “আলুটিলা গুহা” দিয়ে। আলুটিলা গুহা দেখে আমরা চলে যাই রিছাং ঝর্ণা দেখতে। ঝর্ণা দেখে আমাদের এবার যাবার পালা এক প্রাচীন শতবর্ষী বটবৃক্ষ তলে।

রিছাং ঝর্ণা দেখা শেষে আবার আমাদের যাত্রা শুরু হয় মাটিরাঙ্গা উপজেলার দিকে। শুনেছি মাটিরাঙ্গা উপজেলার খেদাছড়ার কাছাকাছি এলাকায় একটি প্রাচীন বটবৃক্ষ রয়েছে, নাম তার “শতবর্ষী বটগাছ”, সেটা নাকি এক বিশাল বড় বট গাছ। রিছাং ঝর্ণা থেকে বেরিয়ে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম রোড ধরে অনেকটা পথ যেতে হয়।


এই রাস্তাটুকুও পাহাড়ি অন্যান্য রাস্তার মতোই দৃষ্টিনন্দন। ছড়িয়ে আছে পাহাড়ি বাঁক আর ছোট ছোট কালভার্ট।

বেশ কিছুটা পথ যাওয়ার পরে মাটিরাঙ্গায় মেইন রোড থেকে ডান দিকে বাক নিয়েছে একটি শাখা রাস্তা। এই শাখা রাস্তা ধরে যেতে হবে অনেকটা পথ। যেতে যেতে এক সময় মনে হচ্ছিলো পথ যেন আর শেষ হতে চাইছে না। শীতের সময় বলে রাস্তার মিহি ধুলয় ছেয়ে যায় সব কিছু। পাহাড়ি সরল জীবনের চিত্র ছড়িয়ে আছে চার ধারের রাস্তার পাশে।

পাহাড়ি শিশুরা খেলছে ধুল মেখে রাস্তায়, ছোট একটা গরুর বাছুর হঠাৎ করে উঠে আসে রাস্তায় তারপর ভয় পেয়ে লেজ উঁচিয়ে দেয় ভো… ছুট। আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করলাম স্কুল থেকে অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে ফিরছে ছাত্র-ছাত্রীরা যাদের বেশিরভাগই পাহাড়ি কিশোর-কিশোরী। অথচ সারা রাস্তাতে প্রচুর বাঙ্গালী (সমতলের মানুষ) বাড়ি দেখেছি, শিশুও খেলছে রাস্তা।

এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা এক সময় শেষ হয়, সামনেই দেখা পাই বটবৃক্ষের। এটা যে বিশাল একটা বটগাছ তা স্বীকার করতেই হবে। আমরা অবাক হয়ে দেখি বটের মহিমা। আসলেই এই গাছের বয়স নির্ণয় করার বা অনুমান করার মতো পড়াশুনা বা জ্ঞান আমার নেই, আমার দলের অন্য কারোও নেই। তাই নির্ধিধায় মেনে নিলাম এটার বয়স ১০০ বছরের বেশি বই কম হবে না।

বেশ বড় দুটি গাছ, নাকি একটি, কানি তিনটি!! যত দূর মনে হয়েছে বা বুঝতে পারলাম প্রথমে হয়তো গাছ ছিল একটাই। মূল গাছটির একটি ডাল হয়ত রাস্তার উল্টোদিকে গিয়ে সেখানে ঝুড়িমূল নামিয়ে ছিল, কালের প্রবাহে সাই ঝুড়িই হয়ে গেছে গাছ।

আর মূল যে ডালটি গিয়েছিল রাস্তা পার হয়ে সেই ডালটি হয়ত কালক্রমে কোন কারণে ভেঙ্গে যায়, ফলে যে ছিল ঝুড়ি সে আজ স্বতন্ত্র একটি বটবৃক্ষের রূপ নিয়েছে। এরকম একই কাণ্ড হয়েছে আর একটি অংশে। এই রকম অনুমান করার পেছনে কারণ অবশ্যই আছে। দেখতে পেয়েছি বেশ বড় মোটাসোটা দুটি ডালের মৃত অংশ সেই দুই দিকেই মুখ করে আছে।

অনেকগুলি ঝুড়িমূল গাছের বড় ডালগুলি থেকে নেমে এসেছে, তার কিছু কিছু ঝুড়িমূল বিশাল থামের মত হয়ে আছে যেন খুঁটি গেড়ে উপরের বড় ডালকে ঠেকনা দিয়ে রেখেছে।

মোটা মোটা থামের আকৃতির ঝুড়িমূল যেমন রয়েছে তেমনি কিছু আছে মাঝারি আকৃতির আবার কিছু কিছু আছে একেবারেই চিকন-নবীন। এই নবীনেরাই হয়তো বিশ-পঁচিশ বা পঞ্চাশ বছর পরে মোটা থামের আকৃতি পাবে। আর পঁচিশ-ত্রিশ বছর পরে আবার গিয়ে এদের দেখে আসতে হবে।

আমার ধারনা এখানে ভ্রমণার্থী একটু কম আসেন। যদি তারা যেত তাহলে আমাদের স্বভাব অনুযায় যায়গাটাকে তাহলে নোংরা দেখতাম, আর গাছের গাঁয়ে খোঁদাই শিল্পীর কিছু নমুনা অবশ্যই দেখতাম। আবার যখন ঐখানে যাব তখনকার জন্য বা আমার পরে যারা একে দেখতে আসবে তাদের জন্য কিছু খোদাই কাজ অবশ্যই রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করেন অনেকে। আমার মাঝে এই সব গুণ গুলির অভাব আছে তাই ত্রিশ বছর পরে গিয়ে নিজের কোন চিহ্ন দেখতে পাবনা। এগুলি দেখিনি বলেই বলছি হয়তো টুরিস্ট একটু কম যায় ওখানে। ওখানে গাছের নিচে ছিলো বটের ঝড়া পাতার স্তুপ।


স্বপন পরিবহন

ভাল কথা, এই বটগাছটি রয়েছে “আলুটিলা বটতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর সামনে। স্কুল ভবনটির সামনে রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ, পাশেই সুবিশাল বটের ছায়ায় দাড়িয়ে আছে ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি “শহীদ মিনার” আর একটি স্থায়ী মঞ্চ।

পাক্কা ৩০ মিনিট লাগে রিছাং ঝর্ণা থেকে বট বৃক্ষতলে যেতে। জিপ বা মাইক্রবাস হলে সময় আর অনেক কম লাগবে অবশ্যই।

খুব বেশি সময় এখানে থাকি নি আমরা। কিছু ছবি তুলে আর অবাক হয়ে বটবৃক্ষ দেখে ফিরে এসেছি।


নতুন সাধু ধেনে বসার পায়তার করিতেছেন, কিন্তু….


কিন্তু…. কণ্যা পিতাকে ছড়িতে রজি হইলো না


নতুন সাধুর অভূর্থান

তখন বিকেল গড়াচ্ছে, সূর্য পশ্চিম আকাশে গড়াগড়ি দিচ্ছে। আবার ফেরা ধূলি-ধূসর এবড়ো-খেবড়ো পথে। মিনিট পনের এই বৃক্ষতলে সময় কাটিয়ে আবার রওনা হই, এবারের গন্তব্য শহরের কাছে “ঝুলন্ত সেতু”


চলুন তাহলে……

NF_1_ (80)a

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৭

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো। এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে। যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

৭১। দেশের নাম : Kazakhstan (কাজাকস্থান )

জাতীয় ফুলের নাম : লিলি
ইংরেজি নাম : Lily
বৈজ্ঞানিক নাম : Lilium
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭২। দেশের নাম : Kuwait (কুয়েত )

জাতীয় ফুলের নাম : Arfaj
ইংরেজি নাম :
বৈজ্ঞানিক নাম : Rhanterium epapposum
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৩। দেশের নাম : Kyrgyzstan (কিরগিজস্তান )

জাতীয় ফুলের নাম : টিউলিপ
ইংরেজি নাম : Tulip
বৈজ্ঞানিক নাম : Tulipa
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৪। দেশের নাম : Laos (লাওস )

জাতীয় ফুলের নাম : সুলতান চাঁপা, পুন্নাগ
ইংরেজি নাম : Beauty Leaf, Alexandrian laurel, Sultan Champa
বৈজ্ঞানিক নাম : Calophyllum Inophyllum
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৫। দেশের নাম : Latvia (লাতভিয়া )

জাতীয় ফুলের নাম : ডেইজি
ইংরেজি নাম : ox-eye daisy
বৈজ্ঞানিক নাম : Leucanthemum vulgare
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৬। দেশের নাম : Lebanon (লেবানন )

জাতীয় ফুলের নাম : কোন জাতীয় ফুল নেই

৭৭। দেশের নাম : Liberia (লাইবেরিয়া )

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজি নাম : Pepper
বৈজ্ঞানিক নাম :
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৮। দেশের নাম : Libya (লিবিয়া )

জাতীয় ফুলের নাম : ডালিম ফুল
ইংরেজি নাম : Pomegranate blossom
বৈজ্ঞানিক নাম : Punica granatum
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৭৯। দেশের নাম : Lithuania (লিথুয়ানিয়া )

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজি নাম : Rue, Common rue, Herb-of-grace
বৈজ্ঞানিক নাম : Ruta graveolens
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৮০। দেশের নাম : Luxembourg (লুক্সেমবুর্গ )

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ
ইংরেজি নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa
ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।


ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

A_01_ (11)

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – রিছাং ঝর্ণা

২৫ তারিখ রাতে ““খাগড়াছড়ির পথে…”” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে আমাদের “খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু” হয় “আলুটিলা গুহা” দিয়ে। আলুটিলা গুহা থেকে বেরিয়ে আবার শুরু হয় আমাদের যাত্রা রিছাং ঝর্ণার দিকে।

আলুটিলা থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার সামনেই এই রিছাং ঝর্ণা। আপনারা শুনে অবাক হবেন যে এই ঝর্ণাটা ব্যক্তি মালিকানাধীন। আকা-বাঁকা চমৎকার পাহাড়ি পথ ধরে ধীর গতিতে এগিয়ে চলে আমাদের বাহন। পথের চারপাশে ছড়িয়ে আছে রুক্ষ সৌন্দর্য। মাঝে মাঝেই চোখে পরে পাহাড়ি ঝুম চাষের ফসলহীন জমি।


ঝুম চাষ শেষ হয়েছে, কোন পাহাড়ি আদিবাসী নতুন বাড়ি তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছে।

এক সময় পৌঁছে যাই রিছাং ঝর্ণার গেইটের সামনে। ভেবেছিলাম এখান থেকেই হাঁটতে হবে, কিন্তু না ভেতরে গাড়ি যায়। ইটা বিছান রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হয় আর কিছুটা পথ। এই পথটুকু পুরটাই পাহাড়ের চূড়ার উপর দিয়ে গিয়েছে। কিছু দূর এগবার পর রাস্তা নেমে গেছে অনেক ঢালু হয়ে, আবার উঠে গেছে চূড়ার দিকে। এই রাস্তাগুলিতে আমাদের ২/৩ জনকে কিছুক্ষণ পরপরই হেঁটে যেতে হয়েছে।


দূরে ঝুমঘর

যারা গাড়িতে বসা ছিল তারা মজা পেয়েছে রোলার কোস্টারের। একটা সময় রাস্তার একটা বাকের কাছে এসে গাড়ি থেমে গেলো। আর সামনে এগুবে না, এখান থেকে নিজের পায়ের উপরেই ভরসা রাখতে হবে, হাঁটতে হবে ঝর্ণা পর্যন্ত।

রাস্তাটা এতটাই খাড়া ভাবে নেমে গেছে যে উল্টো দিক থেকে কোন গাড়িই উঠে আসতে পারবে না। তাই কোনো গাড়ি আর নিচে নামে না। আমরা সবাই গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা ধরলাম। পাহাড় থেকে নামা সব সময়ই সহজ, কিন্তু এই রাস্তাটার ক্ষেত্রে তা বলা যাবে না। একটু অসতর্ক হলে নামার গতি এতটাই বেড়ে যাবে যে তা থামানো সম্ভব হবে না। তাই আস্তে ধীরে দেখে শুনে নামতে হবে। তাছাড়া আমাদের সাথে আছে দুটি পিচ্চি। ওরা চাচ্ছে দ্রুত নেমে যেতে, আমরা হাত ধরে নিয়ে নামাচ্ছি।

পথ খুব বেশি নয় সর্বচ্চ মিনিট আটেক হাঁটলেই আপনি দেখতে পাবেন পাহাড় থেকে নিচে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি আছে। পাহাড়ের ধার কেটে তৈরি করেছে এই পাকা সিঁড়ি।


সবার আগে সিঁড়ির কাছে পৌছে গেছে ইস্রাফীল ও সাইয়ার।

এই সিঁড়ির শেষ মাথাতেই রিছাং ঝর্ণার জল গড়িয়ে যাচ্ছে। সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই দূরে ছোট্ট একটি চিকন জলধারা দেখা যায়, সেটাই আমাদের গন্তব্য – “রিছাং ঝর্ণা”। বুসরা দূর থেকে ঝর্ণা দেখে বলে উঠলো – “দেখ আকাশ থেকে পানি পড়তেছে”।


সিঁড়ির শেষ দেখা না গেলেও ঝর্ণাটাকে কিন্তু দেখা যাচ্ছে।

মনে হবে অসংখ্য সিঁড়ি নেমে গেছে নিচের দিকে, এই সিঁড়ি আর শেষ হবে না। ছবি তুলতে তুলতে আর চারপাশ দেখতে দেখতে ধীরে সুস্থে নেমে যাওয়া যায়, সময় পাঁচ মিনিটের বেশি লাগে না।


সিঁড়ি বেয়ে যতই নিচে নামবেন ততই আপনার চোখের সামনে উৎভাসিত হতে থাকবে রিছাং ঝর্ণা তার রূপ-শুধা আর স্বচ্ছ জল নিয়ে।


এটা কিন্তু কাশ ফুল নয়, ফুলের ঝাড়ু তৈরি হয় এই ফুল থেকে।

ঝর্ণাটি আসলেই চমৎকার, বর্ষার সময় এর সৌন্দর্য নিশ্চয় আকাশ ছোঁয়া হয়। এই শীতের খটখটে শুকনোর সময়েও ঝর্ণাটি তার আকর্ষণীয় ক্ষমতা অটুট রেখেছে। পাহাড়ের উপর থেকে ছোট্ট একটা অংশ দিয়ে চিকন ধারায় ঝরছে জল ঝর্ণা হয়ে।

সেখান থেকে ঝর্ণার জল গড়িয়ে পরছে পাহাড়ের ঢালু কিনারায়। আসলে বলে বা ছবিতে কিছুতেই এই ঢালু অংশের বর্ণনা দেয়া সম্ভব না। ঢালুটার অনেকটা মিল আছে আমাদের মুনাজাত ধরার সময় দুই তালু যেখানে মিলে সেই অংশের সাথে।

যাইহোক এই ঢুলু অংশ দিয়ে ঝর্ণার জল বিশাল এক প্রাকৃতিক ওয়াটার স্লিপারে মত তৈরি করেছে। এখান থেকে জল গড়িয়ে গিয়ে স্লিপারের শেষ অংশে একটি স্বচ্ছ জলাধারে জমা হচ্ছে। এই অংশটা টলটলে বরফ শীতল জলে পরিপূর্ণ। খুব বেশি গর্ত না এখানে। আপনার যদি জলে ভিজতে আপত্তি না থাকে তাহলে ঝর্ণার গোড়া থেকে প্রাকৃতিক স্লিপারে চরে শাই করে নেমে আসতে পারবেন এই নিচের জলা ধারে। তারপর জল ডিঙ্গিয়ে উঠে আসবেন সিঁড়ির দিকের শুকনো ভূমিতে।

এই জলাধার থেকে চিকন একটা নালার মত হয়ে জল পাহাড়ের নিচের দিকে গড়িয়ে যেতে থাকে। জলাধারের পাশে ছোট্ট একটা পাথুরে যায়গা রয়েছে। প্রকৃতি তার সৌন্দর্য উপভোগের জন্য নিজ হাতে তৈরি করে রেখেছে বসার যায়গা। কিন্তু হায় মানুষের সেই সৌন্দর্যের মাঝে নিজেদের অসুন্দর মনের পরিচয় দিতে সামান্য কষ্ট হয় না। কোন একদল সৌন্দর্য পিপাষু পর্যটক তাদের সৌন্দর্য উপভোগের সাথে সাথে সেখানে বসে হয়তো দুপুরের খাবার খেয়েছিল। তাতে কোন দোষ নেই, কিন্তু খাওয়া শেষে খাবারের প্যাকেট, পানির বোতল, প্লাস্টিকের ব্যাগ ইত্যাদি ফেলে রেখে গেছে সেখানেই। কবে আমরা আর একটু সচেতন হব!!

ঝর্ণার কাছে যেতে হলে আপনি দুটি পথ ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমটি হচ্ছে – আপনার ভিজার ইচ্ছে থাকলে জলাধার পার হয়ে ঢালু অংশটা ধরে উঠে যাবেন। আমরা এই পথে যাইনি, কারণ আমাদের ভেজার কোন প্রোগ্রাম ছিলনা। তাই আমরা ধরলাম বিকল্প পথ, পাহাড়ের গাঁ বেয়ে উঠা। বাচ্চা আর তাদের মায়েদের নিয়ে উঠতে সামান্য বেগ পেতে হয়েছে সেটা অস্বীকার করছি না। তবুও সব কষ্ট সার্থক হয়ে যায় উপরের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যের কাছে।

ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য আখ্যায়িত করার কারণ হচ্ছে, ঝর্ণা যে সুন্দর তাত বলার অপেক্ষা রাখে না, আর ভয়ঙ্কর হচ্ছে উপরের বিশাল ঢালু অংশটা। একটু অসাবধান হলেই পা পিছলে চলে যেতে হবে প্রাকৃতিক স্লিপার ধরে একে বারে নিচের জলা ধারে, আপনার পানিতে ভেজার পরিকল্পনা থাক আর নাই থাকে, ভিজতে আপনাকে হবেই। হাঁটু কুনোই ছুলবে সেটা বোনাস, তাই সাবধান। শীতকাল হওয়াতে আমরা কিছুটা সুবিধা পেয়েছি, উপরটা ভেজা থাকলে আর দেখতে হতো না। এখানে আমাদের সবচেয়ে বেশি ভয় ছিল বুসরাকে নিয়ে। কিছুতেই স্থীর থাকতে চাইছিল না।


বসির ফ্যামেলী


ইস্রাফীল ফ্যামেলী


দস্যু পরিবার


স্বপন

ঐখানে বসে কিছুক্ষণ ফটোশেসান চলল।

তারপর আবার সবাইকে হাত ধরে ধরে নামানোর পালা। নিচে নেমে শিশুরা তাদের শিশুতোষ খেলায় মেতে উঠে, ছোট লাঠি নিয়ে জলার জলে জলের নকশা তৈরির খেলায়।

প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় আর কিছুটা সময় কাটিয়ে আস্তে ধীরে উপরে উঠতে শুরু করি।

অনেকগুলি সিঁড়ি টপকাতে হবে আবার। সিঁড়ি টপকিয়েই শেষ না, নামার সময় যেটা ছিল ঢালু পথ এবার সেটা হবে খাড়া চরাই। তাই হাঁটতে থাকো। অবশ্য এই পথে বিশ্রাম নেয়ার যায়গার কোন কমতি নেই। ইচ্ছে করলেই বসে পরতে পারেন সিঁড়িতে, আর যদি একবারে সিঁড়ি টপকাতে চান তাহলে সিঁড়ি শেষ হলেই পাবেন বসে বিশ্রাম নেয়ার বিশ্রামাগার।


কাঁচা হলুদ সংগ্রহ করছে

দেখতে দেখতে একসময় সিঁড়ি টপকে চলে আসি পায়ে চলা রাস্তা, সেটাও শেষ হয়ে যায় একসময়।


ঢালু পথে এবার ফিরে আসা

এসে পৌছাই আমাদের গাড়ির সামনে। এখানে একটা টং দোকানের মত আছে। রিছাং ঝর্ণার মালিক এই দোকানের স্বত্বাধিকারী।


রিছাং ঝর্ণার স্বত্বাধিকারী।


সবশেষে বলেন এটা কি জিনিস?

NF_1_ (7)

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৬

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো। এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানিক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে। যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

৫১। দেশের নাম : India ভারত

জাতীয় ফুলের নাম : পদ্ম
ইংরেজী নাম : Lotus
বৈজ্ঞানিক নাম : Nelumbo Nucifera
ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।

৫২। দেশের নাম : Indonesia ইন্দোনেশিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : বেলি
ইংরেজী নাম : Jasmine
বৈজ্ঞানিক নাম : Jasminum Sambac
ছবি তুলেছে বন্ধু ইস্রাফীল

৫৩। দেশের নাম : Iran ইরান

জাতীয় ফুলের নাম : লাল গোলাপ
ইংরেজী নাম : Red Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa
ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।

৫৪। দেশের নাম : Iraq ইরাক

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa
ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।

৫৫। দেশের নাম : Ireland আয়ারল্যাণ্ড

জাতীয় ফুলের নাম : কোন জাতীয় ফুল নেই তবে একটি পাতার সেম্বল আছে
ইংরেজী নাম : Shamrock
বৈজ্ঞানিক নাম :
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৫৬। দেশের নাম : Israel ইসরাইল
জাতীয় ফুলের নাম : কোন জাতীয় ফুল নেই

৫৭। দেশের নাম : Italy ইতালি

জাতীয় ফুলের নাম : লিলী
ইংরেজী নাম : Stylized Lily
বৈজ্ঞানিক নাম :
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৫৮। দেশের নাম : Jamaica জ্যামাইকা

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Lignum Vitae, Wood of Life
বৈজ্ঞানিক নাম : Guaiacum Sanctum
ছবি : উইকি থেকে সংগ্রহীত

৫৯। দেশের নাম : Japan জাপান

জাতীয় ফুলের নাম : হলুদ চন্দ্রমল্লিকা
ইংরেজী নাম : Chrysanthemum
বৈজ্ঞানিক নাম : Chrysanthemum
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৬০। দেশের নাম : Jordan জর্ডান

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Black Iris
বৈজ্ঞানিক নাম : Iris Nigricans
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

A_01_ (11)

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – আলুটিলা গুহা

২৫ তারিখ রাতে ““খাগড়াছড়ির পথে…”” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে আমাদের “খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু” হয় আলুটিলা গুহা দিয়ে। আজ এই অংশে বলবো আলুটিলা গুহার ভ্রমণ কথা।


খাগড়াছড়ি থেকে আলুটিলা ও রিসং ঝর্নার ম্যাপ

খাগড়াছড়ি শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে আলুটিলা পাহাড় চূড়ায় পৌছতে খুব বেশি সময় লাগেনা। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের সামনে নেমে কিছুটা নস্টালজিকে আক্রান্ত হই। সময়টা খুব সম্ভবত ২০০০ বা ২০০১ সাল, আমরা চার বন্ধু এসেছিলাম এখানে। সেই চার জনের দু’জন আমি আর ইস্রাফীল আবার আসলাম।

গেটের পাশেই থাকে মশাল তৈরির কারিগররা। আমাদের দেখে মশাল ওয়ালারা মশাল তৈরি করতে শুরু করে দিলো, যদিও আমরা একটা মশালও কিনিনি। প্রথম বার যখন এসেছিলাম তখন মনে হয় তিনটা মশাল কিনে ছিলাম, লোকজন বলা-বলি করতে ছিল- “গুহার ভিতরে টর্চ লাইট জ্বলে না”। আসলে কথাটা ঠিক না। ২০০০ সালের দিকে পত্রিকাতে এই গুহা সম্পর্কে একটা প্রতিবেদন পড়ে প্রথম এটার কথা জানতে পারি। প্রতিবেদনে বলা ছিল –

প্রাকৃতিক এই গুহাটা বিশাল বড়, প্রায় আধা ঘণ্টা সময় লাগে পুরটা পেরুতে। ভেতরে আছে অনেক জোক আর বাদুর, আর দেখা মিলতে পারে ব্যাঙ আর সাপেরও। ভেতরে বরফ শীতল পানি কোথাও কোথাও অনেক বেশি। তাই সাবধানে যেতে হবে। এই সব…..।

আমাদের এবারের ভ্রমণের ট্রেজারার বসির। সমস্ত টাকা জমা দেয়া হয়েছে ওর কাছে, সমস্ত লেনদেন করবে ও, তাই বসির গেলো টিকেট কাটতে। বসির টিকেট কাটতে কাটতে আমরা ভিতরে চলে যাই। গেটের বাম দিকে যে রাস্তাটা গিয়েছে সেটাই গেছে আলুটিলা গুহাতে। ঢালু এই রাস্তা ধরেই এগিয়ে যেতে হবে আপনাকে।

যারা আগে যাননি এখানে তাদের বলি এই রাস্তা ধরে কিছু দূর এগিয়ে গেলেই দেখতে পাবেন একটি বিশ্রামের জন্য বসার স্থান। এখান থেকে দূরের খাগড়াছড়ি শহর আপনার চোখের সামনে বিছিয়ে আছে দেখতে পাবেন।

বিশ্রামাগারের বাম দিকে একটা সিঁড়ি নেমে গেছে, খুব বেশি হলে ৪০/৪৫ ধাপ। এটা দিয়ে নামবেন না। সোজা সামনের দিকে আরেকটা সিঁড়ি দেখতে পাবেন। এই সিঁড়িতে ধাপ আছে প্রায় ২৮০টির মত। আপনি যদি প্রথম বাম দিকের সিঁড়ি দিয়ে নামেন তাহলে আপনাকে দ্বিতীয় সিঁড়ির ২৮০ টি ধাপ টপকে উঠতে হবে।


সাহস করে নামতে শুরু করুন, যার শুরু আছে তার শেষও আছে


প্রথমবার যখন আমরা গিয়েছিলাম তখন কিন্তু এই সিঁড়ি ছিলো না

যাইহোক দ্বিতীয় এই সিঁড়ি দিয়ে নেমে দেখতে পাবেন একটি বটগাছ। এখানে একটু বিভ্রান্তি লাগতে পারে- কোন দিকে যাবো!!


নিচের পাহাড়ি সৌন্দর্য দেখছে সবাই।

বাম দিকে একটু সামনে আর কয়েক ধাপ সিঁড়ি দেখতে পাবেন, এর নিচেই আছে গুহার নিচের দিকের মুখ। অন্ধকার রহস্যময় হাতছানি দিয়ে ডাকবে আপনাকে আলুটিলা গুহা।


সিঁড়ি শেষ হয়ে গেছে এই আনন্দেই সবাই

আমরা স্যান্ডেল খুলে তৈরি হতে থাকি গুহায় ঢুকার জন্য। তখনই লক্ষ্য করি আমাদের গ্রুপের দুইজন মিস্টেক অব দা সেঞ্চুরি করে বসে আছে।
প্রথম জন স্বপন – বেচারা পরে এসেছে জুতা মুজা, এখন খুলতে সমস্যা নাই কিন্তু পরে নোংরা পায়ে পরবে কি করে?
দ্বিতীয় জন আমি নিজে – পরে এসেছি সেমি নেরো জিনস প্যান্ট। হাঁটু পর্যন্তই প্যান্ট গুটিয়ে উঠাতে পারছি না।

সকলের জুতা-স্যান্ডেল খুলে আরেক সমস্যার সম্মুখীন হলাম। এগুলি নিবো কি করে। পাশেই কলা গাছ থেকে একটা ফিতার মত অংশ ছিঁড়ে নিয়ে সেটার ভিতরে সবগুলি জুতা-স্যান্ডেল ঢুকিয়ে বেঁধে ধরিয়ে দেয়া হল স্বপনের হাতে। এবার শুরু হল গুহা অভিযান।

গুহার মুখের সামনে দাঁড়ালে আপনার মনে হবে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন আপনার বাসার ফ্রিজ খুলে তার সামনে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সময় যেটাই হোক গুহার ভেতর থেকে শীতল হাওয়ার রহস্যময় স্পর্শ আপনার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে।


সবার আগে গুহার প্রবেশ মুখে ইস্রাফীল

উপরে গুহা সম্পর্কে পত্রিকার প্রতিবেদনে যা বলেছে আসলে এসব কিছুই না। প্রথম বারেই দেখেছি গুহাটা খুব বেশি বড় কিছু না, ১০ মিনিটের মধ্যেই পার হয়ে আসা যায়।


সবাই গুহার ভেতরে এখন

ভেতরে অনায়াসে টর্চ লাইট জ্বালান যায়। তেমন কোন জোক দেখিনি, সাপ-ব্যাঙের প্রশ্নই আসে না। কারণ গুহার ভেতরটা প্রায় ফ্রিজের মত ঠাণ্ডা, আর আমি যতদূর জানি সাপ-ব্যাঙ ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলে। ভাগ্য ভালো থাকলে বাদুরের দেখা পেতেও পারেন। পানি এক যায়গায় হাঁটুর কাছাকাছি, আর এক যায়গায় হাঁটুর উপরে উঠে যাবে। তবে যেখানে পানি বেশি সেই যায়গাটা দু’দিকে পা দিয়ে অনায়াসে পার হয়ে যাওয়া যায়। ভেতরটা ঠাণ্ডা-অন্ধকার, খুব সুন্দর। কোথাও পাহাড়ের গা চুইয়ে জল ঝরছে, তাই ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে সেই যায়গাগুলি।


আলুটিলা গুহা অভ্যন্তরে

আপনাকে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে তা হচ্ছে আপনার মাথা। কারণ কিছু দূর গেলেই গুহার ছাদ ধীরে ধীরে নিচে নেমে আসবে। এক সময় আপনাকে কুঁজো হয়ে এগুতে হবে। ছাদের উচ্চতার দিকে লক্ষ্য না রাখলে ১০০% নিশ্চয়তা সহকারে আপনি মাথায় ব্যথা পাবেন।

বসিরের মেয়ে বুসরা ছিল ওর বাবার কোলে, অসাবধানতার কারণে বুসরার মাথা লেগে যায় গুহার ছাদে, ব্যথা পেয়ে কাঁদতে থাকে বেচারি।


বুসরার মাথা ঠুকে গিয়েছিল গুহার ছাদে

গুহার মাঝা-মাঝি অংশ পর হয়ে কিছু দূর এগোলেই মনে হবে গুহাটা দুদিকে দুটি টানেলের মত গিয়েছে। আসলে বাম দিকেরটা ছোট্ট একটা কানা গলি। ডান দিকের টা বেরিয়েছে বাইরের আলোতে। এইখানটাতে কিচ্ছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নিতে পারেন, তুলতে পারেন ছবি। ডান দিকে আগাতে গেলেই বড় বড় পাথর আপনার পথ আগলে রুখে দাঁড়াবে। ভয় নেই অনায়াসেই এদের টপকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।


প্রায় বেরিয়ে এসেছে গুহা থেকে, সামনেই আলোর বন্যা


গুহার উপরের দিকের বেরুবার মুখ

গুহার ভেতরে ধারালো কোন পাথর নেই যাতে লেগে আপনার পা কাটতে পারে। তাই খালি পায়েই যেতে পারেন। তবে অবশ্যরই পা কোথায় ফেলছেন সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। কারণ ধারালো পাথর বা সাপ-জোক না থাকলেও কিছু অসচেতন পর্যটকের ফেলে যাওয়া বাঁশের মশালে পা পরলে আপনার পা কাটতেই পারে।


আগেই বলেছি সবার জুতা-স্যান্ডেল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে স্বপনের হাতে


গুহা থেকে বেরিয়ে একটু উপরে উঠলেই একপাশে নিচে ছোট্ট এই পুকুর, এখান থেকে পানি আনছে পা ধোয়ার জন্য


পানি আসার অপেক্ষায় আছে

দুই অংশের অল্প কয়েক ধাপ সিঁড়ি টপকে উঠেপরা যাবে আবার সেই বিশ্রামাগারের কাছে। এবার বুঝবেন আসলেই এই যায়গাটায় বিশ্রামাগার রাখা কতটা ভালো হয়েছে। এখানে বসে ঠাণ্ডা বাতাসে যেমন গাঁ জুড়বে তেমনি দূরে শহরের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য আপনার দৃষ্টিকেও শান্তি দিবে।


আবার সেই ঢালু পথ ধরেই উপরে উঠা শুরু

এখানে কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নিয়ে আমরা আবার ঢালু পথ ধরে এগিয়ে উঠতে থাকি উপরের দিকে। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য রিসাং ঝর্না। ছুটে চলছি তার দিকেই……


এবার চলেছি রিসাং ঝর্নার দিকে…..

আগামী পর্বে দেখা হবে রিসাং ঝর্ণার ধারে।

A_01_ (11) - Copy

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৫

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো। এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে। যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

৪১। দেশের নাম : Greece গ্রীস

জাতীয় ফুলের নাম : বাসকগোত্রীয় ফুল
ইংরেজী নাম : Bear’s breeches, Sea dock, Bearsfoot, Oyster plant
বৈজ্ঞানিক নাম : Acanthus Mollis
ছবি : উইকি থেকে সংগ্রহীত

৪২। দেশের নাম : Greenland গ্রীনল্যাণ্ড

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Willow Herb
বৈজ্ঞানিক নাম : Epilobium
ছবি : উইকি থেকে সংগ্রহীত

৪৩। দেশের নাম : Guam গুয়াম

জাতীয় ফুলের নাম : বাগানবিলাস
ইংরেজী নাম : Bougainvillea, Puti Tai Nobiu
বৈজ্ঞানিক নাম : Bougainvillea Spectabilis

ছবি তোলার স্থান : হাতির ঝিল, ঢাকা।

৪৪। দেশের নাম : Guatemala গুয়াতেমালা

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : White Nun Orchid, Monja Blanca
বৈজ্ঞানিক নাম : Lycaste Skinnerialba
ছবি : নেট থেকে সংগ্রহীত

৪৫। দেশের নাম : Guyana গায়ানা

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Water Lily
বৈজ্ঞানিক নাম : Victoria amazonica
ছবি : উইকি থেকে সংগ্রহীত

৪৬। দেশের নাম : Holland  হল্যান্ড (নেদারল্যান্ডস)

জাতীয় ফুলের নাম : টিউলিপ
ইংরেজী নাম : Tulip
বৈজ্ঞানিক নাম : Tulipa

ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।

৪৭। দেশের নাম : Honduras হন্ডুরাস

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Brassavola Digbiana
ছবি : উইকি থেকে সংগ্রহীত

৪৮। দেশের নাম : Hong Kong হংকং

জাতীয় ফুলের নাম : কাঞ্চন
ইংরেজী নাম : Hong Kong Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Bauhinia Blakeana

ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।

৪৯। দেশের নাম : Hungary হাঙ্গেরি

জাতীয় ফুলের নাম : টিউলিপ
ইংরেজী নাম : Tulip
বৈজ্ঞানিক নাম : Tulipa

ছবি তোলার স্থান : শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।

৫০। দেশের নাম : Iceland আইস্ল্যাণ্ড

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Mountain Avens, white dryas, white dryad
বৈজ্ঞানিক নাম : Dryas Octopetala
ছবি : উইকি থেকে সংগ্রহীত


ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

A_01_ (11)

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু

২৫ তারিখ রাতে “খাগড়াছড়ির পথে…” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। শ্যামলীর বাস এসে তার শেষ গন্তব্য খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরের সামনে আমাদের নামিয়ে দেয়।

বাস থেকে নেমেই দেখি অস্ত্রধারী কয়েকজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকেই এদের সাথে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন, আমি করি না, বরং আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এরা পথ আর হোটেল সম্পর্কে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
ওরা জানালো –
“আশেপাশে কোন খুব ভালো মানের হোটেল নাই। মোটামুটি মানের হোটেল আছে। ভালো মানের হোটেল পেতে হলে যেতে হবে শহর থেকে সামান্য দূরে।”
ওদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের কাছে ফিরে এলাম। যেহেতু সাথে ফ্যামেলি আছে তাই শহরের বাইরে হোটেলে ওটার প্রশ্নই আসেনা। ঠিক করলাম, সামনের রেস্টুরেন্টে সবাইকে বসিয়ে আমি আর ইস্রাফীল বের হবো কাছের হোটেল গুলির পরিস্থিতি দেখতে।

আমাদের সামনেই দেখলাম “মনটানা হোটেল” (রেস্টুরেন্ট), এখানেই সবাইকে বসে আপাতত সকালের নাস্তা করার কথা বলে আমি আর ইস্রাফীল বেরিয়ে এলাম।

আশেপাশে দুটি মোটামুটি মানের হোটেলের নাম পাওয়া গেলো, একটির নাম মনে নাই। অন্যটি নতুন হয়েছে “হোটেল নিলয়”।
নাম মনে নাই হোটেলে গিয়ে দেখি চার তালা পর্যন্ত সমস্ত রুমে তাদের গেস্ট আছে। আমাদের লাগবে ৩টি কাপোল বেড ও একটি সিঙ্গেল। কাপোল বেডের ভাড়া দিতে হবে ৬০০/= টাকা আর সিঙ্গেল ৪০০/= টাকা। রুমগুলি মোটামুটি বড়ই বলা চলে। আমাদের চলে যাবে, তবে সমস্যা হচ্ছে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে পাঁচ তালাতে উঠাটা পছন্দ হচ্ছে না। এখান থেকে বেরিয়ে ফিরে আসলাম রেস্টুরেন্টে। ৫ তালার কথা শুনে সবাই এক বাক্যে নিষেধ করে দিল।

তাই নাস্তা করে আমি আর ইস্রাফীল গেলাম “হোটেল নিলয়”-এ। শাপলা চত্বরের পাশেই। এখানেও নিচে কোন রুম নেই ৩ তালাতে একটি আর ৪ তালাতে বাকি গুলি দিতে পারবে। মাঝারি সাইজের রুম। কাপোল রুম ৫০০/= টাকা আর সিঙ্গেল রুম ৪০০/= টাকা করে। যেহেতু আমরা সকালের প্রথম গেস্ট আর অনেকগুলি রুম নিচ্ছি তাই আমাদের কাছে প্রতি রুমে ১০০ করে কম নিবে।

আমরা চিন্তা করলাম একটা রাতেরই ব্যাপার কোন রকমে কাটিয়ে দেই। আগামী কাল রাঙ্গামাটিতে ভালো কোন হোটেলে উঠবো। ইস্রাফীল গেলো বাকিদের নিয়ে আসতে আর আমি বসে গেলাম হোটেলের ফর্ম পূরণ করতে। ৭টা ফর্ম পূরণ করতে করতে সকলেই চলে আসলো। আমি নিলাম ৩ তালার রুমটা বাকিরা উপরে।

যাইহোক, হোটেলে উঠে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে পরবো ঘুরতে।
এই প্রস্তাবে বসির রাজি হল না।
আমাদের অস্থির ড্রাইভারের কারণে সারা রাত ঘুমাতে পারে নি, তাই এখন ঘুম দিবে।
আমি বললাম ঠিক আছে ১১টার মধ্যে সবাই বেরিয়ে পরব। আপাতত বিদায়।
নিজের রুমে ঢুকতে ঢুকতে বসির বলল – “১২টার আগে ঘুমই ভাংবো না”।
দিনের বেলা আমার ঘুম হয় না, একটু গড়াগড়ি করে উঠে পরলাম।


খাগড়াছড়ির হোটেল “নিলয়” এর চার তালার বারান্দা থেকে নিচের ব্যস্ত রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। ঝকঝকে রোদ উঠেছে। বেরানোর জন্য অতি চমৎকার আবহাওয়া। সবাই রেডি, বসির এখনো ঘুমায়। বসির তার কথা রেখেছে ১২টার পরে ঘুম থেকে উঠেছে।


আমার মেয়ে সাইয়ারা, সব সময় সবার আগে রেডি।

সবাই যখন রেডি হয়ে বেরিয়েছি তখন দুপুরের খাবার সময় হয়ে গেছে। কোন দিকে না তাকিয়ে সেই “মনটানা” রেস্টুরেন্টেই গিয়ে বসলাম।


বাম দিক থেকে স্বপন ও বসির।

খাবারের অর্ডার দেয়ার ফাঁকে আমি উঠে গিয়ে চান্দের গাড়ী আর টেম্পোর ড্রাইভারদের সাথে আলাপ করে আসলাম।
আমরা যাব, প্রথমে আলুটিলা গুহা, সেখান থেকে রিছাং ঝর্ণা, তারপর শতবর্ষী বটগাছ আর সব শেষে ঝুলন্ত সেতু
চান্দের গাড়ী চাইল ৪,৫০০/= টাকা, আর টেম্পো চাইলো ২,২০০/= টাকা।
মোটামুটি একটা আইডিয়া নিয়ে আমি দুপুরের খাবারে ফিরে আসলাম।


আমাদের ভাড়া করা গাড়ী আসছে, বিরক্তি নিয়ে অপেক্ষায় আছে সাইয়ারা আর বুসরা।

খাওয়া দাওয়া শেষে ঠিক করলাম একটি টেম্পো নিয়েই যাওয়া হবে। টেম্পোর ড্রাইভারদের সাথে আলাপ করে শেষ পর্যন্ত ১,৮০০/= টাকায় রফা হল। শুরু হলে আমাদে যাত্রা……


অনেকটা পথের সওয়ারি আমরা, তাই বেশি করে তেল নিয়ে নিচ্ছে।

আমাদের প্রথম গন্তব্য শহর থেকে ৮ কিঃ মিঃ পশ্চিমে আলুটিলা পাহাড় চূড়ায় আলুটিলা গুহা। চলতে শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই শহরের মূল অংশ পার হতেই শুরু হলে পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা রাস্তা।


পাহাড়ি পথ


এই রুক্ষতার মাঝেও ফুটেছে কিছু পাহাড়ি ফুল


ফুটেছে পাহাড়ি কাশফুল


এটা কিন্তু পাহাড়ি ফল না।


পাহাড়ি ছড়ার উপরে এই ধরনের ব্রিজ অহরহই দেখা মিলে।

কোথাও উতরাই আবার কোথাও চড়াই। উতরাই গুলি সহজোই উতরে যাচ্ছে, কিন্তু কিছু কিছু চড়াই এতটাই বেশি যে আমাদের মিনিমাম দু’জন নেমে যেতে হচ্ছে। এমনও দু-একটা চড়াই এসেছে যেখানে প্রায় সবাইকেই নামতে হয়েছে।


আমাকে নামতে হয়েছে, নইলে এই চরাই চরতে পারবে না।


শীতে পাতা ঝরছে সমস্ত গাছেদের


শীতের সময় পাহাড়ে বেড়াবার সবচেয়ে খারাপ দিক এটা। পাহারগুলি থাকে মৃতপ্রায়।


পাতা ঝরা রাবার বাগান

বি.দ্র. : এই পোস্টের সবগুলি ছবি তুলেছে বন্ধু “ইস্রাফীল “।

চলবে……

NF_1_ (42) - Copy

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৪

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো।
এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে।
যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই।
আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

৩১। দেশের নাম : Czech Republic চেক প্রজাতন্ত্র

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

ছবি তোলার স্থান : মোঘল গার্ডেন, শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।
তারিখ : ২৮/০৫/২০১৫ ইং

৩২। দেশের নাম : Denmark ডেনমার্ক

জাতীয় ফুলের নাম : ডেইজি
ইংরেজী নাম : Paris Daisy, Marguerite, Marguerite Daisy
বৈজ্ঞানিক নাম : Argyranthemum Frutescens

ছবি তোলার স্থান : বেতাব ভ্যালি, পেহেলগাম, ভারত।
তারিখ : ২৭/০৫/২০১৫ইং

৩৩। দেশের নাম : Ecuador ইকোয়াডর

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

ছবি তোলার স্থান : মোঘল গার্ডেন, শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।
তারিখ : ২৮/০৫/২০১৫ ইং

৩৪। দেশের নাম : Egypt মিশর

জাতীয় ফুলের নাম : মিশরিয় সাদা শাপলা
ইংরেজী নাম : Lotus, White Egyptian lotus
বৈজ্ঞানিক নাম : Nymphaea Lotus
ছবি : উইকি

৩৫। দেশের নাম : Estonia এস্তোনিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : কর্ণফ্লাওয়ার
ইংরেজী নাম : Corn-flower, Bachelor’s Button Centaurea
বৈজ্ঞানিক নাম : Centaurea Cyanus
ছবি তোলার স্থান : সামরিক জাদুঘর, ঢাকা।

৩৬। দেশের নাম : Ethiopia ইথিওপিয়া

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Calla Lily, arum lily
বৈজ্ঞানিক নাম : Zantedeschia aethiopica
ছবি : উইকি

৩৭। দেশের নাম : France ফ্রান্স

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Iris, Stylized Lily
বৈজ্ঞানিক নাম :
ছবি : উইকি

৩৮। দেশের নাম : French Polynesia পলিনেশিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : তাহিতিয়ান গন্ধরাজ
ইংরেজী নাম : The Tiare
বৈজ্ঞানিক নাম : Gardenia Taitensis
ছবি : উইকি

৩৯। দেশের নাম : Finland ফিনল্যাণ্ড

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Lily-of-the-Valley
বৈজ্ঞানিক নাম : Convallaria Majalis
ছবি : উইকি

৪০। দেশের নাম : Germany জার্মানি

জাতীয় ফুলের নাম : কর্ণফ্লাওয়ার
ইংরেজী নাম : Corn-flower, Bachelor’s Button Centaurea
বৈজ্ঞানিক নাম : Centaurea Cyanus

ছবি তোলার স্থান : সামরিক জাদুঘর, ঢাকা।


ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

খাগড়াছড়ির পথে……

সময় রাত ১০টা, ২৫শে জানুয়ারি, সাল ২০১৪ইং।
শ্যামলী পরিবহনের রাত ১১টা ৩০ মিনিটের বাসের টিকেট কাটা আছে, গন্তব্য খাগড়াছড়ি। এবারের ভ্রমণে সদস্য সংখ্যা জন।
দস্যু পরিবারের ৩ জন : আমি (সারোয়ার সোহেন), মিসেস সোহেন, আর আমাদের মেয়ে সাইয়ারা সোহেন।
ইস্রাফীল এবং ওর ওয়াইফ।
বসির, মিসেস বসির আর ওদের মেয়ে বুসরা।
এবং সব শেষে আছে বসিরের খালাত ভাই স্বপন।


মাইক্রো বাসে যাত্রাবাড়ীর পথে যাত্রা শুরু…..

সাড়ে ১০টার দিকে মাইক্রো বাস আসে বাসার সমনে। সবাই গিয়ে বসে গাড়িতে। রাত আর ইস্তেমার কারণে রাস্তা বেশ ফাঁকা, অল্প সময়েই পৌঁছে যাই যাত্রাবাড়ীর শ্যামলীর ৩নং কাউন্টারের। সাড়ে এগারোটা পার হয়ে যায়, বাস আসে না। রাতের ১২টার দিকে বলা হয় বাস এসেছে ৪নং কাউন্টারে। আমরা সবাই তখন হাঁটা ধরি ৪নং কাউন্টারের দিকে। এটাই শুরু, এর পরে আরো অনেক হাঁটতে হবে আমাদের এবারের ভ্রমণে।

কিছুক্ষণ পরেই যাত্রা শুরু করে আমাদের বাস, এ-রাস্তা সে-রাস্তা ঘুরে যাত্রাবাড়ী ফ্লাই-অভারে উঠে আসে বাস। ক-মাস আগেও যে রাস্তাটুকু জ্যাম ঠেলে পেরুতে ঘণ্টা দেড়েকের মত সময় লাগত, তা কয়েক মিনিটেই পেরিয়ে আসি।


দুই পিচ্চির জন্য একটা বেশি সিট নেয়া হয়ে ছিলে। যাত্রার শুরুতে সেই সিটের দখল ওরা বুঝে নেয়।

ঢাকা চট্টগ্রাম রোড চার-লেন করার কাজ চলছে, সেই রাস্তা দিয়ে ঝড়ের বেগে এগিয়ে চলে আমাদের বাস। প্রচণ্ড রাফ চালাচ্ছিল আমাদের ড্রাইভার সাহেব, যদিও গাড়ির উপর উনার কন্ট্রোল দেখার মতো ছিল। মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে যাই কুমিল্লা চৌদ্দ গ্রামে। এখানে যাত্রা বিরতি ২০ মিনিট। ২০ মিনিট পরে আবারো বাস ছুটে চলে ঝড়ের বেগে, ঝড়ের বেগেই ওভারটেক করে চলে একের পর এক বিভিন্ন পরিবহনের বাস গুলিকে। ঝাঁকুনি আর সাপের মত একে-বেকে চলার কারণে বাসের বেশির ভাগ যাত্রীই তখনো জেগে আছেন। প্রায় সারা রাত এদের জেগেই কাটাতে হয়েছিল শেষ পর্যন্ত।


মিস্টার এন্ড মিসেস বসির

রাত প্রায় সাড়ে তিনটার পরে চট্টগ্রামের (যায়গাটার নাম মনে নাই, খুব বেশি সম্ভব) “শান্তিরহাট” এসে থেমে যায় গাড়ি। সামান্য ঝিমুনির মতো এসেছিলো গাড়ি থামতেই তা কেটে গেলো।
বিষয় কি? গাড়ি থেমে আছে কেন?
তেমন কিছুই না। সমনে খাগড়াছড়ির পাহাড়ি রাস্তা প্রায় ৪ ঘণ্টার মত সময় লাগবে শহরে পৌছতে। রাস্তায় একটা গাছ কেটে ফেলে রাখলেই হল। নিশ্চিন্তে ডাকাতি করে চলে যেতে পারবে। রাস্তাটা খুবই নির্জন, তাই ড্রাইভার অপেক্ষা করতেছে আরো কয়েকটা গাড়ি আসলে এক সাথে সবাই রওনা হবে। এই সংবাদ শুনে ঘুমের ১২টা বেজে গেলো।


মিস্টার এন্ড মিসেস ইস্রাফীল

আমাদের অস্থির ড্রাইভার সাহেব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে পারলো না। আরেকটা বাস আসার পরেই গাড়ি ছেড়ে দিলো। আবার শুরু হল খাগড়াছড়ির সর্পিল পথে ছুটে চলা। এবারও গতি কিন্তু মোটেও কমলো না। একে-বেকে ছুটে চলার দরুন যারা জেগে ছিল তারা আর ঘুমতে পারলো না, আর যারা কুম্ভকর্ণের মতো আগে ঘুমিয়েছে তাদের তেমন কোন ব্যাঘাত হল না।

পাহাড়ি নির্জন পথে ছুটতে ছুটতেই এক সময় রাতের অন্ধকার ম্লান হয়ে চারদিকে এক ধরনের সাদা আলো ছড়িয়ে পরতে থাকলো। সেই আলোও তেমন জোরালো হতে পারলো না শ্বেত-শুভ্র কুয়ারা কারণে। এক সময় এমন অবস্থা হল দু’হাত সামনের রাস্তাই ঠিক মত দেখা যাচ্ছে না কুয়াশার কারণে। ড্রাইভারের সামনের কাচ ঘুলা হয়ে আছে বিন্দু বিন্দু শিশির কণা জমে।

এক সময় চোখে পরে সামান্য জনবসতির চিহ্ন। “শান্তিরহাট” থেকে চলা শুরু করার পরে কোন একটা বাস বা অন্য কোন যানবাহন চোখে পড়েনি আমাদের এই প্রায় ৪ ঘণ্টার পথে। একসময় দেখতে পাই খাগড়াছড়ি গেট। খাগড়াছড়ির শেষ স্টপেজে বাস থামার পরে আমরা নেমে আসি বাস থেকে। তখন সকাল ৭টার মত বাজে। এবার শুরু হবে আমাদের খাগড়াছড়ি ভ্রমণ।

চলবে……..

NF_1_ (40) - Copy

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৩

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো।
এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে।
যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই।
আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

২১। দেশের নাম : Bulgariaবুলগেরিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

২২। দেশের নাম : Canadaকানাডা

কোন জাতীয় ফুল নেই।তবে Maple Leaf ওদের জাতীয় সেম্বল।

২৩। দেশের নাম : Cayman Islandsকেম্যান দ্বীপপুঞ্জ

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Wild Banana Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Schomburgkia Thomsoniana

২৪। দেশের নাম : Chileচিলি

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Copihue, Chilean Bellflower
বৈজ্ঞানিক নাম : Lapageria Rosea

২৫। দেশের নাম : Chinaচীন

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Plum Blossom
বৈজ্ঞানিক নাম : Prunus Mei

২৬। দেশের নাম : Colombiaকলম্বিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : ক্রিসমাস অর্কিড
ইংরেজী নাম : Christmas orchid, May flower
বৈজ্ঞানিক নাম : Cattleya Trianae

২৭। দেশের নাম : Costa Ricaকোস্টারিকা

জাতীয় ফুলের নাম : বেগুনি অর্কিড
ইংরেজী নাম : Purple Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Guarianthe skinneri

২৮। দেশের নাম : Croatiaক্রোয়েশিয়া

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Iris Croatica
বৈজ্ঞানিক নাম : Hrvatska Perunika

২৯। দেশের নাম : Cubaকিউবা

জাতীয় ফুলের নাম : দোলনচাঁপা
ইংরেজী নাম : Butterfly Ginger Lily, White ginger lily, Mariposa
বৈজ্ঞানিক নাম : Hedychium coronarium

৩০। দেশের নাম : Cyprusসাইপ্রাসদ্বীপ

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।