সাইদুর রহমান এর সকল পোস্ট

সাইদুর রহমান সম্পর্কে

এ যাবত ২টি কাব্যগ্রন্থ (একক) এবং যৌথ ১৬টি কবিতা ও গল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে।

কেন এমন হয়

কেন এমন হয়

কেন এমন হয় বুঝি না কখনো
রাত কাটে তো হয় না সকাল
পথচলি রাতদিন, পাই না সীমান্ত;
হৃদয়ে পোষা আশ্বাস বিশ্বাস
সবই যেন পরিশেষে ভ্রান্ত।

বৃক্ষসবে প্রসবিত তার ঐ পল্লব
ছায়া দেবে ফল দেবে ভাবি
চির সংকল্পবদ্ধ, সতত নিশ্চিন্ত;
শুষ্কতার নিষ্পেষণে নিশ্চিহ্ন
কেন যে এমন হয়, নির্লিপ্ত।

অন্তরে যে পাখি বেঁধেছিল বাসা
কত অন্তরঙ্গ, করতো কানাকানি
গাইতো মনের হরষে সুখের গান
ভেঙ্গে দিয়েছি নাকি তার ডানা
হয় নীরব, করে অভিমান।

উড়ে শত তুফান মাথার উপর
ভাবি, বুঝি তা কেটে যাবে
কই কাটে, নেচে নেচে ঐ আবার;
বাজিয়ে অসুর দানবীয় বাদ্য
হাসে বৈশাখ, করি চিৎকার।

তারা কতটুকু চেয়েছিল

তারা কতটুকু চেয়েছিল

তারা কতটুকু চেয়েছিল তোমার কাছে
এক মুঠো ভাত খাবে
সঙ্গে এক লঙ্কা হবে
হয় হোক ঘর জীর্ণ
হোক সবুজ বির্বণ
এমন তো নয় নিঃস্ব তুমি, সবই আছে।

কতটুকুই বা ছিল তাদের আবদার
না সুরম্য অট্টালিকা
ধন জন্মে অহমিকা
পেতে এক প্রিয়জন
দিতে প্রেম তন মন
তুমিই তো দাও সবারে কত অবতার।

তোমার মাঝেও যেন কেমন এ বৈষম্য
কেউ পায় গোলা ভরে
বাঁচে কেউ ভিক্ষা করে
শ্বাস তবে দীর্ঘশ্বাস
কারো শান্তি বারো মাস
রত্ন ভাণ্ডার সবি তোমার, তবু এ কার্পণ্য।

রচনা:২০১৩

এই তো জীবন

এই তো জীবন

জীবনের স্রোত বহে নদীর মতন
কলকল তানে তবে গন্তব্য অজানা;
স্বপন ডানায় ঘুরে জগত কানন
সুখের আশায় সহে শত বিড়ম্বনা।
তমস বিবরে খুঁজে বেড়ায় সকাল
অভাব যন্ত্রণা সদা খেলে লুকোচুরি;
ব্যর্থতার উগ্র নৃত্যে হাসির আকাল
হৃদয়ের অতলান্তে কান্না আহাজারি।

সোনালি প্রত্যুষ দেয় যেন হাতছানি
ছুটছে জীবন, মিলে যদি সুখখান;
প্রাপ্তির খুশীতে যায় ভুলে সব গ্লানি
পতনে দলনে প্রাণ যত হোক ম্লান।
অবিরাম চলা তবু, এই তো জীবন
চাওয়া পাওয়া সেতো রয় অনুক্ষণ।

চতুর্দশপদী কবিতা
বিন্যাস: ৮ + ৬।
অন্ত্যমিল:: কখকখ, গঘগঘ, ঙচঙচ, ছছ

এ জগত সমুদ্রের সৈকতে

এ জগত সমুদ্রের সৈকতে

এ জগত সমুদ্রের সৈকতে
অস্তিত্বের প্রকাশ যেন চমকাতে চমকাতে;
অন্তরে স্বপ্ন জাগে সন্তর্পণে
ভরে উঠে জীবন অলংকারে, গানে গানে।

হাজারো বন্ধন বাঁধনে জড়ায়
লাগে কই মুহূর্ত সময়ে সবই হারিয়ে যায়;
শত বিচিত্র বৈচিত্র্যে ধাবমান
আয়োজন প্রচেষ্টা হৈহুল্লোড় শেষে প্রস্থান।

মাথায় বিশাল মুক্ত আকাশ
শেষে আনকা দুর্বিপাক, পতন, দীর্ঘশ্বাস;
গগনের পেট চিড়ে বজ্রাঘাত
বৃক্ষ উঁচু উঁচু, খিলখিল হাসি দৈবাৎ কাত।

হৃদয় বুকে যত শত আঁকিবুঁকি
প্রেমপত্র স্বপ্ন ছবি সবই যেন তবে ফাঁকি।
ডুবে বিকেলে সোনার লাল বল
বাহুবল ঔদ্ধত্য গর্ব সবই ছিল নিছক ছল।

বেড়ে উঠলে মায়ের কোলে পিঠে
আবারও আটকা চিরতরে বদ্ধ প্রকোষ্ঠে।
যতই পথ অতিক্রান্ত, দূর বহুদূর
হতেই হবে বন্দী, যেথা আঁধার ঘন ঘোর।

আসে ঐ ঋতু রাণী

আসে ঐ ঋতু রাণী

বর্ষার ক্রান্তি লগ্নে আসে ঐ ঋতু রাণী
মেঘেরাও পেয়েছে সে সংকেত বাণী;
আকাশ তাই স্বচ্ছ, জানাতে অভ্যর্থনা
পাই সুগন্ধ ফুটেছে যে হাসনা হেনা।

নদী তীরে কাশ ফুল দাঁড়িয়ে এমন
রাণীকে করবে যে পুষ্প মাল্য অর্পণ।
ঘরে ঘরে কত খাবারের আয়োজন
গাছে আছে পাকা তাল পাই যেন ঘ্রাণ।

রাণীর জন্যে হয় পিঠা আর পায়েস
আমন সবুজ মাঠে করে সে আয়েশ।
দুর্গাপূজো উৎসবে রাণী দেয় যোগ
গীত বাদ্যে হয় রাণীর ভোজন ভোগ।

নৃত্য তালে দোলে এই আকাশ বাতাস
তারা ঝলকে শশী আলোকে এ আবাস;
সে কি মোহনীয় এ আলোক সজ্জা আজ
ধরা রূপসী, এ তো শরতেরই কাজ।

ফুল এক গুচ্ছ

ফুল এক গুচ্ছ

বহু প্রতিক্ষার পরে,
আজিকার এই দিন এলো দ্বারে,
খুশীর প্রাচুর্য নিয়ে, এ সে কোরবানির ঈদ;

এসো সবাই একসাথে,
গাহি ঈদের গান, আনন্দ উচ্ছাস করি,
ভুলে যাই ছোট বড়, খুশীতে ভরি সবার হৃদ।

তোমরা যারা সদা,
দুঃখ কষ্টে, অনাহারে কর দিনযাপন,
আমার হৃদয় কাঁদে, ভাবি যে মোরে তব অংশন;

কিছুই পারিনি গো দিতে,
মোর এই নিবেদিত মন, জেনে রেখো,
তোমাদের পাশে, আমিও হামেশা হই গো দংশন।

হিন্দু ও মুসলিম,
বৌদ্ধ আর খৃষ্টান, এসো ভেদাভেদ ভুলে,
কোলাকুলি করি, আমরা মানুষ, সবাই সমান;

পশুপাখী বৃক্ষ যত,
যদি কারও মনের করে থাকি নিধন,
কোরবানির এই ঈদে, করিলাম তা কোরবান।

শেষে এইটুকু বলি,
তোমরা যারা, চারিপাশে আমার,
সকলেই যেন অনেক বড়, নয় কেহ তুচ্ছ;

যদি দিয়ে থাকি কষ্ট,
আজ খুশীর দিনে ক্ষমিয়ো মোরে,
নিয়ো মোর, প্রেম ভালোবাসা, আর ফুল এক গুচ্ছ।

এক মুঠো রোদ্দুর

এক মুঠো রোদ্দুর

কান পেতে ঐ শুন সময়ের বিলাপ
ইতিহাসের পাতা এখনও যে ভেজা;
স্বপ্ন ভাঙ্গার পর মানুষের প্রলাপ
কেউ করে অনুভব, নয় তত সোজা।
কত রক্তক্ষরণ হয়েছে এ মননে
মানুষ গুমরিয়ে কেঁদেছে অবিরত;
স্বপ্ন ও বাসনা প্রেম যত ছিল মনে
শেষে চুপসে গেছে হয়েছে সে নির্লিপ্ত।

সে তো ইতিহাস যেন নির্বাক পুস্তক
ধরে রাখে সবই হোক সে বীভৎস;
ধরে রাখে সব হোক এক বোঝা শোক
হয়ে প্রজন্মের কাছে অতীত উৎস।
এই শোক বিবর্ধন প্যাঁচ জ্যামিতির
পারবে কি ভাঙ্গতে এক মুঠো রোদ্দুর ?

ছন্দ প্রকরণ:
কখকখ, কখকখ; গঘগঘ ঙঙ
রচনা: ২০১০

শক্তি নেই এক কণা

শক্তি নেই এক কণা

কি ভাগ্য তাদের, দ্যাখো ঐ সে বৃক্ষদল
ফুটায় কত পুষ্প কখনো
কখনো ফলেতে ভরা যেন
অন্তরে না জ্বালা, চোখে এক ফোটা জল।

কখনো ছড়ায় তারা সুগন্ধ সুবাস
বিচিত্র সাজে করে মাতাল
ফুলের হাসিতে হয় সকাল
আমরা? না ফুটি, ফুটাই, শুধু দীর্ঘশ্বাস।

কি সুন্দর সবুজে মাখা পল্লব হাসি
দোলে ঝির ঝির ঐ বাতাসে
আমরা? ভাসি মিছিলের বিষে
কাটাকাটি কাড়াকাড়ি ভাগ্যের অন্বেষী।

না গ্রীষ্ম বর্ষায়, অতিষ্ঠ ওরা দাবদাহে
চুপচাপ যদিও বা বিবর্ণ
বসন্তে সেজেও সে আকর্ণ
আনন্দে খায় দোল, নীরবে কষ্ট সহে।

মানুষ হয়ে সাজাতে পারি না পৃথিবী
পারি না থামাতে কারো কান্না
অথচ শক্তি নেই এক কণা
তবুও করে দান দেহ কঙ্কাল সবি।

অনুবাদ কবিতা : পৃথিবী এক অভিনয় মঞ্চ

পৃথিবী এক অভিনয় মঞ্চ

আসলে পৃথিবীটা যেন এক নাট্যশালা
নর নারীর ক্ষণে আগমন ক্ষণে নির্গমন
নানা বয়সী মানুষের নিরন্তর পথচলা
ঝেড়ে ফেলে মাতৃক্রোড় মমতা বন্ধন।

চিক চিক করা ঐ সাত সকালে
ছোট্ট ব্যাগ কাঁধে, হেলে দোলে
যেতে হয় স্কুলে, মন নাহি চলে
শামুকের মত শ্লথ গতি তালে।

দৃশ্যপটে প্রেমিক প্রেমিকা শত রং ঢঙে
মুখে কাব্যকথা হৃদয়ে ফাঁপর আবাস
গৃহ পরিচারিকার মত কত সাজ অঙ্গে
মাঝে মাঝে উদ্গীরিত তবে দীর্ঘশ্বাস।

পুনশ্চ আবির্ভূত ভাবাবেশে সৈনিক
শপথকারী নির্ভয় এক ধ্রুব প্রতীক
যেন ঈর্ষান্বিত, সম্মানিত, শ্মশ্রুধারী
তর্কবাগীশ খ্যাতিমান জগত ভরি।

ন্যায় প্রতিষ্ঠা আসে যেন কামানের মুখে
সকল পেটে আহার্য তা মোরগ বা খাসী
সুষ্ঠু বিধান জ্ঞানগর্ভ করাতে কেটে কুটে
আধুনিক নানান উপমায়, দৃষ্টান্তে পিষি।

চটি পায়ে যেন এক হাবা গোবা
এক ছোট্ট থলি ধরে আছে গ্রীবা
রং চশমায় ঢাকা যার চোখ দু’টি
তারুণ্য প্রভায় আলোকিত মাটি।

কুঞ্চিত পদ নলি তবু কন্ঠ স্বর পুরুষালী
তখনো শিশুর মত দেয় শীষ, গায় গান
আর শেষ দৃশ্যে কি অদ্ভুত আচরণ বলী
লুপ্ত দাঁত চোখ স্বাদ করুণ সে বিস্মরণ।

________________________
মূল: William Shakespeare.

মাটির এ পুতুলে

মাটির এ পুতুলে

এসেই নাকি কেঁদেছিলাম
যদিও দেখেছি মার হাস্য বদন প্রথমে;
যখন তবে বুঝতে শিখলাম
একি নিঠুর কার্যকলাপ এই জন্মভূমে।

যে মাটিতে এ মানুষ গড়া
যে মাটি করছে সবারই ভরণ পোষণ;
তবু আমাদের কত অশ্রুঝরা
মাটির গায়েই করি কালিমা লেপন।

চলে হেথা বিশ্রী কারবার
চলে হিংসা ক্রোধ নিধন অধীন খেলা;
গড়ে কেউ সম্পদ পাহাড়
পায় মান সম্মান কেউ শুধু অবহেলা।

কত চলে দলন শোষণ
চলে ঝগড়া ফ্যাসাদ শত কাটাছেঁড়া;
মাটির প্রাণে রক্ত ক্ষরণ
জাত পাত ছোট বড়তে প্রাচীর গড়া।

কারো মুখে নেই অন্ন
সংগ্রাম লড়াই বিপ্লব আর আক্রোশ;
অবিচার, আচরণ ঘৃণ্য
পুতুলে নেই নম্রতা গুন, আফসোস।

মাটির এ পুতুলে যদি
জন্মাতো মাটিরই মতো তার নম্রতা;
হতো এক প্রেম নদী
প্রবাহিত হতো ভালোবাসা ও মমতা।

কমই ভাবি তাদের মতো

কমই ভাবি তাদের মতো

ক্ষুদ্র এই প্রাণী পিপীলিকা
চলে সারি বেঁধে, কখনো বা একা একা;
খুঁজে বেড়ায় গরম কালে
খাদ্য কণা; ঘরে আনে তা মাথায় তুলে।

একদম অদৃশ্য, শীত এলে
ঘুমায় কুটিরে, গুদাম বোঝাই বলে।
নিরন্তর দেখি চলাফেরা
আর ভাবি, কতই না সচেতন এরা;

ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এ পিপীলিকা
বুঝে,না থাকলে সঞ্চয়, যায় না টিকা।
দেখেছি খুঁড়ে মাটির ডেরা
কত ধ্যান ধারনায় গড়া, স্বপ্নে ঘেরা;

মাটির রং, তাদেরও প্রিয়
কত যে কুঠরি, এক তল,দ্বিতলও।
কমই ভাবি তাদের মতো
সঞ্চয় অভ্যাস মানুষেও নেই ততো।

পুরনো কবিতা
(স্কুল জীবনে)

লিমেরিক গুচ্ছ ২৪

লিমেরিক গুচ্ছ ২৪

এক। (এ জীবনে বসন্ত)

এ জীবনে বসন্ত আর কতদিন রয়
প্রকৃতির যেমন চৈতের শেষে ক্ষয়;
চৌচির হয় মাঠ প্রান্তর
বৈশাখী ঐ তাণ্ডব ঝড়
রয় না আর চির সবুজ লাবণ্যময়।

দুই। (কোকিলের কুহু ডাক)

আর শুনি না কোকিলের কুহু ডাক
তর্জন গর্জন নির্মম বাতাসের হাক;
ফুলেল সুরভিত প্রকৃতি
বিবর্ণ বিধ্বস্ত রাতারাতি
মানুষ পশু পাখি বিস্মিত হতবাক।

অন্ত্যমিল: ক ক খ খ ক

ফিরে আসবে মুজিব

ফিরে আসবে মুজিব

রক্ত কালিতে লেখা শোকের দিনটি
প্রতিবার ঘুরে ফিরে আসে আগষ্ট পনেরো;
কাঁদে আকাশ বাতাস বাংলার মাটি
বন্ধুসম জাতির পিতা, ছিল না আর কারো।

কি ভয়াল কত নিষ্ঠুর ছিল সে রাত
ঘাতক পশুদের কত নির্মম, সে ঔদ্ধত্যপনা;
বঙ্গবন্ধুর প্রাণবধেও কাঁপেনি হাত
কেঁদে উঠেছিল প্রকৃতি জনপদের ধূলিকণা।

তাঁরই বজ্র ডাকে আবালবৃদ্ধবনিতা
দু’বার ভাবেনি, নেমে এলো রক্ত রণমাঠে;
ছিনিয়ে আনে এ বাংলার স্বাধীনতা
বাংলার ঘরে ঘরে দীপ্ত হাসিতে ভরে উঠে।

আজো জনতা কাঁদে, হৃদয়ে বিশ্বাস
ফিরে আসবে মুজিব দাঁড়াবে আবার পাশে;
ফেটে পড়বে কৃষাণে আনন্দ উচ্ছ্বাস
সোনার বাংলা তোমার, গড়বে মিলে মিশে।

বড় কষ্ট লাগে ফেটে যায় হৃদয়খানি
কেহ করবে না নিপাত, বলতে তুমি সতত;
উদার অন্তর তোমার, মমতার খনি
বদলা পেলে প্রেমের, বাংলা হলো কলুষিত।

নেই ইতিহাসে

নেই ইতিহাসে

(বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি)

পনেরো আগষ্ট এলেই মনে উদয়
বাঙ্গালী জাতির মর্মভেদী শোক দিন;
’নিহত জাতির পিতা’,যেন সে প্রলয়
জমিনে মাতম, বেজে উঠে শোক বীণ।

লাল সবুজ পতাকার সেই স্থপতি
হিমালয় প্রতিম প্রিয় এক ব্যক্তিত্ব;
করেন মুক্ত যে মুজিব, বাঙ্গালী জাতি
নেই ইতিহাসে এমন দৃঢ় নেতৃত্ব।

পৈশাচিক উন্মত্ততায় ঘাতক দল
সে কি নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ বুলেট ছুঁড়ে;
’বাংলার বাঘে’র রক্তে রাঙায় ভূতল
না কাঁপে হাত,না এক ফোটা অশ্রু ঝরে।

ঘাতক পশুরা কেড়ে নেয় তাঁর দেহ
চিরঞ্জীব যিনি,সাধ্য কার কাড়ে কেহ।

চতুর্দশপদী কবিতা

হে জীবন

হে জীবন

হে জীবন
মিছিমিছি তুমি লজ্জা পাও
ভাব অসহায়, একা তো নও;
বন্ধু বান্ধব নেই তিনি তো আছেন
শ্বাস প্রশ্বাসে অস্তিত্ব তাঁর সে আজীবন
যখনই নির্জনে চলে কত না কথোপকথন।

যে স্পন্দন
সহসা বাজছে যায় নি থেমে
ঝড়ে লণ্ডভণ্ড সবই হৃদয় ভূমে;
নিথর আত্মা তবুও তো স্বপ্ন ডোরে
দৃষ্টি নেই, নেই হাত পা সে বাঁচায় তারে
মিথ্যাকে করছো না তুমি কখনো আলিঙ্গন।

হে জীবন
মিছিমিছি তুমি লজ্জা পাও
দুঃখ কষ্ট সব আদরে বেঁধে নাও
ঝাঁপিয়ে পড়ো উতাল ঐ রণ সাগরে
পৌঁছবে নিশ্চিত তিনি অপেক্ষায় ওপারে
কেন লজ্জা, মাটিতেই তো সবার নির্বাসন।

যে পাথর
কেঁদে মরে পাহাড়ের বুকে
ফুলের জন্ম-শক্তি দেয়া হয় তাকে;
যে শিমুল গর্বিত তার রক্ত লাল ফুলে
তুলো হয়ে উড়ে শেষে বাতাসের কোলে
রাজারও কই সে প্রাসাদ, না একখানি ঘর।