বিভাগের আর্কাইভঃ অনুবাদ

মূল কবিতা : পাবলো নেরুদা

pablo

আমার অত্যন্ত প্রিয় কবি পাবলো নেরুদার আজ একশো উনিশতম জন্মদিন। বহু বছর আগে তাঁর কয়েকটি কবিতার অনুবাদ করেছিলাম। তারই একটা দিয়ে আজ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন …
———
মূল কবিতা : পাবলো নেরুদা
অনুবাদ : রিয়া চক্রবর্তী

বেশি দূর যেওনা কখনো, এক দিনের জন্যেও না।
কারণ …
কারণ,আমি জানি না কিভাবে বলবো,
এক একটি দিন কতখানি দীর্ঘ।
তবুও আমি নিবিড়ভাবে অপেক্ষায় থাকবো তোমার,
সব ট্রেন একে একে ঘুমোতে চলে গেলে,
যেমন নির্জনে থাকে একটি স্টেশন।

কখনো ছেড়ে যেওনা, এক ঘন্টার জন্যেও না,
কারণ
বিন্দু বিন্দু তীব্র যন্ত্রণা তখন মুহূর্তেই নদী হয়ে যাবে
ঘরছাড়া ধোঁয়ারা অবিরাম ঘর খুঁজতে খুঁজতে
আমার ভেতরে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ করে দেবে হারানো হৃদয়।

সমুদ্রের ধারে হাঁটার সময় ছায়াচিত্রের মতো মিলিয়ে যেও না কখনো
তোমার চোখের পাতা যেন শূন্যতায় কেঁপে না ওঠে
এক মুহূর্তের জন্যেও ছেড়ে যেও না, প্রিয়তমা আমার।

কারণ ঠিক সেই মুহূর্তেই হয়ত অনেক দূরে হারিয়ে যাবে তুমি
আর আমি উন্মাদের মতো সমস্ত পৃথিবী উল্টেপাল্টে, আর্তনাদ করে বিভ্রান্তের মতো, প্রশ্ন করবো,
তুমি কি আসবে?
মৃত্যুর কাছে এইভাবে রেখে যাবে আমায়?
=====================

After My Death

(Translated from Bengali Version Created by Me)
(Dedicated to My Friend Late Imdadul Bari Apu)

After my death,
Never ever think
I will not be anywhere:
Keep your eyes on the twilight,
In the evening sky;
Lay your ears in the music of fallen leaves,
In the screech of owl;
Have your nose on the green,
In the tears of dew –
You will find me.

After my death,
Never ever think
I will not be anymore:
Keep your eyes on the clouds of autumn,
In the adamant wind of kashbon;
Lay your ears in the solemnity of rain,
In the melody of falling water;
Have your nose on the hyacinth flowers,
In the water of Bongshi –
You will find me.

After my death,
Never ever think
I will not be anymore:
Keep your senses on the eyes of shalik,
In the flight of sparrow;
Lay your ears in the symphony of jhijhi,
In the light and darkness of jonaki;
Have your nose on the stem of rice,
In the heart of durba grass –
You will find me.

ঘুমপুরী

ইনিয়ে বিনিয়ে ঘুমিয়ে আছো সবে
বাতাসও ঘুমোচ্ছে, ঘুমের ঘোরে বইছে নদী
ঘুমে আচ্ছন্ন হিজলের বন, নিমের শাখা, কাশফুল
নীলাভ মুখোশে ঘুমোচ্ছে সরীসৃপ, বালিহাঁস,
শাপলার চর…
অবলা দীর্ঘ শ্বাসের ব্যাপ্তিতে কেবল ঘুমহীন কবি
প্রস্তরখণ্ডের মতো জমানো পা
বুকে শিলাস্তর চেপে ভাবছে….
খুঁজছে অচীন পথের দিশা…

মানুষ

আমাকে যখন বলা হয় মানুষের কাছে যাও
আমি ঘাসের কাছে মনের দুঃখ বলি…

যখন বলা হয় দেখ মানুষের মুখ
আমি উড়ন্ত পাখির ডানায় নীলাকাশ দেখি

মানুষের তৈরি ভজনালয়ে যখন মাথা ঠেকানোর
উপদেশ বর্শিত হয়
আমি নদীর আঁজলা আঁজলা জলে
মুখ ধৌত করি

মানুষ পাঠের ইচ্ছা মরে গেছে
মরে গেছে মানুষ হওয়ার ইচ্ছা

একটা পতঙ্গ যতটুকু কল্যাণ করতে পারে
তার ধারেকাছে পৌঁছাতে পারে না মানুষ

তবু কেউ কেউ মানুষের পুজা করে
আর মানুষ সেই পুজারিকে হত্যা করে…

উগান্ডার কবিতা

2885

উগান্ডার কবিতা
মুল: ইংরেজি
অনুবাদ: বখতিয়ার শামীম।

অপরাধীগণ কি চিরঞ্জীব!
মুচকি হেঁসে তাকিয়ে আছে সত্যবাদীর দিকে

ওরা ভাবছে,
যে পাপী সিংহাসনে বসে খেলছে ইঁদুর বিড়াল
তাকে তোমরা কতটুকু জানো
ভ্রষ্টচারী পাপের আত্মা শরীর ছুঁয়েছে তাঁর।

সেখানে তুমি জাতের বিচার করবে?
পাপ লেহন ভেঙে দেবে জাতের আস্তানা
যে সম্রাজ্ঞী চিৎকার করে বলবে
আমার চাই ক্ষমতা, আমার চাই পাওয়ার,
যেনতেনো খেলা খেলে চলবেনা
আমার চাই উন্নয়ন, এত কিছুর পরেও তার সাম্রাজ্যবাদী আচরণ রুখবে কে!

সেতো ভাবছে
এদেশের প্রত্যেকটা মাটির কণা তার
কেও কি আছে মুখোশ খুলে দেবে
মুখোমুখি দাঁড়াবে
জানিয়ে দেবে এই মৃত্তিকার প্রত্যেকটা ইঞ্চি
এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের।
একটি প্রেতাত্মার হুঙ্কারে
যদি কাঁপন ধরে সততার বুকে।

জালিমের ভ্রূকুচকানো চোখ
আরও রক্ত ঝড়াবে আরও রক্তে লাল হবে
দাঁতালো হাতিয়ার।
তখন ওরা হাসবে,
তখন ওরা চারদিকে ছড়িয়ে দেবে
তাদের দাসত্ব স্বীকার করার ফরমান।

সেদিন পারবে কি নিজেকে রক্ষা করতে?
এখন সময় তার জ্যোতি ছড়িয়ে
চরম সীমান্তে অবগাহন করছে।

বরং হৃদয়ে ভরে ওঠা জিদকে
জাগিয়ে তোলো, আটকে রাখা ক্ষোভ কে বলো
এখন সবকিছু চরমে পৌঁছেছে
যদি সাহস জাগাও মনে
একটা হুঙ্কারে ভেঙে পড়বে তুলোর দেওয়াল
একটা চিৎকারে পাপী হবে নাস্তানাবুদ
মনে রেখো অপরাধী সৎসাহসের কাছে দুর্বল।

উগান্ডার পথে পথে আমরা তিনজন।

ডুমিসানি গোবা র কবিতা

waat

লোকটার হাতে হাতকড়া।
লোকটার মুখ মাটির সাথে ঘষটাচ্ছে।
লোকটার ঘাড়ের ওপর একটা নৃশংস হাঁটু।
ওরা কিছু করেনি।

লোকটা পুলিশ অফিসারটাকে বলছিল ‘স্যার প্লিজ.. স্যার প্লিজ..’
ওরা কিছু করেনি।

লোকটা নিজের প্রাণ ভিক্ষা চাইছিল।
লোকটা বারবার একটু জল খেতে চাইছিল।
লোকটা ক্ষমা চাইছিল।
ওরা কিছু করেনি।

লোকটার নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিলো।
লোকটার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছিলো।
লোকটা হিসি করে ফেলেছিল।
ওরা কিছু করেনি।
লোকটা চিৎকার করে কাঁদছিলো ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা, প্লিজ..’
ওরা কিছু করেনি।

আরও ১২ বার…

‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’
‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা..’

ওরা কিছু করেনি।

শেষবারের মতো লোকটা ফিসফিসিয়ে উঠলো ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা স্যার, প্লিজ..’
ওরা কিছু করেনি।

লোকটা অজ্ঞান হয়ে গেল।
ওরা কিছু করেনি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী দমকল কর্মী ১০০ বার বললেন লোকটার নাড়ি টিপে দেখতে।
ওরা কিছু করেনি।

একজন কাজ থেকে ফেরা স্বাস্থ্য কর্মী বার বার অফিসারদের আবেদন করলেন ‘প্লিজ ছেড়ে দিন, আর গলা চেপে রাখবেন না, ওর নিশ্বাস পড়ছে না!’
ওরা কিছু করেনি।

অক্সিজেনের অভাবে,
শরীরের সব যন্ত্র বিকল হয়ে গেল লোকটার,
ধীরে ধীরে মস্তিষ্কও।
চোখ উল্টে গেলো।
ওরা কিছু করেনি।

ওরা জর্জ ফ্লয়েডকে মরতে দেখলো।
জর্জের জীবন আস্তে আস্তে উবে যেতে দেখলো।
একটা ধীর শীতল মৃত্যু, ওদের হাঁটুর চাপে।
ওরা কিছু করেনি।

একটা নৃশংস হত্যা।
না, ওরা কিছু করেনি।
পাক্কা আট মিনিট।
চারজন পুলিশ অফিসার দেখলো।

জর্জ ‘মা.. মা..’ বলতে বলতে কাঁদলো।
একটা বয়স্কলোক..
তার জন্মদাত্রী মাকে মনে করতে করতে কাঁদলো।
কারণ সে মৃত্যুভয়ে সন্ত্রস্ত তখন,
তবুও ওরা কিছু করেনি।

একটা কৃষাঙ্গ লোক।
একটা নরম দৈত্য।
খুন হলো কারণ তার গায়ের রং কালো।
তবুও, তবুও ওরা কিছু করেনি।

পৃথিবীর উন্নততম দেশ আমেরিকায়।
চারজন পুলিশ অফিসারের রেসিজমের শিকার হলো একটা কালো লোক। জর্জ ফ্লয়েড।

ওদের যোগ্য শাস্তি পাওয়া উচিত।

শান্তিতে ঘুমিও জর্জ।

এই অন্যায় এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠুক সারা পৃথিবী। তোমার কবরে ন্যায়ের গোলাপ ফুটুক।

(Dumisani Goba)

অনুবাদ কবিতা : বৃষ্টি – ডন প্যাটারসন

28512a

যে কোনো চলচ্চিত্র বৃষ্টি দিয়ে শুরু হলে ভালো লাগে
জানলার শার্সি দিয়ে গড়িয়ে আসা বৃষ্টি
খোলা ছাদে ঝুলে থাকা পোশাক ভিজিয়ে দেওয়া বৃষ্টি
অথবা মেয়েটির মুখের ওপর দিয়ে গড়িয়ে নাম বৃষ্টি।

দীর্ঘ সময় ধরে পড়তে থাকা ঝড় বৃষ্টি
পরিচালক ও প্রযোজকের পাণ্ডুলিপি ধুয়ে দেয়
কাউকে দোষারোপ বা অভিনয় করার আগেই
ক্যামেরার লেন্স ছবির ফ্রেমটি তোলার আগেই।

বৃষ্টি পড়ছে যেখানে মহিলাটি একা বসে
নিস্তব্ধ অচল টেলিফোনের সামনে
মাঠের ওপর শুকোতে দেওয়া কাপড়ে
সড়কের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া মেয়েটির ওপর।

বৃষ্টির কারণে যে সব অবাঞ্ছিত ঘটনার সমাবেশ
তার ধ্বংসাত্মক ফলাফল বিভিন্ন স্থানে
যতই খারাপ ও সময় লাগুক না কেন
এ চলচ্চিত্র কখনো অসফল হবে না।

যদি ছেলেটির জন্মগত দুটি বা তিনটি শব্দ শোনা যায়
যদি চলচ্চিত্রটির কিছু ত্রুটি বেরিয়ে আসে
অথবা মহিলাটির কথার মধ্যে ভুল শোনা যায়
বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনা ব্যতীত চিত্রটির মান একই থাকে।

যদি চলচ্চিত্রটির ঠান্ডার মধ্যে প্রকাশ ঘটে
অথবা বৃষ্টিভেজা কাদায় পাইপ ভরে যায়
একটি ওষুধের দোকান নিয়ন আলোয় ঝলমল করে
আমি সেই লেখাটি এইভাবেই পড়ব, যে :

ভুলে যাও ছিটিয়ে পড়া কালি, দুধ বা রক্ত
বৃষ্টির জলে এখন তারা ধুয়ে মুছে সাফ
আমরা বৃষ্টি পড়ার হাত থেকে এখন মুক্তি পেয়েছি
বৃষ্টি তার নিজের ছেলে মেয়েকে নতুন আশা ফিরিয়ে দিল

প্রকাশিত চলচ্চিত্র সমগ্রভাবে সফল, বৃষ্টির অল্পই অংশ ছিল।

Rain

– Don Paterson
I love all films that start with rain:
rain, braiding a windowpane
or darkening a hung-out dress
or streaming down her upturned face;

one long thundering downpour
right through the empty script and score
before the act, before the blame,
before the lens pulls through the frame

to where the woman sits alone
beside a silent telephone
or the dress lies ruined on the grass
or the girl walks off the overpass,

and all things flow out from that source
along their fatal watercourse.
However bad or overlong
such a film can do no wrong,

so when his native twang shows through
or when the boom dips into view
or when her speech starts to betray
its adaptation from the play,

I think to when we opened cold
on a rain-dark gutter, running gold
with the neon of a drugstore sign,
and I’d read into its blazing line:

forget the ink, the milk, the blood—
all was washed clean with the flood
we rose up from the falling waters
the fallen rain’s own sons and daughters

and none of this, none of this matters.

বৃষ্টি – ডন প্যাটারসন
অনুবাদ : ইন্দ্রাণী সরকার।

অনুবাদ কবিতাঃ দাবানল এবং তুষার

istock

কেউ বলে পৃথিবী ধ্বংস হবে দাবানলে
কেউ বলে তুষারে
মনের কামনা দিয়ে যা স্বাদ পেয়েছি
আমি আগুনই ধ্বংসের কারণ মনে করি।
কিন্তু আমায় যদি দুবার মরতে হয়,
আমি ঘৃণার পরিচয় যথেষ্ট জানি
তাতে মনে হয় তুষারজনিত ধ্বংস
অত্যন্ত ভয়ানক
এবং যথেষ্ট পৃথিবী বিনাশের জন্য।

Fire and Ice
Robert Frost

Some say the world will end in fire,
Some say in ice.
From what I’ve tasted of desire
I hold with those who favor fire.
But if it had to perish twice,
I think I know enough of hate
To say that for destruction ice
Is also great
And would suffice.

দাবানল এবং তুষার
মূল কবিঃ রবার্ট ফ্রস্ট
অনুবাদঃ ইন্দ্রাণী সরকার।

অনুবাদ কবিতাঃ একাকী শস্য কাটার মেয়েটি

20210

ওই যে মেয়েটি মাঠের পথ ধরে
একা একা গেয়ে চলেছে ওকে একটু
অপেক্ষা করতে বলো।

একাই সে শস্যের দানা
কাটতে কাটতে গান গেয়ে চলে
একাই সে মনস্তাপের গান করে চলেছে
শোনো মেয়ে, সারা উপত্যকা জুড়ে
তোমারি গানের সুরের অনুরণন।

কোনো বুলবুলি পাখি কখনো ডাকে নি
বরং এই শুনশান বালুয়াড়িতে
পথিকদের ক্রন্দন শোনা যায় একটু ছায়ার খোঁজে
প্রখর রোদ্দুর থেকে মুক্তির আশায়।

তোমার মত উদাত্ত কণ্ঠস্বর একটিও শুনি নি।

বসন্তে কোকিলের ডাক সমুদ্রবেষ্টিত
দূর দ্বীপগুলির নিঃস্তব্ধতা খানখান করে দেয়।
কেউ কি বলতে পারে না আমায় সে কি গায় ?
হয়তঃ তার করুণ সুরই শুধু ভেসে আসে।
না কি আগেকার সব যুদ্ধের প্রাচীন কাহিনী?

না কি আধুনিক কালের সব মিষ্টি মধুর গল্প ?

অথবা সুখ, দুঃখ, যন্ত্রণাদায়ক সব কাহিনী ?

গানের বিষয় যাই হোক না কেন, মেয়েটি
এমনি সুর যেন গানের কোনো পরিসমাপ্তি নেই।
সে যখন কাস্তে নিয়ে ধান বা শস্য কাটে,
আমি চুপ করে বসে তার গান শুনতেই থাকি।
আমি যখন পাহাড়ে উঠি তখন সুর আমার কানে
ভাসতে থাকে গান থেমে যাবার অনেক পরেও।।

মূল ইংরেজি কবিতাটিঃ

The Solitary Reaper

Behold her, single in the field,
Yon solitary Highland Lass!
Reaping and singing by herself;
Stop here, or gently pass!
Alone she cuts and binds the grain,
And sings a melancholy strain;
O listen! for the Vale profound
Is overflowing with the sound.

No Nightingale did ever chaunt

More welcome notes to weary bands
Of travellers in some shady haunt,
Among Arabian sands:
A voice so thrilling ne’er was heard
In spring-time from the Cuckoo-bird,
Breaking the silence of the seas
Among the farthest Hebrides.

Will no one tell me what she sings?–
Perhaps the plaintive numbers flow

For old, unhappy, far-off things,
And battles long ago:
Or is it some more humble lay,
Familiar matter of to-day?
Some natural sorrow, loss, or pain,
That has been, and may be again?

Whate’er the theme, the Maiden sang
As if her song could have no ending;
I saw her singing at her work,
And o’er the sickle bending;–
I listened, motionless and still;
And, as I mounted up the hill,
The music in my heart I bore,
Long after it was heard no more.

উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ
অনুবাদঃ ইন্দ্রাণী সরকার।

উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ (ইংরেজি: William Wordsworth; ৭ এপ্রিল ১৭৭০- ২৩ এপ্রিল ১৮৫০) ছিলেন একজন অন্যতম ইংরেজ রোমান্টিক কবি। … মূলত ইংরেজি সাহিত্যে রোমান্টিক ধারার প্রবর্তক হলেও উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ প্রকৃতির কবি হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত। তাঁর কবিতা ইংরেজি সাহিত্যকে বিপুলভাবে সম্পদশালী করেছে।

একদিন রিমঝিম বৃষ্টি হবে

ebo

একদিন রিমঝিম বৃষ্টি হবে
মূল কবিঃ সারা টিসডেল
অনুবাদঃ ইন্দ্রাণী সরকার।

একদিন রিমঝিম বৃষ্টি হবে সাথে ভিজে মাটির গন্ধ
চক্রাকারে উড়তে থাকা ভরত পাখির উদাত্ত গান

রাতে পুকুরে থাকা ব্যাঙেদের গান
বন্য প্লাম গাছের সাদা ফুল ছড়ানো

রবিন পাখি লাল পালক ছড়িয়ে নিচু বেড়ার উপর
বসে মনোমুগ্ধ সুরে গান গেয়ে চলে

তারা কেউ জানে না যুদ্ধের কথা,
কবেই বা তা শেষ হবে অবশেষে

কারো কিছুই মনে হবে না, গাছেদের নয়, পাখিদেরও নয়
যদি আজ মানবজাতি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়

এমন কি বসন্ত ঋতু সকালে উঠে জানবে না
বা লক্ষ্য করবে না যে মানবজাতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত।।

There Will Come Soft Rains
Sara Teasdale

There will come soft rains and the smell of the ground,
And swallows circling with their shimmering sound;

And frogs in the pools singing at night,
And wild plum trees in tremulous white,

Robins will wear their feathery fire
Whistling their whims on a low fence-wire;

And not one will know of the war, not one
Will care at last when it is done.

Not one would mind, neither bird nor tree
If mankind perished utterly;

And Spring herself, when she woke at dawn,
Would scarcely know that we were gone.

কোন মানুষই স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দ্বীপ নয়

279

কোন মানুষই স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দ্বীপ নয়
মূল কবিঃ জন ডনে
অনুবাদঃ ইন্দ্রাণী সরকার।

কোনো মানুষ একটা দ্বীপের মত
একান্তভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়
প্রত্যেক মানুষ একটা মহাদেশের অংশমাত্র,
মূল ভূখণ্ডের একটি খণ্ড

যদি পৃথিবীর ছোট একটি অংশ সমুদ্রে হারিয়ে যায়,
ইউরোপ আরও ছোট হয়ে যাবে
যেমন উপকূলের যদি একটি বৃহৎ অংশ ভেঙে পড়ে
অথবা তোমার বন্ধুর বাড়ি বা
তোমার নিজের বাড়ি সমুদ্রে হারিয়ে যায়

যে কোনো মানুষের মৃত্যু আমায় বিচলিত করে
কারণ আমি মানবজাতির অংশ
যদি কখনো মৃত্যুর ঘণ্টা শুনতে পাও,
জিজ্ঞেস করো না, কার ঘণ্টা, তোমার।।

No Man Is an Island
John Donne

No man is an island,
Entire of itself;
Every man is a piece of the continent,
A part of the main.

If a clod be washed away by the sea,
Europe is the less,
As well as if a promontory were:
As well as if a manor of thy friend’s
Or of thine own were.

Any man’s death diminishes me,
Because I am involved in mankind.
And therefore never send to know for whom the bell tolls;
It tolls for thee.

সমুদ্রের ধারে

10612

এই সুন্দর শান্ত বিকেল যেন এক পবিত্র
সন্ন্যাসিনীর ন্যায় প্রেম পরিপূর্ণ পরিশ্রান্ত,
সূর্য্য তার প্রশান্তির সমুদ্রে ডুবে যাচ্ছে।
সমুদ্রের উপর স্বর্গীয় নীরবতা —-
শোন সেই পরম শক্তি এখন জাগ্রত
তার অনন্ত গতি বজ্রের ন্যায় অবিশ্রান্ত ভাবে
শব্দ করে যায় —-

প্রিয় শিশু ও কন্যা, তোমরা যারা আমার সঙ্গে
এখানে হেঁটে গেছ, যদি এই পবিত্র রাত্রি
তোমাদের ছুঁয়ে নাও যায়
প্রকৃতি তবুও কম পবিত্র নয়।
তোমরা সবাই ঈশ্বরের বক্ষে আজীবন আশ্রিত
তোমরা জানো আর না জানো ভগবান
তোমাদের মনের মন্দিরেই বিরাজিত।

Bengali translation from:
W. Wordsworth’s creation: By the Sea

অনুবাদ কবিতা : আহ্বান

13606

ওগো আমার সুন্দর তুমি বড় কম আসো !
কত দিন কত রাত তুমি আমায়
একা ফেলে চলে যাও।
তুমি চলে যাবার পর আমার
দিন আর রাতগুলো শুধু কষ্টেই কাটে।

কেমন করে আমি তোমায়
আবার ফিরে পাবো ?
তুমি কেমন করে সব কষ্ট
ঝেড়ে ফেলে দাও।
মিথ্যে তুমি ! যারা তোমায় চায় না
তুমি শুধু তাদেরই মনে রাখো।

যেমন করে একটি সরীসৃপ কাঁপা কাঁপা
পাতার ছায়ার রূপ ধরে,
তুমি তেমনি সব কিছুতে মিলেমিশে
সব দুঃখ ঝেড়ে ফেলে দাও।
একটু দুঃখের নিঃশ্বাসও তোমায়
স্পর্শ করে না বা তুমি শোনোও না।

আমার হতাশার গানটা আবার আনন্দে বেঁধে নি,
যাতে তুমি আবার ফিরে আসো।
তুমি যা যা ভালোবাসো আমিও ত্’ তাই ভালোবাসি।
সুন্দর সবুজ পৃথিবী, তারাখচিত আকাশ,
শরতের বিকেল আর সোনালী কুয়াশায় ভরা সকাল।
আমি তুষার ভালোবাসি আর তার হিরন্ময় দ্যুতি।
আমি ঢেউ, বাতাস, ঝড় সমস্ত প্রাকৃতিক
সৌন্দর্য্য খুব ভালোবাসি।

আমি শান্ত একাকীত্ব ভালোবাসি,
আর তার সাথে জড়িত নীরবতা, জ্ঞান; সব !
তোমার আমার মাঝে তবে কি তফাৎ ?
আমি যা খুঁজি তা তোমাতেই পাই।
আমি ভালোবাসাকে ভালোবাসি —
যদিও তার ডানা আছে আর আলোর বেগে উড়ে যায়,
কিন্তু সবার চেয়ে ওগো সুন্দর আমি তোমায় ভালোবাসি —-
তুমি আমার ভালোবাসা ও আমার জীবন !
ফিরে এস আরও একবার তুমি আমার হৃদয়ে স্থান নাও।।

.
(My translation in Bengali from
“Invocation” by P. B. Shelley)
আহ্বান
পি. বী. শেলী
(অনুবাদ – ইন্দ্রাণী সরকার)

একটি আপেল বৃক্ষ

কত উঁচুতে ঐ আপেল বৃক্ষটি
যেন আমার বড়ই প্রিয় বন্ধুটি
ঝুঁকে আছে আমার দিকে;

নিয়ে এসেছে কত ছেকা রুটি
ঐশ্বরিক চুল্লিতে যা পরিপাটী
খাওয়াতে আমাকে।

কাছাকাছি সে, মুখ মুখের সনে
পল্লব আঙ্গুলে যেন কাছে টানে
চুমু দেবে বাহানায়;

খাইয়ে দেয় তার তৈরি প্রাণজল
তারাই পারে মমতায় যে পাগল
ডুবি প্রেম ভাবনায়।

আমি যে তোমার প্রেম কয়েদী
এসো অন্তরে যেন তুমিই আমি
হয়নি আগে কখনো এমন;

আমি হই তুমি, আপেল বৃক্ষ বনে
তব তনুমন যেন আমারি তনুমনে
এ সম্ভার তবে দীনের ধন।

মূল: James K Baxter

অনুবাদ কবিতা: বসন্তকালে এক প্রার্থনা

বসন্তকালে এক প্রার্থনা
– রবার্ট ফ্রস্ট

আজ ফুলে ফুলে আমাদের আনন্দ দাও;
আর আগত ফসলের আগমনকে অনিশ্চিত করে রেখো না;
বসন্তের সমাবেশে আমাদেরও স্থান দাও।

আমাদের শুভ্র ফলের বাগানের সৌরভে আমোদিত করো,
সুখী মৌমাছিদের সাথে তাদের ঘূর্ণাবর্তে সামিল করো।

উড়ন্ত পাখিদের কলতানে আনন্দ দাও,
ধূমকেতুর তীক্ষ্ণ সুচের মত পতনের
ও বাতাসে একাকী ফুলের সাথে সখ্যতা করে দাও।

কারণ এটাই ভালোবাসা, অন্য কিছুই ভালোবাসা নয়,
যা কি না ঈশ্বরের জন্য সংরক্ষিত,
যা আমাদের অনুভবে জড়িয়ে নেয়।

.
My translation from “A Prayer in Spring” by Robert Frost (1915)