সাইদুর রহমান এর সকল পোস্ট

সাইদুর রহমান সম্পর্কে

এ যাবত ২টি কাব্যগ্রন্থ (একক) এবং যৌথ ১৬টি কবিতা ও গল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু

padma bridge

দৃঢ় প্রতিজ্ঞা যে মনে বাঁধে স্বপ্ন বাসা
শক্তি জন্মে সেই ক্ষণে পূর্ণ হয় আশা;
পদ্মাসেতু সে প্রমাণ জ্যান্ত তার ছবি
গর্ব ভরে ভাসমান, যেন হাসে রবি।
শেখ হাসিনার চিন্তা এ দেশের তরে
এ যে তাঁর প্রেমবার্তা অভিভূত করে;
অসম্ভব যেন হলো, সম্ভব চেষ্টায়
সেতু হাসে জ্বল জ্বলো দেখ সবে তায়।

খুলে গেল স্বর্গ পথ, উন্নয়ন দেশে
চলুক এ গিরিরথ আনন্দেতে ভেসে;
গড়ে তোল আজ সবে সকলের মাঝে
এপার ওপার রবে, ভ্রাতৃ বন্ধু সাজে।

অরিত্রিক ছন্দ। অক্ষরবৃত্তঃ ৮+৬
Saturday, June 25, 2022

শুধু একটিই তো পৃথিবী

earth

শুধু একটিই এইনা পৃথ্বী
যেথা আছে মুক্ত আকাশ,
মধু মাখা সোনার স্মৃতি
নিত্য রহে প্রশান্তি শ্বাস।

চারিদিকে বন-বনানী
উঁচু উঁচু পর্বত গিরি,
পশু-পাখির কানাকানি
বয় সমীরণ ঝিরিঝিরি।

আমরা যেন করি যতন
না ফেলি কেউ বর্জ কভু,
রহে সদা ছবির মতন
যেমন দিলেন মহা প্রভু।

মিলেমিশে সবাই থাকি
অহমিকা কভূ নহে,
স্বচ্ছ মনে স্বপ্ন আঁকি
না করি গো কখনো রণ।

শুধু একটিই তো এ ধরা
পেলাম আরো উর্বর মাটি,
দৃষ্টি নন্দন, আকুল করা
হোক বসবাস ফাটাফাটি।

প্রীতি থাকুক সকল প্রাণে
সকল মুখে ফুটুক হাসি,
প্রকৃতি থাক সুবাস ঘ্রাণে
শান্তি ঝরুক রাশি রাশি।

স্বরবৃত্তঃ ৪+৪ / ৪+৪
পরিবেশ দিবস Sunday, June 05, 2022

আজব দুনিয়া

med

এই দুনিয়ায় রাহাজানি
লেগেই আছে হানাহানি
চারিদিকে দেখি,
পরের ভালো দেখলে পরে
জ্বলে পুড়ে যায় যে মরে
কেনো এমন সেকি !

এই ভবেতে অনেক আছে
দিন এনে সে দিনে বাঁচে
কেবা রাখে সে খোঁজ,
এসব খবর কাগজে পাই
ধুঁকে মরে জানি সবাই
দেখি সে যে হর রোজ।

বন্ধু ভাবি যখন যারে
টানি মোরা বুকে তারে
দেয় যে শেষে ফাঁকি,
যতো সময় গড়িয়ে যায়
স্বার্থ খুঁজে শুধু যে হায়
ঝরে তখন আঁখি।

কথা বলে মধুর স্বরে
উনিশ বিশ সে হলেই পরে
চিনতে তারে পারি,
তখন আর যে রয় না মানুষ
হারিয়ে তার মানবিক হঁশ
হয় সে নির্দয় ভারি।

স্বরবৃত্ত: ৪+৪ / ৪+৪ / ৪+২

সীমানা

যেই আঁধার থেকে এসেছি নেমে
সাঁঝে সেথাই এ পথ যায় থেমে;
তাকিয়ে দ্যাখো ঐ অন্ধকার
করে আলিঙ্গন সেই আবার।

হৃদয়ের গহীনে যে স্বপ্ন বাঁধে বাসা
ভেঙ্গে যায়, তবু ফুরায় কি নেশা ?
যত বার হয় তা চৌচির
ঘুরে ফিরে হৃদয়েই ভিড়।

আঁধারেই তারার মেলা নীলাম্বরে
খ্যাতিমান সবার জন্ম জীর্ণ ঘরে;
রাত হলেই হয় যেন ভোর
সৃষ্টি তবে ভেঙ্গে যবে চুরচুর।

জীবনের শুরু চলতে দূর দিগন্তে
ঝড় ঝঞ্ঝাট পেরিয়ে যেতে সীমান্তে;
তবুও তো শেষ সবি আঁধারে
পথ সীমানা ঐ মৃন্ময় বিবরে।

আনন্দের ঈদ

sishu-21

হয়ে গেল ধীরে ধীরে রমাদান শেষ
ঈদের খুশির ভিড়ে কেটে যাবে বেশ;
কুকর্মের উপবাসে কেটে গেল মাস
গরিব ধনীর পাশে, ভেদাভেদ হ্রাস।
অভুক্ত মানুষ হাসে এই রমাদানে
অন্ন মিলে অনায়াসে শান্তি পায় প্রাণে;
সালাত রোজায় সবে পার করে বেলা
পুণ্য কামায় নীরবে, করে নাকো হেলা।

যদি হতো রমাদান, সারা বর্ষ জুড়ে
সম্প্রীতি হয় না ম্লান, ছন্দ ফিরে সুরে;
আলোর ঝলকে ভরে সকলের হৃদ
ফিরে আসে ঘরে ঘরে, আনন্দের ঈদ।

অরিত্রিক ছন্দে অক্ষরবৃত্তঃ ৮+৬

নশ্বর সবই

ওই দেখো ওই আকাশের মেঘ
ছোটাছুটি কত, এদিক ওদিক,
তবে একদিন হারায় আবেগ
ঝরে পড়ে শুনি রিমঝিম চিক।

দেখো সে পাথর ভাবি অক্ষয়
মনে হয়, কত না কঠিন কিছু,
তবু দেখি তাকে, হয়ে যায় লয়
জীবন তারও, একেবারে মিছু।

মানুষের সে কী ! সুগঠিত দেহ
ধরা বুকে সেরা তাঁর হাতে আঁকা,
সহে শুধু জ্বালা মোদের সে কেহ
একদা উধাও, সবি যেন ফাঁকা।

পেরিয়ে যাচ্ছে, যুগ শতাব্দী
আছি সবে স্বীয় পৃথিবীতে মাতি,
ভাবি, রবো টিকে সেও নিরবধি
কভু তাহা নয়, খেতে হয় লাথি।

মাত্রাবৃত্তঃ ৬+৬ / ৬+৬

কিসের টানে

2020

রাতের বেলা করছে খেলা
আকাশ তলে তারা,
দিনটা হলে যায় যে চলে
না মেলে আর সাড়া।

জোনাক দলে সন্ধ্যা হলে
আলো জ্বেলে জ্বেলে,
কেনো তারা পাগলপারা
ঘোরে ডানা মেলে ?

সুরুজ মামা তার নেই থামা
সাতসকালে জাগে,
তাও প্রতিদিন কী বিরামহীন
ভারি অবাক লাগে !

ধরার বাগে শশী জাগে
কী সুন্দর তার হাসি,
ওই আসমান মাটি তার প্রাণ
ছোঁয় তাই নিচে আসি।

ছুটছে নদী নিরবধি
অথৈ সাগর পানে,
আমরা মানুষ হারিয়ে হুঁশ
ছুটছি কই কি টানে ?

মাত্রাবিন্যাস : স্বরবৃত্ত – ৪+৪/৪+২

তোমার কারবার

তোমার কারবার

যে হৃদয় ভূমিতে, রোপিত নির্মমতা
তারই ফল প্রাণীর মৃত্যু
মাটির মানুষ নিমেষে জন্তু
ইশারা তো তোমার, মহা অধিষ্ঠিতা !

যে মনে জন্ম নেয়, বিমুগ্ধ কোমলতা
তার জনমদাতা সেই তুমি
দ্যাখি বালুচরেও উর্বর ভূমি
কত যে বিভাজন, শত্রুতা এই সখ্যতা।

পাপ আর পাপীকে কে না করে ঘৃণা
করো প্রলুব্ধ, জন্মাও পাপ
শয়তানকে কে দিলে প্রতাপ
ফল শেষ বিচারের, তোমারই জানা।

যত ফ্যাসাদ, দুঃখ কষ্ট কখন যে কার
তুমি তো তার সবই জ্ঞাত
রও অদৃশ্য, থাক নীরব তত
অথচ এ নির্মম খেলা দ্যাখি বারংবার।

যাদের দিলে তুমি শক্তি, জ্ঞান ভাণ্ডার
রয় নিথর নিশ্চুপ নির্বিকার
দাবা চালে সাধ্য শুধু যে তোমার
বড়ো বিস্ময় দুর্ভেদ্য তোমার কারবার।

লেখকের ভাবনা

830

গান কবিতা যা লিখেছি
কাগজে তা রয়,
যদি মনে দাগ না কাটে
হয়েই যাবে ক্ষয়।

আমি যবে থাকবো নাগো
কেহ পড়বে তাই.
নয়ত কেহ বাজে ভেবে
পুড়ে করবে ছাই।

যে নয় তবে নামী লেখক
সবার তুচ্ছ আজ,
যেমন আমি কি লিখেছি
পাই যে ভেবে লাজ।

শব্দের ভাণ্ডার অতি অল্প
কই কবিতা হয় ?
পারি না তাই হৃদয়খানি
লিখে করি জয়।

আবেগ দিয়ে হয়না কিছু
মগজে যে জ্ঞান,
ফুটাতে হয় ভাব কতটা
রেখে তারি ধ্যান।

.
স্বরবৃত্তঃ ৪+৪ / ৪+১

দীর্ঘশ্বাস

ভেবেছিলাম বড়ো হবো অনেক
দূরের ঐ আকাশটা পারব ছুঁতে
জীবনের হাল ধরবো শক্ত হাতে
পারলাম কই, কামড়ায় বিবেক।

হলো অর্জন বহু সনদ বহু চিঠি
কাজ হয় নি কেউ দেয় নি দাম
নেপথ্যে তোমরা, ফেললে ঘাম
স্বপ্ন দাঁড়াবো পাশে সেও মাটি।

হারাতে বসেছি, বিশ্বাস আশ্বাস
কোন মুখে দাঁড়াই লজ্জা লাগে
পেলামই শুধু ঢেলে দিলে ত্যাগে
বেঁচে আছি সাথি তবে দীর্ঘশ্বাস।

নববর্ষের স্বপ্ন-১৪২৯

hgft

রাতটি পোহালেই আসছে নূতন বছর
স্বপ্নে বোঝাই সোনালি ভোর, বৈশাখ
এসো ভুলি পুরনো পীড়া রাগ অনুরাগ
সাজাই নূতন সাজে সকল মনের ঘর।

মানবতার বন্ধনে ভাবি সবাই আপন
ভুলে যাই তবে, সকল বিবাদ, বিদ্বেষ
গড়ি মুজিবের স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ
লালন চরণে, ভরি সকল হৃদয় গগন।

জাত পাত ভুলে হই ঐ সোনার মানুষ
বিপদ আপদে দাঁড়াই মানুষের পাশে
অভাবী ও দুঃখীরা যেন আবারো হাসে
দিই আদর ভালোবাসা না খুঁজি দোষ।

নব উদ্যমে করি জীবনের আয়োজন
আমরা মানুষ শ্রেষ্ঠ বুঝি সে মূল্যবোধ
অন্তরে জাগুক সূর্য ভোরের স্নিগ্ধ রোদ
আনন্দে গেয়ে উঠুক বাংলার জনগণ।

সততার জলে ডুবে যাক সকল হৃদয়
করি সাফ নির্মমতা শঠতার আবর্জনা
ধুয়ে মুছে হোক ঝক্‌ঝকে খাঁটি সোনা
হই মানুষ অন্তরে জন্মুক দৃঢ় প্রত্যয়।

সবাইকে নববর্ষের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।

ছাব্বিশে মার্চ

bg2019

আমরা পেলাম স্বাধীন বাংলা
রক্ত দানের ফলে,
আজ এলো ঐ ছাব্বিশে মার্চ
সবাই খুশির ঢলে।

ফুল সৌরভে রূপ গৌরবে
কী সুন্দর যে তুমি,
ইচ্ছে মোদের সতত তাই
হে মা ! তোমায় চুমি।

শস্য শ্যামল সবুজ মাখা
দেখলে তোমার হাসি,
নয় গো শুধু ধনীক হাসে
হাসে মজুর চাষি।

নেই তুলনা তোমার মাগো
তুমি মোদের স্বর্গ,
শেখ মুজিবুর ছিলেন বলে
পেলাম তুমি অর্ঘ্য।

মা বোন আরো লক্ষ শহীদ
আনলে স্বাধীন যাঁরা,
সারাজীবন ভুলবো নাকো,
চিরজীবী তাঁরা।

স্বরবৃত্তঃ ৪+৪ / ৪+২

একটি আপেল বৃক্ষ

কত উঁচুতে ঐ আপেল বৃক্ষটি
যেন আমার বড়ই প্রিয় বন্ধুটি
ঝুঁকে আছে আমার দিকে;

নিয়ে এসেছে কত ছেকা রুটি
ঐশ্বরিক চুল্লিতে যা পরিপাটী
খাওয়াতে আমাকে।

কাছাকাছি সে, মুখ মুখের সনে
পল্লব আঙ্গুলে যেন কাছে টানে
চুমু দেবে বাহানায়;

খাইয়ে দেয় তার তৈরি প্রাণজল
তারাই পারে মমতায় যে পাগল
ডুবি প্রেম ভাবনায়।

আমি যে তোমার প্রেম কয়েদী
এসো অন্তরে যেন তুমিই আমি
হয়নি আগে কখনো এমন;

আমি হই তুমি, আপেল বৃক্ষ বনে
তব তনুমন যেন আমারি তনুমনে
এ সম্ভার তবে দীনের ধন।

মূল: James K Baxter

মোবাইলে আজ

মোবাইলে আজ কেড়ে নিলো
নিদ্রা সুখের স্বাদ,
নবীন যারা বুঝে না গো
টাকা লুটবার ফাঁদ।

এই প্রজন্মের পড়াশোনা
আজ যে সবই শেষ,
মোবাইল যে সাথে হলে
ভাবে আছে বেশ।

বাসে ট্রেনে যাতায়াতে
দেখি চক্ষু স্থির,
চারিপাশে তাকায় না আর
যতো হোক সে ভিড়।

যুবক তারা কই আর হাঁটে
হাড়ের হচ্ছে ক্ষয়,
বাজে ছবি দেখে দেখে
চরিত্র তার লয়।

চোখের জ্যোতি যাচ্ছে কমে
মোবাইলে যে হায়,
বন্ধু ভেবে দিন রাত সাথে
সময় বয়ে যায়।

প্রতিশোধ

অবশেষে কি নিষ্ঠুর প্রতিশোধ
নিয়েই নিলো প্রকৃতি;
ক্ষুদ্র একটি করোনা ভাইরাসে
বিশ্ব জুড়ে এত ভীতি।

আসলে মানুষ আজ অবিমৃশ্য
বন কেটে বানায় নগর;
তাই যে বিশ্ব এখন এত উষ্ণ
নদী ভরে গড়ে বাড়িঘর।

মাটি আমাদের দেয় কত কিছু
বুক চিঁড়েই তবু প্রাসাদ;
তবু পাই গ্যাস তেল বহু কিছু
তার বুকেই শস্য আবাদ।

রক্ষক না হয়ে মানুষেরা যেন
এখন প্রকৃতিরই ভক্ষক;
যার খাই পরি ভাবিনা কখনো
সে বোবা, নয় আহাম্মক।

চলছে গোটা বিশ্বে নীরব যুদ্ধ
বোমা নেই, নেই কামান;
প্রকৃতি হয়েছে, এতটাই ক্ষুব্ধ
গোটা পৃথিবীই কম্পমান।

যত অভাব অনটন প্রাণীদের
করে পূরণ সে প্রকৃতি;
তবু আরো চাই শুধু মানুষের
না হয় কখনো তৃপ্তি।

তবে, খুব বেশী কিছুই তো না
প্রকৃতির নিয়মে চলি;
আবার হবে ব্যারাকে করোনা
আর কেহ হবে না বলী।