ফারজানা শারমিন মৌসুমী এর সকল পোস্ট

প্রণয়…….

রীতিমতো চাঁদের আলোয়
চারদিকে সুগন্ধি ছড়িয়ে যায় কামিনী ফুলের
প্রণয়ী নেশার ঘোর কাটেনি এখনো,
তোমার চুম্বনের দাগ এখনো লেগে আছে
হৃদয়ে রক্তে শিরায় উপশিরায়,
তুমি আমি ভিজে সিক্ত
তুমি কাছে এলেই বুকে বাঁজে রণবাদ্য
ভালোবাসার অথৈ সাগরে ডুবিয়ে দাও
যেন এক লজ্জবতী লতা
এবার একটি ফুল প্রষ্ফুটিত কর হে প্রিয়ংবদা……….

— ফারজানা শারমিন
০৬ – ০৯ – ২০১৯ ইং

সদ্য ফোঁটা গোলাপ………

আমার অস্তিত্ব জুড়ে শুধুই তুমি,
এই যে লাল বেনারশী তোমারই দেয়া
খোঁপায় বেলি ফুল তোমার পছন্দ,
ঠোঁটে পদ্ম ফোঁটা লাল লিপষ্টিক তোমারই দেয়া,
তোমার ভালোবাসার রঙে পড়েছি সিঁদুর,
প্রণয়ভূষণ আলতা পায়ে,
ভালোবাসার আলোয় গড়া পায়ের নুপুর,
কামনার আগুনের অলংকার,
সবই তোমার পছন্দের ।
আজকাল নিজের পছন্দ ভুলেই গিয়েছি
তোমার চর্চায়, নিঁখুত পরিচর্যায়
তুমি খুব যত্ন করে ভালোবেসে সাজাও আমায় ।
মাঝে মাঝে তুমি আমার পাশে এসে বসো
চেয়ে দেখো কিভাবে চুল বেঁধে বেলি গুঁজে দেই খোঁপায় ,
কখনো বা পড়িয়ে দাও আকাশ নীল শাড়ী নিজের হাতে,
যেভাবে ভালোবাসার পরশ বুলাও হৃদয়ও মাঝে ।
কখনো ভালোবেসে আমায় রূপান্তরিত করো সদ্য ফোঁটা গোলাপ ফুলে,
যেন তুমি নি:শ্বাসে ছুঁয়ে দিলেই ফুটবে কবিতা,
কখনো বা রূপান্তরিত করো ভোরের শিশির ভেজা শিউলি ফুলের স্নিগ্ধতা,
কখনো হৃদয়ে ঘটাও বজ্রপাত ঘর্ষণ বৃষ্টি ভীষণ উথাল পাথাল ঢেউ,
এ কেমন জলস্রোতের মায়ার লহর
আহ্ —
নিশিথে ভালোবেসে তুমি করাও জোছনায় স্নান ।
তোমার প্রেমের অমিয় সুধা পান করে
আমি আজ উজ্জিবীত,
আমার অস্তিত্ব জুড়ে শুধুই তুমি……………

— ফারজানা শারমিন
২৬ – ০৮ – ২০১৯ ইং

শোকাবহ আগষ্ট………..

মৃত্যুতেই সব শেষ হয়ে যায় না
চিত্ত যদি হয় অফুরান
আকাশ বাতাস সবই তো তোমার অবদান
হে জাতির পিতা তুমি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।
তুমিহীন এই বাংলা আজ ভুতুড়ে শ্মশান,
গভীর খাঁদে আটকে গেছে স্বদেশের ঢাকা
কোথাও কোন উদাস বিকেল নেই,
স্নিগ্ধ ভোর নেই
রাত্রির সৌন্দর্য বিলীন,
বৃষ্টিহীন প্রান্তর দাউ-দাউ পুড়ছে তোমার বাংলার সবুজ বৃক্ষরাজি,
তুমিহীন পিতা সর্বত্র-ই ধ্বংসের ঘনঘটা
পিতা, তুমি ছাড়া জাতি আজ
কাণ্ডারীছিন্ন জাহাজের মতো দিশেহারা ।
আজ রাজাকার আর স্বৈরাচার সব মিলে একাকার,
স্লোগানের নামে ভুরিভোজের আয়োজন
শোকের আয়োজনে ঘটা করে শোক তো দেখিনা
উৎসব , দেখি উৎসব !
নষ্ট সমাজের নগ্নতার কদার্য্যে,
আজ জর্জরিত ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত কঠিন নগ্ন অভিশাপে,
তুমিহীন এই বাংলা আজ ভুতুড়ে শ্মশান,
গভীর খাদে আটকে গেছে স্বদেশের ঢাকা ।
আগস্ট মাস বাঙালি জাতি গভীর শোকের মাস,
নির্মমতার এক কালো অধ্যায় ।
ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকারীদের,
হে জাতির পিতা —
তুমি কি শুনতে পাচ্ছো ?
আমি সর্বক্ষণ দেখতে পাই তুমি শুয়ে আছো
বাংলার বিশাল মানচিত্র জুড়ে,
মৃত্যুতেই সব শেষ হয়ে যায় না
চিত্ত যদি হয় অফুরান
আকাশ বাতাস সবই তো তোমার অবদান
হে জাতির পিতা তুমি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…………
— ফারজানা শারমিন
১৪ – ০৮ – ২০১৯ ইং

আগুনের গোলাপ………

আজ পরেছি লাল বেনারসী রঙের শাড়ী
কপালে লাল টিপ হাতে রেশমী চুড়ি,
খোঁপায় ফুল বাহারী,
সিঁথিতে দিয়েছি সিঁদুর তোমার ভালোবাসার রঙে,
প্রণয়ভূষণ আলতা পায়ে,
ভালোবাসার আলোয় গড়া পায়ের নুপুর,
কামনার আগুনের অলংকার,
তোমার তো খুব পছন্দ তাই না গো,
প্রণয়ী বাতাসে মধুগন্ধীর সৌরভে
অনাদ্র বাতাসে ওড়ে শাড়ির আঁচল,
ঠোঁটে তোমার ছোঁয়াতে ফুটবে ফুল গোপন বিহারে,
নীরব মনের আবেশে ওই বাঁধ ভাঙ্গা প্রেমের
জোয়ারেতে এসেছে ঢেউ চরম তরঙ্গে,
মন আজ মেতেছে উত্‍সবে তোমার ভালোবাসার রঙে,
এই যেনো ছুঁয়ে গেলে তুমি আমার ভেজা চুলে,
আমি শুধু তোমার নি:শ্বাসটুকু টের পাই,
পরক্ষণেই মনে হয় গোলাপের সুবাস নিয়ে জেগে ওঠা ভোর ।
অস্থিরতা, অপেক্ষা, নীরবতা, কল্পনা প্রেম
মিলেমিশে এক স্বর্গীয় অনুভূতি,
তোমার বুকের মধ্যে যেন কামনার আগুন ঠোঁটে মৃদু কম্পন,
আমাকে তোমার ভালোবাসার আগুনে পোড়াতে চাইছো তুমি,
আমিও সেচ্ছায় পুড়তে চাওয়া এক প্রজাপতি হই,
নিজেকে সঁপে দেই তোমার প্রেমের আগুনে,
নগ্ন পায়ে অঙ্গারে হেঁটে হেঁটে
অতঃপর তোমার ভালোবাসায় পুড়ে ছাই হয়ে যাই……

— ফারজানা শারমিন
১৩ – ০৮ – ২০১৯ ইং

সোনার বাংলা আজ কলঙ্কিত……….

সোনালি স্বপ্নীল রঙিন ফানুসে এই সোনার বাংলায়
হবে কি আমাদের জীবন রঙিন সাজে ?
কলুষিত এই সমাজে বারেবারেই আমাদের স্বপ্ন ভাঙে,
এ কেমন সোনার বাংলাদেশ ?
এমনটাই কি চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ?
দাঁড়িয়ে আছি মৃত্যুর মুখোমুখি,
বলা যেতে পারে জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

নষ্ট সমাজের নগ্নতার কদার্য্যে,
আজ জর্জরিত ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত কঠিন নগ্ন অভিশাপে,
কুলাঙ্গারেরা দৃষ্টি দেয় সপে হিংস্রতা আর বাহুবলে,
তারা জয়ী হয় খুব সহজে,
সমাজ তাদের পারেনা আটকাতে।

আর কতো নারী তাদের সন্মান বিলিয়ে দিলে দেশ হবে রঞ্জিত ?
চিৎকারে আকাশ বাতাস হয়েছে কম্পিত,
তবুও ঐ পাষানের দল হয়নি লুন্ঠিত
ধর্ষন নিরবে সবাই করেছে দর্শন,
প্রতিবাদ করেনি কেউ, গলেনি কারো মন
সমাজ এখন কলঙ্কিত,
তবুও যে নারীরা এখনও জীবিত।

একাত্তরে যারা ধর্ষিতা হয়েছেন তারা উপাধি পেয়েছে বীরাঙ্গনা,
কিন্তু যে ধর্ষিত তাকে কলঙ্ক দেওয়া ছাড়া কোনো উপাধি দেওয়া মানা।
এ কেমন বাংলাদেশ ?
এমনটাই কি চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ?
দাঁড়িয়ে আছি মৃত্যুর মুখোমুখি,
বলা যেতে পারে জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

নায্য আইন নারীরা পাবে কোন দেশে ?
ধিক্কার জানাই
সোনার বাংলা আজ কলঙ্কিত এই কুলাঙ্গারের নগ্ন দৃষ্টিতে,
হে পুরুষ সমাজ তোমরা কি পারোনা এই সমাজকে বাঁচাতে ?
এই নারী তোমাদের কারো মা, কারো বোন, কারো কন্যা, কারো স্ত্রী,
আর কতো নারী তাদের সন্মান বিলিয়ে দিলে দেশ হবে রঞ্জিত ?

— ফারজানা শারমিন
০৮ – ০৭ – ২০১৯ ইং

এক প্রণয়ী ঢেউ…….

আজ এই পর্যন্তই থাক
তোমার হৃদয়ে আমার লেখা কবিতা জড়িয়ে যাক,
কিছু প্রেম কিছু ভালোবাসার ছোঁয়া,
কিছু কুয়াশায় ঢাকা কিছু নরম রোদে মাখা
জীবনের উঁচু নিচু অবুঝ ইচ্ছে গুলো,
আলোর প্রজাপতির মতো তোমায় ছুঁয়ে যাক ।
তোমার ওই চোখে রয়েছে এক প্রণয়ী ঢেউ
লোমেশ বুকের মাঝে রয়েছে কামনার তৃষ্ণা,
অমন করে তাকিয়ে থাকো কেন বলো তো ?
অযুত লক্ষ কোটিবার ভালোবেসেছি অবলীলায়,
মনেমনে একান্তে কতোখানি চেয়েছি তোমায়,
থমকে যাওয়া এই সময়
কথারা নির্বাক —
তবু কাছাকাছি থাকা আরও কিছুক্ষণ,
আর তুমিও শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে বলেছিলে
দেখো এ বুকের সমস্ত জায়গাটাই তোমার ।
আমি শুধু তোমার নিঃশ্বাসটুকু টের পাই,
এই যেনো ছুঁয়ে গেলে আমার ভেজা চুলে,
পরক্ষণেই মনে হয় গোলাপের সুবাস নিয়ে জেগে ওঠা ভোর ।
দুজনের মাঝে গড়ে উঠতে চায় এক অদৃশ্য খুঁটি
জানিনা এ কেমন জলস্রোতের মায়ার লহর
আহ্ —
ভাসি আর ডুবি,
ডুবি আর ভাসি যেন পরস্পরের উপলব্ধি
এক প্রণয়ী ঢেউ……..

— ফারজানা শারমিন ( আলোর প্রজাপতি )
২৭ – ০৬ – ২০১৯ ইং

পহেলা আষাঢ়………..

আকাশে মেঘের গুড়গুড় কিংবা
ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ শোনা যাক বা নাই যাক
আজ পহেলা আষাঢ়।
ফুলবতী না হলেও বর্ষার পরশে যেন
যৌবনবতী হয়েছে কদমের ডালগুলো।
কিছুদিনের মধ্যে বনে বনে হেসে উঠবে কেয়া-কদম আর জুঁই-চামেলি।
গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহের পর প্রকৃতিকে
শীতল করতে আসে বর্ষা,
বৃষ্টিধারায় সিক্ত হয়ে প্রাণ ফিরে পায়
সবুজ প্রকৃতি।
রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে বাঙালির
শৈশব কাটে তুমুল আনন্দে,
দুরন্ত কিশোর-কিশোরী আনন্দে
গায়ে মাখে বৃষ্টির ফোঁটা।
কবিরা রচনা করেছেন হাজারো গান কবিতা,
আকাশে মেঘের গুড়গুড় কিংবা
ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ শোনা যাক বা নাই যাক
আজ পহেলা আষাঢ়…………

— ফারজানা শারমিন

এলোমেলো ভাবনা……….

এলোমেলো ভাবনা………

এলোমেলো ভাবনা গুলো হৃদয়ে স্থান করে নিচ্ছে ,
প্রজাপতির মতো ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে,
ছেলে মানুষি গুলো যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে,
রঙিন স্বপ্ন গুলো যেন তার চারপাশ কে ঘিরে রেখেছে,
এক অদ্ভুত অনুভূতি বিরাজ করছে হৃদয়ে ক্যানভাসে,
মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে ।
বৃষ্টি যেন তা থই থই নৃত্য করতে করতে
মাটির বুকে টলমল করে ঝরে পড়ছে,
ধমকা বাতাসে উড়ে যাচ্ছে এলো চুল,
জানালার গ্লাস দিয়ে বৃষ্টির পানি শরীরটা স্পর্শ করে গেল,
জানালায় দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে মন যেন দিশেহারা ।
রবিঠাকুরের গান গুলো ছুঁয়ে যাচ্ছে
তার হৃদয়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেন এক অসাধারন ভালোলাগা,
এ কেমন ধোঁয়াটে আভাস ঘিরে চলেছে বাহিরে অন্তরে,
এ কেমন রেশমি দড়ি বেঁধে চলেছে হৃদয়ের কোমল স্পন্দনে |
এ কেমন অনুভূতি নাকি
কোন প্রেমের সৃষ্টি,
প্রেমের চেয়ে সুন্দর পৃথিবীতে আর কিছু নেই……….

— ফারজানা শারমিন

বিনি সুঁতোর মালা ( গদ্য কবিতা )

বিনি সুঁতোর মালার মতো গেঁথে ছিলো আমাদের বন্ধন,
প্রতিদিন একে অপরের দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়া,
হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও একে অপরের
সুখ দুঃখ শেয়ার করা।
কথা হতো প্রতিদিন,
এভাবে দিন যায়, বছরের পর বছর যায়,
কোথায় যেন এক অদৃশ্য মায়ায় জড়িয়ে যাই দুজন।
খুব অদ্ভূতভাবে দু’জনার পছন্দ অপছন্দ,
মনোভাব সব মিলে যেতো।
এখানে অদৃশ্য এক টানপোড়ান শুরু হতে লাগলো,
কোন ব্যস্ততায় কথা না হলে হতো মান অভিমান
বুক ফাঁটা আর্তনাদ, অঝরে কান্না।
এতো আবেগ এতো ভালোবাসা
নিষ্পাপ অনুভূতি গুলো যেন সবই মিছে,
এই মিছে মায়া আর কতোদিন ?
তবুও হাজারো অভিযোগ নিয়ে শুধু তার প্রতীক্ষায় থাকা।
এক একটা নির্ঘুম রাত মনে হতো হাজার বছরের সমান,
নিজের সাথে যে যুদ্ধ তা বোধহয় সবচেয়ে ভয়ংকর একটি যুদ্ধ।
রাতের আঁধারের নি:শব্দতা জানে কান্নায় কতো নদী
সমুদ্র জলে ভাসে গেছে,
যতোবার অবহেলায় সে আঘাত করেছে
ততোবার টের পেয়েছি কতোটা ভালোবাসি তাকে,
রক্তাক্ত হৃদয়, কষ্টে ভরা কান্নায় ভেঙে পরা
কতো দীর্ঘ নির্ঘুম কালো রাত পার করেছি তার হিসেব রাখিনি,
কেঁদে যাই, শুধু কান্না আর কান্না।
কাঁদতে কাঁদতে কবে যে চোখের জল শুকিয়ে গেছে তাও জানিনা,
মনে হয় এ জনমে আর মিটবেনা দন্দ,
এক আকাশ সমান কষ্ট নিয়ে নরকের দরজায় দাঁড়িয়ে আছি আমি,
কতো যুগযুগ কতো জনম তোমার প্রতীক্ষায়,
আমার হৃদয়ের গভীরে যে শুধু তোমার বসবাস।
ছাঁয়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি ব্যস্ত তোমার পাশে
বাতাস হয়ে জড়িয়ে রাখি তোমায় আষ্টেপৃষ্ঠে,
জানি, এতো আবেগ এতো ভালোবাসা
নিষ্পাপ অনুভূতি গুলো যেন সবই মিছে।
তবুও কেন যে এ মিছে মায়া থেকে মুক্ত হতে পারছিনা,
আর কতোটা ছিঁড়বে হৃদয়ের তার বারবার ?
আর কতোটা আঘাত করবে হৃদয় গভীরে ?
আমি চেয়েছিলাম তোমার চোখে আমার জন্য একটুকু ভালোবাসা,
তৃষ্ণার্ত এক জনমের প্রত্যাশায় আর কতোবার ?
ভেতরে হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে,
কতোবার মরতে চেয়েও আবার
শুধু এই ভেবে ফেরা ভালোবাসি তাকে প্রাণের চেয়েও বেশি,
তার জন্যই তো বেঁচে থাকা,
বুকের ভেতর তার স্মৃতি ঘেরা,
অভিমান গুলো বড্ড বিবাগী মনে হয়
যে তুমি আমার কেউ নও তবু তুমি আমার সব।
একদিন তোমার অবহেলা আর তিরস্কার নিয়ে
তাঁরাদের দেশে ঠাঁই নেব চিরতরে,
ভালো থেকো তুমি হে প্রিয়…..

— ফারজানা শারমিন
১২ – ০৫ – ২০১৯ ইং

ভালোবাসার এক রঙিন অধ্যায়…….

কি আছে এমন,
কি দেখে ভালোবাসো আমায়, কেনো বলো তো ?
কি আছে আমার মধ্যে অমন করে
তাকিয়ে থাকো কেন বলো তো ?
অযুত লক্ষ কোটিবার ভালোবেসেছি অবলীলায়,
মনেমনে একান্তে কতোখানি চেয়েছি তোমায়,
থমকে যাওয়া এই সময়
কথারা নির্বাক —
তবু কাছাকাছি থাকা আরও কিছুক্ষণ,
আর তুমিও সেদিন শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে বলেছিলে
দেখো এ বুকের সমস্ত জায়গাটাই তোমার।
আমি শুধু তোমার নি:শ্বাসটুকু টের পাই,
এই যেনো ছুঁয়ে গেলে আমার ভেজা চুলে,
পরক্ষণেই মনে হয় গোলাপের সুবাস নিয়ে জেগে ওঠা ভোর
শিশির ছুঁয়ে শুরু হয় ভালোবাসার এক রঙিন অধ্যায়…..

— ফারজানা শারমিন

এক স্বর্গীয় মাদকতা……….

সুপ্রিয়,
আজ রাতে তোমাকে স্বপ্নে দেখেছি
একটি গোলাপ হাতে তুমি নাম ধরে ডাকছো,
কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলছো —
হে আমার হৃদয়ের সম্রাজ্ঞী কাছে এসে নিভিয়ে দাও এ বুকের আগুন,
হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা নিয়ে আমি তাকিয়ে আছি তোমার দিকে,
তোমার বুকের মধ্যে যেন কামনার আগুন ঠোঁটে মৃদু কম্পন,
আমাকে তোমার ভালোবাসার আগুনে পোড়াতে চাইছো তুমি,
আমিও স্বেচ্ছায় পুড়তে চাওয়া এক প্রজাপতি হই,
নিজেকে সঁপে দেই তোমার প্রেমের আগুনে ।
জোছনাকে সাথী করে নির্জন পৃথিবীতে জেগে আছি
নিভন্ত মোমের আলোয় তুমি আমি কাছাকাছি,
বিলিয়ে দিয়েছি তোমার মাঝে নিজেকে উজার করে,
আহ্ —
এ যেন এক স্বর্গীয় মাদকতা ।
পোড়ানোর খেলাতে মজেছি যে আজ,
নগ্ন পায়ে অঙ্গারে হেঁটে হেঁটে
অতঃপর তোমার ভালোবাসায় পুড়ে ছাই হয়ে যাই…..

— ফারজানা শারমিন

আবৃত্তিটা কেমন হলো………..

আবৃত্তিটা কেমন হলো বলোনি সে রাতে
রাগ কিংবা অভিমানে ?
শুধু শুনে নিলে আনমনে,
কবিতায় কি কবিকে দেখা যায় বলতো
কেন কষ্ট পাও ?
ভালোবেসে ছুঁয়ে দেইনি বলে……..
সব কবিতা তো তোমার জন্যই
আজকাল কতভাবে যে তোমাকে মনে আসে,
লিখতে বসে কিংবা কিছু না লিখেও,
হঠাত হেডফোনে বেজে ওঠা সুরে বেসুরে,
চায়ের কাপে ঠোঁট ছোঁয়াতেই
উইন্ডচাইমস এর টুং টাং শব্দে……..
নাইবা হলো দেখা তোমার সনে,
শুধু এক হাহাকার বলে দেবে
কিছু শব্দ ছিলো না বলা ক্ষণে,
দূর থেকে আরো দূরে
কথা নাই বা হলো দূরালাপনে,
আবৃত্তিটা কেমন হলো বলোনি সে রাতে
রাগ কিংবা অভিমানে ?
শুধু শুনে নিলে তালে তালে,
কবিতায় কি কবিকে দেখা যায় বলতো
কেন কষ্ট পাও ?
ভালোবেসে ছুঁয়ে দেইনি বলে………..

— ফারজানা শারমিন

সুরভিত অতীত…….

সুরভিত অতীত……….

অনেকদিন পরে ঝরছে মেঘ হৃদয়ের আকাশে
ঝরছে অশ্রু এ নয়ন তরে
অনেক সাধের স্বপ্ন খুঁজে চলেছে চোখের পান্থশালায়,
সে কোন আলোর মায়া ভরিয়ে গেল হৃদয়ে
সেই ভাঙ্গা স্বপ্ন নিয়ে বুকে,
হেঁটে চলেছি আমি
জানি না কোথায় কিসের সন্ধানে,
জ্বলে কিসের দহনে
সব পুড়েছে কিছুই আর নেই বাকি,
সুরভিত অতীত জানে ওই মিলন বিন্দুর মাঝে রয়েছে
কতো স্বপ্ন কত কাহিনী,
কত রাতের চন্দনময় সুবাস আছে লুকায়ে……

— ফারজানা শারমিন

মিছে কল্পনা…….

বড্ড অবেলায় বাতাসে চুল উড়িয়ে
শিউলি বকুলের সুবাস সযত্নে ছড়াই তোমার পথে,
চেয়ে থাকি তোমারই প্রতিক্ষায়,
ভালোবাসার অন্তরালে ছিলো এক নিছক পুতুল খেলা
বিনিময়ে দিয়েছিলে দারুন অবহেলা,
যদি জানতে ভাঙবেই একদিন
তবে দিনশেষ কেনো গড়েছিলে ?
ভালোবাসার নামে এক বুক যন্ত্রণা দিয়ে গেলে।
স্বপ্ন ভাঙতেই মনে হলো তুমি আমার কেউ ছিলে না
যা ছিলো সবটুকু শুধুই মিছে কল্পনা……

— ফারজানা শারমিন

হারিয়ে গিয়েছি চিরতরে….

আমিও হারিয়ে গিয়েছি চিরতরে
ইচ্ছে করেই হারিয়েছি
হৃদয়ের জানালার খিল এঁটে,
নিভৃতে হেসে কেঁদে
নিজের সুখদুঃখের বয়ান নিজের কাছেই রেখে
আমিও হারিয়ে গিয়েছি চিরতরে।

একা একা মরে গিয়ে বেঁচে থাকি
পর্দার আড়ালে জমে অভিমান রাশি রাশি,
এতো প্রেম সইতে পারিনি বলে
এতো দুঃখের ভার বইতে পারিনি বলে,
এতো অভিযোগ কইতে পারিনি বলে
আমিও হারিয়ে গিয়েছি চিরতরে,
অথচ চাইলেই ছুঁয়ে দিতে পারি এক আকাশ ভালোবাসা
কিন্তু আর ফিরবে না বলেই হারিয়েছি
জেনেশুনেই হারিয়েছি,
কারো কাছে কিছু দাবি না রেখেই হারিয়েছি,
নিজের স্বত্বা হারিয়ে ফেলেছি
ভুলেই গেছি আমিও কবি লিখতে পারি হাজারো কবিতা তোমায় নিয়ে,
ভুলেই গেছি প্রেম, প্রতিশোধ, ভালোবাসা,
ইচ্ছে করেই হারিয়েছি
হৃদয়ের জানালার খিল এঁটে,
নিভৃতে হেসে কেঁদে
নিজের সুখদুঃখের বয়ান নিজের কাছেই রেখে
হারিয়ে গিয়েছি চিরতরে।

যেমন একদিন তুমি বলেছিলে
আমি ঠিক তেমন করেই হারিয়ে গেছি
চিরকালের জন্য,
রঙধনুর সব রঙ আড়াল করে,
তোমাকে শূন্য করে আমিও হারিয়ে গিয়েছি চিরতরে…

— ফারজানা শারমিন