সুজন হোসাইন এর সকল পোস্ট

সুজন হোসাইন সম্পর্কে

জগতের সব কিছু নিয়ে ভাবি,আর ভেবে যা পাই তা লিখে রাখি মহা কালের পাতায়।

দিনলিপি

অনেক দিন হলো কিছু লিখি না যূথিকা!
আজ ভোর থেকে তোমাকে ভীষণ রকম মনে পড়ছে!
কেমন আছো, কেমন যাচ্ছে দিনকাল, জানাবে তো?

জানো যূথিকা,
আজকাল ভীষণ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে আমার!
শীত টাও বেশ জেঁকে বসতে শুরু করেছে শরীরে,
এখন সময় অসময়ে ই অসুখ হয় আমার যূথিকা!
তোমাকে ভাবতে গেলেই হিমশৈল গলতে শুরু করে
বুকের পাঁজর জুড়ে, চোখের কূল পেরুলে বুঝতে পারি
শুকানো সমুদ্রের সব জল গাল বেয়ে বালিশ ভিজায়!
এখানে বিস্তর হৃদয় ধূ-ধূ প্রান্তর রৌদ্র মরীচিকা,
স্বপ্নের লোনা জলে চাষ করি অনাবাদী বুকের মাঠ,
দুস্তর লে ফা ফা পুড়িয়ে রংতুলিতে গড়ি চিঠির ইমারত!

অনেক দিন হলো কিছু লিখি না আমি,
কি করে লিখি বলো? আমি যে নিরাশা চোখে ধোঁয়াশার
কুয়াশায় অন্ধ হয়ে গেছি, লিখতে গেলেই থমকে যাই!
বেদনার দিনলিপিতে স্মৃতির আস্তরণ পড়ে জমে গেছে
পাতার মলাট-রেলিং ঘেঁষা নির্জন নির্জীব ভাবনা সব!
লেখা হয় না তোমার উলঙ্গ নিতম্ব, কলমা লেবু ঠোঁট,
লেখা হয় না নিঃসঙ্গ দশ আঙুল, নিঃস্পলক দুটি চোখ!

কথা দিচ্ছি যূথিকা, সময় পেলেই লিখবো তোমাকে!
কি করি, কেমন আছি, কেমন যাচ্ছে দিন আমার,
জানাবো আমার সকল দিনলিপি!
শুধু একটু ভালো সময়ের দরকার আমার, জানো
আজকাল আমি ভীষণ রকম ব্যস্ত থাকি!

১৪/১২/১৮

তুমি অন্য কারুর কবিতা

তুমি অন্য কারুর কবিতা

একদিন মাঘের ভোরে তোমাকে ছুঁতে গিয়ে
উদোম শরীরে হিমেল হাওয়ার প্রচ্ছদ
এঁকে দিয়েছিলাম!
জানালার কার্নিশ ছুঁয়ে যখন ভোর আসে আমার ঘরে,
শালিকের ঠোঁটে রংচটা আমাদের স্বপ্নটা পাট কড়ি
অনলে শীতের উম দেয় পৌরাণিক মঠে!

একদিন খুউব ভোরে তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখতে বসেছিলাম,
শ খানেক পৃষ্ঠা নষ্ট করেও লিখতে পারিনি একটিও কবিতা!
তোমার অভূদ্য মনের নির্জলা পাঠ আমি করতে পারিনি বলে আজো একটা কবিতাও লেখা হয়ে উঠলো না …!
আজো তোমাকে আমার বোধগম্য করতে পারলাম না!
তাই তো আমি অকবি, তুমি অন্য কোনো কবির কবিতা!

তুমি রোজই কারুর কবিতায় আসো নতুন সব রঙে,
শুধু আমিই আনতে পারি না তোমাকে কবিতায়!

একদিন খুব রাগ করে উঠে গিয়েছিলাম লেখার
টেবিল থেকে।
অনেক অভিমানে গুমরে কেঁদে ছিলাম নীলময়ী
নদীর চরে সারাটা দিন!
একদিন সারারাত জেগে ছিলাম তারাদের চেয়ে চেয়ে!

একদিন ফুলের বুকে ভোমর বসতে দেখে ভেবেছিলাম,
কবিতা আমাকে ধরা দিবে বসন্ত আসার আগেই —
মেঠো পথ গন্ধ বিহীন ফাল্গুনে চৈতির ঝাউবনে!

একদিন হঠাৎ করে খবর পেলাম তোমার হাত রক্তবর্ণ,
নতুন প্রচ্ছদে নতুন কারুর কবিতায় সেজেছে নিপুণ!

সেই দিন থেকে আমি কবিতা লিখেতে পারি,
সেই দিন থেকে কবিতাও আসে আমার কলমে,
সেই দিন থেকে আর কাঁদি না, কবিতা না হলে,
তবুও একটা দুঃখ আমার
এতদিনেও আমি তোমাকে নিয়ে একটি কবিতাও
লিখতে পারি নি!

২৯/১১/১৮

ধূসর রঙের দিন

ধূসর রঙের দিন

সে দিনটি ছিল ধূসর রঙের, যূথিকা!
সূর্য তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে রেখেছিল,
যখন তোমাকে আমি বললাম,বিদায়–যূথিকা!

বৃত্তের পরে বৃত্ত বসিয়ে প্রথম আলোই ভোরের পানপাত্রে যেই তুমি বিদায় চুমু দিয়েছিলে আমায়,
সেই থেকে বিবর্ণ ছায়া তাড়া করে অন্তরীক্ষে!

জানো যূথিকা,
একটি ঘটনা শুধু মাত্র একটি সম্ভাবনা;
নচেৎ ডাহা মিথ্যা কিছু,
অথবা-আছে জীবনের গল্প,কিছু মেঘলা প্রতিচ্ছবি!

ধুলো মাখা শ্লেট, রং তুলি ক্যানভাস অস্পষ্ট চিত্র;
কুড়িয়ে পাওয়া কাঁকন খুঁজে নির্জীব হাত সঙ্গত!
প্রসঙ্গতই সে দিনটি ছিল ধূসর রঙের, যূথিকা!

২৬/১১/১৮

তবুও আমি

তবুও আমি
.
স্মৃতি ঝরা অতীত ধূসর মেঘে অন্তহীন মনে হয়,
অনুভূতির কোনো রং থাকে না,!
লাল হলুদ কমলা সব রকম বা——-নীল রঙের
অতীতগুলো ঝরে পড়ে কুয়াশার মত !

এক পলক শুধু এক পলক চেয়ে দ্যাখো ঐ সীমান্তে,
যেখানে স্বপ্নরা আজো বেঁচে আছে,!
ভোরের হাওয়ায় অনুভবে বলে যায় আছি অপেক্ষায়,!

ধূসর মেঘে রঙিন স্বপ্ন হাসে,শরৎ হেমন্ত শেষে শীতের
কার্নিশে পাতা ঝরা বিষণ্ণ সমুদ্রে,!
তুমি আমি সেই আছি,তবুও সময় বিপরীত আমাদের;
আয়নায় ঝুলন্ত চিত্রে একই মুখোশে
ভিন্ন অবয়ব,,!

রং চটা ঘরে ময়লা কার্পেট ঝেড়ে ঘুমাতে গেলে শুধুই
মনে হয় এই আমি সেই আমি নই,!
অতপর,,,,
চোখ মুছতে মুছতে ঘুম ভাঙলে নিজেকে চিনতে ভুল
হয় না,!সব কিছু ভুলেই সেই আমি,!

২৪/১১/১৮

ভাগ্য নির্ধারণ

ভাগ্য নির্ধারণ,

মাঝে মাঝে অস্পষ্ট আগুনের তরঙ্গায়িত তল
থেকে একটা মাথার খুলি বের হয়ে আসে,,,,,!

অগ্নি শিখার লেলিহানে ভাজা বাতাস,
আমি তখন গন্ধ পাই পোড়া মানুষের,!
অনেকেই জানে ইতি প্রহসন-অস্পষ্ট আগুন-
জ্বলে জ্বলে ছারকার করে ইতিবৃত্ত আয়োজন,!

বিল্মবিত বছরে রাত হয়ে যায় দিন,
শতাব্দী ধরে তৈরি হবে না ভাগ্য নির্ধারণ,!

২৮/১০/১৮

পল্লী বধু বালা

পল্লী বধু বালা,

ছবি ইন্টারনেট

অর্হনিশি শান্তবায়ে রুদ্ধকণ্ঠ গীতহারা
কাঁপা কাঁপা স্নিগ্ধ হাতে পুষ্পমালতী মালা
ফুলে ফুলে মধুকর খেলে লয়ে পুষ্পশরা
যৌবনের তরঙ্গ কুন্তলে অনন্ত মৌন চঞ্চলা ।
বনচ্ছায়ে চেয়ে আঁখি হেরি শুধু কহেলিকা
মাঘের হিম বায়ে বিকশিত পুষ্পদলে
ছায়াখানি মায়ামণি নিশীথের যৌবনিকা ।
গাঁধা ফুলে পল্লবমর্মরে গন্ধমাখা বাতাসে
পান্ড আকাশে ধ্রমবরণ কালোচুলে
প্রেয়সী রমণী উর্বসী নয়নজলে ভাসে
বৃষ্টির সুরে সুরে তরণী ঘাটে ধরণী তলে ।
দুরাশার পূরবী রাগিনী সুরে পল্লী বধু বালা
বিজন পথের ছায়াঘনবনে হেটে হয় সারা
হাসি মুখে ঘুরে ফিরে নবান্ন দুপুর বেলা
সখার তরে বিষন্ন মনে হয় শুধু ঘরছাড়া ।

17/11/15

সময়ের ব্যবধানে

সময়ের ব্যবধানে,
বহু দিন বহু ক্রোশ একা হেঁটে পেরিয়েছি,
ঐ নীলক্ষেত থেকে আউস ধানের আইল,
ছাইতন হরিতকীর বন,কিংবা নীল সীমানায়,
শুধু তোমায় একবার দেখবো বলে
এই ব্যকুল দু’চোখে ভরে ।
নীলিমার নীলে শঙ্খচিল হয়ে হেমন্ত দুপুরে,
________কিংবা কখনো
জোছনার সাথে পাল্লা করে হিমশীতের রাত্রে,
নীলকমল দিঘীর জলে তোমায় খুঁজে ফেরা,
অত:পর_______,
তুমি কোথাও নেই_______,
জুঁই চামেলী টগর শেফালীর বনেও নেই !
আজ সব ফুল অঝরে ঝরে যায়___,
না দেখার বিরহে নিরবে শুকায়___,
তবুও চেয়ে রই যূথিকার সাদা পালকে,
সময়ের ব্যবধানে দেখা হবে পলকে পলকে।
.

18-09-16

চোখের কোনো রং নেই

একটি ল্যান্ডস্কেপ,
পরিত্যক্ত রোদের কিরণে আদ্রতা হারিয়েছে,
চোখের কোনো রং নেই; অন্ধকারে স্বচ্ছ দেখে!

একটি সুপ্ত মন,গোলাপের মত পুষ্প বৃন্তদল,
যার খুব গভীরে নিরন্তন প্রেমের শিকড় শুরু!

জানি যে,আমি তোমার সব এই সব দিন রাত্রে
কারণ আমি তোমার ভিতরে নিভৃত থাকি মিশে!

জং ধরা ডাক বাক্স,নেই ডাক পিয়ন-নষ্ট লেফাফা,
শীতের রাত্রে ডাহুক চোখে ঘুম নিদ্রায় অনিবিড় মন!

একটি ল্যান্ডস্কেপ,
পরিত্যক্ত রোদের কিরণে আদ্রতা হারিয়েছে,
চোখের কোনো রং নেই; অন্ধকারে স্বচ্ছ দেখে!

১১/১০/১৮

শত জনম পরে

শত জনম পরে,
রৌদ্র ঝিলমিল আকাশ নীলে
—প্রজাপতি করে খেলা
শুভ্রশঙ্খে সূর্যপ্রদ্বীপ জ্বেলে।

ঝাউয়ের কাননে শিরীষের ডালে
—দীপ্তোময়ী মৌনচঞ্চলা
ভেসে যায় মন নদীর জলে।

সাঁঝ-আঁধারে বিজন তারার মাঝে
——দেখি ধূম্রের কণ্ডুলী
মনে সন্ধ্যা আরতি হয়ে বাজে।

শতরুপে হৃদয় মন্দির সেজে
——–ক্ষণেই যায় চলি
ভেসে ঝরা পালকের মাঝে।

কুহেলি ঝরা পলাতকা প্রিয়া মোর
——নিশীথের গাঢ় মরীচিকা
আঁখি মেলে রয়েছ কোন্ দিগন্ত-সুদূর।

দেখা দাও যে তুমি একবার
——মুছে রুধির লিপিকা
ছোট্ট মনে এই তো বাসনা আমার।

স্বপন সুরার মোহিত ঘোরে
–তোমার প্রতিমা গড়ি,
নক্ষত্র খচিত মৃত্যুর পাথারে।

অপরুপ রুপ দেখে বারে বারে
—পাপড়ির মতন ঝরি,
আপ্লুত উত্‍সবে হৃদয় কেঁদে মরে।

দূর-দিগন্তের ঐ নীল সীমানায়
——–শত জনম পরে
চকিত দু’টি আঁখি তোমায় চায়।

রক্তিম চন্দন মেখে শত দলের নীড়ে
—অশ্রুহীন হাসিতে
আজ ও খেলা কর অলিদের ভিঁড়ে।

13/10/15

কবিতা পাঠ–১

কবিতা পাঠ–১
আজকের কবিতা–মুখোমুখি,
কবি–আমিনুল ইসলাম,।

প্রথমেই শ্রদ্ধেয় কবির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,যে ওনার কবিতাটি আমি আমার মত ব্যাখ্যা করার জন্য,,!কেন না কবির ভাবনার সাথে আমার ভাবনা নাও মিলতে পারে,,!প্রিয় কবি আমি একজন পাঠক, আর পাঠক হিসবে আমি আমার স্বল্প জ্ঞানে আলোচনার করার চেষ্টা করেছি যাতে করে আমি কিছু শিখতে ও জানতে পারি,,তাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,!

“মুখোমুখি” শিরোনামে কবিতা একটি মুগ্ধ কর বিরহ প্রেমের কবিতা। এ কবিতায় কবি একটি প্রেমের সুন্দর উপখ্যান তুলে এনেছেন,!

কবির প্রেমিক মন সর্বদায় প্রিয় মানুষের পাশে থাকতে চায়,খুব কাছাকাছি থাকতে চায়,প্রিয়ার অভিমানী মুখটা যতই লুকিয়ে রাখুক না কেন কবির প্রতি থেকে তবুও সে থাকতে চায়,,,!

যদিও শংকা থাকে কবির মনে কখন কি হয়ে যায় দুজনার,,!তারপরও কবি জানে যে তার মনের মানুষের এমন বসাতে ই সুখ অনুভব হয়,,যা কিনা কোনো কিছুর বিনিময়ে পাওয়া সম্ভব নয়,!এটা হাজার হাজার বছরের সাধনার বিষয়,!

কবি যখন দেখলেন যে তাঁর প্রিয়া প্রেম নিবেদনে
বিরুপ প্রকাশ করছে,তখন কবি প্রিয়াকে এখানে
এ কথাও বলেছেন,

“তুমি জানো কি মুখোমুখি বসার উপলদ্ধি,!”

এখানে কবি সরাসরি প্রশ্ন করেছেন তার মনের মানুষকে,,!কেন কবির প্রতি তার এত অভিমান,এত অবহেলা,কবি জানতে চেয়েছেন!

কবি আরো জানতে চেয়েছেন য়ে কিভাবে চোখে চোখ রেখে ভাব বিনিময় করতে হয়,ইশারায় কিভাবে না বলা কথাগুলোর প্রক্রিয়া জানানো হয়,,!কবির প্রেমিকা কি আদৌ এগুলো জানে কবি তাঁর প্রিয়ার কাছে অনেক আকুল কন্ঠে জানতে চেয়েছেন,,!

কবি যখন বুঝতে পারলো যে তাঁর মনের মানুষ কিছুই বলবে না তখন নিজেই তাকে বুঝিয়েছন এমন সব শব্দ দিয়ে যাতে করে যেন তার বুঝতে কোনো সমস্যা না হয়,,!সত্যি তাই প্রিয় মানুষদের এমন মধুর করেই বুঝাতে হয়,, কবি সেটা জানেন,,,!

তাই তো কবি কাগজের বুকে কবির ভালোবাসা বা ফুলের সাথে সূর্যের ভালোবাসা,জলের সাথে চাঁদের ভালোবাসা আরো কত কিছু,,!কবি বুঝিয়েছেন ভালোবাসা কখনো মিথ্যে আাশা নয়,ভালোবাসা হলো চিরন্তন সত্য,স্বপ্নবুকে স্বপ্ন আঁকা,চাতক পাখির মত,!

অতপর কবি যখন দেখলেন কোনো কিছুতেই প্রিয়ার মন ফিরানো গেলো না,তখন কবি বেশ বিরহ আবেগ কণ্ঠে বলে গেলেন প্রিয় মানুষকে
”পাশাপাশি বসে,পাশাপাশি চলে,শুধু মাত্র সহচর হওয়া যায়,কখনো প্রেমিক হওয়া যায় না,,”

এখানে কবি অনেক দুঃখ ও কষ্টের সাথে এমনটা বলেছেন,,!কারণ তাকে অনেক ভালোবাসে তাকে অনেক স্বপ্ন বুকে বেঁধেছেন,!কিন্তু দেখলো কবির ভালোবাসার কোনো মূল্যায়ন হচ্ছে না তখন কবি
এ কথা গুলো তাঁর প্রিয়াকে শোনালেন,,!

শ্রদ্ধেয় কবি খুব সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় তার মনের মানুষকে বুঝিয়েছেন ভালোবাসার মানে,!
এতে আশা করি কবির প্রিয় আর কখনো অভিমান করে থাকবে না কবির প্রতি,,!

নিম্নে কবিতাটি পড়ার সুবিধার জন্য তুলে ধরা হলো,!

মুখোমুখি
——-আমিনুল ইসলাম

কিছু সময় বাধ্য হয়ে কাছাকাছি আসা,
অভিমানী মুখ অপেক্ষা করেও পাশাপাশি বসা।
পাশাপাশি বসতেই জেগে উঠে অস্বস্তিবোধ
ঘটতে পারে কাঁধে কাঁধে সংঘর্ষ
হতে পারে হাতে হাতে স্পর্শ
গায়ে হেলান পড়ার ভয়
মুখোমুখি বসাতেই তোমার স্বাচ্ছন্দ্যবোধ।

তুমি জানো কি মুখোমুখি বসার উপলব্ধি!
চোখে চোখ রেখে ভাব বিনিময়,
মনের কথাগুলো ইশারায় প্রকাশে অভাবনীয় প্রক্রিয়া।
বাতাসের সাথে নিশ্বাসের শব্দের প্রেরিত বার্তা,
কম্পিত ঠোঁটের সান্নিধ্য লাভের প্রচেষ্টা।

দেখেছো কি তুমি চেয়ার টেবিল মুখোমুখি অবস্থান !
কাগজের বুকে কবির ভালোবাসা আদানপ্রদান!
কবিতা আর পাঠকের মুখোমুখি প্রণয়!
সূর্যমুখী আর সূর্যের ভাব বিনিময়।

দেখেছো কি দর্পণের মুখোমুখি যৌবনের প্রতিচ্ছবি!
নদী স্বচ্ছজলে চাঁদের জলছবি,
স্নিগ্ধ আলো বিনিময় রবি -শশী,
চাতকের পিপাসা নিবারণে নয়ন উর্ধমুখী।

পাশাপাশি বসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হয় সহচর
প্রেমিক হওয়া বড়োই দুস্কর।

কবিতাটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে,,!আশা করবো আপনাদেরও ভালো লাগবে,!
কবির কলম চলুক দূর্বার গতিতে এই দোয়া করি,,!

©সুজন হোসাইন
২৪/০৯/১৮

শরণার্থী

শরণার্থী

এখানে রোহিঙ্গা শিবিরে মুসলিম শরণার্থী,
এরা সবাই ক্লান্ত পথিক !

যেমন পড়ে রয় মৃত সাদা দাড়কাক,
নির্জন প্রান্তরে পা ছড়িয়ে ।
ঠিক তেমন ।

এখানে ক্রমাগত নিরবতা ছড়িয়ে পড়ছে ।
দিনের পর দিন,
রাত্রির পর রাত্রি—ছড়িয়ে পড়ছে ।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এই শরণার্থী হয়ে
মানবতার ঠুনকো কার্নিশে
এরা সবাই নির্বাক পরজীবি !

ওদের বেড়ে ওঠার অর্ধ-পথে ঝুলে আছে
মৃত্যু দ্রুত হাতে নিয়ে নিঃকৃষ্ট নির্যাতনের
এক একটি চুম্বন ।

এখানে রোহিঙ্গা শিবিরে মুসলিম শরণার্থী,
এরা সবাই ক্লান্ত পথিক !

যেমন পড়ে রয় মৃত সাদা দাড়কাক,
নির্জন প্রান্তরে পা ছড়িয়ে ।
ঠিক তেমন ।

22-09-17
বিঃদ্রঃ উৎসর্গ ঘর ছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রতি,,!

ঝরা ফুল

একটি ঝরা ফুল,
শুকনো পাতার মর্মর শব্দে কয়েকটি কাঁটা,
সেঁদো মাটির গন্ধ্যে লেপ্টে থাকা বিরহ ক্ষত,!

আজ বিকেলের বৃষ্টি শেষে নতুনত্ব হরণ করেছে,
তোমাকে একবার দেখবে বলে দু’চোখ রাঙিয়ে,!

আদ্ররিত তুমি স্মৃতিচারিত সুখ বুকের কোণে কাঁদে
আসো নি তুমি নেই তোমার পদচিহ্ন,শূন্যময় মৃত্তিকা,!

একটি ঝরা ফুল,
পাপড়ি গুলো মুখ থুবড়ে পড়া,নেই নি কেউ যতনে,
তোমাকে ভেবে স্বপ্নগুলো ঘর ছাড়া আজ নির্বাসনে,!

২১/০৯/১৮

স্বপ্ন

স্বপ্ন
স্বপ্নের জানালায় উঁকি দিয়ে
নিত্য দেখি যে স্বপ্ন,
বাস্তবতার পদপিষ্টে রোজ’ই
হয় সে চূর্ণ-বিচূর্ণ,!

মনটা আমার খেয়ালি দোল
নীল পদ্ম কমল,
তাই তো জল চোখে টল্ মল্
স্বপ্ন নীলৎপল,!

স্বপ্ন আসে স্বপ্ন ভাঙে সহস্র
হয়নি তবু লীন,
স্বপ্ন মানুষ আমি স্বপ্ন দেখবো
স্বপ্ন চোখে প্রতিদিন,!

০৩/০৯/১৮

তবুও জীবন

তবুও জীবন

তবুও জীবন– চলবে তা আজীবন
তবুও জীবন–ইতিআন্তে শুধু মরণ,!

তবুও জীবন–মরণে করে সন্ধি
তবুও জীবন–বয়স ফ্রেমে বন্ধি,!

তবুও জীবন–অচল টুকরো মন
তবুও জীবন–প্রেমচিত্তে মলিন,!

তবুও জীবন–বিরহে রাগ অনুরাগ
তবুও জীবন–কষ্ট ভুলা অনুযোগ,!

তবুও জীবন–বাস্তব বলে বাস্তবতা
তবুও জীবন–ছোট্ট ভুলেই ব্যর্থতা,!

তবুও জীবন–জন্ম থেকে জন্মাত্তর
তবুও জীবন–ভালো মন্দ নিরন্তর,!

তবুও জীবন–প্রেমশ্লোকে বিরহগাঁথা
তবুও জীবন–সত্য মিথ্যে একআত্না,!

তবুও জীবন–চলবে তা আজীবন
তবুও জীবন–ইতিআন্তে শুধু মরণ,!

০২/০৯/১৮