লবণ পরখে
ছোঁয়াও জিহ্বা…
শোণিতের শ্রাবণে
…
আরদ্ধ আগুন নিভে গেলে
পাবে অগাধ সমুদ্র
নীল জল;
স্বর শ্রবণে
জেনে যাবে অতলের খবর!
ট্যাগ আর্কাইভঃ দাউদ এর কবিতা
দোয়া করি প্রিয়তমা
দোয়া করি প্রিয়তমা
দোয়া করি সুখে থাকো
দোয়া করি যেমন খুশি স্বপ্ন আঁকো
স্বপ্নের আলোয় জীবন দেখো
দোয়া করি-
যা কিছু অশুচ, অমঙ্গল, কষ্টকর
দূরে থাকুক তোমা থেকে সারা জীবন ভর।
দোয়া করি
দোয়া করি, যেন ভুলতে পারো আমার নাম
দোয়া করি যেন মুছতে পারো সারা বদনাম!
দোয়া করি প্রিয়তমা-যেন
নির্জীব সন্ধ্যার হিম কাঁটা একাকীত্ব তোমায় বিষণ্ণ না করে
অন্তরে অভ্যন্তরে নিঃসীম মৌনতা যাতে ভর না করে;
দোয়া করি –
নতুন প্রভাতের মত তুমি অরণ্যের হাসি ফোটাও প্রতিদিন
দোয়া করি বর্ণীল সাজে সাজুক চারপাশ অনন্ত রঙ্গিন!
আমি প্রাণ ভরে দোয়া করি
অন্তর্যামীর সমস্ত আকুতি নিয়ে প্রার্থনা করি
মুক্ত বিহঙ্গীর ডানায় তুমি উড়ে বেড়াও নীলিমা আকাশে
দ্রাঘিমার শেষাংশে পৌঁছে যাও নির্ভয়, সদানন্দে
দোয়া করি, সব পেয়ে তুমি ভুলে যাও-
ভুলে যাও, ভালোবেসে একদিন ছুঁতে চেয়েছিলে নিষিদ্ধ গন্দম
দোয়া করি দূরে গিয়ে হৃদয় জুড়ে ফোটাও যেন প্রাণবন্ত রঙ্গম।
দোয়া করি প্রিয়তমা
সুখে থাকো তুমি
দয়া করে আমায় করে দাও ক্ষমা।
পারছিনা -কিছুই হচ্ছেনা
নাহ!
হচ্ছে না,
কিছুই হচ্ছেনা, মন প্রাণ জীবন দিয়েও না
রক্তে ঘেমে জল
আকণ্ঠ পান
তিয়াস মিটছে না, অন্তর পুড়ে অনল
মনে জমে ছাই, উৎকণ্ঠা- হতবিহবল;
চোখের নিকটে ভুকা মুখ
চাইনা আর- সাধ্য সংকটে থাকুক
সরলের দৃষ্টি
পবিত্র মিষ্টি, প্রাণের গরলে
তোলে ঝড়- তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়;
কণ্টক নয়… কণ্টক নয়
চরণ তলে অভাগার ধূসর হাড়গোড় করে কড়মড়!
এই যে মাটি- আদিম ভিটে
মন পোড়া মানুষের পাঁজরে রয়েছে লেপটে;
এই জল
ঘটি- বাটি
ধু ধু রুক্ষ স্বর, জীর্ণ করোটি
লুটানো স্তন;
বিদীর্ণ বৃক্ষের রোদন
হক মাওলা!
ইয়া রব… ইয়া রব…জপ কীর্তন!
অন্ধ সায়াহ্ন
নীড় শূন্য হাহাকার
থামছে না কান্না- নিকষ মৌনতার;
পারছি কই সইতে-
অথবা প্রাণ খুলে কইতে,
সেতারার জ্বল জ্বলে চোখ
আমাকেই করতে হয়- ভোগ
নির্মম উপহাস- বিপুলা দুর্যোগ!
গৃহ
নিগৃহ অভিন্ন শোক- নিরীহ আত্মায়,
ভালবাসি সবার হাসি মুখ, যদিও
পারছি না কিছুই
কিছুই হচ্ছেনা অসম বিরহ কান্তায়…
দৃশ্যপটে তুমি অতুলনীয়া
যে কথা টা বলতে না পেরে তুমি আমূল চুপসে গেছ
আমার চোখের সামনে প্রজ্বলিত সেই কথার দৃশ্যপট;
ভয় পাচ্ছ বলবো না; হয়তো বলার জন্য মিলছে না মোক্ষম বাঁক
জানি, চলতে চলতে আর একটি বাঁক এলেই
মুহূর্তেই ছোঁ মেরে নিতে পারবে ইউ টার্ন ; অক্ষম নির্বাক কাক
অথবা সিগনাল পোষ্টের নিষ্প্রভ নীল বাতির মত বেদনার্ত চোখে
চেয়ে থাকা ছাড়া আমার আর কি করার আছে? কি করবো আমি?
আমার জঞ্জাল ময় জীবনের ইতিহাস, ঐতিহ্য রহিত হবে নির্বিবাদে।
কিছু সোনালী স্মৃতি, কিছু রক্তিম কাব্য, আর সাদা মাটা কয়টা স্বপ্ন;
আজ অবধি যে সব নৈবদ্য অনুরণন তোমাকে স্পর্শ করতে সক্ষম হয়নি!
এ সব কিছু বিচ্ছিন্ন জঞ্জাল; যা কাটিয়ে উঠেছ ইতিমধ্যে! নিরুদ্যম জড়বস্তুর মত
অথবা এর চেয়েও নিকৃষ্ট কোন পদার্থের মত অবিরাম পদ পিষ্ট হতে হতে
আমিও তলিয়ে যাবো নিরুদ্দেশ অন্ধকারে……
সুতরাং –
ভয় নেই প্রিয়তমা,
অনুচ্চারিত শব্দের অপ্রিয় সত্য এবার মাথা তুলে দাঁড়াক
মিথ্যার মেকি হাসি আর বিষফোঁড়া দমিয়ে রাখার তথাগত বেঁচে থাকা নিপাত যাক।
যেই কথা বলতে দ্বিধা
রুদ্ধ স্বরে গলা ভারী তোমার, সেই কথার দৃশ্যপটে তুমি অতুলনীয়া
দারুণ অতুলনীয়া……।।
যাবোনা ন্যাড়ার দলে
আর সবার মত খাপ খাইয়ে চলতে পারিনা বলে
তোমাদের কাছে আমি বেখাপ্পা জীব !
… সজীব মনের আয়নায় নির্জীব প্রতিচ্ছবি
বলে দেয় তোমাদের এই বেলাজ চরিত্র কথা
আমার খুব ব্যথা লাগে
মানুষ হয়ে মানুষের পূজা করতে দেখে;
আমি যাবো না একিই ক্ষুরে মাথা ন্যাড়া করতে
সে ন্যাড়ার দলে
গাঁজাখুরি প্রশংসায় পঞ্চমুখ হইনা বলে
তোমরা আমাকে বঞ্চিত কর আমার প্রাপ্য থেকে
অথচ জীবনের এক একটি মুহূর্ত আমি সঞ্চয় করি
সুন্দরের অবিনাশ বিভা
অহিংস
ভালোবাসায় পঞ্জি-ভুত করি নির্লোভ স্বপ্ন প্রভা
দিনে দিনে ক্রমে ক্রমে পূর্ণ-করি বিক্ষিপ্ত খানাখন্দ
তোমরা মানো না মানো
তোমাদের হাসি মুখই আমার সর্ব-সুখ… আনন্দ।
দূরারোগ্য ব্যাধি
বুকে বিষ পোড়
জবর দখল, ক্লান্ত;
অসুখে নির্বোধ অক্ষিতল।
মন যখন অচল মুদ্রা
বিপন্ন নিদ্রায় বিষণ্ণ রাত,
যন্ত্রণা যাপন।
আমি ভুলেছি আমাকে
অচেনা দহনে পুড়েছি
কয়লার মতন হয়েছি খাক!
বলতে পারো দায়ী কে?
চেয়েছি কবিতা জীবন পাক
ফুলেরা সুখে থাক।
চেয়েছি মোহনা
নদীরা মিটাক সঙ্গম বাসনা।
চেয়েছি গান
প্রেয়সীর অভিমান;
ইলিশে গুটি বৃষ্টি
চেয়েছি, মধু মন্তর খুনসুটি!
আমি তো জড় বস্তু না
যেমন করে –
বসিয়েছো বিকিকিনির হাট
করেছো বেচাকেনা!
আছে রক্তের উত্তাপ
আছে মাংসের সন্তাপ,
আছে মন
বর্ণীল স্বপন!
তুমি এক দুরারোগ্য ব্যাধি!
একের পর এক
সংক্রমণ করে যাচ্ছো-
বিশাল জনপদ; পাহাড় থেকে নদী।
প্রেম না ঘৃণা
অগত্য তুলে নেয়া হল
যা ফেলে দিয়ে ফেরিয়ে গিয়েছে সীমান্ত প্রাচীর
যা কিছু সত্য; সব যেন
নির্বাক অসহায় চিত্ত! মিথ্যার স্ফুটন ফুলঝুরির মত
তথাগত ক্ষমতার মত
বিচ্ছুরিত কাঁচের মত চিক চিক করছিল।
অবধারিত অন্ধকার নেমে আসে, নামতে হয়
অথচ নিলামর জলসভা ভেঙ্গে কান্নারা স্রোতের মত প্রবাহিত!
তথা কথিত সুশীলেরা সভ্যতার আশ্রয়ে বাঁচে; অথচ –
সভ্যতা বুঝতে রাজি নন কোন ভাবেই!!
কিন্তু বসন্তের আগমনে ব্যস্ত হন ঠিকই
যদিও অন্তরে জাগে নি কোন আকুতি
বাতাসের উজানে ঝরা বিবর্ণ পাতা গুলোর ভেঙ্গে যাওয়া আর্তি শুনে না কখনো।
পাহাড় থেকে নদী
অবলীলায় কসম করে রক্ষা হয় নি মনুষ্যত্ব আজ অবধি।
প্রার্থনায় নতজানু শাশ্বত অন্তর
জলে ডোবা কর্নিয়ায় মিনতি লীন স্বপ্ন বিস্তর!
কে বিশ্বাস করবে?
সেই নৈবদ্যে দেখা মেলেনি যৎকিঞ্চিত সহানুভূতি
মেলেনি আশ্বাস; সুমতি
রৈ রৈ করা হুজুগী জোয়ারে ভেসে যায় সমস্ত আয়োজন!
এমনিই অক্ষম হৃদয়
কখনো জানতে পারে নি – হাসি না কান্না? জীবন না মরণ?
ধ্বংস না সৃষ্টি? প্রেম না ঘৃণা?
কি- সে তা’র আছে প্রয়োজন??
মায়াজাল
যে চলার পথ গুলো অত্যন্ত ক্ষীণ, নয়তো এতটাই ক্ষুদ্র যে পথ চলতে শুরু করার আগেই পথে অন্তিম উকি দেয়। আমরা মনে প্রানে- কারণে অকারণে জড়িয়ে পড়ি সে পথের মায়ায়। যে পথের সাথী প্রথম সাক্ষাতে মুছে ফেলে অজ্ঞাত কালিমা, যার চোখে লিখা থাকে আপন করে ভাববার ভাষা, যায় তীর্যক চোখে আকা থাকে পূর্ব জনমের বন্ধুতা, অজস্র পরিভাষা;
আমরা আমাদের জানতে অজান্তে তারে অর্পণ করি অন্তস্থ মনীষা —
করি অর্পণ
নিঃশর্ত, নির্মোহ, নিষ্কণ্টক মন
যে জানে অমিত লগনে গাহিতে সততসুর, যার সনে
দিনের শেষ সুরুজের আলাপন মধুর
আমরা তারে পারিনা ধরে রাখতে; চন্দ্রবিন্দুর বানানে,
কইতে পারিনা কথা জড়তা হীন মর্ম তানে!
ফেরিয়ে যাই… শেষ প্রান্তরেখা
অ সমান্তরাল জীবনে থেকে যায় অক্লেশ আঁকা…
এই উদাসী বেলায়
শ্যামা সুধায় অন্তিমকাল
বিদায়ের আগে বাজে বিদায়ের ঘন্টা… পথের সাথীর পিঠে ঝুলে থাকে দৃষ্টি অমিয় মায়াজাল।
হৃদয়ের ভাঁজে – মগ্ন মগজে
হৃদয়ের ভাঁজে কিংবা ধ্যান মগ্ন মগজে
কবিতায় সাজানোর মত আর কোন শব্দ অবশিষ্ট নাই!
অন্তর নিংড়ে দুমড়ে মুছড়ে নির্গত দীর্ঘশ্বাস-
তবে কি
আমি শব্দ শূন্য হয়ে গেছি?
বিষণ্ন অন্ধকার বুকে নিয়ে দিগন্ত জোড়া মেঘের সংসার,
মৃত নদীর মত শবদেহে শুয়ে আছে জীর্ণ প্রান্তর, দুর্মার
বাতাসের শানিত থাবায় নির্মম আঁচড়; যন্ত্রণার ভাষা নাই
নির্বাক চাতক চোখে ভর করে পৃথিবীর সমস্ত অসহায়ত্ব!
তবে কি- এই আমি নিঃস্ব ?
কবিতার স্বাদ পাবার আগেই কি; ধ্বংস কবিত্বের উৎস!
কোথাও কোন শব্দ নাই
ফুল, পাখি, অরণ্য-জলাশয় সবই নীরব নিস্তব্ধ, শব্দশূন্য!
অনন্ত কাল ধরে যেই তপস্যায় করেছি কবিতার পূজা
কালের নিস্তব্ধতায় সেই পূজা যেন অচীন স
শব্দহীন মানুষ কি মানুষ থাকে আর?
সুন্দরের বস্ত্র হরণ
অনিদ্রা বিলাসে কেটেছে বিগত পৌষের শীত
চোখে ছিলো ধু ধু কান্তার পথ কল্পনাতীত হাহাকার
কর্কশ ব্যাধিতে রুক্ষ সৌষ্ঠব- চুপসে গেছে শৌর্যের শিখা
তীব্রমন্দায় কেটেছে মাঘী পূর্ণিমা-একটি কবিতাও দেয়নি দেখা;
বিষাদ ভরা একাকীত্বে কেটেছে সন্ধ্যা আরতি- তথাগত ধ্যান
ঘুঘুর কান্নায় ভেঙ্গেছে অরণ্যের মৌনতা, যজ্ঞ মগ্ন প্রাণ ।
একিই ভাবে দীর্ঘ নৈঃশব্দ্যের পর উচ্চারিত হয় নিভৃত আত্মকথন
চাবুকের কষাঘাতের পর- যেমন জ্বালাময়ী দহন, অগণিত বসন্ত
ভেসে গেছে বিরাগ ভরা দীর্ঘশ্বাসে; উদ্বাস্তুর রোদন
শুনতে পায়নি কেউ- দূষণে দূষণে নদী হারিয়েছে চিরন্তন রূপ
ভাঙনের কবলে অবশিষ্ট নেই বাস্তুভিটে, ঠিকানাহীন স্বপন।
এখনো রুক্ষ্ণ অন্তর, প্রণয়াবেগে ছুটছে জীবন তেপান্তর ফেরিয়ে
থেকে থেকে উঠে আসে প্রখর বালিয়াড়ি ঝড়; অশান্ত হৃদয়ে
ঝেঁকে বসে বিধ্বস্ত রাত্তির শোকার্ত মাতম-
হে ঈশ্বর
এবার তবে স্তব্ধ হোক জগতের সমস্ত নিয়ম নখর; ধ্বংস লীলা
আর সুন্দরের বস্ত্র হরণের মহোৎসবে
লুটতরাজের হাতে অর্পিত হোক ঋতুমতী পৃথিবীর সর্বস্ব!
রূপসী রাক্ষসী
সয়ে যাচ্ছি অনর্গল অপবাদ
নির্বিবাদ বয়ে যাচ্ছি এক একটি কষ্টের পাথর,
বুকের উপর জমেছে জমাট রক্তের স্তর; নিরন্তর
ক্ষয়ে যাচ্ছি অন্তর অভ্যন্তর,আবাদ অনাবাদ
আজ পার্থক্য নাই কিছুতেই
আমার পৃথিবী জুড়ে বিরাজ করছে ধু ধু মরু প্রান্তর!
হৃদয়ের সীমান্ত ছিলো উন্মুক্ত
সহজ সরল চিন্তার সূত্র ধরে বিযুক্ত মুখোশে
অনুপ্রবেশ করেছে নগ্ন ছলা কলা,
আমি তো স্বপ্ন বিভোর চোখে দেখেছি প্রেমময় দোলা
কে জানতো? কোকিলের বেশে ক্ষুধার্ত শকুন
খেলবে রক্ত মাংসের হোলি খেলা।
নির্বাক দেখে গেলাম যত উথাল পাতাল
রূপসী রাক্ষসী করাল গ্রাস, জবর দখল, ভোগ বিলাস;
আপসোস! নিলামে উঠা পণ্যের মত
এতোটা উদাম হতে পারো তুমি! যদি জানতাম…।
কবিতা
সবুজের বেষ্টনী ভেঙ্গে ঢুকে পড়ছে কালো আগুন
বিতাড়িত দুঃস্বপ্ন’রা নতুন রঙে ঝেঁকে বসছে মস্তিষ্কে,
মানুষের আত্মা ছেড়ে যাওয়া
মৃত সুন্দর ঘিরে নৃত্য মত্ত হয়ে উঠেছে উলঙ্গ শকুন!
চলছে উৎপীড়ন
সত্যের নির্মম নিপীড়ন,
মিথ্যের দাম্ভিকতায় চলছে নগ্নতার উত্থান
পরাজিত দেবতারা চলে গেছে ধরা ছোঁয়ার ঊর্ধ্বে
নিদ্রাচ্ছন্ন তীর বিদ্ধ প্রেমিক, মাথায় আগুনের শিথান।
মাতৃত্বের ক্যান্সার
অ ঠাঁই রক্ত নদীর বুকে জেগে উঠা চর
নাম তার বাংলাদেশ !
রক্তের লাল, উত্তাল জোয়ার পেলে দুর্মর
বাঁধ ভেঙ্গে মিশে বিশাল সমুদ্রে
নাম তার বঙ্গোপসাগর!
ক্ষরণের যন্ত্রণা নিয়ে যে কিশোরী
নিজে ঢেকেছে সবুজের চাদরে
নাম তার সুন্দরবন!
মরণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
যে পাখিটি আজো উড়ে স্বাধীনতার নেশায়
তার নাম দোয়েল!
গর্জনে তর্জনে উত্তাল সাইক্লোনে
যে জননী অতন্দ্র প্রহর গুনে
তারায় তারায় খুঁজে যুদ্ধে যাওয়া সন্তানের মুখ
নাম তার রেসকোর্স ময়দান!
পূর্ণিমার মায়াবী জ্যোৎস্নায়
নাকের নোলক, কপালের টিপ, পায়ে আলতা সাজায়
দীর্ঘশ্বাসে বুকের গোপন ব্যথায় কুরে কুরে খায় যে নারীর
নাম তার বীরাঙ্গনা!
স্বাধীনতার ৪১ বছর পর ও
মিটেনি রক্তের তীব্র তৃষ্ণায় আকণ্ঠ রাজাকার!
বেজন্ম চেতনায় ফিরে এসেছে দস্যু হানাদার
মায়ের আঁচলে বেড়ে উঠা মানব সন্তান
মায়ের সম্ভ্রম লুণ্ঠনে কাঁপেনি দানবীয় হাত তার!
বিজয় বিজয় করে যতোই করো চিৎকার
শুনে রাখো হে বাংলার পতাকা
তোমার অস্তিত্বে বেড়ে উঠেছে নির্মম ক্যান্সার!
জেগে থাকুক প্রেমিকপ্রবর
জেগে থাকুক প্রেমিকপ্রবর
যার সাথে আমার জন্ম জন্মান্তরের প্রেম
তার নামেই আমি লিখে দিয়েছি অন্তর-অভ্যন্তর, বুকের হেরেম
স্বর্ণালোকে জাগিয়ে রেখেছি স্বপ্ন- নিরন্তর…
বাঁকের শাঁখে শাঁখে মন্থর ধ্বনি, অতলে প্রাণেশ্বর
স্পর্শের নিবিড় গন্ধ শুঁখে শুঁখে প্রজাপতিরা চিনে ফুলের ধর্ম
মর্ম মহিমা মেখে মেখে জোয়ারের জন্য প্রস্তুত হয় মদিরা বর্ণ স্রোত;
যেখানে ক্ষণে ক্ষণে রচিত হয় নিত্য নতুন উপমা, হেম চূর্ণ পথ
জন্ম হয় নিদারুণ স্বর…কলকল ধ্বনি
অরণ্য মন্থন শেষে- পুণ্য জোছনায় ভাসে সুতৃপ্ত হৃদয়, বহ্নি শিখায়
উজ্জ্বল মুখ খানি নয়ন ভরে দেখতে দেখতে- নেমে আসে তন্ময়…
আমি নিষাদ উন্মত্ত… চিরন্তন
চন্দ্রিমা রাতে নামি শৈল প্রপাতে- উষ্ণ তনিমার সংগুপ্ত ধন
আমি অহোরাত্রি রঙ্গিন হই মত্ত চুম্বনে
জনম জনম ভালবাসি তারে- এই তাম্র তিয়াসের মনে ;
তাই বিলুপ্ত হোক দিন ক্ষণ গুনে গুনে ভালবাসার নিয়ম- নখর
রঙ্গো বরষে প্রাণের পরতে পরতে স্বপ্ন বুনে বুনে -প্রেম হোক অবিনশ্বর!
পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি জমিনে নির্বিচারে হোক গোলাপের আবাদ
কবিতার রন্ধ্র- মন্দ্র চিনে চিনে- জেগে থাকুক প্রেমিকপ্রবর… স্থাবর হাত।
__________________________
– গ্রন্থ “অচিন বুদবুদ” ( প্রকাশক – জাগৃতি )
অমৃতের ঢোক
কমলা-ত্বকী
সবুজ খোলসে
পাক ধরেছে সোনালী পরশে।
ঝাঁঝালো ত্বকে বিদ্যমান কুসুম, সবুজ ঘ্রাণ,
অম্ল যশে উসকে দিচ্ছো- লালাময় জিহ্বার কাহিনী,
আকণ্ঠ পান,
টসটসে মুখে … রসের ভুক!
মরি পিয়াসে!!
তাম্র তিয়াসে… দহনে পুড়েছে বুক
একি নিপুণ ফাঁদ!
নন্দিত উন্মাদ! অমৃতের ঢোক!!!