কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
আমি সুন্দর সকাল দেখলাম গোটা কয়েকটা জন্ম ধরে।
আকাশ দেখতে শিখলাম অপলক নয়নে; চাঁদের সাথে রাত জাগলাম কয়েক যুগ,
দীর্ঘ ২১’টি বসন্তে দেখলাম ফুলদের ফোটার প্রক্রিয়া।
আমি বর্ষার বুক থেকে তুলে নিলাম তুমুল শিহরণ,
একটা একটা করে শব্দদের সাজালাম রংধনুর মতো।
কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
আমার প্রতিটা মুহূর্তে আয়োজন করলাম শব্দ উৎসবের।।
.
তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে ভিতরে ভিতরে জড়ো করলাম,
একরাশ গোলাপের বিদগ্ধ ধূপের ধোঁয়াটে সন্ধ্যা।
প্রকৃতির প্রতিটা বিন্দুতে ছুঁয়ে দিলাম পরম স্পর্শে,
অরণ্য দেখলাম, নদী দেখলাম, ছয়টি ঋতুকে বুঝতে শিখলাম।
কবি হতে নয় কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
যাকিছু এলোমেলো সব গুছিয়ে পরিপাটি করলাম একটি কবিতার জন্য।
পৃথিবীর সমস্ত সাহিত্য সভার দ্বারস্থ হলাম কেবল তোমার নামে একটি কবিতার জন্য,
কোথাও একটি কবিতা লেখা হলোনা আমার।
তারপর ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে তোমার কাছে ফিরে গেলাম,
তারপর তোমার হাতে হাত রাখতেই আমার আঙুল ফুরে জন্ম নিলো সহস্র কবিতা।।
.
২১/০৮/২০১৯
ট্যাগ আর্কাইভঃ প্রেমের কবিতা
অনুভব
আমি জেনে গেছি,
এই পৃথিবীর অন্ধকারে তোমাকে ছাড়া আলো কতটা দুর্লভ।
আমি বুঝে গেছি,
কেবল তোমাকে ভাবতেই কতটা সহজ হয়ে উঠে অনন্ত জীবনের কামনা।।
.
আমি অনুভব করেছি,
তোমার চোখে চোখ রাখতেই কতটা শুভ্র আলো নেমে আসে পৃথিবীর প্রতিটা সকালে।
কী এক মোলায়েম আদর নেমে আসে আমার যৌবন জুড়ে,
কেবল তোমাকে খুব কাছ থেকে দু’দণ্ড স্পর্শ করতেই।।
.
আমি খুব সহজেই অনুভব করেছি,
তোমার নিশ্চুপ থাকা মানেই সমস্ত পৃথিবীর করুণ মৃত্যু।
তোমার একটু অভিমান মানে,
আমার সমস্ত জীবন ব্যাপী শোকের মিছিল।।
.
আমি খুব নিবিড়ভাবে বুঝেছি তোমায়,
তুমি ঠিক যতক্ষণ আমাকে মেলে ধরো ততক্ষণ আমার ভালো থাকা।
তুমি ঠিক যতক্ষণ আমাকে ভালোবাসো,
ঠিক ততক্ষণই আমার বেঁচে থাকা।।
.
১১/০৮/২০১৯
আমার খুব ইচ্ছে করে
আমার খুব ইচ্ছে করে, “কেউ একজন আমাকে কবি বলে ডাকুক”,
যদিও সত্যি বলতে আমি কোন কবি নই,
তবুও খুব ইচ্ছে করে কেউ একজন আমাকে ইচ্ছুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন করুক, “কবি, আমাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবেন…?
জানেন, আপনার কবিতা হতেই কেবল আমি কপালে কালো টিপ পড়েছি, এইযে দেখছেন হাত দু’টোয় মেহেদি পড়েছি তাও কেবল আপনার কবিতায় উপমা হবার জন্য।”
তারপর তার শাড়ির আঁচল দেখিয়ে প্রশ্ন করুক, “কবি, আমার শাড়ির ভাঁজগুলো আপনার কবিতায় তুলে ধরবেন…?”
আমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই সে আরও বলুক,
“জানেন কবি, আমি শাড়ি পড়তে জানিনা তবুও কেবল আপনি কবিতা লিখবেন ভেবেই শাড়িটা পড়েছি।”
.
কেউ একজন আমাকে তার চুলের খোঁপা দেখিয়ে একটু সরল কণ্ঠে বলুক,
”আমি জানি আমার চুল বিশেষ কিছু নয়, তবুও আপনার কবিতার অংশ করবেন এই আশায় ত্রিশ মিনিট ধরে খোঁপা সাজিয়েছি, দেখেন একটা গোলাপও গেঁথেছি।”
সে আরও বলুক, “খোঁপা চুল নিয়ে বোধহয় ভালো কবিতা হয়না!, আচ্ছা খোঁপা খুলে ফেললাম”
এই বলে সে তার চুলগুলো এলিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করুক, “কবি, এবার হবে কি…?”
.
আমার খুব ইচ্ছে করে কেউ একজন আমার পাশে এসে বসুক কেবল একটা কবিতার আশায়,
আমার হাত ধরে সে একটু মৃদু হেসে বলুক, “কবি, আমি হাসতে জানিনা, তবুও এইতো হাসলাম শুধুমাত্র কবিতার জন্য।”
তারপর সে আরও বেশি কাছে এসে ভাসা ভাসা সাদা কালো চোখে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা স্বরে বলুক,
“আমার চোখে কাজল খুব বেমানান সে আমি জানি, তবুও কাজল পড়েছি আপনার কবিতায় উপমা হবো বলে।”
সে তার হাতের আঠাশটা কাচের চুড়ি আমাকে ধরতে দিয়ে বলুক, “সবগুলো চুড়ি কেবল আপনার কবিতার পঙক্তির জন্য পড়া।”
তার অমলিন হালকা লালচে ঠোঁট জোড়া সম্মুখে এনে ভয়ে ভয়ে বলুক, “আমার ঠোঁট দু’টো নিয়ে কেবল একটা শব্দ লিখলেই হবে।”
.
আমি জানি, সত্যি বলতে আমি কোন কবি নই, তবুও চাই কেউ একজন আমাকে এভাবেই বলুক,
“কবি, কেবল আপনার কবিতা হয়ে শুধু আমিই থাকতে চাই, আমাকে করবেন আপনার কবিতা…?”
তখন আমি তার পায়ের আলতা ছুঁয়ে বলবো, “কবিতার জন্যতো তোমার পা’দুটোই সার্থক উপমা, আমি ঠিক তোমাকেই লিখবো আমার সমস্ত কাব্য জুড়ে।”
সে ভেজা ভেজা চোখ তুলে বলুক, “জানেন, আলতাও পড়েছিলাম কেবল কবিতার জন্য তবে ইচ্ছে করেই বলিনি যদি ভুল…”
কথা শেষ না হতেই তার লাজুক ঠোঁটে আঙুল চেপে বলবো “না বলাটাই ভুল হয়েছে, এমন যেন আর না হয় কোনদিন, চোখের কাজল মুছোনা জলে।”
.
২৬/০৩/২০২০
স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা
সেদিন হঠাৎ চোখ পড়লো,
তোমার উপর আমার।
এর আগে তো পাইনি সময়,
একটুখানি থামার।
লুকিয়ে লুকিয়ে দেখলাম আমি,
অনেকটা ক্ষণ ধরে।
মৃদু হাওয়ায় চুলগুলো সব
যাচ্ছিলো যে উড়ে।
কি ভেবে তুমি তাকাতে ই
চোখাচোখি হলো।
মনে হলো বলছো তুমি,
”একটা কিছু বলো।”
কি বলবো, তুমি তো তুমি ই,
সবার চেয়ে সেরা।
তোমায় দেখার মুহুর্তগুলো,
স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা।
আবার নিশ্চয় দেখা হবে একদিন
মনের মধ্যে তীব্র অভিমান পুষে।
ভেবেছিলাম কথা বলবো না আর,
দেখা তো দূরের কথা!
মুছে দিলাম যত তোমার আমার
অন্তর্জাল সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড।
যতরকম যোগাযোগের উপায়।
যাক মুছে যাক চিরতরে।
কিন্তু আজ নিরালায় একাকী সময়ে,
কেন জানি,
তোমায় সান্নিধ্য ফিরে পেতে চাইছে এ মন।
বারবার মনের মাঝে এসে করছে ভীড়,
তুমি এবং তোমার ও মুখখানি…..
তোমার যত স্মৃতিও অতীত কার্যক্রম ।
তুমিও দেখি ভীষণ মান অভিমানে
এমুখো আর হওনি একবারো।
নাওনি কোন খোঁজ প্রিয়তমা।
লক ডাউনের জেরে,
কি আশ্চর্য
তুমি হারিয়ে গেছো হঠাৎ, এই চেনা শহরের মাঝে।
কেমন আছো তুমি? ভালো আছো তো?
জানতে ইচ্ছা হয় খুব করে।
ভালো থেকো প্রিয়তমা,সাবধানে থেকো।
নিজেকে দূরে রেখো করোনা ভাইরাস হতে।
একদিন নিশ্চয় মুক্তি মিলবে মানবতার এই মহা
বিপর্যয় থেকে।
আবার মানুষ ফিরে পাবে তার হারানো প্রাণচাঞ্চল্য।
তখন দেখা হবে কথা হবে আবার আগের মতো।
শুধু ভরসা রেখো।
অধরা
একদিন তুমি বললে,
আমায় নিয়ে একটা কবিতা লিখতে পারো?
আমি বলেছিলাম, তোমার পুরো অবয়বই তো একটা মস্ত কবিতা।
মেয়েটি হেসে বলেছিলো, না সেটা না,
তুমি আমায় নিয়ে, আমার অনুভুতি নিয়ে,
তোমায় আমার ভালো লাগা নিয়ে একটা কবিতা লিখে দেখাও,
তবেই আমি তোমার হবো।
আমার অবয়ব তো বিধাতার লেখা কবিতা।
যা তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন নিজের অপূর্ব সৃষ্টি কর্মে।
সেই থেকে আমি শুধু তোমায় দেখি,
আর চোখ মেলে তাকিয়ে থাকি,
কি অপরূপ তুমি!
কবিতারা আসে কিন্তু আমি ধরতে পানি না।
আর দিনশেষে,
কিছুতেই তোমাকে নিজের করে পাওয়া হয়ে ওঠে না।
তুমি বরাবরই থেকে যাও অধরা।
আত্মবিশ্বাস
প্রত্যেক ভালোবাসাতে,
শেষটা কি হবে কেউ জানেনা।
তবে ভালোবাসাবাসিতে মনের জোর রাখতে হয়।
ভালোবাসায় পুরাদস্তুর সৎ থাকা চাই,
লক্ষ ও ঠিক রাখা চাই।
তবেই ভালোবাসা জিতে নেওয়া যায়।
বায়বীয় ভালোবাসা
এলোমেলো আলোতে ভাসিয়ে দিলাম প্রেম।
তুমি হাত বাড়িয়ে তুলে নিও,
আমার প্রেমের ছোঁয়াটুকু,
কোমল মমতায়।
আর স্বপ্নগুলো মিলিয়ে নিও জলের মুকুরে।
টলটলে ছায়ার মাঝে ফুটবে ঠিকই হাসি,
তোমার অপরূপ মুখখানিতে।
আমি জলের স্রোতে দেখে নেব তোমার সন্তুষ্টি।
তুমি উষ্ণ স্পর্শের সুগন্ধ মিশিয়ে দিও তাতে,
আমি মন ভরে তুলে নেব গভীর নিঃশ্বাস মেশানো
ভালোবাসার স্পর্শটুকু তোমার,
বহু দূর থেকে।
প্লিজ
ফোনটা রেখোনা …………প্লিজ।
একা বসে আছি তোমারই অপেক্ষায়,
আর নিজেকে সামলাতে পারছিনা কিছুতেই
জানো কিনা জানিনা.
বোঝ কিনা বুঝিনা।
আমি সত্যি আর পারছিনা প্রিয়তমা।
আমার ঘেটে যাওয়া জীবনটাতে তোমাকে না পেলে,
কোন কাজে মন বসবেনা কিছুতেই।
তিন সত্যি বলছি।
বিশ্বাস করো প্লিজ।
একবার তোমার ঠিকানাটা দাও নাগো জান।
ঠিক দেখো এক গোছা ফুল নিয়ে হাজির হবো
তোমার ব্যলকনিতে।
অন লাইন প্রেমে আর পোষাচ্ছেনা কিছুতেই।
এই ভিডিও চ্যাটিং,
অডিও প্রেমালাপ আর ভালো লাগছেনা সোনা।
এবার একটু হাত ধরাধরি হলে বেশ হয়।
কিম্বা বৃষ্টি ভেজা দিনে ঠোঁটে ঠোঁট রাখতে ইচ্ছা হয়।
দাও নাগো তোমার ঠিকানা।
একটু অফ লাইন প্রেম করি, প্লিজ।
পরস্ত্রী
একটু নিজের মতো করে ভালোবাসবো বলে,
তোমায় ডেকেছিলাম এই বসন্তদিনে।
মধুরতম কোকিলের কুহু কুহু ডাক,
ঝরাপাতাদের গান,
রোদ বাতাসের খেলা।
এই বিমোহিত ক্ষণে, তুমি এলে।
তবে শঙ্কিত পায়ে।
কেন এত দ্বিধা?
কিসের এত ভয়?
এত স্বতঃফুর্ত তুমি
এমন কুণ্ঠিত হলে কেমনে?
তোমার মুখ আমার চোখ চাইতেই,
আমি শোকাহত হলাম এক নিমেষে!
একি!
তোমার চোখে মুখে অন্যের সোহাগের চিহ্ণ!
তুমি কবে কবে পরস্ত্রী হয়ে গেলে প্রিয়তমা।
স্বপ্নের রাজকন্যা
এ্যাঁই মেয়ে, শোন মেয়ে!
তুমি কি এসেছিলে আমার স্বপ্নে?
দিয়েছিলে কি মৃদু টোকা ,
মনের দরজায়?
একেবারে অবিকল
সেই মুখ, সেই চোখ, সেই হাসি!
এতটা মিল কি করে হয়!
যাকে দেখেছি আমি গতরাতে।
বলো না মেয়ে,
তুমি কি এসেছিলে আমার স্বপ্নে?
ছলনা
বুকের মাঝে সুখ অসুখে
তোমার বসবাস।
বিনা কাজে বইলো বেলা,
সাড়ে সর্বনাশ।
ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে,
কথা চলে কি?
এই যুগের প্রেম পিরীতি
পুরাটাই ফাঁকি।
এক হাত বাড়াও তুমি,
আরেকটি রাখো খুলে।
সবই আমি বুঝতে পারি,
দেখি দু’চোখ মেলে।
কত আর লুকাবে তুমি,
তোমার ছলনা।
প্রেম তো নয় ,সময় কাটানো,
বুঝিগো ললনা।
আমিও এখন সময় করে,
হাতটা ধরি ঠিকই!
অন্য হাতটা অন্য কারো পানে
ঠিকই বাড়িয়ে রাখি!
বিভ্রম
হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা,
শব্দগুলো যখন,
খাতার পাতায় একত্রিত সমাবেশে,
কবিতা হয়ে ফোটে।
ঠিক তখনই তুমি এসে,
হাজির হও আমার সামনে।
কিশোরী কন্যার মতো
বেনী দুলিয়ে।
সলাজ নয়নে,নত মাথায়।
আড়ে আড়ে চেয়ে দেখো
অদেখা কোন সুন্দরকে।
তুমি কবিতা না প্রেমিকা?
আমি মেলাতে পারিনা কিছুতেই।
বিদেশ যাত্রা
ভিসা হয়ে যেতেই,
বুকটা কেমন মুচড়ে গেল হঠাৎ।
তোমায় ছেড়ে যেতে হবে বলে।
এক লোকমা ভাত নামলো না গলা বেয়ে।
ছেড়োনা হাত প্রিয়তমা ওগো,
আরো বেশি শক্ত বাঁধনে বাঁধো।
জীবনের প্রয়োজনে হয়তো এ দূরে যাওয়া।
চোখের আড়াল হলেও,
নয়তো সরে যাওয়া।
অন্তরে ঠিক তুমি রবে সারা বেলা,
প্রতিটা মুহুর্তে, চিরবিরাজমান সবসময়।
গড়মিল
এক সময় খুব ভাবতাম,
তুমি ফিরে এলে কী কী হবে!
কিভাবে সাজাবো আবার আমাদের জীবন।
মান অভিমান পর্বে,
কি কথা কব তোমার কথার পিঠে।
অবহেলায় কত বসন্ত বয়ে গেল একা একা!
কত জোড়ায় হলো মনের মিল।
শুধু তুমি দেখলে না বলে,
হিসাবের খাতা রয়ে গেল গড়মিল।