ট্যাগ আর্কাইভঃ প্রেমের কবিতা

প্রেমচিত্র

আকাশের লজ্জাহীন নগ্ন ক্যানভাসে,
চলে আঁকি বুকি।
প্রতি দুপুর রাত্রি ভোরে।
মেঘমালা তুলি স্পর্শে ছুঁয়ে যায়,
আর ফুটে ওঠে প্রতি মুহুর্তের নানা ব্যঞ্জণের
প্রেমের বিমূর্ত চিত্র।
তোমার আমার গভীর প্রেমের ছবি,
পৃথিবী দেখে তো দেখুক।
টুপটাপ ঝরে পড়ুক
ফুলরাশি জলকণা সম…….
হোক ঝড়, বজ্র সহ বৃষ্টি,
মাতাল বাতাসে উত্তাল হোক পৃথিবী।
আমি চেয়ে থাকি শুধু তোমার ওই মুখপানে।
তুমি দেখো আমায় মুগ্ধ নয়নে।
অন্যকাজে মন দিয়ে কাজ নেই আর।
শুধু তুমি আর আমি এক নিঃশ্বাস পরিমান কাছে
বসে থাকি হাতে হাত ধরে।

বসন্ত বাহার

বনে বনে দোলে ফুল গায় পাখীরা,
সখাগন ধরে হাত,নাচে সখীরা।
বসন্ত বাতাস এতো বসন্ত বাতাস,
ভালোবাসা প্রকৃতি করছে প্রকাশ।

দিকেদিকে ফোটে ফুল পলাশ শিমুল,
অলিগণ গায় গান প্রেমেতে আকুল।
প্রেমের প্রকাশ এতো প্রেমের প্রকাশ,
হেসে হেসে নেচে নেচে করছে বিকাশ।

এত সুখে কচি পাতা হেসে কথা কয়,
চির অমর হোক তবে সব পরিণয়।
ভাবনা উদাস আহা ভাবনা উদাস,
অনুরাগ প্রকৃতি যত করছে প্রকাশ।

জোছনারাশির গান, মলয় সুরকার,
বাসন্তী আবাহনে নানান সাকার।
বসন্ত বাহার এতো বসন্ত বাহার,
প্রেম পরিনয় তার চুড়ান্ত আকার।

ঘুড়ি

নাটাই সুতো নাটাই সুতো,
আকাশ জুড়ে ঘুড়ি।
শূন্যর বুকে নীলের মাঝে,
রঙের ছড়াছড়ি।

অলস দুপুর অঁচল জুড়ে,
উড়ছে ঘুড়ির ঝাক।
লেজগুলো নাড়ছে বেশ,
একেবারে ঠিকঠাক।

হরেক বাহার হরেক রকম,
স্বতন্ত্র তাদের সাজ।
বাক্স ঘুড়ি চিল ঘুড়ি,
নানান কারুকাজ।

বাতাস যখন উঠলো ছুটে,
ঘুড়িরা ছুটলো ধায়।
রঙবেরঙের ঘুড়ির সাজ,
জাঁকাল দেখতে হয়।

খোকা টানে ঘুড়ির সুতো,
বাতাস বুঝে বুঝে।
কেটে গেলে পালাবে ছুটে,
পাবে না আর খুঁজে ।

তাইতো খোকা দক্ষ হাতে,
সুতো ধরেছে টেনে।
কেটে গেলে যাবে হারিয়ে,
অজানা অচিনে।

ব্যাধি

বিকৃত কামতৃষ্ণা হতে সৃষ্ট
পাপাচার, কামাতুর উষ্ণতার লোভে,
কাঠ, খড় পুড়িয়ে, অসহ্য তপ্ত হয় কতিপয় যুবক।
বিকারগ্রস্থ শরীরের তৃষ্ণা মেটাতে।
ফাঁদ পাতে গলি, পার্কে, নির্জন রাস্তায়,
পাবলিক টয়লেটে অথবা ছাত্রী হোষ্টেলে।

যে জনপদে যৌন শক্তি বর্ধক পানীয়, ট্যাবলেট
দেদার বিক্রি হয় মুড়ি মুড়কির মতো।
সেই সমাজে কোন রমনীই নিরাপদ নয়।
অসুস্থ চিন্তাধারা, বিকারগ্রস্ত মনমানসিকতা,
সামাজিক অবক্ষয়ের এক বীভৎস তৈলচিত্র।

নারীকে দলিত করার তীব্র ইচ্ছা, বেহিসেবী জীবনে,
পাওয়া না পাওয়ার হতাশা, ক্ষোভ থেকে জন্ম নেয় পাপ!
সেই পাপ ব্যাধি হতে সৃষ্ট কর্মকাণ্ডের নাম ধর্ষণ।

স্বপ্নছোঁয়া

ফুলে ফুলে বনতল,
সুবাসিত দিন।
ছেড়া ছেড়া মেঘে ছাওয়া,
আকাশটা নীল।
রঙিন হাওয়ায় উড়ছে পালক,
উড়ছে স্বপ্নগুলো।
ফাগুন হাওয়ায় মনমাতাল,
ভাবনা এলোমেলো।
নিস্তব্ধ চরাচর,
উদাস দুপুর।
মেঘবালিকা হেঁটে চলে,
পায়েতে নুপুর ।
অচিন পাখি গাইছে গান
বাজছে হওয়ায় সুর ।
স্বপ্ন ছোঁয়া দিনটি আজ
অপ্রতিম মধুর ।

তুমি চাইলে অনেক কিছু হতে পারতো

তুমি চাইলে অনেক কিছু হতে পারতো আমাদের।
কেন মুখ ফিরিয়ে ছিলে?
আমি কি এতটাই অপাঙ্‌ক্তেয়।

তোমার নীল যৌবন আমার হৃদয় হরণ করেছিলো,
শুক্লা তিথির রাতে।
আমি তো অর্গল খুলেই রেখেছিলাম।
তুমি শুধু হাত বাড়ালেই হতো।
সবইতো বরাবরই ছিলে এক নিঃশ্বাস পরিমান কাছে।

তুমি কি জানো ?
তোমার চুলের ঘ্রাণ পাবার লোভে,
আমি তোমার পিছু পিছু ছুটেছি
শ্যমলী থেকে আজিমপুর অবধি কত শত বার?
এতো কাছে তবু ফিরে দেখনি আমায়।
তোমার অপরুপ মোহে,
বুকেতে তোলপাড় শুধু তোমার জন্য করে গেল আজীবন।
তুমি শুধু চাইলে না ফিরে মোহময়ী।

ভালোবাসি

যতবার তোমার সাথে দেখা হয়,
মনেমনে ভাবি ,বলি,
”ভালোবাসি” ।
তোমার চোখে, তোমার ঠোঁটে,
তোমার ওই রক্তিম দু’গালে,
মনেহয় একটু আদর করি
আর বলি কানেমুখে,
”ভালোবাসি” ।

তোমার মোহমায়ায় আমি এতটাই আবিষ্ট যে,
দিকহারা নীহারিকার মতো,
ছুটে যাবো যখন তখন
তোমার কক্ষপথে।
তখন আমায় সস্নেহে ধরবে তো ?
দু’বাহু প্রসারিত করে?

যদি ধরতে না পারো,তাতেও অসুবিধা নেই কোন।
শুধু ঠেঁটে মৃদু কাঁপন তুলে বললেই হবে,
”ভালোবাসি” ।

যে কথাটি শত চেষ্টাতে আমি বলতে পারিনি,
মুখ ফুটে,তুমি বললেই হবে।
বলবেতো, ”ভালোবাসি” ।

পবিত্র চুম্বণ ও জলোচ্ছাস

তব ধোপদস্ত চুম্বনে,
মদীয় অম্ভোধি পয়স্বিনীতে
জলোচ্ছাস বয়ে গেল অতর্কিতে।

মেঘহীন বর্ষণে ভিজে গেল
মাঠ প্রান্তর।
নতুন জলপ্লাবনে
অচিরেই জেগে উঠলো সেথায়
ঘাস, দূর্বা ও অন্যান্য প্রাণের অনুরণন।

এভাবে তুমি তোমার জাদুকরী
ক্ষমতা প্রয়োগ করো
অকসর প্রিয়তমা ।

আমি চিরকাল তোমার প্রেমে,
নিষিক্ত হয়ে বিকশিত হতে চাই।
অনুভবে ,আহ্লাদে, ভালোবাসাতে।

বন্ধন

যদি কোনদিন তুমি আমায় ভুলে
অচেনা আলোর পথ ধরে
একলা হতে চাও।
দেখবে সেদিন তুমি,
সব পাতা ঝরে গেছে গাছে গাছে।
পাখি সব আর গাইছে না গান।
চাঁদ ভুলে গেছে জোছনা বিলাতে
সব ফুল শুকিয়ে গেছে নিষিক্ত হবার আগেই ।
যেতে চাইলে তুমি যেতে পারো
দুর বহু দূরে!
তবু আমি রয়ে যাবো তোমার অবসরে।
দেখো রয়ে যাবে সব স্মৃতি সব গান তোমার আমার।
দেখবে আমি রয়ে গেছি ঠিকঠাক
তোমার পাশে পাশে।
তুমি চা্ইলেও আর পারবেনা একলা হতে।
পারবেনা আমায় ভুলতে!
আমি আমারে দেব না তোমায় কিছুতেই ভুলিতে।

প্রণয়লীলা

প্রিয়তমা, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছো?

রতিক্লান্ত তোমায় খানিকটা ক্ষয়িত দেখালেও,
ম্রিয়মাণ মোটেও নও।
তুমি আনমনে বাঁকা ঠোঁটে
একটুকরো হাসি ধরে রেখেছো পরম নিশ্চিন্তে।

চরম সুখের রেশ হিসেবে -তুমি ঘুমাও প্রিয়তমা,
সব সুখ বুকে নিয়ে ।
আমি শুধু চেয়ে দেখি তোমার প্রিয় মুখ।

নিকৃতি

তোমার ঠোঁটের ফাকে
তিনটা কথার ছবি আঁকতেই।
তুমি আঁতকে উঠে
আমায় ঠেলে ফেলে বললে,
আমি ধর্ষিতা হতে চাইনা ।
আমি আহত চোখে বললাম
ভালোবাসা ও নিগ্রহের মধ্যে
পার্থক্য বলতে তুমি কি বোঝ?
তুমি বললে ,আজকাল পুরুষেরা ভালোবাসেনা।
ভালোবাসা আদায় করে নেয়।
সুযোগ নেয় শারীরিক প্রয়োজনে।
বিভিন্ন ঢংয়ে,বিভিন্ন মোড়কে।
জেনে রাখো প্রেমহীন ভালোবাসাই ক্ষুদ্রতা।

ভালো থেকো প্রিয়তমা

বদলে গেছে সব।
এই শহর রাস্তা ,পথ, ঘাট, বাড়ি!
বদলে গেছে তোমার বাড়ির রাস্তা ও ঘর।
বদলে গেছে তোমার বন্ধু ,প্রেমিক সব।
শুধু বদলাতে পারিনি আমি নিজেকে।
আমি সেই একই আছি!
তুমি আমার নাম দিয়েছিলে বিনে পয়সার কবি,
বলেছিলে আমি নাকি কথার ফুলঝুরি!
কষ্ট পেয়েছিলাম তবু তোমার প্রতি ভালোবাসা বদলায়নি।
কষ্টপেয়েছিলাম তবু নিজেকে বদলায়নি।
তবে এখনো আছে এই পৃথিবীতে একই আকাশ।
এখনো আমি কবিতা লিখি।
এখনো আমি বিনে পয়সার কবি,
এখনো নির্ঘুম কাটে আমার বিরহ রজনী।
আমি নিজেকে বদলাতে পারিনি।
বদলেছে সাইনবোর্ড ,তার পাশে থাকা গাছ।
বদলেছে নিয়নবাতি তার নিচে বসে থাকা ভিখারি।।
বদলেছে গাড়ির মডেল,
বদলেছে চা কফি,কাপ, প্লেট ।
শুধু,
বদলায়নি তোমাকে নিয়ে আমার স্বপ্নগুলো বা ধারণা সমূহ।
তুমি আমার কাছে আছো একই রকম একটুও বদলাওনি।
তুমি ভালো থেকো।

অপেক্ষা এবং প্রত্যাশা

একদিন ভেবেছিলাম,
সব ঠিক হয়ে যাবে।
চলতে পথে শুধরে নেবো যত ভুল আমার।
তুমিও আবার আগের মতো ভালোবাসবে আমায়
সব ভুলে।
কিন্তু এভাবে যে মোড় ঘুরিয়ে তুমি ,
চলার পথে হারিয়ে যাবে!
অন্য কারো হাত ধরে ,
আলো নেভা জোনাকির মতো।
কোনো একদিন।
আমি এখনো বিশ্বাস করিনা ।

তুমি চাইলে নিজে থেকে ফিরে আসতে পারো ।
তুমি চাইলে আবার আমার ছেড়ে যাওয়া হাত ধরতে পারো।
তুমি চাইলে আমায় আবার ভালোবাসতে পারো ।
আমি এখনো অপেক্ষায় আছি তোমার।

অনুষ্ণ অভিপ্রায়

অনুষ্ণ অভিপ্রায়
==========

রাত নিশিথে নির্লিপ্ত বা্তাস
তোমার এলো চুলে যখন অবলম্বন খোঁজে আহ্লাদে।
সেই মুহুর্তে স্বয়ং স্বকীয় পরশ্রীকাতরতা চোখে
তোমায় কেবল ই দেখি!
আর ভাবি,
আমি নিজে পবন হলে বেশ হতো।
তোমায় অনেক গুলো পাপ্পা দিতাম যখন তখন।

তোমার হাসির আভাসে যখন
চাঁদ ঝরে পড়ে জোছনা মাখা অনুষঙ্গে,
ফুল , পাতা আর যাবতীয় অকৃত্রিম পংতিমালায়।
তখন আমার খুব চিত্তদাহ হয় ।

পুন:পুন ক্রমাগত মনে হয়
আমি যদি হতাম প্রিয় কোন ছন্দোবদ্ধ রচনা তোমার।
তুমি আমায় পড়তে অধিকন্তু প্রমোদে ।
আর আমি লুটিয়ে গড়িয়ে পড়তাম অকসর,
তোমার অন্ত:করণের অলি গলিতে।

সেল ফোন

মধ্যরাতে তারার মেলা বসেছে আকাশে
স্নিগ্ধ ফুল হয়ে ঝরে পড়ছে তোমার কপাল,
ঠোঁট, গাল ও চিবুক বেয়ে।
তুমি আমি জোছনায় ভিজতে ভিজতে
ভাবছি,
এখন একান্ত হতে পারলে
মন্দ হতো না।
সেই মুহুর্তে বেজে উঠলো তোমার সেল ফোন।
তুমি ব্যস্ত হয়ে উঠলে অন্যত্র,
সহসা আহত হলো আমার হৃদয়।
বিরক্তি কর।
এই সেল ফোনগুলো এতো বেরসিক কেন?