ট্যাগ আর্কাইভঃ ভালোবাসার কবিতা

তোমার প্রতিফলে


আমার একাকীত্বের সময়গুলো কত যে বিষণ্ণ মনে হয়,
অথচ তুমি ভালোবাসি বলতেই সবটা সময় হয়ে যায় সজীব প্রাণ এক।
আমার শূন্যতা ঘেরা চারপাশ কত যে নির্জন মনে হয়,
অথচ তোমার গোপন স্পর্শে ফিরে পাই এক ভোর কোলাহল।
যখন আমার বিকেলগুলো ঝরে পড়ে শুকনো পাতার মতো,
তখন তোমার চোখদুটো; বিকেলগুলো রাঙিয়ে দেয় হাজার রঙে।
কেবল তুমি আছো বলেই আমার পুরোটা হৃদয় জুড়ে এত গান, এত ভালোবাসা,
যেন শুভ্র আবেশের ঝুম বৃষ্টিতে ভেজা প্রতিটা প্রহর।।
.
২৪/০১/২০২০

১৪ আগস্ট আমার জীবনে একটা বিশেষ দিন আর সেই দিনকে উপলক্ষ্য করে এই কবিতা পোস্ট করলাম…

মেঘ

তোমাকে ভালোবেসে মেঘ বলে ডাকতাম আমি,
অনেকদিন হলো তোমাকে মেঘ বলে ডাকিনা।
তোমাকে এখন আর অন্যকেউ মেঘ নামে ডাকে কিনা তাও জানিনা,
জানিনা এখন অন্যকারো বুকের ঠিক কতটা জুড়ে মেঘ হয়ে আছো।।
.
তবে আজকাল আকাশ মেঘলা হলে খুব জোড়ে জোড়ে ঐ মেঘেদের মেঘ বলে ডাকি,
ঐ মেঘেরা আমার ডাকে সাড়া দিয়ে অঝোর বর্ষণে ভিজিয়ে দেয়।
মুছে দেয় আমার কান্না ঠিক যেন তোমার মতোই আদরের হাতে,
তখন মনে হয় এই মেঘ আর তুমি মেঘের মাঝে কোন ফাঁক নেই।
আজ এই ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের দিনে তোমাকে খুব মনে পড়ছে,
এমন হাজারো মেঘের দিনে তোমাকে খুব বেশি মনে পড়বে মেঘ।।
.
০৬/০৭/২০১৯

তোমার প্রেমে পড়বার পর

তোমার প্রেমে পড়বার আগে,
সুন্দর চোখ, সুদর্শন মুখের রমণীদের খুটে খুটে দেখতাম।
আর ভিতরে ভিতরে খুব আফসোস করতাম,
ভিতরে ভিতরে কামনা জেগে উঠতো যেন সে আমার হয়।।
.
অথচ তোমার প্রেমে পড়বার পর,
সেই চিরাচরিত অভ্যেসটা কি আমূল বদলে গেলো।
কাউকে দেখে আফসোস করা, মনে মনে কামনা করা,
এসব কিছু বদলে গেছে তোমাকে পাবার আজন্ম প্রার্থনায়।।
.
এখন আমার কাছে তোমার চোখই পৃথিবীর সুন্দরতম চোখ,
সব ছাপিয়ে কেবল তোমার ছবিই ভেসে উঠে বুকের ভিতর।
প্রতিক্ষণ শুধু তোমাকেই দেখি পরম যত্নে হৃদয়ের দেয়াল জুড়ে,
আর তুমি দেখা দাও পৃথিবীর অপার আশ্চর্য সুন্দর হয়ে।।
.
তোমার প্রেমে পড়বার পর,
কেবলই মনে হয়ে পৃথিবীর পথে আর কোন রমণী নেই।
কোন সুন্দর চোখ নেই, সুদর্শন কোন মুখচ্ছবি নেই,
কেবল তুমি আছো; পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে।।
.
২৫/০৭/২০১৯

তোমার জন্য

কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
আমি সুন্দর সকাল দেখলাম গোটা কয়েকটা জন্ম ধরে।
আকাশ দেখতে শিখলাম অপলক নয়নে; চাঁদের সাথে রাত জাগলাম কয়েক যুগ,
দীর্ঘ ২১’টি বসন্তে দেখলাম ফুলদের ফোটার প্রক্রিয়া।
আমি বর্ষার বুক থেকে তুলে নিলাম তুমুল শিহরণ,
একটা একটা করে শব্দদের সাজালাম রংধনুর মতো।
কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
আমার প্রতিটা মুহূর্তে আয়োজন করলাম শব্দ উৎসবের।।
.
তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে ভিতরে ভিতরে জড়ো করলাম,
একরাশ গোলাপের বিদগ্ধ ধূপের ধোঁয়াটে সন্ধ্যা।
প্রকৃতির প্রতিটা বিন্দুতে ছুঁয়ে দিলাম পরম স্পর্শে,
অরণ্য দেখলাম, নদী দেখলাম, ছয়টি ঋতুকে বুঝতে শিখলাম।
কবি হতে নয় কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
যাকিছু এলোমেলো সব গুছিয়ে পরিপাটি করলাম একটি কবিতার জন্য।
পৃথিবীর সমস্ত সাহিত্য সভার দ্বারস্থ হলাম কেবল তোমার নামে একটি কবিতার জন্য,
কোথাও একটি কবিতা লেখা হলোনা আমার।
তারপর ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে তোমার কাছে ফিরে গেলাম,
তারপর তোমার হাতে হাত রাখতেই আমার আঙুল ফুরে জন্ম নিলো সহস্র কবিতা।।
.
২১/০৮/২০১৯

অনুভব


আমি জেনে গেছি,
এই পৃথিবীর অন্ধকারে তোমাকে ছাড়া আলো কতটা দুর্লভ।
আমি বুঝে গেছি,
কেবল তোমাকে ভাবতেই কতটা সহজ হয়ে উঠে অনন্ত জীবনের কামনা।।
.
আমি অনুভব করেছি,
তোমার চোখে চোখ রাখতেই কতটা শুভ্র আলো নেমে আসে পৃথিবীর প্রতিটা সকালে।
কী এক মোলায়েম আদর নেমে আসে আমার যৌবন জুড়ে,
কেবল তোমাকে খুব কাছ থেকে দু’দণ্ড স্পর্শ করতেই।।
.
আমি খুব সহজেই অনুভব করেছি,
তোমার নিশ্চুপ থাকা মানেই সমস্ত পৃথিবীর করুণ মৃত্যু।
তোমার একটু অভিমান মানে,
আমার সমস্ত জীবন ব্যাপী শোকের মিছিল।।
.
আমি খুব নিবিড়ভাবে বুঝেছি তোমায়,
তুমি ঠিক যতক্ষণ আমাকে মেলে ধরো ততক্ষণ আমার ভালো থাকা।
তুমি ঠিক যতক্ষণ আমাকে ভালোবাসো,
ঠিক ততক্ষণই আমার বেঁচে থাকা।।
.
১১/০৮/২০১৯

যেমন ভালোবাসা চাই

আমার উন্মুক্ত ভালোবাসা চাই,
বেহায়া, নির্লজ্জ ভালোবাসা।
হাজারো মানুষের ভীরে চাই,
কেউ আমার কান কামড়ে দিক।
লাল করে দিক ঠোঁটের লিপস্টিকে,
আমার চিবুক, গাল, কপাল।।
.
কেউ আমার হাত ধরে জ্যাম ঠেলে,
পার হোক শহরের ব্যস্ত সড়ক।
আমার চোখে চোখ রেখে ডুবাক আমায়,
সুর তুলুক নতুন গানের, কবিতার।
কলার চেপে ধরে লাল মুখ করে বলুক,
“অন্যকারো দিকে কখনো তাকাবিনা।।”
.
আমার এমনি অসীম ভালোবাসা চাই,
কার্পণ্য ছাড়া নিখাদ ভালোবাসা।
আমি চাই কেউ আমার ঘাড়ের চুল ধরে,
চোখের সামনেই দম বন্ধ করুক টানা চুম্বনে।
কেউ আমাকে জড়িয়ে নিক প্রতিটি মুহূর্তে,
তার নরম দেহের মাঝে শয়নে জাগরণে।।
.
এমনি উন্মাদ রমণীর পুরোটা,
অধিকার চাই স্পর্শ করবার, গন্ধ নেবার।
ইচ্ছে হলেই মাঝরাতের অভিসারের,
কেউ আমাকে সঙ্গী করুক।
খামচে ধরুক আমার বাহু, পিঠ, গলা,
কেড়ে নিক আমার সর্বস্ব, হাড় অবধি।।
.
আমার বুকে এমনি ভরাট তৃষ্ণা,
একালের মামুলি ভালোবাসায় তা মিটবেনা।
আমি চাই কেউ শুধু আমার বেলাতেই,
হোক পৃথিবীর সবথেকে বেহায়া মানবী।
তার দেহের প্রতিটি ভাজ আমি গুণতে চাই,
আঙুলের নখের দরদহীন দাগ কেটে।
আমার বুকের দগ্ধ আগুনের নরক,
কেবল এমনই ভালোবাসায় নেভানো সম্ভব।।
.
২৮-১১-২০১৮
#StayAtHome #StaySafe

ভালোবাসায় ভেজানো রাত

কোনো এক নিশ্চুপ রাতে, নির্মল বাতাসে।
ধান ক্ষেতের মাঝেই দাঁড়িয়ে ছিলাম।
মাস টা ছিলো বৈশাখ।
সময় টা বৈশাখের দিন পনেরোর এক রবিবার রাতের কথা।

মনে ছিলো বেশ প্রেমের ঝটকা।
হুটহাট মনে হয়ে যেতো প্রিয় তোমার কথা।
সেই রাতে ও, তুমি এসে আটকে গেলে মনে। তবে,তুমি সেই রাতে এলে গাঢ় অন্ধকার হয়ে।

যখনই, তোমার চিন্তায় আমি মগ্ন।
কি করে মিলবে তোমার সঙ্গ।
ঠিক তখনই,
মেঘ হাঁক দিলো, আকাশ গর্জে উঠলো তাঁর নিজস্ব নিয়মে ।

ফোঁটা কতেক আছড়ে পরলো আমার অঙ্গে।
সে কি! ঠাণ্ডা হাওয়ায়, মনের কোমলতা ফিরে আসছে বার বার।
আমার চোখের লবণজল ও আর, থাকতে পারলো না তাঁর জায়গায়!
সে ও পরছে, বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে।
আর মিশে যাচ্ছে, ধান গাছের আড়ালে।

সেই রাতের অপূর্ণ ভালোবাসায়,
ঝরানো অশ্রুর কথা।
কেউ জানবে না,এই ক্ষুদ্র জীবনে।
তবে সেই, বিশাল মাঠের সবকটা ধান গাছ জেনে গেছে।
তাঁরা জেনে গেছে, আমার ভালোবাসা সীমাহীন।

তাঁরা বুঝে গেছে ভালোবাসার তীব্রতা,
জেনে গেছে চোখের জলের ওজন কতটা।

তাদের বলবার ভাষা নেই।
পারলে, তুমি জেনে নিও তাদের থেকে।
ওজন করে নিও কতটা ভালোবাসার জল ঝরিয়েছি সেই রাতে।

ভালোবাসার জলে ভিজিয়ে দেয় আমি আজও বহু দিবস রজনী।
বুঝলে না শুধু তোমার মতো পাষাণী, ভালোবাসা আসলে কী।

হয়ে যাও শুদ্ধ প্রেমিক

ভালোবেসে কষ্ট পেয়ে হও নষ্ট এবার,
বিরহের আগুনে পুড়ুক সবটা হৃদয়।
পচে যাক ভিতর জমিন,
সেখানে ফুটুক একটি গোলাপ,
ভালোবাসার একটি গোলাপ।।
.
ভালোবেসে ভেঙ্গে চুড়ে যাও,
গভীরে জমাও তুমি নগ্ন বিষাদ।
ভিতরে জমুক এক পৃথিবী অন্ধকার,
সেখানে জ্বলুক শুধু একটি জোনাক,
ভালোবাসার একটি জোনাক।।
.
ভালোবেসে শেষ হয়ে যাও,
নরকে পুড়ুক তোমার কফিন।
পৃথিবী না জানুক তুমি প্রেমিক পুরুষ,
ইতিহাস না হোক তোমার এ প্রেম সবটা শেষে,
তবু ভালোবেসে হও শুদ্ধ প্রেমিক কষ্ট পুষে।।
.
১৬/০২/২০২০
#StayAtHome #StaySafe

বিদেশ যাত্রা

ভিসা হয়ে যেতেই,
বুকটা কেমন মুচড়ে গেল হঠাৎ।
তোমায় ছেড়ে যেতে হবে বলে।
এক লোকমা ভাত নামলো না গলা বেয়ে।

ছেড়োনা হাত প্রিয়তমা ওগো,
আরো বেশি শক্ত বাঁধনে বাঁধো।
জীবনের প্রয়োজনে হয়তো এ দূরে যাওয়া।
চোখের আড়াল হলেও,
নয়তো সরে যাওয়া।
অন্তরে ঠিক তুমি রবে সারা বেলা,
প্রতিটা মুহুর্তে, চিরবিরাজমান সবসময়।

গড়মিল

এক সময় খুব ভাবতাম,
তুমি ফিরে এলে কী কী হবে!
কিভাবে সাজাবো আবার আমাদের জীবন।
মান অভিমান পর্বে,
কি কথা কব তোমার কথার পিঠে।

অবহেলায় কত বসন্ত বয়ে গেল একা একা!
কত জোড়ায় হলো মনের মিল।
শুধু তুমি দেখলে না বলে,
হিসাবের খাতা রয়ে গেল গড়মিল।

পবিত্র চুম্বণ ও জলোচ্ছাস

তব ধোপদস্ত চুম্বনে,
মদীয় অম্ভোধি পয়স্বিনীতে
জলোচ্ছাস বয়ে গেল অতর্কিতে।

মেঘহীন বর্ষণে ভিজে গেল
মাঠ প্রান্তর।
নতুন জলপ্লাবনে
অচিরেই জেগে উঠলো সেথায়
ঘাস, দূর্বা ও অন্যান্য প্রাণের অনুরণন।

এভাবে তুমি তোমার জাদুকরী
ক্ষমতা প্রয়োগ করো
অকসর প্রিয়তমা ।

আমি চিরকাল তোমার প্রেমে,
নিষিক্ত হয়ে বিকশিত হতে চাই।
অনুভবে ,আহ্লাদে, ভালোবাসাতে।

বন্ধন

যদি কোনদিন তুমি আমায় ভুলে
অচেনা আলোর পথ ধরে
একলা হতে চাও।
দেখবে সেদিন তুমি,
সব পাতা ঝরে গেছে গাছে গাছে।
পাখি সব আর গাইছে না গান।
চাঁদ ভুলে গেছে জোছনা বিলাতে
সব ফুল শুকিয়ে গেছে নিষিক্ত হবার আগেই ।
যেতে চাইলে তুমি যেতে পারো
দুর বহু দূরে!
তবু আমি রয়ে যাবো তোমার অবসরে।
দেখো রয়ে যাবে সব স্মৃতি সব গান তোমার আমার।
দেখবে আমি রয়ে গেছি ঠিকঠাক
তোমার পাশে পাশে।
তুমি চা্ইলেও আর পারবেনা একলা হতে।
পারবেনা আমায় ভুলতে!
আমি আমারে দেব না তোমায় কিছুতেই ভুলিতে।

প্রণয়লীলা

প্রিয়তমা, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছো?

রতিক্লান্ত তোমায় খানিকটা ক্ষয়িত দেখালেও,
ম্রিয়মাণ মোটেও নও।
তুমি আনমনে বাঁকা ঠোঁটে
একটুকরো হাসি ধরে রেখেছো পরম নিশ্চিন্তে।

চরম সুখের রেশ হিসেবে -তুমি ঘুমাও প্রিয়তমা,
সব সুখ বুকে নিয়ে ।
আমি শুধু চেয়ে দেখি তোমার প্রিয় মুখ।

নিকৃতি

তোমার ঠোঁটের ফাকে
তিনটা কথার ছবি আঁকতেই।
তুমি আঁতকে উঠে
আমায় ঠেলে ফেলে বললে,
আমি ধর্ষিতা হতে চাইনা ।
আমি আহত চোখে বললাম
ভালোবাসা ও নিগ্রহের মধ্যে
পার্থক্য বলতে তুমি কি বোঝ?
তুমি বললে ,আজকাল পুরুষেরা ভালোবাসেনা।
ভালোবাসা আদায় করে নেয়।
সুযোগ নেয় শারীরিক প্রয়োজনে।
বিভিন্ন ঢংয়ে,বিভিন্ন মোড়কে।
জেনে রাখো প্রেমহীন ভালোবাসাই ক্ষুদ্রতা।